Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - nmoon

Pages: 1 [2] 3 4 ... 10
16
আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগে ইলেকট্রনিকস নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন উদ্ভাবক গর্ডন মুর। ১১ মে সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় গর্ডন মুরের দেওয়া ‘মুর’স ল’ নামের এই সূত্রের পঞ্চাশ বছর পালন করল ইনটেল।
মুর’স ল এর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে চিপ নির্মাতা ইনটেল এই সূত্রের প্রভাব সম্পর্কে জানিয়েছে। এ ছাড়াও ওই সূত্রের উদ্ভাবক গর্ডন মুর আগামী পাঁচ দশকে ইলেকট্রনিকস কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সে সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন।
গর্ডন মুরের মতে, একটি নির্দিষ্ট চিপের মধ্যে ট্রানজিস্টরের সংখ্যা প্রতি দুই বছরে দ্বিগুণ হবে, তবে এর আকার বাড়বে না। মুর এ তত্ত্ব দেন ১৯৬৫ সালে, যা কি না মুর’স ল নামে পরিচিত। মুরের এ তত্ত্ব শুধু আকারের জন্য ব্যবহৃত হয় না। এ তত্ত্ব মাইক্রোচিপ বা প্রসেসরের উপাত্ত প্রক্রিয়া করার গতি ও মেমোরি এমনকি ডিজিটাল ক্যামেরার পিক্সেলের সঙ্গেও সম্পর্কযুক্ত। তাঁর এ তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে মাইক্রোচিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের মাইক্রোচিপ ভিত্তিক গবেষণার লক্ষ্য স্থির করে। ইলেকট্রনিকসের জগতে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বর্তমান সময়ের ডেস্কটপ কম্পিউটারের আকার ছোট হওয়ার অন্যতম কারণ মুরের এই তত্ত্ব।

পঞ্চাশ বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠানে মুর তাঁর সূত্র আর কতদিন টিকে থাকবে তা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। মুর বলেন, আর বড়জোর ১০ বছর টিকবে মুর’স ল। গত ৫০ বছর ধরে যে মুর’স ল টিকে ছিল সেটাই সত্যিই আনন্দের। কিন্তু কোনো সূত্র চিরস্থায়ী নয় বলেও তিনি মনে করেন।
যেকোনো ডিজিটাল যন্ত্রের প্রাণ হচ্ছে মাইক্রোচিপ। মাইক্রোচিপ না হলে এত ছোট কম্পিউটার আদৌও তৈরি করা যেত না। আর এটি সম্ভব হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ইনটেল করপোরেশন (ইনটিগ্রেটেড ইলেকট্রনিকস করপোরেশন) নামের জনপ্রিয় মাইক্রোচিপ ও মাইক্রোপ্রসেসর তৈরিকারক প্রতিষ্ঠানের কারণে। আর এ প্রতিষ্ঠান যাঁরা তৈরি করছেন, তাঁদের অন্যতম গর্ডন আরলে মুর; যিনি সবার কাছে মুর হিসেবে বেশি পরিচিত। গর্ডন মুর ১৯২৯ সালের জানুয়ারি মাসের ৩ তারিখে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সানফ্রানসিসকো শহরে জন্মগ্রহণ করেন। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে স্নাতক ডিগ্রি নেন। এরপর তিনি ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (ক্যালটেক) থেকে রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। মুর তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন ট্রানজিস্টরের জনক উইলিয়াম শকলের সঙ্গে বেকম্যান ইন্সট্রুমেন্টস প্রতিষ্ঠানে। ১৯৬৮ সালে গর্ডন মুর রবার্ট নায়েসের সঙ্গে ইনটেল করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন। ৮৬ বছর বয়সী মুর বর্তমানে ইনটেলের চেয়ারম্যান ইমেরিটাস হিসেবে রয়েছেন।
৫০ পূর্তিতে ইনটেল জানিয়েছে, মুরের সূত্র কম্পিউটিং প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দ্রুত উন্নতি করতে সাহায্য করেছে এবং অভূতপূর্ব আর্থিক সুবিধা ও সামাজিক পরিবর্তন ঘটিয়েছে।
বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইএইচএসের প্রতিবেদন অনুসারে, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনে ও উৎপাদনশীলতার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মুর’স ল ভূমিকা রেখে চলেছে। উৎপাদনশীলতা যত বেড়েছে তত খরচ কমেছে এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তত নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। মুর’স ল গত দুই দশকে জিডিপিতে ১১ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি ভূমিকা রেখেছে।
আইএইচএসের সেমিকন্ডাক্টার ও কম্পোনেন্টস বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডেল ফোর্ড বলেন, মুর’স ল অধিক কার্যকরী ধারণাদায়ক টুল হিসেবে গত অর্ধ শতাব্দী ধরে প্রমাণিত হয়েছে যা উদ্ভাবন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনে ভূমিকা রেখেছে। (সিআইও টুডে, ওয়ালস্ট্রিট জার্নাল)

17
আবরণটি নিজে নিজেই পরিচ্ছন্ন থাকতে পারবে। সহাবস্থান করবে তেলের মতো পদার্থের সঙ্গে। সিরিশ কাগজ দিয়ে ঘষলেও এটির বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন হবে না। কচুরপাতার পানিরোধী বৈশিষ্ট্যে অনুপ্রাণিত হয়ে বিশেষ ধরনের এই আবরণ তৈরি করেছেন যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউসিএল) গবেষক ইয়াও লু এবং তাঁর তত্ত্বাবধায়ক ও একই প্রতিষ্ঠানের অজৈব রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ক্লেয়ার কারমল্ট।
এই রঙের আবরণ দেওয়া যাবে কাপড়চোপড়, কাগজ, কাচ এবং ইস্পাতের ওপর। এমনকি আঠালো অন্যান্য পদার্থের সঙ্গে মিশিয়ে দিলেও রংটি নিজেকে পৃথক বা পরিচ্ছন্ন রাখতে পারে। এই আবরণ তৈরির কাজে গবেষকেরা টাইটানিয়াম ডাই-অক্সাইডের অতি ক্ষুদ্র কণা বা ন্যানোপার্টিকেল ব্যবহার করেছেন। প্রচলিত বিভিন্ন আবরণ সাধারণত পানি বা তেলের সংস্পর্শে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু নতুন রঙের আবরণটি পানিতে ডুবিয়ে রাখলেও নষ্ট হবে না বলে দাবি করছেন গবেষকেরা।
পদ্ম বা কচুগাছের পাতা পানিতে কোনোভাবেই ভেজে না। উদ্ভিদের এই বৈশিষ্ট্য ইয়াওকে বিস্মিত করে। তিনি রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে এসব পাতার উপরিতলের মতো আবরণ তৈরির চেষ্টা শুরু করেন। ইয়াও এবং কারমল্ট বলেন, তাঁদের তৈরি নতুন আবরণটি স্থায়ী এবং ক্ষয়ের বিরুদ্ধে একধরনের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারে। কাপড়চোপড় ও মোটরগাড়িসহ দৈনন্দিন জীবনে অনেক ক্ষেত্রে এটি প্রয়োগ করা যেতে পারে। সম্পূর্ণ পানিরোধী আবরণে পানির ফোঁটাগুলো গড়িয়ে যায়। তখন সেই পানির সঙ্গে সঙ্গে ময়লা, ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়াও পরিষ্কার হয়ে যায়। ব্যাপারটা অনেকটা ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের কাজের মতো।
এ গবেষণা প্রতিবেদন সায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে। কারমল্ট বলেন, উপরিতলে পড়ার পর পানি প্রায় বর্তুলাকার বল তৈরি করে। সেটা গড়িয়ে যাওয়ার সময় ময়লা ও জীবাণুগুলো শুষে নেয়। কাচ ও ধাতুর মতো শক্ত জিনিসের ওপরে নতুন ওই আবরণ দিতে পারলে পরিচ্ছন্ন রাখার কাজটা অনেক সহজ হয়ে যায়। পাশাপাশি সাধারণ আঠালো পদার্থের সঙ্গে মিশিয়ে সুতা বা কাগজের উপরেও এই আবরণ দেওয়া যেতে পারে।
আবরণটি তৈরির জন্য গবেষকেরা দুই ধরনের টাইটানিয়াম ডাই-অক্সাইড ন্যানোপার্টিকেলের সঙ্গে ফ্লুরোসিলেনের তৈরি মোমজাতীয় পদার্থ ব্যবহার করেন। কারমল্ট বলেন, নিজে নিজে পরিচ্ছন্ন থাকার উপযোগী এই আবরণ ব্যাপকভাবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় যে সমস্যা হতে পারে তা হলো প্রতিদিনের ক্ষয় রোধ করা। তবে প্রচলিত অন্যান্য আবরণের চেয়ে তাঁদের তৈরি নতুন আবরণটি অনেক বেশি টেকসই। আশা করা যায়, ইউসিএলের গবেষকেরা এটিকে আরও উন্নত রূপ দিতে সমর্থ হবেন।
ইয়াও লু এবং কারমল্টের গবেষণায় সহায়তা করেন ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডন এবং চীনের দালিয়ান ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা মনে করেন, নতুন আবরণটির তুলনায় প্রচলিত অন্য আবরণগুলোর রাসায়নিক গঠন দুর্বল। কারণ, সেগুলো ভাঁজ করলে বা সিরিশ কাগজ দিয়ে ঘষলে সহজেই নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু নতুন আবরণটি এসব বাধা মোকাবিলা করতে পারে। মোটরগাড়ির আবরণ তৈরি করা এবং অন্যান্য শিল্পক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা বেশ উজ্জ্বল। আবার হাসপাতাল থেকে সংক্রামিত বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধেও এই আবরণ সহায়ক হতে পারে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রপাতি বা উপকরণে জীবাণুরোধী আবরণ দেওয়ার জন্য টাইটানিয়াম ডাই-অক্সাইডের ন্যানোপার্টিকেল বিশেষ কার্যকর হতে পারে।
সূত্র: রয়টার্স ও সায়েন্স ডেইলি

