Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - mosfiqur.ns

Pages: 1 2 [3] 4 5 ... 19
31
Faculty Sections / Re: যে শহরে যানজট নেই!
« on: April 07, 2019, 01:29:24 PM »
 8)

34
Faculty Sections / Re: Scopus Indexed Journal Checking Site
« on: March 25, 2019, 04:53:14 PM »
Most welcome Sir

36
https://www.prothomalo.com/technology/article/1584833/%E0%A6%A1%E0%A6%BF%E0%A6%8F%E0%A6%A8%E0%A6%8F%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A6%A7%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%87-%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%96%E0%A6%BE-%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87-%E0%A6%B8%E0%A6%AC-%E0%A6%A4%E0%A6%A5%E0%A7%8D%E0%A6%AF

ডিএনএর মধ্যে তথ্য সংরক্ষণ করে পরে তা পুনরুদ্ধার করা যাবে। পরীক্ষাগারে ডিএনএ ডেটা স্টোরেজ তৈরিতে সফলতা পাওয়ার পর তা বাজারে আনার কথা ভাবছেন গবেষকেরা। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেদের সঙ্গে যৌথভাবে ডিএনএ ডেটা স্টোরেজ তৈরিতে কাজ করছে বিশ্বের বৃহত্তম সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফট। একে বলা হচ্ছে প্রথম পরিপূর্ণ স্বয়ংক্রিয় বা অটোমেটেড ডিএনএ ডেটা স্টোরেজ।

এই গবেষণাবিষয়ক নিবন্ধ নেচার সায়েন্টিফিক রিপোর্টস নামের সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয়, গবেষকেরা ‘হ্যালো’ বার্তাটিকে ডিএনএতে রেখে তা ডিজিটাল তথ্য হিসেবে ২১ ঘণ্টার মধ্যেই আবার ফেরত আনতে পেরেছেন।

Eprothom Aloইন্দো এশিয়ান নিউজ সার্ভিসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষকেরা এমন এক ডিভাইস তৈরি করেছেন, যা ডিজিটাল ডেটা বা তথ্যকে ডিএনএ রাখতে পারে, আবার তা ডিএনএ থেকে উদ্ধার করতেও পারে। অর্থাৎ, এখন ছবি, ভিডিও বা বার্তা ডিজিটাল তথ্য হিসেবে ডিএনএতে রাখা যাবে। মাইক্রোসফটের এক ব্লগ পোস্টেও বিটস আকারে তথ্য পুনরুদ্ধারের সফলতার কথা বলা হয়েছে। এখন এ প্রযুক্তি বাণিজ্যিক ডেটা সেন্টারে প্রয়োগের চিন্তা করছে মাইক্রোসফট।

মাইক্রোসফটের গবেষক কারিন স্ট্রস বলেছেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটি সিস্টেম তৈরি করা, যাতে ব্যবহারকারীরা সাধারণ ক্লাউড স্টোরেজ সেবার মতোই তথ্য রাখতে পারেন। এতে ডেটা সেন্টারে বিটস পাঠানো হবে, যা সংরক্ষিত থাকবে ডিএনএতে। গ্রাহক চাইলে আবার সে তথ্য উদ্ধার করা যাবে। এটা অটোমেশনের দিক থেকে প্রয়োগযোগ্য কি না, তা প্রমাণ করতে হয়েছে। এ পদ্ধতিতে এখন পর্যন্ত ডিএনএতে এক গিগাবাইট তথ্য সংরক্ষণ করা যায়, যার মধ্যে বিড়ালের ছবি, সাহিত্যকর্ম, পপভিডিও ও বিভিন্ন আর্কাইভাল রেকর্ডিং রয়েছে। পরে ডিএনএ থেকে কোনো সমস্যা ছাড়াই তা উদ্ধার করা গেছে।’

এ পদ্ধতিতে বিশেষ সফটওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছে, যা ‘ওয়ান’ ও ‘জিরো’ ডিজিটাল ডেটাকে ডিএনএর বিল্ডিং ব্লক হিসেবে পরিচিত ‘এএস’, ‘টিএস’, ‘সিএস’ ও ‘জিএস’–এ রূপান্তর করতে পারে। এরপর সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় তরল প্রবাহ ও রাসায়নিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হয়। যখন ওই তথ্য উদ্ধারের প্রয়োজন হয়, তখন আরেক ধরনের রাসায়নিক মিশিয়ে ডিএনএকে প্রস্তুত করে। সেই ডিএনএর তথ্য রূপান্তর করে কম্পিউটারে ফুটিয়ে তোলে।

