Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - rumman

Pages: 1 2 [3] 4 5 ... 46
31
Allah: My belief / Repentance brings repentance back
« on: January 23, 2019, 03:48:54 PM »
ভুল-শুদ্ধ মিলেই জীবন। ত্রুটিহীন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। জীবনচলার পথে নানা রকমের স্খলন হয়েই যায়। কখনো চেতনে কখনোবা অবচেতনে।

তবে সত্যিকার মানুষ কখনো ভুল-ত্রুটিতে অটল ও অবিচল থাকতে পারে না। বিবেকবোধ, দায়বদ্ধতা ও পরকালের ভয় তাকে সবসময় অনুশোচনায় রাখে। ভেতরে ভেতরে অস্থির করে তোলে। তাই অপরাধ মোচনে প্রাণান্তকর চেষ্টা করে।

মানবজীবনের সবচেয়ে বড় ভুল ও স্খলন হলো, আল্লাহ তাআলার অবাধ্যতা ও রাসুল (সা.) এর সুন্নাতের বিমুখতা। আর এরই নাম গুনাহ।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য গুনাহ ছেড়ে দাও। নিশ্চয়ই যারা গুনাহ করে, অচিরেই তাদেরকে তাদের কৃতকর্মের বদলা দেয়া হবে।’ (সুরা আনআম, আয়াত : ১২০)

গুনাহের কারণে দুনিয়া-আখেরাতে প্রত্যেককেই শাস্তি পেতে হবে। তবে তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা করলে আল্লাহ তাআলা ক্ষমা করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি ইরশাদ করেন, ‘আর আমি অবশ্যই ক্ষমাকারী তার জন্য, যে তাওবা করে, ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং হেদায়েত প্রাপ্ত হয়।’ (সুরা ত্বাহা, আয়াত : ৮২)

গুনাহগার বান্দা যখন তাওবা করে তখন আল্লাহ তাআলা অত্যধিক খুশি হন। হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ মরুভূমিতে হারিয়ে যাওয়া উট খুঁজে পেয়ে যতটা খুশি হও, আল্লাহ তাআলা তার বান্দার তাওবাতে এরচেয়েও বেশি খুশি হন।’ (বুখারি, হাদিস নং : ৬৭০৯)

মূলত তাওবা হলো অতীতের অপরাধ ও ভুলের কারণে অনুতপ্ত ও লজ্জিত হওয়া। আল্লাহর দরবারে ভুল স্বীকার করে ভবিষ্যতে এমন ভুল প্রকাশিত না হওয়ার দৃঢ় অঙ্গীকার করা। সেই সঙ্গে কারো হক-পাওনা বিনষ্ট করে থাকলে, তার ক্ষতিপূরণ দেওয়া। তবে প্রকাশ্য গুনাহের জন্য অবশ্যই প্রকাশ্যে তাওবা করতে হবে।

ইসলামের চতুর্থ খলিফা আলী (রা.) বলেন, তাওবা হলো ছয়টি বিষয়ের সমষ্টি। ১. নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হওয়া। ২. ছুটে যাওয়া ফরজ-ওয়াজিব ইবাদতগুলো আদায় করা। ৩. অন্যের সম্পত্তি- অধিকার নষ্ট করে থাকলে, তা ফেরত দেয়া। ৪. শারীরিক বা মৌখিকভাবে কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকলে, ক্ষমা চাওয়া। ৫. ভবিষ্যতে পাপকাজ পরিত্যাগের দৃঢ় সংকল্প করা। ৬. আল্লাহর আনুগত্যে নিজেকে সমর্পণ করা।

আল্লাহ তাআলা মুমিন বান্দাদের তাওবার নির্দেশ দিয়েছেন, ‘হে ঈমানদারগণ তোমরা আল্লাহর নিকট তাওবা করো, খাঁটি তাওবা।’ (সুরা তাহরিম, আয়াত : ০৮)

আল্লাহ যাদের ভালোবাসেন, তাওবাকারী তাদের অন্যতম। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবাকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ২২২)

মানুষমাত্রই পরিচ্ছন্ন ও সুখী জীবনের প্রত্যাশী। ঝামেলাহীন সম্মান-মর্যাদায় বেঁচে থাকতে চায় প্রতিটি ব্যক্তি। কিন্তু এ প্রত্যাশা পূরণে সবচেয়ে বড় বাধা আমাদের গুনাহ। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আর যে আমার স্মরণ থেকে বিমুখ থাকবে, নিশ্চয়ই তার জীবন হবে সংকুচিত।’ (সুরা ত্বাহা, আয়াত : ১২৪)

কোরআনের ভাষ্যে ওই সমস্ত লোকের জন্য সংকীর্ণ ও তিক্ত জীবনের ঘোষণা দেয়া হয়েছে, যারা আল্লাহর কোরআন ও তার রাসুলের প্রদর্শিত পথে চলতে বিমুখ হয়। আর এরই নাম গুনাহ।

আল্লাহ আমাদের নির্দেশ করেছেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা সকলে আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন করো, তওবা করো, যেনো তোমরা সফলকাম হতে পারো, সার্থক হতে পারো।’ (সুরা আল-নুর, আয়াত : ৩১)

জানা-অজানা গুনাহই মানুষের জীবনে অশান্তি ও সংকীর্ণতা নিয়ে আসে। আর তাওবা সব ধরনের গুনাহ ধুয়ে মুছে সাফ করে দেয়।

রাসুল (সা.) সে কথাই বলেছেন, ‘যে গুনাহ ছেড়ে তাওবা করলো, সে গুনাহহীন মানুষের মতোই।’ (ইবনু মাজাহ, হাদিস নং : ৪২৫০)

প্রকৃত তাওবা মানুষকে নিষ্পাপ করে দেয়। এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘সেই সত্তার কসম, যার হাতে আমার প্রাণ, মানুষ যদি পাপ না করতো তবে আল্লাহ তাআলা মানবজাতিকে উঠিয়ে নিয়ে এমন এক সম্প্রদায়ের অবতারণা করতেন, যারা পাপ করত এবং পরে (নিজের ভুল বুঝতে পেরে) আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতো এবং আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দিতেন।’ (মুসলিম, হাদিস নং : ৬৭১০)

এ পার্থিব জগতে নানান ঝক্কি ঝামেলা নিয়েই আমরা বেঁচে আছি। বিভিন্ন কৌশলে এবং রকমারি চিন্তাভাবনায় নিজের জীবন, পরিবার, সমাজ ও সবকিছুতে শান্তি-স্থিতিশীলতা, স্বস্তি-সমৃদ্ধি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি, কিন্তু কিছুতেই তা হচ্ছে না। বরং পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অসঙ্গতি। সত্যি বলতে; আমরা হাঁটছি উল্টো পথে।

আমরা যদি ব্যক্তি জীবনে পরিশুদ্ধ ও গুনাহমুক্ত হওয়ার সাহস করতে পারতাম, তাহলে সবকিছুই স্বচ্ছ ও সুন্দর হয়ে যেতো। কিন্তু আমাদের সবকিছু ভয়াবহ রকমের অস্বচ্ছ ও অসুন্দর। আর এর পেছনে প্রথম ও প্রধান কারণ হলো গুনাহ।

মানুষ যেন নিজের পাপের প্রতি উদাসীন না হয়ে যায়। রাসুল (সা.) সেদিকে সতর্ক করে বলেন, ‘একজন ঈমানদার ব্যক্তির নিকট তার পাপ হলো একটি পাহাড়ের মতো, যার নিচে সে বসে রয়েছে এবং সে আশঙ্কা করে যে, সেটি তার উপর পতিত হতে পারে। অন্যদিকে একজন দুষ্ট মানুষ তার পাপকে উড়ন্ত মাছির মতো মনে করে এবং সেটা অবজ্ঞা করে। (বুখারি, হাদিস নং : ৬৩০৮)

হাদিসে রাসুল (সা.) মানুষকে ক্ষমা চাওয়ার ও তাওবা করার তাগিদ দিয়েছেন। মানুষ যত বড় ভুলই করুক, তাওবা করলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন। কেননা আল্লাহ ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। কাউকে নিরাশ হতে বারণ করে তিনি ইরশাদ করেন, ‘হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ—আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে নিরাশ হয়ো না; নিশ্চয় আল্লাহ সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা যুমার, আয়াত : ৫৩)

আমরা যদি যথার্থ তাওবা করতে পারি, নিজেদের পাপ ছেড়ে সত্য ও সুন্দরের পথে হাঁটতে পারি—তাহলেই কেবল সম্ভব পার্থিব জীবনে অপার্থিব সুখ লাভ। অধিকহারে তাওবা এবং গুনাহমুক্ত জীবনই হোক আমাদের ব্রত। আল্লাহ তাওফিক দান করুন।

Source:  বুরহান উদ্দিন আব্বাস, অতিথি লেখক, ইসলাম
| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বাংলাদেশ সময়: ১৪২২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৯

32
Allah: My belief / Islamic viewpoint in exchange for gifts
« on: December 20, 2018, 01:30:50 PM »
উপহার বিনিময় সামাজিক জীবনের একটি সাধারণ অনুসঙ্গ। উপহারের মাধ্যমে পারস্পরিক ভালোবাসা-সম্প্রীতি বৃদ্ধি পায়। উপরন্তু এটি ইসলামের দৃষ্টিতে খুবই পুণ্যময় ও গুরুত্বপূর্ণ।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে সত্তার হাতে আমার প্রাণ তাঁর কসম, তোমরা কিছুতেই বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষণ তোমরা ঈমান না আনবে, আর যতক্ষণ তোমরা একে অন্যকে ভালো না বাসবে ততক্ষণ তোমরা (পূর্ণ) ঈমানদারও হতে পারবে না। আমি তোমাদের এমন একটি কাজের কথা বলে দিই, যা করলে তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা সৃষ্টি হবে। তোমরা তোমাদের মধ্যে সালামের প্রচলন ঘটাও।’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ২৬৮৮)

অন্য হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা একে অন্যকে উপহার দাও, এতে তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা সৃষ্টি হবে।’ (আল-আদাবুল মুফরাদ, হাদিস নং : ৫৯৪)

উল্লিখিত দুইটি হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি ১. বেহেশতে যেতে হলে ঈমান আবশ্যক। ঈমান ছাড়া কেউ বেহেশতে যেতে পারবে না। ২. ঈমান যদিও আল্লাহ তায়ালার ওপর এবং নবী-রাসুল, ফেরেশতা, আসমানি কিতাব, পরকাল ও তকদিরের ওপর বিশ্বাসের নাম; কিন্তু পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে হলে এবং ঈমানের পূর্ণ সুফল পেতে চাইলে এ বিশ্বাসের পাশাপাশি ঈমানদারদের পারস্পরিক সম্প্রীতি ও ভালোবাসাও জরুরি। ৩. পারস্পরিক এ ভালোবাসা সৃষ্টির জন্য দুই হাদিসে দুটি পথ বলে দেয়া হয়েছে এক. অধিক হারে সালামের প্রচলন ঘটানো, দুই. পারস্পরিক উপহার আদান-প্রদান।

রাসুল (সা.) আরও বলেন, ‘তোমরা একে অন্যকে হাদিয়া উপহার দাও। এটি মনের শত্রুতা ও বিদ্বেষ দূর করে দেয়।’ (তিরমিজি, হাদিস নং : ২১৩০)

পারস্পরিক উপহার বিনিময় যখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে হয়, তখন দূরের মানুষের সঙ্গেও গড়ে ওঠে গভীর-নিটোল সম্পর্ক। অনেক সময় এ সম্পর্ক রক্ত ও আত্মীয়তার বাঁধনকেও ছাড়িয়ে যায়।

উপহার বিনিময় উত্তম গুণ হলেও কাউকে উপহার দিতে চাপে ফেরা কোনোভাবেই উচিত নয়। কেউ যদি কারও অতিথি হয়, তাহলে সাধারণত গৃহকর্তাদের জন্য কিছু একটা নিয়েই যায়। এ ক্ষেত্রে অবশ্য কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। অতিথিরা সাধ্যানুযায়ী অথবা সুবিধা মতো উপহার নিয়ে যান।

কিন্তু বিভিন্ন আনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ খুব আনন্দের হলেও কারো কারো জন্য বেশ নিরানন্দের। যাদের অর্থনৈতিক চাপ রয়েছে, তারা অত্যন্ত মিতব্যয়িতার সঙ্গে ও নির্দিষ্ট আয়ের মাধ্যমে সব খরচ বহন করেন। তারা আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব আর প্রতিবেশীর এরকম আনন্দ অনুষ্ঠানের সংবাদে ও আমন্ত্রণে যেমন উল্লসিত হয়, তেমনি পরক্ষণেই আবার দুশ্চিন্তায় মগ্ন হয়।

