Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - Md. Anwar Hossain

Pages: [1] 2 3 ... 7
1
করোনাকালে বহু নতুন শব্দ হামেশা ব্যবহার করতে শিখছি আমরা। এ তালিকায় সর্বশেষ এল ‘ভ্যাকসিন পাসপোর্ট।’ ভ্যাকসিন পাসপোর্ট হচ্ছে কোনো নাগরিক টিকা নিয়ে ভাইরাসমুক্ত হয়ে আছেন, এমন নিশ্চয়তা। মানুষকে দরকারি জিনিসপত্রের সঙ্গে এখন থেকে ওই রকম টিকা সনদও সঙ্গে নিয়ে ঘুরতে হবে বলে মনে হচ্ছে।

কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষা পেতে চালু হওয়া সব টিকার কার্যকারিতা নিয়েই অল্পবিস্তর বিতর্ক আছে। তারপরও বিশ্বজুড়ে এই ভাইরাসের টিকা দেওয়া ক্রমেই বাধ্যতামূলক করার নীরব আয়োজন চোখে পড়ছে। জুন পর্যন্ত হিসাবে প্রায় ৯০টি দেশ চলাচলের জন্য কোনো না কোনো ধরনের টিকা সনদ বাধ্যতামূলক করার কথা ভাবছে। আঞ্চলিক ধরনের ভ্যাকসিন পাসপোর্ট ধারণা নিয়েও কাজ চলছে। ইইউ ইতিমধ্যে এটা চালু করে দিয়েছে।

যে দেশে পাসপোর্টের ধরন যে রকমই হোক, প্রশ্ন উঠেছে, টিকার প্রক্রিয়া থেকে বাদ যাওয়া মানুষের তাহলে কী হবে? ভ্যাকসিন পাসপোর্ট কি তবে বিশ্বজুড়ে মানুষকে আবার নতুন করে দুই ভাগে ভাগ করতে আসছে? যেভাবে ভাগ করেছে দারিদ্র্য, বর্ণ কিংবা লিঙ্গবৈষম্য। এটা কি তবে নতুন এক জাতপাত ব্যবস্থা?

ভ্যাকসিন পাসপোর্টকে কেউ কেউ ‘কোভিড পাসপোর্ট’ও বলছে। নাম যা–ই হোক, এর শর্ত হলো টিকা দিতেই হবে। সেটা হতে হবে অনুমোদিত টিকা এবং টিকার সনদ সঙ্গে নিয়ে ঘর থেকে বের হতে হবে। সেই সনদ দেখিয়ে পাসপোর্টের মতো আরেকটা সনদও নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। এটা স্মার্ট কার্ডের মতো নতুন কিছুও হতে পারে। এতে কিউ আর কোড থাকবে টিকা পাওয়ার নিশ্চয়তা হিসেবে।

কোনো কোনো দেশে এই পাসপোর্টের কথা বলা হচ্ছে কেবল আন্তর্জাতিক চলাচলের জন্য, আবার কোথাও অভ্যন্তরীণ কাজেও এর ব্যবহারের কথা ভাবা হচ্ছে।


নানান দেশে নানান ধাঁচের ভ্যাকসিন পাসপোর্ট
বিভিন্ন দেশে সরেজমিনে লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে, ভ্যাকসিন পাসপোর্টের জন্য বেশি আগ্রহী ব্যবসায়ী সমাজ ও সরকারসমূহ। মানুষকে এ সনদ ধরিয়ে দিয়ে বিধিনিষেধের যন্ত্রণা থেকে ক্রেতা-বিক্রেতা সমাজকে ‘মুক্ত’ করতে চায় তারা। ভয়ভীতি থেকে মুক্ত হয়ে আগের মতো চলাফেরার একটা রক্ষাকবচ হিসেবে ভাবা হচ্ছে একে। অর্থাৎ আপাতদৃষ্টে মনে হচ্ছে, ভ্যাকসিন পাসপোর্টের ধারণা আসছে বিশ্ববাসীকে বর্তমানের বন্দিদশা থেকে উদ্ধারের জন্য এবং মানুষকে দ্রুত টিকা নেওয়ায় উৎসাহ জোগাতে। এটা থাকলে এক দেশ থেকে আরেক দেশে গিয়ে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে না।

বিশ্ব-অর্থনীতি ভ্যাকসিন পাসপোর্ট চাইছে
ভ্যাকসিন পাসপোর্টের হাত ধরে জনজীবন আগের চেহারায় ফিরতে পারে বলে দাবি করা হচ্ছে। এ–ও বলা হচ্ছে, অর্থনীতি চাঙা হয়ে উঠবে এর প্রতিক্রিয়ায়। মূলত বাজারব্যবস্থায় অক্সিজেন জোগাতেই ভ্যাকসিন পাসপোর্টের পক্ষে বেশি বলা হচ্ছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে ভ্রমণ ও বিনোদন খাতের হিস্যা বেশ বড়। কোভিডে তারা কাহিল। এই মহল খুব চাইছে, মানুষকে ভ্যাকসিন পাসপোর্ট ধরিয়ে দিয়ে তাদের ঘরের বাইরে আনা হোক। সে জন্য ধনী দেশগুলো ব্যাপক হারে টিকা কিনছেও। বিশ্ব জনসংখ্যায় এ রকম দেশের প্রাপ্তবয়স্কদের হিস্যা ২০ ভাগের কম। অথচ তারা ভ্যাকসিনগুলোর ৫৪ ভাগ কিনে বসে আছে।

তবে ধারণা হিসেবে প্রাথমিকভাবে নিষ্পাপ ও আকর্ষণীয় মনে হলেও এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বিস্তর ব্যবহারিক সমস্যা। বিশেষ করে প্রথম থেকেই এই পাসপোর্টের ধারণা দরিদ্রবিরোধী ব্যবস্থার আকার নিচ্ছে।

ভ্যাকসিন পাসপোর্ট ঘিরে সমস্যা অনেক
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাবে, ধনী দেশগুলোর সঙ্গে সমানতালে নিজ নাগরিকদের টিকা দিতে দরিদ্র দেশগুলোর বছর বছর বাড়তি অর্থ দরকার। এটা তারা পাবে কোথায়? এসব দেশে ভ্যাকসিন দেওয়ার অবকাঠামোও দুর্বল। সুতরাং এশিয়া, আফ্রিকার যেসব মানুষ তাদের ইচ্ছা সত্ত্বেও ভ্যাকসিন পায়নি, পাচ্ছে না বা পাবে না, তারা ভ্যাকসিন পাসপোর্ট কোথায় পাবে? ফলে এই সনদের ধারণা তার আবির্ভাবেই বিশ্বকে দুই ভাগে ভাগ করে নিচ্ছে। দুই ধরনের মানুষের অস্তিত্বকে এর মধ্য দিয়ে স্বীকার করে নেওয়া হবে। যার একদল স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় শামিল হতে পারবে, অন্যরা অনুমতি পাবে না।

কর্মসংস্থানের জগতে ভ্যাকসিন পাসপোর্টহীন মানুষেরা যে সরাসরি বঞ্চনার শিকার হবে, তা স্পষ্ট। আবার লক্ষণ বলছে, অনেক দেশ এই পাসপোর্ট গ্রহণ করবে ডিজিটাল আকারে। ওপরে যে ৯০টি দেশের কথা বলা হয়েছে, তাদের ৬৩ ভাগই ডিজিটাল সনদ দিচ্ছে। কাগজের সনদের জাল হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কিন্তু এর মানে এ–ও দাঁড়ায়, কোভিড পাসপোর্টের নামে তাবৎ নাগরিকের স্মার্টফোন নিয়ে চলাফেরা বাধ্যতামূলক হতে পারে। যেসব দরিদ্র মানুষের সেটা থাকবে না, তাদের কী হবে?

আবার এমন অ্যাপ তৈরিও অসম্ভব নয়, যা মিথ্যা কোভিড পাসপোর্ট তৈরি করে দিতে পারে। ইসরায়েলে ‘ভ্যাকসিন পাস’ ব্যবস্থার শুরুতে এ রকম ঘটেছে। তখন হয়তো জাল ভ্যাকসিন পাসপোর্টের চড়া মূল্যের আলাদা বাজার তৈরি হবে।


বিভেদের নতুন দেয়াল হতে পারে ভ্যাকসিন পাসপোর্ট
যেহেতু কোনো কোভিড ভ্যাকসিনই অনন্তকালের সুরক্ষা দেবে বলে মনে হয় না, তাহলে এই পাসপোর্টের মেয়াদ কত দিনের হবে, সেটাও বড় প্রশ্ন হিসেবে থাকছে। এ রকম ক্ষেত্রে কিছুদিন পরপর করোনা পরীক্ষা করে ভ্যাকসিন পাসপোর্টের মেয়াদ টিকিয়ে রাখতে হবে। বাংলাদেশের মতো দেশগুলোয় কোটি কোটি মানুষের জন্য বারবার ‘টেস্ট’ বড় বোঝা হয়ে দাঁড়াতে পারে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা বিশ্ব জনসংখ্যার ২ দশমিক ১১ ভাগ। অথচ গত মাসের হিসাবে বিশ্বে যখন প্রায় পৌনে চার শ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে, তখন এখানে সেটা দুই কোটি অতিক্রম করেনি। অথচ জনসংখ্যার ৮০ ভাগের ভ্যাকসিন পাসপোর্ট পেতে হলেও দরকার ২৬-২৭ কোটি ডোজ। আবার নতুনদের টিকা দিতে দিতেই পুরোনোদের টিকার মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। তাহলে তাঁদের পাসপোর্টের তখন কী হবে? মোটকথা, টিকা সহজলভ্য না হওয়া পর্যন্ত ভ্যাকসিন পাসপোর্টের ধারণা সমস্যা বাড়াবে কেবল।

ভ্যাকসিন পাসপোর্টকে উন্নত দেশগুলো তাদের দেশের শ্রমনীতি ও বিদেশনীতির অংশ করে তুললে তাতে বিশ্বজুড়ে গুরুতর এক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ও ঘটবে। তৃতীয় বিশ্বের শ্রমজীবীদের বিরুদ্ধে সেটা হতে পারে উঁচু দেয়ালের মতো। এভাবে ভ্যাকসিন-জাতীয়তাবাদ অসাম্যে ভরা বিশ্বে নতুন করে বিভেদ বাড়াতে পারে।

ভ্যাকসিন পাসপোর্ট সংক্রমণও বাড়িয়ে দিতে পারে
টিকা নেওয়ার পরও যেহেতু মহামারির হাত থেকে রেহাই মিলছে না বা মিলবে বলে নিশ্চয়তা মিলছে না, সুতরাং একে পাসপোর্টতুল্য ধরে নিয়ে সবকিছু খুলে দেওয়াতেও ঝুঁকি থাকবে। এমনকি সে রকম ঝুঁকি বাড়তেও পারে। ভ্যাকসিন পাসপোর্টধারী মানুষের মধ্যে যদি ক্ষুদ্র এক অংশও সংক্রমিত থাকে, তাহলে তাদের উন্মুক্ত চলাফেরা, পাসপোর্ট নিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুরতে থাকা অন্যদের অজান্তেই বিপদে ফেলবে। কথিত ‘পাসপোর্ট’ এভাবে বরং সংক্রমণ দ্রুততর করে তুলতে পারে।

