Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - Ishtiaque Ahmad

Pages: 1 [2] 3 4 ... 8
16
ক্রিপ্টোকারেন্সি ‘বিটকয়েন’ (bitcoin) এর ব্যবহার ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলছে। গত ১৫ আগস্ট বাংলাদেশ এশিয়ার মধ্যে প্রথম দেশ হিসেবে বিটকয়েন ফাউন্ডেশনের সদস্যপদ পেয়েছে। কিন্তু বিটকয়েন কি, কিসের জন্য? কি কাজে প্রয়োজন? এরকম নানাবিধ প্রশ্নের উত্তরের সন্ধানে বাংলানিউজ তার পাঠকদের জন্য  নিয়ে এসেছে বিটকয়েন-এর উপর ধারাবাহিক প্রতিবেদন। প্রথম পর্বে থাকছে  ক্রিপ্টোকারেন্সি ‘বিটকয়েন’ পরিচিতি।

সাধারণত কাগজের তৈরি প্রচলিত মুদ্রা বা এ সংশ্লিষ্ট কোন ডিজিটাল স্বাক্ষর সম্বলিত বস্তু ব্যবহার করে বাস্তব জীবনে এবং অনলাইনে লেনদেন সংক্রান্ত ব্যাপারগুলো আপাতঃ দৃষ্টিতে কোন প্রকারের সমস্যা ছাড়াই মিটিয়ে ফেলা যায়। তবে বর্তমানে ব্যবহৃত এটিএম কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড অথবা অন্য ডিজিটাল স্বাক্ষর সম্বলিত বস্তুগুলো ব্যবহারে দুটি বড় সমস্যা রয়েছে।

এসবে লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহক ও গ্রহিতা উভয়কে তৃতীয় কোন পক্ষের উপর ‘ট্রাস্ট’ বা আস্থা রাখতে হয়, উদাহরণস্বরূপ ব্যাংক। তৃতীয় পক্ষ এই ব্যাংকে উভয় পক্ষ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের মুদ্রা পরিশোধ করে, যেটিকে ইংরেজীতে বলে ‘ডাবল স্পেন্ডিং’।

বিটকয়েনের উৎপত্তি
উপরোক্ত সমস্যার সমাধানে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামে একব্যক্তি ২০০৮ সালের অক্টোবার মাসে ৯ পৃষ্ঠার “Bitcoin: A Peer-to-Peer Electronic Cash System” নামক এক গবেষণা প্রস্তাবনা অনলাইনে প্রকাশ করে। যেখানে প্রথম বিটকয়েন সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়।

প্রস্তাবনার সারসংক্ষেপে বলা হয়, একটি পিয়ার-টু-পিয়ার (peer-to-peer) ইলেক্ট্রনিক মুদ্রা পরিশোধের ব্যবস্থা প্রয়োজন, যেটির মাধ্যমে একজন অন্যজনকে কোন তৃতীয় পক্ষ বা প্রতিষ্ঠানের কাছে না গিয়েই লেনদেন সম্পন্ন করতে পারবে। একই সঙ্গে ‘ডাবল স্পেন্ডিং’ থেকে বিরত থাকতে পারবে। এই ব্যবস্থায় সব ধরনের লেনদেন সম্পন্ন হবে আস্থার পরিবর্তে ‘কাজের (লেনদেন) প্রমাণের’ ভিত্তিতে এবং সব ধরনের লেনদেন একটি নিদিষ্ট নেটওয়ার্কে লিপিবদ্ধ হবে।

প্রস্তাবনা প্রকাশের পর থেকে সাতোশি বিটকয়েন ‘মাইনিং’ এর জন্য প্রথম সফটওয়্যার তৈরি করে। ‘মাইনিং’ হচ্ছে যে পদ্ধতিতে বিটকয়েন তৈরি করা হয়। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে সাতোশি প্রথম বিটকয়েন মুদ্রা রিলিজ করে।

এই সাতোশি নাকামোতোর আসল পরিচয় আজও অজানা।

বিটকয়েন কি?
সুতরাং ‘Bitcoin’ – ইংরেজীতে B, ক্যাপিটাল লেটারে– হচ্ছে একটি পিয়ার-টু-পিয়ার নেটওয়ার্ক যেখানে আস্থাভাজন তৃতীয় পক্ষ ছাড়াই মুদ্রার মালিকানা পরিবর্তন সম্ভব, আর এই নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত একক হচ্ছে ‘bitcoin’- ইংরেজীতে b, স্মল লেটারে – যেটি সম্পূর্ণরূপে ডিজিটাল উপায়ে ক্রিপ্টোগ্রাফির মাধ্যমে কম্পিটার কোডিং ব্যবহার করে তৈরি হয়।

বিটকয়েনের বৈশিষ্ট্য
সম্পূর্ণ ডিজিটাল উপায়ে তৈরি, বাস্তবে এটির কোন ফিজিক্যাল (physical) অস্তিত্ব নেই। কোন কেন্দ্রীয় ব্যাংক এটি নিয়ন্ত্রণ করেনা। ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের উদ্যোগে বিশ্বব্যাপী এটি ব্যবহারের ফলে এর মুদ্রা ব্যবস্থা চলমান রয়েছে। পিয়ার-টু-পিয়ার ব্যবস্থার কারণে কোন প্রতিষ্ঠান বা মিডলম্যান ছাড়াই সরাসরি লেনদেন সম্পন্ন হয়। ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবহৃত হওয়ার কারণে উপযুক্ত অনুমতি ছাড়া বিটকয়েনের অ্যাকসেস নেওয়া  অসম্ভব।  সর্বোপরি, বিটকয়েনে  সম্পূর্ণরূপে ছদ্দনামে লেনদেন সম্ভব।

প্রচলিত মুদ্রা এবং বিটকয়েনের মধ্যে পার্থক্য
পৃথিবীব্যাপী ব্যবহৃত প্রচলিত মুদ্রাগুলো মূলত কাগজের তৈরি। যেকোন প্রকারের সেবা আদান-প্রদানের হিসাব নিকাশের মূলে থাকে কাগজের তৈরি মুদ্রা। যে উপায়েই সেবা আদান-প্রদানের করা হোকনা কেন, মুখোমুখি সেবা দেওয়া-নেওয়া, অনলাইনে সেবা দেওয়া-নেওয়া, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সেবা আদান-প্রদান ইত্যাদি।

ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবহার করে তৈরি করা বিটকয়েন একধরনের ক্রিপ্টোকারেন্সি। প্রচলিত মুদ্রা এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির মধ্যকার প্রধান পার্থক্য হলো- ফিজিক্যাল অস্তিত্বের কারণে প্রচলিত মুদ্রা হাতে হাতে ব্যবহার করা যায়, হাতে নেওয়া যায়। অন্যদিকে ক্রিপ্টোকারেন্সি শুধু ব্যবহার করা যায়। ভার্চুয়াল অথবা ডিজিটাল হওয়ার কারণে এটি শুধু ব্যবহার করা যায়,কখনো হাতে নেওয়া সম্ভব নয়।

বিটকয়েন যেভাবে কাজ করে
পিয়ার-টু-পিয়ার নেটওয়ার্ক হওয়ার কারণে বিটকয়েনের ট্রানজিকশন বা লেনদেন সেবা দাতা ও গ্রহিতার ‘ওয়ালেট’ থেকে ‘ওয়ালেটে’ সম্পন্ন হয়। ‘ওয়ালেটে’ বিটকয়েন সঞ্চিত রাখা থাকে। এটি অনলাইন বা অফলাইন দু’রকমেই হতে পারে। একজন বিটকয়েন ব্যবহারকারীকে দুটি ‘কি’ (Keys) ব্যবহার করতে হয়। একটি ‘পাবলিক কি’ (Public Key), এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। অন্যটি ‘প্রাইভেট কি’ (Private key), এটি সর্বদা গোপন থাকে এবং লেনদেনের নিশ্চয়তার জন্য ব্যবহৃত হয়।