কারণ সেখানে মানসম্মত হাদিয়া উপহার না দিলে মানরক্ষা হয় না। আর মান রক্ষা করতে গেলে নিজের ক্ষমতায় কুলায় না। এ ধরনের উভয় উভয়সংকটে পড়ে অনেকে। আবার অনেক সময় কোনো অনুষ্ঠানের দাওয়াতের অর্থই হলো আপনাকে উপস্থিত হওয়ার পাশাপাশি মানসম্মত উপহারও নিয়ে যেতে হবে। উপরন্তু উপহার গ্রহণ করার জন্য সেখানে ভিন্ন রকমের আয়োজন রাখা হয়। ‘প্রমাণস্বরূপ’ তা লিখেও রাখা হয়। এরপর কে কত দিল এবং কত খরচ হলো আর কত টাকা উঠে এলো তার হিসাব চলে। এ রকম দৃশ্য আমাদের সমাজের অনেকটা অংশজুড়ে দেখা যায়।

উপহার আদান-প্রদানের পরিপূর্ণ সুফল পেতে সামাজিক বাধ্যবাধকতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আন্তরিকতাপূর্ণ উপহার দেওয়া হলে সম্প্রীতি ও ভালোবাসা বৃদ্ধি পাওয়া খুবই স্বাভাবিক। আর তা ঈমানের পূর্ণতার একটি অপরিহার্য অনুষঙ্গও বটে। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।

Source: বাংলাদেশ সময়: ২০০৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৮

33
Islam & Science / Not to criticize, to reform the teachings of Islam
« on: September 27, 2018, 12:26:15 PM »
পরনিন্দা ও অপরের সমালোচনা নিকৃষ্ট অভ্যাস। কারো অনুপস্থিতিতে তার দোষ বর্ণনা করাই হলো পরনিন্দা বা পরসমালোচনা। শরিয়তের পরিভাষায় এমন অনৈতিক চর্চাকে ‘গিবত’ বলা হয়।

যার দোষ বর্ণনা করা হচ্ছে, প্রকৃতপক্ষে যদি সেই দোষ তার মধ্যে থাকে তাহলে গিবত হিসেবে ধর্তব্য হবে। আর যদি না থাকে, তাহলে তা অপবাদ হিসেবে গণ্য হবে। অপবাদ গিবতের চেয়েও নিকৃষ্ট ও ঘৃণীত।

গিবত শুধু মুখে বলার দ্বারা হয় তা নয়, বরং ইশারা-ইঙ্গিত ও অঙ্গভঙ্গির দ্বারাও গিবত হয়। গিবত শ্রবণ করা গিবত করার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। দুটিই সমান অপরাধ। জীবিত ও মৃত উভয় ধরনের মানুষের গিবত করা হারাম।

গিবত শুধু একটি জঘন্যতম গুনাহ নয়। বরং এটি মানুষের ঈমান-আমলকে ধ্বংস করে দেয়। দুনিয়া ও আখিরাতকে বরবাদ করে দেয়। কোরআন ও হাদিসে এ ব্যাপারে কঠোর নিষেধাজ্ঞা এসেছে।

রাসুল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা অনুমান ও ধারণা (করে কথা বলা) থেকে বেঁচে থাকো। কেননা অনুমান করে কথা বলা সবচেয়ে বড় মিথ্যা।’ (বুখারি, হাদিস নং: ২২৮৭)

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, ‘পেছনে ও সামনে প্রত্যেক পরনিন্দাকারীর জন্য দুর্ভোগ-ধ্বংস।’ (সুরা হুমাজাহ, আয়াত : ০১)

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনের অন্য জায়গায় ইরশাদ করেন, ‘তোমরা একে অন্যের দোষ-ত্রুটি অন্বেষণ করো না এবং পরস্পর গিবত করো না। তোমাদের মধ্যে কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করতে পছন্দ করবে? বস্তুত, তোমরা তা ঘৃণাই কর। সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয়ই আল্লাহ তাওবা কবুলকারী, পরম দয়ালু।’ (স‍ুরা হুজুরাত, আয়াত : ১২)।

দুঃখের কথা হলো, আমাদের সমাজের সিংহভাগ মানুষ এ জঘন্য কাজে জড়িত। এমন লোক খুঁজে পাওয়া কষ্টসাধ্য, যে গিবতের সাথে জড়িত নয়। ঘরবাড়ি, অফিস-কারখানা, রাস্তাঘাট সবখানে গিবত বা পরনিন্দার চর্চা হচ্ছে জোরেশোরে।

আল্লাহ তায়ালা এ ধরনের লোক থেকে দূরে থাকতে আদেশ দিয়েছেন। ইরশাদ হচ্ছে, ‘আর তুমি আনুগত্য করো না এমন প্রত্যেক ব্যক্তির, যে অধিক কসমকারী, লাঞ্ছনা, পেছনে নিন্দাকারী ও যে চোগলখোরি করে বেড়ায়, ভালো কাজে বাধাদানকারী, সীমা লঙ্ঘনকারী, পাপিষ্ঠ।’ (সুরা ক্বালাম : ১০-১৩)

রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোনো বিষয়ে জুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন দুনিয়ায়ই তার নিকট ক্ষমা চেয়ে নেয়- ওই দিন আসার আগে, যেদিন তার কোনো দিনার বা দিরহাম থাকবে না। সেদিন তার কোনো নেক আমল থাকলে সেখান থেকে জুলুমের সমপরিমাণ তার থেকে কর্তন করে নেওয়া হবে। আর তার কোনো নেক আমল না থাকলে মজলুমের গুনাহের কিছু অংশ তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে। (বোখারি, হাদিস নং: ২২৮৭)

কখনো অহংকার, ক্রোধ ও সম্মানের মোহ থেকে গিবত সৃষ্টি হয়। আবার কখনো হিংসা থেকে গিবতের সূত্র তৈরি হয়। যেভাবেই হোক গিবত চরম নিকৃষ্ট ও ঘৃণীত অপরাধ। ইসলামের শিক্ষা হলো, কারো কোনো দোষ-ত্রুটি নজরে পড়লে আপোষে জানিয়ে দেয়া। শুধরে দেয়ার চেষ্টা করা।

গিবত থেকে বেঁচে থাকা প্রত্যেক মুমিনের জন্য আবশ্যক। কারো দোষ বর্ণনা না করে, শুধরে দেয়াই বাঞ্চনীয়। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।

Source: বাংলাদেশ সময়: ১৬০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৮

34
Hadith / Hadith's instruction to increase life expectancy
« on: September 24, 2018, 11:59:27 AM »
পারিবারিক সূত্রে গাঁথা সম্পর্ককে আত্মীয়তা বলা হয়। তবে সাধারণত রক্ত, বংশ কিংবা বৈবাহিক সম্পর্কের সূত্র ধরেই আত্মীয়তার সম্পর্ক তৈরি হয়। পারিবারিক সম্পর্ক ছাড়াও অন্য কোনোভাবে আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে। আবার নিকটাত্মীয়দের মাধ্যমে যেসব সম্পর্ক সৃষ্টি হয়, সেগুলোও আত্মীয়তার সম্পর্ক হিসেবে বিবেচ্য। ইসলামী আইনের বিচারে একজন মুসলমানের জন্য আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা ওয়াজিব বা অত্যাবশ্যক। শরিয়তসম্মত কারণ ছাড়া সম্পর্ক ছিন্ন করা সম্পূর্ণ হারাম।

পবিত্র কোরাআনে আল্লাহ মহান ইরশাদ করেছেন, যদি তোমরা ক্ষমতা পাও, তাহলে কি পৃথিবীতে তোমরা বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করবে? এদের প্রতিই আল্লাহ অভিসম্পাত করেন, অতঃপর তাদেরকে বধির ও দৃষ্টিশক্তিহীন করেন। (সুরা মুহাম্মাদ, আয়াত: ২২-২৩)

আত্মীয়-স্বজনের হক বা অধিকার সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেন, ‘তোমরা আত্নীয়-স্বজনকে তার হক দান করে দাও এবং অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরদেরও। আর কিছুতেই অপব্যয় করো না। (স‍ুরা বনি ইসরাইল, আয়াত: ২৬)

হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি প্রিয় নবী (সা.)-কে বলতে শুনেছি, ‘যে ব্যক্তি রিজিকের প্রশস্ততা ও আয়ু বৃদ্ধি করতে চায়, সে যেন তার আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে।’ (বুখারি, হাদিস নং : ৫৫৫৯, ৫৫২৭)

হাদিসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, আত্মীয়দের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখা এবং তাদের অধিকার সঠিকভাবে আদায় করা এমন একটি বিশেষ ভালো গুণ ও আল্লাহর আদেশ পালন, যার বাস্তবায়ন দেখে খুশি হয়ে আল্লাহ তায়ালা রিজিকে সচ্ছলতা ও আয়ুতে বরকত দান করেন।

বস্তুত জীবনের সীমা দীর্ঘায়ত হোক চায় না—এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। প্রত্যেকেই চায় জীবনের আয়ু বৃদ্ধি হোক। বয়সের পরিসীমা আরো পরিব্যপ্ত হোক। পৃথিবীতে সে আরো বেশিদিন টিকে থাকুক।

স্বভাবতই মানুষ আয়ু বৃদ্ধিতে যত চেষ্টা-প্রচেষ্টা করুক, জীবন একদিন ফুরিয়ে আসে। কিন্তু আল্লাহর রাসুল (সা.) সংক্ষিপ্ত জীবনকেও কীভ‍াবে বরকতপূর্ণ করা যায়, তার দিক-বর্ণনা দিয়েছেন। আল্লাহর কথা সত্য, আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর কথা সত্য। আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখলে আল্লাহ জীবন ও আয়ুতে নিশ্চয় বরকত দান করবেন। স্বল্প সময়েও বহু কাজ করার তাওফিক দেবেন।

প্রসঙ্গত, অনেককে দেখা যায়, সাধারণ বিষয় নিয়েও ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে দীর্ঘদিন পর্যন্ত কথাবার্তা বন্ধ রাখে। এমনকি কেউ কেউ তো ক্রোধের আতিশয্যে সারাজীবন দেখা-সাক্ষাত ও কথাবার্তা পর্যন্ত বন্ধ রাখে। অথচ এ ব্যাপারে (স‍া.) স্পষ্টভাবে ইরশাদ করেছেন।

হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কোনো মুসলমানের জন্য তিন দিনের বেশি তার ভাইয়ের সঙ্গে কথা বন্ধ রাখা জায়েয নেই।’ (মুসলিম, হাদিস নং: ৬২৯৫)।

হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে একটি হাদিসে বর্ণিত ব্যক্তি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করল, আমার কিছু আত্মীয় এমন আছে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক যতই বজিয়ে রাখার চেষ্টা করি, ততই তারা ছিন্ন করে। যতই সৎ বা ভালো ব্যবহার করি, তারা ততই দুর্ব্যবহার করে। সহনশীলতা অবলম্বন করলেও তারা বুঝতে চায় না। তখন রাসুল (সা.) বলেন, ‘আর তুমি তাদের সঙ্গে যেভাবে ব্যবহার করে চলছ, তা যদি অব্যাহত রাখতে পার তাহলে আল্লাহ সর্বদা তোমার সাহায্যকারী থাকবেন।’ (মুসলিম)

আবু আইয়ুব আনসারি রা. থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.) বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন আমল বলে দিন, যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে। তখন রাসূল বললেন, ‘আল্লাহর এবাদত কর, তার সঙ্গে কোনো কিছু শরিক করো না। নামাজ ভালো করে আদায় কর এবং যাকাত দাও। আর আত্মীয়তার সম্পর্ক অক্ষুন্ন রাখো।’ (বুখারি, হাদিস নং: ১৩০৯)

ফজিলত, সুসংবাদ ও সতর্কবাণীর হাদিস শোনে আমাদের বোধোদয় হওয়াটা স্বাভাবিক। তাই আসুন, আত্মীয়-স্বজনের অধিকারের প্রতি যত্নবান হই। পারস্পরিক বন্ধনকে আরো আন্তরিক ও অটুট করে তুলি।

Source: বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৮

35
Allah: My belief / Ashura's historical context
« on: September 22, 2018, 11:53:11 AM »
আশুরার দিনকে কেন্দ্র করে মানবেতিহাসে ন‍ানা ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। নবী-রাসুলদের সঙ্গে সম্পৃক্ত আশুরার দিনে মর্যাদাপূর্ণ অসংখ্য উপাখ্যান ইতিহাস গ্রন্থগুলোতে পাওয়া যায়।

যেমন- আশুরার দিন পৃথিবীর সৃষ্টি, এ দিনেই কেয়ামত। এ দিনে হজরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি, একই দিনে তার তওবা কবুল হওয়া। এ দিনেই হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর জন্মগ্রহণ ও নমরুদের প্রজ্বলিত আগুন থেকে মুক্তিলাভ। হজরত আইউব (আ.)-এর আরোগ্য লাভ ও হজরত ইউনুস (আ.) মাছের পেট থেকে মুক্তি পাওয়াসহ অসংখ্য ঘটনার বর্ণনা ইতিহাসের গ্রন্থে লিপিবদ্ধ হয়েছে।

