Daffodil International University

Entertainment & Discussions => Sports Zone => Football => Topic started by: Anuz on August 07, 2019, 02:39:20 PM

Title: মিনিটে লাখ টাকা আয় করেন বাংলাদেশের ফুটবলার!
Post by: Anuz on August 07, 2019, 02:39:20 PM
মনে জেগেছে প্রশ্ন? বাংলাদেশের ফুটবলারের প্রতি মিনিটের আয় এত টাকা? হ্যাঁ, এবার সদ্য সমাপ্ত প্রিমিয়ার লিগে এমনটাই হয়েছে। মাঠের খেলার সময় ও পারিশ্রমিকের বিচার হিসাবে এমন দুর্দান্ত কাণ্ড করেছেন দিদারুল হক। সদ্য শেষ হওয়া মৌসুমে ৩২ লাখ টাকায় শেখ জামাল থেকে ডিফেন্ডার দিদারুলকে দলে ভিড়িয়েছিল বসুন্ধরা কিংস। মোটা অঙ্কের বিনিময়ে ক্লাব বদল করলেও নতুন দলের জার্সিতে প্রিমিয়ার লিগে খেলা হয়েছে মাত্র একটি ম্যাচ। ময়মনসিংহে সাইফ স্পোর্টিংয়ের বিপক্ষে বদলি নেমে এই ডিফেন্ডার খেলেছিলেন মাত্র ২৩ মিনিট। মিনিটে ১ লাখ ৩৯ হাজার টাকা!

৩২ লাখ টাকায় ক্লাব বদল। সুতরাং দেশের ফুটবলের প্রেক্ষিতে সে ফুটবলার হিসেবে কেমন, আপাতত সে প্রশ্নে যাওয়ার দরকার আছে বলে মনে হয় না। ৩৯ বছর বয়সেও এখন দারুণ ফিট সাবেক এই সেনা সদস্য। গত মৌসুমেও শেখ জামাল ধানমন্ডির অধিনায়কত্বের দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে। তাঁর নেতৃত্বে তারুণ্য নির্ভর জামাল লিগ শেষ করেছিল টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থেকে। আর লিগের মোট ২২ ম্যাচের ২১টিতেই মাঠে ছিলেন এই সেন্টারব্যাক। ২১টি ম্যাচেই মাঠে ছিলেন পুরো সময়।

ধারাবাহিকভাবে কয়েক মৌসুম ভালো খেলার সুবাদেই নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্ত করতে তাঁকে ৩২ লাখ টাকা দিতে কার্পণ্য করেনি সাফল্য পিপাসু বসুন্ধরা। দুর্দান্ত প্রতাপে দল চ্যাম্পিয়ন হলেও দিদারুলের মাঠে নামার সৌভাগ্য হয়নি। হতাশার এক মৌসুম শেষে স্বাভাবিকভাবে ভেঙে পড়েছেন, ‘খুবই খারাপ একটা মৌসুম কাটালাম। এ রকম হবে জীবনেও ভাবিনি। এত টাকা নিয়ে খেলতে পারব না, এটা খুবই কষ্টের। অনেক হিসেব করেই আমি বসুন্ধরায় গিয়েছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আবাহনী থেকে নাসিরকে (নাসিরউদ্দিন চৌধুরীকে) নিয়ে আসায় আমার জন্য খেলাটা কষ্ট হয়ে যায়। সঙ্গে বিদেশি ডিফেন্ডাররা তো ছিলই।’

প্রায় ১০ কোটি টাকার বিনিময়ে এবার তারকার হাঁট বসিয়েছিল বসুন্ধরা। দেশের প্রায় সব ভালো খেলোয়াড়দের সঙ্গে ভালো মানের বিদেশি। মুখে মুখে হিসেব করেই বলে দেওয়া যায় তাদের পুরো রক্ষণভাগের দাম হবে প্রায় ২ কোটি টাকা। লিগের প্রথম পর্ব পর্যন্ত স্পেন অনূর্ধ্ব-১৭ জাতীয় দলের হয়ে খেলা সেন্টারব্যাক জর্জ গোতর ছিলেন। লিগের দ্বিতীয় পর্বে কিরগিজ মিডফিল্ডার বখতিয়ার দুশবেকভকেও খেলানো হয়েছে সেন্টারব্যাক পজিশনে। এ ছাড়া চোট কাটিয়ে দুর্দান্তভাবে ফিরে আসেন নুরুল নাঈম ফয়সাল। আর শুরু থেকে নাসিরউদ্দিন তো ছিলই। সব মিলিয়ে চ্যাম্পিয়নদের রক্ষণভাগের সেনা হয়ে ওঠার সুযোগ হয়নি সাবেক এই সেনা সদস্যের।

এর পেছনে স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোনকেও কিছুটা দায়ী করছেন দিদারুল, ‘অস্কার ব্রুজোন যাকে দেখতে পারেন না, তাঁর খেলার কোনো সুযোগ নেই। সে আমাকে অনুশীলনেও সুযোগ দিয়ে দেখেননি, আমি পারি কিনা। হয়তো অন্য যে কোনো কোচের অধীনে থাকলে কম-বেশি খেলার সুযোগ পেতাম।’ ক্লাব বদলের ইঙ্গিতও দিয়ে রাখলেন। তাঁর নতুন গন্তব্য হতে পারে পুরোনো শেখ জামাল। যে ক্লাবের জার্সিতেই পেশাদার ফুটবলে আসা দিদারুলের।

দিদারুলের ফুটবল ক্যারিয়ার শুরু বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে। সেনাবাহিনীর জার্সিতে বিভিন্ন টুর্নামেন্টে নজর কাড়ায় ২০১৩-১৪ মৌসুমে তাঁকে দলে ভেড়ায় মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র। এর পরে সে সময়ের সাড়া জাগানো ক্লাব শেখ জামাল ধানমন্ডির জার্সি গায়ে তুলে নিয়ে টানা চার মৌসুম খেলা। জামালের জার্সিতে জিতেছেন দুইটি লিগ শিরোপা, ফেডারেশন কাপ ও ভুটানের কিংস কাপের শিরোপা। এর আগে পেশাদার ফুটবলার হিসেবে নতুন জীবন শুরু করার জন্য ২০১২ সালে সেনাবাহিনী থেকে নেন স্বেচ্ছা অবসর।

দিদারুলের ধারাবাহিক পারফরম্যান্সে মুগ্ধ হয়ে লোডভিক ডি ক্রইফ তাঁকে জাতীয় দলে জায়গা দেন। গোয়ায় ভারতের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে ছিলেন বাংলাদেশ দলে। এর পরে জাতীয় দলে খেলার সৌভাগ্য না হলেও টানা চার মৌসুম শেখ জামালের রক্ষণভাগ জমাট রাখার দায়িত্বটা ভালোই করেছেন। এবারই ধানমন্ডির মায়া ছেড়ে বসুন্ধরার আবাসিক এলাকায় তাঁবু গেড়ে ছিলেন। কিন্তু নতুন ক্লাবে সময়টা গিয়েছে একেবারে যাচ্ছে তাই।