Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - Kazi Sobuj

Pages: 1 2 3 [4]
46
ট্রেড লাইসেন্স হলো স্থানীয় সরকার কতৃক প্রদত্ত ব্যবসার লাইসেন্স। যে অঞ্চলে ব্যবসা করবেন, সেই অঞ্চলের স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান (ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন) এর কাছ থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিতে হবে।

সিটি কর্পোরেশন কর বিধান- ১৯৮৩ এর মাধ্যমে বাংলাদেশে ট্রেড লাইসেন্সের সূচনা ঘটে। এই লাইসেন্স উদ্যোক্তাদের আবেদনের ভিত্তিতে প্রদান করা হয়। সিটি কর্পোরেশন বা সিটি পরিষদ এই প্রক্রিয়াটি পরিচালনা করে থাকে। ট্রেড লাইসেন্স বিশেষভাবে শুধুমাত্র লাইসেন্সধারী ব্যক্তির নামে প্রদান করা হয় এবং এটা কোনভাবে হস্তান্তরযোগ্য নয়। এই লাইসেন্স ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে পারবে না। নবায়নকৃত ট্রেড লাইসেন্স আঞ্চলিক কর অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদান করে থাকেন। ট্রেড লাইসেন্সের জন্য নির্ধারিত ফি লাইসেন্স ফরমে উল্লেখিত যে কোন ব্যাংক-এর মাধ্যমে জমা দিতে হবে।

কীভাবে পাবেন ?

সাধারণ ট্রেড লাইসেন্সঃ ভাড়ার রশিদ অথবা চুক্তিপত্রের সত্যায়িত কপি, এবং হোল্ডিং ট্যাক্স পরিশোধের রশিদের কপি। অন্য কোনো ছাড় পত্রের প্রয়োজন না হলে, এই ক্যাটাগরিতে লাইসে্স সহজেই পাওয়া যায়।
শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ট্রেড লাইসেন্সঃ উপরোক্ত সবগুলি ডকুমেন্টসমূহ, এবং এর সাথে-
– পরিবেশ সংক্রান্ত অনাপত্তি পত্র

– প্রতিষ্ঠানের অবস্থান চিহ্নিত মানচিত্র

– অগ্নিনির্বাপণ প্রস্তুতি সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র

– ডি.সি.সি. র নিয়মাবলী মেনে চলা হবে এমতে ১৫০ টাকার জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারপত্র

– ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি

ক্লিনিক অথবা ব্যক্তিগত হাসপাতালের ক্ষেত্রেঃ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের অনুমোদন।
লিমিটেড কোম্পানীর ক্ষেত্রেঃ
– মেমোরেন্ডাম অব আর্টিকেল

– সার্টিফিকেট অব ইনকর্পোরেশন

ছাপাখানা ও আবাসিক হোটেলের ক্ষেত্রে – ডেপুটি কমিশনারের অনুমতি
রিক্রুটিং এজেন্সীর ক্ষেত্রে – মানবসম্পদ রপ্তানী ব্যুরো কর্তৃক প্রদত্ত লাইসেন্স
অস্ত্র ও গোলাবারুদের ক্ষেত্রে – অস্ত্রের লাইসেন্স
ঔষধ ও মাদকদ্রব্যের ক্ষেত্রে – ড্রাগ লাইসেন্সের কপি
ট্রাভেলিং এজেন্সীর ক্ষেত্রে – সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের অনুমতি।
ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন

১। পূর্বের ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত আঞ্চলিক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

২। দায়িত্বপ্রাপ্ত আঞ্চলিক কর বিষয়ক কর্মকর্তা নবায়নকৃত ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করবেন।

৩। ফিঃ লাইসেন্স নবায়ন ফি নতুন লাইসেন্সের সমপরিমাণ। এই ফি আগের মতোই লাইসেন্স ফরমে উল্লিখিত ব্যাংকে প্রদান করতে হয়।

47
বিদেশে রপ্তানিযোগ্য পণ্যের তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছে বাংলাদেশের কুঁচে মাছ। পিকেএসএফ অর্থাৎ পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন প্রথমে সাতক্ষীরা অঞ্চলে কাঁকড়া চাষিদের পাশাপাশি খামারিদের কুঁচে মোটাতাজাকরণে প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন প্রযুক্তি প্রদান করে খামারিদের আয় বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করে। খামারিরা তাদের নিত্যদিনের অন্যান্য কাজের পাশাপাশি এ কাজটি করে থাকেন। কুঁচে চাষের জন্য পিকেএসএফ থেকে আগ্রহীদের প্রশিক্ষণ, পুঁজি ও প্রযুক্তি দেওয়া হয়েছে। সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর, আশাশুনি, কালিগঞ্জ এবং খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলায় কুঁচে চাষ ব্যাপকভাবে শুরু করার পর সম্প্রতি উত্তরবঙ্গের নীলফামারী জেলার ডোমার, কিশোরগঞ্জ এবং জলঢাকা উপজেলায় এই কর্মসূচি সম্প্রসারিত হয়েছে। নোয়াখালী, সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটের উপকূলীয় অঞ্চল অথবা কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের হাওরাঞ্চলে দেখা গেলেও উত্তরবঙ্গে কুঁচে খুব একটা বেশি দেখা যেত না। এখন ওই অঞ্চলে কুঁচে চাষে উৎসাহী হচ্ছেন অনেকে। সম্প্রসারিত হচ্ছে খুব দ্রুতগতিতে গ্রাম থেকে গ্রামে, ইউনিয়ন থেকে ইউনিয়নে। কেউ কেউ বিকল্প কিংবা আংশিকভাবে কর্মসংস্থান হিসেবে গ্রহণ করছেন কুঁচে চাষকে। মঙ্গা মোকাবিলায় ২০০৯ সালে অতি দরিদ্র এ পরিবারগুলো সম্পৃক্ত হয়েছিল পিকেএসএফের সংযোগ কর্মসূচির মাধ্যমে। বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি, ও পুঁজি পেয়ে আজ তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সংসারে বহুমুখী আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সমাজে মর্যাদা বেড়েছে তাদের, বেড়েছে সক্ষমতা। টেকসই উন্নয়নের পথে অনেকদূর এগিয়েছেন তারা। দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র থেকে স্থায়ীভাবে বেরিয়ে এসে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তায় পরিণত হয়েছে অনেকে। পরিবারে বহুমুখী আয়ের ব্যবস্থা করে আজ তারা মোটামুটি স্বাবলম্বী হয়ে উঠেছেন।

