Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - Lazminur Alam

Pages: 1 ... 4 5 [6] 7 8 ... 22
76
গ্রিনল্যান্ডের হাঙর (গ্রিনল্যান্ড শার্ক) পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘজীবী মেরুদণ্ডী প্রাণী। এদের আয়ু ৪০০ বছর পর্যন্ত হতে পারে। একদল আন্তর্জাতিক গবেষক গত বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছেন।

এসব হাঙরের বৃদ্ধি খুব ধীর গতির। এরা বছরে বাড়ে প্রায় এক সেন্টিমিটার করে, যা এদের অত্যন্ত দীর্ঘ জীবনকাল অর্জনের একটা কারণ। প্রাণিজগতের অন্যান্য দীর্ঘজীবীর মধ্যে এক প্রজাতির তিমি এবং গ্যালাপাগোস কচ্ছপও রয়েছে। তবে এদের ছাপিয়ে গেছে গ্রিনল্যান্ডের হাঙর। সায়েন্স সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, যৌন পরিপক্বতা পেতেই গ্রিনল্যান্ড শার্কের প্রায় ১৫০ বছর লেগে যায়। এই প্রাণীর চেয়ে দীর্ঘায়ু পায় এক ধরনের বড় ঝিনুক (৫০৭ বছর)।

গবেষকেরা বলেন, দীর্ঘজীবী প্রাণীগুলোর বয়স নির্ণয়ের জন্য তাঁরা রেডিও কার্বন পরীক্ষার সাহায্য নিয়েছেন। জেলেদের জালে ২৮টি স্ত্রী হাঙর ধরা পড়েছিল। সেগুলোর চোখের লেন্স পরীক্ষা করে বয়স জানতে পেরেছেন তাঁরা। বিজ্ঞানীদের হিসাব অনুযায়ী, ১৬ ফুট ও সাড়ে ১৬ ফুট লম্বা বড় দুটি হাঙরের বয়স যথাক্রমে ৩৩৫ ও ৩৯২ বছর।

77
History / মুর্শিদকুলী খাঁর মসজিদ
« on: August 12, 2016, 11:55:28 AM »
চারপাশে সবুজ গাছগাছালিঘেরা পুরোনো স্থাপত্যশিল্পের একটি মসজিদ। পাশাপাশি একই রকমের পাঁচটি আকর্ষণীয় গম্বুজ। ব্রিটিশ লাইব্রেরির ওয়েবসাইটসহ ঢাকার পুরোনো ছবি আছে এমন অনেক সাইট ও প্রকাশনীতে করতলব খান মসজিদের এই ছবিটি পাওয়া যায়। প্রায় সাড়ে তিন শ বছরের পুরোনো এই মসজিদ পুরান ঢাকার বেগমবাজারে অবস্থিত। এলাকাবাসীর কাছে এটি শাহি মসজিদ নামেও পরিচিত। জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলা পিডিয়ায় বলা হয়েছে, সম্রাট আওরঙ্গজেব তরুণ মুর্শিদকুলী খাঁকে ১৭০০ সালে সম্মানসূচক করতলব খাঁ উপাধি দিয়ে দেওয়ান হিসেবে বাংলায় পাঠান। তিনিই বাংলায় নবাবি শাসনের প্রতিষ্ঠাতা। ব্যক্তিজীবনে তিনি অত্যন্ত ধার্মিক ছিলেন। ১৭০১ থেকে ১৭০৪ সালের মধ্যে তিনি এই মসজিদ নির্মাণ করেন। সংযোজিত দোচালা অংশসহ এই মসজিদ একটি উঁচু ভিটে বা প্ল্যাটফর্মের ওপর অবস্থিত। প্ল্যাটফর্মটির নিচে সারিবদ্ধভাবে একাধিক বর্গাকার ও আয়তাকার কক্ষ বিদ্যমান। এগুলো অবশ্য এখন দোকানঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই মসজিদের গম্বুজগুলো পদ্ম ও কলসচূড়ায় শোভিত। গম্বুজের ভার বহনে যে পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়েছে তা ঢাকার লালবাগ দুর্গ মসজিদ ও সাতগম্বুজ মসজিদে ব্যবহৃত কৌশলের অনুরূপ। মসজিদের উত্তর পাশের আয়তাকার সম্প্রসারিত অংশটি বাঙালি দোচালা কুঁড়েঘরের মতো ছাদ দিয়ে আচ্ছাদিত। মসজিদ ভবনটির অলংকরণে স্থাপত্যিক বিষয়ের ওপর বেশি গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। ঢাকার ইতিহাস-ঐতিহ্যের একটি জ্বলন্ত নিদর্শন এই শাহি মসজিদ। পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোড ধরে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে দিয়ে বেগমবাজারের দিকে গেলেই মসজিদটি দেখতে পাবেন। তবে আগের সেই গাছপালা নেই। চারপাশে উঠে গেছে অনেক ভবন। তবু টিকে আছে মুর্শিদকুলী খাঁর মসজিদটি।

