Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - fatemayeasmin

Pages: [1] 2
1
আপনার যোগাযোগ করা কন্টাক্ট লিস্ট আপলোড করে নিয়েছে ফেসবুক। তারা অবশ্য বলছে, এটা অনিচ্ছাকৃত। তবে একজন নিরাপত্তা বিশ্লেষক দাবি করেছেন, ২০১৬ সালের মে মাসের পর থেকে নতুন ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ই–মেইল কন্টাক্ট লিস্ট আপলোড করেছে ফেসবুক। এখন পর্যন্ত ১৫ লাখ ফেসবুক ব্যবহারকারীর কন্টাক্ট লিস্ট আপলোড করার কথা বলা হচ্ছে।

সম্প্রতি এক নিরাপত্তা গবেষক খেয়াল করেন, কিছু কিছু ফেসবুক ব্যবহারকারীর ক্ষেত্রে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ই–মেইলের পাসওয়ার্ড দিতে বলছে। নতুন অ্যাকাউন্ট খুলে তাদের পরিচিতি শনাক্ত করার সময় ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ই–মেইলের পাসওয়ার্ড জানতে চাইছে। বিষয়টির ব্যাপক নিন্দা করছেন গবেষকেরা।

ব্যবসা ও প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট বিজনেস ইনসাইডারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কেউ যদি নতুন অ্যাকাউন্ট খোলার সময় ই–মেইল পাসওয়ার্ড দেন, তবে একটি বার্তা দেখতে পান যাতে কনটাক্ট লিস্ট স্থানান্তর করার জন্য অনুমতি চায় ফেসবুক।

এখন ফেসবুক কর্তৃপক্ষ বলছে, অনিচ্ছাকৃতভাবেই ওই কনটাক্ট লিস্ট আপলোড করা হচ্ছিল। এখন তা মুছে ফেলা হচ্ছে।

২০১৬ সালের আগে ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট নিশ্চিত করার ও কনটাক্ট স্বেচ্ছায় একই সময় আপলোড করার সুযোগ ছিল। পরে ফেসবুক ওই ফিচার পরিবর্তন করে। ফেসবুক এখন বলছে, তারা যে কনটাক্ট আপলোড করেছে, তা মুছে ফেলা হয়েছে। তবে এর পেছনের ফাংশন তা বলে না।

ফেসবুকের মুখপাত্র দাবি করেছেন, ব্যবহারকারীর মেইলের কনটেন্ট ফেসবুক পড়ে না বা সেখানে ঢুকতে পারে না। তবে যেকোনোভাবে হোক ১৫ লাখ অ্যাকাউন্টের কনটাক্ট লিস্ট আপলোড হয়ে গেছে।
বেশ কিছুদিন ধরে সমালোচনার মুখে থাকা ফেসবুকের জন্য প্রাইভেসি নিয়ে এটি আরেকটি বড় ধাক্কা হতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

https://www.prothomalo.com/technology/article/1589411/কনটাক্ট-লিস্ট-নিয়ে-নিচ্ছে-ফেসবুক

2


প্রাণী মারা গেলে তার মস্তিষ্ক বা ব্রেন দ্রুত নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে বলেই ধারণা ছিল। গবেষকেরা এবার মারা যাওয়ার চার ঘণ্টা পর একটি প্রাণীর মস্তিষ্কের আংশিক সক্রিয় করতে পেরেছেন বলে দাবি করেছেন। গবেষকেরা মৃত শূকরের মস্তিষ্ক নিয়ে গবেষণা করেন। এ গবেষণার ফলাফল জীবন ও মৃত্যুর মধ্যে বাধা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্ট করতে পারে। অবশ্য এটি আলঝেইমারের মতো রোগের ক্ষেত্রে নতুন গবেষণার ক্ষেত্র তৈরি করতে পারে। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

গবেষকেরা তাঁদের গবেষণায় দেখিয়েছেন, মস্তিষ্কের কোষ মারা যাওয়ার বিষয়টি বন্ধ করা যেতে পারে এবং মস্তিষ্কের মধ্যে কিছু সংযোগ আগের অবস্থায় নেওয়া যায়। তবে ওই মস্তিষ্কের সচেতনতা বা চেতনার কোনো সংকেত পাওয়া যায়নি।

এ গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হচ্ছে তা মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল বন্ধ হলে কয়েক মিনিটের মধ্যে তা অপরিবর্তনীয় নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে প্রচলিত এ ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পেরেছে।
গবেষকেরা কসাইখানা থেকে ৩২টি শূকরের মস্তিষ্ক সংগ্রহ করেন। চার ঘণ্টা পরে তা ইয়েল ইউনিভার্সিটির গবেষকেদের তৈরি একটি সিস্টেমের সঙ্গে যুক্ত করেন। ওই সিস্টেমটি বিশেষভাবে তৈরি রক্তের অনুরূপ কৃত্রিম তরল নাড়ির গতির মতো ছন্দে মস্তিষ্কে পাম্প করতে থাকে। ওই তরলের মধ্য সিনথেটিক রক্তের মাধ্যমে মস্তিষ্কে অক্সিজেন ও ওষুধ পাঠানো হয়। এতে মস্তিষ্কের কোষ মারা যাওয়ার গতি কমে যায় এবং কোষগুলো জীবিত হতে শুরু করে। মস্তিষ্কে ছয় ঘণ্টা পর্যন্ত ওই বলকারক ককটেল তরল দেওয়া হয়।

গবেষকেরা দেখতে, মস্তিষ্কের মধ্যকার যোগাযোগব্যবস্থা সাইন্যাপস কাজ করতে শুরু করেছে।

গবেষণাসংক্রান্ত নিবন্ধ নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। তাতে গবেষকেরা বলেছেন, মস্তিষ্ককোষগুলোর মধ্যে সাইন্যাপস যোগাযোগে ক্ষেত্রে সাড়া দিচ্ছে। স্বাভাবিক মস্তিষ্কের মতোই একই পরিমাণ অক্সিজেন ব্যবহার করছে এবং ওষুধেও সাড়া দিচ্ছে।

শূকরগুলো হত্যার ১০ ঘণ্টা পরেও এ সাড়া পাওয়া যায়। তবে ইসিজি ব্রেন স্ক্যানে ‘ব্রেন-ওয়াইড ইলেকট্রিক অ্যাকটিভির’ কোনো সংকেত পাওয়া যায়নি, যা মস্তিষ্কের চেতনা নির্দেশ করে। অর্থাৎ মৌলিকভাবে এগুলো মৃত মস্তিষ্কের অনুরূপ।

ইয়েল ইউনিভার্সিটির নিউরোসায়েন্সের অধ্যাপক নেনাদ সেসটান বলেছেন, ‘আমরা আগে ভাবতাম মস্তিষ্কের কোষের মারা যাওয়ার ঘটনা দীর্ঘ সময় ধরে ঘটে থাকে। এখন আমরা দেখেছি, কোষ মারা যাওয়ার ঘটনা ধীরে ধীরে ও ধাপ অনুযায়ী ঘটে। এসব প্রক্রিয়ার কোনো কোনোটা আটকে দেওয়া যায়, তা সংরক্ষণ করে আবার ফিরিয়ে আনা যায়।’

দীর্ঘ মেয়াদে ভবিষ্যতে স্ট্রোক বা জন্মের সময় অক্সিজেনের স্বল্পতার মতো ঘটনার ক্ষেত্রে আরও উন্নত সুরক্ষাব্যবস্থা পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন গবেষকেরা।

3
কানের ভেতরে পানি আটকে থাকার অস্বস্তিকর অনুভূতির সঙ্গে আপনার পরিচয় আছে? অসাবধানতায় নানা মুহূর্তে আমাদের কানে পানি ঢোকে। তখন মনে হয়, কানের মধ্যে পানির বন্যা বইছে। শ্রবণক্ষমতা ব্যাহত হয়। অস্পষ্ট শোনায় চারপাশের শব্দ। এই পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার পাওয়ার কিছু পদ্ধতি বলেছেন জাতীয় নাক, কান, গলা ইনস্টিটউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মাহমুদুল হাসান।

মাথা ঝাঁকিয়ে পানি বের করুন
যে কানে পানি গেছে, সেই পাশে আপনার মাথা ঝুঁকিয়ে রাখুন। এবার আস্তে আস্তে কান ধরে ঝাঁকি দিতে থাকুন। এই পদ্ধতি কানের ভেতরের অংশে গতিশীলতা তৈরি করে। ফলে পানি নিজে থেকেই বেরিয়ে আসবে।

কাপিং পদ্ধতি
এই পদ্ধতিতে আপনার হাত মুখ্য ভূমিকা পালন করবে। যে কানে পানি ঢুকেছে, সে পাশে মাথা কাত করুন। হাতের তালু কাপের মতো করে ধরুন। সেই হাত কানের ওপর রেখে একটু চাপ দিয়ে তালু সমতল করে ফেলুন। আবার তালু কাপের মতো করে নিন। এটি আপনার কানের ওপর একটি ফাঁপা জায়গা বা ভ্যাকুয়াম কাপ তৈরি করবে। বাতাসের চাপে ভেতরের পানি বেরিয়ে আসবে।

ব্লো ড্রায়ারের সাহায্য নিন
এই পদ্ধতিতে আপনাকে একটি ব্লো ড্রায়ারের সাহায্য নিতে হবে। ড্রায়ারটিকে প্রথমে সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় সেট করুন। যে কানে পানি ঢুকেছে, সেই কান বরাবর এক হাত পরিমাণ দূরত্বে রেখে ড্রায়ারটিকে চালু করুন। আপনার মাথা ওপর-নিচে নাড়াতে থাকুন। কিছুক্ষণ করার পরই পানি বেরিয়ে যাওয়ার কথা। তবে এখানে ব্লো ড্রায়ার ব্যবহারের সময় অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
সাধারণত কানের আটকে পড়া পানি অল্প সময়ের মধ্যেই বেরিয়ে আসে। কোনো জটিলতায় ২৪ ঘণ্টার বেশি পানি আটকে থাকলে অতিদ্রুত কোনো ইএনটি স্পেশালিস্ট অর্থাৎ নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। তুলা, পিন, কটনবাড, আঙুলসহ অস্বাস্থ্যকর কোনো বস্তু ব্যবহার করে কানের জমাট পানি বের করার চেষ্টা করবেন না। কানের ভেতরের অংশগুলো যথেষ্ট স্পর্শকাতর হয়।
https://www.prothomalo.com/life-style/article

