Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - riazur

Pages: [1] 2 3 ... 14
1

অনলাইন মার্কেটিং একটি জনপ্রিয় বহুল প্রচলিত শব্দ। বিশ্বের উন্নত দেশগুলো অনলাইন মার্কেটিং’কে ক্যারিয়ার হিসেবে নিচ্ছে সাচ্ছন্দে। আমাদের দেশেও অনলাইন মার্কেটিং বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং আউটসোর্সিং করে বিপুল পরিমান রেমিটেন্স নিয়ে আসছে। এই পেশায় সুবিধা হচ্ছে, চাকরির পাশাপাশি ঘরে বসেও আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে এক্সট্রা ইনকাম করা সম্ভব। কিছু বছর আগেও এর অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল আমাদের দেশে। কিন্তু এখন অনলাইন পেমেন্ট এবং রেমিটেন্স আদান প্রদান এর সুবিধা হওয়ার দরুন অনেক সহজ হয়ে গেছে। শুধু বাহিরের দেশ গুলোই নয়, দেশেও এখন কোম্পানিগুলো অনলাইন মার্কেটিং এর দিকে ঝুকছে।

অনলাইন মার্কেটিং এর সঙ্গা এক কথায় প্রকাশ করার মত কোনো সহজ বিষয় নয়। এর পরিধি ব্যাপক। তবু কিছু সংক্ষেপ ধারণা দেবার চেষ্টা করছি।

অনলাইন মার্কেটিং কি?

একটি ওয়েব সাইট হচ্ছে একটি কোম্পানির প্রোফাইল, পণ্য, ব্যাবসার ধরন, ঠিকানা ইত্যাদি সম্পর্কে একটি অনলাইন পরিচিতি।। ওয়েব সাইট তৈরির পর সেটাকে বাজারে সুপরিচিত করে তোলাটা অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পরে। বিশেষ করে ই কমার্স সিত গুলো যেখানে অনলাইন এ কেনাবেচা হয় কিংবা যে কোনো বড় পণ্য ভিত্তিক কোম্পানি ও হতে পারে। মিলিয়ন মিলিয়ন ওয়েব সাইটের ভীরে জনে জনে কজন কে আর বলে বলে তার পরিচিতি ঘটানো সম্ভব। সবাই চায় তার ওয়েব সাইট টি যাতে গুগলে এর এক নম্বর পেজ এ আসে। গুগলের এক নম্বর পেজ এ কেমন করে পেজটি কে দেখানো যায়, কি লিখে সার্চ করলে পেজটি এক নম্বরে দেখাবে। এসব প্রক্রিয়াগুলোই অনলাইন মার্কেটিং এর অন্তর্ভুক্ত বিষয়বস্তু।

SEO বা Search Engine Optimization (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) এর নাম হয়ত সবাই শুনে থাকবেন। SEO হচ্ছে অনলাইন মার্কেটিং এর অনেক গুলো টেকনিকের মধ্যে অন্যতম একটি ।

ইন্টারনেট ব্যাবহারকারিরা প্রতিদিন নানা কাজে সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে। সেটি কোন প্রতিষ্ঠান এর তথ্য থেকে শুরু করে সফটওয়্যার, মুভি কিংবা গানও হয়ে থাকে।বর্তমান সময়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি সার্চ ইঞ্জিন হচ্ছে গুগল। বিশ্বের অসংখ্য মানুষ তথ্যের প্রয়োজনে এটা ব্যবহার করে থাকে। গুগল সার্চ ইঞ্জিন এ যখন কোন কাঙ্খিত বিষয় নিয়ে সার্চ দেত্তয়া হয় তথন অনেকগুলো সাইটের ঠিকানা চলে আসে। প্রথম সারিতে থাকা সাইটগুলোতেই আমরা সাধারনত বেশি ক্লিক করে থাকি। কিন্তু প্রতিদিনই হাজার হাজার নতুন নতুন সাইটের জন্ম হচ্ছে। এসবের মধ্যে থেকে কোন সাইটকে আমরা বেছে নেব? স্বাভাবিক ভাবেই সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পৃষ্ঠায় থাকা সাইটগুলোই সবাইকে আকৃষ্ট করে থাকে। আর সার্চ ইঞ্জিনগুলো তথ্য উপাত্তের দিক দিয়ে সমৃদ্ধ সাইটগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। এই সুযোগ-সুবিধা গুলো পাত্তয়ার জন্য সাইটটিকে বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম দিকে আনা প্রয়োজন। এতে করে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যবহারকারীকে পাত্তয়া সম্ভব সাইটে। সার্চ ইঞ্জিনে একটি সাইটকে অর্ন্তভূক্ত করে সারা বিশ্বের ব্যবহারকারীদের সামনে নিজের সাইটকে পরিচিত করার পদ্ধতিই হচ্ছে SEO বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন। গুগল কিংবা ইয়াহু হুট করেই কোন সাইটকে তাদের প্রথম পৃষ্ঠায় স্থান করে দেবে না। এজন্য SEO বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন সম্পর্কে ধারণা,তার প্রয়োগবিধি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে এবং রপ্ত করতে হবে।
এছাড়াও ইন্টারনেট মারকেটিং এর মধ্যে আরো হচ্ছে, গুগল এড, ফেসবুক এড, ব্লগপোস্ট, লিংক সাবমিশন, লিংক বিল্ডিং, ইমেল মার্কেটিং ইত্যাদি।কোন সাইটের ডিটেইল স্ট্যাটিক আমরা দেখার জন্য কিছু ওয়েব বেজড সফটওয়্যার  ইউজ করি। যেমন স্ট্যাট কাউন্টার। কিন্তু এগুলো এখন বেশিরভাগ’ই  পেইড হয়ে গেছে।আশার কথা হচ্ছে, গুগল এর এনালাইটিক বিগত ক বছর ধরে ফুলে ফেপে উঠেছে তার ডাটা ব্যাংক নিয়ে। এখন গুগল এর এনালাইটিক ইন্টারনেট মারকেটারদের অনেক নির্ভরযোগ্য এনালাইসিস এবং রিসার্চের একটি প্লাটফর্ম। এই প্রফেশন একটি সময় উপযোগী পেশা। প্রয়োজন শুধু সঠিক গাইডলাইন এবং দক্ষতা অর্জন। একজন এক্সপার্ট ইন্টারনেট মার্কেটার এর চাহিদা শুধু দেশে নয় বিশ্বের সব দেশেই এর হাই ডিম্যান্ড।

2
প্রচুর কম্পিটিশন এর মধ্যে দিয়ে এস.এস.সি, এইচ এস সি পার করে আমাদের দেশের ছেলেমেয়রা। তারপর মেধা যাচাই এর কোন বালাই নেই, কারন লিখিত আর ভাইভা পার হয়ে গেলেও কয়েক মার্কস এর জন্য ওয়েটিং লিস্টে পরে থাকতে হয়। ভালো নাম করা প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিগুলোতে পড়ার খরচ এতো বেশী যে সবার সাধ্যের মধ্যে খাকে না।সব জায়গায় ঢালাও ভাবে পরিক্ষা দিয়ে অবশেষে যেখানে ভাগ্য খুলবে সেখানেই সই। হয়ত পড়ার ইচ্ছা ছিল ইন্টারন্যাশনাল এফ্যেয়ার  নিয়ে কিন্তু মার্কস আর ফলাফল মিলে দর্শন এ চান্স পাওয়া যেতে পারে, অগত্যা সেখানেই এডমিশন। সাবজেক্ট যেটাই হোক দেশের বড় বিদ্যাপিঠ বলে কথা।

আর্টস, কমার্স না সায়েন্স?
সায়েন্স এ রেজাল্ট ভালো হয়নি বলে সাবজেক্ট চেঞ্জ করে কমার্স কিংবা আর্টস নিয়ে পড়াশোনা করাটা একটা সাধারন ঘটনা। একাউন্টিং এ পড়লে চাকরির অভাব হবে না, কিন্তু…………লজিক আর অঙ্কের মাথা ভালো না হলে তো ডাব্বু খেতে হবে। এটা তো আর ইতিহাস কিংবা গার্হস্থ না যে কলমের খোঁচাতে দু’এক নম্বরে টেনেটুনে পাস। তাহলে সেটাই সই……। পাস ফেল এর ঝুঁকি না বাড়িয়ে অগত্যা আর্টস। বাকিটা দীর্ঘ পথ ইতিহাস, বাংলা,দর্শন, অর্থনীতি, ইংরেজি ইত্যাদি বইয়ের পাতার উপর পাতা মুখস্থ আর চশমার পাওয়ার বাড়ানো।

বিএ, বি এস এস, অনার্স, মাস্টার্স, বি বি এ, এম বি এ …এরপর কি?
বিসিএস, সেতো বছর বছর যেন যোগ্যতার পরীক্ষা আর ভাগ্যের লটারি। ইতিহাসের ছাত্রী, কর্মক্ষেত্রে এসে ইতিহাসের শিক্ষিকা হওয়া ছাড়া তার যোগ্যতার সাথে মেলে এমন পেশা খুঁজে পাওয়া যেন একটা গোলক ধাঁধাঁ। কিন্তু থেমে থাকলে তো চলে না। যুগের সাথে তাল মেলাতে হবে। আরও কিছু প্রশিক্ষণ, কিছু ডিপ্লোমা কোর্স, বাস্তব জীবনে চলার জন্য আবার যোগ্যতার জন্য কিছু সার্টিফিকেট এর পেছনে ছুটোছুটি। কিছু সংখ্যক ব্যাঙ্কের বিভিন্ন পদে, কিছু সংখ্যক সরকারি কিছু পদে, কিছু সংখ্যক মালটি-ন্যাশনাল কোম্পানিতে একটা মোটামুটি সম্মানির ডেস্ক জবে। এই জবগুলতে অনেক চ্যেলেঞ্জ এর সম্মুখীন হতে হয় প্রতি পদে পদে। কিন্তু সেই অনুযায়ী সম্মানি এবং সুযোগ সুবিধা খুব ই কম থাকে।

কিন্তু একজন শিক্ষার্থী এবং তার পরিবারের আরও অনেক স্বপ্ন থাকে।ছেলেমেয়েকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আর্কিটেকচার বানানোর স্বপ্ন।একটি ভালো মাইনের চাকরীর স্বপ্ন। আমার দেখা অনেক ডিজাইনার, ডেভেলপার নিজেদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে বুদ্ধিমানের মতো বেছে নিয়েছে আইটি ক্যারিয়ার। আইটি তে এখন চাইলেই মেধা আর ইচ্ছাশক্তি কে কাজে লাগিয়ে যে কেউ হতে পারে একজন বেস্ট ওয়েব ডিজাইনার, ইউ এক্স ইঞ্জিনিয়ার কিংবা ওয়েব ডেভেলপার ।

বাংলাদেশের জব মার্কেটে একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার তার ক্যারিয়ার ত্রিশ হাজার থেকে শুরু করে মাত্র দু এক বছরেই দেড়, দু’লাখ টাকা পর্যন্ত অর্জন করতে পারে। দিন দিন কাজের অভিজ্ঞতার আলোকে তাদের বেতন’ও বাড়তে থাকে।

একজন ওয়েব ডিজাইনার কিংবা ইউ এক্স ইঞ্জিনিয়ার বিশ হাজার থেকে শুরু করে লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করে।দিন দিন অভিজ্ঞতার উপর তার বেতন ও বাড়তে থাকে। অন্যদিকে, ফ্রিল্যান্সিং করে মাসে অনেকেই  লাখ লাখ টাকা আয় করে।

আইটি জবগুলো দিতে পারে একটি উজ্জ্বল সম্ভাবনাময় জীবনের প্রতিস্রুতি। বিশ্বের প্রতিটি ক্ষেত্রে এর চাহিদা আছে। মারকেটপ্লেস গুলোর দিকে তাকালেই বোঝা যায় বাজারে আইটি জবস এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই, গতানুগতিক পড়াশোনার দৌড়ে  হয়ত গ্রেডিং এর দিক দিয়ে তুমি পিছিয়ে আছ, কিন্তু ক্যারিয়ার এর দিক দিয়ে তুমিও পারো প্রথম সারির একজন হতে!