তা ছাড়া কোভিড পাসপোর্টের তথ্য-উপাত্ত হ্যাক হলে সেটা স্বাস্থ্য বিষয়ে মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তারও সর্বনাশ করবে। কিন্তু বাংলাদেশের মতো দেশগুলোয় মানুষের জন্য বিড়ম্বনা হলো, তাদের দেশটি বিশ্ব পরিসরে নীতিনির্ধারণী জায়গায় নেই। ক্ষমতাধর দেশগুলো যদি ভ্যাকসিন পাসপোর্টের বিষয়টিতে একমত হয়ে যায়, বাংলাদেশের সেটা না মেনে উপায় থাকবে না। আবার একে ঘিরে বাণিজ্যের যে বাড়তি সুযোগ আছে, সেটা মাথায় রেখে এখানেও অনেকে এর পক্ষে জনমত তৈরিতে নেমে পড়বে। বিশ্বে যেসব দেশের মানুষ কাজের জন্য বেশি বেশি বাইরে যায়, তার মধ্যে বাংলাদেশের হিস্যা বেশ বড়। বিদেশমুখী এই শ্রমজীবীর বড় অংশই গ্রামের দরিদ্র মানুষ। ভ্যাকসিন পাসপোর্ট ধারণা এদের জন্য এক নতুন বোঝা হয়ে উঠতে পারে।

বর্ণপ্রথা ও জাতপাতের দেয়াল অতীতে যেসব বহু অনাচার করেছে, অতিমারি থামানোর নামে সেই আতরাফদের যেন আরেক দফা কোণঠাসা করা না হয়।

আলতাফ পারভেজ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইতিহাস বিষয়ের গবেষক

2
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে সদ্য অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড রোবোটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে রোবো রেস সেগমেন্টে সেরা সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা। বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী টিম অ্যাটলাস ১৩তম স্থান অর্জন করেছে। ভারত বাদে বিশ্বের অন্যসব দেশের দলের মধ্যে সেরা হয়েছেন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা। গত ২৩ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড রোবটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ৪০টি দেশের মোট ২৫০টি দল অংশগ্রহণ করে। প্রথম থেকে দ্বাদশ পর্যন্ত স্থান দখল করে নেয় ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলো। ক্রিয়েটিভ আইটি ইনস্টিটিউট এর সহযোগিতায় ভারতের পরে বাংলাদেশই ভারতসহ বিশ্বের অন্য দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে ১৩তম স্থান নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্বকারী একমাত্র এই দলটি। টিম অ্যাটলাসের পাঁচ সদস্যের মধ্যে তিনজনই বর্তমানে ঢাকা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণিতে অধ্যায়নরত। তারা হলেন- সানী জুবায়ের, মীর তানজিদ ও মারুফ। টিমের অন্য দু’জন মীর সাজিদ ঢাকা সিটি কলেজে এবং সিফাত তন্ময় মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে অধ্যায়নরত।

টিমের সাফল্য নিয়ে টিম লিডার সিফাত তন্ময় এবং সানী জুবায়ের জানান, আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারা নি:সন্দেহে গর্বের বিষয়, বাংলাদেশের জন্য সর্বোচ্চ ভালো স্থানটা আনতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি, তবে সকল প্রতিযোগি এবং প্রতিযোগিতা পর্যবেক্ষণ করে এটা বলতে পারি যে টিম অ্যাটলাস চ্যাম্পিয়নশিপ আনার মত শক্তিশালী টিম ছিল। আমাদের এর আগের বিভিন্ন প্রতিযোগিতার ফলাফল তাই বলে। পরবর্তীতে আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করব যাতে বাংলাদেশের পতাকা সবার উপরে থাকে। আমাদের আগে যে দলগুলো ছিল সব ভারতের। যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিশ্বের অন্য দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে আমরা ভারতের পর দ্বিতীয় দেশ হিসেবে ১৩তম অবস্থান অর্জন করেছি।

আমরা আমাদের ফলাফল নিয়ে খুশি। আগামীতে যুক্তরাষ্ট্রের নাসা কর্তৃক আয়োজিত ইন্টারন্যাশনাল প্রতিযোগিতায় টিম অ্যাটলাস অংশ নেবে বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরে রোবটিক্সের বিভিন্ন প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছে ‘টিম অ্যাটলাস’। দলটি এর আগেও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রোবটিক্স প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের হয়ে যোগ দেয়। টিম অ্যাটলাস আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে পুরস্কার পাওয়ার সুবাদে বিশ্ব পরিসরেও পরিচিতি লাভ করেছে। এর আগে আন্তর্জাতিক রোবট অলিম্পিয়াডে প্রথম স্থান, মেক্সেলারেশন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) আয়োজিত টেকনিভ্যাল ২০১৮-তে চ্যাম্পিয়ন এবং ন্যাশনাল রোবটিক ফেস্টিভাল ২০১৭-তে চ্যাম্পিয়ন হয় দলটি।

3
জার্মানীতে উচ্চশিক্ষার প্রায় ৩০০ ইনস্টিটিউশন রয়েছে।এর মধ্যে ৮২ টিবিশ্ববিদ্যালয়, ১৩৬ টি অ্যাপ্লাইড বিশ্ববিদ্যালয় এবং মিউজিক ও ফাইন আর্ট বিষয়ক ৪৬টি কলেজ রয়েছে। এবং প্রতিষ্ঠানে ২০লাখ ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ১২ শতাংশ বিদেশী। বিদেশীদের মধ্যে আবার ৯ শতাংশই পুরো বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষা জার্মানিতে শেষ করেছেন।  গত ১৫ বছরে জার্মানিতে বিদেশী ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যাদ্বিগুণ বেড়েছে।  জার্মানীর বিশ্ববিদ্যালয় জার্মানিতে মূলত তিন ধরনের বিশ্ববিদ্যালয় আছে।

প্রথমত, অ্যাপ্লায়েড বিশ্ববিদ্যালয় (Applied Science University)। যেখানে ছাত্রদের মূলত চাকরি অরিয়েন্টেড বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়া হয়। গবেষণামূলক কাজ এখানে হয় না বললেই চলে।

দ্বিতীয়ত, টেকনিক্যাল বা প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (Technical University), যেখানে প্রকৌশলসহ বিজ্ঞান বিভাগের বিষয়গুলো পড়ানো হয়। সাথে সাথে রয়েছে ব্যাপক গবেষণা মূলক প্রকল্প।

তৃতীয়, ভাগে আছে নরমাল বিশ্ববিদ্যালয়, যেগুলো মূলত ইউনি (UNI) হিসেবে পরিচিত।  এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান, কলা, বাণিজ্য সহ সব অনুষদই পড়ানো হয়।  আকারে ইউনিগুলো বড় হয়ে থাকে।

অনেক ইংলিশ ভাষাভাষী দেশে ছাত্রবৃত্তি নিয়ে উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি নিজ অর্থায়নে (Self Finance) পিএইচডি করার সুযোগ থাকঔের জার্মানি সহ অনেক ইউরোপীয় দেশ এই নিয়মের ব্যতিক্রম।  এখানে পিএইচডি পর্যায়ের সব ছাত্রই প্রায় চাকরির সমপরিমাণ বৃত্তি বা বেতন পেয়ে থাকেন। কিন্তু এসব সুযোগ বিজ্ঞান বা প্রকৌশল বিষয়ের ছাত্রদের জন্যই বেশি।

জার্মানির উল্লেখ যোগ্য বিশ্ববিদ্যালয় গুলো হচ্ছে লুদভিকম্যাক্সিমিলিয়ান ইউনিভার্সিটি অব মিউনিখ, ফ্রিইউনিভার্সিটি অব বার্লিন, হাইডেলবার্গ ইউনিভার্সিটি, উলম ইউনিভার্সিটি, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাডহনেফ প্রভৃতি।

কখন যাবেন জার্মানী

জার্মানিতে পড়াশোনার জন্য আসতে পারেন কয়েক ভাবে।  উচ্চমাধ্যমিক পাস করে কেউ চাইলে তাকে জার্মান ভাষা কোর্সে ভর্তি হতে হবে।  খুব কম সংখ্যক বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্ডারগ্রাজুয়েট পর্যায়ে ইংলিশ ভাষায় কোর্স চালু আছে।  প্রথম চেষ্টা করতে পারেন ইংলিশ ভাষায় পড়ানো হয় এমন কোনো  Subject এ ভর্তি হতে।  তানা পেলে ভাবে ব্যাচেলর কোর্সে ভর্তি হওয়া যেতে পারে।

প্রথমত, বাংলাদেশে জার্মান ভাষার কিছু প্রাথমিক জ্ঞান নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য Apply করুন।  ভর্তি হতে পারলে এখানে এসে মূল কোর্স শুরুর আগে ছয় থেকে এক বছরের মধ্যে জার্মান ভাষার বাকি কোর্স করে ফেলুন। অন্য ভাবে ও আসা যায়, আপনি সরাসরি বাংলাদেশ থেকে জার্মানির যেকোনো ভাষা শিক্ষা কেন্দ্রে Apply করুন।  ভর্তি হতে পারলে ভাষা শিক্ষার জন্য ভিসা পাবেন।  এখানে এসে ভাষা শিক্ষা সমাপ্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার পছন্দের Subject-এ ভর্তি হতে পারেন।  তবে এই প্রক্রিয়া বেশ Costly. মাস্টার্সে ভর্তির জন্য প্রথমে ডাড (daad.de)-এর ওয়েব সাইট থেকে কোনো কোনো ভার্সিটিতে আপনার সাবজেক্ট আছে তার তালিকা তৈরি করুন। আপনার যোগ্যতা (যেমন রেজাল্ট, TOEFL/IELTS ইত্যাদি) পুরোপুরি খাপ না খেলেও নির্দ্বিধায় Apply করুন।

পিএইচডির জন্য সরাসরি ধঢ়ঢ়ষু করতে পারেন।  ভার্সিটির ওয়েব সাইট থেকে আপনার সাবজেক্ট সংশ্লিষ্ট ফ্যাকাল্টির ইনস্টিটিউট গুলোর তালিকা তৈরি করুন। ইনস্টিটিউট প্রফেসরকে সরাসরি বসধরষ করুন।  জানতে চান পিএইচডির সুযোগ আছে কিনা।  যদি ও জার্মান বা ইউরোপীয় মাস্টার্স ডিগ্রি না থাকলে সরাসরি পিএইচডিতে নিতে চাননা।  প্রফেসর যদি রাজি হন সেক্ষেত্রে বুঝবেন তার পর্যাপ্ত ফান্ড আছে আপনার জন্য।  আরেকটা কথা বলে রাখা ভালো, বাংলাদেশে অনেকের একটা ভুল ধারণা হচ্ছে, উচ্চশিক্ষা করতে হবে স্কলারশিপ নিয়ে, আর তা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য। পিএইচডির জন্য স্কলারশিপ জরুরি।

উচ্চশিক্ষার তথ্য

জার্মানির উচ্চশিক্ষা সর্ম্পকে তথ্য পাবেন কিভাবে? প্রথমকথা, আপনাকে ইন্টারনেটে লেগে থাকতে হবে।  নিয়মিত ইন্টারনেটে বসা, সার্চ করা ও ব্যাপক যোগাযোগ অত্যাবশ্যক।  ইন্টারনেটে আপনার পরিচিতি সার্কেল বাড়াতে হবে। জার্মানি ও এর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি তথ্য, ছাত্রবৃত্তি সহ অন্যান্য তথ্যেও জন্য গুরুত্বপূর্ণ উৎস গুলোর মধ্যে জার্মান একাডেমিক একচেঞ্জসার্ভিস https://www.daad.de/en গুরুত্বপূর্ণ। এখানে বিভিন্ন সাবজেক্টের তালিকা ও স্কলারশিপের তথ্য পাবেন। স্কলারশিপের জন্য জার্মান সায়েন্স ফাউন্ডেশন DFG http://dfg.de/en
জার্মান শিক্ষা ও গবেষণা মন্ত্রণালয় BMBF (http://www.bmbf.de/ উল্লেখ যোগ্য।  এসব সংস্থার ওয়েব সাইটের সংশ্লিষ্ট ইংলিশ সংস্করণে আপনাকে ব্যাপক সার্চ করতে হবে।

