-
(https://i1.wp.com/www.the-prominent.com/wp-content/uploads/2016/06/13427920_10154338768897203_5147141716313012333_n.jpg?w=448)
১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করে প্রথম জীবনে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কম্পানিতে নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করি। নিজের ৩০তম জন্মদিনে সেই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে চামড়াশিল্পের ব্যবসা শুরু করি। এরপর অ্যাপেক্স গ্রুপ প্রতিষ্ঠা করি’, অ্যাপেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভার্সিটিতে (ডিআইইউ) এক বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনোভেশন অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার দেশের শিল্প খাতের মোট ১২ জন উদ্যোক্তাকে নিয়ে আয়োজন করেছে ‘উদ্যোক্তা উন্নয়নবিষয়ক ডিআইইউ ইন্ডাস্ট্রি একাডেমিয়া বক্তৃতামালা’। ১২ পর্বের লোকবক্তৃতামালার দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয় গত ১১ জুন। সেই অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন মঞ্জুর এলাহী।শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মঞ্জুর এলাহী বলেন, একমাত্র কঠোর পরিশ্রম, সততা, নিষ্ঠা আর বিনম্রতার মতো গুণাবলিই পারে একজন সফল উদ্যোক্তা তৈরি করতে। তিনি শিক্ষার্থীদের নিজের ওপর অগাধ বিশ্বাস রাখতে এবং উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতে এবং সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে নিরলস পরিশ্রম করার আহ্বান জানান। তিনি নতুন উদ্যোক্তাদের গুণগত মান বজায় রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টার পাশাপাশি সুনাম ধরে রাখারও আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন ইউনির্ভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সবুর খান, উপাচার্য প্রফেসর ড. ইউসুফ মাহাবুবুল ইসলাম ও ইনোভেশন অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের পরিচালক মো. আবু তাহের।
আমন্ত্রিত এই ১২ জন সফল উদ্যোক্তার বক্তৃতাগুলো নিয়ে পরবর্তী সময়ে একটি বই প্রকাশিত হবে, যা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ব্যবসা, অথনীতি ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর শিক্ষার্থীদের জন্য রেফারেন্স বই হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করবে। এই ১২ জন উদ্যোক্তার ওপর ডিআইইউ থেকে ১২টি প্রামাণ্যচিত্রও নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ডিআইইউ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই লোকবক্তৃতামালা নতুন প্রজন্মের সৎ, শিক্ষিত ও মেধাবী উদ্যোক্তাদের সাহস, নিষ্ঠা ও দক্ষতার সঙ্গে সামনে এগিয়ে যেতে সাহায্য ও অনুপ্রাণিত করবে। উদ্যোক্তা উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তার সম্ভাবনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ গতিতে এগোতে পারছে না বলে যে ধারণা চালু রয়েছে, এ লোকবক্তৃতামালা সেই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।
-