18
অপরাধীর গতিবিধি অণুজীবের মাধ্যমে জানা যাবে বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। তাঁরা বলেছেন, কোনো অপরাধ সংঘটনের সময় ডিএনএর পাশাপাশি বিভিন্ন অণুজীবের সাহায্যেও তাদের গতিবিধি জানা যাবে। মাইক্রোবায়োম সাময়িকীতে বিজ্ঞানীদের গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মানুষের জুতা এবং ফোনে একধরনের ব্যাকটেরিয়া বসবাস করে। সেগুলো ব্যবহার করে কোনো ব্যক্তির অতীত গতিবিধি নির্ণয় করা যেতে পারে। আর এই প্রক্রিয়া কোনো অপরাধীকে শনাক্ত করার কাজে বিশেষ সহায়ক হতে পারে।
ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও খালি চোখে দেখা যায় না—এমন অনেক অণুজীব বা জীবসত্তা এই পৃথিবীকে ঘিরে রেখেছে। এগুলো আমাদের ত্বক থেকে শুরু করে শরীরের ভেতরের নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গজুড়ে বসবাস করছে। যখন কোনো ব্যক্তি অন্য লোকজন, পোষা প্রাণী, বাতাস, ভূপৃষ্ঠসহ বিভিন্ন তলের মাধ্যমে এসব অণুজীবের সংস্পর্শে আসেন, সেগুলো তাঁর ব্যক্তিগত পারিপার্শ্বিক ক্রিয়ায় যুক্ত হয়। বিষয়টি ওই ব্যক্তির মাইক্রোবায়োম নামে পরিচিত।
এ রকম অণুজীবের সঙ্গে বসবাসের ব্যাপারটা দ্বিমুখী রাস্তার মতো। যখন আপনি বাড়ির দিকে যাবেন, বিভিন্ন জিনিস আপনাকে স্পর্শ করে যেতে হবে। আর সেগুলোতে আপনার শরীরে বসবাসকারী কোনো কোনো অণুজীব থেকে যাবে। সাম্প্রতিক গবেষণায় কোনো কোনো ব্যক্তির নিজস্ব অণুজীবের বৈশিষ্ট্য বা ‘মাইক্রোবায়াল স্বাক্ষর’ শনাক্ত করা হয়েছে তাঁর স্পর্শ করা জিনিসপত্র থেকে, যেমন: কম্পিউটারের কিবোর্ড।
গবেষক দলটির প্রধান সাইমন ল্যাক্স বলেন, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের শরীরের অণুজীবগুলোর বৈশিষ্ট্য বদলে যায় কি না—সেটা এখন তাঁরা দেখতে আগ্রহী।
মানুষ নিকট অতীতে কোন কোন এলাকায় চলাফেরা করেছে, তা চিহ্নিত করার ব্যাপারে অণুজীবগুলো কতটা সহায়ক হতে পারে—সেটা নির্ণয়ের জন্য ল্যাক্স ও তাঁর সহযোগীরা দুই ব্যক্তির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করেন। তাঁদের মুঠোফোন, জুতা এবং হেঁটে যাওয়া রাস্তা ও মেঝেগুলো দুই দিন ধরে ঘণ্টায় ঘণ্টায় যাচাই করে দেখা হয়। গবেষণাটি তুলনামূলক সীমিত পরিসরের হলেও বিজ্ঞানীরা প্রতিটি স্থান থেকে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া শনাক্ত করতে সমর্থ হন। ওই দুই ব্যক্তির জুতা এবং রাস্তা বা মেঝে থেকে সংগৃহীত অণুজীবের বৈশিষ্ট্যে অনেক মিল পাওয়া যায়। জুতা এবং মেঝের মধ্যে দ্রুত সংস্পর্শের কারণেই এমনটা ঘটেছে বলে বিজ্ঞানীরা মনে করেন। ল্যাক্স বলেন, একজন মানুষ যখন নিজের ঘর থেকে তাঁর বন্ধুর কক্ষে যান, তখন তাঁর ব্যক্তিগত জিনিসপত্রে অণুজীবগুলোর অবস্থান ও গঠনগত পরিবর্তন শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
তবে অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞানী লরা ওয়েরিচ বলেন, ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে চলাফেরা করার কারণে মানুষের জুতার অণুজীবগুলো দ্রুত পরিবর্তিত হলে দীর্ঘদিন ধরে ওই ব্যক্তির গতিবিধি নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই কোনো অপরাধ সংঘটনের কয়েক সপ্তাহ পর নির্দিষ্ট কোনো জায়গায় কারও উপস্থিতি চিহ্নিত করতে এই পদ্ধতির সাফল্য কমে যেতে পারে।
আবার মুঠোফোনে লেগে থাকা বিভিন্ন অণুজীবের সাহায্যে কোনো ব্যক্তির গতিবিধি নির্ণয় করাটা আরও বেশি কঠিন। কারণ হিসেবে গবেষকেরা জানিয়েছেন, মুঠোফোনে বসবাসকারী অণুজীবগুলোর বৈশিষ্ট্য তুলনামূলক দ্রুত পাল্টে যায়। কানাডার ভ্যাঙ্কুভার এবং যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ও ওয়াশিংটন ডিসিতে তিনটি সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী ৮৯ ব্যক্তির জুতা ও মুঠোফোনের অণুজীবগুলোর নমুনা পরীক্ষা করেন গবেষকেরা। তবে একই পরিবেশের অণুজীবগুলোর মধ্যে মিল থাকার সম্ভাবনা বেশি হওয়ায় ওই গবেষণা নিয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীদের কেউ কেউ। তবে মার্কিন গবেষকেরা মনে করেন, শহুরে পরিবেশে সুনির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মধ্যে মাইক্রোবায়োমনির্ভর পদ্ধতি অপরাধ কর্মকাণ্ডের তদন্তে ভবিষ্যতে বিশেষ সহায়ক হতে পারে।
সূত্র: সিডনি মর্নিং হেরাল্ড।

