Daffodil International University

Faculty of Engineering => EEE => Topic started by: S. M. Enamul Hoque Yousuf on May 11, 2018, 12:14:30 PM

Title: ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের নেপথ্যে: কীভাবে পাঠানো হয়েছিল মহাকাশের কক্ষপথে (2)
Post by: S. M. Enamul Hoque Yousuf on May 11, 2018, 12:14:30 PM
আইএসএস এর মহাকাশ যাত্রা
ফুটবল মাঠের আকৃতির সমান এবং প্রায় ৪,০৮,০০০ কেজির স্পেস স্টেশনটিকে একবারে পাঠানো হয়নি এর কক্ষপথে। ১৯৯৮ সাল থেকে শুরু করে ২০১১ সাল পর্যন্ত ৩০টিরও বেশি মিশন পরিচালনা করে সম্পূর্ণ করা হয় স্পেস স্টেশনটির সবগুলো মডিউল সংযোজনের কাজ। একেকবারে একেকটি মডিউল যোগ করা হতে থাকে, যার প্রতিটির কাজ আলাদা আলাদা। আর এতে মূখ্য ভূমিকা পালন করে যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া। কানাডা, ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি এবং জাপানের ভূমিকাও ছিল উল্লেখযোগ্য। এমনই কিছু গুরুত্বপূর্ণ মডিউল এবং মিশনগুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক এবারে।

জারিয়া (Zarya)
২০ নভেম্বর, ১৯৯৮। বেশিরভাগ মানুষের চোখ ছিল সেদিন টেলিভিশনের পর্দায়। আর কাজাখস্তানের বাইকোনুর কসমোড্রোমের মহাকাশ বিজ্ঞানীরা তখন একইসাথে ব্যস্ত আর উত্তেজিত। ‘থ্রি টু ওয়ান..’ কাউন্টডাউন শেষ হবার সাথে সাথে লঞ্চ সাইট ৮১-এর এরিয়া ২৪ লঞ্চ প্যাড থেকে সর্বপ্রথম আইএসএস মডিউল ‘জারিয়া‘কে নিয়ে উৎক্ষেপিত হয় প্রোটন-কে রকেটটি। এটির দায়িত্ব ছিল রাশিয়ান স্পেস এজেন্সির উপর।

রকেটটি জারিয়াকে নিয়ে যায় পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার উচ্চতার লোয়ার আর্থ কক্ষপথে। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে এবং রাশিয়ান প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয় জারিয়া। রাশিয়ান শব্দ ‘জারিয়া’ মানে হল সূর্যোদয়।

দুটি সোলার প্যানেল বিশিষ্ট এ মডিউলটিতে আছে একটি প্রোপালশন সিস্টেম যেটি আইএসএস-কে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আর তার কক্ষপথ বিচ্যুত হওয়া থেকে নিরাপদ রেখেছে। শুরুর দিকে একে ব্যবহার করা হত আইএসএস নিয়ন্ত্রণ, যোগাযোগ এবং বৈদ্যুতিক শক্তির কাজে। বর্তমানে এটিকে ব্যবহার করা হয় স্টোরেজ ক্যাপাসিটি আর অতিরিক্ত জ্বালানীর ট্যাংক হিসেবে।

ইউনিটি (Unity)
এর কয়েক সপ্তাহ পরেই ৪ ডিসেম্বর, ১৯৯৮ এ নাসা ‘স্পেস শাটল এন্ডেভার’-এর মাধ্যমে ৬ জন ক্রু নিয়ে পাঠায় ‘ইউনিটি‘। ডকিং শেষে ৬ জন ক্রু এন্ডেভারে করে আবার ফিরে আসেন পৃথিবীতে। এটি একটি নোড মডিউল আর প্রথম নোড মডিউল হবার জন্য এর আরেক নাম নোড-১ নামেও পরিচিত। পরবর্তীতে যতগুলো মডিউল পাঠানো হয়েছে সেগুলো ইউনিটির সাথে যুক্ত হয়েছে।

১৮ ফুট দৈর্ঘ্যের আর ১৪ ফুট ব্যাসার্ধের সিলিন্ডারের মতো দেখতে এই মডিউলটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৫০,০০০ এর মেকানিক্যাল আইটেম আর ছয় মাইল তার।

ভেজডা (Zvezda)
একইসাথে মহাকাশে এবং আইএসএস-এ মানুষের বসবাস করার নতুন ইতিহাস রচিত হয় ‘ভেজডা‘ মডিউলটি পাঠানোর পর। জারিয়া পাঠানোর দুই বছর পর আবারো বাইকোনুর কসমোড্রোম থেকে নতুন এই মডিউল পাঠানোর প্রস্তুতি নেয় রাশিয়ান স্পেস এজেন্সি।

২০০০ সালের ১২ জুলাই কসমোড্রোম লঞ্চ সাইট থেকে একটি থ্রি স্টেজ প্রোটন-কে রকেটের মাধ্যমে ভেজডা পাঠানো হয় আইএসএস এর সাথে যুক্ত করার জন্য।

আইএসএস এ সংযোগকৃত তৃতীয় এই মডিউলটি যোগাযোগ এবং বসবাসের জন্য ব্যবহার করা হয়। মহাকাশে মহাকাশচারীদের প্রথম বাসা ‘ভেজডা’র অর্থ হলো ‘নক্ষত্র’। জারিয়া যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়নে নির্মাণ করলেও ভেজডা নির্মাণের পুরো ব্যয়ভার বহন করে রাশিয়া। আর এই কাজের জন্য অর্থ জোগাড়ে অদ্ভুত এক কাজ করে তারা। ভেজডা উৎক্ষেপণের রকেটটিতে চোখে পড়ে পিজ্জা হাটের বিজ্ঞাপণ।

