Daffodil International University
Faculty of Science and Information Technology => Science and Information => Topic started by: Rabbany on June 03, 2012, 08:29:22 AM
-
বাংলাদেশে টেক্সটাইল ও পোশাকশিল্প হচ্ছে এদেশের অর্থনীতির মূলস্তম্ভ।প্রায় ৫০ লক্ষ লোক এই সেক্টরের সাথে সরাসরি জড়িত এবং দেশের মোট রফতানী আয়ের প্রায় ৮০ শতাংশ আসে এই সেক্টর থেকে। যখন একটি দেশের রফতানী আয় একটি মাত্র সেক্টর এর মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হয় তখন সেই সেক্টরটি কাদের দ্বারা কিভাবে পরিচালিত হচ্ছে তা অবশ্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
একজন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে আমি স্বাভাবিক ভাবেই গর্ব করতে পারি যে আমার স্পেশালাইজেশনের বিষয় টি দেশের অর্থনীতিকে সচল রেখেছে। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে কোনো টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি একই প্রযুক্তি নিয়ে পরে থাকে না। এই সেক্টরে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন প্রোডাক্ট ডেভেলপ হচ্ছে সেই সাথে নতুন মেশিন এবং প্রসেস উদ্ভাবিত হচ্ছে। আর টেক্সটাইলে প্রতিনিয়ত এই ধরনের নতুন প্রযুক্তির সমাবেশ হচ্ছে বলেই টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের এত দাম কেননা নতুন প্রযুক্তিকে ব্যবহার করতে শেখানোই হচ্ছে একজন ইঞ্জিনিয়ারের কাজ।
টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার যারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হবে স্বাভাবিক ভাবেই তাদের কাছ থেকে প্রতিশঠান গুলো আশা করবে যেন তারা নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার জেনে এবং শিখে আসে। কিন্তু বছরের পর বছর জুড়ে সেই একই কনভেনশনাল মেশিন যা ২৫ বছর আগে পড়ানো হতো তাই যদি এখনো পড়ানো হয় এবং যদি ইঞ্জিনিয়ার দের মধ্যে সর্বশেষ প্রযুক্তির ধারনা দেয়া সম্ভব না হয় তবে দেশের টেক্সটাইল সেক্টরের অবস্থা ভবিষ্যতে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তাই এখন চিন্তার বিষয়। আশার কথা হল দেশের টেক্সটাইল সেক্টরের উন্নতি সাধন কল্পে এবং ইঞ্জিনিয়ারদের ভেতরে গবেষনাধর্মী ও নতুন প্রযুক্তির ধারনা দেয়ার উদ্দেশ্য বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়।
এখানে শিক্ষালব্ধ জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে প্রযুক্তির উদ্ভাবন করে তা টেক্সটাইল শিল্পে বিনিময়করণ এবং বস্ত্রশিল্পের ও শিক্ষার মধ্যে সেতুবন্ধন স্থাপন করার চেষ্টা করা হয়।
যেহেতু একটি বিশ্ববিদ্যালয় নিছক সার্টিফিকেট দেয়ার জায়গা নয় এটি একটি গবেষণা করার জায়গা তাই গবেষণা এবং উতকর্ষের ধাপগুলো কী হবে তাও ঠিক করা হয়।
এগুলো হলোঃ-
১.নতুন টেক্সটাইল মেশিন উদ্ভাবন
২.নতুন প্রক্রিয়া উদ্ভাবন
৩.নতুন টেক্সটাইল কেমিক্যাল তৈরী এবং তার মান উন্নয়ন
৪.মেশিন আপগ্রেড করা এবং উতপাদন বৃদ্ধির সুযোগ তৈরী করা
এখন যারা এই কাজ গুলো করবে তারা মানসম্পন্ন শিক্ষা পাচ্ছে কিনা অথবা যেখান থেক শিক্ষা নিচ্ছে সেখানে কি শুধুই চাকরী করার জন্য পড়ানো হয় কিনা তা খুবই গুরুত্বপুর্ণ।