ট্রানজিকশনের ইতিবৃত্ত একটি উম্মুক্ত খতিয়ানে (পাবলিক লেজার) রেকর্ড করা থাকে, যাকে ‘ব্লক চেইন’ (Block chain) বলে। এক্ষেত্রে ‘পাবলিক কি’ ব্যবহার করা হয় এবং একই লেনদেন একই ব্যবহারকারীর মাধ্যমে পুনরাবৃত্তি করা যায়না। ব্লকচেইনে সর্বপ্রথম ট্রানজিকশনের হিসাব থেকে আজ পর্যন্ত সব হিসাব সংরক্ষিত আছে এবং নিয়মিতভাবে আপডেট হচ্ছে।

বিটকয়েনের অপকারিতা
তথ্য ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ লেখক কেন হাসের মতে, বিটকয়েনের কয়েকটি অপকারিতা রয়েছে। প্রথমতঃ লেনদেন পুনরাবৃত্তি না করতে পারার কারণে, সেবা গ্রহিতা সংশ্লিষ্ট সেবা না পেলে, মুদ্রা ফেরত পাওয়ার কোন উপায় নেই। দ্বিতীয়তঃ বিটকয়েন ‘ওয়ালেট’ হারিয়ে বা নষ্ট (ড্যামেজ) হয়ে গেলে এটি আর ফিরে পাওয়া যায়না। যেটি আমাদের ব্যবহৃত মানিব্যাগ বা মুদ্রার ক্ষেত্রে প্রজোয্য নয়।

তৃতীয়তঃ বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে বিটকয়েন খুব বেশি অস্থিতিশীল।

চতুর্থতঃ যদিও বিটকয়েনর ব্যবহার ক্রমান্নয়ে বাড়ছে, কিন্ত সেটি প্রচলিত মুদ্রার তুলনায় খুবিই সীমিত পরিসরে। সুতরাং এটিকে প্রচলিত মুদ্রায় পরিবর্তন করে ব্যবহার করতে হয়। সর্বোপরি, বিটকয়েনে কোন ক্রেডিট ব্যবস্থা নেই। যদিও এটি একটি ভাল দিক, কিন্ত বর্তমান বিশ্বের অর্থনীতি চলছে ক্রেডিট নির্ভর। ক্রেডিটের উপর ভিত্তি করে আমরা অগ্রীম সেবা নিয়ে থাকি।

বিটকয়েনের প্রতিদ্বন্দ্বী
বর্তমানে ৪৫৪ রকমের ক্রিপ্টোকারেন্সি বিশ্বব্যাপী কমবেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে এর মধ্যে Litecoin এবং  Ripple অন্যতম। অন্য ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলো বিটকয়েনের মত এতটা ব্যবহৃত হয়না। আপাতদৃষ্টিতে Litecoin-কে বিটকয়েনের প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবা হলেও, এটির সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ।
 
বিশ্বখ্যাত ব্রান্ড/কোম্পানি যারা বিটকয়েন  নেন
বাস্তব জগতে বিটকয়েন এর বিনিময়ে প্রথম কোন পণ্য কেনা হয় ২০১০ সালের ২১ মে, যখন বিটকয়েন ব্যবহারকারী লাসজলো (Laszlo) ১০ হাজার বিটকয়েন মুদ্রার বিনিময়ে ২৫ ডলার মুল্যের একটি পিৎ’জা কেনেন।

বিশ্বব্যাপী ৩০ হাজার এর বেশি ব্যবসায়ী এবং দাতব্য প্রতিষ্ঠান বিটকয়েন নেন। মার্কিন শেয়ারবাজার পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান নাসদাকের তথ্যমতে, ইউএস ভিত্তিক অনলাইন খুচরা বিক্রেতা  Overstock.com, ইউকে ভিত্তিক বিশ্বখ্যাত ব্যবসায়ী রিচার্ড ব্রায়ানসন পরিচালিত বিমান সেবা প্রতিষ্ঠান Virgin Galactic, জনপ্রিয় বিনামূল্যে ব্লগিং প্লাটফরম Wordpress,  জনপ্রিয় মোবাইল গেইমিং কোম্পানি Zynga, আন্তর্জাতিক ই-কমারস পেমেন্টস ওয়েবসাইট PayPal, অ্যামেরিকান গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান Tesla Motors, অনলাইন ডেটিং ওয়েবসাইট OkCupid, এবং জনপ্রিয় টরেন্ট সাইট The Pirate Bay বিটকয়েনের মাধ্যমের তাদের সেবা আদান-প্রদান করে থাকে।

17
পৃথিবী থেকে বহু কোটি বছর আছে চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া প্রাণি ডাইনোসর যে কতো রকম আকার ও প্রকারের ছিল তার লেখাজোখা নেই। কোনো কোনোটা যেমন ছিল প্রকাণ্ড আয়তনের, তেম্নি আবার কোনো কোনোটা ছিল অতিশয় ক্ষুদ্রাকৃতির। আকারের দিক থেকে যেমন, তেমনি নানা প্রজাতির ও প্রকারের ছিল এরা। কোনো কোনোটা ছিল যেমন মাংসাশী, তেম্নি কোনো কোনোটা ছিল তৃণ ও উদ্ভিদভোজী।

এবার উত্তর আমেরিকা অঞ্চলে এক ধরনের তৃণভোজী ডাইনোসরের ফসিল পাওয়া গেছে। এই ডাইনোসর আকারে এবং দেহ-কাঠামোর দিক থেকে দেখতে ছিল অবিকল কুকুরের মতো। এরা আকারে ল্যাব্রাডর কুকুরের সমান বড় হতো। পুরো দেহটা কুকুরের মতো হলেও অমিলটা ছিল মুখের আকৃতিতে। এদের মুখের সামনে ছিল বিরাট বাঁকানো ঠোঁট। তৃণভোজী এই ডাইনোসরের বৈজ্ঞানিক নাম লেপতোসেরাপতোপদিস। এরা আজ থেকে প্রায় ১০ কোটি বছর আগে উত্তর আমেরিকা মহাদেশের পূর্বাংশে বিচরণ করতো।

 লেপতোসেরাপতোপদিসরা ছিল ত্রাইসেরাতোপস নামের অতিকায় উদ্ভিদভোজী ডাইনোসরদের গোত্রের। বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি এই কুকুর-আকৃতির ডাইনোসরের ফসিল খুঁজে পেয়ে এদের নিয়ে গবেষণা শুরু করেছেন। এই ডাইনোসরদের দাঁত ছিল নিচের দিকে বাঁকানো এবং বাইরের দিকে বের করা। তবে এদের সামনের দিকে বাঁকানো চোয়াল সরু হতে হতে আগার দিকে ছিল পাখির ঠোটেঁর আকৃতির।

কুকুরের মতো দেখতে ছিল বলে সংবাদমাধ্যমের খবরের শিরোনামটাও করা হয়েছে কিছুটা কৌতুকের মিশেল দিয়ে: ‘Dinosaur the size of a DOG discovered - but would you keep it as a pet?’

যেখানটায় এই কুকুর আকৃতির ডাইনোসরের ফসিলটা  পাওয়া গেছে সেখানে আরো অনেক প্রজাতির ডাইনোসরের ফসিল পাওয়া যেতে পারে বলে আশাবাদী বিজ্ঞানীরা।

18

কোকোবীজ ও গ্রিন টি’তে এমন কিছু উপাদান আছে যেগুলো ডায়াবেটিস ও মূত্রাশয়ের বিভিন্ন জটিলতা নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। ব্রাজিলের নতুন এক গবেষণায় একথা বলা হয়েছে।

এনডিটিভি জানায়, গবেষণা করে বিজ্ঞানীরা বলছেন, কোকোবীজ ও গ্রিন টি পডসাইটস সেলের মৃত্যুহার হ্রাস করে। পডসাইটস সেলটি মূত্রে প্রোটিন নির্গমন আটকাতে সাহায্য করে।

আর কোকোবীজ ও গ্রিন টিতে থাকা পলিফেনল ও থিমব্রমাইন ডায়াবেটিসের কারণে শরীরের ক্ষতি হওয়ার হার কমাতে সক্ষম।

বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে ইঁদুরের উপর এ সংক্রান্ত পরীক্ষা চালিয়ে সফল হয়েছেন। তবে মানবদেহে এখনও এর কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়নি।

