Daffodil International University

Faculty of Allied Health Sciences => Pharmacy => Pharmaceutical Microbiology => Topic started by: farjana aovi on January 24, 2019, 12:20:28 PM

Title: ভিটামিন ডি ঘাটতি
Post by: farjana aovi on January 24, 2019, 12:20:28 PM
ক্যালসিয়াম হাড় শক্ত করে, এটা আমরা জানি। আর ক্যালসিয়াম শরীরে শোষণ করে কাজে লাগাতে দরকার হয় ভিটামিন ডি। ভিটামিন ডির অভাবে শিশুদের রিকেট রোগ হয়। শিশুদের পা ধনুকের মতো বেঁকে যায় এবং মাথার খুলি বড় হয়ে পড়ে। দীর্ঘদিন ধরে এই রোগে ভুগলে শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয় এবং রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমে যায়। ভিটামিন ডির অভাবে চোয়ালের গঠন ঠিক হয় না, অসময়ে দাঁত পড়ে যায়।
বড়দের অস্টিওম্যালেসিয়া নামে একপ্রকার রোগ হয়। এই রোগে বয়স্কদের হাড় থেকে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস ক্ষয় হয়ে পড়ে। কখনো কখনো কোমরে ও মেরুদণ্ডে বাতের ব্যথার মতো ব্যথা অনুভূত হয়। অনেক ক্ষেত্রে মেরুদণ্ড বেঁকে যায়।
গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়ের এই রোগ বেশি হতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) সহযোগী অধ্যাপক কাজী শামিমুজ্জামান বলেন, গড়পড়তা একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের দৈনিক ১ হাজার মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম ও ৬০০ ইউনিট ভিটামিন ডি লাগে। নারীদের এবং সত্তরোর্ধ্ব পুরুষদের দরকার হয় একটু বেশি ক্যালসিয়াম, ১ হাজার ২০০ মিলিগ্রাম। গর্ভবতী ও স্তন্যদানকারী মায়েরও লাগে একটু বেশি। সঠিক নিয়মে সূর্যালোক ও ভিটামিন ডি–সমৃদ্ধ খাবার নিয়মিত গ্রহণ করলে এর ঘাটতি সহজেই মেটানো যায়। এর ফলে হাড় ক্ষয় রোধসহ ভিটামিন ডি-জনিত অন্যান্য রোগ থেকে সহজেই মুক্ত থাকা যায়।

ভিটামিন ডির উৎস?
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ভিটামিন ডির অন্যতম উৎস। সূর্য যখন প্রখর থাকে, তখনই অতিবেগুনি রশ্মি পৃথিবীতে পৌঁছায়। তবে কাচ, ঘন মেঘ, কাপড়চোপড়, ধোঁয়া ও সানস্ক্রিন এই রশ্মিকে বাধা দেয়।
তৈলাক্ত মাছ, যেমন কড বা হাঙর মাছের যকৃতের তেল এবং অন্যান্য প্রাণীর যকৃতেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়। এ ছাড়া দুধ, ডিমের কুসুম, মাখন ও চর্বিযুক্ত খাদ্যে ভিটামিন ডি থাকে। যেসব প্রাণী মাঠে চরে বেড়ায় এবং প্রচুর সূর্যালোক পায়, ওই সব প্রাণীর দুধ, ডিম ও যকৃতে ভিটামিন ডির পরিমাণ বেশি থাকে।
সূর্যালোক থেকে ভিটামিন ডি পর্যাপ্ত পরিমাণে পেতে—
* কোন সময় গায়ে রোদ লাগাবেন? আলোয় বেরিয়ে যখন দেখবেন আপনার ছায়া আপনার তুলনায় ছোট, তখনই সেই আলোতে আপনার ত্বক সবচেয়ে বেশি ভিটামিন ডি তৈরি করতে পারবে।
* যাঁরা কালো, তাঁদের ত্বকে মেলানিন নামের রঞ্জক উপাদান বেশি। আর যাঁরা ফরসা, তাঁদের ত্বকে এই উপাদান কম থাকে। মেলানিন অতিবেগুনি রশ্মিকে বাধা দেয়। ফরসা লোকজনের প্রতিদিন ২০ মিনিট রোদে থাকলেই চলে।
* অতিবেগুনি রশ্মি কাচ ভেদ করতে পারে না। তাই গাড়ি বা ঘরের ভেতর জানালা বন্ধ অবস্থায় রোদ এলেও লাভ নেই, পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি মিলবে না।
* পোশাক ও সানস্ক্রিন ত্বকে সরাসরি ভিটামিন ডি লাগতে বাধা দেয়। তাই আপাদমস্তক ঢেকে বেরোলে চলবে না। অন্তত হাত-পা বা মুখের কিছু অংশ খোলা রাখুন। মাঝেমধ্যে সানস্ক্রিন ছাড়াই রোদে বেরোতে হবে।
* বয়স বাড়তে থাকলে ত্বকের ভিটামিন ডি তৈরি করার ক্ষমতা কমতে থাকে। আর বয়স্কদেরই কিন্তু হাড় ক্ষয়ের সমস্যা বেশি। তাই বয়স হয়েছে বলেই সারা দিন বাড়ি বসে থাকা ঠিক নয়। নিয়মিত বেরোন এবং গায়ে রোদ লাগান।
* দূষিত বায়ু, ধোঁয়া ইত্যাদি অতিবেগুনি রশ্মিকে শুষে নেয় বা প্রতিফলিত করে। তাই দূষিত শহরে থাকলে মাঝেমধ্যে একটু দূরের গ্রামে বা আউটিংয়ে যাওয়া উচিত।
Source: Prothom Alo