Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - Md. Alamgir Hossan

Pages: 1 ... 3 4 [5] 6 7 ... 38
61
আর ৮৫ দিন পর মাঠে গড়াবে রাশিয়া বিশ্বকাপ। এরই মধ্যে দলগুলো যেভাবে পাড়ছে নিজেদের তৈরি করে নিচ্ছে। শুক্রবার নিজেদের ঝালিয়ে নেয়ার ম্যাচে আর্জেন্টিনা খেলবে মূল পর্বে জায়গা না পাওয়া ইতালির। তবে এর আগে নিজের অ্যাওয়ে ম্যাচের জার্সি উন্মোচন করেছে দলগুলো। জার্সি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস নয়টি দেশের জার্সি উন্মোচন করেছে।

ইতিহাসে কখনো যা দেখা যায়নি, এবার তাই দেখা যাবে রাশিয়া বিশ্বকাপে। গত বিশ্বকাপের ফাইনালে জার্মানির কাছে হেরে শিরোপা ছোয়া হয়নি মেসি। ওই ম্যাচে নীল জার্সিতে মাঠে ছিলেন মেসি-হিগুয়েনরা। এবার সেই অ্যাঁয়ে জার্সি পাল্টে প্রথমবারের মত মেসিরা মাঠে নামবে কালো রঙের জার্সি পরে। জার্সি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাস সেই ছবি পোস্টও করেছে।


তবে মূল জার্সি থাকবে আকাশি সাদা। এ জার্সির সঙ্গে আর্জেন্টিনার অনেক ইতিহাস জড়িত। ম্যারাডোনা ১৯৮৬ এর বিশ্বকাপে এই জার্সি পরেই মাঠ মাতিয়ে শিরোপা নিজেদের করে নিয়েছিলেন। ওই জার্সিতে খেলে গেছেন বাতিস্তুতার মত তারকারাও।

জার্মানির জার্সিতে থাকছে সবুজাভ, যা ১৯৯০ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের জার্সির আদলে তৈরি। আশির দশকের শেষ দিকের আদলে স্পেনের অ্যাওয়ে জার্সি সাদা-নীল।

এ ছাড়া রাশিয়া, বেলজিয়াম, সুইডেন, মেক্সিকো, কলম্বিয়া ও জাপানের অ্যাওয়ে জার্সিও উন্মোচন করা হয়েছে কাল। এদিকে নাইকির জার্সিতে খেলবে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর পর্তুগাল। গতকাল উন্মোচন করা হয়েছে সেই জার্সিও।

62
একটি সমস্যা দিয়ে শুরু করা যাক। ধরুন আপনাকে বলা হলো ১ থেকে ১০ পর্যন্ত সংখ্যার যে ক’টি সংখ্যা ৩ দিয়ে ভাগ করা যায় সেগুলোর যোগফল কত তা বের করতে। কাজটা কিন্তু খুবই সহজ, কারণ ১ থেকে ১০ এর মধ্যে ৩ দিয়ে ভাগ যায় ৩, ৬ ও ৯। এদের যোগফল ১৮। এটা সমাধান করতে যে আপনার এক মিনিটের বেশি লাগবে না সেটা নিশ্চিত। কিন্তু যদি বলা হয় ১ থেকে ১০০০ পর্যন্ত যে সংখ্যাগুলো ৩ অথবা ৫ দিয়ে ভাগ যায় তার যোগফল বের করতে, তাহলে কিন্তু আপনি একটু ঝামেলায় পড়ে যাবেন। কারণ এবার আপনি একটি একটি সংখ্যা নিয়ে যাচাই করতে গেলে কিন্তু অনেক সময় লেগে যাবে।

ঠিক এখানে আপনার দরকার একটি গণকযন্ত্র বা, কম্পিউটার। আপনি যদি কম্পিউটারকে বলেন ১ থেকে ১০০০ এর মধ্যে যে সংখ্যাগুলো ৩ দিয়ে ভাগ করা যায় তাদের আলাদা করে রাখো এবং শেষে সবগুলো যোগ করে উত্তরটা বলো, তাহলে এক সেকেন্ডেই আপনি উত্তর পেয়ে যাবেন।

এই যে নির্দেশনা দিচ্ছেন এর জন্য তো আর কম্পিউটারকে বাংলায় বলে বোঝাতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে আপনাকে বিশেষ ভাষা ব্যবহার করে একটি প্রোগ্রাম লিখতে হবে। অর্থাৎ প্রোগ্রামিং ভাষা ব্যবহার করতে হবে। এখানেই কম্পিউটারের প্রয়োজনীয়তা, এখানেই প্রোগ্রামিং ভাষার গুরুত্ব। এগুলো দিয়ে আমরা অনেক বড় বড় হিসাবের কাজ দ্রুত করিয়ে নিতে পারি।

এবার তাহলে উপরের সমস্যাটা নিয়েই এগোনো যাক। প্রোগ্রাম লিখে এখন আপনি ১ থেকে ১০০০ এর মধ্যে যে সংখ্যাগুলো ৩ দিয়ে ভাগ যায় সেগুলোকে আলাদা করবেন। সেক্ষেত্রে আপনাকে একটি লুপ বা ঘূর্ণি চালাতে হবে, যেটা বার বার ঘুরে ঘুরে একই নির্দেশনা সম্পাদন করবে। এই লুপের ভেতর একটি চলকের মান ১ থেকে শুরু করে ১০০০ পর্যন্ত যাবে এবং প্রতিবার ঘোরার সময় চলকটিকে ৩ দ্বারা ভাগ করা হবে। যদি ভাগশেষ শূন্য হয় তাহলে সংখ্যাটিকে আপনি আরেকটি চলকের সাথে যোগ করবেন। সেক্ষেত্রে আপনার কোডটির ধরন হবে অনেকটা এরকম-

x = 0
for i in range(0,1000):
    if i%3==0:
        x = x + i

print(x)

এখন এটুকু যদি আপনি বুঝতে পারেন তাহলে যেকোনো প্রোগ্রামিং ভাষাতেই তা লিখে আপনি সমস্যাটির সমাধান করতে পারেন। এখানে প্রথম x = 0 দিয়ে আসলে একটি চলক ধরে নেয়া হয়েছে (declare করা হয়েছে) এবং তার মান ধরা হয়েছে শূন্য। এবার একটি for লুপ চালানো হয়েছে যেখানে ‘i’ নামের আরেকটি চলক রয়েছে যার মান লুপের ভেতর ০ থেকে ১০০০ পর্যন্ত যাবে এবং প্রতি ধাপে এটি i এর যে মান থাকবে তাকে ৩ দিয়ে mod করে দেখবে যে ভাগশেষ ০ থাকে কিনা। যদি(if) ভাগশেষ ০ হয় তাহলে i এর মান x এর সাথে যোগ করবে। এবং প্রোগ্রাম শেষে x এর মান আপনার স্ক্রিনে print করে দেবে (স্ক্রিনে দেখিয়ে দেবে)।

সমস্যাটা এখানেই সমাধান হয়ে গেল, তাই তো? কিন্তু এখানে আরো একটি মজার ব্যাপার আছে। দেখুন, তো ০ থেকে ১০০০ পর্যন্ত লুপ চালানো ছাড়াই আপনি সমস্যাটা সমাধান করতে পারেন কিনা!

প্রথমে দেখুন ১ থেকে ১০ পর্যন্ত আমাদের যোগফল এরকম আসবে-

18 = 3 + 6 + 9

একে এরকমও লেখা যায়-

18 = 3(1+ 2 + 3)

এক্ষেত্রে আপনি কিন্তু একটা সিরিজ n সংখ্যক সংখ্যার একটা বীজগাণিতিক সিরিজ পাচ্ছেন। ১০০ এর ক্ষেত্রে এই সিরিজটা হবে এরকমঃ
3(1+2+3+4+…+33)

এ ধরনের সিরিজের যোগফল কিন্তু আপনি সহজেই এই সূত্র দিয়ে বের করতে পারবেন-

$latex \displaystyle \large S_{n}=\frac{n(n+1)}{2}$

সেক্ষেত্রে কিন্তু আপনাকে লুপ না চালিয়ে এই সূত্র আপনার প্রোগামে বসিয়ে নিমিষেই কাজটা করে ফেলতে পারছেন। এর একটা সুবিধা আছে। প্রতিবার লুপ চালাতে একটা নির্দিষ্ট সময় খরচ করা লাগে। তাই লুপ ঘোরার পরিমাণ বেশি হলে সময়টাও বেশি লাগবে। ছোট খাটো কাজের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আপনার চোখে পড়বে না। কিন্তু এই সমস্যাটির সীমা যদি ০ থেকে ১০০,০০০,০০০ এর মধ্যে হয়? তখন আপনি লুপ দিয়ে আপনার বাসার কম্পিউটারে সমাধান করতে গেলে সময়ের ব্যাপারটি চোখে পড়বে। এখানে গাণিতিক সূত্র প্রয়োগ করে যে আমরা এই সময়সীমা কমিয়ে আনলাম একে বলে Optimization। এটাও একজন দক্ষ প্রোগ্রামারের লক্ষ্য।


Share
কোন প্রোগ্রামিং ভাষা দিয়ে শুরু করবো? image source: wikihow.com
প্রোগ্রামিং শেখার শুরুতে অনেকে এই ভেবেই কূল পায় না যে, কোন ভাষা দিয়ে শুরু করবেন। Java, C++ নাকি Python? আবার যারা C দিয়ে শুরু করেন তাদের মনে আবার খচ খচ করতে থাকে – “C++ তো আরও আধুনিক বা, আপগ্রেডেড, ওটা দিয়ে শুরু করলে ভালো হত না?”। আসল কথা হলো, আপনি যেকোনো একটা দিয়ে শুরু করতে পারেন। কিন্তু দক্ষ প্রোগ্রামার হওয়ার জন্য আসলে আগে প্রয়োজন আপনি একটি সমস্যাকে কীভাবে দেখেন। একটি সমস্যা প্রোগ্রামিং করে সমাধানের আগে সেটা আসলে আমাদের চিন্তার জগতে সমাধান করা লাগে। সেই চিন্তাটাই যদি আপনি না করতে পারেন তাহলে চার পাঁচটা প্রোগ্রামিং শিখেও আপনি খুব একটা দক্ষ প্রোগ্রামার হতে পারবেন না।

মূলত প্রোগ্রামিংয়ের বেসিক যে ধারণাগুলো শেখার দরকার হয় সেগুলো হলো- চলক (variable), শর্তমূলক নির্দেশনা (conditional program), লুপ, ডাটা স্ট্রাকচার এবং লাইব্রেরি। এই পাঁচটি ধারণা আপনি ধরতে পারলে যেকোনো প্রোগ্রামিং ভাষাই আপনি রপ্ত করে নিতে পারবেন।


Share
প্রোগ্রামিং-এর মৌলিক ধারণা
একটি প্রোগ্রামিং ভাষা পারলে অন্য যেকোনোটির মূল কথা বুঝতে আপনার সময় লাগবে মাত্র দুই দিনের মতো। ইন্টারনেটে প্রোগ্রামিং বিষয়ক উপকরণের অভাব নেই। বাংলা ভাষাতেও প্রচুর তথ্য যুক্ত হচ্ছে। কিন্তু তার আগে আপনাকে চিন্তা করাও শিখতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনি একটি ভাষা শিখে সেটি দিয়ে অনলাইনে কিছু প্রোগ্রামিং সমস্যার সমাধান করতে পারেন। সেক্ষেত্রে Hackerrank, UVa, URI এই তিনটি ওয়েবসাইট‎ শুরু করার জন্য ভালো।

কিছু প্রশ্ন
১. প্রোগ্রামিংয়ে দক্ষ হওয়ার জন্য কতগুলো সমস্যার সমাধান করবো?

অনেকে হয়তো লেখার প্রথম অংশে সমস্যা সসমাধানের কথা শুনে বিরক্ত হয়ে গেছেন। আপনি হয়তো একজন সৃষ্টিশীল মানুষ যে প্রোগ্রামিংটা দ্রুত শিখে ফেলে ডেক্সটপ বা স্মার্টফোনের জন্য  দারুণ দারুণ এপ্লিকেশন বানাতে চান। সেজন্য সমস্যাকে ইতিবাচক দিক থেকে গ্রহণ করতে হবে।

আপনি যদি ডেক্সটপ এপ্লিকেশন (অ্যাপ) বানাতে চান সেক্ষেত্রে C++ বা Python শিখতে পারেন। Python শেখার সুবিধা হলো, এটি শেখা সহজ এবং এখনকার সময়ে অনেক জনপ্রিয়। আর মোবাইল App বানাতে চাইলে আপনাকে Java শিখতে হবে। তবে এক্ষেত্রেও দক্ষভাবে প্রোগ্রাম লিখতে গেলে আগে থেকে কিছু সমস্যা সমাধানের অভিজ্ঞতা থাকা ভালো। এতে আপনার প্রোগ্রামিং দক্ষতা যেমন বাড়বে, বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলা করার ধৈর্য্যও বাড়বে। কিন্তু প্রতিযোগী প্রোগ্রামার না হলেও চলবে। প্রোগ্রামিং সমস্যার সমাধান করা আসলে প্রোগ্রামারদের কাছে একটা খেলার মতো।

২.প্রোগ্রামিং শেখার জন্য খুব বেশি করে গণিত শেখা দরকার কি?