78
Heritage/Culture / ছোট চিত্রা ইগল
« on: August 10, 2016, 05:12:23 PM »
ডাকাত স্বভাবের পাখি। কাঠবিড়ালির বাসা ছিঁড়ে-খুঁড়ে ছানা বের করে খায়। অন্য শিকারি পাখিদের থোড়াই কেয়ার করে। দুঃসাহসী, তবে বাজ বা দস্যুবাজের মতো এরা জলাভূমিতে তেমন থাকে না, অন্য পাখিদের ধাওয়াও সহজে করে না। এই দুই ভাইয়ের আকার-গড়ন-ধরন-রং ইত্যাদির ভেতর এতটাই মিল যে মনে হয় যমজ ভাই, হাতে ধরেও বোঝা দুঃসাধ্য—এটি কি দারোগাবাজ নাকি তার ছোট ভাই (Indian Spotted Eagle)।
একনজরে কালচে-বাদামি পাখি। ডানার উপরিভাগে কালচে-বাদামি ছোট ছোট ছিট-ছোপ। ঋতুভেদে রং বদলায়। তখন হতে পারে ঘন চকলেট-বাদামি রং। পা হলুদাভ। পায়ের পাতা ঘোলাটে-হলুদ। নখর কালো। লেজের আগা সাদা। ঠোঁট অপেক্ষাকৃত ছোট। আমাদের আবাসিক এই পাখিটির ভেতর কেমন যেন একটা ‘বাউল বাউল’ ভাব আছে, বাউন্ডুলে স্বভাব এদের। শরীরের তলদেশ ও পায়ের পালক ফিকে-বাদামি, চোখ হলুদাভ-বাদামি বা গাঢ়, ঠোঁটের কিনারা হলুদ।
বিপদাপন্ন এই শিকারি পাখিটির চারণক্ষেত্র বন-বাগান-খোলা মাঠ-উঁচু ভূমি। বৈজ্ঞানিক নাম aquila pomarina. দৈর্ঘ্য ৬০-৬৫ সেন্টিমিটার। বাংলা নাম ছোট চিত্রা ইগল বা গুটি ইগল।
মূল খাদ্য এদের ছোট ও মাঝারি পাখি, গেছো ইঁদুর, ধেনো ইঁদুর, বেঁশো ইঁদুর, গিরগিটি, ব্যাঙ-হাঁস-মুরগির ছানা ও নির্বিষ ছোট সাপ, কাঁকড়া ইত্যাদি। পাখি শিকার করে এরা গেরিলা কৌশলে। বেছে নেয় দুর্বল, আহত বা আনাড়ি পাখিদের। কণ্ঠ তীক্ষ্ণ সুরেলা, মনে হয় আশপাশের সবাইকে ধমক দিচ্ছে।
বড় বড় গাছের মগডালে সরু ডালপালা-পাটকাঠি-কঞ্চি-বাঁশের চটা-নারকেলের ছোবড়া ইত্যাদি দিয়ে বড়সড় ডালার মতো বাসা বানায়। পুরুষটি উপকরণ আনে, মেয়েটি বাসা বানায় ও মনমতো সাজায়। ডিম পাড়ে ১টি। ক্বচিৎ ২-৩টি। মেয়েটি একাই তা দেয় ডিমে। পুরুষ থাকে পাহারায়। বউকে সে মাঝেমধ্যে পরম সোহাগে মুখে তুলে খাইয়ে দেয়। ডিম ফোটে ৪২-৪৪ দিনে।

79
Heritage/Culture / চালতা ফুল
« on: August 03, 2016, 10:39:33 AM »
চালতা বৃহত্তর বঙ্গের তরু। নিচু এলাকা ও স্বাদু পানির এলাকায় ভালো জন্মে চালতাগাছ। চালতার বৈজ্ঞানিক নাম Dillenia indica। চালতা ফল এশীয় হাতিদের অতি প্রিয়। তাই এর ইংরেজি নাম Elephant apple। এ ফলের বীজের বিস্তারে এশীয় হাতিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে হাতির সংখ্যা কমে যাওয়ার ফলে বুনো পরিবেশে চালতাগাছ প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে।

চালতার আচারের কদর বাংলাজুড়ে। কিন্তু রাজকীয় ও দৃষ্টিনন্দন চালতা ফুলের দিকে কজনই তাকায়? দীর্ঘ সবুজ পাতার মাঝে শুভ্র ও সুন্দর চালতা দেখতে খুবই মনোহারী। যদিও ঘন পাতার আচ্ছাদনে চালতা ফুল সহজেই চোখে পড়ে না। চালতা ফুলের সাদা ও নরম পাপড়িও ক্ষণস্থায়ী। দু-এক দিনেই ঝরে পড়ে। ফুলের প্রধান অংশগুলো দৃশ্যমান। সবার বাইরে থাকে পাঁচটি বৃতি। এই বৃতিই ফলে পরিণত হয়। বৃতির পরই পাঁচটি বৃহৎ পাপড়ি। পাপড়ির পরে একটি চাকতির মতো গোলাকার অংশে গর্ভদণ্ডকে ঘিরে অসংখ্য স্বর্ণালি পুংকেশর। গর্ভদণ্ডটি ঠিক মাঝখানে প্রায় ১৫টি গর্ভকেশর তারার মতো ছড়ানো থাকে।
চালতা কাঠের তৈরি নৌকা, গরুর গাড়ি গ্রামবাংলায় একসময় দেখা যেত। চালতা ফলে আছে ভিটামিন সি, ট্যানিন, শর্করা ও ম্যালক অ্যাসিড। ধীরে ধীরে চালতাগাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। দেশের দক্ষিণ এলাকায় বিশেষত বৃহত্তর বরিশাল এলাকায় এখনো প্রচুর চালতাগাছ দেখা যায়।

80
Heritage/Culture / Flowers of Bangladesh
« on: August 03, 2016, 10:35:58 AM »
We will post here all flowers of Bangladesh.

