Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - saima rhemu

Pages: [1] 2 3 ... 16
2
করোনা নিয়ে আমরা সবাই আতঙ্কিত। বহিঃবিশ্বের ন্যায় এখনো যদিও আমাদের দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপক আকার ধারন করে নি, তবুও যে ২/৪ জন আক্রান্ত হয়েছে তাদের মাধ্যমে যেন অন্য কারো এই ভাইরাস না ছড়ায় এবং আক্রান্ত রোগী যেন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারে আসুন সবাই মিলে সেই চেষ্টা করি। তাহলে চলুন আজকের লেখায় জেনে নেয়া যাক করোনাতে আক্রান্ত রোগীর করণীয় কী?

করোনাতে আক্রান্ত রোগীর করণীয় নিয়ে কিছু কথা
কোন ব্যক্তির জ্বর (১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট/৩৮ডিগ্রি সেলসিয়াস এর বেশি) / কাশি/ সর্দি/ গলা ব্যথা/ শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি থাকে এবং তিনি বিগত ১৪ দিনের মধ্যে চীন বা অন্য কোন আক্রান্ত দেশ ( সিঙ্গাপুর, দঃ কোরিয়া, জাপান, ইটালী, ইরান ইত্যাদি) ভ্রমণ করে থাকেন অথবা এই সময়সীমার মধ্যে নিশ্চিত বা সম্ভাব্য কভিড-১৯ (COVID-19) আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এসে থাকেন, তবে ঐ ব্যক্তি

কভিড-১৯ আক্রান্ত ‘সন্দেহজনক রোগী’ হিসেবে বিবেচিত হবেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর নির্দেশনা অনুযায়ী কভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছে এমন সন্দেহকৃত রোগীদের পৃথকীকরণ, চিকিৎসা ও মনিটরিং হাসপাতালে হওয়া উচিত। কিন্তু, বিভিন্ন কারণে, যেমন- হাসপাতালের অভ্যন্তরীণ চিকিৎসা সেবা ব্যবস্থা যদি অপ্রতুল হয় অথবা রোগী যদি হাসপাতালে থাকতে রাজী না হয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে এ সকল রোগীদের বাড়ীতে স্বাস্থ্য সেবা/ পরিচর্যার বিষযটি বিবেচনা করা যেতে পারে।

WHO এর গাইডলাইন অনুযায়ী করোনাতে আক্রান্ত রোগীর করণীয় নির্দেশনা
আপনার উপসর্গগুলো সতর্কতার সাথে খেয়াল করুন। দেখুন নিম্নের উপসর্গের সাথে আপনার কোনো মিল খুজে পান কিনা!

১) জ্বর থাকলে নিয়মিত তাপমাত্রা পরিমাপ করুন।

২) যদি নতুন উপসর্গ দেখা দেয় বা আগের উপসর্গের অবনতি হয়, যেমন- শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়, তবে অতি দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

৩) যদি নতুন উপসর্গ দেখা দেয় বা আগের উপসর্গের অবনতি হয়, তবে- চিকিৎসকের বা স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর কাছে যাওয়ার পূর্বে তাঁদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করুন এবং আপনি যে COVID-19 এ আক্রান্ত সন্দেহভাজন রোগী তা জানান। আপনি পূর্বেই জানালে অন্য সুস্থ ব্যক্তিরা যেন আক্রান্ত না হয়/সংস্পর্শে না আসে এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য সেবা  প্রদানকারীর পক্ষে সাবধানতা অবলম্বন করা সম্ভব হবে।

৪) ভ্রমণের সময় এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রবেশের সময় মাস্ক ব্যবহার করুন। জনসমাগমে (ঘরে অথবা যানবাহনে) এবং কোন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে প্রবেশ করার পূর্বে মাস্ক ব্যবহার করুন। রোগীর মুখে মাস্ক পড়া সম্ভব না হলে (যদি মাস্কের কারণে শ্বাসকষ্ট হয়) বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা রোগীর ঘরে প্রবেশের পূর্বে মুখে মাস্ক ব্যবহার করবেন। আর মাস্ক পরে থাকাকালীন এটি হাত দিয়ে ধরা থেকে বিরত থাকুন। মাস্ক ব্যবহারের সময় প্রদাহের (সর্দি, থুতু, কাশি, বমি ইত্যাদি) সংস্পর্শে আসলে সঙ্গে সঙ্গে মাস্ক খুলে ফেলুন এবং নতুন মাস্ক ব্যবহার করুন। মাস্ক ব্যবহারের পর ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে ফেলুন এবং সাবান পানি দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুয়ে নিন।

৫) গণপরিবহন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন এবং সম্ভব হলে অ্যাম্বুলেন্স/নিজস্ব পরিবহন ব্যবহার করে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাবেন এবং যাত্রাকালীন সময়ে পরিবহনের জানালা খোলা রাখুন।

৬) সর্বদা শ্বাসতন্ত্রের স্বাস্থ্যবিধি (বিশেষ করে- কাশি শিষ্টাচার) মেনে চলুন, হাত পরিচ্ছন্ন রাখুন এবং চলাচলের সময় ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অবস্থানকালে অন্যদের থেকে ১ মিটার (৩ ফিট) দূরত্ব বজায় রাখুন।

৭) শ্বাসতন্ত্র বা অন্য কোন প্রদাহের (সর্দি, থুতু, কাশি, বমি ইত্যাদি) কারণে যদি যানবাহনের কোন অংশ নোংরা হয়, তবে সেই স্থান জীবাণুমুক্ত করুন।

৮) চিকিৎসা সেবা নেয়া ব্যতীত নিজ বাড়িতে থাকুন। হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নেয়া ব্যতীত বাড়ির বাইরে যাবেন না। যদিও আমাদের দেশে এখনো স্কুল, কলেজ বন্ধের নির্দেশ দেয় নি, তবে নির্দেশনা পাবার সাথে সাথে তা যথাযথভাবে মেনে চলুন। তখন বাড়ির বাইরে কাজে, স্কুল, কলেজ অথবা জনসমাগমে যাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। আর যদি বের হতেই হয়, তবে গণপরিবহন ব্যবহার, অন্যদের সাথে একই যানবাহন অথবা ট্যাক্সি ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। এমনকি বাড়ির অন্য সদস্যদের থেকে আলাদা থাকুন।

৯) করোনাতে আক্রান্ত রোগীর করণীয় হবে আলো বাতাসের সুব্যবস্থা সম্পন্ন আলাদা ঘরে থাকা এবং অন্যান্য সদস্যদের থেকে আলাদাভাবে থাকা। তা সম্ভব না হলে, অন্যদের থেকে অন্তত ১ মিটার (৩ ফুট) দূরে থাকুন ও ঘুমানোর জন্য পৃথক বিছানা ব্যবহার করুন। যদি সম্ভব হয় তাহলে আলাদা গোসলখানা এবং টয়লেট ব্যবহার করুন। সম্ভব না হলে, অন্যদের সাথে ব্যবহার করতে হয় এমন স্থানের সংখ্যা কমান ও ঐ স্থানগুলোতে জানালা খুলে রেখে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা করুন।

১০) করোনাতে আক্রান্ত রোগী মা বাচ্চাকে দুধ খাওয়া্তে পারবেন। বুকের দুধ থেকে ভাইরাস বাচ্চার দেহে ছড়াবে না। তবে হ্যাঁ, বাচ্চাকে খাওয়ানোর সময় অবশ্যই যেন, হাঁচি, কাশি না ছড়ায়। তার জন্য মাস্ক পড়ে নিতে হবে এবং ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করে নেওয়া ভালো। আর তারপরও অতিরিক্ত সতর্কতা রক্ষার্থে বুকের দুধ ফিডারে ভরে কোনো সুস্থ ব্যক্তিকে দিয়েও খাওয়াতে পারেন।

করোনাতে আক্রান্ত রোগীর করণীয় আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
১) হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে অথবা সাবান ও পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধুবেন (বিশেষ করে যদি হাত দেখতে নোংরা লাগে সাবান-পানি ব্যবহার করুন)। অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না। সাবান-পানি ব্যবহারের পর টিস্যু দিয়ে হাত শুকনো করে ফেলুন। টিস্যু না থাকলে শুধু হাত মোছার জন্য নির্দিষ্ট তোয়ালে/ গামছা ব্যবহার করুন এবং ভিজে গেলে বদলে ফেলুন।

২) মুখ ঢেকে হাঁচি কাশি দিন। হাঁচি কাশির সময় টিস্যু পেপার/ মেডিকেল মাস্ক/ কাপড়ের মাস্ক/ বাহুর ভাঁজে মুখ ও নাক ঢেকে রাখুন এবং উপরের নিয়মানুযায়ী হাত পরিষ্কার করুন।  টিস্যু পেপার ও মেডিকেল মাস্ক ব্যবহারের পর ঢাকনাযুক্ত বিনে ফেলুন। কাপড়ের মাস্ক ব্যবহার করলে কাপড় কাঁচা সাবান/গুড়া সাবান দিয়ে কাপড়টি পরিষ্কার করে ফেলুন।

৩) ব্যক্তিগত ব্যবহার্য সামগ্রী অন্য কারো সাথে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করবেন না। আপনার খাওয়ার তৈজসপত্র- থালা, গ্লাস, কাপ ইত্যাদি, তোয়ালে, বিছানার চাদর অন্য কারো সাথে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করবেন না। এ সকল জিনিসপত্র ব্যবহারের পর সাবান-পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলুন।

কখন করোনা আক্রান্ত রোগীর আইসোলেশন শেষ হবে?
কভিড-১৯ এ আক্রান্ত সন্দেহভাজন রোগী/ রোগীর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তি ততদিন পর্যন্ত বাড়িতে আইসোলেশনে থাকবেন যতদিন তাদের থেকে অন্যদের সংক্রমণের সম্ভাবনা কমে না যায়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আপনার আইসোলেশন শেষ হবে। চিকিৎসকের সিদ্ধান্তমতে একজন হতে অন্যজনের আইসোলেশনের সময়সীমা আলাদা হতে পারে। তবে, এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ সময়সীমা ১৪ দিন।

আপনি আইসোলেশনে থাকাকালীন কী করবেন?
কভিড-১৯ সম্পর্কে জানতে পারেন আইসোলেশনে থাকার সময়। WHO, CDC, IEDCR এর ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য পেতে পারেন। পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে ফোন/মোবাইল/ ইন্টারনেটের সাহায্যে যোগাযোগ রাখুন।পরিবারের শিশুকে করোনা সম্পর্কে সতর্কে করতে তাই হাইজিং এর গুরুত্ব বুঝান। তাদেরকে পর্যাপ্ত খেলার সামগ্রী দিন এবং খেলনাগুলো পরে জীবাণুমুক্ত করুন।

