Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - Mousumi Rahaman

Pages: 1 ... 8 9 [10] 11 12 ... 15
136
Faculty Sections / মাটির টানে...
« on: April 01, 2018, 10:53:22 AM »
মাটির তৈরি তৈজসপত্রের চাহিদা এখন বেশ।
 
বর্ষবরণ উৎসবকে কেন্দ্র করে মাটির জিনিসপত্র কেনার ধুম পড়েছে এরই মধ্যে। রাজধানীর ফুটপাত থেকে শুরু করে বড় বড় বিপণিবিতানে মাটির তৈরি থালা, বাটি, ছোট-বড় হাঁড়ি কিনছেন অনেকেই। বছরের অন্য সময় ব্যবহার না করা হলেও পয়লা বৈশাখের দিন মাটির তৈজসপত্র ব্যবহার করা যেন রেওয়াজেই পরিণত হয়েছে। খাবার পরিবেশন করা থেকে শুরু করে ঘর সাজানো—সবকিছুতেই থাকে মাটির তৈরি জিনিসের ছোঁয়া।

কলাবাগানে মাটির সানকি কিনতে এসেছিলেন রেহানা চৌধুরী। জানতে চাইলে বললেন, ‘পয়লা বৈশাখ হলো আমাদের বাঙালির নিজস্ব সংস্কৃতির উৎসব। উৎসবের এদিনটায় বাঙালি আমেজ আনতেই মাটির জিনিসপত্র কিনতে আসা।’ প্রতিবছরই পয়লা বৈশাখে বাড়িতে মাটির সানকিতে পান্তা ইলিশ খাওয়ার আয়োজন করেন তিনি।


খাবার টেবিলে নান্দনিকতার ছোঁয়া রাখতে এ ধরনের পণ্যের ব্যবহার জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। কার্জন হলের সামনের একটি মাটির জিনিসের দোকানের বিক্রেতা মো. ফারুক জানান, প্রতিদিনই মাটির জিনিস বিক্রি হয় তাঁর দোকানে। পয়লা বৈশাখে বিক্রি বেড়ে যায় কয়েক গুণ। বড় বড় প্রতিষ্ঠান বেশি পরিমাণে মাটির প্লেট এবং বাটি নেওয়ার ফরমাশ দেন তাকে।

খাবার টেবিলে হালকা নকশার পাট কিংবা কাপড়ের টেবিল ম্যাটের ওপর পোড়া মাটির প্লেট, মগ, বাটি দেখতে দারুণ লাগে। এর সঙ্গে কাঁচা ফুল অথবা সবুজের ছোঁয়া আপনার টেবিলে এনে দেবে বাড়তি সৌন্দর্য। শুধু খাবার টেবিলে কেন, বৈশাখী রং ছড়িয়ে দিতে বসার ঘর এবং শোবার ঘরও সাজাতে পারেন মাটির তৈজসপত্র দিয়ে। আপনার পছন্দমতো শো-পিস বা ফুলদানি পেয়ে যাবেন হাতের কাছেই। এই গরমে আপনাকে এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের সতেজ করে তুলতে বসার ঘরে মাটির বড় পাত্রে পানির মধ্যে ফুল বা ফুলের পাপড়ি ছড়িয়ে দিতে পারেন।


কোথায় পাবেন
মৃৎসামগ্রীর খোঁজে আপনি যেতে পারেন দেশীয় বিভিন্ন শোরুমে। এ ছাড়া ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বেশ কিছু স্থানে পাবেন মৃৎসামগ্রী। মাটির জিনিসপত্রের দেখা মিলবে বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর বিপরীতে, কলাবাগানের ফুটপাতে, ঢাকা কলেজের সামনের ফুটপাতে, আসাদগেট এলাকায়। এ ছাড়া বেশ কিছু দেশীয় ফ্যাশন হাউসে রয়েছে মনকাড়া মাটির সামগ্রী। এর মধ্যে আড়ং, যাত্রা, ক্লে স্টেশন, সানরাইজ প্লাজার সিরমিক, মিরপুরের শিল্পচর্চা, মোহাম্মদপুরের আইডিয়া ক্র্যাফটস, শাহবাগ আজিজ মার্কেটে আইডিয়াস কর্নারসহ বেশ কিছু দোকান।


দরদাম
মাটির মগ, গ্লাস এসবের দাম পড়বে ৩০-৫০ টাকা, জগ ১০০-১২০ টাকা, মাটির চমৎকার প্লেটগুলো পাবেন ৩০-৯০ টাকায়, পান্তা খাবার সানকিগুলো পাবেন ৫০ টাকার মধ্যেই। ছোট প্লেট-পিরিচের দাম পড়বে ২৫-৪০ টাকা, ঢাকনাসহ কারি ডিশ পাবেন ৫০-১২০ টাকায়। মাটির কাপ-পিরিচ প্রতিটির দাম পড়বে ২০-৪০ টাকা, বিভিন্ন সাইজের মাটির বাটিগুলো পাওয়া যাবে ৩০-১২০ টাকায়। মুখোশ ১২০-৮৫০ টাকা। বিভিন্ন নকশার শো-পিস ৬০-১০০০ টাকা, মাটির আয়না ১২০-৫০০ টাকা, ওয়াল টব ৯০-৩৫০, মাটির ঘড়ি ২৫০-৪৫০ টাকা, মাটির মোমদানি স্ট্যান্ড ৫০-৩৫০ টাকা। এগুলো ছাড়াও পাবেন ঘর সাজানোর জন্য মাটির অন্যান্য জিনিসপত্রও।

137
নিমগাছের প্রায় প্রতিটি অংশই কাজে লাগে। রূপচর্চায়ও রয়েছে নিমগাছের কিছু অংশের ব্যবহার। নিমপাতার স্বাদ তেতো হলেও গুণে কিন্তু মিষ্টি। ত্বকের নানা সমস্যার সমাধানে এটি ব্যবহার করা হয়। বিশেষত জীবাণুর কারণে হওয়া বিভিন্ন সমস্যায় দারুণ কার্যকর এই পাতা। এমনটাই জানালেন বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চর্মরোগ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস এম বখতিয়ার কামাল বলেন, একজিমা, ফোড়ার মতো গোটা (বয়েল), ত্বকের আলসার, রিং ওয়ার্ম নামক ছত্রাকের সংক্রমণসহ নানা সমস্যায় নিমপাতা কার্যকর। এমনকি ত্বক পুড়ে যাওয়ার পরও যদি পোড়া অংশে জীবাণুর সংক্রমণ হয়, নিমপাতা উপকারী ভূমিকা রাখবে।

হারমনি স্পা-র আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা জানালেন, অ্যান্টিসেপটিক গুণের কারণেই এই প্রাকৃতিক উপাদানটি ব্রণ, ফুসকুড়ি বা চুলকানির মতো সমস্যায় ব্যবহৃত হয়।

ত্বকের সমস্যায়

ত্বকের নানা সমস্যা সমাধানে নিমপাতা বেটে নিয়ে লাগানো যায়। চাইলে আবার নিমপাতা রোদে শুকিয়ে নিতে পারেন। রোদে রাখতে রাখতে একেবারে মচমচে হয়ে গেলে ব্লেন্ডারে গুঁড়া করে বয়ামে রেখে দিন। প্রয়োজনমতো সেখান থেকে খানিকটা নিমপাতা গুঁড়া নিয়ে পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ব্যবহার করতে পারেন।

সমপরিমাণ নিমপাতা ও কাঁচা হলুদ একসঙ্গে বেটে ব্রণের স্থানে লাগাতে পারেন। ব্রণ কমে যাওয়ার পাশাপাশি ত্বকের উজ্জ্বলতাও বাড়বে।

যেভাবেই ব্যবহার করা হোক না কেন, আক্রান্ত স্থান ছাড়া অন্য কোনো স্থানে নিমপাতা ব্যবহার করা উচিত নয়। যেমন: ব্রণের জন্য ব্যবহার করলে শুধু ব্রণের স্থানেই লাগাতে হবে, পুরো মুখে নয়।

ত্বকে নিমপাতা লাগানোর ২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। আক্রান্ত স্থান ভালো হয়ে যাওয়া পর্যন্ত নিয়মিত নিমপাতা লাগানো যায়।

স্নানে নিমপাতা

নিমপাতা মেশানো পানিতে গোসল করলে ত্বকের রোগ-জীবাণু থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। বালতির পানিতে কিছু নিমপাতা মিশিয়ে নিয়ে গোসলের শেষে পুরো পানিটুকু মাথায় ও শরীরে ঢেলে নিন। ত্বকে সমস্যা না থাকলেও সপ্তাহে একবার এভাবে নিমপাতা মেশানো পানি ব্যবহার করতে পারেন গোসলের সময়।

মাথার ত্বকে ছোট গোটা

নিমপাতা বাটা লাগাতে পারেন আক্রান্ত স্থানে। চাইলে টকদইয়ের সঙ্গে মিশিয়েও নিমপাতা ব্যবহার করা যায়। এ ক্ষেত্রে ২ টেবিল চামচ টকদইয়ের সঙ্গে এক টেবিল চামচ নিমপাতা বাটা দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে নিতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে আক্রান্ত স্থানের আশপাশের অন্য কোনো স্থানে নিমপাতা লাগানো উচিত নয়। এ ছাড়া নিমপাতার রস আর নারকেল তেল একসঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে মাথার ত্বকের নির্দিষ্ট স্থানে মালিশ করতে পারেন।

নিমপাতা নিয়মিত?