যদিও কোকোবীজ ও গ্রিন টি তে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-ইনফ্লামাটরি উপদান থাকার বিষয়টি এখন পর্যন্ত প্রমাণিত।

19
উপ-মহাদেশে কার্ভিক্যাল ক্যানসারের মাত্রা কমে এলেও, স্থূলতা ও লাইফস্টাইলের ভিন্নতা কারণে ব্রেস্ট ক্যানসারের মাত্রা ক্রমশ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন ভারতের অ্যাসোসিয়েশন অব গাইনিকোলোজিক অনকোলজিস্টসের প্রেসিডেন্ট ডা. নিরজা ভাটিয়া।

নারীদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ক্যানসারের মধ্যে কার্ভিক্যাল ও ব্রেস্ট ক্যানসার বেশি দেখা যায়। কিন্তু এ দু’প্রকার ক্যানসারই নিরাময় করা সম্ভব। অ্যাসোসিয়েশনের ২৩তম বার্ষিক কনফারেন্সে তিনি একথা জানান।

অন্যদিকে, নিউইয়র্কভিত্তিক গাইনিকোলোজিক অনকোলজিস্ট ডা. শশীকান্ত লেলে জানান, ভারতে প্রতি বছর দেড় লাখ নারী বিভিন্ন ক্যানসারে ভোগেন।

অন্য এক বিশেষজ্ঞ ডা. রামা জোশি বলেন, ভাকসিন দিয়ে কার্ভিক্যাল ক্যানসার প্রতিরোধ করা যায়। কিন্তু ব্রেস্ট ক্যানসারের ক্ষেত্রে ৩০ বছর বা এর বেশি বয়সী নারীদের ক্যানসারের পরীক্ষা করা উচিত।

বক্তব্যের মধ্যে ক্যানসার সংশ্লিষ্ট আরও তথ্য উঠে আসে। বাড়তি ওজন ব্রেস্ট ক্যানসারের হারকে বাড়িয়ে তোলে বলে উল্লেখ করেন ডা. জোশি।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, রাত জেগে কাজ করা ও সারাক্ষণ উজ্জ্বল আলোতে থাকার ফলেও ব্রেস্ট ক্যান্সার হতে পারে।

20

বেশি মানসিক চাপের কারণে মানুষের, বিশেষ করে কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ত্বকে ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। চামড়ায় দেখা দিতে পারে বিভিন্ন রোগের উপসর্গ।

নতুন এক গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের ফিলাডেলফিয়ার টেম্পল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা একথা বলেছেন। অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও ত্বকের বেশ কিছু সমস্যার প্রার্দুভাবের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে বের করার চেষ্টা করেন তারা।

এজন্য দৈবচয়ণ পদ্ধতিতে ৪০০ জন কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে বাছাই করেন গবেষকরা। কম চাপ, মাঝামাঝি চাপ ও মারাত্মক চাপ এই তিন ধরনের ভাগ করে তাদের ওপর গবেষণা চালানো হয়। এতেই বেশি মানসিক চাপের সঙ্গে নানা ধরনের ত্বক সমস্যার যোগ দেখা যায়।

গবেষকদের মতে, যারা অতিরিক্ত মানসিক চাপে ভোগে তাদের মধ্যে নিশ্চিতভাবেই অন্যদের তুলনায় খসখসে ত্বক, চুল পড়া, তৈলাক্ত ত্বক, খুশকি, দুর্গন্ধযুক্ত ঘাম, ফাটা ত্বক, ভঙ্গুর নখ, হাতের ত্বকে ফুসকুড়ি এবং টাক সমস্যা দেখা দেয়।

ত্বক-বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এবং গবেষক গিল  ইয়োসোপোভিচ বলেন, "আগের গবেষণাগুলাতে চাপ এবং ত্বকের সমস্যার যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া গেছে। যদিও ওই গবেষণাগুলো ছোট পরিসরে করা হয়েছে, মানসম্মত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়নি, অনেকটা ব্যক্তিগত মতামতের ভিত্তিতে করা হয়েছে এবং ত্বকের একটি মাত্র সমস্যাকে সামনে রেখে পরীক্ষা করা হয়েছে।"

তিনি আরও বলেন, "আমাদের গবেষণা মানসিক চাপের সঙ্গে ত্বকের সমস্যার বিষয়টি তুলে ধরেছে এবং চিকিৎসকদের এসব সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের মানসিক চাপ কমানোর পরামর্শ দেয়ার প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরেছে।"

21
Cold / Flu / ম্যালেরিয়া ঠেকাবে মশা!
« on: November 29, 2015, 12:38:11 PM »

ম্যালেরিয়া রোগ ছড়ানোর জন্য দায়ী যে মশা, এবার সেই পতঙ্গটিকে এই রোগ ঠেকানোর কাজে লাগাতে চাইছেন বিজ্ঞানীরা।

যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা এক ধরনের জেনেটিক্যালি মডিফাইড (জিএম) মশা উদ্ভাবন করেছেন বলে বিবিসি জানিয়েছে, যা ম্যালেরিয়া সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সক্ষম।

বিজ্ঞানীরা  বলছেন, গবেষণাগারে যে কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে তা মাঠ পর্যায়ে কাজে আসলে মশার কামড়ে মানবদেহে ম্যালেরিয়ার পরজীবী ছড়িয়ে পড়া বন্ধে এটি হবে এক নতুন উপায়।

জিন এডিটিং পদ্ধতি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা মশার ডিএনএ তে একটি নতুন ধরনের জিনের প্রবেশ ঘটিয়েছেন।

এই নতুন জিএম মশা অন্য মশার মিশে বংশবিস্তার করলে তখন ওই মশাগুলোও একই ধরনের প্রতিরোধ ক্ষমতা নিয়ে জন্মাবে। ফলে এসব মশা মানুষকে কামড়ালেও ম্যালেরিয়ার পরজীবী মানবদেহে ছড়াবে না।

সারা বিশ্বে প্রায় তিনশ’ কোটি ২০ লাখ মানুষ ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় পাঁচ লাখ ৮০ হাজার মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।

ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীদের দাবি, জেনেটিক্যালি মডিফাইড মশারা ম্যালেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।

এই মশাদের পরবর্তী তিন প্রজন্মের মধ্যে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ ক্ষমতা বিরাজ করবে বলেও জানান বিজ্ঞানীরা। মশার অন্যান্য প্রজাতির ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি কাজ করবে বলে আশা করছেন তারা।

বিজ্ঞানীরা একে ম্যালেরিয়া পরজীবীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র  মনে করলেও চূড়ান্ত অস্ত্র বলে মনে করছেন না।

22

প্রতিদিন ব্যায়ামের মাধ্যমে মস্তিষ্কের কোষের ক্ষয় রোধ করে এর বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকানো সম্ভব বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।

গবেষণাগারের প্রাণীর উপর চালানো পরীক্ষায় এ তথ্য পেয়েছেন গবেষকরা।

জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ইঁদুরের উপর পরীক্ষা চালিয়ে দেখেন, ব্যায়াম করলে স্নায়ুতন্ত্রে এসআইআরটি৩ এনজাইমের মাত্রা বেড়ে যায়। এই এনজাইম মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। মূলত মানসিক চাপের কারণে মস্তিষ্কের কোষগুলোর শক্তি ক্ষয় হয়।

পরীক্ষার জন্য গবেষকরা একটি চলমান চাকার মধ্যে ইঁদুরগুলোকে ছেড়ে দেন এবং সেগুলো সেখানে ক্রমাগত দৌড়াতে থাকে। এক পর্যায়ে দেখা যায় ইঁদুরগুলোর শরীরে এসআইআরটি৩ এনজাইমের মাত্রা বেড়ে গেছে।

প্রধান গবেষক মার্ক ম্যাটসন বলেন, “চলমান চাকায় দৌড়ানোর ফলে ইঁদুরের স্নায়ুতন্ত্রে এসআইআরটি৩ এনজাইমের মাত্রা বেড়ে যায়, যা তাদের মস্তিষ্কের কোষের ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে।”