4

হিমোফিলিয়া হলে কখনো কখনো কোনো কারণ ছাড়াই হাঁটু, পায়ের গোড়ালি ফুলে যায়। ছবি: হিমোফিলিয়া সোসাইটির সৌজন্যে

২৯ বছর বয়সী ছেলেকে নিয়ে সংগ্রামের ইতিহাস শোনালেন বাবা নুরুল ইসলাম। ছেলে হিমোফিলিয়া রোগী। ছেলের শৈশবে এই রোগের নাম শুনে ঘাবড়ে গিয়েছিল পুরো পরিবার। তবে থমকে যায়নি। এই রোগের ইতিবৃত্ত জানার জন্যই নুরুল ইসলাম গড়ে তোলেন একটি সংগঠন। নাম হিমোফিলিয়া সোসাইটি অব বাংলাদেশ। বর্তমানে তিনি এ সোসাইটির সভাপতি।

হিমোফিলিয়া হলো অতিরিক্ত রক্তক্ষরণজনিত জন্মগত রোগ। এটি ছেলেদের হয়। আর মেয়েরা হয় বাহক, অর্থাৎ মেয়েরা জিন বহন করে। মায়ের কাছ থেকে সন্তানদের মধ্যে এর বিস্তার হয়। ছেলের বেলায় রোগটি প্রকাশ পায়। তবে রোগটি ছোঁয়াচে বা সংক্রামক নয়।

নুরুল ইসলামের ছেলে বর্তমানে দেশের বাইরে থাকেন। বিয়ে করেছেন। নুরুল ইসলামের পরিবার এই ছেলের পাশে ছিল বলেই এটা সম্ভব হয়েছে। তবে এ রোগ নিয়ে নুরুল ইসলামের পরিবারের ইতিহাস এখানেই থেমে নেই। তাঁর মেয়ে এ রোগের বাহক। বর্তমানে ৩২ বছর বয়সী মেয়েও দেশের বাইরে থাকেন। এই মেয়ের ছেলেও একই রোগে আক্রান্ত। এ কারণে পরিবারটির সংগ্রাম চলছেই।

চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়, হিমোফিলিয়া রোগীদের রক্তক্ষরণ দীর্ঘক্ষণ ধরে হতে থাকে। রক্ত জমাট বাঁধার উপকরণ ফ্যাক্টর এইটের ঘাটতির জন্য হিমোফিলিয়া ‘এ’ এবং ফ্যাক্টর নাইনের ঘাটতির জন্য হিমোফিলিয়া ‘বি’ হয়। বংশানুক্রমের বাইরেও প্রতি তিনজন রোগীর মধ্যে অন্তত একজন নতুন করে আক্রান্ত হয়।

নুরুল ইসলামের সঙ্গে গত মঙ্গলবার কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে এসেছিলেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করা আবু সায়ীদ আরিফ। প্রথমে মনে হয়েছিল তিনি নুরুল ইসলামের সঙ্গে হয়তো এমনিই সঙ্গ দিতে এসেছেন। তবে জানা গেল অন্য ইতিহাস। আবু সায়ীদের শ্বশুর মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ ছিলেন হিমোফিলিয়া সোসাইটির প্রথম সভাপতি। তিনি নিজেই ছিলেন রোগী। ২০০১ সালে ৫৪ বছর বয়সে মারা যান তিনি। তবে রোগের ধারাবাহিকতায় মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহর মেয়ে হয়েছেন হিমোফিলিয়ার বাহক। অর্থাৎ আবু সায়ীদ ও তাঁর স্ত্রীর তিন বছর চার মাস বয়সী ছেলে হয়েছে রোগী। জন্মের পর ছয় মাস বয়সেই এই বাবা-মা জানতে পারেন ছেলের সমস্যার কথা। তাঁদের আরেক মেয়ে আছে, তবে প্রায় আড়াই বছর বয়সী মেয়ে রোগটির বাহক কি না—তা জানতে যেতে হবে দিল্লি। দেশে এটি জানার কোনো উপায় নেই।

দেশে এ রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা নিয়ে সরকারি কোনো তথ্য নেই। আন্তর্জাতিক হিসাব অনুযায়ী, প্রতি ১০ হাজার জনে একজনের এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সেই হিসাব ধরে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব হিমোফিলিয়ার তথ্য বলছে, বাংলাদেশে ১০ হাজার ৬৪০ জনের মতো হিমোফিলিয়া রোগী রয়েছে। তবে হিমোফিলিয়া সোসাইটি অব বাংলাদেশ এ পর্যন্ত মাত্র ১ হাজার ৭০০ জন রোগী চিহ্নিত করে সমিতিতে নিবন্ধন করেছে। অর্থাৎ বেশির ভাগ রোগী চিহ্নিতকরণের আওতার বাইরেই রয়ে গেছে।

ভুক্তভোগী রোগীদের পরিবারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, হিমোফিলিয়া রোগীর কোথাও কেটে গেলে বা সামান্য আঘাত পেলে এই রোগীর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। কোনো কারণ ছাড়াই হাঁটু, পায়ের গোড়ালি ফুলে যাওয়া, দাঁতের মাড়ি, পাকস্থলী, মস্তিষ্ক, ঘাড়, গলাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তক্ষরণ হতে থাকে। পেশিতে রক্তক্ষরণের ফলে কালো কালো দাগ দেখা যায়। রোগটির স্থায়ী নিরাময়যোগ্য কোনো চিকিৎসা নেই। তবে উপসর্গের তাৎক্ষণিকভাবে উপশমের ব্যবস্থা আছে। যে ফ্যাক্টরগুলোর ঘাটতির জন্য রোগটি হচ্ছে, তা শরীরে ইনজেকশনের মাধ্যমে দিয়ে চিকিৎসা করানো যায়। তবে এ চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। অন্যদিকে, যথাযথ চিকিৎসার অভাবে রোগীর মৃত্যু ঘটতে পারে বা পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়।


রক্তক্ষরণের ফলে শরীরের বিভিন্ন অংশে কালো কালো দাগ দেখা যায়। ছবি: হিমোফিলিয়া সোসাইটির সৌজন্যে

নুরুল ইসলাম জানান, যেহেতু রোগটি চিহ্নিত হচ্ছে না, ফলে গ্রামাঞ্চলে মনে করা হয় রোগীকে জিন-ভূতে ধরেছে। আর এ ধরনের সন্তান জন্ম দেওয়ার কারণে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। যথাযথ চিকিৎসা হচ্ছে না বলে রোগী একসময় পঙ্গুত্ব বরণ করে পরিবারের বোঝা হয়ে যাচ্ছে।

অভিভাবক হিসেবে অসহায়ত্বের কথা জানালেন আবু সায়ীদ আরিফ। তিনি বললেন, অভিভাবকদের সব সময় সতর্ক থাকতে হয়, যাতে সন্তান কোনোভাবেই ব্যথা না পায়। আর ব্যথা পেয়ে গেলে বা উপসর্গ দেখা দিলে অপেক্ষা করার সময় থাকে না। বিনা মূল্যে ইনজেকশন সব সময় পাওয়া যায় না। পাওয়া গেলেও সেই ইনজেকশন কে পুশ করবে, তা নিয়েও চিন্তার অন্ত থাকে না। এ ছাড়া এ রোগে দুটি চিকিৎসাপদ্ধতি আছে। একটি হচ্ছে, রোগীর যে ঘাটতি, তা পূরণে নিয়মিত চিকিৎসা করে যাওয়া। এতে রোগী উন্নত মানের জীবন যাপন করতে পারে। আরেকটি হচ্ছে উপসর্গ দেখা দিলে তার চিকিৎসা করা, এতে রোগীর জীবনধারণ করে বেঁচে থাকা সম্ভব হয়। খরচের কথা চিন্তা করে বেশির ভাগ অভিভাবককেই উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হচ্ছে।

মাত্র ছয়জন রোগী নিয়ে রাজধানীতে হিমোফিলিয়া সোসাইটি অব বাংলাদেশ (১৫২/১, গ্রিন রোড) ১৯৯৪ সালে যাত্রা শুরু করে। সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধিত এ সমিতি ১৯৯৬ সালে ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব হিমোফিলিয়ার সদস্যপদ লাভ করেছে। এই সোসাইটি বর্তমানে রোগী চিহ্নিতকরণ, সচেতনতামূলক কার্যক্রম, ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব হিমোফিলিয়া থেকে অনুদান হিসেবে পাওয়া ফ্যাক্টর ইনজেকশন বিনা মূল্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগে সরবরাহের মাধ্যমে রোগীর কাছে পৌঁছে দেওয়া, চিকিৎসকদের দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণে সহায়তা করাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সোসাইটির পক্ষ থেকে হিমোফিলিয়া তথ্য ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে একটি পুস্তিকাও প্রকাশ করেছে।


হিমোফিলিয়া সোসাইটির সৌজন্যে

সোসাইটির দেওয়া তথ্য বলছে, এখানে নিবন্ধিত রোগীর মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ রোগীর চিকিৎসার খরচ মেটাতে পারে। সেটিও শুধু রোগীর বেঁচে থাকার জন্য যেটুকু প্রয়োজন সেটুকুই। এই রোগের ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে হিমোফিলিয়া সোসাইটি প্রতিবছর ১৭ এপ্রিল হিমোফিলিয়া দিবস পালন করে।

হিমোফিলিয়া সোসাইটির তথ্যমতে, দেশে বর্তমানে ৯২ জন হেমাটোলজিস্ট চিকিৎসক আছেন। কোনো চিকিৎসকের পক্ষে এই রোগীদের এককভাবে চিকিৎসা করা সম্ভব না। ফিজিওথেরাপিস্টসহ পুরো একটি দলের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন হয়, যা দেশের রোগীরা পাচ্ছেন না।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট ও হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক এম এ খান প্রথম আলোকে বলেন, হিমোফিলিয়া রোগটি একটি বংশগত রোগ এবং রোগীকে জীবনব্যাপী চিকিৎসার আওতায় থাকতে হয়। তবে এ রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এখন পর্যন্ত সরকারি খরচে রোগীরা চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছে না। সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলে বারবার বিষয়টি জানানো হচ্ছে। কেননা সরকারের উদ্যোগ ছাড়া এ রোগীর চিকিৎসা করা পরিবারের পক্ষে সম্ভব না। উন্নত বিশ্বে সরকারের পক্ষ থেকে এই রোগীরা যাতে দ্রুত স্বাস্থ্যসেবা পায় তাও নিশ্চিত করা হচ্ছে।