3

UX = User Experience. সহজ বাংলায় ব্যাবহারকারির অভিজ্ঞতা।
আপনি, আমি আমরা সবাই ইউজার। এই ইউএক্স সব ধরনের পন্যের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কিন্তু আমরা যখন একটি ওয়েবসাইটের কথা বলছি, তখন ওয়েব সাইট’টির ওনার সেটা তৈরি করছে অন্য ইউজারদের জন্য।
তার টার্গেট মার্কেট অনুযায়ী সে যখন ওয়েব এর পুরো আর্কিটেচারটা ডিজাইন করে সেখানে তাকে অনেক কিছু মাথায় রেখে ডিজাইনটা দাঁর করাতে হয়। এর অনেকগুলো ধাপ আছে। আমরা অনেকেই মনে করি, শুধু (UI) ইউ আই বা (User Interface) ইউজার ইন্টারফেস ডিজাইন করাটাই ইউ এক্স। এটা ভুল, ইউ আই হচ্ছে ইউ এক্স এর অনেকগুলো ধাপ এর মধ্যে অন্যতম একটি।
উদাহরন দিয়ে আরেকটু পরিষ্কার করে আমরা যদি বলি তাহলে হয়ত ব্যাপারটি আরেকটু সহজ হবে।

যেমন ফেসবুক এত জনপ্রিয় কেন? এর এত ইউজার কেন? আর সব নেটওয়ার্কিং সাইটের মধ্যে ফেসবুক সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট হিসেবে কেন এত জনপ্রিয়? উত্তরটা সহজ। এর ইউ এক্স ভালো বলে আমরা সবাই এখানে অনেক বেশী এঙ্গেজড। একজন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটের ইউজার যা যা চায় তার মোটামুটি সব কিছুই আমরা এখানে পাই।

সুতরাং, ইউ এক্স ভালো না মন্দ সেটার ভাগ্য নির্ধারণ করে কিন্তু সাইটের ইউজাররাই। যখন, সাইট এর মধ্যে ইউজার এসে সাচ্ছন্দ্য বোধ করে না, কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সাইট থেকে বেরিয়ে যায়, যখন ইউজার সাইটে এসে তার কাঙ্ক্ষিত বিষয়টি খুঁজে না পেয়ে ফিরে যায় এবং আর ব্যাক করে না তখন বুঝতে হবে সাইট এর ইউ এক্স এ কোন সমস্যা আছে।
তাই, ইউ এক্স এর দিকগুলো মাথায় রেখে একটি সাইট যখন ডিজাইন করা হয় তখন ব্যাবসার সফলতা ও সম্ভাবনা অনেকাংশে বেড়ে যায়।

4
আউটসোর্সিং বা অনলাইনে যারা বাংলাদেশ থেকে কাজ করছেন তাঁরা অবশ্যই সন্দেহাতীতভাবে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের বড় একটা মাধ্যম। বাংলাদেশীরা বিশেষ করে তথ্য প্রযুক্তির বিভিন্ন ফিল্ডে কাজ করছেন তবে সফট্ওয়্যার টেষ্টিং এ এখন্ও অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশীরা। অনলাইনে কাজের অন্যতম মাধ্যম ইল্যান্স বা ওডেস্কে অনুসন্ধান করে খুব কম সংখ্যক বাংলাদেশীকে এই ফিল্ডে পা্ওয়া যায়। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন নিয়ে যে কেউ সফট্ওয়্যার টেষ্টিং এ কাজ শুরু করতে পারেন। তুলনামূলকভাবে এই কাজে পারিশ্রমিক বেশী। কিভাবে ফ্রি প্রশিক্ষন নিবেন এবং সফট্ওয়্যার টেষ্টিং কি ব্যাপারে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করবো।

Free Tutorial
সফট্ওয়্যার টেষ্টিং মূলত দুই ধরনের ১) ম্যানুয়েল এবং ২) অটোমেশন। যেহেতু অনলাইনে অটোমেশনের কাজ পা্ওয়ার সম্ভাবনা বেশী সেহেতু আলোচনা অটোমেশেনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখবো আজকে।
অটোমেশন টেষ্টিং আবার দুই ধরনের ১) ফাংশনাল এবং ২) পারফরমেন্স টেষ্টিং। ফাংশনাল টেষ্টিং এর জন্য অনেক ধরনের টুল বা সফট্ওয়্যার ব্যবহৃত হয় তবে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে 1) HP UFT/QTP এবং 2) Selenium।

HP UFT/QTP একটি লাইসেন্স সফট্ওয়্যার যা কিনতে হয়। কিন্তু HP এর সাইট থেকে আপনি এটার ট্রায়াল ভার্সন এক মাসের জন্য ব্যবহার করতে পারেন।

5
এইচ. পি. লোডরানার একটি পারফরমেন্স/লোড টেষ্টিং টুল যার দ্বারা কোন সফটওয়্যার বা এ্যাপ্লিকেশন এর পারফরমেন্স/লোড টেষ্ট করা হয়। লোড টেষ্টিং এরকম যে কোন একটি এ্যাপ্লিকেশন একই সময়ে কত জন ব্যবহারকারী ব্যবহার করতে পারবে তা নিরুপন করে বা কতজন ব্যবহারকারী ব্যবহার শুরু করলে এ্যাপ্লিকেশনের গতি কমে আসবে বা কতজন ব্যবহাকারী ব্যবহার শুরু করলে এ্যাপ্লিকেশন কোন কাজ করবে না বা এ্যাপ্লিকেশন ভেঙ্গে যাবে তা নিরুপন করে। বাংলাদেশে সাধারনত এই টেষ্ট করা হয় না যে কারনে কোন হ্যাকার অতি সহজেই বাংলাদেশের যে কোন ওয়েব এ্যাপ্লিকেশন ভাংতে পারে।  উন্নত বিশ্বে যে সব এ্যাপ্লিকেশনে জনস্বার্থ  জড়িত সেসব এ্যাপ্লিকেশন টেষ্ট করা বাধ্যতামূলক। উন্নত দেশে যারা এসব টেষ্ট করে তাদেরকে সাধারনত 50 থেকে 75 ডলার প্রতি ঘন্টায় বেতন দেয়া হয়। আউটসোর্সিং এ এসব টেষ্টিং এর জন্য অনেক বেশী পারিশ্রমিক দেয়া হয়। লোডরানার একটি লাইসেন্সড সফট্ওয়্যার যা কিনতে হয় এবং অনেক দাম কিন্তু ট্রায়াল ভার্সন 30 দিনের জন্য ব্যবহার করা যায়। নিম্নোক্ত লিংক থেকে এটি ডাউনলোড করে 30 দিন পর্যন্ত ব্যাবহার করে শিখতে পারেন। ডাউনলোড লিংক: https://ssl.www8.hp.com/us/en/ssl/dlc/secure_software.html?prodNumber=T7177FAEF

লোডরানার এর তিনটি অংশ থাকে:

1) VUGen (Create Script, Record & replay) এটা ফ্রি।

2) Controller (Create Scenario & Run) এটার লাইসেন্স কিনতে হয় যা ইউজারের উপর নির্ভরশীল।

3) Analyzer এটা ফ্রি যেখানে ফলাফল পর্যলোচনা করে রিপোর্ট তৈরী করা হয়।

নিম্নে লোডরানারের 5 টি ভিডিও টিউটোরিয়ল দেয়া হলো যেখান থেকে আপনি শিখতে পারেন:

Part-1 : VUGen Record Replay
Part-2 : Controller
Part-3 : Auto Correlation
Part-4 : Run Time Setting
Part-5 : Real World Schedule
এছাড়া্ও আরো সফটওয়্যার টেষ্টিং সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে ভিসিট করুন: ভিসিট লিংক এবং এছাড়া্ও লোডরানার টিউটোরিয়াল সাই ভিসিট করত পারেন

আপনার যদি এসম্পর্কে কোন প্রশ্ন থাকে বা যেখানে বুঝতে পারছেন সেজন্য লোডরানার গ্রুপে যোগ দিতে পারেন। লোডরানার গ্রুপ লিংক: http://loadrunnerny.blogspot.com/

এই লেখা যদি আপনার বিন্দুমাত্র সহায়ক হয় তবে আমার প্রচেষ্টা সার্থক হবে। টেস্টিং আরো অধ্যায় নিয়ে পরবর্তীতে আরো পোষ্ট লিখবো আশাকরি।

6
আসসালামু আলাইকুম।

বর্তমানে যারা ইন্টারনেট চালায় তাদের অধিকাংশই অ্যান্ড্রয়েড ব্যাবহারকারী।
আর যাদের অ্যান্ড্রয়েড নেই তারাও টিপসগুলো শিখে রাখুন। হয়তো ভবিষ্যতে কাজে লাগতে পারে। আর এটি এই ব্লগ এ আমার লেখা প্রথম পোস্ট। অনিচ্ছাকৃত ভুল ত্রুটির জন্য আগেই ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।
তো চলুন দেখে নেই টিপসগুলো।

পাওয়ার বাটুনের মাধ্যমে কল কেটে দেয়া।
এটি একটি খুব সুন্দর পদ্ধতি। তবে কিছু ফোনে এটা নাও থাকতে পারে। আমার w68 এ কাজ করে। কিন্তু আমার এক বন্ধুর ফোনে কাজ করে নি। এই পদ্ধতি অন করতে প্রথমে সেটিং এ প্রবেশ করুন।
 পাওয়ার বাটুনের মাধ্যমে কল কেটে দেয়া

এবার Accessibility তে প্রবেশ করুন।
 পাওয়ার বাটুনের মাধ্যমে কল কেটে দেয়া

এখন Power button ends এ টিক দিয়ে দিন।
 পাওয়ার বাটুনের মাধ্যমে কল কেটে দেয়া

কাজ শেষ। এখন আপনি পাওয়ার বাটুনের মাধ্যমেই কল কেটে দিতে পারবেন। আর কল কাটার মুহূর্তে স্ক্রিন অফ হবে না।

অ্যান্ড্রয়েড এর লুকানো সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর।
এই লুকানো সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর সম্পর্কে অনেকেই জােনন । যারা জানেননা তারা ফোনের ডিফল্ট ক্যালকুলেটরে প্রবেশ করুন।

এবার ফোনটিকে landscape মোডে রোটেট করুন।
 লুকানো সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর

এখন দেখুন আপনার সাধারন ক্যালকুলেটরটি সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটরে পরিবর্তিত হয়ে গেছে।
(ভার্সনের ভিন্নতার কারণে পদ্ধতি কিছুটা ভিন্ন হতে পারে)।

বাড়িয়ে নিন আপনার অ্যান্ড্রোয়েডের গতি।
এনিমেশন অফ করে সহজেই আপনি বাড়িয়ে নিতে পারবেন আপনার অ্যান্ড্রয়েডের গতি।

এজন্য প্রথমে সেটিং এ গিয়ে
Developer option এ প্রবেশ করুন।

 বাড়িয়ে নিন আপনার অ্যান্ড্রোয়েডের গতি

Developer option অন করে দিন।
 বাড়িয়ে নিন আপনার অ্যান্ড্রোয়েডের গতি

অতঃপর একটু নিচে গিয়ে

window animation scale.

Transition animation scale
.
Animator duration scale
.
এই তিনটাই অফ করে দিন।
 বাড়িয়ে নিন আপনার অ্যান্ড্রয়েডের গতি
এখন দেখুন বেড়ে গেছে আপনার ফোনের গতি।

আজ এ পর্যন্তই।ধৈর্য ধরে পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আপনাদের উৎসাহ পেলে অতি শিঘ্রই হাজির হব আরও মজার টিপস নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভাল থাকবেন।

7
স্টার্টআপ কি? –

যখন একটি কোম্পানি বাজারে নতুন এবং মৌলিক কোন সার্ভিস বা সেবা কিংবা কোন প্রোডাক্টনিয়ে ব্যবসা শুরু করে তখন তাকে আমরা স্টার্টআপ বলে থাকি। সাধারনত একজন বা কয়েকজনমিলে ইনভেস্ট করে স্টার্টআপ একটি কোম্পানি শুরু করে। স্টার্টআপের উদ্দেশ্য হচ্ছে, মৌলিকএকটি উদ্যোগকে ছোট থেকে আস্তে আস্তে বড় করে বিকশিত করা এবং একসময় এর উপর্জুপুরি ক্রমবর্ধমানগ্রোথ এর উপর নির্ভর করে কোন জায়ান্ট এর কাছে বড় কোন মুল্যে বিক্রি হয়ে যাওয়া। [আমি এটাকে বলি মুখের মধ্যে টোপ নিয়ে বড়শীর জন্য অপেক্ষা করা :) ]

আমরা কিছু উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি আরেকটু পরিষ্কার হয়ে নিতে পারি।
আমরা জানি ২০০৬ সালে গুগল ইউটিউবকে ১.৬৫ বিলিয়ন ডলারে কিনে নিয়েছিল। ইন্টারনেট জগতে ইউটিউবেরজন্ম হয়েছিল ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৫ সালে। তিনজন ইয়াং এন্ট্রপ্রনার চাঁদ হারলি, স্টিভ চেন এবং জায়েদ করিম মিলে ইউটিউব প্রতিষ্ঠা করে। অন্যান্য অনেক টেকনোলজির মতই এঞ্জেল ফান্ড এর সহায়তায় ইউটিউব খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ফুলেফেঁপে উঠতে থাকে। স্টার্টআপ হিসেবে ইউটিউবের এত অল্প সময়ে বেড়ে উঠা এবং মোটা অঙ্কে গুগলের কাছে একুয়ার হয়ে যাওয়াটা সে সময়ে ওয়েব এর জগতে বেশ সারা ফেলে দিয়েছিল। এযাবতকালে এখনও সবচেয়ে লাভজনক এবং সফল স্টার্টআপ হিসেবে ইউটিউবের অবস্থান। এতো গেল ইউটিউব এর কথা। এরকম আরও অনেক দৃষ্টান্ত আছে। যেমন, পেপাল এর মতো একটি গরিলাকে ই-বে কিনে নিয়েছে। ফেসবুক কিনে নিয়েছে ইন্সটাগ্রামকে। টুইটার কিনেছে টুইটডেক। এওএল কিনেছে নেটস্কেপ। মাইক্রোসফট কিনেছে হটমেইল। ইয়াহু কিনেছে হটজবস। এরকম আরও অসংখ্য দৃষ্টান্ত রয়েছে।

