Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - Mir Kaosar Ahamed

Pages: 1 [2] 3 4 ... 18
23
Faculty Forum / Re: QS World University Rankings
« on: November 15, 2018, 04:50:49 PM »
great

26
Faculty Sections / Re: Aga khan award
« on: November 15, 2018, 03:21:26 PM »
Thanks

27
বিশ্বাস করা হচ্ছে এবং করানো হচ্ছে, বাংলাদেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ‘মানহানি’ হয়েছে; অর্থাৎ তাঁদের মানের অবনতি ঘটেছে। আমলা-কাজি-সিপাহসালার—রাষ্ট্রের আর কোনো পক্ষের মানহানি হয়নি, হয়েছে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়–শিক্ষকদের। বিশ্ববিদ্যালয়–শিক্ষকদের মান নির্ধারণ এবং মানের অবনতি রোধ করার উদ্দেশ্যে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি খসড়া নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কর্তাব্যক্তিরা এই নীতিমালার ব্যাপারে তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেছেন। সিদ্ধান্ত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের তিনটি নিয়ামক থাকবে: ১. প্রাথমিক-উচ্চমাধ্যমিক-স্নাতক স্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষার ফলাফল; ২. নিয়োগ-পরীক্ষা পাস এবং ৩. পাঠদানের ক্ষমতা।

শিক্ষার তৃতীয় স্তর কিংবা উচ্চশিক্ষার সঙ্গে প্রথম দুই স্তর, অর্থাৎ প্রাথমিক ও মাধ্যমিক (উচ্চমাধ্যমিকও যার অন্তর্ভুক্ত) শিক্ষার মূল পার্থক্য হচ্ছে, উচ্চশিক্ষা যাঁরা দেবেন এবং নেবেন, তাঁদের যথাক্রমে গবেষণা করতে হবে এবং গবেষণা করা শিখতে হবে। ঐতিহাসিকভাবে ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ নামের প্রতিষ্ঠানটির ওপর গবেষণা করা ও গবেষণা শেখানোর দায়িত্ব বর্তায়। গবেষণা যদি আপনি না করেন, তবে অতিসাম্প্রতিক কালে জ্ঞানের জগতে কী পরিবর্তন হলো, সেটা আপনি জানতে পারবেন না, শিক্ষার্থীদের জানাতে পারবেন না এবং এর ফলে সমাজেও জ্ঞানের অগ্রগতির সর্বশেষ সংবাদ অজানা থেকে যাবে। সুতরাং বিশ্ববিদ্যালয়–শিক্ষকের তিনটি কাজ: ১. নিজে গবেষণা করা; ২. অন্যকে গবেষণায় সহায়তা করা এবং ৩. পাঠদান করা।

প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষকদের শুধু পাঠদান করলেই চলে। একজন কলেজশিক্ষকের সঙ্গে একজন বিশ্ববিদ্যালয়–শিক্ষকের পার্থক্যটা এখানেই। আমি প্রথম দুই স্তরের শিক্ষকদের কোনোভাবেই ছোট করছি না। আমি শুধু বলতে চাই যে একজন বিশ্ববিদ্যালয়–শিক্ষকের দায়িত্ব শুধু পাঠদানে সীমাবদ্ধ থাকা উচিত নয়।

একটি বিশ্ববিদ্যালয় কী ধরনের প্রতিষ্ঠান হওয়া উচিত—সে সম্পর্কে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারক কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়–শিক্ষকদের স্পষ্ট ধারণা আছে বলে মনে হয় না। এর কারণ, এখন যাঁরা নীতিনির্ধারক কিংবা প্রবীণ বিশ্ববিদ্যালয়–শিক্ষক, তাঁদের শিক্ষকেরাও খুব বেশি গবেষণামুখী ছিলেন না এবং এর ফলে শিক্ষার্থীদেরও তাঁরা গবেষণামুখী করে তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন। আমাদের আগের প্রজন্মের বিশ্ববিদ্যালয়–শিক্ষকদের সিংহভাগ আচরণে-মানসিকতায় নেহাতই একেকজন কলেজশিক্ষক ছিলেন এবং তাঁদের শিক্ষার্থীরাও ছাত্রজীবনে কলেজশিক্ষার্থী এবং কর্মজীবনে কলেজশিক্ষকে পরিণত হয়েছেন।

শিক্ষকতা, কারিকুলাম, পাঠ্যক্রম, পাঠদান থেকে শুরু করে আমাদের প্রজন্মের বিশ্ববিদ্যালয়–শিক্ষকদের যাবতীয় আচরণ ও কর্মকালে কলেজশিক্ষকের মানসিকতা প্রতিফলিত হয়। মাস্টার্স পর্যায়েও তাঁরা সেমিনারের কথা ভাবতে পারেন না, কোর্স দিতে চান। পরীক্ষা ছাড়াও যে অর্জিত জ্ঞান যাচাইয়ের অন্য পন্থা থাকতে পারে—হাজার চেষ্টা করেও এ ব্যাপারটা বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়–শিক্ষকদের বোঝাতে পারবেন না। এর পেছনে অর্থনৈতিক কারণও আছে বৈকি। পরীক্ষা মানেই ইনভিজিলেশন, খাতা দেখা, নম্বর তোলা ইত্যাদি হাজার রকম আয়ের সুবর্ণ সুযোগ নাদান শিক্ষকেরা কেন হেলায় নষ্ট করতে যাবেন? বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনো ছাত্রদের নাম ডেকে উপস্থিতির হিসাব নেওয়া হয়, অনেকটা জেলখানার কয়েদিদের মতো। একেকটি ক্লাসে শ খানেক ছাত্রের নাম ডাকতেই তো কুড়ি মিনিট চলে যাওয়ার কথা। ক্লাসের সময়সীমা যদি পঞ্চাশ মিনিট হয়, তবে শিক্ষক মহোদয় পড়াবেন কখন?

