Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - Md.Towhiduzzaman

Pages: 1 2 3 [4] 5
46


• গবেষকেরা বলছেন, আম খাওয়ার প্রায় দুই ঘণ্টা পর রক্তনালি শিথিল হয়ে যায়
• এটি রক্তচাপ কমায়

বাংলাদেশে আমের মৌসুম মে থেকে আগস্ট-এই তিন মাস। এই সময়ের মধ্যে দেশের প্রতিটি মানুষ গড়ে তিন কেজি করে আম খায়। পাকা-মিষ্টি আমের পুষ্টিগুণ অনেক, এটি কমবেশি সবার জানা। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় প্রথমবারের মতো জানা গেল, যাঁদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাঁদের জন্য কতটা উপকারী আম। যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা বলছেন, আম রক্তচাপ কমাতে ভূমিকা রাখে। মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া (পোস্ট মেনুপোসাল) ২৪ জন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী নারীকে নিয়ে করা এক গবেষণায় এই তথ্য পাওয়া গেছে। গবেষকেরা বলছেন, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও কার্যকর এই ফল।

আম নিয়ে এই গবেষণাটি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি বিভাগের গবেষকেরা। তাঁরা দেখেছেন, আম খাওয়ার প্রায় দুই ঘণ্টা পর রক্তনালি শিথিল হয়ে যায়। এটাই রক্তচাপ কমার কারণ। আমের আরও একটি উপকারের কথা বলেছেন গবেষকেরা। তা হলো, আম খাওয়ার পর অন্ত্র বেশি সক্রিয় হয়।

হৃদরোগীদের ক্ষেত্রে আমের কার্যকারিতা নিয়ে বিশ্বে এটিই প্রথম কোনো গবেষণা। চলতি জুন মাসেই আমেরিকান সোসাইটি ফর নিউট্রিশনের বার্ষিক সম্মেলনে (নিউট্রিশন-২০১৮) গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করা হয়। এই গবেষণায় আর্থিক সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ম্যাঙ্গো বোর্ড ও ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন।

গবেষকেরা বলছেন, আমে কার্বলিক অ্যাসিডের মিশ্রণ থাকে। যা স্বাস্থ্য সুরক্ষার সম্ভাব্য উপকরণ। গবেষকেরা মনে করেন, আমে থাকা সক্রিয় যৌগ স্বাস্থ্যে ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক সাইদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আম নিয়ে করা গবেষণার ফলাফল নিশ্চয়ই গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বলেছেন, বয়স বেশি হওয়ার কারণে যেসব নারীর মাসিক স্বাভাবিক কারণে বন্ধ হয়ে যায়, তাঁদের শরীরে হরমোনজনিত পরিবর্তন ঘটে। মাসিক বন্ধ হওয়া নারীদের রক্তচাপ বেশি হওয়ার প্রবণতা থাকে।

বিভিন্ন শস্য, সবজি ও ফলের পুষ্টিগুণ নিয়ে গবেষণা করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক নাজমা শাহীন। তিনি বলেন, আমের রাসায়নিকের হরমোনজনিত প্রভাব আছে, যা গ্রন্থিবাত, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।

পদ্ধতি ও ফলাফল
মাসিক বন্ধ হওয়া ২৪ জন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী নারীকে দৈনিক ৩৩০ গ্রাম মিষ্টি আম খেতে দেওয়া হতো। গবেষণার জন্য পরপর ১৪ দিন তাঁদের ওই পরিমাণ আম থেকে খাওয়ানো হয়। আম খাওয়ার দুই ঘণ্টা পর এসব নারীর হৃৎস্পন্দন, রক্তচাপ, রক্তের নমুনা ও শ্বাসপ্রশ্বাস পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় দেখা যায়, সিস্টোলিক রক্তচাপ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। হৃৎস্পন্দনের সময় রক্তনালির দেয়ালে প্রবহমান রক্ত যে চাপ প্রয়োগ করে, সেটাই সিস্টোলিক রক্তচাপ (রক্তচাপ মাপার সময় ওপরের সংখ্যা)।

গবেষকেরা দেখেছেন, আম খাওয়ার পর পালস প্রেশার বা ধমনি স্পন্দন চাপও কমে। স্পন্দন চাপ হচ্ছে সিস্টোলিক ও ডায়াস্টোলিক (রক্তচাপ মাপার সময় নিচের সংখ্যা) রক্তচাপের মধ্যকার সংখ্যার পার্থক্য। আম খেলে এই পার্থক্য কম হয়। গবেষকেরা শ্বাসপ্রশ্বাসে হাইড্রোজেন ও মিথেনের পরিমাণও মেপে দেখেন। অন্ত্রে অণুজীবের সক্রিয়তায় এসব গ্যাস তৈরি হয়। ২৪ জন নারীর মধ্যে ৬ জনের নিশ্বাসে মিথেন পাওয়া যায়। এই ছয়জনের মধ্যে তিনজনের আম খাওয়ার পর মিথেনের পরিমাণ কমে। এর অর্থ তাঁদের অন্ত্র ভালো ছিল।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা বলছে, বাংলাদেশ বিশ্বের অষ্টম আম উৎপাদনকারী দেশ। চিকিৎসকেরা বলছেন, হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে পরিমিত পরিমাণে আম খাওয়া প্রয়োজন।

47
জিমি ফ্যালন একজন মার্কিন কমেডিয়ান ও উপস্থাপক। ‘দ্য টুনাইট শো স্টারিং জিমি ফ্যালন’অনুষ্ঠানটির জন্য তুমুল জনপ্রিয় তিনি। অভিনয়, গান আর প্রযোজনার সঙ্গেও যুক্ত আছেন। ৪ জুন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার মার্জরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুলের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তা ছিলেন তিনি।

সমাবর্তন বক্তা বললে আমাদের চোখে ভাসে একজন অনুপ্রেরণাদায়ী, বাগ্মী, পৃথিবী বদলে দেওয়া মানুষের মুখ। আবার হাইস্কুলের শিক্ষার্থী বলতে আমরা বুঝি অপরিপক্ব তরুণদের, যারা এখনো বড় হতে শিখছে, যারা একটু অদ্ভুত। আজ এমন এক অনুষ্ঠানে তোমাদের স্বাগত জানাচ্ছি, যেখানে ঠিক উল্টোটা ঘটছে!

আজ হাইস্কুলের দিন শেষ হচ্ছে, তোমরা নিশ্চয়ই গর্বিত। ২০১৮ সালের হাইস্কুল পেরোনো শিক্ষার্থীরা, আজ থেকে ক্লাসে আর তোমাদের দেখা হবে না। জানি, আগামী ১০ বছর তোমরা একে অন্যকে দেখার জন্য রাত দুটোর সময় ফেসবুক সার্চ করবে।

প্রথম কথা হলো: যখন সামনে এগোনো কঠিন মনে হবে, বুঝে নিয়ো তোমার জন্য ভালো কিছু অপেক্ষা করছে। এগিয়ে যাও। গত মার্চ মাসে ওয়াশিংটন ডিসিতে আয়োজিত ‘মার্চ ফর আওয়ার লাইভস’ (গত ১৪ ফেব্রুয়ারি মার্জরি স্টোনম্যান ডগলাস হাইস্কুল প্রাঙ্গণে গুলি করে ১৭ জনকে হত্যা করেছিল নিকোলাস ক্রুজ নামে এক তরুণ। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বন্দুকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের দাবিতে মার্চ মাসে একটি পদযাত্রা আয়োজন করেছিল শিক্ষার্থীরা—বি.স.) আন্দোলনে তোমাদের অনেকের সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। অসাধারণ একটা দিন ছিল। ধন্যবাদ তোমাদের সাহস আর মনোবলের জন্য। সেদিন তোমাদের অসাধারণ কিছু বক্তৃতা শুনেছি, যা আমি কখনোই দিতে পারতাম না। আমি আর আমার স্ত্রী আমাদের দুই মেয়েকে সেদিন সঙ্গে এনেছিলাম। আমরা ওদের দেখাতে চেয়েছিলাম, আশা আর আলোর মিশ্রণ দেখতে কেমন! আমার খুব সৌভাগ্য, তোমাদের শিক্ষকদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আমি তোমাদের দেখছিলাম। তোমরা কি জানো, শিক্ষকেরা তোমাদের নিয়ে কতখানি গর্বিত! সত্যি বলছি। তাঁরা রীতিমতো কাঁপছিলেন আর বলছিলেন, ‘ওই ছেলেটা আমার ছাত্র! ওই মেয়েটা আমার ছাত্রী! আমি ওদের ইতিহাস পড়িয়েছি!’ আর এখন? তোমরাই ইতিহাস তৈরি করছ। কী দারুণ, তাই না!

আমার শিক্ষকেরা আমাকে নিয়ে এভাবে কখনো গর্ব করেননি। আমি সেরা ছাত্র ছিলাম না। বলছি না আমি বোকা ছিলাম। আমি ছিলাম স্রেফ আর দশজনের মতো। সব সময় পড়তে ভালো লাগত না। তাই আমাকে ‘সামার স্কুল’-এ যেতে হয়েছে। মা-বাবা তখন বলেছেন, ‘কী হে বুদ্ধিমান, এবার নিজের দিকে তাকাও। সামার স্কুলে যাচ্ছ। এখন কেমন লাগে? গ্রীষ্মের পুরো ছুটিটা বরবাদ করলে। খুব মজা, তাই না?’ আমার ভীষণ মন খারাপ হয়েছিল। শোবার ঘরে গিয়ে আমি একা একা কেঁদেছিলাম। কিন্তু মজার ব্যাপার কী জানো, সামার স্কুল আমি উপভোগ করেছি। সেখানে আরও ১৫টা ‘আমি’র সঙ্গে আমার দেখা হয়েছে। সেখানে অন্য মানুষগুলো বেশ মজার আর কেমন যেন একটু বোকা বোকা। সামার স্কুল আমি ভালোবেসে ফেলেছি। এখানেই আমি আমার মনের মতো কিছু বন্ধু পেয়েছি।

অতএব আমি যেটা বলতে চাইছি—প্রতিটি খারাপ অভিজ্ঞতা থেকে একটা না-একটা ভালো কিছু বেরিয়ে আসতে পারে। কখনো কখনো ব্যর্থতা আমাদের সম্পূর্ণ নতুন একটা পথের সন্ধান দেয়, যে পথে যাওয়ার কথা হয়তো তুমি কখনো কল্পনাও করোনি, কিন্তু এই পথই তোমাকে আরও উন্নত ও শক্তিশালী করে। তোমরা এরই মধ্যে সেটা প্রমাণ করেছ। তোমাদের একটা ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। কিন্তু সেটা তোমাদের থামিয়ে দিতে পারেনি। তোমরা একটা আন্দোলন শুরু করেছ। সেই আন্দোলন শুধু ফ্লোরিডায় না, শুধু আমেরিকায় না, সারা বিশ্বে ছড়িয়ে গেছে। সারা পৃথিবী তোমার কণ্ঠস্বর শুনেছে, এই সিদ্ধান্ত তুমি নিয়েছ। একটা খারাপ অভিজ্ঞতা থেকে একটা ইতিবাচক পরিবর্তন আনার কাজ তুমিই করেছ। ভয়কে ছাপিয়ে আশার হাত ধরেছ তুমিই!

আমরা জানি না ভবিষ্যতে আমাদের জন্য কী অপেক্ষা করছে। এটাই স্বাভাবিক। আমার পরামর্শ হলো, তুমি কী করতে চাও সেটা নিয়ে ভেবো না। বরং ভাবো, তুমি এটা কেন করতে চাও? বাকি সমস্যাগুলোর সমাধান এমনিই হয়ে যাবে। আমি আমার কাজটা ভালোবাসি। আমি কৌতুক বলে মানুষকে হাসাই এবং এটা একটা দারুণ কাজ। মানুষ সব সময় আমাকে জিজ্ঞেস করে, ‘তোমার কাজের সবচেয়ে ভালো দিক কোনটা?’ আমি বলি, ‘আমি মানুষকে আনন্দ দিই। এটাই সবচেয়ে ভালো দিক।’

ছয়-সাত মাস আগে একটা মেয়ে আমার দিকে ছুটে এল। বলল, ‘জানো, আমি খুব খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম। খুব হতাশ লাগছিল। এমন সময় আমি ইউটিউবে তোমার সবগুলো ভিডিও দেখলাম, আর আমার মন ভালো হয়ে গেল। আমি শুধু তোমাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’ এরপর আমরা প্রায় ২০ মিনিট কথা বললাম। সে বলল, ‘আমি কি একটা সেলফি তুলতে পারি?’ বললাম, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই।’ সে বলল, ‘আমি কি স্ন্যাপচ্যাটের জন্য তোমার সঙ্গে আরেকটা সেলফি তুলতে পারি?’ আমি বললাম, ‘নিশ্চয়ই পারো।’ দুটো সেলফি তোলার পর সে রীতিমতো চিৎকার করে বলল, ‘কী সৌভাগ্য, বিশ্বাস হচ্ছে না আমি জিমি কিমেলের সঙ্গে দেখা করেছি!’