স্টার্টআপ এবং আমাদের অবস্থান-

২০১২ সাল থেকে স্টার্টআপ এর হাওয়া লেগেছে আমাদের দেশেও। বিদেশি কোম্পানি, ইনভেস্টররাও ইনভেস্ট করার জন্য আগ্রহী হচ্ছে। দেশে স্টার্টআপ কোম্পানিও দিনকে দিন বাড়ছে ঠিকই কিন্তু সে তুলনায় বৃহৎ আইডিয়া নিয়ে কোম্পানিগুলো স্টার্টআপ ধারনাটাকে সেরকম সুদূরপ্রসারী ও বাস্তবসম্মত যুগান্তকারী কোন অবস্থানে নিয়ে যেতে পারছে না।
এর কারন কি? বেশীরভাগই স্টার্টআপের কন্সেপ্ট টাকে ভালো মতো না বুঝেই একটি হুজুগের উপর কোন সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা ছাড়াই শুরু করে দেয়। পর্যাপ্ত পরিমান গভীর রিসার্চ করছে না ফলে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসটি মৌলিকতার ঘাটতিতে পিছিয়ে থাকছে। যেমন, এরকম অনেককেই দেখছি যারা একটি ইকমার্স সাইট বানিয়ে বলছে স্টার্টআপ, কিন্তু বাজারে একই সারিতে একইরকম দেখতে অনেকগুলো সাইট আছে যাদের নিজস্ব কোন আলাদা বৈশিষ্ট নেই কয়েকটি ফিচার ছাড়া। আবার একটি মোবাইল অ্যাপ বানিয়ে সেটাকে স্টার্টআপ বলছে, দেখা গেল সেটাখুবই সাদামাটা আট দশটা অ্যাপ এর মতই। তাহলে, ঘটনাটা কি দাঁড়াচ্ছে এখানে? কোন ভিশনছাড়াই স্টার্টআপ এর কনসেপ্ট নিয়ে সবাই কতদিন সাস্টেইন করতে পারবে? ইনভেস্ট তো কমবেশী হচ্ছেই, সেটার যদি গ্রোথ না হয়, কোন ধরনের লাভজনক সম্ভাবনা না থাকে তাহলে কেনকেউ উৎসাহী হয়ে এগিয়ে আসবে তার প্রোডাক্টটি কিনে নিতে কিংবা তার স্টার্টআপকোম্পানিতে ইনভেস্ট করতে। স্টার্টআপ নিয়ে যারা আগ্রহী, তাদের উচিৎ শুরু করবার আগে পুরো বিষয়টি সম্পর্কে ব্যাপক পরিমান রিসার্চ করা। নিজের প্রোডাক্ট সম্পর্কে ভালো করে বুঝা, এর সকল পজিটিভ ও নেগেটিভ দিকগুলো ক্ষতিয়ে দেখা।

সিলিকন ভ্যালিতে যাবার স্বপ্ন নিয়ে তরিঘরি করে স্টার্টআপ শুরু করে দিলেই চলবে না, এর এন্ডাপ ফিউচারটা নিয়েও ভাবতে হবে। একটি স্টার্টআপ শুরু হতে পারে ছাদের চিলেকোঠা কিংবা গ্যারেজ থেকে। কিন্তু সেটার টপ বেস্ট পজিশনের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ প্রক্রিয়াটা আগে থেকেই ঠিক করে নিতে হবে। কোন কিছু শুরু করবার আগে প্রোডাক্ট টি সম্পর্কে নিজের কাছে পরিষ্কার ধারনা থাকতে হবে। কেন প্রোডাক্টটি বেস্ট এবং কিভাবে এর গ্রোথ হবে সেটার সুস্পষ্ট একটা রোডম্যাপ দাড় করাতে হবে। প্রোডাক্ট বা সার্ভিস এর মৌলিক কিছু বৈশিষ্ট থাকতে হবে যাতে করে সহজেই বোঝা যায় সে বাকিদের থেকে আলাদা। ব্যাপক পরিমাণ রিসার্চ এর মানসিকতা থাকতে হবে। বিশ্বের বড় বড় স্টার্টআপ দের সম্পর্কে জানতে হবে। তাদের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি তথ্য সম্পর্কে যতদূর সম্ভব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জানার চেষ্টা করতে হবে। স্টার্টআপ’ই যদি করতে হয় তাহলে টার্গেট রাখা উচিৎ এমন প্রোডাক্ট বানাতে হবে যাতে গুগল, ফেসবুক, মাইক্রোসফট এর মতো কোম্পানিগুলো কিনে নেবার জন্য আগ্রহী হয়। তাহলেই সম্ভব যুগান্তকারী কিছু করে দেখানোর।

8
Faculty Sections / ল্যান্ডলাইন ফোন
« on: September 27, 2016, 12:24:00 PM »
একটা সময় বাসায় “একটি” টেলিফোন থাকাই বিশাল ব্যাপার ছিল। মনে আছে বাসায় যখন প্রথম ল্যান্ডফোনের লাইন এসেছিল, সে কি উত্তেজনা! নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিককার কথা বলছি। এনালগ ফোনসেটগুলোতে তখন ছিল রোটারি ডায়াল। বেশিরভাগের বাড়িতেই সবুজ, কাল অথবা ঘিয়ে রঙের ফোনসেট দেখা যেত।

ফোনের সেই লাইন পেতে অবশ্য আমাদের অনেকটা সময় অপেক্ষা করতে হয়েছিল। আমাদের মতন দেশগুলোতে যা হয় আর কি। টেলিগ্রাফ এবং টেলিফোন বোর্ডের অতিপ্রিয় খাদ্য হচ্ছে ঘুষ। তারা আমাদের বাসায় একটি সবুজ রঙের ফোনসেট দিয়ে গেল কিন্তু লাইন দিল না। লাইন ঠিক সময়ে পাবার জন্য নাকি ঘুষ দিতে হবে। আব্বু কিছুতেই ঘুষ দিবে না, দুনিয়া উল্টে গেলেও না। ফলে আমাদের প্রায় এক বছর অপেক্ষা করতে হল একটি ফোনলাইন পাবার জন্য। এই এক বছর আমি আর ভাই প্রতিদিন স্কুল থেকে বাসায় ফিরে ফোনসেট তুলে দেখতাম লাইন দিল কিনা! একদিন স্বপ্ন পূরণ হল – সেট তুলতেই দেখি পোঁ… শব্দ হচ্ছে।

এখন তো মানুষের হাতে হাতে ফোন। কারও কারও দু’হাতে দু’টো করেও ফোন দেখি! কিন্তু আগের মতন ফোনে “হ্যালো” বলবার আনন্দটা আর পাই না। এখন অনেক সময় মোবাইল ফোনটা বেজেই চলে কিন্তু ইচ্ছেও করেনা হাত বাড়িয়ে তুলি। বেশি থাকলে আর পেলে বুঝি এমনই হয়!

ছোটবেলায় ফোনে “হ্যালো” বলতে পারার সম্পূর্ণ অন্যরকম একটা আনন্দ ছিল। নানুর বাসায় বেড়াতে গেলে আমার প্রিয় কাজ ছিল ফোন বাজলেই ছুটে যাওয়া। অদৃশ্য একজন মানুষের সাথে কথা বলবার আলাদা আনন্দ ছিল তখন যেটি এই মুঠোফোনের যুগে আর পাইনা…।

9

 নেটওয়ার্ক কী?

একাধিক কম্পিউটার যখন একসাথে  যুক্ত হয়ে তথ্য আদানপ্রদান করে তখন থাকে নেটওর্য়াক বলে। নেটওর্য়াক করার জন্য ন্যূনতম দুটি কম্পিউটার প্রয়োজন।

নেটওয়ার্কের প্রকারভেদ :

নেটওয়ার্কে সাধারণত তিন ভাগে ভাগ করা যায়।

LAN
MAN
WAN
Local Area Network (LAN): একই বিল্ডিং এর মাঝে অবস্থিত বিভিন্ন কম্পিউটার নিয়ে গঠিত নেটওয়ার্রকে লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্ক  বলে। এই নেটওয়ার্ক এর ডাটা ট্রান্সফার গতি ১০এমবিপিএস। এই নেটওয়ার্ক এ ব্যবহিত ডিভাইসগুলো হলো রিপিটার, হাব, নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস ইত্যাদি।

Metropolitan Area Network (MAN) : একই শহরের মধ্যে অবস্থিত কয়েকটি ল্যানের সমন্বয়ে গঠিত ইন্টারফেসকে বলা হয় মেট্রোপলিটন এরিয়া নেটওয়ার্ক । এ ধরনের  নেটওয়ার্ক ৫০-৭৫ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে। এই নেটওয়ার্কর ডাটা ট্রান্সফার স্পিড গিগাবিট পার সেকেন্ড। এ ধরনের নেটওয়ার্ক এ ব্যবহিত ডিভাইস গুলো হলো রাউটার, সুইজ, মাইক্রোওয়েভ এন্টেনা ইত্যাদি।

WAN(Wide Area Network) : দূরবর্তী ল্যানসমূকে নিয়ে গড়ে উঠা নেটওয়ার্ককে ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক বলে। এ ধরনের নেটওয়ার্ক এর ডাটা ট্রান্সফার স্পীড ৫৬ কেবিপিএস থেকে ১.৫৪৪ এমবিপিএস। ওয়্যানের গতি ধীরে ধীরে পরিবর্তন হচ্ছে। এ ধরনের নেটওয়ার্কে ব্যবহিত ডিভাইসগুলো হলো রাউটার, মডেম, ওয়্যান সুইজ ইত্যাদি।

টপোলজি :

একটি নেটওয়ার্কে কম্পিউটারগুলো কিভাবে সংযুক্ত আছে তার ক্যাটালগকেই টপোলজি বলে । নেটওয়ার্ক ডিজাইনের ক্ষেত্রে টপোলজি বিশেষ ভূমিকা রাখে। টপোলজি বিভিন্ন ধরনের হতে পারে যেমন- বাস টপোলজি, স্টার টপোলজি, রিং টপোলজি,মেশ টপোলজি ইত্যাদি।  নীচে বিভিন্ন টপোলজিগুলো দেওয়া হলো:

নেটওয়ার্ক ক্যাবল :

এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারের ডাটা পাঠানোর জন্য যে ক্যাবল ব্যবহার করা হয় থাকেই নেটওয়ার্ক ক্যাবল বলে ।

নেটওয়ার্কিং করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ক্যাবল ব্যবহার করা হয় । যেমন:

কোএক্সিয়াল ক্যাবল
ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল
ফাইবার অপটিক ক্যাবল
কোএক্সিয়াল ক্যাবল :

কোন কোন লোকাল এরিয়া নেটওয়ার্কে কোএক্সিয়াল ক্যাবল ব্যবহার করা হয়। কোএক্সিয়াল ক্যাবল বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন- ৫০ওহম(আরজি-৮, আরজি-১১ আরজি-৫৮), ৭৫ ওহম(আরজি-৫৯) এবং ৯৩ ওহম(আরজি-৬২)। এ ক্যাবলের দাম অনেক কম। তামার তৈরি বলে ইএমআই সমস্যা রয়েছে।

ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল

ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল দুই দরনের হয়ে থাকে।

শিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল
আনশিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল
শিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল

শিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবলে প্রতিটি ট্যুইস্ট জোড়া থাকে একটি করে শক্ত আচ্ছাদনের ভেতর। ফলে ইলেকট্রিক ইন্টারফারেন্স অনেক কম থাকে। এই ক্যাবলের ডাটা ট্রান্সফার স্পীড ৫০০ এমবিপিএস হয়ে থাকে।

আনশিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবল

আনশিল্ডেড ট্যুইস্টেড পেয়ার ক্যাবলে পেয়ারের বাইরে অতিরিক্ত কোন শিল্ডিং থাকে না কেবল বাহিরে একটি প্লাষ্টিকের জেকেট থাকে। এই ক্যাবলের ডাটা ট্রান্সফার রেট ১৬ এমবিপিএস।
ফাইবার অপটিক ক্যাবল

এই ক্যাবলে তামার তারের চেয়ে কাচকে মিডিয়া হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক ইন্টারফারেন্স নেই। এই ক্যাবলের ডাটা ট্রান্সমিশন স্পীড অনেক বেশী। ফাইবার অপটিক ক্যাবল দুই ধরনের হয়ে থাকে। সিঙ্গল মোড ফাইবার এন্ড মাল্টিমোড ফাইবার। এই প্রধান অসুবিধা হলো দাম অনেক বেশী এবং ইনস্টল করা কঠিন।

SinglemodeOpticalFibre
 

রিপিটার:

রিপিটার হলো এমন একটি ডিভাইস যা সিগন্যালকে এমপ্লিফাই করার জন্য ব্যবহার করা হয়। ১৮৫ মিটার দূরত্ব অতিক্রম করার আগেই আপনি একটি রিপিটার ব্যবহার করে সেই সিগন্যালকে এমপ্লিফাই করে দিলে সেটি আরো ১৮৫ মিটার অতিক্রম করতে পারে। এটি কাজ করে ওএসআই মডেল এর ফিজিক্যাল লেয়ারে।