সুস্বাদু ও পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে কুঁচের দেশি বাজারেও চাহিদা রয়েছে মোটামুুটি। তবে এর ব্যাপক চাহিদা রপ্তানি বাজারে। দারুণ সম্ভাবনাময় রপ্তানি পণ্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে কুঁচে। গড়ে প্রতি কেজি কুঁচে বিক্রি হয় ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকায়। যদিও কুঁচের এ মূল্য আকারের ওপর নির্ভরশীল। আকার যত বড় দামও তত বেশি। চীন, জাপান, হংকং, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, কোরিয়াসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে বাংলাদেশের কুঁচে।

বাংলাদেশের মাটি, পানি ও আবহাওয়া কুঁচে চাষের জন্য বেশ উপযোগী হওয়ায় এর চাষের প্রতি আরো বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। কুঁচের প্রজনন এখনো প্রাকৃতিক উপায়ের ওপর নির্ভরশীল। কৃত্রিমভাবে প্রজনন ব্যবস্থা অর্থাৎ কুঁচে প্রজননের হ্যাচারির ব্যবস্থা করা হলে এর উৎপাদন প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে। সরকারি উদ্যোগে দেশে সফলভাবে কুঁচে কৃত্রিম প্রজনন প্রক্রিয়ায় এর পোনা উত্পাদন শুরু হয়েছে আরো আগেই। নি:সন্দেহে এটি একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন।

বর্তমান প্রেক্ষাপটে বিদেশে ২০০ ও ১৩০ গ্রাম ওজনের কাঁকড়ার চাহিদা ব্যাপকভাবে কমে গেছে। চীন, জাপান, তাইওয়ান কিংবা থাইল্যান্ডের মানুষ এর চেয়ে কম ওজনের কাঁকড়াই বেশি পছন্দ করছে। বাঁধাধরা কোনো নীতিমালা না থাকায় ভারত, মিয়ানমারসহ প্রতিবেশী অন্যান্য দেশ কাঁকড়া রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বাজার দখল করে নিচ্ছে। শুধু রপ্তানির বাজারই নয়। বাংলাদেশ থেকে ছোটবড় কাঁকড়া পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে পাচার হয়ে যাচ্ছে। সেখান থেকে অতি সহজেই সেগুলো বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে সম্ভাবনাময় কাঁকড়া, কুঁচে রপ্তানি খাতটি ধ্বংস হয়ে যাবে।

বিদেশে কাঁকড়া ও কুঁচে রপ্তানি করে বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হওয়ায় সাতক্ষীরা, বাগেরহাটসহ উপকূলবর্তী এলাকায় ব্যাপকভাবে এর চাষাবাদ চলছে। আন্তর্জাতিক বাজারে বর্তমানে ৫০ থেকে ১২০ গ্রাম ওজনের কাঁকড়ার চাহিদা ভালো। সেই চাহিদা সামনে রেখে বাংলাদেশের কক্সবাজার, সাতক্ষীরা, খুলনা, পাইকগাছা এলাকায় ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই কাঁকড়া কুঁচের খামার গড়ে তুলেছেন। সেখানে ৫০ থেকে ১২০ গ্রাম ওজনের কাঁকড়া হিমায়িত করে চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানি করা হচ্ছে। কোনো কোনো চাষি এ ধরনের কাঁকড়া, কুঁচে উৎপাদন করে স্বর্ণপদকও লাভ করেছেন। চিংড়ির চেয়ে কাঁকড়ায় বেশি লাভ হচ্ছে বলে অনেক চাষি এদিকেই বেশি ঝুঁকছে। এখাতটি বিশেষ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে খুব সহজেই দ্বিগুণ পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব। সাধারণত পরিবেশ অধিদপ্তর কাঁকড়া চাষাবাদ ও রপ্তানির বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু সুন্দরবন এলাকার পাশাপাশি কাঁকড়া চাষ করলে সেটি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে বন বিভাগ। ফলে একই বিষয়ে দ্বৈত শাসন কায়েম হয়েছে। এর ফলে এ খাতে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তাই রপ্তানি নীতিমালাটি সংস্কার করে কাঁকড়ার চাষাবাদ ও রপ্তানির বিষয়টি একই ছাতার নিচে আনা দরকার।