অন্তত স্কুল লেভেলের গণিত ভালোভাবে জানা থাকলেই ভালো। আসলে গণিত একটি হাতিয়ার যেটি আমরা বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করে আমাদের কাজ সহজ করে ফেলতে পারি। উপরে যেমনটি দেখালাম, একটি সূত্র ব্যবহার করে আমরা কীভাবে একটি প্রোগ্রামকে সহজ বা সরল করে ফেললাম। এর জন্য আপনাকে সব সময় জানার দরকারও পড়বে না সূত্রটা ঠিক কীভাবে এলো। আপনাকে মূলত জানতে হবে গণিত কীভাবে এবং কোথায় ব্যবহার করতে হয়। আমাদের দেশে স্কুল-কলেজ পর্যায়ে আসলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গণিতকে আনন্দের সাথে শেখানো হয় না। তাই দেখা যায় গণিত নিয়ে অনেকের মধ্যে ভয় কাজ করে।

৩. বাংলা ভাষায় প্রোগ্রামিং শিখবো কোথায় থেকে?

এখন এদেশে অনেকেই বাংলায় ব্লগ লেখে। প্রোগ্রামিং যারা করে তারাও লিখছে খুব। তাই বাংলাতে প্রোগ্রামিং বিষয়ক রিসোর্স খুব দ্রুতই সমৃদ্ধ হচ্ছে। গুগল করলেই অনেক তথ্য পেয়ে যাবেন। C দিয়ে শুরু করার জন্য সুবিনের ব্লগ দেখতে পারেন। এছাড়া বাংলায় অনেক বই আছে প্রোগ্রামিং-এর উপর। ইউটিউবেও টিউটোরিয়াল আছে।

৪. দক্ষ প্রোগ্রামার হওয়ার জন্য কি মেধাবী হতে হবে?

তার আগে জানতে হবে মেধাবীর সংজ্ঞা কী? আচ্ছা, আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলি। আমাদের ইউনিভার্সিটিতে প্রোগ্রামিং কোর্সের শুরুতে এক বন্ধুকে দেখেছিলাম যে কিনা জীবনে প্রথমবারের মতো কম্পিউটার ধরছে। প্রোগ্রামিং কী করবে , কী-বোর্ডের কোথায় কোন অক্ষর আছে তা খুঁজতেই দিন পার হয়ে যেত। কিন্তু সে নিজের চেষ্টায় রাত জেগে জেগে অনুশীলন করে নিজের দক্ষতা এতটাই বাড়াতে সক্ষম হয়েছে যে আগে থেকে শিখে আসা শিক্ষার্থীরাও তার পেছনে পড়ে গিয়েছিল। আসলে দক্ষ প্রোগ্রামার হওয়ার জন্য আপনাকে মেধাবী হওয়ার দরকার নেই, বরং প্রোগ্রামিং দক্ষভাবে করতে শিখে গেলে লোকজনই আপনাকে মেধাবী ডাকবে।

63
ড্যাফোডিল পরিবারের প্রধান নির্বাাহী ও ড্যাফোডিল ইনস্টিটিউট অব আইটির (ডিআইআইটি) নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ নূরুজ্জামান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, এমবিএ ও পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা সম্পন্ন করার পর মানব সম্পদ উন্নয়নে অবদান রাখার লক্ষ্যে শিক্ষাখাতে ক্যারিয়ার গড়েন। দীর্ঘ পঁচিশ বছরের গৌরবময়  বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে তিনি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন শিক্ষা ও শিল্প-প্রতিষ্ঠানের সম্পর্ক উন্নয়নে। এজন্য তিনি শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণার মাধ্যমে দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নের পাশাপাশি  একাডেমি ও শিল্প-প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সেতু বন্ন রচনার চেষ্টা করেছেন। এই চেষ্টার ফলস্বরূপ দীর্ঘ কর্মজীবনে মোহাম্মদ নূরুজ্জামান বেশ কিছু শিক্ষা ও শিল্প-প্রতিষ্ঠানের মধ্যে টেকসই ও কার্যকর  অংশীদারীত্বমূলক সম্পর্ক নির্মাণ করতে সফল হয়েছেন।

ড্যাফোডিল ফ্যামিলির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে মোহাম্মদ নূরুজ্জামান বহুমুখী কর্মকান্ড পরিচালনা করে থাকেন। তিনি শিক্ষা বিভাগের নীতিনির্ধারণসহ সকল বিভাগের নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনা, গবেষণা ও উন্নয়ন পরিচালনা, প্রশিক্ষণ পরিচালনা ও প্রশিক্ষকদের পরিচালনা, নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিচালনা, কর্পোরেট প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা, স্থানীয় ও বৈশ্বিক পর্যায়ে মৈত্রী স্থাপন, প্রকল্প তত্ত্বাবধান, পাঠ্যক্রম সমন্বয় ইত্যাদি কর্মকান্ড পরিচালনা করেন।

মোহাম্মদ নূরুজ্জামান একজন দক্ষ প্রযুক্তিবান্ধব মানুষ। তার উদ্যোগে বাংলাদেশে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় সফটওয়্যার কোয়ালিফিকেশন টেস্টার সনদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ‘ইন্টারন্যাশনাল সফটওয়্যার টেস্টিং কোয়ালিফিকেশন্স বোর্ড’ (আইএসটিকিউবি) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে এবং আন্তর্জাতিক সংগঠন সমূহের  সহায়তায়  দেশে এবং বিদেশে সফটওয়্যার শিল্পের গুণগত মান নিশ্চিত ও বিকাশে  অবদান রেখে চলেছেন।

তিনি ভারত, নেপাল, থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, মালয়েশিয়া, হংকং, কোরিয়া, চীন, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, তুরসড়, অস্ট্রেলিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, সুইজারল্যান্ড, ফ্রান্স, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও জাপানসহ বিশ্বের প্রায় চল্লিশটি দেশ ভ্রমণ করেছেন।

ড্যাফোডিল পরিবারের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই মোহাম্মদ নূরুজ্জামান এ গ্রুপের ক্রমাগত ও টেকসই অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ন  ভূমিকা রাখেন। তার পেশাদারীত্ব, দূরদর্শিতা, লক্ষ্যভেদী সিদ্ধান্ত, নীতিনির্ধারণ, কৌশলপত্র প্রণয়ন, রাজস্ব লক্ষ্য নির্ধারণ, মুনাফা সংযোজন এবং ইতিবাচক নেতৃত্বের মাধ্যমে ইতোমধ্যে তিনি নিজের দক্ষতা ও যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন এবং ড্যাফোডিল পরিবারের ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপকদের স্বপ্ন পূরণে নেতৃত্ব দিয়ে চলেছেন।

শুধু নিজেকেই নেতৃত্বের উচ্চতর আসনে নিয়ে যাননি মোহাম্মদ নূরুজ্জামান, বরং অনেক সুযোগ্য নেতাও তৈরি করেছেন, যারা যেকোনো প্রতিষ্ঠানে পেশাদারিত্বের সঙ্গে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম। এমনকি নিজ প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই উদ্যোক্তা তৈরিতেও তার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

মোহাম্মদ নূরুজ্জামান ব্রিটিশ কম্পিউটার সোসাইটি, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান সমিতি, বাংলাদেশে সফটওয়্যার টেস্টিং কোয়ালিফিকেশন্স বোর্ড, ইন্টারন্যাশনাল সফটওয়্যার টেস্টিং কোয়ালিফিকেশন্স বোর্ডসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সম্মানিত সদস্য। তিনি বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব এমআইএস প্রফেশনালসের অন্যতম একজন প্রতিষ্ঠাতা।

এসবের বাইরেও মোহাম্মদ নূরুজ্জামান বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন। তিনি উত্তরণ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও মহাসচিব, অ্যাফোর্ডের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি, অ্যালাইটের প্রতিষ্ঠাতা ও সহ-সভাপতি এবং মেঘনা উপজেলা সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ও মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আসন্ন বেসিস নির্বাচনে পরিচালক পদে অংশ নিয়েছেন।

বেসিস নির্বাচনে এবার প্যানেল ঘোষণা করেছেন জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান লুনা শামসুদ্দোহা। লুনা শামসুদ্দোহা বাংলাদেশ উইমেন ইন আইটির (বিডাব্লিউআইটি)-এর সভাপতি। দেশের  খ্যাতনামা সফটওয়্যার কোম্পানি দোহাটেক নিউ মিডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান।

সম্প্রতি এই প্যানেল ঘোষণা করেন তিনি। প্যানেলের নাম ‘উইন্ড অব চেইঞ্জ’। তবে বেসিসের কার্যনির্বাহী কমিটির ৯টি পদের বিপরীতে ৮ জন প্রার্থী নিয়ে এই প্যানেল গঠন করা হয়েছে। প্যানেল প্রধান লুনা ছাড়াও উইন্ড অব চেইঞ্জে রয়েছেন, ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স লিমিটেডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, ডিভাইন আইটি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ইকবাল আহমেদ ফকরুল হাসান, এনরুট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড সিইউ আবুল দাউদ খান, স্টার কম্পিউটার সিস্টেম লিমিটেডের ডিরেক্টর ও সিওও রেজওয়ানা খান, ইনোভেশন ইনফরমেশন সিস্টেম লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ সানোয়রুল ইসলাম, রাইট ব্রেইন সল্যুশন লিমিটেডের সিইও নূর মাহমুদ খান এবং এআর  কমিনিকেশনস প্রধান নিবার্হী  এম আসিফ রহমান।

64
Business Administration / Human resource management:
« on: March 12, 2018, 12:18:23 PM »
Human Resource Management (HRM) is the function within an organization that focuses on the recruitment of, management of, and providing direction for the people who work in an organization. As you can imagine, all of the processes and programs that are touched by people are part of the HR kingdom.

65
বিসিএস সহ প্রতিযোগীতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহনকারীদের জন্য এই লেখা। বিসিএস প্রস্তুতিকালে আমার চিন্তাধারা ; আপনি ও ভাবতে পারেন এভাবে : ( আমার পূববর্তী পোস্ট ২ টার সাথে মিলিয়ে পড়বেন। আগে ওই দুটো পড়ুন । ওই দুটো না পড়লে ও খুব বেশি ক্ষতি নেই।)

আপনি যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন যে বিসিএসটা আপনার হতেই হবে । তবে আমার চিন্তাগুলো আপনার কাজে লাগতে পারে। যদি আপনি ভাবেন যে, বিসিএস আপনার জন্য হবে না। তবে অযথা নিচের কথা গুলো পড়ার দরকার নেই।

১. আপনার ব্যসিক নিয়ে ভাবুন :

প্রথমেই আপনাকে কিছু নেতিবাচক কথা বলে নি্ই্ ।
আপনি বিসিএস দিবেন ? টেন্স পারেন ? বাংলা ব্যাকরণ পড়লে কি নিজে নিজে বুঝতে পারেন ? সরল অংক নিজে নিজে বুঝে বুঝে করেন ? ডিকশনারি ইউজ করতে পারেন ? পৃথিবীর মানচিত্র নিয়ে ধারণা আছে ? পারিব না কবিতাটি কে লিখেছেন বলতে পারবেন ? ইংরেজিতে যেকোন টপিকে ৫ লাইন লিখতে পারেন ? ১০ টা ইংরেজি শব্দের ৬ টা কি পরিচিত মনে হয় ? ডায়বেটিক কেন হয় , জানেন ? রক্তের গ্রুপ কয়টি , জানেন ? কম্পিউটারের ভাষা কয়টি , জানেন ?
ক্লাস এইট - নাইন - টেন পর্যন্ত শুধুমাত্র বোর্ড বই দিয়ে অংক , ইংরেজি , বাংলা বা আরো সব বিষয়ের ক্লাশ নিতে পারবেন ?
- এরকম কিছু ব্যসিক প্রশ্নের উত্তর যদি - হ্যাঁ হয় তবে আপনি সামনে মুভ করুন। আপনার যদি ব্যসিকই না থাকে তবে আপনার সামনে মুভ করার দরকার নাই । অনার্স , মাস্টার্স শেষ করেছে অথচ - “আমি ২ দি যাবৎ জ্বরে ভুগছি” এই বাক্যের সঠিক ট্রান্সেলেশন পারে না এমন অনেককেই আমি চিনি।  অথচ রাতদিন তারে পড়ার টেবিলে দেখি ।  পিলিজ মাইন্ড করবেন না। পারলে এক্কবারে শিশু ওয়ান থেকে সব কিছু রিভিশন দিয়ে আসুন এবং দেখুন পারবেন কিনা । না পারলে বাদ দেন, বিসিএস আপনার জন্য নয়। আপনার জন্য আরো হাজারো বড় বড় কাজ অপেক্ষা করছে।
যদি আপনি ভেবে থাকেন যে আপনার সময় নষ্ট হচ্ছে আমার পোস্ট পড়ে তবে আপনি বাকিটা না পড়েই স্কিপ করতে পারেন। তারপরেও যদি আমার কথা শুনতে চান তবে শুনুন -

