Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - Anuz

Pages: 1 ... 3 4 [5] 6 7 ... 47
61
সম্প্রতি মালবাহী জাহাজ স্টেনা ইমপেরো আটক করেছে ইরান, যেটি চলছিল ব্রিটিশ পতাকা নিয়ে। কিন্তু আসলে এই জাহাজটির মালিক একটি সুইডিশ কোম্পানি এবং পুরো জাহাজে কোনো ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন না।কিন্তু এটা অস্বাভাবিক নয়। বরং অনেক সময়েই দেখা যায় যে, জাহাজটি এমন একটি দেশের পতাকা নিয়ে চলাচল করছে, যার মালিক একেবারেই ভিন্ন দেশের লোক।কিন্তু কেন এটা করা হয়? তাতে কি সুবিধা? কেন লাইবেরিয়া, পানামা আর মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী জাহাজ বেশি দেখা যায়?

সাগরে চলাচলকারী প্রতিটি বাণিজ্যিক জাহাজকে কোনো না কোনো দেশে নিবন্ধন করতে হয় এবং সেই দেশের পতাকা ওই জাহাজটি বহন করে। দেশটিকে বলা হয় ফ্ল্যাগড স্টেট। ওপেন রেজিস্ট্রি পদ্ধতিতে, যাকে অনেক সময় ‘সুবিধা অনুযায়ী পতাকা’ বলেও বর্ণনা করা হয়, জাহাজ যেকোনো দেশে তালিকাভুক্ত হতে পারে, জাহাজের মালিক অন্য দেশের হলেও তাতে কোন সমস্যা নেই। তবে অন্য পদ্ধতিগুলোয় পতাকার বিষয়ে বেশ কড়াকড়ি রয়েছে, এসব জাহাজের মালিক কে হতে পারবে এবং কিভাবে জাহাজ পরিচালনা করা হবে। যে দেশে নিবন্ধন করা হয়, সে দেশের আইনকানুন জাহাজটিকে মেনে চলতে হয়।

পানামা, মার্শাল আইল্যান্ড আর লাইবেরিয়া হচ্ছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ফ্ল্যাগ স্টেট বা পছন্দের পতাকার দেশ। যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যিক জাহাজের তালিকায় প্রায় তেরশো জাহাজ তালিকাভুক্ত রয়েছে।এই লাল পতাকার ব্যানারের দলে যুক্তরাজ্য, ক্রাউন ডিপেন্ডেনসিস (আইল অফ ম্যান, গার্নসে, এবং জার্সি) এবং যুক্তরাজ্যের ওভারসিজ টেরিটরি (অ্যানগুলিয়া,বারমুডা, দ্যা ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, দ্যা কেইম্যান আইল্যান্ড, দ্যা ফকল্যান্ড আইল্যান্ড, জিব্রাল্টার, মন্টসেরাত, সেন্ট হেলেনা এবং দ্যা টার্ক ও কাইকোস আইল্যান্ড) মিলে বিশ্বের নবম বৃহত্তম জাহাজ বহরে পরিণত হয়েছে।

ম্যারিটাইম নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ আয়োনিস চাপসোস জানান, ‘অনেকগুলো বাণিজ্যিক কারণ বিবেচনায় রেখে জাহাজ মালিকরা নিবন্ধন করার দেশটিকে বাছাই করেন। এসবের মধ্যে রয়েছে সেখানকার আইনকানুন, করের হার, সেবার মান। গ্রীস হচ্ছে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় জাহাজ মালিকের দেশ। কিন্তু সেখানকার বেশিরভাগ জাহাজই গ্রীসের পতাকা বহন করে না। এর একটি বড় কারণ, সেখানে অনেক বেশি অংকের ট্যাক্স দিতে হয়। বরং ফ্ল্যাগ স্টেট, অনেক সময় দেখা যায় যেগুলো একটু গরীব দেশ, তারা জাহাজ নিবন্ধন করে অর্থ আয় করার সুযোগ পায়। যেমন জাহাজ নিবন্ধন খাত থেকে পানামার অর্থনীতিতে প্রতিবছর কোটি কোটি ডলার যোগ হয়। এখানকার নিবন্ধন পদ্ধতির কারণে বিশ্বের যেকোনো স্থান থেকে জাহাজের কর্মীদের নিয়োগ দেয়া যায়, যা কোম্পানির খরচও অনেক কমিয়ে আনে।

এই ‘সুবিধা অনুযায়ী পতাকা’ পদ্ধতির অনেক সমালোচনা রয়েছে, বিশেষ করে এর দুর্বল নিয়মাবলী আর তদারকির অভাব, যা এমনকি অনেক সময় আন্তর্জাতিক জাহাজ চলাচলের নিয়মের বিরুদ্ধে চলে যায়। যদিও গত তিন দশক ধরে জাহাজ চলাচলের রীতিনীতির বিশেষ উন্নতি ঘটতে দেখা গেছে। তবে এখনো এই ব্যবস্থার অনেক সমালোচনা করা হয়। ভিন্ন দেশের পতাকাবাহী হওয়ার কারণে অনেক সময় মজুরি বৈষম্য বা খারাপ কাজের পরিবেশর জন্য মালিকের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়ে, বলছে আন্তর্জাতিক ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কাস ফেডারেশন।

কোন দেশে নিবন্ধন করার পর পতাকা বহনের পাশাপাশি ওই জাহাজের ওপর ওই দেশের আইন কার্যকর হবে। পতাকাবাহী জাহাজের কোনো অপরাধের জন্য দায়দায়িত্ব বহন করবে যে দেশে তালিকাভুক্ত হয়েছে, সেই দেশটি। যার মানে হলো নিবন্ধন দেয়ার সময় প্রতিটা জাহাজকে জরিপ এবং যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড নিশ্চিত করতে হবে, বলছে আইএমও।

যেসব দেশে জাহাজ তালিকাভুক্ত হয়, প্রতিটা দেশই আন্তর্জাতিক ম্যারিটাইম চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে এবং চুক্তির শর্তগুলো বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিয়েছে। যেসব বিধিবিধানের মধ্যে রয়েছে জাহাজ কিভাবে তৈরি হবে, নকশা, সরঞ্জাম এবং কিভাবে জাহাজটি পরিচালিত হবে ইত্যাদি। জাতিসংঘের কনভেনশন ফর দি ল অফ দি সী অনুযায়ী, সমুদ্রে চলাচলের সময় জাহাজে যেন সবরকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে, সেটা নিশ্চিত করবে নিবন্ধন করা দেশটি, যাদের পতাকা ওই জাহাজে রয়েছে।

এটা খুব অস্বাভাবিক ব্যাপার নয় যে, কোনো একটা দেশে জাহাজ নিবন্ধন এবং ওই দেশের পতাকা জাহাজটি বহন করলেও, এই নিবন্ধনের পুরো কাজটি হয়ত করা হচ্ছে আরেকটি দেশে। লাইবেরিয়ার উদাহরণ দেখা যাক, যেখানে জাহাজ নিবন্ধনের কাজটি করে একটি আমেরিকান কোম্পানি, যাদের সদর দপ্তর ওয়াশিংটন ডিসিতে। ভূমিবেষ্টিত মঙ্গোলিয়ার নিবন্ধন দপ্তর সিঙ্গাপুরে অবস্থিত। কোমোরোসের নিবন্ধন হয় বুলগেরিয়া থেকে। ভানুয়াতুর জাহাজ নিবন্ধন অফিস রয়েছে নিউইয়র্কে। জাহাজ নিবন্ধনের এই অস্বাভাবিক পদ্ধতি অনেক সময় নিরাপত্তা ঝুঁকিরও তৈরি করে। চাপসোস বলেন, ‘নিবন্ধনকারী কোনো দেশের পক্ষে তালিকাভুক্ত হওয়া সব জাহাজকে নিরাপত্তা দেয়া সম্ভব নয়, যদিও ওই জাহাজটি হয়ত ওই দেশেরই একটি বর্ধিত অংশ। আর এটা সেসব দেশের জন্য আরো কঠিন যাদের হয়তো ছোট আকারের নৌবাহিনী রয়েছে।