কথা হলো: আমি আমার কাজটা ভালোবাসি। মেয়েটা যদি জানত আমি কে, তাহলে তার সত্যিই হাসি পেত।

আরেকটা প্রশ্ন প্রায়ই লোকে আমাকে জিজ্ঞেস করে। ‘ছোটবেলার আমার সঙ্গে এখনকার আমার দেখা হলে আমি তাকে কী বলতাম?’ অনেক কথাই বলতাম। প্রথমটা হলো: বাছাধন, কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার একটু কম খেয়ো। ছোটবেলার আমার জন্য বড়বেলার আমার দ্বিতীয় পরামর্শ হতো: শোনো। আশপাশে সবার কথা মন দিয়ে শোনো। পৃথিবীতে হাজারো রকমের কণ্ঠস্বর আছে। প্রত্যেকের কথায় ভিন্ন সুর, ভিন্ন স্বাদ, ভিন্ন রং। কিন্তু আমরা সবাই একই রংধনুর অংশ। আর এই রংধনুতে যতখানি হলুদ লাগবে, ততখানিই লাগবে লাল, নীল, সবুজ, বেগুনি...। সবার মধ্যেই কিছু না কিছু ভালো আছে। মানুষের ভালোটা খুঁজে বের করো। আমরা যদি একে অপরের কথা শুনি, তাহলে আমরা সেটা পাব।

নতুন কিছু চেষ্টা করো। অতীতকে মনে রাখো, কিন্তু সেখানে পড়ে থেকো না। আশপাশের মানুষকে সম্মান করো। হাসো। চিঠি লেখো। মানুষকে ‘হ্যালো’ বলো। যত পারো হাসো। নাচো, মন খুলে।

বেশির ভাগ সমাবর্তন বক্তা বলেন, ‘তোমরাই আমাদের ভবিষ্যৎ।’ আমি সে কথা বলব না। বরং বলব, তোমরাই আমাদের বর্তমান। তোমরা ভালো করছ। সফল হচ্ছ। পৃথিবী বদলে দিচ্ছ। চালিয়ে যাও। আমাদের আরও গর্বিত করো। ধন্যবাদ।

48
প্রতিনিয়ত দেশে নতুন নতুন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানে ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে আর্থিক হিসাবনিকাশে নানা ধরনের কাজের জন্য প্রয়োজন হয় একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ হিসাবরক্ষক বা ব্যবস্থাপক। আবার ইদানীং শুধু প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি ঝুলিতে নিয়ে ভালো চাকরি পাওয়া মুশকিল হয়ে যায়। এর সঙ্গে দরকার পেশাগত কিছু ডিগ্রি। এমনই এক ডিগ্রি হচ্ছে সিএমএ বা কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টস। ব্যবস্থাপনা আর হিসাব শাখায় দক্ষ পেশাজীবী তৈরির লক্ষ্যে সিএমএ পড়াচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি)।

বছরে দুটি সেশনে এখানে ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হতে পারেন, জানুয়ারি থেকে জুন এবং জুলাই থেকে ডিসেম্বর। ‘ইন্টারমিডিয়েট এন্ট্রি রুট’ পদ্ধতিতে কোর্সটিতে উচ্চমাধ্যমিক পেরোনো শিক্ষার্থীরা ভর্তি হতে পারবেন। আবার স্নাতক করেও ভর্তি হওয়ার সুযোগ আছে ‘গ্র্যাজুয়েট এন্ট্রি রুট’ পদ্ধতিতে। আইসিএমএবির ঢাকাসহ সারা দেশে মোট ছয়টি শাখা রয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির উপপরিচালক (শিক্ষা) মো. আবদুল মালেক বলেন ‘সিএমএ কোর্সটি দুটি পদ্ধতিতে করানো হয়। একটি কোচিংপদ্ধতি এবং অন্যটি করেসপন্ডেন্স পদ্ধতি। যাঁরা কোচিংপদ্ধতিতে ভর্তি হবেন, তাঁদের নিয়মিত ক্লাস ও ক্লাস টেস্ট দিতে হবে। আর করেসপন্ডেন্স কোর্সের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস করতে হয় না। শুধু অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিলেই হয়। যাঁরা চাকরি করছেন, তাঁদের জন্য করেসপন্ডেন্স পদ্ধতিটি সুবিধাজনক।’

সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি সিএমএ ভর্তির বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। এরই মধ্যে জুলাই থেকে ডিসেম্বর সেশনের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। অনলাইনের মাধ্যমে erp. icmab. org. bd-এই ঠিকানায় গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ করতে হবে। কোচিং প্রোগ্রামের প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন ২৮ জুন, ২০১৮ পর্যন্ত। আর করেসপন্ডেন্স প্রোগ্রামের প্রার্থীরা আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ পাবেন।

ইন্টারমিডিয়েট এন্ট্রি রুট পদ্ধতিতে ভর্তি হতে হলে প্রার্থীদের এসএসসি ও এইচএসসি মিলিয়ে কমপক্ষে জিপিএ ৮ পেতে হবে। আর গ্র্যাজুয়েট এন্ট্রি রুট পদ্ধতিতে ভর্তি হতে যেকোনো বিভাগ থেকে ন্যূনতম স্নাতক পাস হতে হবে। এসএসসি থেকে স্নাতক পর্যন্ত পরীক্ষার ফল লাগবে কমপক্ষে ৬ পয়েন্ট।

গত ২৭ মে প্রতিষ্ঠানটির ঢাকা অফিসে গিয়ে জানা গেল, বর্তমানে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী এখানে কোর্স করছেন। আর সদস্য আছেন প্রায় ১ হাজার ৪০০। এর মধ্যে ২৫০ জনেরও বেশি সদস্য বিদেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত।

সিএমএ কোর্সটিতে ইন্টারমিডিয়েট এন্ট্রি রুট ছাত্রছাত্রীদের পাঁচটি লেভেল ও গ্র্যাজুয়েট এন্ট্রি রুট ছাত্রছাত্রীদের চারটি লেভেল সম্প­ন্ন করতে হয়। একটি লেভেল শেষ করতে সময় লাগে ছয় মাস। লেভেলগুলোর মধ্যে রয়েছে নলেজ লেভেল, বিজনেস লেভেল, অপারেশনাল লেভেল, ম্যানেজমেন্ট লেভেল এবং স্ট্র্যাটেজিক লেভেল।

ইন্টারমিডিয়েট এন্ট্রি রুট পদ্ধতির ছাত্রছাত্রীদের নলেজ লেভেলের জন্য ভর্তি ফি দিতে হয় ২৫ হাজার টাকা, আর গ্র্যাজুয়েট এন্ট্রি রুট ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে বিজনেস লেভেলের জন্য ২৯ হাজার ৫০০ টাকা ফি দিতে হয়। পরবর্তী সময়ে অপারেশনাল লেভেল, ম্যানেজমেন্ট লেভেল এবং স্ট্র্যাটেজিক লেভেলের জন্য ফি যথাক্রমে ১০ হাজার, ১৪ হাজার ও ১৮ হাজার টাকা।

সিএমএ ডিগ্রি নিতে হলে ইন্টারমিডিয়েট এন্ট্রি রুট ছাত্র-ছাত্রীদের মোট ২০টি বিষয় পড়তে হয়। অন্যদিকে গ্র্যাজুয়েট এন্ট্রি রুট পদ্ধতির শিক্ষার্থীদের পড়তে হয় ১৭টি বিষয়। আর এসব বিষয় পড়িয়ে থাকেন আইসিএমএবি থেকে পাস করা সদস্য ও দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা। ক্লাস হয় দুই শিফটে। প্রথম শিফট শুরু হয় বেলা তিনটা থেকে, চলে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত। দ্বিতীয় শিফট সন্ধ্যা ছয়টা থেকে শুরু হয়ে চলে রাত নয়টা পর্যন্ত। রোববার ছাড়া সপ্তাহে প্রতিদিন ক্লাস হয়।

প্রতিষ্ঠানটির চতুর্থ তলায় রয়েছে ৩২৮ আসনের একটি লাইব্রেরি। দেখা গেল, অনেকেই পড়ায় বুঁদ হয়ে আছেন। তাঁদেরই একজন চূড়ান্ত লেভেলের শিক্ষার্থী আশরাফ আলী। তিনি হিসাববিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পাস করে এক বড় ভাইয়ের পরামর্শে এখানে ভর্তি হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এখানকার পরিবেশ অনেক ভালো। শিক্ষকেরা অনেক সহযোগিতা করেন। এখানে এসে অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। ভবিষ্যতে ভালো কোনো প্রতিষ্ঠানে নেতৃত্ব দেব এটাই আমার প্রত্যাশা।’

চাকরির বাজারে সিএমএ ডিগ্রিধারীদের চাহিদা কেমন? এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল মালেক জানালেন ‘বর্তমান চাকরির বাজারে একজন সিএমএ ডিগ্রিধারীর অনেক চাহিদা রয়েছে। এই ডিগ্রিটি সম্পন্ন করে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, বিমা, আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন এনজিও, মোবাইল ফোন কোম্পানি, বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান, এমনকি বিদেশেও চাকরির ভালো সুযোগ রয়েছে।’

আইসিএমএবির সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম (এফসিএমএ) বলেন, ‘সিএমএ সদস্যরা গতানুগতিক অ্যাকাউন্ট্যান্ট নন বরং বিজনেস লিডার। একজন সিএমএ সদস্য তাঁর কর্মজীবন শুরু করতে পারেন ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট কিংবা ফাইন্যান্স বা অ্যাকাউন্টস ম্যানেজার হিসেবে। সেখান থেকেই তাঁর মধ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার গুণাবলি প্রস্ফুটিত হতে থাকে। শুধু দেশেই নয় দেশের বাইরেও আমাদের সদস্যরা অত্যন্ত সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। কারণ, আমাদের এ কোর্সটি আন্তর্জাতিক কারিকুলাম স্ট্যান্ডার্ডে পড়ানো হয়। এখানে এমনভাবে পড়ানো হয় যেন তাঁরা বিদেশেও কাজ করতে পারেন।’

যাঁরা কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্টিং পড়ে পেশা শুরু করতে চান তাঁরা ভর্তি ও অন্যান্য তথ্য জানতে যোগাযোগ করতে পারেন আইসিএমএবির ঢাকাসহ দেশের অন্য শাখাগুলোতে।

এ ছাড়া ভিজিট করতে পারেন www.icmab.org.bd-এই ঠিকানায়।

49
Common Forum / জীবনের গল্প
« on: June 09, 2018, 03:08:25 PM »
লা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যে আসে, তার কোনো বিপদ-আপদ হয় না? কিন্তু কীভাবে জিজ্ঞেস করব। এই কথা তো বলাও যায় না।
স্যার, আপনে প্রতিবার মেলায় আসেন ক্যান?
নেশা। সবাই আসে। দেখা হয়। ভালো লাগে।
আমারও স্যার নেশা। ঘরে থাকতে পারি না...
বসন্ত এসে গেছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অন্যপ্রকাশের কার্জন হল আকৃতির স্টলের ওপর চাঁদ উঠেছে। কোনো একটা গাছে বোধ হয় কোকিলও ডাকছে। আমি প্রথমার স্টলে বসে আকাশের চাঁদের ছবি তুলি মুঠোফোনে। ফেসবুক চেক করি। দেখি, একজন লিখেছে, ফুল ফুটুক না ফুটুক আজ বসন্ত।
না। ফুলও তো ফুটেছে। মেয়েরা সব হলুদ শাড়ি পরেছেন। তাঁদের মাথায় ফুলের মুকুট। কী যে ভালো লাগছে।
নীপা আসে। ওর হাতে ফুলের মুকুট।
আমি বলি, নীপা, তোমার ফুলের মুকুটের দাম কত?
এক শ টাকা।
নাও। একটা তুমি পরো. . এই নাও টাকা...
লাগব না স্যার।
পরো।
না স্যার।
কেন?
আপনের বই আপনি পড়েন?
হা হা হা! তুমি বেশি চালাক।...
স্যার, সামনের বছরও আইবেন মেলায়...
বাঁইচা থাকলে আসব। তুমি আসবে?
না।
কেন?
আপনি কইছেন না বড় হয়া গেছি।
আসবে না কী করবে?
নীপা চুপ করে থাকে।
কী করবে? বিয়ে করবে না তো? ১৮ বছরের আগে বিয়ে না...
নীপা লজ্জা পায়। নীপা মাথা নিচু করে বইমেলার মাটিতে পায়ের আঙুল বসায়। বোঝাই যাচ্ছে, ওর মা ওকে বিয়ে দিয়ে দেবেন।
কী?
স্যার। ছোট দুইটা ভাই স্কুল যায়। আমি ফুল না বেচলে সংসার চলব না। মায়ে আর কামে যাইতে পারে না...
পাতাকুড়ানির মেয়ে তুমি কী কুড়াও? ছায়া কুড়াই-আবুল হাসানের প্যারোডি করে বিড়বিড় করি-
ফুলকুড়ানির মেয়ে তুমি কী কুড়াও? দুঃখ কুড়াই, দুঃখ।
ঈদ ওদের জীবনেও আসবে। ওরাও নতুন জামা পরে ঈদের দিন সেমাই খাবে, পোলাও খাবে। আর শিশুপার্কে গিয়ে বিনে পয়সায় দোল খাবে দোলনায়।
আনিসুল হক প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক ও সাহিত্যিক