২, কোচিং করবেন ? নাকি করবেন না ?
প্রথমেই বলে রাখি আমি কোন কোচিং করি নি । সো কোন কোচিং ভালো কি মন্দ তা আমি বলতে পারব না । কোচিং এ যাতয়াতের সময়টাই ( মিনিমাম ২ ঘন্টা) ভালো করে পড়লে বিসিএস হয়ে যেতে পারে। আর আমি শুধুমাত্র আপনার ভেতরে একটা জেদ বা প্রত্যয় ঢুকানোর জন্য একথাগুলো লিখছি ।

৩. কি কি বই পড়বেন ?
আপনি যদি ভাবেন যে কোন কোন বই পড়বেন এবং কোন বইয়ের কোন পৃস্ঠার কোন লেখাটা পড়বেন সেটাও আমি বলে দিব তবে আপনি ভুল ভাবছেন । এইসব বিষয়ে আমাকে ইনবক্স করার ও দরকার নেই । কারণ কোন স্পেশিফিক বই পড়ে বিসিএস হয় বলে আমার মনে হয় না। সো দেখা গেল যে বইয়ের নাম আমি জীবনে শুনি ও নাই সে বই থেকেও বিসিএস এ একটা উল্ল্যেখযোগ্য প্রশ্ন আসতে পারে। আমার সামনে বিসিএস সংক্রান্ত যত বই এসছে আমি তা টাচ করার চেষ্টা করেছি ।  সো আমার কাছে কোন কোচিং বা বই এর নাম না জানতে চাইলেই খুশি হব।

৪. সংখ্যা নয় নিজেকে নিয়ে ভাবুন -
আমি কখনো সংখ্যা দিয়ে হিসাব করি না।বিসিএস এর জন্য কয়জন ফরম পূরণ করল এটা আমার জন্য একবারে অপ্রয়োজনীয় একটা তথ্য । বিসিএস এ ৩ লাখ প্রিলি দিল, নাকি ৫ লাখ পিলি দিল এই সংখ্যাটা আমি শুনতেও চাই না , মনে ও রাখি না। রিটেনে বা ভাইবাতে বা কয়জন এটেন্ড করল সেটা ও আমি মনে রাখি নি। আমার চিন্তা ছিল প্রশাসন ক্যাডারে ২০০ এর মত নিবে । সো আমাকে ওই ২০০ জনের মধ্যে থাকলেই চলবে।  যেহেতু বিসিএস এ এক্কেবারে প্রথম হওয়ার চিন্তা আমার ছিলো না , সুতরাং অতটা প্রেশার ও আমি নেই নি ।  আমি আপনাকে বলব, আপনিও এই সব বড় বড় সংখ্যা বাদ দিয়ে শুধুমাত্র আপনার টার্গেট ছোট সংখ্যাটা নিয়ে ভাবুন।

৫. বন্ধুহীন কয়মাস -
বিসিএস পরীক্ষার আগের কয়েকমাস বলতে গেলে আমি বন্ধুহীন ছিলাম । তবে ইন্টারনেটে পড়াশুনা করা, সিলেবাস দেখা, প্রয়েজিনীয় তথ্য খোঁজা বা মডেল টেস্ট দেওয়ার জন্য আমি এখানে সরব ছিলাম।  বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজন ছাড়া কয় মাস আপনাকে একা একা সাধনা করার মানসিকতা অর্জন করতে হবে।

 

৬, ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবের ছুটিতে নিজেকে বঞ্চিত করা ।
আমি যতটি ধর্মীয় ঈদের ছুটি বাড়িতে কাটিয়েছি তার দ্বিগুন ঈদের ছুটি বা আমি কাটিয়েছি প্রায় একা একা ঢাকা শহরে। এই সময়টা আমার নিজের সাথে নিজের বোঝা পড়ার সময়। যদিও এই কয়দিনে মন তেমন ভালেঅ লাগে নি । তবু ও আমি এই কয়দিনে মনের শক্তি অর্জ ন করার জন্য মনের সাথে দিনরাত যুদ্ধ করেছি এবং ছুটিটাকে/ আনন্দটাকে উৎসর্গ করেছি বিসিএস ক্যাডার / বিজেএস এ সফল হবো এই প্রত্যয়ে। সামাজিক বিয়ে সাদীর অনুষ্ঠানে ও কম গিয়েছি । আপনি ও একটা ঈদের ছুটিতে ঢাকাতে থেকে দেখতে পারেন।
৭ . ”দানে দানে এক দান”
আমাদের গ্রামে একটা কথা আছে - ”দানে দানে তিনদান” । অর্থাৎ - তিনবার চেষ্টা করার জন্য প্রথম থেকেই মনে মনে সিদ্ধান্ত নেওয়া । আমার কাছে এটা একটা চমৎকার ফালতু কথা। আমার কাছে দানে দানে তিনদান বলে কিছু নেই । আমার কাছে আছে - ”দানে দানে একদান”। আমার ইচ্ছাই ছিলো যে - একবার বিসিএস এবং বিজেএস দিব । হলে হবে না হলে নাই ।  আপনি ও চিন্তা করুন যে আগামী বিসিএসটাই আপনার জীবনের অন এন্ড অনলি আংশিক রঙিন, ফুল এন্ড ফাইনাল বিসিএস । এটাকেই আপনাকে অর্জন করতে হবে।

৮. প্রচুর মডেল টেস্ট দিন -
প্রতিদিন ১০ টি প্রশ্নের হলে ও মডেল টেস্ট দিন। ২০০ টা প্রশ্নের মডেল টেস্ট বাসায় বসে এক সিটিং এ দেওয়া অনেক কষ্টের । এজন্য আমি একটা ২০০ প্রশ্নের মডেল টেস্ট এক সপ্তাহ ধরে ও দিয়েছি। যখনই আর ভালো লাগতো না তখনই স্টপ করেছি । আপনি ও প্রতিদিন ১০ টা প্রশ্ন হলেও মডেল টেস্ট দিন এবং নিজেকে যাচাই করনি । এবং নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রতিযোগীতায় নামুন । মডেল টেস্ট দেওয়ার সময় নেগেটিভ মার্কের বয় করবেন না্। সবগুলোই দাড়িয়ে দেখবেন কয়টা হয়েছে ? কত পেয়েছেন ? কতটুকু ইমপ্রুভ করা দরকার।

৯. রিটেনের বই কিনে ফেলুন ;
সময় থাকলে রিটেনের এক সেট বই কিনে ফেলুন । এবং মাঝে মাঝে পাতা উল্টান । মনের জোড় বাড়বে। কিছু কিছু টপিকের বিস্তারিত পড়ুন । এমন ও হতে পারে রিটেনের বইটাই আপনার প্রিলি এবং ভাইভার জন্য বেশি সহায়ক
১০ . Google is the Best master -
কিছুদিন আগেও আমরা বলতাম - Book is the Best master But now a days it is the second master and It is the Google who s the best master. So google কে use করা শিখুন । ম্যাক্সিমাম প্রয়োজনে গুগলই আপনাকে সঠিক ধারণা দেবে। গুগল কে এড়িয়ে যাবেন না। এটা এযুগে অনেক বড় একটা সাহায্যকারী বন্ধু ।
১১. নেগেটিভ মার্কের চিন্তা মাথা থেকে পুরোপুরি ঝেড়ে ফেলুন -
আমি প্রিলিতে একটা কৌশলে কাজ করি । সেটা আজ বললাম না । সুযোগ সময় হলে, প্রিলির কয়েকদিন আগে বলব । তবে এখন যেটা বলছি সেটা শুনুন , আজ থেকৈ বিসিএস বা বিজেএস এ নেগেটিভ মাকিং / মাইনাস মার্কিং আছে এটা ভুলে যান । আরামসে থাকেন । প্রিলির আগ পর্যন্ত এটা নিয়ে চিন্তাই করবেন না ।  মডেল টেস্ট দিবেন কিন্তু মাইনাস মার্কিং হিসেব করবেন না্।
শেষ কথা - আপনি যদি ভেবেই থাকেন , আপনার দিয়ে হবে না , তবে শুধু শুধু আমারে নক দিয়ে সময় নষ্ট করবেন না। ২ , কোচিং এবং বই এর নাম জানতে চাইবেন না।  আমার বিসিএস এবং বিজেএস দেওয়ার অভিজ্ঞতাই একবার সুতরাং আমি অনেক অনভিজ্ঞ এ ব্যাপারে। আমার সাথে অভিজ্ঞদের চিন্তাভাবনা নাও মিলতে পারে।  আমি ইংরেজি এই প্রবাদটাতে বিশ্বাস করি - "fools rush in where angels fear to tread" । এবং এটা অনুযায়ীই কাজ করা পছন্দ করি।  কোন বিষয়ে সহমত বা দ্বিমত থাকলে জানাবেন।

ধন্যবাদ ।

66
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালন মুনাফা প্রকাশে আইনী বাধ্যবাধকতা থাকা জরুরি বলে মনে করেন আইডিএলসি ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ খান।

তিনি বলেন, আর্ন্তজাতিক মান বজায় রেখে পত্র-পত্রিকায় ঢালাওভাবে ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা প্রকাশের কারণে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
আজ সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ে ফাইন্যান্সিয়াল স্ট্যাবিলিটি রিপোর্ট-২০১৬ এর মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

আরিফ খান বলেন, আমাদের দেশের পরিচালন মুনাফা প্রকাশের ক্ষেত্রে আর্ন্তজাতিক মান বজায় রাখা হয় না। বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো আইনী বাধ্যবাধকতা না থাকার কারণে পত্র-পত্রিকায় ঢালাওভাবে খবর ছাপানো হয় পরিচালন মুনাফা নিয়ে। অথচ এই পরিচালন মুনাফা দিয়ে একটি ব্যাংক কিংবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত মুনাফা বোঝা সম্ভব হয় না।

তিনি বলেন,  ব্যাংকের পরিচালন মুনাফারর মধ্যে ট্যাক্স ও প্রভিশনসহ অন্যান্য বিষয়ে সরাসরি জড়িত থাকে। যা ব্যাংকটির কর পরবর্তী নিট মুনাফায় অনেক পরিবর্তন দেখা যায়।

এ প্রসঙ্গে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সভাপতি আনিস এ খান বলেন,  পরিচালন মুনাফা প্রতিবেদন প্রকাশের পর ঝামেলায় পড়তে হয় ব্যাংকগুলোকে। এই প্রতিবেদন নিট মুনাফার সঠিক হিসাব থাকে না বলে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে। তাই এই ধরণের প্রতিবেদন প্রকাশে আরও বেশি সতর্ক হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।

67
শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ শিক্ষা পরবর্তী জীবনে কি করে চলবেন অথবা পরিবার কিভাবে চালাবেন এ বিষয় হতাশা প্রকাশ করেছেন। অনেকেই প্রত্যাশা অনুযায়ী সাবজেক্ট না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, চাকরির বাজারে এসব বিভাগের গুরুত্ব খুবই কম। 

শিক্ষার্থীরা বলছেন, দেশ সেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেও চাকরি হচ্ছেনা। এমনকি চাকরির কোন নিশ্চয়তাও নেই। ৫ বছরের একাডেমিক পড়াশুনার ৫ ভাগও চাকরি পরীক্ষায় কাজে আসেনা।

সারাদিন লাইব্রেরিতে পড়াশুনা করেও চাকরি না পেয়ে গত ৫ বছরে হতাশ হয়ে আত্মহত্যা করেছেন ৫ জন সাবেক ঢাবি শিক্ষার্থী। তবে এদের কয়েকজন প্রত্যাশার চেয়ে নিম্নমানের চাকরি করতেন। যা তাদের হতাশায় নিমজ্জিত করেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সারির একটি বিভাগ থেকে মাস্টার্সে প্রথম শ্রেণি পাওয়া শাকিল আদনান (ছদ্ম নাম) চাকরি খুঁজছেন ২০০৮ সাল থেকে। কিন্তু আজও তিনি চাকরি পাননি। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে লিখিত সব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও ঘুষের টাকা না থাকায় আজও তিনি বেকার।পরীক্ষা আর ভাইভা দিতে দিতে এখন তার চোখে-মুখে চরম হতাশা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করা ফখরুল ইসলামও চাকরি না পেয়ে ৩ বছর পাগলের মতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

কেবলশাকিল আদনান বা ফখরুল ইসলামই নয়, তাদের মতো সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ শিক্ষা শেষ করে বেকারত্বের বোঝা মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন প্রায় অর্ধকোটি শিক্ষিত বেকার।

সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে, কাজের সুযোগ না পেয়ে অসংখ্য বেকার যুবক হতাশা থেকে বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন। এর ফলে সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। হতাশা থেকে আত্মহননের পথও অনেকে বেছে নিচ্ছেন। একই কারণে নিকটাত্মীয়কে হত্যা করার মতো ঘটনাও এই সমাজে ঘটছে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপিকা ড. মাসুদা এম রশিদ চৌধুরী বলেন, দেশে বেকারের সংখ্যা বাড়লে সামাজিক অস্থিরতাও বাড়বে। নতুন নতুন অপরাধ প্রবণতাও বাড়বে। শিক্ষিত যুবকদের অনেকেই হতাশা থেকে মাদকের সংস্পর্শে আসছেন। এই সুযোগে মাদক বাণিজ্যসহ অনেক বেআইনি কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে আয় রোজগারের পথ খুঁজছেন অনেকে।

সোহেল রানা নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, খেটে খেয়ে না খেয়ে করেছি পড়াশুনা কিন্তু মিলল না একটি চাকরি।
কী করে পূরন করব আমার মায়ের আশা, শিক্ষিত হয়ে পারিনা আমি।  গ্রামে কাজ করতে, পারি না আমি মাথায় ডালি নিতে। পারি না আমি গায়ে গায়ে ফেরি করতে, সরকার আপনি বুঝুন শিক্ষিত বেকারদের জ্বালা কতটা ।

ইউজিসির তথ্য মতে, জাতীয় ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়সহ ৩৭ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমবেশি ২৯ লাখ। এর বাইরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাড়ে তিন লাখের মতো। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৪ সালে ৩৪টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেছে ৪ লাখ ১৯ হাজার ৫৮২ জন। ওই বছর ৭৫টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছে ৬৫ হাজার ৩৬০ জন। সব মিলিয়ে ২০১৪ সালে পাঁচ লাখ ৫০ হাজার ৩০২ জন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেছে। এর বাইরে পাশ করতে পারেনি বা ঝরে গেছে এমন শিক্ষার্থী সংখ্যা আরও বেশি। এছাড়া মাদ্রাসা শিক্ষা ও কারিগরি শিক্ষা সম্পন্ন করেছে আরও কয়েক লাখ যুবক। কিন্তু এদের মধ্যে চাকরি হয়েছে হাতে গোনা কিছু যুবকের। একইভাবে প্রতি বছরই উচ্চশিক্ষা নিয়ে শ্রমবাজারে আসা শিক্ষার্থীদের প্রায় অর্ধেক বেকার থাকছেন, অথবা যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাচ্ছেন না।

এ প্রসঙ্গে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমদ বলেন, উচ্চ শিক্ষিতরা বেকার হওয়ার কারণে সমাজে এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। তিনি বলেন,বেসরকারি খাতে শ্রমিক ও কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবলের দরকার হয় ৭০ শতাংশ। কিন্তু বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষিতদের ৯০ শতাংশই সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত, যার সঙ্গে শিল্প-কারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনার সম্পর্ক থাকে না। এ কারণে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে।

মোটা দাগে হতাশার মূল কারণঃ

১। চাকরি সঙ্কট

২। প্রত্যাশা অনুযায়ী চাকরি হচ্ছেনা

৩। অনার্স মাস্টার্স শেষ করেও চাকরি পেতে দীর্ঘ সময় লাগছে

৪। পারিবারিক অর্থনৈতিক সঙ্কট

৫। চাকরি পরীক্ষার জন্য আলাদা পড়াশুনা

৬। চাকরি দেয়ার ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতি

৭। অনেকেই পড়াশুনার সময় নষ্ট করে ঘুরেফিরে দিন কাটিয়েছেন

৮। সামিজক প্রত্যাশার চাপ

৯। জুনিয়ররা হতাশ হচ্ছেন, সিনিয়রদের চাকরি না হওয়ায়

68
হিসাববিদেরা ব্যবসায় নেতৃত্ব দেন। তাঁদের বেতন–ভাতাও তুলনামূলক বেশ ভালো। হিসাববিদেরা ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। হিসাব পেশা হলো ব্যবসার ভাষা।

গতকাল শনিবার দেশের বিশিষ্ট হিসাববিদেরা এসব কথা বলেন। এভাবেই তাঁরা সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক শ শিক্ষার্থীর সামনে হিসাববিদ পেশার গুরুত্ব তুলে ধরেন। তাঁরা আরও বলেন, চাহিদা অনুযায়ী দেশে হিসাববিদদের সংকট রয়েছে। বর্তমানে ১৮ হাজার হিসাববিদের চাহিদা আছে। কিন্তু দেশে মাত্র ১ হাজার ২০০–র মতো হিসাববিদ আছেন। তাই নিজের ক্যারিয়ার গঠনে এই বিষয়ে পড়াশোনা করতে পারেন তরুণ-তরুণীরা।

হিসাব পেশায় পড়ানো ও ক্যারিয়ার গঠনে আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্যে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) প্রথমবারের মতো ছাত্র সম্মেলনের আয়োজন করেছে। রাজধানীর সেনানিবাসের সেনা মালঞ্চে ‘চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্সি: ব্যবসা নেতৃত্ব তৈরির প্রবেশদ্বার’ শীর্ষক এই সম্মেলন হয়। এতে ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

স্বাগত বক্তব্যে আইসিএবি সভাপতি আদিব হোসেন খান বলেন, ‘আমি খুবই অভিভূত যে, এখানে ৪০০–র মতো তরুণ-তরুণী এসেছেন; যাঁরা ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেবেন। হিসাববিদেরাই ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের উচ্চপদে থাকেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আজ এখানে যাঁরা এসেছেন, তাঁরা একটি স্বপ্ন নিয়ে যাবেন।’

আইসিএবির সহসভাপতি মোস্তফা কামাল এক উপস্থাপনায় কীভাবে হিসাববিদ পেশায় প্রবেশ করা যায়, তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশে ১৮ হাজার হিসাববিদের চাহিদা আছে। কিন্তু আছেন মাত্র ১ হাজার ২০০–র মতো। এই পেশায় বেতনও তুলনামূলক বেশ ভালো। তিনি আরও বলেন, আগে একটি বিষয়ে অকৃতকার্য হলে পুনরায় সব বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হতো। এখন যে বিষয়ে পাস করেন শিক্ষার্থীরা, তাঁকে আর ওই বিষয়ে পরীক্ষা দিতে হয় না।

অনুষ্ঠানের পরের পর্বে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে প্রধান নির্বাহী কিংবা উচ্চপদে আছেন এমন হিসাববিদেরা উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সামনে নিজেদের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও আইসিএবির সাবেক সভাপতি পারভীন মাহমুদ বলেন, এটি খুবই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন পেশা। একসময় আইসিএবিতে মাত্র চারজন নারী হিসাববিদ ছিলেন। এখন ১০০ জনের বেশি নারী হিসাববিদ আছেন। এটি বেশি অনুপ্রেরণামূলক।

এক্সসেনচার সিআইএ লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ রায়হান সামসির মতে, এ দেশের হিসাববিদদের মান আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের। শিক্ষার্থীদের এখানে হাতে–কলমে শেখানো হয়।

দ্য কম্পিউটারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার আতিক ই রাব্বানী বলেন, হিসাব পেশা হলো ব্যবসার ভাষা (ল্যাংগুয়েজ অব বিজনেস)। এই বিষয়ে পড়াশোনা একধরনের বিনিয়োগ। এর মুনাফা সারা জীবন ধরে পাওয়া যায়।

নিউজিল্যান্ড মিল্ক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামছুল আলম মল্লিক বলেন, সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে চাইলে হিসাববিদের পেশার মতো ভালো পেশা নেই।

এই পর্বে আরও বক্তব্য রাখেন নভিস্তা ফার্মার চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আকতার মতিন চৌধুরী ও ইমার্জিং ক্রেডিট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুর-ই-খোদা আবদুল মুবিন।

অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। কুইজ বিজয়ীরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৌহিদুল ইসলাম ও শারমীন সাকি এবং বেসরকারি ইনডিপেনডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের রবিউল ইসলাম।

এ ছাড়া সেনা মালঞ্চ মিলনায়তনে দেশের ১০টি হিসাব নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান নিজেদের শিক্ষা কার্যক্রম তুলে ধরতে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করে। প্রতিষ্ঠানগুলোর অন্যতম হলো কেপিএমজি, এম জে আবেদীন অ্যান্ড কোং, হোসেন ফরহাদ অ্যান্ড কোং, আহমেদ খান অ্যান্ড কোং।

69
ক্যারিবীয়ান প্রিমিয়ার লিগে (সিপিএল) এক ম্যাচ পরই জ্বলে উঠলেন সাকিব আল হাসান। জ্যামাইকা তালাওয়াসের প্রথম ম্যাচে হার এড়াতে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেননি সাকিব। তবে বার্বাডোস ট্রাইডেন্টসের বিপক্ষে এবার দ্বিতীয় ম্যাচে দলকে জেতাতে দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও উইকেট নিয়েছেন সাকিব।

যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে গতকাল রাতে মুখোমুখি হয় জ্যামাইকা ও ট্রাইডেন্টস। ওই ম্যাচে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেয় জ্যামাইকা। আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ১৫৪ রান করে সাকিব-সাঙ্গাকারা-সিমন্সদের জ্যামাইকা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৪২ রান তুলতেই অলআউট হয়ে যায় ট্রাইডেন্টস। ফলে ১২ রানে জয় পায় সাকিবের জ্যামাইকা।
জ্যামাইকার হয়ে ব্যাট করতে নেমে দলের ব্যক্তিগত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংসটা সাকিবের কাছ থেকেই আসে। শেষ পর্যন্ত ৪৪ রানে অপরাজিত ছিলেন বাংলাদেশি এ অলরাউন্ডার। ৩২ বল মোকাবেলায় ৫ চার ১ ছক্কায় এ ইনিংস সাজান সাকিব। জ্যামাইকার হয়ে ব্যক্তিগত ৬০ রানের সর্বোচ্চ ইনিংসটা খেলেন ম্যাককার্থি। তার সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে সর্বোচ্চ ৮৪ জুটি গড়েন সাকিব।

জয়ের জন্য ১৫৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরু থেকেই ছন্দহীন ছিল ট্রাইডেন্টস। দলীয় ৫১ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ১০২রানে পৌঁছতেই মোট ৬ উইকেট হারিয়ে বসে দলটি। কাইরন পোলার্ড ৬২ রানের ইনিংস খেললেও জয়ের বন্দরে নোঙর করতে পারেনি দলটি। ১৪২ রানে অলআউট হয়ে যায় ট্রাইডেন্টস।

ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও আলো ছড়িয়েছেন সাকিব। বল হাতে ওয়াইন পার্নেলের উইকেটটি পেয়েছেন তিনি। তার সঙ্গে একটি করে উইকেট পাওয়া অন্য বোলাররা হলেন সান্তকি, কেসরিক উইলিয়ামস এবং ইমাদ ওয়াসিম। তবে মোহাম্মদ সামি একাই ৪ উইকেট নিয়ে ট্রাইডেন্টসের ব্যাটিংয়ে বড় বিপর্যয় আনেন।

70
ক্রিকেটের ঐতিহাসিক মাঠগুলোর ক্ষুদ্রতম তালিকাতেও ওভালের নাম থাকবে। এ মাঠেই নিজের শেষ ইনিংসে শূন্য রানে আউট হয়েছিলেন ডন ব্র্যাডম্যান। কিন্তু একটি দুঃখ জড়িয়ে ছিল এ মাঠের সঙ্গে। বিশ্বের সেরা সেরা বোলারকেই ধোঁকা দিয়েছে এ মাঠ। অসাধারণ সব স্পেল দেখা ওভালে কখনো হ্যাটট্রিক করতে পারেননি কেউ। এ তথ্যটিও আজ থেকে মিথ্যা হয়ে গেল, আজ দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করে দলকে জয় এনে দিয়েছেন মঈন আলী।

সেটাও কোন ম্যাচে? দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের এ ম্যাচটি ছিল ওভালের সেঞ্চুরির দিন। ছেলেদের ক্রিকেটে ওভালের শততম টেস্ট ছিল এ ম্যাচ। এমন উপলক্ষে হতাশ হতে হয়নি ইংল্যান্ডকে। সফরকারীদের ২৩৯ রানে হারিয়েছে জো রুটের দল। সেটাও এল শততম টেস্টে ওভালের প্রথম হ্যাটট্রিকের সুবাদে। মঈনের অফ স্পিনেই শেষ হলো প্রোটিয়াদের সব প্রতিরোধ।
সিরিজের তৃতীয় টেস্ট যে প্রোটিয়ারা হারছে, সেটা গতকালই প্রায় নিশ্চিত বোঝা গেছে। আজও দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিংয়ে কোনো পরিবর্তন আসেনি। এক ডিন এলগার ছাড়া বাদবাকিরা শুধু আসা-যাওয়াতেই ব্যস্ত ছিলেন। একমাত্র কাঁটা হয়ে এলগারই ছিলেন। নিজের অষ্টম সেঞ্চুরিকে টেনে নিয়ে আশা জাগাচ্ছিলেন দলের। মঈনই সেই প্রতিরোধ ভাঙলেন। এলগারকে ম্যাচসেরা স্টোকসের ক্যাচ বানালেন। রাবাদাকেও সরালেন একই ফর্মুলায়। ওভার শেষ হয়ে গেল মঈনের।
পরের ওভারের প্রথম বলে এলবিডব্লিউর জোরালো আবেদন। আম্পায়ার না বলে দিলেও হাল ছাড়লেন না, রিভিউ নিয়ে ফেরালেন মরনে মরকেলকে। ২৫২ রানে অলআউট হলো দক্ষিণ আফ্রিকা। মঈনও সেই সঙ্গে পেয়ে গেলেন নিজের প্রথম হ্যাটট্রিক, ওভালও পেল। সেই সঙ্গে ইংল্যান্ডের আরেকটি হতাশাও ঘুচল। ১৯৩৮ সালে এই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেই হ্যাটট্রিক করেছিলেন টম গডার্ড। এরপর আর কোনো ইংলিশ স্পিনার টেস্টে হ্যাটট্রিক করতে পারেননি!
আর বেছে বেছে আজকের দিনটিতেই হ্যাটট্রিক করলেন মঈন? ১৯৫৬ সালে এ দিনেই তাঁর মতো আরেক অফ স্পিনার ইতিহাস গড়েছিলেন। টেস্টে কোনো বোলারের ১০ উইকেট নেওয়ার প্রথম উদাহরণ জিম লেকার তো আজকের দিনেই করে দেখিয়েছেন!

