Daffodil International University
Faculty of Science and Information Technology => Environmental Science and Disaster Management => Topic started by: Sultan Mahmud Sujon on October 22, 2011, 01:18:59 PM
-
দুর্যোগ
দুর্যোগ এমন একটি অসভাবিক ও ভয়াবহ পরিপ্স্থিতি যা ব্যাপকভাবে জীবন ও জীবনধারণের মউলিক বিষয়াবলীর প্রতি হুমকি তইরি করে এবং যা মোকাবেলা করা এককভাবে ব্যক্তি ও সমাজের সামরথের বাইরে চলে যায় ।
অন্য ভাবে বলা যায় দুর্যোগ হচ্ছে আপদ ও বিপদাপন্নতার পরিণতি । আপদ ও বিপদাপন্নতা যেখানে একত্রিত হয় সেখানেই একটি দুর্যোগের জন্ম হয় । অনেক সময় আক্রান্ত মানুষের পক্ষে দুর্যোগের ফলে স্রিষ্ট পরিস্থিতি মোকাবেলা অসম্ভব হয়ে পড়ে ।
-
পরিবেশ রক্ষায় আমাদের করণীয়
চিত্র: বাড়ির চারদিকে গাছপালা বন্যা রোধে সহয়তা করে
চিত্রসুত্রঃ বি ডি পি সি বাংলাদেশ ডিজাস্টার দু॔যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো সেন্টার
ব্যক্তিগত ও সামজিক পর্যায়ে পরিবেশ রক্ষায় মানুষের করণীয় কি এ ব্যাপারে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করা;
পারিবারিক ও সামাজিকভাবে ব্লিচিং পাউডার সংরক্ষণে উদ্বুদ্ধকরণ;
পরিবেশ রক্ষার জন্য বেশি করে গাছ লাগানো;
বন্যার সময়ে গাছের প্রয়োজনীয়তা
গাছের নাম
উপকারিতা
আম, শিমুল, সিসা, মেহগনি
নৌকা বানানোর কাজে
কলা গাছ
চলাচল (ভেলা), গবাদিপশুর খাবার, জরুরি সময়ে গোয়াল ঘর উঁচু করার কাজে, বন্যার সময় কলাগাছের থোড় খাবার হিসাবে ব্যবহার করা, এছাড়া কলা অত্যন্ত পুষ্টিকর খাদ্য ৷
কাইসা
ঘরের বেড়া, গবাদিপশুর খাবার, স্রোত ঠেকানোর জন্য ঝড়ট দেয়া, জমিতে পলিমাটি আটকিয়ে রাখা৷
ধৈঞ্চা
গবাদিপশুর খাবার, জ্বালানি, পলি আটকানো
বাঁশ
খুঁটি, জ্বালানি, মাচা ইত্যাদি নানা কাজের জন্য দরকারী৷
সূত্র - বিডিপিসি, ২০০২:৪৪
-
বন্যা মোকাবেলায় পূর্ব প্রস্তুতি মুদ্রণ ইমেল
বন্যা মোকাবেলায় পূর্ব প্রস্তুতি
বন্যার সময় পানিপ্রবাহ বেশি থাকার কারণে বসতবাড়ি, ক্ষেত-খামারসহ আশপাশ ডুবে যায় এবং জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে৷ বন্যা হওয়া মানেই মানুষ,সম্পদ তথা দেশের জন্য ক্ষতি৷ বন্যা মোকাবিলা ও এর ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার জন্য সর্তক হওয়ার পাশাপাশি আমাদের সচেতন পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত৷ আপনি বন্যাপ্রবণ এলাকায় বাস করলে প্রতি বছর বন্যা মৌসুমের আগে নিম্নলিখিত প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থাগুলি গ্রহণ করুনঃ
বাড়িঘর তৈরিতে কি করবেন
2.jpg
চিত্র : বাড়ির ভিত উচু করা দরকার
চিত্রসুত্রঃ বি ডি পি সি বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপ্রেয়াডᐂনেস সেন্টার
উঁচু জায়গায় এবং মজবুত করে বাড়ি তৈরি করুন;
নদীর তীরবর্তী এলাকায় বেড়ী বাঁধের বাইরে বাড়ি নির্মাণ না করে সব সময় বাঁধের ভিতরে বাড়ি নির্মাণ করুন ;
image9.jpg
চিত্র : বাঁধের ভিতর বাড়ি তৈরি করুন
চিত্রসুত্র: বাংলাদেশ দু॔যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো
নতুন জেগে উঠা চরে বসতবাড়ি নির্মাণ করবেন না কারণ এখানে বন্যা হলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশন্কা বেশি;
আপনার ভিটেবাড়ি নিচু হলে বন্যার আগেই মাটি দিয়ে উঁচু করুন এবং ঘরের মেঝে স্বাভাবিক উচ্চতার চেয়ে বেশি উঁচু করে তৈরি করুন যেন বন্যার পানি ভিটায় বা ঘরে উঠতে না পারে;
বাড়ির চারদিকে বেশি করে কলাগাছসহ অন্যান্য গাছপালা লাগান যা আপনার বাড়িকে বন্যার পানির তোড় থেকে রক্ষা করবে৷
এছাড়া গাছপালা আমাদের ফল দেয়, কাঠ দেয়, পরিবেশ দূষণ রোধ করে এবং বন্যাজনিত মাটির ক্ষয়রোধ করে;
image8.jpg
চিত্র: বাড়ির চারদিকে কলাগাছ লাগান
চিত্রসুত্র: বাংলাদেশ দু॔যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো
বন্যাপ্রবণ এলাকাতে ঘরগুলি স্বাভাবিক উচ্চতার চেয়ে বেশি উঁচু করে তৈরি করুন প্রয়োজন হলে বন্যার সময় মাচান বেঁধেকিছু দিন বসবাস করা যাবে;
বন্যাপ্রবণ এলাকায় ঘরের চারপাশ মাটি দিয়ে না করে সম্ভব হলে ইট-সিমেন্ট দিয়ে পাকা করুন যাতে ঘরের ভিত ভেঙ্গে না পড়ে৷ যদি পাকা করা সম্ভব না হয় তাহলে মাটি দিয়ে তৈরি করে ঘন ঘন বাঁশ অথবা শক্ত কাঠের ঘের দিয়ে রাখুন৷ এই ব্যবস্থা ঘরের চারপাশ ভেঙ্গে পড়া রোধ করতে পারে;
শক্ত কাঠের খুঁটি দিয়ে ঘর তৈরি করুন, বন্যার পানিতে যাতে খুঁটির গোড়া পঁচে না যেতে পারে;
খড় ও বাতা দিয়ে ঘর বানান এবং গোড়াগুলি ইট-সিমেন্ট দিয়ে পাকা করুন অথবা শক্ত কাঠ দিয়ে করুন যাতে সেগুলো পানিতে পঁচে না যায়;
ঘর বাঁশের অথবা নরম কাঠের খুঁটি দিয়ে তৈরি হলে মেঝের উপর খুঁটিগুলি শক্ত বাতা দিয়ে যুক্ত করুন৷ তাহলে খুঁটির গোড়াগুলি পঁচে গেলেও সহজে ঘর পড়ে যাবে না;
বিশুদ্ধপানির জন্য কি করবেন
6.jpg
চিত্র: উঁচুস্থানে টিউবওয়েল ও পায়খানা তৈরি করলে বন্যায় ডুবে যাবে না
চিত্রসুত্রঃ বি ডি পি সি বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপ্রেয়াডᐂনেস সেন্টার
টিউবওয়েল উঁচু স্থানে বসান যাতে বন্যার পানিতে ডুবে না যায়
বন্যার সময় টিউবওয়েল উঁচু করার ব্যবস্থা রাখুন,
বন্যার সময় পানি বিশুদ্ধ করার জন্য ফিটকিরি/পানি বিশুদ্ধকরণ বড়ি সংগ্রহ করুন৷
পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য করণীয়
উঁচু স্থানে পায়খানা তৈরি করতে হবে সাধারণ বন্যায় যেন ডুবে না যায়;
সমস্ত বাড়ি উঁচু করা সম্ভব না হলে কেবল বাড়ির পায়খানাটি যেন বন্যার পানির উচ্চতার চেয়ে বেশি উচ্চতায় করা হয় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন;
সরকারের জনস্বাস্থ্য বিভাগ এবং নিকটস্থ এনজিও-র পরামর্শ এবং সহায়তা নিতে পারেন;
বন্যার পানিতে মল ত্যাগ করা যে ক্ষতিকর সে ব্যাপারে সকলকে সচেতন করে তুলুন৷
গবাদিপশু ও হাঁস মুরগীর রক্ষায় কি করবেন
7.jpg
চিত্র ; বন্যার পূবᐂ প্রস্তুতি
চিত্রসুত্রঃ বি ডি পি সি বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপ্রেয়াডᐂনেস সেন্টার
যে সময়ে সাধারণত বন্যা হয়ে থাকে তখন গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগী কম রাখুন;
ঘাস বিচালি ও অন্যান্য পশুখাদ্য সংগ্রহে রাখুন, অনেকে মিলে যৌথভাবে মজুদ করতে পারেন;
কলমি শাক, কলাগাছের কান্ড, পাতা ইত্যাদির মতো পানিতে ভাসে এমন পশুখাদ্য জোগাড় করে রাখুন;
বন্যার সময় বিভিন্ন রোগ দেখা দেয় এজন্য গবাদিপশুকে টিকা দিন;
অতিরিক্ত গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগী বিক্রি করে টাকা ব্যাংকে জমা রাখুন এবং বন্যা মৌসুম শেষে আবার পালন শুরু করুন;
মোরগ-মুরগীর চেয়ে হাঁস বেশি রাখতে পারেন, পায়ে দড়ি বেঁধে এদের পানিতে ভাসিয়ে রাখা যায়;
বন্যার পানি বাড়িতে উঠলে গবাদি পশুকে কোথায় রাখবেন ও কীভাবে এদের রক্ষা করবেন তা আগে থেকেই ঠিক করে রাখুন৷
কৃষিকাজের জন্য করণীয়
স্বল্প সময়ে উত্পাদন করা যায় এমন উচ্চ ফলনশীল ফসলের চাষ করুন;
বন্যার পর চাষের জন্য ভালোভাবে বীজ সংরক্ষণ করে রাখুন;
কখনো কখনো মৌসুমের পরেও আশ্বিন-কার্তিকে (শরতের বন্যা) আকস্মিক বন্যা ফসলের ক্ষতি করে বিশেষ করে রোপা আমনের ক্ষতি হয়৷ এমন আশন্কা দেখা দিলে নবান্নের আগে পর্যাপ্ত খাদ্যসামগ্রী মজুদ করে রাখা যেতে পারে;
বন্যাপ্রবণ এলাকা হলে পুকুরের পাড় উঁচু করতে হবে এবং জাল দিয়ে বেড়া দিতে হবে ৷ বন্যার পানিতে যেন মাছ ভেসে না যায়;
কৃষিকমীᐂদের সাথে পরামর্শ করে জমিতে আবাদ করুন;
খাদ্য সংরক্ষণ
5.jpg
চিত্র: খাদ্য ও গৃহস্থালি সামগ্রী সংরক্ষণ
চিত্রসুত্রঃ বি ডি পি সি বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপ্রেয়াডᐂনেস সেন্টার
বন্যা মৌসুমের পূর্বে স্থানান্তর যোগ্য আলগা চুলা তৈরি করে রাখুন;
বন্যার মাসগুলিতে বাড়িতে কিছু চাল, ডাল, মুড়ি, চিড়া, গুড়, আটা, ছাতু, বিস্কুট, গুড়া দুধ ইত্যাদি ঘরে রাখুন;
khaddho_shamogri_shongrokkhon.jpg
চিত্র: খাদ্য সামগ্রী সংরক্ষণ
চিত্রসুত্র: বাংলাদেশ দু॔যোগব্যবস্থাপনা ব্যুরো
সারা বছর বন্যার সময়ের জন্য নির্দিষ্ট পাত্রে চাউল, ডাল জমা করে রাখতে পারেন;
বন্যার মাসগুলিতে ঘরে প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্যশস্য না রাখাই ভালো৷ প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্যশস্য বিক্রি করে টাকা ব্যাংকে জমা রাখুন:
বস্তা, মাটির পাতিল, কলসি, ডাবর বা জালা, ব্যাগ ইত্যাদিতে জরুরি খাদ্য সংরক্ষণ করা যায়৷ লক্ষ রাখতে হবে যাতে বন্যার পানিতে খাদ্যগুলো নষ্ট না হয়;
বন্যা আসার আগে কেরোসিন বা স্থানান্তর করা যায় এমন মাটির চুলা বানিয়ে রাখুন;
বন্যার সময় শুকনো কাঠ/ খড়ির অভাব দেখা দেয় তাই বন্যার মাসগুলোর জন্য শুকনো কাঠ সংগ্রহ রাখুন৷
নারীদের করণীয়
দুর্যোগের জন্য আগে থেকেই অর্থ সঞ্চয় করুন;
বন্যার আগেই রান্নাবান্নার জন্য আলগা চুলা ও জ্বালানি জোগাড় করে রাখুন;
ছেলে মেয়েদের সাঁতার শেখান;
10.jpg
চিত্রসুত্রঃ বি ডি পি সি বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপ্রেয়ার্ডনেস সেন্টার
অতিরিক্ত বন্যায় যাতে বাচ্চারা কষ্ট না পায় সেইজন্য আগে থেকেই নিরাপত্তা আশ্রয় হিসেবে আত্নীয় বা প্রতিবেশীর বাড়ি আশ্রয় কেন্দ্র হিসাবে চিহ্নিত করে রাখুন;
গর্ভবতী নারীর জন্য নিরাপদ আশ্রয় ঠিক করে রাখুন এবং এলাকার ধাই ও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন;
9.jpg
চিত্র:বন্যার সময় গভᐂবতী নারীদের বিশেষ যত্ন প্রয়োজন
চিত্রসুত্রঃ বি ডি পি সি বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপ্রেয়াডᐂনেস সেন্টার
বাড়িতে নিরাপদে সন্তান প্রসবের উপকরণ জোগাড় করে রাখুন;
বন্যার সময়ে সম্ভাব্য মেয়েলি রোগ-ব্যধি প্রতিকারের জন্য বন্যার আগে স্থানীয় পল্লী চিকিত্সক, ডাক্তার, সরকারি, বেসকারি সংস্থার স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শ নিন এবং সেই মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করুন;