এইতো এই ছিল আজকের আলোচনা। ভয় না পেয়ে আসুন ধৈর্য্য ধারন করে সবাই মিলে এই কঠিন সময় থেকে পরিত্রাণ পাই। আপনার দৈনন্দিন রুটিন, যেমন- খাওয়া, হালকা ব্যায়াম ইত্যাদি মেনেই চলুন। সম্ভব হলে বাসা থেকে অফিসের কাজ করতে থাকুন। মনকে প্রশান্ত করে এমন কাজ করুন। এই সময়কে সুযোগ হিসেবে কাজে লাগান, সাধারণত যা করার অবসর হয় না- বই পড়া, গান শোনা, সিনেমা দেখা অথবা উপর্যুক্ত নিয়মগুলোর সাথে পরিপন্থী নয় এমন যে কোন বিনোদনমূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করুন বা ব্যস্ত রাখুন। পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন থাকুন, সুস্থ থাকুন।

3
করোনা ভাইরাস আজকের বিশ্বের জন্য এক আতঙ্কের নাম। চীনের উহান রাজ্য থেকে ছড়িয়ে পড়া ভাইরাসটি মোকাবেলায় যুদ্ধ চলছে প্রতিনিয়তই। কিন্তু কোনো কিছুতেই যেন বাঁধ মানছে না মরণব্যাধি এই ভাইরাসটি। নিত্যনতুন মৃত্যুর খবর অথবা নতুন কেউ আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায় রোজই। বিশেষজ্ঞদের মতে শারীরিক ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার মাধ্যমে কিছুটা লাঘব করা যেতে পারে এই ভাইরাসটিকে। খাদ্যাভ্যাসে কিছুটা পরিবর্তনের মাধ্যমেও আক্রান্ত হওয়া থেকে বেঁচে যেতে পারেন অনেকেই। তবে যারা বৃদ্ধ ও নানান রোগ যেমন- ডায়বেটিস, হার্টের সমস্যা, কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত তাঁদের ক্ষেত্রে ঝুঁকিটা একটু বেশি। তাই তাদের দিকে বিশেষ খেয়াল রাখাটা অত্যন্ত জরুরি। শিশুদের ক্ষেত্রেও বাড়তি যত্নের প্রয়োজন রয়েছে যানবাহনে করোনা প্রতিরোধ করতে। পরিষ্কার কাপড় ও পরিষ্কার খাদ্য দিতে হবে শিশুদের। ঠাণ্ডা, সর্দি, জ্বর, কাশি ও গলাব্যথা হলেই নিজেকে সেলফ আইসোলেশনে (self-isolation) রাখতে হবে যেন অন্যান্যদের মাঝে ভাইরাসটি ছড়িয়ে না যায়। তবে ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী এই সংক্রমণটি রুখতে হলে যতটা কম বাইরে যাওয়া যায় ততোটাই স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো। কিন্তু কাজের তাগিদে অনেককেই বাড়ির বাহিরে বের হতে হচ্ছে। চড়তে হচ্ছে বাস, ট্রেন, রিক্সা ইত্যাদি যানবাহনে। চলুন তবে আজ জেনে নেই যানবাহনে করোনা প্রতিরোধ সম্পর্কে।

যানবাহনে করোনা প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
আমাদের দেশে অনেক আগ থেকেই স্কুল, কলেজ সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কিছু কিছু অফিসেও ঘরে বসে কাজ করার অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ কর্মক্ষেত্রই এখনো সচল রয়েছে। তাই অফিসের উদ্দেশ্যে সকালেই বেড়িয়ে পড়েন অনেকেই। যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) থেকে বলা হয়েছে সব সময় ঘরে থাকতে ও ঘর থেকে বের না হতে, সেখানে আমাদের দেশের বেশির ভাগ মানুষকেই বেড়িয়ে পড়তে হচ্ছে সকাল সকালই। এতে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অধিক হারে বাড়ছে।

কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য আমরা যে যাতায়াত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি সেটাই হতে পারে আমাদের জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপুর্ন। কেননা সেখানে মানুষের আনাগোনা সবচেয়ে বেশি। সকল শ্রেনীর মানুষই সেখানে থাকে এবং নিয়ম না মেনে যত্রতত্রই হাঁচি ও কাশি দিয়ে বেড়ায়। তাই যাতায়াতই আপনার জন্য সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ন। তবে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে আমরাও থাকতে পারি সুরক্ষিত। তাহলে চলুন জেনে নেই কী ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করলে আমরা বাস, রিকশা, অটো, সিএনজি , ট্রেন ও অন্যন্য যাতায়াত ব্যবস্থায় ঝুঁকিমুক্ত থাকতে পারবো।

১) যানবাহনে করোনা প্রতিরোধে বাসে কিংবা ট্রেনে যদি আপনার সহযাত্রীটি প্রবল বেগে হাঁচি কাশি দিতে থাকে তাহলে সেটা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। তাই আপনি তখনই সেই ব্যক্তি থেকে দূরত্ব বজার রাখুন। সম্ভব হলে চালক কিংবা কন্টাক্টরকে অবগতি করেন। অন্যান্য যাত্রীদেরও সাবধান করে দিন। এতে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পরবে না।

২) রাস্তাঘাটে চলাচল করার সময় সর্দি কাশি কিংবা জ্বরে আক্রান্ত কোন ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে রুমাল দিয়ে জোরে নিজের নাক ও মুখ চেপে রাখুন। রোগীর গায়ে ভুলেও স্পর্শ করবেন না। পর্যাপ্ত পরিমাণে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করুন। পারলে দ্রুত সেই স্থানটি ত্যাগ করুন।

৩) আমাদের দেশে সকালে ও সন্ধ্যায় এই দুইটি সময়ে ভীড় বেশি হয়। তাই চেষ্টা করুন এই দুই সময়ে আপনাকে যেন বের হতে না হয়। যানবাহনে করোনা প্রতিরোধে ভীড় এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। অফিস থাকলে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে তারপর অফিস থেকে বের হন। বাস কিংবা অন্যান্য যানবাহন এড়িয়ে চললে আপনি অনেকটাই সুরক্ষিত থাকতে পারবেন। যদি সম্ভব হয়, তাহলে

৪) ট্যাক্সি, সিএনজি, উবার কিংবা ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করলে অবশ্যই গাড়ির জানালা খোলা রাখার চেষ্টা করুন। গাড়িতে যথেষ্ট পরিমাণে আলো বাতাস প্রবেশ করতে দিন। কেননা বদ্ধ জায়গায় ভাইরাস খুব দ্রুত ছড়ায়। আর গাড়িতে ঘেঁষাঘেঁষি করে বসবেন না। এতে ভাইরাস ছড়ানোর সম্ভাবনা খুব কম থাকে।

৫) বাড়ি থেকে অফিসে গিয়ে কিংবা অফিস থেকে বাড়ি ফিরে সাবান পানি দিয়ে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন। কেননা যাতায়াতের জন্য আমরা যে বাহনটি ব্যবহার করছি সেটা যথেষ্ট অপরিষ্কার ও জীবাণুযুক্ত। আমরা বাসে উঠার সময় এবং বাস থেকে নামার সময় সব সময়ই বাসের হাতলে হাত রাখছি যা ক্ষতিকর ভাইরাসের আখড়া। তাই চেষ্টা করবেন টিস্যু অথবা রুমাল দিয়ে বাস কিংবা অন্যান্য যানবাহন ধরতে। সেটা সম্ভব না হলে ব্যাগে স্যানিটাইজার রাখুন। যদি সেটাও সম্ভব না হয় তাহলে বাসায় ফিরে কিংবা অফিসে পৌঁছে ভালোভাবে হাত ধুয়ে ফেলুন।

৬) বাইরে থাকাকালীন সময়টুকু চেষ্টা করবেন নাক, মুখ ও চোখে হাত না দিতে। সবসময় হাত পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন। অপরিষ্কার হাতে নাক মুখ স্পর্শ করলে জীবাণু শরীরের ভিতরে প্রবেশ করে ফেলার সম্ভাবনা থাকে। তাই হাত পরিষ্কার রাখাটা অত্যন্ত জরুরি।

৭) মোটর সাইকেল অথবা উবার শেয়ার না করাই ভালো এখন। কেননা মানুষের সংস্পর্শেই বেশির ভাগ ভাইরাস ছড়ায়।

করোনা ভাইরাস মোকাবেলা করার চেষ্টা করছে সারা বিশ্ব। আপনিও চেষ্টা করুন উপরোক্ত নিয়মগুলো মেনে চলতে। তাহলে ভাইরাসটি দমনে সফল হবো আমরা সকলেই। আপনার সামান্য সাবধানতা হয়তো ভাইরাসটি থেকে মুক্ত রাখতে পারে আপনাকে, আপনার পরিবারকে ও সমাজকে। সচেতন হোন, ভালো থাকুন ও সুস্থ থাকুন।

4
হোম কোয়ারেন্টাইন এবং বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আসা যাত্রীদের জন্য করণীয়ঃ

কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে আসা সন্দেহে থাকা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন সম্পর্কে জ্ঞাতব্য আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিধি (আইএইচআর -২০০৫) এর আর্টিকেল ৩২ অনুসারে, যে সব দেশে কোভিড-১৯এর স্থানীয় সংক্রমণ ঘটেছে সে সব দেশ থেকে যে সব যাত্রী এসেছেন এবং আসবেন (দেশী-বিদেশী যে কোনো নাগরিক), যারা দেশে সনাক্তকৃত ৩ জন কোভিড-১৯ আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শেএসেছেন, এবং যার অথবা যাদের কোন শারীরিক উপসর্গ নেই, তাদের ১৪ দিন স্বেচ্ছা/ গৃহ কোয়ারেন্টিন পালন করার জন্য নি¤œলিখিত ব্যবস্থা/ নির্দেশনাগুলো মেনে চলতে হবেঃ

• বাড়ীর অন্যান্য সদস্যদের থেকে আলাদা থাকুন
 আলো বাতাসের সুব্যবস্থা সম্পন্নআলাদা ঘরে থাকুন এবং অন্যান্য সদস্যদের থেকে আলাদাভাবে থাকুন। তা সম্ভব না হলে, অন্যদের থেকে অন্তত ১ মিটার (৩ ফুট) দুরে থাকুন (ঘুমানোর জন্য পৃথক বিছানা ব্যবহার করুন)।
 যদি সম্ভব হয় তাহলে আলাদা গোসলখানা এবং টয়লেট ব্যবহার করুন। সম্ভব না হলে, অন্যদের সাথে ব্যবহার করতে হয় এমন স্থানের সংখ্যা কমান ও ঐ স্থানগুলোতে জানালা খুলে রেখে পর্যাপ্ত আলোবাতাসের ব্যবস্থা করুন।
 বুকের দুধ খাওয়ান এমন মা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াবেন। শিশুর কাছে যাওয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার করুন এবং ভালভাবে হাত ধুয়ে নিন।
 আপনার সাথে কোন পশু/পাখি রাখবেন না।