81
Animals and Pets / লক্ষ্মীপ্যাঁচা
« on: July 31, 2016, 02:03:09 PM »
নিশাচর পাখিটি হলো আমাদের অতিপরিচিত লক্ষ্মীপ্যাঁচা (Barn Owl)। Tytonidae গোত্রের পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম Tyto alba।
ঠোঁটের আগা থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত লক্ষ্মীপ্যাঁচার দৈর্ঘ্য ৩৩-৩৯ সেন্টিমিটার। ওজন ৫২০-৫৫০ গ্রাম। পুরুষগুলো আকারে কিছুটা বড়। মুখমণ্ডল পুরোপুরি হৃৎপিণ্ড আকৃতির ও সাদা এবং তাতে রয়েছে হালকা হলদেটে-লাল আভা। মাথা-ঘাড়সহ দেহের ওপরটা ও ডানা সোনালি-ধূসর এবং তাতে গাঢ় ও হালকা সাদা ফোঁটা। দেহের নিচটা রেশমি সাদা ও তাতে অল্পস্বল্প হালকা হলদেটে-লাল আভা এবং অতি সূক্ষ্ম কালো ফোঁটা। চোখ বড় বড় ও কালো। পা ও পায়ের পাতা সাদাটে বা হালকা মেটে-বাদামি। নখর কালো। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম।
লক্ষ্মীপ্যাঁচা সারা দেশেই আছে—যেমন আছে গ্রামে, তেমনি শহরেও। তবে গভীর জঙ্গলে দেখা যায় না। পরিত্যক্ত দালান, দুর্গ, মসজিদ, মন্দির ও বাড়িঘরের অন্ধকার স্থান, গাছের ফোকর, গুহা, দালানের ফাঁকফোকর ইত্যাদিতে বাস করে। এরা নিশাচর ও সন্ধ্যাচারী। ভোর ও সন্ধ্যায় শিকার করে। ইঁদুর, নেংটি ইঁদুর, ব্যাঙ, ছোট সাপ, ছোট পাখি, ডিমও খেতে পারে। এদের ডাক বড়ই অদ্ভুত। চিল-চেঁচানি, মুরগির চাপা ডাক, নাক ডাকার মতো ঘড় ঘড় বা হিসহিস শব্দ করে।
স্ত্রী-পুরুষ সারা জীবনের জন্য জোড় বাঁধে। পর্যাপ্ত খাবার থাকলে বছরে দুবারও প্রজনন করতে পারে। স্ত্রী ছয় থেকে আটটি সাদা ডিম পাড়ে। স্ত্রী একাই তা দিয়ে ৩০-৩২ দিনে ডিম ফোটায়। প্রথম ডিম পাড়ার পরই ডিমে তা দেওয়া শুরু করে। তাই সব ডিমই একসঙ্গে ফোটে না এবং বাসায় বিভিন্ন বয়স ও আকারের বাচ্চা দেখা যায়। উড়তে শেখে ৬৪ থেকে ৮৬ দিনে। বছর খানেক বয়সে পূর্ণতা প্রাপ্তি ঘটে। বুনোগুলো সচরাচর দু-চার বছর বাঁচে। তবে আবদ্ধাবস্থায় ২৫ বছর পর্যন্ত বাঁচার রেকর্ড আছে।

82
Heritage/Culture / জলকাজল
« on: July 30, 2016, 04:31:03 PM »
ধু ধু বালুচর পাড়ি দিয়ে বড়সড় গুইসাপ হেলেদুলে এগিয়ে চলেছে নদীটার দিকে। পেটভরা খিদে।
নদীর জলে নেমে পড়ল গুইসাপটি, সাঁতরে উঠে পড়ল নদীর প্রায় মাঝখানের ছোট চরটার কিনারে। অমনি চরভূমি থেকে উড়াল দিল ২৫-৩০টি পাখি। চরভূমিতে ডিম-ছানা বুকে আগলে বসা কয়েকটি পাখি কিন্তু উড়ল না, তবে মাথা-ঠোঁট ঊর্ধ্বমুখী করে সমানে চেঁচাতে লাগল। গুইসাপটি মাথা উঁচু করে দেখে নিল সবকিছু, তরপরে দ্রুত এগোতে শুরু করল বাসাগুলো লক্ষ করে। ডিম-ছানা গিলবে। অমনি উড়ন্ত পাখিগুলো ডাইভ মারতে শুরু করল। গুইসাপ তার লেজের চাবুক নাড়ছে ডানে-বাঁয়ে, মাথা এদিক-ওদিক করে আক্রমণ এড়াতে চাইছে। কিন্তু এগিয়ে চলেছে সে দ্রুতবেগেই। ঠোকর-আঁচড় অবশ্য পড়ছে মাথা-পিঠ-কোমরে, তাতে ওর যেন সুড়সুড়ি লাগছে, গুইসাপের চামড়া বলে কথা!
বাসাগুলোর কাছাকাছি পৌঁছানোর আগেই বালুমাটিতে নেমে কিছু পাখি পাশাপাশি লাইনে দাঁড়িয়ে গেল দুপাখা মেলে। পাখায় পাখা মিলিয়ে দোলাচ্ছে তালে তালে, ফোলাচ্ছে শরীরের পালক ও মাথা, আর সমানে চেঁচাচ্ছে। পাখিদের প্রতিরোধব্যূহ দেখে গুইসাপটি থমকে দাঁড়াল। পাখিদের শক্ত প্রতিরোধ ভেঙে ওটা আর এগোতে পারল না, ফিরে গেল গুইসাপ। বাঁচল মাটির বাসার ডিম-ছানারা। এভাবে শিয়াল-খাটাশ-বনবিড়ালের হাত থেকে ডিম-ছানা রক্ষা করতে পারলেও মানুষের হাত থেকে রেহাই মেলে না এদের। ডিম-ছানা তুলে নেয়। খেপজালে ধরে রাতের বেলায়।
সাহসী-কুশলী ও লড়াকু এই পাখিরা হলো গাঙচিল। জলকাজল, মাছখাইক্কা, মেছো চিলসহ আরও স্থানীয় নাম আছে এদের।
কলোনির মতো বাসা করে দ্বীপ-চরে। কমলা-হলুদ ঠোঁট এদের, মাথায় কালো টুপি। ঘাড়ের ঊর্ধ্বাংশও কালো। কপাল কালো। কালো রং চোখের ওপরটা জুড়েও, চোখ তাই দেখা কষ্ট। পা ও পায়ের পাতা লাল। বুক-পেট চকচকে ধূসর-সাদা। লেজের আগা ছাই-ধূসর ও সাদা। ছিপছিপে গড়নের লম্বাটে সরু ডানা এদের, পা খাটো। পিঠ-ডানার উপরিভাগ চকচকে ধূসর। মূল খাদ্য মাছ। পোকামাকড়-কীটপতঙ্গসহ ছোট ব্যাঙও খায়। নাম যদিও গাঙচিল, গাঙে গাঙেই ঘোরে, কিন্তু পছন্দ বেশি মিষ্টি পানির হাওর-বাঁওড়-বিল জলাশয়।
কোলাহলপ্রিয় পাখি। এদের ডাকের সঙ্গে অনায়াসে মিলিয়ে নেওয়া যাবে ‘কী হইছে, কী হইছে? মাছ মিলেছে, মাছ মিলেছে? মাছ গিলেছে, মাছ গিলেছে’জাতীয় শব্দকে।
মাটির ওপরে বাসা। ডিম পাড়ে দু-চারটি। বালুরঙা ডিম, তাতে সবুজাভ ছাইরঙা আভা, বেগুনি-বাদামি ছিট ছোপ। দুজনেই তা দেয় ডিমে। ১৮-১৯ দিনে ছানা ফোটে। এদের ইংরেজি নাম River tern. বৈজ্ঞানিক নাম Sterna aurantia. মাপ ৩৮-৪৬ সেন্টিমিটার।

