Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - Md. Alamgir Hossan

Pages: [1] 2 3 ... 44
1
Psychological Support / Re: Self Acceptance
« on: July 13, 2021, 07:31:11 PM »
Very good article indeed, Thank you so much for sharing

2
সাজিয়া ওমরকে অনেকে চেনেন লেখক হিসেবে। ২০০৯ সালে তাঁর প্রথম উপন্যাস ‌লাইক এ ডায়মন্ড ইন দ্য স্কাই প্রকাশ করে ভারতের বিখ্যাত প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান পেঙ্গুইন। এরপর লিখেছেন আরও দুটি উপন্যাস। তবে বড় বড় আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করা সাজিয়া, সব সময়ই মন যেটা চেয়েছে, তা করেছেন। করোনাকালে ঘরবন্দী থেকে এখন যেমন যোগব্যায়াম (ইয়োগা) নিয়ে মেতে আছেন। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রতিদিন একটি করে ভিডিও প্রকাশ করছেন। শেখাচ্ছেন যোগের মাধ্যমে শরীরচর্চার নানা সুবিধা।

যোগব্যায়ামের জগতে সাজিয়া মোটেও নবীন নন, বেশ পুরোনো প্রশিক্ষক। দেশ–বিদেশ ঘুরে সাজিয়া ওমর বাংলাদেশে থিতু হয়েছেন ২০০৫ সালে। আর সেই সময় থেকেই ঢাকায় যোগ ও পিলাটিসের মতো শরীরচর্চার প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন। সাজিয়া এসব শিখেছিলেন কোথায়? ফোনে এমন প্রশ্নের পর বেশ একচোট হাসলেন। তারপর বললেন, ‌‘নিউইয়র্কে টুইন টাওয়ার হামলার সময়ে আমি ওখানে কর্মরত ছিলাম। এত বড় একটি ঘটনার পর বেশ ভেঙে পড়েছিলাম। মনে হচ্ছিল নতুন কিছু করতে হবে, যাতে নিজে শান্তি পাব। এই সময়ে আমি ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও ভারত ভ্রমণ করি। সেখানেই আমার ইয়োগার প্রতি আকর্ষণ বাড়ে। প্রশিক্ষণ নিই। নিউইয়র্ক, লন্ডনে থাকতে আমি সেখানে ইয়োগা শেখাতাম। এরপর দেশে এসে শুরু করলাম।’


শুরুর দিকের কথা বলতে গিয়ে আরও যোগ করেন সাজিয়া—দেশে যখন শুরু করি তখন এটি নতুন একটি ধারণা। তবে অনেকেই শেখা শুরু করলেন। বিশেষ করে অনেক খেলোয়াড় বা বিদেশিরা আসতে শুরু করেন। এখন তো আমার অনেক শিক্ষার্থী ইয়োগা স্কুল চালু করেছে। লোকজনকে শেখাচ্ছে। খুব ভালো লাগে, মানুষ শরীরের যত্নে সচেতন হচ্ছে।

সাজিয়া ওমর বর্তমানে কাজ করছেন বিশ্ব ব্যাংকে, কাজের ক্ষেত্র যোগাযোগ। এর আগে জাতিসংঘের নানা সংস্থা, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), সিরির মতো প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। তবে যখন যেখানেই কাজ করেছেন, চাপ সামলে নিয়েছেন সহজে। যোগব্যায়াম করে শারীরিকভাবে ফিট থাকতেন। সাজিয়া বলেন, ‘স্পন্ডালাইটিস, হাঁপানি, ডায়াবেটিস, ওজন কমানো বা মেদ থেকে শুরু করে শরীরের সব ধরনের সমস্যা নিরাময়ে আছে ভিন্ন ভিন্ন যোগব্যায়াম। শুধু সঠিকভাবে সেটা প্রয়োগ করতে হবে। অনেকেরই কোর মাসল শক্ত না থাকলে স্লিপডিস্ক হয়, সেটাও সহজে সারাতে পারে ইয়োগা।’