চলাফেরার জন্য ছোট ডিংগি নৌকা তৈরি বা কলাগাছের ভেলা তৈরির জন্য বাড়িতে পর্যাপ্ত পরিমাণে কলাগাছ লাগান;
নারীদের বন্যাজনিত সমস্যার সমাধানে পুরুষরা যাতে এগিয়ে আসে সে ব্যাপারে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করুন৷
আশ্রয়কেন্দ্র ব্যবস্থাপনা
asroy_kendra.jpg
চিত্রসুত্র: বাংলাদেশ দু॔যোগব্যবস্থাপনা ব্যুরো
দুর্যোগের সময় জরুরি ভিত্তিতে সমস্যার সমাধানের জন্য এলাকার মানুষ, সরকারি সংস্থা এবং ইউনিয়ন পরিষদের সমন্বয়ে আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনা কমিটি গঠন করা;
বিগত বন্যায় আশ্রয়কেন্দ্রের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে আগামীতে সমস্যার সমাধানে কে কোন ভূমিকা পালন করবেন তা স্থির করা;
এলাকার মানুষকে নিজ নিজ বাড়ি উঁচু করার ব্যাপারে উত্সাহী করা;
এলাকাতে কোনো আশ্রয়কেন্দ্র না থাকলে জরুরি মুহুর্তে বিকল্প আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে কোন্ কোন্ স্থানকে ব্যবহার করা যায় তা চিহ্নিত করে রাখা;
nirapod_sthan_khuje_rakha.jpg
চিত্র : বন্যার আগেই নিরাপদ স্থান খুঁজে রাখা দরকার
চিত্রসুত্রঃ বি ডি পি সি বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপ্রেয়াডᐂনেস সেন্টার
সামাজিকভাবে আশ্রয় কেন্দ্র তৈরির ব্যবস্থা নেয়া এবং এ ব্যাপারে সরকারি, বেসরকারি অথবা ইউনিয়ন পরিষদের সাহায্য নেয়া৷
শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষণাবেক্ষণ
যে সমস্ত শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নিচু জায়গায় অবস্থিত সেগুলিকে সামাজিক উদ্যোগে উঁচু করা;
নতুন শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণের ক্ষেত্রে এলাকার পূর্বের ইতিহাস অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি পানির উচ্চতার রেকর্ড সম্পর্কে জেনে নেয়া এবং সেই উচ্চতার চেয়েও বেশি উচ্চতায় প্রতিষ্ঠানসমুহ নির্মাণ করা;
মাটি যাতে বন্যার পানিতে ভেঙ্গে না যায় তার জন্য গাছ লাগানো;
সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলিতে আধুনিক অর্থাত্ নাট-বোল্ট পার্টিশন পদ্ধতিতে জরুরি সময়ে স্থানান্তর যোগ্য শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করা;
শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষণাবেক্ষণে সামাজিক কমিটি গঠন করা;
শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান রক্ষণাবেক্ষণে সামাজিক তহবিল গঠন করা৷
বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধ রক্ষণাবেক্ষণ
cyclone-3.gif
চিত্র: বাঁধের দুপাশে পযাᐂপ্ত গাছ লাগাতে হবে
চিত্রসুত্রঃ বি ডি পি সি বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপ্রেয়াডᐂনেস সেন্টার
বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষার জন্য ঘাস ও গাছ লাগানো৷ সরকারিভাবে যে ঘাস লাগানো হয় তা যেন নষ্ট না হয়, গরু ছাগল যেন খেয়ে না ফেলে সেদিকে নজর রাখা;
বাঁধের ঘাস ও গাছপালা কেউ নষ্ট করলে তাকে বাধা দেয়া,
এলাকার লোকজনকে বাঁধে গাছ লাগাতে উদ্বুদ্ধ করা;
কোন কারণে কেউ বাঁধ কাটলে সবাই মিলে তাকে বাঁধা দেয়া৷ বাঁধ কাটা বেআইনি ও অপরাধ এজন্য সবাইকে সামাজিকভাবে রুখে দাড়াঁতে হবে;
বাঁধের কোথাও ফাটল দেখা দিলে চেয়ারম্যানকে বা সংশ্লিষ্ট কাউকে জানানো এবং দেরি না করে প্রয়োজনে নিজেরাই মেরামতের উদ্যোগ নেয়া৷ বালির বস্তা, বাশেঁর চাঁচ, বাঁশ, ইট, পাথর, কাঠের গুঁড়ি ইত্যাদি দিয়ে বাঁধ মেরামত করা৷
-
বাংলাদেশের কোথায় কি ধরনের বন্যা হয় মুদ্রণ ইমেল
বাংলাদেশের কোথায় কি ধরনের বন্যা হয়
ঝটকা / হঠাত্ বন্যা: এধরনের বন্যয় খুব দ্রুত ও হঠাত্ করে পানির স্তর বেড়ে যায়৷ সাধারণত এপ্রিলের মাঝামাঝিতে আমাদের দেশের উত্তর ও উত্তর-পূবাᐂঞ্চলে এধরনের বন্যা হয়ে থাকে৷ ভারতীয় পাহাড়ি এলাকায় অতি বর্ষণ হলে সেই পানি আমাদের দেশের দিকে নেমে আসে এই পাহাড়ি ঢলে অতি অল্পসময়ে অর্থাত্ কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘন্টায় পানিতে প্লাবিত হয়৷
বৃষ্টির কারণে বন্যা: প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে আমাদের দেশে প্রায় সময়ই বন্যা দেখা দেয়৷ অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট নির্মাণ, খাল, নদীনালা পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে জলাবদ্ধতা হয়ে বন্যা দেখা দেয়৷
নদীর কারণে বন্যা: অতি বৃষ্টির কারণে দেশের প্রধান তিনটি নদীর পানির স্তর বেড়ে বিপদসীমা অতিক্রম করলে বন্যা দেখা দেয়৷ এতে দেশের ৩৫-৭০ ভাগ এলাকা পানির নিচে ডুবে যায়৷ এধরনের বন্যা জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত অর্থাত্ ১৫-৪৫ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়ে থাকে৷ আমাদের দেশের অধিকাংশ বন্যা এধরনের৷ এদেশের ১ঌ৮৭, ১ঌ৮৮, ১ঌঌ৮ ও ২০০৪ সালের ভয়াবহ বন্যাগুলো এধরনের ছিলো৷
জলোচ্ছ্বাসের কারণে বন্যা: সাধারণত: দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন ইত্যাদি কারণে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসের ফলে এ ধরণের বন্যা হয়ে থাকে৷ এসময় সমুদ্রের পানির স্তর ১০ থেকে ১৫ সেঃ মিঃ পর্যন্ত উপরে উঠে যায় এবং দেশের ১৮,০০০ কিঃ মিঃ দীর্ঘ উপকূলীয় এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়৷ ১ঌঌ০ সালের ১০ই নভেম্বর এবং ১ঌঌ১ সালের এপ্রিলে সংঘটিত ভয়াবহ বন্যা এধরণের ছিলো৷ এছাড়াও জুন-সেপ্টেম্বর মাসের দক্ষিণ-পূর্ব মৌসুমী বায়ুর প্রবাহের ফলে সমুদ্রে জলোচ্ছ্বাস দেখা দেয় ও বন্যা হয়৷
জলাবদ্ধতার কারণে বন্যা: বর্তমানে বাংলাদেশের শহর এলাকায় এধরণের বন্যা দেখা দেয়৷ নগরায়নের জন্য নিচু জমি ভরাট করে ফেলা, প্রাকৃতিক পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা নষ্ট করে ফেলার কারণে জলাবদ্ধতা তৈরি হচ্ছে, পানি নেমে যেতে পারছে না৷ ফলে পানি আটকে থেকে শহর এলাকায় বন্যা দেখা দেয়৷ বড় শহর ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট ছাড়াও ময়মনসিংহ, যশোর, কুমিল্লা, নোয়াখালী, রংপুর শহরে জলাবদ্ধতার কারণে এখন বন্যা দেখা দিচ্ছে৷
বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া কয়েকটি ভয়াবহ বন্যা
১ঌ৭৪ 'র বন্যা: এ বন্যায় ২ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়, শতকরা ৫৮ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়৷ এ বন্যার পর দুভিᐂক্ষ দেখা দেয় এবং এই দুর্ভিক্ষে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়৷
১ঌ৮৪ 'র বন্যা: এই বছরের বন্যায় ৫২,৫২০ বর্গ কিঃমিঃ এর বেশি এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়৷
১ঌ৮৭ 'র বন্যা: এ বন্যায় ৫০,০০০ বর্গ কিঃ মিঃ এর বেশি এলাকা পানিতে প্লাবিত হয় এবং প্রায় ২০৫৫ জন প্রাণ হারায়৷
১ঌ৮৮ 'র বন্যা: এ বন্যায় শতকরা ৬১ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়, ৪০ লক্ষেরও বেশি মানুষ তাদের বাড়ীঘর হারায়, ২০০০-৬৫০০ এর মতো মানুষ মারা যায় ৷
১ঌঌ৮ 'র বন্যা: ১১০০ মানুষ মারা যায়, প্রায় ১ লাখ বর্গ কিঃ মিঃ এর বেশী এলাকা পানিতে প্লাবিত হয় এবং ৫ লাখ বাড়ি নষ্ট হয়৷
২০০৪ 'র বন্যা: শতকরা ৩৮ ভাগ এলাকা পানিতে প্লাবিত হয় এবং প্রায় ৩.৮ মিলিয়নের মতো লোক ক্ষতিগ্রস্থ হয়৷
তথ্যসূত্র :
* দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বু᐀রো (২০০২): দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল (১ম ও ২য় খন্ড)
* বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস সেন্টার বি ডি পি সি (২০০২): চেইঞ্জ এজেন্ট গাইড (বন্যা মোকাবেলায় পারিবারিক ও সামাজিক প্রস্তুতি সহায়িকা)
* বি ডি পি সি, বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস সেন্টার ( ২০০২): বন্যা মোকাবেলায় পারিবারিক ও সামাজিক প্রস্তুতি
* বি ডি পি সি, বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস সেন্টার ( ২০০২): বন্যা মোকাবেলায় পারিবারিক ও সামাজিক প্রস্তুতি (চেইঞ্জ -এজেন্টদের জন্য ম্যানুয়াল)
* Hossain Akhtar (2004): National Workshop on Options for Flood Risk and Damage Reduction In Bangladesh :“An Overview on Impacts of Flood in Bangladesh & Options for Mitigationâ€
-
বন্যার বিভিন্ন ধরন সমূহ মুদ্রণ ইমেল
বন্যার বিভিন্ন ধরন সমূহ
ক) ঝটকা / হঠাত্ বন্যা
খ) পাহাড়ি ঢল
গ) প্রচুর বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যা
ঘ) বড় বড় নদীর বন্যা
ঙ) জলোচ্ছ্বাসের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে প্লাবন/বন্যা
চ) শহরের জলাবদ্ধতা
তথ্যসূত্র :
* দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বু᐀রো (২০০২): দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল (১ম ও ২য় খন্ড)
* বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস সেন্টার বি ডি পি সি (২০০২): চেইঞ্জ এজেন্ট গাইড (বন্যা মোকাবেলায় পারিবারিক ও সামাজিক প্রস্তুতি সহায়িকা)
* বি ডি পি সি, বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস সেন্টার ( ২০০২): বন্যা মোকাবেলায় পারিবারিক ও সামাজিক প্রস্তুতি
* বি ডি পি সি, বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস সেন্টার ( ২০০২): বন্যা মোকাবেলায় পারিবারিক ও সামাজিক প্রস্তুতি (চেইঞ্জ -এজেন্টদের জন্য ম্যানুয়াল)
* Hossain Akhtar (2004): National Workshop on Options for Flood Risk and Damage Reduction In Bangladesh :“An Overview on Impacts of Flood in Bangladesh & Options for Mitigationâ€
-
বন্যা কেন হয় মুদ্রণ ইমেল
