Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - tnasrin

Pages: [1] 2 3
1
সয়া সসের জন্ম নিয়ে নানা গল্প আছে। সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য গল্পটা বলি। প্রায় দুই হাজার বছর আগে হানদের শাসনামলে চীনা ভিক্ষুরা ঠিক করলেন, তাঁরা আর আমিষ খাবেন না। সবাই নিরামিষভোজী হয়ে যাবেন। সেই সময় আমিষ স্পর্শ না করেও যাতে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন করা যায়, এ জন্য আমিষের বিকল্প নিরামিষ খোঁজা শুরু হলো। তখন বিশ্ব টফু (সয়াবিনের দুধ দিয়ে বানানো কার্ড ভাজা), সয়া দুধ, সয়া পনির, সয়া সস—এগুলোর সঙ্গে পরিচিত হয়েছিল। এখন তো বাংলাদেশেও সয়াবিনের নাগেট বা বড়ি ব্যাপক জনপ্রিয়।
সয়া সসের ব্যবহার
চীনে যেহেতু এ রান্নার অনুষঙ্গের জন্ম, তাই চীনা খাবারে সাধারণত ব্যবহার করা হয় সয়া সস। সয়া সস দুই ধরনের। একটা গাঢ়, আরেকটা হালকা। সাধারণত, আমরা গাঢ় সয়া সস বেশি ব্যবহার করি—মাংস মেরিনেট করে রাখতে আর সুশির সঙ্গে। হালকা সয়া সস সালাদে ব্যবহার করা হয় বেশি।
সয়া সসের প্রধান কাজ হলো খাবারকে সুস্বাদু করে তোলা। হজমে সহায়তা করা। কাঁচা লবণ ব্যবহার না করে শুধু সয়া সস দিয়েও রান্না করা যায়। কেননা, সয়া সসে প্রচুর লবণ আছে। এ ছাড়া অন্য উপাদানও আছে; যেগুলো লবণে নেই।
সয়া সসের উপকারিতা
সয়া সসে আছে খনিজ উপাদান, ভিটামিন বি, সেলেনিয়াম, জিংক, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে এগুলো লড়াই করে। সয়া সসে থাকা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। হৃৎক্রিয়ার দক্ষতা বাড়ায়। হাড় মজবুত রাখতেও সাহায্য করে। সয়া সসের মূল উপাদান প্রোটিন। এ কারণে এটি শরীরের পেশি গঠনে সহায়তা করে।

প্রোটিন খেলে সাধারণত কম খিদে পায়। তাই সয়া সস দিয়ে রান্না করা খাবার ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি মস্তিষ্কের ক্ষত দূর করতে সাহায্য করে, স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। খাবারের খুবই উপকারী একটা উপাদান হলো অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট। ‘অ্যান্টি–এজিং’–এ উপাদানটির গুণের শেষ নেই। রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এ কারণে যেসব খাবারে অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট আছে, সেসব খাবার আপনি চোখ বন্ধ করে খেতে পারেন। তাই সুস্বাদু সয়া সস আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় স্থান পেতেই পারে।
অপকারিতা
বাজারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাসায়নিক হাইড্রোলাইসিস ব্যবহার করে কৃত্রিমভাবে উত্পাদিত সয়া সসই বেশি পাওয়া যায়। তাই কেনার সময় সাবধান। সাধারণত, কাচের বোতলে স্বচ্ছ বাদামি রঙের সয়া সস ভেজালমুক্ত। এখানে প্রচুর সোডিয়াম থাকে। যাঁদের উচ্চ রক্তচাপসহ লবণে সমস্যা, তাঁরা বুঝেশুনে, পরিমাণ মেনে খাবেন। এটি অন্ত্রের রোগের কারণ হতে পারে। সয়া সসে থাকা লবণ অন্ত্রের প্রাচীরের ক্ষতি করে। গবেষণায় দেখা গেছে, কারও কারও ক্ষেত্রে সয়া সস এলার্জি আর মাইগ্রেনের কারণ। অকালগর্ভপাতের সমস্যা হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় না খাওয়াই ভালো।

2
জীবন ভালো-মন্দের মিশেল। আনন্দ আর কান্নার সমন্বয়। তাই বলে আপনি যে কাঁচি দিয়ে ঘচাং করে মন্দ আর কান্না কেটে বাদ দিয়ে দেবেন, তা হবে না। কেননা, এ-ই জীবনের সৌন্দর্য। মন্দ আর কান্না আছে বলেই ভালো আর আনন্দের জন্য আমরা মুখিয়ে থাকি। কিন্তু যখন আপনার কিছুই ভালো লাগে না, খুবই কঠিন সময় যাচ্ছে, ভাঙচুর করতে ইচ্ছে করছে, নিদেনপক্ষে উল্টোপাল্টা কোনো একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে সেটি ঘটিয়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে। অথবা অপর পক্ষকে মনে মনে আপনি যেগুলো বলছেন, সেগুলো চিৎকার করে শোনাতে ইচ্ছে করছে। তখন আপনি নিজেকে শান্ত রাখবেন কীভাবে? এই বিষয়ে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছে বিজনেস গ্রোথ মেন্টর। ইনস্টাগ্রামভিত্তিক এই অনলাইন মিডিয়ার জনপ্রিয়তা সময়ের সঙ্গে বেড়েই চলেছে। অল্প সময়ে জুটিয়ে ফেলেছে ১৪ লাখ অনুসারী। দেখে নেওয়া যাক, কঠিন সময়ে মাথা ঠান্ডা রাখতে কী করা যায়।
১. হুট করে আপনি এমন কিছু শুনলেন, যাতে মাথাটা হিটারের চেয়ে দ্রুতগতিতে উত্তপ্ত হয়ে গেল। তখন আপনি করবেন কী? ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ুন। খানিক হেঁটে বা দৌড়ে আসুন। যাতে শারীরিক পরিশ্রম হয়। হাঁটার ফলে এন্ডরফিনস, অক্সিটোসিন, ডোপামিন, এড্রেনালিন এমন সব ‘ফিল গুড’ হরমোন নিঃসৃত হয়। তাতে আপনার বেশ খানিকটা ভালো লাগবে।


 ২. যদি অফিস নিয়ে দিনের পর দিন ‘প্যারা খান’, বা কিছুতেই মন বসছে না, এমন অবস্থার ভেতর দিয়ে যান, তাহলে সবকিছু থেকে এক দিনের জন্য ছুটি নিন। ছুটি নিয়ে ফোন বন্ধ করে কাছেপিঠে কোথাও ঘুরে আসুন বা আপনার যা করতে ইচ্ছা করে, সেটা করুন। পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিন। মনের কথা ভাগাভাগি করে নিন বা পরিবারের সঙ্গে আনন্দময় সময় কাটান।

৩. এমন একজন মানুষের জন্য কিছু করুন, যাঁকে আপনি চেনেন না। ভবিষ্যতেও আর দেখা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। যেমন আপনি কিছু শপিং করে বের হয়ে রাস্তার পাশে এক বৃদ্ধকে দিয়ে দিলেন। এ ধরনের কাজ আপনাকে ভেতর থেকে দীর্ঘ সময় একটা ভালো অনুভূতি দেবে, যা কিছু স্যাঁতসেঁতে বা আহত চিহ্ন আছে, সেগুলো সব ঢেকে যাবে, লীন হয়ে যাবে।

৪. এমন কোথাও বসুন, যেখানে আপনাকে কেউ দেখবে না। কিন্তু আপনি অনেককেই দেখতে পাবেন। যেমন একটা কফি শপে বসে আপনি হয়তো ঘণ্টাখানেক একটা গরম কফি হাতে ব্যস্ত রাস্তা, মানুষ আর আশপাশ পর্যবেক্ষণ করলেন। অথবা আপনার অফিসেই আপনি এমন একটি জায়গা খুঁজে পেতে পারেন। বাসার ছাদও হতে পারে এমন একটি স্থান। সেখান থেকে আশপাশের ব্যস্ততা, মানুষের জীবনযাপন, এককথায় ‘হ্যাপেনিং লাইফ অবজার্ভ’ করতে হবে। লাইফ হ্যাকসের গবেষণামতে, এতে আপনি নিজের জীবনকে ওই সামগ্রিকতার একটা ক্ষুদ্র অংশ হিসেবে জুড়ে দিতে পারবেন। তখন আপনার নিজের ভেতরজুড়ে যে হতাশা, বিষণ্নতা বা ক্ষোভ জমে আছে, সেটা ছোট হয়ে আসবে।