দীর্ঘদিন নিয়মিত নিমপাতার ব্যবহার ত্বকের জন্য ভালো নয় বলেই জানালেন রাহিমা সুলতানা। এটিকে বরং শরীর ও মাথার ত্বকের নানা সমস্যার সমাধান হিসেবেই গ্রহণ করা উচিত। কোনো সমস্যা না থাকলে নিমপাতা বাটা ব্যবহার না করাই ভালো।

138
Faculty Sections / পরিপাটি বিছানা
« on: April 01, 2018, 10:48:37 AM »
দিনের তিন ভাগের এক ভাগ সময় কাটে ঘুমিয়ে। ঘুমানোর জায়গাটি যদি হয় পরিপাটি, গোছানো তাহলে ঘুমটাও যেন জমিয়ে আসে। শুধু আরামদায়ক হলেই হবে না, বিছানার ওপর বিছানো কাপড়টিও যেন টান টান সুন্দর থাকে, নজর দিন সেদিকেও।
 
আরামদায়ক বিছানার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তোশক বা ম্যাট্রেসটি ভালো হওয়া। কেননা তোশক ভালো না হলে ঘুম তো ভালো হবেই না, সেই সঙ্গে পিঠে-কোমরে ব্যথাও হতে পারে। এই ম্যাট্রেস বা তোশক যেহেতু ধোয়া যায় না তাই এর আলাদা কভার বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে। যেটি পরে খুলে ধুয়ে নেওয়া যায়। এরপর আসে বিছানার চাদর। সাধারণত বাড়ির রং এবং জানালার পর্দার সঙ্গে মিলিয়ে বিছানার চাদর বিছানো হয়। হালকা রঙের চাদরই চোখে আর মনে প্রশান্তি এনে দেয়। কিন্তু বাড়িতে যদি ছোট শিশু থাকে তবে গাঢ় রঙের বড় প্রিন্টের চাদর ব্যবহার করলে কোনো দাগ পড়লে তা দেখা যাবে না। চাদরটি হতে হবে খাটের মাপমতো। খাটের ধরন অনুযায়ী চাদর ঝুলিয়ে বা তোশকের নিচে ঢুকিয়ে দিতে হবে।
বক্স খাট না হলে খাটের নিচে বেশ খানিকটা জায়গা থাকে। অনেকে সে জায়গাটুকুকে স্টোর হিসেবেও ব্যবহার করে থাকেন। চাইলে বিছানা থেকে চাদর ঝুলিয়ে দিয়ে ঢেকে দিতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন নিচের দিকে যেন সমানভাবে চাদরটি ঝুলে থাকে। বক্স খাট হলে চাদর তোশকের নিচে গুঁজে দিন। চাদর গোঁজার সময় সমানভাবে চারদিক দিয়ে গোঁজার চেষ্টা করুন। এতে তোশকের ওপরে কুঁচকে থাকবে না।

এবার বালিশ সাজানোর পালা। মাথার বালিশ সিঙ্গেল খাটে কমপক্ষে দুটি, ডাবল খাটে চারটি রাখা উচিত। এ ছাড়া পছন্দমতো কুশন রাখা যেতে পারে। শিশুদের বিছানায় বিভিন্ন রকম পুতুল দিয়ে সাজিয়ে রাখলে খুবই ভালো লাগবে। এ ছাড়া প্রতিদিন বিছানা পরিষ্কার করার সময় হাত দিয়ে ভালো করে ফুলিয়ে নিন। এতে বালিশ দীর্ঘদিন আরামদায়ক থাকবে।
চাইলে বিছানার চাদরটি চারদিক দিয়ে গুঁজে দিতে পারেন।


বাড়ির সব আসবাবের মাঝে বিছানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিছানার সঠিক যত্ন নেওয়া প্রয়োজন বলে জানান গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের প্রভাষক তাসমিয়া জান্নাত। তিনি বলেন, ‘কক্ষের সঠিক স্থানে বিছানাটি রেখে বাড়ির রং ও পর্দার রঙের সঙ্গে মিলিয়ে চাদর বিছানো হলে দেখতে ভালো লাগবে। এ ছাড়া বিছানায় কয়েক দিন পরপরই চাদর পাল্টানো উচিত। আমরা অনেকেই নকশা করা বা এপ্লিক করা চাদর বিছানায় ব্যবহার করি, এটি বেড কভার। ঘুমানোর সময় এ জাতীয় চাদর না ব্যবহার করে সুতি একরঙা বা ছাপা চাদর ব্যবহার করা আরামদায়ক। নকশাদার চাদরগুলো দিনের বেলা বেড কভার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে সারা দিনের ধুলাবালু, ক্ষতিকর জীবাণু মূল চাদরের ওপর পড়বে না, কিছুটা হলেও রোগজীবাণু থেকে দূরে থাকা যাবে।’

বিছানার চাদর সুন্দর ও পরিপাটি রাখতে পরামর্শ দেন ফোর পয়েন্টস বাই শেরাটন হোটেলের এক্সিকিউটিভ হাউসকিপার খোরশেদ আলম। তিনি জানান, চাদর যে ধরনেরই হোক না কেন তা যদি চারদিকে সমান রেখে, টান টান করে বিছানো হয় তাহলেই দেখতে ভালো লাগবে। চাদর মেঝে থেকে কমপক্ষে ছয় ইঞ্চি উঁচুতে রাখতে হবে। তিনি আরও জানান, একটি বিছানায় চারটি পর্যন্ত মাথার বালিশ রাখা যায়। এই বালিশগুলো শুইয়ে অথবা খাড়া করে রাখা যায়, সেই সঙ্গে পছন্দমতো কুশন ব্যবহার করা যায়। গরমের সময় নকশিকাঁথা বা বেড রানার পায়ের দিকে ভাঁজ করে রাখলে দেখতে ভালো লাগবে।

139
Faculty Sections / সুগন্ধে সতেজ ঘর
« on: April 01, 2018, 10:45:43 AM »
ঈদুল আজহার দিন মাংস কাটা-বাছা, রান্নার প্রস্তুতিসহ হাজারো কাজ করতে হয়। কিন্তু ঈদ উৎসব বলে কথা, বাড়িতে অতিথি আসবেই। ঘর সাজানো-গোছানো থাকলে রান্নার প্রশংসার সঙ্গে পেয়ে যাবেন বাড়তি নম্বর। কোরবানির ঈদে অন্যান্য কাজের চাপে ঘর গোছানোর কাজটি খুব বেশি করা হয়ে ওঠে না অনেকের। তবে ঘরে থাকা সাধারণ জিনিসগুলোতে একটু পরিবর্তন, সংযোজন করলে নতুনত্বের ছোঁয়া পাবে আপনার বাড়িটি। চাইলে ঘরে ফুল বা মোমবাতির গন্ধ ছড়িয়ে দিতে পারেন। মাংস আর রান্নাবান্নার গন্ধ দূর করে ঘরে একটা সতেজ ভাব আনবে সুগন্ধি মোমবাতি ।

কোরবানির ঈদ তাই খাবার ঘর ও টেবিল সুন্দর করে সাজানোর পরামর্শ দেন ইকো ইনোভেটরসের প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা (সিওও) ফারজানা গাজী। খাবারের টেবিলে টেবিল ম্যাট, রানার এবং ন্যাপকিন সঠিক জায়গায় রাখুন। সেই সঙ্গে অতিথিদের খাবার পরিবেশনের পাত্র বা প্লেটগুলোর দিকেও লক্ষ রাখা খুবই জরুরি বলে জানান তিনি। খাবার টেবিলে ফুলদানি বা মোমদানিও রাখা যায়। এ ছাড়া অন্দরসজ্জার থিম অনুযায়ী শো পিস এবং দেয়াল সজ্জারও পরিবর্তন করা যেতে পারে।

ঘর সাজাতে সবচেয়ে সহজ আর সুন্দর জিনিস হলো গাছ। বাড়ির বারান্দায় প্রায় সবারই কোনো না কোনো গাছ থাকে। পাতাবাহার, ক্যাকটাস বা বনসাই ঘরের যেকোনো জায়গায় রাখা যায়। ছোট গাছ না থাকলে বড় গাছের পাতা কেটে ফুলদানিতে রাখলেও ভালো লাগবে। বসার ঘর বা খাবার টেবিলে রাখা যায় বিভিন্ন আকারের সুগন্ধি মোমবাতি। ফারজানা গাজী বলেন, ‘ঘরের কোণে সুন্দর কোনো বড় বাটিতে পানি দিয়ে তাতে ফুল বা ফুলের পাপড়ির সঙ্গে মোমবাতি ভাসিয়ে রাখলে উৎসবের ছোঁয়া লাগবে। রাতের বেলা মোমবাতিগুলো জ্বালিয়ে দিয়ে ঘরের আবহ পরিবর্তন করা যায়। নতুন কুশন কভার, পর্দা বা টেবিল ল্যাম্পের শেডগুলো যদি ঈদের কয়েক দিন আগেই ঠিক করে রাখা হয় তাহলে ঈদের দিন খুব একটা সময় নষ্ট হবে না।

আসবাব, শো পিস বা দেয়াল সজ্জার জিনিসগুলোর স্থান অদল-বদল করলেই বাড়ি সাজানোতে অনেকখানি পরিবর্তন চলে আসবে। আবার ঘর সাজাতে আয়নারও ভূমিকা কম নয়। আয়না আলোর প্রতিফলন ঘটিয়ে ঘর আলোকিত করবে, সেই সঙ্গে ঘরটিও বড় দেখাবে। একটি দেয়ালে বড় একটি আয়না বা ছোট ছোট কয়েকটি আয়না রাখা যেতে পারে।

এ ছাড়া বাড়ির ছোটখাটো জিনিস দিয়েই খুব কম সময়েই আপনার বাড়িটি সাজিয়ে নিতে পারেন সহজে। ছোট একটি বাটিতে রংবেরঙের কিছু পাথর বা শামুক-ঝিনুক রেখে যেকোনো টেবিলের ওপর রেখে দিতে পারেন। ঘর সাজাতে তাজা ফুলের কোনো বিকল্প নেই। এ সময়টায় সুগন্ধি ফুলও পাওয়া যাবে সহজে। আপনার পছন্দের যেকোনো ফুল দিয়ে সাজাতে পারেন বাড়ি।

 

140
ফলটুকুই তো মূল। খোসা আর বিচি ফেলে দিলেই না ফলের স্বাদ পাওয়া যাবে। তবে ফেলে দেওয়া জিনিসও যে রূপচর্চায় বেশ কাজে লাগতে পারে, প্রমাণ পাওয়া গেছে অনেকবার। এখন কমলার সময়। স্বাদে তো কমলা দারুণ, এর খোসাও কিন্তু কম যায় না।
ত্বকের সৌন্দর্য ও সুস্থতা রক্ষায় কমলার খোসার ব্যবহার ও গুণাগুণগুলো জানালেন রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন।