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ৷ এদেশের বড় বড় নদী যেমন পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্রর দু'কূল ছাপিয়ে অনেকসময়ই বন্যার সৃষ্টি হয়৷ যে কারণে এখানে বন্যা হয়
* প্রচুর বৃষ্টিপাত
* পাহাড়ি ঢল
* নদীর বাঁধ ভেঙ্গে গেলে
* বড় বড় নদীর গভীরতা কমে আসলে
* সমুদ্রের পানির স্তর বেড়ে গেলে
* বড় বড় নদীর পানি বেড়ে গেলে
* অপরিকল্পিতভাবে বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট তৈরি
* ছোট ছোট খাল-বিল, হাওর, পুকুর ভরাট হয়ে যাওয়া
* ভূমিকম্পের ফলে কখনো কখনো বন্যা দেখা দেয়৷
-
বন্যা
map.jpg
প্রায় প্রতি বছরই বর্ষার মৌসুমে আমাদের দেশে কম-বেশি বন্যা দেখা দেয়৷ বর্ষাকালে হিমালয়ের বরফ গলা পানি ও এর সাথে প্রচুর বৃষ্টির পানি বাংলাদেশের নদীগুলো দিয়ে বয়ে গিয়ে সমুদ্রে পড়ে৷ একসাথে এত পানি নদী দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার কারণে নদীর দু'কূল ভেসে দেশে বন্যা দেখা দেয়৷ নদীর পানি উপচিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়, ডুবে যায় রাস্তাঘাট, ঘরবাড়িসহ বিস্তৃর্ণ ফসলের জমি, বির্পযস্ত হয়ে পড়ে জনজীবন৷
তথ্যসূত্র :
* দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বু᐀রো (২০০২): দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল (১ম ও ২য় খন্ড)
* বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস সেন্টার বি ডি পি সি (২০০২): চেইঞ্জ এজেন্ট গাইড (বন্যা মোকাবেলায় পারিবারিক ও সামাজিক প্রস্তুতি সহায়িকা)
* বি ডি পি সি, বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস সেন্টার ( ২০০২): বন্যা মোকাবেলায় পারিবারিক ও সামাজিক প্রস্তুতি
* বি ডি পি সি, বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপেয়ার্ডনেস সেন্টার ( ২০০২): বন্যা মোকাবেলায় পারিবারিক ও সামাজিক প্রস্তুতি (চেইঞ্জ -এজেন্টদের জন্য ম্যানুয়াল)
* Hossain Akhtar (2004): National Workshop on Options for Flood Risk and Damage Reduction In Bangladesh :“An Overview on Impacts of Flood in Bangladesh & Options for Mitigationâ€
চিত্রসুত্র :
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ব্যুরো /গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার: বন্যা মোকাবেরায় সাধারন করণীয়৷
বি ডি পি সি বাংলাদেশ ডিজাস্টার প্রিপ্রেয়াডᐂনেস সেন্টার (২০০২): বন্যা মোকাবেলায় পারিবারিক সামাজিক প্রস্তুতি৷
-
খরা হলে কি করবেন মুদ্রণ ইমেল
খরা হলে কি করবেন
কাছাকাছি পুকুর, খালবিল, ডোবানালা বা নদী হতে দোন, সেউতি ও ছোট ছোট পাম্পের সাহায্যে জমিতে সেচ দিন
অনেকে মিলে অগভীর ও গভীর নলকূপ ও পাওয়ার পাম্পের চালু করে জমিতে সেচ দিন
চিত্র : সেচকাজে পাওয়ার পাম্পের ব্যবহার
পানির অপচয় কমানোর জন্য ছোট ছোট পাম্প মেশিনে ফিতা পাইপ ব্যবহার করে সেচ দিন
কাইচথোর অবস্থার আগে খরা দেখা দিলে প্রতিদিন সকাল বেলা শিশির ভেজা পাতার উপর রশি টেনে দেয়া
সম্পূরক সেচ সহায়তার জন্য স্থানীয় থানা কৃষি অফিসের সাথে যোগাযোগ রাখুন
-
খরা মোকাবেলায় প্রস্তুতি মুদ্রণ ইমেল
খরার হাত থেকে মাঠের ফসল রক্ষার জন্য কৃষক ভাইগণ জরুরিভাবে নিম্নরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন-
ধান রোপনের পর হতেই মাঝে মধ্যে ফসল, মাটি এবং বিরাজমান আবহাওয়ার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা৷
মাটি যাতে ভেজা থাকে এবং গাছের শিকড় যাতে মাটির গভীরে প্রেবশ করতে পারে সে জন্য জমি গভীরভাবে চাষ দেওয়া দরকার৷
জমির আইল ১০ সেঃ মিঃ হতে ২৫ সেঃ মিঃ উঁচু করে বাঁধা যাতে বৃষ্টির পানি ধরে রাখা যায়৷
জমির এক কোণায় ২X৩X২ মিটার আকারে একটি গর্ত করে রাখা যাতে বর্ষার পানি জমা করে রাখা যায়৷ খরা দেখা দিলে এ জমা পানি দিয়ে জমিতে সেচ প্রদান করা যাবে৷
বরেন্দ্র এলাকায় ফার্ম রিজার্ভারে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করা যেতে পারে৷ অসমতল জমির মাঝারী উচ্চতায় রিজার্ভার তৈরি করতে হবে যাতে উঁচু জমি হতে পানি গড়িয়ে এসে রিজার্ভারে জমা হয়৷ রিজার্ভার হতে প্রয়োজনের সময় এ পানি সেচ কাজে লাগানো যাবে৷ রিজাভারের গভীরতা ২ মিটার এবং এর আকার জমির ৫% এলাকা নিয়ে হতে পারে৷
বোরো মৌসুমের সেচ নালা নষ্ট না করা৷
আমন মৌসুমের শুরুতেই সেচ যন্ত্রাদি সচল অবস্থায় রাখা৷
খরার পূর্বাভাস দেখা মাত্রই জমিতে সম্পূরক সেচ প্রদানের প্রস্তুতি গ্রহণ করা৷
সেচের ব্যবস্থা করা (দেশীয় ও উন্নত পদ্ধতি), আর্দ্রতা সংরক্ষণ, সেচের প্রতিবন্ধকতা দূর করা প্রয়োজন৷
ধান রোপনের পর হতেই মাঝে মধ্যে ফসল, মাটি এবং বিরাজমান আবহাওয়ার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা৷
মাটি যাতে ভেজা থাকে এবং গাছের শিকড় যাতে মাটির গভীরে প্রেবশ করতে পারে সে জন্য জমি গভীরভাবে চাষ দেওয়া দরকার৷
জমির আইল ১০ সেঃ মিঃ হতে ২৫ সেঃ মিঃ উঁচু করে বাঁধা যাতে বৃষ্টির পানি ধরে রাখা যায়৷
জমির এক কোণায় ২X৩X২ মিটার আকারে একটি গর্ত করে রাখা যাতে বর্ষার পানি জমা করে রাখা যায়৷ খরা দেখা দিলে এ জমা পানি দিয়ে জমিতে সেচ প্রদান করা যাবে৷
বরেন্দ্র এলাকায় ফার্ম রিজার্ভারে বৃষ্টির পানি সংগ্রহ করা যেতে পারে৷ অসমতল জমির মাঝারী উচ্চতায় রিজার্ভার তৈরি করতে হবে যাতে উঁচু জমি হতে পানি গড়িয়ে এসে রিজার্ভারে জমা হয়৷ রিজার্ভার হতে প্রয়োজনের সময় এ পানি সেচ কাজে লাগানো যাবে৷ রিজাভারের গভীরতা ২ মিটার এবং এর আকার জমির ৫% এলাকা নিয়ে হতে পারে৷
বোরো মৌসুমের সেচ নালা নষ্ট না করা৷
আমন মৌসুমের শুরুতেই সেচ যন্ত্রাদি সচল অবস্থায় রাখা৷
খরার পূর্বাভাস দেখা মাত্রই জমিতে সম্পূরক সেচ প্রদানের প্রস্তুতি গ্রহণ করা৷
সেচের ব্যবস্থা করা (দেশীয় ও উন্নত পদ্ধতি), আর্দ্রতা সংরক্ষণ, সেচের প্রতিবন্ধকতা দূর করা প্রয়োজন৷
pump.jpg
চিত্র: খরাপ্রবণ এলাকার কৃষিকাজে সেচ ব্যবস্থা জরুরি
মাটি ভেজা রাখার জন্য জমিতে পর্যাপ্ত জৈব সার ব্যবহার করতে হবে৷
মাটির কিছুটা গভীরে চারা রোপন করতে হবে৷
আর্দ্রতা সংরক্ষণের জন্য যথা সময়ে আচড়া বা নিড়ানী দিয়ে কিংবা কুপিয়ে মাটির উপরের স্তর ভেঙ্গে দেয়া উচিত৷ সেই সাথে আগাছাও দমন করতে হবে৷
সম্ভাব্য ক্ষেত্রে খর-কুটা, পাতা, আগাছা, কচুরীপানা দ্বারা মাটির উপরের স্তরে জাবড়া আচ্ছাদন দিলে মাটির রস মজুদ থাকে৷
আউশ ও রোপা আমন ধানের জমি সমান করে তৈরি করা ও আইল মেরামত করা জরুরি, যাতে বৃষ্টি/সেচের পানির সর্বোচ্চ ব্যবহার হয়৷
পুকুর, ডোবা, নালায় পানি সংগ্রহ ও সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা৷
নাবী রোপা আমনের পরির্বতে যথা সম্ভব আগাম রোপা আমনের চাষ করা উচিত, যাতে কার্তিক-অগ্রাহায়ণ মাসের মধ্যে কেটে নিলে ফসল খরায় কম ক্ষতিগ্রস্থ হবে৷
-
আমন জমির জন্য যেসব দিকে নজর রাখা জরুরি মুদ্রণ ইমেল
আমন জমির জন্য যেসব দিকে নজর রাখা জরুরি:
জমিতে পানি আছে কিনা, থাকলে কি পরিমাণ আছে
জমিতে দড়ানো পানি আছে কিনা থাকলে মাটিতে পর্যাপ্ত রস আছে কিনা দেখা৷ এজন্য জমির বিভিন্ন জায়গার ১০-১৫ সেন্টিমিটার তলের/ গভীরের মাটি পরীক্ষা করে দেখা
হাতে মাটি নিয়ে চাপ দিলে তা যদি ঢেলা না হয় তবে খরার সূচনা বা শুরু বলে মনে করা যেতে পারে
মাটিতে যদি চিকন ফাটল দেখা দেয় তবে বুঝতে হবে মাটিতে রসের অভাব
থোর অবস্থা থেকে দানা বাধাঁর সময় খরা দেখা দিলে ছড়া পুরোপুরি বের হবে না, দানায় দুধ থাকবে না চিটে হয়ে যাবে৷
-
খরার পূর্বাভাস
আমন মৌসুমের যেকোনো সময় একটানা ১০-১৫ দিন স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত না হলে তা খরার পূর্বাভাস হিসাবে ধরে নেয়া যায়৷ খরার পূর্বাভাস উন্নত করার জন্য বর্তমানে চেষ্টা চালানো হচ্ছে৷ তবে স্থানীয়ভাবে যেসব লক্ষণকে খরার পূর্বাভাস হিসেবে ধরা হয় সেগুলো হলো:
মৌসুমের শুরুতে অতি বৃষ্টি হলে মৌসুমের শেষ দিকে খরা দেখা দিতে পারে
হালকা বুনটের উঁচু জমির ফসল খরা কবলিত হওয়ার আশন্কা বেশী
-
খরার প্রভাব
বাংলাদেশের চাষযোগ্য জমির শতকরা ৬০ ভাগে আমন ধান চাষ করা হয়৷ আমন চাষ বৃষ্টিনির্ভর হওয়ায় খরার কারণে ও পর্যাপ্ত সেচের অভাবে দারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়৷ এছাড়া সাধারণভাবে খরার বিরূপ প্রভাব ফসলের মাঠ, পশুসম্পদ, মত্স্য ও পরিবেশের উপর নানাভাবে পড়ে৷ যেমন -
খরার কারণে মাঠের ফসল ও গাছপালা ধীরে ধীরে প্রাণহীন হয়ে পড়ে ও মারা যায়
khorar_provab_jomi.jpg
চিত্র: খরায় আক্রান্ত রোপা আমন ফসলের জমি
ফসলের বৃদ্ধি কমে যায়
khorar_provab_nosthto_jomi.jpg
চিত্র:খরার কারণে নষ্ট হয়ে যাওয়া ফসলি জমি
চিত্রসুত্র: www.sfwmd.gov/.../photogelary/gelary.htm
খরার জন্য মাটির রস কমে গেলে ফসলের ফলন কম হয়
জমিতে চাষ দেয়া ও বীজ রোপন করা কষ্টকর হয়ে পড়ে
পানির স্তর নেমে যাওয়ার কারণে সেচকাজ ব্যহত হয়
দীর্ঘদিন খরা হলে বয়স্ক গাছের ক্ষতি হয়, পাতা ঝরে পড়ে, ফল ঝরে যায় বা ফেটে যায়
নদীনালা, খালবিল ও পুকুরের পানি কমে যায় এবং গরম হয়ে মাছ চাষ ব্যহত হয়
পশুপাখির খাদ্য ঘাটতি দেখা দেয়
উপকুলীয় এলাকার জমিতে লবনাক্ততা বেড়ে গিয়ে ফসলের ক্ষতি হয়
খরার প্রভাবে ফসলের রোগ বালাই বেড়ে যায়
খরা তীব্র ও অনেকদিন ধরে স্থায়ী হলে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে৷
-
খরার প্রকৃতি ও খরাপীড়িত এলাকা
drought-map_small.jpg
চিত্র: খরাপ্রবণ এলাকা
চিত্রসুত্র: www.fao.org/.../reports/y_sa/z_bd/bdmp265.htm
খরিপ খরা
খরার প্রকৃতি খরাপ্রবণ এলাকা
অতি তীব্র রাজশাহী, চাঁপাই নবাবগঞ্জ
তীব্র
দিনাজপুর,বগুড়া,কুষ্টিয়া,যশোর এবং ঢাকা ও টাঙ্গাইলের কিছু অংশ
মাঝারি রংপুর,বরিশাল এবং দিনাজপুর,কুষ্টিয়া ও যশোরের কিছু অংশ
সামান্য
তিস্তা ,ব্রক্ষ্নপুত্র ও মেঘনার পললভূমি এলাকা (রংপুর, লালমনিরহাট,কুড়িগ্রাম,গাইবান্ধা, ময়মনসিংহ,কিশোরগঞ্জ,নেত্রকোনা,মানিকগঞ্জ, শরিয়তপুর,নোয়াখালী,ফেনী)
রবি এবং খরিপ খরা
খরার প্রকৃতি
খরাপ্রবণ এলাকা