কাঁকড়া ও কুঁচে রপ্তানি এমন একটি খাত যাতে সরকারের কোনো আর্থিক প্রণোদনা, ব্যাংক ঋণ কিংবা অন্যান্য সাহায্য-সহযোগিতার প্রয়োজন পড়ে না। বরং উপকূলবর্তী এলাকার লাখ লাখ হতদরিদ্র মানুষ কাঁকড়া চাষের সঙ্গে জড়িত হয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। এটি এমন একটি পণ্য যার কোনো বাজার বাংলাদেশে নেই। সেই পণ্যটি বিদেশে রপ্তানি হয়ে উপার্জিত পুরো এক হাজার কোটি টাকাই দেশকে সমৃদ্ধ করছে।

48


অরুণিতা ২০১৩ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। ছোটবেলা থেকে তার হাতের কাজের শখ। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর হাতের কাজের নানা রকম উপকরণের খোঁজ পান। তারপর ধীরে ধীরে সেগুলো কিনে নিজের জন্যই নানারকমের গয়না বানানো শুরু করেন। এভাবে একসময় বাক্সপেটরা ভরে গেল, তখন তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন কিছু গয়না বিক্রি করে দেবেন। ফেসবুকে ছবি দিলেন, প্রশংসাও পেলেন বেশ। উৎসাহিত হয়ে ফেসবুকে খুলে বসেন অনলাইন শপ ‘আরুণিকা’। এবারও সাড়া পেলেন খুব!

অরুণিতার আরুণিকার শুরুর গল্পটা এমনই।

নিছক শখের বশে শুরু। হাতখরচের টাকা জমিয়েই অরুণিতা এটি চালাচ্ছেন। বিক্রি বাড়ায় ধীরে ধীরে মূলধনের সমস্যাটা কাটছে। কিন্তু পড়ালেখার চাপ, মেসে থাকা এবং কখনো কারো কটু কথা শুনে হতাশ এলেও তিনি থেমে থাকেননি। স্বল্প পরিসরে শুরু করে মাত্র সাড়ে তিনমাসেই এতদূর এগিয়ে আসতে পেরেছেন তিনি। তিনি মনে করেন সামনের পথচলা নিশ্চয়ই আরও সুন্দর হবে।

অরুণিতার মতে, যে যা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে এবং ভালোবাসে, তার সেই কাজ দিয়েই নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত। গয়না বানানো তার শখ। আর ভিন্নধাঁচের জিনিসের চাহিদা সবসময়ই আছে। অনেক ধৈর্য নিয়ে প্রতিটা গয়না তিনি তৈরি করেন। এরমধ্যে ‘হাতি মালা’ ও ‘হাতি আংটি’ অন্যতম প্রিয় কাজ। এছাড়া এবার বৈশাখের জন্য করা ওয়ারলি, ইজিপশিয়ান, লোকজ মোটিফের কিছু কাজ তিনি করেছেন।

অরুণিতার এগিয়ে আসার পিছনে ছিল বন্ধুবান্ধবদের দেওয়া উৎসাহ। নিজ পরিবার থেকে সমর্থন না পেলেও অনেকে অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। জানা গেল তার কলেজের সহপাঠী দেবাশীষের কথাও। তাছাড়া ফ্যাশন ডিজাইনার বিবি রাসেলের কাজ দেখেও অরুণিতা অনুপ্রাণিত হন।  অরুণিতা বলেন, ‘নতুন উদ্যোক্তাদের প্রধান ভুল হয় বিশ্বাসে। তা নিজের প্রতিই হোক বা অন্যদের ক্ষেত্রে। নিজের চিন্তাভাবনার প্রতি বিশ্বাসের অভাব থাকলে সব জায়গাতেই সেটার প্রতিফলন ঘটে। যে যা করছেন, তা পূর্ণ বিশ্বাসের সঙ্গে করা উচিত এবং যাদের সঙ্গে কাজ করছেন, তারা বিশ্বাসযোগ্য কি না সেটার প্রতিও লক্ষ রাখা উচিত। নিজের কাজ যেন সবার চেয়ে আলাদা হয় সেটাও দেখতে হবে। এখন শুধু গয়না নিয়ে কাজ করলেও ভবিষ্যতে তার ইচ্ছা আছে দেশি কাপড় ও হস্তশিল্প নিয়ে কাজ করার এবং অরুণিকার আউটলেট গড়ার। সাধ আছে অনেক, এখন সামর্থ্য হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন তিনি। বহুদূর পথ হাঁটার সংকল্প অরুণিতার মনে।