৫. আপনি যে অবস্থার ভেতর দিয়ে যাচ্ছেন, সেই বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করুন। ডায়েরিতে পুরো বিষয়ের খুঁটিনাটি লিখে ফেলুন। এক পাশে আপনার নিজের শক্তিশালী দিকগুলোও নোট করে রাখতে পারেন। পুরোনো শখ, অভ্যাস বা কোনো সৃজনশীল কাজ নতুন করে শুরু করতে পারেন। পুরোনো সে রকম কোনো শখ না থাকলে নতুন করে শুরু করুন। এমন কিছু করুন, যেটা আপনি ছোটবেলায় করতেন। জীবন এত ‘সিরিয়াসলি’ নেবেন না। আনন্দে থাকুন। নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলুন। নেতিবাচক আলাপচারিতা থেকে দূরে থাকুন। পর্যাপ্ত ঘুমান। ৮ ঘণ্টা ঘুমিয়ে উঠে দেখবেন, মন খারাপের ভাব অনেকটাই কমে গেছে।

মনে রাখবেন, জীবন একটা ভ্রমণ। সেই ভ্রমণে ঝুঁকি, ক্লান্তি সবই আছে। আপনাকে কেবল মাথা ঠান্ডা রেখে ভ্রমণটা উপভোগ করতে হবে। এভাবে দেখবেন, আপনি ঠিকই গন্তব্যে পৌঁছে গেছেন। তারপর একটু থেমে নতুন গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবেন।  আর যদি কোনো গন্তব্যে না-ও পৌঁছান, তাতে কী; নিশ্চিত করুন, যাত্রাটা আপনার মন্দ যায়নি।


3
যকৃতে চর্বি জমাকে ফ্যাটি লিভার বলে। ফ্যাটি লিভার সাধারণত দুই ধরনের হয়ে থাকে—অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ও নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার। আমাদের দেশের মানুষের নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার হওয়ার প্রবণতা বেশি।
সাধারণত অতিরিক্ত ওজন, ডায়াবেটিস, রক্তে অতিরিক্ত মাত্রায় ট্রাইগ্লিসারাইড এবং কম গুড কোলেস্টেরল বা এইচডিএল, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, কার্বোহাইড্রেট ও চর্বির বিপাকে সমস্যার কারণে যকৃতে চর্বি জমে। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস, ওজন নিয়ন্ত্রণ ও ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই। এই তিনটির মধ্যে সঠিক খাদ্যাভ্যাসই সবচেয়ে জরুরি।
যা খাবেন
কোলিন যুক্ত খাবার: যকৃতের চর্বি কাটাতে কোলিন যুক্ত খাবার, যেমন চিনাবাদাম, ইলিশ, পুঁটি মাছ, চিংড়ি, স্যামন, ফুলকপি, সয়াবিন ও ডিম নিয়মিত খেতে হবে।
সবুজ শাকসবজি: প্রতিদিন সবুজ শাক, বিশেষ করে পালংশাক, ব্রকলি, শালগম ও বাঁধাকপি খাবারের তালিকায় রাখতে হবে।
জটিল শর্করা: শর্করার উৎস হিসেবে জটিল আঁশযুক্ত শর্করা বেছে নিন। যেমন ওটস, ব্রাউন রাইস, হোল গ্রেইন আটা ইত্যাদি।
ওমেগা-৩ যুক্ত খাবার: ওমেগা-৩ যুক্ত খাবার যকৃতের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। সামুদ্রিক মাছ, যেমন টুনা, সার্ডিন, স্যামন, কাঠবাদাম, ওয়ালনাট, ফ্ল্যাক্সসিড ও অলিভ ওয়েল খেতে হবে নিয়মিত।
বিচি–জাতীয় খাবার: শিমের বিচি, সূর্যমুখীর বিচি, কুমড়ার বিচি ও রেড কিডনি বিনসে প্রচুর ভিটামিন-ই এবং অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট রয়েছে। এই উপাদান ফ্যাটি লিভারের জন্য উপকারী।
দুগ্ধজাত খাবার: প্রতিদিন পরিমাণমতো দুধ বা দই খেতে হবে। এতে বিদ্যমান প্রোটিন যকৃৎকে ভালো রাখতে সাহায্য করে।
যা খাবেন না
শর্করা, বিশেষ করে সহজ শর্করা কমিয়ে দিতে হবে। অতিরিক্ত শর্করাই চর্বি হিসেবে যকৃতে জমা হয়। তাই সাদা ভাত, মিষ্টি ও চিনিযুক্ত খাবার, কোমল পানীয়, চকলেট, আইসক্রিম, মিষ্টান্ন বা ডেজার্ট ও বেকারির খাবার যথাসম্ভব কমিয়ে দিন। এ ছাড়া অ্যালকোহল, সাদা আটা, তেলে ভাজা খাবার, কাঁচা লবণ, রেড মিট (গরু-খাসির মাংস) এড়িয়ে চলতে হবে।
পুষ্টি বিশেষজ্ঞ, ইবনে সিনা কনসালটেশন সেন্টার, বাড্ডা

4
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ বেড়েই চলেছে। এ ভাইরাস নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। করোনাভাইরাস ঘিরে বেশির ভাগ আলোচনা মাস্ক ও গ্লাভস পরা ও হাত ধোয়ার বিষয়টিকে ঘিরে।
স্মার্টফোন ও ল্যাপটপের মতো ব্যক্তিগত ডিভাইসগুলো জীবাণুমুক্ত করার দিকেও নজর দিতে হবে। স্বাস্থ্য গবেষকেরা বিভিন্ন সময় স্মার্টফোনে বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের বিষয়ে সতর্ক করেছেন, যা রোগ সৃষ্টি করতে পারে। যদি ডিভাইসে ব্যাকটেরিয়া থাকে তবে বারবার হাত ধুয়েও কোনো কাজ হবে না।
এক গবেষণায় জানা গেছে, শৌচাগারের চেয়ে তিন গুণ বেশি জীবাণু থাকে স্মার্টফোনের পর্দায়। ইনস্যুরেন্সটুগো নামের একটি প্রতিষ্ঠান এই গবেষণা চালায়। গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, স্মার্টফোনের পর্দায় থাকা এসব জীবাণু ত্বকের রোগসহ নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কারণ হতে পারে। পরীক্ষা করা স্মার্টফোনগুলোর পর্দার প্রতি বর্গ সেন্টিমিটারে গড়ে ৮৪ দশমিক ৯ ইউনিট জীবাণু পাওয়া গেছে। অন্যদিকে কমোড ও এর হাতলে থাকে সর্বোচ্চ ২৪ ইউনিট জীবাণু।
ইনস্যুরেন্সটুগো নামের প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা গ্যারি বিস্টোন বলেন, ‘আমরা সাধারণত সব সময় স্মার্টফোন সঙ্গে নিয়েই ঘুরি। এভাবেই নানা জায়গা থেকে ওই ফোনে বাসা বাঁধে জীবাণু।’
বর্তমানে বিশ্বজুড়ে স্মার্টফোন ব্যবহারের মাত্রা বেড়েই চলেছে। মূলত ভার্চ্যুয়াল জগতে সার্বক্ষণিক থাকার উপায় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে স্মার্টফোন। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক গবেষণায় জীবাণুর বিস্তারে স্মার্টফোনের ভূমিকার বিষয়টি জোরালো হয়েছে।
স্মার্টফোন ও অন্য ডিভাইস থেকে সংক্রমণ ঠেকাতে যা করবেন:
১. একই পকেটে স্মার্টফোন ও রুমাল রাখবেন না। এতে আপনার ডিভাইসে থাকা জীবাণু রুমালের মাধ্যমে সহজে মুখে পৌঁছে যেতে পারে।
২. ফোন কল করার সময় সরাসরি ফোন কানে ধরার বদলে হেডফোন ব্যবহার করতে পারেন। এতে ভাইরাস ফোন থেকে মুখে পৌঁছাবে না।
৩. যে কম্পিউটার একাধিক ব্যক্তি বারবার ব্যবহার করেন, সেগুলো যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। ক্যাফেতে বসে বা পাবলিক কম্পিউটারে বসতে হলে স্টেরিল গ্লাভস ব্যবহার করতে পারেন।
৪. আপনার স্মার্টফোন যদি আইপি ৬৮ মানের বা পানিরোধী হয়, তবে তা সাবান ও পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে পারেন বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে পারেন। ফোন পরিষ্কারের আগে অবশ্যই তা বন্ধ করে নেবেন।
৫. হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা পরিষ্কারক কোনো উপাদানের সঙ্গে অ্যালকোহল মিশিয়ে গ্যাজেট পরিষ্কার করার কথা ভাবা যেতে পারে। যদিও এ প্রক্রিয়ায় ডিভাইস পরিষ্কারের জন্য সুপারিশ করা হয় না।
৬. ল্যাপটপ পরিষ্কারের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে টিস্যু দিয়ে ল্যাপটপের প্রতিটি কোনা পরিষ্কার করতে হবে। এ জন্য শুরুতে ল্যাপটপ বন্ধ রাখতে হবে।
৭. এয়ারফোনও নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। এ ক্ষেত্রেও হ্যান্ড স্যানিটাইজার কাজে লাগাতে পারে।
৮. ফোন ও ল্যাপটপ পরিষ্কারের পর অবশ্যই সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নেবেন।
৯. দিনে অন্তত একবার আপনার ব্যবহৃত ডিভাইসগুলো পরিষ্কার রাখুন।
১০. অসুস্থ বা সন্দেহভাজন কারও ডিভাইস ধরার আগে সতর্ক থাকুন। নিজের ডিভাইস অন্যকে ব্যবহার করতে দেওয়ার আগেও সচেতন হন। তথ্যসূত্র: গ্যাজেটস নাউ।