তবে আল্লামা আবুল ফরজ আবদুর রহমান ইবনুল জাওজি তার বিখ্যাত ‘মাওজুআতু ইবনে জাওজি’-তে বলেন, আশুরার দিনে সংঘটিত ঘটনাবলি বিশুদ্ধ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়। তা সত্ত্বেও ইতিহাসের উপাদান হিসেবে সেসব ঘটনার আবেদন কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।

হাদিস শরিফে আশুরার ইতিহাস সম্পর্কে বলা হয়েছে—হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) যখন মদিনায় হিজরত করেন, তখন ইহুদিরা আশুরার দিনে রোজা পালন করতো। তিনি তাদের বললেন, ‘এটি কোন দিন, তোমরা যে রোজা রাখছ?’ তারা বলল, ‘এটি এক মহান দিন, যেদিন আল্লাহ মুসা (আ.)-কে মুক্তি দিলেন ও ফেরাউনের পরিবারকে ডুবিয়ে মারলেন। তখন মুসা (আ.) শোকর আদায় করার জন্য রোজা রাখলেন (দিনটির স্মরণে আমরা রোজা রাখি)।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘আমরা মুসার অনুসরণে তোমাদের চেয়ে বেশি হকদার। তখন তিনি রোজা রাখলেন ও রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন।’ (বুখারি, হাদিস নং : ৩৩৯৭; মুসলিম, হাদিস নং : ১১৩০)

অন্য এক হাদিসে এসেছে, ‘এটি সেদিন, যেদিন নুহ (আ.)-এর নৌকা ‘জুদি’ পর্বতে স্থির হয়েছিল। তাই নুহ (আ.) আল্লাহর শুকরিয়াস্বরূপ সেদিন রোজা রেখেছিলেন।’ (মুসনাদে আহমাদ : ২/৩৫৯)

ইতিহাসের পরম্পরায় ৬০ বা ৬১ হিজরির ১০ মুহাররম সংঘটিত হয় কারবালার হৃদয়বিদারক, মর্মন্তুদ ও বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ। যেখানে হজরত হুসাইন (রা.), তার পরিবারের সদস্য ও সাথীদের পৈশাচিকভাবে হত্যা করা হয়।

জুবাইর ইবনে বাক্কার বলেন, হুসাইন ইবনে আলী (রা.) চতুর্থ হিজরির শাবান মাসের পাঁচ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। আর তাকে আশুরার জুমার দিনে ৬১ হিজরিতে শহীদ করা হয়েছে। তাকে সিনান ইবনে আবি আনাস নাখায়ি হত্যা করে। তাতে সহযোগিতা করেছে খাওলি ইবনে ইয়াজিদ আসবাহি হিময়ারি। সে তার মাথা দ্বিখণ্ডিত করেছে এবং উবাইদুল্লাহর দরবারে নিয়ে এসেছে। তখন সিনান ইবনে আনাস বলেন, ‘আমার গর্দানকে স্বর্ণ ও রৌপ্য দ্বারা সম্মানিত করুন। আমি সংরক্ষিত বাদশাহকে হত্যা করেছি, মা-বাবার দিক দিয়ে উত্তম লোককে আমি হত্যা করেছি।’ (তাবরানি, মুজামে কবির, হাদিস নং: ২৮৫২)

সেদিন নরাধম-অভাগারা যে পাশবিকতা ও নির্মমতার পরিচয় দিয়েছে, তা যেকোনো হৃদয়েই বেদনা সৃষ্টি করে। ইতিহাস গ্রন্থে উল্লেখ আছে, শাহাদাতের পর হজরত হুসাইন (রা.)-এর দেহ মোবারকে মোট ৩৩টি বর্শার এবং ৩৪টি তরবারির আঘাত ছাড়াও অসংখ্য তীরের জখমের চিহ্ন ছিল। এছাড়া ঘাতক ও হন্তারকরা তার সঙ্গে থাকা মোট ৭২ জনকেও হত্যা করেছে।

Source: বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২০, ২০১৮

36
Islam & Science / A brief history of bloody cavity
« on: September 22, 2018, 11:47:43 AM »
মুসলিম উম্মাহর কাছে আশুরার ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনেক। কারবালা প্রান্তরে (৬০ বা ৬১ হিজরির ১০ মুহাররম) মহানবী (সা.)-এর দৌহিত্র হোসাইন (রা.)-এর মর্মান্তিক শাহাদাত বরণ ‘আশুরা’কে আরো গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যমণ্ডিত করেছে। ফলে কারবালা ও কারবালা সংক্রান্ত ইতিহাস জরুরি বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

কারবালা সংশ্লিষ্ট ইতিহাস সম্পর্কে অত্যন্ত সংক্ষেপে জুবাইর ইবনে বাক্কার (রহ.) বলেন, হোসাইন ইবনে আলী (রা.) চতুর্থ হিজরির শাবান মাসের ৫ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। আর আশুরার জুমার দিনে ৬১ হিজরিতে তিনি শহীদ হন। তাকে সিনান ইবনে আবি আনাস নাখায়ি হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতা করে খাওলি ইবনে ইয়াজিদ আসবাহি হিময়ারি। সে হোসাইন ইবনে আলীর মাথা শরীর থেকে দ্বিখণ্ডিত করে এবং ওবায়দুল্লাহর দরবারে নিয়ে যায়।

বলাবাহুল্য যে, কারবালার প্রান্তরে সে অশুভ দিনে পাপিষ্ঠরা যে নির্মমতা ও নির্দয়তার পরিচয় দিয়েছে, তা পাষণ্ড হৃদয়েও ব্যথা ও যাতনা সৃষ্টি করে। শাহাদাতের পর হজরত হোসাইন (রা.)-এর দেহ মোবারকে মোট ৩৩টি বর্শা ও ৩৪টি তরবারির আঘাত দেখা যায়। শরীরে ছিল অসংখ্য তীরের জখমের চিহ্ন। তার সঙ্গে মোট ৭২ জনকে হত্যা করে ঘাতকরা।

হোসাইন (রা.)-এর সংগ্রামের মূল লক্ষ্য ছিল খিলাফত ব্যবস্থার পুণর্জীবন। ইয়াজিদের বিরুদ্ধে কুফাবাসীর সাহায্যের প্রতিশ্রুতিতে আশ্বস্ত হয়ে হোসাইনের (রা.) স্ত্রী, ছেলে, বোন ও ঘনিষ্ঠ ২০০ অনুচর নিয়ে ৬৮০ খ্রিস্টাব্দে কুফার উদ্দেশে রওনা হন। ফোরাত নদীর তীরবর্তী কারবালা নামক স্থানে পৌঁছালে কুফার গভর্নর ওবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ তাকে বাধা দেন। রক্তপাত ও খুনাখুনি বন্ধের উদ্দেশে হজরত হোসাইন (রা.) তিনটি প্রস্তাব দেন।

এক. তাকে মদিনায় ফিরে যেতে দেওয়া হোক। দুই. তুর্কি সীমান্তের দুর্গে অবস্থান করতে দেওয়া হোক। তিন. ইয়াজিদের সঙ্গে আলোচনার জন্য দামেস্কে পাঠানো হোক।

কিন্তু ওবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে তার হাতে আনুগত্যের শপথ নিতে আদেশ দেন। হজরত হোসাইন (রা.) ঘৃণা ভরে তার এ আদেশ প্রত্যাখ্যান করেন।

অবশেষে ওবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদের চার হাজার সৈন্যের একটি বাহিনী হজরত হোসাইনকে (রা.) অবরুদ্ধ করে ফেলে এবং ফোরাত নদীতে যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দেয়। হজরত হোসাইন (রা.)-এর শিবিরে পানির হাহাকার শুরু হয়। তিনি ইয়াজিদ বাহিনীর উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে বলেন, ‘আমি যুদ্ধ করতে আসিনি, এমনকি ক্ষমতা দখল আমার উদ্দেশ্য নয়। খিলাফতের ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার আমার কাম্য।’

ইয়াজিদ বাহিনী ১০ মুহাররম তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এ অসম যুদ্ধে একমাত্র ছেলে হজরত জায়নুল আবেদিন (রহ.) ছাড়া ৭০ থেকে ৭২ জন শহীদ হন। হজরত হোসাইন (রা.) মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে যান। অবশেষে তিনি শাহাদাতের অমীয় সুধা পান করেন। হজরত হোসাইন (রা.)-এর ছিন্ন মস্তক বর্শা ফলকে বিদ্ধ করে দামেস্কে পাঠানো হয়। ইয়াজিদ ভীত ও শঙ্কিত হয়ে ছিন্ন মস্তক প্রত্যর্পণ করলে কারবালা প্রান্তরে তাকে কবরস্থ করা হয়।

ইতিহাস সাক্ষী, হজরত হোসাইন (রা.)-কে কারবালা প্রান্তরে যারা নির্মমভাবে হত্যা করেছিল, মাত্র ৫০ বছরের ব্যবধানে করুণ পন্থায় তাদের প্রত্যেকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। (সূত্র: কারবালার ইতিহাস, আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ শফি (রহ.)।)

প্রসঙ্গত মনে রাখা জরুরি, আশুরা মানেই শুধু কারবালার মর্মান্তিক ঘটনা নয়। আশুরার ঐতিহ্য আবহমানকাল থেকেই চলে আসছে। সুপ্রাচীনকাল থেকে আশুরার ঐতিহাসিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে, ইসলামের আবির্ভাবেরও বহু আগ থেকে।

আল্লাহ ‍তায়ালা হজরত হোসাইন (রা.), তার পরিবার ও বন্ধুজনদের জান্নাতে চির উচ্চ মর্যাদায় আসীন করুন। আমাদের হোসাইন (রা.)-এর মতো সত্য-ন্যায়ের পথ অবলম্বনের তাওফিক দান করুন।

Source: বাংলাদেশ সময়: ১৩০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৮

37
খালি পেটে ডাবের – বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে সারা বছর ধরে যদি নিয়ম করে ডাবের পানি খাওয়া যায়, তাহলে একাধিক রোগ শরীরের ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। শুধু তাই নয়, ডাবের পানিতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যামাইনো অ্যাসিড, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, ভিটামিন সি, আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, মেঙ্গানিজ এবং জিঙ্ক নানাভাবে শরীরে গঠনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
এইসব উপাদানই আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজন । তাই নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়া শুরু করতে পারেন। এমনটা করলে কয়েক দিনের মধ্যেই দেখবেন নানাবিধ উপকার মিলবে। যেমন ধরুন…
১. হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে ডাবের পানিতে উপস্থিত ক্যালসিয়াম, হাড়কে শক্ত-পোক্ত করে তোলার পাশাপাশি হাড়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত,ডাবে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়ামও এক্ষেত্রে নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। বুড়ো বয়সে যদি নানাবিধ হাড়ের রোগে আক্রান্ত হতে না চান, তাহলে সকাল সকাল উঠে এক গ্লাস ডাবের পানি খান।
২. শরীরকে বিষমুক্ত করে: দেহের প্রতিটি কোণায় উপস্থিত ক্ষতিকর টক্সিক উপাদানদের বের করে দিতে এই প্রকৃতিক উপাদানটির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। তাই তো প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে এক গ্লাস ডাবের পানি খেলে নানাবিধ রোগ যেমন শরীরের ধারে কাঁছে ঘেঁষতে পারে না, তেমনি সার্বিকভাবে শরীরিক ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।
৩. ব্লাড সুগারকে নিয়ন্ত্রণে চলে আসে: ২০১২ সালে হওয়া জার্নাল ফুড অ্যান্ড ফাংশন স্টাডিসে দেখা গিয়েছিল ডাবের পানিতে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড এবং ডায়াটারি ফাইবার ইনসুলিনের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এই কারণেই তো রোজের ডায়েটে ডাবকে অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।
৪. কিডনির ক্ষমতা বাড়ে: প্রচুর মাত্রায় পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকার কারণে ডাবের পানি কিডনির কর্মক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। সেই সঙ্গে শরীরে উপস্থিত টক্সিন উপাদানদের ইউরিনের সঙ্গে বের করে দিয়ে নানাবিধ জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমায়।
৫. পানির ঘাটতি মেটে: ডাবের পানি শরীরের ভেতরে প্রবেশ করা মাত্র পানির ঘাটতি মিটতে শুরু করে। সেই সঙ্গে এতে উপস্থিত ইলেকট্রোলাইট কম্পোজিশান ডায়ারিয়া, বমি এবং অতিরিক্ত ঘামের পর শরীরের ভিতরে খনিজের ঘাটতি মেটাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এই কারণে গরমকালে ডাবকে রোজের সঙ্গী করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা।
৬.শরীর এবং ত্বকের উজ্জলতা বাড়ে : খাতায় কলমে বয়স বাড়লেও শরীরের বয়স কি ধরে রাখতে চান? তাহলে আজ থেকেই খালি পেটে ডাবের পানি খাওয়া শুরু করুন। দেখবেন উপকার পাবেই পাবেন! আসলে ডাবের পানিতে রয়েছে সাইটোকিনিস নামে নামে একটি অ্যান্টি-এজিং উপাদান, যা শরীরের উপর বয়সের ছাপ পরতে দেয় না। সেই সঙ্গে ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
৭. ব্লাড প্রেসারের মতো রোগ দূরে থাকে: ডাবের পানিতে উপস্থিত ভিটামিন সি, পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে থাকে। সম্প্রতি ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান মেডিকেল জানার্লে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুসারে পটাশিয়াম শরীরে নুনের ভারসাম্য ঠিক রাখার মধ্যে দিয়ে ব্লাড প্রেসারকে স্বাভাবিক রাখে। এই কারণেই তো যাদের পরিবারে এই মারণ রোগটির ইতিহাস রয়েছে, তাদের নিয়মিত ডাবের পানি খাওয়া উচিত। একই নিয়ম যদি রক্তচাপে ভোগা রোগীরাও মেনে চলেন, তাহলেও দারুন উপকার মেলে।
৮. ওজন হ্রাসে পায়: ডাবের পানিতে উপস্থিত বেশ কিছু উপকারি এনজাইম হজম ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি মেটাবলিজমের উন্নতিতেও সাহায্য় করে থাকে। ফলে খাবার খাওয়া মাত্র তা এত ভাল ভাবে হজম হয়ে যায় যে শরীরের অন্দরে হজম না হওয়া খাবার মেদ হিসেবে জমার সুযোগই পায় না। ফলে ওজন কমতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, ডাবের পানি শরীরে লবনের মাত্রা ঠিক রাখে। ফলে ওয়াটার রিটেনশন বেড়ে গিয়ে ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
৯. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে: রাইবোফ্লবিন, নিয়াসিন, থিয়ামিন এবং পাইরিডোক্সিনের মতো উপকারি উপদানে ভরপুর ডাবের পানি প্রতিদিন পান করলে শরীরের ভেতরে শক্তি এতটা বৃদ্ধি পায় যে জীবাণুরা কোনওভাবেই ক্ষতি করার সুযোগ পায় না। সেই সঙ্গে ডাবের পানি উপস্থিত অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-ব্য়াকটেরিয়াল প্রপাটিজ নানাবিধ সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
১০. হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে: শরীরে বাজে কোলেস্টেরল বা এল ডি এল-এর পরিমাণ কমিয়ে হার্টের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে ডাবের পানির কোনও বিকল্প হয় না বললেই চলে। শুধু তাই নয়, দেহে ভাল কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়িয়ে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমাতেও ডাবের পানি বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকে।
১১. মাথা যন্ত্রণার প্রকোপ কমে: ডিহাইড্রেশনের কারণে মাথা যন্ত্রণা বা মাইগ্রেনর অ্যাটাক হওয়ার মতো ঘটনা ঘটলে শীঘ্র এক গ্লাস ডাবের পানি খেয়ে নেবেন। এমনটা করলে দেখবেন নিমেষে কষ্ট কমে যাবে। আসলে এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে উপস্থিত ম্যাগনেসিয়াম, এই ধরনের শারীরিক সমস্যার চিকিৎসায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।