যেভাবে উপকার পাবেন—
 ভিটামিন সি কমলার খোসার মধ্যেও আছে। খোসা ভালো করে জ্বাল দিয়ে রস বের করে নিন। যেকোনো তেলের সঙ্গে মিশিয়ে গোসল করার আগে গায়ে মালিশ করে নিন। ত্বকে মসৃণ ভাব চলে আসবে। ঠিক একইভাবে কমলার খোসা শুকিয়ে পাউডার করে সেটা তেলের সঙ্গে মিশিয়ে স্ক্রাবার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
 যেকোনো মিষ্টান্নতেও কমলার খোসা ব্যবহার করতে পারেন। চোখের দেখা আর মুখের স্বাদ দুটোর জন্যই ভালো কাজ করবে।
 চালের গুঁড়া, দই ও কমলার খোসা তিনটি জিনিস মিশিয়ে আলতোভাবে মালিশ করলে ব্ল্যাকহেডস দূর হবে।
 ব্রণের সমস্যা কমাতে কমলার খোসার পেস্ট ব্যবহার করুন।
 স্ক্রাবার হিসেবে কমলার খোসা ব্যবহার করে দেখুন, মরা চামড়া সরে যাবে, ত্বক নরম হবে।
 খোলা লোমকূপের সমস্যা ধীরে ধীরে সমাধান হবে।
 ত্বকে অমসৃণভাবে কালো দাগের সমস্যা থাকলে ময়দা, কমলার রস, কমলার খোসা মিশিয়ে মালিশ করুন কিছুক্ষণ। চলে যাবে। যত সাধারণভাবে কম উপকরণ মিশিয়ে করবেন, তত ভালো ফলাফল পাবেন।
 যেকোনো প্যাকের সঙ্গেও কমলার খোসা মিলিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। ত্বক উজ্জ্বল হবে।
 রোদে পোড়া ভাব দূর করতে দুধ অথবা দইয়ের সঙ্গে কমলার খোসা মিশিয়ে নিতে পারেন।
 চকচকে ভাব আনতে নখে ঘষুন।
 সারা রাত কমলার খোসা পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকালে সেই পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। তিনটি কাজ হবে—চুল পরিষ্কার, খুশকি দূর ও চুল নরম করা।
 বলিরেখা কমিয়ে আনতেও এর জুরি মেলা ভার।

যেটা করবেন না
 কমলার খোসা ফ্রিজে রেখে ব্যবহার করার পরিকল্পনা থাকলে বাদ দিন। গুণাগুণ কমে যাবে।
 কমলার খোসা বেশি দিন শুকিয়ে রেখে দেবেন না। ছত্রাক জন্মাতে পারে।
 কমলার খোসা বা প্যাক ব্যবহার করার পর বেশ কিছুক্ষণ রোদে যাওয়া যাবে না। ত্বক রোদে পুড়ে যাবে।
 যাদের ত্বক সংবেদনশীল, কমলার খোসাকে দূরেই রাখুন। কারণ অ্যালার্জি হতে পারে। যদি ব্যবহার করতেই হয় তাহলে কমলার খোসা কম থাকবে। প্যাকের পরিমাণ বেশি থাকবে।

141
Faculty Sections / হলুদে ভরসা
« on: March 27, 2018, 10:57:06 AM »
সাধারণভাবে সবাই এটাকে মসলা হিসেবে জানলেও এর অবস্থান শুধু রান্নাঘরেই আটকে নেই। অনেক আগে থেকেই রূপচর্চার জন্য ব্যবহার হয় হলুদ। তাই এটাকে পরীক্ষিত ভেষজ রূপচর্চার উপকরণও বলা যায়। রূপের যত্নে এখন আপনি ভরসা রাখতেই পারেন হলুদের ওপর। তবে কিছু সচেতনতাও জরুরি।
বিন্দিয়া’স এক্সক্লুসিভ বিউটি কেয়ারের রূপ পরামর্শক শারমিন কচি জানালেন সেই বিষয়েই নানা তথ্য—হলুদ ত্বক উজ্জ্বল করে, ব্রণ র‌্যাশ দূর করতে এবং ফাঙ্গাস ইনফেকশন দূর করতে সাহায্য করে। নিজেকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখতে কাঁচা হলুদ খেয়েও উপকার পাবেন।
তবে হলুদ সরাসরি ত্বকে মাখা উচিত নয় বলেও সতর্ক করেন তিনি। শারমিন কচি বলেন, হলুদ সব সময় অন্য কিছুর সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে। আর দিতে হবে খুবই অল্প পরিমাণে।
ব্রণ দূর করতে হলুদের সঙ্গে নিম পাউডার, চন্দনের গুঁড়া আর মধু মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। লোমকূপের তেল দূর করতে সাহায্য করে হলুদ। চন্দনের গুঁড়া, কমলা বা মাল্টার রসের সঙ্গে অল্প হলুদ ভালো করে মিশিয়ে ত্বকে লাগালে লোমকূপের ভেতরের তেল দূর হয়ে ত্বক স্বাভাবিক হবে। শুষ্ক ত্বকের জন্য হলুদের গুঁড়া, কমলা বা মাল্টার রস, ডিমের সাদা অংশ ও অলিভ অয়েল মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।

বলিরেখা দূর করতে সাহায্য করে হলুদ। হলুদের গুঁড়া, মাষকলাইয়ের ডালের সঙ্গে টমেটোর রস বা কমলার জুস দিয়ে মুখে লাগাতে হবে। এই মিশ্রণ কিছুক্ষণ ত্বকে রেখে কুসুমগরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। হলুদের সঙ্গে চন্দন বা ময়দা মিশিয়ে চোখের নিচে লাগালে চোখের নিচের কালো দাগ দূর হবে। শরীর থেকে স্ট্রেচমার্ক দূর করতে হলুদের সঙ্গে তেল ও সুজি মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এতে স্ক্রাবিংয়ের কাজটাও হবে।
হলুদের সঙ্গে ঘৃতকুমারী (অ্যালোভেরা) মেশালে জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে। রোদে পোড়া ভাবও দূর করে এই মিশ্রণ। দুধের সঙ্গে হলুদের গুঁড়া মিলিয়ে খেলে চেহারায় উজ্জ্বলতা আসে।

দুধের সরের সঙ্গে অল্প পরিমাণ হলুদ মিলিয়ে লাগাতে পারেন ত্বকেও।
ত্বকের শুধু হলুদ লাগানোর পরে রোদে গেলে ত্বক বার্ন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। সে জন্য কিছু না কিছু মিলিয়ে লাগাতে হবে। হলুদ দীর্ঘদিন সংগ্রহ করে রাখতে চাইলে ভালো করে শুকিয়ে গুঁড়া করে নিতে হবে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই গুঁড়া করার পর আবারও ভালো করে শুকিয়ে নিতে হবে।
আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা বলেন, ত্বকের জন্য কোনো কিছুই বেশি ব্যবহার করা ঠিক না। তাহলে ত্বকের স্বাভাবিক তেলটাও নষ্ট হয়ে যায়। সপ্তাহে দুই দিনের বেশি কোনো প্যাক ব্যবহার করলে সেটা ত্বকের ক্ষতিই করে।

কাঁচা হলুদ যে কখনোই সরাসরি ব্যবহার করা ঠিক না সেটা মনে করিয়ে দিলেন রাহিমা সুলতানাও। তাঁর পরামর্শ—যাঁদের তৈলাক্ত ত্বক তাঁরা কাঁচা হলুদ, দুধের সর, মধু মিশিয়ে লাগাতে পারেন। ত্বক শুষ্ক হলে এর সঙ্গে যোগ করে নিতে পারেন জলপাই তেল বা নারকেল তেল। এই মিশ্রণ সানট্যান ও দাগ দূর করবে।

ব্রণের সমস্যা থাকলে কাঁচা হলুদ, টকদই ও নিমপাতা মিশিয়ে লাগাতে পারেন। স্বাভাবিক ত্বকে কাঁচা হলুদ, দুধ ও মধু মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
সকালে কুসুমগরম দুধে কাঁচা হলুদের গুঁড়া বা রস মিশিয়ে খেলে রক্ত পরিষ্কার হয়। ফলে ভেতর থেকে ত্বক উজ্জ্বল হয়। চাইলে দুধ, হলুদ ও মধু দিয়ে মিল্ক শেক বানিয়ে খেতে পারেন।
দিনশেষে আমাদের প্রকৃতির কাছেই ফিরতে হবে। তাই নিজেকে সুন্দর করার ভারও দিতে পারেন প্রাকৃতিক উপাদানকেই।

142
হলুদ-গাঁদার ফুল, রাঙা-পলাশ ফুল।

এনে দে এনে দে নইলে রাঁধব না, বাঁধব না চুল।।’

বাংলাদেশে গাঁদা ফুলের এমনই কদর। বিয়েবাড়ি, গায়েহলুদে বা যেকোনো অনুষ্ঠানে। ঘর বা নিজেকে সাজানোর জন্যই নয়, গাঁদা ফুলের আছে আরও অনেক গুণ। গাঁদার ব্যবহার দেখা যায় রূপচর্চায়। ত্বকে কোথাও কেটে, ছিঁড়ে গেলেও আগে প্রাথমিক চিকিৎসা হিসেবে ব্যবহার করা হতো গাঁদা গাছের পাতার রস।

লোমকূপের ব্যাকটেরিয়া দূর করা, ব্রণ হওয়া থেকে ত্বককে রক্ষা করা, ত্বকের পুরোনো ক্ষতের দাগ দূর করা, প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করা, ত্বক ও মাথার শুষ্কতা দূর করা ইত্যাদি কাজ দক্ষতার সঙ্গেই করে গাঁদা। আয়ুর্বেদিক রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা জানান, গাঁদা ফুল প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপটিক ও অ্যান্টিব্যাকটেরিয়ার কাজ করে। এ ছাড়া আছে নানা ঔষধি গুণ। ত্বক ও চুলের পরিচর্যায় এই মৌসুমে গাঁদা ফুলের শতভাগ ব্যবহার করতে পারেন। জেনে নেওয়া যাক আরও কী কী গুণ রয়েছে গাঁদা ফুলের।