যখন আমাদের বয়স বাড়তে থাকে তখন মস্তিষ্কের কোষগুলো পুরোপুরি সচল থাকার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। এর ফলে স্নায়ুতন্ত্রের দুর্বলতা জনিত রোগ যেমন: স্মৃতিভ্রংশের মতো রোগ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়।

সেল মেটাবলিজম জার্নালে এ গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ পায়।

23
যুক্তরাষ্ট্রে নিউ ইয়র্কের একটি হাসপাতালে মুখমণ্ডল প্রতিস্থাপনে এ যাবতকালের সবচেয়ে বড় ধরনের এক সফল অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে চেহারা ফিরে পেয়েছেন স্বেচ্ছাসেবী এক অগ্নিনির্বাপনকর্মী।

গোটা মাথার চামড়া, কান, এমনকি চোখের পাতাও অস্ত্রোপচারের মধ্য দিয়ে প্রতিস্থাপন করেছেন চিকিৎসকরা।

প্লাস্টিক সার্জন এডোয়ার্ডো রডরিগুয়েজের নেতৃত্বে একদল চিকিৎসক ২৬ ঘণ্টাব্যাপী এ জটিল অস্ত্রোপচার করে চেহারা ফিরিয়ে আনেন ৪১ বছর বয়সী অগ্নিনির্বাপণকর্মী প্যাট্রিক হার্ডিসনের।

একটি বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে আটকা পড়া এক নারীকে উদ্ধার করতে গিয়ে  পুড়ে বীভৎস হয়ে গিয়েছিল হার্ডিসনের চেহারা। আগুনে তার পুরো মুখমণ্ডল এবং মাথারচামড়া পুড়ে যায়।

প্রতিস্থাপনের জন্য মুখমণ্ডলের দাতা হচ্ছেন, ২৬ বছর বয়সী যুবক ডেভিড রোডবাহ। একটি সাইক্লিং দুর্ঘটনায় যিনি মারা যান। তারই দান করে যাওয়া অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সাহায্যে ফেরানো হয় হার্ডিসনের চেহারা।

গত অগাস্টে অস্ত্রোপচারটি করা হয়। এর মধ্য দিয়ে হার্ডিসন তার চোখের পাতার পাশাপাশি চোখের পাতা ফেলার ক্ষমতাও ফিরে পেয়েছেন। তাছাড়া, এখন  তারমাথাভর্তি চুল এমনকি ভ্রুও আছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

চিকিৎসক এডোয়ার্ডো রডরিগুয়েজ বলেন, এ অপারেশনে যতগুলো টিস্যু লাগানো হয়েছে, এর আগে কোন অপারেশনেই তা লাগানো হয়নি। অপারেশন সফল হওয়ার সম্ভাবনা ছিল ৫০:৫০।

কয়েক লাখ ডলারের এ অস্ত্রোপচারের তিন মাস পর হার্ডিসন ভালোভাবেই সেরে উঠছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে  প্রতিস্থাপিত মুখমণ্ডলের টিস্যুগুলোকে টেকসই রাখতে তাকে বাকি জীবন ওষুধ সেবন করে যেতে হবে বলে জানান তারা।

24
কৃতের টিউমার ও ক্যান্সার নিরাময়ে ট্রান্স-আরটারিয়াল কেমো-এম্বোলাইজেশন (টেইস) পদ্ধতির ব্যবহার শুরু হয়েছে বাংলাদেশে।

আকৃতি ও অবস্থানের কারণে যাদের যকৃতের টিউমার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সরানো সম্ভব নয়, তাদের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতিই বিশ্বে সবচেয়ে কার্যকর বলে বিবেচিত হচ্ছে এখন। এ পদ্ধতিতে রক্তনালীর মাধ্যমে সরাসরি টিউমারে কেমোথেরাপি দেয়া যাবে। 

শুক্রবার ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রথমবারের মতো এ পদ্ধতি ব্যবহার করে ‘সফল’ হয়েছেন বাংলাদেশের একদল চিকিৎসক।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেপাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মামুন-আল-মাহতাব স্বপ্নীল এ দলের নেতৃত্ব দেন।   

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, নতুন এ পদ্ধতি প্রয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশ ইন্টারভেনশনাল হেপাটোলজির আঙিনায় প্রবেশ করল।

“আমাদের রোগীরা এখন থেকে দেশেই লিভার ক্যান্সারের এই চিকিৎসা পাবেন। তাদের খরচ পড়বে ভারতের অর্ধেক।”

দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে শিগগিরই এ চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন এই চিকিৎসক।

এই দলে আরও আছেন শেখ মোহাম্মদ নুর-ই-আলম, মো. আশরাফুল ইসলাম, সৈয়দ আবুল ফজল, জাহাঙ্গীর সরকার, আহমেদ লুৎফুল মোবেন, মো. আবদুর রহিম ও ফয়েজ আহমেদ খন্দকার।

তাদের প্রায় সবাই নয়া দিল্লির ইনস্টিটিউট অব লিভার অ্যান্ড বিলিয়ারি সায়েন্সেস এবং চেন্নাইয়ের গ্লোবাল হেলথ সিটিতে ‘টেইস’ পদ্ধতির ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বলে স্বপ্নীল জানান।

বাংলাদেশে ক্যান্সারে ভুগে প্রতি বছর যত লোকের মৃত্যু হয়, তাদের মধ্যে যকৃতের ক্যান্সারে আক্রান্তের সংখ্যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। ক্রনিক হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাসের সংক্রমণকেই এ দেশে যকৃতের ক্যান্সারের মূল কারণ বলে মনে করা হয়।

“অধিকাংশ ক্ষেত্রে এই রোগীরা আসেন একেবারে শেষ পর্যায়ে। তখন আর অস্ত্রোপচার করার উপায় থাকে না,” বলেন স্বপ্নীল।

25
ঘুমের ব্যাঘাত ঘটলে দিনটা যেমন ঝরঝরে হয় না কাটে নেশাচ্ছন্নভাবে, তেমনই হজমেও সমস্যা হয়। শরীরে অবসাদ ভর করে, শক্তিও কমে যায়। আর এসবই বলছে, একটি ইউরোপীয় স্বাস্থ্য সমীক্ষা। খবর ডয়চে ভেলের।

অ্যামেরিকান জার্নাল ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন-এ প্রকাশিত ঐ সমীক্ষার ফলাফলে প্রমাণ উল্লেখ করে দেখানো হয়েছে, কম ঘুম ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। কম ঘুম শুধু যে ক্ষুধা বাড়ায় তাই নয়, ক্যালোরি ধ্বংস করে খুবই কম। সমীক্ষাকাজের নেতৃত্ব দিয়েছেন, সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিস্টিয়ান বেনেডিক্ট। তিনি বললেন, যথেষ্ট ঘুম ওজন বাড়ানো প্রতিরোধ করে, সমীক্ষাতে আমরা দেখেছি, এক রাত যদি ভালো ঘুম না হয়, তাহলে সুস্থ মানুষের শরীরেও ক্লান্তি ভর করে, অবসাদ জেঁকে বসে। এর আগেও বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, ঘুমের ব্যাঘাত ওজন বৃদ্ধির সঙ্গে সম্পর্কিত। শুধু তাই নয়, আরো দেখা গেছে, মানুষ যখন জেগে থাকে তখনও কম ঘুম কী ভাবে, চাপ এবং ক্ষুধার সঙ্গে সম্পর্কিত হরমোনগুলোর স্বাভাবিক মাত্রাতে ব্যাঘাত ঘটায়।

কম ঘুমের কারণে শরীরে আসলে কী ধরণের প্রভাব পড়ে তা শনাক্ত করতেই বেনেডিক্ট এবং তাঁর সহকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ জন ছাত্রের ঘুমের বিভিন্ন পর্যায় পর্যবেক্ষণ করেছেন। অল্প ঘুম, একেবারে না ঘুমানো এবং স্বাভাবিক ঘুমের কারণে কয়েকদিন শরীরের রক্তে শর্করার পরিমাণ, হরমোনের মাত্রা এবং তাদের বিপাক প্রক্রিয়ায় কী ধরণের পরিবর্তন হয় সেটা তাঁরা লক্ষ্য করেছেন। সেখানে দেখা গেছে, মাত্র একদিন ঘুম না হলে, পরেরদিন সকালে বিপাক প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। রাতে যার খুব ভালো ঘুম হয়েছে তার সাথে তুলনা করে দেখা গেছে, যার ঘুম হয়নি তার শরীরে ক্লান্তি ভর করেছে, নিশ্বাস নেওয়া বা হজমের মত ব্যাপারগুলো শতকরা বিশভাগ থেকে নেমে এসেছে শতকরা পাঁচ ভাগে।