হিমোফিলিয়া সোসাইটির পক্ষ থেকে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসা সহায়তা চেয়ে বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। লিখিত ওই আবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালে জাতীয় প্রেসক্লাবে সোসাইটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম প্রধান অতিথির বক্তব্যে সরকারি খরচে হিমোফিলিয়া রোগীদের চিকিৎসাব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন, যা আজ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে বাজেটে বরাদ্দ দেওয়ার পাশাপাশি বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর নিবন্ধন করে সরকারিভাবে চিকিৎসার সুযোগ থাকলে ভুক্তভোগী রোগী ও পরিবারগুলোর ভোগান্তি কিছুটা হলেও কমত।


5
অসংখ্য মানুষের ফোন আজকাল নানাভাবে, নানা কারণে ট্যাপ করা হচ্ছে। স্মার্টফোনের যুগে ফোন ট্যাপ করাটা আরও সহজ! কারণ, এর জন্য আপনার মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক হ্যাক করার প্রয়োজন হবে না। হ্যাকাররা শুধু আপনার ফোনের ভালনেরাবিলিটি বা দুর্বলতা খুঁজে বের করে সহজেই আপনার ফোনকে ‘ট্যাপিং ডিভাইজ’-এ পরিণত করে ফেলতে পারে। কিন্তু কী করে বুঝবেন আপনার ফোনে কেউ আড়ি পাতছে কি না? আসুন জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু সংকেত, যেগুলো সঠিকভাবে লক্ষ করলে আপনি সহজেই বুঝে যাবেন আপনার ফোন কেউ ট্যাপ করেছে কি না!

⇒ফোন করার সময় বা ফোনে কথা বলার সময় অদ্ভুত সব ‘ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ’ বা শব্দ শুনতে পাওয়া যায়, তাহলে তা ফোন ট্যাপ করার কারণে হতে পারে। ফোনে কথা বলার সময় আপনি যদি অনর্গল বিপ বিপ শব্দ শুনতে পান, তাহলে হতে পারে আপনার ফোন ট্যাপিংয়ের শিকার হয়েছে।

⇒যদি দেখেন কল চলাকালে দুই প্রান্তের নেটওয়ার্ক বার ফুল থাকা সত্ত্বেও বারবার ভয়েস ব্রেক হচ্ছে, তাহলে তা ফোন ট্যাপ করার জন্য হতে পারে।

⇒যদি দেখেন হঠাৎ করে আপনার ফোনের ব্যাটারির চার্জ অস্বাভাবিকভাবে কমে গিয়েছে, ফোন ট্যাপ হওয়ার কারণে এমনটা হতে পারে। আপনার ফোন কল কোনো অ্যাপের সাহায্যে তৃতীয় পক্ষের কাছে পাঠানোর সময় ফোনের ব্যাটারির চার্জ দ্বিগুণ ক্ষয় হয় আর এ জন্যই ফোন ট্যাপ করা হলে ফোনের ব্যাটারির চার্জ দ্রুত ফুরিয়ে যেতে পারে বা ফোনটি অস্বাভাবিক গরম হয়ে উঠতে পারে। তবে স্মার্টফোনে একসঙ্গে অনেকগুলো অ্যাপলিকেশন অন থাকলেও এমনটা হতে পারে।

⇒ফোনে কোনো রকম সন্দেহজনক পরিবর্তন লক্ষ করলে নিশ্চিত হতে আপনার ফোনটি শাটডাউন করে দেখুন। যদি সম্পূর্ণ ফোন শাটডাউন হওয়ার পরেও স্ক্রিনে আলো জ্বলে থাকে বা ফোন শাটডাউন হতে অনেক বেশি সময় লাগে কিংবা শাটডাউন ফেল হয়ে যায়, তাহলে বুঝতে হবে অবশ্যই কোনো সমস্যা রয়েছে।

⇒যদি দেখেন আপনার ফোন কোনো কারণ ছাড়াই রিস্টার্ট হয়ে যাচ্ছে বা হঠাৎ হঠাৎ করে ফোনের আলো জ্বলে উঠছে, তাহলে বুঝতে হবে আপনার ফোনে নিশ্চয়ই কোনও রিমোট আক্সেস রয়েছে বা বাইরে থেকে কেউ আপনার ফোন নিয়ন্ত্রণ করছে! তবে এসব ফোনের সফটওয়্যারের সমস্যার কারণেও হতে পারে।

⇒আপনি নিশ্চয় লক্ষ করে থাকবেন, কোনো কল করার সময় ফোনটি যদি কোনো স্পিকারের সামনে থাকে, সে ক্ষেত্রে স্পিকার থেকে অনর্গল বিপ বিপ শব্দ শোনা যায়। এ ছাড়া কোনো কল চলাকালে সামনে থাকা ল্যাপটপ বা টিভিতেও অনর্গল শব্দ শোনা যেতে পারে। যদি কখনো দেখেন, ফোন থেকে কোনো কল না করলেও আপনার ফোন স্পিকারের সামনে বা টিভির সামনে নিয়ে গেলে ওই একই রকম বিপ বিপ শব্দ শোনা যাচ্ছে, তাহলে বুঝতে হবে অবশ্যই সমস্যা রয়েছে বা আপনার ফোন কেউ ট্যাপ করে রেখেছে।

⇒স্প্যাইং অ্যাপগুলো আপনার ফোনের সেলুলার ডেটা ব্যবহার করতে পারে। যদি আপনার ফোনে কোনো ডেটা প্ল্যান অ্যাকটিভ করা না থাকে, সে ক্ষেত্রে ফোনের বিল অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে ফোনের বিলের বিস্তারিত তথ্য হাতে পেলে যাচাই করে দেখলেই অসংগতি রয়েছে কি না বুঝে নিতে পারবেন! তবে প্রিপেইড নম্বরের ক্ষেত্রে এই অসংগতি ধরার তেমন কোনো উপায় নেই। সূত্র: ডিএমপি নিউজ।



6


সিটি ব্যাংকের এই সিআরএমে টাকা উত্তোলনের পাশাপাশি জমা সুবিধা আছে।  ছবিটি গতকাল ব্যাংকটির মতিঝিলের প্রিন্সিপাল শাখার পাশ থেকে তোলা।

*যন্ত্রটি ১০০,৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট গুনে নিচ্ছে
*নোট আসল না জাল, তা-ও যাচাই করছে যন্ত্রটি
*অচল ও কম মানের নোট হলে তা ফেরত দিচ্ছে
*যন্ত্রে প্রতি সেকেন্ডে গোনা হচ্ছে আটটি নোট

ব্যাংকে টাকা জমা করতে এখন আর ব্যাংকিং সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। রাত কি দিন, যেকোনো সময়ই জমা দেওয়া যাচ্ছে টাকা। তাৎক্ষণিকভাবে তা জমা হয়ে যাচ্ছে ব্যাংক হিসাবে। এ জন্য ব্যাংক বন্ধ, না খোলা—তা জানার প্রয়োজন পড়ছে না। এমন সুবিধা নিয়ে দেশের পাঁচটি ব্যাংক ইতিমধ্যে ক্যাশ রি-সাইকেলার মেশিন বা সিআরএম চালু করেছে। যাতে টাকা উত্তোলনের পাশাপাশি জমাও দেওয়া যাচ্ছে।

আর এসব সিআরএম ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট গুনে নিচ্ছে, আসল না জাল, তা–ও যাচাই করছে। কম মানের নোট ও অচল হলে তা ফেরত দিচ্ছে। এরপরই হিসাবে জমা হচ্ছে। আর জমার স্লিপে থাকছে টাকার নম্বরসহ কী পরিমাণ জমা হলো, তার হিসাব। এ যন্ত্রে প্রতি সেকেন্ডে গোনা হচ্ছে আটটি নোট।

নতুন এ সুবিধার ফলে সিআরএম–সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কার্যালয়ে গিয়ে টাকা জমার চাপ কমে গেছে। কারণ, গ্রাহকেরা এখন শাখায় না গিয়েই সিআরএমের মাধ্যমে টাকা জমা দিচ্ছেন। আর সেই টাকা জমা হচ্ছে তাৎক্ষণিকভাবে, ফলে অপেক্ষা করতে হচ্ছে না। তবে বর্তমানে সিআরএমের মাধ্যমে টাকা জমা বা উত্তোলনের ক্ষেত্রে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ড দিয়ে গ্রাহকের পরিচয় নিশ্চিত করতে হচ্ছে।

এটিএম ও সিডিএম সেবা
১৯৯২ সাল পর্যন্ত টাকা জমা ও উত্তোলনের জন্য ব্যাংক শাখা ছিল একমাত্র মাধ্যম। বাংলাদেশে ১৯৯২ সালে তৎকালীন এএনজেড গ্রিন্ডলেজ (বর্তমানে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড) ব্যাংক প্রথম অটোমেটেড টেলার মেশিন (এটিএম) বুথ স্থাপন করে। এ সময় তারা ডেবিট কার্ডের পাশাপাশি ক্রেডিট কার্ডও চালু করে। এরপর অন্য ব্যাংকগুলো এ সেবায় আসে।

ব্যাংক খাতে দীর্ঘ সময় টাকা জমা দেওয়ার জন্য শাখার ওপর নির্ভর করতে হয় গ্রাহকদের। ২০১০ সালের দিকে ব্যাংকগুলো টাকা জমা দেওয়ার মেশিন বসানো শুরু করে। যাকে বলা হচ্ছে ক্যাশ ডিপোজিট মেশিন (সিডিএম)। তবে এ সেবায় গ্রাহকেরা যন্ত্রে টাকা জমা দিলেও তাৎক্ষণিক হিসাবে জমা হয় না। ব্যাংক কর্মকর্তারা দিনে একবার জমাকৃত টাকা শাখায় নিয়ে জমা করেন। দুপুরের পর টাকা জমা হলেই তা পরের দিনের হিসাবে চলে যায়। বর্তমানে ১৩ ব্যাংক মিলে প্রায় ৬০০ সিডিএম বসিয়েছে। এ সেবায় শীর্ষে রয়েছে ডাচ্–বাংলা ও ইসলামী ব্যাংক। সিডিএম সেবা দেওয়া অন্য ব্যাংকগুলো হলো স্টান্ডার্ড চার্টার্ড, ইস্টার্ণ, ব্র্যাক, এনআরবি কমার্শিয়াল, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার, ট্রাস্ট, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, এক্সিম, দি সিটি, স্টান্ডার্ড ও পূবালী ব্যাংক।