5
কম্পিউটারের সামনে বসলেই হলো। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে সময় চলে যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। যাঁরা পড়ালেখা করছেন দীর্ঘসময়, তাঁদেরও কাটাতে হয় চেয়ারে বসেই। তথ্য সংগ্রহ থেকে শুরু করে ডিজাইন, পরিকল্পনা পর্যন্ত সব হচ্ছে এক জায়গায় বসেই। আগে হয়তো প্রয়োজনীয় ফাইলপত্র নিজের অফিসের একটা ক্যাবিনেট থেকে বের করে নিতে হতো, এখন কম্পিউটারে জমা সেই ফাইলের সফট কপি বেরিয়ে আসে একটা ক্লিকেই। তাই কাজের ফাঁকে চেয়ার ছেড়ে ওঠা হয় কম। এক জায়গায় বসে থেকে কাজ করার সুবিধা অনেক, তবে একটানা বসে কাজ করতে করতে পিঠ বা কোমরব্যথার বিপাকেও পড়ছেন অনেকে। মূলত ভুল ভঙ্গিতে বসার কারণেই এসব সমস্যা হয়ে থাকে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চেয়ারম্যান শামসুন নাহার জানালেন, কাজের সময় আরামদায়ক ভঙ্গিতে বসা উচিত। যাঁরা দীর্ঘসময় বসে কাজ করেন, তাঁদের ঘাড় ও কোমরব্যথার আশঙ্কা বেশি। তাই এমন চেয়ারে বসে কাজ করতে হবে, যেটি আমাদের মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক বক্রতা অনুসরণ করে বানানো হয়েছে।
আমাদের কোমরের ওপরের অংশটা স্বাভাবিকভাবেই একটু সামনের দিকে বেঁকে থাকে। সোজা চেয়ারগুলোতে বসলে এই অংশ নিয়েই বাধে বিপত্তি, কারণ চেয়ারে পিঠ ঠেকিয়ে বসতে গেলে এই অংশের সঙ্গে চেয়ারের কোনো সংযোগ থাকে না। এভাবে দীর্ঘসময় বসে থাকলে কোমরব্যথা হতে পারে।
পিঠ ও কোমরে ব্যথা এড়াতে জেনে নিন অধ্যাপক শামসুন নাহারের পরামর্শ—

বসবেন যেভাবে
চেয়ারে সোজাভাবে বসুন। ঘাড় বা পিঠ বাঁকিয়ে বসবেন না। পিঠের নিচের অংশ ও চেয়ারের মধ্যে কোনো ফাঁকা রেখে বসা যাবে না। কম্পিউটার বা খাতা-কলমের কাজ যেটিই করুন না কেন, কাজের জিনিসগুলো রাখতে হবে সুবিধাজনক দূরত্বে। চেয়ার ও টেবিলের মধ্যে খুব বেশি দূরত্ব রাখা যাবে না। হাত ঝুলিয়ে কাজ করবেন না। লেখার সময় এবং কি-বোর্ড বা মাউসের কাজ করার সময় হাতের আঙুল থেকে কনুই পর্যন্ত পুরো অংশটাই যেন টেবিলের ওপর থাকে। পা দুটি আরামদায়কভাবে মেঝেতে রাখুন। ঊরু থাকবে মেঝের সমান্তরাল। শরীরের কোনো অংশই দোদুল্যমান বা আনসাপোর্টেড অবস্থায় রাখা যাবে না। সঠিক সমর্থন (সাপোর্ট) দিয়ে রেখে কাজ করতে হবে। সঠিক ভঙ্গিতে বসলে পিঠ বা কোমরে যেমন ব্যথা হবে না, তেমনি ঘাড়ব্যথা থেকেও মুক্ত থাকবেন।
অধ্যাপক শামসুন নাহার জানালেন, মিনিট বিশেক একটানা কাজ করার পর অন্তত এক মিনিটের জন্য হলেও অঙ্গভঙ্গি পরিবর্তন করা প্রয়োজন। অঙ্গভঙ্গি পরিবর্তনের জন্য উঠে দাঁড়াতে পারেন। ২০ মিনিট পরপর বিরতি দেওয়া সম্ভব না হলেও আধা ঘণ্টা পরপর অবশ্যই বিরতি দিন। আধা ঘণ্টার বেশি সময় একটানা বসে কাজ করা যাবে না।

যেমন চেয়ার চাই
নিজের দেহের গঠন অনুযায়ী চেয়ার বানিয়ে নিতে পারলে সবচেয়ে ভালো। সেটি সম্ভব না হলে এমন চেয়ার কিনুন, যেটির পেছনটা মেরুদণ্ডের মতোই বক্র। চেয়ারের উচ্চতা দেখে নিন, যাতে আপনার পা ঝুলে না থাকে; আবার কষ্টদায়ক ভঙ্গিতে পা ভাঁজ করে রাখতেও না হয়। রিভলভিং চেয়ারে না বসাই ভালো।

বিকল্প আছে কী?
চেয়ার কেনা কিংবা বানানো কোনোটারই সুযোগ না থাকলে ছোট কুশন ব্যবহার করতে পারেন। পিঠের নিচের অংশ ও চেয়ারের মধ্যের ফাঁকা অংশটাতে কুশন রেখে সঠিক ভঙ্গিতে বসে কাজ করতে পারেন।
অনেকে চেয়ারে বাড়তি ব্যাক রেস্ট (একটু বাঁকানো) লাগিয়ে নেন। এটি অবশ্য তেমন কার্যকর নয়। আবার পিঠব্যথায় কখনো কখনো একটু কাজে লাগলেও এটির ব্যবহারে ঘাড়ে ব্যথার ঝুঁকি বাড়ে।

