Daffodil International University

Faculties and Departments => Business & Entrepreneurship => Topic started by: A-Rahman Dhaly on June 04, 2015, 04:30:33 PM

Title: হিসাব বিজ্ঞান পরিচিতি:
Post by: A-Rahman Dhaly on June 04, 2015, 04:30:33 PM
হিসাবশাস্ত্র বা হিসাববিজ্ঞান বা অ্যাকাউন্টিং হলো একটি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিবৃতি তৈরী করার বিজ্ঞান।[১][২] হিসাববিজ্ঞানী বা একাউন্টেন্টরা মূলত একটি প্রতিষ্ঠানের সম্পদ, আয়-ব্যয়, দেনা এবং নগদ প্রবাহের বিবরণী অর্থমূল্যে প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানের উন্নত ব্যবস্থাপনা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে। হিসাববিজ্ঞানের মূলনীতিগুলো সাধারণত হিসাব সংরক্ষণ এবং হিসাব নিরীক্ষণে প্রয়োগ করা হয়।[৩]

পণ্য ক্রয়, বিক্রয়, মজুদকরণ, হিসাব নিকাশ, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনাসহ ব্যবসায়ের অন্যান্য হিসাব সংরক্ষনের জটিল এবং ক্লান্তিকর কাজগুলো আজকাল কম্পিউটার সফটওয়্যারের সাহায্যে অনেক দ্রুততার সাথে করা যায়। এই সফটওয়্যারগুলো সচরাচর প্রত্যেকটি প্রধান কার্যক্রমের সাথে অন্তর্নিহিতভাবে সংযুক্ত থাকে; এতে করে একটি তথ্য প্রবেশ করালে তা সমস্ত হিসাবে অন্তর্ভূক্ত হয়ে যায়। এই সফটওয়্যারগুলো দিয়ে একজন কর্মী প্রায় ২০০ মানুষের কাজ একাই করে ফেলতে পারে। এই ধরণের একাউন্টিং সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের কাজ অনেক সহজ করে দেয় এবং এতে করে পন্য ও সেবার গুণগত মান বৃদ্ধি এবং অর্থ সাশ্রয় হয়।

হিসাববিজ্ঞান প্রায় হাজার বছর ধরে চর্চিত একটি বিদ্যা। প্রাচীন মেসোপটেমিয়া সভ্যতায় উৎপাদিত ফসল এবং মন্দিরে সংগৃহীত শস্যের হিসাব রাখার জন্য হিসাববিজ্ঞানের প্রাচীনতম পন্থাগুলো ব্যবহৃত হতো।
হিসাববিজ্ঞানের উৎপত্তি:
বৈজ্ঞানিক হিসাবশাস্ত্রের প্রচলন করেছিলেন ইতালীয় রেনেসাঁর গণিতজ্ঞ লুকা প্যাসিওলি। লুকা প্যাসিওলি ছিলেন লিওনার্দো দা ভিঞ্চি’র একজন নিকটতম বন্ধু ও গৃহশিক্ষক এবং ইতালীয় নাবিক ক্রিস্টোফার কলম্বাস এর সমসাময়িক। লুকা প্যাসিওলি’র ১৪৯৪ সালের মূলপাঠ ল্যাটিন ভাষায় (ট্রেক্সট্) ('summa de Arithmatica Geometria,proportionet proportionalita)সুম্মা ডি এরিথিমেটিকা, জিওমেট্রিকা, প্রপোরসোনিয়েট, প্রোপোরসনালিটাতেই প্যাসিওলি বর্ণনা করেছিলেন একটি পদ্ধতি যেটা নিশ্চিত করে অর্থনৈতিক তথ্য রেকর্ড করা হয় দক্ষতার সাথে এবং যথাযথভাবে। লুকা প্যাসিওলি’র স্বর্ণসূত্র দ্বারা খুব সহজেই সম্পদ, দায়, আয়, ব্যয় এর ডেবিট-ক্রেডিট নির্ণয় করা যায় ।
ইতিহাস:
অতি প্রাচীনকাল থেকেই মানুষ লেনদেনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে ও বিভিন্ন প্রকারে তা সংরক্ষণের পদ্ধতি বের করে । দক্ষিণ আফ্রিকার একটি প্রাচীন গুহা থেকে উদ্ধারকৃত কিছু লিপি থেকে বোঝা যায় যে প্রায় ৭৬,০০০ বছর আগেও মানুষ হিসাব সংরক্ষণের চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিল। এটি ছিল হিসাব বিজ্ঞানের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাচীন নিদর্শন।

হিসাব বিজ্ঞানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনগুলি পাওয়া যায় ব্যাবিলনিয়, এশিরীয় ও সুমেরীয় সভ্যতায়। এই সভ্যতাগুলো প্রায় ৭,০০০ বছর পূর্বে মেসোপটেমিয়া নদীর তীরে গড়ে ওঠে এবং বিকাশ লাভ করে। উক্ত সভ্যতার লোকেরা শুধুমাত্র কৃষি উৎপাদন পরিমাপ করতেই হিসাবের আদিম পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করত। সেই আদিম পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে ফসল গত বছরের তুলনায় কম হয়েছে না বেশি হয়েছে তা নির্ণয় করা যেতো। উৎপাদিত ফসলের একটি অংশ মন্দিরে দান করতে হতো। আর কে কতোটুকু দান করল মন্দির কর্তৃপক্ষ তা দেওয়ালে চিহ্নের মাধ্যমে লিখে রাখতো। এই প্রাচীন দেওয়াল খোদাইগুলোকেও হিসাব বিজ্ঞানের প্রাচীন প্রচেষ্টা বলা যেতে পারে।