অ্যাপেক্স মানে ‘চূড়া’।অ্যাপেক্স মানে শীর্ষ স্থান। একটু একটু করে ব্যবসার চূড়ায় উঠেছেন সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী। তিনি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গোষ্ঠী, অ্যাপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান৻ মঞ্জুর এলাহী বিভিন্ন মেয়াদে ঢাকা মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কর্মাস অ্যান্ড ইন্ডাষ্ট্রি, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স এসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ ব্যাংকার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন৻ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসাবে দু’বার তিনি শিল্প এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেছেন। ১১ জুন ইনোভেশন অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের (আইআইসি) আয়োজনে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির মিলনায়তনে তরুণ শিক্ষার্থীদের সামনে এই সফল ব্যবসায়ী শুনিয়েছেন তাঁর উদ্যেক্তা হয়ে ওঠার সংগ্রামমুখর দিনের গল্প।
ধরাবাঁধা জীবন, গতানুগতিক স্বপ্ন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর পরীক্ষা শেষ করেছেন। এখন কী করবেন মঞ্জুর এলাহী? চারপাশে তাকিয়ে দেখলেন, বন্ধুরা সবাই সিএসপি (পাকিস্তান সার্ভিস কমিশন) পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনিও সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেন। ওই সময়ের এক দিনের ঘটনা। মঞ্জুর এলাহী জিন্নাহ এ্যাভিনিউ (বর্তমান নাম বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউ) দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। পথে দেখা হলো পরিচিত এক বড় ভাই হুমায়ুন খান পন্নীর সঙ্গে। তিনি জানতে চাইলেন, আজকাল কি করছিস? মঞ্জুর এলাহী বললেন, ‘এমএ পরীক্ষা দিয়েছি। এখন সিএসপি পরীক্ষা দেব। প্রস্তুতি নিচ্ছি।’ তিনি বললেন, ‘সিএসপি পরীক্ষা দিয়ে কী হবে। ক’পয়সা পাবি? তুই চাকরি করবি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে।’ তারপর সেই ভদ্রলোকের সহযোগিতায় বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানিতে চাকরি হয়ে গেল মঞ্জুর এলাহীর।
(https://i0.wp.com/www.the-prominent.com/wp-content/uploads/2016/06/13435413_10154338769042203_4321601184115652884_n.jpg?w=448)
ইন্টারভিউ বোর্ডে মজার অভিজ্ঞতা
পাকিস্তানের করাচি গেলেন ইন্টারভিউ-এর জন্য। ইন্টারভিউ বোর্ডে দেখলেন সবাই ইংরেজ। কয়েকটি সাধারণ প্রশ্নের পর তারা মঞ্জুর এলাহীর কাছে জানতে চাইলেন, মাইনে কত চান। মঞ্জুর এলাহী ভাবলেন, সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা পাশ করলে তো চারশ টাকা বেতন। সিভিল সার্ভিসের একটা ক্ষমতা আছে। এই চাকরিতে তো কোনো ক্ষমতা নাই। সুতরাং দ্বিগুণ বেতন চাওয়া উচিত। অতএব অনেক ভেবেচিন্তে তিনি ৯০০ টাকা বেতন চাইলেন। শুনে বোর্ডের লোকজন মুচকি হাসতে শুরু করলেন। এটা দেখে একটু দমে গেলেন মঞ্জুর-এই রে! বেশি বলে ফেলেছি মনে হয়! তিনি ঢোক গিলে বললেন, ‘না না, আমার ছয় শ টাকা হলেই চলবে।’ এবার ইন্টারভিউ বোর্ডের সবাই হো হো করে হেসে উঠলেন। মঞ্জুর এলাহীর মন খারাপ হয়ে গেল।চাকরিটা বোধ হয় আর হলো না। নিজেকে সান্ত্বনা দিলেন-কোনোদিন করাচি আসেননি। করাচি দেখা হলো, এটিই বা কম কি?