অতি তীব্র
রাজশাহী,নওগা, চাঁপাই নবাবগঞ্জ
তীব্র
বরেন্দ্র অঞ্চল ও অন্যান্য উল্লেখযোগ্য এলাকা নাটোর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, নওগাঁ, সাতক্ষীরা, পাবনা
মাঝারি মধুপুর,বরেন্দ্র অঞ্চল ও গাঙ্গেয় পলল ভূমির উল্লেখযোগ্য এলাকা (নাটোর, বগুড়া, পাবনা, জয়পুরহাট, ঠাকুরগাঁও, গাজীপুর, চুয়াডাঙ্গা,বাগেরহাট)
কম মাঝারি
তিস্তা ব্রহ্মপুত্র ও গাঙ্গেয় পলল ভূমি এলাকা (সিরাজগঞ্জ, পিরোজপুর, নড়াইল, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, জয়পুরহাট, ঠাকুরগাঁও)
সামান্য তিস্তা ,ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনার পললভূমি এলাকা (পঞ্চগড়, নীলফামারী, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, নোয়াখালী, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা)
অতি সামান্য
সিলেট, গোলাপগঞ্জ ও খুলনার বন্যাপ্রবণ এলাকা
সুত্র : কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর : খরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় সম্পূরক সেচ সহায়তার মাধ্যমে রোপা আমন ফসলের উত্পাদন বৃদ্ধি ৷
-
বিভিন্ন প্রকার/ শ্রেণীর খরা
খরার শ্রেণী ভাগ নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও সাধারণভাবে খরাকে তিন ভাগে ভাগ হয় :
আবহাওয়া সংশ্লিষ্ট খরা: এধরনের খরা বৃষ্টিপাত কম হওয়ার কারণে দেখা দেয় এবং কম সময় স্থায়ী হয়৷
ভূ-গর্ভস্থ জলাভাবজনিত খরা: এধরনের খরা একটি এলাকায় কোনো নির্দিষ্ট সময়ে দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটানোর মতো প্রয়োজনীয় ভূ-গর্ভস্থ (মাটির নীচে) পানির অভাবকে বোঝায় ৷
কৃষি খরা: কৃষি খরা বলতে চাষ মৌসুমে ফসলের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় মাটির আর্দ্রতা এবং বৃষ্টিপাতের অভাবকে বুঝায়৷ কৃষি বিজ্ঞানীগণ কৃষি খরাকে তিন ভাগে ভাগ করেছেন:
রবি খরা (নভেম্বর-ফেব্রুয়ারি/ অগ্রহয়ন-ফাল্গুন)
প্রাক খরিপ খরা (মার্চ-জুন/ চৈত্র- আষাঢ়)
খরিপ খরা (জুলাই-অক্টোবর/ শ্রাবণ-কার্তিক) বা আমন খরা
-
খরার কারণ
বিভিন্ন কারনে খরা হয়ে থাকে৷ খরা দেখা দেয়ার প্রধান কারনসমূহ হলো :
অনাবৃষ্টি
মাটির নিচের পানির স্তর নেমে যাওয়া
প্রখর রৌদ্রতাপ
বাতাসের আর্দ্রতা কমে যাওয়া
সেচের পানির অভাব
মাটির রস শুকিয়ে যাওয়া
জলাধার ভরাট ও শুকিয়ে যাওয়া
ব্যাপকভাবে গাছ কেটে ফেলা
প্রবল বায়ু প্রবাহ
-
খরা
drought_3.jpg
চিত্রসুত্র: www.ecomagic.org/fruition/drought.html
খরা বাংলাদেশের কোনো কোনো অঞ্চলের জন্য একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ৷ তবে খরার মাত্রা মরু অঞ্চলের মতো এতো তীব্র ও ভয়াবহ না হলেও তীব্র পানি সমস্যার কারণে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়৷ আমাদের দেশে বৃষ্টিপাত যেমন কোনো কোনো বছর কম বেশি হয় তেমনি দেশের সব জায়গায় সমান হয় না৷ যেমন বছরে সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয় রাজশাহী অঞ্চলে৷
বিশেষজ্ঞদের মতে চৈত্র থেকে কার্তিক মাস পর্যন্ত একনাগারে ১৫ দিন বা এর বেশি বৃষ্টি না হলে তাকে খরা বলা যেতে পারে৷ ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউট থেকে জানা যায়, সাধারণত আমন মৌসুমে সামান্য খরা থেকে অতি তীব্র খরার কারণে প্রায় ১০% থেকে ৬০% উত্পাদন কমে যায়৷ বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৩০-৪০ লক্ষ হেক্টর জমি খরায় পতিত হয়৷ ১ঌ৭ঌ, ১ঌ৮২, ১ঌ৮ঌ ও ১ঌঌ৪ সালে খরায় উত্তরাঞ্চলে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়৷
-
ঘূর্ণিঝড়ের শিকার কারা
ঘূর্ণিঝড়ের শিকার কারা
সাধারণভাবে ঘূর্ণিঝড়ের শিকার হলো উপকূলীয় এলাকা, ঐএলাকায় বসবাসকারী জনসাধারণ ও পরিবেশ৷ সাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের সাথে থাকে জলোচ্ছ্বাস এবং সেইসময় ঢেউ প্রায় ৪০ ফুট পর্যন্ত উচু হয়ে থাকে৷ প্রচণ্ড বাতাসের গতির সাথে পানির ঢেউ যোগ হয়ে ভয়ন্কর রূপ ধারণ করে এবং ধ্বংস হয় উপকূলীয় অঞ্চলের সম্পদ, অগণিত মানুষ প্রাণ হারায়, নিঃশেষ করে দেয় জীবন ব্যবস্থা৷
ঘূর্ণিঝড়ের প্রধাণ শিকার হচ্ছে:
- শিশু
- বৃদ্ধ
- বিকলাঙ্গ/অসুস্থ
- মহিলা
- গর্ভবতী মা
- সহায়ক প্রাণী যেমন গরু, ছাগল, মুরগী, মহিষ
- সাঁতার না জানা মানুষ
- গভীর সমুদ্রে মত্স্য আহরণে যাওয়া জেলেগণ৷
-
বিপদপূর্ণ এলাকা
এপ্রিল-মে এবং অক্টোবর ও নভেম্বর মাসের সাইক্লোন প্রায়ই মেঘনার ও চট্টগ্রামের তীর অঞ্চল দিয়ে সমুদ্র উপকূল অতিক্রম করে৷ তাই মেঘনায় অবস্থিত ব-দ্বীপ অঞ্চলসমূহের অদূরবতীᐂ দ্বীপসমূহ, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল ও বরগুনা জেলা সবচেয়ে বিপদপূর্ণ এলাকা বলে ধরা যেতে পারে৷
এছাড়াও ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস আক্রান্ত এলাকা হলো বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং হাতিয়া ও সন্দীপসহ বঙ্গোপসাগরের দূরবতীᐂ দ্বীপগুলো৷ ভৌগলিক অবস্থানের কারণে প্রতিবছরই আমাদের দেশে কম বেশি ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস হয়৷
-
ঘূর্ণিঝড় কখন আসে
বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড়ের ইতিহাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে গ্রীষ্মকালের শুরু এবং শেষের দিকে সবচেয়ে বেশি ঘূর্ণিঝড় হয়ে থাকে৷ অর্থাত্ বাংলা বর্ষের বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ (ইংরেজি এপ্রিল-মে) এবং আশ্বিন- কার্তিক (ইংরেজি অক্টোবর-নভেম্বর) মাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় হয়ে থাকে৷ বছরের অন্যান্য সময়েও ঘূর্ণিঝড় হয় তবে তার সংখ্যা ও ভয়াবহতা তুলনামূলকভাবে কম হয়ে থাকে৷
-
জলোচ্ছ্বাস কি
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্র বা চোখে বাতাসের চাপ খুব কম থাকায় কেন্দ্রের কাছাকাছি অঞ্চলের সমুদ্রের পানি কিছুটা ফুলে উঠলে একে জলোচ্ছ্বাস বলে৷
ঘুর্ণিঝড়ের সাথে জলোচ্ছ্বাস হলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়৷ বিশেষ করে দ্বীপ বা উপকূল দিয়ে ঘূর্ণিঝড় বয়ে যাওয়ার সময় ঝড়ের ঢেউ ওজোয়ারের কারণে প্লাবন ঘটে, ঝড়ের চোখও যদি সে স্থান অতিক্রম করে তবে ঐ স্থানের বিরাট অংশ ডুবে যায়৷ অমাবস্যা বা পুর্ণিমার ভরা কটালের সময় যদি জলোচ্ছ্বাস হয়, তবে তার ফল আরো মারাত্মক হয় ৷বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে ১ঌ৭০ ও ১ঌঌ১ সালে ভয়াবহ ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস হয়েছিলো৷ ১ঌ৭০ সালের ১২ই নভেম্বরের ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে প্রায় সাড়ে তিনলাখ মানুষ প্রাণ হারায়৷ ১ঌঌ১ সালের ২ঌশে মের ঘুর্ণিঝড়ে এক লাখ আটত্রিশ হাজার লোক মারা যায়৷ ঘরবাড়ি, গবাদি পশুপাখি ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়৷
ঝড়ের ঢেউ
ঘূর্ণিঝড়ের প্রবল বাতাস সমুদ্রের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় সমুদ্রের বুকে ঢেউ হয় এবং ঢেউগুলো বাতাসের গতির দিকে চলে৷ মহাপ্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড়ের ঢেউ ৪৫ ফুট পর্যন্ত উঁচু হতে দেখা গেছে৷
-
ঘুর্ণিঝড়ের চোখ
eye.jpg
ঘুর্ণিঝড়ের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে তার চোখ৷ এটা সবচেয়ে কম চাপ এলাকায় অবস্থিত এবং এর ব্যাস ৫ থেকে ৩০ মাইল পর্যন্ত হতে পারে৷ সাধারণত মারাত্মক ঘুর্ণিঝড়েরই চোখ দেখা যায়৷ চোখ ঝড়ের অন্যান্য অংশের চেয়ে ১০-১৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বেশি উত্তপ্ত থাকে৷ ঝড় যত মারাত্মক হয় চোখ ততই বেশি উত্তপ্ত হয়৷ চোখে বাতাসের গতিবেগ খুব কম হয়৷ সাধারণত প্রতি ঘন্টায় ১৫-২০ মাইলের বেশি হয় না এবং এখানে বৃষ্টি খুব কম হয়ে থাকে ৷ আবার চোখের ঠিক বাইরের অঞ্চলেই বাতাসের বেগ সবচেয়ে বেশি এবং বৃষ্টির পরিমাণও বেশি হয়৷
-
ঘুর্ণিঝড়ের আকার ও গতি
একটি তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের বেগ ঘন্টায় ২৫০ কিঃমিঃ পর্যন্ত হতে পারে;
ঘূর্ণিঝড়ের ব্যাস ৪০ কিঃ মিঃ থেকে ১০০০ কিঃমিঃ (বা ২৫ মাইল থেকে ৬০০ মাইল) পর্যন্ত হতে পারে;
ঘূর্ণিঝড় সাধারণত কোনো এক জায়গায় স্থির থাকে না লাটিমের মতো ঘুরতে ঘুরতে সামনে এগুতে থাকে৷ অনেকসময় ঘূর্ণিঝড় তার দিক পরিবর্তন করে৷ আবার লাটিম যেমন অনেক সময় জায়গা না বদলিয়ে এক জায়গায় ঘোরে, ঘূর্ণিঝড়ও ঠিক একইভাবে অনেক সময় স্থান পরিবর্তন না করে স্থির হয়ে থাকে৷
-
ঘূর্ণিঝড় কেন হয়
প্রখর রোদ ও অত্যধিক তাপে কোনো জায়গার বাতাস হালকা হয়ে উপরে উঠে গেলে ঐ স্থানে বাতাসের চাপ কমে যায় এবং নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়৷ এই ফাঁকা জায়গা পূরণ করার জন্য চারদিকের ঠান্ডা ও ভারী বাতাস মেঘসহ প্রবল বেগে ছুটে আসে এবং ঘুরতে ঘুরতে শূণ্যস্থানে প্রবেশ করে৷ ঘুরতে ঘুরতে ছুটে আসা বাতাসের এই প্রবাহকেই ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোন বলে৷ ঘূর্ণিঝড়ে কেবল বাতাস থাকেনা প্রবল বৃষ্টিপাতও হয়৷
image27.jpg
চিত্র: প্রচন্ড সূর্যের তাপে সাগরের পানি গরম হয়ে মেঘের সৃষ্টি
চিত্রসুত্র: ঘূণিᐂঝড়জনিত ক্ষয়ক্ষতি কমানোর লক্ষ্যে পরিবার ও সমাজভিত্তিক উদ্যোগ
এবং ঘূণিᐂঝড় সম্পকেᐂ গনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক শিক্ষা
সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা যখন ২৭ ডিগ্রী সেঃ বেশি হয় তখন ঘূর্ণিঝড় হবার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে৷ যে সকল সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রী সেঃ এর কম সেখানে সাধারণত ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় না৷
সমুদ্রে যে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হয় তাকে সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় বলে৷ আর স্থলভাগে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে তাকে কালবৈশেখী ও টর্নেডো বলে৷