সিআরএম সেবায় স্বস্তি
তবে তাৎক্ষণিকভাবে টাকা জমা না হওয়ায় গ্রাহকদের অনেকেই সমস্যায় পড়েছেন। এ সমস্যা সমাধানে ২০১৭ সালের জুনে দেশে প্রথম সিআরএম চালু করে সিটি ব্যাংক। আর গত বছরের শুরুতে সিআরএম চালু করে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড (ইউসিবিএল)। এখন পর্যন্ত পাঁচ ব্যাংক মিলে বসিয়েছে প্রায় ১৬০ সিআরএম। ব্যাংকগুলো হচ্ছে দি সিটি ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, সাউথইস্ট, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ও ইস্টার্ণ ব্যাংক। প্রতিটি সিআরএমই ব্যাংকের কোনো না কোনো শাখার সঙ্গে যুক্ত। জুনের মধ্যে দেশে সিআরএমের সংখ্যা সাড়ে ৩০০ ছাড়াবে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে। এরই মধ্যে ইসলামী ও ঢাকা ব্যাংক নতুন করে সিআরএম বসানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে জানা গেছে। ইউসিবিএল ইতিমধ্যে বসিয়েছে ১১২টি সিআরএম। দেশের সব বিভাগীয় শহরের পাশাপাশি জেলা পর্যায়ের শাখার পাশে এ যন্ত্র বসিয়েছে ব্যাংকটি।

ইউসিবিএলের রিটেইল ব্যাংকিংয়ের প্রধান তৌফিক হাসান প্রথম আলোকে বলেন, গত বছরের শেষ তিন মাসে সিআরএমে ৩৯ হাজার লেনদেন হয়েছে। এতে জমা হয়েছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। চলতি বছরে সিআরএমের ব্যবহার আরও বেড়েছে।
বেসরকারি খাতের সাউথইস্ট ব্যাংক বসিয়েছে ৪০টি সিআরএম। ব্যাংকটি রাজধানীর পাশাপাশি বিভাগীয় ও জেলা শহরেও এ যন্ত্র বসিয়েছে। সাউথইস্ট ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাঈনুদ্দীন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সারা বিশ্বেই ডিজিটাল ব্যাংকিং চলছে। বাংলাদেশেও শুরু হয়েছে। আমাদের সিআরএমে ভালো সাড়া মিলছে।’

সিটি ব্যাংক প্রথম এ সেবা চালু করে। ব্যাংকটি প্রধান কার্যালয়ের নিচে, মতিঝিলের প্রধান শাখায়, বনানী ১১, সীমান্ত স্কয়ার ও যমুনা ফিউচার পার্কে সিআরএম বসিয়েছে। দৈনিক শতাধিক গ্রাহক এসব সিআরএমে টাকা জমা করছেন। যার বড় অংশই ক্রেডিট কার্ডের গ্রাহক। জানতে চাইলে সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসরুর আরেফিন প্রথম আলোকে বলেন, গ্রাহকদের সুবিধার্থে জুনের মধ্যে সিআরএম ১০টিতে উন্নীত করা হবে।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক তাদের বাংলামোটর কার্যালয়ে ও চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে সিআরএম বসিয়েছে। ব্যাংকটির বিকল্প সরবরাহ ব্যবস্থার (এডিসি) প্রধান রবিউল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা ও চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে এরই মধ্যে সিআরএম চালু হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে আরও চারটি সিআরএম বসানো হবে। গ্রাহকদের সুবিধার্থে সহজেই টাকা জমার এ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

ইস্টার্ণ ব্যাংকও তাদের গুলশানের প্রধান কার্যালয়ের নিচে সিআরএম বসিয়েছে।

দাম–দর
একেকটি এটিএমের দাম গড়ে ৬-৭ লাখ। আর একটি সিআরএমের দাম প্রায় ২০ লাখ টাকা। এ জন্য ব্যাংকগুলো একটু ভেবেচিন্তে এগোচ্ছে।

বর্তমানে দেশে সিআরএম আমদানি ও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে জারা জামান টেকনোলজি। প্রতিষ্ঠানটির অপারেশন অ্যান্ড বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের প্রধান এস এম গিয়াস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, এ যন্ত্রের নানা সুবিধা আছে। আপাতত দেশের মধ্যে যেসব সুবিধা প্রয়োজন ও উপযোগী, তা–ই চালু করা হয়েছে।

7


ঢাকায় শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা। ভ্রমণবিষয়ক পাক্ষিক দি বাংলাদেশ মনিটর রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এ মেলার আয়োজন করেছে। ‘নভোএয়ার ঢাকা ট্রাভেল মার্ট-২০১৯’ শীর্ষক এবারের আয়োজনটি করা হয়েছে ষোড়শ বারের মতো।

গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এ পর্যটন মেলার সহযোগী দেশ হিসেবে যুক্ত হয়েছে নেপাল। গতকাল মেলার উদ্বোধন করেন বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। মেলা শেষ হবে আগামীকাল শনিবার।
এবারের পর্যটন মেলায় বাংলাদেশ, নেপাল, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়েশিয়ার জাতীয় পর্যটন সংস্থাগুলো অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশসহ ৭টি দেশের ৪১টি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা ৫টি প্যাভিলিয়ন ও ৭০টি স্টলে তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করছে। অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো মেলা চলাকালীন দর্শনার্থীদের জন্য মূল্যছাড়ে বিমান টিকিট, আকর্ষণীয় ট্যুর প্যাকেজসহ বিভিন্ন পণ্য ও সেবা উপস্থাপন করছে।

জানা গেছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস নির্দিষ্ট কিছু আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিমান টিকিটে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড় দিচ্ছে। নভোএয়ার দিচ্ছে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড়। রিজেন্ট এয়ার ইকোনমি শ্রেণিতে ১২ শতাংশ ও বিজনেস শ্রেণিতে ২০ শতাংশ মূল্যছাড় দিচ্ছে। ইউএস বাংলা এয়ারলাইনস সব অভ্যন্তরীণ গন্তব্যে ১০ শতাংশ ও আন্তর্জাতিক গন্তব্যে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দিচ্ছে।

মেলা চলছে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। মেলায় প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রতিজনের টিকিট ৩০ টাকা। প্রবেশ কুপনের ওপর মেলার শেষদিন র‍্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হবে।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী বলেন, বাংলাদেশে পর্যটনের বিশাল সম্ভাবনা আছে। দেশের প্রত্যেক জেলা-উপজেলা পর্যায়ে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব। দেশের যে সভ্যতা, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও পরিবেশ রয়েছে, তার সবই পর্যটনের উপযোগী। সরকারের চেয়ে বেসরকারি খাত পর্যটনের উন্নয়নে বেশি ভূমিকা রাখতে পারে। এ জন্য তিনি বেসরকারি খাতকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মনিটরের প্রধান সম্পাদক রকিব সিদ্দিকী, বাংলাদেশে নেপালের রাষ্ট্রদূত ধান বাহাদুর অলি, বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ভুবন চন্দ্র বিশ্বাস, নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের জনসংযোগ মহাব্যবস্থাপক শাকিল মেরাজ, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক লিমিটেডের হেড অব কার্ডস মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন এবং নেপাল ট্যুরিজম বোর্ডের সিনিয়র ব্যবস্থাপক দিবাকর বিক্রম রানা।

8


শিরোনামে যে প্রশ্নটি করা হয়েছে, সেটি অনেকের কাছেই কাঙ্ক্ষিত। প্রশ্নটি করলেই হয়তো উগরে দেবেন মনের যত ব্যথা বেদনা। ক্যারিয়ারে সব সময়ই সোনার টুকরা ‘বস’ পেয়েছেন, এমন চাকুরে খুঁজে পাওয়া বেশ দুর্লভ। তেমন রাজকপাল সবার হয় না। কারও কারও হয়তো বসের কথায় কষ্ট পেয়েই কাটে দিন! তো সেই পরিস্থিতিতে কী করা উচিত? চাকরি ছেড়ে দেওয়া তো আর সব সময় সম্ভব নয়।

কর্মস্থলে খারাপ বা বাজে বস সংখ্যায় কি বেশি? আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের হিসাব বলছে, শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই সংখ্যাটি আকারের দিক থেকে বিশাল! ৭৫ শতাংশ মার্কিন বলেছেন, তাঁদের কর্মজীবনে সবচেয়ে বেশি মানসিক চাপ সৃষ্টি করে থাকেন বস বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। করপোরেট সংস্কৃতির পেশাদারির দিক বিবেচনায় নিলে, যুক্তরাষ্ট্রের স্থান তালিকার বেশ ওপরের দিকেই থাকবে। তা সেখানেই যদি অধস্তন কর্মীদের এই হাল হয়, তবে এ দেশে কেমন, একবার ভেবে দেখুন তো!