গাড়িতে চড়লে
যাঁরা লম্বা সময় গাড়ি চালান, তাঁরাও একই নিয়মে কুশন ব্যবহার করতে পারেন। দেড়-দুই ঘণ্টা গাড়ি চালানোর পর ৫ মিনিট বিরতি দিন। এই ৫ মিনিটে একটু ফ্রি-হ্যান্ড ব্যায়াম করে নিন। এমনকি যাঁরা দীর্ঘসময় গাড়িতে যাত্রী হিসেবে বসে থাকেন, তাঁদেরও এই নিয়মগুলো মেনে চলা প্রয়োজন।

6
আমি দুধজাতীয় কিছু খাই না—এটা খেলে পেটে সমস্যা হয়’, ‘মাছটাছ খাই না, গন্ধ লাগে, বমি বমি লাগে’—অনেকেই নানান খাবার নিয়ে এমন অভিযোগ করেন। খাওয়া নিয়ে এমন বাছবিচার করতে দেখা যায় শিশুসহ বড়দেরও।

|দেখা যায়, একটি শিশু ছোটবেলা থেকে পূর্বধারণাপ্রসূত বিশ্বাস থেকে কোনো মাছ না খেয়েই বড় হচ্ছে। এতে সে বিচিত্র সব খাবারের স্বাদ তো পেলই না, পুষ্টিগুণ থেকেও বঞ্চিত হলো। কোনো শিশু হয়তো প্রতি বেলায় মুরগি খেতে চায় বলে অন্যান্য খাবার আর গ্রহণই করে না। এভাবে নির্দিষ্ট খাবার গ্রহণের প্রবণতা অনেক শিশুরই থাকে। সব সময় যে এটা কোনো মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য হয়, তা নয়, বেশির ভাগ সময় শিশু তার অপছন্দের খাদ্যটি সম্পর্কে নেতিবাচক কথা শোনে, নেতিবাচক আচরণ দেখে এবং বাবা-মায়েরা নিজেদের অজান্তেই শিশুটির মনে বিশেষ খাদ্যটি সম্পর্কে বিতৃষ্ণা তৈরি করে। এতে শিশুটি অভ্যস্ত হয়ে যায়। তার বিশ্বাস দৃঢ় হয়। এরপর হাজার সাধাসাধির পরও শিশু আর সেই খাবার খেতে চায় না। পরিণত বয়সেও তার স্বাদগ্রন্থি ওই বিশেষ খাদ্যের উপযোগী হয় না বলে নির্দিষ্ট খাবারগুলো আর খেতেই পারে না।

‘অ্যাভয়ড্যান্ট/রেসট্রিকটিভ ফুড ইনটেক ডিসঅর্ডার’ নামের একটি বিশেষ খাদ্যাভ্যাসজনিত মানসিক সমস্যার কারণে বিশেষ রং, আকৃতি বা গন্ধের খাদ্যের প্রতি বিতৃষ্ণা থাকে। এ সমস্যায় আক্রান্ত শিশু বা ব্যক্তির ওজন কমতে থাকে, শরীরের বৃদ্ধি ঠিকমতো হয় না, পুষ্টিহীনতা হয়, পছন্দের খাবারের প্রতি একধরনের নির্ভরশীলতা তৈরি হয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে তার মনোসামাজিক আচরণগুলোরও পরিবর্তন হতে থাকে। এই সমস্যা ছাড়াও ‘অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার (ওসিডি)’ বা ‘অটিজম’ আছে, এমন শিশু বা ব্যক্তিদের মধ্যেও খাবার নিয়ে খুঁতখুঁতে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

এমন সমস্যা থেকে পরিত্রাণের জন্য শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশের পর্যায়েই মা–বাবাকে দায়িত্ব নিয়ে নানা ধরনের, নানা স্বাদের ও নানা রঙের সুষম খাবার খাওয়ানোর প্রচেষ্টা শুরু করতে হবে। কোনো খাবার নিয়ে মা–বাবা কখনোই বিরূপ মন্তব্য করবেন না। শিশু এটা খায় না ওটা খায় না—এ অজুহাতে তাকে একই ধরনের খাদ্য সব সময় পরিবেশন করবেন না। বৈচিত্র্যময় খাবার পরিবেশন করুন নানাভাবে, নানান কায়দায়, এতে আগ্রহ তৈরি হবে। শিশু দু–এক বেলা যদি খাবার না–ও খায়, তাতে বিচলিত না হয়ে তার দীর্ঘমেয়াদি উৎকর্ষের জন্য খাবারে বৈচিত্র্য আনুন। যেকোনো পরিবেশে, যেকোনো এলাকায়, যেকোনো ধরনের খাবারে শিশুকে অভ্যস্ত করতে চেষ্টা করুন। এরপরও কারও মধ্যে যদি এই খাবার বাছাবাছির সমস্যা প্রকটভাবে দেখা দেয়, তবে প্রথমে দেখতে হবে ওসিডি কিংবা অন্য কোনো সমস্যা রয়েছে কি না। থাকলে মনোরোগ চিকিৎসকের সাহায্য নিয়ে উপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।

ডা. হেলাল উদ্দিন আহমেদ

সহযোগী অধ্যাপক, শিশু–কিশোর ও পারিবারিক মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা

7
 
সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট দীর্ঘ সময় ব্যবহারে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। কখনো শারীরিক বা কখনো মানসিক সমস্যা তৈরি হয় এ থেকে। কিন্তু ফেসবুক বা কোনো সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট কতক্ষণ ব্যবহার করা যুক্তিসংগত?

এত দিন নির্দিষ্ট করে কোনো সময়সীমার কথা বলেননি বিশেষজ্ঞরা। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণার ফল বলছে, দৈনিক আধা ঘণ্টার মতো সময় সামাজিক যোগাযোগের সাইট ব্যবহারের জন্য সীমাবদ্ধ করে রাখা ভালো। এতে একাকিত্ব ও বিষণ্নতা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। গত সপ্তাহে জার্নাল অব সোশ্যাল অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে গবেষণাসংক্রান্ত নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট সিনেট।

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪৩ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে ওই গবেষণা করা হয়। তাঁদের দুটি দলে ভাগ করা হয়। একটি দল সামাজিক যোগাযোগের তিন ওয়েবসাইট ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও স্ন্যাপচ্যাটে প্রতিদিন ১০ মিনিট করে কাটায়। তিন সপ্তাহের ওই পরীক্ষায় আরেকটি দল ইচ্ছামতো সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ব্যবহার করে।

গবেষণায় দেখা যায়, যাঁরা সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট কম সময় ধরে ব্যবহার করেন, তাঁরা কম একাকিত্বে ভোগেন। তাঁদের বিষণ্নতা বোধ কম হয়। এ ছাড়া কোনো কিছু নজর এড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বা উদ্বেগ কমে। এ ধরনের স্বনজরদারির বিষয় থেকে সুবিধা আসতে পারে বলে গবেষণায় দেখা গেছে।

পিউ রিসার্চের গবেষণা তথ্য অনুযায়ী, সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট এখন মানুষের জীবনের অংশ হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ৬৮ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন। এর মধ্যে এক–তৃতীয়াংশ মানুষ প্রতিদিন ফেসবুকে ঢোকেন। যুক্তরাষ্ট্রে ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণ ও যুবকের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ব্যবহারের হার বেশি। তাঁদের মধ্যে ৭৮ শতাংশ স্ন্যাপচ্যাট, ৭১ শতাংশ ইনস্টাগ্রাম ও ৪৫ শতাংশ টুইটার ব্যবহার করেন।

গত মে মাসে ক্লেইনার পারকিনস যে তথ্য জানিয়েছিল, তা চমকে ওঠার মতো। তাদের তথ্য অনুযায়ী, মানুষ এখন ডিজিটাল মিডিয়াতে সময় কাটাচ্ছেন বেশি। গত বছর প্রাপ্তবয়স্করা দিনে গড়ে ৫ দশমিক ৯ ঘণ্টা ফোন, ডেস্কটপ ও ল্যাপটপ ব্যবহার করেন, ২০০৮ সালে যা ২ দশমিক ৭ ঘণ্টা মাত্র। প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ডিলোইটির তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ এখন আগের চেয়ে বেশি মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। এখন দিনে গড়ে ৫২ বার ফোন চেক করছেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকেরা, যা গত বছর ছিল ৪৭ বার।