• মাস্ক ব্যবহার করুন
 বাড়ীর অন্যান্য সদস্যদের সাথে একই ঘওে অবস্থান করলে, বিশেষ করে ১মিটারের মধ্যে আসার সময়
 অত্যাবশ্যকীয় প্রয়োজনে বাড়ী থেকে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করুন।
 মাস্ক পরে থাকাকালীন এটি হাত দিয়ে ধরা থেকে বিরত থাকুন।
 মাস্ক ব্যবহারের সময় প্রদাহের (সর্দি, থুতু, কাশি, বমি ইত্যাদি) সংস্পর্শে আসলে সঙ্গে সঙ্গে মাস্ক খুলে ফেলুন এবং নতুন মাস্ক ব্যবহার করুন।
 মাস্ক ব্যবহারের পর ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে ফেলুন এবং সাবান পানি দিয়ে ভাল ভাবে হাত ধুয়ে নিন।

• হাত ধোয়া
 সাবান ও পানি দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোবেন (বিশেষ করে যদি হাত দেখতে নোংরা লাগে সাবান-পানি ব্যবহার করুন)। প্রয়োজনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে।
 অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করবেন না।
 সাবান-পানি ব্যবহারের পর টিস্যু দিয়ে হাত শুকনো করে ফেলুন। টিস্যু না থাকলে শুধুহাত মোছার জন্য নির্দিষ্ট তোয়ালে/ গামছা ব্যবহার করুন এবং ভিজে গেলে বদলে ফেলুন।

• মুখ ঢেকে হাঁচি কাশি দিন
 কাশি শিষ্টাচার মেনে চলুন। হাঁচি কাশির সময় টিস্যু পেপার/ মেডিকেল মাস্ক/ কাপড়ের মাস্ক/ বাহুর ভাঁজে মুখ ও নাক ঢেকে রাখুন এবং উপরের নিয়মানুযায়ী হাত পরিষ্কার করুন।
 টিস্যু পেপার ও মেডিকেল মাস্ক ব্যবহারের পর ঢাকনাযুক্ত বিনে ফেলুন।
 ব্যক্তিগত ব্যবহার্য সামগ্রী অন্য কারো সাথে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করবেন না
 আপনার খাওয়ার বাসনপত্র- থালা, গøাস, কাপ ইত্যাদি, তোয়ালে, বিছানার চাদর অন্য কারো সাথে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করবেন না ।
 এ সকল জিনিসপত্র ব্যবহারের পর সাবান-পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলুন।

• কখন আপনার কোয়ারেন্টিন শেষ হবে?
 চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আপনার কোয়ারেন্টিন শেষ হবে। চিকিৎসকের সিদ্ধান্তমতে একজন হতে অন্যজনের কোয়ারেন্টিন-এর সময়সীমা আলাদা হতে পারে। তবে, এ পর্যন্তপাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এ সময়সীমা ১৪ দিন।
• আপনি কোয়ারেন্টিনে থাকাকালীন যা করতে পারেন-
 ঈঙঠওউ-১৯ সম্পর্কে জানতে পারেন। ডঐঙ, ঈউঈ, ওঊউঈজ এর ওয়েবসাইটে এ সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য পেতে পারেন।
 পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবের সাথে ফোন/ মোবাইল/ ইন্টারনেটের সাহায্যে যোগাযোগ রাখুন।
 শিশুকে তার জন্য প্রযোজ্যভাবে বোঝান। তাদেরকে পর্যাপ্ত খেলার সামগ্রী দিন এবং খেলনাগুলো খেলার পরে জীবাণুমুক্ত করুন।
 আপনার দৈনন্দিন রুটিন, যেমন- খাওয়া, হালকা ব্যায়াম ইত্যাদি মেনে চলুন।
 সম্ভব হলে বাসা থেকে অফিসের কাজ করতে থাকুন।
 বইপড়া, গান শোনা, সিনেমা দেখা অথবা উপর্যুক্ত নিয়মগুলোর সাথে পরিপন্থী নয় এমন যে কোন বিনোদনমূলক কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করুন বা ব্যস্ত রাখুন।

• পরিবারের সদস্যদের জন্য নির্দেশাবলী
 বর্তমানে সুস্থ আছেন এবং যার দীর্ঘমেয়াদী রোগসমূহ (যেমনঃ ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ক্যান্সার, অ্যাজমা প্রভৃতি) নেই, এমন একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে পরিচর্যাকারী হিসেবে নিয়োজিত হতে পারেন। তিনি ঐ ঘরে বা পাশের ঘরে থাকবেন, অবস্থান বদল করবেন না।
 কোয়ারেন্টিনে আছেন এমন ব্যক্তির সাথে কোন অতিথিকে দেখা করতে দিবেন না।
 পরিচর্যাকারী নিম্নলিখিত যে কোন কাজ করার পর প্রতিবার উপরের নিয়মে দুই হাত পরিষ্কার করবেন-
o কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে বাতার ঘরে ঢুকলে
o খাবার তৈরীর আগে ও পরে
o খাবার আগে
o টয়লেট ব্যবহারের পরে
o গ্লাভস পরার আগে ও খোলার পরে
o যখনই হাত দেখে নোংরা মনে হয়
 খালি হাতে ঐ ঘরের কোন কিছু স্পর্শ করবেন না।
 কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তির ব্যবহৃত বা তার পরিচর্যায় ব্যবহৃত মাস্ক, গøাভস, টিস্যু ইত্যাদি অথবা অন্য আবর্জনা ঐ রুমে রাখা ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে রাখুন। এ সকল আবর্জনা উন্মুক্ত স্থানে না ফেলে পুড়িয়ে ফেলুন।
 ঘরের মেঝে, আসবাবপত্রের সকল পৃষ্ঠতল, টয়লেট ও বাথরুম প্রতিদিন অন্তত একবার পরিষ্কার করুন। পরিষ্কারের জন্য ১ লিটার পানির মধ্যে ২০ গ্রাম (২ টেবিল চামচ পরিমাণ) বিøচিং পাউডার মিশিয়ে দ্রবণ তৈরী করুন ও ঐ দ্রবণ দিয়ে উক্ত সকল স্থান ভালোভাবে মুছে ফেলুন। তৈরীকৃত দ্রবণ সর্বোচ্চ ২৪ ঘন্টা পর্যন্তব্যবহার করা যাবে।
 কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিকে নিজের কাপড়, বিছানার চাদর, তোয়ালে ইত্যাদি ব্যবহৃত কাপড় গুঁড়া সাবান/ কাপড় কাচা সাবান ও পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে বলুন এবং পওে ভালোভাবে শুকিয়ে ফেলুন।
 নোংরা কাপড় একটি লন্ড্রি ব্যাগে আলাদা রাখুন। মল-মূত্র বা নোংরা লাগা কাপড় ঝাঁকাবেন না এবং নিজের শরীর বা কাপড়ে যেন না লাগে তা খেয়াল করুন।

• কোয়ারান্টাইনে থাকা ব্যক্তির জন্য বিশেষ নির্দেশনা
 যদি কোয়ারেন্টিনে থাকাকালীন কোন উপসর্গ দেখা দেয় (১০০০ফারেনহাইট/ ৩৮০ সেলসিয়াসএর বেশি/ কাশি/ সর্দি/ গলাব্যথা/ শ^াসকষ্ট ইত্যাদি), তবে-
 অতি দ্রæত আইইডিসিআর-এর হটলাইন নম্বরে (০১৫৫০০৬৪৯০১-৫, ০১৪০১১৮৪৫৫১, ০১৪০১১৮৪৫৫৪, ০১৪০১১৮৪৫৫৫, ০১৪০১১৮৪৫৫৬, ০১৪০১১৮৪৫৫৯, ০১৪০১১৮৪৫৬০, ০১৪০১১৮৪৫৬৩, ০১৪০১১৮৪৫৬৮, ০১৯৩৭-১১০০১১, ০১৯৩৭-০০০০১১, ০১৯২৭-৭১১৭৮৪, ০১৯২৭-৭১১৭৮৫) অবশ্যই যোগাযোগ করুন এবং পরবর্তী করণীয় জেনে নিন।

মনে রাখবেন উপযুক্ত কোন ব্যক্তির উপর কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও তা অমান্য করা এবং তথ্য গোপন করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ এবং সংক্রামক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ এর আওতায় কারাদণ্ড ও অর্থদন্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।

তথ্যসূত্রঃ আইইডিসিআর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

7
একটি ফলের নাম বলতে পারবেন যা দিয়ে তৃষ্ণা মেটানো থেকে শুরু করে রান্না এমন কি রূপচর্চায়ও ব্যবহার করা যায়? নারকেল এমন একটি নিয়ামক যার কোন অংশই আসলে ফেলনা নয়। কুড়নো নারকেল থেকে শুরু করে তেল দিয়ে রূপচর্চায় কতো কিছুই না করা যায়। এর আগের বেশ কয়েকটি আর্টিকেলে আমরা অলরেডি জেনে গিয়েছি ডিপ নারিশমেন্টে কোকোনাট অয়েল কীভাবে কাজ করে। নারকেলের তেলের মতোই নারকেলের দুধের গুণাগুণ কিন্তু বলে শেষ করার মতো না। স্মুদি, কারি স্যুপ থেকে শুরু করে চিংড়ির মালাইকারি রান্নাতে যে কোকোনাট মিল্ক আমাদের মা-নানীরা ব্যবহার করে আসছেন রূপচর্চায় এই নারকেল দুধের ব্যবহারও ত্বকে এনে দিতে পারে আমূল পরিবর্তন।

কীভাবে? খুব সাধারণ ভাষায় বলতে গেলে নারকেল দুধে বিদ্যমান উপাদান ত্বকের তারুণ্য, ঔজ্জ্বল্য এবং হেলদি ভাব ধরে রাখতে সাহায্য করে। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ১, বি ৩, বি ৫ ই, সি, এ, ক্যালসিয়াম আয়রন এবং প্রাকৃতিক প্রোটিন। নিয়মিত ব্যবহারে শুষ্ক-রুক্ষ ত্বককে করে তুলে মোলায়েম এবং রেডিয়েন্ট স্কিন। আজ আমারা জানব ত্বকের যত্নে কোন কোন উপায়ে এই কোকোনাট মিল্ক ইউজ করা যেতে পারে তা সম্পর্কে।
সোজা উপকারিতায় না গিয়ে একটু কোকোনাট মিল্ক তৈরির রেসিপিটা জেনে নিলে কেমন হয়? কোকোনাট মিল্ক তৈরি কিন্তু সহজ!

