Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - sisyphus

Pages: 1 [2] 3 4 ... 7
16
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, দেশের মানুষের গত বছর মাথাপিছু আয় ছিলো ১ হাজার ৭৫১ ডলার। এই বছর মাথাপিছু আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯০৯ ডলার। মাথাপিছু আয় ১৫৮ ডলার বেড়েছে। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভা শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের গত অর্থবছরের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয়ের তথ্য জানান। পরিকল্পনা কমিশনে ইআরডি সম্মেলন কক্ষ থেকে  তিনি এই তথ্য জানান। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘মাথাপিছু আয় প্রত্যেক বাংলাদেশির আলাদা বা ব্যক্তিগত আয় নয়৷ এটি সামগ্রিক আয়, যা মাথাপিছু ভাগ করে দেওয়া হয়৷’


রাইজিংবিডি

17
কেন আপনি প্রতিদিন একই রকম ধূসর রঙের টি-শার্ট পরেন?- এমন এক প্রশ্নের জবাবে ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ জানিয়েছিলেন, প্রতিদিন কোন পোশাক পরবেন এই চিন্তা করে সময় নষ্ট করার বদলে দিনের পুরোটা সময় গুরুত্বপূর্ণ কাজে খরচ করাই তার কাছে শ্রেয় মনে হয়। শুধু জাকারবার্গ নন, স্টিভ জবস, ডিন ক্যামেন কিংবা ক্রিস্টোফার নোলানের মতো অনেক সফল ব্যক্তির প্রতিদিন একই রঙের পোশাক পরার  অভ্যাস রয়েছে। তবে এবার একই রঙের পোশাক পরে আলোচনায় এসেছেন সিরিয়ার এক ব্যক্তি। কারণ সিরিয়ান এই নাগরিক এক দুই বছর নয়, দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর হলুদ রঙের পোশাক পরছেন। শুধু হলুদ রঙের শার্ট বা টি-শার্ট নয় প্যান্ট, আন্ডারওয়্যার এমনকি তার নিত্য ব্যবহার্য মাথার টুপি, ছাতা, ফোনের কভার ও বাসার অনেক আসবাবও হলুদ রংয়ের।



আবু জাকুর নামের এই ব্যক্তির বাড়ি সিরিয়ার আলেপ্পো শহরে। ১৯৮৩ সালের জানুয়ারি মাস থেকে তিনি হলুদ রঙের পোশাক পরা শুরু  করেছেন। কারণ তার কাছে হলুদকে ভালোবাসার প্রতীক বলে মনে হয়। সেই থেকে শুরু। এরপর কেটে গেছে দীর্ঘ সাড়ে তিন দশক। এই পুরোটা সময় তিনি একদিনের জন্য হলুদ ব্যতীত অন্য কোনো রঙের পোশাক পরেননি।

সব সময় কেন হলুদ পরেন? একটি চীনা বার্তা সংস্থার এমন প্রশ্নের জবাবে আবু জাকুর বলেন, ‘হলুদ ছাড়া অন্য কোনো রঙের পোশাক পরলে নিজেকে নিষ্প্রাণ মনে হয়। ফলে অন্য কোনো পোশাক পরে আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি না।’

প্রতিদিন হলুদ রঙের পোশাক পরে থাকায় আবু জাকুর এখন আলেপ্পোর খুবই পরিচিত মুখ। পথে চলতে অনেকেই তার সঙ্গে কথা বলেন, ছবি তোলেন, আবার অনেকে হাসাহাসিও করেন। এই খ্যাতির পাশাপাশি অনেক বিড়ম্বনা তিনি সহ্য করেন। কারণ যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ার অনেকেই তাকে বাশার আল আসাদ, আইএস কিংবা আল-কায়েদার চর মনে করে। তবে যে যাই বলুক, আবু জাকুরের তাতে কিছু যায় আসে না। তিনি মৃত্যুর দিন পর্যন্ত হলুদ রঙের পোশাক পরতে চান।

18
দশ টাকায় ১ কোটি ১ লাখ ১৯ হাজার ৫৮৪টি ব্যাংক হিসাব খুলেছেন কৃষকরা। সোমবার জাতীয় সংসদে অনুষ্ঠিত কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির প্রথম বৈঠকে একথা জানানো হয়।

বৈঠকে জানানো হয়, বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বে পাট উৎপাদনে দ্বিতীয়, সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, ধান উৎপাদনে চতুর্থ, আম উৎপাদনে সপ্তম, আলু ও পেয়ারা উৎপাদনে অস্টম এবং খাদ্যশস্য উৎপাদনে দশম স্থান অর্জন করেছে।

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গত ১০ বছরে গম, ভুট্টা, আলু, ডাল, তেলবীজ, শাকসবজি, ফুল ও মসলাসহ বিভিন্ন ফসলের ২০১টি উচ্চ ফলনশীল উন্নত জাত ও হাইব্রিড এবং ২৫০টি উন্নত ফসল ব্যবস্থাপনা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।

রাইজিংবিডি

19
স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য অথবা শরীরের পুষ্টির জন্য আমরা অনেক পুষ্টিকর খাদ্য বা আমিষ জাতীয় খাদ্য খেয়ে থাকি। যেমন মাংস এক ধরনের প্রোটিন জাতীয় খাবার। যা পানি, প্রোটিন এবং চর্বির সমন্বয়ে গঠিত।

শরীরের কোষ তৈরির জন্য প্রতিদিন আমাদের কিছুটা প্রোটিন খাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু তাই বলে মাংসের মতো প্রাণিজ প্রোটিন সবার শরীর ও বিপাক ক্রিয়ায় সমানভাবে খাপ খাওয়ানো যায় না। বরং মাংস কারো দেহের জন্য অসহিষ্ণু ও সংবেদনশীলতা হতে পারে, এমনকি মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।

তাই যাদের মাংস হজমে সমস্যা হয় তারা যদি তা কিছু উপসর্গ দেখে জানতে পারেন এবং মাংসের পরিপূরক বিকল্প আমিষ গ্রহণ করেন তাহলে তারা ঝুঁকি এড়ানোর পাশাপাশি আরো স্বাস্থ্যকর ও স্মার্ট জীবন যাপন করতে পারবেন।

একজন প্রত্যয়িত স্বাস্থ্য প্রশিক্ষক বলেন, ‘এমন কোনো খাদ্য নেই যা সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। একটি সুখী ও স্বাস্থ্যকর জীবনধারার জন্য মাংস আবশ্যক নয়, যদিও মাংস খাওয়াটা একজনকে স্বাস্থ্যবান করতে পারে আবার অন্যজন উদর সংক্রান্ত অস্বস্তি বা পীড়া আক্রান্ত হতে পারে।’

আপনার দেহ যদি মাংস সহ্য করতে না পারে তাহলে আপনি উদ্ভিজ্জ আমিষভোজী হতে পারেন যা আপনাকে অনেক ভালো অনুভূতি দেবে।

এখানে ১১টি উপসর্গ দেয়া হলো, যা দেখে আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার দেহ মাংস প্রক্রিয়াকরণ করতে অক্ষম এবং আপনার সুস্থতার জন্য যতটা সম্ভব মাংস এড়িয়ে চলা উত্তম।

* পেট ফাঁপা : মাংস খাওয়ার পর পেট ভারী বোধ ও ফোলা বা ফাঁপা ভাব এবং সেই সঙ্গে পেটে অস্বস্তি বা ব্যথা ইত্যাদি অনুভূত হতে পারে। এর পাশাপাশি আপনি যদি পেটের স্ফীতি এবং অবসাদ বোধ করেন তাহলে অবশ্যই সুস্থ থাকার জন্য মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

* বমি ভাব : মাংস পরিপাক না হবার উপসর্গগুলোর মধ্যে বমিবমি ভাব, অম্বল আর বদহজম অন্যতম। এই উপসর্গগুলো আপনাকে প্রচন্ড অস্বস্তিতে ফেলতে পারে। আসলে কাজের সময় যদি আপনি এমন পাকস্থলীর অসুস্থতায় ভুগেন তাহলে কাজে মনোনিবেশ করে ফলদায়ক কিছু করাটা সত্যি কঠিন। এমতাবস্থায় দুপুরের খাবারে আপনি মাংস এড়িয়ে সবজি সালাদ খাবেন।

* অত্যধিক বড় টুকরা গ্রহণ : প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষ প্রতিদিন ২৮ গ্রামের মতো মাংস (হাতের তালুর সমান পাতলা এক টুকরো) খেতে পারে। তবে অতিরিক্ত মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত মাংস খেলে আমাদের শরীরে অনেক ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। আর তাই মাংস খেতে হবে বুঝে-শুনে, মেপে-ঝেপে।

* দূর্বল চর্বণ : উদ্ভিজ্জ খাবারের চেয়ে মাংস সরল কণার বিশ্লিষ্ট করে পরিপাক করা পাকস্থলীর জন্য বেশি কঠিন। তাই মাংস খাওয়ার সময় তাড়াহুড়া করবেন না, আস্তে ধীরে চিবিয়ে খান। একটু সময় নিয়ে খাবার খান। গোগ্রাসে গেলা ঠিক না। পেটে বাতাস ঢুকবে না। মাংস কম চিবানো হলে পেট ভারী বোধ ও ব্যথার সৃষ্টি করে।

* খাদ্যজনিত রোগাক্রান্ত : আপনি যদি মাংস ঠিকমতো হজম করতে অক্ষম হন তবে আপনি প্রায়ই খাদ্যজনিত রোগে বিশেষ করে ই-কোলাই,  স্যালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা অন্ত্রে আক্রান্ত হবেন। মাংস সঠিকভাবে হজম করে ব্যর্থ হওয়ার কারণে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যাবে।

* উচ্চ রক্তচাপ : উচ্চ রক্তচাপ হচ্ছে মাংস খাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা যেটা হয়তো আপনি বুঝতেই পারেন না। কিন্তু উচ্চ রক্তচাপ হলো নিরব ঘাতক। এক্ষেত্রে সবজি খেয়ে রক্তচাপ কমানো যায়, কিন্তু একজন শাকাহারী মানুষকে অবশ্যই সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। উচ্চ রক্তচাপধারীদের মাংস খাওয়ার অভ্যস্ততা ধীরে ধীরে বাদ দিতে হবে।

* কোষ্ঠকাঠিন্য : জিনগতভাবে প্রতিটি মানুষের যেমন অনন্য পাচনতন্ত্র রয়েছে, তেমনি রয়েছে খাদ্যতালিকাগত অভ্যাস। কোষ্ঠকাঠিন্য ৮০% বেলায় খাবারের সমস্যাজনিত কারণেই হয়ে থাকে এবং ২০% বেলায় পরিপাক তন্ত্রের যেকোনো ধরনের ইনফেকশন, প্রদাহ, ওষুধ অথবা হজমজনিত কারণে হতে পারে। বিশেষকরে লাল মাংসের চর্বি ও আয়রন কোষ্ঠকাঠিন্য হবার প্রধান কারণ। কেননা খাদ্য তালিকার যেকোনো খাবারের চেয়ে চর্বি পরিপাক হতে বেশি সময় নেয়।

* চোখের নিচে কালো দাগ : শুধু নির্ঘুম কাটালেই চোখের নিচে কালো দাগ পরে না, মাংস ঠিকমতো পরিপাক না হবার প্রভাব স্পষ্টত আপনার সৌন্দর্যের ওপর পড়বে। আপনি যদি দেখেন মাংস খাওয়ার ঠিক পরের দিন আপনার চোখের নিচে কালো দাগ পড়েছে, তাহলে বুঝতে হবে এটা মাংস পরিপাকজনিত সমস্যার লক্ষণ।

