Daffodil International University

Career Development Centre (CDC) => Parents Guidance => Topic started by: milan on August 23, 2017, 05:47:55 PM

Title: তাঁর নিজের জীবনের গল্পই তো আরেক সিনেমা!
Post by: milan on August 23, 2017, 05:47:55 PM

ঢাকার কমলাপুরে আশি টাকা ভাড়ায় উঠেছিলেন
মাসুম আলী
২৩ আগস্ট ২০১৭, ১৪:১৯



তাঁর নিজের জীবনের গল্পই তো আরেক সিনেমা!

এক জীবনে কোনো কিছুর অভাব ছিল না রাজ্জাকের। খ্যাতি, যশ, অর্থ—কোনো কিছুর না। ‘ছুটির ঘণ্টা’, ‘রংবাজ’, ‘বাবা কেন চাকর’, ‘নীল আকাশের নিচে’, অবুঝ মন’, ‘জীবন থেকে নেয়া’, ‘পিচ ঢালা পথ’, ‘কি যে করি’, ‘অশিক্ষিত’, ‘বড় ভালো লোক ছিল’, ‘আলোর মিছিল’, ‘স্বরলিপি’সহ অসংখ্য ছবির অভিনেতা উত্তরায় অভিজাত সুবিশাল ‘রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্স’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। গুলশানে নিজের বাড়িতে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বেশ ছিলেন এই কিংবদন্তি নায়ক। সাফল্য আর পরিপূর্ণ জীবনের এই রাজ্জাককে ধীরে ধীরে নির্মাণ করেছে তাঁর সংগ্রাম, ধৈর্য, কর্মনিষ্ঠা, আত্মত্যাগ, আর বড় স্বপ্ন দেখার সাহস।

অথচ প্রথম জীবনটা মোটেও মসৃণ ছিল না রাজ্জাকের। কলকাতার জন্মগ্রহণ করেছিলেন রাজ্জাক। কৈশোরে হঠাৎ মারা গেলেন তাঁর বাবা আকবর হোসেন। বাবার মৃত্যুর আট মাস পর মাকেও হারান। তবে সব শোক, সংকট কাটিয়ে ভালোভাবেই বেড়ে উঠছিলেন রাজ্জাকরা। কলকাতায় মঞ্চ ও চলচ্চিত্রে টুকটাক কাজ করতে থাকেন। নাট্যকার পীযূষ বসু কিশোর রাজ্জাককে উৎসাহ দেন নানাভাবে। যদিও খুব একটা সুবিধা করতে পারছিলেন না। ঢাকায় ইতিমধ্যেই চলচ্চিত্রশিল্প প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অনেকেই রাজ্জাককে উপদেশ দিলেন ঢাকায় আসার জন্য। পীযূষ বসু রাজ্জাক সম্পর্কে একটি প্রশংসাপত্র লিখে দেন। রাজ্জাক ওই প্রশংসাপত্র নিয়ে জন্মস্থান কলকাতা ছেড়ে ঢাকায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।


ওই সময় উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থানে চলছে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা। পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, আসাম ও ত্রিপুরা থেকে দলে দলে মুসলমানরা পাড়ি দিচ্ছে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে। রাজ্জাকও স্ত্রী লক্ষ্মী এবং শিশুপুত্র বাপ্পাকে নিয়ে ওই দাঙ্গার সময় ঢাকায় চলে আসেন। ১৯৬৪ সালের ২৬ এপ্রিল ঢাকা পৌঁছান। কপর্দকহীন অবস্থায়। ঢাকায় তাঁর চেনাজানাও কেউ নেই। শুধু সঙ্গে নিয়ে এসেছেন পীযূষ বসুর চিঠি এবং পরিচালক আবদুল জব্বার খান ও শব্দযন্ত্রী মনি বোসের ঠিকানা।

স্ত্রী ও শিশুপুত্রকে স্টেডিয়ামে শত শত উদ্বাস্তুর ভিড়ে রেখে রাজ্জাক গিয়ে দেখা করেন পরিচালক আবদুল জব্বার খানের সঙ্গে। তিনি রাজ্জাককে আশ্বাস দেন। রাজ্জাক পরে কমলাপুর এলাকায় মাসিক ৮০ টাকা ভাড়ায় বাসা ঠিক করে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে ওঠেন। উদ্বাস্তু রাজ্জাকের আশ্রয় মিলল ঠিকই, কিন্তু জীবিকা অর্জনের কোনো পথ নেই। ঘুরে বেড়ান ছবিপাড়ায়। দেখা করেন সুভাষ দত্ত, সৈয়দ আওয়াল, এহতেশাম প্রমুখের সঙ্গে। কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়ে ওঠে না।

জীবন থেমে থাকে না। পরিচালক আবদুল জব্বার খান তাঁকে কাজের সুযোগ করে দেন ‘ইকবাল ফিল্মস’ প্রতিষ্ঠানে। এ প্রতিষ্ঠানের ছবি ‘উজালা’য় পরিচালক কামাল আহমেদের সহকারী হিসেবে কাজ করেন। সহকারী হিসেবে দ্বিতীয় ছবি ছিল ‘পরওয়ানা’। কিন্তু ছবির কাজ শতকরা ৮০ ভাগ হওয়ার পরই সহকারীর কাজ ছেড়ে দেন। কারণ, রাজ্জাক নায়ক হতে এসেছিলেন। ক্যামেরার সামনেই দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। পর্দায় নাম ভেসে ওঠার শুরুতেই নিজের নাম খুঁজে পেতে চেয়েছিলেন।

এক সাক্ষাৎকারে রাজ্জাক বলেছিলেন, ‘আমি আমার জীবনের অতীত ভুলি না। আমি এই শহরে শরণার্থী হয়ে এসেছি। জীবনসংগ্রাম করেছি। না খেয়ে থেকেছি। যার জন্য পয়সার প্রতি আমার লোভ কোনো দিন আসেনি। ওটা আসেনি বলেই এত দূর শান্তিতে এসেছি।’

উচ্চাশা তাঁর সব সময়ই ছিল। রুপালি পর্দার জগতেও ছিল টাকার ঝনঝনানি। কিন্তু টাকার মোহে অন্ধ হয়ে যাননি কখনো। এ কারণেই রাজ্জাক থেকে নায়করাজ হয়ে উঠতে পেরেছিলেন। রাজ্জাকের রুপালি পর্দার বাইরের জীবনটাও হয়ে থাকবে অনুপ্রেরণার।
Title: Re: তাঁর নিজের জীবনের গল্পই তো আরেক সিনেমা!
Post by: milan on August 23, 2017, 05:49:18 PM
What a miracle of life !!