বাংলাদেশের টেক্সটাইল শিক্ষা ব্যবস্থা এখনো খুবই দুর্বল এবং আন্ত্ররজাতিক মানসম্পন্ন নয়। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এদেশের টেক্সটাইল শিক্ষা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গুলোর একটি সম্ভাব্য চিত্র হলোঃ
সরকারী টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়=১
টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগ=২
বেসরকারী টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়=১২
বেসকারী টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়=১২
সরকারী টেক্সটাইল কলেজ=৪
বেসরকারী টেক্সটাইল কলেজ=৪
সরকারী টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট=২
বেসরকারী টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট= ১১
সরকারী ভোকেশনাল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট=৩৮
বেসরকারী ভোকেশনাল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট=৫
আগেই বলেছি আমাদের দেশে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়াশোনা এখনও আন্তর্জাতিক মান্সম্পন্ন হয়নি।তাই ফরেন ইনভেস্টররা কিংবা খোদ বাংলাদেশী উদ্যোক্তারাও তাদের উচুপদ গুলোতে কিংবা ব্যবস্থাপক/মহাব্যবস্থাপক পদ্গুলোতে বাংলাদেশী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার রাখতে চাননা। এই সুবাদে বাংলাদেশে এখন ভারত, শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানের প্রায় ১৭০০০ বৈধ-অবৈধ ইঞ্জিনিয়ার এবং ব্যবস্থাপক কাজ করছেন যারা বাংলাদেশীদের থেকে খুব যে আহামরি বেশি কাজ জানেন তা কিন্তু নয়। এর পিছনে মূল কারণ আমাদের বিদেশপ্রীতি এবং দেশীয় শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল দশা। এইসকল বিদেশীরা প্রতিবছর বিপুল অঙ্কের টাকা বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে যা পাওয়ার কথা ছিল আমাদের। আমরা পেপার পত্রিকায় প্রায় দেখি বাংলাদেশ এবছর এত জিডিপি অর্জন করেছে, কিংবা এত পরিমানে রফতানী করেছে , কিন্তু পেপার গুলোতে আসে না যে এই টাকার একটা বড় অংশ চলে যায় ওইসব বিদেশীদের বেতন দিতে। আমাদের দীশীয় উদ্যোক্তারা যদি ওইসব বিদেশীদের দেয়া বেতনের শতকরা ৫ ভাগ বিনিয়োগ করতেন দেশিয় টেক্সটাইল শিক্ষার উন্নতির পিছনে তবে দেশের টাকা যেমন দেশে থাকতো তেমনি কর্মসস্থান ব্যবস্থাও আগের চেয়ে উন্নত হতো।
দেশের এই মুহুর্তে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের সংখ্যা জানতে পারবেন নিচের পাই চার্ট থেকে।
(ছবি এড হয় না :( :( :( :( :( :( :( )
লক্ষ্য করুন এখানে পিএইচডি হোল্ডার এবং এমএসসি মাত্র ২%।
শুধু ওয়ার্কিং সেক্টরে নয়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও রয়েছে ব্যপক ঘাটতি। এখানে মাত্র ৫৬ জন (পিএইচডি/এমএসসি/এমবিএ-টেক্সটাইল) কাজ করছেন যা দেশের এত বড় সেক্টরকে নিয়ন্ত্রন করতে পারছে না। ফলশ্রুতিতে টেক্সটাইল ইন্ড্রাষ্ট্রি গুলো বাধ্য হয়ে বিদেশী ইঞ্জিনিয়ার আনছে।দুঃখের বিষয় প্রতিবেশী একটি দেশ বাংলাদেশের টেক্সটাইল সেক্টর কে ধংশ করার এজেন্ডা নিয়ে বিভিন্ন সময় কাজ করে চলেছে। আপনারা নিশ্চইয়ই শুনে থাকবেন গত ৫ বছরে প্রায় ১০০ টি মাঝারি মানের প্রতিষ্টান হয় বন্ধ নয়তো মালিকানা বিচ্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছে যা খুবই আশঙ্কাজনক।