সমুদ্রে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে সাধারণত ৩-৭ দিনের মধ্যে উপকূল অতিক্রম করে৷ আবার অনেকসময় ঘূর্ণিঝড় সমুদ্রেই দুর্বল হয়ে পরে উপকূলে আঘাত হানে না৷
সাধারণত বাংলাদেশে বৈশাখ- জ্যৈষ্ঠ ও আশ্বিন-কার্তিক মাসে ঘূর্ণিঝড় হয়৷ অধিকাংশ ঝড়ের সৃষ্টি হয় বঙ্গোপসাগরের আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি এলাকায়৷
< আগে পরে >
-
ঘুর্ণিঝড়ের শ্রেণীবিভাগ
বাতাসের বেগ বা গতি অনুসারে আমাদের দেশে ঘূর্ণিঝড়কে কয়েকটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়ে থাকে৷ এগুলো হলো :
image26.jpg
চিত্র: বাতাসে মেঘের সমন্বয়ে নিম্নচাপের সৃষ্টি
চিত্রসুত্র: ঘূণিᐂঝড়জনিত ক্ষয়ক্ষতি কমানোর লক্ষ্যে পরিবার ও সমাজভিত্তিক উদ্যোগ
এবং ঘূণিᐂঝড় সম্পকেᐂ গনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক শিক্ষা
১. নিম্নচাপ :বাতাসের গতিবেগ যখন ঘন্টায় ৪০-৫০ কি ঃ মিঃ৷
২. গভীর নিম্নচাপ :বাতাসের গতিবেগ যখন ঘন্টায় ৫১-৬১ কি ঃ মিঃ৷
৩. ঘূর্ণিঝড় :বাতাসের গতিবেগ যখন ঘন্টায় ৬২-৮৭ কি ঃ মিঃ৷
৪. প্রচন্ড ঘুর্ণিঝড় :বাতাসের গতিবেগ যখন ঘন্টায় ৮৮-১১৭ কি ঃ মিঃ৷
৫. হারিকেন গতিসম্পন্ন প্রচন্ড ঘুর্ণিঝড় :বাতাসের গতিবেগ যখন ঘন্টায় ১১৭ কি ঃ মিঃ এর বেশি৷
-
ঘূর্ণিঝড়
ghurni_jhor.gif
চিত্রসুত্র: ঘূণিᐂজনিত ক্ষয়ক্ষতি কমানোর লক্ষ্যে পরিবার ওসমাজভিত্তিক উদ্যোগ এবং
ঘূ॔ণিঝড় সম্পকেᐂ গনসচেতনতা বৃদ্ধিমূলক শিক্ষা
কোন জায়গার বাতাস গরম হলে তা হালকা হয়ে উপরে উঠে যায় এবং ঐ জায়গায় নিম্নচাপ সৃষ্টি হয়৷ তখন চারদিকের ঠান্ডা ও ভারী বাতাস প্রবল বেগে সেদিকে ছুটে আসে এবং ঘুরতে ঘুরতে নিম্নচাপ কেন্দ্রে প্রবেশ করে৷ এই প্রবল বায়ু প্রবাহকেই ঘূর্ণিঝড় বা সাইক্লোন বলে৷ বিভিন্ন দেশে ঘুর্ণিঝড়ের বিভিন্ন ধরনের নাম রয়েছে,যেমন উত্তর আমেরিকায় হারিকেন,দূরপ্রাচ্যে টাইফুন এবং আমাদের দেশে একে সাইক্লোন বা ঘুর্ণিঝড় বলে৷
-
ভূমিকম্প মুদ্রণ ইমেল
ভূমিকম্প
earthquake_1.jpg
চিত্র: ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত দালান
চিত্রসুত্র: www-ed.fnal.gov/lincon/w01/projects/earthquakes
প্রকৃতির নিয়মে ভূ-অভ্যন্তরে সৃষ্ট ভূআলোড়নের কারণে ভূ-পৃষ্ঠের কোনো কোনো অংশ হঠাত্ কেপেঁ উঠলে তাকে আমরা বলি ভূমিকম্প৷ এধরনের কম্পন প্রচন্ড,মাঝারি বা মৃদু হতে পারে৷ পৃথিবীতে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ৬ হাজার ভূমিকম্প হয়৷ কিন্তু এর বেশিরভাগই মৃদু ভূমিকম্প বলে সাধারণত আমরা অনুভব করি না৷ পৃথিবীর ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চলে (seisemic zone) বাংলাদেশ অবস্থিত বলে এদেশে মাঝে মাঝে ভূমিকম্প সংঘটিত হয়৷ প্রায় একশ বছর আগে ১৮ঌ৭ সালে এদেশের পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়৷ ১ঌঌ৭ সালের ২১শে নভেম্বর চট্টগ্রাম ও এর আশেপাশের এলাকায় প্রচন্ড এক ভূমিকম্প আঘাত হানে৷ এছাড়া ১ঌঌঌ সালে জুলাই-আগস্ট মাসে মহেশখালী ও পার্শ্ববতী এলাকায় ৪ দফা ভূমিকম্প হয়৷ এসব ভূমিকম্পের ফলে বেশ কিছু মানুষ মারা যায় এবং অনেক বাড়িঘর ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়৷
সুনামি
earthquake_3.jpg
চিত্র: ২০০৪সালের সুনামির ভয়াবহতা
চিত্রসুত্র: alwayswow.blogspot.com
পৃথিবীতে প্রতি বছর গড়ে প্রায় ছয় হাজার ভূমিকম্প সংঘটিত হয়৷ তবে বেশিরভাগই মৃদু আকারে হয় বলে সাধারণত তা অনুভূত হয় না৷ আবার অনেকসময়ই সমুদ্রের তলদেশে ভূকম্পন সংঘটিত হয় যাকে সুনামি বলা হয়৷ যদিও বেশিরভাগ সময় স্থলভাগে এর প্রভাব অনুভূত হয় না৷ কিন্তু অনেকসময় সুনামির কারণে প্রচন্ড জলোচ্ছ্বাস হয় এবং উপকুলীয় লোকজন, সমুদ্রে কর্মরত ব্যক্তিব॔গ ও জেলে-নৌকাসমূহ বিপদের সম্মুখীন হয়৷ গতবছর অথাᐂত্ ২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাসে ভয়াবহ সুনামি আঘাত হানে৷
ভূমিকম্প কেন হয়
ভূবিজ্ঞানীগণ ভূমিকম্পের বিভিন্ন কারণ বা উত্স চিহ্নিত করেছেন ৷ তারমধ্যে প্রধান হচ্ছে:
ক) হঠাত্ আন্দোলন বা টেকোনিক ভূমিকম্প
খ) আগ্নেয়গিরির কারণে ভূমিকম্প
গ) মানুষ সৃষ্ট ভূমিকম্প
ভূমিকম্প পরিমাপ
যে স্থান বা জায়গায় ভূমিকম্পের উত্পত্তি হয় তাকে এর কেন্দ্র বলে এবং কেন্দ্র থেকে তা ঢেউ বা তরঙ্গের মতো চারদিকে প্রসারিত হয়৷ এধরনের তরঙ্গ সিসমোগ্রাফ (Seismograph) বা ভূকম্পন লিখনযন্ত্রের সাহায্যে মাপা হয়৷ সাধারণত অনেক ভূমিকম্প আমরা অনুভব করি না৷ ভূকম্পন যখন মাত্রাধিক হয় এবং ঘরবাড়ি, দালানকোঠা,গাছপালা ইত্যাদি যখন নড়তে থাকে তখন আমরা অনুভব করি৷
ভূমিকম্পের মাত্রা দু'ভাবে পরিমাপ করা হয়-
তীব্রতা (Magnitude)
প্রচন্ডতা বা ব্যাপকতা (Intensity)
ভূমিকম্পের তীব্রতা সাধারণত রিখটার স্কেলে মাপা হয়৷ আর রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ৫ এর উপরে উঠলে যথেষ্ট বিপদের আশন্কা রয়েছে বলে মনে করা হয়৷
রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা
তীব্রতা ক্ষয়ক্ষতির আশন্কা
৫-এর বেশি বিপদের সম্ভবনা
৬-৬.ঌ ব্যাপক
৭-৭.ঌ ভয়াবহ
৮ বা এর বেশি অত্যন্ত ভয়াবহ
রিখটার স্কেলের মাত্রা ১ বৃদ্ধি পেলেই ভূকম্পনের মাত্রা ১০ থেকে ৩০ গুণ বেড়ে যায়৷
প্রচন্ডতা বা ব্যাপকতা
ভূমিকম্প হওয়ার পর এর ক্ষয়ক্ষতির মধ্যদিয়ে ব্যপকতাকে মাপা হয়৷ প্রচণ্ডতার দিক দিয়ে একে ভয়াবহ (violent), প্রচন্ড (severe), মাঝারি (moderate), মৃদু (mild) ইত্যাদি ভাগে ভাগ করা হয়৷
ভূমিকম্পপ্রবন এলাকা
earthqua_map.jpg
চিত্র: ভূমিকম্পপ্রবন এলাকা
চিত্রসুত্র: www.sos-arsenic.net/ images/earthqua1.jpg
বাংলাদেশে ১ঌঌ৩ সালে ভূমিকম্প বলয় মানচিত্র তৈরি হয়েছে৷ সিসমিক রিস্ক জোন হিসাবে বাংলাদেশকে প্রধান তিনটি বলয়ে ভাগ করা হয়েছে৷ বলয়গুলো হলো :
প্রথম বলয় (প্রলয়ন্কারী ভূমিকম্প) : বান্দরবান, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও রংপুর এই বলয়ে অবস্থিত এবং এই বলয়ে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য মাত্রা রিখটার স্কেলে ৭ ধরা হয়েছে৷
দ্বিতীয় বলয় (বিপদজনক ভূমিকম্প) : ঢাকা, টাঙ্গাইল, বগুড়া, দিনাজপুর, কুমিল্লা ও রাঙ্গামাটি এতে অবস্থিত এবং এখানে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য মাত্রা রিখটার স্কেলে ৬ ধরা হয়েছে৷
তৃতীয় বলয় (লঘু অঞ্চল) : উপরোক্ত এলাকাগুলো ছাড়া দেশের অন্যান্য এলাকাগুলো যা মোটামুটি নিরাপদ সেগুলো এবলয়ে অবস্থিত৷ এসব অঞ্চলে ভূমিকম্পের সম্ভাব্য মাত্রা রিখটার স্কেলে ৬ এর নিচে ধরা হয়েছে৷
বাংলাদেশে ভূমিকম্প-ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাসমূহ
অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা কম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা
লালমনিরহাট (প্রায় অর্ধাংশ) পঞ্চগড় চাঁপাইনবাবগঞ্জ (অধিকাংশ)
কুড়িগ্রাম ঠাকুরগাঁও রাজশাহী (অধিকাংশ)
রংপুর (কিছু অংশ) নীলফামারী নাটোর (কিছু অংশ )
গাইবান্ধা (প্রায় অর্ধাংশ) দিনাজপুর পাবনা(কিছু অংশ)
শেরপুর রংপুর (অধিকাংশ) কুষ্টিয়া
জামালপুর (প্রায় অর্ধাংশ) গাইবান্ধা (অর্ধাংশ) মেহেরপুর
ময়মনসিংহ (অধিকাংশ) লালমনিরহাট (প্রায় অর্ধাংশ) লালমনিরহাট (প্রায় অর্ধাংশ)
নেত্রকোনা জয়পুরহাট চুয়াডাঙ্গা
কিশোরগঞ্জ (অধিকাংশ) নওগাঁ ঝিনাইদহ
সুনামগঞ্জ বগুড়া মাগুরা
হবিগঞ্জ জামালপুর (প্রায় অর্ধাংশ)
ফরিদপুর
ব্রাক্ষণবাড়িয়া (কিছু অংশ)
রাজশাহী (কিছু অংশ) যশোর
সিলেট চাঁপাইনবাবগঞ্জ (কিছু অংশ) নড়াইল
মৌলভীবাজার নাটোর (অধিকাংশ) গোপালগঞ্জ
সিরাজগঞ্জ মাদারীপুর
পাবনা (অধিকাংশ) শরীয়তপুর
টাংগাইল চাঁদপুর (কিছু অংশ)
ময়মনসিংহ (কিছু অংশ) সাতক্ষীরা
কিশোরগঞ্জ (কিছু অংশ) খুলনা
ব্রাক্ষণবাড়িয়া (অধিকাংশ) পিরোজপুর
গাজীপুর বরিশাল
মানিকগঞ্জ লক্ষ্মীপুর
ঢাকা বাগেরহাট
মুন্সিগঞ্জ ঝালকাঠি
নারায়ণগঞ্জ ভোলা
নরসিংদী নোয়াখালী (অধিকাংশ)
কুমিল্লা পটুয়াখালী
চাঁদপুর (অধিকাংশ) বরগুনা
নোয়াখালী (কিছু অংশ) ফেনী (কিছু অংশ)
ফেনী (অধিকাংশ)
খাগড়াছড়ি (পার্বত্য)
রাঙ্গামাটি (পার্বত্য)
চট্টগ্রাম
বান্দরবান (পার্বত্য)
কক্সবাজার
সুত্র : দুর্য়োগ ব্যবস্থাপনা বু᐀রো,২০০১: ৩ঌ-৪০
ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্পগুলো
বাংলাদেশে ভূমিকম্প সবসময় না হলেও এর আশংন্কা রয়েছে৷ গত কয়েকবছরে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিকম্পের প্রচন্ডতা ও ব্যাপকতা লক্ষ্যণীয়৷ যেমন,
২০০১ সাল : ঐ বছর ২৬শে জানুয়ারি গুজরাটের ভয়াবহ ভুমিকম্পে প্রায় ২০ হাজার লোক নিহত হয়৷ রিখ্টার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৭.ঌ৷ এই ভূমিকম্পের কারণে শুধু ভারত নয় পাকিস্তানেরও বেশকিছু অঞ্চলে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৷ এমনকি ঐ ভূমিকম্প বাংলাদেশের বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা এলাকাতেও মৃদুভাবে অনুভূত হয়৷
১ঌঌঌ সাল : জুলাই-আগস্ট মাসে মহেশখালী ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রায় ৪ দফা ভূমিকম্প সংঘটিত হয়৷
১ঌঌ৭ সাল : ২১শে নভেম্বর ১ঌঌ৭ চট্টগ্রাম ও তত্সংলগ্ন এলাকায় এক প্রচন্ড ভূমিকম্পে আঘাত হানে সেসময় একটি পাঁচতলা ভবন মাটির নিচে ডেবে যায় ৷
১৮ঌ৭ সাল : প্রায় একশ বছর আগে ১৮ঌ৭ সালে এ দেশের পূর্বাঞ্চলে যে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল তা ভুলবার মতো নয়৷ এমন কি কোনো কোনো ভূমিকম্পে নদ-নদীর গতিপথ পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়ে গেছে৷
এছাড়া ভূমিকম্পের কারণে গত কয়েক বছরে তাইওয়ান, তুরস্ক, ভেনিজুয়েলা, জাপান, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের জনজীবনে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে৷ কোনো কোনো জায়গায় বার বার ভুমিকম্পের ঘটনাও ঘটেছে৷ যেমন তাইওয়ানে একবার প্রচন্ড ভুমিকম্প হওয়ার পরই আবার ভূমিকম্প হয়েছে৷