62
খোঁয়াড় জমির ফসল অথবা বসতবাড়ির বাগান বিনষ্টকারী গবাদিপশু আটক রাখার গারদ বিশেষ। ফসল বিনাশ করার আশঙ্কা রয়েছে এমন অবাধ বিচরণকারী গবাদিপশুও খোঁয়াড়ে আটক রাখা হতো। গ্রামীণ প্রতিষ্ঠান ‘খোঁয়াড়’ ফার্সি শব্দ। এর অর্থ ইতস্তত বিচরণশীল উচ্ছৃঙ্খল গবাদি পশু। বিশ শতকের চল্লিশের দশক অবধি সাধারণত গ্রামবাংলায় গ্রামীণ সমাজ কর্তৃক এই প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হতো। মুগল আমলে যখন সরকারি আয়ের প্রধান উৎস ছিল কৃষি, তখন জমির ফসল রক্ষার ক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠানটি বিশেষ গুরুত্ব পায়। এ সময়ের অর্থনীতিতে গবাদিপশুর ভূমিকাও ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

সরকার এবং জমিদারদের অনুমতি নিয়ে প্রায় প্রত্যেক গ্রামেই খোঁয়াড় ব্যবস্থা গড়ে ওঠে। এর উদ্দেশ্য ছিল গবাদিপশুর কবল থেকে জমির ফসল ও বসতবাড়ির বাগান রক্ষা করা। খোঁয়াড় ব্যবস্থায় গবাদিপশু কর্তৃক ফসল হানিতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট গবাদিপশু খোঁয়াড়ে আটক রাখতে পারতেন। এক্ষেত্রে যতদিন গবাদিপশুর মালিক ফসলের ক্ষতিপূরণ না দিতেন ততদিন ওই গবাদিপশু খোঁয়াড়ে আটক রাখা হতো। খোঁয়াড়ের ব্যবস্থাপক খোঁয়াড়ে আটক গবাদিপশু ফিরিয়ে নেয়ার জন্য পশুর মালিককে খবর পাঠাতেন। গ্রামের মাতাব্বর শ্রেণির প্রবীণ ব্যক্তিদের দ্বারা ধার্যকৃত জরিমানা প্রদান করে মালিক তার গবাদিপশু ছাড়িয়ে নিতে পারতেন।

গবাদিপশু কর্তৃক শস্যক্ষেত্র এবং বসতবাড়ির বাগান বিনাশ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে খোঁয়াড় পদ্ধতি ছিল একটি মোক্ষম প্রতিরোধ ব্যবস্থা। গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তিবর্গের সমন্বয়ে একটি খোঁয়াড় ব্যবস্থাপনা কমিটি গঠিত হতো। জরিমানার অর্থে খোঁয়াড়ের ব্যয় নির্বাহ করা হতো। এছাড়াও যে কৃষক তার গবাদিপশুকে আর্থিক বা অন্য কোনো কারণে খাবার দিতে সক্ষম ছিল না, সেক্ষেত্রে খোঁয়াড়ে সেসব পশুর খাবারের ব্যবস্থা করা হতো। অন্যদিকে পশুর মালিক গ্রাম থেকে দূরে কোথাও গেলে তাদের গবাদিপশু খোঁয়াড় কমিটির তত্ত্বাবধানে রেখে যেতে পারতেন। গ্রামে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে খোঁয়াড়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে গবাদিপশু চুরি বা ফসল নষ্টের মতো কিছু অপরাধকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়। গ্রামের চৌকিদার খোঁয়াড় কমিটির সদস্য থাকত। তবে কৃষি ও উৎপাদন ব্যবস্থার ব্যাপক পরিবর্তনের ফলে বর্তমানে এ ব্যবস্থা অনেকটা বিলুপ্তির পথে।

63
ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শেষ বেলায় বড় ধাক্কা খেলেন টাইগার কাপ্তান মাশরাফি বিন মর্তুজা। হঠাৎ করে সব কিছুতেই ধ্বস নেমেছে তার। বিশ্বকাপে বাজে পারফরমেন্সের কারণে আকাশ প্রিয় জনপ্রিয়তা কমেছে। এদিকে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান ঢাকা ডায়নামাইটস থেকে রংপুর রাইডার্সে নাম লেখায় বড় বিপাকে পড়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের মীমাংসিত সেরা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।

সদ্য সমাপ্ত ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে মাশরাফি বিন মর্তুজার উল্টো ছিলেন সাকিব আল হাসান। বিশ্বকাপের আট ইনিংসে দুই সেঞ্চুরি আর পাঁচ ফিফটিতে ৬০০ এর উপরে রান। বল হাতে তার উইকেট সংখ্যা দুই ডিজিটের। উল্টো দিকে মাশরাফি উইকেট পেয়েছেন মাত্র একটি। তার চেয়ে বড় কথা ৮ ম্যাচে নির্ধারিত দশম ওভারের কোটাও পূরণ করেনি তিনি।

তাই স্বাবাভিকভাবে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সাকিবকে সবাই দলে ভিড়াতে চাইবে। আর সেই সাকিবকেই ঢাকার ঘর থেকে ছুটিয়ে নিয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপের ফ্রাঞ্চাইজিং রংপুর রাইডার্স। তার কারণেই কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে মাশরাফি বিন মর্তুজার বিপিএল সপ্তম আসরের ভবিষ্যৎ নিয়ে।

সাকিব যদি রংপুর রাইডার্সে খেলেন তাহলে মাশরাফি যাবেন কোথায় কিন্তু বিপিএলে মাশরাফির সাফল্য সোনায় মুড়িয়ে রাখার মত। গত ছয় আসরের চারটিতে ট্রফি উঠেছে তার হাতে। প্রথম দুইবার ঢাকা গ্লায়াডিয়েটরসের ক্যাপ্টেন তিনি। জিতেছেও শিরোপা। তৃতীয় সংস্করণে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ক্যাপ্টেন হয় অসাধ্য সাধন করে জিতেছে শিরোপা। আর পঞ্চম সংস্করণে বসুন্ধরা মালিকাধীন রংপুর রাইডার্সের শিরোপা সাফল্যে নেপথ্য মাশরাফির ক্যাপ্টেন্সি। রাইডার্সকে টানা দুই মৌসুম দিয়েছেন সার্ভিস। দলের সাফল্যের সঙ্গে নিজের পারফরম্যান্সও কম নয়। এই দুই মৌসুমে মাশরাফি নিয়েছেন ৩৭ উইকেট। তখনকার সময়ে গেইল-ভিলিয়ার্সরা বিপিএলে প্রশংসা করেছিলেন মাশরাফির ক্যাপটেন্সি নিয়ে।