তারপর ফাইনান্স ডিরেক্টর বললেন যে, এই প্রতিষ্ঠানের বেতন শুরুই হয় ১৯০০ টাকা থেকে। তারপর তারা থাকার জায়গা দেবেন। আরো অনেক কিছু।শুনে তো আকাশ থেকে পড়লেন মঞ্জুর এলাহী। এভাবে চাকরিটা হয়ে গেল।
চাকরি ছাড়লেন ৩০তম জন্মদিনে
২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭২।তিরিশতম জন্মদিনে চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় প্রবেশ করলেন মঞ্জুর এলাহী। পুঁজি ছিল ১৫ হাজার টাকা। তা নিয়েই ৩০ বছর বয়সে ব্যবসা শুরু করেন সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী। প্রেক্ষাপট এরকম : শ্বশুরের বাসায় বেড়াতে গেছেন। সেখানে দেখা হলো শ্বশুরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সঞ্জয় সেনের সঙ্গে। তিনি মঞ্জুর এলাহীকে বললেন, ‘কতদিন আর চাকরি করবা? চাকরি ছেড়ে ব্যবসা করো।’ কথা বলতে বলতে তাদের মাঝে ঠিক তখনই উপস্থিত হন এক ফরাসি ভদ্রলোক রেমন্ড ক্লেয়ার। তিনি চামড়ার ব্যবসায়ী। কার্গো প্লেনে ফ্রান্স থেকে ট্যানারি কেমিক্যালস নিয়ে এসে হাজারীবাগ ট্যানারি এলাকাতে বিক্রি করেন। তিনি মঞ্জুরকে সরাসরি প্রস্তাব দিলেন, ‘তুমি এখানে আমাকে রিপ্রেজেন্ট কর।’
মঞ্জুর এলাহী আর না করলেন না। নেমে পড়েলেন ব্যবসায়।
ব্যবসায় তো নামলেন, কিন্তু পথ তো চেনেন না। কারণ পরিবারের কেউই কোনোদিন ব্যবসা করেননি। অতএব অচেনা পথে যাত্রা শুরু করে অনেক চড়াই উৎরাই পেরোতে হলো মঞ্জুর এলাহীকে। কেমন ছিল সেই সংগ্রাম? মঞ্জুর এলাহীর নিজ মুখেই শোনা যাক :
প্রথমে আমাদের পুরো প্রোডাকশন জাপানে যেত। ব্যবসা ভালো ছিল, ব্যবসা চলছিল। ১৯৯৩-৯৪ সালে খেয়াল আছে জাপানি অর্থনীতি বিপর্যয়ের মুখে পড়ল। আমার ক্রেতা ব্যাংক খেলাপি হয়ে গেল। অনেকগুলো দোকান ছিল, দোকানগুলো বন্ধ হয়ে গেল। দোকানে বিক্রি হচ্ছে না। বিপদে পড়ে গেলাম। ইতালিতে গেলাম স্বাভাবিকভাবে। ইতালিতে তারা বলে, চামড়া ঠিক আছে? তোমরা জুতা কী বানাবে? ওই ইমেজ প্রবলেম। ভারত থেকে তারা জুতা কেনে। তখন চায়না চায়না, সবাই চীনের কথা বলছে। চায়না ছাড়া কোনো কথা নেই। চেষ্টা করলাম ১৯৯৩, ১৯৯৪, ১৯৯৫, ১৯৯৬। চার-পাঁচ বছরে প্রচুর লোকসান হলো। আমার কারখানার উৎপাদন কমে গেল। পুরো উৎপাদন ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারি না। জুতার প্রোডাক্ট ডেভেলপ করতে পারি না। জুতার বাজার গার্মেন্টসের মতো কিন্তু খুব ফ্যাশনেবল। একই জুতা কিন্তু বছরের পর বছর চলবে না। আর এখানে গার্মেন্টস-এর মতো দুটো ভিন্ন ঋতু আছে। বসন্ত-গ্রীষ্ম, শরৎ-শীত। তো খুবই অসুবিধায় ছিলাম। চার-পাঁচ বছর ধরে।