Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - Jannatul Ferdous

Pages: 1 2 3 [4] 5 6 ... 17
46
Travel / Visit / Tour / শুভলং
« on: May 08, 2018, 11:14:43 AM »
শুভলং ঝর্ণা রাঙ্গামাটি জেলার বরকল উপজেলার মধ্যে পড়েছে। এই ঝর্ণার নির্মল জলধারা পর্যটকদের হৃদয়ে এক ভিন্ন অনুভূতির কাঁপন তোলে। ভরা বর্ষা মৌসুমে শুভলং ঝর্ণার (Shuvolong Waterfall) জলধারা প্রায় ৩০০ ফুট উঁচু থেকে নিচে আছড়ে পড়ে এবং অপূর্ব সুরের মূর্ছনায় পর্যটকদের সযতনে মুগ্ধ করে। বর্তমানে এ এলাকায় উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক কিছু স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। রাঙ্গামাটি সদর হতে শুভলং এর দুরত্ব মাত্র ২৫ কিলোমিটার।

জলপথে পাহাড়ের বুক চিরে আঁকা-বাঁকা চলার পথে যাওয়ার সময় রাঙ্গামাটির অপার সৌন্দর্য চোখে পড়বে। এখানকার লেক, ঝরনা, বিস্তির্ন নীল আকাশ, পাহাড় সর্বপরি আদিবাসি মানুষের সাধারন সহজ-সরল জীবন আপনাকে বিমহিত করবে। এখানে যেদিকে তাকাবেন নজরে পড়বে কেবল পাহাড় আর কাপ্তাই লেকের পানি। বিশাল কাপ্তাই লেকের পুরোটাই যেন অপার মমতায় দুহাত দিয়ে ধরে রেখেছে পাহাড়গুলি। আকাশের মেঘ আর তার নীলাভ আভা খেলা করে লেকের জলে, দূরে পাহাড়ের আড়ালে হারিয়ে যায়, আবার যেন উকি দিয়ে দেখে নেয়, কেমন আছে লেক। হলফ করে বলা যায়, এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টান আপনাকে টানবেই।

শুভলং যাবার পথে


রাঙামাটি কিভাবে যাবেনঃ
ঢাকা সায়েদাবাদ, কলাবাগান, ফকিরাপুল অথবা গাবতলি থেকে শ্যামলী, হানিফ, ইউনিক, এস আলম এবং বিআরটিসি বাসে করে যেতে পারবেন রাঙামাটি। তবে সব থেকে ভালো হবে সায়েদাবাদ থেকে টিকিট করলে। নন এসি বাস ৬২০ টাকা । এসি বাস আছে শ্যামলী এবং বিআরটিসির ভাড়া ৯০০-১০০০ টাকা।

সাধারণত সকাল ৮ টা, ৯ টা এবং ১০ টায় প্রতিটি কোম্পানির ২ টা করে বাস ছাড়ে। আবার রাতে ৮ টা থেকে ১০ টার মধ্যে প্রতি কোম্পানির দুইটা করে বাস ছাড়ে।

রাতে (১০-১১ টা) রওনা হলে আপনি খুব ভোরে (৬-৭ টা) পৌছে যাবেন রাঙ্গামাটি।

শুভলং যাবার পথে


শুভলং ঝর্ণায় কীভাবে যাবেন?
শহর থেকে শুভলং ঝর্ণায় যেতে হলে নৌ পথে যেতে হয়। ইঞ্জিন চালিত ট্রলার রিজার্ভ করাই সবচেয়ে ভালো উপায়। শুভলং ঝর্ণা রাঙামাটি জেলার বরকল উপজেলার মধ্যে পড়েছে। রাঙামাটি রিজার্ভ বাজার এলাকা থেকে অথবা পর্যটন এলাকা থেকে ট্রলার রিজার্ভ করা যায়। এগুলোর ভাড়া আকার অনুযায়ী বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। তবে ভাড়া সাধারণত ১২০০-৩০০০ টাকার মধ্যে। মূল শহর থেকে শুভলং যেতে সময় লাগবে দেড় ঘণ্টার মত। শুভলং যেতে হয় কাপ্তাই লেকের উপর দিয়ে।



কোথায় থাকা যায়?
কোথায় থাকবেনঃ

বাস থেকে নেমে এবার থাকার পালা। রাঙ্গামাটিতে পুরাতন বাস স্ট্যন্ড ও রিজার্ভ বাজার এলাকায় বেশকিছু হোটেল আছে। তবে হোটেলে ওঠার আগে যদি একটু বিবেচনা করে নিবেন, যেমন হোটেলটি কাপ্তাই লেকের পাশে কিনা? তাহলে আপনি হোটেল থেকে লেকের মনোরম পরিবেশ ও বাতাস উপভোগ করতে পারবেন। থাকার জন্য রাঙ্গামাটিতে সরকারী বেসরকারী অনেকগুলো হোটেল ও গেষ্ট হাউজ রয়েছে। তাছাড়া আরো কিছু বোডিং পাওয়া যায় থাকার জন্য। বোডিংগুলোতে খরচ কিছুটা কম তবে থাকার জন্য খুব একটা সুবিধার নয়। নিন্মে কয়েকটি হোটেল এর বর্ননা দেয়া হলোঃ

(১) পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স

১২ টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুম রয়েছ। প্রতিটির ভাড়াঃ ১৭২৫ টাকা ৭টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রনহীন রুম রয়েছে প্রতিটির ভাড়াঃ ৮০৫ টাকা যোগযোগ/ফোনঃ ০৩৫১-৬৩১২৬ (অফিস)

(২) হোটেল সুফিয়া

২৭ টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুম রয়েছ। প্রতিটির ভাড়াঃ ৯০০ টাকা (একক), ১২৫০ (দ্বৈত) ৩৫টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রনহীন রুম রয়েছে প্রতিটির ভাড়াঃ ৬০০ টাকা যোগাযোগ/ফোনঃ ০৩৫১-৬২১৪৫, ৬১১৭৪, ০১৫৫৩৪০৯১৪৯

(৩) হোটেল গ্রীন ক্যাসেল

৭ টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুম রয়েছ। প্রতিটির ভাড়াঃ ১১৫০ হতে ১৬০০ টাকা পর্যন্ত ১৬টি শীতাতপ নিয়ন্ত্রনহীন রুম রয়েছে প্রতিটির ভাড়াঃ ৭৫০ হতে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত যোগাযোগ/ফোনঃ ০৩৫১-৭১২১৪, ৬১২০০, ০১৭২৬-৫১১৫৩২, ০১৮১৫-৪৫৯১৪৬

এছাড়াও রয়েছে আরো বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হোটেল রয়েছে। যেমনঃ হোটেল জজ , হোটেল আল মোবা, হোটেল মাউন্টেন ভিউ, হোটেল ডিগনিটি, হোটেল সাফিয়া, হোটেল ড্রিমল্যান্ড ইত্যাদি।


47
Psychological Disorder / মা বেশি বোঝে?
« on: June 10, 2017, 01:22:08 PM »
সালেহা বেগম (ছদ্মনাম) মেয়েকে নিয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে এলেন। মেয়ের সম্পর্কে একরাশ অভিযোগ নিয়ে। চিকিৎসক ইতিহাস নিয়ে দেখলেন, মেয়ে লিমার ((ছদ্মনাম) জেদ, অবাধ্য, খিটিমিটি লেগে যাওয়া শুধু মায়ের সঙ্গেই ঘটছে, আত্মীয়স্বজন বা বন্ধু মহলে যথেষ্ট জনপ্রিয় সে। মায়ের সঙ্গে ক্রমশ সম্পর্কের অবনতির মূলে রয়েছে সালেহা বেগমের অতিরিক্ত কর্তৃত্বপরায়ণ মনোভাব এবং নিজের ইচ্ছা জোর করে সন্তানের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা। সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করার মনোভাব।

সালেহা বেগমের মতো ব্যক্তিত্বের ধরন (চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য) অনেকের থাকতে পারে। কোনো বিষয়ে নানা দিক দিয়ে বিবেচনা করা বা পরিস্থিতি অনুযায়ী সহজেই নিজের অবস্থান থেকে সরে আসা বা নিজের মতামতের বাইরে অন্যের ভিন্ন মতবাদকে গ্রহণ করা বা সহজে যেকোনো বিষয়ের সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে এদের মধ্যে অপারগতা দেখা যায়। অনেকে নিয়ম, রীতিনীতি, গোছানো, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ইত্যাদির ব্যাপারে অতিরিক্ত খুঁতখুঁতে থাকে। অন্যদের চোখে এরা জেদি, খুঁতখুঁতে মানুষ হিসেবে পরিচিত।

সালেহা বেগমের মতো ব্যক্তিরা মনে করেন, তিনি যেভাবে সব দেখছেন বা ভাবছেন, সেটাই একমাত্র ঠিক এবং এর বাইরে আর অন্য কিছু নেই। ফলে তাঁদের মনের বাইরে কিছু ঘটলেই তাঁরা সেটা গ্রহণ করতে পারেন না। একরকম উদ্বিগ্নতা থেকেই উত্তেজনা বা রাগ প্রকাশ করেন।

এ ধরনের বৈশিষ্ট্যের সমস্যা কী?