19
বর্তমান সময়ে মসুর ডাল সারা পৃথিবী জুড়েই অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি খাবার। সাধারণভাবে মসুর ডাল রান্না করে খাওয়ার পাশাপাশি এটা দিয়ে তৈরি করা হয় নানা রকমের পুষ্টিকর ও মুখরোচক খাবার। যেমন - ডালের চচ্চড়ি, ডালনা, নিরামিষ, পিঁয়াজু, ডালপুরি, ডালের স্যুপ, আম ডাল, পুঁই ডাল ইত্যাদি। মসুর ডাল প্রোটিনের আধার বলে একে মাংসের বিকল্প হিসেবেও ধরা হয়। আর তাই নিরামিষ ভোজীদের কাছে এটি অত্যন্ত পছন্দের একটি খাবার।
মসুর ডালের পুষ্টিগুণ:
মসুর ডাল শুধু সুস্বাদুই নয় এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ। যেমন, খনিজ পদার্থ, আঁশ, খাদ্যশক্তি, আমিষ, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ক্যারোটিন, ভিটামিন বি-২ ও শর্করা ইত্যাদি।
স্বাস্থ্য উপকারিতা:
১। কলেস্টেরল কমায়:
মসুর ডালে উচ্চ মাত্রার এটা দ্রবণীয় ফাইবার থকে যা রক্তের কলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। এটা আপনার শরীরের কলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে দিয়ে আপনার ধমনীকে পরিষ্কার রাখে।
২। হার্ট ভালো রাখে:
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে নিয়োমিত মসুর ডালের মতো উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খেলে হার্টের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। তাছাড়া মসুর ডাল ফলেট (folate) এবং ম্যাগনেসিয়াম এর একটা বিরাট উত্স, যা হার্টকে আরও বেশি তারুন্য পেটে সহায়তা করে। ম্যাগনেসিয়াম শরীরের সর্বত্র রক্ত, অক্সিজেন এবং পুষ্টি প্রবাহ করতে সাহায্য করে।
৩। হজমে সহায়তা করে:
মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে খাদ্য আঁশ রয়েছে। ফলে এটি হজমে সহায়তা করে। এছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধের জন্য এটি একটি আদর্শ খাবার।
৪। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ কমায়:
মসুর ডালের ফাইবারে আরো অনেক উপকারিতা রয়েছে। এটি শরীর চিনির পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, তাছাড়া এটি উচ্চ রক্তচাপ কমাতেও গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৫। গর্ভবতী মায়েদের জন্য উপকারী:
ডালে একসঙ্গে আয়রন ও ফলেট দুটিই পাওয়া যায়। গর্ভবতী মায়েদের জন্য এই দুটি উপাদান বেশ প্রয়োজনীয়। সেই সঙ্গে আয়রন রক্তশূন্যতা প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
যাঁরা শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে চান তাঁরা ভাতের পরিমাণ কমিয়ে তার বদলে নিয়মিত ডাল খেতে পারেন। এতে ক্ষুধা হ্রাস পাওয়াসহ ভরাপেটের অনুভূতি থাকবে দীর্ঘক্ষণ। এছাড়াও মসুর ডাল খারাপ কোলেস্টেরলকে কমিয়ে বাড়িয়ে দেয় ভালো কোলেস্টেরলের পরিমাণ।

20
৬. লবঙ্গ
লবঙ্গ পাকস্থলীর অ্যাসিডিটি ও গ্যাস দূর করতে পারে এর বায়ু নিরোধক ক্ষমতার জন্য। ২/৩ টি লবঙ্গ মুখে নিয়ে চুষলে বা সমপরিমান এলাচ ও লবঙ্গ গুঁড়ো খেলে অ্যাসিডিটির জ্বালা এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়।
৭. জিরা
এটি হজমক্রিয়ায় চমৎকার কাজ করে। দেড়কাপ জলে এক চা চামচ করে জিরা, ধনে ও মৌরী গুঁড়া এবং সামান্য চিনি মিশিয়ে খালি পেটে খেতে পারেন অথবা এক গ্লাস জলে সামান্য জিরার গুঁড়া মিশিয়ে বা ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে প্রতিবেলা খাবার পর খেতে পারেন।
৮. আদা
আদার রস পাকস্থলীর অ্যাসিডিটির প্রশমিত করতে সাহায্য করে। অ্যাসিডিটির সময় এক টুকরো আদা মুখে নিয়ে চুষলে বা এক কাপ জলে কয়েক টুকরো আদা দিয়ে কিছুক্ষন ফুটিয়ে রেখে খেতে পারেন কিংবা শুধু এক চা চামচ করে আদার রস দিনে ২/৩ বার খেলে অ্যাসিডিটির থেকে মুক্তি পেটে পারেন।
৯. তালের গুড়
তালের গুড় খাবারকে হজমে সাহায্য করে এবং হজমক্রিয়াকে ক্ষারধর্মী করে অ্যাসিডিটি কমায়। প্রতিবেলা খাবার পর ছোট এক টুকরো গুড় মুখে নিয়ে চুষতে থাকবেন যতক্ষন না অ্যাসিডিটির জ্বালা কমে। তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য এটা প্রযোজ্য নয়।
১০. মৌরী
পুদিনা পাতার মতো মৌরীরও রয়েছে বায়ু নিরোধক ক্ষমতা যার ফলে খাবার হজম করতে এবং পেটের গ্যাস দূর করতে এটা বেশ কার্যকরী। ভারী ও ঝাল খাবারের পর কিছু মৌরী মুখে দিয়ে চুষতে পারেন। আবার এক বা দুই চা চামচ মৌরী এক কাপ গরম পানিতে দিয়ে কিছুক্ষন রেখে ছেঁকে নিয়ে দিনে কয়েকবার খেতে পারেন।
১১. ঠাণ্ডা দুধ
পাকস্থলীর গ্যাস্ট্রিক এসিডকে নিয়ন্ত্রণ করে অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি দেয় দুধ। দুধে থাকা ক্যালসিয়াম পাকস্থলীতে অ্যাসিড তৈরিতে বাধা দেয়। শুধুমাত্র এক গ্লাস ঠাণ্ডা দুধ পান করেই অ্যাসিডিটির সমস্যা প্রতিরোধ বা উপশম করা সম্ভব।
সাবধানতা
যখনই আপনি অ্যাসিডিটির সমস্যায় পরবেন তখন এই পদ্ধতিগুলোর সাহায্য নিয়ে দেখতে পারেন কিন্তু যদি দেখেন ২/৩ দিন পরও আপনার সমস্যা থেকেই যাচ্ছে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