যাকে আমরা চামড়া সাপ্লাই করতাম ইতালিতে, সাউথ ইতালিতে তার প্রচুর প্রডাকশন। খুব নাম করা সু ফ্যাক্টরি। তার কাছে আমি গিয়েছিলাম আমার নিজের ব্যবসার জন্য। চামড়া বিক্রি করার জন্য। তখন দেখলাম যে, সে আমাকে আগের মতো বড় পরিমাণে অর্ডার দিচ্ছে না। কারণ জিজ্ঞেস করতেই সে জানাল চাইনিজদের সঙ্গে সে পেরে উঠছে না। চাইনিজ গুডস, চাইনিজ সুজ সারা ইউরোপে কম দামে বাজার দখল করেছে। সিম্পল, ফ্রি মার্কেট ইকোনমি এসব কারণে সে আস্তে আস্তে আমি তার প্রডাকশন কমিয়ে দিচ্ছি। প্রডাকশন কম বলে স্বাভাবিকভাবেই সে চামড়া কম কিনছে। ফলে সে চায়নাতে শিফট করবে বলে মনস্থির করেছিল। তাছাড়া ইতালিতে শ্রম ব্যয় অনেক বেশি। গড়ে মাসে কর্মীদের বেতন প্রায় সাত হাজার ইউরো যেটা বেশি দিন চালিয়ে যাওয়া শ্রমঘন জুতার কারখানার পক্ষে সম্ভব না।
আমি তাকে বাংলাদেশে আসার প্রস্তাব করি। সে তখন বাংলাদেশ বলতেই বুঝত নিয়মিত বন্যা আর হরতাল। আমার বিশেষ অনুরোধে এবং অনেকদিনের সম্পর্কের কারণে বাংলাদেশে আসতে রাজি হয়। তারপর সে আমাদের সাথে জয়েন ভেঞ্চারের প্রস্তাব করে। এটাই হলো টার্নিং পয়েন্ট। কোম্পানির নাম হলো ‘এডেলকি’। সেই যে আমাদের যৌথ উদ্যোগ শুরু হলো তা এখনো চলছে।
অ্যাপেক্স মানে ‘চূড়া’
অ্যাপেক্স ইংরেজি শব্দ। এর শাব্দিক অর্থ চূড়া বা শীর্ষ স্থান। ছোটবেলা থেকেই সবকিছুতে শীর্ষ স্থান দখল করতে পছন্দ করতেন মঞ্জুর এলাহী। ব্যবসার শুরুতেও ভাবলেন, এক্ষেত্রে তাঁকে চূড়ায় উঠতে হবে। তাই প্রথম কিনে নেওয়া ‘ওরিয়েন্ট ট্যানারি’র নাম বদলে নতুন নাম রাখলেন ‘অ্যাপেক্স’। মঞ্জুর এলাহী বলেন, ‘ব্যবসায় ওঠানামা আছেই, কিন্তু আমি স্থির ছিলাম এই চামড়ার ব্যবসাতেই আমি থাকব। এখানেই ফোকাস করব। এখানেই নাম্বার ওয়ান হব। আমি গর্বের সঙ্গে আজকে বলতে পারি যে, ডেফিনেটলি আমরা এখন নাম্বার ওয়ান। রপ্তানির দিক থেকে বলেন, প্রোডাক্ট ডাইভারসিটির দিক থেকে বলেন, প্রোডাকশনের দিক থেকে বলেন, এপেক্স ট্যানারি নাম্বার ওয়ান। নাম্বার টু কিন্তু আমাদের অনেক নিচে।’
-
(https://i0.wp.com/www.the-prominent.com/wp-content/uploads/2016/06/2011-05-19-13-59-38-034655200-3.jpg?resize=246%2C300)
জন্ম ১৯৪২ সালে, কলকাতায়। বাবা স্যার সৈয়দ নাসিম এলাহী ছিলেন অবিভক্ত বাংলার প্রধান বিচারপতি। বড় ভাই বিচারপতি এস এ মাসুদ ছিলেন পশ্চিম বাংলার প্রধান বিচারপতি। চার ভাই তিন বোনের মধ্যে মঞ্জুর এলাহী চতুর্থ।
পড়াশোনার শুরু সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুলে। এরপর ক্লাস নাইনে ভর্তি হন বিহারের বোর্ডিং স্কুলে। সেখান থেকে পরে বিশপ ওয়েস্টকট স্কুল। এই স্কুল থেকেই ও লেভেল সম্পন্ন করেন মঞ্জুর এলাহী। তারপর ভর্তি হন সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে। সেখান থেকে ডিস্টিংশনসহ সপ্তম স্থান অধিকার করে গ্রাজুয়েশন করেন। এরপর ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন।
মঞ্জুর এলাহীর স্ত্রী নিলুফার চৌধুরী সানবিমস স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁদের এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে বাবার সঙ্গে ব্যবসা দেখভাল করেন। মেয়ে মায়ের সঙ্গে সানবিমস স্কুলে কাজ করছেন।