(১) ২ কাপ গ্রেট করা নারকেল

(২) ১ কাপ পানি


প্রথমে পানি সামান্য গরম করে নিন তবে পানি ফুটাবেন না।খুব বেশি গরম বা ফুটনো পানি দিলে নারকেলের প্রাকৃতিক গুণাগুণগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে। কাজেই খুব হালকা গরম পানি প্রয়োজন হবে।
এবার একটি ব্লেন্ডারে গ্রেটেড কোকোনাট নিয়ে তাতে ১ কাপ পানি দিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। অনেকে হাত দিয়ে চটকেই নারকেল থেকে নির্যাস বের করে নেন।
এবার একটি পরিষ্কার কাপড়ে ব্লেন্ড করা নারকেলের মিশ্রণ ঢেলে গিঁট দিয়ে ঝুলিয়ে দিন নিচে একটি পাত্র রেখে দিন।
নিচের পাত্রে দেখবেন খুব ঘন তরল জমেছে। ব্যস তৈরি হয়ে গেল কোকোনাট মিল্ক।


রুক্ষ শুষ্ক  ত্বকের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে

শুষ্ক ত্বকের জন্য এর চেয়ে পরম বন্ধু কিন্তু আর একটিও খুঁজে পাবেন না। আমার মুখ কম্বিনেশন টাইপ। কিছু জায়গা বেশ অয়েলি কিছু জায়গা হালকা ড্রাই। তবে মুখ বাদে শরীরের বাকি অংশের স্কিন খুব শুষ্ক। গরমের দিনেও গোসলের পর বডি লোশন না দিলে টানটান অনুভূতি হয়। এর থেকে বাঁচতে আমি কোকোনাট মিল্কের একটি বডি লোশন ইউজ করি। এছাড়া যেদিন হাতে সময় পাই সেদিন কোকোনাট থেকে মিল্ক বের করে তাতে কয়েকটা গোলাপের পাপড়ি আধা কাপ রোজ ওয়াটার এবং এক কাপ কোকোনাট মিল্ক মিক্স করে হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে সেই  মিশ্রণ দিয়ে গোসলটা সেরে ফেলি। গোসলের পর নতুন করে আর কোন ময়েশ্চারাইজার লাগানোর প্রয়োজন পড়ে না।

তবে আপনার কাছে এই পদ্ধতিটা ঝামেলার মনে হলে ড্রাই স্কিনে কোকোনাট মিল্ক রাব করে ৩০ মিনিট সময় দিন স্কিন একাই অ্যাবজর্ব করে নিবে। দেখবেন ধীরে ধীরে ত্বকের ড্রাইনেস  মিলিয়ে গেছে।

রোদে পোড়া ত্বকের রঙ ফিরিয়ে আনতে

কেবল এই একটি উপাদান দিয়েই কিন্তু জেদি সান ট্যান রিমুভ করা সম্ভব। এর জন্য আপনাকে যা করতে হবে তাহল রোদে পোড়া স্থানে ঠাণ্ডা কোকোনাট মিল্ক দিয়ে মোটা পরত লাগিয়ে রাখুন। এতে থাকা ন্যাচারাল ফ্যাট এবং তেল ত্বকের গভিরে প্রবেশ করে রোদে পুড়ে লালচে হয়ে যাওয়া দাগ রিমুভ করে এবং ময়েশ্চারাইজ করে। রোদে পুড়ে লালচে হয়ে যাওয়া দাগ থেকে মুক্তি পেতে এই প্রলেপ কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ মিনিট রেখে তারপর ধুয়ে ফেলতে পারেন তবে এই প্রলেপটি সারা রাত রাখতে পারলে বেশি তাড়াতাড়ি ফল পাওয়া যায়।

বলি রেখা দূর করতে

কোকোনাট মিল্কের নিয়মিত ব্যবহার বলিরেখা দূর করতেও সাহায্য করে। এতে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের ইলাস্টিসিটি বাড়াতে  সাহায্য করে। এই উপাদানগুলো ত্বকের গভিরে প্রবেশ করে এইজিং প্রোসেসকে স্লো ডাউন করে এবং ত্বকের ফ্লেক্সিবিলিটিকে ত্বরান্বিত করে। এভাবেই ত্বক ঝুলে যাওয়া, এইজ স্পট এবং রিংকেল পড়াকে বাধাগ্রস্ত করে। খুব সহজ একটি বডি রিংকেল নাইট ক্রিমের রেসিপি শিখিয়ে দিচ্ছি এরজন্য যা যা লাগবে-

(১) ৬-৮ টা আমন্ড/ কাঠ বাদাম

(২) ৩-৪ টা ভিটামিন ই ক্যাপসুল

(৩) ২ টেবিল চামচ কোকোনাট মিল্ক


– কাঠ বাদামগুলো সারারাত পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরদিন খোসা ছাড়িয়ে স্মুদ পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে।

– কাঠ বাদামের পেস্ট এ বাকি উপকরণ ভিটামিন ই ক্যাপসুল এবং কোকোনাট মিল্ক মিক্স করে নিতে হবে।

– প্রতিদিন রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে এই বডি নাইট ক্রিমটি মেখে ঘুমোতে জান। এভাবে ১ মাস পরেই রিংকেল পড়া ত্বক টানটান হয়ে উঠবে।



ক্লিঞ্জার হিসেবে

আমি মেকাপ রিমুভিং এর সাধারণত ক্লিঞ্জিং লোশন ব্যবহার করতাম কিন্তু ঐসব ক্লিঞ্জিং লোশনগুলো বেশ থিক হওয়ায় ত্বকের গভিরে প্রবেশ করতে না পারায় ডার্ট কিন্তু জমতে থাকত জার ফলে ব্রণের উপদ্রপ খুব বেশি আকারে চড়াও হল। এর জন ডিসিশন চ্যাঞ্জ করে মেকাপ রিমুভার হিসেবে  যাদের ত্বক খুব সেনসিটিভ তারা এই রেসিপিটি ফলো করতে পারেন।  এর জন্য কোকোনাট মিল্কের সাথে কোকোনাট অয়েল মিক্স করে পুরো মুখে ম্যাসাজ করে কটন প্যাড দিয়ে মুছে ফেলুন। কোকোনাটের প্রোপার্টিজগুলো খুব সহজে ত্বকের গভিরে প্রবেশ করে ময়লা দূর করতে সক্ষম। কাজেই নিশ্চিন্তে এই রেসিপি ফল করলে পোর বন্ধ হয়ে ব্রণ গজানোর মতো ভীতি থেকে বেঁচে যাবেন।

কাজেই বুঝে নিলেন তো ত্বকের যত্নে কোকোনাট মিল্ক কতটুকু উপকারী। আজ থেকেই তাহলে ত্বকের যত্নে উপাদানগুলোর মধ্যে যোগ করুন নারকেলের উত্তম নির্যাসটি।

9
আপনার ছোট্ট সোনামণিকে একদিন গোসল করাতে নিয়ে হঠাৎ লক্ষ্য করলেন যে তার পিঠে এবং পেটে লাল লাল র‍্যাশ বা ফুসকুড়ির মত দেখা যাচ্ছে। আপনি উদ্বিগ্ন হবেন এটাই স্বাভাবিক কিন্তু আপনার এটা জানা থাকা উচিত যে ইতোমধ্যেই প্রকৃতিতে গরম আবহাওয়া বিরাজ করা শুরু হয়ে গেছে। আর গরমকাল ছোট বাচ্চাদের জন্য খুবই বিরক্তিকর একটি সময় কারণ এই সময়েই বাচ্চাদের শরীরে বিভিন্ন র‍্যাশ, চুলকানি, ঘামাচি ইত্যাদি দেখা দেয়। আর এই যে লাল লাল র‍্যাশের কথা বললাম, এটা হলো বাচ্চাদের হিট র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি যা গরমের কারণে হয়ে থাকে।

হিট র‍্যাশের কারণে বাচ্চাদের প্রচুর অস্বস্তি এবং চুলকানি হয়। আপনার ছোট্ট সোনামণিকে কিভাবে এই হিট র‍্যাশ থেকে দূরে রাখবেন এবং যদি হিট র‍্যাশ হয়েও যায় তাহলে সেটা থেকে কিভাবে নিস্তার পাবেন তার জন্যই আজকের এই লেখা। তাহলে চলুন দেখে নেয়া যাক বাচ্চাদের হিট র‍্যাশ কী এবং এটি থেকে মুক্তি পেতে ৬টি হোম রেমেডি।

বাচ্চাদের হিট র‍্যাশ কি?

হিট র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি হলো অন্যান্য র‍্যাশ এবং চুলকানির মতোই কমন এক প্রকার র‍্যাশ। এটি ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে অনেক ক্ষেত্রে বড়দেরও হতে পারে। হিট র‍্যাশ সাধারণত এমন সময়ে হয় যখন আবহাওয়া হঠাৎ করেই ঠাণ্ডা থেকে গরম হতে শুরু করে। ত্বকের পোর গুলো বন্ধ হয়ে যাওয়াই হলো হিট র‍্যাশ বা ফুসকুড়ির প্রধান কারণ। বাচ্চাদের সাধারণত পেট, পিঠ, হাত ও ঘাড়ে হিট র‍্যাশ হতে দেখা যায়।

ইতিমধ্যেই উল্লিখিত যে হিট র‍্যাশ বা তাপ ফুসকুড়ি সাধারণত চামড়ার পোর বন্ধ হয়ে যায় বলে হয় কারণ ত্বক থেকে ঘাম ঠিকমত বের হতে পারে না তাই ত্বকের পোর বন্ধ হয়ে ফুসকুড়ি দেখা দেয়।

বাচ্চাদের হিট র‍্যাশ হওয়ার কারণ ও প্রতিকারের উপায়

বাচ্চাদের হিট র‍্যাশ হওয়ার কমন কিছু কারণ আছে। সেগুলো হলো-


একটি গরম এবং আর্দ্র জলবায়ু।
বাচ্চাদের এমন পোশাক যা থেকে তাপ সহজে বের হতে পারে না।
থিক বা পুরু লোশন এবং ক্রিমের ব্যবহার।
একাধিক কাপড় পরিধান করার কারণে বাচ্চার শরীর অভারহিট হয়ে যাওয়া।
একটু সাবধান হলেই বাচ্চাদের হিট র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি হওয়া থেকে রক্ষা করা যায়। তারপরও যদি হিট র‍্যাশ হয়েই যায় তাহলে ৬টি হোমমেইড রেমেডি ইউজ করে দেখতে পারেন। এই রেমেডিগুলো কোন প্রকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই বাচ্চাদের হিট র‍্যাশ থেকে দ্রুত মুক্তি দেবে। চলুন তাহলে রেমেডি-গুলো দেখে নেয়া যাক।

১. একটি ঠান্ডা স্যাঁক বা আইস ব্যাগ

যা লাগবে-

একটি ঠাণ্ডা কমপ্রেস বা বরফের ব্যাগ

যা যা করতে হবে-

একটি বোলে ঠাণ্ডা পানি নিন অথবা একটি আইস ব্যাগ নিন। এবার ঠাণ্ডা পানিতে একটি পরিষ্কার কাপড় চুবিয়ে, সেটা থেকে পানি ঝরিয়ে নিন। এবারে এই ঠাণ্ডা কাপড়টি আপনার বেবির হিট র‍্যাশ আক্রান্ত স্থানে ১/২ মিনিটের জন্য রাখুন তারপর সরিয়ে নিন। এভাবে কয়েকবার করুন। আর যদি আইস ব্যাগ ইউজ করেন তাহলে আইস ব্যাগটি কয়েকবার আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করুন।