আসুন এবার দেখি দেশের টেক্সটাইল সেক্টরের মুল নায়ক টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের কী অবস্থা। জরিপের মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে বস্ত্রশিল্পের গড় প্রবৃদ্ধি ২০ শতাংশ ধরে ইঞ্জিনিয়ার দের চাহিদা এবং এর বিপরীতে সরবরাহ দেখি।
(ছবি এড হয় না :( :( :( :( :( :( :( )
দেখতেই পারছেন ২০১৩ সালেই খালি পদ এবং ইঞ্জিনিয়ার সাপ্লাই সমান সমান হয়ে যাবে। অর্থাত টেক্সটাইলের এতদিনের গর্ব “পাশ করিবার পুর্বেই চাকুরী নিশ্চিত†ধারনাটি হয়ত ২০১৪ সালের পর আর থাকছে না। আরেকটি ব্যাপার হল ২০১৫ সালে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের চাহিদা যতটা বারবে বিএসসি দের চাহিদা সেই তুলনায় বাড়বে না। তাহলে আমরা যাবো কোথায়?
এই প্রশ্ন সব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদেরই আসতে পারে। উত্তর হচ্ছে আমাদের এখন আর সেই পুরোনো কনভেনশনাল কন্সেপ্ট নিয়ে পরে থাকলে হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষনা বাড়াতে হবে। ছাত্রদের হাতে নতুন প্রযুক্তির জ্ঞান পৌঁছে দিতে হবে। সর্বপরি ওইসব বিদেশী ইঞ্জিনিয়ারদের জায়গা যোগ্যতা দিয়ে আমাদের অর্জন করতে হবে।
তবে এটাও বলে রাখা প্রয়োজন। আমাদের টেক্সটাইল শিল্পের উদ্যোক্তারা যদি তাদের বিদেশপ্রীতি না কমাতে পারেন তবে আমদের জন্য দুঃসনবাদ।
তবে আশার কথা এই সব লক্ষ্য মাথায় রেখেই টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় সহ আরও কয়েকটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় তাদের পড়াশোনার মান উন্নয়ন করার লক্ষে তাদের যাত্রা শুরু করেছে এবং আশা করা যায় ২০১৪ সালের মধ্যেই কোয়ালিটি সম্পন্ন শিক্ষা এবং কোয়ালিফায়েড ইঞ্জিনীয়ার সরবরাহ করতে সক্ষম হবে এই বিশ্ববিদ্যালয় গুলো।এই বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে আমাদের প্রিয় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশ্লান ইউনিভার্সিটি অন্যতম।
-
ভাল লাগুক আর খারাপ লাগুক কমেন্ট করবেন প্লিজ তাহলে সামনে হয়ত আর কিছু শেয়ার করার প্রেরণা পাব :) :) :) :)
-
Please share your thoughts.
-
Good going.....Mr. Rabbani!!! Nicely presented......please share more information.
-
Encourages all to sincere about textile sector
-
Thank you for sharing ...
-
Its necessary to catch the whole textile job sector with our BANGLSDESHI Engineers and employee.
-
আমি আমার জানা তথ্যগুলো জানানোর একটি ক্ষুদ্র প্রচেস্টা করলাম। আপনাদের ভাল লাগলো শুনে আমি খুবই অনুপ্রানিত হলাম। আশা করি আমার জানা তথ্য দিয়ে আপনাদের মন জয় করার চেস্টা করব আগামীতে ইনশাল্লাহ
আমার একাডেমিক পরিচয় নিচে দিলাম
MD. Abdur Rouf
I.D: 103-23-2230
-
Good post