এ পদ্ধতিতে অবশ্য মানুষ বা জীবিত কোনো প্রাণীর ডিএনএ ব্যবহার করা হয়নি। গবেষকেরা পরীক্ষাগারে তৈরি সিনথেটিক ডিএনএ ব্যবহার করেছেন। এ পদ্ধতিতে তথ্য এনক্রিপশন করা যাবে। এতে বিশেষ তথ্য অনুসন্ধান করার সুবিধাও থাকবে।

ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক লুইস সিজ বলেন, ‘নতুন কম্পিউটার পদ্ধতির জন্ম হচ্ছে, যাতে অণু ব্যবহার করে তথ্য সংরক্ষণ করা হবে এবং ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে তা প্রক্রিয়াকরণ ও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এ ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে দারুণ সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে।’

39
Faculty Sections / Proper diet can help fight cancer
« on: February 11, 2019, 01:49:57 PM »
Chowdhury Tasneem Hasin

Cancer treatments are designed to kill cancer cells, but can also damage healthy cells, which can lead to eating problems. Common eating problem during cancer treatment include appetite loss, change in sense of taste and smell, constipation, diarrhoea (caused by radiation therapy), bloating, cramps, dry mouth (chemotherapy and radiation therapy can damage the gland that makes saliva which ultimately causes dry mouth), lactose intolerance caused by radiation therapy, nausea, sore mouth, sore throat and trouble swallowing, vomiting, weight gain, and weight loss.

High fat diet has been associated with cancer of the uterus, breast, prostate and colon. The regular excessive intake of kcal is associated with cancer of the gallbladder and endometrium.

On the positive side, diet rich in fiber helps to protect against colorectal cancer. Vitamin C-rich food may protect against the cancer of stomach and oesophagus. Vitamin A and carotene may protect against cancer of lung, bladder and larynx. Fruits and vegetables have abundance of phytochemicals, so it is advised to eat five or more servings of fruits and vegetables per day. Legumes such as soybean, dried bean and lentils may protect against cancer. High intakes of soy foods are associated with a decreased risk of breast and colon cancer. Carrots, tomato and other food rich in carotene and lycopene may reduce the risk of ovarian cancer.

One of the first indications of cancer is unexplained weight loss because the tumour cells use for their own development the nutrients that the host has taken in. Loss of muscle tissue and hypo albuminea with anaemia. Cancer patients become satiated earlier than normal, because of decreased digestive secretion.

Despite their nutritional need, anorexia is a major problem for cancer patients. It is particularly difficult to combat because cancer patients tend to develop strong food aversions that are thought to be caused by the effect of chemotherapy. So it is preferable that chemotherapy be withheld for 2 or 3 hours before and after meals.


Kilocalorie needs will vary from patient to patient. But 45 to 50 kilocalorie/kg body weight may be recommended. Carbohydrate and fat will be needed to provide this energy. Cancer causes an increase in the metabolic rate, and the tissues must be rebuilt; the nutrients lost to the cancer must be replaced. Patients on high protein and high kilocalorie diet tolerate the side effects of therapy and higher doses of drugs better. Patients with good nutritional status will need from 1 to 1.2gm of protein per kg of body weight. Malnourished patients may need from 1.3 to 2.0gm of protein/kg body weight/day. Vitamin and minerals are essential for metabolism and tissue maintenance. The recommendation is to eliminate vitamin A and vitamin E in supplemental form which may prevent cancer cells from self-destructing and work against cancer therapy. Fluids are important to help the kidney eliminate the metabolic waste and the toxins of the drugs. Several small meals are better than 3 large meals. It is preferable to serve the nutritionally richer meal early in the day because the patient is less tired and may have a better appetite at that time.

Some common suggestions for patients:

Eat the food that you can, even if it is only one or two times.
Do not worry if you cannot eat at all some days. Start eating when you can.
Drink plenty of liquids. It is even more important to get plenty to drink on days when you cannot eat.
Special care should be given in the way you handle and prepare food.
Scrub all raw fruits and vegetables before you eat.
Sip only small amounts of liquid during meals.
Have a large drink at least 30 minutes before or after meals.
Avoid food and drink with smell that bother you.
Keep your mouth clean.
Drink warm and hot liquid to  help relieve constipation.
Eat high fiber food which includes whole grain, beans , dried fruits etc
Eat food and liquids that are high in sodium and potassium in case of diarrhea.
Chew gums or ice cubes in case of dry mouth.
For nausea, have food and drinks that are not too hot nor too cold.
For sore mouth, drink with a straw.
Avoid certain food and drinks when your mouth is sore like citrus fruits, spicy food, salty food, crunchy food.
In case of sore throat, rinse your mouth 3 to 4 times a day.
In case of vomiting, do not have anything to eat or drink until your vomiting stops.
Eat when it is time to eat, rather than wait to get hungry.