গাঁদা ফুলের যত গুণ

* বলিরেখা থেকে ত্বককে রক্ষা করে।

* ত্বকের কাটা-ছেঁড়ায় জীবাণুনাশক হিসেবে কাজ করে।

* ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করতেও সাহায্য করে এই ফুল।

* ত্বকের তরুণ ভাব বজায় রাখতে সাহায্য করে।

* রোদে পোড়া ত্বককে সজীব করে তোলে।

* চোখের নিচের ফোলা ভাব কমায়।

* মাথার খুশকি দূর করে।

* চুলে প্রাকৃতিক রঙের কাজ করে।

* ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

রাহিমা সুলতানা আরও জানালেন, গাঁদা ফুল ত্বকে তিনভাবে ব্যবহার করা যায়। এর পেস্ট করে নিতে পারেন। আর না হলে গুঁড়া। এর জন্য প্রথমে গাঁদা ফুলের পাপড়ির সাদা অংশ বাদ দিয়ে কেবল হলুদ অংশ সংগ্রহ করতে হবে। এরপর তা ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। ভালো হবে যদি পরিষ্কার পাপড়িগুলো কাঁচা দুধে ১৫-২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখেন। এরপর সেটি ব্লেন্ডারে পিষে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে গাঁদা ফুলের পেস্ট। এটি ত্বকে নানাভাবে ব্যবহার করতে পারবেন। অন্যদিকে গাঁদা ফুলের পাউডার বা গুঁড়া সংরক্ষণ করতে চাইলে প্রথমে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাপড়ি সংগ্রহ করতে হবে। এরপর সেই পাপড়িগুলো ধুয়ে একটি ট্রেতে ছড়িয়ে দিন। রোদে শুকিয়ে ব্লেন্ডারে গুঁড়া করুন। এভাবে তৈরি গাঁদা ফুলের গুঁড়া কাচের বয়ামে অনেক দিন সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন।

ত্বকের যত্নে গাঁদা ফুলের কয়েকটি প্যাক

* সমপরিমাণ গাঁদা ফুলের পেস্ট বা পাউডার, দুধ, বেসন মুলতানি মাটি বা চন্দনের সঙ্গে মিশিয়ে মুখে লাগান। ১৫-২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বক উজ্জ্বল করবে ও রোদে পোড়া ভাব দূর করতে সাহায্য করবে।

* গাঁদা ফুলের সঙ্গে গোলাপ জল মিশিয়ে নিয়মিত ব্যবহারে ত্বকে ব্রণের সমস্যা দূর হয়।

* ত্বকের তৈলাক্ত ভাব দূর করতে গাঁদা ফুলের পেস্ট বা গুঁড়ার সঙ্গে টক দই, গোলাপ জল ও সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে ১৫-২০ মিনিট মুখে লাগিয়ে রাখলে উপকার পাওয়া যাবে।

* দুধের সরের সঙ্গে গাঁদা ফুলের পেস্টের মিশ্রণ ত্বকের শুষ্কতা ও বলিরেখা দূর করে।

143
Faculty Sections / শুষ্ক ত্বকের যত্ন
« on: March 27, 2018, 10:53:46 AM »
বছরের এই সময়ে সবার ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে। কারও কারও ত্বক ফেটে যায়। যাদের ত্বক একটু শুষ্ক ও রুক্ষ প্রকৃতির, অন্যদের চেয়ে তাদের সমস্যা একটু বেশিই হয় এ সময়টাতে। শুষ্ক ত্বকের জন্য এ সময় তাই দরকার বাড়তি যত্ন।

অতিরিক্ত ত্বক ফাটার সমস্যা হতে পারে জন্মগত কারণে। আবার কিছু রোগের কারণেও এমন হতে পারে। নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার লাগানোর পরও অতিরিক্ত ত্বক ফাটলে সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

কেন ত্বক শুষ্ক হয়?

বংশগত বা জিনগত কারণে অনেকের ত্বকে তেলগ্রন্থিগুলো প্রয়োজনের তুলনায় কম থাকে। এর ফলে পর্যাপ্ত তেল নিঃসৃত হয় না। তাই ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

*   বয়স ৪০-এর পর তেল ও ঘর্মগ্রন্থির সংখ্যা কমে যায়। তাই পর্যাপ্ত গ্রন্থি না থাকার কারণে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। ছোটদের তেলগ্রন্থিগুলো সঠিকভাবে গঠিত থাকে না, ফলে তাদের ত্বকও শুষ্ক হতে পারে।

যাদের ত্বকের গঠন পাতলা, তাদের ত্বক শুষ্ক হয়।

*   পেশার কারণে অনেকের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। যাঁরা কৃষি বা কনস্ট্রাকশনের কাজ করেন, তাঁদের ত্বকও শুষ্ক হয়ে যায়।

*   ক্লোরিনযুক্ত পানিতে অতিরিক্ত সাঁতার কাটলে বা গোসল করলে বিশেষ করে গরম পানি বা ক্ষারযুক্ত সাবান ব্যবহার করলে ত্বক শুষ্ক হয়।

*   বারবার কেমিক্যাল কন্টাক্ট, ধূমপান, অ্যালকোহল ও ক্যাফেইন গ্রহণ, অতিরিক্ত আকাশপথে ভ্রমণ, ভিটামিন এ ও বি এবং জিঙ্ক ও ফ্যাটি অ্যাসিডের অভাব হলেও ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

*   পানিশূন্যতা হলে যেমন-ডায়রিয়া, উচ্চ মাত্রার জ্বর, অতিরিক্ত ঘামা এবং প্রতিদিন প্রয়োজনীয় পানি পান না করা হলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

*   কিছু চর্ম রোগের কারণে যেমন একজিমা, ডার্মাটাইটিস, সোরিয়াছিসে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়।

*   কিছু ওষুধ সেবন, এয়ার কন্ডিশনে অতিরিক্ত অবস্থান, থাইরয়েডের সমস্যা, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত পারফিউম ব্যবহার ইত্যাদিও ত্বক শুষ্ক করে।

কীভাবে প্রতিকার?

*   ত্বক শুষ্ক হওয়ার প্রকৃত কারণ বের করে তা পরিহার করতে হবে।

*   ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন। ময়েশ্চারাইজার লাগানোর আগে মুখের মরা কোষ পরিষ্কার করুন।

*  দীর্ঘক্ষণ গোসল করবেন না। গরম পানিতে গোসল করবেন না।

*   ময়েশ্চারাইজারযুক্ত সাবান ব্যবহার করুন।

*   নরম সুতির আরামদায়ক কাপড় পরার চেষ্টা করবেন।

*  যতটা সম্ভব কম মেকআপ ব্যবহার করুন।

*   সারা দিনে দেড় থেকে দুই লিটার পানি পান করুন।

*   প্রতিদিন মৌসুমি ফল খাওয়ার চেষ্টা করবেন এবং শাকসবজি বেশি করে খাবেন।

প্রাকৃতিক উপায়ে শুষ্ক ত্বকের যত্ন

*   অলিভ অয়েল গোসলের কয়েক মিনিট আগে সারা শরীরে মেখে গোসল করুন।

*  অলিভ অয়েল ১ চামচ + লবণ ৫ চামচ + ১ চামচ লেবুর রস দিয়ে তৈরি স্ক্রাব মুখে ও সারা শরীরে লাগাতে পারেন। এতে মরা কোষ দূর হবে।

*   শুষ্ক জায়গায় মধু ম্যাসেজ করে ২-৩ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

*   নারকেল তেল আক্রান্ত জায়গায় লাগালে উপকার পাবেন।

*   অ্যালোভেরা জেল মধুর সঙ্গে মিশিয়ে লাগিয়ে ১০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।

*  প্রচুর শাকসবজি খান। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন। ত্বকের পরিচর্চা করুন।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপক

চর্ম ও যৌন বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

144
Faculty Sections / চুলের সুস্থতায়
« on: March 27, 2018, 10:52:30 AM »
সন্তান পেটে থাকার সময় তেমন কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি শারমিন আক্তারের। কিন্তু জন্মের পর থেকেই প্রবলভাবে শুরু হয়েছে চুল পড়া। তবে বিষয়টিকে তেমন গুরুত্বও দিচ্ছেন না তিনি। শারমিনের ধারণা, সব মায়ের চুল পড়ে। এবং সেটা রোধ করার কোনো উপায় নেই। সত্যিই কি তাই? নাওয়া–খাওয়ারই যখন সময় নেই, সেই সময়ে নতুন মায়ের জন্য চুলের বাড়তি যত্ন নেওয়াটা কষ্টকর। ফলে শুরু হয় চুল পড়া। তবে একটু চেষ্টা করলেই রোধ করা সম্ভব এই সমস্যা।

হার্বস আয়ুর্বেদিক স্কিন ও হেয়ার কেয়ার ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী আফরিন মৌসুমি বলেন, সন্তান জন্মের সময়ে যে ধকলটা যায়, তাতে মায়ের শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি পড়ে। ফলে শুরু হয় চুল পড়া। এ জন্য মায়েদের গর্ভকাল থেকে শুরু করে সন্তানের ১ বছর বয়স পর্যন্ত ভিটামিন ডি জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। সঙ্গে নিশ্চিত করতে হবে ক্যালসিয়াম। এই দুইয়ের অভাবেই চুল পড়া শুরু হয়।

সন্তান হওয়ার পরে অনেকেই চুল পড়া সমস্যায় ভোগেন। ছেলে আদিয়ানের সঙ্গে মা হৃদি
সন্তান হওয়ার পরে অনেকেই চুল পড়া সমস্যায় ভোগেন। ছেলে আদিয়ানের সঙ্গে মা হৃদি
এ সময় ভিনেগার মিশিয়ে নিয়মিত চুল শ্যাম্পু করতে হবে। নতুন মা মাসে কয়েকবার একটু গরম তেলের মালিশ নিতে পারেন। সপ্তাহে এক দিন আমলকী ও মেথি মিশিয়ে হেয়ার প্যাক লাগাতে পারেন। আধঘণ্টা রেখে ধুয়ে চুলটা শুকিয়ে নিন।