কোনো ব্যক্তির গবেষণা করার ক্ষমতা তাঁর মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক পর্যায়ে অর্জিত ভালো ফলের ওপর নির্ভর করে না। ভালো ছাত্রমাত্রই ভালো গবেষক নন। কে ভালো গবেষক হবেন আর কে হবেন না, সেটা শুধু সময়ই বলতে পারে। নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে ভালো আমলা নির্বাচন করা যেতে পারে, কিন্তু ভালো গবেষক তথা ভালো বিশ্ববিদ্যালয়–শিক্ষক নির্বাচন করা কার্যত অসম্ভব।

পাশ্চাত্যে বিশ্ববিদ্যালয়–শিক্ষকদের কোনো নিয়োগ পরীক্ষায় পাস করতে হয় না। প্রাথমিক থেকে শুরু করে স্নাতক পর্যায়ের পরীক্ষায় কার, কী ফলাফল ছিল, সেটাও বিবেচনায় নেওয়া হয় না। এসব ফলাফল কলেজ কিংবা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের সময় বিবেচ্য হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে একমাত্র বিবেচ্য, মুখ্যত গবেষণার ক্ষমতা এবং গৌণত পাঠদানের ক্ষমতা। দীর্ঘদিন ধরে এই দুই ক্ষমতা প্রমাণ করার পর পাশ্চাত্যে একজন ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারেন।

পাশ্চাত্যে পিএইচডি করতে করতেই একজন ছাত্র নিজ বিষয়ের বিখ্যাত সব জার্নালে তাঁর গবেষণাকর্ম প্রকাশ করার চেষ্টা করেন। একই সঙ্গে তিনি স্নাতক পর্যায়ে খণ্ডকালীন ভিত্তিতে পড়াতেও শুরু করেন। পাঠ দিতে দিতে তিনি পড়াতে শেখেন এবং জেনে যান, পড়ানোর কাজটা আদৌ তিনি পারবেন কি না। শিক্ষার্থীরাও শিক্ষানবিশ শিক্ষককে মূল্যায়ন করেন এবং শিক্ষানবিশ যখন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক পদের জন্য আবেদন করেন, তখন শিক্ষার্থীদের এই মূল্যায়ন বিবেচনায় নেওয়া হয়। পিএইচডি অভিসন্দর্ভ কিংবা প্রকাশিত গবেষণাকর্মের মান এবং পাঠদানের ক্ষমতা—এই দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে বিজ্ঞ নির্বাচকেরা সিদ্ধান্ত নেন, কোনো বিশেষ ব্যক্তিকে শিক্ষক হিসেবে অস্থায়ী নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে কি না। কয়েক বছর অস্থায়ী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থাকার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের নিয়োগ স্থায়ী হয়। নিয়োগ স্থায়ী হওয়া এবং পদোন্নতি পাওয়া নির্ভর করে প্রধানত শিক্ষকের কয়টি প্রবন্ধ স্বীকৃত জার্নালে প্রকাশিত হলো, তার ওপর।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, মঞ্জুরি কমিশনের কর্তাব্যক্তিদের বক্তব্য এবং সাম্প্রতিক খসড়া নীতিমালা থেকে পরিষ্কার বোঝা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ ও কলেজেশিক্ষক নিয়োগের মধ্যে পার্থক্য করতে আমরা সক্ষম নই। নিয়োগ পরীক্ষা ও প্রথম দুই স্তরের ফলাফলের ওপর নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব শিক্ষক নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন, তাঁদের যোগ্যতা কলেজ বা স্কুলশিক্ষকের চেয়ে বেশি হবে না। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগের ধরন যদি একই হয়, তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কলেজ-মানের শিক্ষক নিয়োগ হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রকারান্তরে কলেজে পরিণত হবে।

কার্যত বাংলাদেশে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই—প্রাইভেট-পাবলিকনির্বিশেষে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রকৃতপক্ষে এক একটি বড়সড় কলেজমাত্র। পরিতাপের বিষয় এই যে ভবিষ্যতেও যে বাংলাদেশে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠবে, তারও কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না ওই নীতিমালায়। বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যাঁরা ভাবেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত যাঁরা নেন, তাঁরা হয়তো জানেনই না ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ কাকে বলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস: আদিপর্ব শীর্ষক পুস্তকটি পড়ে তাঁরা নিঃসন্দেহে উপকৃত হতে পারেন। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন অন্ততপক্ষে শিক্ষকদের মধ্যে এই বই বিতরণের ব্যবস্থা নিলে শিক্ষা তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা সম্পর্কে সমাজের অজ্ঞানতা অনেকটাই দূর হবে বলে আমি মনে করি।

শিশির ভট্টাচার্য্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক

28
Thanks for sharing

Pages: 1 [2] 3 4 ... 18