গ্যালাপের করা এক সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি দুই চাকুরের একজন ক্যারিয়ার-জীবনের কোনো না কোনো সময়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বা বসের কাছ থেকে মুক্তি পেতে চাকরিই ছেড়ে দিয়েছেন। তবে বসের ‘অত্যাচার’ সহ্য করে চাকরি চালিয়ে যাওয়া মানুষের সংখ্যাও কম নয়। এর পেছনে নানা কারণ থাকে। চাকরি মানেই আর্থিক নিরাপত্তা। সেই নিশ্চয়তা থেকে অনিশ্চয়তার পথে পা বাড়ানোর সাহস দেখানো চাট্টিখানি কথা নয়। কেউ আবার তুলনামূলক ভালো সুযোগের অভাবে থেকে যান খারাপ বসের অধীনেই।

অবশ্য ভালো সুযোগ তৈরি করাও সহজ নয়। তার জন্য নিজের দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন আছে। আবার খারাপ বসের অধীনে থেকে অনেক সময় নতুন সুযোগ তৈরির জন্য পরিশ্রম করারও ইচ্ছে জাগে না। কারণ, মনে শান্তি না থাকলে কাজে কি আর মন বসে? মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, কিছু কিছু ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি কর্মক্ষেত্রে তাঁর পরিশ্রমলব্ধ বেতন, জ্যেষ্ঠতা, সামাজিক মর্যাদা ইত্যাদি বিসর্জন দিতে চান না। বছরের পর বছর ধরে ধীরে ধীরে একজন ব্যক্তি এসব অর্জন করেন। বসের খারাপ ব্যবহারের কারণে সেগুলো পুরোপুরি ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া একটু কঠিন। আবার যখন কোনো ব্যক্তি একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানের চাকরিতে আবেগের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন, তখন তার পক্ষে নতুন ধরনের চাকরি খোঁজা কঠিন হয়ে পড়ে। দেখা যায়, আবেগাপ্লুত হয়েই খারাপ বসের দুর্ব্যবহার সহ্য করছেন কেউ কেউ।

খিটখিটে ও কর্মীকে দৌড়ের ওপর রাখা বসেরা স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর বটে। সুইডেনের ৩ হাজার ১২২ জন পুরুষ কর্মীর ওপর চালানো গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা খারাপ বসের অধীনে কাজ করেন, অন্যদের তুলনায় তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি বেশি থাকে। অন্যদিকে, বিভিন্ন মার্কিন গবেষণা বলছে, অসংবেদনশীল বসের চাপে থাকা কর্মীরা মানসিক চাপ, বিষণ্নতা ও উদ্বেগে ভুগে থাকেন। আবার তিতিবিরক্ত হয়ে চাকরি ছেড়ে দিলেও রক্ষে নেই। গবেষকেরা বলছেন, আগের মানসিক চাপ থেকে পুরোপুরি মুক্ত হতে নাকি ২২ মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে!

এবার আসা যাক বসকে সামলানোর উপায়ে। গত্যন্তর না থাকলে তো বদমেজাজি ও ‘নির্দয়’ বসকে সহ্য করে যেতেই হবে। কিন্তু সে ক্ষেত্রে কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে। এতে হয়তো ক্ষতের জ্বালা কিছুটা কম হতে পারে। এগুলো হলো:

১. আপনার বস আসলেই খারাপ কি না, সেটি আগে খতিয়ে দেখুন। তাঁর বাজে আচরণের কারণ খোঁজার চেষ্টা করুন। আপনার কি কোনো দোষ আছে? বসের যে ব্যবহারটি আপনার ভালো লাগছে না, সেটি করার পেছনে বসের উদ্দেশ্য কী? হতে পারে, আপনার কোনো কাজ হয়তো প্রতিষ্ঠানের জন্য অপকারী। তাই ঝিকে মেরে বউকে শেখানো হচ্ছে। তেমন হলে, আগে নিজেকে শোধরান।

২. বসের আচরণ যত খারাপই হোক না কেন, নিজের কাজকে ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেবেন না। মনে রাখবেন, তাতে আপনার বিরুদ্ধে আরও একটি অস্ত্র বসের হাতে চলে যাচ্ছে। তাই কাজের গতি ও মান ঠিক রেখে প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের কাছে নিজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখার চেষ্টা চালিয়ে যান। কিছু ক্ষেত্রে বসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এক ধাপ এগিয়ে থাকুন। দেখবেন, বস কিছু বলার সুযোগই পাচ্ছেন না!

৩. কখনো কখনো বস বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কর্মীদের ওপর কাজের বোঝা চাপাতেই থাকেন। স্বাভাবিকভাবেই অসীম লক্ষ্যের পেছনে ছুটে চলা কারও পক্ষেই সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে নিজেই কাজের সীমারেখা টেনে দিন।

৪. বদমেজাজি বসের ক্ষেত্রে কিসে তিনি রেগে যাচ্ছেন, তা চিহ্নিত করুন। হয়তো কাজের একটি নির্দিষ্ট ধরনের ভুল বস সহ্যই করতে পারছেন না। সেগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। যেমন: অফিসে দেরি করে ঢুকলে যদি বকা শুনতে হয়, তবে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই অফিসে উপস্থিত থাকার চেষ্টা করুন। তাহলে আর বসের ‘রাগ’ সহ্য করতে হবে না।

৫. বস অযোগ্য হলে, তাঁর বাজে ব্যবহার সহ্য করা আরও কঠিন। তখন নিজেকে নেতা হিসেবে তৈরি করার প্রচেষ্টা চালান। তবে তাই বলে বসের অবস্থান দুর্বল করার চেষ্টা করতে যাবেন না। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

আরেকটি কথা মনে রাখবেন, খারাপ সময়ে সবারই উপযুক্ত সমর্থন প্রয়োজন হয়। তাই বাজে বসের কারণে চাপে থাকলে, মানসিকভাবে ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করুন। বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটান। বসের খারাপ ব্যবহার আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে, কিন্তু নিজের ব্যবহারের নিয়ন্ত্রণ আপনার হাতেই।

তথ্যসূত্র: হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ, দ্য মুজে ও ফোর্বস

9



বাংলাদেশের উৎপাদনশীল খাত অর্থাৎ কলকারখানার ৪৫ শতাংশের বেশি শ্রমিককে সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টার বেশি শ্রম দিতে হয়। প্রতিযোগী ও সমপর্যায়ের অর্থনীতির দেশ কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার, মঙ্গোলিয়া ও ভিয়েতনামে এ হার কম।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ‘ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল আউটলুক–২০১৯’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, উৎপাদনশীল খাতের পাশাপাশি বাংলাদেশের ৩৫ শতাংশের বেশি পরিবহনশ্রমিককে নির্ধারিত কর্মঘণ্টার অতিরিক্ত শ্রম দিতে হয়। এদিক থেকে ওই ছয়টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের ওপরে আছে কেবল মঙ্গোলিয়া।

আইএলওর প্রতিবেদনটি গতকাল বুধবার বিশ্বজুড়ে প্রকাশ করা হয়। এবার এই প্রতিবেদনে শ্রমিকের কর্মসংস্থানের মানের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নিম্নমানের কর্মসংস্থান বৈশ্বিক শ্রমবাজারের জন্য এখন মূল সমস্যা। বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ নিম্নমানের কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। এ কারণে ২০১৮ সালে বিশ্বজুড়ে ৩৩০ কোটি কর্মরত মানুষের আর্থিক নিরাপত্তা ছিল না। তাঁরা সমান সুযোগ পাননি। পর্যাপ্ত পণ্য ও সেবা কেনার সক্ষমতাও তাঁদের ছিল না।

আইএলওর এক বিজ্ঞপ্তিতে এ বিষয়ে সংস্থাটির উপমহাপরিচালক ডেবোরাহ গ্রিনফিল্ড বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) ৮ নম্বর লক্ষ্যে শুধু কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা নয়, মানসম্মত কাজের কথা বলা হয়েছে। সমান সুযোগ ও শোভন কাজ এসডিজি অর্জনের দুটো মূল ভিত্তি।

আইএলওর প্রতিবেদনে বলা হয়, একটা কাজ পাওয়া মানেই শোভন জীবনধারণের সুযোগ, অনেক দেশেই বিষয়টি সে রকম নয়। অনেকেই বাধ্য হয়ে নিম্নমানের কাজ করে। অনেকেই খুব কম মজুরি পায়। সামাজিক সুরক্ষা বলতে কিছু থাকে না, থাকলেও সেটা নগণ্য। আইএলও জানিয়েছে, ২০১৮ হিসাবে স্বল্প ও মধ্যম আয়ের দেশে চার ভাগের এক ভাগের বেশি কর্মরত শ্রমিক দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে।

আইএলওর প্রতিবেদনে দিনে ৮ ঘণ্টা করে সপ্তাহে ৪৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করলে তাকে অতিরিক্ত কর্মঘণ্টা হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, বিভিন্ন দেশে লাখ লাখ শ্রমিককে অতিরিক্ত সময় কাজ করতে হয়।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশে চাহিদার চেয়ে শ্রমিকের সংখ্যা বেশি বলে মজুরি, কর্মঘণ্টা ইত্যাদি নিয়ে দর কষাকষির সুযোগ থাকে না। দেশের আইনি কাঠামোতেও ৪৮ ঘণ্টার বেশি কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তিনি বলেন, শ্রমিকের মজুরি যেহেতু পর্যাপ্ত নয়, সেহেতু তাঁকে বাড়তি সময় কাজ করে বাড়তি আয় করতে হয়।

গোলাম মোয়াজ্জেম আরও বলেন, অতিশ্রমের কারণে শ্রমিকদের অকালেই কর্মক্ষমতা হারাতে দেখা যায়। এ কারণে বাংলাদেশের পোশাক খাতে ৩৫ বছরের বেশি বয়সী শ্রমিক খুব বেশি দেখা যায় না। অবশ্য শ্রম পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। ২০১০ সালে যে পরিস্থিতি ছিল, এখন তার চেয়ে কিছুটা ভালো, যদিও তা অন্যান্য দেশের তুলনায় আশাব্যঞ্জক নয়।

আইএলওর প্রতিবেদনে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সম্পর্কে বলা হয়েছে, অর্থনীতির কাঠামোগত পরিবর্তন এ অঞ্চলের দেশগুলোতে বড় অংশের শ্রমিককে কৃষি থেকে শিল্পে নিয়ে এসেছে। কিন্তু সেটা কাজের মান তেমন একটা বাড়ায়নি। শ্রমিকের বড় অংশই এখনো চাকরির নিরাপত্তা, লিখিত চুক্তি, আয়ের স্থিতিশীলতার অভাবে ভোগেন।