Repeater
 

হাব

হাব হলো একাধিক পোর্ট বিশিষ্ট রিপিটার। এটি কাজ করে ইলেকট্রিক সিগন্যাল নিয়ে। নেটওয়ার্ক এড্রেস কিংবা নেটওয়ার্ক এডাপ্টারের ম্যাক এড্রস নিয়ে হাবের মাথাব্যাথা নেই। এটিও কাজ করে ওএসআই মডেল এর ফিজিক্যাল লেয়ারে।

HUB
 

ব্রিজ

ব্রিজ এমন একটি ডিভাইস যা একাধিক নেটওয়ার্ক সেগমেন্টকে যুক্ত করে থাকে।  এটি প্রতিটি সেগমেন্ট বিভিন্ন ডিভাইসের হিসেব রাখার জন্য ব্রিজিং টেবিল তৈরি করে। ইহা ওএসআই মডেল এর ডাটালিংক লেয়ারে কাজ করে।

bridge
 

সুইচ

সুইচ হলো একাধিক পোর্ট বিশিষ্ট ব্রিজ।এটি প্রতিটি নোডের ম্যাক এড্রেস এর তালিকা সংরক্ষন করে। এটি ওএসআই মডেল এর ডাটালিংক লেয়ারে কাজ করে।

switch
 

রাউটার

এক নেটওয়ার্ক থেকে আরেক নেটওয়ার্কে ডাটা পাঠানোর পদ্ধতিকে বলা হয় রাউটিং। আর রাউটিং এর জন্য ব্যবহুত ডিভাইস হলো রাউটার। ইহা ওএসআই মডেল এর নেটওয়ার্ক লেয়ারে কাজ করে।

router
 

গেটওয়ে

বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্কসমূহকে যুক্ত করার জন্য ব্যবহিত ডিভাইসটি হলো গেটওয়ে। ইহা প্রটোকলকে ট্রান্সলেশন করে থাকে। ইহা ওএসআই মডেল এর ৭ লেয়ারেই কাজ করে।

network_config
 

10

বর্তমান তথ্য ও প্রযুক্তির যুগে আমরা নিজেদের একটি মুহূর্ত কম্পিউটার বা ইন্টারনেটের সেবা ছাড়া ভাবতে পারি না। কিন্তু অবাক করা বিষয় হচ্ছে – আজ থেকে মাত্র দুই দশকের কিছু বেশি সময় আগেও এসব জিনিস পৃথিবীর সিংহভাগ মানুষ কল্পনাও করে নি। কারন ততকালীন সময়ে পৃথিবীতে যেসকল কম্পিউটার বিজ্ঞানীরা ছিলেন তাদের কার্যক্রমের সাথে সাধারন জীবনযাত্রার মানুষদের কোন সম্পর্ক ছিল না। ১৯৯১ সালে টিম বার্নারসের www বা World Wide Web আবিষ্কারের ফলে কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের কার্যক্রম ও সাধারন মানুষদের মধ্যে যে শক্তিশালী সম্পর্কের সেতু তৈরি হয় তারই সুফল আজকের পৃথিবী দেখতে পাচ্ছে। কিছুদিন আগেও যেখানে কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের কার্যক্রম সম্পর্কে মানুষের কোন ধারনা ছিল না কিন্তু আজ কম্পিউটার বিজ্ঞানী হওয়া অথবা কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের সাথে কাজ করা অনেকের সপ্নে পরিণত হয়েছে।

শত শত কাগজ, বই আর নথিপত্রের জায়গায় আজ স্থান করে নিয়েছে পিসি, ল্যাপটপ এবং ইন্টারনেটের ই-বুক। আর বিভিন্ন রক্ষনাবেক্ষন অফিস ঘরের জায়গা করে নিয়েছে অনলাইন সার্ভার যা আগের চাইতে আরও অধিক ধারনক্ষমতার অধিকারী ও অনেক কম ব্যয়বহুল। সাধারনভাবে কম্পিউটার ডেভেলপার বা উন্নয়নকারী বললে আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠে সেইসব কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের ছবি যারা শুধু হার্ডওয়্যার নিয়ে কাজ করে। কিন্ত আসলে ধারনাটি ভুল। মাইক্রোসফটের সংজ্ঞা অনুসারে, ওয়েব ডেভেলপার, হার্ডওয়্যার ডেভেলপার, সফটওয়্যার ডেভেলপার এরা সবাই কম্পিউটার ডেভেলপারের অন্তর্ভুক্ত। কারন প্রতিটি বিভাগ একটি অপরটির সাথে জড়িত এবং এসব জিনিসের ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন দরকার হয় অন্যটিকে সহায়তা ও আরও অধিক শক্তিশালী করার জন্য।

বর্তমান বিশ্বে আপনার ব্যবসা যেধরনেরই হোক না কেন, ক্রেতা-গ্রাহকদের সম্মেলন করানোর জন্য আপনাকে ইন্টারনেটে সেবা প্রদানের প্রতি জোর দিতেই হয়। কারন অধিক ক্রেতা-গ্রাহক মানেই অধিক মুনাফা। আপনারা অনেকেই হয়তো এখনও বিষয়টি সঠিকভাবে অনুধাবন করেন না কিন্তু আজ অথবা কাল ঠিকই আপনি এই বিষয়ের উপর আগ্রহী হয়ে উঠবেন যখন দেখবেন আপনারই সমজাতীয় কোন ব্যবসায়ী এই পদ্ধতিতে অধিক মুনাফা অর্জন করছে। বর্তমান যুগে বেশিরভাগ অলাভজনক ও সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানও সারাবিশ্বে তাদের কার্যক্রম প্রচারের উদ্দেশ্যে ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত হয়। পৃথিবীর সবচেয় বড় থেকে ছোটো বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, হোটেল, রেস্টুরেন্ট, শপিংমল, ব্যাংক, এনজিও, বিমাকারী প্রতিষ্ঠান, ভ্রমনসেবা সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি সবাই তাদের ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে কম্পিউটার ডেভেলপারদের দ্বারা তাদের কাজ করিয়ে নেয়। আপনার জন্য যেমন হতে পারে –

-অধিক গ্রাহক আগমনের ফলে ব্যবসার নতুন নতুন দিক উন্মোচন হতে পারে।

– সম্ভাব্য ক্রেতাকে স্থায়ী ক্রেতায় রুপান্তর করা।

– নতুন নতুন অফার ক্রেতাদের সহজে জানানো যায়, যা বিক্রয় বৃদ্ধি ও অধিক মুনাফা অর্জনে সহায়তা করে।

– গ্রাহকদের সকল তথ্য সহজে ও নিরাপদে সংরক্ষণ করা যায় এবং সংরক্ষিত তথ্য সহজে বিশ্লেষণ করা যায়।

– ব্যবসার বর্তমান ক্ষতি ও ভবিষ্যতের সম্ভাব্য ক্ষতির কারন সম্পর্কে অবগত হওয়া যায়।

– ব্যবসায়ের সুনাম বৃদ্ধিতে প্রচুর ভূমিকা পালন করে।

আর আপনার ব্যবসা যদি প্রযুক্তিনির্ভর হয় তাহলে একজন কম্পিউটার ডেভেলপার কেন দরকার তা আপনই সবচেয় ভাল জানেন। তাই আপনার ব্যবসার ধরন অনুযায়ী কোন উদ্দেশ্যে আপনার একজন কম্পিউটার ডেভেলপার দরকার তার সঠিক পরিকল্পনা করে তারপর সিদ্ধান্ত নিন। আপনি যদি নিজে যথাযথ জ্ঞানসম্পন্ন হয়ে থাকেন তাহলে তা খুবই ভাল, কিন্তু যদি না হন তাহলে একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে সাথে রাখতে পারেন।
আপনাদের সবার সুন্দর ও প্রযুক্তিনির্ভর সফল ভবিষ্যৎ কামনা করে আজকের মত বিদায় নিচ্ছি।

11
শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বেই বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরির ঘটনা নিয়ে তুমুল ঝড় বয়ে যাচ্ছে। এ ঝড়ের কবলে পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক নিউইর্য়কের ফেডারেল রিজার্ভে রক্ষিত আশি মিলিয়ন ডলার হারিয়েছে। আর একই সাথে হারিয়েছে তার সর্বাধিক পরিচিত গভর্নর আতিউর রহমানকে। জনাব আতিউরের সাথে সাথে ঝড়ে বাস্তচ্যূত হয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নর এবং সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং ডিভিশনের সচিব সাহেবও।

বলা হচ্ছে, চিনা হ্যাকারগণ বাংলাদেশ ব্যাংকের কম্পিউপার নেটওয়ার্কে ঢুকে দিয়েছিল একটি বিপজ্জনক ম্যালওয়ার। গোয়েন্দা কর্মে পটু এ ম্যালওয়ারটি গত জানুয়ারী/২০১৬ মাসে নেটওয়ার্কে ঢুকে দিব্যি চুপটি মেরেছিল। মাস খানিক পর নীরবতা ভেঙ্গে সে অপকর্ম শুরু করে দেয়। সে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্যাংকের সুইফট (SWIFT) কোডে ঢুকে, ৩৫ টির মতো ইনভয়েজ বা চাহিদা পত্র তৈরি করে সেগুলোর বিপরীতে ডলার পরিশোধের জন্য নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভকে অনুরোধ করে। পাঁচটি ইনভয়েচের বিপরীতে ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকে (আরসিবিসি) এবং কিছু টাকা শ্রীলংকার একটি ব্যাংকে পাঠাতে অনুরোধ করে। এসব ডলার এমন সব ব্যাংকে পাঠানোর অনুরোধ করা হয় যেখানে সাধারণত বাংলাদেশ ব্যাংক লেনদেন করে না। তাই ইনভয়েসগুলোর ব্যাপারে সন্দেহ হলে নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ বাংলাদেশ ব্যাংকে ইমেইলে বিষয়টি পরিষ্কার করতে বলে। কিন্তু সরকারি ছুটির কবলে পড়ে বংলাদেশ ব্যাংক সময় মতো উত্তর দিতে পারেননি। তাই নিউইয়র্ক রিজার্ভ থেকে একাশি মিলিয়ন ডলার ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের একটি শাখায় হস্তান্তর করা হয়। হ্যাকারগণ সেই ডলার একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর নামের বিপরীতে একাধিক ভূয়া একাউন্ট খুলে স্থানীয় মুদ্রায় পরিবর্তন করে সেসব অর্থ তুলে নিয়ে সোজা চলে যায় জুয়ার বোর্ডে। সেখানে দাও মারার অভিনয় করে হাত বদল করে আপাতত সাদা বানিয়ে চুপচাপ কেটে পড়ে।

অন্যদিকে শ্রীলংকার ব্যাংকে বিশ মিলিয়ন ডলার স্থানান্তর কালে ব্যাংক লক্ষ করে যে হ্যাকারগণ প্রাপকের নামের বানান অস্বাভাবিক রকম ভুল করেছে। ”শালিকা ফাউন্ডেশন’ নামের একটি ভুয়া এনজিওর বিপরীতে তারা এ ডলারগুলো ক্যাশ করতে চেষ্টা করে। কিন্তু তারা ‘Foundation’ এর পরিবর্তে ‘Famdation’ লিখেছিল। এ সন্দেহের জন্য শ্রীলংকান ব্যাংক ২০ মিলিয়ন ডলার প্রদান স্থগিত রাখে। তাই বাংলাদেশ এই ২০ মিলিয়ন ডলার ফেরত পায়।

পত্রিকায় প্রকাশ চিনা হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে মোট ২০০ মিলিয়ন ডলার চুরি করার পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হয়েছিল। কিন্তু সংশ্লিষ্ট রিজার্ভের সন্দেহ, প্রাপকের নামের বানান ভুল ইত্যাদি কারণে তা আর হয়ে ওঠেনি। তাদের অপকর্ম উদঘাটিত হয়েছে।

অনেক তোলপাড় হচ্ছে এই টাকা চুরি নিয়ে। প্রশ্ন উঠেছে আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে। বাংলাদেশ ব্যাংক হল ব্যাংক সমূহের ব্যাংক মানে ব্যাংক ব্যবস্থার পিতৃব্য ও অভিভাবক। কিন্তু তাদের সিস্টেমের এ গলদ বর্তমানে বাংলাদেশের গোটা ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখোমুখী করেছে। ইতোপূর্বে বাংলাদেশের কয়েকটি বাণিজ্যিক ব্যাংকে ডিজিটাল লেনদেনকালে চুরি বা প্রতারণার ঘটনা ঘটেছিল। এটিএমকার্ড ক্লোন করে কয়েকটি ব্যাংকের বুথ থেকে টাকা উত্তোলন বা চুরির মামলার তদন্ত এখনও অভ্যাহত রয়েছে। তারই ফাঁকে ঘটলো খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক একাউন্ট থেকে আঞ্চলিক হ্যাকারদের সূক্ষ্ম চুরির ঘটনা।