26
নতুন একটি গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, মাত্র এক মাস প্রশিক্ষণে নতুন একটি কম্পিউটার গেম বয়োবৃদ্ধদের স্মৃতি ফেরাতে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।
পরিকল্পনা, দৈনন্দিন জীবনযাপন ও স্বনির্ভরভাবে বাঁচতে যে ধরনের স্মৃতি দরকার হয় - বয়োবৃদ্ধের তা ফিরিয়ে আনতে এই কম্পিউটার গেম কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

বৃদ্ধ ব্যক্তি, যিনি ‘কগনিটিভ-ট্রেনিং’ গেম খেলেছেন, তার ক্ষয়িঞ্চু অবস্থার তুলনায় স্মৃতি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। গবেষণায় অংশ নেওয়া ব্যক্তির সমবয়সী একাধিক জনের সঙ্গে তুলনা করে এ ফলাফল নির্ধারণ করা হয়।

কানাডার টরেন্টোতে অবস্থিত দ্যা রটম্যান রিসার্চ ইনস্টিটিউট বেক্রেস্ট হেলথ সায়েন্সেস এ গবেষণা চালায়।

‘প্রোসপেক্টিভ মেমোরি’ অর্থাৎ, মনে রাখার ক্ষমতা ও লক্ষ্যে অনড় থাকা, পাশাপাশি দৈনন্দিন জীবনযাপনের পরিকল্পনা করা- যা বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কমে আসে।
গবেষকরা দাবি করেন, প্রতিদিন যেসব মানসিক সমস্যার কথা রোগীরা জানান, তার ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ স্মৃতি সংক্রান্ত।

গবেষণাটিতে ‘ট্রেন ফর ট্রান্সফার’ পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কম্পিউটার গেমটিতে ব্যক্তিকে দৈনন্দিন জীবন সাপেক্ষে ‘প্রোসপেক্টিভ মেমোরি’ ব্যবহার করে সমাধানে যেতে হয়।

বিশ্বব্যাপী বৃদ্ধ মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ফলে তাদের সাহায্য করার উপায় খুঁজে বের করা খুবই দরকার, যেন তারা স্বনির্ভরভাবে বাঁচতে পারে। বলেন, গবেষণায় নেতৃত্বদানকারী বিশেষজ্ঞ মেলবোর্নের দ্যা অস্ট্রেলিয়ান ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সাইকোলজি বিভাগের রিসার্চ ফেলো ডা. নাথান রোজ।

গবেষকদের মতে, সবচেয়ে উত্তেজনাদায়ক বিষয় হলো- ল্যাবে প্রশিক্ষণ নেওয়ার ফলে ব্যক্তি জীবনে এর প্রভাব পড়ে। পরীক্ষা করে দেখা যায়, গবেষণায় অংশ নেওয়া ব্যক্তির উন্নতি।

খেলোয়াড়কে বিভিন্ন ধরনের কাজ মনে রাখতে হয় গেম খেলার সময়। ওষুধ খাওয়া, সময়মতো ওভেন থেকে রাতের খাবার বের করা ইত্যাদি। এতে অংশ নেওয়া ৬০ থেকে ৭৯ বছর বয়সী ৫৯ জন স্বাস্থ্যবান ব্যক্তি এক মাসের মধ্যে ২৪টি স্তর শেষ করেন।

মূলত সমস্যায় পড়তে হয়, খেলোয়াড়কে কি কি করতে হবে এটা বোঝাতে, বলেন গবেষকরা।

27
 স্মার্টফোনটি নিয়ে প্রায়শঃই বেকায়দার পড়তে হয়, কারণ চার্জ থাকে না। দিনে একবার নিয়ম করে চার্জ করিয়ে নিতে হয়, নয়তো ব্যাগে, পকেটে নিয়ে ঘুরতে হয় পাওয়ার ব্যাংক। এই ঝামেলা থেকে মুক্তি দিতে এবার আসছে এমন স্মার্ট ফোন যা হবে সাত দিনে একবার চার্জ করে নিলেই যথেষ্ট।

ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরাই এই সমাধানের পথ নিয়ে এসেছেন। তারা এমন এক ম্যাটেরিয়াল তৈরি করেছেন যা স্মার্টফোনের স্ক্রিন গ্লাসের পরিবর্তে বসবে, যাতে কোনও বৈদ্যুতিক শক্তিই খরচ হবে না। কেবল স্মার্টফোন কেন, ট্যাবলেট, স্মার্টওয়াচেও ব্যবহার হতে পারবে একই পদ্ধতি। মানে ওগুলো সবই সপ্তাহে একদিন চার্জ করে চালানো যাবে গোটা এক সপ্তাহ।

এই আবিষ্কারকে গুরুত্বের সঙ্গেই দেখা হচ্ছে কারণ এই ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসগুলোর ৯০ শতাংশ বৈদ্যুতিক শক্তিই খরচ হয়ে যায় স্ক্রিনের প্রয়োজনে।

প্রযুক্তির কারখানাগুলো আগে থেকেই ব্যাটরির জীবনকাল বাড়ানোর জন্য করণীয় খুঁজছিলো। তবে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, ব্যাটারির শক্তি বাড়িয়ে নয়, বরং ব্যাটারির শক্তি যে খেয়ে ফেলছে তাকেই পাল্টে ফেলুন।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী ড. পিম্যান হোসেইনির কথাই ধরুন। তিনি বলছেন, স্মার্টওয়াচটিকে কিন্তু আপনাকে নিত্য চার্জ করিয়ে নিতে হয়। কিন্তু আপনার যদি স্মার্ট গ্লাস থাকে, তাহলে ঘড়িটি সপ্তাহে একদিন চার্জ করালেই হবে।

বিজ্ঞানীরা এক্ষেত্রে ডিসপ্লে তৈরির জন্য ইলেক্ট্রিকাল পালস ব্যবহার করেছেন যাতে কোনও বৈদ্যুতিক শক্তির প্রয়োজন হয় না কিন্তু সহজেই দেখা যায়, এমনকি সূর্যালোকেও সমস্যা হয় না। ড. হোসেইনির কোম্পানি বোডল টেকনোলজিস এক বছরের মধ্যেই এমন স্ক্রিনের প্রোটোটাইপ বাজারে নিয়ে আসতে পারবে বলেই ধারনা করা হচ্ছে।

গ্যাজেটগুলো যারা আনছে তারাও কিন্তু এই সমস্যার সমাধান আনতে অনেক দিন ধরেই লেগে আছে।

অ্যাপল’র কথাই ধরুন না। ওরাতো রীতিমতো গবেষণা আর অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে যাতে তাদের আইফোন, ল্যাপটপগুলো ফুয়েল সেল ব্যবহার করতে পারে।

28
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল কাইউম ঢাকাবাসীর রসনাবিলাসের ঐতিহ্য সন্ধান করেছেন তাঁর ‘রসনাবৃত্তি: বৈচিত্র্য ও রূপান্তর’ প্রবন্ধে। কোথা থেকে এল ঢাকাই খাবার, সেটি খুঁজতে গিয়ে তিনি উদাহরণ টেনেছেন চর্যাপদ থেকে। তিনি বলেন, প্রাচীন যুগের (অষ্টম-দ্বাদশ শতক) প্রথম সাহিত্যিক নিদর্শন ‘চর্যাপদে’ চালের উল্লেখ আছে, দুগ্ধ ও দুগ্ধপানের কথা উল্লেখ আছে। চতুর্দশ শতাব্দীতে অবহট্ট ভাষায় লেখা ‘প্রাকৃত পৈঙ্গল’ বইয়ের একটি পদে বলা হয়েছে, ‘...যে প্রেয়সী (নিয়মিত) ওগরা বা নরম-গরম ভাত কলার পাতায় গাওয়া ঘি-দুধের সংযোগে মৌরলা মাছের ঝোল ও নালিতা শাক পরিবেশন করে, তার কান্তা বা স্বামী (অবশ্যই) পুণ্যবান।’