রাজধানী ঢাকায় ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে বিপিএলের পঞ্চম সংস্করণে ফাইনালে উপস্থিত দর্শকের অধিকাংশ সমর্থন পেয়েছে রংপুর রাইডার্স কারণ অবশ্য এই মাশরাফি। মাশরাফিকে ঘরের ছেলে হিসেবে সপ্তম আসরেও দেখা যাবে রংপুর রাইডার্সে এমনটাই মিডিয়াকে জানানো হয়েছিল ফ্রাঞ্চাইজিং রংপুর রাইডার্স এর পক্ষ থেকে। আর তারই ধারাবাহিকতায় মাশরাফির সাথে আগে ভাগেই চুক্তি হয়েছিল তাদের। অথচ বিশ্বকাপে মাশরাফির বাজে পারফরমেন্স ও ইনজুরির সুযোগ নিয়েছে রংপুর রাইডার্স। মাশরাফিকে না জানিয়েই আইকন হিসেবে সাকিবকে দলে নিয়েছে তারা।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সপ্তম আসরে থাকছে না চিটাগং ভাইকিংস তা জেনে নিজের ভবিষ্যৎ গড়তে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সে যোগ দিয়েছে মুশফিক। আর কুমিল্লা ছেড়ে খুলনায় যোগ দিয়েছে তামিম ইকবাল। তাহলে আইকন মাশরাফি ও মাহমুদুল্লাহর নতুন ঠিকানা এখন কোথায়? ইনজুরির কারণে দুজন পড়েছেন শঙ্কায়। এ অবস্থায় তাদের সামনে দুটি পথ খোলা। রাজশাহী কিংস অথবা সম্ভাব্য নতুন দল বরিশাল বুলস। তবে ক্যারিয়ারের শেষ সময় এসে বড় ধাক্কা খেতে হল ক্যাপ্টেন রাজা মাশরাফিকে।

64
টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ডটা এতদিন দখলে ছিল ক্রিস গেইলের। এবার ক্যারিবীয় এই ব্যাটিং দানবকে পেছনে ফেলে সর্বাধিক ছক্কার রেকর্ডে সবার শীর্ষে পৌঁছেছেন রোহিত শর্মা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টির পর রোহিতের মোট ছক্কা ১০৭টি!

ফ্লোরিডায় দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৫১ বলে ৬৭ রান করেন রোহিত। তাতে ছিল ৬টি চার ও ৩টি ছক্কার মার। সুনীল নারিনকে মিড উইকেটে ছয় মেরে গেইলকে টপকে যান তিনি।

রোহিত ৯৬টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে সবার উপরে রয়েছেন। তার আগে শীর্ষে থাকা গেইল ৫৮টি ম্যাচ খেলে ১০৫ টি ছয় নিয়ে রোহিতের পরেই রয়েছেন। এই তালিকায় ১০৩ ছয় নিয়ে তৃতীয় মার্টিন গাপটিল।

সর্বাধিক ছক্কা হাঁকানো রোহিতের ইনিংসের সমাপ্তি ঘটান ওশানে থমাস। ৬৭ রানে তাকে বিদায় দেন ক্যারিবীয় পেসার।

সর্বাধিক ছক্কা হাঁকানো রোহিত সংক্ষিপ্ত এই ফর‌ম্যাটে আগে থেকেই আরেকটি রেকর্ডের মালিক। টি-টোয়েন্টির সর্বাধিক রান সংগ্রহটা ভারতীয় ওপেনারেরই। একই সঙ্গে এই ফরম্যাটে সর্বাধিক সেঞ্চুরির রেকর্ডটিও তার। রয়েছে চারটি সেঞ্চুরি।

65
অনেক কারণেই রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। দেহে সুগারের মাত্রা বেড়ে গেলে নানা ধরণের লক্ষণে তা প্রকাশ পায়। অনেকে হয়তো এইসকল ব্যাপার জানেন না বা জানলেও লক্ষ্য করেন না। কিন্তু সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে দেহে কখন সুগার বেড়ে যাচ্ছে তা লক্ষ্য করা অনেক জরুরী।

রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরে কী ধরণের সমস্যা হয়, সে সম্পর্কে আমরা কম-বেশি সকলেই জানি। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ, যা ক্রমশ মানুষের অসুস্থতা বাড়িয়ে তোলে। এই অসুখের ক্ষেত্রে সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক ব্যপার হল, ওষুধ, নিয়ম মেনে খাওয়া-দাওয়া আর শরীরচর্চা করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে ঠিকই, কিন্তু তা কোনও ভাবেই পুরোপুরি নিরাময় করা যায় না। সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে শরীরে সুগার বেড়ে যাওয়ার প্রধান লক্ষণগুলি আগে চেনা প্রয়োজন। এই লক্ষণগুলি চিনতে পারলেই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগেভাগেই সতর্ক হওয়া সম্ভব। আসুন জেনে নেওয়া যাক, শরীরে সুগারের মাত্রা বেড়ে গেলে ঠিক কী কী লক্ষণ প্রকাশ পায়...

১) খুব অল্পতেই হাঁপিয়ে ওঠা রক্তে সুগারের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার একটি অন্যতম লক্ষণ। রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে গেলে শরীরে পর্যাপ্ত পানির অভাব হয়। আর ডিহাইড্রেশনের ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে।

২) চিকিৎসকদের মতে, রক্তে শরীরে সুগারের মাত্রা বেড়ে গেলে তা কিডনির উপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করতে থাকে শরীর থেকে সুগার বের করে দেওয়ার জন্য। সে জন্যই ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ অনুভূত হয়।

৩) ডায়েট বা ব্যায়াম না করেই হুট করে অনেক বেশি ওজন কমতে থাকা শরীরে সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ।

৪) হাত ও পায়ের আঙুল বা পুরো হাত অবশ বোধ করা রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার অন্যতম একটি লক্ষণ। পরিস্থিতি মারাত্মক পর্যায়ের পৌঁছে গেলে তখন এই লক্ষণ প্রকাশ পায়।

৫) যখন শরীর থেকে অতিরিক্ত সুগার বাইরে বের করে দেয়ার জন্য কিডনিতে চাপ পড়ে, তখনই ঘন ঘন প্রস্রাব পায়। এই সময় কিডনি শরীরের কোষ থেকে ফ্লুইড নিতে থাকে। এর ফলে শরীরে জলের ঘাটতি হতে থাকে, তাই ঘন ঘন জল তেষ্টা পায়।

৬) শরীরে সুগারের মাত্রা বেড়ে গেলে তার আমাদের দৃষ্টিশক্তির উপরেও কুপ্রভাব পড়ে। এর ফলে দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা তৈরি হয়।

৭) শরীরের কোনও অংশে কেটে বা ছড়ে গেলে তা না শুকানো এবং শুকাতে অনেক বেশি সময় লাগার বিষয়টিও শরীরে সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ। এই সব লক্ষণ দেখা গেলে অবহেলা না করে যত দ্রুত সম্ভব চিকিত্সকের পরামর্শ মেনে রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া উচিত।

66
কোমল পানীয় সববয়সী মানুষই পান করে থাকেন। এমনকি খাওয়া-দাওয়ার পরে কোমল পানীয় এক ধরনের ঐতিহ্যে রূপ নিয়েছে। বিশেষ করে তরুণরা একে ফ্যাশন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। কিন্তু আমরা জানি না যে, নিজের অজান্তেই শরীরের কত বড় ক্ষতি করছি। তাই জেনে নিন কোমল পানীয়ের ক্ষতিকর দিকসমূহ। বিস্তারিত জানাচ্ছেন মো. বিল্লাল হোসেন-