50
Common Forum / শবে কদরের সন্ধানে
« on: June 07, 2018, 10:20:58 AM »
শবে কদর কোরআন নাজিলের রাত। রমজান মাসের এ রাতে পবিত্র মক্কা মুকাররমার হেরা পর্বতের গুহায় আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে ফেরেশতাদের সরদার হজরত জিবরাইল (আ.)-এর মাধ্যমে বিশ্ব নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি মহাগ্রন্থ আল কোরআন অবতীর্ণ হয়।

আসমানি এক শ সহিফা ও চারখানা কিতাবসহ মোট এক শ চারটি কিতাবের মধ্যে কোরআনই সেরা। কোরআন সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানি কিতাব। কারণ এই কিতাব নাজিল হয়েছে আখেরি নবী, সর্বশ্রেষ্ঠ নবী, নবীগণের ইমাম, রাসুলদের সরদার, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হজরত মুহাম্মদ মুস্তফা আহমদ মুজতবা (সা.)-এর প্রতি। এই কোরআনের স্পর্শ বড়ই সৌভাগ্যের। হজরত জিবরাইল (আ.) এই কোরআন বহন করেই ফেরেশতাদের সরদার হওয়ার গৌরব লাভ করেছেন। মরুর দেশ ‘জাজিরাতুল আরব’ এই কোরআনের স্পর্শেই পবিত্র আরব ভূমির সম্মান লাভ করেছে। অলক্ষুনে ও দুর্ভোগালয় খ্যাত ‘ইয়াসরিব’ এই কোরআনের বরকতেই পুণ্যভূমি ‘মদিনা মুনাওয়ারা’র সম্মানে ধন্য হয়েছে। তাগুতের আখড়া, পাপের আকর, শিরক ও কুফরের শীর্ষ তীর্থস্থান ‘বাক্কা’ এই কোরআনের তাজাল্লিতে পবিত্র মক্কা নগরীতে রূপান্তরিত হয়েছে। এই কোরআনের পরশে স্বল্পমূল্য কাপড়ের ‘গেলাফ’ বুকে জড়ানোর সম্মান পাচ্ছে। এই কোরআনের ছোঁয়ায় সাধারণ কাঠের ‘রেহাল’ সম্মানের চুমু পাচ্ছে।

সর্বোপরি কোরআনের সংস্পর্শে একটি সাধারণ রাত ‘লাইলাতুল কদর’ বা ‘শবে কদর’ রজনীর সম্মানে বিভূষিত হয়েছে। কোরআনের সঙ্গে যাঁর যতটুকু সম্পর্ক ও সান্নিধ্য থাকবে তিনি ততটুকু সম্মানিত ও মর্যাদার অধিকারী হবেন। প্রিয় হাবিব (সা.) বলেন, ‘কোরআনওয়ালা-ই আল্লাহওয়ালা এবং তাঁর খাস ব্যক্তি।’ (বুখারি)। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘যার অন্তরে কোরআনের সামান্যতম অংশও নেই, সে যেন এক বিরান বাড়ি।’ (বুখারি ও মুসলিম)।

আল্লাহ তাআলা বলেন: ‘রমজান মাস! যে মাসে কোরআন নাজিল হয়েছে মানবের দিশারিরূপে ও হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শন।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৫)। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আরও বলেন: ‘উজ্জ্বল কিতাবের শপথ! নিশ্চয় আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয় আমি ছিলাম সতর্ককারী। যাতে সকল গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয় আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি। এ হলো আপনার প্রভুর দয়া, নিশ্চয় তিনি সব শোনেন ও সব জানেন। তিনি নভোমণ্ডল-ভূমণ্ডল ও এ উভয়ের মাঝে যা আছে সে সবের রব। যদি তোমরা নিশ্চিত বিশ্বাস করো; তিনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই, তিনি জীবন ও মৃত্যু দেন, তিনিই তোমাদের পরওয়ারদিগার আর তোমাদের পূর্ব পুরুষদেরও। তবুও তারা সংশয়ে রঙ্গ করে। তবে অপেক্ষা করো সে দিনের, যে দিন আকাশ সুস্পষ্টভাবে ধোঁয়াচ্ছন্ন হবে।’ (সুরা-৪৪ দুখান, আয়াত: ১-১০)।
শবে কদর ও কোরআন অবতরণ এবং এই রাতের ফজিলত সম্পর্কে দয়াময় আল্লাহ কোরআনে কারিমে ‘সুরা কদর’ নামে একটি স্বতন্ত্র সুরা নাজিল করেছেন। তাতে তিনি বলেছেন: ‘নিশ্চয়ই আমি কোরআন নাজিল করেছি মর্যাদাপূর্ণ কদর রজনীতে। আপনি কি জানেন মহিমাময় কদর রজনী কী? মহিমান্বিত কদর রজনী হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতাগণ হজরত জিবরাইল (আ.) সমভিব্যাহারে অবতরণ করেন; তাদের প্রভু মহান আল্লাহর নির্দেশ ও অনুমতিক্রমে, সকল বিষয়ে শান্তির বার্তা নিয়ে। এই শান্তির ধারা চলতে থাকে উষার উদয় পর্যন্ত। (সুরা-৯৭ কদর, আয়াত: ১-৫)।

হজরত উবাদা ইবনে সামিত (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) শবে কদরের সংবাদ দেওয়ার জন্য বের হলেন, দেখলেন দুজন মুসলমান ঝগড়াবিবাদে লিপ্ত। তারপর তিনি বললেন: ‘শবে কদর সম্বন্ধে খবর দেওয়ার জন্য আমি বের হয়েছিলাম; তোমাদের ওমুক ওমুক বিবাদে লিপ্ত হলো, আর তা আমা থেকে তুলে নেওয়া হলো। হয়তো এটাই তোমাদের জন্য মঙ্গলজনক হবে। এখন তোমরা তা রমজানের শেষ দশকে (সাতাশ, উনত্রিশ ও পঁচিশে) তালাশ করো।’ (বুখারি)। বিভিন্ন বর্ণনায় একুশ, তেইশ এবং বিজোড় রাতগুলোর কথা রয়েছে।

উম্মুল মোমেনিন হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.) কে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! (সা.), আমি যদি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে ওই রাতে আমি আল্লাহর কাছে কী দোয়া করব?’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘তুমি বলবে, আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া; ফাফু আন্নী।’ ‘হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমা ভালোবাসেন; তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন।’ (ইবনে মাজা, সহিহ-আলবানি)।

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির যুগ্ম মহাসচিব ও আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম–এর সহকারী অধ্যাপক

51

পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে যশোর, সৈয়দপুর ও রাজশাহী থেকে ঢাকায় আসতে বিশেষ ভাড়া ঘোষণা করেছে বেসরকারি বিমান সংস্থা নভোএয়ার। এ সুযোগের মাধ্যমে যাত্রীরা ১২ জুন থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত যশোর-ঢাকা, সৈয়দপুর-ঢাকা ও রাজশাহী-ঢাকা পথে ভ্রমণ করতে পারবে সর্বনিম্ন ২ হাজার ১৮ টাকায়। এ ছাড়া ১৭ থেকে ২০ জুন পর্যন্ত ঢাকা-যশোর, ঢাকা-সৈয়দপুর ও ঢাকা-রাজশাহী পথে ভ্রমণ করা যাবে সর্বনিম্ন ২ হাজার ১৮ টাকায়।

নভোএয়ারের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়ে বলা হয়েছে, যাত্রীদের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ১২ জুন থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত প্রতিদিন নিয়মিত ফ্লাইটের পাশাপাশি সৈয়দপুর, যশোর ও রাজশাহীতে প্রতিদিন অতিরিক্ত দুটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। এ ছাড়া ঈদ উপলক্ষেÿনভোএয়ার অ্যাপের মাধ্যমে টিকিট কিনলে সব টিকিটে ১০ শতাংশ মূল্যছাড় পাওয়া যাবে। সুবিধাটি পেতে যাত্রীদের নভোএয়ারের মোবাইল অ্যাপে প্রমো কোড অপশনে NOVOAIRAPP লিখে টিকিট কিনতে হবে।

টিকিটের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ১৩৬৩০ অথবা ০১৭৫৫ ৬৫৬৬৬২ নম্বরে ফোন করা যাবে। নভোএয়ারের ওয়েবসাইট www.flynovoair.com  থেকেও টিকিট কেনা যাবে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদিত এজেন্টের কাছেও টিকিট পাওয়া যাবে। বিজ্ঞপ্তি।

52
ইতিকাফ একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত ইবাদত। ইতিকাফের মাধ্যমে মানুষ দুনিয়ার সবকিছু ছেড়ে আক্ষরিক অর্থেই বাহ্যত আল্লাহর সন্নিধানে চলে যায়। রমজানের শেষ দশক তথা ২০ রমজান সূর্যাস্তের আগে থেকে ঈদের চাঁদ তথা শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যাওয়া বা ৩০ রমজান পূর্ণ হয়ে ওই দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত ইতিকাফ করা সুন্নতে মুআক্কাদাহ কিফায়াহ। কোনো মসজিদ মহল্লায় কয়েকজন বা কোনো একজন আদায় করলে সবাই দায়মুক্ত হবেন। আর কেউই আদায় না করলে সবাই দায়ী থাকবেন। তবে আদায়ের ক্ষেত্রে যিনি বা যাঁরা আদায় করবেন, শুধু তিনি বা তাঁরাই সওয়াবের অধিকারী হবেন।

‘ইতিকাফ’ আরবি শব্দ, অর্থ হলো অবস্থান করা, আবদ্ধ করা বা আবদ্ধ রাখা। পরিভাষায় ইতিকাফ হলো ইবাদতের উদ্দেশ্যে ইতিকাফের নিয়তে নিজেকে নির্দিষ্ট জায়গায় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আবদ্ধ রাখা। যিনি ইতিকাফ করেন তাঁকে ‘মুতাকিফ’ বলে। আল্লাহ তাআলা বলেন: যখন আমি কাবা গৃহকে মানুষের জন্য সম্মিলনস্থল ও শান্তির আলয় করলাম, আর তোমরা ‘মাকামে ইবরাহিম’কে নামাজের জায়গা বানাও এবং আমি ইবরাহিম ও ইসমাইলকে আদেশ করলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, ইতিকাফকারী ও রুকু-সিজদাকারীদের জন্য পবিত্র রাখো। আর যতক্ষণ তোমরা ইতিকাফ অবস্থায় মসজিদে অবস্থান করো, ততক্ষণ পর্যন্ত স্ত্রীদের সঙ্গে মিশো না। এই হলো আল্লাহ কর্তৃক বেঁধে দেওয়া সীমানা। অতএব, এর কাছেও যেয়ো না। এমনিভাবে বর্ণনা করেন আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহ মানুষের জন্য, যাতে তারা তাকওয়া লাভ করতে পারে। (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১২৫)। হজরত আয়িশা সিদ্দীকা (রা.) বর্ণনা করেন, নবী করিম (সা.) আজীবন রমজানের শেষ দশকগুলো ইতিকাফ করেছেন। তাঁর ওফাতের পরও তাঁর বিবিরা ইতিকাফ করতেন। (বুখারি ও মুসলিম; আলফিয়্যাতুল হাদিস: ৫৪৬, পৃষ্ঠা: ১২৯)।