10


• ২২ হাজারেরও বেশি নারী ব্যাংক খাতে চাকরি করছেন
• ব্যাংক খাতে মোট কর্মী ১ লাখ ৭৫ হাজার ২৭ জন
• মোট কর্মীর ১২ দশমিক ৬ শতাংশ নারী
• বিদেশি ব্যাংকে নারী কর্মী বেশি
• পরিচালকদের মধ্যে নারী ১৩ শতাংশ
• ৫৯টি তফসিলি ব্যাংকের মধ্যে মাত্র একজন নারী এমডি
দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। শিক্ষার হারেও নারী-পুরুষ প্রায় সমান সমান। সরকারি চাকরিতে নারীর অংশগ্রহণও ছাড়িয়েছে ২৫ শতাংশ। পিছিয়ে নেই ব্যাংক খাতও। এ খাতে নারীর অংশগ্রহণ কম থাকলেও ধীরে ধীরে ব্যাংকে নারী কর্মীর সংখ্যা বাড়ছে। দেশে বর্তমানে ২২ হাজারেরও বেশি নারী ব্যাংক খাতে চাকরি করছেন। যদিও এ খাতে উচ্চপদে অর্থাৎ ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বা উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) পদে নারী এখনো হাতে গোনা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হিসাব বলছে, ব্যাংক খাতে যত লোক কাজ করে, তার প্রায় ১২ শতাংশ নারী। ২০১৭ সাল শেষে ব্যাংক খাতে কর্মকর্তা-কর্মচারী ছিল ১ লাখ ৭৫ হাজার ২৭ জন। এর মধ্যে ১২ দশমিক ৬০ শতাংশ অর্থাৎ ২২ হাজার ৫৩ জন নারী। তবে ২০১৮ সালের জুন শেষে ব্যাংক খাতে নারী কর্মীর হার কিছুটা কমে ১২ দশমিক ২৩ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে বিবেচনায় নিলে এ খাতে নারী কর্মীর সংখ্যা আরও বাড়বে।

 কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোতে কর্মরত ৫১ হাজার ৪৮৩ জনের মধ্যে উচ্চপর্যায়ে রয়েছে ৯ শতাংশ নারী। এ ছাড়া মধ্যম পর্যায়ে রয়েছে ১৫ শতাংশ এবং প্রারম্ভিক পর্যায়ে রয়েছে ১৩ শতাংশ নারী। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকে মহাব্যবস্থাপক (জিএম) এবং তার ওপরের পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের মধ্যে নারী মাত্র ৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে কর্মরত রয়েছেন ১ লাখ ৭ হাজার ২৫৫ জন। এর মধ্যে উচ্চপর্যায়ে নারী রয়েছেন ৬ শতাংশ, মধ্যম পর্যায়ে ১৪ শতাংশ ও প্রারম্ভিক পর্যায়ে ১৮ শতাংশ। শতাংশের হিসাবে ব্যাংক খাতে সবচেয়ে বেশি নারী কাজ করেন অবশ্য বিদেশি ব্যাংকগুলোতে। এসব ব্যাংকে প্রারম্ভিক পর্যায়ে নারী রয়েছেন ২৫ দশমিক ২৪ শতাংশ, মধ্যবর্তী পর্যায়ে ১৯ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং উচ্চপর্যায়ে ১৮ দশমিক ২৯ শতাংশ।

২০ বছর ধরে বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে প্রচুর নারী কর্মী যোগ দিচ্ছেন। অনেকে দেশের বাইরে উচ্চশিক্ষা নিয়েও যোগ দিচ্ছেন ব্যাংকে। এ কারণে বেসরকারি ব্যাংকে মধ্যম ও উচ্চপর্যায়ে উল্লেখযোগ্য নারী কর্মী রয়েছেন। যদিও বেশির ভাগ নারী কর্মীদেরই নারী উদ্যোক্তা, মানবসম্পদ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি পর্যায়ের উদ্যোক্তা (এসএমই)—এসব বিভাগে দায়িত্ব দেওয়া হয়।

এদিকে ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদেও নারীর অংশগ্রহণ কর্মীদের মতোই। তবে এ ক্ষেত্রে বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকে নারী পরিচালকের হার একটু বেশি—১৮ শতাংশ। আর বেসরকারি ব্যাংকে পরিচালকদের মধ্যে ১৩ শতাংশ নারী। সরকারি ব্যাংকে সরকারই পরিচালক নিয়োগ দিয়ে থাকে। নারী উদ্যোক্তা, সাবেক নারী ব্যাংকার এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কর্মচারীদের সরকারি ব্যাংকে পরিচালক পদে নিয়োগ দেয় সরকার। আর বেসরকারি ব্যাংকে মূলত পরিচালকদের স্ত্রী, কন্যা ও পুত্রবধূরা ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে আছেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে, রাষ্ট্র খাতের ব্যাংকগুলোর নারী কর্মীদের মধ্যে বছরে ১ শতাংশ কর্মসংস্থান বদল করে। আর বেসরকারি ব্যাংকে এ হার ৭ শতাংশ। অবশ্য দেশের প্রতিটি ব্যাংকেই ছয় মাসের মাতৃত্বকালীন ছুটি কার্যকর করেছে। নারী ব্যাংককর্মীদের জন্য ২৬টি ব্যাংকের নিজস্ব পরিবহনব্যবস্থা রয়েছে বলে জানা গেছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, পড়ালেখা শেষ করে ব্যাংকগুলোতে প্রচুর নারী কর্মী যোগদান করলেও পরে তাঁদের অনেকে চাকরি ছাড়ছেন। মূলত কাজের চাপ, সন্তান লালন-পালন ও পরিবারের সদস্যদের নেতিবাচক মনোভাবের কারণে এসব নারী ব্যাংকার মধ্যপর্যায়ে এসে চাকরি ছেড়ে দিচ্ছেন।

খাত–সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের ৫৯টি তফসিলি ব্যাংকের মধ্যে বর্তমানে মাত্র ১টি ব্যাংকের এমডি পদে আছেন একজন নারী। তা–ও সরকারি খাতের ব্যাংকে। কৃষি ব্যাংকের ডিএমডি থেকে পদোন্নতি পেয়ে এক বছর ধরে প্রবাসী কল্যাণ
ব্যাংকের এমডির দায়িত্বে রয়েছেন মাহ্তাব জাবিন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উচ্চ পদে অংশগ্রহণ কম হলেও ব্যাংক খাতে নারীর সংখ্যা বাড়ছে।
তবে উচ্চ পদে পদোন্নতি দেওয়ার ক্ষেত্রে নারীর যোগ্যতাকে হেয় করে দেখা না হলেও পুরুষদেরই বেশি যোগ্য মনে করা হয়। এই সামাজিক পরিস্থিতির কারণে ব্যাংক খাতে উচ্চ পদে পুরুষ কর্মীরা এগিয়ে আছেন।’ তাই উচ্চ পদে যেতে নারীদের নিজেদের লড়াইয়ের পাশাপাশি পারিপার্শ্বিক সমর্থনও দরকার বলে মনে করেন মাহ্তাব জাবিন।

ব্যাংক খাতে বর্তমানে পাঁচটি ব্যাংকে এএমডি (অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক) ও ডিএমডি (উপব্যবস্থাপনা পরিচালক) পদে নারী রয়েছেন। এর মধ্যে বেসরকারি এবি ব্যাংকের ডিএমডি হিসেবে কাজ করছেন শামসিয়া আই মুতাসিম, মেঘনা ব্যাংকে এএমডি পদে রয়েছেন জোহরা বিবি, ওয়ান ব্যাংকের অতিরিক্ত ডিএমডি পদে আছেন রোজিনা আলিয়া আহমেদ, সিটি ব্যাংকের ডিএমডি পদে আছেন মাহিয়া জুনায়েদ প্রমুখ।

জানতে চাইলে এবি ব্যাংকের ডিএমডি শামসিয়া আই মুতাসিম বলেন, ‘আমি মনে করি না যে ব্যাংকে নারী-পুরুষ বলে আলাদা কিছু থাকা উচিত। মূল কথা হচ্ছে দায়িত্ব এবং দায়িত্ব পালনে নারীদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির জায়গাটা তুলনামূলক বেশি থাকে।’

সরাসরি ব্যাংকের এমডি না হলেও গৃহঋণের একমাত্র সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনে (বিএইচবিএফসি) এযাবৎ তিনজন নারী এমডির দায়িত্ব পালন করেন। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের ডিএমডি থেকে পদোন্নতি পেয়ে বিএইচবিএফসির এমডি হয়েছিলেন রায়হানা আনিসা য়ুসুফ আলী। আফরোজা গুল নাহার এই সংস্থার এমডি হয়েছিলেন জনতা ব্যাংকের ডিএমডি থেকে পদোন্নতি পেয়ে। দুজনই এখন বেসিক ব্যাংকের পরিচালক। এ ছাড়া বিএইচবিএফসির ডিএমডি দৌলতুন্নাহার খানম চারবার সংস্থাটির ভারপ্রাপ্ত এমডির দায়িত্ব পালন করেন।

11
• ২০১৩ সালে উচ্চ পদে নারীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৫ হাজার
• ২০১৭ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজারে
• উচ্চ পদের ১৪ হাজার নারীর মধ্যে ১১ হাজার সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ে কর্মরত
• বাকি ৩ হাজার শিল্প খাতে কাজ করেন

একটি ব্যবসা বা করপোরেট প্রতিষ্ঠানে সবার ‘বস’ একজন নারী। প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে তিনি নিজেই প্রতিষ্ঠানটি চালানোর পুরো দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিনিয়তই সহকর্মীদের নানা নির্দেশ-পরামর্শ দেন। প্রতিষ্ঠানটিও বেশ ভালো চলে। তারই প্রমাণ মেলে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারি-বেসরকারি খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পদে নারীর অগ্রযাত্রার চিত্র দেখে।

গত চার বছরের ব্যবধানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদে নারীর অংশগ্রহণ তিন গুণ বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, ২০১৭ সাল শেষে বাংলাদেশের প্রায় ১৪ হাজার নারী বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা কিংবা আইনপ্রণেতা হিসেবে কাজ করছেন। ঠিক চার বছর আগে, অর্থাৎ ২০১৩ সালে বাংলাদেশে শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কিংবা নীতিনির্ধারণী উচ্চ পদে কাজ করতেন মাত্র ৪ হাজার ৯৮৫ জন নারী।

২০১৩ ও ২০১৭ সালের দুটি শ্রমশক্তি জরিপ পর্যালোচনা করে উচ্চ পদে নারীর এগিয়ে যাওয়ার এই চিত্র পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে এখন বার্জার, মাইক্রোসফটের মতো বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী হিসেবে কর্মরত রয়েছেন নারী। আবার সরকারি আমলাতন্ত্রের সর্বোচ্চ সিনিয়র সচিব পদেও একজন নারী আছেন। গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবেও এ দেশে নারী কাজ করছেন। এখন অনেক নারী শীর্ষ নির্বাহী হিসেবে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও চালান।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাহতাব জেবিন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গত কয়েক বছরে উচ্চ পদে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে। তবে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নারীরা যেখানে চাকরি করেন, সেখানে পুরুষের আধিপত্য বেশি থাকে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ পদে পদোন্নতি দেওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্যতাসম্পন্ন নারীর চেয়ে পুরুষদেরই বেশি অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। ফলে পুরুষেরা এ ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা পান। এই সামাজিক পরিস্থিতির কারণে উচ্চ পদে যাওয়ার ক্ষেত্রে নারীরা কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে।