ক্যান্সার: কোমল পানীয়তে ক্যারামেল কালার ব্যবহার করা হয়, যা কারসিনোজেন (ক্যান্সার সৃষ্টিকারী পদার্থ) হিসেবে কাজ করে। এটি সাধারণত টিনের ক্যানে সংরক্ষণ করা হয়। এ ক্যান বিসফেনল নামক কারসিনোজেনের উৎস। অর্থাৎ কোমল পানীয় ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।

স্থূলতা: কোমল পানীয়তে রয়েছে প্রক্রিয়াজাত চিনি, যা শরীরের স্থূলতা বাড়াতে সহায়তা করে। অনেকে স্থূলতা বাড়ানোর জন্যই কোমল পানীয় গ্রহণ করে থাকেন।

দাঁতের ক্ষয়:
অতিরিক্ত চিনি মুখের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ভেঙে অ্যাসিড তৈরি করে। এই অ্যাসিড দাঁত ক্ষয়ের মূল কারণ।

ডায়বেটিস: কোমল পানীয়ের চিনি হঠাৎ করেই রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে টাইপ-টু ডায়বেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। আমেরিকান ডায়েট অ্যাসোসিয়েশনের গবেষণা অনুযায়ী, নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার মাধ্যমে এ ঝুঁকি কমানো সম্ভব। তবে পুরোপুরি নাকচ করা সম্ভব হয় না।

হৃদরোগ: গবেষণা বলছে, কোমল পানীয় ‘মেটাবলিক সিন্ড্রোম’ বা বিপাকীয় প্রক্রিয়ার বিভিন্ন সমস্যার ঝুঁকি বাড়ায়। যা ক্রমেই ঠেলে দেয় হৃদরোগের দিকে। কারণ এতে যে চিনি রয়েছে, তা আপনার ক্ষুধা কমিয়ে দেবে। এমনকি ফল-মূল ও শাক-সবজি খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেবে। যারা নিয়মিত কোমল পানীয় নেন, তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশি।

হাড় ক্ষয়: কোমল পানীয়তে রয়েছে ফসফরিক অ্যাসিড, যা ক্যালসিয়াম মেটাবলিজমে বাধা দেয় এবং হাড় ক্ষয় তরান্বিত করে।

কিডনি রোগ: ফসফরিক অ্যাসিড মূত্রনালীর বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করে এবং কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

আসুন কোমল পানীয় পরিহার করি। ফল-মূল দিয়ে তৈরি জুস পান করি। পরিমিত পানি পান করি। সুস্থ-সুন্দর জীবনযাপন করি।

67
ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ১৬৮৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে ৯৯২ জনই রাজধানীতে। সব মিলিয়ে চলতি বছর এ পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ হাজার ২৩৫ জন। সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ১৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হলেও বেসরকারি হিসাবে এ সংখ্যা অর্ধশত ছাড়িয়ে গেছে। প্রকোপ বাড়ার পাশাপাশি পরিবর্তন হয়েছে ডেঙ্গুর ধরন ও লক্ষণের। আগে ডেঙ্গু হলে জ্বর অনেক বেশি জ্বর হতো। তবে এখন তেমনটি হচ্ছে না। এছাড়া কিছু নতুন লক্ষণ দেখা দিয়েছে।

ডেঙ্গুর বিষয়টি মানুষ জানলেও এর যে গতি-প্রকৃতিতে পরিবর্তন হচ্ছে, সে সম্পর্কে সচেতনতা নেই অনেকের। কাজেই সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন ও সতর্ক থাকতে হবে। এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ডা. মতলেবুর রহমান।

ডা. মতলেবুর রহমান বলেন, ডেঙ্গুজ্বরের লক্ষণে অনেক পরিবর্তন এসেছে। যে কারণে অনেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার পরেও বুঝতে পারে না। তিনি বলেন, আমাদের দেশে ২০০০ সাল থেকে বেশি দেখা গেছে। টাইপ ওয়ান সেরোটাইপ দিয়ে তখন ডেঙ্গুটা হতো। ডেঙ্গু জ্বরের আসলে চারটি সেরোটাইপ রয়েছে। টাইপ ওয়ান, টাইপ টু, টাইপ থ্রি, টাইপ ফোর। এবার যেটি হচ্ছে ডেঙ্গু টাইপ থ্রি দিয়ে জ্বরটা বেশি হচ্ছে। এ বছর জ্বর অন্য বছরের চেয়ে কিছু পার্থক্য রয়েছে। আসুন জেনে নেই ডেঙ্গুজ্বরের নতুন লক্ষণ।

১. আগে প্রচণ্ড শরীর ব্যথা, র‍্যাশ, চোখে ব্যথা হলে আমি ডেঙ্গু জ্বর হয়েছে বলে ধারণা করতে পারি।

২. তবে এখন খুব একটা জ্বর নাই।

৩. জ্বর খুব বেশি না হলেও শুধু জ্বর জ্বর ভাব।

৪. শরীরে হালকা একটু দুর্বলতা।

৫. বমি হচ্ছে বা কারো হয়তো শুধু মাথাব্যথা।

৬. মানুষের মধ্যে একটি আতঙ্ক ছিল ডেঙ্গু হলে রক্ত দিতে হয়। প্লাটিলেট দিতে হয়। এ বছর বিষয়টি সম্পূর্ণ পরিবর্তন হয়ে গেছে।

৭. এ বছর দেখা গেছে, যারা মারা গেছেন বা ডেঙ্গুতে জটিলতায় ভুগছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা পানি স্বল্পতায় ভুগছেন। এ কারণে ডেঙ্গুর শক সিনড্রোম হচ্ছে।

৮. এখন ডেঙ্গুতে শরীর থেকে প্রচুর তরল বের হয়ে শরীরের ভেতরেই রয়ে যাচ্ছে। এটি রক্তনালি থেকে বাইরের দিকে চলে যাচ্ছে তরলটা। তখন প্রেশার কমে যাচ্ছে। এর ফলে হালকা দুর্বলতা লাগে। দুর্বলতা হওয়ার কারণে তিনি হয়তো চিকিৎসকের কাছে যাচ্ছেন না। তার প্রেশার কমে যাওয়ার কারণে শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ- প্রত্যঙ্গে সঞ্চালন কম হচ্ছে।

উপরের লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

68
বিরাট কোহলিদের হেড কোচ রবি শাস্ত্রীই আবার ভারতের কোচ হতে পারেন। চলতি মাসের শেষ দিকে তাঁর চুক্তির মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হতে পারে, এমনটাই জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম। কোচ নির্বাচক কমিটির তিন সদস্যের একজন অংশুমান গায়কোয়াড়ও এর আগে শাস্ত্রীর টিকে যাওয়ার ইঙ্গিত-ই দিয়েছেন।

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড এরই মধ্যে কোচ চেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজ্ঞাপন দিয়েছে। বিরাট কোহলিদের কোচ হওয়ার জন্য আবেদন পড়েছে ২ হাজার। বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই। এমন একটি দলের কোচ হতে কে না চাইবেন! লোভনীয় পদটির জন্য ক্রিকেট বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আবেদন করেছেন ২ হাজার কোচ। গতকালই শেষ হয়েছে আবেদন করার শেষ সময়।

ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের কোচ হতে আবেদন করেছেন টম মুডি, নিউজিল্যান্ডের সাবেক কোচ মাইক হেসন ও শ্রীলঙ্কার সাবেক অধিনায়ক মাহেলা জয়াবর্ধনে। আর ভারতীয়দের মধ্যে বি শাস্ত্রী ছাড়া উল্লেখ করার মতো নাম আছে দুটি—রবিন সিং ও লালচাঁদ রাজপুত। ভারতের কোচ হিসেবে বিসিসিআই যে ধরনের যোগ্যতা চেয়েছে, আবেদনকারীদের মধ্যে শাস্ত্রী ছাড়া শুধু একজনেরই সে ধরনের যোগ্যতা রয়েছে—টম মুডি। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক এ ক্রিকেটার এখন ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) ক্রিকেট পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। আইপিএলে ফ্র্যাঞ্চাইজি দলেও কোচের দায়িত্বে ছিলেন। মুডি জাতীয় দলে সবশেষ কোচের দায়িত্বে ছিলেন ২০০৭ সালে (শ্রীলঙ্কা)।

শুধু প্রধান কোচই নয়, বিসিসিআই বিভিন্ন বিভাগের জন্য বিশেষজ্ঞ কোচও নেবে। ভারতের ফিল্ডিং কোচ হতে আবেদন করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক তারকা ফিল্ডার জন্টি রোডস। ভারতীয় দল এই মুহূর্তে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ দিয়ে শুরু হবে সফর। এরপর খেলবে তিন ওয়ানডের সিরিজ। কোহলিদের লম্বা সফরটি শেষ হবে দুই টেস্টের সিরিজ দিয়ে। এই সফরের জন্যই রবি শাস্ত্রীসহ ভারতের কোচিং স্টাফদের সবার মেয়াদ ৪৫ দিন বাড়ানো হয়েছে।

69
সবচেয়ে সহজলভ্য হলো কলা। রাস্তার আশপাশের চা এর দোকানে তাকালেই দেখা মিলে কলার। রাস্তায় হাঁটছেন, কলা দেখেই খেয়ে নিচ্ছেন দুটি। অফিস থেকে ফেরার পথে এক কাঁদি কলা হাতে ঢুকছেন বাসায়। এ দৃশ্য সচরাচর সর্বত্রই দেখা যায়।  সকালের নাস্তার টেবিলে অনেকেই  রাখছেন কলা। বাচ্চাদেরকেও কলা খাবার তাগিদ দিচ্ছেন। আমরা প্রতিনিয়ত যে এতো কলা খাচ্ছি, আসলে কি আছে কলায়? চিন্তা করেছেন কখনও? জেনেছেন কখনও কলার গুণাগুণ। আসুন জেনে নেই কলার গুণাগুণ।গুণে সমৃদ্ধ ফল হলো কলা। এর পুষ্টিগুণ অধিক। এতে রয়েছে দৃঢ় টিস্যু গঠনকারী উপদান যথা আমিষ, ভিটামিন এবং খনিজ। কলা ক্যালরির একটি ভাল উৎস। এতে কঠিন খাদ্য উপাদান এবং সেই সঙ্গে পানি জাতীয় উপাদান সমন্বয় যে কোনো তাজা ফলের তুলনায় বেশি।

প্রতি ১০০ গ্রাম পরিমাণ কলার খাদ্যগুণ
পানি ৭০.১%, আমিষ  ১.২%, ফ্যাট (চর্বি) ০.৩%, খনিজ লবণ ০.৮%, আঁশ  ০.৪%, শর্করা ৭.২%, ক্যালসিয়াম ৮৫ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ৫০ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স ৮ মিলিগ্রাম এবং ভিটামিন-সিও রয়েছে কলায়। কলা যখন অতিরিক্ত পেকে যায় এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পরিমাণ বহুগুণ বেড়ে যায়। শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কলা শরীরে শক্তি যোগায় এবং বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। এবার জানা যাক কলার বিস্তারিত গুণাগুণ :

কর্মশক্তি যোগায়
কলার মধ্যে থাকা তিন ধরনের প্রাকৃতিক চিনির শক্তিশালী মিশ্রণ (ফ্রুক্টোজ, গ্লুকোজ এবং সুক্রোজ) আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখে এবং আপনাকে যোগান দেয় দিনের প্রয়োজনীয় কর্মশক্তি। প্রতিদিনের খাবারে রাখুন কলা এবং যখন অতিরিক্ত ঘর্মাক্ত হয়ে দুর্বল অনুভূব করেন তখনই কলা খাবেন। শরীরে বল আসবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
কলার মধ্যে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সহায়তা করে। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকায় পেট পরিষ্কার করতে সহায়তা করে। প্রতিদিন ২টি করে কলা খেলে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হবে। এ ছাড়া হজম শক্তিও বাড়ায় কলা।

শরীরে প্রোবায়টিকের যোগান দেয়
প্রোবায়টিকের একটি অন্যতম প্রাকৃতিক উৎস হলো কলা। এতে রয়েছে ফ্রুক্টোওলিগোস্যাকারাইড (FOS) যা দেহে উপকারী ব্যাক্টেরিয়া বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। আমাদের দেহের অন্ত্রে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রোবায়টিক গ্রহণ করা প্রয়োজন।

উচ্চ রক্তচাপ কমায়
কলায় থাকা উচ্চমাত্রার পটাসিয়াম ও নিম্নমাত্রার সোডিয়াম শরীরের রক্ত চাপ কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া হৃদরোগের জন্য কলা অত্যন্ত সহায়ক। স্ট্রোক প্রতিরোধের জন্যেও কলা উপকারী। উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে প্রতিদিন ২টি কলা খেতে পারেন।

রক্তস্বল্পতা দূর করে
কলায় থাকা আয়রন রক্ত কোষকে উজ্জীবিত করে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে থাকে। যা রক্তস্বল্পতা দূর করে। এর ফলে অ্যানিমিয়ার সম্ভাবনা কমে। এমনকি অ্যানিমিয়া সারাতেও সাহায্য করে কলা।

স্নায়ুকে শান্ত করে
কার্বোহাইড্রেটে পরিপূর্ণ হওয়ায় কলা রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রেখে স্নায়ুবিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। কলায় থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-বি যা স্নায়ুকে শান্ত করে।

দুশ্চিন্তা দূর করে
মানসিক চাপ কমায় এবং একইসঙ্গে মানসিক কর্মদক্ষতাও বৃদ্ধি করে কলা। তাই যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বা স্ট্রেসফুল কাজ শুরু করার পুর্বে একটি কলা খেয়ে নিতে পারেন, অনেক উপকার পাবেন।

পরিশ্রম ও ব্যায়ামে শক্তি যোগায়
বড় ধরনের শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়ামে শক্তি যোগায় কলা। এটি শরীরের পেশি, লিগামেন্ট ও রগ শক্তিশালী করে তোলে। যেহেতু এটি শারীরিক পরিশ্রমে প্রচুর সহায়তা করে, তাই ব্যায়াম করার পূর্বে কলা খাওয়া অত্যন্ত উপকারী।

ঘুমের জন্য সহায়ক
কলায় ট্রিপটোফেন নামক এক প্রকার অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে যা সেরোটিন নামক হরমোন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই হরমোন ঘুমের জন্য সহায়ক।

ওজন কমাতে সাহায্য করে
অধিক ক্যালরি সম্পন্ন খাবারের বিকল্প হিসেবে কলা খাওয়া হলে তা দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে। মাঝারি আকৃতির একটি কলায় মাত্র ১০৫ ক্যালরি থাকে। এছাড়াও কলাতে রয়েছে ক্রোমিয়াম নামক খনিজ পদার্থ, যা বিপাক ক্রিয়ায় সহায়তা করে।

