Daffodil International University
DIU Activities => Permanent Campus of DIU => Topic started by: Reza. on July 04, 2018, 10:28:16 PM
-
একটা সময় ছিল যখন নতুন শার্ট পেতে হলে টেইলারস বা দর্জির কাছে যেতে হত। শুধু শার্ট না - পাঞ্জাবী পায়জামা পেতে হলেও টেইলারসই ছিল একমাত্র ভরসা। বর্তমানে গার্মেন্টসের এই যুগে খুব কম মানুষই টেইলারসে যান। এখন মানুষ দোকানে যায় আর মাপ ও পছন্দমত শার্ট কিনে নিয়ে পড়ে। গার্মেন্টসের ফলে পোশাক বানানোর সময় ও খরচ অনেক কমে গেছে। বর্তমানে আমাদের দেশের অনেকেই বলতে পারবেন না তার শার্ট কয়টা আছে। সে যে বয়সেরই হোন না কেন।
যদিও বেশীর ভাগ মানুষ বলতে পারবেন না কার কয়টি শার্ট আছে। তবে আমার পর্যবেক্ষণ মতে এই সংখ্যাটি ৩০ - ৪০ টির কম হবে না। ধরলাম এক জনের ৩০ টি শার্ট আছে। যেখানে ১০ টি হলেই তার চলে যাওয়ার কথা।
এর অর্থ হল প্রতিজন মানুষের ২০ টি শার্ট অতিরিক্ত আছে। এর মানে হল একজন মানুষ তার দরকারের ২০০% বেশী কঞ্জিউম করেন বা ভোগ করেন। এই ভাবে যদি আমরা দেখি তাহলে দেখতে পাব আমরা প্রতিটা সামগ্রী এই একই ভাবে অতিরিক্ত পারচেস বা ক্রয় করি।
এই ২০ টি শার্ট কিনতে তিনি টাকা ব্যয় করেছেন। এই টাকা ইনকাম করতে সে কিছু হলেও অতিরিক্ত সময় কাজ করেছেন। এইভাবে আমরা যত অপচয়মুলক অতিরিক্ত ক্রয় করি তার জন্য আমরা অতিরিক্ত সময় কাজ করি। এই সময়টি তিনি বের করেছেন তার ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, আধ্যাত্মিক সময় থেকে। এর ফলে তার পরিবার, সমাজ ভুক্তভোগী হয়েছে।
অপরপক্ষে এক এক জন ২০ টি শার্ট অতিরিক্ত ক্রয় করার জন্য শার্টের চাহিদা বেড়ে গেছে। এর ফলে গার্মেন্টসে মানুষের কাজ বেড়ে গেছে। তারাও স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত সময় বা ওভারটাইম কাজ করে শার্ট গুলো তৈরি করেছে। এর ফলে সেও তার ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক সময় কাটছাট করে সময় বের করেছে।
এই বার আসি মাটেরিয়ালে। শার্টটি তৈরি করতে ফাইবার থেকে সুতা, কাপড় তৈরি করতে হয়েছে। কাপড়টি রঙ করতে হয়েছে। শার্ট তৈরির প্রায় প্রতি পদে পানি, বিদ্যুৎ ও কেমিক্যাল ব্যাবহার করতে হয়েছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ প্রভাবিত হয়েছে। এই সব কিছু হয়েছে এক এক জনের অতিরিক্ত ব্যাবহারের মন মানুশিকতার জন্য। পুরোটাই কি অপচয় বা ওয়েস্টেজ নয়?
আমরা শুধু আমাদের নয় - আমাদের পরবর্তী দুই জেনারেশনের পানি, বাতাস, মাটেরিয়াল ব্যাবহার করে ফেলতেছি। পরিবেশে এর প্রভাব পড়তেছে।
আমরা আমাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক কাজের সময় খুঁজে পাই না। আমরা সারাদিন অবসর পাই না - এইটাই ভাবি।
কিন্তু আমাদের সময়, অর্থ ও শ্রম যে আমরাই ড্রেন করে বা অপচয় করে ফেলতেছি - তা কি কখনো আমরা খেয়াল করে দেখি?
-
আমার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী - শার্টের মত আমরা প্রতিটা আইটেম অতিরিক্ত ক্রয় করি। আগের জেনারেশনের থেকে আমাদের ব্যস্ততা অনেক বেড়ে গেছে। এইটা বেড়েছে কারণ আমরা লোভীর মত সব কিছু অতিরিক্ত ক্রয় করি।
-
Really
-
Thank you for your comments, madam.
-
মানুষের আসলেই এ্যাত্ত এ্যাত্ত শার্ট থাকে নাকি!!
এখানে বিষয়টা আরেকটা দৃষ্টিকোন থেকেও ভেবে দেখা যেতে পারে: ধরুন, একজন মানুষের মাত্র ৫টা শার্ট থাকলে সেগুলোর প্রতিটি বছরে গড়ে ৭০ দিনের মত করে পড়বে। অপরপক্ষে আরেকজনের যদি ২০টি শার্ট থাকে তাহলে প্রতিটি বছরে গড়ে ১৮ দিন করে পড়বে। ফলে এই ২০টি শার্ট এক বছর শেষে প্রথমজনের ৫টি শার্টের চেয়ে ভাল অবস্থায় থাকবে। প্রথমজনকে যদি পরের বছরই শার্টগুলোকে প্রতিস্থাপন করতে হয়, ২য় জনকে কিন্তু তা করতে হবে না, উনি হয়ত ৪ বছর পর শার্টগুলো প্রতিস্থাপন করবেন।
প্রায় একই রকম ঘটনা দেখা যায় দূস্থদের কম্বল বিতরণে। একজনকে আগের বছরে দেয়া কম্বলের কোনো হদিসই পাবেন না পরের বছরের শীতে, অথচ আপনার ৫ বছরের পুরাতন কম্বল বাসাতে বহাল তবিয়তেই আছে। এর কারণ হল, ঐ দূস্থ লোকের আর কোনো বিকল্প নেই। এটাই গায়ে দেয়, এটাই বিছিয়ে শোয়; তাছাড়া ধুয়ে তুলে রাখবে এমন আলমারিও তার নেই। ফলে ৬ মাস যেতে না যেতই সেই কম্বল ত্যানা হয়ে যায় ... ... ...
-
লেখাটিতে আমাদের অতিরিক্ত ক্রয় করার মন্মানুশিকতা বলা হয়েছে। শার্টের কথা উদাহরন হিসেবে দেয়া হয়েছে। আমাদের চারপাশে এমন ও মানুষ দেখেছি যিনি একটি শার্ট এক বারই পড়েন।
শার্টের বাতিল হওয়ার পিছনে শুধু ভাল অবস্থায় থাকার প্রয়োজন পড়ে না। কিছুদিন পড়ার পরে আমাদের তার প্রতি আকর্ষণ কমে গেলেও আমরা তা বাতিল করে দেই। তাই ২০ টি শার্ট থাকলে তাও অপচয়ের মধ্যে পড়ে।
আমাদের অপচয়ের আরেকটি খাত হল মোবাইল। পুরানো মোবাইল ঠিক থাকা স্বত্বেও নতুন মডেল আসায় আমরা পুরানোটা বাতিল করে দেই। যদিও তা সচল ছিল।