* শরীর ও নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ : মাংস ঠিকমত পরিপাক না হবার কারণে আপনার শরীর ও নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ দেখা দিতে পারে। পাচনতন্ত্রে মাংস পরিপাকে সমস্যা হলে পাচক অ্যানজাইম দ্বারা দুর্গন্ধযুক্ত গ্যাস তৈরি হয়, যা আপনার শরীর ও নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ আনে।

* অবসাদ : মাংস খাওয়ার পর আপনার যদি কুঁড়ে এবং ক্লান্ত অনুভূত হয়, তাহলে ধরে নিন আপনি মাংস পরিপাকজনিত সমস্যায় ভুগছেন। মাংস পরিপাকে অতিরিক্ত শক্তি ব্যয়িত হবার কারণে আপনি এমনটি অনুভব করেন। কয়েকদিন যাবত যদি আপনার অন্ত্রে ইটের মতো বোঝা অনুভূত হয় তাহলে জানবেন আপনার মাংস পরিপাকে সমস্যা রয়েছে।

* পেশী কমে যাওয়া : আপনি মাংস পরিপাকজনিত সমস্যায় এক ধরনের বমিবমি ভাব, পেট ফাঁপা ও মোচড়ানো, অবসাদ এবং অস্বস্তিকর অনুভূতি হবার সঙ্গে সঙ্গে আরেকটি লক্ষণ দেখতে পাবেন। সেটা হলো আপনার পেশী কমে যাওয়া।

উল্লেখিত যেকোনো একটি উপসর্গও দেখা দিলে মাংসের বিকল্প উদ্ভিজ্জ আমিষে অভ্যস্ত হওয়াটা আপনার জন্য বুদ্ধিমানের কাজ হবে। মাংস ছেড়ে দেয়াটা আপনার কাছে ভীতিকর মনে হতে পারে। কিন্তু আপনার সুস্থ জীবনধারা যদি নষ্ট করতে না চান তবে আপনার জেনে নেয়া উচিত,  খাদ্যতালিকার কোনটি আপনার জন্য সঠিক খাদ্য এবং কোনটি আপনাকে শক্তি দেবার বদলে দুর্বল করে দিবে। তাই মাংস খাওয়ার সময় একটু সচেতনতা আপনাকে দিতে পারে স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা।

তথ্যসূত্র: ইনসাইডার, রাইজিংবিডি

20
মেডিসিননেট ডটকম অনুসারে, ‘রক্ত জমাটবদ্ধতার কারণে করোনারি আর্টারি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে হৃদপিণ্ডের পেশী ড্যামেজ হলে ও মারা গেলে হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে। করোনারি আর্টারি হচ্ছে রক্তনালী যা হৃদপিণ্ডকে রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ করে।’ এ প্রতিবেদনে হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কে ৯টি তথ্য উপস্থাপন করা হলো।

* কিভাবে বুঝব যে হার্ট অ্যাটাক হতে যাচ্ছে?
এক নম্বর নিয়ম হচ্ছে: নিজে নিজে ডায়াগনোসিস করবেন না। অ্যাম্বুলেন্স ডাকুন যদি সামান্যতম সন্দেহ হয় যে আপনার হার্ট অ্যাটাক হতে যাচ্ছে। বেশিরভাগ হার্ট অ্যাটাক জনিত মৃত্যু হয় হার্ট অ্যাটাকের প্রথম ঘণ্টার মধ্যে। জরুরী সেবা চাওয়ার পূর্বে কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা প্রাণঘাতী হতে পারে। যদি আপনার এখানে উল্লেখিত উপসর্গসমূহের যেকোনো একটি থাকে জরুরীভিত্তিতে মেডিক্যাল সেবা গ্রহণ করুন-

বুকে অস্বস্তি : অধিকাংশ হার্ট অ্যাটাক বুকের কেন্দ্রে ব্যথা হওয়ার সঙ্গে জড়িত, এ ব্যথা কয়েক মিনিটের বেশি থাকতে পারে অথবা চলে যাওয়ার পর আবার আসতে পারে। আপনি বুকে চাপ, নিষ্পেষণ, ভার অথবা ব্যথা অনুভব করতে পারেন।

শরীরের উপরিভাগে অস্বস্তি : এক বা উভয় বাহু, পিঠ, ঘাড়, চোয়াল অথবা পাকস্থলীতে ব্যথা হার্ট অ্যাটাকের ইঙ্গিত দিতে পারে।

শ্বাসকার্যে সমস্যা : হার্ট অ্যাটাকের অন্যতম একটি উপসর্গ হচ্ছে শ্বাসকষ্ট। এ উপসর্গটি বুক ব্যথার সঙ্গে অথবা বুক ব্যথা ছাড়া দেখা দিতে পারে।

অন্যান্য সতর্ক সংকেত : শরীরে এমন উপসর্গ হয় কিনা লক্ষ্য রাখুন যা স্বাভাবিকভাবে অনুভব করেন না, যেমন- ঠান্ডা ঘাম, বমিবমি ভাব, মাথাঘোরা, অত্যধিক অবসাদ অথবা খারাপ কিছু ঘটতে যাচ্ছে এমন অনুভূতি।

* বুকে হাতি বসে আছে এমন অনুভূতি সম্পর্কে যা শুনেছি তা কি সত্য?
হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে হৃদপিণ্ডের পেশীর দিকে রক্ত সরবরাহ বিঘ্নিত হয় এবং হৃদপিণ্ডের পেশী মারা যেতে শুরু করে, যে কারণে বুক ব্যথা হতে পারে- কিন্তু কখনো কখনো বুক ব্যথা হয় না, বিশেষ করে নারীদের। অধিকাংশ হার্ট অ্যাটাক হালকা ব্যথা বা অস্বস্তি নিয়ে ধীরে ধীরে তৈরি হয়।

* উপসর্গ ছাড়াও কি আমার হার্ট অ্যাটাক হতে পারে?
হ্যাঁ, হতে পারে। এটি যে কারো ক্ষেত্রে হতে পারে, তবে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে বেশি হতে পারে- যাকে বলে নীরব হার্ট অ্যাটাক। আপনি প্রত্যাশিত উপসর্গের সম্মুখীন নাও হতে পারেন, যেমন- বুক ব্যথা। কিন্তু বমিবমি ভাব, শ্বাসকষ্ট ও মাথা ঘোরা বা দুর্বলতা অনুভব করতে পারেন।

* এমন কোনো সময় আছে যখন হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে?
যেকোনো মুহূর্তে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি সকালের প্রথম দিকের ঘণ্টাগুলোতে হয়ে থাকে। সকাল ৬টা থেকে মধ্যাহ্নের মধ্যে ৪০ শতাংশ হার্ট অ্যাটাক অধিক কমন। অনুরূপভাবে, সকালে হৃদরোগ সম্পর্কিত হঠাৎ মৃত্যু ২৯ শতাংশ বেশি কমন।

* হার্ট অ্যাটাক হতে যাচ্ছে এমন সময় কি করা উচিত?
যদি আপনি মনে করেন যে আপনার হার্ট অ্যাটাক হতে যাচ্ছে, তাহলে অবিলম্বে অ্যাম্বুলেন্স ডাকুন এবং শান্ত থাকুন। তারপর শান্তভাবে বসুন বা শয়ন করুন এবং অ্যাসপিরিন ৩০০ এমজি ট্যাবলেট ধীরে ধীরে চিবান- অ্যাসপিরিন হার্ট ড্যামেজ হ্রাসে সাহায্য করে অথবা রক্ত জমাটবদ্ধতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী প্লেটলেটের আঠালো অবস্থা কমিয়ে মারাত্মক রক্ত জমাটবদ্ধতার বিকাশ হ্রাসে সহায়তা করে।নিশ্চিত হোন যে দরজা খোলা আছে যাতে ইমার্জেন্সি রেসপন্ডাররা আপনার ঘরে প্রবেশ করতে পারে। কোনোকিছু খাবেন না বা পান করবেন না। আপনার সঙ্গে আসার জন্য কোনো আত্মীয়, প্রতিবেশী বা বন্ধুকে কল করুন।

* হাসপাতালে যাওয়ার পর আমি কি আশা করতে পারি?
প্রথমত আপনাকে কার্ডিয়াক মনিটরের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে এবং ইন্ট্রাভেনাস ড্রিপ প্রদান করা হবে। হৃদপিণ্ডের ইলেক্ট্রিক্যাল ইমপালস ও কোনো অনিয়মিত ছন্দ বা হার্ট অ্যাটাক নির্দেশ করতে পারে এমন অন্য কোনো অস্বাভাবিকতা পরিমাপ করতে ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (ইসিজি) টেস্ট সম্পাদনের সময় আপনাকে অক্সিজেন ও ব্যথার ওষুধ দেওয়া হবে। হৃদপিণ্ডের পেশী ড্যামেজ হয়েছে কিনা জানতে ডাক্তাররা আপনার ব্লাড স্যাম্পল নিতে পারে এবং কোনো সাসপেক্টেড হার্ট অ্যাটাকের পর ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত এটি পুনরায় নিতে পারেন। এ রক্ত পরীক্ষায় ট্রোপনিন নামে এনজাইমের মাত্রা পরিমাপ করা হয় যা হৃদপিণ্ডের পেশী ড্যামেজ হলে বা মারা গেলে রক্তপ্রবাহে রিলিজ হয়। আপনার দশা অথবা অ্যাটাকের তীব্রতার ওপর ভিত্তি করে সর্বোত্তম চিকিৎসা না দেওয়া পর্যন্ত ডাক্তাররা আপনাকে হাসপাতালে রাখতে পারেন।

* আমার কি সার্জারি প্রয়োজন হবে?
যদি আপনি দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছেন, ডাক্তাররা করোনারি অ্যানজিওপ্লাস্টি নামক পদ্ধতির মাধ্যমে আপনার করোনারি আর্টারি খোলার চেষ্টা করতে পারে। আপনার কুঁচকি থেকে করোনারি আর্টারি পর্যন্ত একটি সরু টিউব প্রবেশ করানো হবে যার আগায় থাকবে একটি বেলুন এবং অল্প পরিমাণে ডাই বা রঞ্জক পদার্থ ইনজেক্ট করা হবে যাতে এক্স-রে ভিডিওতে ব্লকেজের অংশটা দেখা যায়। আর্টারি প্রশস্ত করতে বেলুন ফোলানো হয় এবং যখন টিউব অপসারণ করা হয় তখন সাধারণত স্টেন্ট নামক একটি ছোট ধাতব কয়েল বা রিং আর্টারি খোলা রাখতে রেখে দেওয়া হয় যা ভবিষ্যতে ব্লকেজ হওয়া প্রতিরোধ করে। কিছু স্টেন্ট আর্টারি পরিষ্কার রাখতে ওষুধ রিলিজ করে।

* হার্ট অ্যাটাকের পর আমি কি ব্যায়াম করতে পারব?
প্রকৃতপক্ষে, ব্যায়াম আপনার দ্বিতীয়বার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করে কিন্তু আপনার নিরাপদ ব্যায়াম রুটিন তৈরি করতে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন। তারা আপনাকে কার্ডিওভাস্কুলার ব্যায়াম যেমন- ওয়াকিং, জগিং, সাইক্লিং বা সুইমিং সাজেস্ট করতে পারেন যা আপনার হৃদপিণ্ডের পেশী শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে। আপনার ডাক্তার বিপদ কেটে যাওয়ার সংকেত না দেওয়া পর্যন্ত ট্রেনিং শুরু করবেন না।

* হার্ট অ্যাটাকের পর আমি কি সেক্স করতে পারব?
আপনার ডাক্তার পরিমিত ব্যায়ামের জন্য সবুজ সংকেত দিলে আপনি যৌনসহবাসও করতে পারবেন। অধিকাংশ লোক হার্ট অ্যাটাকের দুই বা তিন সপ্তাহের মধ্যে যৌনসহবাস শুরু করতে সমর্থ হয়, কিন্তু সবসময় প্রথমে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন এবং কোনো বুক ব্যথা অথবা হার্ট প্যালপিটেশন বা বুক ধড়ফড় করলে তাকে বলুন।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট, রাইজিংবিডি