21
অ্যাসিডিটির সমস্যায় কম বেশি আমাদের সবাইকেই ভুগতে হয়। আমাদের পাকস্থলিতে অতিরিক্ত বা ভারসাম্যহীন অ্যাসিড উৎপন্ন হওয়ার ফলে পেট ব্যথা, গ্যাস, বমিবমি ভাব, মুখে দুর্গন্ধ বা অন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সাধারণত বেশি ঝাল খাবার খাওয়া, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, দুঃচিন্তা, ব্যায়াম না করা বা অতিরিক্ত মদ্য পানের ফলে অ্যাসিডিটি হতে পারে।এই অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তির জন্য অনেকেই অনেক ওষুধ খান৷কিন্তু ওষুধ ছাড়াও ঘরোয়া পদ্ধটিতেও এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তির ১১টি অসাধারণ কৌশল।
১. গরম পানি
সাধারণত কুসুম গরম পানি রাতে ঘুমানোর আগে এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
২. দারচিনি
হজমের জন্য খুবই ভাল, এটি প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড যা পেটের গ্যাস দূর করে। এক কাপ জলে আধা চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া দিয়ে ফুটিয়ে নিয়ে দিনে ২/৩ বার এটা খেতে পারেন। এছাড়া চাইলে সুপ/সালাদে দিয়েও খেতে পারেন।

৩. পুদিনা পাতা
এর বায়ুনিরোধক ও প্রশান্তিদায়ক গুণ নিমিষেই বুক ও পেট জ্বালাপোড়া করা, পেট ফাঁপা ও বমি ভাব উপশম করে। তাই অ্যাসিডিটির লক্ষণ দেখা দিলেই কয়েকটি পুদিনা পাতা মুখে নিয়ে চিবিয়ে খেয়ে ফেলতে হবে বা খেতে পারেন চা বানিয়ে। এক কাপ জলে ৪/৫ টি পুদিনা পাতা দিয়ে ফুটিয়ে খেতে পারেন বা চাইলে তাতে একটু মধুও যোগ করতে পারেন।
৪. মাঠা
সারাদিনে কয়েকবার শুধু মাঠা খেলে বা সাথে সামান্য গোলমরিচ গুঁড়ো অথবা এক চা চামচ ধনেপাতার রস মিশিয়ে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায় অথবা আধা থেকে এক চা চামচ মেথি সামান্য জলে পেস্ট করে এক গ্লাস মাঠার সাথে মিশিয়ে খেলে অ্যাসিডিটির পেট ব্যথা দূর হয়।
৫. আপেল সাইডার ভিনেগার
এর ক্ষারধর্মী প্রভাব পাকস্থলীর অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। ১-২ চা চামচ অশোধিত ভিনেগার এক কাপ জলে মিশিয়ে খাবার আগে বা দিনে এক বা দুবার খেতে পারেন।

22
খাবার খাওয়ার পর মানব দেহ শক্তিশালী হয়ে উঠবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অনেক সময় মানব দেহ ক্লান্ত হয়ে যেমন রাতে গভীর ঘুমালেও সকাল থেকেই দেহে আলস্য ভর করে ? দুপুরের দিকে আবারো চোখে ঘুম জড়িয়ে আসে?
আর এসব কারণগুলোকেই লক্ষ্য করে খাদ্য বিশেষজ্ঞ ডন ন্যাপোলি বলেছেন, সম্ভবত আপনার খাদ্য তালিকায় সমস্যা হয়েছে। কারণ এমন খাবার আছে যা দেহ ক্লান্ত করে দেয়।
তাই আজ জেনে নিন ক্লান্ত হয়ে পরার এমনই ৬টি খাবারের কথা..
কলা
নানা পুষ্টি গুণে সমৃদ্ধ কলা দারুণ উপকারী হলেও তা আপনার মাঝে ক্লান্তিভাব আনবে। কলার মতো অতিমাত্রায় ম্যাগনেশিয়াম রয়েছে এমন সব খাবারই ক্লান্তি ভাব আনে। এর কারণ হলো, এ খনিজ উপাদানটি পেশি শিথিল করে দেয়। তাই জিরিয়ে নিতে চাইলে কলা খান।
সাদা রুটি-ভাত
যদি উচ্চমাত্রার গ্লাইসেমিক ইনডেক্স এর খাদ্য (সাদা ভাত, রুটি ইত্যাদি) বেশি বেশি খান তাহলে ক্লান্ত বোধ করবেন। এগুলোতে ফাইবার কম থাকে। তাই খুব দ্রুত ভেঙে যায় এবং আপনার এনার্জিকে ধীরে ধীরে বাড়ায়। অন্যদিকে বাদামি রুটি বা ভাতে আপনার ক্লান্তিভাব আসবে না।
লাল মাংস
বেশি লাল মাংস খেলে অবসন্ন বোধ হতে পারে। একে ভাঙতেই অতিমাত্রায় শক্তি ক্ষয় করতে হয় দেহকে। তাই একবার এসব মাংস খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গোটা দেহ একে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ফলে দেহ হয়ে পড়ে ক্লান্ত। এ সময় ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড দেহ চাঙ্গা করে দেবে।
চেরি ফল
গবেষকরা গবেষণা করে দেখেছেন, চেরি ফল এবং চেরির জুস প্রাকৃতিকভাবেই ঘুমের ওষুধের কাজ করে। কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে মেলাটোনিন থাকে। তাই যে খাবারের সঙ্গেই চেরি খাবেন, আপনার ক্লান্তিবোধ হবেই।
মিষ্টি
উচ্চমাত্রার চিনি সমৃদ্ধ খাবার দেহ ক্লান্ত করে দেবে। এ খাবারকে রীতিমতো ‘ফুড কোমা’ বলে। তাই ডেজার্ট বা অন্য মিষ্টি খাবার কম খেতে হবে, চাঙ্গা থাকতে হলে।
কফি
অবাক হবেন, কফিও দেহ অলস করে দিতে পারে। যদিও আজীবন ধরে জেনে এসেছেন যে চাঙ্গা হতেই কফি লাগে। কফি খাওয়ার পর প্রথম এক বা ২ ঘণ্টা আপনি চাঙ্গা হয়ে থাকবেন। প্রতিদিন ২শ-৩শ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন খেলে চাঙ্গা বোধ করবেন। কিন্তু এর প্রভাব শেষ হয়ে গেলেই আপনি আবার ক্লান্ত হয়ে যাবেন।

23
গবেষণায় দেখা গেছে ভোর বেলা হার্ট এ্যাটাকের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। এ কথা অনেকেই জানে। কিন্তু নতুন কথা হচ্ছে, খুব সকালে হার্ট এ্যাটাক এবং স্ট্রোকের এর কারণ কি, সাম্প্রতি এক গবেষণায় গবেষকরা সে বিষয়টিও আবিষ্কার করেছেন।
সকাল বেলা রক্ত জমাট বেঁধে থাকে, ফলে মস্তিষ্কে ও হার্টে প্রোটিন পৌছাতে সময় লাগে। এ সময়ের মধ্যে হার্ট এটাক হয়ে যায়। বস্টনের ব্রিগহ্যাম অ্যান্ড উইমেন্স হসপিটাল অ্যান্ড ওরগ্যান হেল্থ অ্যান্ড সায়েন্স ইউনির্ভাসিটির একটি সমীক্ষা দাবি করেছে এমনটাই। গবেষকরা বলছেন, প্রোটিন, প্লাসমিনোজেন অ্যাকটিভিটের ইনহিবিটর-1 (PAI-1), কারণে সকালবেলা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেশি থাকে। গবেষক ফ্রাঙ্ক শিয়র জানিয়েছেন, সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ শরীরে PAI-1 সবথেকে বেশি মাত্রায় থাকে।
অন্য গবেষক স্টিভেন শি-র মতে, সকালবেলা মানুষের সার্কাডিয়ান সিস্টেমে PAI-1 সবথেকে বেশি মাত্রায় সঞ্চালিত হয়। হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হলে সেই সঞ্চালনের মাত্রা কম হয়। স্ট্রোক হলে মস্তিষ্কে রক্ত সঞ্চালনকারী ধমনী বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে প্রয়োজনীয় রক্ত মস্তিষ্কে পৌছতে পারে না। যে কোনও ধরণের স্ট্রোক পুরুষদের থেকে মহিলাদের জন্য বেশি ক্ষতিকারক বলেও মন্তব্য করেছেন গবেষকরা।-সূত্র: এক্সপ্রেস।