বৃত্তির সুযোগ

জার্মান বার্তা সংস্থা ডয়েচেভেলের ওয়েব সাইট থেকে জানা যায়, প্রতি বছর আড়াই লাখ বিদেশি শিক্ষার্থী এবং ২৩ হাজার পিএইচডি গবেষক জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ভর্তি হন ৷ এই বিশাল সংখ্যার শিক্ষার্থীর মধ্যে ২৫ শতাংশ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বৃত্তি পেয়ে থাকেন ৷ ডিএএডি বা জার্মান ছাত্রবিনিময় কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতি বছর অনেক শিক্ষার্থী জার্মানি পড়াশোনার সুযোগ পান৷ বর্তমানে ৪৫ হাজার বিদেশি শিক্ষার্থীকে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি ৷ এই প্রতিষ্ঠানের বৃত্তি ভোগীদের ৭০ শতাংশই আসেন বিদেশ থেকে ৷ স্নাতক কোর্সের শিক্ষার্থীরা মাসে ৬৫০ ইউরো, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা ৭৫০ ইউরো আর পিএইচডি গবেষকেরা এক হাজার ইউরোপেয়ে থাকেন বৃত্তি হিসেবে৷ তবে স্নাতক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের বৃত্তির সুযোগ সীমিত। বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর বৃত্তি নিয়ে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি পর্যায়ে পড়াশোনার জন্য জার্মানিতে যান শিক্ষার্থীরা।

জার্মানিতে বর্তমানে ৪৫০ টির বেশি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্নাতক, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি বিষয়ে পড়ার সুযোগ আছে। জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে গভর্ন্যান্স, পলিটিক্যাল সায়েন্স, অ্যাড ভান্সড ম্যাটারিয়ালস, অ্যাড ভান্সড অনকোলজি, কমিউনিকেশন টেকনোলজি, এনার্জি সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, ফিন্যান্স, মলিকিউলার সায়েন্স, বিভিন্ন ভাষা বিষয়ে পড়াশোনা, পদার্থ বিজ্ঞান, গণিত, কম্পিউটার সায়েন্স সহ প্রকৌশল ও জীব বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়ে পড়ার সুযোগ আছে।

অনলাইনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইট থেকে জার্মানির বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের সব প্রক্রিয়া ও বৃত্তি সম্পর্কে জানা যায়। কাছ থেকে সরাসরি পরামর্শ নিতে পারেন। জার্মানির শিক্ষা ব্যবস্থা, দৈনন্দিন জীবন যাপন,পড়ালেখা-চাকরির সুবিধা সহ যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাচ্ছে।

উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বিষয় নির্ধারণের ব্যাপারে আপনাকে বুদ্ধিমান হতে হবে।সব বিষয়ে (Subject) ফান্ড পর্যাপ্ত নয়।বাংলাদেশ থেকে এক জন ছাত্র যা ব্যবহারিক জ্ঞান নিয়ে আসে, তা জার্মানির মতো হাইটেক দেশের জন্য পর্যাপ্ত নয়।এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ছাত্রদের নতুন জিনিস জানা এবং শেখার পৃহা থাকতে হবে।ভালো বিষয়, ভালো বিশ্ববিদ্যালয় এবং ছাত্র বৃত্তির জন্য যথেষ্ট ধৈর্য নিয়ে ইন্টানেটে সার্চ করা এবং যোগাযোগ দক্ষতা বাড়াতে হবে। বিগত বছর গুলোতে যেসব ছাত্র উচ্চ শিক্ষার জন্য জার্মানিতে পাড়ি জমিয়েছে তার প্রায় ৯৫ শতাংশ ছাত্রই সফল ভাবে উচ্চশিক্ষা সমাপ্ত করে চাকরি, পিএইচডি, পোস্ট ডক্টরেট গবেষণা বা বিভিন্ন গবেষণা কাজে নিয়োজিত আছেন।  মজার ব্যাপার হলো সংখ্যায় কম হলে ও বাংলাদেশী ছাত্ররা পার্শ্ববর্তী ভারত বা পাকিস্তানের ছাত্রদের তুলনায় বেশি গুণ সাফল্যের স্বাক্ষর রাখছে।  বর্তমানে প্রায় অর্ধ শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক বিষয়ে আন্তর্জাতিক মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্স চালু আছে। ধীরে ধীরে সব বিশ্ববিদ্যালয় একাধিক বিষয়ে ইংরেজি মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মাস্টার্স কোর্স চালুর পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।  ছাত্রদের দৈনন্দিন কাজের প্রয়োজনে ব্যবহারিক জার্মান ভাষা শিক্ষার জন্য আন্তর্জাতিক কোর্স গুলোতে জার্মান ভাষার কোর্স বিনা মূল্যে শেখানো হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে খণ্ড কালীন ছাত্র চাকরি বা পিএইচডি গবেষণার জন্য জার্মান ভাষাতে মন একটা জরুরি নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে পার্ট টাইম কাজের জন্য জার্মান ভাষা জানা জরুরি।

একজন ছাত্র পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিমাসে ৮৬ ঘণ্টা কাজের অনুমতি পায়।  ৫০-৬০ ঘণ্টা পার্টটাইম কাজ পেলেই মোটামুটি খরচ চালানো যায়।  এছাড়া ছয় মাস অর্ধ দিবস বা তিন মাস পূর্ণ দিবস কাজের অনুমতি ছাত্র ভিসাতে দেয়া হয়। কম্পিউটার সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা (যেমন: কম্পিউটার প্রোগ্রামিং, ওয়েব পেজ ডিজাইন বা অন্যান্য) থাকলে খণ্ড কালীন ছাত্র চাকরি বা পড়াশোনা শেষ করার পর চাকরি পেতে যথেষ্ট সহায়ক হয়।

চাকরি:

চাকরির ক্ষেত্রে জার্মান ভাষা জানা থাকলে বাড়তি সুবিধা এবং চাকরি পাওয়া সহজ হয়।  জার্মানিতে অবস্থিত বিভিন্ন বহু জাতিক কোম্পানি গুলোতে জার্মান ভাষা জানা জরুরি নয়।  এব্যাপারে কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ প্রস্তুত কারী বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান এর ইঞ্জিনিয়ার মোঃ সাইফুল্লাহ জানান, জার্মানি ভাষা জানা থাকলে এখানে চাকরির সম্ভাবনা ৯০ শতাংশের বেশি। বাংলাদেশের ছাত্ররা জার্মানি এবং এর শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে খুব বেশি তথ্য জানেনা।  এখানে টিউশন ফি ছাড়া পড়াশোনা করা যায়, উপরন্তু স্কলারশিপের সুযোগ ও প্রচুর।  আমার স্ত্রী জার্মানিতে এসে সিমেন্স কোম্পানির স্কলারশিপ অর্জন করে। এখানের সুযোগ গুলো সম্পর্কে বাংলাদেশী ছাত্রদের আরো বেশি জানা দরকার এবং মিডিয়াতে আসা দরকার।  জার্মানি সহ ইউরোপের অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা হলো ই ইউ ভিসা (EU Visa)। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভুক্ত যেকোনো একটি দেশের ভিসা থাকলে আপনি সেই ভিসা ব্যবহার করে যেতে পারবেন অন্যান্য দেশেও। এক্ষেত্রে চাকরি, গবেষণা বা ভ্রমণের জন্য ইইউভুক্ত দেশ গুলোকে এক দেশ হিসেবে ভাবতে পারেন।

এপ্লাই করার ধাপসমূহ

১।  কোর্সসার্চ : পড়ার জন্য বিভিন্ন কোর্স খোঁজার জন্যে সরাসরি আমাদের ওয়েব

২।  কোর্স বাছাই : জার্মানিতে শুধু না, বাইরের যে কোনো দেশে পড়তে যাওয়ার আগে অবশ্যই দেখে নেয়া লাগে যেসব বিষয়ে আপনি পড়তে ইচ্ছুক।

৩।  ভাষা : অনেক সাবজেক্ট আছে জার্মান ভাষায়, অনেকেরই হয়তো জার্মান ভাষার কোর্স করা থাকতে পারে, তবে আমার পরামর্শ জার্মান ভাষার সাবজেক্ট গুলো আমাদের জন্য কঠিনই হবে।  কারণ টিচারের লেকচার বুঝতে হবে ভিন দেশি ভাষায়, আবার পরীক্ষার খাতায় বুঝাতে ও হবে সেই ভাষায়। উপরের লিঙ্কে সার্চ করে যেকোনো প্রোগ্রাম পেজ এ ঢুকলেই Course Language দেয়া থাকে।  যে লিঙ্কটা দেওয়া হল তাতে সব ইংরেজী ভাষার কোর্স। কারো যদি ইচ্ছা হয় জার্মান ভাষায় পড়ার তাহলে https://www.daad.de/deutschland/studienangebote/studiengang/en/ এই লিঙ্কে গেলে জার্মান, ইংরেজী সব মাধ্যমের সাবজেক্ট এক সাথে পাওয়া যাবে।

৪।  ভর্তি সেমিস্টার এই ব্যাপারটা কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেয়া থাকে Winter Semester only অথবা Summer semester only ev Both semester দেয়া থাকে।  এটা অবশ্যই খেয়াল করতে হবে।  Beginning of program, Program duration এগুলোও লিঙ্কে দেয়া থাকে।  আর Application Deadline তো অবশ্যই দেখা উচিত। Description of Content এই জিনিস টাহাল্কা দেখে নেয়া ভালো, ভিসার ক্ষেত্রে ইন্টারভিউতে এটা অবশ্যই কাজে লাগবে (যদি বাঙ্গালী ইন্টারভি উয়ার থাকে তাহলে তো এটা জানতেই হবে) সাথে সাথে এর ঠিক নিচে Course Description (Read More) – এইটা পড়তে হবে, অন্তত পক্ষে কত ক্রেডিটের কোর্স তা জানার জন্যে।

৫। টিউশন ফি: এইটা হলো পেজের সবচেয়ে গুরুত্ব পূর্ণ দেখার বিষয়।  টিউশন ফি, এন রোলমেন্ট ফি অনেক ভার্সিটিতে লাগেনা, কোথাও আবার লাগে প্রতি সেমিস্টার ৫০০-৭০০ ইউরোর মত।  তবে কিছু সাবজেক্ট, যেমন- এরোস্পেসে লাগে ২ বছরে ২০০০০ ইউরো+ ভ্যাট।  Cost of Living ৮০০ ইউরো দেয়া থাকলে ও জার্মানিতে ৫০০ ইউরো অনেক যথেষ্ট। মিউনিখের মত বড় শহর গুলোতে খরচ একটু বেশি, তবে ৫০০ রবেশি না।  খরচের একটা ব্যবচ্ছেদ জানলাম মিউনিখের একসিনিয়রের কাছ থেকে খাওয়া ৬০+ হেলথইন্সুরেন্স ৮০+ বাসাভাড়া ৩০০+ বিবিধ ৩০।  বেশি বেশি করে ধরেই বললাম এটা। অনেকের মনেই হয় তো প্রশ্ন জাগবে ট্রান্সপোর্টেশনের খরচ কই? এখানেই হলো টিউশন ফি রমজা।  টিউশন ফি অনেক ভার্সিটিতে নেয়া হয় স্টুডেন্ট ইউনিয়নের জন্যে, এরা আবার বাস-ট্রামের অথরিটির সাথে চুক্তি করে রাখে।  স্টুডেন্টদের একটা কার্ড দেয়া হয়, এটা সাথে নিয়ে চললে ট্রান্সপোর্টেশন খরচ নাই।  আবার ক্যান্টিনে ডিস্কাউন্টে খাওয়া ও যাবে এইকার্ড দেখিয়ে।  কিছু ভার্সিটি আবার কোনোটিউশন ফিনা নিয়েই এই সুবিধা গুলো দেয়।  এখানে আবার ফান্ডিং নিয়েও তথ্য দেয়া থাকে, যেমন ইন্টার্নশীপ অপর চুনিটি, স্কলারশিপ ইত্যাদি।