41
Faculty Sections / ৯ বছরেই কলেজছাত্র
« on: January 26, 2019, 03:15:54 PM »
খাইরান আমান কাজীর বয়স সবে নয় বছর। স্কুলে পড়ার কথা, কিন্তু সে পড়ছে কলেজে। গণিত আর রসায়নের মতো বিষয় তার আবার প্রিয়। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত খাইরানকে অনেকে তো ‘বিস্ময় বালক’ অভিধাও দিচ্ছেন।
য়ের কাছ থেকে ফোনটা নিয়েই কুশল জানতে চাইল খাইরান, ‘হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন?’

খাইরানের মুখে শুদ্ধ বাংলায় সম্ভাষণ শুনে চমকে উঠতে হলো। যুক্তরাষ্ট্রে বেশ আগে অভিবাসী হওয়া একটি পরিবারে জন্ম নেওয়া তার বয়সী শিশুর মুখ থেকে এমন বাংলা শোনাটা অপ্রত্যাশিতই বটে।

খাইরানের মা জুলিয়া কাজীর সঙ্গেই কথা হচ্ছিল। ছেলে সম্পর্কে বিস্ময়কর সব তথ্য দিতে দিতেই একসময় ফোনটা তার হাতে তুলে দিয়েছিলেন। তারপর খাইরানের ভালো লাগার গল্প শোনা। অনেকটা প্রশ্ন-উত্তর পর্ব যেন।

‘তোমার প্রিয় টিভি অনুষ্ঠান কী?’ খাইরান বলল, ‘ইয়াং চিলড্রেন’। প্রিয় রং কী? সে বলল, নীল। এভাবেই জানা হলো তার প্রিয় অভিনেতা হ্যারি পটার সিরিজের অভিনেতা ড্যানিয়েল র​্যাডক্লিফ। মার্কিন অনেক শিশুর মতো খাইরানেরও প্রিয় খেলা বাস্কেটবল। এক ফাঁকে বলল, ‘আমি নিজেও কিন্তু বাস্কেটবল খেলি।’

কে এই খাইরান? যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম হাফিংটন পোস্ট–এ নিজের সম্পর্কে কলাম লিখেছে খাইরান আমান কাজী। তার সে লেখা পড়ে অনেকের চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার জোগাড়। তার বয়স সবে ৯ বছর। স্কুলে পড়ার কথা। কিন্তু এতটুকুন বয়সেই সে নাম লিখিয়েছে কলেজের খাতায়। হাফিংটন পোস্ট–এ লেখাটা প্রকাশের পরই ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি মেইল, আয়ারল্যান্ডের দ্য আইরিশ টাইমসসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হতে থাকে খাইরাননামা!

সেসব খবরের সূত্র ধরেই ফোনে কথা হচ্ছিল খাইরানের মা জুলিয়া চৌধুরী কাজীর সঙ্গে। তিনি পেশায় ওয়াল স্ট্রিট নামে একটি প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী। যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকো শহরের বে এলাকায় বসবাস তাঁদের। খাইরানের দাদার বাড়ি মানিকগঞ্জে। বাবা মুস্তাহিদ কাজী পেশায় প্রকৌশলী।

দুই বছরেই স্কুলে

২০১১ সালের কথা। খাইরান কাজীর বয়স তখন দুই বছর। তাকে নিয়েই ব্যতিব্যস্ত পরিবারের সদস্যরা। অন্য শিশুদের চেয়ে বুদ্ধিতে সে অনেক এগিয়ে। সম্পূর্ণ বাক্য বলতে পারত ওই বয়সেই। তখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হলেন খাইরানের পরিবার। নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বোঝা গেল, তার যে শুধু ‘আই কিউ’ বা বুদ্ধিমত্তা বেশি— তা নয়, ‘ই কিউ’ বা আবেগজনিত বুদ্ধিমত্তাও বেশি। জুলিয়া কাজী জানালেন, ‘আমার ছেলের বুদ্ধিমত্তা খুবই প্রখর। প্রতিটি বিষয়ে নিজের মতো করে একটা মতামত আছে তার।’