38
Allah: My belief / When the day of Friday prayer is accepted
« on: September 14, 2018, 06:57:35 PM »
মানুষের সহস্র প্রয়োজন ও চাহিদা থাকে। প্রয়োজনের তাগিদে মানুষ সব করে। চাহিদা পূরণে কেউ সাধ্যের কমতি করে না।

ধর্মপ্রাণ মানুষ বিশ্বাস করে, আল্লাহর কাছে নিজের প্রয়োজন ও চাহিদার কথা তুলে ধরলে আল্লাহ প্রয়োজন পূরণ করেন। চাহিদায় ঘাটতি থাকলে তা দূর করে দেন। এ জন্য সবাই চায়, আল্লাহর কাছে তার কথা গৃহিত হোক। তার দোয়া কবুল হোক।

স্বাভাবিকভাবে শুক্রবার বা জুমার দিন একটি গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যবহ দিন। এ দিনের কিছু সময়ে আল্লাহ বান্দার দোয়া ফিরিয়ে দেন না বলে হাদিসে এসেছে। বিভিন্ন বর্ণনায় বিভিন্ন সময়ের কথা উল্লেখ হয়েছে। তবে জুমার দিনে দোয়া কবুল হওয়ার বিশেষ সময় কোনটি সে সম্পর্কে মতানৈক্য থাকলেও দোয়া কবুল হওয়ার ব্যাপারে কারো দ্বিমত নেই।

আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) আমাদের সঙ্গে একদিন শুক্রবারের ফজিলত ও বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, সেই সময়টায় যদি কোনো মুসলিম নামাজ আদায়রত অবস্থায় থাকে এবং আল্লাহর কাছে কিছু চায়, আল্লাহ অবশ্যই তার সে চাহিদা বা দোয়া কবুল করবেন এবং এরপর রাস‍ুল (সা.) তার হাত দিয়ে ইশারা করে সময়টির সংক্ষিপ্ততার ইঙ্গিত দেন।’ (বুখারি)

আবু দারদা ইবনে আবু মুসা আশআরি (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তিনি জুমার দিনের বিশেষ মুহূর্তটি সম্পর্কে বলেছেন, ইমামের মিম্বরে বসার সময় থেকে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত সময়টিই সেই বিশেষ মুহূর্ত। (মুসলিম, মিশকাত)

আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) হতে বর্ণিত রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘ইমাম মিম্বরে বসা থেকে  নামাজ শেষ করা পর্যন্ত।’ (মুসলিম, ইবনু খুজাইমা, বয়হাকি)

রাসুল (সা.) থেকে জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) বর্ণনা করেন, জুমার দিনে ১২ ঘণ্টা রয়েছে। তাতে এমন একটা সময়ে রয়েছে, যাতে আল্লাহর বান্দা আল্লাহর ক‍াছে যা চায় আল্লাহ তাই দেন। অতএব তোমরা আছরের শেষ সময়ে তা তালাস করো। (আবু দাউদ, হাদিস নং : ১০৪৮, নাসাঈ, হাদিস নং : ১৩৮৯)

আব্দুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বর্ণনা করেন, শুক্রবারে আছরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত দোয়া কবুল হয়। বিখ্যাত সিরাতগ্রন্থ যাদুল মাআ’দ-এ বর্ণিত আছে, জুমার দিন আছরের নামাজ আদায়ের পর দোয়া কবুল হয়। (২/৩৯৪)

ইমাম আহমদ (রহ.)-ও একই কথা বলেছেন। (তিরমিজির ২য় খণ্ডের ৩৬০ নং পৃষ্ঠায় কথাটি উল্লেখ আছে)

মোট কথা, জুমার দিনে বিশেষ একটি মুহূর্ত রয়েছে, যে সময় আল্লাহ তাআলা বান্দার দোয়া কবুল করে থাকেন। এ সময় সম্পর্কে আরো কিছু অভিমত তুলে ধরা হলো:

জুমার নামাজে সুরা ফাতিহার পর ‌আমিন বলার সময়। আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়ে। মুয়াজ্জিন আজান দেয়ার সময়। জুমার দিন সূর্য ঢলে পড়ার সময়। ইমাম খুতবা দেয়ার জন্য মিম্বরে দাঁড়ানোর সময়। উভয় খুতবার মধ্যবর্তী সময়। জুমার দিন ফজরের আজানের সময়। প্রত্যেক জুমায় আলাদা আলাদা সময়ে।

গুরুত্বপূর্ণ ও নির্ভরযোগ্য কথা হলো, দোয়া কবুলের সময়টি পুরোদিনের ভেতর লুকিয়ে আছে। পুরোপুরি নির্ধারিত না করার উদ্দেশ্য হলো, বান্দা যেন জুমার দিন সর্বদা ইবাদত-বন্দেগি ও দোয়ায় মশগুল থাকে। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন।

39
Life Science / Smoking Toner Magic Tonic
« on: August 09, 2018, 01:07:29 PM »

ধূমপান স্বস্থ্যের ক্ষতিক্ষারক, এটা সবারই জানা। তারপরও বেশিরভাগ মানুষ এদিকেই এগিয়ে যায়। পরে সেটা হয়ে যায় নেশা। একসময় সহজে ছাড়তে চাইলেই আর ছাড়া যায় না। কিন্তু একটি মানুষের সঠিক সচেতনতা পারে ধূমপান থেকে সরাতে। যা আবার সবার হয়ে ওঠে না। তবে তার জন্য কিছু উপায় অবলম্বন করলেই জাদুর মতো এ বদ অভ্যাসটি ত্যাগ করা যাবে বলে পরামর্শ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

ধূমপান বন্ধ করতে অনেকেই নানা উপায় খুঁজে বের করেন। জানেন সবাই ক্ষতি করছে, সেজন্য তৎপরও অভ্যাসটি ত্যাগ করতে। কিন্তু সেই উপায়ের কঠোর মনোবল ভেঙে দেয় নেশার টান। পরে আবার যেই সেই; ধূমপায়ী।

ধূমপান ত্যাগ করা ধৈর্যের কঠিন পরীক্ষা, বিজ্ঞানীরাও জানেন। সেজন্য তারা সময় নিয়ে বড় ধরনের উপকারী কিছু পাওয়া যায় কি-না সেটা বের করতে চেষ্টা করেছেন, পেয়েছেনও।

তাদের পরামর্শ, সাইকোঅ্যাক্টিভ ড্রাগস ব্যবহার করে তামাকের নেশা থেকে দূরে সরে আসা যায়। সেক্ষেত্রে সাইকোঅ্যাক্টিভ ড্রাগসের প্রকার অনেক। তার মধ্যে কোনটি ব্যবহার করলে সঠিক ফল পাওয়া যাবে তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

তাদের মতে, সাইকোঅ্যাক্টিভ ড্রাগসের ম্যাজিক মাশরুম তামাকের নেশা দূর করতে অন্যতম। ধূমপানের নেশার উপসর্গগুলো ধ্বংস করে ব্রেন ফ্রেশ রাখতে ম্যাজিক মাশরুম ম্যাজিকের মতোই কাজ করে বলে তাদের পরামর্শ।

ম্যাজিক মাশরুমে পাওয়া যায় এমন একটি সক্রিয় মিশ্রণ যাকে বলা হয় ‘সিলোসাইবিন’। ওই মিশ্রণটি দিয়ে ১২ জন ধূমপায়ীর মধ্যে একটি গবেষণা চালিয়েছিল বিজ্ঞানীরা। ছয় বছরের এই গবেষণায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ম্যাজিক মাশরুম নেশার মেকানিজম উন্মোচন করতে পারে কি-না। পরে বোঝা গেলো এ মাশরুম আসলেই নেশা তাড়াতে উপকারী। কেননা ১২ জনের মধ্যে বেশির ভাগই ধূমপান ছেড়ে দিয়েছিলেন ম্যাজিক মাশরুম খেয়ে। সেইসঙ্গে তাদের মনে স্বাভাবিক শান্তি ফিরে এসেছিল, যা একজন ধূমপায়ীর মধ্যে সচরাচর থাকে না।

শেষপর্যন্ত তারা দেখলো, ধূমপানের নেশা এমনই জটিল যে, তা থেকে সরে যাওয়া মানে ‘মস্তিষ্কের পরিবর্তন’ আনতে হবে। যেটা ম্যাজিক মাশরুম দিয়ে পুরোপুরি না হলেও বেশিরভাগই সম্ভব। পাশাপাশি মাদক কিংবা অন্যান্য নেশা তাড়াতেও এ মাশরুম কার্যকরী সহযোগী হতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

ধূমপানের নেশার বিষয়ে জনস হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অব পাবলিক হেলথ এবং দারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তেহসিন নুরানি বলেন, সিগারেট ধূমপান এখন জনস্বাস্থ্যের জন্য বিশাল একটি ব্যাধি। এর কোনো কার্যকর নির্ভরযোগ্য চিকিত্সা নেই।

তিনি আরও বলেন, ধূমপান ত্যাগ করতে হলে সতর্কতা অবলম্বন এবং সচেতনতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ধূমপান জটিল সমস্যা। তবে ম্যাজিক মাশরুম মিশ্রণ সিলোসাইবিন খেয়ে ধূমপান ত্যাগ করা সম্ভব।

এদিকে, প্রকৃতিতে নানা প্রজাতির মাশরুম আছে। একদিকে যেমন খাদ্যপযোগী, সুস্বাদু, পুষ্টিকর মাশরুম আছে, তেমনি আরেকদিকে আছে ভয়াবহ বিষাক্ত মাশরুম। আবার আরও কিছু মাশরুম আছে যাকে ম্যাজিক মাশরুম বা জাদুকরি মাশরুম অথবা শ্রুমস (shrooms) বলা হয়।

এ মাশরুম মানব মস্তিষ্কের মধ্যে জাদুকরি প্রভাব রাখতে পারে, পারে সৃষ্টিশীলতাও এনে দিতে।