21
প্রায় সবারই পছন্দের খাবার হলো ডিম। পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ডিম খেতে ভালোবাসেন না এমন মানুষ খুব কমই আছে। রান্নার আইটেমে কিংবা সকালের নাস্তায় ডিমের উপস্থিতি থাকেই।

 

সকাল বেলা একটি সেদ্ধ ডিম খেলে সারাদিন শরীরে শক্তি পাওয়া যায়। সেদ্ধ ডিমে আছে ভিটামিন, প্রোটিন ও শরীরের জন্য উপকারী চর্বি উপাদান।
 

সেদ্ধ ডিমের ক্ষেত্রে অনেকেরই পছন্দ হাফ বয়েল ডিম। কিন্তু ডিম হাফ বয়েল করতে গিয়ে অনেকেই তা ঠিকভাবে করতে পারেন না। ফলে দেখা যায়, হাফ বয়েলের পরিবর্তে তা হয়ে যায় হার্ড বয়েল অর্থাৎ কুসুম শক্ত হয়ে যায়। হাফ বয়েল ডিমের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হতে হয়।

 

সুতরাং জেনে নিন, ডিম সঠিকভাবে হাফ বয়েলের পদ্ধতিটি।

 

* প্রথমে একটি পাত্রে পানি নিন। (পানির পরিমানটা হবে ডিম পানিতে ডুবে থাকতে পারে এই পরিমান অর্থাৎ ডিমের কোনো অংশ পানির ওপরে যেন না থাকে)।

 

* পানির পাত্রটি চুলায় বসান। চুলার জ্বাল বাড়িয়ে পানি ফুটন্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। পাত্রটি ঢাকনা চাপা দিতে পারেন, তাহলে পানি তাড়াতাড়ি ফুটবে।

 

* পানি ফুটে উঠলে ফুটন্ত পানিতে এক বা একাধিক ডিম দিন। (ডিম যদি ফ্রিজে রাখা থাকে তবে আগে তা বাইরে বের করে রাখুন। ফ্রিজ থেকে সরাসরি ডিম ফুটন্ত পানিতে দিলে ফেটে যাবে)।

 

* ঘড়ি ধরে ৭ মিনিট ফুটতে দিন। ঠিক ৭ মিনিট পর ডিমের পাত্রটি চুলা থেকে তুলে দ্রুত ফুটন্ত পানি ফেলে দিয়ে এতে কলের স্বাভাবিক ঠান্ডা পানি ঢেলে দিন। এক্ষেত্রে দেরি করবেন না। ঠান্ডা পানিতে ভর্তি ডিমের পাত্রটি ১ মিনিট রেখে দিন, এতে ডিম ঠান্ডা হয়ে যাবে।

 

* ১ মিনিট পর পাত্র থেকে ডিম তুলে সাবধানে খোসা ছাড়ান। এবার ছুরি দিয়ে ডিমটা দুই টুকরো করে দেখুন, বাইরের সাদা অংশটা সিদ্ধ হলেও ভেতরের কুসুম রয়েছে অবিকৃত। অর্থাৎ পারফেক্ট হাফ বয়েল ডিম।

22
খাবার হিসেবে ডিমের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। নির্ভরযোগ্য খাদ্যসঙ্গী হিসেবে ডিম সমসময় আমাদের পাশেই থাকে। শুধুমাত্র দামে সস্তা বলে নয়, বরঞ্চ সহজ খাবার ও সুস্বাদু হওয়ার কারণেও।

বিশেষ করে সকালের নাস্তা এবং সেরা জলখাবার হিসেবে প্রায় প্রত্যেকেরই পছন্দ ডিম। কিন্তু ডিমে থাকা সম্পূর্ণ পুষ্টিগুণ পাওয়ার উপায় জানা আছে কি?

খাবার বিষয়ক ওয়েবসাইট ‘স্পুন ইউনিভার্সিটি’তে প্রকাশিত লেখায় যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনার ওয়ার ফরেস্ট ইউনির্ভাসিটির শিক্ষার্থী ফ্রান্সেসকা জেন্টেল জানিয়েছেন, পাঁচ উপায়ে ডিম খেলে ডিমের পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণভাবে পাওয়া যায়।

তিনি পুষ্টিমান অনুসারে র‌্যাংকিং করেছেন ডিম খাওয়ার পাঁচটি সাধারণ উপায়।

কাঁচা



তাপ দিয়ে ডিম করলে কুসুমে থাকা পুষ্টির উপাদান কমতে পারে, তাই আপনি যদি হজমে সক্ষম হয়ে থাকেন তাহলে ডিম কাঁচা খান। এটা আপনাকে আরো বেশি শক্তিশালী করবে। তবে কাঁচা ডিম খাওয়ার ক্ষেত্রে সালমোনেলা ব্যাকটেরিয়া সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে। সালমোনেলাযুক্ত ডিম খেলে সংক্রমণে হঠাৎ বমি, পেটের পীড়া থেকে শুরু করে টাইফয়েড পর্যন্ত হতে পারে। সালমোনেলা খাদ্যে বিষক্রিয়া ঘটায়। মুরগি ডিম প্রসবের পর তা কোনো নোংরা স্থানে, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠার মধ্যে পড়ে থাকলে সালমোনেলা নামক ব্যাকটেরিয়া ডিমের মধ্যে ঢুকে পড়ার সুযোগ পায়। তবে সব ডিমে সালমোনেলা থাকে না। শুধুমাত্র অপরিষ্কার স্থানে পড়ে থাকা ডিমেই এই জীবাণু থাকতে পারে।

পোচ



 

ভাজা বা বেকিং এর তুলনায় ডিম পোচ কম চর্বি এবং কম ক্যালোরি সুবিধার। কারণ ডিম পোচে কম তাপ ও কম তেল যোগ করতে হয়। স্বাস্থ্যকর ও দ্বিতীয় সেরা পুষ্টিমান পেতে এভাবে ডিম খেতে পারেন।

সেদ্ধ



 

খাবার হিসেবে প্রস্তুতির ক্ষেত্রে ডিম সেদ্ধ করাটা শুধু যে সবচেয়ে দ্রুততর এবং সহজ উপায় তা নয়, পাশাপাশি এটি অন্যতম স্বাস্থসম্মত একটি উপায়। ডিম সেদ্ধ করার ক্ষেত্রে কুসুম কাঁচা রাখুন, তাহলে পুষ্টিগুণ বজায় থাকবে।

স্ক্রামবলড




নিজের কিছু ক্যালোরি সংরক্ষণ করতে দুধের পরিবর্তে পানি ব্যবহার করুন। এ উপায়ে সেদ্ধ ডিমের মতো একই পরিমাণ চর্বি, কোলেস্টেরল এবং ক্যালোরি বজায় থাকে। আপনি যদি আরো ক্যালোরি কমাতে চান তাহলে কুসুম বাদ দিয়ে শুধু ডিমের সাদা অংশ ব্যবহার করুন।

ভাজা



ডিম ভাজায় অনেক বেশি তাপের প্রয়োজন হয়, যা ডিমের রাসায়নিক রচন প্রভাবিত করে পুষ্টিগুণ কমায়। পুষ্টিগুণ পেতে নন-স্টিক প্যানে ডিম ভাজুন অথবা শরীরে স্বাস্থ্যকর চর্বি যোগ করতে নারকেল তেল দিয়ে ভাজুন।

ডিমের স্বাদ উপভোগ করার পাশাপাশি যদি অনাবশ্যক ক্যালোরি থেকে দূরে থাকতে চান, তাহলে ডিম খাওয়ার এসব উপায় রুটিন হিসেবে ফলো করতে পারেন।

তথ্যসূত্র : বিজনেস ইনসাইডার, রাইজিংবিডি

23
আপনার কি মনে আছে একটা সময় লো-ফ্যাট খাবারকে স্বাস্থ্যকর মনে করা হতো? হয়তোবা মনে নেই। আগে সবধরনের ফ্যাটজাতীয় খাবার পরিহার করার চেষ্টা করা হতো।

আপনি যদি মনে করার চেষ্টা করেন তাহলে দেখবেন ডিমকে বলা হতো ‘অভিশপ্ত খাবার’। ডিম=কোলেস্টরল, যার মানে হল আপনার হার্টের জন্য দুঃসংবাদ। ঠিক কি না?

আমাদের অনেকের কাছে ডিম অপরপ্রান্তে বসে থাকা মেয়েটির মতোই আকর্ষণীয় এবং আমরা জানি যে সঠিক খাবার (ডিম সহ) আমাদের সুস্বাস্থ্যের জন্য কতটা প্রয়োজনীয়।

কিন্তু ডিমের মতো উচ্চ কোলেস্টেরল খাবার কি আমাদের বর্জন করা উচিত? সেটি আমাদের জানা দরকার।

ডিম : সুপারফুড নাকি বর্জনীয় খাদ্য

 

চলুন তবে দেরী না করে এক্ষুনি জেনে নেই। ডিম কি আপনার জন্য ভালো না মন্দ?- প্রশ্নটি অনেকটা এটি সাদা না কালো এর মতো।

১৯৭০ এর দশকের পর থেকে বিজ্ঞানীরা কোলেস্টেরল ও হৃদরোগের পিছনের কারণগুলো অনুসন্ধান করতে থাকলেন। তারা লক্ষ্য করলেন যাদের হৃদরোগ রয়েছে তাদের উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল হবার ঝুঁকি রয়েছে। তাই ভয়ে সকলেই কম কোলেস্টেরল সম্পন্ন খাবার যেমন: ভেজিটেবল তেল, মারজারিন (নকল মাখন) এর দিকে ঝুঁকতে থাকলেন।

যা হোক, সেটি ছিল ভুল চিন্তা। আসলে গবেষকরা পরবর্তীতে আরো গবেষণার পর জানতে পারলেন যে কোলেস্টেরল এর সঙ্গে হৃদরোগের কোনো সম্পর্ক নেই। দেহ নিজেই কোলেস্টেরল তৈরি করতে পারে। তাই সত্য হচ্ছে, যাদের হৃদরোগ রয়েছে তাদের উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল হবার ঝুঁকিটা লক্ষণ হতে পারে। সত্যি বলতে কি, কোলেস্টেরল একদিনের কোনো অসুখ নয় বরং দীর্ঘদিনের অবহেলার ফলাফল।

ড. ব্রুস গ্রিফিন, এনপিআরকে বলেন, প্রকৃতপক্ষে নতুন গবেষণায় দেখা গেছে ‘ডায়েটারি কোলেস্টেরল (খাদ্যতালিকাগত কোলেস্টেরল)’- কোলেস্টেরল আপনার আহার অভ্যাস থেকেই সৃষ্ট। এখন সবাই সাধারণ ঐক্যমতে এসেছেন যে, ডায়েটারি কোলেস্টেরল প্রাথমিকভাবে সামুদ্রিক চিংড়ি থেকে ডিমে অনেক কম।

তাছাড়া যখন হৃদরোগ দেখা যায় তখন কোলেস্টেরল ছাড়াও অন্যান্য বিপজ্জনক প্রতিদ্বন্দ্বী রোগ দেখা যায়। অতিরিক্ত চিনি, ফ্যাট, স্যাচুরেটেড ফ্যাট, কোলেস্টেরল এর মাত্রা ভয়ংকরভাবে বাড়িয়ে দেয় বলে জানিয়েছে এনআরপি।

কিন্তু দাবীকৃত অন্যান্য খাবারের চিত্তাকর্ষক খাবারের তুলনায় ডিম কি একটি ‘সুপারফুড’? এনআরপি এর ভাষ্যমতে এখানে কোনো বাস্তব সাক্ষ্যপ্রমাণ নেই। প্রায় ৩০ শতাংশ লোক ডিমকে ‘ডায়েটারি কোলেস্টেরল’ এর জন্য ‘অতি প্রতিক্রিয়াশীল’ মনে করে। এর মানে অন্যান্যদের তুলনায় তারা এলডিএল (খারাপ কোলেস্টেরল) বৃদ্ধির পক্ষে।

কতগুলো ডিম আপনার খাওয়া উচিত?