চিকিৎসকের পরামর্শে দুই বছরের খাইরানকে স্কুলে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু বিপত্তি বাধল স্কুলে ভর্তির পর। শিক্ষকদের বেশি মনোযোগ দিতে হতো তার দিকে। শিক্ষকেরা বোর্ডে লেখার সঙ্গে সঙ্গে সে বুঝে ফেলে। এক সেমিস্টারের পড়া সে দুই সপ্তাহেই শেষ করে ফেলত।

জুলিয়া কাজী বলতে থাকেন, ‘তার মতো শিশুদের মস্তিষ্ক সারাক্ষণ চলতে থাকে। একটি বিষয় থেকে আরেকটি বিষয়ে চলে যায়। তাই অনেক সময় তাকে থেরাপি দেওয়া হতো স্কুলে। কিংবা ব্যায়ামাগারে নিয়ে গিয়ে দৌড়াতে বলা হতো।’

নিয়মানুযায়ী এখন সে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। তবে এই প্রখর মেধাবী শিশুকে তার বাবা-মা কলেজে ভর্তি করানোর সিদ্ধান্ত নেন। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে মাত্র ৯ বছর বয়সে ক্যালিফোর্নিয়ার লাস পসিটাস কলেজে ভর্তি করা হয় খাইরান আমান কাজীকে। সেখানে গণিত ও রসায়ন বিষয়ে অ্যাসোসিয়েট করছে সে। তবে গিফটেড স্কুলের খাতাতেও তার নামটা আছে। জুলিয়া কাজী বলছিলেন, ‘কলেজের পাশাপাশি ছেলেকে স্কুলেও রাখা হয়েছে, যাতে সে তার বয়সী ছেলেমেয়েদের সঙ্গ পায়। আমি আর ওর বাবা দুজনে ব্যস্ত থাকি বলে আমার ভাইয়ের স্ত্রী সাধারণত ওর দেখাশোনা করে।’

স্কুল-কলেজের পড়াশোনা শুধু নয়, সপ্তাহান্তে পিয়ানো বাজানো, চীনের মান্দারিন ভাষা শেখা, কারাতের স্কুলে হাজির হওয়াসহ নানা কার্যক্রমে যুক্ত খাইরান।

নামের মতোই পৌরাণিক

পদার্থবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের ভাস্কর্যের পাশে খাইরান কাজী
পদার্থবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের ভাস্কর্যের পাশে খাইরান কাজী
নিউইয়র্ক নগরীর আদি বাঙালি বাসিন্দাদের কাছে গজনফর আলী নামটা পরিচিত। যুক্তরাষ্ট্রের এই শহরে বাংলা ভাষায় যাঁরা পত্রিকা প্রকাশনা শুরু করেছিলেন, তিনি তাঁদের একজন পথিকৃৎ। খাইরান গজনফর আলীর নাতি। খাইরানের মা জুলিয়া কাজী পরিবারের সঙ্গে দুই বছর বয়সে বাংলাদেশের মৌলভীবাজার থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। এস্টোরিয়া-জ্যামাইকায় বড় হয়েছেন। পরে মুস্তাহিদ কাজীকে বিয়ে করে সানফ্রান্সিসকোর বেতে থিতু হোন। ২০০৯ সালের ২৭ জানুয়ারি তাঁদের সংসারে আসে খাইরান।

খাইরান নামের অর্থটা কী? কথায় কথায় প্রশ্নটা করেই ফেলি জুলিয়া কাজীকে। তিনি হাসলেন। তারপর নিজের ভালো লাগার কথা বলতে শুরু করেন। জুলিয়া কাজী শৈশব থেকে পৌরাণিক ধরনের বই পড়তে ভালোবাসতেন। বিশেষ করে জাপানি কাহিনি খুব প্রিয় ছিল। জাপানি পৌরাণিক কাহিনি থেকে ছেলের নামটাও রাখেন। খাইরান অর্থ হচ্ছে সাগরের নিচে এক দরজা থেকে আরেক দরজা খুলে যাওয়া।