বলা বাহুল্য, কালান্তরে চুরির সংজ্ঞা পাল্টে গেছে, পালটে গেছে চোর ও তাদের সহযোগিদের পরিচয়ও । চুরি হল এখন ডিজিটাল বা সাইবার চুরি। চোরগণ এখন মানুষের বসতবাড়িতে ঢুকে কিংবা ব্যাংকের ভল্টে ঢুকে টাকা চুরি করার মতো এনালগ অবস্থায় নেই। তারা এখন গায়ের জোরে বা দৈহিক কৌশলে চুরি করছে না। আবার এই চুরি এক হাজার, দশ হাজার কিংবা দশ লক্ষ টাকার চুরি নয়। এ চুরি হাজার হাজার কোটি টাকার চুরি; একটি দেশের সমূদয় কোষাগার শূন্য করে দেবার মতো ভয়ংকর মাত্রার চুরি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আলোচিত চুরির ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে পত্রপত্রিকায় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে দোষারোপ করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চুরির টাকা উদ্ধার কিংবা চুরির ঘটনাটি বুঝতে সময় নিয়েছে এক মাস। এর মাঝে তারা সরকারকেও জানায়নি। এক মাস পরে বিদেশি পত্রিকার সূত্রে খোদ সরকারকে তা জানতে হয়েছে। সরকারকে জানাতে বিলম্বের কারণ হিসেবে গভর্নরসহ অন্যান্যরা বলছেন যে তারা ভিতরে ভিতরে এই চুরির টাকা ফেরত আনতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা পারেন নি। তাদের সে গোপন আথচ সৎ প্রচেষ্টা সর্বতভাবেই ব্যর্থ হয়েছিল।

এখন এই চুরির মামলার তদন্ত করছে পুলিশের সিআইডির অরগানাইজড ক্রাইম শাখা। তারা ইতোমধ্যেই তাদের তদন্ত কাজ শুরু করেছে। কিন্তু প্রশ্ন হল তারা কি পারবে এত উচ্চমার্গের প্রযুক্তি নির্ভর একটি চুরির ঘটনার সকল রহস্য উদ্ঘাটন করতে। সিআইডির কি সেই প্রশিক্ষণ, সেই মেধা কিংবা সেই প্রযুক্তি আছে? অন্যদিকে এই চুরির অংকটা যেমন বড় তেমনি এর সাথে জড়িত ব্যক্তিরাও সারা বিশ্বের নিভৃত অঞ্চলের অধিবাসী। বলা হচ্ছে, হ্যাকারগণ চিনের নাগরিক। কিন্তু তারা বাস্তবিক কাজটি করেছেন চিনের বাইরে। তাদের অপরাধস্থল চিন, ফিলিপাইন, শ্রীলংকা, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত। তাই এই মামলার তদন্ত কেবল জটিলই নয়, ব্যয়বহুলও বটে। এ তদন্ত যতটা না দেশিয় বা স্থানীয় তারচে অনেক বেশি বিদেশিয় বা আন্তর্জাতিক। বুঝলাম এই জটিল ও প্রযুক্তি নির্ভর অপরাধটি উদঘাটনের জন্য সিআইডির দক্ষতা ও প্রযুক্তি রয়েছে। সিআইডি ইতোমধ্যে ফাইনানশিয়াল অপরাধ তদন্তের ক্ষেত্রে দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। এ জাতীয় অপরাধ তদন্তের জন্য তাদের দক্ষ জনবলও আছে। মানব পাচার প্রতিরোধ আইনের অধীন বহু মামলার তদন্ত সিআইডি করেছে এবং করছে যেগুলোর আকুস্থলের বৃহত্তম অংশ ছিল বিদেশে।

তাদের নিজস্ব একটি নিজস্ব সাইবার ল্যাবও রয়েছে যা দক্ষিণ কোরিয়ার সহায়তায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।। বেশ কিছু কর্মকর্তা সাইবার ক্রাইম ও সাইবার/ কমপিউটার ফরেনসিকের উপর কোরিয়া, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এর বাইরেও সাইবার নিরাপত্তার ও অর্থনৈতিক অপরাধের উপর সিআইডির অনেক কর্মকর্তার উচ্চতর ডিগ্রি ও রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোও এ তদন্তে বিশেষভাবে সহায়তা করবে। তারা বেসরকারি কিংবা দেশি বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সহায়তাও নিতে পারবে। কিন্তু সবচেয়ে বড় যে বাঁধাটি এখানে আসবে তা হল, তদন্তের ক্ষেত্রে ব্যয়ের প্রশ্নটি। ফৌজদারি মামলার তদন্তের জন্য সরকার কর্তৃক পুলিশ অফিসারদের যে যৎ সামান্য খবচ দেয়া হয়, সেই খরচে একটি মাটির ঘরে সিঁধেল চুরির ঘটনার উদ্ঘাটন কোন রকমে হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের সাইবার স্পেসে এই মিলিয়ন মিলিয়ন ডলাররে চুরির মামলা তদন্তের জন্য সেই অর্থ কোনভাবেই পর্যাপ্ত নয়। এমনকি সারা বছর তদন্তের ব্যয়ের জন্য গোটা পুলিশকে যে বাজেট দেয়া হয়, এ মামলার তদন্ত করতে তার চেয়েও বেশি খরচ হতে পারে। এমতাবস্থায়, এ তদন্তযজ্ঞে সরকারকে বিশেষভাবে অর্থ বরাদ্দ করতে হবে।

বলা হয়ে থাকে যে অপরাধীদের অপরাধ ক্ষেত্রের মধ্যে একটি শনাক্তযোগ্য স্থানীয়তা রয়েছে। অর্থাৎ ঘরের ভিতরের চোর কিংবা চোরের সহযোগী ছাড়া ঘরে চুরি সম্ভব নয়। ঘর থেকে ধান চুরি, পান চুরির থেকে সাইবার জগতের এই মিলিয়ন ডলারের চুরির ঘটনা বহুলাংশে পৃথক হলেও চুরির ঘটনা তদন্তের মূলসূত্র কিন্তু একই। বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা, কর্মচারী কিংবা সাইবার নিরাপত্তার সাথে যারা সংশ্লিষ্ট তাদের সহযোগিতা না হলেও তাদের কর্তব্যে অবহেলা বা উদাসীনতার সুযোগ হ্যাকারগণ অবশ্যই গ্রহণ করেছে। মাননীয় অর্থমন্ত্রীও তার এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। আমাদের তদন্তকারীরাও ঘরের চোরের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করছেন বলে মনে হয়।

এ চুরির ঘটনাটির পরিসমাপ্তি ঘটেছে কিন্তু ফিলিপাইনে। ফিলিপাইনের রিজাল ব্যাংকের জুপিটার রোড শাখার ম্যানেজারের সাথে স্থানীয় এক বড় ব্যবসায়ীর যোগসাজস রয়েছে বলে পত্রিকায় খবর এসেছে। ঐ ব্যবসায়ীর নামেই নাকি ঐসব ভূয়া একাউন্ট খোলা হয়েছিল। যদিও একাউন্টগুলো ভূয়া ছিল তবুও জানা যায় যে সেই ব্যবসায়ী স্বয়ং উপস্থিত থেকে সেই টাকা উত্তোলন করেছেন। উত্তোলিত টাকা নাকি ব্যাংক ম্যানেজারের রুমেই জমা করে তারই গাড়িতে করে গন্তব্য স্থানে পৌঁছে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু ব্যাংকের ম্যানেজারকে পাওয়া গেলেও সেই ব্যবসায়ী এখন লাপাত্তা। খবরে প্রকাশ ফিলিপাইন সরকারও বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখছেন। রিজাল ব্যাংকের কর্মকর্তারা ইতোমধ্যেই তাদের সিনেটের কাছে তুলোধুনো হয়েছেন। আর সর্বশেষ খবরে প্রকাশ রিজাল ব্যাংকের কয়েকজন কর্মকর্তাকে ইতোমধ্যেই বরখাস্ত করা হয়েছে। আর এসবই আমাদের ধারণা দেয় যে সাইবার স্পেসে এ বৃহৎ চুরির ঘটনাটির তদন্ত কার্যকরভাবে সম্পাদিত হবে।

একজন ভিকটিম হিসেবে আমাদের অবশ্যই সৎপ্রত্যাশে দেশের ইতিহাসের এই ভয়াবহ চুরির ঘটনাটির একটা কুল কিনারা করা যাবে। চোরাই মাল উদ্ধার করা যদি সম্ভব নাও হয়, তাহলে অন্তত চোরদের শনাক্ত করা সম্ভব হবে এবং সেই সাথে জানা সম্ভব হবে আমাদের ঘরের বেড়ার কোন দিকটা দুর্বল, কোন দিক দিয়ে চোর ঢুকেছিল আর এ চোরদের এদেশীয় সহযোগী কে বা করা কিংবা অদক্ষতা বা উদাসীনতার কৃঞ্চ গহ্ববরটি কোথায়।

পরিশেষে আমাদের দেশের সামাজিক নিরাপত্তার আলোকে সাইবার সিকিউরিটি নিয়ে একটি কথা না বললেই নয়। এটা অনস্বীকার্য যে আমরা দ্রুত সাইবার জগতের স্থায়ী নাগরিক হতে যাচ্ছি। সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের যে পরিকল্পনা তা দ্রুতই বাস্তবায়িত হচ্ছে। কিন্তু আমরা যেভাবে বা যে দ্রুত গতিতে ঘর নির্মাণ করছি, সেইভাবে ঘরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করতে পারছিনা। জাতিগতভাবে আমরা নিজস্ব নিরাপত্তার ব্যাপারে অনেকটাই উদাসীন। কোটি টাকায় নির্মিত ঘরের লক্ষ টাকার কপাটে আমরা শত টাকার সস্তা তালা লাগাতে অভ্যস্ত। তাই নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আমাদের বিনিয়োগ অতি সামান্য। অন্যদিকে, নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা অন্যদের উপর, বিশেষ করে সরকার বা সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর উপর সম্পূর্ণ ছেড়ে দিয়ে নিশ্চিত হতে চাই। কিন্তু নিরাপত্তা বা অপরাধ প্রতিরোধ প্রত্যেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্টানের ব্যক্তিগত দায়। টাকা পয়সার বিনিময়ে ভাড়া করা লোক দিয়ে (হোক না তারা সরকারের কর্মচারী বা কর্মকর্তা) এটা সম্পূর্ণ নিশ্চিত করা যায় না।

তাই আমাদের নাগরিকদের নিরাপত্তা বা অপরাধ প্রতিরোধে ব্যক্তিগত দায়-দায়িত্বটুকু বিনা বাক্যব্যয়ে স্বীকার করতে হবে। নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদেরই নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য কেবল অর্থব্যয় নয়, নিজেদের নিরাপত্তা বিষয়ে নিজেদের সামর্থ্য তৈরি করতে হবে। নিজেকে নিজে, ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগতভাবে নিরাপদ রাখার অভ্যাসটুকু গড়ে তুলতে হবে।

12
গুগলের এটিএপি গ্রুপের একটি প্রোজেক্ট হল প্রোজেক্ট সোলি। Google’s ATAP এর পূর্ণরূপ হল Google’s Advanced Technology And Projects। মানুষের হাতকে বিভিন্ন ডিভাইসের জন্য ইন্টারফেস হিসেবে ব্যবহার করার স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করার উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কাজ শুরু করে প্রোজেক্ট সোলি। ইতোমধ্যে তারা সোলি সেন্সর ডেভেলপ করার কাজ শেষ করেছে।

সোলি সেন্সরের মাধ্যমে যেকোন ডিভাইস মানুষের হাতের স্বাভাবিক ইশারামূলক অঙ্গভঙ্গি থেকে নির্দেশনা নিয়ে কাজ করতে পারবে। পুরো প্রক্রিয়াটি তার এবং হাতের স্পর্শ ছাড়াই ঘটে থাকে।

ব্যাপারটি অনেকটা এরকম যে আপনি আপনার বৃদ্ধাঙ্গুলি অদৃশ্য কোন একটা সুইচে প্রেস করলেন আর আপনার রুমের লাইটটি জ্বলে উঠলো। সোলি সেন্সরের মাধ্যমে এরকম আরো অনেক কল্পকাহিনী খুব সহজেই বাস্তবে পরিণত করা যাবে।

এবার আসি সোলি সেন্সর কিভাবে এরকম একটি অসাধ্য সাধন করছে সে ব্যাপারে। সোলি সেন্সর অনেকটা রাডার এর মতো কাজ করে। এটি খুব দ্রুততার সাথে এবং নির্ভুলভাবে এক মিলিমিটারের ভগ্নাংশ পর্যন্ত হাত এবং আঙ্গুলের গতি রিড করে কাজ করতে পারে। সেন্সর থেকে হাত দূরে সরিয়ে নিলে অথবা সেন্সরের এক পাশ থেকে অন্য পাশে সরিয়ে নিলে সিগন্যাল এবং এমপ্লিচিউট পরিবর্তিত হয়। এছাড়াও হাত মুষ্ঠিবদ্ধ করলে অথবা ফিঙ্গার ক্রস করলে সিগন্যাল পরিবর্তিত হয়।

এ প্রযুক্তির সবচেয়ে বড় আশার কথা হল গুগল সোলি প্রযুক্তি পরীক্ষাগারে আবদ্ধ না রেখে মানুষের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা করেছে। প্রোজেক্ট সোলির ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে সলি সেন্সরসহ এমন একটি ডিভাইস কিট বাজারজাত করা যেন এটি ব্যবহার করে ডেভেলপাররা খুব সহজেই নতুন নতুন ইন্টেরঅ্যাকশান এবং অ্যাপলিকেশন তৈরি করতে পারে।

13

এক যুগ আগের প্রজন্ম যেখানে মাঠে খেলাধুলা করে সময় কাটিয়েছিল, সেখানে এখনকার প্রজন্ম কাটাচ্ছে ফেইসবুক কিংবা ইন্টারনেটে! এ নিয়ে বর্তমান মা-বাবার মধ্যে উৎকণ্ঠার শেষ নেই। আপনি সম্ভবত খুব একটা অবাক হবেন না যখন শুনবেন আপনার ছেলে-মেয়ে  টিভি, ভিডিও, ভিডিও গেম, গান শোনা কিংবা ফেইসবুকে অনেক সময় ব্যয় করছে, কিন্তু কতটা সময় ব্যয় করছে সেটা শুনলে আপনি মর্মাহত হতে পারেন! একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে এই প্রজন্মের টিনএজ (তের থেকে উনিশ বছরের) ছেলে মেয়েরা ফেইসবুক কিংবা ইন্টারনেটে দৈনিক নয় ঘন্টা সময় ব্যয় করে। এবং ৯২ ভাগ টিনএজ ছেলে-মেয়েরা প্রতিদিনেই ইন্টারনেট ব্যবহার করে। আর এই ইন্টারনেট ব্যবহারের ৭১ ভাগই শুধু ফেইসবুক ব্যবহার করে! আমেরিকার কমনসেন্সে মিডিয়া নামের এক প্রতিষ্টান এক জরিপে বলেছে যে, ছেলে-মেয়েরা দিনে কমপক্ষে ১০০ বার ফেইসবুকে লগইন করে! চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে, নয় ঘন্টা সময় যা ওদের ঘুমানোর সময়ের চেয়ে বেশি কিংবা মা-বাবা ও শিক্ষকদের সাথে কাটানোর সময়ের চেয়ে বেশি! এই পরিসংখ্যান আসলেই উদ্বেগজনক!