যতদিন ফুসকুড়ি ভালো না হচ্ছে ততদিন এভাবে ঠান্ডা স্যাঁক দিতে পারেন দিনে ২-৩ বার। এই ঠান্ডা কম্প্রেস বেবির র‍্যাশ আক্রান্ত স্থানকে শীতল করে এবং এফেক্টেড এরিয়াকে soothing করে। এভাবে কিছুদিন করলে ফুসকুড়ি থেকে দ্রুত নিস্তার পাওয়া যাবে।

২. অ্যাসেনশিয়াল অয়েল বা প্রয়োজনীয় তেল

যা প্রয়োজন হবে-

টি ট্রি অয়েল – ১/২ ড্রপ

নারকেল তেল ২/৩ চা চামচ

যা যা করতে হবে-

২-৩ চা চামচ নারকেল তেলের সাথে ১ বা ২ ড্রপ টি ট্রি অয়েল যোগ করুন এবং দুটি তেল ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এবার এই তেলের মিশ্রণ আক্রান্ত স্থানে ভালো করে মালিশ করুন এবং ২০-৩০ মিনিটের জন্য অপেক্ষা করুন তারপর ধুয়ে ফেলুন।

যতদিন ফুসকুড়ি ভালো না হচ্ছে ততদিন এই তেলের মিশ্রণ দিনে একবার করে ব্যবহার করতে পারেন। টি ট্রি অয়েলে আছে প্রদাহ বিরোধী আন্টিসেপ্টিক (Antiseptic) গুণ যা হিট র‍্যাশের জ্বালাপোড়া কমায় এবং ফুসকুড়ির অস্বস্তি থেকে মুক্তি দেয়।

সতর্কতা-

৬ মাসের কম বয়সী শিশুদের শরীরে টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করবেন না, এতে ক্ষতি হতে পারে। এছাড়াও এই তেল অন্য কোন তেলের সাথে না মিশিয়ে ব্যবহার করবেন না।

৩. শসা

যা প্রয়োজন হবে-

স্লাইস করা তাজা শসা

আপনাকে যা করতে হবে-

প্রথমে একটি কচি শসা নিন এবং এটি স্লাইস করে কাটুন। এবারে কাটা শসাগুলো পেস্ট করে নিন। তারপর এই পেস্ট আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করুন। ৫- ১০ মিনিটের জন্য শসার পেস্ট লাগিয়ে রাখুন তারপর নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

আপনি প্রতিদিনই এই শসা পেস্ট দিনে ২-৩ বার ব্যবহার করতে পারেন যতদিন হিট র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি থাকে।

শসা তে রয়েছে ফ্ল্যাভোনয়েড (Flavonoids) এবং ট্যানিন (Tannins) নামক অ্যালার্জি এবং প্রদাহ বিরোধী উপাদান যা হিট র‍্যাশ থেকে খুব সহজে আরাম দেয় এবং চুলকানি কমায়।

৪. ওটমিল

যা প্রয়োজন হবে-

১ কাপ ওটস পাউডার

পানি

যা যা করতে হবে-

একটি বড় বোল বা বালতি পানি দিয়ে পূর্ণ করুন। এবার এতে এক কাপ পরিমাণ ওটস পাউডার ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর এই পানিতে আপনার বেবিকে গোসল করান প্রায় ১০- ১৫ মিনিট যাবৎ। তারপর বেবির শরীর নরম তোয়ালে দিয়ে আলতোভাবে মুছে দিন।

আপনি প্রতিদিনই একবার করে আপনার বেবিকে ওটস পাউডার দিয়ে গোসল করাতে পারেন যতদিন পর্যন্ত না বেবির হিট র‍্যাশ ভালো হচ্ছে।

ওটমিলে আছে প্রদাহ বিরোধী উপাদান যা চর্মরোগ সারাতে দারুণভাবে কাজ করে। এটি খুব দ্রুত চুলকানি ও র‍্যাশ কমাতে সাহায্য করে এবং শরীর ঠাণ্ডা রাখে।

৫. ফুলার আর্থ বা মুলতানি মাটি

যা প্রয়োজন হবে-

হাফ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি
প্রয়োজনমত পানি

যা যা করতে হবে-

হাফ টেবিল চামচ মুলতানি মাটির সাথে প্রয়োজন মত পানি মিশিয়ে একটি মসৃণ পেস্ট তৈরি করুন। এবার আক্রান্ত স্থানে এই পেস্ট প্রয়োগ করে ১০ মিনিটের জন্য অপেক্ষা করুন তারপর ধুয়ে ফেলুন।

এই পেস্ট আপনি দিনে ২-৩ বার ব্যবহার করতে পারেন।

বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, মুলতানি মাটিতে থাকা নানা উপকারী উপাদান ফুসকুড়ি ও চুলকানি থেকে দ্রুত আরাম দেয়। এটি প্রাপ্তবয়স্করাও ব্যবহার করতে পারেন।

৬. অ্যালোভেরা

যা প্রয়োজন হবে-

ফ্রেশ অ্যালোভেরা জেল

যা যা করতে হবে-

প্রয়োজনমত কিছু ফ্রেশ অ্যালোভেরা জেল নিন। এবার এই জেল শিশুর আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করে ১০ – ১৫ মিনিটের জন্য অপেক্ষা করুন। তারপর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই জেল আপনি দিনে ২-৩ বার ব্যবহার করতে পারেন।

অ্যালোভেরাতে রয়েছে প্রদাহ বিরোধী উপাদান যা দেহে ঠান্ডা অনুভূতি প্রদান করে এবং তাপ ফুসকুড়ি থেকে দ্রুত আরাম দেয়।

টিপস

উপরের রেমেডি-গুলো ছাড়াও আপনার বেবিকে হিট র‍্যাশ থেকে রক্ষা করতে চাইলে কিছু টিপস অনুসরণ করতে পারেন। যেমন-

১) আপনার ছোট্ট সোনামণিকে প্রখর সূর্যের তাপ থেকে দূরে রাখুন।

২) বাচ্চাকে গরমকালে নরম ও আরামদায়ক পোশাক পরিধান করান।

৩) গরমকালে প্রতিদিন বেবিকে নরমাল টেম্পারেচার-এর পানি দিয়ে গোসল করান।

৪) আপনার বেবির দেহের তাপমাত্রা নিয়মিত পরীক্ষা করুন। তাপ বেশি হয়ে গেলে গোসল করিয়ে দিন।

৫) পুরু লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।

৬) বাচ্চার গোসলের জন্য হালকা সাবান ব্যবহার করুন।

৭) গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরম থেকে বাচ্চাকে দূরে রাখতে এয়ার কন্ডিশন রুমে রাখুন বা ঠাণ্ডা রুমে রাখুন।


উপরের টিপস গুলো অনুসরণ করলে আশা করি আপনার ছোট্ট সোনামণিকে হিট র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি থেকে রক্ষা করতে পারবেন।

10
অনেক মায়েদের প্রশ্ন থাকে যে গর্ভবতী অবস্থায় রোজা রাখা যাবে কিনা কিংবা রাখলে করণীয় কী হবে। প্রকৃতপক্ষে গর্ভবতী মায়েরা রোজা রাখতে পারবেন কিনা তা নির্ভর করবে তার এবং তার গর্ভস্থ সন্তানের সুস্থতার উপরে। ইসলামে সিয়াম সাধনার ক্ষেত্রে কিছু শিথিলতা রয়েছে, যেমন ভ্রমণকারী, অসুস্থ ব্যক্তি, গর্ভবতী মা, সন্তানকে দুগ্ধ পান করা অবস্থা ইত্যাদি। হাদীসে বর্ণিত রয়েছে-“যদি কোন গর্ভবতী মায়ের গর্ভবতী অবস্থায় রোজা রাখা গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি হবার আশঙ্কা তৈরি করে, তবে সে রোজা থেকে বিরত থাকতে পারবে এবং পরবর্তীতে তার সুবিধাজনক সময়ে সে ওই রোজাগুলো কাজা আদায় করে নেবেন।” এখন যদি কোন মা মনে করেন তিনি রোজা রাখবেন, তবে তাকে প্রথমে একজন গাইনি বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে। জেনে নিতে হবে গর্ভবতী অবস্থায় রোজা রাখা তার এবং গর্ভস্থ সন্তানের কোন ক্ষতির আশঙ্কা সৃষ্টি করছে কিনা।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে ৪-৭ মাস প্রেগনেন্সি পিরিয়ড রোজা রাখার জন্য বেশি নিরাপদ, কারণ প্রথম ৩ মাসে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব হলে  কম ওজনের শিশুর জন্ম হতে পারে এবং প্রেগনেন্সির শেষের দিকে পানি এবং খাদ্যের চাহিদা বেড়ে যায়। এছাড়া প্রেগনেন্সি পিরিয়ডে যদি অন্যান্য সমস্যা থেকে থাকে, যেমন ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন/উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি ডিজিজ, ঘন ঘন প্রস্রাবের ইনফেকশন ইত্যাদি থাকলে রোজা থেকে বিরত থাকাই উত্তম।

গর্ভবতী অবস্থায় রোজা রাখা ও করণীয়

১) সেহরি এবং ইফতারে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানীয় ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। বিভিন্ন ধরনের তাজা ফলের রস, ডাবের পানি শরীরে পানির চাহিদা দূর করবে।

২) ফলের মধ্যে খেজুর এবং কলায় প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম থাকে, যা দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে।

৩) প্রয়োজনীয় ওষুধগুলো সেহরি এবং ইফতারের সময় খেতে হবে।

৪) বেশিক্ষণ রোদে ঘোরাঘুরি করা উচিত হবে না।

৫) দুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে হবে।

রোজাদার মায়েদের যে সমস্যাগুলো দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে

১. বমি হলে।

২. অজ্ঞান হয়ে গেলে।

৩. বাচ্চার নড়াচড়া কম অনুভূত হলে, সাধারণত বলা হয় গর্ভের বাচ্চা ১২ ঘন্টায় ১০-১২ বার মুভমেন্ট করবে। এর থেকে কমে গেলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে।

৪. লেবার পেইন বা পেটে ব্যথা অনুভূত হলে, কারণ ডিহাইড্রেশন-এর কারণে অনেক সময় ইউটেরাস-এর কনস্ট্রাকশন শুরু হতে পারে।

৫. প্রস্রাবের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে কমে গেলে ইত্যাদি।

এই ছিল গর্ভবতী অবস্থায় রোজা রাখা ও করনীয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি। সবাই সুস্থ থাকুন।

11
 :)

12
Nice post.

13
গরমে ঘামাচি হওয়ার কারণ ও নিরাময়ে ১৬টি ঘরোয়া উপায়

ঘামাচি কী?