ব্যবসায়ীক জীবনে আদর্শ মানেন জে আর জি টাটাকে। কারণ হিসেবে বলেন, ‘প্রথমত তার সততা, প্রোফেশনালিজম। সম্পূর্ণ পেশাদারদের দিয়ে কোম্পানি চালায়। দ্বিতীয়ত প্রত্যেকটা কোম্পানিকে প্রাতিষ্ঠানিক একটা রূপ দিয়েছে। তৃতীয়ত তার সিএসআর, সোশ্যাল কর্পোরেট রেসপনসিবিলিটি বা সামাজিক দায়বদ্ধতা। আমার মনে হয় এত ভালো সিএসআর খুব কম কোম্পানির আছে। টাটা ক্যান্সার ইনস্টিটিউট থেকে শুরু করে টাটা ম্যানেজমেন্ট সেন্টার আছে। সম্পূর্ণরূপে তারা অরাজনৈতিক।’
অবসর সময়টুকু পরিবারের সঙ্গে কাটাতে পছন্দ করেন। মাছ, ডাল ও সাদা ভাত প্রিয়। রবীন্দ্রসংগীত পছন্দ করেন। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার গান প্রিয়।
-
(https://i0.wp.com/www.the-prominent.com/wp-content/uploads/2016/06/13407109_10154338768912203_3390197750938411697_n.jpg?w=448)
১১ জুন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অডিটোরিয়ামে ‘উদ্যোক্তা উন্নয়ন’ শীর্ষক লেকচার সিরিজে জীবনের সফলতার গল্প শুনিয়েছেন সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী। তিনি বলেন, ‘উদ্যোক্তা হতে হলে স্বপ্ন দেখতে হবে। সেই স্বপ্নের বাস্তবায়নে ঝুঁকি নিতে হবে এবং ব্যাংক থেকে অর্থসংস্থান করতে হবে। কারণ ব্যাংক হলো একজন উদ্যোক্তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে তিনি উপস্থিত শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
ব্যবসায় সফল হতে হলে কি করতে হবে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সফলতা একদিনে আসে না। তাই সফলতার জন্য কঠোর পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমেই সফলতা ধরা দেবে। এছাড়া ব্যবসায়ে ভালো এবং মন্দ সময় যাবে, সেটাকে মেনে নিতে হবে। তিনি আরো বলেন, ব্যবসায়ে সফলতার জন্য সবার আগে প্রয়োজন পণ্যের মার্কেটিং করা। প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের সাথে ভালো ব্যবহার করা এবং তাদের প্রতিমাসে নির্দিষ্ট তারিখে বেতন দেওয়া। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখাটাও দরকারি।
তিনি বলেন, সফলতার অন্যতম প্রধান ধাপ হলো সুনাম অর্জন করা। সুনাম এমন একটি জিনিস যা কখনো অর্থের মূল্যে পরিমাপ করা যায় না।
সৈয়দ মঞ্জুর এলাহি ছাড়াও উক্ত অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন পিএইচপি গ্রুপের চেয়ারম্যান সূফী মিজানুর রহমান, ড্যাফোডিল ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. সবুর খান, ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. ইউসুফ এম ইসলাম প্রমুখ। ইনোভেশন অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের (আইআইসি) আয়োজনে এটি ছিল দ্বিতীয় অনুষ্ঠান। এর আগে পিএইচপি গ্রুপের প্রধান সুফী মিজানুর রহমান শুনিয়েছেন তাঁর ব্যবসায়ী হয়ে ওঠার গল্প। আয়োজকরা জানান, ১২জন সফল উদ্যেক্তা পর্যায়ক্রমে তাঁদের উদ্যেক্তা হওয়ার গল্প শোনাবেন। অবশেষে এই ১২ জনের লেকচার নিয়ে প্রকাশ করা হবে একটি বই।
-
:) :)