24
ব্যায়ামই ওজন কমানোর একমাত্র চাবিকাঠি নয়। অনেকেই মনে করেন ব্যায়াম হল ওজন কমানোর চাবিকাঠি কিন্তু গবেষনায় দেখা গেছে, এর চেয়ে বরং অস্বাস্থ্যকর খাবার দাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সুষম খাবার এবং শারীরিক সক্রিয়তার সম্মিলনেই একটা সুস্থ ও স্বাভাবিকজীবনযাপন করা সম্ভব।
গবেষণা সাময়িকীটির সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, ব্যায়াম বা নানা ধরনের শারীরিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় থাকাটা ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ ও স্মৃতিভ্রমের মতো নানা অসুখ-বিসুখ থেকে মুক্ত থাকার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও মুটিয়ে যাওয়া রোধে এর প্রভাব খুবই কম। কিন্তু নানা খাবারদাবার থেকে অতিরিক্ত শর্করা ও কার্বোহাইড্রেট কমাতে পারাটা মুটিয়ে যাওয়া কমাতে অনেক বেশি কার্যকর। বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
লন্ডনের খ্যাতনামা কার্ডিওলজিস্ট অসীম মালহোত্রাসহ এই বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, খাদ্যশিল্প সংশ্লিষ্টরা প্রচার করতে চান যে, ব্যায়াম অস্বাস্থ্যকর খাবারদাবারের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বাঁচতে সহায়তা করতে পারে। খাদ্যশিল্পের প্রচারণার এই কৌশলের তীব্র সমালোচনা করেন এই চিকিৎসক-গবেষকেরা।
খাদ্যশিল্পের এই প্রচার কৌশলের সঙ্গে বড় বড় তামাক কোম্পানির প্রচার কৌশলের 'অভাবনীয় মিল' রয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন এই গবেষকেরা। অবিলম্বে তারকাদের দিয়ে 'সুগারি ড্রিঙ্ক' পানে উৎসাহিত করা এবং খেলাধুলার সঙ্গে জাঙ্ক ফুড'-কে অনিবার্যভাবে সম্পর্কিত করা বন্ধেরও আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
নিজেদের বক্তব্যের সমর্থনে 'ল্যানসেট গ্লোবাল বারডেন অব ডিজিজ' কর্মসূচির গবেষণা ফলও তুলে ধরেছেন এই গবেষকেরা। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে তারা জানায় শারীরিক সক্রিয়তা না থাকা, ধূমপান করা বা অ্যালকোহলে আসক্তি থাকাটা সম্মিলিতভাবে স্বাস্থ্যের যতটা অবনতি ঘটাতে পারে কেবল অস্বাস্থ্যকর খাবারদাবার খাওয়াটাই তারচেয়ে বেশি অবনতি ঘটাতে সক্ষম।

জার্নাল অব স্পোর্টস মেডিসিনের সম্পাদকীয়তে প্রকাশিত এই মতের সঙ্গে দ্বিমত করেছেন খাদ্য ও পানীয় শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। ব্যায়াম বা শারীরিক কর্মকাণ্ডের সুবিধা প্রচারে খাদ্যশিল্পে এমন কোনো ষড়যন্ত্র' বা 'কৌশল' নেই বলে দাবি করেন যুক্তরাজ্যের একটি ফুড অ্যান্ড ড্রিঙ্ক ফেডারেশনের এক মুখপাত্র।
এদিকে, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড কেয়ার এক্সিলেন্স-এর অধ্যাপক মার্ক বেকার বলেছেন, ব্যায়াম করার উপকারিতাকে 'বাতিল করে দেওয়াটা খুবই বোকামি হয়ে যাবে।' তিনি আরও বলেন, 'সুষম খাবার এবং শারীরিক সক্রিয়তার সম্মিলনেই একটা সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব।'

25
আমাদের শরীরের সবচেয়ে কার্যকরী অঙ্গসমূহ মেরুদণ্ডের বিপরীতে অবস্থিত। কিডনি আমাদের শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। কারন, সাধারণত আমাদের শরীরের রক্ত ফিল্টার করার কাজ কিডনি করে থাকে। তাই, আমাদের সকলেরই কিডনির প্রতি যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন। আপনি যদি কিডনির কোন প্রকার রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন, তাহলে নিম্নলিখিত খাদ্যসমূহ আপনার খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন।
১. লাল মরিচ:
লাল মরিচ ভিটামিন সি এবং ভিটামিন এ এর একটি চমৎকার উৎস। লাল মরিচে পটাসিয়ামের পরিমাণ কম। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-৬, ফলিক এসিড এবং ফাইবার রয়েছে। লাল মরিচে লিকোফেন রয়েছে, একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। সালাদ বা বিভিন্ন পানি জাতীয় খাবারের সাথে বা রুটি বা স্ন্যাক এর সাথে পরিবেশন করুন।
২. আপেল:
আপেল শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করে। কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ, কোলেস্টেরল কমাতে ও হৃদরোগের ঝুঁকি হতে রক্ষা করে। আপেল ক্যান্সার প্রতিরোধেও সহায়তা করে। আপেলে উচ্চ পরিমাণে ফাইবার রয়েছে এবং প্রদাহজনিত সমস্যা দূরীকরণের যৌগ রয়েছে। যার ফলে শরীরের প্রদাহের সমস্যা হ্রাস পায়।
৩. বাঁধাকপি:
বাঁধাকপি ভিটামিন বি-৬ এবং ফলিক এসিড এ সমৃদ্ধ। এছাড়াও এতে উচ্চ পরিমাণে ভিটামিন কে, ভিটামিন সি এবং ফাইবার রয়েছে। এটি ক্যান্সার থেকে সুরক্ষা প্রদান করে এবং সেই সাথে কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন করে। বাঁধাকপির সালাদ তৈরি করে খেতে পারেন। খাদ্য তালিকায় বাঁধাকপিকে সাইড ডিশ হিসেবে রাখতে পারেন।
৪. রসুন:
রসুন দাঁতের প্লেক প্রতিরোধে সাহায্য করে। শরীরের প্রদাহ হ্রাস করতে সাহায্য করে এবং কোলেস্টেরল এর পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে। রসুনের গন্ধটাও অনেক চমৎকার। ডায়ালাইসিস ডায়েট এর জন্য রসুনের গুঁড়া অত্যন্ত উপকারী।
৫. পেঁয়াজ:
পেঁয়াজ ফ্ল্যাভোনয়েড এ সমৃদ্ধ একটি সবজি। বিশেষ করে এতে কুয়ারসেটিন নামক একটি শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। পেঁয়াজ এর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। পেয়াজে অল্প পরিমাণে পটাসিয়াম রয়েছে এবং এটি ক্রোমিয়াম এর একটি সমৃদ্ধ উৎস। ক্রোমিয়াম একটি কার্বো-হাইড্রেড খনিজ যা চর্বি ও প্রোটিন এর বিপাক ক্রিয়ায় সাহায্য করে।
এই খাদ্যগুলো দৈনিক খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন। এতে চর্বি বা কোলেস্টেরল এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাবার সম্ভাবনা নেই। বরং আপনার কিডনিকে সুরক্ষা প্রদান করবে।–সূত্র: টাইম্‌স অফ ইন্ডিয়া।