ইতিকাফ দশ দিনের কম যেকোনো পরিমাণ সময় করলে তা নফল ইতিকাফ হিসেবে গণ্য হবে। নফল ইতিকাফও অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ নেক আমল; তাই সম্পূর্ণ সুন্নত ইতিকাফ পালন করতে না পারলে যত দূর সম্ভব নফল ইতিকাফ করাও গুরুত্বপূর্ণ। ইতিকাফের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো শবে কদর প্রাপ্তি; রমজানের শেষ দশক ইতিকাফ করলে শবে কদর প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়। নফল ইতিকাফও অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ আমল; তাই সম্পূর্ণ সুন্নত ইতিকাফ পালন করতে না পারলে যতদূর সম্ভব নফল ইতিকাফ করাও গুরুত্বপূর্ণ। নফল ইতিকাফ বছরের যেকোনো সময়ই করা যায়। ইতিকাফের জন্য রোজা শর্ত; কিন্তু স্বল্প সময় (এক দিনের কম সময়) ইতিকাফ করলে তার জন্য রোজা রাখা শর্ত নয়। নফল ইতিকাফ মানত করলে বা
আরম্ভ করে ছেড়ে দিলে, তা পূর্ণ করা ওয়াজিব। এর জন্য রোজা শর্ত এবং এটি এক দিনের (২৪ ঘণ্টা)  কমে হবে না।

পুরুষদের মসজিদে ইতিকাফ করতে হয়; নারীরা নির্দিষ্ট ঘরে বা নির্ধারিত কক্ষে ইতিকাফ করবেন। প্রাকৃতিক প্রয়োজন ও একান্ত ঠেকা ছাড়া ওই ঘর বা কক্ষ থেকে বের হবেন না। অজু ইস্তিঞ্জা বা পাক পবিত্রতার জন্য বাইরে বের হলে কারও সঙ্গে কথাবার্তা বলবেন না বা সালাম বিনিময় করবেন না। তবে দরকার হলে ওই কক্ষের ভেতর থেকে বাইরের কাউকে ডাকতে পারবেন এবং কেউ ভেতরে এলে তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা বলতে পারবেন। ইতিকাফ কক্ষে এমন কেউও অবস্থান করতে পারবেন, যাঁরা ইতিকাফ করছেন না। ইতিকাফ কক্ষটি যদি শয়নকক্ষ হয় এবং একই কক্ষে বা একই বিছানায় অন্য যে কেউ অবস্থান করেন, তাতেও কোনো ক্ষতি নেই; এমনকি স্বামীও পাশে থাকতে পারবেন; তবে স্বামী-স্ত্রীসুলভ আচরণ ইতিকাফ অবস্থায় নিষিদ্ধ; এর দ্বারা ইতিকাফ নষ্ট হয়ে যাবে। আল্লাহ তাআলা বলেন: ‘আর তোমরা স্ত্রীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ো না, যখন তোমরা ইতিকাফরত থাকবে মসজিদে।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৮৭)।

ইতিকাফ অবস্থায় এমন সব কথা বলা ও কাজ করা বৈধ, যাতে কোনো গুনাহ নেই। প্রয়োজনীয় সাংসারিক কথাবার্তা বলতেও নিষেধ নেই; তবে অহেতুক অযথা বেহুদা অনর্থক কথাবার্তা দ্বারা ইবাদতের পরিবেশ নষ্ট করা যাবে না। ইতিকাফকারী মসজিদের মধ্যে সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারবেন এবং মাথায়, দাড়িতে ও চুলে তেল লাগাতে পারবেন। মাথার চুলে ও দাড়িতে চিরুনি করতে পারবেন। যাঁরা শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত, তাঁরা ইতিকাফ অবস্থায় মসজিদের ভেতরে তালিম দিতে পারবেন। (খোলাসা)।

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির যুগ্ম মহাসচিব ও আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজম–এর সহকারী অধ্যাপক

53
২০১৪ সাল থেকে ভারত একতরফাভাবে তিস্তার পানি প্রত্যাহার করেছে। ফাইল ছবি২০১৪ সাল থেকে ভারত একতরফাভাবে তিস্তার পানি প্রত্যাহার করেছে। ফাইল ছবি
তিস্তা নদী হলো উত্তরের জীবনরেখা। তিস্তা তার জলদুগ্ধে উত্তরের জীবনকে বাঁচিয়ে রাখে। কখনো প্রত্যক্ষভাবে, কখনো পরোক্ষভাবে। উত্তরের জনপদে তিস্তা অববাহিকার মানুষ তাই তিস্তার কাছে ঋণী। ২০১৪ সালে তিস্তার পানি একতরফা প্রত্যাহার করার কারণে তিস্তা অববাহিকায় ভীষণ সংকট দেখা দিয়েছে। তিস্তায় যখন পানির প্রয়োজন ৫ হাজার কিউসেক, তখন পানি পাওয়া যায় মাত্র ২০০-৩০০ কিউসেক। কখনো কখনো এরও কম।

রংপুরের মানুষের সংকট সরকারের কাছে সব সময় কম গুরুত্বপূর্ণ। তার প্রমাণ একবাক্যেই দেওয়া যায়। বাংলাদেশ যখন উন্নয়নশীল দেশের সিঁড়িতে পা রাখছে, তখন রংপুর বিভাগের দারিদ্র্যের হার গত পরিসংখ্যানের হারের চেয়ে বেড়েছে। তিস্তায় পানি না থাকার কারণে যত সংকট দেখা দিয়েছে, তা নিয়ে সরকারকে খুব বেশি বিচলিত হতে দেখা যায়নি।

তিস্তায় যখন পূর্ণমাত্রায় পানি আসত তখন শুষ্ক মৌসুমে প্রায় ৬৫-৭০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হতো। সাধারণভাবে ধান চাষ করলে যে ব্যয় হয়, সেচ প্রকল্পের সুবিধা নিয়ে সেই ধান চাষ করলে ব্যয় হয় ২০ ভাগের ১ ভাগ। রংপুরের মঙ্গা দূরীকরণে তিস্তা সেচ প্রকল্প অনন্য ভূমিকা পালন করেছে। এখন সেই সেচ প্রকল্প কার্যত শুষ্ক মৌসুমে অচল। যে আট হাজার হেক্টর জমিতে রেশনিং সিস্টেমে পানি দিয়ে ধান চাষ করা হচ্ছে, তা নদীকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যই ছেড়ে দেওয়া প্রয়োজন। তিস্তায় পানি না থাকার কারণে আর অসংখ্য সমস্যা দেখা দিয়েছে। উত্তরের জীবনের জন্য তিস্তার পানির কোনো বিকল্প নেই।


তিস্তা নিয়ে বাংলাদেশ-ভারত আলোচনা অনেক পুরোনো। দেশ স্বাধীনের পরপরই ১৯৭২ সালে তিস্তার পানি নিয়ে যৌথ নদী কমিশনের দ্বিতীয় সভায় আলোচনা হয়। ১৯৮৩ সালে অন্তর্বর্তীকালীন একটি চুক্তিও হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের ছিল ৩৬ শতাংশ, ভারত ৩৯ শতাংশ আর ২৫ শতাংশ পানি ছিল নদীর নব্যতা বজায় রাখার জন্য। ১৯৮৫ সালে সেই অন্তর্বর্তীকালীন চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। ১৯৮৭ সালে মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হয়েছিল। এরপর আর কোনো চুক্তি হয়নি।

২০১১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি হওয়ার কথা ছিল। আমরা আশায় বুক বেঁধেছিলাম। আমরা তখন আন্দোলন করছিলাম ন্যায্য হিস্যার ভিত্তিতে পানি বণ্টন হতে হবে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একসঙ্গেই বাংলাদেশ সফরে আসার কথা ছিল। হঠাৎ করেই বাংলাদেশ সফরের আগ মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর এলেন না। মনমোহন সিং সহজেই বললেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ছাড়া তিনি তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি করবেন না। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যকার খবর আমাদের পক্ষে উদ্ধার করা কঠিন। যদি তাদের মধ্যে এভাবেই ঘটনা সাজানো থাকে, মুখ্যমন্ত্রী পানি দিতে অস্বীকৃতি জানাবেন আর এই সূত্র ধরে প্রধানমন্ত্রী শুধু সময় নেবেন, তাহলে আমাদের ক্ষতি ছাড়া লাভ কিছু হবে না।

২০১৫ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশে এসেছিলেন। আমরা আরেকবার আশায় বুক বেঁধেছিলাম। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা ছেড়ে আসার সময় সাংবাদিকদের সাফ জানিয়ে দিয়ে এসেছিলেন; তিস্তা নিয়ে কোনো কথাই তিনি বলবেন না। তবে তিনি বাংলাদেশে এসে বলেছিলেন, ‘আমার ওপর আস্থা রাখুন।’ তিস্তা প্রসঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী কারও ওপর কি আমাদের আস্থা রাখার মতো কোনো ঘটনা ঘটেছে? বরং এসব আলাপের দীর্ঘসূত্রতায় তিস্তার পানি একতরফা প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারত। চীনের কাছ থেকে ব্রহ্মপুত্রের পানির ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভারত বাংলাদেশকে আহ্বান জানায় পাশে থাকার জন্য, আর তিস্তার প্রসঙ্গে নীরবতা পালন করে। ভারত সরকার নদী প্রশ্নে দুই রকম নীতি গ্রহণ করেছে। ভারতের এই কৌশল বুঝেই বাংলাদেশকে তিস্তার পানির জন্য তৎপরতা চালাতে হবে।

তিস্তা নিয়ে নানান প্রশ্ন জন্ম নিচ্ছে। বাংলাদেশ কেন ভারতের কাছে তিস্তার পানি জোরেশোরে চায় না? ২০১১ সালে যখন পানিবণ্টন চুক্তি ভেস্তে গেল, তখন থেকেই যদি আমরা তিস্তার পানির জন্য ভারত সরকারকে ক্রমাগত চাপ দিতে থাকতাম, তাহলে ২০১৪ সালে একতরফা পানি প্রত্যাহার করত না। আমাদের উদাসীনতাও তিস্তার পানি প্রত্যাহারে সহযোগিতা করেছে কি না, তা-ও ভেবে দেখা প্রয়োজন। ২০১১ সালে যখন পানিবণ্টন চুক্তির প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েছিল তখন পানিসম্পদমন্ত্রী ছিলেন রমেশচন্দ্র সেন। তাকে সেই প্রক্রিয়ার সঙ্গে ভালোভাবে যুক্ত করাই হয়নি। ভারত একতরফা পানি প্রত্যাহার করার কারণে বাংলাদেশ কতখানি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, তা-ও ভারতের কাছে তুলে ধরা হয় না।

তিস্তার পরিবর্তে এখন তোরসা, জলঢাকা নদীর পানির কথা বলছে ভারত। এটি তিস্তার পানি না দেওয়ার জন্য ভারতের নয়া কৌশল। ১৯৯৭ সালে আন্তর্জাতিক পানিপ্রবাহ কনভেনশনটি ২০১৪ সালের ১৭ আগস্ট থেকে আইনে পরিণত হয়েছে। সেখানে উজানের দেশ থেকে ভাটির দেশে প্রবাহিত নদীর পানি কীভাবে ব্যবহৃত হবে, তার দিকনির্দেশনা আছে। যে নদীর পানি যে খাতে প্রবাহিত হয়, সেই নদীর পানি সেই খাতে না রেখে খাত পরিবর্তন করলে তা নদীর জন্য কল্যাণের হবে না। ভারতের যেটি তোরসা নদী বাংলাদেশ তা দুধকুমার। ভারতের যেটি জলঢাকা, বাংলাদেশ তা ধরলা নদী। এ নদীতে এমন উল্লেখযোগ্য পানি থাকে না, যা দিয়ে তিস্তার ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। আর এ দুটি নদীতে পানি থাকলেও তা দিয়ে তিস্তা ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হতো না।

২০১৪ সাল থেকে ভারত একতরফা পানি প্রত্যাহার করছে। আর আমাদের কূটনৈতিক তৎপরতাও তিস্তায় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আমাদের নদী নিয়ে দুই রকম কমিশন আছে। একটি বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশন আর একটি জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের যে আইন রয়েছে তাতে ভারতের সঙ্গে আলাপ করারÿক্ষেত্রে সেই ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। আর যৌথ নদী কমিশন বছরে চারবার করে সভা করার কথা থাকলেও চার বছরে একবার করে বসে কি না, তার খবর আমরা পাই না। আর তা ছাড়া তিস্তা প্রসঙ্গে যৌথ নদী কমিশনের কোনো কার্যক্রম আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়নি। আমরা মনে করি, তিস্তা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। অবস্থা দেখে মনে হয়, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির সম্ভাবনা অনেকটাই ঝিমিয়ে গেছে। চেষ্টা ঝিমিয়ে গেলেও ভারত কিন্তু বসে নেই। ভারত একতরফা পানি প্রত্যাহার করে নিয়ে বসে আছে। সুতরাং বড় চেষ্টা আসতে হবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকেই।