Source: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম, আগস্ট ০৮,২০১৮

40
Life Science / Sitting on the ground is so good to the body,
« on: July 24, 2018, 08:20:17 PM »

মাটিতে বসে খেলে- মাটিতে বসে খেলে পাছে সম্মান যায় তাই ডাইনিং টেবিলে বসে যারা লাঞ্চ-ডিনার সেরে থাকেন, তারা বরং ভালোর চেয়ে নিজেদের ক্ষতিই করছেন বেশি। কারণ বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে টেবিল-চেয়ারে বসে খাবার খেলে পেট ভরে ঠিকই, কিন্তু শরীরের কোনও মঙ্গল হয় না।

বরং নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা যায় বেড়ে। অন্যদিকে মাটিতে বাবু হয়ে বসে খেলে একাধিক উপকার পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে শরীরও রোগ মুক্ত হয়। বোল্ডস্কাই এর প্রতিবেদন অনুযায়ী নিচে মাটি বসে খাওয়ার উপকারিতা তুলে ধরা হলো।

হার্টে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়: হাঁটু মুড়ে বসে থাকাকালীন শরীরের উপরের অংশে রক্তের প্রবাহ বেড়ে যায়। ফলে হার্টে কর্মক্ষমতা বাড়তে শুরু করে। সেই সঙ্গে হ্রাস পায় কোনও ধরনের হার্টের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও।

সারা শরীরে রক্ত চলাচলের উন্নতি ঘটে: আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে প্রতিটি অঙ্গে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছে যাওয়াটা জরুরি। যত এমনটা হবে, তত রোগের প্রকোপ কমবে। সেই সঙ্গে সার্বিকভাবে শরীরও চাঙ্গা হয়ে উঠবে। আর যেমনটা আগেও আলোচনা করা হয়েছে যে বাবু হয়ে বসে থাকাকালীন সারা শরীরে বিশুদ্ধ অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের চলাচল বেড়ে যায়।

স্ট্রেসের মাত্রা কমে: শুনতে আজব লাগলেও একাধিক স্টাডিতে দেখা গেছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মাটিতে বসে থাকলে শরীর এবং মস্তিষ্কের অন্দরে বেশ কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে, যার প্রভাবে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ কমে যায়। ফলে মানসিক অবসাদ তো কমেই, সেই সঙ্গে স্ট্রেসর মাত্রাও কমতে শুরু করে।

মাটিতে বসে খেলে একাধিক আসন করা হয়: মাটিতে বসে খাওয়ার সময় আমরা নিজেদের অজান্তেই একাধিক আসন, যেমন- সুখাসন, সোয়াস্তিকাসন অথবা সিদ্ধাসন করে ফেলি। ফলে মাটিতে বসে খাওয়ার সময় পেট তো ভরেই সেই সঙ্গে শরীর ও মস্তিষ্ক, উভয়ই ভিতর থেকে চাঙ্গা হয়ে ওঠে।

শরীর শক্তপোক্ত হয়: মাটিতে বসে খাওয়ার অভ্যাস করলে থাই, গোড়ালি এবং হাঁটুর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে শিরদাঁড়া, পেশি, কাঁধ এবং বুকের ফ্লেক্সিবিলিটিও বাড়ে। ফলে সার্বিকভাবে শরীরে সচলতা যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি নানাবিধ রোগও দূরে থাকে।

হজম ক্ষমতার উন্নতি হয়: বাবু হয়ে বসে খেলে হজম ক্ষমতার উন্নতি হয়। তাই যাদের বদ হজমের সমস্যা রয়েছে বা যারা প্রায়শই গ্যাসের সমস্যায় ভোগেন তাদের ভুলেও টেবিল চেয়ারে বসে খাওয়া উচিত নয়। পরিবর্তে মাটিতে বসে পাত পেরে খাওয়া উচিত।

আসলে বাবু হয়ে বসে খাওয়ার সময় আমরা কখনও আগে ঝুঁকে পরি, তো কখনও সোজা হয়ে বসি। এমনটা বারে বারে করাতে হজম সহায়ক ডায়জেস্টিভ জুস’র ক্ষরণ বেড়ে যায়।

ফলে হজম প্রক্রিয়া খুব সুন্দরভাবে হতে থাকে। এখানেই শেষ নয়, মাটিতে বসে থাকার সময় আমাদের শিরদাঁড়ার নিচের অংশে চাপ পরে ফলে স্ট্রেস লেভেল কমে গিয়ে সারা শরীর চাঙ্গা হয়ে ওঠে।

আয়ু বৃদ্ধি পায়: মাটিতে বসে খেলে শরীরের সচলতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে শরীরের অন্দরে কোনও ধরনের ক্ষয়-ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।

প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে ইউরোপিয়ান জার্নাল অব প্রিভেন্টিভ কার্ডিওলজিতে প্রকাশিত এক গবেষণা পত্রে বলা হয়েছিল যারা কোনও সাপোর্ট ছাড়া মাটিতে বসে থাকতে থাকতে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পরতে পারেন, তাদের শরীরে ফ্লেক্সিবিলিটি বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি একাধিক অঙ্গের কর্মক্ষমতার বৃদ্ধি ঘটে, ফলে স্বাভাবিক ভাবেই আয়ু বৃদ্ধি পায়।

আর যারা এমনটা করতে পারেন না, তাদের আয়ু অনেকাংশেই হ্রাস পায়। প্রসঙ্গত, এই গবেষণাটি ৫১-৮০ বছর বয়সীদের মধ্যে করা হয়েছিল।

ব্যথা কমে: বেশ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে মাটিতে বসে খাওয়ার সময় আমরা মূলত পদ্মাসনে বসে থাকি। এইভাবে বসার কারণে পিঠের, পেলভিসের এবং তল পেটের পেশীর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। সেই সঙ্গে সারা শরীরের কর্মক্ষমতা এত মাত্রায় বৃদ্ধি পায় যে সব ধরনের যন্ত্রণা কমে যেতে সময় লাগে না।

ওজন কমে: মাটিতে বসে খাওয়ার সময় আমাদের ভেগাস নার্ভের কর্মক্ষমতা বেড়ে যায়। ফলে পেট ভরে গেলে খুব সহজেই ব্রেনের কাছে সে খবর পৌঁছে যায়। ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার ইচ্ছা চলে যায়। এমনটা যত হতে থাকে তত ওজন বৃদ্ধির আশঙ্কাও কমে।

প্রসঙ্গত, আমাদের পেট ভরেছে কিনা সেই খবর ব্রেনের কাছে পৌঁছালেই আমাদের খাওয়ার ইচ্ছা চলে যায়। আর এই খবর মস্তিষ্ককে পাঠায় ভেগাস নার্ভ।

41
Football / Those who won all the world cups at a glance
« on: July 16, 2018, 11:31:13 AM »
রাশিয়ায় শেষ হলো ফুটবলের জমজমাট লড়াই ফিফা বিশ্বকাপ। গ্রুপ পর্ব থেকে শুরু হওয়া দীর্ঘ একমাসের এ লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটেছে রোববার (১৫ জুলাই) ফাইনালের মাধ্যমে। মহারণে জিতে বিশ্বকাপ শিরোপা অর্জন করেছে ফ্রান্স। এটি তাদের দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা অর্জন। এর আগে ১৯৯৮ সালে প্রথম বিশ্বকাপ জিতেছিল বিশ্ব শিল্প-সংস্কৃতির ধারক দেশটি।


১৯৩০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত মোট ২১ বার বিশ্বকাপের আসর বসলেও এতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মাত্র আটটি দেশ। এরমধ্যে ব্রাজিল জিতেছে ৫ বার, জার্মানি ও ইতালি ৪ বার করে। এতোদিন ধরে আর্জেন্টিনা ও উরুগুয়ের ২ বার করে বিশ্বকাপ জেতার রেকর্ড থাকলেও এবার সেটি হয়ে গেছে ফ্রান্সেরও। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক বিশ্বকাপজয়ী দলের তালিকা।

২০১৮ (রাশিয়া): চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স, রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়া; ফলাফল ৪-২
২০১৪ (ব্রাজিল): চ্যাম্পিয়ন জার্মানি, রানার্সআপ আর্জেন্টিনা; ফলাফল ১-০
২০১০ (দক্ষিণ আফ্রিকা): চ্যাম্পিয়ন স্পেন, রানার্সআপ নেদারল্যান্ড; ফলাফল ১-০
২০০৬ (জার্মানি): চ্যাম্পিয়ন ইতালি, রানার্সআপ ফ্রান্স; ফলাফল ১-১ খেলার পর টাইব্রেকারে ৫-৩
২০০২ (জাপান/দ. কোরিয়া): চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল, রানার্সআপ জার্মানি; ফলাফল ২-০
১৯৯৮ (ফ্রান্স): চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স, রানার্সআপ ব্রাজিল; ফলাফল ৩-০
১৯৯৪ (যুক্তরাষ্ট্র): চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল, রানার্সআপ ইতালি; ফলাফল ০-০ খেলার পর টাইব্রেকারে ৩-২
১৯৯০ (ইতালি): চ্যাম্পিয়ন জার্মানি, রানার্সআপ আর্জেন্টিনা; ফলাফল ১-০
১৯৮৬ (মেক্সিকো): চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা, রানার্সআপ জার্মানি; ফলাফল ৩-২
১৯৮২ (স্পেন): চ্যাম্পিয়ন ইতালি, রানার্সআপ জার্মানি; ফলাফল ৩-১
১৯৭৮ (আর্জেন্টিনা): চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা, রানার্সআপ নেদারল্যান্ড; ফলাফল ৩-১
১৯৭৪ (জার্মানি): চ্যাম্পিয়ন জার্মানি, রানার্সআপ নেদারল্যান্ড; ফলাফল ২-১
১৯৭০ (মেক্সিকো): চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল, রানার্সআপ ইতালি; ফলাফল ৪-১
১৯৬৬ (ইংল্যান্ড): চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, রানার্সআপ জার্মানি; ফলাফল ৪-২
১৯৬২ (চিলি): চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল, রানার্সআপ চেকোস্লোভাকিয়া; ফলাফল ৩-১
১৯৫৮ (সুইডেন): চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল, রানার্সআপ সুইডেন; ফলাফল ৫-২
১৯৫৪ (সুইজারল্যান্ড): চ্যাম্পিয়ন জার্মানি, রানার্সআপ হাঙ্গেরি; ফলাফল ৩-২
১৯৫০ (ব্রাজিল): চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে, রানার্সআপ ব্রাজিল; ফলাফল ২-১
১৯৪৬ (হয়নি)
১৯৪২ (হয়নি)
১৯৩৮ (ফ্রান্স): চ্যাম্পিয়ন ইতালি, রানার্সআপ হাঙ্গেরি; ফলাফল ৪-২
১৯৩৪ (ইতালি): চ্যাম্পিয়ন ইতালি, রানার্সআপ চেকোস্লোভাকিয়া; ফলাফল ২-১
১৯৩০ (উরুগুয়ে): চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়ে, রানার্সআপ আর্জেন্টিনা; ফলাফল ৪-২


Source: বাংলাদেশ সময়: ০৬২৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৮

42
Football / Who is in the quarter-finals?
« on: July 04, 2018, 11:40:53 AM »
১ম কোয়ার্টার ফাইনাল
উরুগুয়ে বনাম ফ্রান্স- শুক্রবার, ৬ জুলাই। নিঝনি নভগোরদ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে।
২য় কোয়ার্টার ফাইনাল
ব্রাজিল বনাম বেলজিয়াম- শুক্রবার, ৬ জুলাই। কাজান এরেনায় বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় অনুষ্ঠিত হবে।
৩য় কোয়ার্টার ফাইনাল
সুইডেন বনাম ইংল্যান্ড- শনিবার, ৭ জুলাই। সামারা এরেনায় বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে।
৪র্থ কোয়ার্টার ফাইনাল
রাশিয়া বনাম ক্রোয়েশিয়া- শনিবার, ৭ জুলাই। সোচি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ১২টায় অনুষ্ঠিত হবে।

Source: বাংলাদেশ সময়: ০২৫৫ ঘণ্টা, ০৪ জুলাই, ২০১৮



43
Hajj / It is urgent to leave the habit before going to Haj
« on: July 02, 2018, 10:57:15 AM »
সারাবিশ্বের মুসমানদের মিলনমেলা হবে পূণ্যভূমি মক্কায়। ইসলামে মুমিন মুসলমানের এ মিলনমেলা একটি ফরজ ইবাদত। মক্কা নগরীর পবিত্র কাবা শরীফকে মুমিন মুসলমানরা স্বাগত জানিয়ে মুসলিম উম্মাহ এক সুরে গাইবে- ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়ান নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক’।
জনীয় সামগ্রী কেনা।