71
জম জম কুপের পানি আল্লাহর রহমতস্বরুপ। শিশু হজরত ইসমাইল (আঃ) ও তাঁর মা’কে যখন আল্লাহর নির্দেশে হজরত ইব্রাহিম (আঃ ) নির্জন মরুভুমিতে পরিত্যাগ করেন। তখন তার পায়ের আঘাতে জমজম কুপের উৎপত্তি হয়।মা হাজেরা কুপের চারপাশে চারটি পাথর দিয়ে সিমানা দিয়ে দেন তা না হলে সারা পৃথিবীতে জমজম কুপ ছড়িয়ে পড়ত।

জমজম মুসলমানদের জন্য খোদার পক্ষ হতে বিশেষ নেয়ামত। পৃথিবীর আশ্চর্য জিনিসের অন্যতম। জমজম কুপের পানি চৌদ্দশত বছর ধরে প্রবাহমান। বিশ্বের এমন কোন কুপ নেই যেটা ধারাবাহিকভাবে বহু শতাব্দি ধরে পানি সরবরাহ করছে। জমজম কূপের উৎস কী তা আজোও কেউ আবিষ্কার করতে পারেনি। হয়তোবা জান্নাতের কোন উৎস থেকে হবে। কোরআন হাদীসে জমজমের উৎস সর্ম্পকে কোন বর্ণনা নেই।

তবে জমজমের পানি সুপেয়। জমজমের পানি পান করার পূর্বে দোয়া করলে সে দোআ কবুল হওয়ার কথা সহীহ হাদীসে বর্ণিত আছে। জমজমের পানি বরকতময় পানি। বিজ্ঞ ব্যক্তিদের অভিমত হল এ পানির গুনাগুণ নষ্ট হয় না দীর্ঘদিন পর্যন্ত। ধর্র্মপ্রাণ মুসলমানগন হজ্জ্বের সময় সৌদি থেকে নিজেদের সাথে এ বরকতময় পানি সঙ্গে নিয়ে আসেন। পৃথীবিতে এর চেয়ে পবিত্র এবং বিশুদ্ধ পানি আর হতে পারে না। এজন্য হাজী সাহেবানগন হজ্জের সময়গুলোতে জমজমের পানি পান করেন।

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘জমজমের পানি যে যেই নিয়তে পান করবে, তার সেই নিয়ত পূরণ হবে। যদি তুমি এই পানি রোগমুক্তির জন্য পান কর, তাহলে আল্লাহ তোমাকে আরোগ্য দান করবেন। যদি তুমি পিপাসা মেটানোর জন্য পান কর, তাহলে আল্লাহ তোমার পিপাসা দূর করবেন। যদি তুমি ক্ষুধা দূর করার উদ্দেশ্যে তা পান কর, তাহলে আল্লাহ তোমার ক্ষুধা দূর করে তৃপ্তি দান করবেন। এটি জিবরাইল (আ.)-এর পায়ের গোড়ালির আঘাতে হজরত ইসমাইল (আ.)-এর পানীয় হিসেবে সৃষ্টি হয়েছে।’ (ইবনে মাজাহ ও আল-আজরাকি)

জমজমের পানি পান করার পদ্ধতি: ফুক্বাহায়ে কিরাম জমজমের পানি কিবলা দিকে ফিরে দাঁড়িয়ে পান করা মুস্তাহাব বলেছেন। তবে একদল ফুক্বাহায়ে কিরাম দাঁড়িয়ে পান করাকে মুস্তাহাব বলেন না, বরং জায়েজ বলে থাকেন। {ফাতওয়ায়ে শামী-১/২৫৪-২৫৫)


ফাইল ছবি
হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি জমজমের পানি পান করার সময় নিম্নোক্ত দুআটি পড়তেন- اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ عِلْمًا نَافِعًا وَرِزْقًا

وَاسِعًاوَشِفَاءً مِنْ كُلِّ دَاء

অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে প্রার্থনা করছি উপকারী ইলম, আর প্রশস্ত রিজিক এবং সর্ব প্রকার রোগ থেকে মুক্তি। {দুরারুল হুক্কাম ফি শরহী গুরারিল আহকাম-১/২৩২}

দুআটির বাংলা উচ্চারণ-আল্লাহুম্মা ইন্নি আস আলুকা ইলমান নাফিআ, ওয়া রিজকান ওয়াসিআ, ওয়া শিফাআন মিন কুল্লি দা’ইন।

বিজ্ঞান প্রমান করে যে,জমজম কুপের পানি সর্ব উত্তম পানি:
(একজন ইঞ্জিনীয়ারের তথ্য থেকে- মাশারো ইমোটো)

এটাকে স্ফটিকায়ন করতে পারি নি, এমনকি পর্যন্ত পানিটি ১০০০ ভাগ পাতলা করার পরেও।
” অন্য কথায় তিনি ১ ঘন সেন্টিমিটিারকে ১ লিটারে রূপান্তর করেন। তিনি বলেন যে তিনি যখন পানিটি ১০০০ ভাগ পাতলা করেন এবং জমাটবদ্ধ করেন তিনি তখন একটি অনবদ্য আকারের স্ফটিক লাভ করেন। দুইটি স্ফটিক গঠিক হয় একটি অপরটির উপরে, কিন্তু এগুলি একটি অনন্য আকার গ্রহন করে। যখন তিনি তার মুসলিম সহকর্মীকে জিজ্ঞাসা করেন কেন দুটো স্ফটিক হলো তিনি তাকে বলেন যে যেহেতু জমজম দুইটি শব্দ দ্বারা গঠিত, “জম এবং জম”।

মাশারো ইমোটো বলেন, “আমার মুসলিম সহকর্মী পানির উপর কোরআনের আয়াত পাঠ করার প্রস্তাব দেয়”।
সে একটি টেপ রেকর্ডার নিয়ে আসে এবং কতগুলি কোরআনের আয়াত বাজায় এবং আমরা সবচাইতে নিখুত আকৃতির স্ফটিক লাভ করি। তার
পরে সে আল্লাহ (সর্বশক্তিমান) এর ৯৯টি নাম বাজায়। প্রতিটি নাম একটি অনবদ্ধ আকারের স্ফটিক তৈরি করে।

যখন ডাক্তার ইমোটো এইসব পরীক্ষা সম্পন্ন করেন যা ১৫ বছর স্থায়ী হয়েছিল তিনি একটি ৫ খন্ডের বই নির্মান করেন যার নাম হচ্ছে “পানির থেকে বার্তা”।

তিনি লেখেন, “আমি প্রমান করেছি যে পানি, ঐ বিশেষ তরলটি চিন্তা করার, মাপার, বোধ করার, উত্তেজিত হওয়ার এবং নিজেকে প্রকাশ করার ক্ষমতা রাখে”। ডাক্তার মাশারো ইমোটো নিম্নোক্তভাবে লিখেছেন, জমজম পানির গুণ/বিশুদ্ধতা এই পৃথিবীর অন্য কোথাও পানিতে এর যে গুণ আছে তা পাওয়া যাবে না।
তিনি নানো নামের প্রযুক্তি ব্যবহার করেন, এবং জমজম পানির উপর প্রচুর গবেষনা করেন এবং দেখতে পান যে যদি জমজম পানির ফোটা নিয়মিত পানির ১০০০ ফোটাতেও মিশ্রিত হয় তবুও নিয়মিত পানি জমজম পানির মত সমান গুণ লাভ করবে। তিনি আরো দেখতে পান যে জমজম পানির এক ফোটাতে একটি খনিজ পদার্থের এর নিজস্ব গুরুত্ব রয়েছে যা এই পৃথিবীর অন্যকোন পানিতে পাওয়া যাবে না। তিনি কিছু পরীক্ষাতে দেখতে পান যে জমজম পানির গুণ বা উপকরণ পরিবর্তন করা যায় না, কেন, বিজ্ঞান এর কারণ জানে না। তিনি এমনকি পর্যন্ত জমজম পানির পুন-প্রক্রিয়াজাত করেন, কিন্তু কোন পরিবর্তন হয় নি, এটা বিশুদ্ধ ছিল।

এই বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেন যে মুসলমানেরা খাওয়া বা পান করার আগে বিসমিল্লাহ বলে। তিনি বলেন যে নিয়মিত পানিতে বিসমিল্লাহ বলা হলে এর ফলে নিয়মিত পানির গুণে কতগুলি অদ্ভুত পরিবর্তন ঘটে।
এর ফলে এটা সবোর্ত্তম পানি হয়।

তিনি আরো দেখতে পান যে যদি নিয়মিত পানির উপর কোরআন পাঠ করা হয় তা হলে এটা বিভিন্ন ব্যাধি চিকিৎসার জন্য ক্ষমতা লাভ করে। সুবহানাল্লাহ! নিশ্চয় আল্লাহর এটা একটি কুদরত। জমজম পানি পর্যায় ভূ-পৃষ্ঠের প্রায় ১০.৬ ফুট নিচে এটা আল্লাহর কুদরত যে জমজম ক্রমাগত প্রতি সেকেন্ডে ৮০০০ লিটার হারে ২৪ ঘন্টার বেশি সময় ধরে পাম্প করা হয় তখন পানির পর্যায় ভূ-পৃষ্ঠের প্রায় ৪৪ ফুট নিচে নেমে যায়, কিন্তু যখন পাম্প করা বন্ধ করা হয় তখন পর্যায় দ্রুত ১১ মিনিট পরে আবার ১৩ ফুট উচ্চতায় ফিরে আসে। প্রতি সেকেন্ড ৮০০০ লিটার অর্থ হল ৮০০০ x ৬০ = ৪,৮০,০০০ লিটার প্রতি মিনিটে, প্রতি মিনিটে ৪,৮০,০০০ লিটারের অর্থ হল ৪,৮০,০০০ x ৬০ = ২৮.৮ মিলিয়ন লিটার প্রতি ঘন্টায় এবং প্রতি ঘন্টায় ২৮.৮ মিলিয়ন লিটার মানে হচ্ছে ২৮৮০০০০০ x ২৪ = ৬৯১.২ মিলিয়ন লিটার প্রতি দিনে।

তাই তারা ২৪ ঘন্টায় ৬৯০ মিলিয়ন লিটার জমজম পানি পাম্প করে, কিন্তু এটা কেবলমাত্র ১১ মিনিটে আবার পূর্ণ হয়।
এখানে দুইটা কুদরত আছে:
★প্রথমটি হলো জমজম দ্রুত পুনর্ভর্তি হয় এবং
★দ্বিতীয় হলো আল্লাহ অসামান্য শক্তিশালী একুফার ধারণ করেন যা কুপের বাইরে কোন অতিরিক্ত জমজম পানি নিক্ষেপ করে না। অন্যথায় পৃথিবী ডুবে যেত।
আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেন যে, “আমরা তাড়াতাড়ি তাদেরকে বিশ্ব ভ্রমান্ডে আমাদের চিহ্ন দেখাব এবং তাদের নিজস্ব আত্মায় আমাদের চিহ্ন দেখাব, যতক্ষণ না পর্যন্ত এটা তাদের কাছে পরিষ্কার হয় যে এটা হচ্ছে সত্য। এটাকি আপনার প্রভু সম্পর্কে যথেষ্ট না যে তিনি সকল জিনিসের উপরে একজন স্বাক্ষী?