নামের মতোই যেন খাইরানের জানার আকাঙ্ক্ষা অনন্ত। জ্ঞানসমুদ্রের এক দরজা থেকে আরেক দরজায় যাওয়ার ইচ্ছা তার। সে ইচ্ছাতেই
এগিয়ে যাক খাইরান, সে প্রত্যাশা তো সবার।
https://www.prothomalo.com/pachmisheli/article/1576182/%E0%A7%AF-%E0%A6%AC%E0%A6%9B%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%87-%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%9C%E0%A6%9B%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0

42

https://www.prothomalo.com/bangladesh/article/1574612/%E0%A6%AB%E0%A7%87%E0%A6%B8%E0%A6%AC%E0%A7%81%E0%A6%95-%E0%A6%86%E0%A6%B0-%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%95%E0%A7%87-%E0%A6%8F%E0%A6%95%E0%A6%87-%E0%A6%9D%E0%A7%81%E0%A6%81%E0%A6%95%E0%A6%BF
ফেসবুক আর মাদকে একই ঝুঁকি
• সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তি মাদকাসক্তির মতোই বলছে গবেষণা
• এ ঝুঁকি কাটাতে পরিবারের সজাগ নজরদারি চাই
• মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ করেন

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীটি ইদানীং দুপুর পার করে ঘুম থেকে উঠছেন। কথাটা যাচাই করতে গত শনিবার বেলা একটায় এই প্রতিবেদক তাঁর মুঠোফোনে কল দেন। ফোন বন্ধ ছিল।

বেলা দুইটায়ও একই ঘটনা। পরে জানা যায়, সেদিন ছাত্রীটির ঘুম ভেঙেছিল বেলা তিনটার দিকে। কারণ, আগের রাতে তিনি ঘুমিয়েছিলেন ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে। অবশেষে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে তাঁর নাগাল পাওয়া যায়। তিনি বলেন, ঘুমাতে গেছেন সকাল সাড়ে ছয়টায়। ঘুম ভেঙেছে বেলা আড়াইটায়।

সারা রাত সামাজিক যোগাযোগ করে সারা দিন ঘুম—মেয়েটি এই রুটিনে চলছেন কয়েক মাস হলো। তাঁর এক বন্ধু প্রথম আলোকে বলেছেন, মেয়েটি নিয়মিত ক্লাসে আসছেন না। এমনকি পরীক্ষা বাদ পড়ছে। লেখাপড়ায় পিছিয়ে যাচ্ছেন। বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারছেন না। মেজাজ খিটখিটে। বন্ধুটি বলেন, ‘আমার সঙ্গেও খারাপ মেজাজ দেখায়।’

মোবাইল ফোনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বুঁদ হয়ে থাকা ছাত্রীটি এই প্রতিবেদককে বলেছেন, ‘আমি বুঝতে পারছি বিষয়টি নেশার মতো হয়ে গেছে। ছাড়তে পারছি না। আমি পিছিয়ে পড়ছি। আমার এখন পড়ার কথা ছিল চতুর্থ বর্ষে।’

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার একদল গবেষক জার্মানির একট বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭১ জন শিক্ষার্থীর ফেসবুক ব্যবহারের ওপর গবেষণা করেছেন। তাঁরা সবাই ফেসবুকে প্রচুর সময় কাটান। গবেষকদের সিদ্ধান্ত, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অতিমাত্রায় বিচরণ মাদকাসক্তির মতোই খারাপ।

১০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত জার্নাল অব বিহেভিয়ারাল অ্যাডিকশন সাময়িকীতে গবেষণাটি নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন বেরিয়েছে। গবেষকেরা লিখেছেন, মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ করেন, ভুল বা বাজে সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা দেখেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্ত শিক্ষার্থীরাও ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত বেশি নেন।

ঢাকায় মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ মোহিত কামাল প্রথম আলোকে বলেন, এ দুটি আসক্তির মধ্যে অনেক সাদৃশ্য আছে। তিনি দীর্ঘদিন হলো মাদকাসক্তির চিকিৎসা করছেন। বেশ কিছুদিন হলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্ত ছেলেমেয়েদের নিয়েও অভিভাবকেরা নিয়মিত তাঁর ব্যক্তিগত চেম্বারে আসছেন।