কখনোই নিজের ভুল দেখতে না পারার কারণে যেকোনো বিষয়ে সব সময় অন্যের দোষই এদের চোখে পড়ে। প্রতিটি জিনিসে ভুল ধরা বা সমালোচনা করা, সামান্য ত্রুটিতে তুলকালাম আচরণ, নিজের মতামত জোর করে অন্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়া ইত্যাদি কারণে এসব ব্যক্তির সঙ্গে অন্যদের সব সময় তটস্থ থাকতে হয়। ফলে, এদের সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে নেওয়া বা জীবনযাপনের স্বাভাবিক আরাম অথবা স্বতঃস্ফূর্ততা—দুই-ই বিঘ্নিত হয়। মূল সমস্যা হয় আশপাশের মানুষের বিশেষত পরিবারের সদস্যদের। তবে এ ধরনের আচরণের মূল ভুক্তভোগী হয় মূলত সন্তানেরা।

অনেক ভালো গুণ যেমন দৃঢ়তা, গভীর মূল্যবোধ, চমৎকার আবেগ, যেকোনো কাজে নিপুণতা বা পারদর্শিতা থাকা সত্ত্বেও বেশির ভাগ মানুষের কাছে এদের জনপ্রিয়তা যেমন কম থাকে, তেমনি শুধু যারা এদের মতামত প্রশ্নহীনভাবে মেনে নেয়, তাদের সঙ্গেই এরা সম্পর্ক ভালো রাখতে পারে।

শুধু তা-ই নয়, কোনো কিছু নিজের মতো হয় না বলে বা সহজে কোনো কিছু মানিয়ে না নিতে পারার কারণে ব্যক্তি নিজেও যথেষ্ট কষ্ট পান। অতৃপ্তিতে ভোগেন। কাছের মানুষদের সঙ্গে দূরত্বও তাঁদের একা করে দেয়।

পরিবারের মানুষের করণীয়

* মানুষের ব্যক্তিত্বের মূল বৈশিষ্ট্য সাধারণত খুব একটা পরিবর্তন হয় না বলে উল্টো তর্ক করা বা আচরণ পরিবর্তন করতে না চাওয়াই ভালো। এতে সম্পর্ক আরও খারাপ হওয়ার আশঙ্কা থাকে।

* চাপানো মতামত নিয়ে তর্ক করার বদলে নিজের অবস্থানে দৃঢ় থাকুন এবং মতামতের কোনো অংশ গ্রহণ করার সুযোগ থাকলে সেটা গ্রহণ করুন।

* মায়ের অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণ বা জেদ যথাসম্ভব উপেক্ষা করুন। মনে আঘাত দিয়ে কথা বলা, চিৎকার-চেঁচামেচি ইত্যাদিতে যতটা সম্ভব পাল্টা উত্তর না দেওয়া, প্রয়োজনে সাময়িকভাবে কথা বলা বা আন্তরিকতা কমিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়া যেতে পারে, আপনার কাছে এ রকম আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। ভালো মুডে থাকাকালীন মাকে বলা যেতে পারে, তার এ ধরনের আচরণে আপনি কষ্ট পাচ্ছেন।

* নিজের মতামত প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে আগে নিজেকে স্বাবলম্বী করার ক্ষেত্রে মনোযোগী হন। পড়ালেখার মাধ্যমে ভিত্তি শক্তিশালী করা এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে সহজ উপায়। আর্থিক বা সামাজিক স্বাবলম্বন আপনার পথচলা অনেক সহজ করে দেবে।

* মায়ের সঙ্গে জেদ করে দ্রুত কোনো বড় সিদ্ধান্ত নেবেন না (যেমন হুট করে বিয়ে করে ফেলা, বাসা থেকে চলে যাওয়া, পড়ালেখা ছেড়ে দেওয়া)। মনে রাখবেন, আপনার সিদ্ধান্তের খেসারত শুধু আপনাকেই দিতে হবে।

* বড় ধরনের সিদ্ধান্ত জোর করে চাপিয়ে দিতে চাইলে (জোর করে বিয়ে দেওয়া) রাগারাগি না করে দৃঢ়ভাবে আপনার মতামত জানান। এ ক্ষেত্রে পরিবারের অন্যদের সঙ্গে প্রয়োজনে কথা বলুন।

* বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে মেলামেশা বাড়ান।

* মায়ের মানসিক কর্তৃত্বপরায়ণতা সীমাবদ্ধতা হিসেবে মেনে নিয়ে নিজের মনের যত্ন নিন। আপনার ভালো লাগার বিষয়গুলো চর্চা করুন, মানুষের সঙ্গে মিশুন, প্রকৃতির কাছে যান, বই পড়ুন, নিজেকে সমৃদ্ধ করুন। মনে রাখবেন, আপনার আত্মবিশ্বাস যেকোনো সমস্যা মোকাবিলা করতে সাহায্য করবে।

মেখলা সরকার

সহকারী অধ্যাপক (মনোচিকিৎসা)

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা।

48
Food Habit / Some harmful things you shouldn’t do after Seheri
« on: May 29, 2017, 12:40:26 PM »





Has been sehuri? Then what to do? Indeed, after the worship of worship, they will make preparations to sleep. Someone will eat a lot of water, someone will eat cigarettes, someone will sit down to watch TV or facebook. Think of it, are you doing something that is harmful for your health in Sehore? Come on, do not know anything about the work.

1) Most people fall asleep with sehuriya. This work is very harmful for health. And play a big role in increasing weight and causing problems in digestion. Because our metabolism rate decreases as we fall asleep. This causes problems in food digestion. Read the prayer after the sehari, recite the Quran if you practice. If you do not lie immediately, go to bed after half an hour.

2) Why only after saheri, smoking is always harmful for you. Ramadan may be the ideal time to quit smoking. If you smoke after saheri, you will suffer a lot of thirst for the day.

3) Do not drink a lot of water together, do not think that water will be eaten all day. It will not help you in any way. Rather, there will be discomfort in the stomach and there will be problems sleeping.

4) Many people sit in TV watching after Facebook or Facebook. If you do not have to go somewhere in the morning, then exclude this task too. Rest after the prayer. It will be useful to fast during the day.

5) Many people bath after Saheri. Fajr prayers only after the bath. Do not do this. After bathing, digestion problems arise. Take a bath before saheeri take rest.

6) Do not brush teeth right after sehari. Toothbrushing teeth are right to eat. Keeping the time in hand, sehari Sarin. After a while break the tooth brush. Make a nice coolie.

7) Many people drink tea / coffee while eating seafood, because tea tea will not be consumed all day. Do not do this thing at all. Caffeine makes the body dry. As a result, it will be hard to keep the fast throughout the day. At the same time your sleeping will be twelve and the problem of digestion.