72
Business & Entrepreneurship / I know what is poversty
« on: July 24, 2017, 12:26:00 PM »
আমার জন্ম জামালপুর জেলার এক অজপাড়াগাঁয়ে। ১৪ কিলোমিটার দূরের শহরে যেতে হতো পায়ে হেঁটে বা সাইকেলে চড়ে। পুরো গ্রামের মধ্যে একমাত্র মেট্রিক পাস ছিলেন আমার চাচা মফিজউদ্দিন। আমার বাবা একজন অতি দরিদ্র ভূমিহীন কৃষক। আমরা পাঁচ ভাই, তিন বোন। কোনরকমে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটতো আমাদের।
আমার দাদার আর্থিক অবস্থা ছিলো মোটামুটি। কিন্তু তিনি আমার বাবাকে তাঁর বাড়িতে ঠাঁই দেননি। দাদার বাড়ি থেকে খানিকটা দূরে একটা ছনের ঘরে আমরা এতগুলো ভাই-বোন আর বাবা-মা থাকতাম। মা তাঁর বাবার বাড়ি থেকে নানার সম্পত্তির সামান্য অংশ পেয়েছিলেন। তাতে তিন বিঘা জমি কেনা হয়। চাষাবাদের জন্য অনুপযুক্ত ওই জমিতে বহু কষ্টে বাবা যা ফলাতেন, তাতে বছরে ৫/৬ মাসের খাবার জুটতো। দারিদ্র্য কী জিনিস, তা আমি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছি- খাবার নেই, পরনের কাপড় নেই; কী এক অবস্থা !
আমার মা সামান্য লেখাপড়া জানতেন। তাঁর কাছেই আমার পড়াশোনার হাতেখড়ি। তারপর বাড়ির পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হই। কিন্তু আমার পরিবারে এতটাই অভাব যে, আমি যখন তৃতীয় শ্রেণিতে উঠলাম, তখন আর পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকলো না। বড় ভাই আরো আগে স্কুল ছেড়ে কাজে ঢুকেছেন। আমাকেও লেখাপড়া ছেড়ে রোজগারের পথে নামতে হলো।
আমাদের একটা গাভী আর কয়েকটা খাসি ছিল। আমি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ওগুলো মাঠে চরাতাম। বিকেল বেলা গাভীর দুধ নিয়ে বাজারে গিয়ে বিক্রি করতাম। এভাবে দুই ভাই মিলে যা আয় করতাম, তাতে কোনোরকমে দিন কাটছিল। কিছুদিন চলার পর দুধ বিক্রির আয় থেকে সঞ্চিত আট টাকা দিয়ে আমি পান-বিড়ির দোকান দেই। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দোকানে বসতাম। পড়াশোনা তো বন্ধই, আদৌ করবো-সেই স্বপ্নও ছিল না!
এক বিকেলে বড় ভাই বললেন, আজ স্কুল মাঠে নাটক হবে। স্পষ্ট মনে আছে, তখন আমার গায়ে দেওয়ার মতো কোনো জামা নেই। খালি গা আর লুঙ্গি পরে আমি ভাইয়ের সঙ্গে নাটক দেখতে চলেছি। স্কুলে পৌঁছে আমি তো বিস্ময়ে হতবাক! চারদিকে এত আনন্দময় চমৎকার পরিবেশ! আমার মনে হলো, আমিও তো আর সবার মতোই হতে পারতাম। সিদ্ধান্ত নিলাম, আমাকে আবার স্কুলে ফিরে আসতে হবে।
নাটক দেখে বাড়ি ফেরার পথে বড় ভাইকে বললাম, আমি কি আবার স্কুলে ফিরে আসতে পারি না? আমার বলার ভঙ্গি বা করুণ চাহনি দেখেই হোক কিংবা অন্য কোনো কারণেই হোক কথাটা ভাইয়ের মনে ধরলো। তিনি বললেন, ঠিক আছে কাল হেডস্যারের সঙ্গে আলাপ করবো।
পরদিন দুই ভাই আবার স্কুলে গেলাম। বড় ভাই আমাকে হেডস্যারের রুমের বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে ভিতরে গেলেন। আমি বাইরে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট শুনছি, ভাই বলছেন আমাকে যেন বার্ষিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগটুকু দেওয়া হয়। কিন্তু হেডস্যার অবজ্ঞার ভঙ্গিতে বললেন, সবাইকে দিয়ে কি লেখাপড়া হয়! স্যারের কথা শুনে আমার মাথা নিচু হয়ে গেল। যতখানি আশা নিয়ে স্কুলে গিয়েছিলাম, স্যারের এক কথাতেই সব ধুলিস্মাৎ হয়ে গেল। তবু বড় ভাই অনেক পীড়াপীড়ি করে আমার পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি যোগাড় করলেন। পরীক্ষার তখন আর মাত্র তিন মাস বাকি। বাড়ি ফিরে মাকে বললাম, আমাকে তিন মাসের ছুটি দিতে হবে। আমি আর এখানে থাকবো না। কারণ ঘরে খাবার নেই, পরনে কাপড় নেই-আমার কোনো বইও নেই, কিন্তু আমাকে পরীক্ষায় পাস করতে হবে।
মা বললেন, কোথায় যাবি? বললাম, আমার এককালের সহপাঠী এবং এখন ক্লাসের ফার্স্টবয় মোজাম্মেলের বাড়িতে যাবো। ওর মায়ের সঙ্গে আমার পরিচয় আছে। যে কদিন কথা বলেছি, তাতে করে খুব ভালো মানুষ বলে মনে হয়েছে। আমার বিশ্বাস, আমাকে উনি ফিরিয়ে দিতে পারবেন না।
দুরু দুরু মনে মোজাম্মেলের বাড়ি গেলাম। সবকিছু খুলে বলতেই খালাম্মা সানন্দে রাজি হলেন। আমার খাবার আর আশ্রয় জুটলো; শুরু হলো নতুন জীবন। নতুন করে পড়াশোনা শুরু করলাম। প্রতিক্ষণেই হেডস্যারের সেই অবজ্ঞাসূচক কথা মনে পড়ে যায়, জেদ কাজ করে মনে; আরো ভালো করে পড়াশোনা করি।
যথাসময়ে পরীক্ষা শুরু হলো। আমি এক-একটি পরীক্ষা শেষ করছি আর ক্রমেই যেন উজ্জীবিত হচ্ছি। আমার আত্মবিশ্বাসও বেড়ে যাচ্ছে। ফল প্রকাশের দিন আমি স্কুলে গিয়ে প্রথম সারিতে বসলাম। হেডস্যার ফলাফল নিয়ে এলেন। আমি লক্ষ করলাম, পড়তে গিয়ে তিনি কেমন যেন দ্বিধান্বিত। আড়চোখে আমার দিকে তাকাচ্ছেন। তারপর ফল ঘোষণা করলেন। আমি প্রথম হয়েছি! খবর শুনে বড় ভাই আনন্দে কেঁদে ফেললেন। শুধু আমি নির্বিকার-যেন এটাই হওয়ার কথা ছিল।
বাড়ি ফেরার পথে সে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। আমি আর আমার ভাই গর্বিত ভঙ্গিতে হেঁটে আসছি। আর পিছনে এক দল ছেলেমেয়ে আমাকে নিয়ে হৈ চৈ করছে, স্লোগান দিচ্ছে। সারা গাঁয়ে সাড়া পড়ে গেল! আমার নিরক্ষর বাবা, যাঁর কাছে ফার্স্ট আর লাস্ট একই কথা-তিনিও আনন্দে আত্মহারা; শুধু এইটুকু বুঝলেন যে, ছেলে বিশেষ কিছু একটা করেছে। যখন শুনলেন আমি ওপরের কাসে উঠেছি, নতুন বই লাগবে, পরদিনই ঘরের খাসিটা হাটে নিয়ে গিয়ে ১২ টাকায় বিক্রি করে দিলেন। তারপর আমাকে সঙ্গে নিয়ে জামালপুর গেলেন। সেখানকার নবনূর লাইব্রেরি থেকে নতুন বই কিনলাম।
আমার জীবনযাত্রা এখন সম্পূর্ণ বদলে গেছে। আমি রোজ স্কুলে যাই। অবসরে সংসারের কাজ করি। ইতিমধ্যে স্যারদের সুনজরে পড়ে গেছি। ফয়েজ মৌলভী স্যার আমাকে তাঁর সন্তানের মতো দেখাশুনা করতে লাগলেন। সবার আদর, যত্ন, স্নেহে আমি ফার্স্ট হয়েই পঞ্চম শ্রেণিতে উঠলাম। এতদিনে গ্রামের একমাত্র মেট্রিক পাস মফিজউদ্দিন চাচা আমার খোঁজ নিলেন। তাঁর বাড়িতে আমার আশ্রয় জুটলো।
প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে আমি দিঘপাইত জুনিয়র হাইস্কুলে ভর্তি হই। চাচা ওই স্কুলের শিক্ষক। অন্য শিক্ষকরাও আমার সংগ্রামের কথা জানতেন। তাই সবার বাড়তি আদর-ভালোবাসা পেতাম।
আমি যখন সপ্তম শ্রেণি পেরিয়ে অষ্টম শ্রেণিতে উঠবো, তখন চাচা একদিন কোত্থেকে যেন একটা বিজ্ঞাপন কেটে নিয়ে এসে আমাকে দেখালেন। ওইটা ছিল ক্যাডেট কলেজে ভর্তির বিজ্ঞাপন। যথাসময়ে ফরম পুরণ করে পাঠালাম। এখানে বলা দরকার, আমার নাম ছিল আতাউর রহমান। কিন্তু ক্যাডেট কলেজের ভর্তি ফরমে স্কুলের হেডস্যার আমার নাম আতিউর রহমান লিখে চাচাকে বলেছিলেন, এই ছেলে একদিন অনেক বড় কিছু হবে। দেশে অনেক আতাউর আছে। ওর নামটা একটু আলাদা হওয়া দরকার; তাই আতিউর করে দিলাম।
আমি রাত জেগে পড়াশোনা করে প্রস্তুতি নিলাম। নির্ধারিত দিনে চাচার সঙ্গে পরীক্ষা দিতে রওনা হলাম। ওই আমার জীবনে প্রথম ময়মনসিংহ যাওয়া। গিয়ে সবকিছু দেখে তো চক্ষু চড়কগাছ! এত এত ছেলের মধ্যে আমিই কেবল পায়জামা আর স্পঞ্জ পরে এসেছি! আমার মনে হলো, না আসাটাই ভালো ছিল। অহেতুক কষ্ট করলাম। যাই হোক পরীক্ষা দিলাম; ভাবলাম হবে না। কিন্তু দুই মাস পর চিঠি পেলাম, আমি নির্বাচিত হয়েছি। এখন চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে যেতে হবে।
সবাই খুব খুশি; কেবল আমিই হতাশ। আমার একটা প্যান্ট নেই, যেটা পরে যাবো। শেষে স্কুলের কেরানি কানাই লাল বিশ্বাসের ফুলপ্যান্টটা ধার করলাম। আর একটা শার্ট যোগাড় হলো। আমি আর চাচা অচেনা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হলাম। চাচা শিখিয়ে দিলেন, মৌখিক পরীক্ষা দিতে গিয়ে আমি যেন দরজার কাছে দাঁড়িয়ে বলি: ম্যা আই কাম ইন স্যার? ঠিকমতোই বললাম। তবে এত উচ্চস্বরে বললাম যে, উপস্থিত সবাই হো হো করে হেসে উঠলো।
পরীক্ষকদের একজন মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজের অধ্যক্ষ এম. ডাব্লিউ. পিট আমাকে আপাদমস্তক নিরীক্ষণ করে সবকিছু আঁচ করে ফেললেন। পরম স্নেহে তিনি আমাকে বসালেন। মুহূর্তের মধ্যে তিনি আমার খুব আপন হয়ে গেলেন। আমার মনে হলো, তিনি থাকলে আমার কোনো ভয় নেই। পিট স্যার আমার লিখিত পরীক্ষার খাতায় চোখ বুলিয়ে নিলেন। তারপর অন্য পরীক্ষকদের সঙ্গে ইংরেজিতে কী-সব আলাপ করলেন। আমি সবটা না বুঝলেও আঁচ করতে পারলাম যে, আমাকে তাঁদের পছন্দ হয়েছে। তবে তাঁরা কিছুই বললেন না। পরদিন ঢাকা শহর ঘুরে দেখে বাড়ি ফিরে এলাম। যথারীতি পড়াশোনায় মনোনিবেশ করলাম। কারণ আমি ধরেই নিয়েছি, আমার চান্স হবে না।
হঠাৎ তিন মাস পর চিঠি এলো। আমি চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হয়েছি। মাসে ১৫০ টাকা বেতন লাগবে। এর মধ্যে ১০০ টাকা বৃত্তি দেওয়া হবে, বাকি ৫০ টাকা আমার পরিবারকে যোগান দিতে হবে। চিঠি পড়ে মন ভেঙে গেল। যেখানে আমার পরিবারের তিনবেলা খাওয়ার নিশ্চয়তা নেই, আমি চাচার বাড়িতে মানুষ হচ্ছি, সেখানে প্রতিমাসে ৫০ টাকা বেতন যোগানোর কথা চিন্তাও করা যায় না!
এই যখন অবস্থা, তখন প্রথমবারের মতো আমার দাদা সরব হলেন। এত বছর পর নাতির (আমার) খোঁজ নিলেন। আমাকে অন্য চাচাদের কাছে নিয়ে গিয়ে বললেন, তোমরা থাকতে নাতি আমার এত ভালো সুযোগ পেয়েও পড়তে পারবে না? কিন্তু তাঁদের অবস্থাও খুব বেশি ভালো ছিল না। তাঁরা বললেন, একবার না হয় ৫০ টাকা যোগাড় করে দেবো, কিন্তু প্রতি মাসে তো সম্ভব নয়। দাদাও বিষয়টা বুঝলেন।
আমি আর কোনো আশার আলো দেখতে না পেয়ে সেই ফয়েজ মৌলভী স্যারের কাছে গেলাম। তিনি বললেন, আমি থাকতে কোনো চিন্তা করবে না। পরদিন আরো দুইজন সহকর্মী আর আমাকে নিয়ে তিনি হাটে গেলেন। সেখানে গামছা পেতে দোকানে দোকানে ঘুরলেন। সবাইকে বিস্তারিত বলে সাহায্য চাইলেন। সবাই সাধ্য মতো আট আনা, চার আনা, এক টাকা, দুই টাকা দিলেন। সব মিলিয়ে ১৫০ টাকা হলো। আর চাচারা দিলেন ৫০ টাকা। এই সামান্য টাকা সম্বল করে আমি মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হলাম। যাতায়াত খরচ বাদ দিয়ে আমি ১৫০ টাকায় তিন মাসের বেতন পরিশোধ করলাম। শুরু হলো অন্য এক জীবন।
প্রথম দিনেই এম. ডাব্লিউ. পিট স্যার আমাকে দেখতে এলেন। আমি সবকিছু খুলে বললাম। আরো জানালাম যে, যেহেতু আমার আর বেতন দেওয়ার সামর্থ্য নেই, তাই তিন মাস পর ক্যাডেট কলেজ ছেড়ে চলে যেতে হবে। সব শুনে স্যার আমার বিষয়টা বোর্ড মিটিঙে তুললেন এবং পুরো ১৫০ টাকাই বৃত্তির ব্যবস্থা করে দিলেন। সেই থেকে আমাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এসএসসি পরীক্ষায় ঢাকা বোর্ডে পঞ্চম স্থান অধিকার করলাম এবং আরো অনেক সাফল্যের মুকুট যোগ হলো।
আমার জীবনটা সাধারণ মানুষের অনুদানে ভরপুর। পরবর্তীকালে আমি আমার এলাকায় স্কুল করেছি, কলেজ করেছি। যখন যাকে যতটা পারি, সাধ্যমতো সাহায্য সহযোগিতাও করি। কিন্তু সেই যে হাট থেকে তোলা ১৫০ টাকা; সেই ঋণ আজও শোধ হয়নি। আমার সমগ্র জীবন উৎসর্গ করলেও সেই ঋণ শোধ হবে না!