মোহিত কামাল বলেন, মাদকাসক্তির পেছনে তিনটি বিষয় কাজ করে—উৎসাহ, আকাঙ্ক্ষা ও চাহিদা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তির ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা এমনই। এখন চিকিৎসাবিজ্ঞানের পাঠ্যপুস্তকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তিকে মানসিক রোগ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মনোরোগ চিকিৎসকদের আন্তর্জাতিক সংগঠন ওয়ার্ল্ড সাইকিয়াট্রিস্ট অ্যাসোসিয়েশন যোগাযোগমাধ্যমে আসক্তিকে রোগ হিসেবে চিহ্নিত করার জন্য একটি খসড়া নীতিমালাও তৈরি করেছে।

গবেষণার তথ্য
গবেষকেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ২৫০ কোটি মানুষ নিয়মিত ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম আর টুইটারের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে। ইন্টারনেটের বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিন নতুন নতুন মানুষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢুকছে। ২০১৬ সালে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলেছিল, একজন ব্যবহারকারী দৈনিক গড়ে ৫০ মিনিট সময় ফেসবুকে কাটায়।

এই গবেষকেরা যে শিক্ষার্থীদের বেছে নিয়েছিলেন, তাঁরা মানসিকভাবে ফেসবুকের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। এ নির্ভরশীলতা আসক্তির সমতুল্য। প্রাথমিকভাবে গবেষকেরা শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ফেসবুক ব্যবহার করতে না পারলে তাঁদের কেমন লাগে, তাঁরা কখনো এ অভ্যাস ছাড়তে চেয়েছেন কি না এবং তাঁদের কাজ বা পড়াশোনার ওপর অভ্যাসটি কী প্রভাব ফেলেছে।

গবেষণার শেষ পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য বিচারের জন্য আইওয়া গ্যামব্লিং টাস্ক নামে পরিচিত একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। এ পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের প্রতিটি দানের হারজিত বিচার করে ভালো তাস বেছে নিতে হয়। মানুষের সিদ্ধান্ত গ্রহণপ্রক্রিয়া বোঝার জন্য এটি একটি স্বীকৃত পদ্ধতি।

গবেষকেরা দেখেছেন, ফেসবুকে সবচেয়ে আসক্ত শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে খারাপ তাস বেছে নিয়েছিলেন। ফেসবুকে তুলনামূলকভাবে কম যুক্ত শিক্ষার্থীরা অপেক্ষাকৃত ভালো তাস বাছেন। সাধারণভাবে এ পরীক্ষায় কোকেন, গাঁজা বা অন্য কোনো মাদকে আসক্ত ব্যক্তিকেও একই ধারার ক্ষতিকর বা ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে দেখা যায়।

প্রতিকার কী
যুক্তরাষ্ট্রের এ গবেষকেরা বলছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের সুফল ব্যাপক। কিন্তু এর খারাপ দিকটি হচ্ছে, এতে আসক্তির ঝুঁকি।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের হিসাব বলছে, বাংলাদেশে ৯ কোটির বেশি ইন্টারনেট সংযোগ আছে। আর সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের হিসাবে, দেশে ফেসবুক ব্যবহার করে প্রায় ৩ কোটি মানুষ। ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহার দ্রুত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আসক্তির আশঙ্কাও বাড়ছে।

মোহিত কামাল বলেন, অনেক কিশোর ও তরুণ সামাজিক যোগাযোগে ব্যতিব্যস্ত থেকে দিনের একটা বড় সময় নষ্ট করছে। অনেকেরই এটা বদ অভ্যাস হয়ে যাচ্ছে। এতে পড়াশোনা আর রোজকার কাজের ক্ষতি হচ্ছে।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক মেখলা সরকার বলেন, বাবা–মা বা অভিভাবককে ছেলেমেয়ের মুঠোফোন ও ল্যাপটপ ব্যবহারের ওপর নিবিড় নজর রাখতে হবে। কোথায় বসে কতক্ষণ সন্তান এগুলো ব্যবহার করবে, সেটাও ঠিক করে দেওয়া যেতে পারে।

এই মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘অল্প বয়সীরা যদি বাস্তবজীবনে বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানোর বা খেলাধুলার নির্মল পরিবেশ পায়, তাহলে মুঠোফোন ও ল্যাপটপের আসক্তি তাদের হবে না। সেই পরিবেশ তাদের জন্য নিশ্চিত করতে হবে।’

43
ফরমিন আক্তারের সঙ্গে প্রথম যখন আমার দেখা হয়, তখন সে হেলেন কিলারকে নিয়ে আলাপ করতে চেয়েছিল। এখন তার বয়স ১৮। তার সঙ্গে যখন আলাপ করছি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরের বাঁশের ছাউনিতে একটি প্লাস্টিকের টুলে সে বসেছিল।