ঐতিহাসিকেরা বলছেন, অষ্টম থেকে দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত ঢাকায় পাল ও সেনরাজাদের অধীনে জনগণের খাদ্যাভ্যাস ছিল এক ধরনের। বৌদ্ধ ও ব্রাহ্মণ্যধর্মের প্রভাবে ঢাকার খাদ্যতালিকায় প্রাধান্য পায় ভাত ও নিরামিষ। ধীরে ধীরে ভাত, মাছ ও দুধ ঢুকে যায় জনসাধারণের নিয়মিত খাদ্যতালিকায়। প্রাক-মোগল যুগে ঢাকার সুলতানি খাদ্যাভ্যাস ছিল তুর্কি, আরব, ইরানি বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। তাদের মাংস ও রুটি খাওয়ার অভ্যাস ঢাকার ভাত-মাছের অভ্যাসের সঙ্গে মিশে গিয়েছিল। এরপর আসে মোগলেরা। ঢাকায় সুবেদার ইসলাম খানের বাবুর্চিদের হাতে তৈরি খাবার মোগল খাবার হিসেবে পরিচিতি পায়। ঢাকার রান্নায় ব্যবহূত অনুষঙ্গ যুক্ত হয়ে দিনে দিনে এই খাবারই ঢাকাই খাবার নামে পুরান ঢাকায় প্রচলিত হয়। এসব খাবারের মধ্যে আছে বিরিয়ানি, কাবুলি, খিচুড়ি, শিরবিরঞ্জ, হালিম, বাকরখানি রুটি, চালের গুঁড়ার পিঠা, দোলমাজাতীয় তরকারি। পরে পর্তুগিজ, আর্মেনীয়, ইউরোপীয়সহ বিভিন্ন জাতির আগমনে মোগল চাপাতি রুটির পাশাপাশি পাউরুটি, বিস্কুট, পনির, ছানার মিষ্টি ঢাকাই খাবারের তালিকায় যুক্ত হয়।

 

কিছু খাবার হারিয়ে গেছে, কিছু টিকে আছে পরিবর্তিত রূপে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের অধ্যাপক কানিজ ই বতুল গবেষণা করেছেন ঢাকার বিলুপ্ত খাবার নিয়ে। তিনি বলেন, ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের মুনশি মীর আমান দেহেলভির (দিল্লিবাসী) ১৮০১ সালে প্রকাশিত বাগ ও বাহার বইয়ে শাহি নিমন্ত্রণের খাবারের তালিকায় তোররাবন্দি, শবডেগ, মোরগপোলাও, মোরগ মোসাল্লাম, সিশরাঙ্গা (খাগিনা), হালিম, নার্গিসি কোফতা, কাবাব, হারিরা, মাকুতি, মুতানজান, শিরমাল, গাওজাবান রুটি, গাওদিদা রুটি, বাকরখানি রুটি—এমন সব খাবারের নাম পাওয়া যায়। এসব খাবারের অনেকগুলো হারিয়ে গেছে। কিছু টিকে আছে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য নিয়ে।

কানিজ ই বতুল হারিয়ে যাওয়া জনপ্রিয় ‘জাহাজি কোরমা’র কথা বলেছেন। তিনি জানান, গরু বা খাসির হাড়বিহীন মাংস মরিচ ছাড়া জয়তুনের তেলে রান্না করে চীনামাটির পাত্রে করে সঙ্গে নিতেন সমুদ্রপথের যাত্রীরা। ১৫ দিন পর্যন্ত এই মাংস ভালো থাকত। সমুদ্রপথে যাঁরা হজ করতে যেতেন বা ব্যবসার উদ্দেশ্যে আরব, ইরাক, ইরানসহ নানা দেশে যেতেন, তাঁরাই এমন খাবার সঙ্গে রাখতেন।

 

আরেক জনপ্রিয় খাবার রেজালা বাংলাদেশের যেকোনো উত্সবে অবিচ্ছেদ্য। ঐতিহাসিকেরা বলছেন, ‘রেজালা’ শব্দটি এসেছে ‘রজিল’ (নিম্নবিত্ত) থেকে। মোগল দরবারি লোকেরা খাবারে মরিচ ব্যবহার করতেন না। কিন্তু দরবারের কর্মচারীরা ছিলেন এ-দেশীয়। তাঁরা ঝাল খাবারে অভ্যস্ত ছিলেন। একপর্যায়ে দরবারের কর্মচারীরা কোরমায় ঝাল দিয়ে খেতে শুরু করলেন। এ খাবারের ভিন্ন স্বাদ ও ঘ্রাণের প্রতি ধীরে ধীরে অন্দরমহলের নারীরাও আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। তাঁরা কাঁচামরিচের বোঁটা ছিঁড়ে বিচি ফেলার পর ভালো করে পানি দিয়ে ধুয়ে দুধে ভিজিয়ে রাখতেন। তারপর দুধসহ কাঁচামরিচ কোরমায় দিয়ে ভিন্ন স্বাদের কোরমা, অর্থাত্ রেজালা রান্না করতেন।

 

ঢাকাই খাবার এখন

বিভিন্ন সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ঢাকাবাসীর কাছে প্রিয় ঢাকাই খাবার। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে ঢাকাই খাবারের সুখ্যাতি। এখনো রোজার মাসজুড়ে পুরান ঢাকার চকবাজারে চলে ঢাকাই খাবারের বেচাকেনা। চকবাজার ও এর আশপাশের এলাকা বাহারি খাবারের সুবাসে এখন ম-ম করছে। কয়েক শ বছরের পুরনো চকবাজারে এখনো বিরিয়ানি, মুরগি মোসাল্লাম, বিভিন্ন জাতের কাবাবের পাশাপাশি শরবত বিক্রি হয়।

চকবাজারের শরবত বিক্রেতা চুয়াডাঙার ছেলে জামান মিঞা অত কিছু বোঝেন না। শুধু জানেন এখানে বাহারি শরবতের চল আছে, ভালো বিকোয়। ‘কিংবদন্তির ঢাকা’য় নাজির হোসেন লিখেছেন, ‘ফাতেহা-ই-দোয়াজ দাহম উপলক্ষে বিভিন্ন মহল্লা থেকে বহু লোক মওলুদ (মিলাদ) পড়ার জন্য সমবেত হতেন। অপরাহ্নে বিভিন্ন দলের মধ্যে প্রতিযোগিতা আরম্ভ হত। এই অনুষ্ঠানে প্রৌঢ় ও যুবকেরা অংশগ্রহণ করতেন এবং এ দৃশ্য দেখার জন্য বহু লোক রাস্তা ও মসজিদের বারান্দায় সমবেত হতেন। তা ছাড়া এখানকার পান ও শরবত ছিল অত্যন্ত উত্কৃষ্ট ধরনের। এ জন্যও বহু দূরদূরান্ত থেকে লোক এখানে এসে পান ও শরবত খেয়ে তৃপ্ত হত। এককালে শহরের খোশবাশ বলে পরিচয় দানকারীগণ পান-শরবতের পশরা নিয়ে এখানে জলসার মত আড্ডা জমিয়ে রাখতো।’

জামান মিঞার মতো বহু মানুষ জেনে না-জেনে শত বছরের পুরোনো ঐতিহ্য ফেরি করে বেড়ান। আর ভোজনরসিকেরা ঐতিহ্যবাহী খাবার খেতে বরাবরই ভিড় জমান পুরান ঢাকায়; আর রোজার মাসে তা যেন নতুন মাত্রা যোগ করে।শুধু ইফতারের জন্য নয়, মধ্যরাতে সেহরির জন্য ভিড় দেখা যায় পুরান ঢাকার খাবারের দোকানগুলোতে।