73
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন নিজামী বলেছেন, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে হলে আগে মৌলিক কিছু বিষয় জানতে হবে। না হলে ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারেন।

আজ শনিবার রাজশাহীতে চলমান বিনিয়োগ শিক্ষা প্রশিক্ষণের উদ্বোধনকালে তিনি এ কথা বলেন। দেশব্যাপী বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে রাজশাহীর সাহেববাজারে মুনলাইট কমিউনিটি সেন্টারে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
বিএসইসির পরিচালক ফারহানা ফারুকের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত আছেন অর্থমন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব নাসির উদ্দিন, বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোঃ মাহবুবুল আলম, ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহমেদ রশিদ লালী, ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএএম মাজেদুর রহমান ও সিডিবিএলের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শুভ্র কান্তি চৌধুরী। অনুষ্ঠানে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএসইসির পরিচালক রেজাউল করিম।

হেলাল উদ্দিন নিজামী বলেন, দীর্ঘ মেয়াদে একটি স্থিতিশীল পুঁজিবাজার গঠন করতে কাজ করছে বিএসইসি। স্থিতিশীল পুঁজিবাজার গঠন করার জন্য ভালো বিনিয়োগকারী প্রয়োজন। এই বিনিয়োগকারী তৈরি করার জন্য দেশব্যাপী কার্যক্রম পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন।

তিনি বলেন, আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক ভালো অবস্থায় আছে পুঁজিাজার। কারণ ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে সমস্যা হওয়ার পর বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সংস্কার হয়েছে আমাদের পুঁজিবাজারে। কোন কোন জায়গায় সমস্যা, সেই বিষয়গুলো আমরা শনাক্ত করেছি। ওই আলোকে কাজ করছে কমিশন। ওই সংস্কারের সুফল পেতে শুরু করেছে বাজার। এখন চাইলেই কেউ আগের মত কারসাজি করতে পারবে না।

শিল্প উদ্যোক্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কোনো ধরণের খরচ ছাড়া আপনারা পুঁজিবাজার থেকে টাকা তুলতে পারেন। ব্যাংক ঋণ থেকে বের হতে হবে উদ্যোক্তাদের। এর জন্য বিপ্লবের প্রয়োজন। তবে দুই নম্বর-ছয় নম্বর কাগজ দিয়ে টাকা তোলার জায়গা পুঁজিবাজার নয়।

তিনি বলেন, পারিবারিক দায়বদ্ধাতা থেকে বের হতে পুঁজিবাজার থেকে টাকা নিয়ে শিল্পায়ন করা যেতে পারে। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হলে কোম্পানির মধ্যে স্বচ্ছতা ও জবাবদীহিতা বাড়বে। একই সঙ্গে দীর্ঘ মেয়াদে আপনার কোম্পানি টিকে থাকবে।

পুঁজিবাজারের সম্প্রসারণে বিএসইসি কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা ন্যাশনাল সিকিউরিটিজ অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এর মাধ্যমে আমরা আগামী দিনের বিনিয়োগকারী ও যারা বাজার পরিচালনা করবেন সেই জনশক্তি তৈরি করতে পারবো। মানুষের ভুল ধারণার অবসান ঘটিয়ে পুঁজিবাজারকে গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।

74
বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা কত দিন খেলবেন, ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত আদৌ তিনি খেলতে পারবেন কি না, এ নিয়ে উঠেছে কিছু প্রশ্ন। তবে আজ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পরিষ্কার করে দিয়েছেন সব। মাশরাফি যত দিন ইচ্ছা বাংলাদেশ দলের হয়ে খেলতে পারবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, বাংলাদেশ দলে এখন পর্যন্ত মাশরাফির বিকল্প তৈরি হয়নি।

নাজমুল বলেছেন, ‘মাশরাফি যত দিন ইচ্ছা তত দিন খেলবে। তাকে ওয়ানডে দলের অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার কোনো চিন্তা বোর্ডের নেই। মাশরাফির বিকল্পও এখনো তৈরি হয়নি।’

কৌতূহলীদের প্রশ্ন মূলত ২০১৯ বিশ্বকাপকে সামনে রেখে। মাশরাফি কি ওই বিশ্বকাপেও বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবেন? তত দিন খেলা চালিয়ে যেতে পারবেন তো! নাকি বিকল্প কিছু ভাবছে বিসিবি? দু-তিন দিন আগে এক সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান মাশরাফির টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে একটি প্রক্রিয়া শুরুর কথা বলেছিলেন। কিন্তু তিনি একবারও বলেননি, তাঁরা মাশরাফির বিকল্প খুঁজছেন। তবে কিছু প্রশ্ন এর পর থেকে হাওয়ায় ভাসতে থাকে। তবে আজকের সংবাদ সম্মেলনের পর এর সবই অবসান হবে নিশ্চয়ই।

এর আগে মাশরাফি প্রথম আলোকে বলেছিলেন, ‘পারফরম্যান্স ঠিক থাকলে আমি খেলে যাব। কারণ, খেলাটা এখনো উপভোগ করছি। আমি এখন যেমন খেলছি, তাতে উপভোগ না করার কোনো কারণ দেখছি না। আর আমি তো বিসিবির কাছ থেকে অধিনায়কত্ব চেয়ে নিইনি, বিসিবিই আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে। এখন বিসিবি যদি মনে করে দায়িত্বটা অন্য কাউকে দেবে তো দিতেই পারে। আমি অধিনায়কত্বের জন্য খেলি না। আমি খেলোয়াড়, সে জন্যই খেলি। ২০১৯ বিশ্বকাপের কথা বললে এখানে ফিটনেসটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ফর্মও ভালো থাকতে হবে। এ দুটো ঠিক থাকলে ২০১৯ বিশ্বকাপ আমি কেন খেলতে চাইব না! সব ঠিক থাকলে অবশ্যই আমার তত দিন খেলা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা আছে।’

75
চিকুনগুনিয়া ভাইরাসের চেয়েও দ্রুত ছড়াচ্ছে ক্রিকেটজ্বর। টিম মাশরাফি সেমিফাইনালে উঠে ক্রিকেট-দুনিয়ার কল্কে উল্টিয়েই দিয়েছে প্রায়। কিন্তু ওস্তাদ মাশরাফির শেষ রাতের মাইর এখনো বাকি। খেলাটা হওয়ার কথা ১৫ তারিখ সন্ধ্যায়। সে সন্ধ্যায় বাংলাদেশ যদি জিতেই যায়, আক্ষরিকভাবেই সেটা হবে ভারত-পাকিস্তান-ইংল্যান্ডের জন্য কলির সন্ধ্যার অশুভ সূচনা। সাফল্য সাফল্য ডেকে আনে। সেমিফাইনালে উত্তরণের আত্মবিশ্বাস বাংলাদেশ দলকে সাহসী করে তুলছে। সে রকম মুডই দেখা যাচ্ছে। ক্রিকেট দলে যতটা, তার চেয়েও বেশি দর্শক-ভক্তদের মধ্যে।

ক্রিকেটীয় পরাশক্তিদের জন্য কলির সন্ধ্যা আশা করা তাই পাতলা খোয়াব না, তা রীতিমতো সম্ভাবনা। কেননা, ক্রিকেটের নিয়তি এবার র‍্যাঙ্কিংয়ের নিচের দলের পক্ষে। ভাগ্যের সহায়তায় অস্ট্রেলিয়াকে এবং দারুণ নিপুণতায় নিউজিল্যান্ডকে বিদায় করে বাংলাদেশ উঠে এল সেমিফাইনালে। সেখানেই শুরু। এর পর থেকে র‍্যাংকিংয়ের ওপরের দলগুলি নিচের দলকে আর হারাতেই পারছে না। পাকিস্তানও জয়ের শিখর থেকে ফেলে দিল র‍্যাঙ্কিংয়ে ওপরে থাকা শ্রীলঙ্কাকে। অঘটন গোড়া থেকেই হয়ে আসছে। তাই বাংলাদেশের পক্ষে মধুর অঘটনের সম্ভাবনায় বিভোর দেশবাসী। সে উত্তেজনায় ফেসবুক ঘুমাচ্ছে না। রাত জেগে গবেষণা চলছে, কী থেকে কী হবে আর না হবে। আশার পারদ এক লাফে মগডালে উঠে বসে আছে। উঠে দেখে, আরও উঁচা উঁচা ডালে বসে আছে ইংল্যান্ড, ভারত, এমনকি পাকিস্তানও। বসে চোখ টিপছে আমাদের দিকে। আশা-ভরসা তাদের আরো বেশি।

জাতীয় পুরুষ ক্রিকেট দলে জাতির পুরুষ-স্বভাবের প্রতিফলন দারুণভাবেই দেখা যায়। বাঙালি এমনই। আবেগে-উত্তেজনায় কখনো বিরাট কিছু করে বসে। জলোচ্ছ্বাসের মতো আবেগ জাগে, আমরা লার্জার দ্যান লাইফ কিছু করে ফেলি। আবার দেখা যায়, আবেগের বেলুন বুদ্ধির ফেরে পড়ে চুপসে যায়। আমরা হেরে যাই। লক্ষ্যে পৌঁছানোর ‘কিলার ইনস্টিংক্ট’ আমাদের কম। দুর্ধর্ষ শিকারি পুরো পাখিটাও দেখে না, দেখে শুধু তীর বিঁধাবার জায়গাটা। নিশানার দিকে একমনে তাকিয়ে থাকার ধৈর্য আমরা হারিয়ে ফেলি। আমাদের আবেগ যত, ইচ্ছাশক্তি ও সংকল্পের জোর ততটা নয়। কিন্তু মাশরাফি আলাদা হয়ে উঠেছেন। বাঙালিসুলভ ‘আমি’ ভাব তাঁর কম, একটানা লেগে থাকা বেশি। তাঁর গুণটা দলের মধ্যেও সংক্রমিত হচ্ছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সাকিব-মাহমুদুল্লাহ যে সংকল্প ও দুর্দমনীয় নৈপুণ্য দেখাল, তাও বাঙালি স্বভাবে বিরল। এসব দেখে আশায় বসত করতে কার না ইচ্ছা হবে? জ্বি শেবাগ, এই বাংলাদেশকে গোণায় ধরতে হবেই।