54
চাকরির পাশাপাশি স্নাতকোত্তর করতে চান অনেকেই। এই চাহিদার কথা মাথায় রেখে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ধ্যায় বা ছুটির দিনে স্নাতকোত্তরের ক্লাস চালু আছে। কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে, কী কী বিষয়ে স্নাতকোত্তর করা যায়? ভর্তির যোগ্যতা কী কী? খরচ কেমন হয়? যাঁরা এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন, এই প্রতিবেদন তাঁদের জন্য

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরের সুযোগ
পছন্দের শীর্ষে আইবিএ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) স্নাতকোত্তরসহ অন্য কোর্সগুলো চাকরিজীবীদের পছন্দের শীর্ষে। ব্যবসায় শিক্ষা, প্রকৌশল, কৃষি বা মেডিসিন বিষয়ে স্নাতক করা যে কেউ ন্যূনতম যোগ্যতা পূরণ করে এমবিএতে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারেন।

এক বছরের ‘এক্সিকিউটিভ এমবিএ’ শুধু চাকরিজীবীদের জন্যই। সর্বনিম্ন তিন বছর চাকরির অভিজ্ঞতা থাকলে এই কোর্সে ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া যাবে। আইবিএতে চাকরিজীবীদের জন্য চার বছরব্যাপী ডক্টর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ডিবিএ) প্রোগ্রাম রয়েছে। এতে ভর্তি হতে হলে পাঁচ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা দরকার, এর মধ্যে দুই বছর জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করতে হবে।

ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সব কটি বিভাগেই দুই বছর মেয়াদি সান্ধ্যকালীন এমবিএ করার সুযোগ রয়েছে। চাকরির ফাঁকে এখানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিতে পারেন। অনুষদের অধীনে একযোগে ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে এসব কোর্সে ভর্তি হওয়া যায়।

তবে এর বাইরেও চাকরিজীবীদের জন্য আলাদাভাবে কয়েকটি বিভাগ পেশাগত স্নাতকোত্তর কোর্স করায়। এর মধ্যে অ্যাকাউন্টিং ও ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগ ‘অ্যাকাউন্ট্যান্সি ইন ট্যাক্সেশন’ ও ‘প্রফেশনাল অ্যাকাউন্টিং’, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধীন ‘প্রফেশনাল হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট’, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগে ‘ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস’ কোর্স করানো হয়। এ ছাড়া ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, ফিন্যান্স ও মার্কেটিং বিভাগে প্রফেশনাল কোর্স আছে।

আরও যেসব বিভাগে পড়তে পারেন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধীন মাস্টার্স ইন গভর্নেন্স স্টাডিজ বিষয়ে স্নাতকোত্তর করানো হয়। এই স্নাতকোত্তর কোর্সের ক্লাস হয় শুধু শুক্র ও শনিবার। বছরে দুবার এই কোর্সে ভর্তি করা হয়।

চাকরিজীবীদের জন্য তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগেও সান্ধ্যকালীন স্নাতকোত্তর করার সুযোগ রয়েছে। উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত স্নাতকোত্তর কোর্সের ভর্তির আবেদন করা যাবে। ভর্তি পরীক্ষা হবে আগামী ৬ এপ্রিল। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধীন এক বছর মেয়াদি ‘সোসিওলজি অ্যান্ড সোশ্যাল পলিসি’ নামে স্নাতকোত্তর কোর্স রয়েছে।

অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড ক্রিমিনাল জাস্টিস বিষয়ে স্নাতকোত্তর করা যাবে। এ ছাড়া টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফি, পপুলেশন সায়েন্স, দুর্যোগবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা, যোগাযোগ বৈকল্য, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, লোকপ্রশাসন, ইসলামিক স্টাডিজ, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউট, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজ ইনস্টিটিউট ও আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টিচিংসহ কয়েকটি কোর্সে সান্ধ্যকালীন স্নাতকোত্তর করতে পারেন।

বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়েও আছে পড়ার সুযোগ
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধীনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে স্নাতকোত্তর করানো হয়। দুই বছর মেয়াদি এই কোর্সে ভর্তির ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, গণমাধ্যমকর্মী, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের বিশেষভাবে বিবেচনা করা হয়। শুক্র ও শনিবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ক্লাস হয়।
তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটে বছরে দুবার সান্ধ্যকোর্সে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। ছুটির দিনগুলোতে এখানে ক্লাস হয়। কম্পিউটার বিজ্ঞান, কম্পিউটার প্রকৌশল, তথ্যপ্রযুক্তি, ইইই, ইসিই, ইটিই বিষয়ে স্নাতকধারীরা এখানে ভর্তি পরীক্ষা দিতে পারেন। যাঁরা প্রকৌশল বা বিজ্ঞানের কোনো বিষয় থেকে স্নাতক করেছেন, তাঁরা ভর্তি হতে পারেন শক্তি ইনস্টিটিউটের দেড় বছরের স্নাতকোত্তর কোর্সে। এ ছাড়া, অণুজীববিজ্ঞান, ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি, সমুদ্রবিজ্ঞান, নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং, থিউরিটিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউটেশনাল কেমিস্ট্রি বিভাগে নিয়মিত স্নাতকোত্তর করার সুযোগ আছে।

ভর্তির প্রাথমিক যোগ্যতা
দেশি-বিদেশি, সরকার স্বীকৃত যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পর্যায়ের পড়াশোনায় দ্বিতীয় শ্রেণি বা ন্যূনতম সিজিপিএ-২.৫০ গ্রেড থাকলে এসব কোর্সে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারেন। বিভাগ অনুসারে এই ন্যূনতম সিজিপিএতে কমবেশি দেখা যায়। তবে ভর্তি পরীক্ষায় একটি ন্যূনতম নম্বর পেতে হবে। বিশেষায়িত ও কারিগরি বিভাগে পড়াশোনায় নির্দিষ্ট বিভাগের স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি থাকলে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেন।

ভর্তির প্রক্রিয়া
এক বা দেড় বছর মেয়াদি কোর্সগুলোতে সাধারণত বছরে দুইবার, আর দুই বছর মেয়াদি কোর্সগুলোতে বছরে একবার ভর্তির আবেদন নেওয়া হয়। এ জন্য বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। পাশাপাশি যেসব বিভাগের নিজস্ব ওয়েবসাইট আছে, তাতে চোখ রাখতে পারেন।
ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীরা নির্দিষ্ট ইনস্টিটিউট বা ব্যাংক থেকে ফি জমা দিয়ে ভর্তির ফরম সংগ্রহ করেন। সাধারণত প্রতি সেশনে বিভাগভেদে ২০ থেকে ১০০ জন শিক্ষার্থী নেওয়া হয়। ভর্তি পরীক্ষায় নির্ধারিত বিষয়সহ ইংরেজি, বাংলা ও সাধারণ জ্ঞানের ওপর প্রশ্ন থাকে। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত ছাত্রছাত্রীদের মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হয়। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে চূড়ান্তভাবে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত করা হয়।

পড়াশোনার খরচ
বিভাগভেদে স্নাতকোত্তরে ভর্তির জন্য খরচে ভিন্নতা দেখা যায়। ভিন্ন ভিন্ন কোর্সে, বিভিন্ন বিভাগ অনুসারে সর্বনিম্ন এক লাখ টাকা থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

বিস্তারিত জানতে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ওয়েবসাইট ও বিভিন্ন বিভাগ বা ইনস্টিটিউটের নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে ভর্তির যোগ্যতা, নিয়মাবলি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের খোঁজ

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে এক্সিকিউটিভ এমবিএ, এমএস ইন ইকোনমিকস, এলএলএম, এমএস ইন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, এমএ ইন ইংলিশ, এমএস ইন বায়োটেকনোলজি, এক্সিকিউটিভ এমপিএইচসহ বিভিন্ন সান্ধ্যকালীন কোর্সে ভর্তি হওয়া যায়। কোর্সের মেয়াদ এক থেকে দুই বছর। ভিন্ন ভিন্ন কোর্সভেদে খরচ পড়বে দেড় থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা। ওয়েবসাইট: northsouth.edu/

ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (আইইউবি)
ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে পেশাজীবীদের জন্য এক্সিকিউটিভ এমবিএ, এমএস ইন কম্পিউটার সায়েন্স, এমএস ইন ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, এমএসএস ইন মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন, এক্সিকিউটিভ এমপিএইচ বিষয়ে ভর্তির সুযোগ আছে। ওয়েবসাইট: iub.edu.bd

আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (এআইইউবি)
এআইইউবিতে এক্সিকিউটিভ এমবিএ, মাস্টার্স ইন পাবলিক হেলথ, মাস্টার্স ইন ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজসহ বিভিন্ন কোর্সে পেশাজীবীরা সান্ধ্যকালীন পড়াশোনা করতে পারেন। এক থেকে দেড় বছর মেয়াদি বিভিন্ন কোর্সের জন্য প্রায় দেড় থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন স্কুল ও ইনস্টিটিউটে মাস্টার্স ইন ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, মাস্টার্স ইন ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড প্র্যাকটিস, মাস্টার্স ইন প্রকিউরমেন্ট অ্যান্ড সাপ্লাই ম্যানেজমেন্ট, এমবিএ, এমএস ইন ইইই, এমএ ইন ইংলিশ, এমএস ইন বায়োটেকনোলজি ডিগ্রির জন্য সান্ধ্যকালীন পড়ার সুযোগ আছে। কোর্সভেদে প্রায় দুই লাখ থেকে সাড়ে চার লাখ টাকা খরচ পড়বে। এ ছাড়া সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টে এমএ ইন গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট করার সুযোগ আছে। বিভিন্ন কোর্সের মেয়াদ প্রায় এক থেকে দুই বছর। ওয়েবসাইট: bracu.ac.bd

ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসেফিক
ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসেফিকে পুরকৌশল, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও এক্সিকিউটিভ এমবিএ ডিগ্রির জন্য সান্ধ্যকালীন স্নাতকোত্তর করার সুযোগ আছে। কোর্সভেদে ১ লাখ ৪০ হাজার থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকার মতো খরচ পড়বে। ওয়েবসাইট: uap-bd.edu

নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ
নর্দান ইউনিভার্সিটিতে কর্মজীবীদের জন্য শুক্র ও শনিবার এমবিএ, এলএলএম ও এমপিএইচ ডিগ্রির জন্য ক্লাস করার সুযোগ আছে। খরচ পড়বে প্রায় দেড় লাখ টাকা। ওয়েবসাইট: nub.ac.bd

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
চাকরির পাশাপাশি এমবিএ করতে খরচ হবে ১ লাখ ৭০ হাজার থেকে ২ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। মাস্টার্স ইন পাবলিক হেলথ পড়ার খরচ ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। শুক্র ও শনিবারসহ সপ্তাহের বিভিন্ন দিনে সন্ধ্যায় ক্লাস হয়। এ ছাড়া এমএ ইন ইংলিশ, মাস্টার্স অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ডিগ্রির জন্য চাকরিজীবীরা ভর্তি হতে পারেন। কোর্সভেদে এক থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ হবে। ওয়েবসাইট: daffodilvarsity.edu.bd/

ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি (আইইউবিএটি)
আইইউবিএটিতে চাকরিজীবীদের জন্য মেকানিক্যাল, সিভিল, ইলেকট্রিক্যাল ও সিএসই বিষয়ে ব্যাচেলর করার সুযোগ আছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবারসহ বিভিন্ন দিনে সন্ধ্যায় ক্লাস হয়। চাকরিজীবীরা যেন সন্ধ্যায় ক্লাস করতে পারেন, সে জন্য বিশেষভাবে এমবিএ প্রোগ্রাম সাজানো হয়েছে। সান্ধ্যকালীন এমবিএর জন্য খরচ হয় আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা।

ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি
পেশাজীবীরা ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যায় থেকে ছুটির দিন ও সন্ধ্যায় ইএমবিএ, এমডিএস, এমএ ইন ইংলিশ কোর্সে ভর্তি হতে পারেন। মোট খরচ পড়বে কোর্সভেদে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার থেকে ৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা।

55


প্রয়োজনে অনেকে ঋণ নিয়ে থাকেন। আমরা কখনো ব্যাংক বা বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে আবার কখনো বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে ধার করি। ঋণ বা ধার করার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রেখে পা বাড়ানো উচিত, নতুবা আইনি জটিলতা থেকে শুরু করে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ম্যানেজার জিল্লুর রহমান খান বলেন, ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে ঋণ গ্রহণ করা উচিত। বন্ধুবান্ধব বা আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে ছোট অঙ্কের অর্থ ধার করুন কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে বড় অঙ্কের অর্থ ধার করুন—দুই ক্ষেত্রেই বেশ সতর্ক থাকতে হবে। ঋণ ও ধার গ্রহণের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।

১. টাকা কেন প্রয়োজন তা আগে ভাবুন

অনেক ক্ষেত্রে হয়তো অর্থের প্রয়োজন নেই, তারপরেও আমরা ঋণ গ্রহণ করি। এ ক্ষেত্রে কেন অর্থ প্রয়োজন, তা কোন ক্ষেত্রে ব্যয় করবেন, তা একটি কাগজে লিখে অঙ্ক কষে কারণগুলো লিখে ফেলুন। খুব প্রয়োজন না হলে কখনোই অনর্থক ঋণের বোঝা মাথায় কেন চাপাবেন?