এখন প্রশ্ন আসে যে, এক সপ্তাহে আপনার কতগুলো ডিম খাওয়া যায়? খাদ্য বিশেষজ্ঞ এবং ‘দ্য স্মল চেঞ্জ ডায়েট’ এর লেখক কেরি গান্স এর মতানুসারে, ‘এটি নির্ভর করে আপনার প্রাত্যহিক আহার অভ্যাস এর ওপর। যদি আপনি প্রতিদিন প্রচুর প্রোটিন ও চর্বি গ্রহণ করে থাকেন তাহলে ডিম সম্ভবত আপনার জন্য ভালো নাও হতে পারে। কিন্তু আপনি যদি ভারসাম্যপূর্ণ আহার যেমন: কম চর্বির সবজি, শস্যদানা, চর্বিহীন মাংস গ্রহণ করেন তাহলে দিনে ১-২টি এবং সপ্তাহে ১২টি পর্যন্ত ডিম আপনি অনায়াসেই খেতে পারেন। সম্ভবত এটিই আপনার জন্য নিরাপদ।

গান্স ‘ওমেন্স হেলথ’ এ ব্যাখ্যা করেন যে, ‘একজন ব্যক্তির লক্ষ্য করা উচিত তার খাদ্য তালিকায় কি পরিমান স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে।’ দিনে দুইটা ডিম খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত তবে আপনি যদি ডিমটি চিজ এর সঙ্গে খেতে পছন্দ করেন তাহলে আপনি আপনার চর্বির পরিমান বাড়িয়ে ফেলবেন এবং এতে থাকে প্রচুর ক্যালরি।

তাই, ডিম খেতে হবে স্বাস্থ্যসম্মতভাবে। চিজ, বেকন, সসেজ ইত্যাদি অন্যান্য দিনের জন্যই বরং বরাদ্দ রাখুন। ডিমময় দিন- কি বলেন?

তথ্যসূত্র : বিজনেস ইনসাইডার, রাইজিংবিডি ডট কম

24
ডিম একটি বহুল ব্যবহৃত খাবার। স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা ভেবে অনেকে নিয়মিত ডিম খান, আবার কেউ কেউ স্বাস্থ্য আরো খারাপ হতে পারে ভেবে ডিম থেকে দূরে থাকেন। ডিমের যেমন রয়েছে পুষ্টিগুণ, তেমনি ডিম সম্পর্কে বেশ ভ্রান্ত ধারণাও রয়েছে। এখানে ডিম সম্পর্কে ১০টি ভুল ধারণা আলোচনা করা হলো।

* ভুল ধারণা: উচ্চ কোলেস্টেরলের লোকদের ডিম খাওয়া উচিৎ নয়

সত্য : বছরের পর বছর ধরে ডাক্তাররা বলে এসেছে যে, হৃদরোগের উচ্চ ঝুঁকি আছে এমন লোকদের উচ্চ-কোলস্টেরলের খাবার এড়িয়ে চলা উচিৎ। একারণে ২১১ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল (দৈনিক সুপারিশকৃত পরিমাণের ৭০ শতাংশ) থাকার কারণে ডিমকে ‘যেসব খাবার খাব না’র তালিকায় রাখা হতো। কিন্তু এখন, বিজ্ঞান পরিবর্তন হচ্ছে। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে যে, ডিমের মতো উচ্চ কোলেস্টেরলের খাবার প্রকৃতপক্ষে কোলেস্টেরলের রক্ত মাত্রাকে তেমন একটা প্রভাবিত করে না। আমাদের ব্লাড সিরাম কোলেস্টেরলকে প্রভাবিত করে এমন যা খাই তা হচ্ছে- স্যাচুরেটেড ফ্যাট, ট্রান্স ফ্যাট এবং সিম্পল সুগার, বলেন এমএনসি নিউট্রিশনের স্বত্ত্বাধিকারী এবং ডায়েটিশিয়ান মারজোরি নোলান কোন। প্রতি সপ্তাহে চার থেকে পাঁচটি ডিম খাওয়া হৃদরোগের ঝুঁকি আছে এমন যে কারো জন্য নিরাপদ, তিনি বলেন।

* ভুল ধারণা: পুরো ডিমের চেয়ে ডিমের সাদা অংশ স্বাস্থ্যকর
সত্য : আপনি হয়তো এতদিন ধরে ভেবে এসেছেন যে, ডিমের সাদা অংশ পুরো ডিমের তুলনায় স্বাস্থ্যকর। অবশ্য এর পেছনে কারণ হচ্ছে, ডিমের সাদা অংশে শুধু ১৭ ক্যালরি থাকে, যেখানে পুরো ডিমে ৭২ ক্যালরি রয়েছে- এছাড়া ডিমের সাদা অংশে কোনো ফ্যাট থাকে না। কিন্তু এ গল্পে আরো কিছু রয়েছে, বলেন পেটি অ্যান্ড গেরি’স অর্গানিক এগসের মুখপাত্র এবং ডায়েটিশিয়ান কেরি গ্লাসম্যান। তিনি যোগ করেন, ‘ডিমের কুসুমের ফ্যাট প্রকৃতপক্ষে ব্যালেন্সড ব্রেকফাস্টের জন্য ভালো। ফ্যাট আপনাকে খুব বেশি তৃপ্ত করে তোলে। যদি আপনি ডিমের কুসুম না খান, তাহলে অতৃপ্ত হতে পারেন। এছাড়া ডিমের সাদা অংশে প্রোটিন ছাড়া তেমন কোনো পুষ্টি নেই, কিন্তু ডিমের কুসুমে ভিটামিন বি১২, ভিটামিন ডি (যা খাবার উৎসে পাওয়া কঠিন) এবং কোলাইনের মতো পুষ্টি থাকে।’

* ভুল ধারণা : ডিমের সাদা অংশে প্রচুর প্রোটিন রয়েছে
সত্য : উচ্চ-প্রোটিন ও নিম্ন-ক্যালরির জন্য ডিমের সাদা অংশ পরিচিত। তাই যদি আপনি প্রোটিন পাওয়ার জন্য ডিমের কুসুম বাদ দিয়ে ডিম খান, তাহলে কিছু হারাবেন। মারজোরি বলেন, ‘ডিমের সাদা অংশে ১৭ ক্যালরি থাকে। তাই ২০ ক্যালরির কেনোকিছুতে আপনি কতটুকু প্রোটিন ও কত প্রকার অ্যামিনো অ্যাসিড পাবেন?’ ডিমের কুসুমসহ ডিম খান- তাহলে আপনি শুধু তৃপ্তিদায়ক ফ্যাট ও স্বাস্থ্যবর্ধক পুষ্টিই পাবেন না, আপনার ব্রেকফাস্টে প্রোটিন কনটেন্টও দ্বিগুণ হবে। ডিমের সাদা অংশে তিন গ্রাম প্রোটিন থাকে, যেখানে পুরো ডিমে থাকে ছয় গ্রাম।

* ভুল ধারণা: সাদা রঙের ডিমের চেয়ে বাদামী রঙের ডিম স্বাস্থ্যকর
সত্য : সাদা চালের চেয়ে বাদামী চাল ভালো, সাদা রুটির চেয়ে গমের রুটি ভালো, কিন্তু সাদা ডিমের চেয়ে বাদামী ডিম ভালো নয়। মারজোরি বলেন, ‘আমি কখনো ডিমের খোসার রঙ দেখে ডিমের পুষ্টিগুণ যাচাই করতে পরামর্শ দিই না।’ বিভিন্ন রঙের ডিমের সঙ্গে পুষ্টিগুণের সম্পর্ক নেই, কিন্তু জিনের রয়েছে- সাদা মুরগি সাধারণত সাদা ডিম পাড়ে, যেখানে লাল বা বাদামী মুরগি পাড়ে বাদামী ডিম, নিউ ইয়র্ক টাইমসকে বলেন কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণী বিজ্ঞান বিভাগের ভিজিটিং ফেলো ট্রো বুই। বাদামী ডিমের দাম বেশি হওয়ার কারণ এই নয় যে তারা সাদা ডিমের তুলনায় স্বাস্থ্যকর, বরং বড় মুরগির ডিম বলে তাদের দাম বেশি- এসব মুরগির পালন খরচ বেশি।

* ভুল ধারণা: ব্যস্ত সকালের জন্য ডিম উপযুক্ত নয়
সত্য : অনেকে মনে করেন যে, সকালে ব্যস্ততায় ব্রেকফাস্টের আইটেম হিসেবে ডিম উপযুক্ত নয়। কিন্তু ডিম হচ্ছে এমন কিছু যা সকালের রুটিনে সম্পূর্ণরূপে ফিট হয়ে যায়। তাই সকালে ব্রেকফাস্ট হিসেবে অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অজুহাত ধোপে টিকবে না। গ্লাসম্যান বলেন, ‘খাওয়ার জন্য ডিম প্রস্তুত করা খুব সহজ। আপনি শুধু ডিমটি ফাটবেন। আমি কফি খেতে খেতে তা করি।’ আরো সহজ অপশনের জন্য ছুটির দিনে ডিমের কেক বানাতে পারেন অথবা অনেকগুলো ডিম সিদ্ধ করে রাখতে পারেন, যার ফলে সারা সপ্তাহ ধরে আপনি রেডিমেড ডিম খেতে পারবেন। আপনি মাইক্রোওয়েভে স্ক্র্যাম্বলড এগসও তৈরি করতে পারেন অথবা সিদ্ধ ডিম কিনে রাখতে পারেন।

* ভুল ধারণা: যেসব মুরগি খাঁচামুক্ত ডিম পাড়ে তারা খোলা পরিবেশে থাকে
সত্য : আপনি হয়তো ভাবছেন যে, কেজ-ফ্রি বা খাঁচামুক্ত মুরগি অবশ্যই কোনো খাঁচায় সীমাবদ্ধ থাকবে না- কিন্তু খাঁচামুক্ত লেবেলের মানে আপনি যেমনটা ভাবছেন তেমনটা নাও হতে পারে। গ্লাসম্যান বলেন, ‘খাঁচামুক্ত লেবেলের মানে হচ্ছে কোনো খাঁচার বাইরে তাদের কিছু বিচরণ অধিকার রয়েছে, কিন্তু এতই ছোট স্পেস যে তা উল্লেখ করার মতো নয়।’ তিনি এর পরিবর্তে অর্গানিক, ফ্রি-রেঞ্জের ডিম খুঁজতে সুপারিশ করছেন। ফ্রি-রেঞ্জের মুরগিরা শুধুমাত্র খাঁচার বাইরেই থাকে না, তাদের ফার্মের সবখানে বিচরণ করার স্বাধীনতাও রয়েছে।

* ভুল ধারণা: প্রাকৃতিক হিসেবে হরমোনমুক্ত ডিম বেশি ভালো
সত্য : এমন নয় যে আপনি হরমোনমুক্ত ডিম এড়িয়ে চলবেন, কিন্তু আপনাকে বুঝতে হবে এ লেবেলটি মার্কেটিং কৌশলের একটি অংশ। গ্লাসম্যান বলেন, ‘লেবেল হরমোনমুক্ত বলুক কিংবা না বলুক, সকল ডিমে হরমোন থাকে না।’ সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক-মুক্ত হওয়া, কারণ কিছু মুরগিকে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়।