8) Those who have morning walk practice, they will be able to walk after the wait and wait after Sehari. In the morning of the day of roast, there will be health losses, pressure on the body will be too much. Walking Practice Give It Some Afternoon or Evening

49
মাদকাসক্তি থেকে নিরাময়ের কিছু উপায়

বর্তমানে চলমান অনেক সামাজিক ব্যাধির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাধি হল মাদকাসক্তি। অনেক পরিবারই এই ব্যাধির ভুক্তভোগী। একটি পরিবারের কোন একজন ব্যক্তি মাদকাসক্ত হলে, তা শুধু ঐ ব্যক্তিকেই নয় বরং পুরো পরিবারকেই নানারকম সমস্যার সম্মুখীন করে তোলে। আর এই সমস্যাগুলো থেকে উঠতে গেলে প্রথম যা দরকার সেটা হল, মাদকাসক্ত ব্যক্তির চিকিৎসা।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে পরিবারের কোনো ব্যক্তি মাদকাসক্ত হলে, পরিবার তার আরোগ্যের জন্য তাকে পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি করে দেয়। কিন্তু এমন অনেক পরিবার আছে যারা অর্থনৈতিক ভাবে অসচ্ছল অথবা তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটিই হয়তো মাদকাসক্ত। সেক্ষেত্রে তারা হয়তো মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে পুনর্বাসন কেন্দ্রে ভর্তি করতে পারছে না। কিন্তু এরকম পরিস্থিতিতে, মাদকাসক্ত ব্যক্তি ও তার পরিবার যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে মাদকের আসক্তি থেকে মুক্ত হতে পারে। আবার এমন অনেক ব্যক্তি আছে, যারা নতুন নতুন আসক্তিতে জড়িয়ে পরেছে। কিন্তু তারা চায় আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে, পরিবারকে কষ্ট না দিতে।
এইসমস্ত পরিস্থিতিতে, যে উপায় বা পদক্ষেপগুলো আপনাকে মাদকাসক্তি থেকে পরিত্রাণের লক্ষ্য অর্জনে সহযোগিতা করবে, সেইরকম কিছু উপায় এখানে তুলে ধরা হল:
১) মেনে নিন আপনি অসুস্থ
মাদকাসক্তি থেকে নিরাময়ের প্রথম উপায়ই হচ্ছে, আপনাকে মেনে নিতে হবে আপনি অসুস্থ অথবা আপনার একটি মারাত্মক সমস্যা আছে, যা আপনার দৈনন্দিন জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এবং সুস্থ হবার জন্য আপনাকে আপনার ভিতরে প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি জাগ্রত করতে হবে।
২) আসক্তির নেতিবাচক দিকগুলো লিখে ফেলুন:
নেতিবাচক দিকগুলো লিখার একটা উদ্দেশ্য হল, এই তালিকা আপনাকে আপনার সমস্যা সমাধানে এবং ইচ্ছাশক্তিকে জাগিয়ে রাখতে সহযোগিতা করবে। তালিকাটি হতে পারে এমন-
-মাদকাসক্তির ফলে আপনার বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা হচ্ছে
-ভালবাসার সম্পর্কগুলো ভেঙে যাচ্ছে
-মানসিক বিভিন্ন সমস্যা যেমন- হতাশা, দুঃশ্চিন্তা দেখা দিচ্ছে
-বিভিন্ন জায়গায় ধার করে মাদক গ্রহণে এখন আপনি লজ্জায় পড়ছেন, ইত্যাদি।
৩) ইতিবাচক পরিবর্তনের একটি তালিকা তৈরি করুন:
মাদক ত্যাগ করলে আপনার জীবনে কী কী ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে তার একটি তালিকা তৈরি করুন। যেমন-
-আপনি স্বাধীন অনুভব করবেন
-আত্মীয় বা প্রিয়জনের সাথে সময় কাটাতে পারবেন
-অর্থ সঞ্চয় করতে পারবেন
-আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবেন, ইত্যাদি।
৪) কেন আপনি মাদক ত্যাগ করতে চান তার একটি তালিকা তৈরি করুন:
এটা করতে আপনি আপনার বন্ধু বা পরিবারের সহযোগিতা নিতে পারেন। এই তালিকা আপনাকে আপনার মনোবল বাড়াতে সহযোগিতা করবে। তালিকাটি হতে পারে এমন-
-আপনি খুব ভাল সন্তান, স্বামী বা স্ত্রী হতে চান
-আপনি আপনার সন্তানের ভাল বাবা বা মা হতে চান
-আপনি আপনার পরিবারের অর্থনৈতিক সংকট দূর করতে চান
-আপনি স্বাভাবিক জীবন ফেরত চান, ইত্যাদি।
৫) পরিকল্পনা তৈরি করুন:
পরিকল্পনা করা যেতে পারে কিছু ধাপে ধাপে-
-একটি দিন নির্ধারণ করুন যেদিন থেকে আপনি আর মাদক গ্রহণ করবেন না।
-নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকার জন্য ব্যক্তিগত ও পেশাগত সহযোগিতা নিন। যেমন: পরিবার ও প্রিয়জনের সাথে বেশি বেশি সময় কাটান, ডাক্তারের পর্যবেক্ষণে থাকুন, কাউন্সেলর বা সাইকিয়াট্রিস্ট এর কাছে কাউন্সেলিং সেবা নিন। তারা আপনাকে আপনার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে।
-মেডিটেশন করুন, ব্যায়াম করুন, নিয়মিত খেলাধুলা করুন। এগুলো আপনাকে শারীরিক ও মানসিক সমস্যা থেকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে।
-প্রতিদিন নামাজ পড়ুন, ধর্মচর্চা করুন। ধর্মের নির্দেশনাগুলো মেনে চলার চেষ্টা করুন। এতে আপনি মানসিক শান্তি ও মনোবল পাবেন এবং আপনার উদ্দেশ্য আরো শক্ত হবে।
-আপনার পরিকল্পনার কথা পরিবার ও বন্ধুদের বলুন। যাতে করে তারা আপনাকে সাহায্য করতে পারে।
-আপনার যেসমস্ত বন্ধুরা মাদকাসক্ত, তাদের কাছ থেকে ও মাদক গ্রহণের স্থান থেকে দূরে থাকুন।
-বেশি বেশি মজাদার মুভি দেখুন, গান শুনুন।
-বেশি বেশি পানি পান করুন, গোসল করুন, নিয়মিত খাদ্য গ্রহণ করুন।
-নিজেকে ব্যস্ত রাখুন সৃষ্টিশীল কাজের মধ্যে এবং ইতিবাচক চিন্তা করুন।
-যে অর্থ আপনি মাদকের জন্য ব্যয় করতেন তা পরিবার বা প্রিয় বন্ধুর জন্য ব্যয় করুন।
৬) নিজেকে মূল্যায়ন করুন:
যে আচরণগুলো আপনি প্রতিদিন করবেন, সেগুলো নেশা থেকে দূরে থাকার ৩০ দিন পর অভ্যাসে পরিণত হবে। এই অভ্যাসগুলোর ইতিবাচক দিকগুলো লিখে ফেলুন এবং ভাল অভ্যাসগুলো চালিয়ে যান আগামী ৩০ দিন।
৭) হয়তো আপনি মাদকাসক্তি থেকে মুক্ত হয়েছেন, তখন আবার নতুন করে বন্ধুদের পাল্লায় পড়ে একদিনের জন্যও মাদক গ্রহণ না করাই ভাল।
এটা সত্যি যে, যেকোন ধরনের নেশা বা আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসাটা কঠিন কিন্তু অসম্ভব নয়। এক্ষেত্রে আপনি যদি নিজেই নিজেকে সহযোগিতা না করেন তাহলে অন্য কেউ আপনাকে সহযোগিতা করতে পারবে না। তাই আপনাকেই আগে সিদ্ধান্ত নিতে হবে মাদকাসক্তি থেকে মুক্ত হবার জন্য। আর এই পথে হাটতে গিয়ে আপনি ব্যর্থ হতে পারেন, কিন্তু তার মানে এই না আপনি আর চেষ্টা করবেন না।
কথায় আছে, ‘একবার না পারিলে দেখ শতবার’। আবার প্রথম প্রচেষ্টাতেই আপনি সফলও হয়ে যেতে পারেন। আর এই একটি প্রচেষ্টাই আপনার জীবন পাল্টে দিতে পারে।
(Collected)