26
সাধারণত অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস এর কারণে হজমের সমস্যার সৃষ্টি হয়। যাদের বাহিরের খাবার খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে, তাদের হজমের সমস্যা প্রকট আকারে দেখা যায়। এতে পেটে প্রচুর পরিমাণে ব্যাথা অনুভূত হয়। যখন প্রতিনিয়ত এই ব্যথার সম্মুখীন হতে হয়, তখন আরও নতুন নতুন রোগের উপসর্গ শরীরে বাসা বাঁধে।
হজমের সমস্যার ফলে যে দুইটি সমস্যা বেশি হয়ে থাকে তা নিয়ে আমরা আজ আলোচনা করব-
১. অম্বল বা বুকে জ্বালাপোড়া করা:
গলা থাকে বুক পর্যন্ত শরীরের ডান পাশে এই সমস্যা অনুভূত হয়। অম্বলের একটি প্রধান কারন হল এসিড রিফ্লাক্স। অগ্ন্যাশয় এর জ্বালা থেকে এ এসিডের সৃষ্টি হয়।
# অম্বলকে প্রতিরোধ করার টিপস
প্রতিদিন বিভিন্ন ধরণের খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। প্রতিটি খাবার অল্প অল্প করে এবং কিছু সময় পর পর খাবার অভ্যাস করুন। খাবার ভালভাবে চিবিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন, এতে খাবার হজম হতে সুবিধা হবে।
রান্না করার পদ্ধতি সমূহ স্বাস্থ্যসম্মত করুন। বেকিং, ফ্রাইং, গ্রিলিং ইত্যাদি সমস্ত পদ্ধতির রান্না যেন স্বাস্থ্যসম্মত হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। খাবার বেশি ভাজা ভাজা করলে আপনার জন্য অস্বস্তির কারন হতে পারে।
অম্বল যদি আপনার জন্য একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে থাকে, তাহলে অত্যন্ত মশলাযুক্ত খাবার, টক ও বেশি ঝালযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। সকল প্রকারের খাবার একটি পরিমিত পরিমাণে গ্রহণ করুন।
কোমল পানীয় অম্বলের একটি প্রধান কারন। তাই, কোমল পানীয় পান না করাই ভাল। কারন, এর ফলে শরীরে চর্বি ও কোলেস্টেরল এর পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। শরীরকে সবসময় হাইড্রেড রাখার চেষ্টা করুন।
২. অন্ত্রে সিন্ড্রোম:
অন্ত্রে সিন্ড্রোমের কারনে পেটে প্রচুর ব্যথার সৃষ্টি হতে পারে। অনেক সময় ডায়রিয়াও হতে পারে।
# অন্ত্রে সিন্ড্রোম প্রতিরোধ করার উপায়
যে সকল খাবার অন্ত্রে সিন্ড্রোম করে সে সকল খাবার অবশ্যই পরিহার করতে হবে। যেমন- বাঁধাকপি, দুধ, গম, যব, শিম ইত্যাদি খাবার সমূহ যাদের অন্ত্রে সিন্ড্রোম এর সমস্যা রয়েছে তাদের খাওয়া যাবে না। ক্যাফিনযুক্ত পানীয় পান করা যাবে না। এসকল খাদ্যের ফলে হজম শক্তিতে সমস্যা হয় এবং অন্ত্রে সিন্ড্রোম এর সমস্যা প্রকট হয়।
আপনার খাদ্য তালিকায় বেশি পরিমাণে ফাইবার যুক্ত করুন। এটি ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য রোধে সহায়তা করে।এছাড়াও বিভিন্ন স্বাস্থ্য গবেষণায় পাওয়া গেছে, মানসিক চাপের কারনে শরীরে বিভিন্ন ধরণের সমস্যার সৃষ্টি হয়। তাই, অবশ্যই সর্বপ্রথম মানসিক চাপ কমাতে হবে।–সূত্র: টাইম্‌স অফ ইন্ডিয়া।

27
ব্যাথা একটি বিরক্তিকর অসুখ। বিভিন্ন কারণে মানুষের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ব্যাথা হতে পারে। যেমন অতিরিক্ত ঠাণ্ডা থেকে, বিছানায় ভুল ভাবে ঘুমানোর জন্য, এবং হঠাৎ কোনো শারীরিক পরিবর্তন ইত্যাদি কারণে, এ ধরণের ব্যাথা হয়ে থাকে। এ সকল ধরনের ব্যাথার কারণে অনেকেই ওষুধের উপরই অনেক বেশি নির্ভরশীল যা আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি ক্ষতিকর, কারণ এতে থাকে অনেক ধরনের ক্যামিক্যাল। কিন্তু ওষুধের বদলে বেশ কিছু খাবার খেয়েও শরীরের ব্যাথা উপশম করা যায়।
বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, আমারা যদি আমাদের খাদ্য তালিকায় ওই,সকল ফল, শস্য বা খাবার সামগ্রী রাখি তাহলে দাঁত ব্যথা, মাথাব্যথা, পেশিতে ব্যথা ইত্যাদি অনেক ধরনের ব্যাথার উপশম হবে। কারণ এই সকল সামগ্রীতে বিরোধী প্রদাহজনক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। চলুন জেনে নেই এমন কিছু খাবারের নাম ও বৈশিষ্ট্য যা শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যাথা হতে মুক্তি দান করে।
কফি:
গবেষণায় বেড়িয়ে এসেছে, কফি পান করলে ব্যায়াম জনিত ব্যাথা, মাসলের আঘাত ও মাথা ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শুধু তাই নয় কফি মানসিক যন্ত্রণা থেকেও মুক্তি প্রদান করে। গবেষণায় দেখা গেছে, এক কাপ কফিতে ১০০ থেকে ১৩০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন পাওয়া যায় যা ব্যাথা হতে মুক্তি দেয়।
আদা:
আদা পাকস্থলীর জন্য ভালো কারন এটি হজমে সহযোগিতা করে। আদা শরীরের ব্যথা কমানোর জন্যে অনেক উপকারী ওষুধ। স্পোর্টসম্যানদের অনেকেই ব্যাথা উপশমের জন্য খেয়ে থাকে। আবার বাতের ব্যাথায় আদা কেটে মধু মিশিয়ে রোগীকে খেতে দিলেও উপকার পাওয়া যায়। আদাকে তিলের তেলে গরম করে ঐ তেল গাঁটে বা জোড়ে মালিশ করলেও উপকার পাওয়া যায়।
স্যালমন:
স্যালমন শুধু স্বাস্থ্যকর ও মজাদারই না, এটি ব্যাথা উপশমেও অনেক কাজ করে। স্যালমন মাছের মধ্যে ওমেগা-৩ রয়েছে, যা স্বাস্থ্য ও মস্তিষ্কের জন্য অনেক উপকারী। এছাড়া ওমেগা-৩ শরীরের ব্যথা কমায়। বেশী করে স্যামন মাছ খেলে শরীরের ফোলা অংশগুলোও কমে যায়।
চেরি:
অ্যাসপিরিন শরীরের ব্যথা কমানোর জন্য একটি জনপ্রিয় ওষুধ। কিন্তু নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, চেরি অ্যাসপিরিনের চেয়েও আরো বেশী কার্যকরী ওষুধ। এই ফলের মধ্যে এমন কিছু প্রাকৃতিক উপাদান আছে, যা শরীরের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
পুদিনা পাতা:
পুদিনা পাতায় মেনথল নামে একটি উপাদান আছে যা ধনুষ্টংকার রোগ প্রতিরোধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। এছাড়া এর তেল পায়ের কজ্বি ও গোড়ালীতে মালিশে ব্যথা উপশম হয়। এমনকি মাথা ব্যথায় পুদিনা পাতা কপালে ঘষলেও ব্যথা উপশম হয়।
কমলালেবু:
কমলালেবুর ভিটামিন সি কাশি ও শ্বাস জনিত সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। কমলা এবং অন্যান্য ফলমূল ও শাকসবজিতে পাওয়া যায় beta-cryptoxanthin, যা একটি প্রদাহ বিরোধী উপাদান। এটি শরীরের আরও অনেক উপকার করে অরোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। প্রতিদিন কমপক্ষে একটি কমলা খান। সূত্র: গ্রেটিস্ট।