* ভুল ধারণা: ফ্রিজে ডিমের তাকেই ডিম রাখা উচিৎ
সত্য : ফ্রিজের দরজায় ডিমের তাকে ডিম রাখলে তাড়াতাড়ি ডিম নেওয়া যায়, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ডিম রাখার জন্য ফ্রিজের দরজা আদর্শ জায়গা নয়। মারজোরি বলেন, ‘যেহেতু ফ্রিজের দরজা বারবার খোলা ও বন্ধ করা হয়, তাই তাপমাত্রার প্রচুর পরিবর্তন হয়।’ এটি ডিমের জন্য ভালো নয়। ফ্রিজের ভেতর পেছনে ডিম রাখলে তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধি থেকে ডিমকে রক্ষা করা যাবে, তাই আপনার ডিম দীর্ঘসময় সতেজ থাকবে, তিনি বলেন।

* ভুল ধারণা : মেয়াদের তারিখে দেখে ডিম ব্যবহার করা বা ফেলে দেওয়া উচিৎ
সত্য : বিক্রেতার উল্লেখিত তারিখের পরও আপনার ডিম ভালো থাকবে- যদি আপনার ডিম না ফাটে ও ফ্রিজের মধ্যে থাকে, তাহলে চার থেকে ছয় সপ্তাহ পরও তারা স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করবে না। যদি আপনার মনে সন্দেহ জাগে, তাহলে ডিমের গুণ টেস্ট করতে এক গ্লাস পানিতে ডিম রাখুন- যদি ডিমটি ডুবে তলায় চলে যায়, তাহলে এটি এখনো ভালো আছে, কিন্তু ডিম নষ্ট হয়ে গেলে ভেসে থাকবে।

* ভুল ধারণা: মুরগির ডিম হিমায়িত করা যায় না
সত্য : যদি আপনার ডিম মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখের কাছাকাছি চলে আসে এবং আপনার এসব ডিম শিগগির খাওয়ার প্রয়োজন না পড়ে, তাহলে এসব ডিম ফেলে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। এসব ডিমের লাইফটাইম বাড়ানোর একটি উপায় রয়েছে: ডিমকে ফেটে আইস কিউব ট্রে অথবা অন্যকোনো ফ্রিজার-সেইফ কন্টেইনারে রাখুন। যখন রান্না করবেন, ডিমকে ডিফ্রস্ট বা বরফমুক্ত করুন। মারজোরি বলেন, ‘যদি আপনি সতর্ক থাকেন তাহলে এক্ষেত্রে কোনো স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই।’ যদিও তিনি নিজের জন্য এ পদ্ধতি অনুসরণ করেন না।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট, রাইজিংবিডি

25
প্রাণঘাতী রোগ প্রতিরোধ করতে চাইলে বেশি করে ফাইবার বা আঁশ সমৃদ্ধ খাবার খান- এটি হচ্ছে পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ। সম্প্রতি আঁশের ওপর গবেষণার একটি বড় রিভিউ ল্যানসেটে প্রকাশিত হয় এবং তা থেকে জানা যায় যে আঁশ কতটা উপকারী। এই পুষ্টিটি আসলেই অন্তত চারটি রোগের ঝুঁকি কমায়- যাদের কয়েকটির সঙ্গে অন্ত্রের সরাসরি সম্পর্ক নেই।

যারা আঁশযুক্ত খাবার কম খেয়েছিল তাদের তুলনায় যারা আঁশযুক্ত খাবার বেশি খেয়েছিল তাদের হৃদরোগ, স্ট্রোক, টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যায় এবং তাদের যেকোনো রোগে অকালে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ১৫% থেকে ৩০% হ্রাস পায়। লোকজন আঁশযুক্ত খাবার যত বেশি খাবে, তাদের ঝুঁকি তত বেশি কমে যাবে। প্রতি ৮ গ্রাম অতিরিক্ত আঁশ খাওয়ার জন্য হৃদরোগ, টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি ৫% থেকে ২৭% হ্রাস পায়।

এই রিভিউয়ের উপাত্ত অনুসারে, প্রতিদিন ফল ও শাকসবজি থেকে (সাপ্লিমেন্ট অথবা পাউডার থেকে নয়) ২৫-২৯ গ্রাম আঁশ ভোজনে এসব রোগের ঝুঁকি উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হ্রাস পেয়েছিল এবং যারা আরো বেশি আঁশ খেয়েছিল তাদের ঝুঁকি আরো বেশি কমে যায়। যারা হোল গ্রেন (গোটা শস্য) খেয়েছিল তাদের মধ্যেও একই উপকারিতা দেখেন গবেষকরা।

নিউজিল্যান্ডে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব ওটাগোর প্রধান গবেষণা লেখক অ্যান্ড্রু রেনল্ডস বলেন, ‘আমাদের গবেষণা নির্দেশ করছে যে, লোকজনের প্রতিদিন খাবার থেকে ২৫-২৯ গ্রাম আঁশ খাওয়া উচিৎ। বর্তমানে অধিকাংশ লোক প্রতিদিন ২০ গ্রামের কম আঁশ খায়। তাই উচ্চ আঁশ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার জন্য সচেতনতা বাড়ালে এই টার্গেট পূরণ হতে পারে।’

২৪৩টি গবেষণা বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই ফলাফল পাওয়া গেছে। লোকজনকে তাদের ডায়েট সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয় এবং স্বাস্থ্য বিষয় রেকর্ড করার জন্য তাদেরকে কিছু বছর অনুসরণ করা হয়; ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও চালানো হয়, যেখানে লোকজন গবেষণার ভলান্টিয়ার হন ও তাদের ডায়েট পরিবর্তন করেন অথবা কন্ট্রোল গ্রুপের অংশ হন। গবেষকরা বিভিন্ন কার্বোহাইড্রেটের (যেমন- ফল, শাকসবজি ও গোটা শস্যের চিনি ও আঁশ) নির্দিষ্ট প্রতিক্রিয়া সম্পর্ক জানতে চেয়েছিলেন- তাই তারা সেসব গবেষণা বিশ্লেষণ করেন যেখানে লোকজন কি খেয়েছিল এবং স্বাস্থ্য ফলাফল কি ছিল তা লিপিবদ্ধ ছিল। গবেষকরা সেসব গবেষণাও দেখেন যেখানে স্বাস্থ্য পরিমাপক ছিল, যেমন- শারীরিক ওজন, রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, রক্ত শর্করা ও প্রদাহ।

আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার উপকারিতা কোনো অপ্রত্যাশিত বিষয় নয় এবং এই রিভিউটি পুষ্টি বিশেষজ্ঞদের নির্ণয় করতে সাহায্য করবে যে, সর্বোচ্চ উপকারিতা পেতে একজন লোকের দিনে কতটুকু আঁশ খাওয়া প্রয়োজন। ডায়েটারি গাইডলাইন্স ফর আমেরিকানস প্রতিদিন নারীদের ২৫ গ্রাম এবং পুরুষদের ৩৮ গ্রাম আঁশ খেতে পরামর্শ দিচ্ছে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের পরামর্শ হচ্ছে, প্রাপ্তবয়স্কদের খাদ্যতালিকায় প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম আঁশ থাকা উচিৎ- এর সঙ্গে সাম্প্রতিক রিভিউর সামঞ্জস্য রয়েছে।

হৃদরোগসহ কিছু ক্যানসার প্রতিরোধে আঁশের উপকারিতা পূর্বের গবেষণাগুলোতে পাওয়া গেছে। আঁশ সমৃদ্ধ খাবার তৃপ্তি বৃদ্ধি করে ও দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে- এটি স্থূলতার ঝুঁকি কমায়, যার সঙ্গে হৃদরোগ ও ক্যানসারের সংযোগ রয়েছে। আঁশ অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়াকেও প্ররোচিত করে, যা কোলন ক্যানসারের ঝুঁকি হ্রাস করে।

বেশি করে আঁশ খেতে আপনার ডায়েটে হোল গ্রেন বা গোটা শস্য, শাকসবজি, শিম, লেগিউম বা বিভিন্ন ধরনের ডাল এবং হোল ফ্রুট বা গোটা ফল যোগ করতে পারেন। বিভিন্ন ধরনের হোল ফুড (অপ্রক্রিয়াজাত বা অপরিশোধিত খাবার অথবা তেমন একটা প্রক্রিয়াজাত বা পরিশোধিত নয় এমন খাবার) থেকে আঁশের চাহিদা মিটানোই সর্বোত্তম।

তথ্যসূত্র : টাইম, রাইজিংবিডি

26
ল থেকে শিশুরা জীবনের দিকনির্দেশনা পেয়ে থাকে। প্রয়োজনীয় বিভিন্ন নিয়মকানুন তারা এখান থেকে রপ্ত করে। তাদের যে শুধু ভালো অভ্যাস গড়ে ওঠে তা না, কিছু বদভ্যাসও তাদেরকে প্রভাবিত করে।

এসব বদভ্যাস তারা সাধারণত সহপাঠীদের কাছ থেকে শেখে। তবে অন্যান্য মাধ্যম বা বিষয়কেও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। স্কুলে শিশুরা যেসব বদভ্যাসে অভ্যস্ত হতে পারে সেসব সম্পর্কে এ প্রতিবেদনে আলোকপাত করা হলো।

১. অন্যের সম্পর্কে নিন্দা

 

আমাদের সংস্কৃতিতে গল্পগুজব করাটা দুর্নিবার অবসর বিনোদনে রূপ নিয়েছে। কিন্তু কারো অনুপস্থিতিতে তার সম্পর্কে হীনজাত উদ্দেশ্যে কথা বলাটা শুধু অভদ্রতাই নয়, ক্ষতিকরও বটে। তাই আপনি যদি শুনেন আপনার বাচ্চা ক্লাসমেট সম্পর্কে নিন্দা করছে তাহলে তা থামানোর চেষ্টা করুন। অন্যের সম্পর্কে বা সঙ্গে কিভাবে সম্মানের সঙ্গে কথা বলতে হয় তা শিশুকে শেখানো গুরুত্বপূর্ণ। আপনার শিশুকে বোঝান পরচর্চা কেন অসম্মানের ও কেন তা ক্ষতিকর। তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন কেউ তাদের সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করলে কষ্ট পাবে কিনা? যদি পেয়ে থাকে তাহলে যাদের সম্পর্কে বাজে কথা বলছে তারা কি কষ্ট পাবে না?