** পাসপোর্ট ও টাকা-পয়সা রাখার জন্য ব্যাগ সংগ্রহ করা।
** প্রতিবেশীসহ আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে দায়-দাবি মুক্ত হওয়া।
** অসিয়ত থাকলে ওসিয়তনামা তৈরি করে রাখা।
** ঋণগ্রস্ত হলে ঋণ পরিশোধ করা।
** দুনিয়াবী সব ধরনের পেরেশানি ও সমস্যা থেকে মুক্ত হওয়া।
**ইবাদত-বন্দেগি বেশি বেশি করা।
** নামাজ, ইহরাম, বায়তুল্লাহ তাওয়াফ, সাফা-মারওয়া সাঈর দোয়া ও নিয়ম গুলো শিখে নেওয়া।
**  গুরুত্বপূর্ণ আমল ও দোয়াগুলো না জানা থাকলে শিখে নেওয়া।
** হজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ‘তালবিয়া’ শুদ্ধভাবে মুখস্ত করে নেওয়া।
সর্বোপরি নিজেকে এভাবে তৈরি করা যে-
‘হজ পালনে দুনিয়ার জীবনের শেষ সফর। তাই মৃত্যুর প্রস্তুতি নিয়েই বাইতুল্লায় যাত্রার প্রস্তুতি গ্রহণ করা।’

এছাড়া হজের আগে যেসব অভ্যাসগুলো ত্যাগ করা জরুরি

** সব ধরনের ইচ্ছা, লোভ-লালসা ত্যাগ করা।
** সব ধরনের খারাপ কাজ হতে বিরত নেওয়া।
** বিলাসিতা, পদমর্যাদা, গর্ব ও অহংকার ত্যাগ করা।
**  ইবাদত ও কবর জেয়ারতের প্রতিটি মুহূর্তে তাড়াহুড়া না করে ও বিনয়ী হওয়া।
** দুনিয়ার সব ধরনের অন্যায় কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা।

মুসলিম উম্মাহর জন্য হজের সব কাজগুলোই আল্লাহ তাআলার একান্ত নির্দশন। এ ইবাদত পালনে যেমন অর্থের প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন মানসিক ও শারীরিক সক্ষমতা।

আল্লাহর সব নিদর্শনগুলো পরিদর্শনে রয়েছে আনন্দ ও ভালোবাসা তেমনি এর পবিত্র নিদর্শনগুলোর সম্মান ও মর্যাদার প্রতিও বিশেষ খেয়াল রাখা। যাতে আপনার দ্বারা

    কাবা শরীফসহ পবিত্র স্থানগুলোর মর্যাদা ও সম্মান বিনষ্ট না হয়।


    Source: বাংলাদেশ সময়: ১২৪৫ ঘণ্টা, জুলাই ০১, ২০১৮

44
Football / 12 stadiums that shake with football
« on: June 14, 2018, 11:04:44 AM »

    কাউনডাউন শুরু! হাতে গোনা আর কয়েক ঘণ্টা পরই ফুটবল বিশ্বকাপ শুরু হতে চলেছে। ১১টি শহরের ১২ স্টেডিয়ামে হবে মোট ৬৪টি ম্যাচ।

    যে ১২টি স্টেডিয়ামে হবে বিশ্বকাপের খেলাগুলি:

    ১) লুঝনিকি স্টেডিয়াম: মস্কো শহরে অবস্থিত এই স্টেডিয়ামটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৫৬ সালে। এর আগে স্টেডিয়ামটির নাম ছিল সেন্ট্রাল লেনিন স্টেডিয়াম। ৮১ হাজার দর্শকাসন বিশিষ্ট এই স্টেডিয়ামেই হবে ২০১৮ বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ও ফাইনাল ম্যাচ। স্টেডিয়ামটি পুনর্নিমাণে খরচ পড়েছে ৪১০ মিলিয়ন ইউএস ডলার। ১৯৮০ সালে মস্কোতে অলিম্পিকসের আসর বসেছিল এই স্টেডিয়ামে। তার ঠিক দু’বছর পর উয়েফা কাপের ম্যাচে স্পার্তাক মস্কো-হল্যান্ডের এইচএফসি হার্লেমের খেলায় গণ্ডগোলের জেরে পদপিষ্ট হয়ে ৬৬ জন দর্শক মারা যায়। ১৯৯০ সালে নবরূপে গড়ে তোলা হয় এই স্টেডিয়ামটি। নতুন করে নামকরণ করা হয় লুঝিনিকি স্টেডিয়াম। তারপর এই মাঠে হয়েছে ১৯৯৯ সালে উয়েফা কাপ ফাইনাল। ২০০৮ সালে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালও অনুষ্ঠিত হয়েছে লুঝিনিকি স্টেডিয়ামে। বিশ্বকাপে গ্রুপ ও নক-আউট পর্ব মিলিয়ে মোট সাতটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এই স্টেডিয়ামে।

    ২) ফিশত স্টেডিয়াম: সোচির এই ফিস্ত স্টেডিয়াম তৈরি হয়েছিল ২০১৪ সালে শীতকালীন অলিম্পিকের জন্য। প্রায় ৪৮ হাজার দর্শক এই মাঠে খেলা দেখার সুযোগ পাবেন। রাশিয়া বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে এই স্টেডিয়াম নতুন করে তৈরি হয়। যার কাজ শেষ হয় ২০১৭ সালে। ফিফা কনফেডারেশন কাপের বেশ কিছু ম্যাচ হয়েছে এই মাঠে। এই স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হবে। তার মধ্যে রয়েছে ১৫ জুন স্পেন বনাম পর্তুগাল ম্যাচ। এছাড়া ২৩ জুন জার্মানি খেলবে সুইডেনের বিরুদ্ধে। ৭ জুলাই তৃতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচও হবে সোচির ফিশত স্টেডিয়ামে।
     
    ৩) সেইন্ট পিতার্সবুর্গ স্টেডিয়াম: দ্য ক্রেস্তোভস্কি কিংবা জেনিত এরিনা ছিল এর পূর্ব নাম। বিশ্বকাপের জন্য এই স্টেডিয়ামের নতুন নাম হয় সেইন্ট পিতার্সবুর্গ। ৬৮ হাজারের বেশি দর্শকাসন বিশিষ্ট এই স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের মোট সাতটি ম্যাচ হবে। কাপ জেতার প্রবল দাবিদার ব্রাজিল যেমন গ্রুপ পর্বে ২২ জুন কোস্টারিকার মুখোমুখি হবে,  তেমনি অপর দাবিদার আর্জেন্টিনা গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ২৬ জুন খেলবে নাইজেরিয়ার বিরুদ্ধে। ১৯ জুন আয়োজক দেশ রাশিয়া
মুখোমুখি হবে মিশরের। প্রথম সেমিফাইনাল ও তৃতীয় স্থান নির্ণায়ক ম্যাচও হবে এই স্টেডিয়ামে। এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা স্টেডিয়ামগুলির তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে সেইন্ট পিতার্সবুর্গ।

৪) মরদোভিয়া এরিনা: ইনসা নদীর তীরে এই স্টেডিয়ামে প্রায় ৪৫ হাজার দর্শক খেলা দেখার সুযোগ পাবেন। তবে বিশ্বকাপের পর দর্শক সংখ্যা কমিয়ে ২৮ হাজার করার পরিকল্পনা রয়েছে। ২০১০ সালে এই স্টেডিয়াম ভগ্নস্তূপে পরিণত হয়েছিল। ২০১৮ বিশ্বকাপের সুবাদে ফের নতুন করে সেজে উঠেছে মরদোভিয়া এরিনা। আর্থিক সমস্যায় স্টেডিয়াম পুনর্নির্মাণেও সমস্যায় পড়তে হয়েছিল উদ্যোক্তাদের। আগামী ২৫ জুন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ইরানের মুখোমুখি হবে এই মাঠে। গ্রুপ পর্বের মোট চারটি ম্যাচ হবে এই স্টেডিয়ামে।

৫) কাজান এরিনা: ২০১৩ সালে গ্রীস্মকালীন বিশ্ববিদ্যালয়ের গেমসের জন্য কাজান এরিনা গড়ে তোলা হয়েছিল। তারপর এই মাঠে বহু ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। কনফেডারেশন কাপের খেলা হয়েছিল এখানে। লন্ডনের এমিরেটস ও ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম যে সংস্থা তৈরি করেছিল, তাদেরই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কাজান এরিনা তৈরি করার। প্রায় ৪৫ হাজার দর্শক এই স্টেডিয়ামে বসে এবারে বিশ্বকাপে গ্রুপ ও নক-আউট পর্ব মিলিয়ে ছ’টি ম্যাচ দেখার সুযোগ পাবেন। গতবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানি এই কাজান এরিনাতেই দক্ষিণ কোরিয়ার মুখোমুখি হবে ২৭ জুন। এছাড়া ৬ জুলাই দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচও অনুষ্ঠিত হবে এখানে।

৬) সামারা এরিনা: বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে রাশিয়াকে সব থেকে বেশি বেগ দিয়েছে এই সামারা এরিনা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই স্টেডিয়ামের কাজ শেষ করতে না পারায় ফিফার কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল স্থানীয় উদ্যোক্তাদের। শহর থেকে অনেকটা দূরে। প্রায় ৪৫ হাজার দর্শক এই স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের মোট ছ’টি ম্যাচ দেখতে পাবে।

৭) একাতেরিনবুর্গ এরিনা: রাশিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম দেশ একাতেরিনবুর্গ। বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে ফিফার অনুরোধে উদ্যোক্তারা অস্থায়ীভাবে ১২ হাজার দর্শকাসন তৈরি করতে বাধ্য হয়েছেন। মস্কো থেকে প্রায় ১ হাজার ৯০ মাইল দূরে অবস্থিত এই স্টেডিয়ামে ৩৫ হাজার দর্শক এবারে বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখার সুযোগ পাবেন। এই স্টেডিয়াম নির্মাণের সময় নানা অভিযোগ সামনে এসেছিল। সেখানকার মানবাধিকার সংস্থার দাবি ছিল,মাইনাস ২৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় পর্যাপ্ত বিশ্রাম না দিয়ে স্টেডিয়াম তৈরির কাজ চলছে। তবে সব বিতর্ক পেছনে ফেলে একাতেরিনবুর্গ এরিনা এবারে বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের চারটি ম্যাচ আয়োজনের জন্য প্রস্তুত।

৮) নিঝনি নভগোরোদ স্টেডিয়াম: ভোলগা ও ওকা নদীর সংযোগস্থলে অবস্থিত নিঝনি নভগোরোদ স্টেডিয়াম। এই মাঠেই আগামী ২১ জুন আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হবে ক্রোয়েশিয়ার। এই মাঠে হবে ইংল্যান্ড-পানামা ম্যাচও। ৪৫ হাজার ৩শ ৩১ দর্শকাসন বিশিষ্ট নিঝনি স্টেডিয়ামে গ্রুপ ও নক-আউট পর্ব মিলিয়ে মোট ছ’টি ম্যাচ হবে।

৯) কালিনিনগ্রাদ স্টেডিয়াম: বিশ্বকাপের মোট চারটি ম্যাচ হবে এই স্টেডিয়ামে। প্রথম দিকে ৪৫ হাজার দর্শকাসন থাকলেও নিরাপত্তার কারণে ফিফার অনুরোধে তা কমিয়ে ৩৫ হাজার করা হয়েছে। ২০১০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্পেন এই মাঠেই গ্রুপ পর্বে মরক্কোর বিরুদ্ধে খেলবে। ২৮ জুন ইংল্যান্ড-বেলজিয়ামের মতো গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ হবে এই স্টেডিয়ামে।

১০) ভলগোগ্রাদ এরিনা: ভলগা নদীর তীরে এই স্টেডিয়ামটি অবস্থিত। পূর্ব নাম ছিল স্ট্যালিনগ্রাদ। বিশ্বকাপে মোট ৪৫ হাজার দর্শক এই মাঠে খেলা দেখতে পারবেন। তবে বিশ্বকাপের পর দর্শকাসন দশ হাজার কমিয়ে ফেলা হবে। নকআউট পর্বের কোনো ম্যাচ রাখা হয়নি এই স্টেডিয়ামে। গ্রুপ পর্বের মোট চারটি ম্যাচ রয়েছে।

১১) রোস্তভ এরিনা: দক্ষিণ মস্কোর ডন নদীর তীরে এই স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের মোট পাঁচটি ম্যাচ হবে। ৪৫ হাজার দর্শকাসন বিশিষ্ট এই স্টেডিয়ামে ব্রাজিল বনাম সুইজারল্যান্ড ম্যাচও অনুষ্ঠিত হবে। ২০১৩ সালে এই স্টেডিয়াম তৈরির কাজ শুরু হয়। খননকাজের সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বোমা উদ্ধার হওয়ার পর বেশ কিছুদিন কাজ বন্ধ থাকে। ফলে ২০১৭ সালে স্টেডিয়াম তৈরির কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা ২০১৮ পর্যন্ত গড়িয়ে যায়।