বিগত দেড় শতাব্দীতে এ অঞ্চলে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ভূমিকম্পগুলো
তারিখ ভূমিকম্পের নাম সংগঠিত অঞ্চল তীব্রতা (রিখটার) ক্ষয়ক্ষতি
১০ জানুয়ারি, ১৮৬ঌ কাছাড় ভূমিকম্প আসামের মণিপুর ও কাছাড় অঞ্চল (উত্পত্তি: আসামের জৈন্তিয়া পাহাড়) ৭.৫ আসামের মণিপুর, কাছাড় ও বর্তমান বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে প্রভূত ক্ষয়ক্ষতি হয়৷
১৪ জুলাই, ১৮৮৫ বেঙ্গল ভূমিকম্প জামালপুর, শেরপুর ও ময়মনসিংহ এলাকা (উত্পত্তি: বগুড়া অঞ্চলে) ৭.০ সিরাজগঞ্জ-বগুড়া অঞ্চল এবং জামালপুর, শেরপুর ও ময়মনসিংহ এলাকার ব্যাপক ক্ষতি হয়৷
১২ জুন, ১৮ঌ৭ গ্রেট ইন্ডিয়ান ভূমিকম্প সমগ্র আসাম এবং বাংলাদেশের সিলেট, ময়মনসিংহ এর উত্তর অঞ্চল এবং রংপুর অঞ্চলসমূহ (উত্পত্তি: আসামের শিলং মালভূমি) ৮.৭ সমগ্র আসাম এবং বাংলাদেশের সিলেট, ময়মনসিংহ এর উত্তর অঞ্চল এবং রংপুরের পূর্বাঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতি ছিল মারাত্মক৷
৮ জুলাই, ১ঌ১৮ শ্রীমঙ্গল ভূমিকম্প শ্রীমঙ্গল, আখাউড়া ও ঢাকা অঞ্চল (উত্পত্তি: শ্রীমঙ্গল সংলগ্ন বালিসেরা উপত্যকা) ৭.৬ শ্রীমঙ্গলে ক্ষয়ক্ষতির তীব্রতা ছিল খুব বেশি এবং ঢাকা পর্যন্ত তীব্রতা অনুভূত হয়৷ আখাউড়া রেল স্টেশনের পাকা অংশ সম্পূর্ণ ধ্বংস হয় এবং ভবনগুলো মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়৷
২ জুলাই, ১ঌ৩০ ধুবড়ি ভূমিকম্প রংপুর জেলার পূর্বাঞ্চল (উত্পত্তি : আসামের ধুবড়ি শহর এলাকা) ৭.১ রংপুর জেলার পূর্বাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি হয়৷
১৫ জানুয়ারি, ১ঌ৩৪ বিহার-নেপাল ভূমিকম্প বিহার, নেপাল ও উত্তর প্রদেশ (উত্পত্তি : দারভাঙ্গার উত্তরে) ৮.৩ বিহার, নেপাল ও উত্তর প্রদেশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়৷
১৫ আগস্ট, ১ঌ৫০ আসাম ভূমিকম্প সমগ্র বাংলাদেশ (উত্পত্তি আসামের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অরুণাচল প্রদেশ) ৮.৫ পৃথিবীর প্রচন্ড ভূমিকম্পগুলোর অন্যতম৷ সমগ্র বাংলাদেশে এর তীব্রতা অনুভূত হয়৷
সুত্র : দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বু্রো,২০০১:৪১
সহায়ক গ্রন্থাবলী : দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ব্যুরো (২০০১): ভূমিকম্প বিষয়ে গণসচেতনতা
চিত্রসুত্র: ©জfহিদুর রহমান/ ডি.নেট
ভূমিকম্প হলে আমাদের যেসব ক্ষতি হতে পারে
building_crash.jpg
চিত্র: ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি
© জাহিদুর রহমান/ ডি.নেট
আমাদের মনে রাখা দরকার যে, অন্যান্য প্রাকৃতিক দুযোগ যেমন ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, খরা ইত্যাদির মতো ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দেয়ার কোনো পদ্ধতি এখনও আবিষ্কৃত হয়নি৷ এটা অত্যন্ত আকস্মিকভাবে ঘটে এবং এতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও তুলনামূলকভাবে বেশি৷ ভূমিকম্পের কারণে যেধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকে তা হলো :
বিভিন্ন পাকা ভবন ও ঘরবাড়ির নিচে চাপা পড়ে বহুসংখ্যক মানুষ মৃতু᐀বরণ করে,
অনেকে আহত হয় ও পঙ্গু হয়ে যায়৷ ঘরবাড়ির নিচে বহু লোক আটকা পড়ে৷
ঘরবাড়ি, ধনসম্পদ ও যাতায়াত ব্যবস্থা বিনষ্ট হয়৷
চুলার আগুনে, বৈদু᐀তিক শর্টসার্কিট হওয়ায়, পেট্রোল-কেরোসিন ইত্যাদি বা রাসায়নিক পদার্থসমূহের মিশ্রণে আগুন লেগে অগ্নিকান্ডের সৃষ্টি হয় এবং তাতে বহুসংখ্যক মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়, এমনকি মারাও যায়৷
গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগী ব্যাপকভাবে মৃতু᐀বরণ করে এবং গাছপালা ও ক্ষেতের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়৷
রাস্তা-ঘাটের ক্ষতি; ব্রিজ-কালভার্ট-সেতু ইত্যাদি ধ্বংস হয় এবং রাস্তা-ঘাটে গাছপালা, লাইটপোস্ট ইত্যাদি পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়৷
বৈদু᐀তিক তার বিচ্ছিন্ন হয়ে, বৈদু᐀তিক খুঁটি পড়ে বা ভেঙ্গে গিয়ে, টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন লাইন বিচ্ছিন্ন হয়ে আলোর স্বল্পতা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার মারাত্মক ক্ষতি হয়৷
হাসপাতাল, ক্লিনিক ইত্যাদি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে চিকিত্সা ও সেবা কাজ বিঘ্নিত হয় এবং পরিবহণ গাড়ি ও যন্ত্রাদি ধ্বংস হয়ে পরিবহণ ব্যবস্থার মারাত্মক বিপর্যয় ঘটে৷
অনেক সময় সমুদ্র উপকূল ও বড় নদী-তীরে জলোচ্ছ্বাস হয়৷
অনেক সময় নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয় এবং পুকুর, নদী-নালা শুকিয়ে যায়৷
অনেক সময় উঁচুভূমি ডেবে গিয়ে জলাশয়ে পরিণত হয় এবং মাঠে ফাটল সৃষ্টি হয়৷
ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনতে কি করতে পারি
বাংলাদেশের অধিকাংশ এলাকা ভূমিকম্প জোনে অবস্থিত তাই সর্বদা এদেশে ভূমিকম্পের আশন্কা রয়েছে৷ এজন্য আমাদের ভূমিকম্পের ব্যাপারে সচেতন হওয়া দরকার৷ আমরা ভূমিকম্পকে ঠেকাতে না পারলেও এর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কমিয়ে আনতে বিভিন্ন পদক্ষেপ ও প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারি৷ দুইভাবে এই প্রস্তুতি নেয়া যায়-
১) ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পর্যায় এবং
২) সরকারি ও বেসরকারি পর্যায় ৷
ভূমিকম্প মোকাবেলায় ব্যক্তিগত ও পারিবারিক পর্যায়ে করণীয় পূর্বপ্রস্তুতিসমূহ :
ভূমিকম্প সম্পর্কে ধারণা করুন;
আপনার ঘরবাড়ি শক্ত করে তৈরি করুন;
building_repair.jpg
© জাহিদুর রহমান/ ডি.নেট
পুরানো ঘরের খুঁটি ও ভিত মেরামত করুন;
শক্ত মাটিতে ঘর বা ভবন নির্মাণ করুন৷
কখনই গর্ত বা নরম মাটির উপর বাড়ি বা ভবন নির্মাণ করবেন না;
পাকা ভবনের শক্ত ভিত দিন এবং প্রয়োজনে দালান বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীর পরামর্শ প্রহণ করুন৷
ভবনের উচ্চতা ও লোডের হিসাব অনুযায়ী ভবনের ভিত্তি দিন৷ এমএস রড ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করুন ;
অবকাঠামোতে রিইনফোর্সড কংক্রিট ব্যবহার করুন;
আপনার বাড়ি বা ভবনটি পার্শ্ববর্তী বাড়ি বা ভবন থেকে নিরাপদ দূরত্বে নির্মাণ করুন;
বাড়িতে বৈদু᐀তিক লাইন ও গ্যাস লাইন অত্যন্ত নিরাপদ ও সতর্কভাবে লাগান;
গ্যাসের চুলা ব্যবহারের পর নিভিয়ে ফেলুন এবং ভূমিকম্পের সময় গ্যাসের চুলা বন্ধ রাখুন কেননা ভূমিকম্পের সময় চুলা উল্টে আগুন ধরে যেতে পারে;
chula.jpg
চিত্র: ভূমিকম্পের সময় গ্যাসের চুলা বন্ধ রাখুন
© জাহিদুর রহমান/ ডি.নেট
বাড়িতে সদস্যের সংখ্যানুযায়ী মাথার হেলমেট কিনে রাখুন যাতে ভূমিকম্পের সময় ব্যবহার করা যায়;
খাট, টেবিল ইত্যাদি শক্ত করে তৈরি করুন যাতে বিপদের সময় তার নিচে আশ্রয় নেওয়া যায়;
ঘর বা পাকা ভবনের একাধিক দরজা রাখুন যাতে বিপদের সময় দ্রুত বের হওয়া যায়;
ব্যাটারিচালিত রেডিও, টর্চলাইট ও প্রাথমিক চিকিত্সার সরঞ্জাম হাতের কাছে রাখুন;
পরিবারের সবাইকে বিদু᐀তের মেইন সুইচ,গ্যাসের চুলা,বাল্ব ইত্যাদি বন্ধ করা শেখান;
টিনের ঘর হলে চারের টুঁই - এর সাথে কয়েকটি লম্বা ও শক্ত দড়ি বেঁধে রাখুন যাতে প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারেন;
ভারী কোনো জিনিস উপরে তুলে না রেখে মেঝের কাছাকাছি রাখুন;
পরিবারের সকল সদস্যকে ভূমিকম্পের ঝুঁকি ও করণীয় সম্পর্কে অবহিত রাখুন;
awearness.jpg
চিত্র: ভূমিকম্পের ঝুকি ও করণীয় সম্পকেᐂ পরিবারের সকলে জেনে নিন চিত্রসুত্র: © জাহিদুর রহমান/ ডি.নেট
সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে ভূমিকম্প সম্পর্কিত প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করুন এবং অপরকেও অংশগ্রহণ করতে বলুন;
ভূমিকম্প সংক্রান্ত স্থানীয় স্বেচ্
-
আর্সেনিক দূষণ মুদ্রণ ইমেল
আর্সেনিক
আর্সেনিক হলো এক ধরনের বিষ৷ এর কোনো রং,গন্ধ ও স্বাদ নেই৷ আমাদের দেশের বেশিরভাগ এলাকার টিউবওয়েলের পানিতে আর্সেনিক পাওয়া গেছে৷ আর্সেনিক রয়েছে এমন টিউবওয়েলের পানি খাওয়ার জন্য বিভিন্ন এলাকার মানুষ আর্সেনিকজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে৷ অনেকে এ রোগের কারণে ধুঁকে ধুঁকে জীবন কাটাচ্ছে এবং কেউ কেউ মারা যাচ্ছে৷ তাই বাংলাদেশে আর্সেনিক দূষণকে প্রাকৃতিক দুযো॔গ মনে করা হয়৷ বিশেষজ্ঞের মতে, বাংলাদেশের মতো বিশ্বের অন্য কোনো দেশে এত বেশি লোক আর্সেনিক ঝু৺কির মধ্যে নেই৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, প্রতি লিটার পানিতে .০৫ মিলিগ্রামের বেশি আর্সেনিক থাকলে তা মানুষের শরীরে জন্য ক্ষতিকর৷
আর্সেনিক দূষণ এলাকা
arsenic_map-3.gif
চিত্রসুত্র: www.sadia.gov/media/NewsRel/NR2000/Arsenic.htp
আর্সেনিক দূষণ একটি মারাত্মক ও ভয়াবহ সমস্যা হিসাবে এদেশে দেখা দিয়েছে৷ এদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৫ঌটি জেলার নলকূপের পানিতে আর্সেনিক দূষণ রয়েছে৷ শেরপুর, কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি ও বান্দরবান এই ৫টি জেলা এখনও আর্সেনিক দূষণমুক্ত বলে মনে করা হয়৷
আর্সেনিক কেন সমস্যাজনক
বাংলাদেশের বেশিরভাগ এলাকার নলকূপের পানিতে আর্সেনিক বিষ রয়েছে৷ পানিতে আর্সেনিক বিষ থাকলেও আমরা তা খালি চোখে দেখতে পাই না৷ একারণে আমরা না জেনেই অনেকসময় আর্সেনিক বিষ রয়েছে এমন নলকূপের পানি পান করি৷ আর এভাবে আর্সেনিক বিষ পান করার কারণে আমরা আর্সেনিকে আক্রান্ত হই৷ পানি বা অন্য কোনো মাধ্যম হতে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি পারিমাণে আর্সেনিক শরীরে প্রবেশ করলে, ধীর ধীরে দেহে তা জমা হতে থাকে এবং মানুষের দেহে আর্সেনিকের বিষক্রিয়া দেখা দেয়৷ মানুষের দেহে সাধারণত আর্সেনিকের বিষক্রিয়ার লক্ষণ ২ থেকে ১০ বছর অথবা এরচেয়েও বেশি বছর পর দেখা যায়৷ এটি নির্ভর করে মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর৷ আর্সেনিক ছোঁয়াচে বা বংশগত রোগ নয়৷