বিবিএসের সর্বশেষ ২০১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, সারা দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদে যে ১৪ হাজার নারী কাজ করছেন, তার মধ্যে ১১ হাজার নারী সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ে কর্মরত। বাকি ৩ হাজার নারী শিল্প খাতে কাজ করেন। চার বছর আগে, অর্থাৎ ২০১৩ সালে সব মিলিয়ে ৪ হাজার ৯৪২ জন নারী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদে ছিলেন। তার মধ্যে ২ হাজার ৯৩৬ জন ছিলেন সেবা খাতে আর শিল্প খাতে ছিলেন মাত্র ২ হাজার ৬ জন। সেই হিসাবে চার বছরের ব্যবধানে সেবা খাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রায় ৮ হাজার নারী নতুন করে উচ্চ পদে গেছেন। আর শিল্প খাতে গেছেন মাত্র ১ হাজার নারী। তবে নারীর উচ্চ পদে যাওয়ার সুযোগ শুধু শহর এলাকার শিল্প ও সেবা খাতের প্রতিষ্ঠানেই সীমাবদ্ধ। গ্রামের নারীরা এখনো পিছিয়ে আছেন।

২০১৭ সালের শ্রমশক্তি জরিপের হিসাবে শীর্ষ নির্বাহী কিংবা উচ্চ পদ ছাড়াও প্রশাসনিক ও বাণিজ্যিক ব্যবস্থাপনার কাজের সঙ্গে যুক্ত আছেন প্রায় ২৯ হাজার নারী। ২০১৩ সালে এই সংখ্যা ছিল ১১ হাজার ৮০১। অর্থাৎ চার বছরের ব্যবধানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যম পর্যায়ের ব্যবস্থাপনা পদে নারীর অংশগ্রহণ আড়াই গুণ বেড়েছে।

জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘শীর্ষ পদে নারীর বর্তমান সংখ্যা নিয়ে আমরা খুশি নই। নারী-পুরুষের জনসংখ্যার বিভাজন অনুযায়ী এটি অপ্রতুল। তবে উচ্চ পদে নারীর সংখ্যা বাড়ছে—এটা আশার কথা। নারীদের কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে নিতে হলে প্রাতিষ্ঠানিক ও সামাজিক সংস্কৃতির পরিবর্তন করতে হবে।’

উচ্চ পদে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও এখনো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ও নীতিনির্ধারণী পদে পুরুষদের আধিপত্য অনেক বেশি। বিবিএসের ২০১৭ সালের জরিপের তথ্য অনুযায়ী সারা দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী ও উচ্চ পদে কর্মরত পুরুষের সংখ্যা ৯৭ হাজার। অর্থাৎ ৮৭ শতাংশের বেশি উচ্চ পদ দখল করে আছেন পুরুষেরা। সেখানে নারীর অংশ মাত্র ১২ দশমিক ৩ শতাংশ। সংখ্যার দিক থেকে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও পুরুষের সঙ্গে অনুপাতের দিক থেকে ২০১৩ ও ২০১৭ সালের একই অবস্থানে রয়েছেন নারীরা।

12
Workshop on ‘Web-based Electricity Cost Modeling for Capacity Development and Good Governance’ held at Daffodil International University

Mr. Nasrul Hamid, MP, State Minister, Ministry of Power, Energy and Mineral Resources speaking at the workshop on ‘Web-based Electricity Cost Modeling for Capacity Development and Good Governance’ held on 24 February 2019 at 71 Milonayoton of Daffodil International University organized by of Electrical & Electronic Engineering (EEE) of Daffodil International University (DIU).

Workshop on ‘Web-based Electricity Cost Modeling for Capacity Development and Good Governance’ held at Daffodil International University. Department of Electrical & Electronic Engineering (EEE) of Daffodil International University (DIU) organized a consultation workshop on ‘Web-based Electricity Cost Modeling’ for capacity development and good governance’ today on 24 February 2019 at 71 Milonayoton of the university. Mr. Nasrul Hamid, MP, State Minister, Ministry of Power, Energy and Mineral Resources was present at the workshop as chief guest while Ms. Shahin Ahmed Chowdhury, Chairman, Bangladesh Energy & Power Research Council, Dr. Md. Ahmed Kaikaus, Secretary, Power Division, Ministry of Power, Energy and Mineral Resources and Mr. Monowar Islam, Chairman, Bangladesh Energy Regulatory Commission were present as the special guests. Professor Dr. Yousuf Mahbubul Islam, Vice Chancellor of DIU delivered a video welcome message.


Dr. M Shamsul Alam, Professor, EEE Department and Dean, Faculty of Engineering of DIU andProfessor Dr. Md. Shahid Ullah, Head, Department of Electrical & Electronic Engineering (EEE) handing over a memento of Daffodil International University to Mr. Nasrul Hamid, MP, State Minister, Ministry of Power, Energy and Mineral Resources.

A round table discussion was arranged to consult various aspects of the proposed W-ECM project. Engr. Khaled Mahmood, Chairman, Bangladesh Power Development Board, Major General Moin Uddin (Retd), Chairman, Bangladesh Rural Electrification Board, Md. Helal Uddin, Chairman, Sustainable and Renewable Energy Development Authority, Engr. Mohammad Hossain, Director General, Power Cell, Brig. Gen. Md Shahid Sarwar, ndc, psc (Rtd.) Managing Director, Dhaka Electric Supply Company Limited (DESCO), Engr. Bikash Dewan, Managing Director, Dhaka Power Distribution Company Limited, Engr. Masum-Al-Beruni, Managing Director, Power Grid Company of Bangladesh Limited, Md. Abdus Sabur, Managing Director, Rural Power Company Limited, Md. Mustafizur Rahman, Additional Secretary, ICT, Project Director, a2i, Mahboob Zaman, Managing Director, Datasoft were the discussants in addition to the chief guest and special guests. The round table discussion were conducted by Prof. M Shamsul Alam, Professor of the Dept. of EEE and Dean of the Faculty of Engineering, DIU.

The project overview and planning & design were presented by the keynote speakers Dr. Alam Hossain Mondal, Assoc. Professor of the Dept. of EEE and Mr. M A Razzaque Rupom, CEO of OS CLiCKS, respectively. A video demonstration on W-ECM was prepared and delivered by Dr. Marzia Zaman, E-Power, Kingston, Ontarioo, Canada.     
While Addressing as chief guest Mr. Nasrul Hamid said that we have no alternatives to reform our all citizen services without digitalization towards implementation of vision 2021. Power Division have already been digitalized most of its services. Lots of initiatives are under process of digitalization. The proposed model of ‘Web-based Electricity Cost Modeling’ will help to empower the consumers to ensure their rights, he added.
He urged that tendency of defamation about subsidy in electricity is not logical. Rather, we should treat this sort of subsidy as an investment. Aiming to develop citizen’s lifestyle, government has been providing this subsidy in the same fashion as that of public universities.  When number of consumer of electricity increases, human resource index increases automatically, he added.   
Addressing as the special guest Dr. Md. Ahmed Kaikaus said that power division is enough transparent in their works. That’s why TIB cannot find any corruption till now in power division. Ministry of Power, Energy and Mineral Resources keep their website always up to date.

A partial view of the audience at the workshop

Mr. Monowar Islam, Chairman, Bangladesh Energy Regulatory Commission (BERC) said that BERC is always concerned and active about consumers right issue. Minimum bill of electricity has been reduced due to BERC’s action.
Ms. Shahin Ahmed Chowdhury said that Bangladesh Energy & Power Research Council provides research fund on power & energy based research. Some of the funds already has been given to Dhaka University, BUET, IUB and many other universities so far. The BEPRC is also committed to provide fund to Daffodil International University for research purpose.


13


জাকাতের কাপড় বলে নির্দিষ্ট কিছু নেই। আপনার সাধ্য অনুযায়ী শাড়ি, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, শার্ট, প্যান্ট, ছোটদের রকমারি পোশাক জাকাত হিসেবে দিতে পারেন। জাকাতের জন্য ঢাকায় ভালো কাপড় কিনতে বিভিন্ন জায়গায় যেতে পারেন। রইল সেরকমই কিছু জায়গার খোঁজখবর।

লুঙ্গি

লুঙ্গির জন্য আপনি যেতে পারেন ইসলামপুরে। সেখানে ২০০-৩০০ টাকার মধ্যে ভালো মানের লুঙ্গি পেয়ে যাবেন। এ ছাড়া গুলিস্তান কিংবা বঙ্গবাজারে লুঙ্গি পাবেন ১৫০ টাকা থেকে। ৩৫০ টাকার মধ্যে লুঙ্গি পাবেন নুরজাহান মার্কেট ও ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটে । আপনি চাইলে লুঙ্গি ফার্মগেট মার্কেট থেকেও নিতে পারেন, সে ক্ষেত্রে দাম পড়বে ২০০-৩৫০ টাকা। গ্রীনরোডের ঢাকা আহসানিয়া তাঁতঘরে লুঙ্গি মিলবে ২৩০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকার মধ্যে।

শাড়ি

ইসলামপুরে জাকাতের জন্য শাড়ি পাবেন ৩০০ থেকে ৩৮০ টাকায়। গুলিস্তান কিংবা বঙ্গবাজার থেকে শাড়ি কিনতে চাইলে পাবেন ২৫০-৩৫০ টাকার ভেতর। এ ছাড়া ফার্মগেট ও নিউমার্কেটে পাবেন ৩০০-৪৫০ টাকায়। নুরজাহান মার্কেটে পাবেন ছাপার শাড়ি, দাম শুরু ২৮০ টাকা থেকে। ঢাকা আহসানিয়া তাঁতঘরে জাকাতের শাড়ি পাবেন ৩৩০ থেকে ৬ হাজার টাকায়।