১২) স্পার্তাক স্টেডিয়াম: ২০০৭ রাশিয়ান প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন স্পার্তাক মস্কোর হোম গ্রাউন্ড। ৪৩ হাজার ২শ ৯৮ জন দর্শক এই স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখার সুযোগ পাবেন। স্টেডিয়ামটি তৈরি করতে খরচ পড়েছে ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০১৪ সালে স্পার্তাক স্টেডিয়ামের পথ চলা শুরু। ইতিমধ্যেই চ্যাম্পিয়নস লিগ ও কনফেডারেশন কাপের খেলা হয়েছে এই মাঠে। এই স্টেডিয়াম তৈরিতে রাশিয়া সরকারের নতুন কোনো খরচ করেনি। গ্রুপ ও নক-আউট পর্ব মিলিয়ে মোট পাঁচটি ম্যাচ হবে এই স্টেডিয়ামে।

45
Football / Who was the best of the tournament
« on: June 14, 2018, 10:58:37 AM »

    বিশ্বকাপ ফুটবল মানেই উপরের সারির দলগুলোর বিশেষ বিশেষ খেলোয়াড়ের দিকে সবার নজর ঘুরে যাওয়া। সে আসরে কতোটা আশা পূরণ করতে পারবেন এই তারকা ফুটবলাররা, কী কৌশল অবলম্বন করবেন, কয়টি গোল করতে পারেন এসব নিয়ে আসরের শুরু থেকেই বিশেষজ্ঞরা বসে পড়েন হিসেবের খাতা নিয়ে। আসর শেষে সেরা খেলোয়াড়ের হাতেই ওঠে টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার গোল্ডেন বল।

    ফুটবল বিশ্বকাপে একাধিক ব্যক্তিগত পুরস্কার দেওয়া হলেও সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার হচ্ছে পুরো আসরে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার। ১৯৮২ বিশ্বকাপ থেকে অ্যাডিডাসের সৌজন্যে বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়কে গোল্ডেন বল  দেওয়া শুরু করে ফুটবলের বিশ্ব সংস্থা ফিফা। তবে এর আগের বিশ্বকাপগুলোর সেরা খেলোয়াড়ের নামও গোল্ডেন বল জয়ীদের তালিকায় রেখেছে ফিফা।

     

    ১৯৩০ বিশ্বকাপ: জোসে নাসাজ্জি ইয়ারজার

    ইতিহাসের প্রথম বিশ্বকাপ আসরের সেরা ফুটবলারের নাম জোসে নাসাজ্জি ইয়ারজার। আয়োজক দেশ উরুগুয়ের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। ইতিহাসের প্রথম এই বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়নের পুরস্কারও ওঠে তার হাতেই। উরুগুয়ের বিশ্বকাপ জয়ে বড় অবদান ছিল ইয়ারজারের। তিনি ছিলেন সেই উরুগুয়ে দলের সেরা ডিফেন্ডার। তার নেতৃত্বেই সেবার পুরো আসরে উরুগুয়ের ডিফেন্স মাত্র তিনটি গোল হজম করেছিলো। আর সে কারণেই একজন ডিফেন্ডার হওয়া সত্ত্বেও সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ওঠে তার হাতেই। ফুটবল বিশেষজ্ঞদের মতে উরুগুয়ের ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড় হচ্ছেন নাসাজ্জি ইয়ারজার।

    ১৯৩৪ বিশ্বকাপ: মেয়াজ্জার

    ১৯৩৪ সালে ইতালিতে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম নকআউট ফরম্যাটের বিশ্বকাপ। সেবারও স্বাগতিকদের ঘরেই থাকে শিরোপা। ইতালির এই সাফল্যে সামনে থেকে অবদান রেখেছেন ফরোয়ার্ড মেয়াজ্জা। পুরো আসরে তিনি মাত্র দুই গোল করেন। তবুও গোল্ডেন বল ওঠে তার হাতে। এর পেছনে প্রধান কারণ ছিলো ইতালির উপর তার প্রভাব। কোয়ার্টার ফাইনালে তার করা একমাত্র গোলেই স্পেনকে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে ইতালি।

    সেমিফাইনালেও অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে দারুণ পারফম্যান্স করেন মেয়াজ্জা। সেমিফাইনালে তার সহযোগিতায় করা একমাত্র গোলে সেমিফাইনালের বৈতরণী পার হয় ইতালি। ফাইনালেও তার তৈরি করা সুযোগ কাজে লাগিয়েই ইতালি পেয়ে যায় জয়সূচক গোল। ইতালির বিশ্বজয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্যই টুর্নামেন্টের
সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার দেওয়া হয় মেয়াজ্জাকে।

১৯৩৮ বিশ্বকাপ: লিওনিদাস

১৯৩৮ বিশ্বকাপটি কিছুটা ভিন্ন অভিজ্ঞতা নিয়েই আসে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড লিওনিদাসের জন্য। নকআউট ফরম্যাটের এই আসরে আগের দুইবারের ব্যর্থতা পেছনে ফেলে বেশ ভালোই এগিয়ে যায় ব্রাজিল। শেষ ষোলতে নাটকীয়ভাবে পোল্যান্ডকে ৬-৫ গোলে হারায় ব্রাজিল। এই ম্যাচে হ্যাটট্রিক করে দলের জয়ে সচেয়ে বড় অবদান রাখেন লিওনিদাস। কোয়ার্টার ফাইনালেও তার করা দুই গোলেই চেকোস্লোভাকিয়াকে হারিয়ে সেমিফাইনালে পৌঁছায় ব্রাজিল।

কিন্তু সেমিফাইনালে তখনকার ব্রাজিল কোচ পিমেন্তা আদেমা অদ্ভুতভাবেই মাঠে নামালেন না লিওনিদাসকে। ফাইনালের কথা ভেবে তিনি তার দলের সেরা খেলোয়াড়কে বিশ্রামে রাখলেন। আর তার এই চিন্তার মাশুলও বেশ খারাপভাবেই দিতে হলো ব্রাজিলকে। ইতালির বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেয় সেলেসাওরা। আর সেই লিওনিদাসই তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে সুইডেনের বিপক্ষে জোড়া গোল করে আবারও নিজেকে প্রমাণ করেন। ফাইনাল না খেলতে পারলেও সাত গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে গোল্ডেন বল পেয়ে যান তিনি।

১৯৫০ বিশ্বকাপ: জিজিনহোর

১৯৫০ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ আয়োজন করে ব্রাজিল। বেশ ভালোই এগোচ্ছিলো শিরোপার লড়াইয়ে। তাদের এই অভিযানে বড় অবদান ছিল মিডফিল্ডার জিজিনহোর। দলের মিডফিল্ড সামলানোর পাশাপাশি সে আসরে দুটি গোলও করেন তিনি।

সেই আসরে কিছুটা ভিন্ন ফরম্যাটে খেলা হয়। ফাইনাল ছিলো না। সুপার ফোর সিস্টেমে যে দলের পয়েন্ট সবচেয়ে বেশি থাকবে তারাই জয়ী। সুপার ফোরের শেষ ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ড্র করলেই শিরোপা এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে ব্রাজিল। কিন্তু মারাকানায় উরুগুয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচে ঘরের মাঠে ২-১ গোলে হেরে যায় স্বাগতিকরা। শিরোপা না পেলেও পুরো টুর্নামেন্টে দারুণ খেলায় সেই আসরের সেরা খেলোয়াড় হন জিজিনহো।

১৯৫৪ বিশ্বকাপ: ফেরেঙ্ক পুসকাস

বলা হয় ১৯৫৪ সালের বিশ্বকাপে হাঙ্গারির সর্বকালের অন্যতম সেরা দল ছিলো। সেই দলে ছিলেন হিডেগকুটি, ককেসিসের মতো তারকারা। তবে সবার চোখ ছিলো ফেরেঙ্ক পুসকাসের দিকে।

পুসকাসের জোড়া গোলে দক্ষিণ কোরিয়াকে ৯-০ ব্যবধানে হারিয়ে সেবারের বিশ্বকাপ শুরু করে হাঙ্গেরি। পরের ম্যাচে পশ্চিম জার্মানিকে ৮-৩ গোলে উড়িয়ে দিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই কোয়ার্টার ফাইনালে যায় হাঙ্গেরি। সে ম্যাচেও পুসকাস করেন এক গোল। তবে সে ম্যাচেই চোট পেয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালে আর খেলতে পারেননি তিনি। পুসকাসকে ছাড়াই ফাইনালে পৌঁছে যায় তার দল। যেখানে আবারো তাদের প্রতিপক্ষ সেই পশ্চিম জার্মানি।

সে ম্যাচে এক পর্যায়ে পুসকাস ও জিবরের গোলে ২-০ গোলে এগিয়ে যায় হাঙ্গেরি। তবে আবারও ৩-২ এ পিছিয়ে পড়ে। পুসকাস হাঙ্গেরির হয়ে তৃতীয় গোল করলেও রেফারির ভুল সিদ্ধান্তে তা বাতিল হয়ে যায়। আর ওই এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তই হাঙ্গেরির বিশ্বজয়ের স্বপ্নকে দুমড়ে মুচড়ে দেয়। টানা ৩১ ম্যাচ জয়ের পর হেরে যায় হাঙ্গেরি। তবে দল হারলেও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হন পুসকাস।

১৯৫৮ বিশ্বকাপ: দিদি

১৯৫৪ বিশ্বকাপে  সফল না হলেও ১৯৫৮ বিশ্বকাপে ঠিকই সফল হয় ব্রাজিল। আর ব্রাজিলের এই সাফল্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন দিদি। ১৯৫৮ বিশ্বকাপের পুরোটা সময় ব্রাজিলের মিডফিল্ড দারুণভাবে সামলান সেন্ট্রাল মিডফিল্ডার। মিডফিল্ড সামলানোর পাশাপাশি সেমিফাইনালে ফ্রান্সের বিপক্ষে ৩০ গজ দূর থেকে অসাধারণ একটি গোলও করেছিলেন তিনি। তার অবদানেই প্রথমবারের মতো ব্রাজিলের ঘরে যায় বিশ্বকাপ শিরোপা। টুর্নামেন্ট সেরাও হন দিদিই।

১৯৬২ বিশ্বকাপ: গারিঞ্চা

১৯৫৮ বিশ্বকাপে মাত্র ১৭ বছর বয়সে অভিষেক হওয়া পেলে চমকে দেন পুরো বিশ্বকে। সবার প্রত্যাশা ছিল ১৯৬২ বিশ্বকাপে পরিণত পেলে আরো দুর্দান্ত পারফরম্যান্স উপহার দেবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য, চেকোস্লোভাকিয়ার বিপক্ষে ইনজুরিতে পড়ে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যায় তার। দলের সবারই মনোবল কমে যায়। তখনই নায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন দলের আরেক তারকা গারিঞ্চা। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে স্পেনের বিপক্ষে গারিঞ্চার অ্যাসিস্ট থেকে আরমাল্ডোর শেষমুহূর্তের গোলেই নিশ্চিত হয় ব্রাজিলের গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া।

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কোয়ার্টার ফাইনালে জোড়া গোল করে ব্রাজিলকে সেমিফাইনালে নিয়ে যান গারিঞ্চা। সেমিফাইনালে চিলির বিপক্ষেও করেন ২ গোল। ফাইনালে দল জয় পেলেও গোল পাননি তিনি। চার গোল করে সেই আসরে যৌথভাবে সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন গারিঞ্চা। আর শিরোপার পথে এগিয়ে রাখার অবদান হিসেবে আসর সেরার পুরস্কার ওঠে বাঁকা পায়ের জাদুকরের হাতে।

১৯৬৬ বিশ্বকাপ: ববি চার্লটন

১৯৬৬ সালের বিশ্বকাপ আয়োজন করে ইংল্যান্ড। সেবারেও স্বাগতিকদের ঘরেই যায় চ্যাম্পিয়ন শিরোপা। আর এই শিরোপা জয়ের পেছনে বড় ভূমিকা রাখে স্যার ববি চার্লটনের অসাধারণ পারফরম্যান্স। গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচে মাত্র এক গোল করলেও জ্বলে ওঠেন সেমিফাইনালে।

পর্তুগালের বিপক্ষে জোড়া গোল করে দলকে ফাইনালে নিয়ে যান ববি চার্লটন। ফাইনালে গোল না পেলেও খেলেছেন অসাধারণ। পুরো ম্যাচেই মাঠ মাতিয়ে রেখেছিলেন তিনি। পশ্চিম জার্মানিকে অতিরিক্ত সময়ে ৪-২ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় ইংল্যান্ড। আর স্যার ববি চার্লটন সেই আসরের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন।
১৯৭০ বিশ্বকাপ: পেলে

১৯৬৬ বিশ্বকাপের পর কিছুটা অভিমান নিয়েই আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকেই সরে যেতে চেয়েছিলেন পেলে! কিন্তু শেষপর্যন্ত বিশ্বকাপটা খেলার সিদ্ধান্তই নেন। আগের আসরগুলোতে স্ট্রাইকার হিসেবে খেললেও এই আসরে তিনি কিছুটা নিচে নেমে এসে প্লে-মেকারের ভূমিকা পালন করেন। সেবার  চারটি গোল করার পাশাপাশি অ্যাসিস্ট করেন পাঁচটি।