50
ঘুমন্ত অবস্থায় মস্তিষ্ক থেকে কিছু স্মৃতি হারিয়ে যায়। ফলে পরবর্তী সময়ে নতুন স্মৃতি রাখার জায়গা তৈরি হয়। হয়তো এটাই ঘুমের একটা কারণ। নতুন দুটি গবেষণার ভিত্তিতে সায়েন্স সাময়িকী এ তথ্য দিয়েছে।
প্রতিদিনের তিন ভাগের এক ভাগ সময় মানুষকে কী কারণে ঘুমাতে হয়, সেটা জানতে বিজ্ঞানীরা বছরের পর বছর ধরে চেষ্টা করছেন। তাঁদের কেউ কেউ মনে করেন, ঘুমের সময় মস্তিষ্ক থেকে অনেক তথ্য হারিয়ে যায়। নতুন গবেষণায় সে সম্পর্কে কিছু সমর্থন মিলেছে। একজন গবেষক বলেন, ঘুমের ওষুধ সেবন করে একধরনের ঝিমুনি পাওয়া গেলেও সেটা মস্তিষ্কের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করে।
যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গ্রাহাম ডায়ারিং এ রকম একটি গবেষণায় যুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, ঘুমানোর ফলে মানুষের চিন্তাভাবনা স্পষ্ট হয়। মোদ্দাকথা, ঘুমের সময় মস্তিষ্ক কোনোভাবেই নিষ্ক্রিয় থাকে না, বরং এ সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ সেরে নেয়। উন্নত বিশ্বে লোকজন ঘুমের সময় কমিয়ে ফেলায় সেই স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটছে।
মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষগুলোর মাঝখানে বিভিন্ন তথ্য সংরক্ষিত থাকে বলে অনেকে ধারণা করেন। ডায়ারিং বলেন, মানবমস্তিষ্ক অনেক বেশি তথ্য জমিয়ে রাখতে পারে। পরে সেগুলোর ক্রমবিন্যাস করে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে সেই ক্রমবিন্যাসের অভাবে স্মৃতিগুলো হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
দ্বিতীয় গবেষণাটি উইসকনসিন সেন্টার ফর স্লিপ অ্যান্ড কনশাসনেসের একদল বিজ্ঞানী পরিচালনা করেন। তাঁরা ইঁদুরের মস্তিষ্কের মধ্যবর্তী স্নায়ুকোষগুলোর কার্যক্রম ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পান, জাগ্রত অবস্থায় কোষগুলো শক্তিশালী ও প্রসারিত অবস্থায় থাকে। আর ইঁদুরের ঘুমন্ত অবস্থায় সেগুলোই আবার প্রায় ২০ শতাংশ সংকুচিত হয়ে পড়ে। সম্ভবত তখনই পরের দিন নতুন স্মৃতির স্থান সংকুলানের প্রক্রিয়াটা সম্পন্ন হয়। গবেষক দলটির সদস্য শিয়ারা সিরেলি বলেন, জাগ্রত অবস্থায় মস্তিষ্কের কোষগুলোর আকার ও শক্তির ভারসাম্য বিপর্যস্ত হয় এবং ঘুমন্ত অবস্থায় পুনরুদ্ধার হয়।

51
Psychological Disorder / ডিমেনশিয়া
« on: November 01, 2016, 03:07:44 PM »
ডিমেনশিয়া এক ধরনের ভুলে যাওয়া রোগ। এ রোগে মানসিক সক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। ডিমেনশিয়া সাধারণত ৬০ বছর বয়সের পরে হয়ে থাকে। তবে ক্ষেত্র বিশেষ এটি আরো আগেও হতে পারে।

ডিমেনশিয়া রোগীদের সাধারণত মানসিক ও আচরণগত সমস্যা দেখা দেয়। পরিবারের সদস্যদের অবহেলার কারণে অনেক সময় এ রোগটি লোক চক্ষুর আড়ালেই থেকে যায়। সঠিক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা দিতে পারলে ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির জীবন যাত্রায় সার্বিক পরিবর্তন আনা সম্ভব।

ডিমেনশিয়ার লক্ষণসমূহ-

– কোনো কাজ করে ভুলে যাওয়া।
– পরিচিত মানুষকে চিনতে না পারা।
– জানা কাজ করতে না পারা।
– ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন হওয়া।

মানসিক সমস্যার লক্ষণসমূহ-

– বিষণ্নতা।
– মানুষকে অহেতুক সন্দেহ করা।
– সবসময় মনে করা যে আশেপাশের মানুষ তাকে নিয়ে কথা বলছে।

আচরণগত সমস্যা-

– অস্থিরতা।
– হঠাৎ রেগে যাওয়া।
– কাউকে কিছু না বলে বাইরে কোথাও চলে যাওয়া।
– ক্ষুধা কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া।
– ঘুম কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া।
– পরিচর্যাকারীকে যত্ন নিতে বাঁধা দেয়া।

কাদের এ রোগ কম হয়?

– কর্মক্ষম ব্যক্তিদের এবং যারা নিয়মিত শরীরচর্যা করে তাদের ক্ষেত্রে এ রোগের প্রাদুর্ভাব কম দেখা যায়।

ডিমেনশিয়ার ঝুঁকিসমূহ-

– ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ এবং আগে কখনও স্ট্রোক থাকলে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

পরিচর্যাকারীদের করণীয়-

– রোগের লক্ষণ দেখা দিলে মানসিক রোগ বিভাগে যোগাযোগ করা।
– ডাক্তারের পরামর্শমতো ওষুধ খাওয়ানো।
– রোগীর জন্য একজন নির্দিষ্ট পরিচর্যাকারী নিয়োজিত করা।
– রোগীকে একই জায়গায় কিছুক্ষণ পরপর খাবার খাওয়ানো।
– নির্দিষ্ট সময় পরপর বাথরুমে নিয়ে যাওয়া।
– রোগীকে তার চেনা জায়গা থেকে না সরানো।
– ধারালো জিনিষপত্র সরিয়ে রাখা।
– বাথরুম ও বাইরে যাওয়ার দরজায় নির্দিষ্ট চিহ্ন দিয়ে রাখা।
– রোগীর নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বরসহ একটি কাগজ রোগীর সাথে রাখা।
– নিয়মিত সূর্যের আলোতে কিছু সময় রোগীকে রাখা।
– পরিমিত শাকসবজি খাওয়ানো ও পানি পান করানো।

প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। মনের খবরের সম্পাদকীয় নীতি বা মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই মনের খবরে প্রকাশিত কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না কর্তৃপক্ষ।
ডা. সাদিয়া তারান্নুম

সহকারী অধ্যাপক, মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, আশিয়ান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

52
চিকিৎসার উদ্দেশ্য

মূল উদ্দেশ্য ডিপ্রেশন বা ম্যানিক পর্যায়ের সিম্পটম গুলোকে কমানো হলেও, এই রোগের চিকিৎসার আরো কিছু দিক থাকে। যেমন; রোগটির সমস্যাগুলি যাতে বার বার ফিরে না আসে সেদিকে খেয়াল রাখা, সেই সাথে ডিপ্রেশন কারনে অতি খারাপ মনকে ভালোর দিকে রাখা এবং অতি ভালো থাকা মনকে (ম্যানিক পর্যায়) স্বাভাবিক অবস্থায় রাখাও এরোগের চিকিৎসার উদ্দেশ্য। মনের অবস্থাকে স্বাভাবিক বা মাঝখানে রাখাই চিকিৎসার একটি বড় দিক।

চিকিৎসা

মুড স্টেবিলাইজার; অর্থাৎ মুডকে স্টেবল রাখার জন্য এ ধরনের ওষুধ ব্যাবহার করা হয়। বিষন্নতা বা ম্যানিক পর্যায়, কোনো দিকে যেনো অতিরিক্ত ঝুকে না পরে বরং মনকে মাঝখানে ধরে রাখে এই মুড স্টেবিলাইজার।

এন্টিডিপ্রেশেন্ট; অতিরিক্ত খারাপ হয়ে যাওয়া মন বা ডিপ্রেস্ট মনকে স্বাভাবিক অবস্থায় আনার জন্য এধরনের ওষুধ ব্যবাহার করা হয়।

এন্টিসাইকোটিক; ম্যানিক পর্যায়ের চিকিৎসার জন্য এন্টিসাইকোটিক ওষুধ ব্যবাহার করা হয়।

সেই সাথে প্রয়োজন মতো ঘুম বা অস্থিরতা কমানোর জন্যও কিছু কিছু ওষুধ ব্যাবহার করা হয়।

সাইকোথেরাপী; সাধারনত সিম্পটম যখন বেশী থাকে তখন সাইকোথেরাপী কার্যকরী ভুমিকা রাখতে পারেনা। তবে ফ্যামেলি এডুকেশন বা সাইকোএডুকেশন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় দিক। যার মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের রোগটির বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য বা নির্দেশনা দিয়ে, কখন কি করতে হবে সেসব বিষয়ে শতর্ক করে তোলা হয়।

ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব

সহযোগী অধ্যাপক ও কোঅর্ডিনেটর- সাইকিয়াট্রিক সেক্স ক্লিনিক (পিএসসি) মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা এবং প্রাক্তন মেন্টাল স্কিল কনসালট্যান্ট, বিসিবি।

53
বাইপোলার এ্যফেকটিভ ডিজঅর্ডার’ এমন একটি মানসিক রোগ যা নাম দিয়ে চেনা যায়। ‘বাই’ শব্দের অর্থ দুই, আবার ‘পোলার’ মানে মাথা। অর্থাৎ এই রোগটির দুটি মাথা বা দুটি দিক থাকে। এক দিকে থাকে ডিপ্রেশন (বিষণ্নতা), যখন আক্রান্ত মানুষটি প্রচন্ডভাবে বিষণ্নতায় আক্রান্ত হয়, মন খারাপ থাকে। অন্য দিকে থাকে ম্যানিক কন্ডিশান, অর্থাৎ মানুষটি তখন নিজেকে অনেক বড় মনে করতে থাকে, যখন তখন ক্ষেপে যায়, সব কিছুতেই অতি চঞ্চলতা কাজ করতে থাকে। খাবার দরকার নাই, ঘুম দরকার নাই, যেন সমস্ত শক্তি ও ক্ষমতা এসে লোকটির উপর ভর করে।

দুটি দিক থাকলেও রোগ মূলত: একটিই। নাম ‘বাইপোলার এ্যফেকটিভ ডিজঅর্ডার’। ডিপ্রেশন বা ম্যানিক, এক একটি এপিসোড বা পর্যায়, সাধারনত: দুই থেকে ছয় মাস, কখনো কখনো আরো বেশী সময় ধরে থাকতে পারে। চিকিৎসার ভিতর থাকলে যা কমে আসে।

কেন হয়?

কোন কারন তেমন ভাবে আবিষ্কৃত না হলেও, বংশ পরম্পরায় এই রোগের একটা সম্পর্ক বোঝা গেছে। অর্থাৎ পূর্ববতী নিকট আত্মীয় স্বজনদের মধ্যে কারো এরোগ থাকলে তা পরবর্তী জেনারেশন এর মাঝে হতে পারে।

শান্ত নামের ছেলেটির গল্প

শান্ত ছেলেটি হঠাৎ চঞ্চল হয়ে উঠার একটি বড় কারন হতে পারে, এই ‘বাইপোলার এফেকটিভ ডিজঅর্ডার’। হঠাৎ অবাদ্ধ হয়ে যাওয়া বা বেয়াদব হয়ে যাওয়া নয়, বরং একটি মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়া। কি হচ্ছে, কি হয়, না ভেবে, আচরনে পরিবর্তন আসার সাথে সাথেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হওয়া উচিত।

রোগীর আত্মীয় স্বজনরদের যা যা মনে রাখা প্রয়োজন

এটি এমন একটি রোগ যা প্রয়োজনীয় চিকিৎসার আওতায় থাকলে সম্পূর্ন স্বাভাবিক জীবন কাটানো সম্ভব। বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই যা না করে সবাই ভুল বুঝে চিকিৎসার ব্যাবস্থা না করে বিভিন্ন উপদেশ দিতে থাকে। মনে রাখতে হবে, উপদেশে কোন রোগ সারে না। শারীরিক রোগ যেমন উপদেশে সারার নয়, তেমনি মানসিক রোগের ক্ষেত্রেও একই কথা মনে রাখতে হবে। স্বাভাবিক আচরনের পরিবর্তন এবং রোগাক্রান্ত অবস্থার পরিবর্তনের মাঝে পার্থক্য থাকে, যা একটু খেয়াল করলেই বোঝা যায়। তবে অবশ্যই উভয় ক্ষেত্রেই বিষয়গুলিকে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে।

সতর্কতা

‘বাইপোলার এ্যফেকটিভ ডিজঅর্ডার’ রোগটির একটি সমস্যার দিক হলো, এটি একবার হলে, চিকিৎসায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসলেও মনে রাখতে হবে এ রোগের সমস্যাগুলি আবার যেকোন সময় ফিরে আসতে পারে। সমস্ত উপসর্গ দূর হয়ে গেলেও এরোগটি আর হবেনা এটি বলা সম্ভব নয়।

লোকে কি বলবে বা কুসংস্কারের ভাবনা না ভেবে বরং চিকিৎসার স্মরণাপন্ন যত দ্রুত হওয়া যাবে ততই মঙ্গল।


ডা. সালাহ্উদ্দিন কাউসার বিপ্লব

সহযোগী অধ্যাপক ও কোঅর্ডিনেটর- সাইকিয়াট্রিক সেক্স ক্লিনিক (পিএসসি) মনোরোগবিদ্যা বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা এবং প্রাক্তন মেন্টাল স্কিল কনসালট্যান্ট, বিসিবি।


54
জেন্ডার আইডেন্টিটি ডিজঅর্ডার

ছেলে কিন্তু ছেলে হিসাবে নিজেকে আর দেখতে চায় না; মেয়ে কিন্তু মেয়ে হিসাবে নিজেকে আর মেলাতে চায় না। এমন ঘটনা খুব বেশি না হলেও মাঝে মাঝে পাওয়া যায়। আমাদের দেশে বা সমাজে এটি তুলনামুলকভাবে কমই পাওয়া যায় অন্যান্য উন্নত দেশের তুলনায়। এটাকে জেন্ডার আইডেন্টিটি ডিজঅর্ডার বলে।

এই রোগে একজন মানুষ যেটা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করেছেন সেটাতে তিনি আরাম বোধ করেন না। নিজেকে অন্য লিঙ্গের লোক মনে করেন। নিজের লিঙ্গ পরিবর্তন করতে চান। অন্য লিঙ্গের মানুষের আচরণ অনুকরণ, অনুসরণ করেন। বিপরীত লিঙ্গের জামা কাপড় পড়েন, তাদের সাথে থাকতে, খেলতে পছন্দ করেন। তারা এটাও প্রত্যাশা করেন যে, অন্যরা তাকে বিপরীত লিঙ্গের লোক মনে করবে ও তাদের ন্যায় আচরণ করবে। তারা নিজের পোশাক, চলনভঙ্গি, ভাষা, শব্দ চয়ন, গলার কণ্ঠ সবই অনুকরণ করেন বা করতে চান বা করতে পছন্দ করেন।

ছেলে বা মেয়ে উভয়ের মধ্যেই এই রোগ দেখা যায়। ছেলেরা মেয়েদের মত পোশাক পড়ে, মেয়েদের সাথে খেলে বা খেলতে পছন্দ করে, মনে করে সবাই তাকে মেয়ে হিসাবে মানুক ও আচরণ করুক।

মেয়েদের ক্ষেত্রেও ঠিক এমনটি দেখা যায়। তারা নিজেদেরকে ছেলে হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রাণান্ত চেষ্টা করতেও পিছপা হন না। বেশির ভাগই নিজের সমাজ, পরিচিতি সবই ত্যাগ করতেও রাজী থাকেন।

এই রোগের সাথে বেশিরভাগেরই অন্যান্য মানসিক রোগ থাকতে পারে কারণ তাদেরকে প্রতিনিয়তই পরিস্তিতির বিপক্ষে লড়াই করতে হয়।

বাচ্চাদের আচরণের পরিবর্তন লক্ষ্য করা ও দ্রুত রোগ নির্ণয় করে উপযুক্ত চিকিৎসা নিশ্চিত করলে ভালো ফলাফল পাওয়ার সম্ভবনা বেশি। দেরি হলে আসলেই এটি একটি জটিল রুপ নেয়।

প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। মনের খবরের সম্পাদকীয় নীতি বা মতের সঙ্গে লেখকের মতামতের অমিল থাকতেই পারে। তাই মনের খবরে প্রকাশিত কলামের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না কর্তৃপক্ষ।
ডা. এস এম ইয়াসির আরাফাত

এমবিবিএস, এমবিএ, এমপিএইচ ও এম.ডি. ফেস-বি রেসিডেন্ট- সাইকিয়াট্রি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। অতিরিক্ত ফ্যাকাল্টি, এমপিএইচ প্রোগ্রাম, আশা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ। গবেষক ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জার্নাল এর এডিটর। যোগাযোগঃ arafatdmc62@gmail.com