যোগব্যায়ামের ধরনধারণ

তিনটা পর্বে ইয়োগা করা হয় বলে জানালেন এই প্রশিক্ষক। এর মধ্যে আছে আসন (শারীরিক ব্যায়াম), প্রাণায়াম (মানসিক) ও মেডিটেশন (ধ্যান)। প্রতিটি পর্ব ১০-১৫ মিনিট করে করতে হবে। তবে একসঙ্গে সবগুলো না করলেও সমস্যা নেই। দিনের বিভিন্ন সময় ভাগ করে একেকটি পর্ব শেষ করা যেতে পারে। ইয়োগার সবচেয়ে কার্যকর দিক হচ্ছে প্রায় সব বয়সেই এটি করা যায়। সাজিয়া ওমর প্রশিক্ষণ দেন গুলশান ২–এর ৮০ নম্বর সড়কের নর্ডেক ক্লাবে। করোনাভাইরাসের কারণে আপাতত সেটি বন্ধ আছে। ঘরে থেকে মনোবল ঠিক রেখে এখন দরকার সুস্থ থাকা। আর এই ভাবনা থেকেই ইউটিউবে নিজের চ্যানেলে (www.youtube.com/shaziaaminaomar) প্রতিদিন নতুন নতুন শরীরচর্চার ধারণা দিচ্ছেন সাজিয়া ওমর। শেখাচ্ছেন কীভাবে করতে হবে শরীরচর্চা। আর সাজিয়া বললেন, লেখালেখির মতো শরীরচর্চাও আমার কাছে একটা প্যাশন। আর সেটি থেকে যদি মানুষের উপকারে আসতে পারি তাহলে ক্ষতি কী!’

3
পিসিআর পদ্ধতিতে ল্যাবে কোভিড-১৯ টেস্ট করতে যেখানে সময় লাগে দুদিন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত কিটে সেখানে সময় লাগবে মাত্র পাঁচ মিনিট। টেস্টের ফলও আসবে শতভাগ নির্ভুল। এমনটিই দাবি করেছেন ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লোট’ প্রকল্পের বিজ্ঞানীরা।

গত শনিবার  ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালের গেরিলা কমান্ডার মেজর এ টি এম হায়দার বীর বিক্রম মিলনায়তনে আয়োজিত কিট হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তারা এ দাবি করেন।

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা, কিট উদ্ভাবনের প্রধান গবেষক গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড.বিজন কুমার শীল, গবেষণা প্রকল্পের সমন্বয়কারী ডা. মুহিব উল্লাহ খোন্দকার কিট সম্পর্কে নিজেদের মতামত ও অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ‘আমাদের টেস্ট কিটে আমরা দুই ধরনের ফেজ ডেভেলপ করেছি। একটা হলো করোনা ভাইরাসের অ্যান্টিজেন ডিটেকশন। আরেকটি হচ্ছে অ্যান্টিবডি ডিটেকশন। প্রত্যেকটা ইনফিউশনে দুটি ডোর থাকে। একটি হচ্ছে অ্যান্টিজেন বা ভাইরাল ফেজ আরেকটি হলো অ্যান্টিবডি।’

‘আমাদের সবচেয়ে বড় অ্যাচিভমেন্ট হলো- আমরা দুটি ফেজ একত্রিত করতে পেরেছি। ফলে আমরা শতভাগ রোগীকে শনাক্ত করতে পারব। এই টেস্ট খুব সহজ এবং স্বল্প সময়ে করা যাবে। যেখানে পিসিআর করতে দুদিন সময় লাগে সেখানে আমাদের এই কিটে টেস্ট করতে মাত্র ৫ মিনিট সময় লাগবে’— বলেন ড. বিজন কুমার শীল।

কিটের সহজ ব্যবহার পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি জানান, এক সেট কিট বক্সে একটা ডিভাইস এবং দুই ধরনের বাফার থাকবে। ওই ডিভাইসের ভেতরে ক্যাপসারিন রিএজেন্ট দেওয়া আছে। ডিভাইসে প্রথমে একটি বাফার দুই ড্রপ দেওয়ার পরে সাসপেক্টেড স্যাম্পল দিতে হবে। ডিভাইস সেটি চুষে নেওয়ার পর আবার দুই ড্রপ বাফার দিতে হবে। এরপর আরেক ধরনের বাফার (যেটা মূলত গোল্ডপার্টিক্যাল) দুই ড্রপ দিতে হবে। যদি কোভিড-১৯ পজেটিভ হয়, তাহেল দুটি ডট আসবে। আর যদি নেগেটিভ হয়, তাহলে একটি ডট আসবে। সবকাজ সম্পন্ন করতে সময় লাগবে সর্বোচ্চ ৫ মিনিট।