83
Body Fitness / কাজের ফাঁকে ব্যায়াম
« on: July 28, 2016, 10:24:26 AM »
অফিসে সারা দিনের কাজের ব্যস্ততা, বাড়ি ফিরেও রোজ ব্যায়ামের সময় মেলে না। তাই বলে কি থেমে থাকবে শরীরচর্চা? অফিসে কাজের ফাঁকেই সহজ কিছু ব্যায়াম করা সম্ভব।
ব্যায়ামের সঙ্গে সঙ্গে গভীরভাবে শ্বাস নেওয়া ও শ্বাস ছাড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এর ফলে শরীরের বিভিন্ন স্থানে অক্সিজেন পৌঁছাবে ভালোভাবে।
* বসে থাকা অবস্থাতেই কোমরে দুহাত দিয়ে চাপ দিন। ছাদের দিকে তাকিয়ে শিরদাঁড়া যতটা সম্ভব পেছন দিকে বাঁকাতে চেষ্টা করুন। হাত দিয়ে কোমরের মাংসপেশিতে ম্যাসাজও করতে পারেন।
* কোমর সোজা রেখে ডান দিকে কাঁধ ও পিঠ বাঁকান। এতে কাঁধ ও পিঠের মাংসপেশির আড়ষ্ট ভাব কাটবে। একইভাবে বাঁ দিকে কাঁধ ও পিঠ বাঁকিয়েও ব্যায়ামটি করুন।
* কান পর্যন্ত কাঁধ উঁচিয়ে রাখতে চেষ্টা করুন। মনে মনে এক থেকে দশ গোনা পর্যন্ত এভাবে কাঁধ উঁচিয়ে রাখার পর ধীরে ধীরে শিথিল করুন।
* ডান কাঁধে ডান হাত এবং বাঁ কাঁধে বাঁ হাত রাখুন। এ অবস্থায় হাত দুটো পাঁচবার ঘড়ির কাঁটার দিকে এবং এরপর পাঁচবার ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ঘোরাতে হবে। ফ্রোজেন শোল্ডার প্রতিরোধ করতে এ ব্যায়াম ভালো।
* এক হাত সম্পূর্ণ সোজা এবং টানটান অবস্থায় রেখে এ হাতের তালু অন্য হাতের সাহায্যে চাপ দিয়ে ৯০ ডিগ্রি বাঁকিয়ে রাখতে হবে, যেন হাতের আঙুলগুলো ওপরের দিকে থাকে। একইভাবে হাতের তালুর উল্টো দিকে চাপ দিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ, যেন হাতের আঙুলগুলো নিচের দিকে থাকে। এভাবে এক হাতের ব্যায়াম শেষ করে অন্য হাতেরও ব্যায়াম করুন।
* হাঁটুব্যথা হলে বা পায়ের পেছনের মাংসপেশি টান ধরে থাকলে পা সোজা করে টানটান অবস্থায় রাখুন। মনে মনে এক থেকে দশ গোনা পর্যন্ত এভাবে থাকুন।
* চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ান। কিছুক্ষণ আঙুলের ওপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকুন, আবার কিছুক্ষণ গোড়ালির ওপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকুন।
* চেয়ারে হেলান দেওয়ার জায়গাটায় ডান হাত দিয়ে চাপ দিয়ে চেয়ারের বাঁ পাশে দাঁড়ান। এবার ডান পা ভাঁজ করুন। কয়েকবার এভাবে ব্যায়াম করুন। সম্ভব হলে চেয়ার এমনভাবে রাখুন, যেন চেয়ারের সামনের দেয়ালে আপনার বাঁ হাত পৌঁছায়। এ অবস্থায় দেয়ালে বাঁ হাত দিয়ে চাপ দিন। এর ঠিক বিপরীত পদ্ধতিতে বাম পায়েরও ব্যায়াম করুন।
* দেয়ালে দুহাত দিয়ে চাপ দিন। প্রথমে ডান পা টানটান রাখুন এবং বাঁ পা ভাঁজ করে দেয়ালের দিকে এগিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ। এরপর ঠিক এর বিপরীতভাবে কিছুক্ষণ বাঁ পা টানটান করে রাখুন এবং ডান পা ভাঁজ করে দেয়ালের দিকে এগিয়ে রাখুন।
* এক-দেড় ঘণ্টা বসে থাকার পর অন্তত চেয়ার ছেড়ে খানিকটা সময় হাঁটাহাঁটি করুন।
বিভাগীয় প্রধান, ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