55
দিনের বড় একটা অংশ কর্মজীবীদের অফিসে কাটাতে হয়। সে কারণে সতেজ থাকাটা জরুরি। অফিসের কাজের চাপ মানসিক চাপ বাড়ায়। অতিরিক্ত মানসিক চাপের ফলে অফিসে যেমন কাজে মন দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে, ঠিক তেমনি বাড়ি ফিরেও অন্য কোনো কাজে মন দেওয়া সম্ভব হয় না। এতে কাজের ক্ষতি হয়। শরীরেও এর প্রভাব পড়ে।
ক্লান্তি-অবসন্নতার কারণে কাজে মনোযোগ দেওয়া অসম্ভব হয়ে পড়ে, কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রেও ঝামেলা হয়ে যায়। সে কারণে কর্মক্ষেত্রে সতেজ থাকাটা জরুরি।
কিছু নিয়ম মেনে চললে এই ক্লান্তি-অবসন্নতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। দেখে নেওয়া যাক সেগুলো—
রাতের বেলা সময়মতো ঘুমানোটা অনেক বেশি জরুরি। ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুমালে সকালে উঠে সতেজ ভাব কাজ করবে এবং কর্মক্ষেত্রেও ক্লান্তি কাজ করবে না। প্রতি রাতেই একই সময় ঘুমিয়ে সকালে একই সময়ে উঠে পড়ার অভ্যাস করুন। ঘুমের পরিবেশটা নিরিবিলি কি না, তা নিশ্চিত করুন।
প্রতিদিন সকালে ভালোভাবে ভারী নাশতা করুন। অনেক সময় অনেকে তাড়াহুড়া করে সকালের খাবার খেতে ভুলে যান। কিন্তু এটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। সকালে ভালোভাবে খাবার খেলে সহজে ক্লান্ত হবেন না।
দুপুরে যতটা সম্ভব হালকা খাবার খান। দুপুরে অনেকেই ভারী খাবার খেয়ে থাকেন; ফলে ক্লান্তি কাজ করে এবং কাজে মন দেওয়া সম্ভব হয় না।
বারবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। অর্থাৎ কাজের ফাঁকে ফলমূল, বাদাম অথবা সবজি খাওয়া যেতে পারে।
অফিসে চা-কফি পান করুন। কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় নয়, অর্থাৎ তিন কাপের বেশি নয়। কারণ, কফিতে অতিরিক্ত ক্যাফেইন থাকে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
শরীরের ওজন কমিয়ে ফেলুন। অতিরিক্ত ওজন ক্লান্তি-অবসন্নতার মূল কারণ হয়ে যায়। শরীরের ওজন কম থাকলে এমনিতেই ফুরফুরে থাকবেন।
অফিসে একটানা বসে কাজ করবেন না। কাজের ফাঁকে ফাঁকে মাঝেমধ্যে ব্যায়াম করুন, উঠে হাঁটাহাঁটি করুন।
অফিসে অনেকক্ষণ কাজ করার ফলে অনেক বেশি ক্লান্ত লাগলে কিছুক্ষণের জন্য ঘুমিয়ে নেওয়া যেতে পারে। ১৫-২০ মিনিটের জন্য ঘুমিয়ে নিলে ক্লান্তি কাটিয়ে ওঠা যায়।
প্রতিটা কাজ করার আগে একটা পরিকল্পনা রাখা উচিত। কোন কাজটা আগে করা হবে, কোন কাজটা পরে করা হবে, এভাবে পরিকল্পনামাফিক গুছিয়ে নিলে চাপ কম পড়ে।
কর্মক্ষেত্রে প্রচুর পরিমাণে পানি করুন। সূত্র: উইকি হাউ
* রাতের বেলা সময়মতো ঘুমানোটা অনেক বেশি জরুরি। ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুমালে সকালে উঠে সতেজ ভাব কাজ করবে এবং কর্মক্ষেত্রেও ক্লান্তি কাজ করবে না। প্রতি রাতেই একই সময় ঘুমিয়ে সকালে একই সময়ে উঠে পড়ার অভ্যাস করুন
* প্রতিদিন সকালে ভালোভাবে ভারী নাশতা করুন। অনেক সময় অনেকে তাড়াহুড়া করে সকালের খাবার খেতে ভুলে যান। কিন্তু এটা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। সকালে ভালোভাবে খাবার খেলে সহজে ক্লান্ত হবেন না

56
Children / Re: সন্তান যাচ্ছে দূরে...
« on: August 31, 2016, 10:12:50 AM »
সন্তানকে দূরে পাঠানোর পর

সন্তান তার পড়ালেখা আর জীবনযাপন সম্পর্কে যা বলছে তা বিশ্বাস করবেন। কিন্তু অবশ্যই তা স্থানীয় অভিভাবক, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অন্য কোনো মাধ্যম থেকে যাচাই করে নেবেন। তবে আপনার আচরণে যেন কখনো এমনটা মনে না হয় যে আপনি সন্তানকে অবিশ্বাস করছেন বা তাকে সন্দেহ করছেন। প্রতিটা ক্ষেত্রে যাচাই না করে মাঝে মাঝে দৈবচয়ন পদ্ধতিতে যাচাই করবেন।
* কেবল সন্তান কবে বাড়িতে আসবে সেটার অপেক্ষা না করে মাঝে মাঝে বাবা-মা নিজেরাই সন্তানের হোস্টেলে চলে যেতে পারেন। তবে কখনোই এমন কোনো কথা বলা বা আচরণ করা উচিত হবে না যাতে সে তার বন্ধুদের সামনে হীন বোধ করে।
* তার নির্ধারিত খরচের বাইরে সে বাড়তি টাকা চাচ্ছে কি না সেটার দিকে নজর দিন। কখনো খুব বেশি বাড়তি টাকা তাকে দেবেন না।
* তার বন্ধুদের সম্পর্কে জানুন। তাদের সঙ্গে পরিচিত হোন, প্রয়োজনে তাদের বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে খাওয়ান।
* সন্তান বাড়িতে এলে তার আচরণ পর্যবেক্ষণ করুন। তার পড়ালেখা, ধর্মচর্চা, সম্পর্ক, বন্ধুত্ব, প্রেম নিয়ে তার সঙ্গে কথা বলুন। তার মধ্যে রাতজাগা, অস্বাভাবিক মুঠোফোন ব্যবহার, কিছু গোপন করার চেষ্টা দেখলে সতর্ক হোন। নেশার কোনো লক্ষণ আছে কি না যাচাই করুন।
* সন্তানের প্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। তাঁর কাছ থেকে প্রকৃত তথ্য নিন। তার ফলাফল জানতে চান।
* স্থানীয় একজন অভিভাবক ঠিক করে দিতে পারেন। যার মাধ্যমে নিয়মিত খোঁজ নিতে পারবেন।
* টেলিফোনে নিয়মিত তার সঙ্গে কথা বলুন, যোগাযোগহীনতা যেন না হয়।
* তার কোনো আচরণে যদি আপনার মনে হয় সে কোনো বিশেষ গোষ্ঠীর সঙ্গে মিশছে, তবে অন্যান্য স্বজন বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাহায্য নিয়ে প্রকৃত তথ্য যাচাই করুন। এটি তার ভবিষ্যতের জন্যই মঙ্গল।
* অন্ধবিশ্বাস নয়। সন্তানকে ভালোবাসুন তবে অন্ধভাবে তাকে বিশ্বাস করবেন না।
* সন্তান যদি বিপদে পড়েই যায় তবে তার দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন না। তাকে আইনি পথে নৈতিকতার সঙ্গে সাহায্য করুন। মনে রাখবেন দিন শেষে সে-ই আপনার আদরের সন্তান।

