Daffodil International University

Faculty of Allied Health Sciences => Pharmacy => Topic started by: farjana aovi on September 11, 2018, 11:47:59 AM

Title: জে কে রাওলিংয়ের সাফল্যের ১০ সূত্র
Post by: farjana aovi on September 11, 2018, 11:47:59 AM
 
 

জে কে রাওলিংজে কে রাওলিং
‘হ্যারি পটার’ সিরিজের জন্য দুনিয়াজোড়া খ্যাতি পেয়েছেন ব্রিটিশ লেখিকা জে কে রাওলিং। পড়ুন তাঁর সাফল্যের সূত্র:


ব্যর্থতা থেকে নিজেকে আবিষ্কার করা যায়
এ কথা এখন অনেকেরই জানা যে প্রায় ১২ জন প্রকাশক জে কে রাওলিংকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর অবশেষে সাফল্যের মুখ দেখেছিল ‘হ্যারি পটার’। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে রাওলিং বলেন, পাণ্ডুলিপি হাতে প্রকাশকদের দ্বারে দ্বারে ঘোরার সময়টাতেই আদতে তিনি নিজেকে আবিষ্কার করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘ব্যর্থতা মানুষের জীবন থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো ছেঁটে ফেলে দেয়। আমি যা হতে চাই, সেটা না হতে পারলেও জীবনে একটা না একটা পথ হয়েই যাবে—নিজেকে আমি এ কথা বলে সান্ত্বনা দিতে চাইনি। বরং সব শক্তি এক করে শেষ দেখতে চেয়েছি। হয়তো সত্যিই অন্য কোনো কাজে গেলেও আমি সফল হতাম। কিন্তু একাগ্রতা নিয়ে লেগে থাকলে যে নিজের পছন্দের জায়গাটাতে পৌঁছানো যায়, এই শিক্ষা তো আমার পাওয়া হতো না।’


শুধু ভাবলে চলবে না
হ্যারি পটারের স্রষ্টা বিশ্বাস করেন, ভাবনাটা শুধু মাথার ভেতর লালন করলেই সফল হওয়া যাবে না। সেটা কার্যকর করতে হবে। আপনার কাজের ক্ষেত্র যা-ই হোক, কোনো ‘আইডিয়া’ মাথায় এলে সেটা পর্যালোচনা করুন এবং কাজে লাগান। জে কে রাওলিংয়ের মাথায় যখন হ্যারি পটারের ভাবনা প্রথম এল, তিনি তখন ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। ভাবনাটা তাঁকে এতই রোমাঞ্চিত করেছিল যে দেরি না করে তিনি ঝটপট সেটা টুকে রেখেছিলেন। পরের ৫ বছর ধরে তিনি হ্যারি পটারের প্রতিটি বইয়ের ভাবনা সাজিয়েছেন এবং সেগুলোকে উপন্যাসে রূপ দিয়েছেন।


সমালোচনার জন্য তৈরি থাকুন
হ্যারি পটার যেমন তুমুল প্রশংসিত হয়েছে, তেমনি সমালোচিতও হয়েছে। জে কে রাওলিং এই সমালোচনা সহজভাবে নিয়েছেন। একবার তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘আপনি কি নিজের জন্য লেখেন, নাকি পাঠকের জন্য?’ উত্তরে ব্রিটিশ লেখক সিরিল কোনোলিকে উদ্ধৃত করে রাওলিং বলেছেন, ‘নিজস্বতা হারিয়ে স্রেফ পাঠকের জন্য লেখার চেয়ে পাঠক হারিয়ে নিজেকে ধরে রাখা ভালো।’


শেকড়ের কথা মনে রাখুন
একটা তথ্যচিত্রে দেখা যায়, নিজের পুরোনো ঠিকানায় (যে বাড়িতে বসে তিনি হ্যারি পটার লিখেছিলেন) ফিরে আবেগপ্রবণ হয়ে রাওলিং কাঁদছেন। এখন বিশ্বের সবচেয়ে ধনী লেখক হওয়া সত্ত্বেও শুরুর দিনগুলো তিনি ভুলে যাননি। রাওলিং বিশ্বাস করেন, শেকড়ের কথা মনে রাখলে মানুষ বিনয়ী হয়।