84
আলতা লাল দেহের কালো ডানাওয়ালা এই পতঙ্গ এ দেশের সচরাচর দৃশ্যমান এক প্রজাপতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বাশার ও তাঁর গবেষক দল এর নাম দিয়েছেন সপ্তপদ্মরাগ। আর পশ্চিমবঙ্গে এটি আলতে নামে পরিচিত। সপ্তপদ্মরাগের ইংরেজি নাম Common Rose। Papilionidae পরিবারভুক্ত প্রজাপতিটির বৈজ্ঞানিক নাম pachliopta aristolochiae.
প্রসারিত অবস্থায় সপ্তপদ্মরাগের এক ডানার প্রান্ত থেকে অন্য ডানার প্রান্ত পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৮০-১১০ মিলিমিটার। সপ্তপদ্মরাগের দেহ আলতা লাল, তবে ওপরের অংশে বড় কালো দাগ ও নিচে কালো ছোপছিট। সামনের ডানা পুরোপুরি কালো হলেও পেছনের ডানার মধ্য অংশে সাদা ছোপ ও কিনারায় গোলাপি-বাদামি ফোঁটা রয়েছে। ডানার নিচের অংশে গিয়ে যেগুলো আরও বড় ও লাল হয়ে গেছে। পেছনের ডানায় একটি করে সুন্দর লেজ রয়েছে। চোখ, শুঁড় ও পা কালো। পুরুষ ও স্ত্রী প্রজাপতি দেখতে একই রকম।
সপ্তপদ্মরাগ বাংলাদেশের সবখানেই পাওয়া যায়। তবে, সুন্দরবনসহ বিভিন্ন ধরনের বনাঞ্চল, বনের কিনারা, চষা জমি, ঝোপ-জঙ্গল ও উন্মুক্ত এলাকায় বেশি দেখা যায়। এরা মাটি থেকে ৩-৪ মিটার ওপরে ধীরে ডানা ঝাপটানোর মতো করে ওড়ে। গাছের মগডালে রোদ পোহায়। কখনো কখনো ভেজা বালু বা স্যাঁতসেঁতে মাটির রস চুষতে দেখা যায়। মধুর জন্য ফুলে ফুলে উড়ে বেড়াতে ও পানির কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করে।
স্ত্রী প্রজাপতি ঈশ্বরমূল, গন্ধম প্রভৃতি পোষক গাছের পাতার ওপর একটি করে ডিম পাড়ে। সরু কালো দাগছোপসহ গোলাকার এ ডিমের রং লালচে। তিন দিনে ডিম ফুটে কালচে লাল কণ্টকময় শূককীট বের হয়, যার মাঝামাঝি সাদা দাগ থাকে। পাঁচবার খোলস পাল্টে শূককীট ১৪-১৫ দিনে মূককীটে রূপান্তরিত হয়। প্রায় ১১-১২ দিন পর মূককীটের খোলস কেটে নতুন প্রজাপতি বেরিয়ে আসে নীল আকাশে স্বপ্নের ডানা মেলে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার ও চীনে এদের দেখা যায়।