২. নখ কামড়ানো ও অন্যান্য স্নায়ুচাপজনিত অভ্যাস

 

স্কুলে যাওয়াটা অনেক শিশুর ক্ষেত্রে অবিশ্বাস্যভাবে উদ্বেগ উদ্দীপকের বিষয় হতে পারে। বিশেষ করে তারা স্নায়বিক দুর্বলতায় ভোগে। তাই আপনার বাচ্চার মধ্যে অতি উদ্বেগের কোনো উপসর্গ আছে কিনা দেখা দরকার। নখ কামড়ানো, চুল টানা, ঠোঁট কামড়ানো, বৃদ্ধাঙ্গুল চুষা- এসব উপসর্গ উদ্ধিগ্নতার কারণে দেখা দিতে পারে। ড. অ্যালিনর মিটজনার বলেন, আপনার বাচ্চা যদি উদ্বিগ্নতায় ভোগে তাহলে শুধু বলবেন না, ‘চিন্তা করো না, তুমি ঠিক আছো’। তিনি বলেন, তাদের অনুভূতিসমূহ বাস্তব। তাদের জানানো উচিত এরকম অনুভূতি থাকা স্বাভাবিক। তাদেরকে কথা বলতে দিন এবং ইতিবাচক সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করুন।

৩. প্রযুক্তি আসক্তি

মিশিগানের শিশু মনস্তাত্ত্বিক নিকোলে বুরকেনস বলেন, অনেক স্কুল অসাবধানবশত স্মার্টফোন এবং ট্যাবলেটের প্রতি কচি বয়সে আসক্ত করে তোলে। তিনি বলেন, অনেক স্কুল ক্লাসে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের পাশাপাশি লাঞ্চ এবং অবকাশে ব্যক্তিগত ডিভাইস ব্যবহারের অনুমতি দেয়। অনেক শিশু ক্লাসের বাইরে প্রায় সময় ডিভাইস নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তারা ভিডিও গেমস খেলে বা টিভি দেখে দিনের বেশিরভাগ সময় কাটায়। তবে এসব সমাধান করা কঠিন নয়। প্রযুক্তির প্রতি বাচ্চার আসক্তি কমিয়ে ফেলুন বা তাদেরকে কিছু সীমাবদ্ধতায় রাখুন। তাদেরকে স্কুলে ব্যক্তিগত ডিভাইস নিতে দিবেন না। ঘরে টিভি দেখা বা স্ক্রিন উপভোগের ক্ষেত্রে কিছু নিয়মকানুন ঠিক করে দিন।

৪. অনবরত ঘ্যানঘেনানি

স্কুলের অনেক বিষয় নিয়ে বাচ্চারা ঘরে ঘ্যানঘ্যান করে। হোমওয়ার্ক, বাস, শিক্ষক কিংবা ক্যাফেটেরিয়া নিয়ে তারা অভিযোগ করে। কিছু অসুবিধার কারণে তারা এমনটা করে থাকে। তাদের এসব ঘ্যানঘেনানি বিরক্তির উদ্রেক করে এবং অনেক মা-বাবা তর্কে লিপ্ত হয়ে তা থামাতে চায়। ড. বুরকেনসের মতে, এসব থামানোর ভালো কৌশল হল অভিযোগে কান না দেওয়া। তিনি বলেন, ‘শিশুরা অভিযোগের প্রত্যুত্তর যত কম পাবে তারা তত কম অভিযোগ করবে।’ কিন্তু ঘ্যানঘেনানি অব্যাহত থাকলে কতটা নেতিবাচক মন্তব্য করছে তা ট্র্যাকিং করুন এবং তা কমানোর জন্য লক্ষ্য ঠিক করুন।

৫. অত্যধিক জাঙ্ক ফুড খাওয়া

ঘরে আপনি বাচ্চার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার ও স্ন্যাকস তৈরি করেন। কিন্তু স্কুলে স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পাওয়া যায় না বললেই চলে। সেখানে বাচ্চারা চিপস, বিভিন্ন রকম ক্যান্ডি, সিঙাড়া, সমুচা, পিৎজা ও অন্যান্য জাঙ্ক ফুড খেয়ে থাকে। তারা এসব খাবারে অভ্যস্ত হয়ে গেলে তাদের খাবার নির্বাচন নিম্নমানের হয়ে যাবে এবং তারা ঘরেও এসব খাবারের আবদার করবে। তাদের আবদারকে ঠান্ডা মাথায় ও কৌশলে এড়িয়ে যান। নানাপ্রকার জাঙ্ক ফুড মস্তিষ্কে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে এবং স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটাতে পারে। তাই বাসায় যতটা সম্ভব স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবার পরিবেশন করুন।

৬. অশ্লীল শব্দ

স্কুলে পাঠ্যপুস্তকের শব্দ তালিকার বাইরে কয়েকটি অশ্লীল শব্দ শিখে না এমন শিশু পাওয়া দুর্লভ। শিশু বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কয়েকটি অশ্লীল শব্দ শিখে থাকে। এসব সহ্য করার কোনো মানে হয় না। এসব বলা থেকে তাদের বিরত রাখুন। যখন তারা অশ্লীল শব্দ উচ্চারণ করবে তখন কৌশল খাটিয়ে থামানোর চেষ্টা করুন। এ প্রসঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়ায় অবস্থিত শিকো সেন্টার ফর কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপির ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট জোয়েল মিন্ডেন বলেন, ‘শান্ত থাকুন, তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন তারা শব্দটি কোথায় শিখেছে এবং কেন তারা শব্দটি ব্যবহার করছে।’ তিনি বলেন, তাদের ব্যাখ্যা শুনে একই অনুভূতি ভিন্ন শব্দে প্রকাশে সাহায্য করুন। অযৌক্তিক শাস্তি দিবেন না, যেমন- অশ্লীল শব্দ বললে সাবান দিয়ে মুখ ধুয়ে দেওয়া। এরকম শাস্তি তাদের মধ্যে রাগের বিস্তার ঘটাতে পারে এবং যে শব্দের জন্য শাস্তি দিলেন তা বেশি বেশি বলতে পারে।

৭. পরীক্ষায় প্রতারণা

পরীক্ষায় প্রতারণার আশ্রয় নেওয়াকে ক্ল্যাসিক ব্যাড বিহেভিয়ার বলা হয়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে শিশুরা তা করে থাকে, যেমন- পরীক্ষা সম্পর্কে উদ্বেগ, বিষয়বস্তু না বুঝা এবং সাহায্য চাইতে অত্যধিক ভয় পাওয়া। তাদেরকে প্রতারণামূলক ফলাফলের অভিজ্ঞতা নিতে দিন, যেমন- কোনো টেস্টে অনুত্তীর্ণ হওয়া বা কোনো প্রজেক্ট পুনরায় করা। কিন্তু এখানেই থেমে থাকবেন না। তাদের শিক্ষকের সঙ্গে তাদের ব্যাপারে কথা বলুন এবং পরামর্শ করুন। আপনার বাচ্চাকে ভালো অভ্যাসে উৎসাহিত করার জন্য তাদের সমস্যাকে গুরুত্ব দিন ও সমস্যার সমাধান করুন। তারা কনফিউজড ও আপসেট হলে তা থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজে দিন।

৮. বর্ণবাদী রসিকতা

শিশুরা স্কুলে সামজিক নিয়মকানুন শিখে এবং মাঝে মাঝে তারা বিব্রতকর বা অসামাজিক কিছু বিষয় শিখে ফেলে যা গোঁড়ামিপূর্ণ, বর্ণবাদী, যৌন বিষয়ক বা অন্যান্য অনুপযুক্ত ভাষা হতে পারে। তাদের মুখে এসব শুনে আপনি হয়তো মর্মাহত হতে পারেন, এমনকি রাগও করতে পারেন। কিন্তু মাথা ঠান্ডা রাখুন। তাদেরকে উত্তপ্ত কথা না বলে এটাকে পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধ বা আচরণ শিখানোর সুযোগ হিসেবে কাজে লাগান। কাউকে নিয়ে ব্যঙ্গ করলে সে কেমন কষ্ট পায় তা পূর্ণাঙ্গভাবে ব্যাখ্যা করুন। তারপর তাদের যা শিখাতে চান তার ওপর গুরুত্ব দিন। পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধ এবং ভিন্ন মতের প্রতি শ্রদ্ধা বিষয়ে তাদেরকে জ্ঞান দিন। তা স্বত্ত্বেও তারা বদভ্যাস ত্যাগ করতে না পারলে শাস্তি দিতে পারেন এবং খারাপ সঙ্গীর সঙ্গে মেলামেশা বা মিডিয়ার অপব্যবহার রোধে খেয়াল রাখুন।

৯. অন্য শিশুদের কটুক্তি করা

বাচ্চা নীচ মনমানসিকতার হোক এটা কেউ চায় না। কিন্তু বাস্তবতা এই যে, শিশুরা বিভিন্ন উপলক্ষ্যে অন্য শিশুদের কটুক্তি করে। ‘আমার বাচ্চা এমন নয়’ বা ‘আমার বাচ্চা করেনি’ এমন কথা না বলে বাচ্চার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করুন এবং এ বিষয়ে বাচ্চার সঙ্গে কথা বলুন। ড. মিন্ডেন বলেন, ‘মাঝে মাঝে অন্য শিশুদের দ্বারা প্রভাবিত হয়েও তারা কটুক্তি করতে পারে। বাচ্চাকে কটুক্তির ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বোঝান, এমনকি তা সহপাঠীদের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে করলেও।’ তিনি আরো বলেন, এ ধরনের অভ্যাস বন্ধ করার ব্যবস্থা নিন। বাচ্চাকে বলুন- যদি টিজ অব্যাহত রাখো তাহলে এটা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে এবং তোমার শিক্ষককে এ বিষয়ে বলা প্রয়োজন হবে। কখনো কখনো টিজিং সীমারেখা অতিক্রম করে মারাত্মক জটিলতার সৃষ্টি করে। তাই আপনার বাচ্চাকে এ অভ্যাসের আওতামুক্ত রাখুন।

১০. পর্নো দেখা

নোভাস প্রজেক্টের একটি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে, ৮ থেকে ১১ বছরের শিশুরা স্মার্টফোন ও ট্যাবের সংস্পর্শে প্রথম পর্নের সঙ্গে পরিচিত হয়। স্কুলে অন্যের দেখাদেখি বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আপনার বাচ্চা পর্নো দেখতে পারে। শিশুর সেক্সুয়্যাল ডেভেলপমেন্টের জন্য ও যৌন নিরাপত্তার খাতিরে পর্নো দেখা বন্ধ করা উচিত। ড. মিন্ডেন বলেন, যদি জানেন আপনার বাচ্চাকে কে পর্নো দেখিয়েছে তাহলে জরুরি ভিত্তিতে স্কুল বা অন্যান্য পিতামাতার সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তিনি পরামর্শ দেন, শান্ত হোন, বাচ্চাকে বলুন যে পর্নোগ্রাফি শিশুদের জন্য নয় এবং এসব দেখলে ক্ষতি হতে পারে। তারা যা দেখেছে তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন আছে কিনা জিজ্ঞেস করুন। ড. মিন্ডেন যোগ করেন, যৌনতা সম্পর্কে তারা আপনার কাছ থেকে যা জানবে তা-ই গুরুত্বপূর্ণ, বন্ধুদের কাছ থেকে যা জানে তা নয়। আপনি বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে তাদেরকে পর্নো দেখা থেকে রক্ষা করতে পারেন।

১১. নিজেকে বিভিন্ন নামে ডাকা

আপনার আদরের বাচ্চা যখন নিজেকে ডাম বা হাবা বা বোবা, আগলি বা বিশ্রী বা কুৎসিত, স্টুপিড বা মূর্খ বা বেকুব, ফ্যাট বা মোটা বা মোটকি এবং অন্য কোনো হাস্যকর বা সমালোচনামূলক নামে ডাকবে তখন হয়তো আপনার বুকটা ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে। শিশুরা স্কুলজীবনের শুরু থেকেই পারফেকশনিস্ট বা সেনসিটিভ আচরণ করলে তাদের বিভিন্ন নাম ছড়িয়ে যায়। তাদের দুর্বলতা এবং শারীরিক গঠনের ওপর ভিত্তি করেও নানারকম নাম ছড়িয়ে পড়ে। বাচ্চা যদি এসব নামে নিজেকে সম্বোধন করে তাহলে তাকে ইতিবাচক নামে ডাকুন বা ভালো মন্তব্য শুনান, যেমন- তুমি সত্যিই সুন্দর/স্মার্ট/গ্রেট ইত্যাদি। এর ফলে তাদের মনের উদ্বেগ দূর হবে। ড. মিন্ডেন পরামর্শ দেন, নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা না করতে তাদেরকে উৎসাহ দিন, তাদের নেতিবাচক চিন্তাকে মিথ্যা প্রমাণের জন্য উপায় খুঁজুন এবং ফলাফলের চেয়ে প্রচেষ্টাকে গুরুত্ব দিন, তারা যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না তাতেও গুরুত্বারোপ করুন। সফল হতে পারে এমন কাজে তাদেরকে যুক্ত করুন।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট, রাইজিংবিডি