49


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ (আইডব্লিউসি) ২০১৭’ পুরস্কার পাওয়া বাংলাদেশের ঝালকাঠির মেয়ে শারমিন আক্তার। সে নিজেই নিজের বাল্যবিবাহ ঠেকিয়েছে। পুরস্কার পাওয়ার পর শারমিনের সাহস আরেকটু বেড়েছে। সবার কাছ থেকে দোয়া, ভালোবাসা পাচ্ছে। পুরস্কার নিয়ে ফেরার পর একজন দোয়া করে বলেছেন, ‘তুমি প্রধানমন্ত্রী হবা।’ বলেই শারমিনের হাসি। তারপর বলল, ‘আমার চিন্তাভাবনা ছিল আইনজীবী হব, পুরস্কার পাওয়ার পর মনে হচ্ছে আরও বড় কিছু হইতে হবে।’
গতকাল রাজধানীর ইএমকে সেন্টারে মার্কিন দূতাবাস আয়োজিত অনুষ্ঠানে শারমিন তার স্বপ্নের কথা জানায়। একই সঙ্গে দৃঢ়ভাবে উচ্চারণ করে, ‘মেয়েরা নিজেরা নিজেদের অসহায় ভাবে। ভাবে ছেলেরা বেশি শক্তিশালী। কিন্তু তা না। মেয়েরা বিপদে পড়লে পুলিশের কাছে গেলে পুলিশ সাহায্য করবে। পুলিশ না করলে শিক্ষক, সহপাঠী বা কেউ না কেউ করবেই।’ পুরস্কার পাওয়া প্রসঙ্গে শারমিন বলে, ‘আমি নিজের বাল্যবিবাহ ঠেকাইলাম। প্রথম আলো আমারে নিয়ে নিউজ করল। চ্যানেল আইয়ের স্বর্ণ কিশোরী ফাউন্ডেশন আমারে পুরস্কার দিল। আমেরিকান সেন্টার আমারে খুঁইজা পেল। তারপর আমেরিকা গিয়ে পুরস্কার নিলাম।’
মার্কিন দূতাবাস আয়োজিত মিট দ্য প্রেসে শারমিন বলে, ‘বিভিন্ন দেশ থেকে পুরস্কার পাওয়া নারীরা আমার কথা জানতে চান। আমি আমেরিকার হোয়াইট হাউস ও সংসদে গেছি। নিউইয়র্কের একটি স্কুলে যাই। ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানতে চায়, আমি তাদের সাহায্য করব কি না। আমি বলি, সাহায্য করব।’
‘এ পুরস্কার শুধু আমার জন্য না, আমার দেশের সব মেয়ের জন্য। আমি চাই, ওরা আমার মতো কিছু করুক, প্রতিবাদ করুক।’ বারবার শারমিন এ কথা উচ্চারণ করে।
বাংলাদেশ সময় গত ২৯ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প এসএসসির ফলের অপেক্ষায় থাকা শারমিনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। শুধু তাই নয়, তিনি শারমিনকে জড়িয়েও ধরেছিলেন বলে জানায় শারমিন। কিছু একটা মনে পড়েছে সেই ভঙ্গিতে নিজেই বলে, ‘আমেরিকা থেকে একটা জিনিস শিইখা আসছি। আমেরিকায় বাল্যবিবাহ দিলে তার জন্য কোনো আইন নাই। বাংলাদেশে কিন্তু আইন আছে। তাই এই আইন কাজে লাগাইতে হবে।’ এ কথা বলেই শারমিন যোগ করে, বাবা-মা মেয়েদের লেখাপড়া করাক। তাঁরা মেয়েদের যাতে বোঝা মনে না করেন। যে বাবা-মা মেয়ের বাল্যবিবাহ দেবেন, তাঁদের শাস্তি দিতে হবে। আর মেয়েদেরও প্রতিবাদ করতে হবে। তাদেরও বলতে হবে, ‘আমি লেখাপড়া করব, বিয়ে করব না।’
২০১৫ সালে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় শারমিনের মা তাকে জোর করে বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। সে বান্ধবীর সহযোগিতায় স্থানীয় এক সাংবাদিকের কাছে ঘটনার কথা জানায়। তারপর সাংবাদিকের সাহায্যে থানায় গিয়ে মা এবং যাঁর সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয়েছিল, তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে।
মিট দ্য প্রেসে মার্কিন দূতাবাসের প্রধান প্রেস কর্মকর্তা মেরিনা ইয়াসমিন ও প্রেস অ্যাসিস্ট্যান্ট নুসরাত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

50
ধরুন, কোনো রাস্তার একটি মোড়। এর মধ্যে একদিকে যানবাহনের জটলা লেগে আছে।আরেক দিকে যানবাহন তুলামূলক ফাঁকা। এমতাবস্থায় জটলা লেগে থাকা যানবাহনগুলো যেতে সবুজ সিগন্যাল জ্বলে উঠবে। আর অন্যদিকে ফাঁকা থাকা যানবাহন না যেতে লাল সিগন্যাল জ্বলবে।এমন এক অটোমেটিক ট্রাফিক সিগন্যাল উদ্ভাবন করলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থ বিদ্যা, ইলেকট্রনিক অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (১২ এপ্রিল) বিভাগের পক্ষ থেকে আয়োজন করা হয় শিক্ষার্থীদের তৈরি বিভিন্ন উদ্ভাবনের প্রদর্শনী। সেখানে অটোমেটিক ট্রাফিক সিগন্যালের এই প্রদর্শনীও ছিল।

২৭টি টিমের সমন্বয়ে এদিন ২৯টি উদ্ভাবনের প্রদর্শনী করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী এই প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন। বিভিন্ন ব্যতিক্রম ধর্মী এসব উদ্ভাবনের সঙ্গে কাজ করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন।

অটোমেটিক ট্রাফিক সিগন্যাল নিয়ে কাজ করা ওই বিভাগের অষ্টম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী তাসকিন মো. সিহাম সাঈদ বলেন, অটোমেটিক ট্রাফিক সিগন্যালের সুবিধা হল যেদিকের রাস্তায় যানবাহনের জটলা লেগে থাকবে বা জরুরি প্রয়োজনে কোনো অ্যাম্বুলেন্স যাবে সেদিকে চলাচলের জন্য অটোমেটিক সবুজ সিগন্যাল জ্বলে উঠবে। আর অন্যদিকে  যানবাহন চলাচল না করার জন্য লাল সিগন্যাল জ্বলবে।

একই সেমিস্টারের আরেক শিক্ষার্থী মালিহা সুলতানা বলেন, এটির আরেকটি সুবিধা হল বিদ্যুতের অপচয় রোধ করা। সচরাচর বর্তমানে ট্রাফিক যে সিগন্যালগুলো আছে সেগুলো চারটি বাল্বই জ্বলে থাকে। কিন্তু আমাদের এটি সর্বোচ্চ দুইটি বাল্ব প্রয়োজন অনুসারে জ্বলবে আর নিভবে।

সূত্র: বাংলানিউজ

51
Motivation / Made In Bangladesh spring meet-up
« on: April 12, 2017, 12:22:41 AM »


This year’s meet-up is the same as the previous years, with lots of interactive sessions, scores of new brands and soulful live music.