28
গরমে অস্থির সবাই হয়। কিন্তু বড়রা নিজেদের কে সামলে নিতে সক্ষম। সবচে বেশি দুর্বল হয়ে যায় শিশুরা, তাই তাদের দিকে একটু যত্নবান হতে হবে। সুতরাং তাদের দিকে খেয়াল একটু বেশিই রাখতে হয়। বেশির ভাগ স্কুলেই এই সময় পরীক্ষা চলে। ফলে পড়াশোনার চাপ, স্কুল, খেলাধুলো সবকিছু বজায় রাখতে শিশুরা গরমে নাজেহাল হয়ে পড়ে।
তাই গরমে শিশুদের যত্ন নেওয়ার জন্য কিছু টিপস-
শিশুকে সবসময় সঙ্গে পানির বোতল দিন-গরমে সকলেরই সারাদিন প্রচুর পানি খাওয়া উচিত্‍। বাচ্চারা খেলাধুলো করার কারণে ঘাম বেশি হয় ফলে ওদের পানির প্রয়োজনও হয় বেশি। পানি বেশি খেলে শরীরে টক্সিনের মাত্রা কমে শরীর যেমন সুস্থ থাকে, তেমনই রক্ত সঞ্চালন ঠিকঠাক থাকে। আবার পরিশোধিত পানি না খেলে এই জল থেকেই রোগ সংক্রমণের সম্ভাবনা থাকে সবথেকে বেশি। তাই বাচ্চাদের যখনই বাড়ির বাইরে পাঠাবেন সবসময় সঙ্গে পানির বোতল দিন।
টাটকা ফল ও লেবুর রস-বাচ্চাদের টাটকা ফলের রস, ডাবের পানি, বাটারমিল্ক বা লেবুর রস রিফ্রেশমেন্ট হিসেবে খেতে দিন। এতে শরীরে পানির ভারসাম্য বজায় থেকে শিশুদের ক্লান্তি দূর হবে।
হালকা রঙের জামাকাপড় পরান-গরমে বাচ্চাকে সবসময় হালকা রঙের জামাকাপড় পরানোর চেষ্টা করুন। হালকা রঙ গরম তাড়াতাড়ি শুষে নিয়ে শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
সানস্ক্রিন-বাচ্চাদের ত্বক নরম ও সংবেদনশীল হওয়ায় গরম কালে র‌্যাশের সমস্যা দেখা দেয়। তাই বাইরে খেলতে পাঠানোর সময় চেষ্টা করুন ভাল সানস্ক্রিন লাগিয়ে রোদে পাঠাতে। ভাল এসপিএফ যুক্ত সানস্ক্রিন শিশুদের ত্বক সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির থেকে রক্ষা করবে।
ফাস্ট ফুড থেকে দূরে রাখুন-পিজা, পাস্তা, বার্গার থেকে শিশুদের দূরে রাখুন। তার বদলে তরমুজ, শশা জাতীয় ফল, বাড়িতে তৈরি হালকা খাবার খেতে দিন শিশুকে।
ইনসেক্ট রিপেল্যান্ট -গরম কালে পোকামাকড়ের কামড়, লালা থেকে অনেক সময় ইনফেকশন হয়। ঘামে বাড়তে পারে সেই ইনফেকশন। তাই বাচ্চাকে বাইরে পাঠানোর সময়, বিশেষ করে সন্ধেবেলা ইনসেক্ট রিপেল্যান্ট লাগিয়ে পাঠান।
রাতে সবসময় মশারি টাঙিয়ে শোওয়ান। গরমে মশারি টাঙাতে না ইচ্ছা না করলে অবশ্যই মসকিটো রিপেল্যান্ট লাগিয়ে দিন বাচ্চাকে।
দুপুরে বাচ্চাকে বাড়ির বাইরে বের করবেন না-দুপুর বেলা, মূলত ১২-৪টের মধ্যে শিশুকে বাড়িতে রাখার চেষ্টা করুন। বিকেল বেলা খেলতে পার্কে নিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু দুপুরের রোদে বাচ্চাকে বাইরে না বের করাই ভাল।