২. বিকল্প উপায় মাথায় রাখুন

আপনি হয়তো মোটরসাইকেল কেনার জন্য অর্থ ধার করছেন। অথচ সাইকেল কিনলেই আপনি প্রতিদিন অফিসে যেতে পারছেন স্বাচ্ছন্দ্যে। কী করতে অর্থ ঋণ নিচ্ছেন তার বিকল্প উপায়গুলো ভেবে সিদ্ধান্ত নিন।

৩. টাকা ঠিকমতো ব্যবহারের পরিকল্পনা করুন

ঋণ নেওয়ার আগে থেকে টাকা কীভাবে ব্যবহার করবেন তা পরিকল্পনায় রাখতে হবে। হুট করে অনেকগুলো টাকা পেয়ে গেলেন আর তা কোনো কাজেই ব্যবহার করলেন না, এমনটা করা উচিত নয়।

৪. টাকা কীভাবে খরচ করছেন তা মাথায় রাখুন

ঋণের টাকা ঠিকপথে ব্যয় করছেন কি না তা খেয়াল রাখুন। টাকার সদ্ব্যবহারের দিকে খেয়াল রাখতেই হবে। টাকার কারণে যেন বিলাসিতা না জন্মে, সেদিকে খেয়াল রাখুন।

৫. সম্পর্ক বজায় রাখুন

যাঁর কাছ থেকে টাকা ধার করছেন, তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখুন। কোনো ক্ষেত্রে টানাটানির সম্পর্ক তৈরি হলে তা মিটিয়ে ভালো সম্পর্ক তৈরিতে মনোযোগ দিন। ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ শোধের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা হলে ব্যাংক ম্যানেজার কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিজের সমস্যার কথা জানাতে পারেন।

৬. আইনের খুঁটিনাটি ও শর্তগুলো জেনে নিন

বিভিন্ন ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রের সংশ্লিষ্ট আইনগুলো সম্পর্কে জেনে রাখতে পারেন। কোনো শর্ত থাকলে সে সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে জেনে নিন। ব্যাংক-বিমাসংক্রান্ত বিভিন্ন আইনের কঠিন ভাষা না বুঝতে পারলে আইনজীবী কিংবা অভিজ্ঞ কারও পরামর্শ নিতে পারেন।

৭. কাগজ-কলমে হিসাব রাখুন

আমরা অনেক ক্ষেত্রেই ঋণ বা ধার করার সময় মুখে মুখে হিসাব রাখি। মুখস্থ হিসাব রাখলে ভুল হওয়ার সুযোগ থাকে। কাগজ-কলমে কত টাকা নিচ্ছেন, কত টাকা শোধ করছেন তার হিসাব রাখুন। প্রয়োজনে অনলাইনে বিভিন্ন হিসাব রাখার সফটওয়্যার বা মুঠোফোনের অ্যাপস ব্যবহার করতে পারেন।

৮. টাকা শোধের কথা মাথায় রাখতে হবে

টাকা পাওয়ার পরে কীভাবে টাকা শোধ করবেন সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। নিয়মিত হারে টাকা শোধে যেন জটিলতা তৈরি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন। আপনি হয়তো বেতন থেকে ঋণ শোধ করেন, সে ক্ষেত্রে কোনো কারণে ঋণ শোধের ঝুঁকি থাকলে বিকল্প পথ ভেবে রাখুন।

৯. প্রয়োজনে অর্থ ধার করুন

প্রয়োজন ছাড়া কখনোই অর্থ ধার করবেন না। নিজের প্রয়োজনকে বোঝার চেষ্টা করুন। প্রয়োজনের মাত্রা বুঝে ঋণ নিন। হুট করে সিদ্ধান্ত নেবেন না।

১০. আয় বুঝে ব্যয় করুন, সঞ্চয় করুন

আপনার যত আয় ততটাই ব্যয় করুন। নিয়মিত সঞ্চয়ের অভ্যাস করুন। সঞ্চয়ের অভ্যাস ভবিষ্যতের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

56
কিছুদিন আগেই বেড়াতে গিয়েছিলাম মেঘের বাড়িতে। তীব্র শীতের মধ্যেও মেঘের কি অফুরান আনাগোনা। সূর্যের সঙ্গে কানামাছি খেলে খেলে সবগুলো মেঘ ছুঁয়ে গিয়েছিল ১৫ জন ম্যাডভেঞ্চারিস্টকে। অহ্‌, বলা হয়নি, আমাদের ঘোরাঘুরির একটা গ্রুপ আছে—নাম ‘ওয়াইল্ড অ্যাডভেঞ্চার’। এখান থেকেই ১৫ জন মেঘ দেখেতে গিয়েছিলাম মেঘের দেশে। আমরা মেঘের ওপরে দৌড়েছি, পানির নিচে হেঁটেছি, পাহাড়ের ওপরে উড়েছি! বাদ রাখিনি একটি সকালও। শিলং, মেঘালয়, চেরাপুঞ্জি—সব ঘুরে আমরা দেখেছি প্রকৃতির বিস্ময় লিভিং রুট ব্রিজ। দাঁড়িয়েছি পাহাড়ের একেবারে শেষ মাথায়—স্মিতভ্যালিতে, যেখান থেকে একটু পা হড়কালেই কয়েক মাইল নিচে পড়ে যেতে হবে! ঘুরেছি এশিয়ার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন গ্রামে। সবশেষে অবাকের চূড়ান্ত হয়েছি স্বচ্ছ পানির উমগট নদী দেখে। আমরা গিয়েছিয়াম মেঘালয়।

আমাদের সিলেটের তামাবিল সীমান্ত থেকেই ছানাবড়া চোখের শুরু। বাংলাদেশের পুরো উত্তর দিকটা দেয়াল করে দাঁড়িয়ে থাকা মেঘালয়ের সব শেষ শহর ডাউকি। এখানেই বাজারে ডলার আর টাকা ভাঙিয়ে দেশের সীমানা ছুঁয়ে ছুঁয়ে গেলাম পাংতুমাই ঝরনায়। যে ঝরনাটা বাংলাদেশ থেকে শুধু দেখা যায়। সেটার জলে গা না ভিজানোর মতো বোকামি আমরা কেউই করলাম না। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর আমাদের গাড়ি পৌঁছাল এশিয়ার রুয়াই গ্রামে। এখানে রয়েছে প্রকৃতির এক অদ্ভুত সৃষ্টি—লিভিং রুট ব্রিজ। পাহাড়ি ঝিরির দুই পাশের গাছ মিলে প্রাকৃতিকভাবেই তৈরি হয়েছে জীবন্ত এই সেতু। মাথার ওপরে জীবন্ত গাছ, পায়ের নিচে টলটলে পানি!

এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে যাওয়ার পরিবহনএক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে যাওয়ার পরিবহনএরপরের গল্পটুকু স্রেফ অবিশ্বাসের—এরা পাহাড় কাটাকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে! টানা আধঘণ্টা এবড়োখেবড়ো পথে চলার পর হুট করে রাস্তাটা হয়ে গেছে মসৃণ, মাখনের মতো! সে মাখনে প্রলেপ দিতে দূর থেকে ছুটে আসছে মেঘের দল, মুহূর্তের মধ্যেই তারা ঢেকে দিল পুরো রাস্তা। রাস্তার দুপাশ জুড়ে মেঘের ঘরবসতি। এ সময় কেউ নিচ থেকে তাকালে নিশ্চিত দেখত যে মেঘের ওপর দিয়ে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলে যাচ্ছে গাড়িগুলো!

মেঘালয়ের এই রাস্তাগুলো এমনই, সারাক্ষণ মেঘ পড়ে থাকে এখানে। ফুঁ দিয়ে মেঘ সরিয়ে এগোতে হয় সামনের দিকে। কখনো অপেক্ষা করতে হয় সামনের মেঘ কেটে যাওয়ার জন্য, আবার কখনো অপেক্ষা করতে করতে দেখা মিলে অসম্ভব সুন্দর রংধনুর! প্রায় আড়াই ঘণ্টার মেঘের রাস্তা পেরিয়ে আমরা চলে গেলাম শিলং শহরে। পাহাড়ের ওপর থেকে ঘুরে ঘুরে এখানে নামতে হয়। ওপরে তাপমাত্রা ১০-১১ ডিগ্রি, সেটা এই শহরে ১৬-১৮ ডিগ্রি। ছবির মতো সাজানো-গোছানো পরিকল্পিত এক শহর। আমরা ছিলাম লাবাং এলাকায়। প্রতিটা বাড়ি ফুল দিয়ে সাজানো। এখানে প্রায় সবাই বাংলাদেশি। দেশভাগের সময় যাঁরা এ দেশ থেকে চলে গিয়েছিলেন, তাঁরা সারা জীবনের জন্যই আস্তানা গেড়েছেন সেখানে। শিলং ছোট্ট শহর। এখানেই সবকিছুই পুলিশ বাজারকে ঘিরে। এলিফ্যান্ট ফলস, সুইট ফলস, উমিয়াম লেক, এশিয়ার সবচেয়ে বড় ক্যাথেড্রাল, শিলং পিক, লেডি হায়দার পার্কসহ আরও অনেক জায়গা আছে দেখার জন্য। তবে সবাইকে একধাক্কায় কাত করে দিয়েছে স্মিতভ্যালি। হুট করে দেখলে দেখা যাবে পুরো পাহাড়ে সাগরের ঢেউ লেগেছে। ঢেউ টিনের মতো ঢেউ ঢেউ এই স্মিতভ্যালি। যত দূর চোখ যায় কোনো গাছপালা নেই, সোনালি ঘাস বিছানো পুরো ভ্যালিজুড়ে। এখানের সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, পাহাড়টা হুট করে শেষ হয়ে গেছে, একেবারে কিনারায় এসে দাঁড়ালে মনে হবে দুনিয়ার শেষ মাথায় বুঝি চলে এসেছি।

পরদিন আমরা গেলাম মওকডক ভ্যালি। এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে রশি দিয়ে ঝুলে ঝুলে যেতে হবে। একেকজনের ৮০০ রুপি করে লাগল। সেদিন ওই দড়িতে না ঝুলে পড়লে জানতামই না বিশাল পাহাড়ের মাঝে একাকী হয়ে গেলে জীবনের অর্থই পাল্টে যায়। দুই পাহাড়ের ঠিক মাঝখানে যখন ঝুলে ঝুলে ছুটে যাচ্ছি, তখন আমার পায়ের নিচে বিশাল এক ঝরনা। নিজের কালো ছায়াটা দৌড়ে বেড়াচ্ছে অচিন দেশের সবুজ পাহাড়ে!

পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয় চেরাপুঞ্জিতে। এখানেই দেখা মিলে বিশ্ববিখ্যাত সেভেন সিস্টার ওয়াটার ফলসের। মেঘালয়ের সাতটা রাজ্যের পানি এখানে এসে পড়ে বলেই এর নাম সেভেন সিস্টার্স। এসব পানি সিলেটের ভোলাগঞ্জ হয়ে বাংলাদেশে ঢোকে। সেভেন সিস্টার্সের একেবারে মাথায় এসে দাঁড়ালে পরিষ্কার দেখা যায় বাংলাদেশের গোটা সুনামগঞ্জ এলাকা। এখান থেকে বের হয়ে গিয়েছিলাম নোহকালিকাই ওয়াটার ফলসে। বাঙালিরা দুষ্টুমি করে একে বলে নোয়াখালী ফলস!

ফেরার পথে পরিকল্পনা ছিল উমগট নদীর পাড়ে রাত কাটিয়ে পর দিন ঢুকে যাব বাংলাদেশে। মাঝরাতে পৌঁছালাম উমগটে, সেখানে আগে থেকেই ঠিক করে রাখা তাঁবুতে ব্যাগ রেখে অমাবস্যার আলোতে চালিয়ে দিলাম ক্যাম্প ফায়ার আর বার-বি-কিউ। সকালে চোখ মেললাম স্বচ্ছ জলের এক নদীতে। নদীর পানি এতই স্বচ্ছ যে দূর থেকে নৌকাগুলোকে দেখলে মনে হবে হাওয়ায় ভাসছে! এর অবস্থান ভারতের মেঘালয়ে। জাফলং থেকে বড়জোর ৮ কি.মি.। গাড়িতে যেতে লাগে ২০ মিনিট। কোনো ক্যামেরার লেন্সে এই সৌন্দর্য তুলে ধরা যাবে না। এখানে ঘণ্টাখানেক ঘুরে বেড়ালেই মাছেদের সংসার দেখা যায়, গোনা যায় পাথরের পরিবারের সবচেয়ে ছোট সদস্য টিকেও!

