Daffodil International University
Entertainment & Discussions => Life Style => Topic started by: irin parvin on July 22, 2015, 01:00:55 PM
-
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় বিশেষ করে নাশতায় অনেকেই ডিম খেতে পছন্দ করেন। সময় স্বল্পতার জন্য ভাতের সঙ্গে তরকারির বিকল্প হিসেবে ডিম ভাজি বা ভর্তা করেও অনেককে খেতে হয়। প্রশ্নটা হলো প্রতিদিন বা নিয়মিত ডিম খাওয়া যাবে কি যাবে না, এ নিয়ে চিকিৎসক, রোগী এমনকি সুস্থ মানুষের মাঝেও বিভ্রান্তি বা দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল এবং এখনো আছে। বিশেষ করে যাঁদের বয়স একটু বেশি, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক বা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, এমন রোগী অথবা যাঁদের রক্তে কোলেস্টেরল বা অন্যান্য চর্বির পরিমাণ বেশি, তাঁদের ডিম খেতে নিষেধ বা সম্পূর্ণ বর্জন করতে বলা হতো। অনেকেই আবার ডিমের কুসুম বাদ দিয়ে শুধু সাদা অংশটুকুই খেতে বলতেন। এর কারণ একটাই, তা হলো ডিম খেলে কোলেস্টেরল বাড়ে, তাতে উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি বাড়ে। এত দিনের এ ধারণা আসলে সত্যি নয়।
ডিম খেলে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা ততটা বৃদ্ধি পায় না। একজন পূর্ণ বয়স্ক সুস্থ মানুষ দৈনিক গড়ে ৩০০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত কোলেস্টেরল গ্রহণ করতে পারে। আর একটি ডিমে রয়েছে মাত্র ২০০ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল।
তাই বিশেষজ্ঞরা, এমনকি আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন এখন আর তাদের খাদ্যের গাইড লাইনে ডিম খাওয়াকে নিরুৎসাহিত করছে না। যেকোনো ব্যক্তি ডিমের সাদা অংশ খেলে কোনো সমস্যা তো হবেই না, এমনকি কুসুমসহ সম্পূর্ণ ডিম খেলেও উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল ও হৃদ্রোগের ঝুঁকি থাকে না। একটি গবেষণায় প্রতীয়মান হয়েছে, প্রতি সপ্তাহে পাঁচ-ছয়টি ডিম আহারে হৃদ্রোগ, স্ট্রোক বা অন্যান্য ধরনের হৃদ্রোগের কোনো ঝুঁকি নেই।
ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে বলা হয়, দিনে একটি ডিম হার্টের জন্য ক্ষতিকর নয়। সকালের নাশতায় একটি ডিম কোলেস্টেরল প্রোফাইলের ওপর তেমন কোনো প্রভাব ফেলে না, যতটা প্রভাব ফেলে আপনার সকালের নাশতায় মিষ্টি বা চর্বি জাতীয় খাবার থাকলে।
ডিমের মধ্যে যে প্রোটিন, ভিটামিন বি১২, রিবোফ্লোবিন, ফলেট ও ভিটামিন ডি রয়েছে, তা কোলেস্টেরল বৃদ্ধির ক্ষতিকর প্রভাব কমিয়ে দেয়। এমনকি অনেক দিন সংরক্ষিত বা প্রক্রিয়াজাত মাংস খাওয়ার চেয়ে ডিম ভালো বিকল্প খাদ্য হতে পারে।
অনেকে হাঁস বা মুরগির ডিম এমনকি সাদা বা লালচে ডিম খাওয়া নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগেন, আসলে সব ধরনের ডিমের পুষ্টিগুণ একই রকম। কেউ কেউ আবার কাঁচা ডিম খেতে পছন্দ করেন, এমনকি কাঁচা ডিমের পুষ্টিগুণ বেশি বলে মনে করেন, এ ধারণাটাও সত্যি নয়। বরং কাঁচা ডিম খেলে সালমোনেলা জাতীয় ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
তরুণেরা এবং যাঁরা বেশি কায়িক পরিশ্রম করেন, তাঁরা নিয়মিত ডিম খেতে পারেন। এমনকি বয়স্করা সপ্তাহে কয়েকটি ডিম খেতে পারবেন। আর যাঁরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছেন, তাঁদের সুস্বাস্থ্যের জন্য নিয়মিত ডিম খাওয়া উচিত। তবে কিডনি অকেজো বা রেনাল ফেইলুরের রোগী চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ডিম খাবেন, কারণ কিডনি ফেইলুরে প্রোটিন কম খাওয়া উচিত। তবে কারও কারও বেলায় ডিম খেলে অ্যালার্জি জাতীয় সমস্যা হতে পারে, সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
সুস্বাস্থ্য এবং খাদ্যের জরুরি উপাদান প্রোটিন গ্রহণের জন্য নিয়মিত ডিম খাওয়া নিয়ে কোনো বিতর্ক বা বিভ্রান্তির অবকাশ নেই।
লেখক: ডিন, মেডিসিন অনুষদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।
www.prothom-alo.com/life-style/article/581536
-
Very nice information... Thanks for sharing the post,