৬।  যোগ্যতা: IELTS, TOEFL লাগবে কিনা, কত লাগবে এইসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয় এ সেকশনে। মজার ব্যাপার হলো, আমরা চার বছর ইংলিশ মিডিয়ামেই পড়ি, এই জন্যে অনেক ভার্সিটিই IELTS, TOEFL চায়না। তবে হাই র‌্যাঙ্কড ভার্সিটি গুলো চাইতে পারে, ইভেন Gre-BI।  আর সেইফ সাইডে থাকার জন্যে IELTS, TOEFL, এজঊ করা থাকলে গ্রহণ যোগ্যতা ও বাড়ে, ভিসাতে ও সুবিধা হয়।  তবে এ গুলা করার ভয়ে এপ্লাই করা থেকে বিরত থাকাটা ও বোকামি।  অনেক ভার্সিটি আবার হয়তো ইন্টারভিউ ও নিতে পারে।

৭।  এপ্লাইকরা এই সব গুলো বিষয় মন মতো হলে পেজের উপরের দিকে ডানপাশে Contact ev Submit Application to থেকে এড্ড্রেস নিয়ে এপ্লাই করা শুরু করতে হবে।  বেশির ভাগ ভার্সিটির অনলাইনে এপ্লাই করার সু্েযাগ আছে। তবে যাই হোক, হার্ড কপি অবশ্যই পাঠাতে হবে (ব্যাতিক্রমও হতে পারে)।  আরেকটা ব্যাপার, ২০ দিনের বেশি সময় হাতে থাকলে হার্ডক পিসর কারি ডাকেই পাঠানো ভালো, মাত্র ২০০ টাকার মত খরচ হয়, সময় লাগে ৭-১৫ দিন।  আর সার্টিফাইড ফটোকপি নিয়ে ও একটা কনফিউশন হয় কমনলি, কেউ বলে <span style=”color: #ff0000;”>ট্রুক</span> পিদিতে হবে আবার কেউ বলে নোটারাইজড কপিই এনাফ।  এটা এক টুখোঁজ খবর নিয়ে দেয়া ভালো। জার্মান এম্বাসিতে গিয়ে ফ্রি এটেস্টেড করানো যায়, তবে হাতে ৭ দিন সময় নিয়ে সেটা করাটা ভালো।  এপ্লাই করা শেষ হলে এরপর হয়তো সর্বোচ্চ ২ মাস পর্যন্ত ও ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে।  সময় কাটানোর জন্যে যারা জার্মান ল্যাক্সগুয়েজ কোর্সে ভর্তি হওয়া যায় কিং বা, Rosetta Stone &#8211; German Language Course সফটওয়ারটা ডাউনলোড করে ঘরে বসে জার্মান ভাষা র্প্যাকটিস করা যায়।

৮।  ভিসা ও অন্যান্য: ভার্সিটি থেকে অফার লেটার মেইলে আসার সাথে সাথে <a href=”http://www.dhaka.diplo.de/Vertretung/dhaka/en/02/Einreise__Hauptbereich.html” target=”_blank” rel=”noopener noreferrer”>German Embassy Dhaka[/url] এখান থেকে টেলিফোন নাম্বার নিয়ে ভিসা এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে ফেলতে হবে, যারা ঢাকায় থাকে তারা ফোন না করে সরাসরি এম্বাসিতে চলে যাওয়া উচিত।  অবশ্যই ৬-৭ সপ্তাহ সময় হাতে রেখে ভিসার জন্যে এপ্লাই করতে হবে।

সিমুল্ট্যনাসলি আরো একটা জিনিস করে রাখতে হবে।  সেটা হলো ব্লকড একাউন্ট।  ব্লকড একাউন্ট নিয়ে আবার অনেকের মধ্যে একটা ভয় কাজ করে , এখান থেকে প্রয়োজন না হলে ১ টাকা ও তোলা লাগেনা, যদি না কেউ জার্মানিতে গিয়ে কোনো কাজ না করে মাসে মাসে এখান থেকে টাকা তুলে খাওয়ার প্লান করে।  এইটা জাস্ট একটা ভিসা ফরমালিটি। টাকা পয়সা রেডি থাকলে ব্লকড সার্টিফিকেট দিতে ১ দিন মাত্র সময় লাগে ব্যাঙ্কের।  এই ব্লকড সার্টিফিকেট আর উপরের পিডিএফ ফাইলের কথা মতো সব সার্টিফিকেট (ইনক্লুডিং Registration Card, Admit Card of S.S.C &amp; H.S.C), ফটোকপি (২ কপি থাকলেও আসলে ৩ কপি নিতে হবে) এবং ফরম ২ কপি ফিলাপ করে প্রিন্ট করে নিয়ে যেতে হবে ভিসা ইন্টারভিউয়ের দিন এম্বাসিতে। অনেক সময় নাকি এম্বাসি এগুলো আগেই জমা নেয়।

4
Sustainable Development / Rohingyas: A tougher diplomacy needed
« on: May 05, 2019, 08:56:15 PM »
The fate of the Rohingyas returning to their homeland depends, by all intents and purpose, solely on the future actions of the Myanmar government. Bangladesh proposed Myanmar to directly interact with Rohingyas to assure them about safety and security in Myanmar so that they gain confidence to return. Bangladesh also demanded that the Myanmar government must acknowledge the identity of Rohingyas and recognise them as citizens of Myanmar. These previously standing demands were reiterated again at the fourth meeting of the Joint Working Group (JWG) of Bangladesh and Myanmar in Naypyidaw on Friday.

The three previous Joint Working Group meetings between Bangladesh and Myanmar made no significant progress in Rohingya repatriation, as Myanmar has not taken any steps like amending its citizenship laws. Holding JWG meetings intermittently is just a waste of time if Myanmar does not amend its citizenship laws and create a congenial environment for the Rohingyas to return. We are illogically expecting the junta that pushed out a people across by torching their properties and killing them brutally will take them back willingly.

Myanmar does not directly deny taking them back but they keep delaying the process for the Rohingyas to return to their homeland. For instance the repatriation was supposed to start on November 15 last year, which never happened. As per the first JWG meeting agreement on January 15, 2018 at Naypyidaw, the repatriation was to be completed preferably within two years of the process starting. But the process is yet to begin due to intervention of the international community fearing for the lives of the Rohingyas.
Bangladesh must insist that as the Myanmar government has created the problem therefore they must resolve it. There has been a consensus in the global community, except one or two countries, that Myanmar has committed genocide in Rakhine state and must not go unpunished. So, Bangladesh should make it clear that the delay in the repatriation will cause trouble for Myanmar. The lingering of the issue will not only affect both countries but also the entire region. Therefore Bangladesh must evolve tougher diplomacy of stronger words and actions to effectively start the repatriation of Rohingyas.


5
Humanities & Social Science / Between motherhood and employment
« on: April 11, 2019, 07:32:02 PM »
Exactly a month from now, the world will celebrate Mother’s Day. In lieu of the greeting card tags, flower bouquets, and arguments about monetizing sentiments, let’s shift the conversation towards motherhood itself.

According to ILO, women’s global labour force participation rate was 48.5% last year, which makes for a good place to start: Is the female workforce getting the benefits they need, and should they decide to become mothers?

Maternal leave is an employee benefit which allows expecting mothers to take time off from their work to care for their child. For healthy brain development and overall well-being, a child needs the care of their mothers.

The arguments for maternal leave are many, but a strong factor, especially when juxtaposed with motherhood, is that studies have linked paid maternity leave to lower infant mortality rates. Aside from giving the time needed for mothers to recover from childbirth, maternal leave can also aid in reducing the risk of post-partum depression.

There are persistent arguments against it, and with the US still without mandated leave for mothers, they are also worth looking at. Cost is one of them -- funding leave for employees is not cheap, regardless of them being paid or unpaid.

According to neo-classical economists, the demand for women employees will fall should there be an expectation of rising costs of hiring women. Segueing this to the term “motherhood penalty” will remind us of the systematic disadvantages that women often face in the workplace compared to their male counterparts, with motherhood being one of the key factors put forward.

However, maternal leave does not just benefit employees. More and more organizations are realizing how much of a competitive advantage it is to offer time off to new parents. Organizations can benefit from increased productivity from returning workers.

Google extended its maternity leave program, and the result was happier and more productive employees. The company stated that the cost was “more than offset by the value of retaining expertise and avoiding the cost of a new hire.”

It also does wonders on employee loyalty -- a supportive workplace environment in the crucial time of pregnancy and child-rearing is likelier to have their employees want to keep working there.

If our understanding of parental leave is centred on the needs of newborns, then where does paternity leave step in? The presence of fathers or secondary parents are not only needed for the child, but also assists the mothers in alleviating some of the burden of caring for a new baby.

Do we have the scope to debate over paternity leave, when mothers -- the traditional caregivers deemed by society -- are having a hard time securing time off?

Canada has rolled out a new parental leave policy just last month for the secondary parent to be able to take five to eight weeks off to care for their child. The policy aims to promote greater gender equality by integrating men into mainstream ideas of nurturing and care-giving.

While Section 45 of the Bangladesh Labour Act 2006 mandates mothers to be able to take 16 weeks off from work, this is hardly practiced throughout the spectrum of employment in the country and paternity leave far from being brought into the dialogue.

The good news is that organizations have become increasingly aware of the importance and need for implementing such policies. BRAC has recently extended its existing paternity leave policy for its employees.

Expectant fathers can now take four weeks off from work with pay. For mothers, a six months’ leave with pay is granted; in case of adopting mothers, a three months’ leave can be availed.

Family bonding and healthier children are telltale proponents for parental leave. But it is about time that all employers understand that allowing new parents time off also means greater financial stability for their employees, greater employee loyalty, stronger attachment to the workplace, and, if we play our cards right, a step towards gender equality.

6
Situations can rapidly turn calamitous and cause numerous casualties and losses when fires erupt in densely populated areas or slums in Bangladesh.

To prevent these incidents, an early warning fire alarm system, "Lumkani," is being used as a fire detector in the slums of Dhaka.

This low-cost device, connected to each other and a central watchtower via network, is a heat detector, unlike traditional detectors which respond to smoke. Lumkani’s makers, a South African social enterprise, say this is owing to the fact that slum dwellers often use lighting and cooking methods that produce smoke.

According to the Department of Fire Service and Civil Defence, some 17,000 fire incidents took place in a year on average while around 2% of all fires were in slums across the country.

Within one week, 71 people died in the devastating fire of Old Dhaka's Chawkbazar, and around 500 houses were burned down by the Jahangir slum fire in Bhashantek of Mirpur. Previously, Mohakhali's Korail slum also had an onslaught of fire incidents several times.

Across the world, one person in ten, currently lives in a slum. With the global urban population estimated to expand by 2.5 billion people over the next 25 years, this number is only likely to grow. Every day, people living in slums face a deadly risk to their health and safety.

