Daffodil International University
Science & Information Technology => Science Discussion Forum => Geography => Topic started by: arefin on December 12, 2013, 05:09:46 PM
-
পুরাকাহিনীর হারানো নগরী আটলান্টিস নিয়ে সাধারণ মানুষের তো বটেই, বিজ্ঞানীদের মনেও রয়েছে অনেক কৌতূহল। কেমন ছিলো সেই নগরী, তা কোথায় অবস্থিত ছিলো আর কেনই বা তা হারিয়ে গেলো? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে জলের গভীরে অনেক অনুসন্ধান চলেছে। আর সবার এতদিনের প্রতীক্ষা বুঝি এবার সফল হতে চলেছে,, আলেক্সান্দ্রিয়া থেকে ২০ মাইল উত্তর-পশ্চিমে সাগরের জল থেকে আবিষ্কৃত হয়েছে এমন এক শহর, যার সাথে আটলান্টিসের ভীষণ মিল, শুধু নামটাই অন্য। কি সেই প্রাচীন শহর? তার নাম হেরাক্লেয়ন। এই নামটি এসেছে গ্রিক বীর হেরাক্লেস বা হারকিউলিসের নাম থেকে।এতদিন যারা আটলান্টিসের কাহিনীকে নিছক রূপকথা ভেবে উড়িয়ে দিয়েছেন, ভেবেছেন সাগরের অতলে কোনও শহরের অস্তিত্ব থাকা সম্ভব নয়, তাদের চোখ খুলে দিতেই বুঝি নিজের অস্তিত্বের জানান দিলো প্রাচীন এই নগরী। পুরনো কাহিনী থেকে যেমনটা জানা যায় ঠিক তেমনই সমৃদ্ধিশালী এক নগরী ছিলো হেরাক্লেয়ন। আজ থেকে দেড় হাজার বছর আগে সমুদ্র তাকে গ্রাস করে নেয়। এই নগরীর কথা জানা যায় গ্রিক ইতিহাসবিদ হেরোডোটাসের বর্ণনায়। ট্রয়ের রানী হেলেনের কথা বলেন তিনি, যে নিজের প্রেমিক প্যারিসের সাথে হেরাক্লেয়নে ভ্রমন করতে এসেছিলেন। কিন্তু এ সবের কোনও সত্যতা পাওয়া সম্ভব হয়নি। ২০০১ সালে ফরাসি প্রত্নতাত্বিক ফ্র্যাঙ্ক গুডিওর গবেষক দল এমন কিছু নিদর্শন খুঁজে পান যা থেকে এ ব্যাপারে আবারও চিন্তা করতে শুরু করতে হয়। ১৭৯৮ সালের ব্যাটল অফ দ্যা নাইলের সময়কালে নেপোলিয়নের ব্যবহৃত রণতরীর খোঁজ করছিলেন তারা, কিন্তু তার বদলে আলেক্সান্দ্রিয়ার কাছে আরও মুল্যবান এই গুপ্তধন খুঁজে পান তারা। তাদের সাথে যোগ দেয় অক্সফোর্ড সেন্টার ফর মেরিটাইম আর্কিওলজি এবং মিশরের ডিপার্টমেন্ট অফ অ্যান্টিকুইটিজ।
প্রথমে সাগরের তলে পলিমাটি চাপা পড়ে থাকা বিশাল সব পাথুরে ভাস্কর্যের ধ্বংসাবশেষ পানির উপরিভাগে আনতে শুরু করেন তারা। এর পর সেই ভাস্কর্যগুলো তীরে নিয়ে আসা সম্ভব হয়। এভাবেই প্রথম আবিষ্কারের ১২ বছর পর মানুষের সামনে উন্মোচিত হয় হেরাক্লেয়নের অমুল্য সব নিদর্শন। এদের মাঝে রয়েছে মিশরীয় দেবী আইসিস, দেবতা হাপি এবং নাম না জানা এক ফারাও এর মূর্তি। কাদার নিচে চাপা পড়ে থাকা এসব মূর্তি মোটামুটি অক্ষত অবস্থাতেই পাওয়া গেছে। এমন ১৬টি বিশাল আকৃতির মূর্তির পাশাপাশি আরও পাওয়া গেছে মিশরের অন্যান্য দেব-দেবীর ছোট আকৃতির শত শত মূর্তি। এই মূর্তিগুলো ছিলো আমুন-গেরেব একটি মন্দিরে যেখানে নীলনদের রানী হিসেবে অভিষিক্ত হয়েছিলেন ক্লিওপেট্রা।