ভারতীয় দলের তারকা খেলোয়াড় শেবাগের মন্তব্য নিয়ে দিকে দিকে শোরগোল। ওদিকে রটানো হলো, ইমরান খানও আমাদের কটু কথা বলেছেন। কে শুনেছে, কে দেখেছে তার বালাই নেই, দম মওলা বলে দল বেঁধে ইমরানের গুষ্টি উদ্ধারের পর দেখা গেল, তিনি আসলে ভারতের কাছে পরাজয়ের জন্য পাকিস্তানকেই গঞ্জনা দিয়েছেন। বাংলাদেশ নিয়ে মুখ খোলার ফুরসত তিনি পাননি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলেভুলানো ছড়ার কথা মনে পড়ল,

‘কে মেরেছে, কে ধরেছে, কে দিয়েছে গাল।
তার সঙ্গে গোসা করে ভাত খাও নি কাল॥
কে মেরেছে, কে ধরেছে, কে দিয়েছে গাল।
তার সঙ্গে কোঁদল করে আসব আমি কাল॥’

কাল নয়, কোঁদল ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। আগেকার দিনের মানুষেরা শিকারের আগে দেয়ালে দাগ কেটে তির ছুড়ে ছায়াশিকার করতেন। আর ভাবতেন আসল শিকারও এমন অব্যর্থ হবে। ফেসবুকে-গণমাধ্যমে সেই ছায়াযুদ্ধের উদ্বোধন ঘটে গেছে। একদিকে ব্রিটিশ পরাশক্তি, অন্যদিকে উপমহাদেশের তিন প্রতিদ্বন্দ্বী: ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। ঔপনিবেশিক আমলেও ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্য ছিল না, আজও নাই। ইংল্যান্ড নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না ত্রিদেশীয় ভক্তরা। তাদের যাবতীয় গোস্যা উপমহাদেশীয় ভাই-বেরাদরদের বিরুদ্ধে। ‘আমরা সবাই শত্রু আমাদেরই সবার বিরুদ্ধে’—এই নিয়মে ফেসবুকীয় ছায়াযুদ্ধ চলছে। ইন্ধন জোগাচ্ছে কিছু দায়িত্বজ্ঞানহীন অনলাইন পোর্টাল। পেশাদার ধুনকরেরাও নিজ নিজ ধুনে টাইট দেওয়া শুরু করেছেন। প্রতিপক্ষকে কথা দিয়ে তুলাধুনা করায় তাঁরা অনুপম। ব্যাপক আয়োজন, তুমুল মনোভাব। কিসের নির্মল বিনোদন, এ তো পুরোদস্তুর যুদ্ধের ডামাডোল।


ক্রিকেট বাস্তবতা ভোলানোর আফিম না হয়ে, দেশপ্রেমের টনিক হোক

জার্মান সমরবিদ ক্লসেভিৎজ বলেছিলেন, রাজনীতি হলো অন্য উপায়ে চালানো যুদ্ধ। যুদ্ধকে তিনি শিল্পের মর্যাদাও দিতেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যে যুদ্ধের আমেজ, ভক্তদের রেষারেষি, তা বোঝাচ্ছে ক্রিকেট হলো অন্য উপায়ে চালানো যুদ্ধ এবং ইহাও শৈল্পিক। তবে খেলোয়াড়দের প্রতিযোগিতায় যে শিল্প থাকে, ভক্তদের অনেকের ভাষা তার সম্পূর্ণ বিপরীত। গত বিশ্বকাপে ভারতীয় পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে নিয়ে করা অবমাননাকর ‘মওকা মওকা’ বিজ্ঞাপন, ফেসবুক ট্রলে এর ভূরি ভূরি প্রমাণ ছিল। জবাবে আমরাও কম যাইনি। এবারও হিংসার হাওয়া উড়ু উড়ু করছে। জেগে উঠেছে ক্রিকেটীয় জাতীয়তাবাদ। ফরাসি রাষ্ট্রনেতা চার্লস দ্য গ্যল বলেছিলেন, নিজের দেশকে ভালোবাসা দেশপ্রেম, আর অপর জাতিকে ঘৃণা করা হলো জাতীয়তাবাদ। ক্রিকেটের বেলায় এই বক্তব্য ষোলো আনাই ফলেছে। খেলা তাই শুধু খেলা নয়, তা জাতীয়তাবাদের কোমল অস্ত্র এবং অস্ত্রটি অতীব ধারালো। এ এক দুধারী তলোয়ার, যার হাতল নেই। নিজের হাত রক্তাক্ত না করে এ দিয়ে প্রতিপক্ষকে আঘাত করা যায় না।

গত বিশ্বকাপের ঘটনা। ইংল্যান্ডকে দুর্দান্ত দাপটে হারিয়ে লাল-সবুজ পতাকা মাথায় বেঁধে তরুণ অধিনায়ক মিডিয়া-মঞ্চে এলেন। তাঁকে দেখে অনাস্বাদিত সুখে বিহ্বল হয়ে গিয়েছিল বিদেশে জন্মানো ও বড় হওয়া বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তারুণ্য। এ এক অদ্ভুত অনুভূতি, লোকে যাকে দেশপ্রেম বলে। কিন্তু প্রতিপক্ষকে ঘৃণা করে বলা কথায় চাঙ্গা হয় জঙ্গি জাতীয়তাবাদ। আজকের দুনিয়ার অনেক দুর্দশার জন্ম এ রকম ঘৃণা থেকেই।

কিন্তু একজন অন্য রকম। তাঁর নাম মাশরাফি মুর্তজা। তাঁর কথাগুলোই আবার মনে করিয়ে দিই, ‘কিছু হলেই আমরা বলি, এই ১১ জন ১৬ কোটি মানুষের প্রতিনিধি। আন্দাজে! তিন কোটি লোকও হয়তো খেলা দেখেন না। দেখলেও তাঁদের জীবন-মরণ খেলায় না। মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন রাজনীতিবিদেরা, তাঁদের স্বপ্ন ভবিষ্যৎ অন্য জায়গায়। এই ১১ জন মানুষের ওপর দেশের মানুষের ক্ষুধা, বেঁচে থাকা নির্ভর করে না। ক্রিকেটারদের দিকে নয়, দেশের মানুষকে তাকিয়ে থাকতে হবে একজন বিজ্ঞানী, একজন শিক্ষাবিদের দিকে। ক্রিকেটাররা নন, মুক্তিযোদ্ধারাই হচ্ছেন এ দেশের প্রকৃত বীর। চিকিৎসক, শ্রমিক, কৃষকেরা হচ্ছেন প্রকৃত তারকা। দেশের তুলনায় ক্রিকেট অতি ক্ষুদ্র একটা ব্যাপার।’

বলে যান মাশরাফি, ‘খেলা কখনো একটা দেশের প্রধান আলোচনায় পরিণত হতে পারে না। দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার আছে যার সমাধান বাকি। সেখানে ক্রিকেট নিয়ে পুরো জাতি, রাষ্ট্র এভাবে এনগেজ হতে পারে না। আজকে আমাদের সবচেয়ে বড় তারকা বানানো হচ্ছে, বীর বলা হচ্ছে, মিথ তৈরি হচ্ছে। এগুলো হলো বাস্তবতা থেকে পালানোর ব্যাপার।’

হ্যাঁ, আমাদের পালানোর জায়গা দরকার হয়। কারণ, আমাদের বাস্তবতাটা সুখকর নয়। এই যে অভাবী লোকের না খাওয়ার দিন আবার শুরু হচ্ছে, পাহাড়ধসে ৩৫ জনেরও বেশি মানুষের মর্মান্তিক মৃত্যু হলো। সবদিকেই আশা মরে যাচ্ছে। বিশালসংখ্যক শিক্ষিত তরুণ বেকার, তারাই আবার মাতিয়ে রাখছে ফেসবুক। ব্যক্তিগত হতাশা থেকে তাদের অনেকে রাগী ভাষায় তর্কে জড়াচ্ছে। খেলায় না জিতলে যে জাতি সম্মিলিত অবসাদে পতিত হয়, তারা আশা করে, ক্রিকেট তাদের সব দুঃখ-দুর্দশা ভুলিয়ে দেবে। বাইপোলার ডিজঅর্ডারে ভুগে আমরা একবার বিরাট আশায় বুক বাঁধি, আবার পরক্ষণেই ব্যর্থতার হতাশার হাত-পা ছড়িয়ে গর্তবাসী হই। অতি আনন্দ আর বিপুল দুঃখের এই চরমভাবাপন্ন জাতিকে সুখী করার দায়িত্ব ক্রিকেটারদের একার নয়। এ দায়িত্ব প্রধানত যাঁরা সংসদে বসে সিদ্ধান্ত নেন, দেশ চালান, তাঁদের। খেলার জয় আমাদের একদিনের সুখ দেয়, কিন্তু সারা বছরের বাঁচা-মরা তো তাঁদের ওপরই নির্ভরশীল। দেশপ্রেমের প্রমাণ শুধু খেলোয়াড়েরাই রাখবেন, আর সবাই নিজেরা কিছু করবেন না, এমনটা অন্তত আমাদের ক্যাপ্টেন মাশরাফি মনে করেন না।

মাশরাফি বলেন, ‘আমি ক্রিকেটার, একটা জীবন কি বাঁচাতে পারি? একজন ডাক্তার পারেন। কই, দেশের সবচেয়ে ভালো ডাক্তারের নামে কেউ তো হাততালি দেয় না! তাঁদের নিয়ে মিথ তৈরি করুন, তাঁরা আরও পাঁচজনের জীবন বাঁচাবেন। তাঁরাই তারকা। তারকা হলেন শ্রমিকেরা, দেশ গড়ে ফেলছেন। ক্রিকেট দিয়ে আমরা কী বানাতে পারছি? একটা ইটও কি ক্রিকেট দিয়ে বানানো যায়? একটা ধান জন্মায় ক্রিকেট মাঠে? যারা ইট দিয়ে দালান বানায়, কারখানায় এটা-ওটা বানায় বা খেতে ধান জন্মায়, তারকা হলেন তাঁরা।’

আমাদের জাতীয় কল্পনার প্রতিচ্ছবি ক্রিকেট হোক, কিন্তু তা যেন অবাস্তব ফ্যান্টাসি হয়ে না ওঠে। আমাদের বনের বাঘ বাঁচানোর খবর নাই, কিন্তু মনের বাঘ খামাখাই হুংকার দেয়। মাশরাফি তাই বলে চলেন, ‘এই যারা ক্রিকেটে দেশপ্রেম দেশপ্রেম বলে চিৎকার করে, এরা সবাই যদি একদিন রাস্তায় কলার খোসা ফেলা বন্ধ করত, একটা দিন রাস্তায় থুতু না ফেলত বা একটা দিন ট্রাফিক আইন মানত, দেশ বদলে যেত। এই প্রবল এনার্জি ক্রিকেটের পেছনে ব্যয় না করে নিজের কাজটা যদি সততার সঙ্গে একটা দিনও সবাই মানে, সেটাই হয় দেশপ্রেম দেখানো। আমি তো এই মানুষদের দেশপ্রেমের সংজ্ঞাটাই বুঝি না!’

আমাদের আজ সর্বাঙ্গে ব্যথা। ব্যথা দূর করবার জন্য বাম (Balm) বা মলম ব্যবহার করা হয়। এই বাম তিন প্রকার, এক প্রকার হলো মিল্লাত বাম। এই বাম অল্প ব্যথায় কার্যকর। আরেক প্রকার হলো বিধিবাম, সবকিছু ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দেনেওয়ালারা এই বাম সেবন করেন। আর কঠিন ব্যথা সারায় টাইগার বাম। সব বামের বড় বাম হলো টাইগার বাম।

মাশরাফির কথাগুলো আমাদের দুঃখ-হতাশা, উগ্রতা, আত্মপ্রেমের অসুখে টাইগার বামের কাজ করুক। ক্রিকেট বাস্তবতা ভোলানোর আফিম না হয়ে, দেশপ্রেমের টনিক হোক। বাংলাদেশ ক্রিকেটকে আর তুচ্ছ করা যাবে না, মাশরাফির হাত ধরে আমাদের ছেলেরা আরও উঠে আসবে। মেয়েরাও পাল্লা দিচ্ছে তো। সঙ্গে সঙ্গে আমরাও যেন মনে, চিন্তায় এবং আচরণের সভ্যতায় ওপরে উঠে আসি। টাইগার মাশরাফি পথ দেখাক।

Pages: 1 ... 3 4 [5] 6 7 ... 38