Who doesn’t love those hilarious, comical drawings in newspapers, where people are drawn with big heads and tiny bodies? Well, here’s your opportunity to live your dream and laugh hard until your stomach aches as you witness your comical rendition put to paper by the talented artists of ‘Cartoon People’.


‘Junk Art’ comes to us with their unique concept, collecting up-cycle materials and putting them together to create appealing household items. Their products have a very rustic look which is an immediate attention grabber.

‘Six Yard Story’ is another one of the stalls available at the meet-up. Here you’ll find ornaments and jewellery made of brass, bronze and metal. Their collection is simple, yet elegant, giving you the extra touch of panache as you don them on.

In addition to the aforementioned there’s Sillious, Wearhouse, Meehee, Alkananda, Glued Together, BuburBayna, Disha's Road Bloc, B's Closett, Sweet Potato, Boobook, Sunbird, Newton’s Archive, Closet de Tatiana, The Brownie Coterie, Proplanters, Stellar, Hems and Huesand much more.

Walking through these stalls, there will come a point when your body will run out of steam that is when Ajo will come to your rescue. Their mouth-watering menu goes well with the setting ambiance created by Made in Bangladesh. The live sessions are a must attend for everyone with spell-bounding music by extremely talented local musicians of the country.

All this and many more; you’ll find in this year’s Spring Meet-Up hosted by MIB. Whether today or tomorrow or the day after, don’t miss out on this event and live the spirit of Made in Bangladesh!

52
To create and develop social and ethical consciousness among the students of Daffodil International University (DIU) a awareness session titled “Social Awareness and Ethical Development of Students” was organized by Complaint Committee to Prevent Sexual Harassment at DIU on April 5, 2017 at Permanent Campus at Ashulia, Savar, Dhaka.

Ms. Shaheen Anam, Executive Director, Manusher Jonno Foundation, was the Keynote Speaker. Ms. Shaheen Anam focused on ‘basic human rights’ and ‘rights of women’. She put emphasis upon how women today have shown that there is nothing they cannot do if given the chances and how they are marching ahead in all professions of every level. She mentioned that despite these achievements there are some stories of repression, killings, bride burning and poverty and there are innumerable women who live their lives in utter misery. She explained the way out of overcoming their situations.
Professor Dr. Md. Golam Mowla Choudhury, Convener, Complaint Committee to Prevent Sexual Harassment at DIU was the session chair. The session was also addressed by Professor Dr. Mostofa Kamal, Dean of Permanent Campus, Dr. Touhid Bhuiyan, Head, Department of Software Engineering, Dr. A. B. M. Kamal Pasha, Head, Department of Environmental Science and Disaster Management (ESDM). A large number of faculty members, administrative officers and students were present in the session. The program followed by an effective interactive session with students.

53


টি-টোয়েন্টি থেকে ইতোমধ্যেই অবসর নিয়ে ফেলেছেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। ঢাকায় আসার পর এতদিন চুপ ছিলেন। কিছুই বলেননি কোনো মিডিয়ায়। তবে এবার মুখোমুখি হয়েছেন ইএসপিএন ক্রিকইনফোর। সেখানে মাশরাফি জানিয়েছেন, তিনি আরও দীর্ঘসময় ওয়ানডে খেলে যেতে চান। অন্তত যতদিন পারেন, ততদিন। একইসঙ্গে কথা বলেছেন মাঠের বাইরের আলোচনা-সমালোচনা নিয়ে এবং নতুন বলের চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে।

প্রশ্ন: যদিও আপনি টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়েছেন। তবে, এখনও ওয়ানডে ক্রিকেটে সামনের মাসগুলোতে আপনার বড় একটি ভূমিকা থাকবে...।

মাশরাফি : আমি সত্যিই ওয়ানডে ক্রিকেট উপভোগ করছি। একই সঙ্গে বলবো, ওয়ানডের তুলনায় টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টিতে আমরা একটু মন্থর গতিতেই এগুচ্ছি। যেখানে ওয়ানডেতে আমরা ১০ নম্বর (আইসিসি র‌্যাংকিং) থেকে দ্রুত ৭ নম্বর অবস্থানে পৌঁছে গেছি। আমরা ইতোমধ্যে অনেক বড় একটি ধাপ অতিক্রম করে ফেলেছি। এটা সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র কিছু খেলোয়াড়ের দারুণ পারফরম্যান্সের কারণে।

আমি ওয়ানডে ক্রিকেট খেলতে ভালোবাসি এবং চাই যতদিন পারা যায় ততদিন খেলে যেতে চাই। তবে এ জন্য কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করা কঠিন। বিশেষ করে বাংলাদেশে। আমি চাই খেলা চালিয়ে যেতে; কিন্তু আমি যদি খারাপ সময় অতিবাহিত করি এবং আমার ওপর যদি চাপ তৈরি হতে থাকে, তাহলে তো অবশ্যই একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিতে হবে।

প্রশ্ন : গত ইংল্যান্ড সফর পর্যন্ত কার্যকর একটি সময় পার করে এসেছেন। এখন কি ২০১৫ সাল থেকে ভিন্ন কোনো কিছু গ্রহণ করবেন?