The combination of houses built closely together, with dangerous electrical connections, and open flames used for heating and cooking, creates perfect conditions for quickly spreading fires.

Considering these dangers, World Vision International, Bangladesh, is bringing Lumkani to two slums of Dhaka: Korail and Kallyanpur.

Small but effective

On January 18, a signal came from a house of Korail slum, with a GPS notice to the World Vision Fire Signal Watch Tower. After that, the monitoring team informed the slum's community by text message, which was stored in their data, about the signal.

Over phone, slum dwellers said the signal was not because of the fire. Food for a wedding ceremony was being cooked in that area, and the device gave a signal by detecting a rise in temperature that was above normal.

Whenever a fire is detected, an alarm will go off from all devices within a 40 metre radius. Warnings will be sent via SMS around the community and fire services will automatically be notified with GPS coordinates of the area.

All of this allows for a rapid community response that saves lives and properties, World Vision Bangladesh said.

Under the project, ‘Urban Slum Fire Readiness,’ this private organization bought the device from South Africa.

Lumkani is the world’s first fire detection system designed specifically for urban slums. The system detects fires in slums by measuring the rapid rise in temperature and sends out a warning to other local devices, which are networked by radio frequency, project Manager Fatema Meherunnessa said.

“As slum dwellers are not alert during a fire, considering all this we launched a pilot program in June 2017 and about four thousand Lumkani devices were installed in 2,100 houses in Kallyanpur, and 2,000 houses in Korail,” she said.

Future plan

World Vision will run this pilot program until June 2019.  Their target is to install this device in slum areas across the country. However, when the project ends, they want it to be distributed through government sponsorship or other companies because the device is quite expensive as it is bought from Africa.

Fatema said the project's proposal was to bring the latest version of this innovative system to highly vulnerable urban communities in Asia, beginning with Dhaka of Bangladesh, home to 3.6 million people living in closely packed areas.

Major AKM Shakil Nawaz, director (Operation and Maintenance) of Fire Service and Civil Defence, said this technology may warn people about a fire.  However, first the awareness of people in the slums about fires is necessary.

He said: "Last month, seven people of the same family died in Chittagong because they locked themselves inside the house to protect themselves and slept. If these techniques are useful in such cases, the number of dead might decrease."

7
Humanities & Social Science / A deep sickness in our society
« on: April 11, 2019, 07:22:54 PM »
What happened to an 18-year-old female madrasa student from Feni cannot be seen as an isolated incident -- we have seen terrible crimes like this happen in Bangladesh many times before.

After the young woman had lodged a case against the madrasa principal, Sirajuddaula, for sexual misconduct, she was doused with kerosene and set on fire by supporters of the principal.

Every year, countless women and girls are raped, assaulted, or sexually harassed in the country, and most of these crimes do not get reported or investigated due to the fear and stigma attached to sexual violence in Bangladesh.

The Feni madrasa incident shows exactly why women find it so hard to report sexual violence -- when they do, they often face violent retaliation, and are therefore doubly victimized.

It is a fact that, as a culture, we still do not take sexual violence as seriously as we should, too often shaming and blaming the victim, investigating the accuser instead of the accused.

The Feni student was brave enough to come forward about her principal’s misdeeds, and for that she was punished, through which the attackers may have hoped to silence all other women who think of speaking out against their abusers.

But it is time to shatter the fear and stigma, it is time for all of us to rise up and fight this deep sickness within our society -- a sickness that keeps letting rapists and abusers off the hook while punishing victims.

If we, as a nation and as a society, fail to address this problem and make life safer for women, our development ambitions will remain a far cry; because there can be no meaningful development without ensuring the basic rights of women first.

8
এনালা নগুলুর যখন ১৩ বছর বয়স, তখন তাঁর ৪৭ বছর বয়সী এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয়। ওই ব্যক্তির তখন আরও দুটি স্ত্রী ছিল। যখন তাঁর স্কুলে গিয়ে পড়ালেখা করার কথা ছিল, কথা ছিল গোটা বিশ্ব সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের, তখন তাঁর কাঁধে বিয়ে এবং সন্তানধারণের মতো গুরুদায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হয়। ১৫ বছর বয়সে এনালা প্রথম সন্তানের জন্ম দেন এবং তারপর তাঁর আরও পাঁচটি কন্যাসন্তান হয়। এটা আসলে বর্তমান বিশ্বের সাড়ে ৩৭ কোটি নারীর গল্প, যাদের বয়স ১৮ বছর হওয়ার আগেই বিয়ে হয়ে যায় এবং সন্তানের মা হয়।

যে বিষয়টি এনালাকে অন্যদের চেয়ে অনন্য করে তোলে, তা হচ্ছে তিনি তাঁর আকাঙ্ক্ষা দমিয়ে রাখেননি। তিনি ২৯ বছর বয়সে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। মালাবির এই নারী পড়ালেখা চালিয়ে যান এবং ২০১২ সালে স্কুলশিক্ষা সমাপনীর সনদ হাতে পান। এনালা এখন কারোঙ্গায় ফাউন্ডেশন ফর কমিউনিটি সাপোর্ট সার্ভিসেসে একজন মাঠকর্মী হিসেবে কাজ করছেন। কিন্তু শুধু পড়ালেখা ও চাকরি করাই তাঁর একমাত্র স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা ছিল না, তিনি তাঁর ছয় কন্যাসন্তানকে বাল্যবিবাহ না দিয়ে পড়ালেখা করানোর ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন।

এনালা তাঁর এই স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছেন। তিনি মালাবিতে বাল্যবিবাহ ও জোরপূর্বক বিয়ে প্রতিরোধে কমনওয়েলথের কার্যক্রমে নিজেকে যুক্ত করেছেন। এখন মালাবিতে মেয়েদের বাল্যবিবাহ ও জোরপূর্বক বিয়ে নিষিদ্ধ।

এনালার মতো নারীদের ঘুরে দাঁড়ানোর কাহিনি আমাকে অনুপ্রাণিত করে তঁাদের জন্য সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে কিছু করতে, যাতে তাঁদের কথা কেউ ভুলে না যায় এবং তাঁদের দুর্দশা লাঘবে সিদ্ধান্ত নেয়। খুব অল্প বয়সেই আমি এটা উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম যে নারী-পুরুষের সমতা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির প্রধান উৎস। কিন্তু সমাজের ধ্যানধারণা ও বৈষম্যমূলক আইনকানুন সব ক্ষেত্রে নারীদের পূর্ণাঙ্গ অংশগ্রহণকে বাধাগ্রস্ত করছে। এই বিপজ্জনক বাস্তবতা আমাকে আইন পেশা বেছে নিতে উদ্বুদ্ধ করে এবং সম্ভাব্য সব উপায়ে নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়নে সাহায্য করতে আমাকে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করে তোলে।

Eprothom Alo১৯৯৭ সালে আমি স্কটল্যান্ডের অ্যাস্টালের ব্যারোনেস হিসেবে হাউস অব লর্ডসে প্রবেশ করি। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর ও স্বরাষ্ট্র দপ্তরে আমার গোটা মন্ত্রিত্বের জীবনে এবং ইংল্যান্ড, ওয়েলস ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের প্রথম নারী অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে আমি নারীর ক্ষমতায়ন ও নারী-পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে চেষ্টা চালিয়ে গেছি। ১৯৯৯ থেকে ২০০১ সালের মধ্যে পররাষ্ট্র দপ্তরে ফোর্সড ম্যারেজ ইউনিট, ইন্টারন্যাশনাল চাইল্ড অ্যাবডাকশন ইউনিট ও হিউম্যান রাইটস প্যানেল সৃষ্টি করেছি বিশ্বজুড়ে তরুণ-তরুণীদের সহায়তা ও সমর্থন জোগানোর জন্য।

এরপর ২০০৩ সালে আমি পারিবারিক সহিংসতার ওপর আন্তমন্ত্রণালয় একটি গ্রুপের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করি। এখানে আমরা এই অপরাধের ক্ষতিকর প্রকৃতি মোকাবিলা করার জন্য একটি বহু সংস্থাভিত্তিক পদ্ধতি চালু করি। আমরা অন্যান্য সরকারি বিভাগ, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে মিলিতভাবে কাজ করে শেষ পর্যন্ত পারিবারিক সহিংসতার ঘটনা বছরে ৬৪ শতাংশ কমিয়ে আনি এবং পারিবারিক সহিংসতার কারণে ক্ষতির পরিমাণ ৭১০ কোটি পাউন্ড কমিয়ে আনি।

তিন বছর আগে ২০১৬ সালে যখন আমি কমনওয়েলথের প্রথম নারী মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পাই, তখন আমি নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করি এবং কমনওয়েলথের সনদে তা অন্তর্ভুক্ত করি। ২০১৬ সালে বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, কমনওয়েলথের ৪১টি দেশে কমপক্ষে একটি করে আইন আছে, যা নারীদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার সুযোগে বাধা সৃষ্টি করে।

এ ধরনের বাধা দূর করতে কমনওয়েলথ ইউএন উইমেনের সহযোগিতা নিয়ে একটি কৌশল গ্রহণ করে, যাতে বিশ্বব্যাপী এসব বৈষম্যমূলক আইন নির্মূল করা যায়। একে বলা হয় ‘লেভেলিং দ্য ল’। এই কাঠামোর মধ্যে আমরা সদস্যদেশগুলোকে নারী অধিকার সংরক্ষণে আইন পাস, সংশোধন ও সংস্কারে সাহায্য করি।

আমরা কোনো নারী ও মেয়ের দক্ষতা, শক্তি ও উৎসাহ হারানোর ঝুঁকি নিতে পারি না। আমরা অবশ্যই সেই সামাজিক মূলধন গড়ে তুলব, যা দীর্ঘ মেয়াদে নারীদের সম্পদ বৃদ্ধি ও উন্নত স্বাস্থ্য নিশ্চিত করবে। প্রত্যেক নারী ও মেয়ে নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য পুরুষের মতো সমান অধিকার রাখে, হতে পারে সে নাউরুর মতো ১০ হাজার জনসংখ্যার ছোট কোনো কাউন্টিতে বসবাস করছে বা ভারতের মতো ১৩০ কোটি জনসংখ্যার দেশে বসবাস করছে।

নারীর ক্ষমতায়নের জন্য আমরা সদস্যদেশগুলোর নানা কর্মসূচি ও উদ্যোগে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি। এর মধ্যে রয়েছে:

১. জমি ও সম্পত্তির উত্তরাধিকারে নারীর অধিকারের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে আইনি নথিপত্র সরবরাহ করা।

২. নারী ও মেয়েদের ওপর সহিংসতার আর্থিক ক্ষতির পরিমাপ করা, যেমন রোজগার হারিয়ে ফেলা।

৩. অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীদের সমান অংশীদার হিসেবে দেখা হচ্ছে, এটা নিশ্চিত করতে কমনওয়েলথ মহিলাবিষয়ক মন্ত্রীদের ত্রৈমাসিক বৈঠকে বসা।

৪. নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নারীদের বৃহত্তর অন্তর্ভুক্তি ও অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করতে নারী-পুরুষের অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি কমনওয়েলথ চেকলিস্ট তৈরি করা।

৫. ‘জেন্ডার ইক্যুয়ালিটি ইন দ্য কমনওয়েলথ’ নামে একটি বার্ষিক প্রকাশনায় সহায়তা দেওয়া, যেখানে বিভিন্ন দেশের নারীর অগ্রগতি-সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে।

৬. কমনওয়েলথ উইমেনস ফোরামের বৈঠকে দুই বছর অন্তর বসা, যেখানে নারী-পুরুষের বৈষম্য নিরসনে সদস্যদেশগুলোর নেতাদের কাছে সুপারিশ তুলে ধরা হবে।