ঢাকা সেন্ট্রাল ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের সহযোগী অধ্যাপক স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সাইকা শহীদ বলেন, গর্ভকালীন শরীরে যেসব হরমোন থাকে, সন্তান জন্মের পরে সেসব চলে যায়। সন্তান জন্মের পরে যাদের ঋতুস্রাব হয়ে যায়, তাদের হরমোন ব্যালান্স হয়ে যায়। ফলে চুল পড়া কমে। ক্যালসিয়াম আর বায়োটিনের অভাবে চুল পড়ে। এ সময় মাকে কিছু সাপ্লিমেন্ট নিতে হবে। ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি আর ক্যালসিয়ামের সমন্বয় হলে চুলটা ঠিক হয়ে যায়। তবে সেটা অবশ্যই কোনো বিশেষজ্ঞর সঙ্গে কথা বলে নিতে হবে। তা ছাড়া সন্তানের জন্মের পরে অনেক মা খুব বিষণ্ন হয়ে পড়েন। দেখা দেয় ঘুমের অভাব। এসব কারণেও চুল পড়ে যায়।

সপ্তাহে এক দিন চুলে হেয়ার প্যাক ব্যবহার করুন

সপ্তাহে এক দিন চুলে হেয়ার প্যাক ব্যবহার করুন

অ্যাপোলো হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ তামান্না চৌধুরী জানালেন এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণের উপায়, আমাদের দেশের অধিকাংশ মায়েরই ডি–এর উৎস খুবই অভাব। এর উৎস সূর্যের রশ্মি। খাবার থেকে মাত্র ১৫ শতাংশ ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। গর্ভকালে মায়ের ভিটামিন ডি আর ক্যালসিয়ামের একটি চাহিদা থাকে। সে জন্য গর্ভকালের শুরুতেই চিকিৎসকের পরামর্শে ডি আর ক্যালসিয়াম লেভেল পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ভালো। এরপর কোনো সাপ্লিমেন্ট দরকার হলে খেতে হবে। ভিটামিন ডি–এর জন্য সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টার মধ্যে একবার রোদে যেতে পারেন। মা যেন এই সময়ে প্রোটিনযুক্ত খাবারটা বেশি খান, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রতিদিন দুই গ্লাস দুধ অথবা দই, ১টা ডিম, একটা কলা ও গাঢ় রঙের শাকসবজি (তেলসহ) যদি মা খান, তাহলে তাঁর শরীরের চাহিদা পূরণ হবে। তারপরও কোনো পুষ্টির ঘাটতি থাকলে ডাক্তারের পরামর্শে চুল পড়া কমানো সম্ভব।
সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনার সময় থেকেই মায়ের পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে বলে মনে করেন এই পুষ্টিবিদ। পুষ্টিবিদ বা স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলে নিজের অবস্থা জানালে পরিকল্পিতভাবে নিজের পুষ্টিচাহিদা পূরণ করতে পারবেন মা। ফলে কমবে চুল পড়াও।

145
গরমে কাঁচা আমের এক গ্লাস শরবত সারা শরীরে এনে দিতে পারে প্রশান্তি। বাজারে এখন কাঁচা আম পাবেন। পুষ্টিবিদেরা বলেন, কাঁচা আমের জুস শরীরের জন্য ভালো। কাঁচা আম বা আমের রসে পটাশিয়াম থাকায় প্রচণ্ড গরমে তা শরীর ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে। কাঁচা আমের জুসের কয়েকটি গুণের কথা জেনে নিন:

শরীরে লবণের ঘাটতি দূর করে
গরমে অতিরিক্ত ঘামে শরীর থেকে সোডিয়াম ক্লোরাইড ও লৌহ বের হয়ে যায়। কাঁচা আমের জুস শরীরের এই ঘাটতি দূর করে। যাঁরা ওজন কমাতে বা শরীরের বাড়তি ক্যালরি খরচ করতে চান, তাঁদের জন্য এখন আদর্শ ফল কাঁচা আম।

পেট ভালো রাখে
গরমে পেটের গোলমাল? এক গ্লাস আমের জুস দারুণ কাজে লাগতে পারে। খাদ্য হজমে সহায়তা করে কাঁচা আম। অন্ত্রকে পরিষ্কার করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয় কাঁচা আম।

শরীর ঠান্ডা থাকে
কাঁচা আমে পটাশিয়াম থাকার কারণে তা শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে৷ এ কারণে শরীরে ঘাম কম হয়। গরমে ক্লান্তিও দূর হয়৷ দুপুরে খাওয়ার পর এই গরমে কিছুটা ঝিমুনি ভাব দেখা দিতে পারে। কাঁচা আমে আছে প্রচুর শক্তি। দুপুরের খাওয়ার পরে কয়েক টুকরা কাঁচা আম খেলে ঝিমুনি দূর হয়।

হৃদ্‌যন্ত্রের জন্য ভালো
কাঁচা আমকে হৃদ্‌যন্ত্রবান্ধব বলা যেতে পারে। এতে আছে নিয়াসিন নামের বিশেষ উপাদান। এটি হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমায় এবং বাজে কোলস্টেরল স্তরকে কমাতে সাহায্য করে। যকৃতের রোগ নিরাময়ের প্রাকৃতিক বন্ধু হতে পারে কাঁচা আম।

স্কার্ভি ও মাড়ির রক্ত পড়া রোধ করে
কাঁচা আম শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ‘সি’ জোগাতে পারে। স্কার্ভি ও মাড়ির রক্ত পড়া কমায় কাঁচা আম। আমচুর স্কার্ভি নিরাময়ে অত্যন্ত কার্যকর। নিশ্বাসের দুর্গন্ধ ও দাঁতের ক্ষয় রোধেও সহায়তা করে কাঁচা আম।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি।


146
প্রিয়জনের মৃত্যুর সংবাদ শোকসন্তপ্ত পরিবারকে কীভাবে জানাবেন? তাঁদের কীভাবে বললে অকল্পনীয় গভীর বেদনা সামলাতে সাহায্য করবে, সেটা অনেক ক্ষেত্রেই একটা কঠিন চ্যালেঞ্জ। এই ভয়াবহ সংবাদ কাছের মানুষের মানসিক ভারসাম্যে কতটুকু প্রভাব ফেলবে, সে আশঙ্কাও থেকে যায়।

কাছের মানুষকে মৃত্যুসংবাদ কীভাবে জানাবেন?
মানসিক প্রস্তুতি
*প্রথমে ঘটনার আবহ সম্পর্কে হালকাভাবে জানান (যেমন ব্যক্তি অসুস্থতায় মারা গেলে তার অসুখের খবর বা দুর্ঘটনায় মারা গেলে সেই খবর)।
*ধীরে ধীরে ঘটনার গুরুত্ব তুলে ধরুন (যেমন অসুস্থতা এত বেশি ছিল যে হাসপাতালে নিতে হয়েছে। দুর্ঘটনা খুব গুরুতর ছিল)।
*এ রকম একটা ঘটনায় কী কী হতে পারে, সেটা তার মুখে শুনতে চান।
*এরপর তাকে মৃত্যুর সংবাদটি ‘ধীরে ধীরে’, ‘স্পষ্টভাবে’ বলুন।
*ক্ষেত্রবিশেষে ঘটনার ছবি, পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ দেখানো যেতে পারে। সত্য যত কঠিনই হোক, তত সুস্পষ্টভাবে প্রিয়জন জানবে, সত্যকে গ্রহণ করা এবং মেনে নেওয়া তত সহজ হবে।
*মৃত্যুর খবর দেওয়ার পর প্রিয়জনকে তার স্বাভাবিক আবেগ প্রকাশ করতে সাহায্য করুন।
*এ সময় এই হারানোর কষ্টে সমব্যথী অন্যরা কাছে থাকুন, নিজেদের কষ্ট প্রকাশ করুন, শেয়ার করুন।
*এ সময় যতটা সম্ভব এ গভীর বেদনায় সমবেদনা প্রকাশ করুন (তার হাত ধরুন, জড়িয়ে ধরুন, কান্না পেলে কাঁদুন)।

শোকসন্তপ্ত ব্যক্তিকে প্রিয়জনের মৃত্যু মানিয়ে নিতে সাহায্য করবেন কীভাবে?
মৃত্যুর কারণে প্রচণ্ড মর্মপীড়া একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। এই প্রচণ্ড শোক ব্যক্তি তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব, ধর্মীয় দর্শন ইত্যাদির সহায়তায় বিশেষ কয়েকটি ধাপের মধ্য দিয়ে গিয়ে মানিয়ে নেয়।

শোকের পর্যায়
প্রথম পর্যায়: (কয়েক ঘণ্টা থেকে কয়েক দিন) মৃত্যুর ঘটনা অস্বীকার বা বিশ্বাস না করা। এ সময় আপনজন একরকম অনুভূতিহীন, অবাস্তব অনুভব অথবা বিশ্বাস বা অবিশ্বাসের মাঝামাঝি অবস্থার মধ্যে যেতে পারে।
দ্বিতীয় পর্যায়: (সাধারণত কয়েক সপ্তাহ থেকে ছয় মাস) ভীষণ কষ্ট, কান্নাকাটি করা মৃত ব্যক্তিকে ফিরে পাওয়ার ব্যাকুলতা, একাকিত্ব, নিদারুণ শূন্যতা। এ ছাড়া মৃত ব্যক্তির প্রতি ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করতে পারার অপরাধবোধ, অন্যদের প্রতি রাগ বা অন্যকে অভিযুক্ত করাও থাকতে পারে।
তৃতীয় পর্যায়: ওপরের উপসর্গগুলোর তীব্রতা ধীরে ধীরে কমে আসে এবং প্রিয়জন হারানোর গভীর বেদনা মেনে নিয়ে পুনরায় জীবনমুখী হয়।

শোক যাতে সে স্বাভাবিকভাবে মানিয়ে নিতে পারে, সে জন্য তিনটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ:
*মৃত ব্যক্তিকে হারানোর ঘটনাটি সম্পূর্ণ সত্য ও বাস্তব বলে গ্রহণ করা।
*শোকের উপরিউক্ত ধাপগুলোর ভেতর দিয়ে যাওয়া।
*মৃত ব্যক্তিকে ছাড়া জীবনকে মানিয়ে নেওয়া।