মাশরাফি : ২০১৫ বিশ্বকাপের পর সত্যি বলতে, আমি নতুন বলে বোলিং করিনি। সম্ভবত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একটা-দুটা ম্যাচে করেছি। খুব অল্পবয়সে যখন আমার ক্যারিয়ারের শুরু, তখন থেকে সবসময়ই আমি বোলিং ওপেন করতাম। সুতরাং, এ বিষয়টার ওপরই নতুন বলে আসলে আমার স্কিল গড়ে উঠেছে। যেকোনো একজন বোলারের স্কিল গড়ে ওঠে মূলত একটা পয়েন্টকে ভিত্তি করেই। মোস্তাফিজ যেমন নতুন বলের তুলনায় আধা-নতুন বলে খুব ভালো। কারণটা হচ্ছে তার কাটার। তাসকিন আর রুবেল ১০ ওভার পরে অনেক বেশি কার্যকর, যখন তারা বাইরে দু’জন অতিরিক্ত ফিল্ডার পেয়ে যায়। সৈয়দ রাসেল, তাপস বৈশ্য এবং মঞ্জুরুল ইসলামরাও সবাই ছিল নতুন বলে ভালো। একই ব্যাপার আমার ক্ষেত্রেও।

আমি হয়তো পুরনো বলে নিজেকে মানিয়ে নিতে পেরেছি। যদিও এটা প্রথম দিকে আমার জন্য কঠিন হয়েছে। এই ভূমিকাটাও আমি উপভোগ করতে শুরু করেছিলাম এবং দলও এ সময়ে এসে সাফল্য পেতে শুরু করেছিল। আমি ভাবলাম, এটাই তো ভালো। ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মোস্তাফিজ শুরুতেই উইকেট পেতে শুরু করলো। এরপর যখন সে ইনজুরিতে পড়লো, আমি আবারও বোলিং ওপেনিংয়ে ফিরে আসলাম। আমার সারাজীবনে এটাই করে গেছি। গত বছর আফগানিস্তানের বিপক্ষে যখন আমি নতুন বলে বোলিং শুরু করলাম, তখন আগের ছন্দটাই ফিরে পেলাম। যেখানে শেষ করেছি, সেখান থেকেই শুরু করলাম।

প্রশ্ন: শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে আপনার প্রথম স্পেলই বলতে গেলে বাংলাদেশের পক্ষে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়। আসলে কিভাবে আপনি শুরুতে এভাবে ব্রেক থ্রু এনে দেয়ার দক্ষতা অর্জন করেছেন?

মাশরাফি: আসলে এটা নির্ভর করে বোলারের আত্মবিশ্বাস এবং সামর্থ্যের ওপর। মানুষ তামিম ইকবালকে অনেকসময় দোষারোপ করে, যদি সে দ্রুত আউট হয়ে যায়, রান করতে না পারে; কিন্তু মনে রাখতে হবে, সে ওয়ানডেতে শুরুতে দুটি নতুন বলের মোকাবেলা করে। এ চ্যালেঞ্জটা গ্রহণ করার সামর্থ্য তার আছে বলেই সে এটা করে যাচ্ছে। আমার ক্ষেত্রে আমি বলবো, আফগানিস্তান সিরিজের সময় আগের বলে শেহজাদ ছক্কা মেরে দিল। পরের বলেই কট বিহাইন্ড করে তার উইকেট তুলে নিলাম। আমার আত্মবিশ্বাস ফিরে এলো। ওই সময় আমি অনুভব করতে শুরু করলাম যে, তাহলে আমিই সেরা এবং এরপর ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও আমি ব্রেক থ্রু এনে দিতে পেরেছি।

সবচেয়ে বড় কথা একজন অধিনায়ক এবং সিনিয়র ক্রিকেটার হিসেবে এটা সাধারণ বিষয় যে, আমাকে অনেক বেশি দায়িত্ব নিতে হবে। খুব আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এটা আমি গ্রহণ করি এবং একে আমি উপভোগও করি বেশ।

প্রশ্ন: বর্তমান সময়ের ট্রেন্ড হলো একেবারে প্রথম ওভার কিংবা প্রথম বল থেকেই ওপেনাররা খুব আক্রমণাত্মক খেলেন। একজন বোলারের জন্য এমন পরিস্থিতিতে নিজের ওপর আস্থা এবং বিশ্বাস ধরে রাখা কতটা কঠিন?