29
Travel / Visit / Tour / কুলু - মানালি
« on: November 11, 2015, 10:29:11 AM »
 মানালি হিমাচল প্রদেশের অন্যতম সুন্দর শহর এবং ভারতের বিখ্যাত শৈলশহর গুলির মধ্যে একটি। পর্যটকদের কাছে মানালি সবসময় আকর্ষনীয়। বিপাশা নদীর স্বচ্ছ জলরাশি, দেবদার-পাইনের জঙ্গল এবং পাহাড়ের মিলিত সৌন্দর্য্য অপরিসীম। পূর্নিমার রাতে মানালির শোভা অপরূপ। শীতের সময় সাদা বরফের চাদরে মুড়ে থাকে মানালি। সারা মানালি ছড়িয়ে রয়েছে প্রচুর আপেল, পিচ ও চেরি গাছ।

মানালির বাজার এবং ম্যাল অঞ্চলটি বেশ জমজমাট, সুন্দর সাজানো দোকানপাট, হোটেল, রেস্তরাঁ দিয়ে সাজানো। সবসময় প্রচুর লোকের আনাগোনা। হাঁটা পথেই ঘুরে নিন মানালি ম্যাল।

বাজারের পিছনেই রয়েছে একটি তিব্বতি মনেষ্ট্রি। যার ভিতরে বিশাল বুদ্ধমূর্তি ছাড়াও রয়েছে বৌদ্ধধর্ম ও তিব্বতি সংস্কৃতির নানা নিদর্শন।

মানালি সাইট সিয়িং-এ প্রথমেই দেখে নিন ডুংরি পাহাড়ের কোলে ষোড়শ শতকে মহারাজা বাহাদুর সিংহের তৈরি হিড়িম্বা মন্দির, যা স্হানীদের কাছে ডুংরি মন্দির নামে পরিচিত। দেওদার গাছে ঘেরা অপরুপ পরিবেশে তৈরি ২৭ মিটার উচু কাঠের মন্দির ও এর কারুকার্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই। এর পাশেই রয়েছে ভীম ও ঘটেৎকচের মন্দির।

এবার চলুন আপ্পুঘর এবং হিমাচল লোকসংস্কৃতির নানা নিদর্শন সমৃদ্ধ হিমাচল ফোক মিউজিয়ামে, তারপর নেহরু পার্ক হয়ে নদী পেরিয়ে ওল্ড মানলি গ্রাম। যেতে পারেন মানসলু নদীর ধারে মানালি ক্লাব হাউসে। টিকিটের মূল্য ১০ টাকা। এখানে রোলার স্কেটিং সহ নানা ইনডোর গেমসের ব্যবস্হা আছে। কাছেই রয়েছে মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট।

বশিষ্ঠ মুনির আশ্রম রয়েছে এখানে। পাহাড়ের মধ্যে প্রকৃতির মাঝে এই আশ্রমের গর্ভগৃহে রয়েছে কালো কষ্টি পাথরের বশিষ্ঠ মুনির মূর্তি। রয়েছে একটি উষ্ঞপ্রস্রবন। এখানে স্নানের ব্যবস্হা আছে। আর রয়েছে প্রাচীন রাম মন্দির। রাম-সীতা-হনুমানের শ্বেতপাথরের মূর্তি আপনাকে মুগ্ধ করবে।

এবার চলুন রোটাং পাস, মানালির সেরা আকর্ষন। মানালি থেকে গাড়ি নিয়ে পৌছে যান রোটাং পাস, দূরত্ব ৫১ কিমি। জুন-জুলাই থেকে অক্টোবর-নভেম্বর আদর্শ সময় রোটাং পাস যাওয়ার। বাকি সময় বরফের জন্য রাস্তা বন্ধ থাকে। যতই উপরে উঠবেন চোখে পড়বে তুষারশৃঙ্গ। চারিদিকে বরফ আর বরফ। এই বরফ নিয়ে খেলতে খেলতে হারিয়ে যান তুষার রাজ্যে। এখানে অনেক রকম অ্যাডভেঞ্চার স্পোটর্সের ব্যবস্হাও রয়েছে। চাইলে আপনি এর মজা নিতে পারেন। ফেরার পথে দেখে নিন সোলাং ভ্যালি। দেবদারু গাছে ঘেরা এই সবুজ ভ্যালির শোভাও অপরিসীম। এখানে প্যারাগ্লাইডিং-এর ব্যবস্হা আছে।

হাওড়া থেকে কালকা মেলে কালকা, সেখান থেকে বাস বা ভাড়া গাড়িতে পৌছে যান মানালি। সাইট সিয়িং জন্য ছোটো ভাড়া গাড়ির ব্যবস্হা আছে।

কেনাকাটা:- এখানকার বিভিন্ন দোকানে সঠিক মূল্যে শীতবস্ত্র পেয়ে যাবেন। যেমন- শাল, সোয়াটার, টুপি, জ্যাকেট ইত্যাদি। কুলুতে শালের ফ্যাক্টরি রয়েছে, তবে দেখে কিনবেন। আসল উল বলে দেদার বিকোচ্ছে অ্যাক্রিলিক উলের জিনিস। মানালির ফ্রেশ ফলের জ্যাম, জেলি খুবই লোভনীয়।

বরফ দেখতে হলে যাবেন ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে মার্চ পর্যন্ত।

30
Travel / Visit / Tour / অপরুপ আন্দামান
« on: November 11, 2015, 10:28:25 AM »
ছোটবেলায় ম্যাপ পয়েন্টিঙের সময় ভারতের ম্যাপের নীচের দিকে ছোট ছোট কয়েকটা বিন্দু বিন্দু একে লিখে দিতাম আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুন্জ। তখন কি আর জানতাম কি অপরুপ রুপ নিয়ে সমুদ্রের মাঝে জেগে রয়েছে আন্দামান? আন্দামানের রাজধানী পোর্টব্লেয়ার। বঙ্গোপসাগরে ৫৭২টি দ্বীপ নিয়ে গড়ে উঠেছে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপূঞ্জ। এর মধ্যে মাত্র ২২ টি তে জনবসতি গড়ে উঠেছে। এখানকার প্রধান ভাষা হল আন্দামানিজ, বাংলা, ইংরাজী, হিন্দী, নিকোবরিজ, তেলেগু, তামিল ইত্যাদি। পোর্ট ব্লেয়ার থেকে কলকাতার জলপথে দূরত্ব - ১২৫৫ কিলোমিটার। বছরে দুইবার বর্ষা হয় এখানে। আন্দামান যাবার দুটি প্রধান পথ - জলজাহাজ অথবা বিমানে। প্রতিদিন দমদম বিমানবন্দর থেকে পোর্টব্লেয়ারের দিকে বেশ কয়েকটি বিমান  রওনা হচ্ছে। পোর্টব্লেয়ারে  থাকার অনেক রকমের হোটেল রয়েছে। তাছাড়া শহর থেকে দূরে দক্ষিন দিকে ওয়ান্ডুরে বিচের আশে পাশে হোটেলে থাকলে সবুজের মাঝে থাকার আনন্দ পাওয়া যাবে। নির্মল বাতাস, কোনো রকমের দূষন নেই। পের্টব্লেয়ারে পৌছনোর দিন দেখে নেওয়া যায় কভলিন কোভ বিচ। বিচে হেটে জলে পা ভিজিয়ে বিচের ওপর ডক চেয়ারে আধশোয়া হয়ে হলুদ ডাবের জল খেতে খেতে সমুদ্রের ওঠা পড়া দেখতে ভালো লাগে। ৫টার পর দেখে নেওয়া যাবে সেলুলার জেলের লাইট ও সাউন্ড শো। কত মানুষের, কত উদার জীবনের জীবন দানের ফলে ভারতবাসী উপভোগ করছে স্বাধীনতা। সেলুলার জেলের বুড়ো অশ্বথ্ব গাছের গায়ে পরম মমতায় হাত বুলিয়ে আদর করে দিতে ইচ্ছা করবে। এই সেই প্রান যে আজও সাক্ষী আছে সেইসময়ের। চরম কষ্ট ভোগ করা জীবনের বিনিময়ে পাওয়া স্বাধীনতা। পর দিন সারাদিনের জন্য চলে যাওয়া যায় নর্থ বে বিচ। লন্চে করে যেতে হবে পোর্টব্লেয়ারের একটু উত্তরে নর্থ বে বিচ। গ্লাস লাগানো বোট করে দেখা যাবে বিভিন্ন রঙের কোরাল। কোরাল মনে হবে খুব কাছে চলে এসেছে। কোরালের ফাকে ফাকে রঙীন মাছের দল ঘুরে বেড়াচ্ছে। নর্থ বে বিচে ‘সি ওয়াকিং’ সমুদ্রের নীচে হাটানোর ব্যবস্হা, স্নোকেরিং, স্কুবা ডাইভিং ইত্যাদি নানা রকমের জলের খেলা আছে। খাবারের ব্যবস্হা আছে, কেনাকাটাও করা যায়। বিভিন্ন রকমের কোরালের গয়না, মুক্তোর কানের দুল, গলার হার পাওয়া যাচ্ছে অনেক কম দামে। নর্থ বে থেকে লন্চে করে চলে আসা যায় রস আইল্যান্ডে। রস আইল্যান্ড যা ব্রিটিশ সরকারের কর্মক্ষেত্র ছিল। কত যুগ আগে ওখানে জল পরিশোধনের ব্যবস্হা ছিল, বিস্কুট – কেক বানানোর জন্য বেকারি ছিল। এখন এখানে মানুষের বসবাস নেই, তবে অনেক হরিন, খরগোশ আছে।