ধূমপান ছাড়তে সহায়তা করে
ধূমপান ছাড়তে চাইলে বেশি করে কলা খান। কারণ কলায় উপস্থিত ভিটামিন বি৬, বি১২, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম শরীর থেকে নিকোটিনের প্রভাব দূর করতে সাহায্য করে। তাছাড়াও কলাতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালিশিয়াম থাকে যা শরীরের হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধির জন্য যথেষ্ট। এছাড়া যারা হাড়ের বা বাতের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের খাদ্যাভাসে কলা রাখতে পারেন। কলায় প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকায় এটি মাথাব্যাথার প্রাকৃতিক নিরাময় হিসেবে কাজ করে।

70
পাটশাক যুগ যুগ ধরে পরিচিত। গ্রাম থেকে শুরু করে শহরের বাজার সর্বত্রই এই শাক পাওয়া যায়। দামও বেশি নয়। পাটশাক দুই নামে পরিচিত। একটি তীতা পাটশাক অন্যটি মিষ্টি পাটশাক। অনেকের কাছেই প্রিয়। পাটশাকের রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। এগুলো মানব দেহের বিভিন্ন রোগের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উপকারী। পাটশাকে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম, আয়রন, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস, সেলেনিয়াম এবং ভিটামিন সি, ই, কে, বি- ৬ এবং নিয়াসিন রয়েছে। এছাড়া পাটশাকে রয়েছে উচ্চমাত্রায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্যারোটিন এবং খাদ্যআঁশ।

প্রতি ১০০ গ্রাম পাটশাকে রয়েছে খাদ্যশক্তি  ৭৩ কিলোক্যালরি, আমিষ ৩.৬ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৯৮ মিলিগ্রাম, লোহা ১১ মিলিগ্রাম ও ক্যারোটিন ৬৪০০ (আইইউ)।এসব পুষ্টি উপাদান রোগবালাই থেকে দূরে রাখে। এবার জেনে নেই পাটশাক আমাদের কি কি উপকার করে :

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
পাটশাকের ভিটামিন এ, ই এবং সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এতে থাকা ভিটামিন সি ও ক্যারোটিন মুখের ঘা দূর করতে সাহায্য করে। তাছাড়া ভিটামিন-সি রক্তের শ্বেত কনিকা বৃদ্ধি করে এবং ভিটামিন-এ, ভিটামিন ই চোখ, হৃদপিণ্ডসহ অন্যান্য অঙ্গের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

হাড়ের ক্ষয় রোধ করে
পাটশাকে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম আছে, যা হাড় ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং হাড়ের ক্ষয় রোধ করে। এতে থাকা আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, সোডিয়াম এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান হাড় গঠন ও ক্ষয়পূরণ করে এবং হাড় ভঙ্গুরতা রোধ করে।

উচ্চ রক্তচাপ দূর করে
পাটশাকে বিদ্যমান উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম রক্তসঞ্চালন ও রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতে সহায়তা করে। যার ফলে উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা দূর হয়। এছাড়া পাটশাক রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সহায়তা করে। নিয়মিত খেলে হার্ট অ্যাটাক এবং ষ্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়।

মুখের রুচি বাড়ায়
এই শাক খাওয়ার রুচি বাড়ায়। মুখের স্বাদ ফিরিয়ে আনে ও মেদ বৃদ্ধির আশঙ্কা কমায়। পাটশাকের তেতো স্বাদ মুখে লালা ক্ষরণ করে শ্বেতসারকে ভাঙতে সাহায্য করে। এতে হজমের সুবিধা হয় ফলে খাবারের রুচি বাড়ে।

নিদ্রাহীনতা দূর করে
পাটশাকে থাকা ম্যাগনেশিয়াম উপাদান শরীরে প্রয়োজনীয় হরমোন উৎপাদন করে যা স্নায়ুতন্ত্র শান্ত রাখে এবং নিরবচ্ছিন্ন নিদ্রা নিশ্চিত করে। তাই ভাল ঘুমের জন্য পাটশাক খেতে পারেন।

হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়ক

এই শাকে প্রচুর পরিমাণ আয়রন থাকে যা রক্তে হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়তা করে। পাটশাকে থাকা আয়রন দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা এবং কর্মদক্ষতাও বৃদ্ধি করে।

হজম শক্তি বড়ায়
পাটশাকে থাকা খাদ্যআঁশ হজম প্রক্রিয়াকে দারুণভাবে ত্বরান্বিত করে আমাদের হজম শক্তি বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। 

বাতের ব্যথা দূর করে
পাটশাকে প্রচুর ভিটামিন-ই রয়েছে। ভিটামিন-ই গেঁটেবাত, আর্থরাইটস এবং প্রদাহ জনিত অন্যান্য রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে। তাই এসব রোগের জন্য পাটশাক একটি গুরুত্বপূর্ণ পথ্য। পাটশাকে থাকা উচ্চমাত্রার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট শরীরে যেকোনো ধরনের ক্যানসার রোধে সহায়তা করে। এতে বিদ্যমান ফলিক অ্যাসিড ত্বক ও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি ডায়াবেটিক ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও মানসিক চাপ দূর করে শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।

71
গ্রীষ্মকালীন ফলের মধ্যে অন্যতম হলো কাঁঠাল। বর্তমান সময়ে বাজারে সহজেই কিনেতে পাওয়া যায় এই ফলটি। জাদুকরী ফল কাঁঠালের গন্ধে অনেকেই নাক সিঁটকান। আর এই ফলটিকে যথাসম্ভব দূরেই রাখেন। তারা অন্তত এবার জেনে নিন এই ফলের কী কী গুণ রয়েছে, যা আপনাকে একবার হলেও এই ফলের প্রতি আগ্রহী করে তুলবে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়:
ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর কাঁঠাল। তাই রোজ এক থেকে দু-কোয়া কাঁঠাল খেলে সহজেই আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। আপনার সুস্থতা আপনার হাতেই থাকবে।

শক্তি থাকে ভরপুর:
প্রতি একশ গ্রাম কাঁঠালে আপনি পাবেন ৯৪ কিলোক্যালোরি শক্তি। এতে থাকা কার্বোহাইড্রেট আপনাকে সবসময় রাখবে প্রাণবন্ত। তাই রোজ কাঁঠাল খেলে যতই পরিশ্রম করুন, তার ক্লান্তি ততটা বোধ করবেন না একেবারেই।

হৃদযন্ত্রের সুস্থতায়:
আমাদের শরীরে পটাশিয়াম আর সোডিয়ামের ব্যালেন্স ঠিক না থাকলে খুবই সমস্যা হয়। কাঁঠালে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। যা, শরীরের সোডিয়ামকে ব্যালেন্সে রাখে। তারই সঙ্গে আপনার হৃদযন্ত্রের পেশিগুলোকেও সচল রেখে, তাদের কাজে একটা ছন্দ বজায় রাখতে সাহায্য করে এই পটাশিয়াম। তাই আপনার হৃদযন্ত্রও থাকে সুস্থ-সবল।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করে:
ক্যান্সার প্রতিরোধের কোনো উত্তর আমরা এখনও সে অর্থে পাইনি। তবে যে সব টক্সিক পদার্থ এই রোগকে ত্বরান্বিত করে, সেগুলোকে এই কাঁঠাল দূরে রাখতে সহায়তা করে। কারণ কাঁঠালে থাকে ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফ্ল্যাভনয়েডসের মতো যৌগ। এই যৌগগুলি শরীরে ক্যান্সার বাসা বাঁধতে দেয় না।