নারীর ক্ষমতায়ন শুধু নারীর বিষয় নয়, এটা প্রত্যেকের বিষয়। নারীর জন্য বিনিয়োগ মানে এমন একটি ভবিষ্যৎ, যা আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, আরও ন্যায্য, আরও সমৃদ্ধ এবং আরও নিরাপদ। এর অর্থ হচ্ছে বাল্যবিবাহ নির্মূল করতে, মেয়েদের স্কুল থেকে ঝরে পড়া রোধ করতে, নারীদের উদ্যোক্তা হওয়ার পথের সব বাধা দূর করতে এবং নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে আমরা প্রত্যেকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

আমি এ জন্য চিন্তিত যে আমরা যদি সময়মতো নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহায়তাকারী নীতিগুলো বাস্তবায়ন না করি, তবে ২০৩০ সালের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতি মন্থর হবে। কাজেই আমাদের এখন এমন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে, যাতে ২০৩০ সালের মধ্যে নারী-পুরুষের পূর্ণাঙ্গ সমতা অর্জিত হয়।

9
স্বাধীনতা ও মানবাধিকার একটি অন্যটির পরিপূরক। মানুষের চিন্তার স্বাধীনতা ও কর্মের স্বাধীনতা জন্মগত অধিকার। স্বাধীনতা সীমাহীন নয়; স্বাধীনতা নির্দিষ্ট সীমারেখার বৃত্তে সংরক্ষিত। যা বিদায় হজের ভাষণে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তিনটি শব্দে ঘোষণা দিয়েছেন—সব মানুষের জীবন, সম্পদ, সম্মান সংরক্ষিত। যেমন আরাফাতের দিন, আরাফাতের প্রান্তর, মক্কা ভূমি ও কাবা শরিফ সম্মানিত ও সুসংরক্ষিত। (মুসনাদে ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল রহ.)।

ইসলামের অনুশাসন অনুসরণের জন্য চাই স্বাধীনতা। স্বাধীনতার মাধ্যমেই সুরক্ষিত হয় মানবাধিকার। অর্থাৎ স্বাভাবিক জীবন ও স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা।

আল্লাহ মানুষকে জ্ঞান দিয়েছেন ভালো–মন্দ, সত্য–মিথ্যা ও ন্যায়–অন্যায় অনুধাবনের জন্য। চিন্তা ও কাজের স্বাধীনতা দিয়েছেন কর্ম অনুযায়ী পরকালে বিচার ও ফলাফল প্রদানের নিমিত্তে। কর্মফল অনুসারে জান্নাত বা জাহান্নামের অধিকারী হবে। তাই আল্লাহ এই জগতে মানুষকে কোনো কাজে বাধ্য করেন না। এমনকি ধর্ম–কর্ম বিষয়েও জোর করা হয় না। এ বিষয়ে কোরআন মজিদে রয়েছে, ‘ধর্মে কোনো জবরদস্তি নেই, সত্যাসত্য সুস্পষ্ট পার্থক্য হয়ে গেছে। যারা অশুভ শক্তিকে অস্বীকার করে মহান আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করল; তারা মজবুত হাতল শক্তভাবে ধারণ করল, যা কখনো ভাঙার নয়; আল্লাহ সর্বশ্রোতা মহাজ্ঞানী।’ (সুরা-২ বাকারা, রুকু: ৩৪, আয়াত: ২৫৬)।

সব মানুষের পিতা হজরত আদম (আ.) এবং মাতা মা হাওয়া (আ.)। জগতের সব মানুষ একই পিতা–মাতার সন্তান। সব মানুষ ভাই ভাই, মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই। শ্রেণিবিভেদ, জাতি–গোত্র ও গোষ্ঠীভেদ, বর্ণবৈষম্য, ভাষাবৈচিত্র্য এবং ভৌগোলিক ও নৃতাত্ত্বিক পার্থক্য মানুষে মানুষে কোনো প্রভেদ সৃষ্টি করে না। বিদায় হজের ভাষণে নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘কালোর ওপর সাদার প্রাধান্য নেই, অনারবের ওপর আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই।’ (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ইবনে কাসির রহ.)।

Eprothom Aloমানুষের কর্মের প্রকৃত বিচার ও পূর্ণ ফলাফল দুনিয়াতে নয়, পরকালেই মানুষ তার কৃতকর্মের ফল সম্পূর্ণ লাভ করবে ও ভোগ করবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কিতাবধারীদের মধ্যে যারা কুফরি করে এবং মুশরিকরা জাহান্নামের অগ্নিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করবে; তারাই সৃষ্টির অধম। নিশ্চয় যারা ইমান আনবে ও সত্কর্ম করবে, তারাই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ। তাদের প্রতিপালকের কাছে তাদের জন্য পুরস্কার হিসেবে রয়েছে স্থায়ী জান্নাত; যার নিম্নদেশ দিয়ে নদী প্রবাহিত হয়, সেথায় তারা চিরস্থায়ী হবে। আল্লাহ তাদের প্রতি প্রসন্ন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট। এটি তার জন্য যে তার প্রতিপালককে সমীহ করে।’ (সুরা-৯৮ বায়্যিনাহ, রুকু: ১, আয়াত: ৬-৮)।

ইসলামের মহত্ত্ব ও সৌন্দর্য হলো উদার চিন্তা, যুক্তিনির্ভরতা, পরমতসহিষ্ণুতা, ভিন্ন ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহাবস্থান। সর্বোপরি বিশ্বভ্রাতৃত্ব ও সর্বজনীন মানবতাবোধ। ধৈর্য-সহ্য, ক্ষমা, দয়া—এসব মহৎ গুণ ইসলামকে অনন্য করেছে। স্রষ্টায় বিশ্বাস করে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হজরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর অনুপম আদর্শকে ধারণ করাই হলো ইসলাম। ইসলাম জন্মগত ধর্ম নয়। পৃথিবীর যেসব মানুষ ওই বিশ্বাস ও আদর্শ গ্রহণ করবে, তারাই মুমিন ও মুসলিম।

বিশ্বমানবতার মুক্তি, স্বাধীনতা ও মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য সব মানুষকে মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন হতে হবে। বিশেষত মুমিন মুসলমানদের জন্য এসব গুণে গুণান্বিত হওয়ায় ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বিশ্বশান্তি স্থাপন, স্বাধীনতা সুরক্ষা ও মানবাধিকার নিশ্চিত করা মুসলমানের প্রধান দায়িত্ব। আল্লাহ সহায় রয়েছেন, এ মর্মে কোরআন কারিমে বলেছেন, ‘হে বিশ্বাসীরা! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গেই আছেন। যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তোমরা তাদের মৃত বলো না, বরং তারা জীবিত কিন্তু তোমরা উপলব্ধি করতে পারো না। আমি তোমাদের ভয়, ক্ষুধা এবং ধনসম্পদ ও জীবনহানি এবং ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা পরীক্ষা করব। তুমি সুসংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের। যারা তাদের ওপর বিপদ আপতিত হলে বলে—আমরা তো আল্লাহরই এবং নিশ্চিতভাবে তারই নিকট প্রত্যাবর্তনকারী। এরাই তারা, যাদের প্রতি তাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে বিশেষ অনুগ্রহ ও রহমত বর্ষিত হয়, আর এরাই সত্পথে পরিচালিত।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৫৩-১৫৭)।

প্রিয় নবী (সা.)–এর দাওয়াতি কার্যক্রমে তায়েফের হৃদয়বিদারক ঘটনায় মহানুভবতা ও মক্কা বিজয়ের ক্ষমা ও উদারতা তাঁকে সর্বোচ্চ শিখরে আসীন করেছে, যা সর্বকালের সব মানুষের জন্য অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে অনন্তকাল। মহানবী (সা.)–এর উম্মত হিসেবে সে আদর্শ আমাদেরও অনুসরণ করতে হবে।

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী: বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির যুগ্ম মহাসচিব ও আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজমের সহকারী অধ্যাপক

10

চীন
চীন
প্রতিবেশী দেশগুলোকে ঋণ দিয়ে ধীরে ধীরে আগ্রাসনের পথে হাঁটতে শুরু করেছে চীন। আর এটাই চিন্তা বাড়াচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। সিনেটের আর্মড সার্ভিসেস কমিটির কাছে গত বৃহস্পতিবার পুরো বিষয়টি জানিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মার্কিন জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জোসেফ ডানফোর্ড। ইকোনমিক টাইমস সূত্রে এ খবর পাওয়া গেছে।

চীনের আর্থিক সহযোগিতায় পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশে গদর বন্দর বানাচ্ছে পাকিস্তান। গদর বন্দরসহ বিভিন্ন নির্মীয়মাণ প্রকল্পের জন্য চীনের কাছ থেকে ১ হাজার কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে পাকিস্তান। ডানফোর্ড জানিয়েছেন, এভাবেই প্রতিবেশী দেশগুলোকে ঋণের জালে ফাঁসিয়ে নিজেদের প্রভাব বিস্তারে মরিয়া হয়ে উঠেছে চীন। চীনের এই ঋণনীতি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যে যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করতে পারে, সে সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরেছেন ডানফোর্ড।

Eprothom Aloচীনের এই ‘ছদ্মবেশী ঋণনীতি’ সম্পর্কে বলতে গিয়ে শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের উদাহরণও তুলে ধরেন ডানফোর্ড। সমুদ্রবন্দর বানানোর জন্য চীনের কাছ থেকে ঋণ নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। পরিবর্তে ওই বন্দর ৯৯ বছর ব্যবহারের জন্য চীনকে ইজারা দেয় শ্রীলঙ্কা। শুধু তা-ই নয়, শর্ত অনুযায়ী বন্দরের ৭০ শতাংশই চীনের আয়ত্তে থাকবে। মালদ্বীপের ক্ষেত্রেও একই নীতি নিয়েছে চীন। মালদ্বীপের কাছে তার পাওনা ১৫০ কোটি ডলার, যা দেশটির মোট দেশজ উৎপাদনের ৩০ শতাংশ।

চীনের ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের প্রধান শরিক হলো ইউরেশিয়া অঞ্চল। রাশিয়া, কাজাখস্তান, তুর্কমেনিস্তান ও তাজিকিস্তানকে চীন তেল ও গ্যাসে ডুবিয়ে দিতে চলেছে—এমন পরিকল্পনার কথা এখন সবার মুখে মুখে। গত কয়েক বছরে রেলপথেও ইউরেশিয়ার কিছু দেশের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করে ফেলেছে চীন। এখন পর্যন্ত এই অঞ্চলে চীনা সামরিক ঘাঁটি বানানোর প্রত্যক্ষ তথ্য কারও হাতে নেই তা ঠিক, কিন্তু জিবুতিতে সেনা ঘাঁটি তৈরির পর ওই সব অঞ্চলেও তারা ঘাঁটি করতেই পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা।

মার্কিন জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জোসেফ ডানফোর্ড।
ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ইউরেশিয়া অঞ্চলে নিজেদের প্রভাব বাড়ানোর জন্য সি চিন পিং সরকার বিপুল পরিমাণ পুঁজির সংস্থান করেছে। আর তাতে কাজে লাগানো হচ্ছে চীন ও পূর্ব ইউরোপের ১৬টি দেশ নিয়ে গড়া সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশনকে (এসসিও)। লক্ষণীয়, বেশ কিছু পূর্ব ইউরোপীয় দেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও (ইইউ) সদস্য।