প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে এর প্রভাব নিয়ে এখন উদ্বেগ বাড়ছে। প্রযুক্তিতে আসক্তির বিষয়টি সেন্টার ফর হিউম্যান টেকনোলজির মতো প্রতিষ্ঠানের নজরে এসেছে। এ বছরের শুরুতে শিশুদের ওপর প্রযুক্তির প্রভাব সম্পর্কে ট্রুথ অ্যাবাউট টেক নামে একটি প্রচার কর্মসূচি শুরু করে সংস্থাটি। এর আগে শিশুদের নিয়ে কাজ করা অলাভজন সংস্থা ক্যাম্পেইন ফর আ কমার্শিয়াল-ফ্রি চাইল্ডহুডের পক্ষ থেকে ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গকে চিঠি দেওয়া হয়। তাতে মেসেঞ্জার ফর কিডস বন্ধ করার আহ্বান জানানো হয়। তাদের দাবি, শিশুরা সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ব্যবহারে প্রস্তুত নয়।

কয়েকটি গবেষণায় ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামে আসক্তির কারণে বিষণ্নতার উপসর্গের যোগসূত্র পাওয়া যায় বলে পেনসিলভানিয়ার গবেষকেরা দাবি করেন। তাঁরা বলেন, ফেসবুকে আসক্তিতে একাকিত্ব বাড়ে এবং কর্মস্পৃহা কমে। অতিরিক্ত ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারে নিজের শরীর সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়।

8
গরমে দিনভর রোজা রাখার পর ক্লান্তি কাটাতে ইফতারে চাই এমন কিছু, যা ঝটপট শরীর ঠান্ডা করতে পারে। রোজার পর তৃষ্ণা মেটাতে শরবত খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা। বেলের শরবত দারুণ কাজে আসতে পারে। বাজারে এখন বেল পাবেন। বেল ‘উড অ্যাপল’ নামেও পরিচিত।

পুষ্টিবিদেরা বলেন, শরীরের পানিস্বল্পতা দূর করতে বেলের শরবতের তুলনা হয় না। আবার পুষ্টিগুণের দিক থেকেও এটি অনন্য। এক গ্লাস ঠান্ডা শরবত সারা দিনের ক্লান্তি মুছে শরীরকে চাঙা করে তুলতে ভূমিকা রাখে। একই সঙ্গে অবসাদ ঘুচিয়ে দিতেও কিন্তু বেশ কার্যকর।

বেল আমাদের দেশের দারুণ জনপ্রিয় একটি ফল। বাংলাদেশ ছাড়াও এশিয়ার কয়েকটি দেশে বেল পাওয়া যায়। বেশি বেল পাওয়া যায় শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, নেপাল, মিয়ানমার, ভিয়েতনাম, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া ও লাওসে। আয়ুর্বেদশাস্ত্রেও বেলের নানা গুণের কথা বলা হয়।

বেলের শক্ত খোলসের ভেতর থাকা নরম মজ্জা বা শাঁস সরাসরি খাওয়া যায় বা তা দিয়ে শরবত তৈরি করা যায়। বেলের শরবত খুব পুষ্টিকর। এটি নানা রোগের বিরুদ্ধে লড়ার পাশাপাশি ত্বক ভালো রাখে এবং চুল পড়া ঠেকায়। বেল পেটের নানা রোগ সারাতে জাদুর মতো কাজ করে, কাঁচা বেল ডায়রিয়া ও আমাশায় রোগের ওষুধ হিসেবও বিবেচিত। বেলে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও পটাশিয়াম।

বেলের গুণাগুণ
* যাঁদের হজমে সমস্যা আছে, বেল তাঁদের জন্য বেশ উপকারী।
* কাঁচা বেল ডায়রিয়ার রোগীদের জন্য ভালো। এ জন্য ফালি ফালি করে কেটে রোদে শুকিয়ে গুঁড়া করে নিতে হবে। উষ্ণ গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে রোগীকে অল্প অল্প করে খাওয়াতে হবে।
* জন্ডিস, যক্ষ্মা, উচ্চ রক্তচাপের জন্যও বেল খুব উপকারী।

9
ওজন কমাতে বা শরীরকে বিষমুক্ত করতে অনেকেই নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেন। এর মধ্যে ‘ডেটক্স’ পদ্ধতি বেশ জনপ্রিয়। কোনো রকম ওষুধ না খেয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে শরীরকে বিষমুক্ত করা যায় এ পদ্ধতিতে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ফিট থাকতে বা স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চান সবাই। এ জন্য সবার ডায়েট বা খাদ্যাভ্যাসে বিশেষ নজর দেওয়া জরুরি। প্রতিদিন যেমন স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে, তেমনি শরীরকে বিষমুক্ত রাখার চেষ্টা করতে হবে। এতে নানা রকম রোগবালাই থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব। শরীরকে বিষমুক্ত রাখতে নিয়মিত প্রচুর পানি পান করতে হবে। জি নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। শরীরকে বিষমুক্ত করার সুফলগুলো জেনে নিন:

শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধব্যবস্থা
শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদান দূর হলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়। শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পরিষ্কার থাকায় সেগুলো ঠিকমতো কাজ করতে পারে।

ওজন কমায়
শরীর বিষমুক্ত হলে দ্রুত ওজন কমে। অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া বাদ দিয়ে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলাকে বিষমুক্ত খাবার পদ্ধতি বলা যেতে পারে।

ত্বকের জন্য ভালো
শরীর বিষমুক্ত মানে ত্বকের চেহারা বদলে যাওয়া। ত্বক আরও বেশি সতেজ হয়ে উঠবে। শরীরের ব্রণ বা খোসপাঁচড়া দূর হবে।

চুল
শরীর থেকে বিষ দূর হলে চুলের জন্য বিশেষ উপকার পাওয়া যায়। যাদের চুল ঝরে, তাদের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের দিকে নজর দিতে হবে। বিষমুক্ত খাবার খেতে হবে।

শক্তি বাড়ে
শরীরকে বিষমুক্ত করা মানেই হচ্ছে আরও বেশি শক্তিশালী ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠা। এ উপকারগুলো পেতে ডেটক্স পানীয় জরুরি।

এবার কয়েকটি ডেটক্স ড্রিংক বা বিষমুক্ত করার উপায় সম্পর্কে জেনে নিন:

মধু-লেবুর মিশ্রণ: মধু, লেবু ও আদা একসঙ্গে করে জুস তৈরি করতে পারেন, যা ডেটক্স বা শরীরকে বিষমুক্ত করতে পারে। এটি ওজন কমাতেও সাহায্য করে।

কমলার জুস: যাঁরা শরীর ঝরঝরে করতে চান, তাঁরা কমলালেবুর রসের মধ্যে সাধারণ লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন। এটি শরীরের জন্য দারুণ উপকারী। বিশেষ করে যকৃতের জন্য এ জুস কাজে দেবে। এমনকি ওজন কমাতে সাহায্য করবে।

লেবুযুক্ত গ্রিন টি: গ্রিন টির গুণাগুণ সবার জানা। গ্রিন টি আমাদের শরীরকে সতেজ ও উৎফুল্ল রাখতে সাহায্য করে। এটি হৃদ্‌রোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকিও কমায়। নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে শরীরের মেদ কোষে বেশি শর্করা ঢুকতে পারে না। ফলে এই চা আমাদের শরীরের ওজন ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

ফল ও সবজির জুস: সুস্থ থাকতে, ওজন কমাতে অনেকেই ফল ও সবজির রস খান। এতে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার ও প্রোটিন থাকে। জুস পুষ্টিগুণের কারণে ত্বকে ঔজ্জ্বল্য আনতে সাহায্য করে। এ ছাড়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ও হজমে সহায়ক হয় ফল ও সবজিমিশ্রিত জুস।