এই আমুন-গেরেব মন্দিরের অনেকগুলো শবাধার পাওয়া গেছে, যাদের মাঝে ছিলো বলি দেওয়া বিভিন্ন প্রাণীর মমি করা দেহ। এদেরকে উৎসর্গ করা হয়েছিলো মিশরের সবচাইতে উচ্চ পর্যায়ের দেবতা আমুন-গেরেব এর উদ্দেশ্যে। ধর্মীয় প্রতীক সম্বলিত অনেক অ্যামিউলেট বা অলংকারও পাওয়া যায় যাতে আইসিস, ওসিরিস এবং হোরাসের মতো দেব-দেবীর প্রতিকৃতি দেখা যায়। এসব অ্যামিউলেট শুধুমাত্র ওই এলাকার অধিবাসীদের জন্য নয় বরং সেখানে আসা দর্শনার্থী এবং ব্যাবসায়িদের জন্যেও তৈরি করা হয়ে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
(http://tazakhobor.com/bangla/images/stories/mother/37/ancient_ocean_cities_heraklion_6.jpg)
শুধু ধর্মীয় নিদর্শন নয়, হেরাক্লেয়নে পাওয়া গেছে ৬৪ টি জাহাজের ধ্বংসস্তূপ। যে কোনও এক স্থানে এতগুলো জাহাজ পাওয়ার নমুনা এই প্রথম। এ ছাড়াও পাওয়া যায় ৭০০টি নোঙর। প্রাচীন পৃথিবীর অর্থনীতির জন্যেও হেরাক্লিয়ন ছিলো গুরুত্বপূর্ণ। এখানে পাওয়া গেছে স্বর্ণ এবং সীসার মুদ্রা এবং এথেন্স থেকে আসা বাটখারা। কন্সট্যান্টিনোপল, রোম এবং এথেন্স সহ বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করার জন্য তখন ভূমধ্যসাগর ব্যবহৃত হতো এবং গবেষকরা ধারণা করছেন সেখানকার সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর নগরী ছিলো হেরাক্লেয়ন। আর যাতায়াতের সুবিধার্থে প্রাকৃতিক জলপথের পাশাপাশি এখানে একটি কৃত্রিম খালও কাটা হয়েছিলো বলে ধারণা করা হয়।
(http://tazakhobor.com/bangla/images/stories/mother/37/divers_underwater-city-2.jpg)
হেরাক্লেয়নের এই আবিষ্কার অতীতের অনেক রহস্য সমাধানে ভুমিকা রাখবে বলে আশা করছেন বিজ্ঞানীরা। তার কারণ হলো এখানে পাওয়া গেছে এমন সব নিদর্শন যা খুবই ভালো অবস্থায় সংরক্ষিত ছিলো। পাওয়া গেছে অক্ষত সব স্লেটের পুঁথি। এমনি এক স্লেটের টুকরো থেকে এক সময়ে হায়ারোগ্লিফের পাঠোদ্ধার করা সম্ভব হয়েছিলো। হেরাক্লেয়নও কি তেমনি কোনও বহু প্রতীক্ষিত রহস্যের দ্বার উন্মোচন করতে সক্ষম হবে? সেই আশাই করছেন গবেষকেরা।
(http://tazakhobor.com/bangla/images/stories/mother/37/sunken_civilizations_egypt_golden_coins_byzantine_canopus.jpg)
-
Discovering this enhance our knowledge on history. Great post..
-
Thank you Sir for your appreciation.
-
You are most welcome sir.