85
Heritage/Culture / খুদে গাঙচিল
« on: July 26, 2016, 06:38:37 PM »
বিলের টলটলে জলের ছয়-সাত ফুট ওপরে হোভারিং (দুই ডানা দ্রুত ঝাপটিয়ে শূন্যে স্থির থাকা) করছে সাদা পাখিটি। অতি দ্রুত পাখা নাড়ছে, ডানে-বাঁয়ে সামান্য সরছে, যেনবা উড়ছে একটি বড়সড় মৌমাছি। আশ্চর্য সুন্দর চিত্র যেন আঁকা হয়ে চলেছে শূন্যে, ছায়া পড়েছে টলটলে জলে। আচমকা মারল ডাইভ, ঠোঁটের ফাঁকে এক জোড়া শোলের পোনা চেপে ধরে শূন্যে যেন ছিটকে উঠল। উড়তে উড়তেই খাবার টুপুস করে গিলে আবারও শুরু করল হোভারিং। এ সময়ে আচমকা বড়সড় শোল মাছটা জল থেকে লাফিয়ে উঠল, পাকড়াও করতে চায় সে পোনার শত্রুটাকে। বিপদ বুঝে পাখিটা সটকে পড়ল।
পাখিটির নাম খুদে গাঙচিল। সাদা এই পাখিটার ঘাড়ের উপরিভাগসহ মাথা ও চোখজোড়া ঘন কালো, ওপরের ঠোঁটের গোড়ায় কপালের কাছে এক টিপ চন্দনের সাদা ফোঁটা যেন। সুচালো-লম্বা দর্শনীয় ঠোঁটটি হলুদ, আগাটা কালো। কমলা রঙের পা ও পায়ের নখর। এটা হলো বাসা বাঁধা মৌসুমের (ব্রিডিং পিরিয়ড) রং। ডিম-ছানা তোলার পরে পা ও ঠোঁট কালো হয়ে যায়। ডানার উপরিভাগসহ পিঠের রং ধূসরাভ-সাদা, গলা-বুক-পেট ও শরীরের পার্শ্বদেশ সাদা। দ্রুতগামী, চতুর ও তীক্ষ্ণ দৃষ্টিসম্পন্ন এই দুর্দান্ত ডাইভার পাখিটি শূন্যে ‘অ্যাক্রোবেটিক’ ও নানান রকম ডিসপ্লে প্রদর্শনে পারদর্শী। ধাওয়া দিয়ে ও অল্পস্বল্প ডুব দিয়ে মাছ শিকারে এরা খুবই পারঙ্গম। জলের উপরিভাগে উড়ে বেড়ানো এই পাখিদের মূল খাবার মাছ। পোকা-পতঙ্গ-ছোট ব্যাঙ-ব্যাঙাচি ও বড় মাছের পোনাও এদের কাছে প্রিয় খাবার। দিনের ১২ ঘণ্টার মধ্যে এরা গড়ে ৮ ঘণ্টাই ওড়ে, ফকফকে জোছনা রাতেও চরে, শিকার ধরে। হাওর-বাঁওড়-খাল-নদী-জলাশয়ই এদের মূল বিচরণক্ষেত্র। দূরে পাড়ি দেওয়ার সময় এরা অনেক উঁচুতে উঠে যায়।
বাসা করে বালুচর-নদীতীর বা এ রকমই জুতসই জায়গায়। অর্থাৎ মাটির ওপরে সংসার। জলখোর (Indian skimmer), বালি বাবুই ও গাঙচিলদের সঙ্গে মিলেমিশে কলোনির মতো বাসা করে। এতে মিলিত প্রতিরোধে ডিম-ছানা রক্ষা সহজ হয়। এই লেখার সঙ্গে যে ছবিটি ছাপা হলো, সেটিও বাসা করেছিল বৃহত্তর রাজশাহী জেলার এক নদীচরে। সেখানে ছিল অতি বিরল পাখি জলখোরদের বাসাও। কিন্তু মাঠ-চরের কর্মজীবী দুরন্ত ছেলেপুলেরাসহ বড়রা মিলে ওদের পেছনে লেগেছিল। জলখোররা তো তল্লাট ছেড়ে ভেগে গিয়েছিল। এদের ডিম খায় অনেকে।
প্রায় সারা দেশে দেখতে পাওয়া যায় পাখিটি। আমাদের দেশের সবচেয়ে ছোট এই গাঙচিলের নাম খুদে গাঙচিল। তবে বাগেরহাটে এদের নাম মেঘ কইতর ও কাজল চিল। ইংরেজি নাম little tern। বৈজ্ঞানিক নাম sterna albifrons। মাপ ২২-২৪ সেমি। মেয়ে ও পুরুষ দেখতে একই রকম। ডিম পাড়ে দুই-তিনটি। রং হয় সবুজাভ-হলুদাভ ও ধূসর রঙের মিশ্রণে। লালচে ও বাদামি ছিটছোপ থাকে। দুজনেই পালা করে তা দেয় ডিমে।

86
Fruit / কলা
« on: July 23, 2016, 06:42:46 PM »
* পৃথিবীতে ফল চাষের যাত্রা শুরু খুব সম্ভব কলা চাষের মাধ্যমে। প্রত্নতত্ত্ববিদেরা প্রমাণ পেয়েছেন, প্রায় আট হাজার খ্রিষ্টপূর্বাব্দে বর্তমান নিউ গিনিতে কলার চাষ হয়েছিল।
* ইংরেজি ‘বানানা’ শব্দটি আরবি শব্দ ‘বানান’ থেকে নেওয়া, যার অর্থ আঙুল।
* কলাগাছ সত্যিকার অর্থে কোনো গাছ নয়।
* প্রতিবছর যুক্তরাজ্যে একজন মানুষ গড়ে ১০০টি কলা খান।
* বিশ্বের ৬০ শতাংশ কলা উৎপাদিত হয় এশিয়া মহাদেশে। দেশ হিসেবে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি কলা উৎপাদিত হয় ভারতে, যা সারা বিশ্বের মোট কলা উৎপাদনের প্রায় ২৩ শতাংশ। এর পরের সারিতে রয়েছে চীন, উগান্ডা, ফিলিপাইন, ইকুয়েডর ও ব্রাজিল।
* কলা নিয়ে গান রচনা করে বক্স অফিস কাঁপানোর নজিরও কিন্তু ইতিহাসে রয়েছে। ১৯২৩ সালে ফ্রাঙ্ক সিলভার ও অরভিং চোর লেখা ‘ইয়েস! উই হ্যাভ নো ব্যানানাস!’ গানটি পাঁচ সপ্তাহ ধরে এক নম্বরে ছিল।
* ৫০ গোত্রভুক্ত প্রায় এক হাজার জাতের কলা পৃথিবীতে রয়েছে। তবে সবচেয়ে পরিচিত জাত ‘ক্যাভেন্ডিশ বানানা’, যা আমরা সাগরকলা হিসেবে চিনি।
* কলাতে ট্রিপটোফেন নামে একধরনের প্রোটিন থাকে, যা ক্লান্তি দূর করে শরীর-মন তরতাজা করে তুলতে সাহায্য করে।
সূত্র: লাইভসায়েন্স ও বানানালিংক