10
মজাদার কোনো ফ্রাই খাচ্ছেন? সঙ্গে এক চামচ টমেটো সস বা টাটকা টমেটোর খানিকটা সালাদ? তোফা! স্বাদটা তখন বেড়ে যায় বহুগুণ। একই সঙ্গে শরীরে কিছু ভিটামিন আর পুষ্টিও যোগ হয়। সবজি বা ঝালঝোলেও মুখরোচক সবজি টমেটোর কদর কম নয়। কিন্তু টমেটো খেতে হবে পরিমাণমতো। এর অন্যথা হলেই শরীর-স্বাস্থ্য একটু গড়বড় হয়ে যাবে। বিশেষজ্ঞরা তা-ই বলছেন।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর টমেটোর আছে নানা গুণ। টমেটো হচ্ছে একমাত্র সবজি, যাতে চার রকমের ক্যারোটিনয়েড বা ভিটামিন ‘এ’ আছে বিপুল পরিমাণে। এই ক্যারোটিনয়েড বা ভিটামিন ‘এ’ ত্বক ও চোখের সুস্থতা এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এটিকে ফল হিসেবেও বিবেচনা করা যায়। বিশ্বজুড়ে টমেটোর নানা রকম ব্যবহার রয়েছে। এটি ত্বকের যত্নেও ব্যবহার হতে দেখা যায়। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে এটি মানুষকে রক্ষা করে বলে ধারণা করা হয়। খাবারে স্বাদ আনতেও অনেকে টমেটো ব্যবহার করেন। কিন্তু জানেন কি, টমেটোর কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে, যা এড়িয়ে যাওয়া ঠিক নয়।

অতিরিক্ত টমেটো খেলে হজমে গন্ডগোল থেকে শুরু করে কিডনির সমস্যা, চুলকানির মতো শরীরে নানা সমস্যা হতে পারে। বেশি টমেটো খাওয়ার কয়েকটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জেনে নিন:

অম্লের প্রবাহ: টমেটোতে ম্যালিক অ্যাসিড ও সাইট্রিক অ্যাসিড আছে, যা পাকস্থলীতে অতিরিক্ত অ্যাসিড বা অম্লের প্রবাহ তৈরি করতে পারে। তাই বেশি টমেটো খেলে বুক জ্বালা করতে পারে। এমনকি পেটে গ্যাস্ট্রিক অ্যাসিড বেশি হয়ে হজমে গন্ডগোল হয়। যাঁরা প্রায়ই পেটের সমস্যায় ভোগেন বা যাঁদের গ্যাস্ট্রোওফাজাল রিপ্লেক্স রোগ (জিইআরডি) আছে, তাঁদের অতিরিক্ত টমেটো খাওয়া থেকে দূরে থাকা উচিত।

অ্যালার্জি: টমেটোতে হিস্টামিন নামের একধরনের যৌগ আছে, যা থেকে ত্বকে ছোপ ছোপ দাগ বা র‍্যাশ দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া নানা রকম অ্যালার্জি হতে পারে। যাঁদের টমেটো খেলে অ্যালার্জি হয়, তাঁরা টমেটোর ধারেকাছেও যাবেন না। কারণ, টমেটো মুখে দিলেই মুখের ভেতর চুলকানি, জিব ও গাল ফুলে যাওয়া, সর্দি ও গলা চুলকানোর মতো মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

কিডনিতে পাথর: শুনতে আশ্চর্য লাগলেও অতিরিক্ত টমেটো খেলে কিডনিতে পাথর দেখা দিতে পারে। কারণ, টমেটোতে আছে ক্যালসিয়াম ও অক্সালেট। শরীরে এর মাত্রা বেড়ে গেলে তা শরীর থেকে সহজে দূর হয় না। এ উপাদান শরীরে জমে কিডনির পাথর তৈরি করতে শুরু করে।

গিঁটে বাত: অতিরিক্ত টমেটো খেলে গিঁটে বাত দেখা দিতে পারে। এমনকি অস্থিসন্ধিগুলো ফুলে উঠতে পারে। কারণ, এতে সোলানিন নামে বিশেষ অ্যালকালয়েড থাকে। এ যৌগ বিভিন্ন কোষে ক্যালসিয়াম তৈরির জন্য দায়ী। এ যৌগের পরিমাণ বেড়ে গেলে তা প্রদাহ তৈরি শুরু করে।

লাইকোপিনোডার্মিয়া: টমেটোতে লাইকোপেন আছে, এটা সবার জানা। টমেটোর লাইকোপেন প্রোস্টেট ও অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসার রোধে সাহায্য করে। এটি অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের ঝুঁকি প্রায় ৩১ শতাংশ কমাতে পারে। তবে অতিরিক্ত লাইকোপেন থেকে লাইকোপিনোডার্মিয়া নামের একধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। রক্তে লাইকোপেন বেড়ে গেলে ত্বকের রং বদলাতে শুরু করে। চিকিৎসকেরা বলেন, শরীরের জন্য লাইকোপেন ভালো হলেও দৈনিক ৭৫ মিলিগ্রামের বেশি গ্রহণ করা হলে তা লাইকোপিনোডার্মিয়ার দিকে চলে যেতে পারে।

ডায়রিয়া: টমেটোতে সালমোনেলা নামের একধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। এটি ডায়রিয়ার জন্য দায়ী। তবে যাঁরা টমেটো সহ্য করতে পারেন না, তাঁদের ক্ষেত্রে ছাড়া টমেটো খেলে ডায়রিয়া কম দেখা যায়।

পরামর্শ: স্বাস্থ্যগুণে ভরপুর হলেও টমেটো পরিমিত খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি।

11
গরমে কাঁচা আমের এক গ্লাস শরবত সারা শরীরে এনে দিতে পারে প্রশান্তি। বাজারে এখন কাঁচা আম পাবেন। পুষ্টিবিদেরা বলেন, কাঁচা আমের জুস শরীরের জন্য ভালো। কাঁচা আম বা আমের রসে পটাশিয়াম থাকায় প্রচণ্ড গরমে তা শরীর ঠান্ডা রাখতে সহায়তা করে। কাঁচা আমের জুসের কয়েকটি গুণের কথা জেনে নিন:

শরীরে লবণের ঘাটতি দূর করে
গরমে অতিরিক্ত ঘামে শরীর থেকে সোডিয়াম ক্লোরাইড ও লৌহ বের হয়ে যায়। কাঁচা আমের জুস শরীরের এই ঘাটতি দূর করে। যাঁরা ওজন কমাতে বা শরীরের বাড়তি ক্যালরি খরচ করতে চান, তাঁদের জন্য এখন আদর্শ ফল কাঁচা আম।

পেট ভালো রাখে
গরমে পেটের গোলমাল? এক গ্লাস আমের জুস দারুণ কাজে লাগতে পারে। খাদ্য হজমে সহায়তা করে কাঁচা আম। অন্ত্রকে পরিষ্কার করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয় কাঁচা আম।

শরীর ঠান্ডা থাকে
কাঁচা আমে পটাশিয়াম থাকার কারণে তা শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে৷ এ কারণে শরীরে ঘাম কম হয়। গরমে ক্লান্তিও দূর হয়৷ দুপুরে খাওয়ার পর এই গরমে কিছুটা ঝিমুনি ভাব দেখা দিতে পারে। কাঁচা আমে আছে প্রচুর শক্তি। দুপুরের খাওয়ার পরে কয়েক টুকরা কাঁচা আম খেলে ঝিমুনি দূর হয়।

হৃদ্‌যন্ত্রের জন্য ভালো
কাঁচা আমকে হৃদ্‌যন্ত্রবান্ধব বলা যেতে পারে। এতে আছে নিয়াসিন নামের বিশেষ উপাদান। এটি হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমায় এবং বাজে কোলস্টেরল স্তরকে কমাতে সাহায্য করে। যকৃতের রোগ নিরাময়ের প্রাকৃতিক বন্ধু হতে পারে কাঁচা আম।