আমাদের দেশে আর্সেনিক আক্রান্ত রোগীর লক্ষণসমূহ
কোনো ব্যক্তির চুল, নখ ও চামড়া পরীক্ষা করলে বোঝা যায় আর্সেনিকে আক্রান্ত কিনা৷ তবে একজনের শরীরে আর্সেনিকের লক্ষণ প্রকাশ পেতে ৬ মাস থেকে ২০ বছর পর্যন্ত সময় লাগে এবং তিনটি পর্যায়ে লক্ষণগুলো দেখা দেয়৷ লক্ষণগুলো নিচে দেয়া হলো :
প্রথম পর্যায়ে অল্পমাত্রায় আর্সেনিকে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে যেসব লক্ষণ দেখা দেয় তা হলো:
রোগীর গায়ে (যেমন বুকে, পিঠে, পেটে) কালো কালো দাগ দেখা দেয় ৷ চামড়ার রং কালো হয়ে যায় বা ছোট ছোট কালো দাগ হয়;
melanosis.gif
হাত ও পায়ের তালু শক্ত খসখসে হয়ে যায় ও ছোট ছোট শক্ত গুটি দেখা দিতে পারে৷ পরে কালো কালো দাগ হয়;
keratosis_1.gif
গায়ের চামড়া মোটা ও খসখসে হয়ে যায়;
বমি বমি ভাব এবং বমি হয়; পাতলা পায়খানা হয়;
খাওয়া-দাওয়ায় অরুচি, রক্ত আমাশয়, মুখে ঘা ইত্যাদি দেখা দেয়;
কখনো কখনো জিহ্বার উপর ও গালের ভিতর কালো হয়ে যেতে পারে৷
দ্বিতীয় পর্যায়ের লক্ষণসমূহ
চামড়ার বিভিন্ন জায়গায় সাদা, কালো বা লাল দাগ দেখা দেয়;
heucomelanosis.gif
হাত -পায়ের তালু ফেটে যায় ও শক্ত গুটি ওঠে;
keratosis.gif
keratosis_2.gif
হাত-পা ফুলে ওঠে ;
arsenic_leg.jpg
তৃতীয় পর্যায়ের লক্ষণসমূহ
কিডনী, লিভার ও ফুসফুস বড় হয়ে যায় ও টিউমার হয়
tumour-due-to-arsenic.gif
হাত ও পায়ে ঘা হয় ,পচন ধরে;
চামড়া, মূত্রথলি, ফুসফুসে ক্যান্সার হয়;
কিডনী ও লিভার অকেজো হয়ে যায়;
জন্ডিস হয়;
পেটে ব্যাথা ও মাথায় ব্যাথা হয়;
রক্তবমি হয়৷
আর্সেনিকে আক্রান্ত হলে আপনার জন্য করণীয়
ক) আর্সেনিক রোগের উপসর্গ দেখা দিলে ডাক্তার অথবা স্থানীয় স্থাস্থ্যকমীর সাথে দেখা করুন ও পরামর্শ মেনে চলুন;
খ) অবশ্যই আর্সেনিকমুক্ত পানি পান করুন ;
গ) নদী, পুকুর, বিল ইত্যাদির পানি ছেঁকে ২০ মিনিট ফুটিয়ে পান করুন;
ঘ) বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি পান করতে পারেন , এজন্য বৃষ্টি শুরু হওয়ার ৫মিনিট পর বৃষ্টির পানি ধরতে হবে;
ঙ) আর্সেনিকে আক্রান্তরোগী সবধরনের খাবার খেতে পারেন৷ তবে শাক-সবজি ও পুষ্টিকর খাবার বেশি করে খেতে হবে;
চ) আমিষ, ভিটামিনযুক্ত (এ, ই, সি) খাবার বেশি করে খাবেন; এতে তাড়াতাড়ি ভালো হয়ে উঠবেন; যে খাবারগুলোতে এসব পাবেন তাহলো -
আমিষ জাতীয় খাবার : মুগ, মসুর ও ছোলার ডাল, সয়াবিন, চীনাবাদাম, শিমের বীচি, কাঁঠালের বীচি৷
ভিটামিন 'এ' জাতীয় খাবার : তাজা শাক-সবজিতে প্রচুর পরিমানেভিটামিন 'এ' রয়েছে যেমন, সজিনাশাক, ডাটাশাক, পুঁইশাক, লালশাক, কচুশাক, পাটশাক, কলমিশাক, শিম, মিষ্টিকুমড়া, গাজরে৷
ভিটামিন 'সি' জাতীয় খাবার : সরিষাশাক, ছোলাশাক, শসা, পুঁইশাক, লালশাক, সজিনাশাক, কলমিশাক, কচু, মূলা, বাঁধাকপি, শিম, করলা, কাঁচা পেপে, টমেটো, আমলকি, পেয়ারা, লেবু, কামরাঙ্গা, করমচা ইত্যাদিতে ভিটামিন 'সি' রয়েছে৷
ভিটামিন 'ই' জাতীয় খাবার : সয়াবিন, বাদাম, মলা ও ঢেলা মাছ, ডিমের কুসুম, সুজি ইত্যাদি থেকে আমরা ভিটামিন 'ই' পাবো৷
আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা
প্রতি লিটার পানিতে আর্সেনিকের সহনীয় মাত্রা .০৫ মিলিগ্রাম৷ ০.০৫ মিলিগ্রামের বেশি আর্সেনিক থাকলে সে পানি পান করা ও রান্নার কাজে ব্যবহার করা যাবে না৷
আর্সেনিক দূষণ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কি করবেন
নলকূপ বসানোর আগে মাটির নিচের পানিতে আর্সেনিকের মাত্রা পরীক্ষা করে দেখতে হবে,
পুরানো নলকূপের পানিতে আর্সেনিক আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে,
আর্সেনিকযুক্ত পানি রান্না ও খাওয়ার জন্য ব্যবহার করবেন না,
পাতকুয়ার পানিতে আর্সেনিক আছে কিনা পরীক্ষা করে পান করুন
পুকুর বা নদীর পানি বিশুদ্ধ করে পান করতে পারেন৷ এজন্য এক কলসি (২০ লিটার) পানিতে আধা চামচ (১০ মিলিগ্রাম) ফিটকিরি মিশিয়ে ২-৩ ঘন্টা রেখে দিন৷ ফিটকিরি মিশালে পানির ময়লা কলসির নিচে জমা হবে৷ সাবধানে পাত্রের উপরের পরিষ্কার পানি অন্যপাত্রে ঢেলে নিয়ে ফুটিয়ে পান করুন ৷
বৃষ্টির পানি আর্সেনিকমুক্ত৷ তাই বৃষ্টি শুরু হওয়ার ৫মিনিট পর পরিষ্কার পাত্রে পানি ধরে সেই পানি খাওয়া ও রান্নার কাজে ব্যবহার করতে পারেন৷
তথ্যসুত্র
হীরেন্দ্র কুমার দাস (২০০১) : বাংলাদেশ আর্সেনিক ভয়াবহতা ও সম্ভব্য প্রতিকার
ঢাকা আহছানিয়া মিমন : আর্সেনিকমুক্ত পানি
চিত্র : Dr. Rubaiul Murshed et.al: Health Services Management In Bangladesh & The Problems of Arsenicosis
-
নদী ভাঙ্গন
river_bank_erosion.jpg
বন্যা, ঘুর্ণিঝড়ের মতো নদী ভাঙ্গনও আমাদের দেশের জন্য একটি দুর্যোগ৷ এদেশের বড় বড় নদীগুলোতে ভাঙ্গন এখন স্বাভাবিক ঘটনা, নদীভাঙ্গন এমন এক ধরনের দুর্যোগ যা মূলত আস্তে আস্তে ঘটে৷ '৭০ ও ৮০'র দশক থেকে এদেশে নদী ভাঙ্গনের তীব্রতা যেমন বেড়েছে তেমনি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বেড়েছে অনেক৷ প্রতিবছর বাংলাদেশে গড়ে ৮৭০০ হেক্টর জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়৷ যার অধিকাংশই হলো কৃষি জমি৷ এছাড়া প্রতিবছর নদী ভাঙ্গনে প্রায় ১০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হয়৷ এই ক্ষতিগ্রস্থ মানুষজনের অর্ধেকের বেশির পক্ষে টাকার অভাবে ঘরবাড়ি তৈরি করা সম্ভব হয় না৷ তারা পরিনত হয় গৃহহীন, ছিন্নমূল মানুষ৷ এধরনের গৃহহীন, ভূমিহারা মানুষেরা সাধারণতঃ বাঁধ, রাস্তা, পরিত্যাক্ত রেলসড়ক, খাসচর, খাসজমিতে ভাসমান জীবনযাপন করে৷ অনেকেই আবার কাজের খেঁাজে শহরে চলে আসে৷ নদী ভাঙ্গনের কারণে তাই বেড়ে যাচ্ছে বেকারত্ব, নানা রকমের সামাজিক ও পারিবারিক সংকট ।
নদী ভাঙ্গন কেন হয়
বাংলাদেশের প্রায় সব নদীই সর্পিল বা বিনুনী ধরনের যা নদী ভাঙ্গনের কারণ৷ এছাড়া এদেশে বন্যা প্রায় প্রতিবছরই হয়৷ বন্যার সময় নদীতে পানি ও স্রোত বেড়ে যায় একারণেও নদী ভাঙ্গে৷
নদী ভাঙ্গন এলাকা
আমাদের দেশের প্রায় সব এলাকাই নদী ভাঙ্গনের শিকার৷ তবে সব জায়গায় এর তীব্রতা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সমান নয়৷ বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সময় নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ হয়৷
বাংলাদেশের যে নদীগুলোতে নদী ভাঙ্গন হয়
পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধলেশ্বরী, মহানন্দা, মধুমতি, ধরলা, কুশিয়ারা, কীর্তিনখোলা, আঁড়িয়ালখাঁ, শংখ, সুরমা, কর্ণফুলী, গড়াই, কপোতাক্ষ ইত্যাদি৷ ক্ষতিগ্রস্থ জেলা: চাঁদপুর, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, সাতক্ষীরা, কুড়িগ্রাম, লালমনির হাট, রংপুর, গাইবান্ধা, ইশ্বরদী, শরীয়তপুর, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, নারায়নগঞ্জ, কুষ্টিয়া, নড়াইল, কক্সবাজার৷
নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পেতে কি করবেন
নিরাপদ জায়গায় ঘরবাড়ি বানাতে হবে;
নদী ভাঙ্গনের গতি বুঝে ঘরবাড়ি সরিয়ে নিতে হবে;
ভাঙ্গন শুরু হলে ভাঙ্গনের জায়গায় পাথর, বালির বস্তা ফেলতে হবে;
বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের দুপাশে গাছ লাগাতে হবে;
নদীভাঙ্গন প্রবণ এলাকায় স্থায়ী স্থাপনা না করা;
কৃষি ছাড়া অন্য কাজ যেমন অকৃষি নানা কাজ করা;
উপকূলীয় এলাকায় ও নদীভাঙ্গন প্রবণ এলাকায় প্রশিক্ষিত ও সচেতন গ্রুপ তৈরি করা৷
নদী ভাঙ্গনের শিকার হলে কি করবেন
যদি কারো কোনো জমি / ভূমি নদী ভাঙ্গনের কারণে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় তবে একে সিকস্তি বলে৷ আবার যদি কোনো জমি সাগর বা নদীর গতিপথের পরিবর্তনের কারণে কিংবা নদীর পানি সরে যাওয়ার ফলে জেগে উঠলে বা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়া জমি আবার জেগে উঠলে তাকে পয়োস্তি বলা হয়৷ পয়োস্তি বা জেগে ওঠা জমি দুই ধরনের হতে পারে:
ভেঙ্গে যাওয়া জমি আবার জেগে ওঠা
নতুন কোনো জমি জেগে ওঠা
নদীতে জমি ভেঙ্গে গেলে যা করণীয়
কারো জমি সিকস্তি বা নদীতে ভেঙ্গে গেলে সংগে সংগে জমির মালিক ভূমি উন্নয়ন কর মওকুফের জন্য রাজস্ব অফিসারের কাছে আবেদন করবেন৷ আবেদনের জন্য নির্দ্দিষ্ট ফরম রয়েছে৷
রাজস্ব অফিসার জমি ভেঙ্গে যাওয়ার বিষয়ে প্রয়োজনীয় তদন্ত শেষে জমির মালিককে একটি খাজনার রশিদ দেবেন যা কিনা জমি জেগে উঠলে পয়োস্তি বা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত জমির মালিকানা নির্ণয়ের প্রমান হিসাবে বিবেচিত হবে৷
কোনো জোতের জমি বা অংশ বিশেষ ভেঙ্গে গেলে ভেঙ্গে যাওয়া অংশের জন্য কর দিতে হবে না৷
সিকস্তি বা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার পর ৩০ বছরের মধ্যে জমি জেগে উঠলে বা পয়োস্তি হলে জমির মালিক বা মালিকের উত্তরাধিকারগণ জমি দাবি করতে পারবেন৷ তবে ৬০ বিঘার বেশি জমি থাকলে সে নদীতে ভেঙ্গে যাওয়া জমি ফেরত পাবে না ৷ তবে ৬০ বিঘার কম জমি থাকলে ৬০ বিঘা হতে যেটুকু জমি প্রয়োজন সেটুকু পাবেন৷
নদী ভাঙ্গনের কারণে কেউ যদি ভূমিহীনে পরিণত হন তবে তিনি খাসজমি পাবার জন্য আবেদন করতে পারেন৷ এজন্য থানা/উপজেলা রাজস্ব কর্মকর্তার কাছে নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে৷
-
পৌরসভা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি
চেয়ারম্যান, পৌরসভা - সভাপতি
পৌরসভার সকল কমিশনার - সদস্য
পৌরসভার মেডিক্যাল অফিসার/ স্যানিটারি পরিদর্শক - সদস্য
পৌরসভার নির্বাহী/ সহকারী প্রকৌশলী - সদস্য
পৌরসভা এলাকায় নিয়োজিত কৃষি বিভাগীয় কর্মকর্তা - সদস্য
পৌরসভা এলাকায় নিয়োজিত পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা- সদস্য