57
Children / Re: সন্তান যাচ্ছে দূরে...
« on: August 31, 2016, 10:10:43 AM »
প্রস্তুতিপর্ব

সন্তানের সঙ্গে সহজ সম্পর্ক তৈরি করাটা শিখতে হবে। সে যেন ভয় পেয়ে তার অপরাধ গোপন না করে সে জন্য ছোটবেলা থেকেই তাকে এই শিক্ষাটা দিতে হবে। এর জন্য সন্তানের ভুলত্রুটিগুলো নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করা বন্ধ করতে হবে। অপরের সঙ্গে তাকে তুলনা করা বন্ধ করতে হবে। বিপদে পড়লে যেন সবার আগে আপনার শরণাপন্ন হয় এমন সম্পর্ক তৈরি করুন।
বাবা-মাকে আগে থেকেই মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে যে একটা সময়ের পর তাঁদের সন্তান নিজ জেলার বাইরে বড় শহরে পড়তে যাবে। সেখানে সে সহপাঠীদের সঙ্গে হলে থাকবে। বিষয়টা যেন হুট করে নেওয়া কোনো সিদ্ধান্ত না হয়।
* সন্তানকেও এই প্রস্তুতি নিতে হবে। তাকে বেশ আগে থেকেই ধারণা দিতে হবে যে সে বাবা-মাকে ছেড়ে দূরের শহরে একা একা জীবন যাপন করতে পারে।
* নিজের কাজগুলো নিজে নিজে করার শিক্ষা দিতে হবে।
* সামাজিক দক্ষতা শেখাতে হবে সন্তানকে। যাতে হোস্টেল বা হল জীবনে সে অন্যদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে।
* পড়ালেখার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক চর্চা থাকতে হবে। তাহলে সে হোস্টেল/হল জীবনে একাকিত্বে ভুগবে না, হতাশাগ্রস্ত হবে না এবং বিপথে যাওয়ার আশঙ্কা কমে যাবে।
* বাবা-মাকে প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করে তবেই বড় শহরে পড়তে পাঠাতে হবে সন্তানকে। আর্থিক অনিশ্চয়তার মধ্যে সন্তানকে ঠেলে দেওয়া যাবে না।
* বড় শহরে কোথায় থাকবে, হোস্টেলে না মেসে, সেখানে তার স্থানীয় অভিভাবক কে হবেন এবং যোগাযোগের মাধ্যম কী হবে তার জন্য উপযুক্ত পরিকল্পনা করতে হবে।
* কেবল সন্তানের কথায় নয়। অভিভাবকেরা নিজে যাচাই করবেন কোন প্রতিষ্ঠানে কোন বিষয়ে পড়তে যাচ্ছে। অনেক সময় অভিভাবকেরা বিষয়টি বুঝতে সক্ষম না হলে সন্তানের স্থানীয় শিক্ষকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেবেন।
* নিজস্ব বিবেচনাবোধ প্রয়োগ করে দেখবেন যে আপনার সন্তানের মধ্যে দূরের শহরে থাকার সামর্থ্য তৈরি হয়েছে কি না। তার অতীত বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন। যদি এমন হয় যে আপনার সন্তান আপনার পরিবারে থেকেই বিপথে যাচ্ছে, তখন তাকে দূরের শহরে পাঠানোটা আত্মঘাতী হতে পারে।


58
Children / সন্তান যাচ্ছে দূরে...
« on: August 31, 2016, 10:09:59 AM »
শামীম সাহেব থাকেন উত্তরবঙ্গের একটি জেলায়। তাঁর বড় ছেলে নাদিম। বছর দুয়েক হলো পড়ছে ঢাকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছেলেটি নিয়মিত বাসায় যোগাযোগ করে, ফোনে কথা হয়। ছুটিতে বাড়ি যায়। পড়ালেখা নাকি ভালোই চলছে। সব ঠিক ছিল। কিন্তু একদিন একটি রেজিস্ট্রি ডাকযোগে শামীম সাহেব একটি চিঠি পান। প্রেরকের ঘরে নাদিমের বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানা। চিঠি পড়ে নাদিমের বাবা হতবাক—চিঠির বক্তব্য হচ্ছে বিগত এক বছর ধরে শামীম বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুপস্থিত, উপরন্তু এক বছর আগের শেষ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছিল। গত এক বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো টাকা জমা দেয়নি। কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অভিভাবকের জ্ঞাতার্থে জানাল মাত্র। শামীম সাহেব তো নিয়মিত ছেলেকে সেমিস্টার ফি পাঠাচ্ছেন। মাসে মাসে অন্যান্য খরচ পাঠাচ্ছেন। কখনো চাহিদামতো বাড়তি টাকাও পাঠিয়েছেন। তিনি ভাবনায় পড়ে গেলেন, ‘কী করে আমার ছেলে?’
এ রকম ভাবনায় পড়তে পারেন অনেক অভিভাবকই। সন্তানেরা উচ্চশিক্ষার প্রয়োজনে নিজ জেলার বাইরে দূরে পড়তে যায়। কখনো দেশের মধ্যেই, বিশেষত রাজধানী ঢাকাসহ বড় বড় জেলায়, আবার কখনোবা বিদেশে। সন্তানকে অনেক আশা নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য পাঠিয়েছেন, ঠিকমতো যোগাযোগও রাখছেন তিনি কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কী করছে তা সব সময় বাবা-মায়ের পক্ষে জানা সম্ভব হয় না। সন্তান সে ছেলেই হোক আর মেয়েই হোক, বাড়ির বাইরে পড়তে গেলে বাবা-মায়ের মনে একটা বাড়তি উদ্বেগ থাকে। নানা বিষয় নিয়ে এই উদ্বেগ। সে ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করছে কি না, শরীরের যত্ন নিচ্ছে কি না, পড়ালেখা কেমন করছে, অসৎ সঙ্গে মিশে উচ্ছন্নে যাচ্ছে কি না, ‘প্রেম’ করছে কি না, নেশা করছে কি না, কোনো অপরাধ চক্রের সঙ্গে মিশে রাষ্ট্রদ্রোহ কাজে জড়িয়ে পড়ছে কি না ইত্যাদি নানান চিন্তা। বাবা-মায়েরা একটা বিশ্বাস আর আস্থা নিয়েই সন্তানকে দূরের শহরে পড়তে পাঠান। কিন্তু সব সন্তান সব সময় এই বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে পারে না। কেউ কেউ অকৃতকার্য হয়, সমস্যায় পড়ে আর কেউ কেউ অকৃতকার্য হয়ে সমস্যায় পড়েও বাবা-মাকে সেটি বলতে পারে না।
.সংকোচ আর ভয়ের কারণে তারা সমস্যাটি গোপন করতে থাকে। একপর্যায়ে গোপন করতে করতে তারা মিথ্যার পাহাড় বানিয়ে ফেলে, তখন বাবা-মায়ের কাছে সাহায্য চাওয়াটা তাদের কাছে অনেক কঠিন হয়ে পড়ে। যেকোনো বাবা-মা এই ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন। কিন্তু তাই ভেবে সন্তানকে উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকা বা বড় শহরে পাঠানো থেকে বিরত থাকা যাবে না। তার উচ্চশিক্ষার পথে এই ভাবনা যেন বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। এ জন্য বাবা-মা আর সন্তান সবাইকে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। পাশাপাশি যে সন্তান দূরে পড়তে যাচ্ছে, তাকে নিয়মিত দেখভালের ব্যবস্থা করতে হবে আর বিপদে পড়ে গেলে দেরি না করে দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।



source: goo.gl/Jkn55q

59
আমার প্রথম সন্তান রিয়াসাত জন্মাল যখন, আমাদের উচ্ছ্বাসের সীমা নেই। তার ছবি তোলার জন্য ডিজিটাল ক্যামেরা কেনা হলো। স্বাস্থ্যকর আর সুস্বাদু বেবি ফুড খাওয়ানো হলো। বছরখানেক কেনা পানি পান করানো হলো। নিউইয়র্ক ও বাংলাদেশে একাধিকবার জমজমাট জন্মদিন পালন করা হলো। বাড়িতে গানের আসর হলো রাতভর। যাকে নিয়ে এতসব আয়োজন, সম্ভবত সে এসবের কিছুই বোঝেনি। কেননা, এ নিয়ে তার কোনো উচ্ছ্বাস ও অনুভূতি চোখে পড়েনি কখনো।