তারুণ্য বজায় রাখে:
চারপাশের ধুলা-ময়লা থেকে আমাদের ত্বক সুরক্ষিত নয়। তাই খুব তাড়াতাড়ি আমাদের মধ্যে বার্ধক্য চলে আসে। আর এই বার্ধক্যকে বাড়িয়ে দেয় হাই অক্সিডেটিভের মতো মৌল। এগুলো দূষণের সাথে বিক্রিয়া করে ত্বকের ওপর প্রভাব ফেলে। কাঁঠাল এই মৌলর সাথে যুদ্ধ করেই আমাদের ত্বককে রাখে তরতাজা।

72
চলছে ফলের মৌসুম। বাজারে পাওয়া যাচ্ছে হরেক রকম ফল। এ সময় বাজারে পাওয়া যাচ্ছে জামরুলও। জামরুল সাদা, লাল দুই রকমের হয়ে থাকে।
জামরুলও খুব একটা খাওয়া হয় না। তবে এর রয়েছে বেশ স্বাস্থ্য উপকারিতা।

আসুন জেনে নেই জামরুলের আশ্চর্য সব ঔষধি গুণ।
১. জামরুল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। জামরুলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। প্রতি ১০০ গ্রাম জামরুলে ২২ দশমিক মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়।ভিটামিন সি ত্বকের তারুণ্যতা ধরে রাখে।

২. যাদের হজমের সমস্যা রয়েছে তারা জামরুল খেতে পারেন। জামরুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডিয়াটরী ফাইবার থাকায় এটি হজম ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

৩. জামরুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডিয়াটরী ফাইবার থাকায় এটি পেট ফাঁপা ও ডায়ারিয়া প্রতিরোধে বিশেষভাবে কাজ করে।

৪. আমাদের অনেকের চোখের সমস্যা রয়েছে। জামরুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন এ থাকায় এই ফল চোখের জন্য উপকারি।

৫. প্রতি ১০০ গ্রাম জামরুলে ২৯ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। তাই হাড় ও দাঁতের জন্য প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়ামের জন্য জামরুল খেতে পারেন।

৬. জামরুলে থাকা পটাশিয়াম শরীরের ইলেক্টোলাইটের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।

৭. প্রতি ১০০ গ্রাম জামরুলে ৯৩ গ্রাম পানি থাকে। যা শরীরে আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

73
Fruit / লটকনের উপকারিতা অনেক
« on: July 24, 2019, 06:54:00 PM »
লটকনের ইংরেজি নাম বার্মিজ গ্রেপ। হলুদাভ ছোট ও গোলাকার এ ফলটি স্বাদে ও পুষ্টিগুণে অনন্য। স্বাদে ফলটি টক-মিষ্টি। এ ফলের রয়েছে বেশ কয়েকটি নাম। যেমন- হাড়ফাটা, ডুবি, বুবি, কানাইজু, লটকা, লটকাউ, কিছুয় ান ইত্যাদি। লটকন গাছ দক্ষিণ এশিয়ায় বুনোগাছ হিসেবে জন্মিলেও বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ডে বাণিজ্যিক চাষ হয়। লটকনে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’। মৌসুমের সময় প্রতিদিন দুই-তিনটি লটকন খাওয়া মানেই আমাদের দৈনন্দিন ভিটামিন ‘সি’র চাহিদা পূরণ হওয়া। এ ছাড়া এ ফলে রয়েছে প্রচুর চর্বি, আমিষ, লৌহ ও খনিজ পদার্থ।

লটকন গাছের শুকনো গুঁড়োপাতা ডায়রিয়া বেশ দ্রুত উপশম হয়। এর গাছের পাতা ও মূল খেলে পেটের পীড়া ও পুরনো জ্বর নিরাময় হয়। এমনকি গনোরিয়া রোগের ওষুধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয় এ ফলের বীজ। প্রতি ১০০ গ্রাম লটকনের কোয়ায় খাদ্যশক্তি থাকে প্রায় ৯২ কিলোক্যালরি, যা কাঁঠালের প্রায় দ্বিগুণ। লটকনে আছে প্রচুর ভিটামিন ‘বি’। এতে ভিটামিন বি-১ এবং ভিটামিন বি-২ আছে যথাক্রমে ১০ দশমিক ০৪ মিলিগ্রাম ও ০.২০ মিলিগ্রাম। ফলে পাকা লটকন খাদ্যমানের দিক দিয়ে খুবই সমৃদ্ধ। লটকনে রয়েছে অ্যামাইনো অ্যাসিড ও এনজাইম, যা দেহ গঠন ও কোষকলার সুস্থতায় কাজে লাগে। এইসব উপাদান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। লটকন খেলে সহজেই বমি বমি ভাব দূর হয়। তৃষ্ণাও নিবারণ করে। মানসিক চাপ কমায়। এ গাছের ছাল ও পাতা খেলে চর্মরোগ দূর হয়।

74
বাংলাদেশে মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, সোশ্যাল মিডিয়ার কারণে মানুষের মধ্যে অস্থিরতা বেড়ে গেছে। ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণে অল্প বয়সী ছেলেমেয়ে থেকে শুরু করে তাদের অভিভাবকদের মধ্যেও তৈরি হচ্ছে মানসিক চাপ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও মনোবিজ্ঞানী মেহতাব খানম বলছেন, সোশাল মিডিয়ার কারণে বিশেষ করে পরিবারের ভেতরেও নানা রকমের সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। কাউন্সেলিং-এর জন্যে যারা আসছেন তারা তাকে এবিষয়ে কী ধরনের সমস্যার কথা বলছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে মিসেস খানম বলেন, কিশোর-কিশোরীদের বাবা মায়েরা কিন্তু ভীষণ সংগ্রাম করছেন।

“কারণ রাতের পর রাত জেগে বাচ্চারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থাকছে, পড়াশোনার ক্ষতি হচ্ছে, সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছে। তারা বুঝতে পারছেন না কিভাবে সন্তানের সাথে সম্পর্ক ঠিক রেখে সহায়তা করবেন।” তার কাছে কাউন্সেলিং নিতে আসা শিশুদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বাচ্চারা অনেক সময় বলছেন অভিভাবকদের কারণে তাদের কৈশোর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তারা পড়াশোনার ওপরই বেশি জোর দিচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেটে পড়ালেখার কাজও দেয়া হয়। কিন্তু বাবা মায়েরা বুঝতে চায় না।”

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম মানসিক চাপ বাড়ানোর কারণ?
মেহতাব খানম বলেন “এখন সম্পর্কগুলো দ্রুত হয়ে যাচ্ছে । সহজেই একজনের সাথে আরেকজনের যোগাযোগ হচ্ছে। একারণে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক, একাধিক সম্পর্ক-এসবও বেড়ে যাচ্ছে অনেক।” অনেক সময় ফেসবুকে এমন কিছু দেখছে যা তাদের ওপর প্রভাব ফেলছে, হতাশও হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তার মতে ড্রাগের আসক্তির চেয়েও সিরিয়াস হয়ে যাচ্ছে এটা।
“আমি এটা নিয়ে চিন্তিত। ড্রাগ যখন নেয় একা বা কয়েকজনের সাথে নেয়। কিন্তু আমি যখন অন্য একজন বা একাধিক মানুষের সাথে সম্পর্ক করছি তখন অনেকগুলো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।”

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করাই সমাধান?

জবাবে মেহতাব খানম বলেন- না, বন্ধ করা সমাধান নয়। “সোশ্যাল মিডিয়ার বিষয়ে আমরা যথেষ্ট শিক্ষা গ্রহণের আগেই সব কিছু হাতের মুঠোয় চলে আসছে। দায়িত্বশীল ব্যবহার করতে পারছিনা এটির। ওখানে অজস্র টাইম দেয়ার কারণে অন্য সব কিছুতে প্রভাব ফেলছে। আমার মাথা ওটাতেই ব্যস্ত থাকছে।”

স্ট্রেস কমাতে কি দরকার?