মাশরাফি : আসলে আমার আত্মবিশ্বাস এসেছে মূলত দীর্ঘ ক্যারিয়ার থেকে, যখন থেকে আমি খেলা শুরু করেছি, তখন থেকেই। আমি যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা শুরু করেছি, তখন মনে করতাম, খুব ভয়ঙ্কর কোনো ওপেনার তো সম্ভবত এখন আর নেই। অথচ প্রতিটি দলেই ছিল বিখ্যাত সব ওপেনিং ব্যাটসম্যান। ভারতের ছিল গৌতম গম্ভীর, বিরেন্দর শেবাগ, অস্ট্রেলিয়ার ম্যাথিউ হেইডেন, অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, শ্রীলঙ্কার সনাৎ জয়সুরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার হার্সেল গিবস এবং গ্রায়েম স্মিথ। তবে বর্তমান সময়ের ওপেনাররা টেকনিক্যালি খুব ভালোমানের নয়। এ কারণে আমার কাজটা সহজ হয়ে যায়।

প্রশ্ন: আপনি বলেছেন, ড্রেসিং রুমে কোর্টনি ওয়ালশের উপস্থিতি আপনার জন্য ভিন্ন কিছু। তাহলে কি আপনি আপনার অ্যাপ্রোচে ছোট কোনো পরিবর্তনও এনেছেন তার কাছ থেকে?

মাশরাফি: আমি আমার অ্যাকশনে কখনোই বড় কোনো টেকনিক্যাল পরিবর্তন আনিনি। কখনও আত্মবিশ্বাস কমে গেলে আমি সময় নিয়েছি। তবে আমার কখনোই তেমন বড় কোনো পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়নি। কোর্টনি ওয়ালশ আসার সময় কাকতালীয়ভাবে আমিও নতুন বলে বোলিং শুরু করেছিলাম। তিনি আমাকে আত্মবিশ্বাস ধরে রাখতে সহায়তা করেছেন।

তিনি তার নিজস্ব ভঙ্গিতে একজন বোলারকে কার্যকর করে তোলার চেষ্টা করছেন। তিনি একজন কিংবদন্তি। সুতরাং, যদি আপনি একইবিষয় নিয়ে তার সঙ্গে একের পর এক আলোচনা করে যাচ্ছেন, তখন তিনি এমন কিছু বলবেন, যেটা নিয়ে আপনাকে চিন্তা করতে হবে। এটা আপনাকে আপনার চিন্তার অন্য জগতেও নিয়ে যেতে পারে। আমি সবসময় তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেছি। তাকে অনেক প্রশ্ন করি; কিন্তু আমি জানি, সাফল্য পুরোপুরিই আমার আত্মবিশ্বাসের ওপর নির্ভরশীল, কোনো বড় পরিবর্তনের মধ্যে নয়।

গত বছর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডের সময় তিনি আমাকে বললেন, আজ পাঁচ উইকেট নিতে হবে। আমি হাসিমুখে মাঠে চলে গেলাম এবং ম্যাচ খেলতে গিয়ে পেলাম চার উইকেট। এরপর যখন ড্রেসিংরুমে ফিরে এলাম তখন তিনি আমাকে বললেন, তুমি আমার কথা রাখোনি, এক উইকেট কম নিয়ে এসেছ!

প্রশ্ন: আপনার বোলিংয়ের এমন একটা পয়েন্ট বলুন, যেটা আপনার আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়িয়ে দেয়।

মাশরাফি : উইকেট সবসময়ই আমাকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়ে যায়। তবে প্রথম বল সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, প্রথম বলকে আপনি যেখানে বল ফেলতে চান সেখানে যদি ফেলেন, তাহলে আত্মবিশ্বাস বেড়ে যাবে। এটাই খুব গুরুত্বপূর্ণ। অনিচ্ছাকৃতভাবে ইনসুইং কিংবা আউট সুইংয়ের মধ্যেও অনেক পার্থক্য থাকে, যখন আপনি ইচ্ছা অনুযায়ী নির্দিষ্ট কোনো ডেলিভারি দিতে পারবেন। আপনি চাইলে জেনে-বুঝে এটা দিতে পারেন। তখন উইকেট পাওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। যখন অনিচ্ছাকৃতভাবে কোনো বলে ইনসুইঙ্গার কিংবা আউটসুইঙ্গার হয়ে যায়, তখন সেটা ব্যাটসম্যানের জন্যও অনেকটা অসুবিধাজনক অবস্থায় চলে যায়। তখন তারা বুঝতে পারে না, বলটাতে আসলে কী হতে যাচ্ছে।

আমার ক্ষেত্রে আমি বলবো, যদি প্রথম বলটা অফ স্ট্যাম্পের ওপর রাখতে পারি, ব্যাটসম্যান বাম হাতি কিংবা ডান হাতি যাই হোক, তাহলে আমি আত্মবিশ্বাস ফিরে পাই। এখানে ব্যাটসম্যান বলটাকে ডিফেন্স করলো নাকি অন ড্রাইভ করলো সেটা কোনো ব্যাপার নয়। যদি এটাতে বাউন্ডারি হয়, তখন হয়তো খানিক্ষণের জন্য মন খারাপ হয়, তবে আত্মবিশ্বাস হারাই না। কারণ, বলটা যেখানে চেয়েছি সেখানে ফেলতে পেরেছি। এ কারণে আমি মনে করি প্রথম বলটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।

প্রশ্ন: বাংলাদেশের বোলারদের দীর্ঘদিনের সমস্যা এটা যে- বোলাররা একটি উইকেট পেলে পরের বলটিই করে বসে খুব বাজে। এ সমস্যা নিয়ে কাজ করার বিষয়ে কোন চিন্তা কি আছে আপনার মাথায়?