পুরো আসর জুড়ে তার রাজকীয় পারফরম্যান্সের উপর ভর করেই ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ ঘরে তোলে ব্রাজিল। পাশাপাশি ইতিহাসের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে তিনটি বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। আর পেয়ে যান টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারও।

১৯৭৪ বিশ্বকাপ: ইয়োহান ক্রুইফ

ইয়োহান ক্রুইফ তার টোটাল ফুটবল দিয়েই নেদারল্যান্ডসের হয়ে ১৯৭৪ বিশ্বকাপে সবাইকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিলেন। শুধু ট্যাকটিস দিয়েই নয়, মাঠের খেলায়ও সবাইকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিলেন ক্রুইফ। সে আসরে ক্রুইফ নিজে তিনটি গোলের পাশাপাশি তিনটি গোলে অ্যাসিস্টও করেন। তিনটি গোলই ছিল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার মতো শক্তিশালী দুই দলের বিপক্ষে। পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ খেলে ডাচদের ফাইনালে তোলার পুরস্কার হিসেবে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কারটা জিতে নেন ক্রুইফ।

১৯৭৮ বিশ্বকাপ: মারিও কেম্পেস

১৯৭৮ সালে যেন নতুন এক আর্জেন্টিনাকে দেখেছে বিশ্ব। নিজেদের মাটিতে আয়োজিত শিরোপা জিততে বদ্ধপরিকর আর্জেন্টিনা শুরু থেকেই দুরন্ত গতিতে ছুটতে থাকে। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মারিও কেম্পেস। পোল্যান্ড ও পেরুর বিপক্ষে জোড়া গোল করে দলকে নিয়ে যান ফাইনালের মঞ্চে।

ফাইনালেও তার জোড়া গোলেই নেদারল্যান্ডসকে ৩-১ গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তোলে আর্জেন্টিনা। ছয় গোল ও এক অ্যাসিস্ট নিয়ে টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতে আর্জেন্টিনার জাতীয় বীরে পরিণত হন কেম্পেস।

১৯৮২ বিশ্বকাপ: পাওলো রসি

১৯৮২ বিশ্বকাপ থেকেই সর্ব প্রথম অ্যাডিডাসের সৌজন্যে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতাকে গোল্ডেন বুট ও বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়কে গোল্ডেন বল দেওয়ার প্রচলন করে ফিফা। আর প্রথমবারই দুটি পুরস্কার একাই জিতে নেন পাওলো রসি। অথচ বিশ্বকাপের ঠিক আগে ম্যাচ গড়াপেটার দায়ে ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ থাকায় বিশ্বকাপই অনিশ্চিত ছিল তার। কিন্তু সে সময়ের ইতালি কোচ এনজো বেয়ারজোটের দায়িত্বেই বিশ্বকাপে আসেন রসি। আর তার আস্থার প্রতিদান দিতে মোটেই ভুল করেননি রসি।

টুর্নামেন্টের প্রথম চার ম্যাচে গোল পাননি। এর পর অবশ্য তার হ্যাটট্রিকে ভর করেই সেসময়ের শক্তিশালী দল ব্রাজিলকে ৩-২ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে চলে যায় ইতালি। সেমিফাইনালেও চমক দেখান রসি। তার জোড়া গোলে পোল্যান্ডকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে যায় ইতালি। ফাইনালেও এক গোল করেন রসি। পশ্চিম জার্মানিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ শিরোপা ঘরে তোলে ইতালি। ছয় গোল ও এক অ্যাসিস্টে গোল্ডেন বুটের সাথে গোল্ডেন বলটাও জিতে নেন রসি।

১৯৮৬ বিশ্বকাপ: দিয়েগো ম্যারাডোনা

বলতে গেলে ১৯৮৬ বিশ্বকাপে একক নৈপুণ্য দিয়ে একটা সাধারণ দলকে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন ম্যারাডোনা। ওই বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা মোট ১৪টি গোল করেছিলো। এর মধ্যে ১০টি গোলেই সরাসরি অবদান রাখেন ম্যারাডোনা।

কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বিতর্কিত ও সবচেয়ে সুন্দর গোল করেন ম্যারাডোনা। তার এই দুই গোলে ভর করেই ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে চলে যায় আর্জেন্টিনা।

সেমিফাইনালেও বেলজিমায়ের বিপক্ষে তার জোড়া গোলেই বেলজিয়ামকে ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনাল নিশ্চত করে আর্জেন্টিনা। ফাইনালে তার অসাধারণ পাস থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে ৩-২ গোলে এগিয়ে নেন বুরুচাগা। আর্জেন্টিনা ঘরে তোলে তাদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ। আর পাঁচ গোলের সাথে পাঁচ অ্যাসিস্টে গোল্ডেন বল জিতে নেন ম্যারাডোনা।

১৯৯০ বিশ্বকাপ: স্যালভেটর শিলাচি

১৯৯০ বিশ্বকাপে স্যালভেটর শিলাচি একার প্রচেষ্টায় স্বাগতিক ইতালিকে সেমিফাইনালে নিয়ে যান। কোয়ার্টার ফাইনালে তার করা একমাত্র গোলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয় ইতালির। সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনার বিপক্ষেও গোল পান তিনি। কিন্তু তার দল হেরে যায় টাইব্রেকারে। পুরো আসরে ছয় গোল ও এক অ্যাসিস্টে গোল্ডেন বুট জেতার সাথে গোল্ডেন বলটাও সেবার জিতে নেন শিলাচি।

১৯৯৪ বিশ্বকাপ: রোমারিও

১৯৯৪ বিশ্বকাপ জয়ের জন্য বেশ ভালো পরিকল্পনা করে নামে ব্রাজিল। সেবার ব্রাজিলের খেলায় সৌন্দর্যের যে ছোঁয়া ছিল তাতে বড় অবদান ছিল রোমারিওর। অথচ এই রোমারিওই বিশ্বকাপ দলে ছিলেন অনিশ্চিত। বিশ্বকাপে সুযোগ পেয়ে নিজেকে পুরোপুরি প্রমাণ করতে ভুল করেননি এই স্ট্রাইকার।

গ্রুপপর্বের তিন ম্যাচেই গোল করেন রোমারিও। শেষ ষোলতে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে বেবেতোর করা গোলে অ্যাসিস্ট করেন। কোয়ার্টার ফাইনাল ও সেমিফাইনালেও গোল করে দলকে টেনে তোলেন ফাইনালে।

ফাইনালে ইতালিকে টাইব্রেকারে ৩-২ গোলে হারিয়ে দীর্ঘ ২৪ বছর পর আবারও বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় ব্রাজিল। ফাইনালেও গোল করেন রোমারিও। পুরো টুর্নামেন্টে পাঁচ গোল ও দুই অ্যাসিস্টে গোল্ডেন বল জিতে নেন তিনি।

১৯৯৮ বিশ্বকাপ: রোনালদো

১৯৯৮ বিশ্বকাপের রোনালদোকে পারফরম্যান্স দিয়ে সঠিকভাবে বর্নণা করা একটু কঠিন। শুধুমাত্র গোল কিংবা অ্যাসিস্ট দিয়ে তার বর্ণনা করা যাবে না। প্রতি ম্যাচে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে ত্রাস ছড়ানোর পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গোল কিংবা অ্যাসিস্টও করে গেছেন সমান তালে।

শেষ ষোলতে চিলির বিপক্ষে জোড়া গোল, কোয়ার্টার ফাইনালে ডেনমার্কের বিপক্ষে করেছিলেন জোড়া অ্যাসিস্ট। সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে করেন জয় সূচক এক গোল। ফাইনালে স্বাগতিক ফ্রান্সের বিপক্ষে ইনজুরি নিয়ে খেলায় ছিলেন না ছন্দে।

দল ব্রাজিল শিরোপা না জিততে পারলেও চার গোল ও তিন অ্যাসিস্টে সেবার গোল্ডেন বল ওঠে রোনালদোর হাতে।

২০০২ বিশ্বকাপ: অলিভার কান

বিশ্বকাপের ইতিহাসে অলিভার কানই একমাত্র ফুটবলার যিনি গোলকিপার হয়েও গোল্ডেন বল জিতেছেন। ২০০২ সালে তিনি এই নজির গড়েন। আক্ষরিক অর্থেই সে বিশ্বকাপে অলিভার কান জার্মানির প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। সেই আসরে তাদের ফাইনালে খেলার বড় কারণ ছিল অলিভার কানের অবিশ্বাস্য সব সেভ। ফাইনালের আগে পুরো আসরে জার্মানি গোল হজম করেছিলো মাত্র একটি। যদিও সেবার ব্রাজিলের বিপক্ষে হেরেই শেষ হয় জার্মানির বিশ্বকাপ। তবে দল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন না হলেও গোলকিপিংকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ায় অলিভার কানই জিতে নেন গোল্ডেন বলের পুরস্কার।

২০০৬ বিশ্বকাপ: জিনেদিন জিদান

বাছাই পর্বে ফ্রান্সকে খাবি খাওয়া থেকে বাঁচাতেই অবসর থেকে ফেরেন জিনেদিন জিদান। ২০০৬ বিশ্বকাপে দলে ফিরে বাছাই পর্ব পার করে মূল পর্বে নিয়ে আসেন ফ্রান্সকে। শেষ ষোলতে স্পেনের বিপক্ষে ফ্রান্সের ৩-১ গোলের জয়ে শেষ গোলটি করেন তিনি।

জিদানের আসল রুপ দেখা যায় কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের বিপক্ষে। সেসময়ে তারকায় ঠাসা ব্রাজিলকে পুরো ম্যাচে একাই নাচিয়ে ছাড়েন। ৫৭ মিনিটে জিদানের নেওয়া ফ্রি কিক থেকে গোল করে ফ্রান্সকে সেমিফাইনালে নিয়ে যান ফরাসি স্ট্রাইকার থিয়েরি অঁরি।

সেমিফাইনালেও পর্তুগালের বিপক্ষে জিদানের একমাত্র গোলে জয় পেয়ে ফাইনালে উঠে ফ্রান্স। ফাইনালেও গোল পান জিদান। কিন্তু ইতালির ফুটবলার মার্কো মাতেরাজ্জি তার বোনকে উদ্দেশ্য করে গালি দেওয়ায় রাগে নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাকে মাথা দিয়ে ঢুঁস দিয়ে বসেন জিদান। রেফারি সাথে সাথে জিদানকে লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেন। নিজেদের নেতাকে হারিয়ে টাইব্রেকারে ইতালির সাথে আর পেরে ওঠেনি ফ্রান্স। তবে এই কাণ্ডের পরেও সেই আসরের গোল্ডেন বল জিদানই জিতে নেন।

২০১০ বিশ্বকাপ: দিয়েগো ফোরলান

২০০৬ বিশ্বকাপে বাছাইপর্ব পার হতে না পারায় ২০১০ বিশ্বকাপে শুরু থেকেই ভালো করার চাপ অনুভব করছিলো উরুগুয়ে। তাদের ত্রাণকর্তা হিসেবে হাজির হন দিয়েগো ফোরলান। গ্রুপ পর্বে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিনি করেন জোড়া গোল। কোয়ার্টার ফাইনালে ঘানার বিপক্ষে অসাধারণ এক দূরপাল্লার গোল করে উরুগুয়েকে সমতায় ফেরান ফোরলান। সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ডের বিপক্ষেও গোল পান তিনি, কিন্তু উরুগুয়ে ম্যাচটা হেরে যায় ৩-২ গোলে। তবে পাঁচ গোল ও এক অ্যাসিস্টে উরুগুয়েকে সেমিফাইনালে নিয়ে আসায় সেবারের গোল্ডেন বল পেয়ে যান ফোরলান
২০১৪ বিশ্বকাপ: লিওনেল মেসি

২০১৪ বিশ্বকাপে মেসির ব্যাপারে আর্জেন্টিনার প্রত্যাশার পারদ ছিল অনেক উঁচুতে। ২৮ বছর আগে ম্যারাডোনা যেভাবে একক নৈপুণ্যে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ এনে দিয়েছিলেন, মেসিকে নিয়েও ছিলো তেমন স্বপ্ন। ম্যারাডোনার মতো আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ এনে দিতে পারেননি মেসি। ফাইনালে তার দল হেরে গেছে জার্মানির বিপক্ষে। তবে গোল্ডেন বলটা ঠিকই জিতেছিলেন মেসি।

বিশেষ টিপ্পনী: বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাসে এ যাবত সবচেয়ে বেশি সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন ব্রাজিলের খেলোয়াড়েরা। সব মিলিয়ে সাতজন ব্রাজিলিয়ান বিশ্বকাপে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন।

এখন পর্যন্ত হওয়া বিশটি বিশ্বকাপের মধ্যে দশটি বিশ্বকাপেই সেরা খেলোয়াড় হয়েছে চ্যাম্পিয়ন দলের খেলোয়াড়েরা। তবে ১৯৯৪ বিশ্বকাপের পর টানা পাঁচটি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন দলের কেউ গোল্ডেন বল জিততে পারেননি।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৫ ঘণ্টা, ১৪ জুন, ২০১৮

Pages: 1 2 [3] 4 5 ... 46