ড. বিজন কুমার শীল বলেন, ‘এই টেস্টের পটভূমি যদি বলি এটি শুরু হয়েছিল সিঙ্গাপুরে। ২০০৩ সালে আমি যখন সার্স ভাইরাস নিয়ে কাজ করি, তখন ডট ব্লোট ডেভেলপ করি। তখন এর সময় ছিল ১৫ মিনিট। যখন এটাকে ডিভাইসে নিয়ে আসি, তখন এর সময় চলে আস পাঁচ মিনেটে।’

কিট হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আরেকজন গবেষক বলেন, ‘টেস্ট কিট নিয়ে বিতর্ক অনেক আছে। আমরা যারা চিকিৎসা বিজ্ঞানী, বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করছি তারা নানারকম বিতর্ক করে যাচ্ছি। পিসিআর পদ্ধতি ভালো। সেলুলজিক্যাল পদ্ধতি খারাপ!’

‘আমাদের বক্তব্য হলো, দেশের অর্থনীতিকে যদি রক্ষা করতে হয়, তাহলে এত লম্বা সময় ধরে, এত টাকা খরচ করে পিসিআর পদ্ধতিতে টেস্ট করা যাবে না। আমাদেরকে খুব সহজ পদ্ধতিতে যেতে হবে। ধরুন আমরা একটা ইন্ডাস্ট্রি খুলব। ইন্ডাস্ট্রিতে দুই হাজার লোক আছে। আমরা সেখানে কিট নিয়ে যাব। একদিনের মধ্যে টেস্ট করে বলে দেব, এখানে কে কে ইনফেক্টেড আছে’— বলেন ওই গবেষক।

তিনি বলেন, ‘এয়ারপোর্ট বা গাবতলীতে চেকপোস্ট বসাতে গেলে সেখানে পিসিআর নেওয়া যাবে না। কারণ, পিসিআর পদ্ধতিতে কাজ টেস্ট করতে হলে বড় ল্যাবরেটরি সেটআপ দিতে হয়। সহজ পদ্ধতিই আমাদের নিতে হবে। এই কারণেই ডব্লিউএইচও’, ‘সিডিসি’ সেলুলজিক্যাল টেস্টে যাওয়ার কথা বলছে। এখন কথা হলো- এই টেস্টে সেনসিটিবিটি কতটা হবে? এটা আসলে নির্ভর করছে বিজ্ঞানীরা কীভাবে বিষয়টি ডিজাইন করছে, সেটির ওপর। আমরা সেটি করতে সমর্থ হয়েছি।’

4
ক্যাম্পাসের বাইরে পা রাখিনি প্রায় দেড় মাস হলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডর্মে থাকছি, ক্লাস করতে হচ্ছে অনলাইনে। এমন বিচিত্র অভিজ্ঞতা শুধু আমার কেন, মনে হয় যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্যই বিরল।

আমি চীনের হুঝো শহরের হুঝো ইউনিভার্সিটিতে ভিজ্যুয়াল আর্ট ডিজাইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর করছি। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর অনেক শিক্ষার্থীই দেশে ফিরে গেছেন। আমার যাওয়া হয়নি। কারণ যে শহরে থাকি, সেখানে কোনো বিমানবন্দর নেই। দেশে ফিরতে হলে আমাকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে অন্য শহরে যেতে হবে। বাসে, ট্রেনে, মানুষের ভিড়ে পড়তে হবে। তার চেয়ে ক্যাম্পাসটাই আমাদের জন্য নিরাপদ। এমনকি মাঝেমধ্যে মনে হয়, দেশে থাকলেও হয়তো এতটা নিরাপদ বোধ করতাম না।

জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে যখন প্রথম করোনাভাইরাসের কথা শুনলাম, তখন আমাদের ক্যাম্পাস বন্ধ। লুনার ফেস্টিভ্যালের (চীনা নববর্ষের উৎসব) ছুটিতে হুঝো ইউনিভার্সিটির প্রায় ১৭ হাজার চীনা শিক্ষার্থী তখন বাড়ি চলে গেছে। তখনো সবকিছু স্বাভাবিক ছিল। লুনার ফেস্টিভ্যালের পরই মূলত ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে শুরু করল। হঠাৎ ঘোষণা এল, ২৭ জানুয়ারি বিকেলের পর থেকে আমরা আর ক্যাম্পাস থেকে বের হতে পারব না। যারা দেশে ফিরে যাবে, শুধু তারাই বেরোনোর অনুমতি পাবে। সেই থেকে আমরা প্রায় আড়াই শ–এর বেশি আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডর্মে থাকছি। শুরুর দিকে, প্রায় এক মাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আমাদের দুই বেলা খাবার দেওয়া হয়েছে। এখন অবশ্য ক্যানটিন খোলা, নিজেরাই কিনে খেতে পারছি। রুম থেকে খুব একটা বের হই না। দিনে দুইবার করে আমাদের শরীরের তাপমাত্রা মাপা হয়। কারও জ্বর হলেই তাঁকে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়।

এত কড়াকড়ির মধ্যেও পড়ালেখায় কিন্তু কোনো ছাড় নেই। নিয়মিত অ্যাসাইনমেন্ট করতে হচ্ছে। যে যেখানেই থাকুক, অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হবে সময়মতো। ‘গ্রুপ অ্যাসাইনমেন্ট’ও করতে হচ্ছে। আমরা একেকজন একেক জায়গায় আছি। অনলাইনে আলোচনা করে সব ঠিকঠাক করে নিতে হচ্ছে। এরই মধ্যে অবশ্য অনলাইনে অনেক বিভাগের লাইভ ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। এখানে লাইভ ক্লাসের জন্য আলীবাবার একটা অ্যাপ ব্যবহার করা হয়, নাম ডিংটক। সামনের সপ্তাহ থেকে আমাদেরও লাইভ ক্লাস হবে। জুলাইতে পরীক্ষা। তত দিনে আশা করি সব ঠিক হয়ে যাবে। আবার আমাদের বন্ধুরা ফিরে আসবে। আমরা ক্লাস করব, ক্যাম্পাসের বাইরে ঘুরতে যাব। নির্দ্বিধায় বন্ধুর কাঁধে হাত রাখব। দম নেব বুক ভরে।

চীনের হুঝো বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে রয়ে গেছেন, প্রতি দিন দুবার করে মাপা হয় তাঁদের শরীরের তাপমাত্রা। ছবি: রাহাত কবির
চীনের হুঝো বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে রয়ে গেছেন, প্রতি দিন দুবার করে মাপা হয় তাঁদের শরীরের তাপমাত্রা। ছবি: রাহাত কবির
এক নতুন অভিজ্ঞতা : মো. মেহেদী হাসান

জানুয়ারির শুরু থেকেই চীনা নববর্ষ উপলক্ষে বাড়ি যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল আমার চীনা বন্ধুরা। তখনো জানতাম না, এই ছুটিতে বাড়ি ফেরা হবে আমারও। আমি চীনের শ্যাংডং প্রদেশের ঝাওঝুয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। যন্ত্রকৌশলে (অটোমেশন অ্যান্ড ডিজাইন) স্নাতক করছি। চীনের উহান থেকে করোনা যখন সর্বত্র ছড়িয়ে পড়তে শুরু করল, তখন আরও অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর সঙ্গে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ফিরে আসি দেশে।

একাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী, ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এমনিই আমাদের ক্যাম্পাস বন্ধ থাকার কথা ছিল। করোনার কারণে ছুটি বাড়ানো হয় আরও ১০ দিন। কিন্তু ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে আবার শুরু হয়ে গেছে শিক্ষা কার্যক্রম। ২ হাজার কিলোমিটার দূরে বসেও নিয়মিত ক্লাস করছি। অনলাইনে ভিডিওর মাধ্যমে শিক্ষকেরা আমাদের পড়া বুঝিয়ে দিচ্ছেন। নিয়মিত অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিতে হচ্ছে। এই পরিস্থিতির কারণে আমাদের কোর্সগুলোর পাঠ্যক্রমে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়েছে। আমি যেহেতু প্রকৌশলের ছাত্র, আমাদের পড়ালেখা মূলত ব্যবহারিকনির্ভর। কিন্তু এখন তত্ত্বীয় ক্লাসের পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। সব স্বাভাবিক হলে হয়তো ব্যবহারিক ক্লাস করে আমরা ঘাটতিটুকু পুষিয়ে নেব।