কেন ছেলে–মেয়েরা ইন্টারনেটে আসক্ত হচ্ছে?

অনলাইন অ্যাক্সেস আধুনিক বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং আমাদের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষার  একটি গুরুত্বপূর্ণ  মাধ্যম।  উপরন্তু, এটি একটি অত্যন্ত বিনোদনমূলক ও তথ্যপূর্ণ  মাধ্যম।  যাইহোক, এইসব   গুণাবলী  ছাড়াও  এটি অনেক টিনএজ ছেলে-মেয়েদের কাছে আনন্দদায়ক  মাধ্যম হিসেবে উপলব্ধ হচ্ছে কারন তারা   ইচ্ছে করলেই  একটি  অনলাইন  চ্যাট  রুমে  গিয়ে চ্যাট করতে পারে কিংবা নিজ ঘরে বসে পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তের অন্যান্য খেলোয়াড়দের সাথে  রোমাঞ্চকর এবং চ্যালেঞ্জিং গেম খেলতে পারে। মাদকাসক্তির মতই, ইন্টারনেটও এদের কাছে বেদনাদায়ক অনুভূতি বা সমস্যাগ্রস্থ পরিস্থিতিতে অব্যাহতি একটি উপায়  হিসেবে উপলব্ধ হয়। একটি মাউস ক্লিক করে তারা একটি ভিন্ন জগতে প্রবেশ করতে পারে যেখানে তাদের বাস্তব জীবনের সমস্যা নেই এবং তাদের ইচ্ছে বা আকাঙ্ক্ষাগুলো নিমিষেই বাস্তবায়ন করেতে পারছে।

এজন্যই তারা কিছুক্ষেত্রে তাদের ঘুমের সময়টুকুও ব্যয় করছে এই ইন্টারনেটের পেছনে। উপরন্তু মা-বাবা কিংবা বন্ধু বান্ধবের চেয়ে ইন্টারনেট বা ফেইসবুকে সময় কাটনোতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে।

সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে, যেসব ছেলেমেয়েরা মা-বাবার কাছ থেকে কম সময় কিংবা সমাদর পায়, অথবা যারা দরিদ্র সামাজিক ব্যবস্থার মধ্যে বড় হয়ে উঠে অথবা যারা অন্যদের সাথে সহজে মিশতে পারে না, তারাই ইন্টারনেট কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দিকে বেশী ঝুঁকে পরছে।

এই ইন্টারনেট আসক্তি তাদের দলবদ্ধভাবে কাজ করার ক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে। এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এখনকার ছাত্রছাত্রীরা দলবদ্ধভাবে কোনো কাজ করার চেয়ে কম্পিউটারে এককভাবে কোনো কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে! আবার ক্লাসের ফাঁকে অবসর সময়ে পরস্পরের সাথে কথা বলার চেয়ে মোবাইল নিয়ে সময় কাটাতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে।

বস্তুত এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কিংবা ইন্টারনেট আমাদের ছেলে মেয়েদের কাল্পনিকভাবে সামাজিক করার নামে বাস্তবতা থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে।

 

মা–বাবা  কী করতে পারেন?

সমস্যা নিয়ে সরাসরি কথা বলাঃ

সন্তানের উপর রাগ দেখিয়ে কিংবা ভয় দেখিয়ে আপনি কখনই সন্তানদের বুঝাতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে মা-বাবা উভয়ের উপস্থিতে আন্তরিকভাবে সমস্যার কথা তুলে ধরা উচিত। এতে করে সন্তান বুঝতে পারবে তার মা-বাবা বিষয়টি কত গুরুত্বের সাথে উপস্থাপন করছে এবং মা-বাবা দুজনকেই কিছু একই সাধারন উপসংহারে সম্মত হতে হবে। কাঙ্খিত লক্ষ্য পৌঁছাতে গেলে অনেক সময় সন্তান আপনার মতামতের সাথে এক না হয়ে উল্টো আপনাকে দোষারোপ করতে পারে, সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি বিবেচনা করে মা-বাবার কিছু ছাড় দেয়া মানসিকতাও থাকতে হবে। অনেকসময় আবেগদিয়ে কিছু কথা বললে সন্তানরা সেটা গ্রহন করে, এইধরনের কিছু পরিস্থিতিতে আপনার সন্তানের অনুভূতি বুঝে পরিকল্পিত আবেগপূর্ণ  কথা বললে ওদের সাড়া পাওয়া যায়।

সন্তানের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনঃ

সমস্যা আলোচনা করার পূর্বে যদি আপনি সন্তানের প্রতি ভালোবাসা কিংবা যত্ন প্রকাশ করেন তা সন্তানের মনোযোগ আকর্ষণ করতে অনেকাংশে সহায়তা করবে। আপনি যে তার সুখ এবং মঙ্গল কামনাকারী, তাকে তা বুঝাতে হবে। সন্তানরা প্রায়ই তাদের খারাপ আচরনের জন্য দায়ী এবং সমালোচিত হয়।  যার জন্য তাদের মধ্যে বিরুপ ধারণা কাজ করে। কিন্তু আপনাকে এটাই  আশ্বস্ত করতে হবে যে আপনি আপনার সন্তানের আচরন নিয়ে কোন দোষারোপ বা নিন্দা করছেন না। বরং, বলুন আপনারা তার আচরনের কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করেছেন এবং ঐসব পরিবর্তনগুলো সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করেতে হবে। সেইসাথে সেই পরিবর্তনগুলো কেন আপনাদের দৃষ্টিতে খারাপ, তার বিরুপ প্রতিক্রিয়া কি ইত্যাদি সুনিদিষ্টভাবে আলোচনা করতে হবে। তাদের ইন্টারনেট ব্যবহার বন্ধ করা যাবে না। বলতে হবে নিদিষ্ট সময়ের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে কিন্তু কি পরিমান সময় ব্যয় করছে এবং কি কাজে সে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে তা জানাতে হবে। তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিন যে, টেলিভিশন দেখলে আপনি  যেমন তাদের দেখার অভ্যাস সহজে নজর রাখতে পারেন, ঠিক তেমনি ইন্টারনেট ব্যবহারেও তাদের আপনার সাহায্য ও সহযোগিতা প্রয়োজন। তাদেরকে এই পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের মধ্যে রেখে দুই সপ্তাহ আপনার নজরদারিতে রাখলে দুই সম্পর্কের মাঝে বিশ্বাস গড়ে উঠবে। যদি তারা আপনার এই প্রস্তাবে সাড়া না দেয় কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ে আপনার সাথে মিথ্যা কথা বলে তবে বুঝতে হবে আপনার সন্তান ইন্টারনেট আসক্তির কথা অস্বীকার করছে।

 কম্পিউটারে নিজে আরো দক্ষ হোন:

কিভাবে হিস্ট্রি (ইতিহাস) ফোল্ডার পর্যবেক্ষণ করতে হয় তা জানুন এবং শিখুন  সফটওয়্যার পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে।  কিভাবে বিভিন্ন ইন্টারনেট কনটেন্ট ফিল্টার (অনাকাঙ্ক্ষিত সাইট ব্লক)  করতে হয় তা জানুন। এটা গুরুত্বপূর্ণ যে মা-বাবারা কম্পিউটার ও অনলাইন সম্পর্কে এতটুকু জ্ঞান রাখবেন যাতে আপনার সন্তানরা অনলাইনে কি করছে তা সহজেই বুঝতে পারেন। হয়তবা আপনার এসব প্রযুক্তিতে তেমন আগ্রহ নেই কিন্তু সন্তানের স্বার্থে আপনাকে আপডেট থাকা জরুরি।

  যুক্তিসঙ্গত নিয়ম সেট:

অনেক মা-বাবাই তাদের সন্তানের ইন্টারনেট আসক্তি লক্ষণ দেখে সহজেই রেগে যান এবং শাস্তিস্বরূপ তাদেরকে কম্পিউটার থেকে দূরে রাখেন। আবার অনেকেই সন্তানদের মারধোর  করেন এবং বিশ্বাস করেন যে সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার এগুলোই একমাত্র উপায়। বাস্তবিকে উভয় পন্থাই আপনার সন্তানের জন্য বিপত্তি ডেকে আনে। যেমন, তারা উপলব্ধি করে যে তারা খারাপ কোনো কাজ করেছে, আবার তারা মিত্র এর পরিবর্তে শত্রু হিসাবে আপনাকে গন্য করবে, আবার অনেকেরই পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াস্বরূপ স্নায়বিক দুর্বলতা, রাগ এবং অস্বস্তিবোধ হতে পারে।

এক্ষেত্রে আপনি কি করতে পারেন? আপনি সন্তানের সাথে সহজ সম্পর্কের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য একটি নিয়ম চালু করতে পারেন। উদাহরনস্বরূপ প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইন্টারনেট বা ফেইসবুক ব্যবহার করতে দিতে পারেন, হতে পারে সেটা রাতের খাওয়ার পর কিংবা তাদের হোম ওয়ার্ক শেষ করার পর। উপরন্তু ছুটির দিনগুলোতে কিছু বাড়তি সময় দিতে পারেন। শুধু নিয়ম করলেই হবে না তা যথাযথভাবে পালন করছে কিনা তারদিকেও নজর রাখতে হবে। আবার এটাও খেয়াল রাখতে হবে যে, যাতে সন্তানরা মনে না করে যে আপনারা তাদের উপর জোর  করছেন। বরং উপলব্ধি করে, তারা যাতে মানসিকভাবে ইন্টারনেট আসক্ত হয়ে না পড়ে- তাতে আপনারা সহায়তা করছেন। এছাড়া ও মা-বাবারা সন্তানদের বিভিন্ন সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে উৎসাহী করে তুলতে পারেন। যেমন গল্পের বই পড়ার অভ্যাস, বিভিন্ন খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করতে দেয়া, নাচ-গান শিখানো ইত্যাদি।

সরকারি উদেগ্যে কিছু কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত পেইজ বন্ধ করার ব্যবস্থা করতে হবে। স্কুলের পাঠ্য পুস্তকে ইন্টারনেট আসক্তির অপকারিতা সম্পর্কে উল্লেখ করতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষকরাও এবিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করে তুলতে পারেন। টিনএইজ ছেলে-মেয়েদের ইন্টারনেট আসক্তি ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের বিষয়। তাই বলে বর্তমান বিশ্বে ইন্টারনেট থেকে দূরে থাকাও যুক্তিযুক্ত নয়। এবিষয়ে সবার বিশেষ করে মা-বাবাদের সচেতন থাকা উচিত। সকলের প্রচেষ্টায় ভালো একটা যুবসমাজ গড়তে পারাই আমাদের লক্ষ্য।

14
আ লাইট রিভিউ অব স্মার্টফোন

হাতে একটা আইফোন থাকলে ভাবটাই আলাদা। বিশ্বের এক নম্বর স্মার্টফোন হাতে থাকলে ভাব তো কিছুটা আসতেই পারে। তবে এই ভাবের দাম কত? ৭৫০ ডলার বড়জোর! জানা মতে, বাংলাদেশের বাজারে আইফোন সিক্স+ এর দাম ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। এখন কথা হলো, হাতের স্মার্টফোনটার দাম যদি হয় ১১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা তাহলে ভাবটা কেমন হবে! ফোনটা হাতে না আসা পর্যন্ত সেটা বলার সুযোগ নাই।

আর সেই ফোনটার নাম সোলারিন, যাকে বলা হচ্ছে, স্মার্টফোনের জগতে ‘রোলস রয়েস।’ আজই (২ জুন ২০১৬) বাজারে আসা ইসরাইলি কোম্পানি সিরিন ল্যাবস এর তৈরি এই স্মার্টফোন সম্পর্কে তাই জানার আগ্রহ আছে সবার। তো জেনে নেয়া যাক।