এ ক্ষেত্রে শোকগ্রস্ত ব্যক্তিকে সাহায্য করতে পারেন যেভাবে-
*তাঁর প্রিয়জন ‘হারানো’ নিয়ে কথা বলতে দিন।
*তার মর্মবেদনা, অপরাধবোধ, রাগ, কষ্ট যা কিছু অনুভব করে, সেটা প্রকাশ করতে দিন।
*মৃত ব্যক্তির মরদেহ দেখা, তাঁর ব্যবহার্য জিনিস নাড়াচাড়া করা বা গুছিয়ে রাখতে সাহায্য করুন।
*কিছু বাস্তব বিষয়, যেমন অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া, জানাজা, মিলাদ মাহফিলের আয়োজন ইত্যাদি নিয়ে শোকগ্রস্ত ব্যক্তির সঙ্গে আলোচনা এবং যতটা সম্ভব তাকে যুক্ত করুন। এ ধরনের কাজকর্ম ব্যক্তিকে মৃত্যুকে মেনে নিয়ে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে সাহায্য করবে।
*সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শোকসন্তপ্ত ব্যক্তিকে তার সামাজিক যোগাযোগ বা মেলামেশা পুনরায় শুরু করা, অন্য ব্যক্তিদের সঙ্গে তার হারানো নিয়ে কথা বলা, জীবিত অবস্থায় মৃত ব্যক্তির সঙ্গে আনন্দঘন সময়, যা তাকে নানাভাবে পরিপূর্ণ করেছে সেসব বিষয় নিয়ে স্মৃতিচারণায় সাহায্য করুন।

শোক কখন ‘স্বাভাবিক’ নয়?
*শোকের প্রথম ধাপ যদি মৃত্যুর দুই সপ্তাহের মধ্যেও না ঘটে
*শোক ছয় মাসের বেশি সময় ধরে চলা অথবা শোক ১ম ও ২য় ধাপেই আটকে থাকা
*মৃত ব্যক্তির স্মৃতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব জিনিস সব সময় এড়িয়ে চলা
*শোকের অস্বাভাবিক প্রকাশ (যেমন অতিরিক্ত কর্মচাঞ্চল্য, বৈরিতা, উত্তেজনা, সামাজিকভাবে নিজেকে সম্পূর্ণ সরিয়ে নেওয়া)

যা করবেন না:
*হঠাৎ করে খারাপ খবর দেবেন না।
*খবরটা দেওয়ার সময় খুব তাড়াহুড়া করবেন না বা খুব বেশি দেরি করবেন না
*মৃত্যুর খবর দেওয়ার সময় কোনো সত্য গোপন বা অস্পষ্টতা রাখবেন না
*মিথ্যা আশ্বাস দেবেন না
*আবেগ প্রকাশে বাধা দেবেন না
*মৃত ব্যক্তির স্মৃতি প্রিয়জনের কাছ থেকে লুকানো বা দূরে রাখার চেষ্টা করবেন না।

প্রিয়জনের সঙ্গে বাহ্যিক সম্পর্কের সব যোগসূত্রের ইতি টানে ‘মৃত্যুসংবাদ’। তবে পরম সত্য হলো, গভীর মর্মবেদনা পার করে আমরা বেশির ভাগ মানুষই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মেনে নিই প্রিয় ব্যক্তিকে ছাড়া জীবনযাপন, তাল মেলাই জীবন নামক অদ্ভুত খেলার ছন্দে। আর এই ছন্দে আবারও যোগ হয় নতুন আনন্দ, নতুন বেদনা। একটা কথা মনে রাখা ভালো, মৃত্যু বাহ্যিক সম্পর্কের ইতি টানলেও জীবনকালে প্রিয়জনের সান্নিধ্য যে আত্মিক পূর্ণতা দিয়েছিল, মৃত্যুর ঘটনা কিন্তু সেটা বিনষ্ট করে না, অনেক ক্ষেত্রে সেই পূর্ণতাবোধ তার অনুপস্থিতিতে অদ্ভুত শক্তিও জোগায় বৈকি।

(লেখক: সহযোগী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা)

147
Faculty Sections / ব্রকলির নানা পদ
« on: March 22, 2018, 01:43:58 PM »

ব্রকলি চিজ মাফিন
উপকরণ
ব্রকলি ১ কাপ (মিহি করে কুচানো), ময়দা ১ কাপ, ওটস্ আধা কাপ, চেডার চিজ ১ কাপ, ডিম ১টি, বেকিং পাউডার ১ চা-চামচ, তরল দুধ আধা কাপ, চিনি দেড় চা-চামচ, লবণ সিকি চা-চামচ এবং তেল বা গলানো মাখন ২ টেবিল চামচ।

প্রণালি
মিহি করে কুচানো ব্রকলি সেদ্ধ করে নিন। পানি ঝরিয়ে কিচেন টিস্যুর ওপরে রেখে পানি শুকিয়ে নিতে হবে। একটা বড় পাত্রে প্রথমে ময়দা, ওটস্, বেকিং পাউডার আর লবণ দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিতে হবে। আলাদা একটা পাত্রে ডিম, দুধ, চিনি, তেল বা গলানো মাখন একসঙ্গে ফেটে নিন। এবার এতে সেদ্ধ ব্রকলি আর চিজ মিশিয়ে তা ময়দার সঙ্গে মিশিয়ে নিয়ে ১০ মিনিট রেখে দিন। মিশ্রণটা বেশ ঘন হবে। মাফিন ট্রেতে অল্প তেল মেখে শুকনো ময়দা ছড়িয়ে দিন। ময়দার মিশ্রণ থেকে অল্প মিশ্রণ মাফিন ট্রেতে ঢেলে ওপরে চিজ ছড়িয়ে দিন। ২৩০ ডিগ্রি প্রিহিটেড মাইক্রোওয়েভ ওভেনে ১২-১৫ মিনিট বেক করতে হবে। ওভেন থেকে নামানোর আগে টুথপিক ঢুকিয়ে দেখে নিতে হবে যে ভেতরটা ঠিকমতো বেক হয়েছে কি না। নয়তো আরও মিনিট তিনেক বেক করুন। ঠান্ডা করে পরিবেশন করুন।


মাছ-ব্রকলি ভর্তা

উপকরণ
ব্রকলি ১টি (ছোট আকারের সেদ্ধ), রুই মাছ আধা কাপ (সেদ্ধ), পেঁয়াজ কুঁচি বড় ১টি, রসুন কুঁচি ১ চা-চামচ, কাঁচা মরিচ কুঁচি ৩টি, ধনেপাতা কুঁচি ২ টেবিল চামচ, লবণ স্বাদমতো, সরিষার তেল ও আচারের তেল পরিমাণমতো।

প্রণালি
সেদ্ধ ব্রকলি আর রুই মাছ একসঙ্গে মেখে নিতে হবে। প্যানে তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি আর রসুন কুঁচি হালকা ভেঁজে নিন। কাঁচা মরিচ কুঁচি দিয়ে একটু নাড়াচাড়া করে নিন। ব্রকলি-রুইয়ের মিশ্রণে ভাঁজা করা ধনেপাতা কুঁচি ছড়িয়ে দিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নামিয়ে ফেলুন। একটু খানি আচারের তেল মিশিয়ে নিয়ে গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন ব্রকলি ভর্তা।


ব্রকলি মুরগি সালাদ

উপকরণ
ছোট ব্রকলি ১টি (ফুলের মতো কেটে নিয়ে অল্প লবণ দিয়ে আধা সেদ্ধ করে নেওয়া), মুরগির বুকের মাংস ১ কাপ (অল্প আদা বাটা, রসুন বাটা, গোলমরিচ গুঁড়ো, সয়াসস দিয়ে অল্প তেলে লালচে করে ভেঁজে নেওয়া), গাজর আধা কাপ (কিউব করে কেটে অল্প লবণ দিয়ে সেদ্ধ করা), লাল বা সবুজ অথবা কালো আঙুর আধা কাপ (অর্ধেক করে কেটে নেওয়া), আনার দানা সিকি কাপ, মালটার রস আধা কাপ, চিলি ফ্লেক্স স্বাদমতো, চিনি স্বাদমতো (ইচ্ছে হলে), লেবুর রস ১ টেবিল চামচ ও লবণ স্বাদমতো।

প্রণালি
বড় পাত্রে ব্রকলি, মুরগির মাংস, গাজর, আঙুর, স্বাদমতো লবণ (যদি প্রয়োজন হয়) দুটো চামচের সাহায্যে হালকা নেড়ে মিশিয়ে নিন। অপর একটা ছোট বাটি বা পাত্রে মালটার রস, চিলি ফ্লেক্স, চিনি, লেবুর রস মিশিয়ে ড্রেসিং বানিয়ে নিন। ১০ মিনিট রেখে দিন। এরপর সালাদের ওপরে সালাদ ড্রেসিং ছড়িয়ে আলতো হাতে কাঠের চামচ বা কাটা চামচের সাহায্যে মিশিয়ে নিন। পরিবেশন পাত্রে ঢেলে ওপরে আনার দানা ছড়িয়ে সালাদ পরিবেশন করুন। মাল্টার রসের বদলে মেয়োনেজ বা জলপাই তেলও ব্যবহার করা যেতে পারে। দেশি স্বাদ আনতে চাইলে পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ আর ধনেপাতা কুঁচি মিশিয়ে নিতে পারেন।


ব্রকলির স্যুপ

উপকরণ
ছোট ব্রকলি ১টি (ছোট করে কাটা), মিষ্টি আলু আধা কাপ (খোসা ছাড়িয়ে কিউব করে কাটা), নারকেল দুধ ১ কাপ, সবজির স্টক ৪ কাপ, পেঁয়াজ ১টি (মাঝারি আকার), রসুন ২ কোয়া, আদা আধা ইঞ্চি, ফিশ সস ১ টেবিল চামচ, থাইপাতা বা লেমন গ্রাসের নরম গোড়া কুচানো ২ টেবিল চামচ, লেবুর রস স্বাদমতো, কাঁচা মরিচ স্বাদমতো, ধনেপাতা ১০০ গ্রাম, লবণ স্বাদমতো, সয়াবিন তেল বা জলপাই তেল ১ টেবিল চামচ ও পানি আধা কাপ।