স্কার্ভি ও মাড়ির রক্ত পড়া রোধ করে
কাঁচা আম শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ‘সি’ জোগাতে পারে। স্কার্ভি ও মাড়ির রক্ত পড়া কমায় কাঁচা আম। আমচুর স্কার্ভি নিরাময়ে অত্যন্ত কার্যকর। নিশ্বাসের দুর্গন্ধ ও দাঁতের ক্ষয় রোধেও সহায়তা করে কাঁচা আম। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি।

12
মাটির নমুনা থেকে ম্যালাসিডিনস নামের প্রাকৃতিক যৌগের সন্ধান পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা, যা নতুন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করবে।

নিউইয়র্কের রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এই যৌগের সন্ধান পেয়েছেন। তাঁদের আশা, প্রাকৃতিক এই যৌগ ভবিষ্যতে কঠিন সংক্রমণের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যাবে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

পরীক্ষায় দেখা গেছে, এই যৌগ বিদ্যমান অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সুপারবাগ (ওষুধ প্রতিরোধী জীবাণু) এমআরএসএ-সহ (মেটিসিলিন-রেজিস্ট্যান্স স্টেফাইলোকক্কাস অরিয়াস) অন্যান্য বেশ কয়েকটি ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগের বিরুদ্ধে কাজ করে।

নতুন এই গবেষণা প্রতিবেদনটি সাময়িকী নেচার মাইক্রোবায়োলজিতে প্রকাশিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নতুন এই গবেষণা অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নতুন আশা জাগাল।

বিশ্বব্যাপী চিকিৎসায় সবচেয়ে বড় হুমকি হলো ওষুধ-প্রতিরোধী জীবাণু (সুপারবাগ) বাহিত রোগ। এই রোগে প্রতিবছর প্রায় সাত লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বর্তমান বিশ্বে এই সুপারবাগের বিরুদ্ধে নতুন চিকিৎসাপদ্ধতির আবিষ্কার জরুরি।

মাটিতে লাখ লাখ অণুজীব রয়েছে। তাই মাটিতে নতুন অ্যান্টিবায়োটিকসহ চিকিৎসায় ব্যবহারযোগ্য বিপুল পরিমাণ যৌগ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। আর নিউইয়র্কের রকফেলার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন ব্র্যাডির নেতৃত্বাধীন দল সেটাই খুঁজে পেতে ব্যস্ত থেকেছে। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে সংগৃহীত এক হাজারের বেশি মাটির নমুনা বিশ্লেষণে দলটি জিন সিক্যুয়েন্সিং পদ্ধতি ব্যবহার করে।

দলটি যখন অনেকগুলো নমুনাতে ম্যালাসিডিনস খুঁজে পায়, তখন তাদের কাছে মনে হয় এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি আবিষ্কার। তারা ইঁদুরের মধ্যে ওষুধ প্রতিরোধী সুপারবাগ এমআরএসএর সংক্রমণ ঘটায় এবং পরে ওই ইঁদুরের ওপর ম্যালাসিডিনস যৌগের পরীক্ষা চালায়। তারা দেখতে পায়, ইঁদুরটি ওই সুপারবাগের সংক্রমণ থেকে মুক্ত হয়েছে।

মানুষের চিকিৎসায় ব্যবহার করার আশায় গবেষকেরা এখন এই ওষুধের কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য কাজ করছেন। গবেষক ব্র্যাডি বলেন, ‘মানুষের চিকিৎসায় ম্যালাসিডিনসের মতো অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার কবে নাগদা শুরু হতে পারে, তা বলা এখনই সম্ভব নয়। এটা নিতান্তই প্রাথমিক অবস্থায় রয়েছে। প্রাথমিক এই আবিষ্কারের পর আমাদের আরও দুর্গম পথ পাড়ি দিতে হবে।’

13

স্মৃতিসৌধ
যাঁদের নকশায় স্মৃতিসৌধ


জাতীয় স্মৃতিসৌধজাতীয় স্মৃতিসৌধ
জাতীয় স্মৃতিসৌধ
সাভার, বাংলাদেশ
মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের স্মরণে ঢাকার সাভারে ৮৪ একর জায়গাজুড়ে স্থাপন করা হয় জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এই স্মৃতিসৌধ একদিকে যেমন মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন, একই সঙ্গে স্বাধীনতাযুদ্
বাংলাদেশের মানুষের বীরত্বগাথা তুলে ধরে। ১৫০ ফুট উচ্চতার এই অনন্য স্থাপত্যকর্মটিতে সাতটি খাঁজ রয়েছে। সেগুলো নিচ থেকে ক্রমে ওপরের দিকে উঠে গেছে। এই সাতটি খাঁজ ১৯৫২ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত আমাদের জাতীয় ইতিহাসের সাতটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ঘটনা নির্দেশ করে।
১৯৭২ সালের বিজয় দিবসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৭৮ সালে স্মৃতিসৌধের জন্য নকশা আহ্বান করা হয়। তরুণ স্থপতি সৈয়দ মাইনুল হোসেনের নকশায় ১৯৭৯ সালে এর নির্মাণকাজ শুরু হয়। তিন বছর পরে ১৯৮২ সালে এর নির্মাণকাজ শেষ হয় এবং ওই বছর ১৬ ডিসেম্বর এটি উদ্বোধন করা হয়।
সৈয়দ মাইনুল হোসেনের জন্ম ১৯৫১ সালে ঢাকায়। জাতীয় স্মৃতিসৌধের পরে ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর, ১৯৮৫ সালে উত্তরা মডেল টাউনসহ ৩৮টি বড় নকশা করেন। কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮৮ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন। তিনি ২০১৪ সালের ১০ নভেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

হিরোশিমা পিস মেমোরিয়াল
হিরোশিমা, জাপান
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট জাপানের হিরোশিমায় প্রথমবারের মতো অ্যাটম বোমা ফেলা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে ৭০ হাজার মানুষ মারা যান, আরও ৭০ হাজার মানুষ তেজস্ক্রিয়তায় গুরুতর আক্রান্ত হন।

তাঁদের স্মরণে এলাকাটি হিরোশিমা পিস মেমোরিয়াল পার্ক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এই উদ্যানের পরিকল্পনা ও নকশা করেন জাপানি স্থপতি কেনজো তাংগে।
স্থপতি কেনজো তাংগেস্থপতি কেনজো তাংগে
মূলত ধ্বংসাবশেষ থেকেই পার্কের নকশা করেন তিনি। এর মধ্যে ‘আ-বম্ব ডোম’ নামে পরিচিত হিরোশিমা পিচ মেমোরিয়াল ১৯৯৬ সালে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করে ইউনেসকো।
চেক স্থপতি জ্যান লেটজেলের নকশায় ১৯১৫ সালে তৈরি হয় এক গম্বুজের ভবন হিরোশিমা পারফেকচুরাল কমার্শিয়াল এক্সিবিশন। পারমাণবিক বোমার আঘাতে এই ভবনের ধ্বংসাবশেষ পরিচিতি পায় হিরোশিমা পিস মেমোরিয়াল নামে।
ইন্ডিয়া গেট
নয়াদিল্লি, ভারত
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ভারতের অংশগ্রহণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও তা অনেক ক্ষেত্রেই স্মরণ করা হয় না। এর প্রধান কারণ সে সময় ভারতে ছিল ব্রিটিশ শাসনামল। ১৯১৪ থেকে ১৯২১ সালের মধ্যে দশ লাখের বেশি ভারতীয় সৈনিক, অন্যভাবে বললে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মির সদস্য আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশে মোতায়েন করা হয়।
ইন্ডিয়া গেটইন্ডিয়া গেট
এই সময়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও তৃতীয় অ্যাংলো-আফগান যুদ্ধে ৮২ হাজার ভারতীয় সৈনিক প্রাণ দেন। তাঁদের স্মরণে নয়াদিল্লিতে ১৯২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারিতে অল ইন্ডিয়া ওয়ার মেমোরিয়াল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এক দশক পর ১৯৩১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করা হয় এই সৌধ। পরবর্তী সময়ে এটিই ইন্ডিয়া গেট নামে পরিচিতি পায়। ইন্ডিয়া গেটের নকশা করেন বিখ্যাত ব্রিটিশ স্থপতি স্যার এডউইন লুটিনস। তিনি দিল্লি শহরের পরিকল্পনাবিদ হিসেবেও কাজ করেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুদ্ধের স্মৃতিসৌধ নকশার জন্যও বিখ্যাত। শুধু ইউরোপেই ৬৬টি স্মৃতিসৌধের নকশা করেন তিনি। ১৯৪৪ সালের ১ জানুয়ারি যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ৭৪ বছর বয়সে মারা যান এডউইন লুটিনস।
 সূত্র: উইকিপিডিয়া