ঘামাচি এক ধরনের চর্মরোগ। নাম শুনেই বুঝতে পারছেন এর নামকরণ হয়েছে ঘাম শব্দটি থেকে। গরমের সময় আমাদের ত্বকে লাল বর্ণ ধারণ করে ফুসকুড়ির ন্যায় যা প্রকাশ পায় সেটিই হলো ঘামাচি বা হিট র‍্যাশ (Heat rash) । আমরা সাধারণত ফুসকুড়ি চুলকালেই তখন ঘামাচির আক্রমণ ভেবে থাকি। উল্লেখ্য যে ঘামাচি হলে আমাদের ত্বক জ্বালা করতেও পারে।

গরমে ঘামাচি কেন হয়?

আমাদের ত্বকের ঘর্মগ্রন্থির সাথে এক ধরনের জীবাণু মিশে থাকে। এই জীবাণুর নাম স্টেফ এপিডারমাইডিস। গ্রীষ্মকালে স্বাভাবিকভাবেই ঘর্মগ্রন্থি থেকে ঘাম বেশি নিঃসৃত হয়। তাই ধূলোবালিও জমে বেশি পরিমাণে। ত্বকের মৃত কোষে ধূলোবালি জমে যখন ঘর্মগ্রন্থি থেকে স্বাভাবিকভাবে ঘাম নিঃসরণ হতে পারে না তখন স্টেফ এপিডারমাইডিস-এর সংস্পর্শে এসে ঘামাচির উৎপত্তি হয়।

ঘামাচির প্রকারভেদ

এটি সাধারনত ৩ ধরনের হয়। সেগুলো হলো-


১) মিলিয়ারিয়া ক্রিস্টালিনা (Miliaria Cristalina)

এই ধরনের ঘামাচি প্রায় স্বাভাবিক হয়ে থাকে। এর তেমন কোন উপসর্গ দেখা যায় না। ত্বকের এপিডারমিস থেকে এই ঘামাচি হয়ে থাকে।

২) মিলিয়ারিয়া প্রফান্ডা (Miliaria Profunda)

এই ধরনের ঘামাচি অনেকটা মিলিয়ারিয়া ঘামাচির মতই। এটিরও তেমন কোন উপসর্গ থাকে না অর্থাৎ মিলিয়ারিয়া প্রফান্ডাও স্বাভাবিক প্রকৃতির ঘামাচি। মিলিয়ারিয়া প্রফান্ডা ত্বকের এপিডারমিস থেকে হয়।

৩) মিলিয়ারিয়া রুব্রা (Miliaria Rubra)

মিলিয়ারিয়া রুব্রা হলেই মূলত আমরা ঘামাচির যন্ত্রণা ভোগ করি। যখন অতিরিক্ত ধূলো-ময়লা জমে ঘর্মগ্রন্থি বন্ধ হয়ে ঘর্মনালীও আবদ্ধ হয়ে যায়, তখন ঘামাচিকে মিলিয়ারিয়া রুব্রার হিসেবে ধরা হয়। ত্বকে লাল লাল ফুসকুড়ি বা পানি ফোটা থাকলে বুঝতে হবে তা মিলিয়ারিয়া রুব্রার টাইপ ঘামাচি। এই ঘামাচি হলে ত্বক চুলকানো বা জ্বালা হবার সমস্যা হয়। ত্বকের গভীর থেকে অর্থাৎ ডারমিস থেকে এই ঘামাচি হয়।

ঘামাচিতে আক্রান্তের স্থান ও ক্ষতির প্রকৃতি

সাধারণত বুকে, পিঠে ফুসকুড়ি দেখা দিলেই আমরা ভাবি যে ঘামাচি হয়েছে। কিন্তু বুকে, পিঠে ছাড়াও শরীরের যেসব অংশে ভাজ পরে যেমন- কনুই, ঘাড়,কাঁধ, কুঁচকি ইত্যাদি অংশেও ঘামাচি হয়। আমরা অনেকেই মনে করি ঘামাচি হলে কোন প্রকার ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় না। কিন্তু ঘামাচির সংক্রমণের ফলে চুলকানি ও প্রদাহের সাথে সাথে শরীর প্রচুর ক্লান্ত হয়ে যায়। কখনো কখনো বমি বমি ভাব, নিম্ন রক্তচাপ, মাথা ব্যথা, অবসাদ এমনকি হিট স্ট্রোকও হতে পারে।

ঘামাচিতে উপকারি কয়েকটি ঘরোয়া টিপস

আমাদের হাতের কাছেই রয়েছে এমন কিছু উপাদান,যা এনে দিতে পারে ঘামাচির যন্ত্রণা থেকে মুক্তি! এমন যাদুকরী কিছু টিপস জেনে নেই আসুন।

১) বরফ

ঘামাচিতে উপকার পেতে সবচেয়ে সহজ উপায় হলো যে সব স্থানে ঘামাচি আছে, সেখানে বরফ ঘষা। ঠাণ্ডা পানিও ভালো আরাম দেয় ঘামাচিতে।

২) মুলতানি মাটি

মুলতানি মাটির পেস্ট ঘামাচিতে বেশ উপকারি। এই পেস্ট তৈরি করতে লাগবে ৪/৫ টেবিল চামচ মুলতানি মাটি,  গোলাপ জল ২/৩ টেবিল চামচ ও পানি পরিমাণ মত। ঘামাচির জায়গায় এই পেস্ট ২/৩ ঘন্টা রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেললে কয়েক দিনের মধ্যে ঘামচি ভালো হয়ে যাবে।

৩) বেকিং সোডা

ভাবছেন বেকিং সোডা কিভাবে ঘামাচিতে ব্যবহার করবেন? বলছি! ১ কাপ ঠাণ্ডা পানিতে ১ টেবিল চামচ বেকিং সোডা গুলিয়ে একটি পরিষ্কার কাপড় বেকিং সোডার পানিতে ভিজিয়ে তা ভালো করে নিংড়ে ঘামাচির স্থানে লাগালে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

৪) নিমপাতা

ত্বকের যে কোনো সমস্যার সমাধান যেন নিমপাতা ছাড়া হয়ই না। ঘামাচির ক্ষেত্রেও তাই! কারণ, নিমপাতায় আছে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল (Anti-bacterial) উপাদান যা ঘামাচি নিরাময়ে সাহায্য করে। তাই, নিমপাতার পেস্ট শরীরে লাগিয়ে তা সম্পূর্ণ শুকাতে হবে। এভাবে ৪-৫ বার দিনে ব্যবহার করতে পারলেই ঘামাচিকে বলা যাবে টা টা বাই বাই!

এছাড়াও নিমপাতার আরোও একটি চমৎকার রেমেডি বলি। ১ মুঠ নিমপাতা নিয়ে ২ কাপ পানিতে ২০ মিনিট ধরে সিদ্ধ করতে হবে। এরপর সেই পানি ঠাণ্ডা করে একটি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ঘামাচির জায়গায় ৫-১০ মিনিট ধরে লাগাতে হবে। এভাবে দিনে ৪/৫ বার করতে পারলে ভালো।

৫) লেবুর রস

লেবুর রসে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান, যা ঘামাচি দূর করতে বেশ কার্যকরী। ঘামাচিতে উপকার পেতে দিনে ৩/৪ গ্লাস লেবুর রস মিশ্রিত পানি পান করুন।

৬) অ্যালোভেরা জেল

অ্যালোভেরা জেল ঘামাচিতে অনেক আরাম দেয়। কয়েক দিন শরীরে নিয়মিত অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করলে ঘামাচি ভালো হয়ে যায়। সেজন্য অ্যালোভেরা পাতা থেকে অ্যালোভেরা জেল বের করে তা শরীরে প্রলেপ মেখে নিতে হবে। জেল আপনা-আপনি  শুকিয়ে গেলে পরে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

৭) চন্দন

চন্দন বাটা বা চন্দন গুঁড়া গোলাপজলের সাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ঘামাচির স্থানে কয়েকবার লাগালে কিছুদিনের মধ্যেই ঘামাচি ভালো হয়ে যাবে।

চন্দনের ম্যাজিকেল রেমেডি রয়েছে। এটি বানাতে লাগবে চন্দন বাটা/ গুড়া আর লাগবে ধনেপাতা বাটা । চন্দন ও ধনেপাতা বাটা মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ঘামাচিতে লাগালে অনেক উপকার পাওয়া যায়। উল্লেখ্য যে, ধনেপাতায় আছে অ্যান্টিসেপ্টিক গুণ! আর চন্দন ঘামাচির জ্বালা ও চুলকানি দুই-ই কমায়।

৮) ফিটকিরি

পানি পরিশোধনে  বা সেভিং লোশন-এর বিকল্প হিসেবে ফিটকিরি ব্যবহৃত হয় তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু ঘামাচিতে ফিটকিরি! একথা কি সবার জানা আছে? হ্যাঁ ঘামচিতে ফিটকিরি মিশ্রিত পানি পরিষ্কার কাপড় দিয়ে লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে গোসল করলে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

৯) লাউ

আমরা জানি লাউ এমনিতেই ঠাণ্ডা একটি সবজি। ঘামাচির জন্য লাউ আগুনে ঝলসে নিয়ে তা থেকে রস বের করে কিছুদিন খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।

১০) বেসন

রান্নাঘরে একটু খুঁজলেই হাতের কাছে পাবেন বেসন।  বেসনের সাথে পানি মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে ঘামাচিতে প্রলেপ দিলে  উপকার পাবেন। হ্যাঁ, অবশ্যই কিন্তু ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুবেন!