কীভাবে যাবেন

তামাবিল-ডাউকি বন্দর দিয়ে ভারতের ভিসা করিয়ে নিন। সোনালী ব্যাংকে ৫০০ টাকার ট্র্যাভেল ট্যাক্স জমা দিয়ে রাখুন। এরপর কোনো এক শুভদিন দেখে রওনা করে দিন। ডাউকি থেকে শিলং আড়াই ঘণ্টার স্বর্গীয় পথ। বাংলাদেশি টাকায় ৭ থেকে ৮ হাজার দিয়ে অনায়াসেই তিন দিন ঘুরে আসতে পারবেন। মেঘালয়ে যেকোনো সময়েই যেতে পারবেন। সারা বছর সেখানে মেঘ থাকে। এই ঈদের ছুটিতে মেঘালয় যেমন ঘুরে আসতে পারেন, তেমনি করে কম খরচে দার্জিলিং, ভুটান আর নেপালও বেড়িয়ে আসতে পারেন।

57

ডা. মোড়ল নজরুল ইসলাম২২ মে, ২০১৮ ইং ০৯:২৭ মিঃ
রোজাদারদের পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত
 
সাধারণত দৈনিক একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। কিন্তু রমজান মাসে অভুক্ত থাকার কারণে অনেক ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পানি পান করা হয় না। ফলে ডিহাইড্রেশন বা শরীরে পানি শূন্যতা দেখা দিতে পারে। এছাড়া গরম আবহাওয়া, পরিশ্রমের কাজ ও অতিরিক্ত গৃহস্থালির কাজ থেকে শরীর থেকে প্রচুর পানি বের হয়ে পানি শূন্যতা তৈরি হতে পারে।
 
আপনার যদি অতিসামান্য প্রস্রাব তৈরি হয় অথবা তা বন্ধ হয় অথবা পানি শূন্যতার কারণে অজ্ঞান হবার অবস্থা তৈরি হয় তাহলে ইসলামের বিধান অনুযায়ী আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে পানি শূন্যতা যাতে তৈরি না হয় তার জন্য প্রত্যেক রোজাদারগণের আগাম সতর্কতা বা আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে।
 
যেমন: ইফতার ও রাতের খাবারের পর প্রচুর পানি পান করতে হবে। পাশাপাশি সেহেরি খাওয়ার পূর্বে অথবা সেহেরির সময় প্রচুর পানি ও তরল পদার্থ পান করতে হবে। তাহলে ডিহাইড্রেশন বা পানি শূন্যতা দেখা দেবে না।
 
শুধু পানি পান নয়, আপনি পানির পরিবর্তে ঘরে তৈরি লেবুর শরবত, ডাবের পানি, মান সম্মত জুস (যদি পাওয়া যায়), সুপ, তরল দুধ ইত্যাদি পান করতে পারেন। মনে রাখতে হবে কোনো অবস্থায় রোজা থাকাকালীন পানি শূন্যতা হতে দেওয়া যাবে না। এজন্য প্রয়োজনে পরিশ্রমের কাজ, ব্যায়াম বা শরীর চর্চা ও রোদে বেশিক্ষণ না থাকাই ভালো। তবে পানি শূন্যতা বা ডিহাইড্রেশনের কারণে জীবন বিপন্ন হবার আশঙ্কা থাকলে অবশ্যই দ্রুত চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে।

58


হাসিখুশি মুখ দেখলেই মনটা ভালো হয়ে যায়। গম্ভীর ঘরোয়া আড্ডার পরিবেশ বদলে দিতে একজনের উচ্ছ্বসিত হাসিই যথেষ্ট। হাসি দিয়ে শত্রুকেও আপন করা যায়। কিন্তু আপনি চাইলে কি সব সময় হাসিখুশি থাকতে পারবেন? কীভাবে হাসিখুশি থেকে পরিবেশকে আনন্দময় করে তুলবেন, তা-ই তুলে ধরা হলো এখানে।

বেশি বেশি অনুশীলন করুন

চাইলেই কি একজন মানুষ হাসিখুশি থাকতে পারে? যদি উত্তর না হয়, তাহলে হাসিখুশি থাকার উপায় কী। হাসিখুশি থাকার জন্য বেশি করে ভালো থাকার চেষ্টা করতে হবে। আপনি ব্যায়াম করতে পারেন। একটি কঠিন কাজ করার পর নিজের আনন্দের জন্য কিছু সময় হাঁটতে পারেন। এমনভাবে হাঁটার পর আপনার শারীরিক কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এর ফলে আগের চেয়ে বেশি হাসিখুশিতে পরবর্তী কাজটি শুরু করতে পারবেন।

নিজের কাজকে সেরা ভাবুন

অনেকেই আছেন, নিজের কাজ নিয়ে সন্তুষ্ট নন। সারাক্ষণ নিজের কাজকে ছোট মনে করেন। অন্যের সঙ্গে নিজের কাজের তুলনা করে নিজে নিজে মন খারাপ করেন। এ নিয়ে সব সময় চিন্তার মধ্যে সময় কাটে। এর ফলে হাসিখুশি ভাব মুখ থেকে উধাও হয়ে যায়। নিজের কাজকে শ্রদ্ধা করুন। ভালোবাসুন নিজের কাজকে। নিজের কাজের মাধ্যমে পরিশ্রম করে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। মনে মনে ভাবুন, আপনি যে কাজটি করছেন, সেটিই সেরা। কাজের মধ্যে আনন্দ খুঁজুন।

নেতিবাচক চিন্তা দূর করুন

নেতিবাচক চিন্তা করলে আপনি ধ্বংস হতে বাধ্য। এ একটি জিনিসই আপনাকে শেষ করে দেবে। নেতিবাচক চিন্তা করে কখনো হাসিখুশি থাকা যায় না। তাই হাসিখুশি থাকতে হলে নেতিবাচক চিন্তা বাদ দিন। অন্যের ভালো করার চেষ্টা করুন। দেখবেন এমনিতেই হাসিখুশি থাকতে পারছেন।

নিজের সম্পত্তির চেয়ে অভিজ্ঞতা বেশি উপভোগ করুন

অভিজ্ঞতা মানুষের জীবনে স্থায়ী সম্পত্তি। অভিজ্ঞতা অন্য কেউ নিয়ে যেতে পারে না। অভিজ্ঞতার ফলে সমাজের সবকিছু মোকাবিলা করারÿ ক্ষমতা আপনার মধ্যে এমনিতেই চলে আসবে। তাই সম্পত্তির পরই অভিজ্ঞতা অর্জনের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। সম্পত্তি মনকে চিন্তায় আচ্ছন্ন করবে। আর অভিজ্ঞতা নিজের জীবনকে উপভোগ করার সুযোগ করে দেবে।

আপনি কৃতজ্ঞ কেন, তা লিখুন

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। আপনি কী জন্য সফল, কেন আপনি অন্যের ভালো চান, এ বিষয়গুলো ভাবুন এবং তা লিখে প্রকাশ করুন। ভালো করার বা ভালো থাকার বিষয়গুলো কোথাও লিপিবদ্ধ করে রাখলে শান্তি বোধ করবেন। লেখাগুলো পাঠ করে নিজের মধ্যে সুখ অনুভব করবেন। দেখবেন হাসিখুশি থাকতে পারছেন।

নিজের মধ্যে সুখ খুঁজুন

আপনার কোন কাজটি করতে ভালো লাগে। কোন কাজ করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন বা আপনি কোন কাজগুলো করে আনন্দ পান—এমন কাজগুলোই বেশি করুন এবং নিজের মধ্যে সুখ খুঁজে বের করুন। সব সময় অফিস বা অন্যের সুখের জন্য কাজ না করে, নিজের পছন্দের কাজটিও মাঝেমধ্যে করার চেষ্টা করুন। দেখবেন হাসিখুশি থাকতে পারছেন।

পরিপূর্ণ ঘুমান

ঘুম হলো মানুষের আদি ও আসল বিনোদন। আপনার যদি পরিপূর্ণ ঘুম না হয়, তাহলে আপনি কখনোই আনন্দে থাকতে পারবেন না। আপনার কোনো কাজেই মন বসবে না। সারাক্ষণ ঘুম আপনাকে তাড়িয়ে বেড়াবে। পরিপূর্ণভাবে কোনো কিছুই করতে পারবেন না। তাই যত কাজের মধ্যেই থাকুন না কেন, সময় বের করে পরিপূর্ণ ঘুমান। আপনার ঘুম যদি পরিপূর্ণ হয়, তাহলে যেকোনো কাজ করতে আরাম ও আনন্দ পাবেন।

অন্যকে সাহায্য করুন

পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি আনন্দ অন্যকে সাহায্য করার মধ্যে। আপনার বন্ধু বা পাশের ডেস্কের সহকর্মীকে সাহায্য করুন। দেখবেন তাঁদের সঙ্গে সম্পর্ক আগের চেয়ে অনেক বেশি ভালো হবে। রাস্তায় অসহায় কাউকে কিংবা কোনো রাস্তা খুঁজে না পাওয়া ব্যক্তিকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসুন। দেখবেন সাহায্য করার পর নিজের কাছেই খুব ভালো লাগছে। অন্যকে সাহায্য করলে দেখবেন মুখের মধ্যে হাসির আভা ছড়িয়ে পড়েছে। তাই প্রতিদিন অন্যদের সাহায্য করার জন্য একটু সময় বের করুন।

নিজের পছন্দকে গুরুত্ব দিন

আপনি যেভাবে বাঁচতে চান, তার ওপর জোর দিন। অন্যের কথায় নিজের পছন্দকে অবহেলা করবেন না। সব সময় অন্যকে খুশি করে চলতে গেলে আপনি নিজে খুশি থাকতে পারবেন না। তাই নিজের পছন্দকে গুরুত্ব দিন। দেখবেন অনেক বেশি হাসিখুশি থাকতে পারবেন।

আপনার শক্তির ওপর দৃষ্টি দিন

আপনার শক্তির জায়গা সম্পর্কে আপনার কোনো ধারণা আছে? যদি না থাকে, তাহলে নিজের শক্তির জায়গা খুঁজে বের করুন এবং সে শক্তিকে ব্যবহার করুন। দেখবেন সবকিছুতেই ভালো করছেন আপনি। সব কাজে সাফল্য পাওয়ার ফলে আপনি থাকতে পারছেন আগের চেয়ে বেশি হাসিখুশি।

59
নিজেকে পরিপাটিভাবে প্রকাশ করতে শিখুন। পরিষ্কার পোশাক পরিধানে মনোযোগী হোন। নতুন পরিচয় হওয়া মানুষের মনে আপনার পোশাক-পরিচ্ছদের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখুন।

অন্যের কাছে নিজেকে সুন্দর করে উপস্থাপন করার জন্য কত প্রচেষ্টাই না থাকে। সুন্দর করে কথা বলা, দারুণ মনোমুগ্ধকর সুগন্ধি কিংবা নান্দনিক বাচনভঙ্গি নিয়ে অন্যদের মন জয় করার চেষ্টা করে যাই। আজ পড়ুন এমনই কয়েকটি পরামর্শ যার মাধ্যমে আপনি খুব দ্রুত অন্যদের মন জয় করে নিতে পারেন।

নিজেকে একটি দক্ষতার পরিচয়ে প্রকাশ করুন
আপনি সব পারেন, সব জানেন—তাহলে আপনাকে কেউ মনে রাখবে না নিশ্চিত থাকুন। বন্ধুমহলে নিজের একটি দক্ষতার মাধ্যমে নিজেকে পরিচিত করুন। একাধারে ক্রিকেট খেলেন, ভালো বেহালা বাজান, দারুণ সাইকেল চালান—এমনই নানা পরিচয়ে সবাই আপনাকে চিনলে কেউই গুরুত্ব দেবে না। খেয়াল করে নিজের জন্য একটি পরিচয় গ্রহণ করে সবার কাছে প্রকাশ করুন।

দেখতে পরিপাটি হোন
আপনি হয়তো সুদর্শন নন, আবার ক্রীড়াবিদদের মতো সুঠাম দেহের অধিকারী নন। নিজেকে পরিপাটিভাবে প্রকাশ করতে শিখুন। পরিষ্কার পোশাক পরিধানে মনোযোগী হোন। নতুন পরিচয় হওয়া মানুষের মনে আপনার পোশাক-পরিচ্ছদের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখুন। কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা ২০১২ সালে এক নিবন্ধে জানান, প্রথম পরিচয়ের ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে জুতা ও পোশাকের মাধ্যমে একটি ছাপচিত্র মানুষের মনে তৈরি হয়, যা কয়েক বছর পর্যন্ত মানুষ মনে রাখতে পারে।