চারপাশের লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর মতো সে পরিবারকে নিয়ে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

২০১৭ সালের আগস্টের শেষ দিকে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জাতিগত নিধন অভিযানে গণহত্যা, ধর্ষণ ও বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগের পর সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। ফরমিন আক্তার ও তার পরিবারও তাদের মধ্যে আছে।

হেলেন কিলারকে নিয়ে কথা বলতে উৎসুক হয়ে উঠল ফরমিন। বধির ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এ মার্কিন লেখককে নিজের অনুপ্রেরণা হিসেবে বেছে নিয়েছে সে।

এ ছাড়া পাকিস্তানি শিক্ষা অধিকারকর্মী নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজায়ীকে নিয়েও তার বেশ আগ্রহ।

সবচেয়ে কম বয়সী নোবেলজয়ী মালালা তার আরেক নায়ক।

মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অগ্নিসংযোগে ভস্মীভূত হয়ে যাওয়া বসতবাড়িতে ফরমিনের পাঠ্যবইও ধ্বংস হয়ে যায়। সেসব বই নিয়েও আলোচনা পাড়তে চাইল এ রোহিঙ্গা তরুণী।

তার ইচ্ছা একদিন সে একজন আইনজীবী হবে। শুধু তা-ই নয়, বঞ্চিত রোহিঙ্গা নারীদের শিক্ষার অধিকার নিয়েও কাজ করতে আগ্রহী সে।

প্রতিবেদন তৈরি করতে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরে বছরখানেক ধরে ঘুরে বেড়িয়েছি আমি। সেই সময় ফরমিনের বয়সী কিশোরীদের সাক্ষাতকার নিয়েছিলাম। তাদের অনেকেই যৌন সহিংসতা ও ধর্ষণের হাত থেকে বেঁচে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন।


রোহিঙ্গা শিবিরে নারীদের রান্নার পাত্রে আগুন চড়াতে দেখা যায়। কেউ কেউ শিশুদের নিয়ে হাঁটছে, দোল দিচ্ছে। পৃথিবীর সবচেয়ে নিপীড়িত একটি জাতি হিসেবে এসব নারী নিরক্ষর। শিক্ষার আলো তাদের কাছে পৌঁছেনি।

তবে তাদের অল্পসংখ্যক লোক মিয়ানমারে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছিলেন। তারা বার্মিজ ভাষায় কথা বলতে পারেন। তবে ফরমিনের মতো কাউকে চোখে পড়েনি। কথা বলার সময় তার থেমে থেমে ফিকফিকে হাসি, কখনও কখনও লজ্জায় মুখ লুকিয়ে কথা বলছিল সে।

কিন্তু এত এত কথার মধ্যে বই ও শিক্ষার প্রতি তার গভীর আগ্রহ চোখে পড়ার মতো। রাষ্ট্রহীন এ তরুণী শিক্ষার মূল্যবোধ নিয়ে ছিল দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মিয়ানমারে সে নৃশংসতা দেখেছে, কিন্তু আদর্শিক জীবন নিয়ে তার সিদ্ধান্ত অনড়।


রয়টার্সের মিয়ানমার ব্যুরোপ্রধান অ্যান্টোনিও স্লোডকাউসকি ও আমি তাৎক্ষণিকভাবে তার সঙ্গে কথা বলতে উৎসুক হয়ে উঠি। সে আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাহিনী বলেছে। পরে কয়েক মাসে যখন উল্লেখ করার মতো অনেক কিছু জেনেছি।

দরিদ্র রাখাইন রাজ্যের এক বিচ্ছিন্ন গ্রামে তার বেড়ে ওঠা। রোহিঙ্গাদের যে অল্প কয়েকজন নিজেরা ইংরেজি শিখতে পেরেছে, তাদের একজন ফরমিন।

যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের শিকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয়শিবিরের মধ্যে সে কাউন্সেল করায়। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে সক্ষম বলে যে ২৫ রোহিঙ্গা কিশোরীকে শনাক্ত করা হয়েছে, সেই তালিকায় ফরমিনও আছে।

তার পরবর্তী গল্প মেলাতে বেশ কষ্ট করতে হয়েছিল। এর পর তার চাচাকে খুঁজে বের করলাম, যিনি শরণার্থী হিসেবে নরওয়ে পালিয়ে গেছেন।