আমার দ্বিতীয় সন্তান রিহান। জন্মের পর অযথা কান্নাকাটি নেই। হাত-পা ছুড়ে হাসে। খাবার দিলে খায়, না দিলে ঝামেলা করে না। তাকে কেনা পানি খাওয়ানো হয়নি। পরিবারের অন্য সদস্যদের মতোই রেগুলার খাবার খেয়ে বেড়ে উঠছে। তার জন্ম জুলাইয়ে। ওই সময় নিউইয়র্কের স্কুলগুলোতে গ্রীষ্মের ছুটি থাকে প্রতি বছর। ফলে স্কুলে কখনোই কেউ তাকে জন্মদিনে উইশ করেনি এবং করবেও না। কিন্তু প্রায়ই স্কুলে কারও না কারও বার্থডে পার্টি হয়। তখন বাড়ি ফিরে ভীষণ উচ্ছ্বাসে আমায় বলে, আম্মু, তুমি জান, টুমরো ইজ মাই বার্থডে? রিহানের ধারণা, যেহেতু স্কুলে একে একে সবাইকে ঘিরে জন্মদিনের পার্টি হচ্ছে, নিশ্চয়ই আগামীকাল তাকে ঘিরে হবে। কিন্তু সেই আগামীকাল আর আসে না। জুনের শেষ সপ্তাহে স্কুলগুলোয় দুই মাসের জন্য গ্রীষ্মের ছুটি শুরু হয়ে যায়।
ভীষণ সুখী সুখী উচ্ছলতায় সে যখন মাঝে মাঝেই আমাকে বলে, আম্মু, তুমি জানো, টুমরো ইজ মাই বার্থডে? আমরা সবাই হো হো করে হাসি। বলি, ধুর বোকা, প্রতিদিন কী কারও বার্থডে হয় নাকি! এতে সে খানিক লজ্জা পায়। কিন্তু জন্মাবধি কেউ তো কখনো তার চারপাশ ঘিরে দাঁড়িয়ে একযোগে হ্যাপি বার্থডে গান গেয়ে ওঠেনি। কিংবা হাততালি দিয়ে কেক কাটেনি। তাই হয়তো বা রিহানের শিশু মন প্রতিদিনই বার্থডে বয় হওয়ার স্বপ্ন দেখে।
এখন রিহান দিন ও মাস বোঝে। অনেক দিন পর গত মাসে এক রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগে আচমকা আমায় বলে, আম্মু, তুমি জান, টুমরো ইজ মাই বার্থডে? আমি চমকে উঠি। তাই তো! অতঃপর সে সারা বাড়ি হেঁটে হেঁটে তার দাদু, ভাইয়া, চাচ্চু সকলকেই বলতে থাকে, তুমি জানো, টুমরো ইজ মাই বার্থডে? এবার আর আমরা হো হো করে হেসে উঠি না। তাঁকে জড়িয়ে ধরি। আগাম উইশ করি। ছোট্ট মানুষটি আকাশছোঁয়া আনন্দ নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। ঘুমন্ত রিহানকে দেখে আমার ভেতরের টুকরো টুকরো অনুভূতিগুলো নাড়া দিয়ে ওঠে। কোনো কারণ ছাড়াই তার নিষ্পাপ মুখখানা বিষণ্ন মনে পড়ে। বাতি নিভিয়ে ছোট্ট মানুষটির গালের সঙ্গে গাল লাগিয়ে শুয়ে থাকি। বুকের ভেতরে এক চিনচিন সূক্ষ্ম ব্যথা বোধ করি। চার দেয়াল বেয়ে গাঢ় অন্ধকার নেমে আসে। সেই অন্ধকারে জানালার পর্দার ওপাশে লুকিয়ে থাকে ভীষণ এক নির্জনতা।
পরিবারের দ্বিতীয় সন্তান ভাব প্রকাশের অদ্ভুত এক ক্ষমতা দিয়ে সকলের মন জয় করে নেয় যদিও, কিন্তু তবুও তাঁরা প্রথম সন্তানের মতো মনোযোগ পায় না। কী অবলীলায় এই সব ছোট ছোট অবহেলাগুলো আমাদের মনোযোগ এড়িয়ে যায়, হায়! অথচ, এবার শতভাগ ইচ্ছে সত্ত্বেও অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে তার জন্মদিনটি আয়োজন করে পালন করা হয়নি। কদিন বাদে রিহান হয়তো ভাববে, তাকে কেউ ভালোবাসে না। জীবনের অনেকটা সময় আমি নিজেও ‘আমাকে কেউ ভালোবাসে না’ এমন একটি ধারণা নিয়ে বেড়ে উঠেছি। কেননা, আমিও যে দ্বিতীয়জন ছিলাম!
ভালোবাসায় ভালো থাকুক পরিবারের সকল দ্বিতীয়জন।

60
Fashion / টিপের সাজে
« on: August 16, 2016, 12:01:39 PM »
টিপের সাজে

টিপের নকশা নির্ভর করবে পোশাক ও চুল বঁাধার ওপর মডেল: লাবণ্য ও মাহারিয়া, সাজ: রেড পোশাক: রঙ বাংলাদেশ ছবি: সুমন ইউসুফটিপ, শুধু শাড়ির সঙ্গে সাজেই পূর্ণতা আনে, এই প্রচলিত ধারণাটা এখন আর নেই৷ এই সময়ের মেয়েরা সব পোশাকের সঙ্গেই পরছে টিপ৷ আর নকশাও আসছে নানা ফিউশন৷
.একটা সময় মুখের গড়ন বুঝেই পরা হতো টিপ৷ রেড বিউটি স্যালনের রূপবিশেষজ্ঞ আফরোজা পারভীন বললেন, তবে এখন পোশাকের নকশায় অনেক বৈচিত্র্যতা৷ চলাফেরার স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য টিউনিক, ফতুয়া বা কুর্তার মতো পোশাকগুলো মেয়েদের পরতে দেখা যায়৷ ছোট বা বড় নকশারই গোল টিপ নয়, পোশাকের সঙ্গে যায় এমন নানা বৈচিত্র্যময় .নকশার টিপ পরছে মেয়েরা৷ পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে টিপের নকশাটা কেমন হতে পারে, সে বিষয়ে একটা ধারণা দিলেন এই রূপবিশেষজ্ঞ৷ সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে পাথরের জমকালো নকশার লম্বাটে টিপ পরতে পারেন৷ এ ক্ষেত্রে দুই চোখের কোণে টিপের পাথরের সঙ্গে মিলে যায় এমন দুটো পাথর বসিয়ে দিন৷ যেকোনো অনুষ্ঠানে টিপের এই সাজটাই জমকালো ভাব নিয়ে আসবে৷ পাশ্চাত্য নকশার পোশাকের সঙ্গে টিপের সাজে ফাংকি লুকটা ভালো যায়৷ এ জন্য টিপে একটু ফানি বা মজার নকশা আনা যেতে পারে৷ একটু বাঁকা চাঁদের মতো নকশা বা স্টার নকশার টিপ এই সাজে বেশ মানায়৷ আবার এই ধরনের পোশাকের সঙ্গে ড্রপ ড্রপ করে বা সারি সারিভাবে টিপ পরতে পারেন৷ পোশাকের পাশাপাশি চুল বাঁধার ধরনের ওপরও টিপের নকশা খানিকটা নির্ভর করে৷ যেমন যাঁরা চুল উঁচু করে টেনে পনিটেল বাঁধেন, তাঁদের চিকন পাতার মতো নকশার টিপ পরলে ভালো দেখাবে৷ আবার টেনে বাঁধা চুলের সঙ্গে চিকন লম্বা টিপের নিচে ছোট টিপও পরতে পারেন৷ বড় নকশার গোলাকার টিপ পরতে পারেন ছেড়ে রাখা খোলা চুলের সঙ্গে৷ আবার যাঁদের মুখ খুব বেশি চওড়া, তাঁরা বড় গোল টিপ পরে দেখতে পারেন৷ এটা মুখের ভলিউম কমাতে সাহায্য করবে৷ স্কয়ার বা বর্গাকৃতি ও হার্ট আকৃতির মুখেও বড় টিপ ভালো দেখায়৷ ওভাল শ্যাপের মুখে মানিয়ে যাবে যেকোনো নকশার টিপ৷ এদিকে মুখের মেকআপ বা সাজটা কেমন হবে, সেটা বিবেচনায় রেখে টিপের রং বেছে নেওয়ার পরামর্শ দিলেন আফরোজা পারভীন৷ যেমন খুব লাইট টোন বা হালকা মেকআপের সঙ্গে লিপস্টিকে গাঢ় রংটা এখনকার চলতি ধারা। এই সাজে লিপস্টিকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে টিপ পরার চলটা এখন বেশ জনপ্রিয়৷ এদিকে হালকা বা ন্যাচারাল টোনের মেকআপে হালকা রঙের টিপটাই ভালো দেখাবে৷

Pages: 1 2 3 [4] 5 6 ... 17