১১) আলু

গরমে ঘামাচি হয়েছে? কাঁচা আলুর পেস্ট লাগান! আরে, আলু শুধু রূপচর্চায়ই ব্যবহার করা হয় না! একবার ঘামচিতে লাগিয়েই দেখুন, উপকার পাবেন।

১২) ওটমিল বাথ

ঘামাচির জন্য ওটমিল বাথ নিতে পারেন। বাথটাবে আধকাপ ওটমিল ভিজিয়ে এরপর ডুবে থেকে অপেক্ষা করুন ১৫-২০ মিনিট! ভাবছেন সবার কি বাথটাব থাকে! হ্যাঁ! তাদের বলছি, নো টেনশন! ওটমিল ভেজানো পানি ঘামাচির উপর লাগালেও হবে। এতে অসহ্যকর চুলকানি থেকে আরাম পাবেন।

১৩) তরমুজ

রসালো লাল টকটকে তরমুজ দেখলেই তৃষ্ণা বেড়ে যায় তাই না? তরমুজ তো খাবেনই, ঘামাচি থাকলে একটুখানি খাবার সময় পাল্প বের করে আলাদা করে রেখে দিন। তরমুজের পাল্প ঘামাচিতে লাগালে বেশ উপকার পাওয়া যায়।

১৪) আদা

আদার পানি ঘামাচির জন্য অনেক উপকারী। তাই, আদা গ্রেট করে পানিতে ফুটিয়ে নিতে হবে। সাবধান! গরম পানি লাগাতে যাবেন না যেন! পানি ঠাণ্ডা হলে পরেই নরম সুতি কাপড় ব্যবহার করে ঘামাচির জায়গায় লাগান।

১৫) শসা

শসা শুধু দেহকে হাইড্রেটেডই করে না, শসা ঘামাচিতেও আরামদায়ক। ঘামাচির চুলকানি দূর করতে শসা বেশ কার্যকরী। শসা পাতলা পাতলা করে কেটে তা ৩০ মিনিট সময় নিয়ে ঘামাচির স্থানে রাখুন। শীতল ভাব পাবার সাথে সাথে চুলকানি কমবে। ৩০ মিনিট পরে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

এছাড়াও শসা রস করে খানিক লেবুর রসের সাথে মিশিয়ে পাতলা পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ঘামচিতে লাগাতে পারেন। এতে আরাম পাবার সাথে  সাথে ঘামাচির নিরাময়ও হবে।

১৬) কাঁচা আম

গ্রীষ্মের সময় আমাদের সবার ঘরে ঘরে কাঁচা আম থাকে। ঘামাচি নিরাময়ে সবচেয়ে মজাদার পানীয় বোধ হয় এটি। এই পানীয় তৈরি করতে লাগবে ২টি কাঁচা আম, পানি, লবণ ও চিনি। প্রথমেই ২টি আম গরম পানিতে সিদ্ধ করে নিতে হবে। এরপর তা থেকে রস বের করে ঠাণ্ডা পানিতে পরিমাণমতো লবণ ও চিনি মিশিয়ে মজা করে খেতে থাকুন এই সুস্বাদু পানীয়! প্রতিদিন ১-২ বার করে এক সপ্তাহ পর্যন্ত পান করলে ঘামাচির জ্বালা ও চুলকানি থেকে দূরে থাকতে পারবেন খুব সহজেই!

গরমে ঘামাচি মোকাবেলায় কার্যকরী ফেইস প্যাক

অনেকেরই দেখা যায় মুখে ঘামাচি উঠে। সেক্ষেত্রে একটি ফেইস প্যাক ইউজ করতে পারেন। শুধু লাগবে ৩টি মাত্র উপাদান! তুলসি পাতা পেস্ট, কচি লাউ পেস্ট ও আতপ চাল গুঁড়া। এই ৩টি উপাদান একসাথে মিশিয়ে ব্যবহার করলে মুখের ঘামাচি কমাতে পারবেন।

গরমে ঘামাচি দূর করার প্রোডাক্টের নাম

ব্যস্ত জীবনে সময়ের অভাবে অনেকেই ঘরোয়া টিপসগুলো ব্যবহার করতে পারেন না। তাই বাধ্য হয়েই তারা পাউডারকেই তাদের সহজ সমাধান হিসেবে বেছে নেন। তাদের বলছি, হাতের কাছে রাখতে পারেন – বোরো প্লাস (Boro Plus Ice Cool), গোল্ড বন্ড পাউডার ও লোশন ( Gold Bond), ওয়াইল্ড স্টোন কুল ট্যাল্ক ( Wild Stone Cool Talk), ডুড বডি পাউডার ( Dude Body Powder) ইত্যাদি পণ্যসমূহ!

শেষ সময়ে বলে যাই ঘামাচি হলে ভুলেও যা করবেন না

ভুল করেও নখ দিয়ে ঘামাচি চুলকাবেন না।

অতিরিক্ত খারাপ অবস্থা হলে কোন রকম প্রসাধনী ব্যবহার করা যাবে না। তবে স্টেরয়েড মলম বা ক্যালামাইন লোশন ব্যবহার করতে পারেন।
ঘামচি হলে নাইলনের কোনো কাপড় পরা থেকে বিরত থাকুন।
ঘর কখনো স্যাঁতস্যাঁতে রাখবেন না। সব সময় ঘর রাখুন আলো বাতাসসমৃদ্ধ!

আর হ্যাঁ, গরমে ঘামাচি হলে ও এ থেকে পুঁজ নিঃসৃত হলে দেরি না করে শীঘ্রই ডাক্তারের পরামর্শ নিন! সুস্থ থাকুন।

14
বৈশাখকে বলা হয় মধু মাস। চারিদিক বিভিন্ন রসালো ফলের ছড়াছড়ি। কিন্তু এই মধু মাসে মধুর ফলের স্বাদ যেমন আমাদের আকর্ষণ করে ঠিক তেমনি এই মাসের অসহ্য গরম আমাদের কষ্ট দেয়। নানা ধরনের রোগে ভোগে বাচ্চা বৃদ্ধ সবাই। ডায়রিয়া, ডিহাইড্রেশন, জ্বর, ঠান্ডা, হিট স্ট্রোক এমন নানা রোগে কষ্ট পাই আমরা। রোগে ভুগে কষ্ট পাওয়ার দিন শেষ! সবাই এখন অনেক স্বাস্থ্য সচেতন। ভালো থাকতে হবে নিজেকে আর ভালো রাখতে হবে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের। তাই জানতে  এবং মানতে হবে ছোট ছোট কিছু কৌশল। ব্যস, তাহলেই সুস্থ থাকা অনেক সহজ হয়ে যাবে। আমরা সবাই কমবেশি জানি, তারপরও চলুন এই প্রচন্ড গরমে সুস্থতা বজায় রাখতে জেনে নেই ১৪টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস!

প্রচন্ড গরমে সুস্থতা বজায় রাখতে টিপস

১. প্রচুর পানি পান করুন


এই গরমে সুস্থ থাকতে হলে প্রচুর পরিমাণের পানি পান করুন। পানির কোন বিকল্প নেই। প্রতিদিন ঘামের সাথে প্রচুর পানি ও লবণ আমাদের শরীর থেকে বের হয়ে যায়। আর তাই প্রতিদিন ৬ লিটার পানি অবশ্যই পান করুন।

২. রসালো ফল খান

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করুন প্রচুর রসালো ফল। রসালো ফল আপনার শরীরের পানির ঘাটতি পূরণে সাহায্য করার পাশাপাশি বিভিন্ন ভিটামিন, মিনারেল ও খনিজের অভাব দূর করবে। এবং এই গরমে আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর করে কাজের শক্তি যোগান দেবে।

৩. প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন সবজি

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে সবজি রাখুন এবং তরকারিতে ঝোল রাখুন। এসময় যতটা সম্ভব কষা রান্না পরিহার করুন। শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয় বলে ঝোল জাতীয় খাবার থাকা খুবই দরকার।

৪. মাংস খাওয়া পরিহার করতে হবে

অতিরিক্ত মাংস খাওয়া শরীরের জন্য এমনিতেই ক্ষতিকর। প্রতিদিন মাংস গ্রহণ শরীরে জন্ম দেয় নানা রোগের। আমাদের শরীরের বেশিরভাগ রোগের অন্যতম কারণ প্রতিদিন মাংস খাওয়া। তাই প্রচন্ড গরমে সুস্থতা বজায় রাখতে নিজের এবং পরিবারের মাংস খাওয়া পরিহার করুন।

৫. কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার কম গ্রহণ করুন

কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার আমাদের শরীরকে স্থূলকায় করে তোলে। জানলে অবাক হবেন ডায়াবেটিস-এর মতো ভয়াবহ রোগের অন্যতম কারণ এই অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার গ্রহণ। তাই কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারকে না বলুন। না, একেবারে না নয় কিন্তু! পরিমাণ মতো খান ও  সুস্থ থাকুন অনেক দিন।

৬. চা, কফি পরিহার করুন

চা, কফিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে নিকোটিন। যা শরীরকে করে তোলে শুষ্ক। যেহেতু গ্রীষ্মকালে আমরা প্রচুর ঘামি, সেহেতু শরীরের থেকে বেরিয়ে যায় প্রচুর পানি। তাই চা, কফি পান যথা সম্ভব কমিয়ে দিন।  আর  হলে গরমের সময় পান করা থেকে বিরত থাকুন।

৭. লেবু, বেলের শরবত ও ডাবের পানি করুন

গরমে নিয়মিত পান করুন লেবুর শরবত কিংবা বেলের শরবত। সম্ভব হলে ডাবের পানি পান করুন। লেবুতে আছে ভিটামিন সি।বেলে আছে ভিটামিন, মিনারেল, শর্করা। ডাবের পানিতে আছে আয়োডিন, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, আয়রণ ইত্যাদি। এ জাতীয় পানীয় শরীরকে করবে সতেজ ও ঠান্ডা এবং শরীরে ভিটামিন, আয়োডিন-এর অভাব দূর করে শরীরের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

৮. ট্যাং ও এই জাতীয় পানীয় একদম না

ট্যাং এবং এই জাতীয় কোমল পানীয় স্বাস্থ্যের জন্য অন্যন্ত ক্ষতিকর। বিক্রি বৃদ্ধির জন্য বিজ্ঞাপনে নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান দেখালেও আসলে এর কিছুই এর মধ্যে উপস্থিত থাকে না। যে সকল উপাদান দিয়ে এসকল পণ্য উৎপাদন করা হয় তার সবই মানুষের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

৯. ছাতা ব্যবহার করুন

বাহিরে বেড়োবার সময় অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করুন। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি আমাদের ত্বকের জন্য খুবই ক্ষতিকর। স্কিন ক্যান্সার-এর অন্যতম কারণ এই অতি বেগুনি রশ্মি। এছাড়াও অতিরিক্ত তাপমাত্রার জন্য অজ্ঞান হয়ে যাওয়া এমনকি হিট স্ট্রোকও হয়ে থাকে। তাই ব্যবহার করুন ছাতা।

১০. সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন

প্রতিদিন ও নিয়মিত ব্যবহার করুন সানস্ক্রিন এবং অবশ্যই তা হতে হবে ভালো কোন ব্যান্ড-এর। কমদামি, সস্তা সানস্ক্রিন লাভের বদলে মারাত্মক ক্ষতি করবে আপনার ত্বকের। যে ক্ষতি অনেক সময় পূরণ করা প্রায় অসম্ভব।

১১. হালকা ব্যায়াম করুন

প্রতিদিন সকালে হালকা ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম দেহ ও মনের উৎকর্ষতা সাধন করে। দেহ ও মনকে সতেজ রাখে, কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে,  শরীরে শক্তি বৃদ্ধি করে,  হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।

১২. ব্যাগে রাখুন পানির বোতল

বাহিরে যাবার সময় অবশ্যই ব্যাগে রাখুন পানির বোতল। অনেক সময় অনেক জায়গায় বিশুদ্ধ পানির অভাব দেখা দেয়। তাই সব সময় নিজের সাথে রাখুন নিরাপদ পানি।