পরের দিন চাইলে চলে যাওয়া যায় হ্যাভলক আইল্যান্ড। সরকারী ফেরির টিকিট আগের দিন কাটতে হবে লাইনে দাড়িয়ে। ফেরি হ্যাভলক পৌছতে ৪ – ৬ ঘন্টা নেয়। হাই স্পিড ফেরি ‘ম্যাকক্রজ’ ধরা যেতে পারে। হ্যাভলক পৌছতে সময় নেয় ৯০ মিনিট। দিনে দিনে ঘুরে আসা যায় হ্যাভলক থেকে। চাইলে থাকতে পারেন, আনেক হোটেলের ব্যবস্হা আছে। সময় থাকলে ঘুরে নেবেন পাশের নীল আইল্যান্ড। হ্যাভলকে আছে তিনটি বিচ, রাধানগর, কালাপাথ্থার আর এলিফ্যান্ট বিচ। এলিফ্যান্ড বিচে জলের খেলাধুলোর ব্যবস্হা আছে। হ্যাভলকের বিচগুলির জল নীল, আবার কোথাও সবুজ। জল এত স্বচ্ছ যে নীল আকাশের ছায়া, সবুজ গাছের ছায়া জলের মধ্যে প্রতিফলিত হয়। জলের রং বদলায়, নীল, ঘন নীল, সবুজ, সাদা অপরুপ মনে হয়। জলের রঙের সঙ্গে সঙ্গে মনের অনুভূতি স্নিগ্ধ হয়। ভালো লাগে। কালাপথ্থার বিচে কালো রঙের পাথর দেখা যায়। তবে বালির রঙ সোনালী। জলে বা বিচে কোথাও গলা মাটি নেই। হ্যাভলকে অতি অবশ্যই খাবেন রাধানগর বিচের ধারে বিক্রি করা গোটা পাকা পেঁপে, আনারস। কি যে অপূর্ব স্বাদ! পাশে ছোট ছোট ঝুঁপড়ি হোটেলে দূপুরের ভাত খাবেন সুরমাই, কোকারি মাছ আর সব্জি দিয়ে। আসল বাঙাল রান্নার স্বাদ পাবেন। নীল আইল্যন্ড ঘুরে আসতে পারেন। সমুদ্রের মাঝে যাওয়া আসার পথে একদিকে দেখা যায় উত্তর আন্দামানের জঙ্গল অন্চল আর অন্য দিকে দেখা যায় আদিগন্ত সমুদ্র, শান্ত সমুদ্র।

পরের একদিন দেখে নেওয়া যায় ওয়ান্ডুর বিচ, যা পোর্টব্লেয়ার থেকে আধঘন্টার গাড়ির পথে পৌছে যাওয়া যাবে। ওয়ান্ডুর থেকে ছেড়ে লন্চে করে চলে যাওয়া যায় জলি বয় আইল্যান্ড। জলি বয় আইল্যান্ড না খোলা থাকলে রেড স্কিন আইল্যান্ড যাওয়া যায়। সেখানে আনেক রকমের, নান রঙের প্রবালের দেখা মেলে। অবশ্যই একদিন পোর্টব্লেয়ার দেখে নিন। সেলুলার জেল, চাথ্থাম শ মিল, মিউজিয়াম ইত্যাদি। সেদিন ঘুরে নিতে পারেন ভাইপার আইল্যান্ড। আন্দামান গেলাম আর জারোয়া দেখলাম না তা কি কখনো হয়? পুরো একদিন রাখতে হবে জারোয়া জঙ্গল আর পাশের ম্যানগ্রুভ জঙ্গল দেখে নেওয়া যায়। সকাল সকাল বেড়িয়ে পড়তে হবে, জিরাকটাঙের দিকে, সেখানে সকাল ৮।৩০ ও সকাল ৯টার সময় পুলিসের কনভয় জারোয়া জঙ্গলে নিয়ে যায়। কনভয় ধরার সময় জারোয়া জঙ্গল শুরুর মুখে অতি অবশ্যই খাবেন সাউথ ইন্ডিয়ানের হাতের রান্না করা বড়া, ইডলি, ধোসা, সাম্বার আর চাঠনি। আমাদের চিরপরিচিত স্বাদের থেকে একদম আলাদা। দোকানের সাউথ ইন্ডিয়ান দিদি বললেন, জঙ্গলে ঢোকার এক কিমির মধ্যেই দেখা যেতে পারে। সত্যিই তাই, দেখা মিলল, তিন জন জারোয়া যুবক, লাল, নীল রঙের রঙ চঙে সাজ, হাতে কপালে রঙিন কাপড় জড়ানো। গল্প করছিল তিন জারোয়া যুবক, এক জনতো রীতিমতো জিন্স টি শার্ট গায়ে দিয়ে। ফেরার পথে দেখা মিলল তিন টি গ্রুপে আরও ১৩ – ১৪ জনের। বাচ্চারা, যাদের বয়স ১২-১৪ বছরের মধ্যে তারা একদম কিছু গায়ে নেই, আবার যাদের বয়স ৪০ এর ওপর তারাও কোনো মতে লাল, নীল কাপড় কোমরে জড়ানো। সেইভাবে সাজের প্রতি নজর কম। সবার মুখে শরীরে সাদা রঙের দাগ কাটা রয়েছে। পথের পাশে জলের ধারার পাশে দেখা গেল তাদের সাদামাটা পাতার ছাউনি দেওয়া ঝুপড়ি। পুরো জঙ্গলটার পথ অপূর্ব, রেন ফরেস্ট, সেজন্য গাছগুলি সব লম্বা লম্বা এবং ঘন সবুজ। জিরাকটাং থেকে শুরু করে বারাটাং পর্যন্ত জারোয়া বাস। বারাটাঙে ভেসেল করে অন্য পাড়ে গিয়ে ধরতে হল স্পিড বোট, যা নিয়ে গেল ম্যানগ্রুভ জঙ্গলের মধ্য দিয়ে। সমুদ্রের ব্যাক ওয়াটার, দু পাশে এক সাইজের ম্যানগ্রুভের জঙ্গল, নীল আকাশ আর পেঁজা তুলোর মতো মেঘ। জলের বুক চিরে স্পিড বোটে করে ৯ কিমি পথ চলে যাওয়া। সেখান থেকে এক কিমি পায়ে হেটে দেখা যায় প্রচীন গুহা। গুহার হাঁ করে থাকা মুখ আমাদের প্রাচীন সময়ের কথা মনে করিয়ে দেয়। হাতে আরও তিন চার দিন সময় থাকলে চলে যাবেন জাহাজ করে মায়া বন্দর। ঘুরে আসবেন ডিগ্লিপুর। আন্দামান থেকে ঘুরে আসার পর শহুরে জীবনে অনেক দিন তাড়া করবে সমুদ্রের নীল জল, সবুজ জল, স্বচ্ছ জলের রঙীন মাছ।


Pages: 1 [2] 3 4 ... 8