মাশরাফি: আমি মনেকরি অভিজ্ঞতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটা কমে আসবে। আমাদের হাতে প্রায় অনভিজ্ঞ একটি বোলিং ইউনিট। মোস্তাফিজুর হয়তো খুব অল্পসময়ের মধ্যে অনেক সাফল্য পেয়ে গেছে। এটাকে ধরে রাখার এবং তার সাফল্যের মাত্রাটা বাড়িয়ে নেয়ার দায়িত্ব এখন তার কাছে। প্রতিটি ম্যাচেই পাঁচ উইকেট করে নিক, এমনটাও আপনি তার কাছে আশা করতে পারেন না। কারণ, প্রতিটি প্রতিপক্ষই এখন তাকে নিয়ে অনেক বেশি গবেষণা করে। তারা অনুভব করে মোস্তাফিজকে যদি উইকেট নেয়া থেকে বিরত রাখা যায়, তাহলে আমাদের উইকেট নেয়ার ক্ষমতা অনেকটা কমে গেলো। আমার বিশ্বাস এই বোলাররা, মোস্তাফিজ, তাসকিন এবং রুবেল- অভিজ্ঞতা বাড়ার পাশাপাশি আরও অনেক পরিণত হবে।

বাংলাদেশ দল এখন রয়েছে সঠিক কার্যকরি পরিষদের হাতে। যাদের মধ্যে রয়েছেন কোচিং স্টাফরাও। তারা ক্রিকেটারদের সঠিক পথে পরিচালনা করছেন। তাদেরকে এসব টেকনিক্যাল পয়েন্টগুলো নিয়েও ভাবতে হবে। আমার মনে হয় না, এসব ছোট-খাট বিষয়গুলো দীর্ঘদিন থাকবে। আমাদেরকে এগুলো দ্রুত শোধরানো দরকার।

প্রশ্ন: শ্রীলঙ্কা সফরে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি কে?

মাশরাফি: এটা সম্ভবত মেহেদী হাসান মিরাজ। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের ক্রিকেটে তার অভিষেক হয়েছে এই সফরে। সবেচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো একজন মানুষ হিসেবে তার ইতিবাচক মনোভাব। এটা আমাকে খুব অবাক করেছে।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে যখন আমি (২৬তম ওভারে) ব্যাট করতে নেমেছি, তখন আমি তাকে বললাম ৪১তম ওভার পর্যন্ত টিকে থাকতে। কারণ, আমরা খুব ভালো অবস্থানে ছিলাম না। আমরা অনেকগুলো উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলাম। যখন একটি ওভার মেডেন খেলে ফেললো, সে আমার কাছে আসলো এবং বললো, এভাবে খেলতে পারবে না। আমি জিজ্ঞাসা করলাম, কেন? সে বললো, আমরা হারবো এই ম্যাচে। সেটা দুই রানে হোক আর ১৫০ রানে হোক। ‍সুতরাং, আমাদেরকে আরও ইতিবাচক খেলা উচিৎ। এটা হয়তো আমাদের সামনে জয়ের একটা সুযোগও তৈরি করে দিতে পারে।

পরের ওভারে আমি দুটি বাউন্ডারি মারলাম। এরপর সে আমার কাছে আসলো এবং বললো- এটাই আমাদের খেলা। এভাবেই আমরা খেলবো। আমরা ম্যাচটা হেরেছি সত্য; কিন্তু তার ইতিবাচক অবস্থান আমার খুব ভালো লেগেছে।

পরের দিন রাতে সে আমাদের সামনে কিছু অভিনয় করে দেখাল। অনেকটা ছোটবেলায় সে যেভাবে করতো, তেমনই। এটা ছিল খুবই মজার; কিন্তু আমরা অন্যরা এটা করে দেখাতে পারলাম না। এটা ছিল মাঠের বাইরের ব্যাপার। তবে এখানেও দেখলাম তাকে সে খুব আত্মবিশ্বাসী। আমার বিশ্বাস- এ বিষয়টা তার খেলায়ও বেশ প্রভাব বিস্তার করবে।

প্রশ্ন: গল টেস্টের পর বাংলাদেশ দলে পরিবর্তন নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। এসব কথা-বার্তায় যোগ হয়েছে টি-টোয়েন্টিতে আপনার অবস্থানের বিষয়টিও। আপনি এই ফরম্যাট থেকে অবসর নিয়েছেন। সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে অন্যদের কথাবার্তা আপনাকে কতটা প্রভাবিত করেছে?

মাশরাফি : পৃথিবীর সব মানুষই অন্য মানুষের কিছু কথা নেয়, কিছু কথা ছাড়ে। বিষয় হচ্ছে কে কতটুকু নিল বা ছাড়ল। কেউ ইতিবাচক কথা বেশি নেয়, কেউ নেতিবাচক বিষয় বেশি নেয়। এটা ঠিক, মানুষ যখন নেতিবাচক কিছু বলে তখন সেটা আমার ভেতরেও প্রবেশ করে। তবে আমি বিশ্বাস করি, দিন শেষে সিদ্ধান্তটা আমারই। মাঠের পারফর‌ম্যান্সের ওপর ভিত্তি করেই সব কিছু হবে। কারও কথার ওপর ভিত্তি করে নেতিবাচক মনোভাব চলে আসাটা আমি বিশ্বাস করি না। হ্যাঁ, সে রকম কিছু হলে মানসিক চাপ একটা থাকেই। আমার কথা বলছি না। যার ক্ষেত্রেই হোক, মানসিক চাপ থাকে। তখন আপনিও বুঝবেন মানসিক চাপ তৈরি করে কেউ আপনার বিরুদ্ধে কোনো ক্ষেত্র তৈরি করছে কি না। নাকি আপনি আসলেই খারাপ কিছু করছেন।

Source: Kaler Kantho

Pages: 1 2 3 [4]