87
হলদে ঝুঁটির সুন্দর এই পাখির নাম বড় হলদেসিঁথি কাঠঠোকরা (Greater Yellow-nape, Greater Yellow-naped Woodpecker or Large Yellow-naped Woodpecker)। বড় হলদেসিঁথি কাঠকুড়ালি নামেও পরিচিত। Picidae গোত্রের পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম Picus flavinucha। যার অর্থ সোনালিঘাড় কাঠঠোকরা।
বড় হলদেসিঁথি কাঠঠোকরা দৈর্ঘ্যে ৩৩-৩৪ সেন্টিমিটার এবং ওজনে ১৫৩-১৯৮ গ্রাম। পুরুষগুলো কিছুটা বড় হয়। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথা ও ঘাড়ে সুদৃশ্য সোনালি-হলুদ ঝুঁটি, ঘাড় বাদামি, পিঠ হলদে-সবুজ ও দেহের নিচটা জলপাই-ধূসর। ডানার মধ্য-পালকে চওড়া লাল ও কালো ডোরা এবং লেজ কালো। ঠোঁটের গোড়া কালচে ও আগা সাদা। চোখ বাদামি-রক্তাভ। পা ও পায়ের পাতা ধূসরাভ-সবুজ এবং নখ ফিকে। স্ত্রী ও পুরুষ পাখির মধ্যে কিছুটা পার্থক্য দেখা যায়। স্ত্রীর থুতনি ও গলার পালক লালচে-বাদামি, পুরুষের ক্ষেত্রে যা হলুদ। অপ্রাপ্তবয়স্কগুলোর ঘাড় সাদা বা পীতাভ এবং গলায় সাদা-কালো দাগ দেখা যায়। তা ছাড়া এদের দেহের নিচটা ধূসর হয়।
বড় হলদেসিঁথি কাঠঠোকরা এ দেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, চীন, নেপাল, ভুটান, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশেও পাওয়া যায়। এরা মূলত বড় পাতাওয়ালা চিরসবুজ ও পাতাঝরা বন এবং গরান বনের বাসিন্দা। সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের বনাঞ্চল এবং চা–বাগান ও সুন্দরবনে এদের দেখা যায়। চোখা ঠোঁটের মাধ্যমে গাছের বাকল থেকে পিঁপড়া, উইপোকা, রসাল শূককীট ও অন্যান্য কীটপতঙ্গ খুঁটিয়ে বের করে খায়। ফুল ও ফলের নির্যাস পান করতেও পছন্দ করে।
মার্চ থেকে মে প্রজননকাল। বনের বড় বড় গাছের কাণ্ডে বা ওপরমুখী শাখায় গর্ত করে বাসা বানায় এবং তাতে তিন–চারটি সাদা রঙের ডিম পাড়ে। স্ত্রী-পুরুষ পালাক্রমে ডিমে তা দেয় এবং ১১-১৪ দিনে ডিম ফোটে। ১৮-৩০ দিনে বাচ্চারা উড়তে শেখে।

88
History / সাত মসজিদ
« on: July 22, 2016, 03:10:06 PM »
পেছনে বিস্তৃত বুড়িগঙ্গা নদী। তীরে একটি নৌকা ভেড়ানো। সামনে নয়নাভিরাম একটি মসজিদ। ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় যাঁরা থাকেন, তাঁদের কাছে মসজিদটি বেশ চেনা। এটি সাত গম্বুজ মসজিদ। ইন্টারনেটে নদীর তীরের মসজিদটির বেশ পুরোনো একটি ছবি পাওয়া গেল। ছবিটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সৌজন্যে পাওয়া। তবে ছবিটি ঠিক কত সালে তোলা তা উল্লেখ নেই। ১৮১৪ সালে স্যার চার্লস ডি ওয়াইলি বুড়িগঙ্গা নদীর পাশে এই সাত মসজিদের একটি শিল্পকর্ম এঁকেছিলেন। সেটিও ইন্টারনেটসহ বিভিন্ন বইতে আছে। জাতীয় জ্ঞানকোষ বাংলাপিডিয়া, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এবং ঢাকা জেলার ওয়েবসাইটের তথ্য খুঁজে জানা গেল, মোগল আমলে নির্মিত হয় এই সাত মসজিদ। ছাদে তিনটি বড় গম্বুজ এবং চার কোণের প্রতি কোনায় একটি করে ছোট গম্বুজ থাকায় একে সাত গম্বুজ মসজিদ বলা হয়। ১৬৮০ সালে মোগল সুবাদার শায়েস্তা খাঁর আমলে তাঁর পুত্র উমিদ খাঁ মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদের পূর্ব পাশে অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে একটি সমাধি। কথিত আছে, এটি শায়েস্তা খাঁর মেয়ের সমাধি। সমাধিটি ‘বিবির মাজার’ বলেও খ্যাত। স্থানীয় ব্যক্তিদের ভাষ্য অনুযায়ী, একসময় মসজিদের পাশ দিয়ে বয়ে যেত বুড়িগঙ্গা। ঘাটেই ভেড়ানো হতো লঞ্চ ও নৌকা। কিন্তু এখন সেসব হারিয়ে গেছে। বর্তমানে মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে আছে। কেউ যদি মোহাম্মদপুরের কাটাসুর থেকে শিয়া মসজিদের দিকের রাস্তা ধরে বাঁশবাড়ীর দিকে যান, তবে চোখে পড়বে এই মসজিদ। মসজিদের ঠিক পেছনেই আছে একটি মাদ্রাসা। অবশ্য এখন আর সেই বুড়িগঙ্গা নেই। সেখানে উঠেছে অনেক বহুতল ভবন।