অন্যান্য পরিধেয় বস্ত্র

শাড়ি, লুঙ্গি ছাড়াও জাকাত হিসেবে প্যান্ট, শার্ট, থ্রি-পিছ, পাঞ্জাবি কিংবা জায়নামাজও দিতে পারেন চাইলে। আহসানিয়া তাঁতঘরে পাঞ্জাবি পাবেন ৩৮০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকায়; জাকাতের জন্য নিউমার্কেট ও নুরজাহান মার্কেটে থ্রি-পিছ পাবেন ৪০০ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে। জায়নামাজ কেনার জন্য আদর্শ হলো বায়তুল মোকাররম মার্কেট তবে নিউমার্কেট অথবা বঙ্গবাজারেও পেয়ে যাবেন ভালো জায়নামাজ। বাংলাদেশি জায়নামাজ আপনি ১০০ টাকায় পেয়ে যাবেন আর বাইরে থেকে আমদানি করা জায়নামাজ পাবেন ১৫০ থেকে ১০০০ টাকার ভেতর। এ ছাড়া বাচ্চাদের শার্ট, প্যান্ট কিংবা গেঞ্জির সেট ২০০- ৪৫০ টাকায় পাবেন নিউমার্কেট, বঙ্গবাজার ও ফার্মগেট মার্কেটে।

14

গরম পড়লেই শরীরে পানির চাহিদা বাড়ে। উচ্চ রক্তচাপ কমানোসহ তৃষ্ণা মেটাতে নারকেল দুধ দারুণ কার্যকর উপায় হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, নারকেল দুধে দারুণ উপকার। রান্নায় এ দুধের ব্যবহার তো অনেকের জানা। এ দুধ খেলে শরীর ঠান্ডা হয় এবং আর্দ্র থাকে। অন্য দুধের চেয়ে এটি পেটের জন্য ভালো ও প্রাকৃতিক মিষ্টিযুক্ত।

যাঁরা ল্যাকটোজ সহ্য করতে পারেন না, তাঁদের জন্য দারুণ বিকল্প এটি। এটি মস্তিষ্কের জন্যও দারুণ উপকারী। এতে ব্যথানাশক উপাদানও আছে। এতে লরিক অ্যাসিড আছে, যা শিশুখাদ্যে ব্যবহৃত হয়। তাই যাঁরা গরমে আম বা স্ট্রবেরির শরবত তৈরি করবেন, তাঁরা নারকেল দুধ ব্যবহার করতে পারবেন। এর বাইরে ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও এ দুধ উপকারী। এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে নারকেল দুধের আরও কিছু গুণের কথা উঠে এসেছে। জেনে নিন এসব গুণ সম্পর্কে:

গরমের আরাম: গরমে হিট স্ট্রোক, হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যা, ক্লান্তি, পেশি ব্যথার মতো নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। নারকেল দুধ শরীরের জন্য ইলেকট্রোলাইট হিসেবে কাজ করে। ইলেকট্রোলাইটের সুষম ভারসাম্য শরীরের কোষ ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গের স্বাভাবিক কার্যক্রম ঠিক রাখে।

সহজে হজম: নারকেল দুধ খুব সহজে হজম হয়। তাই যাঁরা ল্যাকটোজ বা অন্য দুধ খেতে পারেন না, তাঁদের জন্য এটি দারুণ বিকল্প।

রক্তচাপ কমায়: নারকেল দুধ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। কারণ, এতে আছে পটাশিয়াম, যা রক্তচাপ কমাতে দারুণ কার্যকর উপাদান।

রক্তাল্পতা দূর করে: নারকেল দুধে আছে প্রচুর আয়রন, যা রক্তাল্পতা দূর করতে সাহায্য করে।

ওজন কমায়: নারকেল দুধে আছে প্রচুর ডায়েটারি ফাইবার, যা পেট ভরা রাখে এবং অতিরিক্ত খাওয়া কমাতে পারে। নারকেল দুধ খেলে তাই ওজন কমে।

দাঁতের জন্য উপকারী: নারকেল দুধে আছে প্রচুর ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস। তাই এটি দাঁত ও হাড়ের জন্য উপকারী।

শরীর আর্দ্র রাখে: গরমে শরীর আর্দ্র রাখতে সাহায্য করে নারকেল দুধ। এক গ্লাস নারকেল দুধ খেলে সারা দিনের ক্লান্তিভাব দূর হতে পারে।

ত্বকের জন্য ভালো: ত্বক ও চুলের জন্য দারুণ উপকারী নারকেল দুধ। এতে থাকা নানা রকম ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ ত্বক সুস্থ রাখে এবং চুল শক্ত করে।

কীভাবে তৈরি করবেন
প্রথমে নারকেল কুরিয়ে নিতে হবে। এরপর তা ব্লেন্ড করতে হবে। কিছুটা গরম পানি এতে যুক্ত করে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে। এতে নারকেল কিছুটা নরম হবে। ওই মিশ্রণকে এরপর আরও ব্লেন্ড করে দুধের মতো করে নিতে হবে। এরপর তা ছেঁকে তরল অংশটুকু আলাদা করে নিতে হবে। দানাদার অংশ নারকেলের ময়দা হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। নারকেল দুধ ঠান্ডা হলে তা খাওয়া যাবে। এ ছাড়া সংরক্ষণ করতে চাইলে বায়ুরোধী কোনো পাত্রে রাখতে হবে। রেফ্রিজারেটরে চার দিন পর্যন্ত এ দুধ ভালো থাকে

15


গরমের দিনে দু-তিনটির বেশি খেজুর না খাওয়ার কথা বলছেন পুষ্টিবিদেরা। তাঁরা বলছেন, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থায় শরীর ঠিক রাখতে একটু দেখেশুনে খাওয়াই ভালো। যেসব খাবার শরীর ঠান্ডা ও আর্দ্র রাখে, সেসব খাবারই খাওয়া দরকার। কিন্তু কিছু খাবার আছে, যা শরীর গরম করে। সেসব খাবার পরিমিত খাওয়া উচিত।

এর মধ্যে খেজুর অন্যতম। তবে খেজুর খাওয়ার আগে তা বুঝেশুনে খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। বারডেম হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ ও বিভাগীয় প্রধান শামছুন্নাহার নাহিদ বলেছেন, যাঁদের ডায়াবেটিস আছে, তাঁদের খেজুর বুঝেশুনে, চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে খেতে হবে। আর স্বাভাবিক মানুষের ক্ষেত্রেও পরিমিত খেজুর খেতে হবে।

একই মত ভারতীয় অনেক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের। তাঁদের মতে, খেজুর শীতকালে খাওয়া ভালো। গরমকালে খেজুর বেশি না খাওয়ার পরামর্শ দেন তাঁরা। গরমকালে খেজুর খাওয়ার ও খেজুরের গুণাগুণ নিয়ে এনডিটিভি অনলাইনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

বারডেম জেনারেল হাসপাতালের জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদ শামছুন্নাহার নাহিদ বলেন, খেজুরের মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম, সালফার, আয়রন, পটাশিয়াম, ফসফরাস, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন বি-৬, ফলিক অ্যাসিড, আমিষ, শর্করা। তাই খেজুর শুধু সুস্বাদুই নয়, পুষ্টিকরও বটে৷ তবে যাঁদের রক্তে চিনির পরিমাণ বেশি, শুধু তাঁদের বেলায় খেজুর খাওয়ায় খানিকটা বিধিনিষেধ আছে।

জেনে নিন খেজুরের গুণাগুণ

১. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার পাশাপাশি অন্ত্রের অন্যান্য সমস্যা দূর করে
২. খেজুরে থাকা প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের কারণে হাড় মজবুত হয়
৩. রক্তাল্পতা দূর করার দারুণ এক উৎস খেজুর
৪. যেকোনো ধরনের অ্যালার্জি বা চুলকানি দূর করতে করতে সহায়তা করে
৫. খেজুর শক্তিবর্ধক
৬. হৃদ্‌যন্ত্র সুস্থ রাখতে কার্যকর
৭. ডায়রিয়া-জাতীয় সমস্যা দূর করতে পারে খেজুর।

শামছুন্নাহার নাহিদ আরও বলেন, খেজুর হিমোগ্লোবিন বাড়ায় এবং এতে আয়রন বেশি। এ ছাড়া এতে ‘এনার্জি’ প্রচুর। তাই স্বাভাবিক মানুষের ক্ষেত্রে গরমের দিনে দুটি বা তিনটি খেজুরই যথেষ্ট।

ভারতের ফরটিস হাসপাতালের পুষ্টিবিদ সিমরান সাইনি এনডিটিভি অনলাইনকে বলেছেন, খেজুর যেহেতু শরীরে তাপ উৎপন্ন করে, তাই দিনে দুই বা তিনটির বেশি খাওয়া ঠিক নয়। এ কারণে গরমের চেয়ে শীতের সময় খেজুর খাওয়া ভালো। কারও শরীরে যদি বেশি মাত্রায় লৌহ বা আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয়, তবে তিনি দিনে দুই বা তিনটির বেশি খেজুর খেতে পারেন।

ভারতের আরেক পুষ্টিবিদ শিল্পা অরোরা তাঁর সঙ্গে একমত। তিনি বলেন, ‘গরমেও পরিমিত মাত্রায় খেজুর খেলে সমস্যা হয় না। তবে দুই বা তিনটির বেশি খাওয়া ঠিক হবে না। খেজুর খাওয়ার সঙ্গে অন্যান্য খাবারের ভারসাম্য ঠিক রাখতে হবে।’

পুষ্টিবিদদের পরামর্শ হচ্ছে, মৌসুমি শরবতের সঙ্গে বা যে আবহাওয়ায় খেজুর ভালো হজম হয়, সেই আবহাওয়াতে তা খেতে হবে। খেজুর কয়েক ঘণ্টা ভিজিয়ে রেখে খেতে পারেন। দুধের সঙ্গেও খেজুর খাওয়া যায়।

পুষ্টিবিদ শামছুন্নাহার নাহিদ আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের দেশের মানুষের খাদ্যাভ্যাসের প্রেক্ষাপট যেহেতু ভিন্ন, তাই খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রেও ভিন্নতা থাকতে পারে। তবে খেজুর খাওয়ার ক্ষেত্রে গরমের দিনে দুই বা তিনটি খেজুর খাওয়ার পরামর্শ ঠিকই আছে।

Pages: [1] 2