কক্সবাজারের বিস্তৃত রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে আমি তার কয়েকজন শিক্ষককে খুঁজে পেলাম। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন, যার কাছ থেকে ফরমিন প্রথম মালালার কথা শুনেছেন।

২০১৭ সালে ফরমিনের স্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসা ১৫০ কিশোরী সম্পর্কে আমি জানতে পারলাম। সে বছর পাস করা চারজনের মধ্যে সে একজন ছিল। স্কুলের প্রায় সবাই তার সম্পর্কে জানতেন। তার ইংরেজি ও গণিতের দক্ষতা সবাইকে মুগ্ধ করেছিল।

পরিবার ও বন্ধুরা ফরমিনের উজ্জ্বল সম্ভাবনা ও দৃঢ়প্রতিশ্রুতি নিয়ে বলার পাশাপাশি তার বড় বোন নূরজাহানের গল্পও করছিলেন। দুই বোন শৈশবে একসঙ্গে কলেজে যাবে বলে প্রতিজ্ঞা করেছিল। কিন্তু নূরজাহানকে তার পরিবার বিয়ে দিয়ে দেয়।

নূরজাহানের সঙ্গে কথা বলার সময় তার স্বামী পাশেই ছিলেন। আর তাঁবুর ফাঁক গলিয়ে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমাদের আলাপ শুনছিলেন।

একসঙ্গে কলেজে যেতে ফরমিন ও তাদের প্রতিজ্ঞার গল্প শুনছিলাম তখন। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতেই নূরজাহান কেঁদে ফেলেন। তার দুচোখ পানিতে ভরে যায়। আর আশ্রয়শিবিরের তাঁবুরও ওপর তখন টুপটাপ বৃষ্টির ফোঁটা পড়ছিল। ওড়নার পার দিয়ে নূরজাহান চোখ মুছে ফের কথা শুরু করেন।

কথা বলার মাস কয়েক পার হতেই দেখি অন্যরকম এক আত্মবিশ্বাস নিয়ে বেড়ে উঠছে ফরমিন। ঠোঁটে লিপস্টিক মেখে জিন্স ও স্কার্ফ পরে কলেজে যায় সে। ক্যাম্পাসে যখন সে আমার দিকে এগোচ্ছিল, বন্ধুরা তখন তার দিকে হাত নাড়ছিল। তাদের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে আসা শরণার্থীও রয়েছে। যাদের কাছ থেকে ফরমিন ফারসি শিখেছে।

ইতিমধ্যে সে কারাতে ও গিটার বাজাতে শিখেছে। এক ইন্দো-মার্কিন শিক্ষকের কাছ থেকে তার এসব শেখা।

কিন্তু তার কিছু অভ্যাস আগের মতোই রয়ে গেছে। গ্রন্থাগারে সে আমাকে তার পছন্দের বইগুলো দেখিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে শার্লট ব্রন্টির জেন ইয়ার। শৈশবে শিক্ষার গুরুত্ব নিয়েও কথা বলে ফরমিন।

রয়টার্সে ফরমিনের পরিচয় প্রকাশের পরই লিংকসহ মালালা ইউসুফজাই টুইটারে সেটি শেয়ার দেন। এতে রোমাঞ্চিত বোধ করে ফরমিন। মিয়ানমারে স্কুলে বসে শিক্ষকের মুখে মালালার গল্প শোনার কথা স্মরণ করে সে। ভাবতেই পারছে না, মালালা এখন তার গল্প পড়ছেন, যা তার কাছে অবিশ্বাস্য মনে হচ্ছিল।

ফরমিন বার্তা পাঠিয়ে আমাকে জানায়, এ ঘটনায় সে যে কতটা আন্দন্দিত, তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারছে না।

‘‌আপনি জানেন, তাকে (মালালা) আমি ভালোবাসি।’

ফরমিন জানায়, সেমিস্টার পরীক্ষার ফাঁকে শরণার্থী শিবিরে দাতব্য সংস্থাগুলোর জন্য সে কিছু তরজমার কাজ করবে। এর আগে কাজ করে এক বছরে সে যে কয়টা পয়সা জমিয়েছিল, তা নূরজাহানের বিয়েতে খরচ হয়ে গেছে।

রয়টার্সে প্রকাশিত জেবা সিদ্দিকীর প্রতিবেদনের তরজমা

44
Sound good

Pages: 1 2 [3] 4 5 ... 19