পৌরসভা এলাকায় নিয়োজিত বিআরডিবি কর্মকর - সদস্য
পৌরসভার দুইজন গণ্যমাণ্য ব্যক্তি - সদস্য
সংশ্লিষ্ট পৌরসভায় কর্মরত সকল এনজিও- এর প্রতিনিধ - সদস্য
জেলা সিভিল সার্জন এর প্রতিনিধ - সদস্য
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা/ পৌরসভার সচিব - সদস্য-সচিব
(প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা না থাকলে পৌরসভার সচিব কমিটির সদস্য থাকবেন)
সংশ্লিষ্ট মাননীয় সংসদ সদস্য/ সদস্যাবৃন্দ উক্ত কমিটির উপদেষ্টা থাকবেন৷ এ কমিটি প্রতি দুই মাস অন্তর সভা করবে৷ দুর্যোগকালে প্রতিদিন একবার এবং পরিস্থিতি কিছুটা ভালো হলে প্রতি সপ্তাহে দু'বার সভায় মিলিত হবে৷
পৌরসভা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির দায়িত্ব
দুর্যোগের আগে / স্বাভাবিক সময়ে:
ব্যক্তিগত বা দলীয়ভাবে ঝু৺কি কমানোর জন্য বাস্তব কর্মপন্থা কি হবে সে সম্পর্কে স্থানীয় জনসাধারণ কে জানাবে, কমিউনিটি পর্যায়ে ঝু৺কি কমানো এবং বেঁচে থাকার উপায়গুলোর ব্যাপক প্রচার নিশ্চিত করবে;
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বু᐀রোকে অবহিত করে নিয়মিত দুর্যোগ বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার আয়োজন করা;
ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা সংক্রান্ত পূর্বাভাস অতি দ্রুত ও কার্যকরভাবে প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ ও জনসাধারণকে তাদের জানমাল রক্ষায় কী কী করণীয় সে সম্পর্কে অবহিত করা;
জেলা/ উপজেলা কর্তৃপক্ষের সহায়তায় আশ্রয়কেন্দ্র আশ্রয়স্থলসমূহে পানি সরবরাহ এবং প্রয়োজনে অন্যান্য সেবা প্রদানের বিষয় নিশ্চিত করা;
স্থানীয় উদ্ধারকাজ পরিকল্পনা, প্রাথমিক ত্রাণকার্য পরিচালনা, উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ পুনঃস্থাপন এবং মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের স্থানীয় ব্যবস্থা সম্বলিত আনুসঙ্গিক পরিকল্পনা প্রণয়ন৷
জেলা/উপজেলা কর্তৃপক্ষের সহায়তায় সতর্কবাতাᐂ/পূর্বাভাস প্রচার, অপসারণ, উদ্ধার ও প্রাথমিক ত্রাণ কার্য পরিচালনা বিষয়ে মহড়া অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা৷
দুর্যোগকালে করণীয়
স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক উদ্ধারকাজ পরিচালনা এবং নির্দেশ হলে অন্যদেরকে উদ্ধার কাজে সহযোগিতা প্রদান;
দুর্যোগের ক্ষতি সংক্রান্ত উপাত্ত সংগ্রহ ও তা উপজেলা কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো;
স্থানীয়ভাবে এবং অন্য কোনো উত্স বা ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তর থেকে প্রাপ্ত পুনর্বাসন উপকরণাদি বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ;
প্রাপ্ত সম্পদ বিতরণের হিসাব উপজেলা কর্তৃপক্ষ বা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠানো৷
সুত্র: দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ব্যুরো (২০০১): ভূমিকম্প বিষয়ে গণসচেতনতা
-
সিটি কর্পোরেশন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি
মাননীয় মেয়র, সিটি কর্পোরেশন - সভাপতি
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সিটি কর্পোরেশন - সদস্য
সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক - সদস্য
সংশ্লিষ্ট পুলিশ কমিশনার - সদস্য
সংশ্লিষ্ট সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা - সদস্য
মহাপরিচালক, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি - সদস্য
মহাপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের প্রতিনিধি - সদস্য
প্রধান প্রকৌশলী, এলজিইডি- এর প্রতিনিধি - সদস্য
প্রধান প্রকৌশলী, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রতিনিধি - সদস্য
চেয়ারম্যান/এমডি, ওয়াসা (সংশ্লিষ্ট) - সদস্য
পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি - সদস্য
সংশ্লিষ্ট বিদু্যত্ কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি - সদস্য
টি এন্ড টি বোর্ডের প্রতিনিধি- সদস্য
এডাব মনোনীত একজন এনজিও প্রতিনিধি - সদস্য
ওয়ার্ড কমিশনারবৃন্দ - সদস্য
সচিব, সিটি কর্পোরেশন - সদস্য-সচিব
সিটি কর্পোরেশন এলাকার মাননীয় সংসদ সদস্য/সদস্যাগণ কমিটির উপদেষ্টা থাকবেন৷ স্থানীয় পরিস্থিতি ও বিশেষ অবস্থার প্রেক্ষিতে কমিটির সভাপতি প্রয়োজনবোধে আরও সদস্য কমিটির সদস্যদের ভোটে বা অনুমোদন সাপেক্ষে অন্তর্ভক্ত করতে পারবেন৷কমিটি বছরে অন্তত চারবার সভা করবে তবে দুর্যোগকালীন সময়ে কমিটির সভাপতি প্রয়োজনে আরো সভা আহ্বান করবেন৷
সিটি কর্পোরেশন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির দায়িত্ব
দুর্যোগের আগে/স্বাভাবিক সময়ে করণীয়:
ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার পূর্বাভাস দ্রুত সিটি এলাকার সকল কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ/প্রতিষ্ঠান এবং এবিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রচারের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ;
আশ্রয়কেন্দ্র ও আশ্রয়স্থল পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গকে দায়িত্ব বণ্টন করে দেয়া;
দুর্যোগকালে করণীয়:
সিটি কর্পোরশনের এলাকাতে উদ্ধারকাজ ও ত্রাণ এবং প্রাথমিক পুনর্বাসন সংক্রান্ত কাজ ও এর সমন্বয়ের জন্য জরুরি পরিচালনা কেন্দ্র (তথ্য কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ কক্ষ) পরিচালনাকরণ৷ প্রয়োজনে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করা ও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে উদ্ধারকাজের জন্য উদ্ধারকারী দল প্রেরণ করা ও সামগ্রিক কর্মকান্ডের সমন্বয় সাধন করা;
দুর্যোগের ক্ষতি সংক্রান্ত উপাত্ত সংগ্রহ এবং তা ত্রাণ মন্ত্রণালয়সহ যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ;
পুনর্বাসন কাজের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন, মন্ত্রণালয়, জেলা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ থেকে প্রাপ্ত সম্পদ বস্তুনিষ্ঠভাবে বিতরণের ব্যবস্থাকরণ৷ ত্রাণ ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত সহায়ক সামগ্রীর হিসাবাদি সংরক্ষণ এবং তা ত্রাণ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ৷
সুত্র: দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ব্যুরো (২০০১): ভূমিকম্প বিষয়ে গণসচেতনতা
-
ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি
ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান - সভাপতি
ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যবৃন্দ - সদস্য
শিক্ষক প্রতিনিধি - সদস্য
ইউনিয়ন পর্যায়ের সহকারী কর্মচারী - সদস্য
নারী প্রতিনিধ- সদস্য
ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) প্রতিনিধি - সদস্য
বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রতিনিধি - সদস্য
এনজিও- এর প্রতিনিধি - সদস্য
ইউনিয়ন পরিষদের সেক্রেটার - সদস্য-সচিব
স্থানীয় পরিস্থিতি ও বিশেষ অবস্থার প্রেক্ষিতে কমিটির সভাপতি প্রয়োজনবোধে আরও সদস্য কমিটিতে অন্তᐂভূক্ত করতে পারবেন৷ এই কমিটি দুই মাস পর পর সভা করবে, কিন্তু দুর্যোগকালীন সময়ে প্রতিদিন একবার এবং অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে প্রতি সপ্তাহে দুই বার সভায় মিলিত হবে৷
ইউনিয়ন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির দায়িত্ব হবে:
দুর্যোগের আগে করণীয়:
ব্যক্তিগত বা দলীয়ভাবে ঝু৺কি কমানোর জন্য বাস্তব কর্মপন্থা কি হবে সে সম্পর্কে স্থানীয় জনসাধারণকে জানাবে, কমিউনিটি পর্যায়ে ঝু৺কি কমানো এবং বেঁচে থাকার উপায়গুলোর ব্যাপক প্রচার নিশ্চিত করবে;
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বু᐀রোকে অবহিত করে নিয়মিত দুর্যোগ বিষয়ক প্রশিক্ষণ ও কর্মশালার আয়োজন করবে;
ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা সংক্রান্ত পূর্বাভাস অতি দ্রুত ও কার্যকরভাবে প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ ও জনসাধারণকে তাদের জানমাল রক্ষায় কী কী করণীয় সে সম্পর্কে অবহিত করা;
উপজেলা কর্তৃপক্ষের সহায়তায় আশ্রয়কেন্দ্র/আশ্রয়স্থলসমূহে পানি সরবরাহ এবং প্রয়োজনে অন্যান্য সেবা প্রদানের বিষয় নিশ্চিতকরণ;
স্থানীয় উদ্ধারকাজ পরিকল্পনা, প্রাথমিক ত্রাণকার্য পরিচালনা, উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ পুনঃস্থাপন এবং মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের স্থানীয় ব্যবস্থা সম্বলিত আনুসঙ্গিক পরিকল্পনা প্রণয়ন৷
দুর্যোগের সময় করণীয়ঃ
স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক উদ্ধারকাজ পরিচালনা এবং নির্দেশ হলে অন্যদেরকে উদ্ধার কাজে সহযোগিতা প্রদান;
দুর্যোগের ক্ষতি সংক্রান্ত উপাত্ত সংগ্রহ ও তা উপজেলা কর্তৃপক্ষের নিকট পাঠানো;
স্থানীয়ভাবে এবং অন্য কোনো উত্স বা ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তর থেকে প্রাপ্ত পুনর্বাসন উপকরণাদি বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ;
প্রাপ্ত সম্পদ বিতরণের হিসাব উপজেলা কর্তৃপক্ষ বা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠানো৷
সুত্র: দুর্যোগ ব্যাবস্থাপনা ব্যুরো (২০০১): ভূমিকম্প বিষয়ে গণসচেতনতা
-
Great job. Carry on................
-
thanks
-
Great informative post..........Thanks
-
:)
-
Many thanks Mr. Sujon to share with us lot of necessary information.
Thanks,
Sumon Mazumder
Lecturer
Dept. of TE
FSIT, DIU
-
Thank u sir
-
Thank you Sujon...........Very useful and valuable post for everyone.
-
thanks
-
:)
-
Hmm.....Good going Mr. Sujon!!!!!
Carry on. Your efforts will give you the actual result. :) :)
-
ধন্যবাদ ভাইয়া
-
;D
-
Total sob acha akana