দাঁড়িয়ে কথা বলতে শিখুন
শ্রোতাদের ওপর ইতিবাচক প্রভাব তৈরি হয়। অফিসে কিংবা ক্লাসরুমে দাঁড়িয়ে কথা বলার অভ্যাস করুন। সবাই আপনার কথা গুরুত্বসহকারে নেবে।

কথা বলুন
আমরা কোথাও নতুন পরিবেশে অবস্থান করলে চুপ থাকার চেষ্টা করি। যা কখনই করবেন না। কোনো নতুন জায়গায় গেলে নতুন মানুষের সঙ্গে পরিচিত হোন। আপনার নাম-পরিচয় দিয়ে নতুন মানুষটির পরিচয় জানার চেষ্টা করুন। যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে আগে চলে এসে নতুনদের সঙ্গে এভাবে পরিচিত হতে পারেন।

দূরত্ব কমানোর চেষ্টা করুন
বেশির ভাগ সময়ই আমরা অফিসের মিটিংগুলোয় চুপচাপ থাকি। কথা শুনে, কিছু না বলেই চলে আসি। কোনো গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে আপনি অফিসের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্তাকে নিচু স্বরে যেকোনো প্রশ্ন করতে পারেন। সৃজনশীল কিংবা কাজের প্রশ্ন করলে আপনার গুরুত্ব কর্মী হিসেবে বাড়বে।

মুক্তভাবে নিজেকে প্রকাশ করুন
আপনি যা তা প্রকাশ করতে শিখুন। নিজেকে ভ্রান্তভাবে সবার সামনে প্রকাশ করবেন না। আপনি হয়তো সাময়িক মুগ্ধতা ছড়াতে পারবেন, কিন্তু একসময় আপনার আসল পরিচয় সবাই জেনে যাবে। শক্তি নিয়ে নিজেকে প্রকাশ করতে জানুন। আপনার মধ্যে জড়তা থাকলেও তা প্রকাশ করুন। নিজেকে নিয়ে লুকোচুরি করবেন না।

হাসুন
যত কঠিন পরিবেশেই হাজির হোন না কেন, হাসুন। পরিস্থিতি বুঝে হাসতে শিখুন। মনে রাখবেন, হাসি দিয়ে দুনিয়া জয় করা যায়।

নাম মনে রাখা শিখুন
প্রথম পরিচয়ে যেকোনো মানুষেরই নাম মনে রাখুন। নাম ভুলে যাওয়ার বাতিক আছে। এমনটা কখনোই করবেন না। অন্যের মন পেতে প্রথমেই তার নাম শুদ্ধ করে বলা ও উচ্চারণ করতে জানতে হবে।

অন্যকে কথা বলতে দিন
বলা হয় তিনি ভালো কথা বলেন যিনি অন্যকে কথা বলার সুযোগ দেন বেশি। নিজে বলার চেয়ে অন্যকে তার গল্প বলতে উৎসাহিত করুন। কথা শোনার সময় আপনি যে কথা শুনছেন তা প্রকাশের জন্য প্রশ্ন করুন।

শরীরের ভাষা অনুকরণ করুন
নতুন মানুষের মন জিততে তার শরীরী ভাষাকে অনুসরণ করুন। মানুষ স্বাভাবিকভাবে তাকেই পছন্দ করেন যিনি তাঁর মতো, তাই কারও মন পেতে তাঁর মতো শরীরী ভাষা রপ্ত করুন।

তাকানো শিখুন
অনেকে আমরা চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারি না। যেকোনো মিটিং বা সামাজিক অনুষ্ঠানে যখনই কারও সঙ্গে কথা বলবেন চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে কথা বলতে শিখুন। আবার বিরক্তি তৈরি হয় এমনভাবে তাকাবেন না। আপনার তাকানোর মধ্য দিয়ে যেন আপনার আন্তরিকতা ও কৌতূহলী থাকে তা প্রকাশ পায়।

60
Common Forum / রোজা
« on: May 15, 2018, 04:58:18 PM »


প্রতি বছর কোটি কোটি মুসলমান রোজা রাখেন সূর্যোদোয় হতে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহারে বিরত থেকে।

গত কয়েক বছর ধরে উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোতে রোজা পড়েছে গ্রীষ্মকালে। ফলে এসব দেশের মুসলিমদের রোজা রাখতে হচ্ছে গরমের মধ্যে অনেক দীর্ঘসময় ধরে।

যেমন ধরা যাক নরওয়ের কথা। সেখানে এবছর মুসলিমদের প্রায় ২০ ঘন্টা সময় ধরে রোজা রাখতে হবে।
ছবির কপিরাইট Getty Images
Image caption সারাদিনের রোজা শেষে ইফতারের প্রস্তুতি

কিন্তু মুসলিমরা যে একমাস ধরে রোজা রাখেন, সেটা তাদের শরীরে কী প্রভাব ফেলে?

প্রথম কয়েকদিন: সবচেয়ে কষ্টকর

শেষ বার খাবার খাওয়ার পর আট ঘন্টা পার না হওয়া পর্যন্ত কিন্তু মানুষের শরীরে সেই অর্থে উপোস বা রোজার প্রভাব পড়ে না।

আমরা যে খাবার খাই, পাকস্থলীতে তা পুরোপুরি হজম হতে এবং এর পুষ্টি শোষণ করতে অন্তত আট ঘন্টা সময় নেয় শরীর।

যখন এই খাদ্য পুরোপুরি হজম হয়ে যায়, তখন আমাদের শরীর যকৃৎ এবং মাংসপেশীতে সঞ্চিত থাকে যে গ্লুকোজ, সেটা থেকে শক্তি নেয়ার চেষ্টা করে।

শরীর যখন এই চর্বি খরচ করতে শুরু করে, তা আমাদের ওজন কমাতে সাহায্য করে। এটি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।

তবে যেহেতু রক্তে সুগার বা শর্করার মাত্রা কমে যায়, সে কারণে হয়তো কিছুটা দুর্বল এবং ঝিমুনির ভাব আসতে পারে।

এছাড়া কারও কারও ক্ষেত্রে মাথাব্যাথা, মাথা ঘোরা, বমি বমি ভাব বা নিশ্বাসে দুর্গন্ধ হতে পারে।
ছবির কপিরাইট Getty Images
Image caption রোজা রাখা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, কারণ এটি শরীরে কর্মক্ষমতা বাড়ায়।

এ সময়টাতেই আসলে শরীরে সবচেয়ে বেশি ক্ষুধা লাগে।

৩ হতে ৭ রোজা: পানিশূন্যতা থেকে সাবধান

প্রথম কয়েকদিনের পর আপনার শরীর যখন রোজায় অভ্যস্ত হয়ে উঠছে, তখন শরীরে চর্বি গলে গিয়ে তা রক্তের শর্করায় পরিণত হচ্ছে। কিন্তু রোজার সময় দিনের বেলায় যেহেতু আপনি কিছুই খেতে বা পান করতে পারছেন না, তাই রোজা ভাঙ্গার পর অবশ্যই আপনাকে সেটার ঘাটতি পূরণের জন্য প্রচুর পানি পান করতে হবে। নইলে আপনি মারাত্মক পানি-শূন্যতায় আক্রান্ত হতে পারেন। বিশেষ করে গরমের দিনে যদি শরীরে ঘাম হয়।

আর যে খাবার আপনি খাবেন, সেটাতেও যথেষ্ট শক্তিদায়ক খাবার থাকতে হবে। যেমন কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা এবং চর্বি।

একটা ভারসাম্যপূর্ণ খাবার খুব গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে সব ধরণের পুষ্টি, প্রোটিন বা আমিষ, লবণ এবং পানি থাকবে।
ছবির কপিরাইট Getty Images
Image caption বেশি করে পানি খেতে হবে পানি-শূন্যতা রোধে

৮ হতে ১৫ রোজা: অভ্যস্ত হয়ে উঠছে শরীর

এই পর্যায়ে এসে আপনি নিশ্চয়ই অনুভব করতে পারছেন যে আপনার শরীর-মন ভালো লাগছে, কারণ রোজার সঙ্গে আপনার শরীর মানিয়ে নিতে শুরু করেছে।

ক্যামব্রিজের এডেনব্রুকস হাসপাতালের 'অ্যানেসথেসিয়া এন্ড ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিনের' কনসালট্যান্ট ড: রাজিন মাহরুফ বলেন, এর অন্যান্য সুফলও আছে।

"সাধারণত দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনেক বেশি ক্যালরিযুক্ত খাবার খাই এবং এর ফলে আমাদের শরীর অন্য অনেক কাজ ঠিকমত করতে পারে না, যেমন ধরুণ শরীর নিজেই নিজেকে সারিয়ে তুলতে পারে।"

"কিন্তু রোজার সময় যেহেতু আমরা উপোস থাকছি, তাই শরীর তখন অন্যান্য কাজের দিকে মনোযোগ দিতে পারে। কাজেই রোজা কিন্তু শরীরের জন্য বেশ উপকারী। এটি শরীরের ক্ষত সারিয়ে তোলা বা সংক্রমণ রোধে সাহায্য করতে পারে।"
ছবির কপিরাইট Getty Images
Image caption সব ধরণের খাবার রাখতে হবে খাদ্য তালিকায়

১৬ হতে ৩০ রোজা: ভারমুক্ত শরীর

রমজান মাসের দ্বিতীয়ার্ধে আপনার শরীর কিন্তু পুরোপুরি রোজার সঙ্গে মানিয়ে নেবে।

আপনার শরীরের পাচকতন্ত্র, যকৃৎ, কিডনি এবং দেহত্বক এখন এক ধরণের পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে যাবে। সেখানে থেকে সব দূষিত বস্তু বেরিয়ে আপনার শরীর যেন শুদ্ধ হয়ে উঠবে।

"এসময় আপনার শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তাদের পূর্ণ কর্মক্ষমতা ফিরে পাবে। আপনার স্মৃতি এবং মনোযোগের উন্নতি হবে এবং আপনি যেন শরীরে অনেক শক্তি পাবেন", বলছেন ড: মাহরুফ।

"শরীরের শক্তি জোগানোর জন্য আপনার আমিষের ওপর নির্ভরশীল হওয়া ঠিক হবে না। যখন আপনার শরীর 'ক্ষুধার্ত' থাকছে তখন এটি শক্তির জন্য দেহের মাংসপেশীকে ব্যবহার করছে। এবং এটি ঘটে যখন একটানা বহুদিন বা কয়েক সপ্তাহ ধরে আপনি উপোস থাকছেন বা রোজা রাখছেন।"

"যেহেতু রোজার সময় কেবল দিনের বেলাতেই আপনাকে না খেয়ে থাকতে হয়, তাই আমাদের শরীরের চাহিদা মেটানোর জন্য যথেষ্ট খাবার এবং তরল বা পানীয় গ্রহণের সুযোগ থাকছে রোজা ভাঙ্গার পর। এটি আমাদের মাংসপেশীকে রক্ষা করছে এবং একই সঙ্গে আমাদের আবার ওজন কমাতেও সাহায্য করছে।"
ছবির কপিরাইট Dr Razeen Mahroof
Image caption ড: রাজেন মাহরুফ

তাহলে রোজা রাখা কি স্বাস্থ্যের জন্য ভালো

ড: মাহরুফ বলেন, অবশ্যই, তবে একটা ব্যাপার আছে।

"রোজা রাখা শরীরের জন্য ভালো কারণ আমরা কী খাই এবং কখন খাই সেটার ওপর আমাদের মনোযোগ দিতে সাহায্য করে। কিন্তু একমাসের রোজা রাখা হয়তো ভালো। কিন্তু একটানা রোজা রেখে যাওয়ার পরামর্শ দেয়া যাবে না।

"শরীরের ওজন কমানোর জন্য একটানা রোজা রাখা কোন উপায় হতে পারে না। কারণ একটা সময় আপনার শরীর চর্বি গলিয়ে তা শক্তিতে পরিণত করার কাজ বন্ধ করে দেবে। তখন এটি শক্তির জন্য নির্ভর করবে মাংসপেশীর ওপর। এটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়। কারণ আপনার শরীর তখন ক্ষুধায় ভুগবে।"

ড: মাহরুফের পরামর্শ হচ্ছে রমজান মাসের পর মাঝে মধ্যে অন্যধরণের উপোস করা যেতে পারে। যেমন ৫:২ ডায়েট (পাঁচদিন কম খেয়ে দুদিন ঠিকমত খাওয়া-দাওয়া করা)। যেখানে কয়েকদিন রোজা রেখে আবার স্বাস্থ্যসম্মতভাবে খাওয়া-দাওয়া করা যেতে পারে।

Pages: 1 2 3 [4] 5