আত্মবিশ্বাস হারালে চলবে না
‘এটা অনেক বড়!’—এই অভিযোগে প্রকাশকেরা বারবার ফিরিয়ে দিয়েছেন হ্যারি পটারের পাণ্ডুলিপি। কিন্তু রাওলিং তাঁর বিশ্বাসে অনড় ছিলেন। তিনি বলেন, ‘পৃথিবী বদলে দেওয়ার শক্তি আমাদের ভেতরে আছে, সে জন্য জাদু জানার প্রয়োজন নেই। একটা আরও সুন্দর পৃথিবী আমরা কল্পনা করতে পারি।’


দিন শুরু হোক খুব সকালে
জে কে রাওলিং একজন সাহিত্যিক। অথচ তিনি কিন্তু ৯টা-৫টা অফিসের মতোই নিজের সময়টাকে বেঁধে নিয়েছেন। তাঁর ওয়েবসাইটে এক পাঠকের দেওয়া প্রশ্নের উত্তরে রাওলিং লিখেছেন, ‘সকাল ৯টায় আমার কাজ শুরু হয়। পৃথিবীতে আমার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা হলো আমার লেখার ঘর। যত আগে দিনটা শুরু হয়, সময়টা ততই কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারি। মাঝে কয়েকবার বিরতি নিয়ে সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত লেখালেখি করি। ফ্যান্টাস্টিক বিস্টস অ্যান্ড হোয়্যার টু ফাইন্ড দেম ছবির সংলাপ লিখতে গিয়ে কয়েক রাত জাগতে হয়েছিল। এর বাইরে গত কয়েক বছরের প্রতিটি দিন আমি খুব সকালে উঠতে চেষ্টা করেছি।’


আপনার জীবনের দায়িত্ব আপনারই
ছেলেবেলায় আমরা পুরোপুরি মা-বাবার ওপর নির্ভরশীল থাকি। বড় হওয়ার পথেও আমরা তাঁদের পরামর্শ, উপদেশ প্রত্যাশা করি। কিন্তু তাই বলে জীবনের ব্যর্থতার দায় মা-বাবা কিংবা অন্য কারও ওপর চাপানোর সুযোগ নেই। নিজের দায়িত্ব নিজে নিতে শিখলেই আপনার মধ্যে জয়ী হওয়ার ক্ষুধা তৈরি হবে। জে কে রাওলিং বলেন, ‘আমার জীবনের ব্যর্থতার জন্য দায়ী আমার মা-বাবা—এই অভিযোগ একদিন মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাবে। যখন থেকে আপনি নিজেই আপনার জীবনের চালকের আসনে বসবেন, তখন দেখে সব দায়িত্ব আপনার।’


বেঁচে থাক কল্পনা
‘অদেখাকে দেখার একটা অনন্য সুযোগ করে দেয় কল্পনাশক্তি। এই শক্তির জোরেই নতুন নতুন আবিষ্কার হয়, উদ্ভাবন হয়,’ বলেছেন জে কে রাওলিং। বিভিন্ন বক্তৃতায়, লেখায় তিনি সব সময় কল্পনাশক্তির ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি মনে করেন, অসম্ভব কোনো কিছুকে অর্জন করতে হলে আগে কল্পনাপ্রবণ হতে হয়। বড় স্বপ্ন দেখার সাহস করতে হয়।


অর্জন মানেই আনন্দ নয়
অনেক কিছু থাকা সত্ত্বেও কারও কারও জীবনে আনন্দ নেই। আবার ছোট্ট কোনো অর্জনও কখনো কখনো মানুষের মনে অদ্ভুত প্রশান্তি দেয়। জে কে রাওলিং বলেন, ‘একের পর এক অর্জনই জীবনের সব নয়, এটা যখন বুঝবেন, তখনই আপনি ব্যক্তিজীবনে সুখী হতে পারবেন। আপনার জীবন, আপনার যোগ্যতার প্রতিফলন নয়।’ রাওলিং মনে করেন, জীবনটা হলো একটা গল্পের মতো। ‘গল্পটা কত বড়, তাতে কিছু যায় আসে না। বরং গল্পটা কতখানি ভালো, দিন শেষে সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’

১০
যা ভালোবাসেন, তা-ই করুন
‘আমার খুব সৌভাগ্য, আমি যা সবচেয়ে ভালোবাসি, সেটাই আমার কাজ। সব সময় জানতাম, আমি একজন লেখকই হতে চাই।’ বলছেন জে কে রাওলিং। যা ভালোবাসেন, তা নিয়ে কাজ করলেই আপনি নিজের সেরাটা দিতে পারবেন। আনন্দের সঙ্গে পরিশ্রম করবেন।
সূত্র: নো স্টার্টআপ