ক. সিরিন ল্যাবস এর দাবি, তাদের তৈরি সোলারিন-ই বিশ্বের ‘সবচেয়ে নিরাপদ’ স্মার্টফোন। প্রতিষ্ঠানটির ভাষ্যমতে, ব্যক্তিগত নিরাপত্তার যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে তা বিশ্বের আর কোন প্রতিষ্ঠানের কাছে নেই। সোলারিনে ব্যবহৃত হয়েছে ২৫৬-বিট এইএস এনক্রিপশন। এ প্রযুক্তি শুধুমাত্র সামরিক বাহিনীর যোগাযোগ প্রতিরক্ষা’র কাজে প্রয়োগ করা হয়। সোলারিন অন-অফ করার জন্য এর পেছন দিকে লাগানো আছে বিশেষ ‘নিরাপত্তা সুইচ।’ (বামে-ডানে থাকলেও চলতো।)
খ. সোলারিন নিয়ন্ত্রিত হয় ২ গিগাহার্য কুয়ালকম ¯œ্যাপড্রাগন ৮১০ প্রসেসর দ্বারা। ফলে বাজারের যে কোন স্মার্টফোনের চেয়ে ‘বহু গুণ’ বেশি দ্রুতগতি সম্পন্ন ওয়াই-ফাই সেবা দিতে সক্ষম এটি।

গ. সোলারিনের ফটোগ্রাফিক ফিচারও চমৎকার। পেছনের ২৩.৮ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরার সাথে আছে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফোর-টন ফ্লাশ লাইট।  (চোখ নষ্ট না হলেই ভাল।)  আর সামনে আছে ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা ও ফ্ল্যাশ লাইট। সেলফি তুলার অভিজ্ঞতাকে নতুনত্ব দেয়ার জন্য এই ক্যামেরায় আছে ইলেক্ট্রিকাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন পদ্ধতি।

ঘ. এবার টাচস্ক্রিনের পালা। লেড ২-কে রেজুলেশন সমৃদ্ধ ৫.৫ ইঞ্চি আইপিএস স্ক্রিনের নিরাপত্তায় ব্যবহার করা হয়েছে গরিলা গ্লাস-৪। ফিচারটি চলে অ্যানড্রয়েড ৫.১ অপারেটিং সিস্টেমে। (খারাপ না।)
ঙ. তবে সোলারিন কিন্তু মোটেই ‘আলালের ঘরের দুলাল’ নয়। অর্থাৎ এটা বাজার দখল করা হ্যান্ডসেটগুলোর মত অত মসৃন করে বানানো হয়নি। আর ওজনও কম না, ২৫০ গ্রাম। হ্যান্ডসেটটি দৈর্ঘ্যে ১৫৯.৮ মিলিমিটার আর প্রস্থে ৭৮ মিলিমিটার। পুরুত্ব ১১.১ মিলিমিটার। (চলবে মনে হয়।)

চ. এবার আসা যাক আসল কথায়। মানে চার্য থাকবে কতক্ষণ! সোলারিনের ব্যাটারির ক্ষমতা ৪০০০ মিলি-অ্যাম্পিয়া-ঘন্টা। উদ্ভাবনকারী প্রতিষ্ঠান সিরিন ল্যাবস জানিয়েছে, এই ফোনের এক চার্যে টকটাইম হবে ৩১ ঘন্টা আর স্ট্যান্ডবাই টাইম ‘দুই সপ্তাহ’ কিংবা তারচেয়েও বেশি। এই ফোনের চার্যিং সিস্টেম কোয়ালকম কুইক চার্য-২ সাপোর্ট করায় চার্য দিয়ে বসে থাকতে হবে না ঘন্টার পর ঘন্টা। (ভালই তো।)

র‌্যাম আর স্টোরেজের বিষয়টা বাদ পড়ে গেছে মনে হয়। সোলারিনের র‌্যাম ৪ জিবি’র আর ইন্টারনাল স্টোরেজ ১২৮ জিবি। তবে, এই স্টোরেজ বাড়ানোর কোন সুযোগ রাখা হয়নি। অর্থাৎ এক্সটার্নাল মেমোরি কার্ড ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই। (দরকারই কী!)

ছ. এবার চেহারা-সুরতের বিষয়ে আসা যাক। সোলারিন পাওয়া যাচ্ছে ৪টি আলাদা রঙে। টাইটেনিয়াম যুক্ত ফায়ার ব্ল্যাক কার্বন লেদার, হিরক সদৃশ্য কার্বন বিশিষ্ট ফায়ার ব্ল্যাক কার্বন লেদার, হলুদাভ সোনালী রঙের ফায়ার ব্ল্যাক কার্বন লেদার, হিরক সদৃশ্য কার্বণ বিশিষ্ট ক্রিস্টাল হোয়াইট কার্বন লেদার। (এত লেদার দেওয়া ঠিক হয় নাই।)

15
প্রযুক্তিবিদদের কাছে ‘ডেটা মাইনিং’ (Data Mining) পরিচিত হলেও প্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের কাছে বিষয়টি ততটা জানা নাও থাকতে পারে। যদিও এই ব্যবহারকারীরাই ডেটা মাইনিংয়ের যাবতীয় উপাত্তের জোগান দিয়ে যান আপন খেয়ালে; কখনও বেখেয়ালে। সহজ কথায়, গবেষণায় উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের ধরণই ডেটা মাইনিংয়ের মূল। একজন প্রযুক্তিবিদের কাছে উপাত্ত (Data), তথ্য (Information) ও জ্ঞান (Knowledge) হচ্ছে বিশ্লেষণের ক্রমান্বয় স্তর।

গবেষণায় এই বিশ্লেষণকে স্বয়ংক্রিয় (automated) করেছে তথ্যপ্রযুক্তি, যার কারিগরি কাঠামোতে মিলবে মাইনিং অ্যাপ্লিকেশন, মাইনিং সফটওয়্যার, ডেটা ওয়্যারহাউজ (Data Warehouse), অ্যালগরিদম (Algorithm)।

পুঁজিবাজারে বিপণন, মূল্যসূচক, পণ্যের বাজার অবস্থান, ভোক্তার চাহিদা বিশ্লেষণে ডেটা মাইনিং কাজে লাগে। এর মাধ্যমে বাজারমূল্য, ভোক্তা সন্তুষ্টি এবং প্রতিষ্ঠানিক লাভের উপর প্রভাব আগাম উপস্থাপন করা সম্ভব। ডেটা মাইনিং চিকিৎসাশাস্ত্রসহ নানা ধরনের শিক্ষামূলক গবেষণাতেও কাজে লাগে। ইন্টারনেট, ই-কমার্স আর সোশ্যাল নেটওয়ার্ক মিলেমিশে ক্রেতা, বিক্রেতা আর ব্যবহারকারীর একটি বৃহৎ বিচরণ ক্ষেত্র গড়েছে। ব্যক্তিগত সময় ব্যয়, ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা, বৃহৎ ব্র্যান্ডের বিজ্ঞাপন, প্রাতিষ্ঠানিক কর্ম সম্পাদন– সবই চলছে। এসবই সাইবার স্পেসে ডেটা মাইনিং-কে আবশ্যক করে তোলে।

ফেসবুকে হঠাৎ ফ্রেন্ড সাজেশনে স্কুল-বন্ধুকে পেয়ে খুশিতে নেচে উঠেছেন অনেকে। বন্ধুর সঙ্গে তোলা কয়েক বছর আগের ছবি আচমকা চোখের সামনে তুলে ধরে ফেসবুক বলছে, বন্ধুকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাও। ফেসবুককে তখন কেউ ভেবেছেন ‘চমৎকারি বাবা’। কেউ ভেবেছেন ‘বুদ্ধিমান’ (Intelligent)। প্রাযুক্তিক ভাষায়, একে বলা যায়, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (A.I বা Artificial Intelligence)। এই এআই-কে সফল করতে পারে ডেটা মাইনিং।

২০১৪ সালে ঘোষণা দিয়ে শিক্ষার্থীদের ইমেইলে ডেটা মাইনিং বন্ধ করতে হয়েছিল গুগলকে, যা প্রযোজ্য ছিল ৩০ মিলিয়ন শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের জন্য। অভিযোগ বরাবরই রয়েছে, ব্যবহারকারীর মেইলবক্স স্ক্যান করে গুগল। আসলে মেইলবক্স স্ক্যান থেকে করা হচ্ছে ডেটা মাইনিং এবং তাতেই ব্যবহারকারীর পছন্দ সম্পর্কে জেনে তাকে ব্যবসায়িকভাবে কাজে লাগানোর কৌশল নিতে পারে গুগল। যেমন, ব্যবহারকারীর নেটসার্ফিং ইন্টারেস্ট অনুযায়ী গুগলে এ্যাডসেন্স প্রদর্শিত হতে পারে।

জনপ্রিয় গুগল স্ট্রিট ভিউও কিন্তু ভিজ্যুয়াল ডেটা মাইনিং করে। ৬৫তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ গুগল স্ট্রিট ভিউয়ে যুক্ত হয় ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে। প্রযুক্তির চমৎকারিত্বে ‘মুগ্ধ’ ব্যবহারকারীরা সেসময় সবাই আপন আপন বাসস্থানের স্ট্রিট ভিউ ফেসবুকে উন্মুক্ত করেছিলেন। বিষয়টা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে তা নিয়ে অধিকাংশই ছিলেন অসচেতন। এখন আমেরিকা থেকে, চাই কী আইএসের ‘কল্পিত রাজধানী’ রাকা থেকেও ঢাকাকে রেকি করা সম্ভব। জনতার জাগরণের শাহবাগ পরিধিতে কত প্রশস্ত, তা উচ্চমান সম্পন্ন ৩৬০ ডিগ্রি স্ট্রিট ভিউতে ধরা পড়বে। স্ট্রিট ভিউতে দেখা যাবে গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁ সংলগ্ন অলিগলি!

ডিপফেস (DeepFace) প্রযুক্তি ফেসবুক ফেস ডিটেকশনকে এতটাই সুচারু করেছে যে, আপনি চিনে ফেলার আগেই ছবিতে থাকা আপনার বন্ধুটিকে ফেসবুক চিনে নিয়ে নিজে থেকে তার প্রোফাইল ট্যাগ করার পরামর্শ দেয়। অন্যদিকে চেক-ইন জনপ্রিয়তা ডেটা মাইনিং-কে সহজ করেছে। চেক-ইন ডেটা বিন্যাস থেকে ঢাকা শহরের রেস্তোরাঁগুলোর কোনটায় কী পরিমাণ গ্রাহক আনাগোনা করে, কোনটাতে দেশি আর কোনটাতে বিদেশিদের যাতায়াত বেশি, তা লেখচিত্র-তালিকা করে উপস্থাপন অসম্ভব কিছু নয়।

ফেসবুকে কোনো ব্যবহারকারীর পক্ষ থেকে যত বেশি উপাত্ত দেওয়া হবে, ডেটা মাইনিং থেকে উক্ত ব্যবহারকারী তথা ব্যক্তির পছন্দ ও অপছন্দের ধরন তত স্পষ্ট হয়ে উঠবে। ইমোটিকন-এর ব্যবহারও ফেসবুকে থাকা ব্যক্তিটির মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা জানান দেয়। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং জগতে ডেটা মাইনিং প্রযুক্তি একভাবে ‘ওপিনিয়ন মাইনিং’ (Opinion Mining) এবং ‘টেক্সট মাইনিং’ (Text Mining) করে। এভাবে বয়স, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাসস্থান, কর্মক্ষেত্র, প্রিয় সিনেমা, প্রিয় বই, সম্পর্ক– এমন সব বিন্যাসে ব্যবহারকারীদের বিভক্ত করা সম্ভব। প্রেমিকার সঙ্গে সদ্য ব্রেকআপে কোথাকার কতজন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, তাও ডেটা মাইনিং করা সম্ভব। সম্ভব হতে পারে ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের শ্রেণিবিন্যাসকরণও! এভাবে সহজ হতে পারে জঙ্গি সংগঠনগুলোর ‘সদস্য’ খোঁজার কাজটিও!

আমার এক পরিচিত ব্যক্তি প্রায়ই ওমুক-তমুক ব্যাংক থেকে লোন, স্যালারি অ্যাকাউন্ট খোলার অফার ইত্যাদি কারণে দেওয়া ফোনকলে বিরক্ত হন। সম্প্রতি ব্যাংক আলফালা থেকে তাকে স্যালারি অ্যাকাউন্ট করার অফার দেওয়া হয় ফোনে। স্যালারি অ্যাকাউন্ট খোলার অফার বস্তুত প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ এবং অ্যাকাউন্ট বিভাগের কাছে যাওয়াটা সমুচিত ছিল; খোদ গ্রাহকের কাছে ফোন আসাটা ভোক্তা হয়রানির সমতুল্য। এ ছাড়া এটা-সেটা অফার নিয়ে এসএমএস কিন্তু আসেই সবার কাছে। ‘টেলি-মার্কেটিং’ এভাবেই চলছে। যে ব্যাংকে ট্রানজাকশন হয়নি কখনো, যে দোকানে পা দেওয়া হয়নি ভোক্তার, সেখান থেকে ফোনকল ভোক্তার কাছে কী করে আসে? তাহলে ভোক্তার উপাত্ত (যেমন ফোন নম্বর) বিকিকিনি হচ্ছে। এবং এ-ও ডেটা মাইনিং!