মেহতাব খানম বলেন, এজন্য যথাযথ শিক্ষার দরকার। “অভিভাবকদেরও সচেতন দরকার। স্কুলগুলোতে প্যারেন্টিং কর্মসূচি আরও জোরদার করতে হবে। প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।”

75
শিল্পীদের আড্ডায়, শিল্পীদের কারও বাসার জমায়েতে এখন প্রায়ই গুরুত্ব পায় ব্যান্ড এলআরবির ভাঙনের খবর। বাংলাদেশের ব্যান্ডের ইতিহাসে ভাঙন নতুন ব্যাপার নয়। একেকটা ভাঙন ভক্তদের হৃদয়ে রক্ত ঝরায়। তারপরও নানা কারণে ভেঙে যায় ব্যান্ড। ব্যান্ড ভাঙার নেপথ্যে কোন বিষয়টা কাজ করে, ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত অনেকের সঙ্গে কথা বলে তা জানার চেষ্টা করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। দুই যুগের বেশি সময় ধরে দেশের সংগীতাঙ্গনে দাপটে বিচরণ করা গানের দল এলআরবি। সংগীতাঙ্গনে এলআরবি নিয়ে কানাঘুষা, আইয়ুব বাচ্চুর স্বপ্নের গানের দলের পথচলা কি তাহলে শেষ! আপাতদৃষ্টিতে শেষ না হলেও গানের দল এলআরবি দুই ভাগে বিভক্ত। প্রতিষ্ঠাতা সদস্য স্বপন ও ২০০৬ সালে যোগ দেওয়া রোমেল চাইছেন, এলআরবি নিয়ে আইয়ুব বাচ্চুর স্বপ্নের পথ পাড়ি দিতে। গিটারিস্ট মাসুদ আর ব্যবস্থাপক শামীম চাইছেন না কোনোভাবে দলটি নিয়ে আর বেশি দূর এগিয়ে যেতে, তাই সরে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা।

আইয়ুব বাচ্চু বেঁচে থাকতে তাঁর সঙ্গে মঞ্চ আলোকিত করেছেন স্বপন, মাসুদ ও রোমেল। দলের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন শামীম। দলটি ভাঙল কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে এককথায় রোমেল বলেন, ‘মতের অমিল। আমাদের খুব চমৎকার একটি বন্ডিং ছিল। বসের (আইয়ুব বাচ্চু) মৃত্যুর পর মতের অমিল তৈরি হয়। আমাদের চাওয়া ছিল, প্রতিষ্ঠিত গায়ক নন, নতুনদের মধ্যে যারা বসের গান ভালোভাবে গায়, তেমন কাউকে নিয়ে পথ চলতে। বাকি দুই সদস্য তা চাননি। এই কারণে আরও কিছু জটিলতা তৈরি হলে আলাদা হয়ে যাই। সংগীতজীবনের শুরুতে রিদ্ম সেভেনটি সেভেন ব্যান্ডের সদস্য ছিলেন কুমার বিশ্বজিৎ। নানা কারণে দল ছেড়ে এককভাবে সংগীতের পথে পা বাড়িয়েছেন বলে জানান তিনি। ব্যান্ড ভাঙার কারণ তিনি ব্যাখা করলেন এভাবে, ‘তরুণ সময়ে যারা ব্যান্ড গড়ে, তাদের কেউ কেউ উচ্চশিক্ষার কারণে সময় দিতে পারে না। এতে অন্যরা মনোবল হারায়। প্রতিষ্ঠিত ব্যান্ডের ক্ষেত্রে ভোকালের চেয়ে অন্য সদস্যদের পিছিয়ে থাকা নিয়েও নিজেদের মধ্যে ঈর্ষা তৈরি হয়। আমরা দেখি, ব্যান্ডে ভোকাল প্রায়ই তাঁর ইচ্ছেমতো সিদ্ধান্ত নেন। এ–ও দেখি, কখনো দলনেতা ব্যান্ড নিয়ে মঞ্চে ওঠেন। কখনো “উইথ ফ্রেন্ডস” এবং কখনো এককভাবে অন্য মিউজিশিয়ান নিয়েও শো করেন। অথচ ব্যান্ডের অন্য সদস্যরা দলের বাইরে কিছু করতে গেলে বাধা দেন দলনেতা। শুধু তা–ই নয়, অন্য মিউজিশিয়ানরা তাঁদের যোগ্যতা মঞ্চে দেখাতে চাইলে ঠিকমতো সুযোগ দেওয়া হয় না—মনে একটা চাপা ক্ষোভ তৈরি হয়।’

দেশের বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় ও তারুণ্যনির্ভর ব্যান্ডের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কনসার্ট কিংবা শোয়ের সম্মানীর সুষম বণ্টন না হওয়া, ব্যবসায়িক স্বার্থ, ভোকালের নিজেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা, প্রতিষ্ঠিত ব্যান্ডের কারও চাকরি কিংবা ব্যবসায় ব্যস্ত থাকা, ভোকাল দ্বারা অন্য সদস্যদের ডমিনেট করা এবং স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করায় ব্যান্ডে ভাঙন দেখা দেয়। তাঁদের মতে, ব্যান্ড সমন্বিত একটা ব্যাপার। কোনো ভোকাল বা মূল গায়ক বেশি জনপ্রিয়তা পেলে তিনি দলের অন্য সদস্যদের ওপর ছড়ি ঘোরান।

ফিডব্যাক ব্যান্ডে অনেকবার সদস্যদের পরিবর্তন হয়েছে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ না থাকাটা ব্যান্ড ভাঙার অনেক বড় কারণ বলে মনে করছেন দলটির অন্যতম সদস্য ফোয়াদ নাসের বাবু। তিনি বলেন, ‘ফ্রন্টম্যান বা ভোকাল যা–ই বলি না কেন, এই মানুষকে নিয়ে ব্যান্ডে সংকট তৈরি হয় বেশি। আমাদের লাইনআপে অসংখ্যবার পরিবর্তন হয়েছে। তারপরও আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।’
গত বছর ভাঙনের মুখে পড়েছিল গানের দল শিরোনামহীন। শেষ পর্যন্ত তানজীর তুহিন আভাস নামের আরেকটি ব্যান্ড গড়েন। আর বাকি সদস্যদের নিয়ে জিয়া শিরোনামহীনকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
জিয়া বলেন, ‘আমাদের দেশে পত্রপত্রিকা এবং টেলিভিশন ভোকালকে নিয়ে মাতামাতি করে। এতে এক ধরনের অহংবোধ তৈরি হয় তাঁর মধ্যে। আচরণে তা প্রকাশ পায়। কিন্তু দলের ভোকাল কিংবা দলনেতা হিসেবে তো তাঁর বোঝা উচিত, প্রতিটি সদস্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। বাকি সদস্যদের স্যাক্রিফাইস কতটুকু? এসব ভুলে গেলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে, যা মোটেও প্রত্যাশিত নয়।’
দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড মাইলসেও কয়েকবার ভাঙন হয়। অন্যতম সদস্য শাফিন আহমেদ আলাদা করে ব্যান্ড গড়েন। সব ধরনের ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়ে মাইলসে শাফিন আবার ফিরে আসেন।

Pages: 1 ... 3 4 [5] 6 7 ... 47