89
Place / পৃথিবীর শীতলতম স্থান
« on: July 22, 2016, 03:03:19 PM »
বিশ্বের শীতলতম স্থায়ী জনবসতি রাশিয়ার সাখা প্রজাতন্ত্রের অয়িমিয়াকোন গ্রাম। সুমেরু বৃত্ত থেকে মাত্র কয়েক শ কিলোমিটার দূরে রাশিয়ার তুন্দ্রা অঞ্চলের এই গ্রামে সম্প্রতি গিয়েছেলেন নিউজিল্যান্ডের শখের চিত্রগ্রাহক অ্যামোস চ্যাপেল।
কতটুকু শীতল আবহাওয়া অয়িমিয়াকোনে?  ১৯২৪ সালে সেখানে তাপমাত্রা নেমেছিল হিমাঙ্কের ৭১ দশমিক ২ ডিগ্রি নিচে।  আবহাওয়া চরম বৈরী হলে কী হবে, এই এলাকা হীরক, তেল ও গ্যাসের এক বিশাল ভান্ডার হিসেবে পরিচিত।
অয়িমিয়াকোন গ্রামের স্থায়ী জনসংখ্যা ৫০০। গ্রামের রাস্তা একেবারেই শূন্য থাকে। গ্রামবাসী হয়তো এ পরিবেশে বেশ অভ্যস্ত। কিন্তু, মানুষজন শীতে একেবারে কাতর।’
অয়িমিয়াকোন গ্রামের মানুষজন প্রায় সবকিছুই করে বাড়ির মধ্যে। তবে শীতের ভয়ে গ্রামটির জীবন বসে নেই। তাপ হিমাঙ্কের ৪০ ডিগ্রি নিচে না নেমে এলে স্কুল চলতেই থাকে।
অয়িমিয়াকোন গ্রামের সব বাথরুম আর টয়লেট বাড়ির বাইরে। পাছে প্রচণ্ড শীতে মলমূত্র জমে পাইপলাইন বন্ধ হয়ে যায়, সে জন্যই এ ব্যবস্থা। ঠান্ডায় গাড়ি অচল যাতে না হয়, সে জন্য সারা রাত ইঞ্জিন চালু রাখেন অনেকে। এমনই শীতল জায়গা অয়িমিয়াকোন। মজার ব্যাপার, স্থানীয় এই শব্দটির অর্থ ‘অহিমায়িত পানি।’

90
Heritage/Culture / কালো তিতির পাখি
« on: July 21, 2016, 02:10:17 PM »
জায়গাটির নাম কাজিপাড়া। ভারতের সীমানার কাছের একটি গ্রাম। এখানেই বাস করে বাংলাদেশের বিপন্ন প্রজাতির এক পাখি। নাম তার কালো তিতির। স্থানীয় লোকজনের কাছে অবশ্য পাখিটি শেখ ফরিদ নামেই পরিচিত। পাখিটি ডাকলে মনে হয়, সে শেখ ফরিদ নামের কাউকে ডাকছে। একসময় অনেক কালো তিতির ছিল এ জনপদে। কিন্তু বসতি ধ্বংস ও স্থানীয় শিকারিদের কারণে হারিয়ে গেছে অনেক পাখি। ধারণা করা হচ্ছে, বাংলাদেশের তেঁতুলিয়াই এ পাখির শেষ প্রাকৃতিক আবাসস্থল।
পাখিটি সাধারণত গম, ভুট্টাখেত, তিলখেত, বুনো গুল্মের ঝোপ, চা-বাগান, শণের খেত, দাঁতরাঙা ফুলগাছের ঝোপে বিচরণ করে। খুব সকালে ও শেষ বিকেলে খাবার খেতে পাখিটি একটু খোলা জায়গায় চলে আসে। তবে সব সময় দেখা গেছে, নিজেকে আড়াল করা যায় এমন গাছপালার ফাঁকে ফাঁকে শেখ ফরিদ হেঁটে বেড়ায়। প্রজননের সময় পুরুষ পাখিটি বেশি ডাকাডাকি করে, তার দেখা পাওয়া কিছুটা সহজ। মেয়ে পাখিটির দেখা মেলে কালেভদ্রে। খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হলে পুরুষ পাখিটিই প্রথম ঝোপ থেকে বের হয়। এর কিছুক্ষণ পর মেয়ে পাখিটি এক-দুই পা করে বের হয়। এদের চলাফেরা গৃহপালিত মুরগির মতোই। মানুষের উপস্থিতি টের পেলে মেয়ে পাখিটি দ্রুত উড়ে বা দৌড়ে পালায়।
তেঁতুলিয়ার স্থানীয় অনেক মানুষ পাখিটি শিকার করেন। পাখিটির সন্ধানে, ছবি তোলা ও সংরক্ষণকাজে সেখানে যাওয়া-আসার ফলে স্থানীয় জনগণ কিছুটা সচেতন হয়েছেন। প্রতিবারই মানুষকে বোঝানো হয়েছে। আর স্থানীয়ভাবে কাজিপাড়ার যে জমিতে পাখিটি বিচরণ করে, সেই জমির মালিক তাঁদের জমিতে তিতির শিকার নিষিদ্ধ করেছেন। ফলে শিকার একটু কমেছে।
তিতির মুরগি গোত্রের পাখি। দেখতে ও চালচলন কিছুটা গৃহপালিত মুরগির মতো। এ জন্য কাজিপাড়া গ্রামের লোকজন এ পাখিকে বনমুরগি বলেন। আমাদের পাহাড়ি বনে ও সুন্দরবনে লাল বনমুরগি বসবাস করে। বাংলাদেশে একসময় তিন জাতের তিতির পাখি ছিল। এর মধ্যে বাদা তিতির ও মেটে তিতির আমাদের দেশ থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এখন শুধু কালো তিতির টিকে আছে। কালো তিতির কালচে বাদামি ভূচর পাখি। দেহের দৈর্ঘ্য ৩৪ সেমি, ওজন ৮৩০ গ্রাম। পুরুষ ও মেয়ে পাখির চেহারা ভিন্ন। পুরুষ পাখির পিঠ ঘন কালো, মধ্যে মধ্যে সাদাটে ফোঁটা আছে। মুখ কালো ও গলা সাদা। দেহতল গাঢ় কালো। মেয়ে পাখির পিঠ ফিকে বাদামি। ঘাড়ের নিচের অংশ লালচে, কানের ঢাকনি হালকা পীত রঙের। কালচে চক্ষুরেখা, কাঁধের ঢাকনিতে ও পিঠে হালকা পীতবর্ণের লম্বা ছিটা আছে। দেহতলের বাকি অংশে সাদা-কালো ডোরা আছে। ইংরেজি নাম Black Francolin।

Pages: 1 ... 4 5 [6] 7 8 ... 22