14


যারা চা একেবারেই পছন্দ করেন না, তারাও দিনে অন্তত এক-দুইবার চায়ের কাপে চুমুক দেন। কিন্তু যারা রীতিমতো চা-প্রেমী তাদের দিনে কত কাপ চা খাওয়া উচিত? কিংবা তাদের কত কাপ চায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত? সামাজিকভাবেই হোক বা চায়ের রাসায়নিক বিক্রিয়ার দিক থেকেই হোক, এ প্রশ্নের জবাব নেই।

এর উত্তর বের করতে বিস্তারিত গবেষণা হয়নি। তবে ছোট পরিসরের কয়েকটি গবেষণায় বলা হয়েছে, ৪-৬ কাপের মধ্যে নিয়মটা বেঁধে ফেলা দরকার।

তবে কত কাপ খাবেন তার অনেকটাই নির্ভর করে যার যার দৈহিক বৈশিষ্ট্যের ওপর। চায়ে বেশ কয়েক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ থাকে। এ ছাড়া আপনার দেহ কি পরিমাণ ফ্লুরাইড এবং ক্যাফেইন গ্রহণ করতে সক্ষম তার ওপরও নির্ভর করে বিষয়টি।

যদি আপনার দেহ ফ্লুরাইড গ্রহণ করতে সক্ষশ থাকে, তবে খোলা চা অনেক খেতে পারবেন। কিন্তু টিব্যাগ বা ইনস্ট্যান্ট মিক্স চায়ের ক্ষেত্রে সাবধান থাকতে হবে।

২০১৩ সালে কয়েকটি গবেষণা বিশ্লেষণ করে বলা হয়, গ্রিন টি কয়েক ধরনের হৃদরোগ নিরাময়ে কাজ করে। এ ছাড়া হার্ট ফেইলুওর বা উচ্চরক্তচাপ সামলাতেও কাজ করে গ্রিন টি। আলঝেইমার্স ডিজিস সংশ্লিষ্ট প্লাক সৃষ্টিতেই বাধা দেয় এই চা।

হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের এক গবেষণায় বলা হয়, হৃদরোগ, ক্যান্সার এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য বিষয়ক সমস্যায় বিশেষ করে গ্রিন টি উপকারী ভূমিকা পালন করে।

অন্য আরক গবেষণায় বলা হয়, দিনে অন্তত ৩ কাপ চা খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে আসে ৪.৬ শতাংশ।

ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলস এবং ইউনিভার্সিটি অব ম্যারিল্যান্ড মেডিক্যাল সেন্টারের ক্যান্সার এপিডেমিওলজি গবেষক ড. জুও ফেং ঝ্যাং প্রতিদিন ২-৩ কাপ চা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।

গ্রিন টি খাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কিছু উপকারিতা মিলবে। এখানে জেনে নিন কিছু উপকারিতার কথা।

১. ইঁদুরকে গ্রিন টি খাইয়ে দেখা গিয়েছে, তাদের ওজন কমছে এবং দেহে চর্বি কম জমছে।

২. লিভারে চর্বি জমলে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়। কিন্তু স্থূলতার জিন রয়েছে এমন ইঁদুরকে গ্রিন টি এর নির্যাস খাইয়ে দেখা গেছে, তাদের লিভারে চর্বি জমার হার কমে এসেছে।

৩. কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কমে আসে গ্রিন টি পান করলে। যারা স্থূলকায় তাদের দেহে এসব প্রচুর পরিমাণে থাকে।

15
অনেকেই গাজর খেতে একেবারেই পছন্দ করেন না। কিন্তু গাজরের রয়েছে নানা ধরণের পুষ্টিগুণ। আমাদের দেহের সুস্থতায় গাজর অনেক বেশি কার্যকরী। তাই প্রতিদিন গাজর খাওয়া উচতি সকলের। আর যদি গাজর একেবারেই খেতে না পারেন তবে খাদ্যতালিকায় রাখতে পারেন ১ গ্লাস গাজরের জুস। এতে করে স্বাদ ও স্বাস্থ্য দুটোর প্রতিই বেশ ভালো নজর রাখা হবে। আজকে চলুন জেনে নেয়া যাক প্রতিদিন মাত্র ১ গ্লাস গাজরের জুস পান করলে আপনি কতোটা উপকার পেতে পারেন।

ওজন কমায় গাজরের জুস
গাজরের জুসে অন্যান্য সকল জুসের তুলনায় ক্যালরি কম থাকে। তাই সকালে নাস্তায় কিংবা বিকেলে এক গ্লাস গাজরের জুস পান করেই দেখুন না। ওজন কতো দ্রুত কমে আসে।

লিভারের কর্মক্ষমতা বাড়ায়
গাজরের জুস দেহের ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে দিতে সক্ষম। প্রতিদিন মাত্র ১ গ্লাস গাজরের জুস পান করলে লিভারের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে
গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই। সেই হিসেবে প্রতিদিন নিয়ম করে ১ গ্লাস গাজরের জুস দেহে ভিটামিন ই এর চাহিদা পূরণ করে এবং দেহে ক্যান্সারের কোষ গঠনে বাঁধা প্রদান করে।

দেহের বয়স বৃদ্ধিজনিত ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়
বয়স বেড়ে গেলে দেহের নানা অঙ্গে এবং বিশেষ করে হাড়ের জয়েন্টে ব্যথা শুধু হয়। এই ধরণের ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে পারে গাজরের জুস। তাই প্রতিদিন ১ গ্লাস গাজরের জুস অবশ্যই পান করবেন।

দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে
গাজরের জুসে বিদ্যমান ভিটামিন এ আমাদের চোখের সুরক্ষায় কাজ করে থাকে ও দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। এবং দেহে ভিটামিন এ জনিত নানা সমস্যার সমাধান করে।

দেহের খারাপ কলেস্টোরল কমায়
গাজরের জুসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। প্রতিদিন মাত্র ১ গ্লাস গাজরের জুস আমাদের দেহের খারাপ কলেস্টোরলের মাত্রা কমায় এবং নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

হজমশক্তি বাড়ায়
গাজর আমাদের দেহের টক্সিন দূর করতে বিশেষভাবে কার্যকরী একটি খাদ্য। সেই সাথে এটি আমাদের পরিপাক ক্রিয়া উন্নত করতেও সহায়তা করে। প্রতিদিন সকালে ১ গ্লাস গাজরের জুস আমাদের হজমশক্তি বাড়াতে সহায়তা করে।

ত্বকের নানা সমস্যা সমাধান করে
গাজর আমাদের ত্বকের নানা ধরণের সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। প্রতিদিন ১ গ্লাস গাজরের জুস আমাদের ত্বককে বয়সের ছাপ থেকে মুক্ত রাখে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে এবং ব্রণের উপদ্রব কমায়।

ত্বকের কোষ ক্ষয় থেকে রক্ষা করে
গাজরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে বিটা ক্যারোটিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের কোষের ক্ষয় রোধ করে এবং ত্বককে রাখে সুস্থ। একারণেই প্রতিদিন গাজরের জুস পান করলে ত্বকে বয়সের ছাপ আসে ধীরে।

Pages: [1] 2 3