তবে অর্থ সংকটের কারণে এই মিশনের কোনো ব্যাকআপ বা ইনস্যুরেন্স ছিল না। তাই রকেটটি কোনো কারণে ধ্বংস হয়ে গেলে বিলম্বন ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তুত রাখে ‘ইন্টারিম কন্ট্রোল মডিউল’। কিন্তু তার আর প্রয়োজন পড়েনি, তাই সেটি বাতিল করা হয়।

এর কয়েক মাস পরেই নভেম্বরে এক্সপেডিশন-১ মিশনে মহাকাশের প্রথম তিন বাসিন্দা ক্রু ১৩৬ দিন বসবাসের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন আইএসএস-এ। তারা হলেন উইলিয়াম শেফার্ড (যুক্তরাষ্ট্র), ইউরি গিদজেনকো (রাশিয়া) এবং সের্গেই ক্রিকালেভ (রাশিয়া)।

ডেসটিনি (Destiny), কানাডার্ম২ (Canadarm2) এবং কোয়েস্ট (Quest)
২০০১ সাল ছিল আইএসএস এর জন্য বেশ ব্যস্ত একটা সময়। এই বছর বেশ কিছু মডিউল সংযোজন করা হয় স্পেস স্টেশনে।

ডেসটিনি মডিউলটি হলো যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত চারটি বৈজ্ঞানিক রিসার্চ মডিউলসহ একটি ল্যাবরেটরি যেটি স্পেস স্টেশনে গবেষণা এবং আরো উন্নত যোগাযোগের জন্য এই মডিউল পাঠানো হয়। ভেজডা মডিউল ডকিংয়ের পর থেকে একের পর এক মিশন পরিচালনা করা হতে থাকে নভোচারীদের পাঠানোর জন্য। সেখানে নভোচারীরা কাটাতেন কয়েক মাস করে। জানুয়ারি ২০১৮ পর্যন্ত ২৩০ জন নভোচারী স্পেস স্টেশনে পাড়ি জমিয়েছেন গবেষণার কাজে। ডেসটিনি ডকিংয়ের পর নভোচারীরা মহাকাশেই গবেষণার কাজ করতে শুরু করেন। গবেষণার কাজে প্রয়োজনীয় সব প্রযুক্তিই আছে এতে।

২০০১ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি স্পেস শাটল অ্যাটলান্টিসে পাঠানো হয় মহাকাশে গবেষণার ইতিহাস রচনাকারী এই ল্যাবরেটরিটি।এরপর শুরু হয় নভোচারীদের বিভিন্ন রকমের গবেষণা। এর মধ্যে সবথেকে আলোচিত হলো মাইক্রোগ্র‍্যাভিটি নিয়ে গবেষণা। মাইক্রোগ্র‍্যাভিটি মানব শরীরে কিরকম পরিবর্তন ঘটায়, শরীরের পেশি আর হাড়ে কী পরিবর্তন ঘটে, চোখের ওপর কেমন প্রভাব পড়ে এসব নিয়ে গবেষণা করেন তারা।

প্রতি সপ্তাহে ৩৬ ঘণ্টা কাজ করা লাগে স্পেস স্টেশনের নভোচারীদের। এর মধ্যে গবেষণা ছাড়াও প্রতিদিন নিয়ম করে প্রায় দুই ঘণ্টা ব্যায়াম করা লাগে। আর ব্যায়ামের সব সরঞ্জামই আছে সেখানে। পাশাপাশি স্পেসওয়াক, স্পেস স্টেশন মেইনটেনেন্স এবং রিপেয়ার তো আছেই। স্পেসওয়াক হলো স্পেস স্টেশনের বাইরে কাজ করা।

তবে মজার ব্যাপার হলো, এতকিছুর মাঝেও তারা বিনোদনেরও সময় পান। আর পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলা কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারেরও সুযোগ থাকে। গান, মিউজিক ভিডিও, কখনোবা নভোচারীরা মেতে উঠেন নিজেদের আড্ডায়। মহাকাশের রেকর্ড করা প্রথম মিউজিক ভিডিওটি এখন পর্যন্ত ইউটিউবে ৩৯ মিলিয়ন ভিউ পেয়েছে।

ডেসটিনির নিয়ন্ত্রণে ছিল আরেকটি অংশ, তা হলো কানাডার্ম২। স্পেস স্টেশন চুক্তিতে স্বাক্ষরের পর এই প্রকল্পে কানাডার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান হলো এই রোবোটিক আর্মটি।১,০০,০০০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত পেলোড সরানো, ডকিং সহ আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য ব্যবহার করা হয় এটি। STS-100 এর মাধ্যমে ৭ এপ্রিল ২০০১ এ পাঠানো হয় এই রোবোটিক আর্মটি।

কোয়েস্ট হলো একধরনের এয়ারলক। ডকিংয়ের সময় কিংবা স্পেসওয়াকের সময় দরজা হিসেবে ব্যবহার করা হয় এটি। ১২ জুলাই ২০০১ এ নাসার স্পেস শাটল অ্যাটলান্টিসের মাধ্যমে পাঠানো হয় এয়ারলকটি।
Title: Re: ইন্টারন্যাশনাল স্পেস স্টেশনের নেপথ্যে: কীভাবে পাঠানো হয়েছিল মহাকাশের কক্ষপথে (2)
Post by: mdashraful.eee on May 13, 2018, 08:03:04 AM
hmm..khub valo