27
আপনার স্মার্টনেসের জন্য আপনার মাকে ধন্যবাদ দেওয়ার বৈজ্ঞানিক কারণ রয়েছে। মায়েরা, এখন থেকে আপনাদের সন্তানের সাফল্যে নিজেদের পিঠ চাপড়ানোর আরো একটি কারণ পাওয়া গেছে! এবং পুরুষেরা, বুদ্ধিমান শিশু পেতে বুদ্ধিমান সঙ্গিনীর খোঁজ করুন! সাইকোলজি স্পটে প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে, সাধারণত কোনো শিশুর বুদ্ধিমত্তা আসে সবচেয়ে প্রিয় ব্যক্তি মায়ের কাছ থেকে।

কমন সেন্স ধারণা দিচ্ছে যে, শিশুরা বুদ্ধিমত্তা পেয়ে থাকে মা-বাবা উভয় থেকেই। কিন্তু গবেষণার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, কিছু জিন ভিন্নভাবে আচরণ করে, এটা নির্ভর করছে তারা মা নাকি বাবা থেকে এসেছে তার ওপর ভিত্তি করে। বুদ্ধিমত্তা নির্ণায়ক জিনগুলোর অবস্থান ক্রোমোজোম এক্সে। যেহেতু নারীরা দুটি এক্স ক্রোমোজোম এবং পুরুষেরা শুধু একটি এক্স ক্রোমোজোম বহন করে, তাই শিশুদের মায়ের কাছ থেকে বুদ্ধিমত্তা পাওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ। এছাড়া গবেষণার প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাবার কাছ থেকে প্রাপ্ত বুদ্ধিমান জিনগুলো নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়।

আপনার এখনো বিশ্বাস হচ্ছে না? তাহলে কয়েক দশক পূর্বের প্রমাণে ফিরে যান। ১৯৯৪ সালে মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিল সোশ্যাল অ্যান্ড পাবলিক হেলথ সায়েন্স ইউনিটের গবেষকরা ১৪ থেকে ২২ বছর বয়সের ১২,৬৮৬ জন লোকের ইন্টারভিউ নেন। ফলাফল? শিশুদের আইকিউ, জাতি, শিক্ষা ও আর্থসামাজিক অবস্থা মূল্যায়নের পর পাওয়া যায় যে, বুদ্ধিমত্তার সর্বোত্তম প্রেডিক্টর ছিল মায়ের আইকিউ।

কেন স্মার্ট মায়েদের শিশুরা স্মার্ট হয়? এর পেছনে বৈজ্ঞানিক হাইপোথিসিস ছাড়াও অন্য একটি যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা রয়েছে। যেহেতু মায়েরা প্রায়সময় প্রাথমিক সেবাদাতার ভূমিকায় থাকে, তাই তারা গুরুত্বপূর্ণ মস্তিষ্ক বিকাশের সময়টাতে শিশুদের পরিবেশের প্রাথমিক স্থপতিও, ফোর্বস অনুসারে। গবেষণা বলছে যে, বেশি বয়সের মায়েরা তুলনামূলক ভালো মা।

কিন্তু বাবার ভূমিকাকেও অবহেলা করার কিছু নেই। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, মাত্র ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ বুদ্ধিমত্তা বংশগত- অন্যান্য পরিবেশগত ফ্যাক্টরও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট, রাইজিংবিডি এস এম গল্প ইকবাল

28
বয়স্ক নারীরা প্রতি সপ্তাহে ছয় মিনিটের সাধারণ লাফানোর ব্যায়ামের মাধ্যমে সম্ভবত তাদের অস্টিওপোরোসিস (হাড় ক্ষয়) রোগের ঝুঁকি কমাতে পারেন। ৩ দিন ২ মিনিট করে সপ্তাহে ৬ মিনিট লাফ।

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, কোনো গ্রাউন্ড বা বক্স থেকে লাফ দেয়া পা ও নিতম্বের মাংসপেশিতে পর্যাপ্ত জোর ও চাপ ফেলে, যা বয়স বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংঘটিত হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ করতে পারে।

ম্যানচেস্টার মেট্রোপলিটান ইউনিভার্সিটির ডা. গ্যালিন মন্টগোমারি ৫০ বছর বয়সী ১৪ জন নারীর ওপর এ ব্যায়াম নিয়ে গবেষণা চালান। তিনি বলেন, ‘এই ব্যায়াম আসলেই সহজ এবং নিজের ঘরে সুবিধামতো যেকোনো স্থান থেকে এ ব্যায়াম চর্চা করা যায়। প্রায়ক্ষেত্রে শুধুমাত্র হাঁটা আপনার হাড়ের জন্য পর্যাপ্ত নয় এবং আমরা আশা করছি যে, এ গবেষণার ফলাফলে উদ্বুদ্ধ হয়ে আরো নারী এই ‘হাই ইম্প্যাক্ট ব্যায়াম (সাধারণত অ্যারোবিক ব্যায়াম, যা শরীরে প্রচুর চাপ ফেলে)’ করবেন।

গবেষণায় নারীরা সর্বোত্তম ফল পান ‘কাউন্টার-মুভমেন্ট জাম্প’ থেকে। এ গবেষণায় হাড়ের ঘনত্ব মাপা হয়নি, কিন্তু এ ব্যায়ামের সময় ফ্লোরে অবতরণের প্রভাব ছিল উল্লেখযোগ্য।

ধারণা করা হচ্ছে যে, লাফ দেয়ার ফলে নারীদের মাংসপেশিতে যে চাপ পড়ে তা হাড়কে মজবুত করার জন্য যথেষ্ট। পূর্বের গবেষণায়ও মাংসপেশির ওপর অনুরূপ প্রভাব পাওয়া গেছে। ডা. মন্টগোমারি বলেন, ‘এই ব্যায়ামের উপকারিতা প্রতিবছর হাড়ের খনিজ ঘনত্বের নিট বৃদ্ধি ২ শতাংশের সমান, যা অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধ করতে যথেষ্ট।’

রুষের তুলনায় নারীদের অস্টিওপোরোসিসের আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি- বিশেষ করে মেনোপজের কাছাকাছি সময়ে। পঞ্চাশোর্ধ্ব নারীদের মধ্যে অস্টিওপোরোসিস অতি কমন, এ কন্ডিশনের কারণে পঞ্চাশোর্ধ্ব নারীদের প্রায় অর্ধেকেরই একটি হাড় ভেঙে যায়- একারণে এ কন্ডিশনকে ‘ব্রিটল বোন ডিজিজ’ বা ভঙ্গুরপ্রবণ হাড় রোগও বলে।

যদিও ব্যায়াম হাড়কে শক্তিশালী বা মজবুত করে, কিন্তু মধ্য-বয়স্ক নারীরা কাজের চাপ, ছেলেমেয়েদের দেখাশোনা এবং বৃদ্ধ পিতামাতাদের সেবাযত্নের জন্য ব্যায়াম চর্চা করার জন্য তেমন একটা সময় পায় না- তাদের জন্য সপ্তাহে ছয় মিনিটের লাফের ব্যায়াম উপযুক্ত হতে পারে। হাই-ইম্প্যাক্ট ব্যায়ামের মানে হলো হাড়কে একটু বেশি ব্যস্ত থাকতে হবে, যা গ্রোথ কোষকে উদ্দীপ্ত করে।

এ গবেষণাটি জার্নাল অব ইলেক্ট্রোমায়োগ্রাফি অ্যান্ড কিনেশিয়োলজিতে প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণায় নারীরা প্রতি চার সেকেন্ডে একটি লাফ দিয়েছেন, তারপর দীর্ঘ বিশ্রাম নিয়ে ১৫ সেকেন্ডে একটি লাফ মেরেছেন। গবেষণাটি ধারণা দিচ্ছে যে, প্রতি সপ্তাহে তিন বার করে ৩০টি লাফ অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে।

ডা. মন্টগোমারি বলেন, ‘৩০টি লাফ দিতে নারীরা ২ মিনিট সময় নিতে পারেন, ১৫টি লাফের পর তারা অল্প বিশ্রাম নিতে পারেন।’ যেসব বয়স্ক লোক তাদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বিগ্ন, তাদের কোনো নতুন ব্যায়াম শুরু করার পূর্বে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা উচিৎ।

তথ্যসূত্র : ডেইলি মেইল, রাইজিংবিডি

29
আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব কসমেটিক ডেন্টিস্ট্রি অনুসারে, লোকজন হাসিতে পরিবর্তন আনার জন্য যা সবচেয়ে বেশি করে তা হচ্ছে, নিজেদের দাঁত সাদা করা। এ প্রতিবেদনে প্রাকৃতিক ভাবে দাঁত সাদা করার ১০টি উপায় উল্লেখ করা হলো।

* চূর্ণিত স্ট্রবেরি

চূর্ণিত স্ট্রবেরি দিয়ে দাঁত ব্রাশ করার বিষয়টি আপনার কাছে উদ্ভট মনে হতে পারে, কিন্তু এটি দাঁত সাদা করার একটি চমৎকার প্রাকৃতিক উপায়। স্ট্রবেরির অ্যাসিডিক উপাদান হালকা ব্লিচিং অ্যাজেন্ট হিসেবে কাজ করে। একটি বা দুইটি পাকা স্ট্রবেরি চূর্ণ করুন, এতে আপনার টুথব্রাশ চোবান এবং তারপর স্বাভাবিক ভাবে আপনার দাঁত ব্রাশ করুন। দাঁত ব্রাশ করা শেষ হলে মুখের অ্যাসিডিটি হ্রাস করতে এবং দাঁতকে যেকোনো ধরনের ড্যামেজ থেকে রক্ষা করতে সোডার এক চিমটি বাইকার্বনেট দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।

* নারকেল তেল

অয়েল পুলিং হচ্ছে, প্রাচীন ভারতীয় পদ্ধতি যেখানে মুখে তেল রেখে কয়েক মিনিট ধরে কুলকুচা করা হয়- সাধারণত আপনি যেভাবে মাউথওয়াশ ব্যবহার করেন সেভাবে। নারকেল তেল প্রাকৃতিক দাঁত সাদাকারক হিসেবে বিবেচিত এবং সাম্প্রতিক এক গবেষণা এর মৌখিক স্বাস্থ্য উপকারিতাকে সমর্থন করছে। নারকেল তেল ব্যবহার করে অয়েল পুলিং প্রকৃতপক্ষে দাঁতে প্লেকের গঠন ও মাড়ির রোগ হ্রাস করতে সাহায্য করে।

* বেকিং সোডা ও লেবুর রসের পেস্ট

লেবু কি আসলেই দাঁত সাদা করে? সংক্ষিপ্ত উত্তর হচ্ছে- হ্যাঁ! লেবুতে উচ্চমাত্রায় সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে যা আপনার দাঁতের জন্য প্রাকৃতিক ব্লিচ হিসেবে কাজ করে। তবে এটি ক্ষতিকারক হতে পারে। কিন্তু এক চামচ লেবুর রসের সঙ্গে যথেষ্ট বেকিং সোডা দিয়ে তৈরিকৃত পেস্ট প্রকৃতপক্ষে ঘরে দাঁত সাদা করার একটি কার্যকরী ও নিরাপদ উপায়। বেকিং সোডা হালকা ক্ষয়কারী (যা দাঁতের ওপর পড়া নোংরা প্রলেপ বা দাগ দূর করতে পারে) এবং খুব ক্ষারীয়, যা লেবুর রসের প্রাকৃতিক অ্যাসিডিটি প্রশমিত করতে সাহায্য করে।