সম্প্রতি আরেক পরিচিত ব্যক্তি সকাল সকাল একটি অপরিচিত নম্বর থেকে ফোনকল পান। অপর প্রাপ্ত থেকে পরিচয় দেওয়া হয় গ্রামীণ ফোন (জিপি) থেকে ফোন করা হচ্ছে। যাকে ফোন করা হলো তার নম্বরের শেষের দুটি ডিজিট বলে জানতে চাওয়া হয়, এটার ‘ওনার’ কি আপনি? আমার পরিচিত ওই ব্যক্তি ইতোমধ্যে রি-রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন সফলভাবে; নিশ্চিতকরণ বার্তাও পেয়েছেন। তা ছাড়া জিপি কলসেন্টার সিসটেমে ব্যবহারকারীর সাধারণ তথ্যগুলো থাকাটাই স্বাভাবিক। সুতরাং, পরিচিত ব্যক্তি উল্টো জানতে চান, আপনি জিপি থেকে ফোন করছেন, তা বুঝবো কী করে! এতে অপর প্রান্তের ব্যক্তিটি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন এবং চিবিয়ে চিবিয়ে বলেন, জিপি কোনো ফালতু কোম্পানি নয়। অপর প্রান্তের ব্যক্তি আরো জানান দেন, আপনার ফোনের লাইন কেটে দেওয়া হবে তখন বুঝবেন!

পরিচিত ব্যক্তিটি তৎক্ষণাত জিপি কল সেন্টারে ফোন করে তাকে করা ফোনের নম্বরসহ পুরো বিষয়টি জানান। জিপি কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধি নিশ্চিত করেন, সিম রি-রেজিস্ট্রেশন করা আছে, সুতরাং এভাবে কেউ সিম বন্ধ করতে পারবে না।

জ্বিনের বাদশার মতো ঠকবাজি থেকে শুরু করে আতংক তৈরি করতে জঙ্গি হুমকি প্রদান– ডেটা মাইনিং কিন্তু চলছে! তবে প্রযুক্তি ভয়ংকর কিছু হয়ে ওঠে যখন এর পরিচালনাকারীর ভেতরে দানবরূপটি প্রকট আকার ধারণ করে। মানবের নৈতিক, মানবিক, রাজনৈতিক ও প্রাযুক্তিক স্খলন ঘটলে ডেটা মাইনিং কেবল ব্যক্তির গোপনীয়তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে না, বরং আজকের বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদকে মদদ দেয়। ডেটা মাইনিং নির্ভর জঙ্গিবাদ বিস্তার ঠেকানোর কি প্রতিকার হতে পারে তবে? উত্তর: ডেটা মাইনিং-ই।

সম্প্রতি জিকা ভাইরাস বিস্তার সম্পর্কিত গবেষণায় প্রাযুক্তিক সহযোগিতা নিয়ে এগিয়ে এসেছে আইবিএম (IBM)। এ ক্ষেত্রে মানুষের ভ্রমণ-কাঠামো এবং প্রাকৃতিক ও পরিবেশগত অবস্থার নানা উপাত্ত বিশ্লেষিত হবে। গবেষণায় ডেটা মাইনিং আসলে এভাবেই ইতিবাচক।

দু-চারজন জঙ্গির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় হলেই যদি জঙ্গিবাদের কারখানা ধরা হয় বেসরকারি সব বিশ্ববিদ্যালয়কে, তবে বুঝতে হবে আমরা এখনো আবেগী এবং সীমিত দৃষ্টিকোণ থেকে জঙ্গি হামলাগুলোকে দেখছি। আলোচনার ভিত্তি গড়তে ডেটা মাইনিং সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশ ও বিদেশের জঙ্গি হামলাগুলোর যোগসূত্র, চরিত্র বিশ্লেষণ করা আবশ্যিক এখন। যেমন:

(১) আদর্শ জঙ্গিচরিত্র (Typical Terrorist Behavior) কেমন হতে পারে তা নির্ণয় করা;

(২) প্রযুক্তি প্রয়োগে জঙ্গিসংগঠনগুলোর বিভিন্ন ওয়েবসাইট ‘মনিটরিং’ করা;

(৩) স্পর্শকাতর তথ্য (রাষ্ট্রীয়, সরকারি, বেসরকারি) রয়েছে– এমন ডেটাবেজ/সিসটেম/এপ্লিকেশনে কার কতটুকু প্রবেশাধিকার রয়েছে তা খতিয়ে দেখা। প্রয়োজনে তাদের ব্যক্তিগত তথ্য যাচাই করে দেখা;

(৪) জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) একটি ছবি যুক্ত থাকলেও সরকারি কেন্দ্রীয় ডেটাবেজে ব্যক্তির কয়েক ধরনের প্রোফাইল ছবি থাকা জরুরি। ফেসিয়াল রেকগনিশন সিসটেম (Facial Recognition Systems) ব্যবহার করে জঙ্গিদের ছবি বিশ্লেষণ করলে পরিচয় মেলানো সহজ হতে পারে। যদিও এ ক্ষেত্রে প্রযুক্তির কিছু সীমাবদ্ধতা আছে;

(৫) ফেসিয়াল রেকগনিশন সফটওয়্যার ব্যবহার করে সিসিটিভি ফুটেজ থেকে চেহারা নির্ণয়। এ ক্ষেত্রেও প্রযুক্তির কিছু সীমাবদ্ধতা আছে;

(৬) এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে সংগঠিত সব জঙ্গি-কর্মকাণ্ডের ‘ইনসিডেন্ট ডেটাবেজ’ তৈরি করতে হবে। প্রতিটি ঘটনার বিশ্লেষণ থেকে প্রাপ্ত উপাত্তের ডেটা মাইনিং করে হামলা ও পরিকল্পনাগুলোর মধ্যে যোগসূত্র, সাধারণ চরিত্র নির্ণয় করতে হবে;

(৭) পাঁচজন জঙ্গির শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দেখে অনুসিদ্ধান্ত না টেনে বরং এখন পর্যন্ত আটককৃত কিংবা নিহত সব জঙ্গির পূর্ণাঙ্গ প্রোফাইল তথা ডেটাবেজ করতে হবে। এরপর এদের জন্মস্থান, বয়স, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কর্মক্ষেত্র, ভ্রমণবৃত্তান্ত, রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা, অর্থনৈতিক অবস্থার উপাত্তগুলো সমন্বয় করে এদের মধ্যকার যোগসূত্র, সাধারণ চরিত্র নির্ণয় করতে হবে;

(৮) জাতীয় পরিচয়পত্রকে আরো ডিজিটাইজড করতে হবে। ব্যক্তির নামে জঙ্গি, জেএমবি, জামায়াত-শিবির, পেট্রোলবোমা হামলা, যুদ্ধাপরাধজনিত মামলা, আটকাদেশ থাকলে উক্ত ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্রের ডেটাবেজে এসব মামলা ও আইনি বিবরণ যুক্ত করতে হবে। এনআইডি নম্বর ব্যবহার করে এসব তথ্য কেবলমাত্র সরকারের গোয়েন্দা ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ‘বিশেষ অনুমতি’ সাপেক্ষে দেখতে পারেন। এ ধরনের ডেটাবেজ বিশ্লেষণ করে পুলিশ কিংবা গোয়েন্দা সংস্থা সন্দেহভাজনদের তালিকা প্রস্তুত করতে সক্ষম হবেন;

(৯) নিখোঁজ ব্যক্তি সংক্রান্ত তথ্য (যেমন জিডির বিবরণ) এনআইডি কেন্দ্রীয় ডেটাবেজে সংযুক্ত করা উচিৎ। ব্যক্তি কবে থেকে নিখোঁজ, কবে ফিরলেন নাকি ফিরলেন না– এসব ডেটা মাইনিং করাও আবশ্যক;

(১০) খেয়াল করতে হবে, গুলশান হামলাকারীদের প্রোফাইল ছবিগুলোতে আলোর প্রাচুর্যতা দেখা গেছে। জঙ্গিদের হাতে, অস্ত্রের উপর, মুখের একপাশে উজ্জল আলো যেভাবে ছিল, তা হয় দিনের আলো নয় তো বড় ফ্লাশ লাইটের আলো। কিন্তু কল্যাণপুরের জঙ্গিদের ছবিগুলোতে ‘আলো ঘরে’ তোলা আলোর মতো সীমিত। আলোর আধিক্যে এবং সম্ভবত ক্যামেরার মানের কারণেও গুলশান হামলায় জড়িত জঙ্গিদের প্রোফাইল ছবিগুলোর ‘মান’ কিছুটা ভালো মনে হয়েছে। রিটা কাৎজের ‘সাইট’ ও আইএসের মুখপত্র ‘আমাক’ সত্যায়নকারী হয়ে যেসব ছবি প্রচার করছে, সেসব ছবির ইমেজ/ফটো ভেরিফিকেশন করা প্রয়োজন। গুলশান হামলাকারীদের ছবির পেছনের ব্যাকগ্রাউন্ড আর কল্যাণপুরে অবস্থানতর জঙ্গিদের ছবির প্রাযুক্তিক বিশ্লেষণ করলে জঙ্গি সংগঠনগুলো বিভ্রান্তি কম ছড়াতে পারবে;

(১১) বাংলা-ইংরেজি-আরবি মিশিয়ে যে তিন তরুণের ভিডিওবার্তা প্রচার হয়েছিল, সেই ভিডিও ইমেজ ভেরিফিকেশন করা প্রয়োজন। পেছনের ঘোলাটে ব্যাকগ্রাউন্ডে চলমান গাড়ি, রাস্তা– এসব কোন শহর হতে পারে, তা নির্ণয় প্রযুক্তির ব্যবহারে অসম্ভব কিছু নয়।

সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে ‘ক্রস-বর্ডার সাইবার আইন’ নিয়ে একটি ‘কনফারেন্স পেপার’ লিখেছিলাম ২০১২ সালে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ‘মতামত’ পাতায় লিখেছিলাম ২০১৫ সালে। সরকারের কাছে প্রস্তাবনা ছিল–

‘দ্বিপক্ষীয় স্বার্থরক্ষা’ করে একটি সহায়তামূলক চুক্তি তথা ‘মিউচুয়্যাল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স’ হতে পারে এই ক্রস-বর্ডার সাইবার আইনের অংশ। এ চুক্তির ভিত্তিতে একটি রাষ্ট্র (অনুরোধকারী রাষ্ট্র) অপর রাষ্ট্রের (অনুরুদ্ধ রাষ্ট্র) কাছে তদন্তে সহায়তা-সাপেক্ষে অনুসন্ধান, অভিযান, সাক্ষী-শুনানি, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করার অনুরোধ জানাতে পারে। অপর রাষ্ট্রের অসম্মতিতে অবশ্যই অনুসন্ধান ও অভিযান আন্তর্জাতিক আইনসম্মত নয়। এ কারণে ‘ক্রস-বর্ডার’ সাইবার আইনে, যা কখনো কখনো ‘ট্রান্স-বর্ডার’ সাইবার আইন হিসেবেও উল্লিখিত হয়ে থাকে; ‘দ্বিপক্ষীয় স্বার্থরক্ষা’র দিকে নজর দেওয়া বাঞ্ছনীয়।

এ বছর সাইবার নিরাপত্তা ও অনাকাঙ্ক্ষিত বিষয়ে প্রতিকার পেতে ফেসবুকের সঙ্গে চুক্তি করেছে সরকার। সম্প্রতি সাইবার পরিসরে আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশ-ভারতের সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) স্বাক্ষর এই সম্ভাবনা জাগালো যে, সরকার ক্রসবর্ডার সাইবার আইন কাঠামোতে এগোচ্ছে। এখন দ্বিপক্ষীয় স্বার্থরক্ষা করে উপাত্ত, দক্ষতা, প্রযুক্তি, আইন সহযোগিতা সহজ ও দ্রুত হবে।

কমনওয়েলথ-এর একটি সাইবারক্রাইমবিরোধী উদ্যোগ (Commonwealth Cyber-crime Initiative) রয়েছে। আছে সাইবার ক্রাইম নিয়ে কমনওয়েলথ মডেল আইন। প্রত্যাশা থাকছে, কমনওয়েলথ অন্তর্ভুক্ত দেশ বাংলাদেশ এই কাঠামোর সুবিধা ও সহযোগিতা প্রাপ্তি নিয়ে শিগগিরই আলোচনায় বসবে।

২০১২ সালে ‘যুদ্ধাপরাধের বিচার ও বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা’ শীর্ষক ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি সেমিনার হলে এক আলোচনায় শঙ্কা প্রকাশ করেছিলাম যে, জামায়াত-শিবির অনেক বেশি ডিজিটাইজড। আজকের উপলব্ধি হচ্ছে, দেশে ও বিদেশে প্রতিটি জঙ্গিসংগঠন প্রযুক্তির চূড়ান্ত অপব্যবহার করে মানবজাতির ক্ষতিসাধনে লিপ্ত। এসব জঙ্গি নিধনে একতা, সততা, দক্ষতা ও আইন ছাড়াও প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।

Pages: [1] 2 3 ... 14