প্রণালি
পেঁয়াজ, রসুন, আদা, মরিচ আর লেমন গ্রাসের নরম গোড়া কুচোনো, অল্প পানি ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। প্যানে তেল গরম করে ব্লেন্ড করা মিশ্রণ মাঝারি আঁচে ৩/৪ মিনিট লালচে করে ভেঁজে নিন। এবার এতে সবজির স্টক ঢেলে দিন। কিউব করে কাটা মিষ্টি আলু আর লবণ দিয়ে সেদ্ধ হওয়ার জন্য ঢেকে দিতে হবে। আলু আধা সেদ্ধ হলে কেটে রাখা ব্রকলি দিয়ে দিন। ১০-১২ মিনিট পর চুলা থেকে নামিয়ে ঠান্ডা করে নারকেল দুধ আর ধনেপাতা মিশিয়ে ব্লেন্ডারে দিয়ে ব্লেন্ড করে নিতে হবে।

ফিশ সস আর স্বাদমতো লেবুর রস মিশিয়ে আবারও চুলায় দিয়ে কম আঁচে ফুটতে দিন। ফুটে উঠলে স্বাদ ও লবণ চেখে নিয়ে নামিয়ে নিতে হবে। পরিবেশন পাত্রে ঢেলে ওপরে ঘন নারকেল দুধ, ধনেপাতা বা সেদ্ধ ব্রকলি দিয়ে সাজিয়ে পরিবেশন করতে হবে।


ব্রকলি বিফ শাশলিক

উপকরণ
হাড় ছাড়া গরুর মাংস আধা কেজি, ছোট ব্রকলি ১টি, পেঁয়াজ ২টি, পেঁপে বাটা ১ টেবিল চামচ, আদা বাটা ১ টেবিল চামচ, রসুন বাটা আধা চা-চামচ, মরিচ গুঁড়ো স্বাদমতো, হলুদ গুঁড়ো সিকি চা-চামচ, জিরা গুঁড়ো আধা চা-চামচ, গরম মসলা গুঁড়ো ১ চা-চামচের তিন ভাগের এক ভাগ, লেবু ১টি, লবণ স্বাদমতো ও তেল প্রয়োজনমতো।

প্রণালি
হাড় ছাড়া গরুর মাংস ছোট কিউব করে কেটে নিন। ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। তারপর হলুদ গুঁড়ো আর পেঁপে বাটা মেখে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা ম্যারিনেট করে নিন। ব্রকলি ফুল আকারে কেটে লবণ দিয়ে হালকা সেদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে রাখুন। পেঁয়াজ চার টুকরো করে কেটে পরতে পরতে খুলে নিতে হবে। ম্যারিনেট করা গরুর মাংসের সঙ্গে বাকি মসলা, স্বাদমতো লবণ আর তেল মেখে আধা ঘণ্টা রেখে দিন।

শাশলিকের কাঠি পানিতে কিছুক্ষণ ভিজিয়ে রেখে দিন। উঠিয়ে ভালো করে মুছে যথাক্রমে এক টুকরো মাংস, এক টুকরো ব্রকলি, পেঁয়াজ সাজিয়ে নিন কয়েক দফায়। তারপর নন স্টিক প্যানে অল্প তেল গরম করে শাশলিকের কাঠি পাশাপাশি সাজিয়ে মাংস সেদ্ধ হওয়া পর্যন্ত উল্টেপাল্টে ভেঁজে নিন। মাঝেমধ্যে বেঁচে যাওয়া মসলা ও তেল ব্রাশ করে দিতে হবে। হয়ে গেলে পরিবেশন পাত্রে সাজিয়ে ওপরে লেবুর রস ছড়িয়ে সালাদ বা সসসহ পরিবেশন করুন।

148
Faculty Sections / আপেল নাকি নাশপাতি?
« on: March 22, 2018, 01:38:39 PM »
আপেল ও নাশপাতি দেশে পরিচিত দুটো ফল। ঢাকার বারডেম জেনারেল হাসপাতালের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের প্রধান ও প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ জানালেন আপেল ও নাশপাতির গুণাগুণ।
আপেল
• আপেল রোগ প্রতিরোধক ও পুষ্টিকর একটি ফল, যা সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
• এতে আছে শর্করা, ভিটামিন, খনিজ লবণ, আঁশ, পেকটিন ও ম্যালিক অ্যাসিড। ভিটামিনের মধ্যে আছে ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-সি।
• আপেলের খোসায় ভেতরের থেকে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি ভিটামিন-এ আছে।
• আপেল ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে। আপেলের মধ্যে পেকটিন-জাতীয় একটি উপাদান থাকে, যা শরীরকে কোলন ক্যানসার থেকে দূরে রাখে। ফুসফুসের ক্যানসার ও লিভার ক্যানসার প্রতিরোধেও আপেলের ভূমিকা আছে।
• হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমায়।
• আপেল খেলে মেদ জমে না।
• এটি দাঁতের মাড়ির জন্য উপকারী। আপেলের রস দাঁতের জন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। ফলে দাঁত ভালো থাকে।
• প্রতিদিন আপেল খেলে হজমের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে পেটে। ফলে হজমশক্তি বাড়ে।
• শরীরের জন্য সবুজ আপেল সবচেয়ে ভালো।


নাশপাতি
• নাশপাতিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, বি ২, ই, ফলিক অ্যাসিড ও নিয়াসিন নামের পুষ্টিকর উপাদান। ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, কপার, আয়রনসহ অন্যান্য মিনারেলেরও উৎকৃষ্ট উৎস।
• নারীদের বিভিন্ন রোগসহ মেনোপোজ-পরবর্তী বিভিন্ন জটিলতা কাটাতে নাশপাতির জুড়ি নেই। কারণ, দাঁতের মাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে নাশপাতির রস ও অল্প ফিটকিরি মিশিয়ে রেখে সকালে খেলে মাড়ির ক্ষয় পূরণ হয়।
• খুশকি ও মাথার চুল পড়ে গেলে নাশপাতির রস ১০-১৫ দিন খেলে চুল পড়া ও খুশকি দূর হয়। করোনারি, থ্রম্বোসিস, হার্ট ব্লক, মাইয়োকার্ডিয়াল সংক্রমণ ইত্যাদি রোগে প্রতিদিন দু-তিন টুকরো নাশপাতি খেলে খুবই উপকার হয়।
• কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে নাশপাতির জুড়ি নেই। বিকেলে বা রাতে খাওয়ার পর নাশপাতি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
• পানীয় হিসেবে নাশপাতির জুস শরীরের জন্য খুবই কার্যকর।
• ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে। রক্তে শর্করার পরিমাণ কমায়।
• নাশপাতি অ্যালার্জির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমায়। যারা প্রায়ই হালকা জ্বর এবং অ্যালার্জি সমস্যায় ভোগে, তাদের জন্য নাশপাতি খুবই উপকারী।
• উচ্চ মাত্রায় মিনারেল থাকার কারণে শরীরে ক্যালসিয়ামের জোগান দেয়। এটি হরমোন উৎপাদন এবং হাড়ের ক্ষয়রোধ করে। নাশপাতিতে আছে হাড়ের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ‘ভিটামিন-কে’।
গ্রন্থনা: তারিকুর রহমান খান

149
Faculty Sections / হবু মায়ের ব্যায়াম
« on: March 22, 2018, 01:31:45 PM »
সচেতনতা, সঠিক খাবার, পর্যাপ্ত বিশ্রাম আর মানসিক স্বস্তি—গর্ভাবস্থায় এগুলো জরুরি। এ সময় নিয়ম মেনে হালকা ব্যায়ামও বেশ উপকারী। তবে অবশ্যই তা চিকিৎসকের পরামর্শ ও অনুমতি নিয়ে।

গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম অন্যান্য সময়ের মতো হবে না। বুঝে, শুনে, জেনে নিয়েই ব্যায়ামগুলো করতে হবে। শরীরের পরিবর্তন, ফিটনেস অনেক নারীর জন্যই সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। অবসাদ, পিঠে ব্যথাসহ অনেক সমস্যা হয় এই সময়ে। তাই ভারসাম্যপূর্ণ ব্যায়াম হবু মা ও সন্তান উভয়ের জন্যই উপকারী।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলের গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শারমিন মাহামুদ বলেন, ‘এ সময়ে পিঠ ও কোমরে ব্যথাসহ নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। একটু শক্ত বিছানা ও সোজা হয়ে ঘুমাতে হবে। যাঁরা বাইরে কাজ করেন, তাঁদের লম্বা সময় বসে থাকা ঠিক নয়। এতে কোমর ও পিঠে ব্যথা বেশি হয়। এই সময়ে হালকা ব্যায়াম করা যেতে পারে, বিশেষ করে নিশ্বাসের ব্যায়াম গর্ভকালীন উপকারী’।

ফিটনেস বাংলাদেশ ওমেন্স জিমের স্বত্বাধিকারী দয়িতা গর্ভাবস্থায় করা যাবে, এমন কিছু ব্যায়াম দেখিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘গর্ভাবস্থায় শরীরে দুর্বলতা, ব্যথা ও বিষণ্নতা কাজ করে। এগুলো দূর করতে ব্যায়াম সহযোগিতা করবে। এমনকি স্বাভাবিক প্রসবের ক্ষেত্রেও ব্যায়াম উপকারী। তবে শরীরের ওপর বাড়তি চাপ দিয়ে ব্যায়াম করা ঠিক নয় এবং যেকোনো ধরনের ব্যায়াম করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।’



পার্শ্ব-জানুশিরাসন

প্রথমে সোজা হয়ে বসে এক পা (ডান পা) ভেতরের দিকে ভাঁজ করতে হবে। বাঁ পা সোজা রেখে বাঁ হাত দিয়ে ধরুন। এবার ডান হাত মাথার ওপর দিয়ে উঠিয়ে বাঁ পা ধরার চেষ্টা করুন। এই ব্যায়ামটি দুই দিকেই করা যায়। ব্যায়ামটি সর্বনিম্ন ১০ সেকেন্ড থেকে সর্বোচ্চ ২৫ সেকেন্ড করা যাবে। তিনবারের বেশি করা যাবে না।

গর্ভাবস্থার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মায়েরা এই ব্যায়াম করতে পারবেন। পিঠের ব্যথা কমানো, পেশিগুলো মজবুত করতে সাহায্য করবে এই ব্যায়াম।