* অ্যাক্টিভেটেড কাঠকয়লা

যদি আপনি প্রাকৃতিক দাঁত সাদাকারকের খোঁজ করেন, তাহলে আপনার জন্য অ্যাক্টিভেটেড কাঠকয়লা হতে পারে অন্য একটি কার্যকরী প্রাকৃতিক উপায়। অ্যাক্টিভেটেড কাঠকয়লা তৈরি হয় অক্সিজেন ও ক্যালসিয়াম ক্লোরাইডের সঙ্গে কাঠকয়লা প্রক্রিয়াজাত করে এবং এটি এর অতিশয় শোষণকারী বৈশিষ্ট্যের কারণে কার্যকরী দাঁত সাদাকারক অ্যাজেন্ট হিসেবে বিবেচিত। দাঁতের ক্ষেত্রে অ্যাক্টিভেটেড কাঠকয়লা ট্যানিন শোষণে চমৎকার ভূমিকা পালন করে। ট্যানিন হচ্ছে কফি, চা ও ওয়াইনে থাকা পদার্থ যা দাঁতে দাগ ফেলে। আপনার টুথব্রাশে অ্যাক্টিভেটেড কাঠকয়লার পাউডার লাগান এবং দাঁতের দাগ দূর করার জন্য স্বাভাবিকভাবে দাঁত ব্রাশ করুন।

* কমলার খোসা

কমলার খোসার ভেতরটা দিয়ে দাঁত ঘষা হচ্ছে, দাঁত সাদা করার একটি নিরাপদ ও প্রাকৃতিক উপায়। খোসার সাদা অংশ বা অ্যালবেডোতে লিমোনিন থাকে- লিমোনিন হচ্ছে ন্যাচারাল সলভেন্ট ক্লিনার এবং প্রকৃতপক্ষে তা অনেক বাণিজ্যিক দাঁত সাদাকারক প্রোডাক্টে ব্যবহার করা হয়। কমলার মাংসল অংশের মতো এর খোসা অ্যাসিডিক নয়, তাই দাঁতের এনামেল ড্যামেজ হওয়ার কোনো ঝুঁকি নেই বলে এটি ব্যবহার করা নিরাপদ।

* তুলসী পাতা ও সরিষা তেল

শুকনো তুলসী পাতা চূর্ণ করে পাউডারে পরিণত করুন এবং ঘরে দ্রুত ও কার্যকরী উপায়ে আপনার দাঁত সাদা করার জন্য তা সরিষার তেলে মিশান। আপনি সতেজ তুলসী পাতাও ব্যবহার করতে পারেন: সতেজ তুলসী পাতাকে পিষে পেস্ট বানান এবং টুথব্রাশের মাধ্যমে তা সরাসরি দাঁতে প্রয়োগ করুন। বলা হয়ে থাকে যে, তুলসী পাতা মাড়িকে রক্ষা করে এবং সরিষা তেলের অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল, অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য আছে- যা আপনার মৌখিক স্বাস্থ্যকে উন্নত করে।

* আপেল সিডার ভিনেগার

আপেল সিডার ভিনেগারের অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে (যেমন- এটির অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ রয়েছে), কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি যে দাঁত সাদা করতে পারে তা সম্পর্কে অনেকে অবগত নন। দাঁতের দাগ দূর করতে এক টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে দাঁত ব্রাশ করার চেষ্টা করতে পারেন এবং তারপর নির্মল শ্বাসের জন্য ও মাড়ির ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করার জন্য আপেল সিডার ভিনেগার দিয়ে কুলকুচা করতে পারেন।

* সামুদ্রিক লবণ ও বেকিং সোডা

বেকিং সোডা বা সোডিয়াম বাইকার্বনেট এটির ক্ষারীয় গুণ এবং দাঁতের যেকোনো দাগ মৃদুভাবে দূর করার ক্ষমতার কারণে প্রাকৃতিক দাঁত সাদাকারক হিসেবে বিবেচিত। এর সঙ্গে সামুদ্রিক লবণ যোগ করে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ট্রুথ স্ক্রাব করতে পারেন, যা মুখে অ্যাসিড প্রশমিত করে এবং ব্যাকটেরিয়াও নির্মূল করে।

* হলুদের গুঁড়া

দাঁত সাদাকারক হিসেবে হলুদ ব্যবহার করা যায়। হলুদ হচ্ছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল এবং এতে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট থাকে, যার ফলে দাঁতের সমস্যা যেমন- মাড়ির রোগের চিকিৎসায় এটি কার্যকরী। হলুদের সূক্ষ্ম গুঁড়া মৃদুভাবে দাঁতের দাগ দূর করে এবং তাৎক্ষণিক দাঁতকে সাদা করে তুলে। এক টেবিল চামচ হলুদের গুঁড়া আঙুল দিয়ে দাঁতে ঘষুন, পরিষ্কার টুথব্রাশ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন এবং মুখ ধুয়ে ফেলুন।

* ঘরে তৈরিকৃত টুথপেস্ট

আপনি দাঁত সাদাকারক টুথপেস্ট ঘরে নিজে নিজে তৈরি করতে পারেন। নারকেল তেলের সঙ্গে সোডার বাইকার্বনেট, অল্প পরিমাণে লেবুর রস এবং এক ফোঁটা পিপারমিন্ট অয়েল বা পুদিনা তেলের সমন্বয় হতে পারে শক্তিশালী দাগ-দূরকারী পেস্ট, যা প্রকৃতিগতভাবে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট, রাইজিংবিডি

30
দাঁতের ক্যাভিটি মানে হলো দাঁতে ব্যাকটেরিয়ার কারণে সৃষ্ট গর্ত। ক্যাভিটি যে আপনার মুক্তোর মতো সাদা দাঁতের ক্ষতি করছে তার প্রাথমিক লক্ষণ হলো- সাধারণত তীব্র দাঁত ব্যথা কিংবা শিরশিরে অনুভূতি। হঠাৎ ব্যথা বা শিরশিরে ভাব আপনাকে ভুল ধারণা দিতে পারে যে ক্যাভিটি বা গর্তটি রাতারাতি হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে দাঁতের ক্ষয় জনিত উপসর্গ প্রকাশ পেতে কয়েক মাস থেকে এক বছরেরও বেশি সময় লাগতে পারে। উচ্চ চিনির ডায়েট খেলে এবং প্রতিদিন দাঁত ব্রাশ না করলে এ অবস্থা আরো খারাপের দিকে অগ্রসর হয়।

বোস্টন ইউনিভার্সিটির ডেন্টিস্ট্রির অধ্যাপক এবং ডেন্টাল সার্জারির ডাক্তার কার্ল ম্যাকমানামা বলেন, ‘যখন আমরা কার্বোহাইড্রেট বা চিনি খাই, ব্যাকটেরিয়া অ্যাসিড উৎপাদন করে যা দাঁতকে ক্ষয়ে ফেলে। আপনি যত বেশি চিনি খাবেন, তত বেশি ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পাবে এবং আরো বেশি অ্যাসিড উৎপাদন হবে- ফলে দাঁতের ক্ষয় অব্যাহত থাকবে।’ প্রথম প্রথম আপনি এ ব্যথা বা শিরশিরে ভাবকে অবহেলা করতে পারেন, বিশেষ করে যদি এসব উপসর্গ মাঝেমাঝে আপনাকে ভোগায়। কিন্তু এর চিকিৎসা না করলে দাঁতের মারাত্মক সমস্যা হতে পারে, কিন্তু দাঁতের ক্যাভিটি বা গর্তের প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দেওয়ামাত্র ডেন্টিস্টের কাছে গেলে জটিল সমস্যা এড়াতে পারবেন।

* আপনার দাঁত ভেঙে যেতে পারে
বড় ক্যাভিটির ক্ষেত্রে দাঁতের ভাঙন বা ফাটল খুব কমন। ডা. ম্যাকমানামা বলেন, ‘একটি অক্ষত সুস্থ দাঁত ভাঙে না বললেই চলে। কিন্তু আপনার দাঁতে প্রচুর ক্ষয় বা বড় গর্ত কিংবা পুরোনো ফিলিং থাকলে তা অধিক ভাঙন প্রবণ হবে।’ অমনোযোগী খাওয়ার অভ্যাস অথবা খাবার চিবানোতে কোনো ক্ষয়িত দাঁত সহজে ভেঙে যেতে পারে। আপনার ক্যাভিটি ফিলিং বা পূরণ না করা পর্যন্ত চিনি কম খেয়ে, ফ্লুরাইড টুথপেস্ট দিয়ে দিনে দুবার দাঁত ব্রাশ করে ও ফ্লসিং করে দাঁতের ক্ষয় ধীর করতে পারেন।

* আপনার স্নায়ু ধ্বংস হতে পারে
ডা. ম্যাকমানামা বলেন, ‘প্রত্যেক দাঁতের মধ্যভাগটা হলো ফাঁপা টিউব যেখানে স্নায়ু ও রক্তনালি রয়েছে। যখন ক্ষয় দাঁতের পাল্প বা স্নায়ু পর্যন্ত পৌঁছায়, তখন রোগীরা অসহনীয় ব্যথা অনুভব করে।’ ক্যাভিটি আপনার দাঁতের গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত হলে সপ্তাহের ২৪ ঘণ্টাই ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে। রোগীরা যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে শেষ পর্যন্ত ডেন্টিস্টের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেন, কিন্তু ততক্ষণে খুব দেরি হয়ে যায়। যদি আপনার দাঁতের স্নায়ু মারা যেতে শুরু করে, তাহলে আপনার রুট ক্যানাল অথবা দাঁত তুলে ফেলার প্রয়োজন হতে পারে।

* আপনার দাঁত নষ্ট হতে পারে
যদি ক্ষয় বা ক্যাভিটি থেকে আপনার দাঁতের স্নায়ুতে কোনো ইনফেকশন হয়, তাহলে ইনফেকশন জনিত ফোলা দাঁতের স্নায়ুতে রক্ত সরবরাহ বিচ্ছিন্ন করবে এবং এটি নষ্ট হয়ে যাবে। ডা. ম্যাকমানামা বলেন, ‘আপনার স্নায়ু নষ্ট হয়ে গেলে ব্যথা চলে যাবে। কিন্তু ক্ষয় প্রক্রিয়ায় দাঁতটির ধ্বংসসাধন চলতে থাকবে এবং তা তুলে ফেলার প্রয়োজন হবে।’

* আপনার ইনফেকশন হতে পারে
দাঁতের মৃত টিস্যু আপনার শরীরকে ফোঁড়া ও ইনফেকশন প্রবণ করতে পারে। ডা. ম্যাকমানামা বলেন, ‘মৃত টিস্যু থেকে নির্গত বিষাক্ত পদার্থ দাঁতের মূলের শীর্ষস্থ হাড়কে সংক্রমিত করে, যা প্রদাহ দিয়ে শুরু হয়। তারপর এই ইনফেকশন আপনার গাল ও মুখের ফ্লোরে ছড়াতে পারে।’ এই ইনফেকশনের কারণে চোয়াল ও গ্রন্থি ফুলে যেতে পারে এবং আপনার জ্বর হতে পারে। অচিকিৎসিত তীব্র দাঁতের ইনফেকশন ব্রেইনে জীবননাশক ফোঁড়া সৃষ্টি করতে পারে, যদিও এটা বিরল। ক্যাভিটির বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ হিসেবে প্রতি ছয়মাসে একবার ডেন্টিস্টের কাছে যাওয়া উচিৎ- ইতোমধ্যে ক্যাভিটি হয়ে থাকলে তার অবস্থা আরো খারাপের দিকে যাওয়া প্রতিহত করতে নিয়মিত ডেন্টিস্টের কাছে যেতে হবে।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট

Pages: 1 [2] 3 4 ... 7