 জর্জ বুশের সময় যুক্তরাষ্ট্রের যে রকম সক্রিয় মধ্য এশিয়া নীতি নিয়ে ছিল, ডোনাল্ড ট্রাম্পের জমানায় তা অনেকটাই অনুপস্থিত। মনে করা হচ্ছে, সিরিয়া ও আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের পর মার্কিন বুটের ছাপ আরও কমবে ওই এলাকায়। আর চীনের সবচেয়ে বড় মিত্র হলো রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের মাথাব্যথার এটাই মূল কারণ বলে বিশ্লেষকেরা মনে করেন।

বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বন্ধুত্বের হাত বাড়াচ্ছে চীন। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দক্ষিণ এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তেও নিজেদের প্রভাব বাড়াচ্ছে চীন। ডানফোর্ড তাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, এখনই যদি চীনের এই ছদ্মবেশী ঋণনীতি গুরুত্বসহকারে আমলে না নেওয়া হয়, তা হলে এর প্রভাব যুক্তরাষ্ট্রের ওপরও পড়তে পারে।

11
আগামী পাঁচ বছরে দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে নতুন সরকার। অর্থাৎ প্রতিবছর গড়ে ৩০ লাখ লোককে কাজ দিতে হবে। সরকার দেশের বিশাল তরুণ জনগোষ্ঠীকে বেকারত্ব ঘোচানোর স্বপ্ন দেখাচ্ছে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।

Eprothom Aloপরিসংখ্যান বলছে, গত ১৫ বছরে ১ কোটি ৪৫ লাখ লোক কাজ পেয়েছেন। এখনো প্রায় ১ কোটি লোক বেকার বা ছদ্মবেকার। তার ওপর প্রতিবছর ২০-২২ লাখ মানুষ কাজের খোঁজে শ্রমবাজারে ঢুকছেন।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ চারটি শ্রমশক্তি জরিপ পর্যালোচনা করে এই চিত্র পাওয়া গেছে। ২০০২ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে এই জরিপগুলো করা হয়েছে। জরিপের তথ্য অনুযায়ী, ওই ১৫ বছরে প্রতিবছর গড়ে ৯ লাখ ৬৬ হাজার নতুন কর্মসংস্থান হয়েছে। তবে ২০১৩ থেকে ২০১৭ সময়কালে এটা বছরে গড়ে পৌনে ৭ লাখে নেমে গিয়েছিল।

সুতরাং সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হলে এখনকার চেয়ে চার গুণের বেশি কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। উদ্যোক্তা ও অর্থনীতিবিদেরা সে ক্ষেত্রে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের কথা বলছেন। এগুলো হলো শিক্ষিত ও স্বল্পশিক্ষিত জনগোষ্ঠীর জন্য উপযুক্ত কাজ সৃষ্টি করা, সেই কাজের উপযোগী মানবসম্পদ তৈরি করা এবং বাজারমুখী শিক্ষায় বিনিয়োগ বাড়ানো।

দেশের শীর্ষ পর্যায়ের শিল্পগোষ্ঠী এ কে খান গ্রুপের পরিচালক ও ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি আবুল কাশেম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোন কোন খাতে কোন ধরনের কত লোক প্রয়োজন—এ নিয়ে কেউ কখনো সমীক্ষা করেনি। আমি মনে করি, সারা দেশের ১ হাজার কোম্পানির আগামী পাঁচ বছরে কী ধরনের কত লোক লাগবে, তা নিয়ে একটি সমীক্ষা করা উচিত। দক্ষ লোকের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো জনবল তৈরি করতে পারবে।’

বিবিএসের সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ অনুযায়ী, ২০১৭ সালে সারা দেশে ৬ কোটি ৩৫ লাখ কর্মক্ষম (১৫–৬৫ বছর বয়সী) মানুষ ছিলেন। তবে ৬৫ বছরের বেশি বয়সী কিছু মানুষও কাজে নিযুক্ত থাকেন। কর্মক্ষম মানুষদের হিসাবে তাঁদেরও ধরা হয়।

২০১৭ সালে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর ৬ কোটি ৮ লাখ নারী-পুরুষের কাজ ছিল। বাকি ২৭ লাখ ছিলেন বেকার। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মাপকাঠি অনুসারে বেকার তাঁরাই, যাঁরা সপ্তাহে এক ঘণ্টাও মজুরির বিনিময়ে কাজ করেন না। আবার বিবিএস বলছে, কেউ সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজের সুযোগ না পেলে তাঁর সম্ভাবনা পুরোপুরি ব্যবহৃত হয় না। এমন কর্মজীবীদের ছদ্মবেকার বলা যায়। দেশে এমন মানুষের সংখ্যা প্রায় ৬৬ লাখ।

ছদ্মবেকারদের দুই-তৃতীয়াংশের বয়স ১৫ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে। তাঁরা পছন্দমতো কাজ না পেয়ে টিউশনি, রাইড শেয়ারিং, বড় দোকানের খুচরা বিক্রয়কর্মী, কল সেন্টারে কর্মীসহ বিভিন্ন ধরনের খণ্ডকালীন কাজ করছেন।

২০১৭ সালে বেকার ও ছদ্মবেকার মিলে ভালো কাজের জন্য উন্মুখ হয়ে ছিলেন প্রায় ৯৩ লাখ মানুষ। গত বছর কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী বেড়েছে। কর্মসংস্থানের প্রবণতা আমলে নিলে সরকারকে এখনই অন্তত ১ কোটি মানুষের জন্য সপ্তাহে কমপক্ষে ৪০ ঘণ্টার কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন জোর দিচ্ছেন তিনটি বিষয়ের ওপর। এগুলো হলো শিক্ষিত তরুণদের উপযোগী শোভন কাজের সুযোগ সৃষ্টি, উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে আয় বাড়ানো এবং চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ শ্রমশক্তি তৈরি করা।

প্রবাসেও প্রতিবছর বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে। গত বছর ১০ লাখ লোক বিদেশে কাজ করতে গেছেন। এর আগের বছর গিয়েছিলেন সাড়ে ৭ লাখ। কিন্তু প্রতিবছর কত লোক ফিরে আসেন, সরকারে কাছে সেই তথ্য নেই। বিদেশে প্রকৃত কর্মসংস্থানের হিসাব তাই করা কঠিন।

বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞ জাহিদ হোসেন বলছেন, ‘অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনতে হবে। শিল্প ও সেবা খাতের মতো দক্ষ শ্রমনির্ভর খাতে বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। এতে উচ্চশিক্ষিত ও মধ্যম শিক্ষিত লোকের কর্মসংস্থান হবে।’

২০২০ সাল থেকে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে সরকার। এই পরিকল্পনা তৈরি করছে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। জিইডির সদস্য শামসুল আলম বলছেন, বাড়তি কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বাজারমুখী শিক্ষা, বিশেষ করে কারিগরি শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এ জন্য বাজেটে বরাদ্দ বাড়বে।

শামসুল আলমও বিনিয়োগ বাড়ানোকে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন। তিনি অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা দেখছেন। তিনি বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বাণিজ্য যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিদেশি বিনিয়োগকারীরাও বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকতে পারেন।

আওয়ামী লীগের ইশতেহার
গত নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে তরুণদের প্রাধান্য দিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের মধ্যে দেড় কোটি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। ওই সময়ের মধ্যে নতুন করে প্রায় ১ কোটি ১১ লাখ তরুণ-তরুণী শ্রমশক্তিতে যুক্ত হবে।

নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে যে স্বল্প, মধ্যম ও উচ্চশিক্ষিত তরুণদের তথ্যসংবলিত একটি সমন্বিত তথ্য-উপাত্ত ভান্ডার তৈরি করা হবে। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রয়োজন এবং তরুণদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরির জন্য আবেদনের আহ্বান জানাতে পারবে। এ ছাড়া দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য দুটি নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে।

‘কর্মঠ প্রকল্প’-এর অধীনে স্বল্পশিক্ষিত, স্বল্প দক্ষ, অদক্ষ তরুণদের শ্রমঘন, কৃষি, শিল্প ও বাণিজ্যের উপযোগী জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলা হবে। ‘সুদক্ষ প্রকল্প’-এর অধীনে দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্যহীনতা দূর করা হবে।

২০৩০ সালের মধ্যে সারা দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) বলছে, এসব অর্থনৈতিক অঞ্চল হলে প্রায় ১ কোটি লোক চাকরি পাবেন। চলতি বছরে চারটি অর্থনৈতিক অঞ্চল বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। ওই চারটি অর্থনৈতিক অঞ্চল হলো চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরী, মৌলভীবাজারের শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল, চট্টগ্রামের আনোয়ারার চীনা অর্থনৈতিক অঞ্চল ও খুলনা অর্থনৈতিক অঞ্চল।

এ ছাড়া দক্ষ শ্রমশক্তি গড়ে তুলতে প্রায় সব জেলায় কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরি করা হয়েছে। এখন উপজেলা পর্যায়ে কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দেশে বিদেশে চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ গঠন করা হয়েছে।

শোভন কাজের জন্য দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরি করতে তিন কিস্তিতে ৭৫ কোটি ডলার বা ৬ হাজার ১৫০ কোটি টাকা বাজেট সহায়তা দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। ইতিমধ্যে প্রথম কিস্তির জন্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই অর্থ দিয়ে একটি সমন্বিত কর্মসূচি নেওয়া নেওয়া হবে।

ছদ্মবেকার ও মনমতো কাজ
তবে ছদ্মবেকারদের চিত্র বলছে, পছন্দসই মানসম্মত কাজ এবং যথোপযুক্ত দক্ষ কর্মীদের সমন্বয় ঘটানোর কাজটি সহজ হবে না। জীবিকার তাগিদে এখন যে প্রায় ৬৬ লাখ কর্মক্ষম মানুষ খণ্ডকালীন কাজ করছেন, তাঁরা ভালো কাজের প্রত্যাশী। ছদ্মবেকারদের মধ্যে নারীরা সংখ্যায় বেশি, সাড়ে ৩৪ লাখ।

নারী-পুরুষ মিলিয়ে প্রতি তিনজনে দুজনই কমপক্ষে মাধ্যমিক পাস। ৬ লাখ ৬৫ হাজার ছদ্মবেকার স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েও পছন্দমতো চাকরি পাচ্ছেন না। আবার মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক পাস করে ছদ্মবেকার, এমন নারী-পুরুষের সংখ্যা সাড়ে ৩৭ লাখ। এই শিক্ষিত ছদ্মবেকারেরা খণ্ডকালীন কাজ করে ভালো চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন বা অপেক্ষা করছেন।

অন্যদিকে চাকরিদাতারা উপযুক্ত কর্মীর আকালের কথা বলছেন। শিল্প উদ্যোক্তা আবুল কাশেম খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক বছর ধরেই আমরা চাহিদা অনুযায়ী লোক পাচ্ছি না। বিশেষ করে মধ্যম পর্যায়ের কর্মীদের ক্ষেত্রে দক্ষ লোক পাওয়া যাচ্ছে না। এ জন্য ভারত, শ্রীলঙ্কা থেকে লোক আসছে এখানে। অর্থনীতির পরিসর বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দক্ষ লোকের ঘাটতি আরও বাড়ছে। বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থা চাহিদা অনুযায়ী দক্ষ লোকের জোগান দিতে পারছে না।’

12
অ্যারিস্টটল থেকে শুরু করে প্রায় সব দার্শনিকই বলেছেন, টাকা দিয়ে সুখ কেনা যায় না। তবে টাকা সুখ লাভে সহায়তা করে। ২০০৫ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের জরিপকারী সংস্থা গ্যালাপ বিভিন্ন দেশের মানুষকে জিজ্ঞেস করেছে, তাঁদের জীবন কতটা সন্তোষজনক। ফলাফলে দেখা গেছে, যে দেশ যত ধনী, সেই দেশের মানুষের সুখ তত বেশি।