ত্রিকোনাসন

প্রথমে দুই পা খুলে ডান পায়ের আঙুলগুলো ডান দিকে ঘুরিয়ে নিন। এবার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে ডান হাঁটু ভাঁজ করুন। এরপর ডান হাত দিয়ে ডান হাঁটু ধরুন ও বাঁ হাত ওপরের দিকে তুলে দিন এবং আপনার নজরও ওপরে হাতের দিকে রাখুন। এভাবে তিনবার সর্বনিম্ন ১০ সেকেন্ড ও সর্বোচ্চ ২৫ সেকেন্ড করতে পারবেন।

এই ব্যায়াম করলে স্বাভাবিক প্রসবের সম্ভাবনা থাকে। কারণ, এই ব্যায়ামে জরায়ুর ব্যায়াম হয়, যা স্বাভাবিক প্রসবে সহায়ক। এ ছাড়া পায়ের পেশি, থাইয়ের ভেতরের দিকের অংশ, পিঠে ব্যথা, শিশুর হৃৎপিণ্ডের জন্য খুবই উপকারী এই ব্যায়াম।



অর্ধ-উষ্ট্রাসন

প্রথমে এভাবে দাঁড়াতে হবে। এরপর কোমরে হাত রেখে শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে পেছনের দিকে যেতে হবে এবং ৫ সেকেন্ড থেকে আবার শ্বাস নিতে নিতে সামনের দিকে আসতে হবে। এই ব্যায়াম তিনবার করা যাবে। সর্বনিম্ন ১০ সেকেন্ড ও সর্বোচ্চ ২৫ সেকেন্ড করতে পারবেন।

এটি শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম বলে মায়ের পাশাপাশি শিশুর হৃদয়ের জন্যও খুব ভালো। এমনকি পিঠের ব্যথা কমিয়ে পেশিগুলো শিথিল করে ও মানসিক চাপ কমায় এই ব্যায়াম।


প্রাণায়াম

প্রথমে সুখ আসন করে বসুন। এবার নিশ্বাস নিতে নিতে দুই হাতের তালু মাথার ওপর একসঙ্গে করবেন। চোখ বন্ধ করে নাক দিয়ে লম্বা করে শ্বাস নেবেন ও ছাড়বেন। এভাবে তিনবার করে করতে পারেন। তবে ১০ সেকেন্ড থেকে ২৫ সেকেন্ডের বেশি নয়।

মানসিক চাপ কমায় এবং মা ও শিশুর হৃৎপিণ্ডের জন্য উপকারী এই ব্যায়ামটি। প্রথম দিকে কেউ না করতে পারলে দুই-তিন মাস থেকেও করা যাবে ব্যায়ামটি।



খালি হাতে

এক পাশ হয়ে শুয়ে এক হাত মাথার নিচে রাখুন। এবার অন্য হাত দিয়ে মাটিতে ভর দিয়ে এক পা ওপরের দিকে ওঠাতে ও নামাতে হবে। এভাবে ১০ থেকে ২০ বার করতে পারবেন। একইভাবে অন্য পা দিয়েও করতে হবে।

150
Faculty Sections / বুকের যত ব্যাথা
« on: March 22, 2018, 01:26:37 PM »
হৃদ্‌রোগ ছাড়াও বুকে ব্যথা এবং প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে। বুকে ব্যথা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি প্রথমেই নিশ্চিত হয়ে নেন হৃদ্‌রোগের কারণে এমন ব্যথা হচ্ছে কি না। হৃদ্‌রোগের আশঙ্কা বাতিল হলে চিকিৎসক বুকে ব্যথার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন এবং চিকিৎসার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।
হৃদ্‌রোগ ছাড়া বুকে ব্যথা সব বয়সের মানুষের হতে পারে। নারী বা পুরুষের বেলায় এ ধরনের ব্যথা হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো পার্থক্য দেখা যায় না। দেখা গেছে, হৃদ্‌রোগজনিত বুকে ব্যথা নিয়ে যত রোগী আসে, তার চেয়ে চার গুণ বেশি রোগী আসে বুকের অন্য কোনো ব্যথা নিয়ে। এ ধরনের ব্যথার উপসর্গে মাঝে মাঝে ব্যথা হচ্ছে। বুকের ঠিক কোথায় ব্যথা হচ্ছে তা সঠিকভাবে রোগী বলতে পারছে। এ ছাড়া এই ব্যথা ছড়িয়ে পড়ছে না। রোগী সাধারণ কাজকর্ম করতে পারছে। অর্থাৎ, বুকে ব্যথা থাকা সত্ত্বেও রোগীদের সাধারণ কাজকর্ম করতে কোনোই অসুবিধা হয় না। এ ধরনের রোগীরা ব্যথা নিয়ে সাধারণভাবে প্রথমেই হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যায় বা তাদের এ ধরনের চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।

সাধারণভাবে এমনটি করার কারণ, বুকে যে ব্যথা হচ্ছে, তা হৃদ্‌রোগ নাকি অন্য কিছু, তা রোগীর পক্ষে কখনোই বোঝা সম্ভব নয়। তাই নিরাপত্তার কথা ভেবে রোগীকে হৃদ্‌রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে বা হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নানা কারণে বুকে ব্যথা হতে পারে। বুকের মাংসপেশির কোনো সংকটের কারণে, হাড়ের কারণে এই ব্যথা হতে পারে। বুকে কোনো আঘাত পাওয়ার কারণেও হতে পারে। এ ছাড়া পুরোনো ব্যথায় নতুন করে আঘাত পাওয়ার কারণে বুকে ব্যথা দেখা দিতে পারে। কোনো কোনো ধরনের ওষুধ খাওয়ার জন্য, এমনকি ফুসফুসের সমস্যার জন্য বুকে ব্যথা হতে পারে। তবে দেখা গেছে, সাধারণভাবে খাদ্যনালির নানা সমস্যার কারণে বুকে ব্যথা দেখা দিতে পারে। আমাদের পাকস্থলীতে খাদ্য হজম করার জন্য অ্যাসিড থাকে। কখনো কখনো এই অ্যাসিড খাদ্যনালিতে চলে আসে। ফলে বুক বা গলা জ্বালা করতে পারে। বুকের হাড়ের নিচে এই ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
বুক জ্বালা থেকে যে ধরনের বুকে ব্যথা দেখা দেয়, তা সাধারণত খাওয়ার পর দেখা দিতে পারে। এ ধরনের ব্যথা বেশ কয়েক ঘণ্টা স্থায়ী হয়। ভয় বা আতঙ্ক থেকেও অনেকের বুক ব্যথা করতে পারে।
এ ধরনের বুকে ব্যথার সঙ্গে ঘন ঘন নিঃশ্বাস নেওয়ার উপসর্গ দেখা দিতে পারে। প্রচণ্ড ঘাম হতে পারে। বুক ধড়ফড় করতে পারে, অর্থাৎ হৃদ্‌পিণ্ডের কাজ বেড়ে যেতে পারে।
খাদ্যনালিতে বেশ কয়েক ধরনের সমস্যার কারণে কখনো কখনো খাদ্য গিলতে অসুবিধা হয় এবং একই সঙ্গে প্রচণ্ড ব্যথা দেখা দেয়। আমরা খাদ্য গেলার পর খাদ্যনালির মাংসপেশি খাদ্যকে নিচের দিকে নিয়ে যেতে থাকে। কিন্তু কোনো কোনো মানুষের ক্ষেত্রে খাদ্যনালি এই সমন্বয় হারিয়ে ফেলে। আর এতে বুকে প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে। এই ব্যথা নাইট্রোগ্লিসারিন নামের একটি ওষুধ মুখে দিলে ভালো হয়ে যায়। হৃদ্‌রোগ-সংক্রান্ত ব্যথা কমাতেও একই ওষুধ ব্যবহার করা হয় বলে এ ধরনের ব্যথা কখনো কখনো মারাত্মক ভ্রান্তির সৃষ্টি করে। হৃদ্‌রোগবহির্ভূত বুকে ব্যথা শিশুদেরও হতে পারে। দুগ্ধপোষ্য শিশুদেরও এমন ব্যথা হতে পারে, আর তা হতে পারে নানা কারণে। তবে সাধারণভাবে হৃদ্‌যন্ত্রের আশপাশে যেসব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ রয়েছে, সেগুলোর কোনোটায় কোনো ধরনের সমস্যা দেখা দিলে তার ফলে এ-জাতীয় বুকে ব্যথা দেখা দিতে পারে। জন্মগতভাবে অনেক শিশুর খাদ্যনালি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট থাকে এবং এসব শিশুর বুকে ব্যথা হতে পারে।
বুকের ব্যথাকে হৃদ্‌রোগ থেকে সৃষ্ট ব্যথা বলে ধরে নিয়ে চিকিৎসকের কাছে কিংবা হাসপাতালে ছুটে গেলে দোষের কিছু নেই। কিন্তু হৃদ্‌রোগ থেকে ব্যথা হচ্ছে অথচ ডাক্তারের কাছে কিংবা হাসপাতালে গেল না, তাতে মহাবিপদ হতে পারে। আর ব্যথাটি হৃদ্‌রোগজনিত বা হৃদ্‌রোগজনিত নয় তা বোঝার অন্যতম উপায় হলো, হৃদ্‌রোগবহির্ভূত ব্যথা বুকের এক জায়গায় থাকে। আঙুল দিয়ে রোগী বলতে পারে ঠিক কোন স্থানে ব্যথা হচ্ছে।
এ ধরনের ব্যথা সমস্ত বুক, ঘাড় বা বাঁ হাত বা দেহের বাঁ পাশে ছড়িয়ে পড়ে না। হৃদ্‌রোগবহির্ভূত ব্যথা সাধারণভাবে কোনো ধরনের বিপদের কারণ হয়ে দেখা দেয় না। এ ছাড়া এ ধরনের ব্যথা হলে প্রথমে কারণ কী তা বের করতে হবে এবং সেই কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হলে রোগী আরোগ্য লাভ করে থাকে।
লেখক: বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ

Pages: 1 ... 8 9 [10] 11 12 ... 15