29
অনেকেই রাতে ঘুমানর সময় হাত-পায়ের প্রচণ্ড জ্বলন অনুভব করে থাকেন। শুধু রাতেই না, এই জ্বলন আপনি যে কোনো সময় অনুভব করতে পারেন। এটা খুব অসস্থিকর এবং কষ্ট দায়ক। চর্মরোগবিশেষজ্ঞ বলেন, সাধারণত এটি পায়ের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্তের কারনে হয়ে থাকে। আপনি গর্ভবতী হন তাহলে এটা কোলেস্টাসিসের কারণেও হতে পারে। এর ফলে হাত পা ফেটে যেতে পারেভ ও হাত ও পায়ের তলায় ঘা সহ বিভিন্ন চর্মরোগ হতে পারে। এই জ্বলন থেকে পরিত্রাণ পেতে ঔষধ এর উপর নির্ভর না করে, আত্মনির্ভর ও সচেতন হয়ে এবং প্রাকৃতিক বিভিন্ন বস্তু ব্যাবহার করেও মুক্তি পেতে পারেন।
চলুন জেনে নেওয়া যাক হাত ও পায়ের জ্বালা-পোড়া থেকে মুক্তির কয়েকটি পদ্ধতি:
রাতে ঘুমানোর আগে গোসল করুণ কিন্তু গরম পানি পরিহার করুণ:
রাতে হাত-পা জ্বলা পোড়া থেকে মুক্তি পেতে প্রতিদিন রাতে বিছানায় যাওয়ার আগে গোসল করুণ। গোসলের সময় মনে রাখবেন।
১। পানি যেনো কিছুতেই গরম না হয়। গরম পানি আপনার শরীর থেকে প্রাকৃতিক তেল ধুয়ে দিতে পারে ফলে আপনার স্কিন ড্রাই হয়ে যেতে পারে।
২।দীর্ঘ সময় গোসল না করে স্বল্প সময় গোসল করেন, বেশি সময় গোসল করলেও ত্বক ড্রাই হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থকে। ফলে জ্বলন আরও বেড়ে যেতে পারে।
ময়শ্চারাইজার ব্যাবহার করুণ:
জ্বলন এবং চুলকানি প্রশমিত করতে ওয়েল বেজ লোশন লাগাতে পারেন, এতে করে আপনার ত্বক সফট হবে ও এতে স্কিনের সেলস গুলোকে রক্ষা করবে। বর্তমানে ওষুধের দোকান গুলোতে এমন অনেক লোশন পাওয়া যায়। এতে করে আপনার হাত ও পায়ের তলার জ্বলন ও চুলকানি প্রশমিত হতে পারে। রাতে খুমানোর আগে ও গোসলের পর ভেজা শরীরে লোশন ব্যাবহার করুণ।
ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে রাখুন:
যারা ডায়াবেটিসের রোগী তারা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখুন, ডায়াবেটিসের কারনে নিউরোপ্যাথি হয়ে থাকে কারণ রক্তে সুগার লেভেল বেড়ে গেলেও হাত পাতে জ্বালা পোড়া হতে পারে। তাই হাত-পায়ের যত্ন নিতে শিখুন। বিশেষ করে পায়ের যত্ন অনেক বেশি সচেতন হন।
প্রচুর পানি পান করুণ:
শরীরে পানি শূন্যতা হতেও জ্বলন হতে পায়ে। সাধারণত যারা পানি কম পান করেন তাদের উচিত বেশি পরিমাণে পানি পান করা এবং মিনারেল জাতীয় খাবার বেশি পরিমাণে খাওয়া। এতে করে হাত-পা ও শরীর জ্বালা-পোড়া অনেক অংশে কমে যাবে।
টক ফল খান:
প্রতিদিন অল্প পরিমাণে হলেও যে কোনো টক ফল পানি মিশিয়ে ১ ঘণ্টা পরপর খাওয়ার অভ্যাস করুন। প্রথমে শরীরকে অ্যাসিডমুক্ত রাখুন। এটি খালি পেটে খাওয়ার অভ্যাস করুন। চাইলে হালকা খাবার খেতে পারেন। প্রতিদিন ৫০ গ্রাম আঙুর খেলেও জ্বালা কমকে। এছাড়া পায়ের ফাটা ভাব কমলেও হাতের কোমল ভাব বজায় থাকবে।
মেহেদি ও তেলাকুজ পাতা:
টাটকা মেহেদি পাতার রস হাত ও পায়ের তালুতে লাগালে জ্বালা-পোড়া কমে যায়। তাছাড়া তেলাকুজের পাতা পানিতে চটকে তাতে হাত পা ভিজিয়ে রাখলেও জ্বলন কমে যায়।
মানসিক চাপ কমান:
অনেক সময় মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা থেকেও হাত পায়ে জ্বালা পোড়া হতে পারে। দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ কমান। প্রয়োজনে চিকিৎসা নিন। নিউরোপ্যাথি আছে প্রমাণিত হলে স্নায়ুর যন্ত্রণা লাঘব করে এমন কিছু ওষুধ পাওয়া যায়, চিকিৎসকের পরামর্শে সেগুলো নিয়মিত খেতে পারেন৷ সূত্র: উইকিহাও।

30
ডায়াবেটিক এমন একটি রোগ যা প্রতিদিন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরী। বিশেষ করে ডায়াবেটিক প্রতিরোধ করার জন্য রক্তের শর্করার পরিমাণ সঠিক রাখা জরুরী। তাই, অনেকেই রক্তের শর্করার পরিমাণ বারবার চেক করেন। রক্তের শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখতে ও সুস্থভাবে জীবন-যাপনের জন্য ডায়াবেটিক অবশ্যই নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। এখানে, ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে রাখার উপায় আলোচনা করা হল-
১. ডায়েট করা:
রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে সহজ উপায় হল খাদ্যাভ্যাস এ পরিবর্তন করা। এছাড়াও এই অভ্যাস ডায়াবেটিক সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। যেসব মানুষের টাইপ ২ ধরণের ডায়াবেটিক রয়েছে তাদের কার্বো-হাইড্রেড ও চর্বির প্রতি খুব সতর্কতার সাথে লক্ষ্য রাখা উচিৎ। মোট প্রোটিন এর পরিমাণ নিরীক্ষণ করা ও ক্যালোরি হ্রাসের প্রতি যত্নবান হওয়া উচিৎ।
পথ্যব্যবস্থাবিদ্যাবিৎ দ্বারা একটি খাদ্য তালিকা করে নেয়া সবচেয়ে বেশি উপকারী। খাদ্য তালিকাটি এমন হতে হবে যাতে নিম্ন বিষয়গুলো রয়েছে-
# ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
# রক্তে শর্করার মাত্রা কন্ট্রোল করে।
# রক্তে লিপিডের মাত্রা কন্ট্রোল করে।
# অতিরিক্ত ঔষধ সেবনের সম্ভাবনা হ্রাস করে।
২. ব্যায়াম:
একজন ডায়াবেটিক রোগীর দৈনিক অন্তত ৩০ মিনিট ব্যায়াম করার লক্ষ্য হওয়া উচিৎ। একজন ডায়াবেটিক রোগীর শক্তি প্রশিক্ষণ বা হাঁটা মত মধ্যপন্থী ব্যায়াম করা প্রয়োজন। ব্যায়ামের ফলে শরীরের ইনসুলিনের মাত্রা উন্নত হয়, রক্তের শর্করার পরিমাণ কমে যায় এবং শরীরের শর্করার পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। তাই, ডায়াবেটিক রোগীদের অবশ্যই প্রতিদিন ব্যায়াম করার অভ্যাস করা উচিৎ।
৩. স্ট্রেস কমানো:
স্ট্রেস সকলের জন্য অনেক ক্ষতিকর। বিশেষ করে ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য স্ট্রেস মারাত্মক ক্ষতি করে। কারন, এর ফলে তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পেটে পারে। তাই, বিভিন্ন ধরণের মানসিক থেকে দূরে থাকার জন্য ডায়াবেটিক রোগীর ব্যায়াম, যোগব্যায়াম, ধ্যান ও কল্পনার মত কৌশল গ্রহণ করা উচিৎ।
৪. ঔষধ:
ব্যায়াম ও খাদ্যাভ্যাস এ পরিবর্তনের পরেও যদি ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে না আসে, তাহলে একজন ভাল ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মৌখিক ঔষধ সেবন করা উচিৎ। কিছু ঔষধ রয়েছে, যা শরীরে ইনসুলিনের পরিমাণ বৃদ্ধি করে অগ্ন্যাশয় উদ্দীপিত করতে সাহায্য করে। কিন্তু, এসকল ঔষধের কিছু পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এসব ঔষধ সেবনের ফলে ওজন বৃদ্ধি পায়। এর ফলে, ঔষধ তখনি সেবন করুন যখন ডাক্তার এতে সম্মতি প্রকাশ করে।
৫. ইনসুলিন:
অনেক ডাক্তার ইনসুলিন নেয়ার জন্য পরামর্শ দিয়ে থাকেন। টাইপ ২ ডায়াবেটিক রোগীদের অবশ্যই ইনসুলিন নেয়ার কথা বলা হয়। কারন, উচ্চ রক্তচাপের ফলে অগ্ন্যাশয় কোষে ইনসুলিন কম পরিমাণে উৎপন্ন হয়। তাই, ইনজেকশনের মাধ্যমে ইনসুলিন শরীরে প্রবেশ করানো হয়। ইনসুলিন ডায়াবেটিক রোগীদের প্রাত্যাহিক জীবনের একটি বিশেষ অংশ হয়ে যায়।–সূত্র: টাইম্‌স অফ ইন্ডিয়া।

Pages: 1 [2] 3 4 ... 10