 পরিসংখ্যানে রূপান্তর করলে দেখা যায়, সুখের সঙ্গে টাকার আন্তসম্পর্ক আছে। অর্থাৎ মাথাপিছু মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) দ্বিগুণ হলে মানুষের সন্তোষের মাত্রা শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ বাড়ে।

Eprothom Aloতবে ব্যাপারটা সরল অঙ্কের মতো বলে দেওয়া যায় না যে দেশ ধনী হলে মানুষের সুখও বাড়বে। ১৯৭৪ সালে অর্থনীতিবিদ রিচার্ড ইস্টারলিন দেখেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষের গড়পড়তা সন্তোষের মাত্রা ১৯৪৬ থেকে ১৯৭০ সালের মধ্যে স্থবির হয়ে পড়েছে, যদিও এই সময়ে মাথাপিছু জিডিপির পরিমাণ ৬৫ শতাংশ বেড়েছে। তিনি অন্যান্য দেশেও এই দুটি বিষয়ের মধ্যকার সম্পর্কে ভিন্নতা দেখতে পান। তবে এটা ঠিক, অর্থনৈতিক স্বাচ্ছন্দ্য না থাকলে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হলেই মানুষের সুখ নিশ্চিত হবে, তার নিশ্চয়তা নেই।

তবে ইস্টারলিনের এই আপাত–স্ববিরোধ মডেল নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। অনেক অর্থনীতিবিদের দাবি, উন্নত মানের তথ্য–উপাত্ত ব্যবহার করে তাঁরা অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সুখের যোগ খুঁজে পেয়েছেন। ২০ মার্চ ওয়ার্ল্ড হ্যাপিনেস রিপোর্ট বা বৈশ্বিক সুখ প্রতিবেদনে সর্বশেষ গ্যালাপ জরিপের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। এতে উভয় পক্ষই লড়াই চালিয়ে যাওয়ার মতো রসদ পেয়েছে। কিন্তু সামগ্রিকভাবে এর মাজেজা হলো, এই আপাত–স্ববিরোধ জীবন্ত আগ্নেয়গিরির মতো জীবিত আছে।

এবার কিছু বাস্তব উপাত্ত দিয়ে ব্যাপারটা দেখা যাক। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হচ্ছে চীন। চীনের মাথাপিছু জিডিপি গত এক দশকে দ্বিগুণ হয়েছে, তা ঠিক। কিন্তু গড়পড়তা সুখের মান মাত্র শূন্য দশমিক ৪৩ পয়েন্ট বেড়েছে। সুখ একই হারে না বাড়লেও সেখানে সুখ ও সমৃদ্ধি মোটামুটি হাত ধরাধরি করে চলছে। ধনী দেশগুলোর মধ্যে জার্মানির জিডিপি ও সুখ উভয়ই গত ১০ বছরে বেড়েছে। ভেনেজুয়েলা একসময় বিশ্বের পঞ্চম সুখী দেশ হলেও অর্থনৈতিক দুর্দশার সঙ্গে তার সুখও পালিয়েছে।

বিভিন্ন দেশের উদাহরণে দেখা যায়, প্রবৃদ্ধির সঙ্গে ক্রমবর্ধমান সুখের আন্তসম্পর্ক আছে। তবে এই আন্তসম্পর্ক খুবই দুর্বল। দ্য ইকোনমিস্ট–এর কাছে যে ১২৫টি দেশের উন্নত মানের তথ্য-উপাত্ত আছে তাতে দেখা যায়, ৪৩টি দেশে মাথাপিছু জিডিপি ও সুখের সম্পর্ক বিপরীতধর্মী।

অন্যদিকে চীনের মতো ভারতও দ্রুত উন্নয়নশীল দেশ। গত ১০ বছরে দেশটিতে মাথাপিছু জিডিপির পরিমাণ ৮০ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু এই সময়ে দেশটিতে গড়পড়তা সুখের মাত্রা ১ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। দ্য ইকোনমিস্ট–এর চোখে যা উল্লেখযোগ্য। ইস্টারলিনের গবেষণার প্রথম ক্ষেত্র ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে আবারও দেখা গেছে, গত বছর দেশটির প্রবৃদ্ধি ভালো হলেও সুখের মাত্রা কমেছে। ইউরোপের বেলায়ও একই কথা প্রযোজ্য। এই মহাদেশে মানুষের সন্তোষের মাত্রা অনেক উঁচুতে তা ঠিক, তবে সমৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও সেখানকার মানুষের সন্তোষের মাত্রা কমছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো আরও যেসব দেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধির সঙ্গে মানুষের সুখ কমেছে সেগুলো হলো: কানাডা, জাপান, নেদারল্যান্ডস, জাপান, সুইডেন,দক্ষিণ আফ্রিকা ইত্যাদি।

 দ্য ইকোনমিস্ট বলছে, সারা পৃথিবীর মানুষ এই দুই শিবিরে প্রায় সমানভাবে বিভক্ত: সুখের সঙ্গে টাকার সম্পর্ক আছে বা টাকার সঙ্গে সুখের সম্পর্ক নেই।

13
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ‘একসময় ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে হাসি–তামাশা করা হতো। আজ পৃথিবীর অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। আমরা আজ যে অবস্থায় আছি, পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য আরও বেশি করে ভাবতে হবে।’

সম্প্রতি রাজধানীর বসুন্ধরায় আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটিতে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতের প্রদর্শনী বেসিস সফটএক্সপো ২০১৯–এর সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

Eprothom Aloমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন ১৮০টি দেশে সফটওয়্যার রপ্তানি করছে। আইওটি পণ্য আমরা সৌদি আরবে রপ্তানি করছি। প্রযুক্তিতে আগামী পাঁচ বছরে বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে থাকবে। ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে প্রযুক্তির বিস্ময়কর আবিষ্কার ৫জি যুগে প্রবেশের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই আমরা শুরু করেছি।’

মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রযুক্তির বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সফটওয়্যার ও ডিজিটাল ডিভাইস প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন, তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ও উদ্ভাবকদের ৫জির সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রযুক্তি বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিকস, বিগ ডেটা, আইওটি ও ব্লক চেইন প্রযুক্তির ওপর নিজেদের আরও দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।

গত ১০ বছরে অর্থনীতিতে বাংলাদেশের সফলতাকে অভাবনীয় উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। ৫৬৫ ডলারের মাথাপিছু আয়ের বাংলাদেশ গত ১০ বছরে ১ হাজার ৯০৯ ডলারের মাথাপিছু আয়ের বাংলাদেশে উন্নীত হয়েছে। এ বছর ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ জিডিপি অর্জিত হয়েছে। কিন্তু আমরা এমন একটা সময়ে উপনীত হয়েছি, যখন ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদনের বিষয়টি অনেক সম্ভাবনাময় হয়ে উঠেছে।’

14
Story, Article & Poetry / একান্ত অনুভূতি
« on: February 27, 2019, 08:18:55 PM »
বাবা, আজ তোমাকে অনেক বেশি মনে পরতেছে। তোমাকে নিয়ে, স্মৃতিচারণ করার মত বেশি স্মৃতি আমার ঝুলিতে নেই। তবে তোমার মুখভর্তি সাদা দারি যুক্ত হাসিমাখা মুখ খানি অনেক মনে আছে। মনে আছে, সেইদিনের রাগ, যেদিন আমি যেতে চাইনি জামালপুর। কত পরিমান রাগ থাকতে পারে তা স্বচক্ষে না দেখেলে কেউই বুজতে পারবে না। আমি সেদিন দেখেছিলাম তোমার চোখে আমার জন্য উদ্ধিগ্নতা, যেদিন আমি পানিতে পরে গিয়ে হাবু-ডুবু খাচ্ছিলাম আর সেদিনই আমি পেয়েছিলাম তোমার আসল ভালবাসা। সত্যি বলতে কি, সেই ভালবাসাটা আমি খুবই উপভোগ করেছিলাম।
পৃথিবীর বাস্তবতা বুঝতে পারার আগেই তুমি আমায় রেখে কোন অদুরে চলে গেলে? অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম কিন্তু কি হারিয়েছে ওই মুহুর্তে বুঝতে পারিনি। আজ ঠিক তা হাড়ে হাড়ে বুজতেছি।

জানো বাবা!! মাঝে মাঝে খুবই কষ্ট হয় যখন দেখি সাথের কোন বন্ধুর বাবা তার ছেলেকে নাম ধরে ডাক দিয়ে কথা বলে। ওই কষ্টটা কোন সময় যে আমার চোখটাকে ভারি করে দেয় তা বুঝতেই পারি নাহ।

তোমার চলে যাওয়ার ঠিক ৩ দিন পর, ১৬ই ফেব্রুয়ারি ২০০৬, বাড়ির কেউ একজন বলাবলি করছিল যে ছেলেটা এতিম হয়ে গেল। কথাটা আমার কোনভাবেই ভাল লাগেনি কিন্ত আজ ঠিকই মনে হচ্ছে, আমি এতিম! আমি এতিম!! আমি এতিম!!! তুমি নেই, তাই আমি অনেক কিছু ছুয়েও ছুতে পারিনি। আমি গ্যারান্টি দিয়া বলতে পারি, তুমি থাকলে আমি সব কিছুই ছুতে পারতাম। প্রত্যেকটা কাজে আমি তোমার অভাব পাই। যেই অভাব কোন ভাবেই পুরন করার নয়।

মজার আরেকটি কথা কি জান!!! তোমার সবগুলি গুনাবলি আমার মধ্যে আছে (সবাই বলে) যেমনঃ রাগ করলে চুপ করে থাকা, মুখ গম্ভির করে রাখা, কথা কম বলা, লজ্জায় মানুষকে কিছু বলতে না পারা, কষ্ট নিজের মধ্যে লুকিয়ে রাখা আরও হয়তো অজানা অনেক কিছু।
বাবা, ওপার থেকে তুমি আমায় সাহস দিও, যা বেচে থাকলে দিতে। তোমায় অনেক অনেক মনে পরে😥😥😥। ভাল থেকো বাবা আর আমায় সব সময় দূর থেকে সাহস দিও।।।
তোমারই একমাত্র বাবাহারা ছেলে!!!

15
Technology is the main theme in the modern era. It makes our life comfortable. Sometimes, it becomes blessings and curse for human life. Most of the sides are useful and I am agreed for this.

In our general life, firstly, electricity is a precious invention. Without this, life will be stuck. Computer, mobile phone, x-ray machine and most importantly the contribution of Google make our life easier. Nowadays, in medical science, incurable diseases have become curable. General people are getting medical service within the countries, need not visit another country spending a huge amount. In the concern of internet, the education system has been changed. Students are getting online or blended learning services from far away countries. Due to the improvement of online communication services, business and online banking become easier.

In spite of having a lot of merits of technology, human life has become insecure. Every kind of online system, people have to use a personal password, here is the possibility to be hacked though this is not maintaining by himself. Personal privacy has been lost. Among the young generation, especially the high school students misuse the mobile phone. They visit online in the prohibited sites which effects on social norms and morality. Nuclear energy is threatened for human life. Most of the rich countries are using nuclear energy for destructive activities. Civilian people are living in insecure life.

After all, everything has both consequences, both good and bad side. The result depends on the proper uses of modern technology. The earth becomes peaceful and living place by the proper use of technology.

Pages: [1] 2 3 ... 7