১৩. রোদ চশমা ব্যবহার করুন

ধূলাবালি ও রোদ থেকে বাঁচতে বাহিরে  যাওয়ার সময় ব্যবহার করুন রোদ চশমা বা সানগ্লাস।

১৪. হালকা রঙের সুতি ও ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করুন

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আরামদায়ক পোশাক পরিধান করা। এই গরমে পরিধান করুন সুতি জাতীয় কাপড়ের পোশাক এবং পোশাকটি ঢিলেঢালা পরিধান করার চেষ্টা করুন, কেননা আঁটসাঁট বা গাঁয়ের সাথে লেগে থাকা পোশাকে গরম বেশি অনুভূত হয়।গাঢ় রঙ সূর্যের তাপ বেশি শোষণ করে বিধায় গাঢ় রঙের পোশাকে গরম বেশি লাগে এবং বেশি ঘাম হয়। ফলে শরীর থেকে বেশি পানি বের হয়ে যায়। তাই এই প্রচন্ড গরমে সুস্থতা বজায় রাখতে ব্যবহার করুন হালকা রঙের পোশাক।

সামান্য কিছু নিয়ম মেনে চললে নিজে যেমন সুস্থ থাকা যায় ঠিক তেমনি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও সুস্থ্য রাখা সম্ভব। তাই এই প্রচন্ড গরমে সুস্থতা বজায় রাখতে কিছু নিয়ম মেনে চলুন। স্বাস্থ্যসম্মত, সুস্থ, সুন্দর ও সুখী জীবন আমাদের সকলের একান্ত কাম্য। নিজে ভালো থাকুন এবং নিজের পরিবারকে ভালো রাখুন।

15
ওজন বেড়ে যাওয়া বা ওয়েট গেইন আমাদের বেশিরভাগ মানুষেরই চিন্তার একটি মূল কারণ। যে কোন কারণে ওজন বেড়ে যাওয়াটাই যেন আজকাল খুব স্বাভাবিক একটি ব্যপার। ওজন কমে যাওয়ার চাইতে ওজন বেড়ে যাওয়ার হার বেশি পরিলক্ষিত। কারণ ওজন বাড়ার জন্য তেমন কোন কষ্টই করতে হয় না বরং এটি না চাইতেও যেন হুরহুর করে বেড়ে যায়, অন্যদিকে ওজন কমানোর জন্য প্রচুর ডায়েট এবং কসরত করেও লাভ কিন্তু খুব কমই হয়, ওজন যেন কমতেই চায় না। যাই হোক, সার্জারির পেশেন্টদের ক্ষেত্রে ওজন বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা খুব বেশি লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে যারা সম্প্রতি কোন ধরনের অস্ত্রোপচার করেছেন তাদের ক্ষেত্রে ওজন বেড়ে যাওয়ার অর্থাৎ সার্জারির পর ওজন বাড়া ও এর হার তুলনামূলকভাবে বেশি।

সার্জারির পরে অবিলম্বে ওজন বৃদ্ধি পেতে দেখা যায়। আসলে, এই ওজন প্রায়ই ফলোআপ-এর মধ্যে ঘটে। সার্জারির পর ওজন বৃদ্ধির খুব কমন একটি উদাহরণ হলো, প্রেগন্যান্সি-এর পর ওজন বৃদ্ধি। এক্ষেত্রে তাদের ডেলিভারি সি-সেকশন সাহায্যে ঘটে। এই ক্ষেত্রে, প্রায় ৮০% নারীর সার্জারির পর উল্লেখযোগ্য ওজন বৃদ্ধি ঘটে। অন্যান্য ক্ষেত্রে, যেমন জটিল সার্জারি এমনকি ছোটখাটো টনসিলেক্টোমি-এর মত সার্জারিও ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।

চলুন তাহলে সার্জারির পর ওজন বাড়া যে ৫ টি প্রধান কারণে হয়ে থাকে সেগুলো দেখে নেয়া যাক।

সার্জারির পর ওজন বাড়া যে কারণে ঘটে

১. ফ্লুইড রিটেনশন বা তরল ধারণ

সার্জারির পর ওজন বাড়া ও এর একটি প্রধান কারণ হলো সার্জারির পর শরীরে তরল ধারণ করা। একে মেডিকেলের ভাষায় এডিমা (Edema) বলা হয়। পানি জমে যায় আপনার শরীরের অন্তর্বর্তী স্থানগুলোতে- অর্গান-গুলোর মধ্যবর্তী স্পেইস-এ। এই কারণে ওজন বেড়ে যায়। এটি স্থায়ীভাবে থেকে যেতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, দেখা গেল কোন সার্জারির রোগীর হাত এবং পা ফুলে গেছে এটা সাধারণ মনে হলেও এটা তরল স্থানীয়করণের জন্য হয়ে থাকে।

২. ট্রমা (Trauma)

অস্ত্রোপচারের সময়, শরীরের টিস্যুগুলো অনেক মানসিক আঘাত ভোগ করে। এর কারণে ইনফ্লামেশন হয় এবং এটিও তরল ধারণের একটি কারণ। যদি সার্জারি কোন দুর্ঘটনা ঘটার কারণে হয়ে থাকে, তাহলে তা তরল ধারণের ক্ষেত্রে আরো বেশি সম্ভাবনাময় হয়ে থাকে। তাই কোন দুর্ঘটনাব্যতীত সার্জারি হলে তাতে ট্রমা-এর প্রভাব পড়ে এবং ওজন বৃদ্ধি পায়।

৩. চাপ (Stress)

স্ট্রেস হলো হরমোনাল ভারসাম্যহীনতার একটি প্রধান কারণ যা শরীরকে অত্যধিক তরল ধারণ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। সার্জারি সম্পর্কিত চাপের ফলে অ্যান্টি-ডায়োরেটিক হরমোন (Anti-diuretic hormone- ADH) হাই লেভেলে পৌছে যায় যা কিডনিকে শরীরের অতিরিক্ত পানি সংরক্ষণ করার জন্য তৈরি করে। এই কারণে অযৌক্তিকভাবে শরীরে ওজন লাভ হয়। এছাড়াও অস্ত্রোপচারের পর, রোগী সার্জারির আগের সমস্যা দূর করার জন্য সার্জারির পর অনেক সময় তাদের ঔষুধ মিশ্রণের ফলে শরীরে অনেক পরিবর্তন দেখা দেয় যা তরল ধারণের জন্য অনেকাংশে দায়ী। এটি ওজন বেড়ে যাওয়ার একটি অন্যতম কারণ।

৪. স্থিরতা

অস্ত্রোপচারের পর, সাধারণত রোগীদের জন্য খুব বেশি কাজ করা বা শারীরিক কসরত করা নিষেধ থাকে। তাদের খুব কম নড়াচড়া করতে বলা হয়ে থাকে। এই কারণে রোগীদের স্বাস্থ্য বেড়ে গিয়ে খুব দ্রুত ওজন বৃদ্ধি ঘটে থাকে। তাই এক্ষেত্রে ডাক্তারদের পরামর্শ থাকে, রিকোভারি পিরিয়ড শেষ হয়ে গেলে রোগী যেন হালকা ব্যায়াম করে এতে তার পোস্ট-সার্জারি ডিপ্রেশন কাটিয়ে ওঠা সহজ হয়ে উঠে।

৫. কমফোর্ট ফুড

এটি ওজন বেড়ে যাওয়ার আরেকটি মেজর ফ্যাক্টর। এক্ষেত্রে দেখা যায়, রোগী ভাবেন যে সার্জারির পর তার বেশি বেশি খেতে হবে শরীর দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্য। এছাড়াও এমনও দেখা যায় যে রোগীর আত্মীয়স্বজন রোগীকে দেখতে আসেন বিভিন্ন ধরনের খাবার-দাবার নিয়ে। এতে রোগী প্রচুর পরিমাণে রিচ ফুড বা ওয়েট গেইন হওয়ার মত ক্যালরি খেয়ে ফেলেন নিজের অজান্তেই। এতেও দ্রুত ওজন বেড়ে যেতে দেখা যায়।

কিভাবে এই ওজন কমানো যেতে পারে?
অস্ত্রোপচারের পরে ওজন বেড়ে যাওয়া কিছুটা স্বাভাবিক। কিন্তু সেটা ১ সপ্তাহে ৫-৬ পাউন্ডের বেশি নয়।

১) যদি রোগীর ওজন আরো দ্রুত বৃদ্ধি পায়, তাদের ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত। সাধারণত, একটি রোগীর সার্জারির পর বেশি বেশি ক্ষুধা পায় এবং শরীর দুর্বল মনে হয়। এটি স্বাভাবিক হতে এক সপ্তাহ বা এর বেশি সময় ও লাগতে পারে। তাই এই সময় বেশি বেশি খেতে চাওয়াটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলা উচিত এবং উচ্চ ক্যালোরি সম্পন্ন খাবার সঠিক মাত্রায় গ্রহণ করা উচিত।

২) এছাড়াও পরিমিত ক্যালোরি এবং সুষম খাবারের পাশাপাশি ডাক্তারগণ হালকা ব্যায়াম করার পরামর্শ ও দিয়ে থাকেন। এমনকি যাদের তলপেটে সার্জারি হয়েছে, তাদেরকেও নির্দিষ্ট সময়ের পর সম্পূর্ণ বসে থাকতে বারন করেন। এমনকি যাদের তলপেটে অপারেশন হয়েছে তাদেরকেও পেটে হালকা চাপ দিয়ে ব্যায়াম করতে বলেন যাতে শরীর ফিট থাকে।

৩) সর্বোপরি, প্রচুর পরিমাণে পানির পানি পান করা অবশ্যই কর্তব্য। কারণ ওজন কমানোর জন্য পানির কোন বিকল্প নেই। তাছাড়াও সঠিক পরিমাণে পানি পান করলে এটি ফ্লুয়িড রিটেনশান হতে বাঁধা প্রদান করে তাই অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যেতে পারেনা। এর কারন হলো, শরীর পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পেলে কিডনিতে সংকেত পাঠায় এবং কিডনি অতিরিক্ত পানি কনসার্ভ করা থেকে বিরত থাকে।

সার্জারির পর ওজন বাড়া অনেক কারণে হতে পারে তবে উপরিউক্ত ৫টি কারণই হলো সার্জারির পর ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার প্রধাণ কারণ। তাই সার্জারির পরে আপনার ডাক্তারের পরামর্শমত জীবনযাপন করুন এবং পরামর্শব্যতীত কোন কাজ করবেন না কারণ এই সময়টিতে শরীর খুব দুর্বল থাকে। এছাড়াও পুষ্টিকর খাদ্যগ্রহণ করুন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। খুব সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চললেই আপনার শরীর থাকবে ফিট এবং আপনি থাকবেন সুস্থ।

Pages: [1] 2 3 ... 16