চীনা শিক্ষকেরা ক্লাস নিচ্ছেন উই চ্যাট বা কিউকিউয়ের মতো অনলাইন যোগাযোগমাধ্যমে। যেসব শিক্ষক অন্যান্য দেশে আছেন, তাঁরা ক্লাস নিচ্ছেন মেসেঞ্জারে। কিন্তু পড়ালেখার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় নেই। প্রতিটা ক্লাসের আগেই শিক্ষকেরা পিডিএফ-এর মাধ্যমে কী কী পড়ানো হবে, তা পাঠিয়ে দেন। আমরা আগে থেকে প্রস্তুতি রাখি। আবার প্রতিটা পিডিএফ-এর শেষে কিছু বাড়ির কাজ দেওয়া থাকে। অতএব ক্যাম্পাস বন্ধ, কিন্তু আমাদের আসলে ছুটি নেই। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে ১০ এবং বিকেল ৪টা থেকে ৬টা নিয়ম করে শিক্ষকেরা অনলাইনে থাকেন। এই সময়ে আমরা আমাদের সমস্যাগুলো নিয়ে আলোচনা করতে পারি। তবে শিক্ষকেরা শুধু যে পড়ালেখার ওপরই জোর দিচ্ছেন, তা নয়। নিয়মিত আমাদের পরিবারের, দেশের খোঁজ নিচ্ছেন। সাহস দিচ্ছেন। সব মিলিয়ে এটা একটা অদ্ভুত অভিজ্ঞতা।

এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়েই ‘গ্লোবাল ভিলেজ’–এর ধারণাটা আরও ভালো করে বুঝতে পারলাম। জানলাম, জরুরি অবস্থায় প্রযুক্তি কীভাবে আমাদের সাহায্য করতে পারে। মানুষের জীবনে বাধা আসবে, দুর্যোগ আসবে, তবু থেমে থাকলে তো হয় না। এর মধ্য দিয়েই আমাদের তাকাতে হয় সামনের দিকে।

5
বিশ্বের ১৭৩টি দেশের ৩ লাখ ৩৩ হাজারের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এ পর্যন্ত সাড়ে ১৪ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। প্রতিদিনই আক্রান্ত মানুষ ও মৃত্যুর হার লাফিয়ে বাড়ছে। বিশ্বব্যাপী মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ছাড়া অন্য দেশগুলো খুব সফল হয়নি। এরপরও চেষ্টা চলছে প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ঠেকানোর।

চীন পথ দেখাচ্ছে

গত বছরের ডিসেম্বরের চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে ছড়িয়ে পড়ে নভেল করোনাভাইরাস বা ‘কোভিড–১৯’। চীনে রোগটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার আগে গোটা উহান লকডাউন বা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আক্ষরিক অর্থেই চীনের এ শহরের লোকেরা বাসা থেকেও বেরোতে পারেনি। এরপরও রোগটি চীনের অন্যান্য এলাকায় পুরোপুরি ছড়িয়ে পড়া না ঠেকানো গেলেও অন্যান্য অঞ্চলে আক্রান্তের সংখ্যা খুবই নগণ্য। অর্থাৎ, উহান বন্ধ করে দেওয়ায় করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ব্যাপক আকারে আর চীনে ছড়িয়ে পড়েনি।

চীন গোটা উহানকে জীবাণুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করেছে। এ জন্য সরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে সাধারণ মানুষও যোগ দিয়েছে।


করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে ১০ দিনের মধ্যে বিশেষায়িত হাসপাতাল বানানো হয়েছে। এ ছাড়া চীনের বহু হোটেলকে অস্থায়ী হাসপাতাল বানানো হয়েছে। সেখানকার মানুষকে গণহারে পরীক্ষা করা হয়েছে।


গত জানুয়ারি মাসে চীন উহান শহরকে কার্যকরভাবে অবরুদ্ধ করে এবং এর ১ কোটি ১১ লাখ জনসংখ্যাকে কোয়ারেন্টিনে পাঠায়। এই প্রক্রিয়া পরে অনুসরণ করা হয় পুরো হুবেই প্রদেশের জন্য। পাঁচ কোটি মানুষকে গণ-আইসোলেশনে পাঠায়। ৪২ হাজার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের হুবেই প্রদেশে পাঠানো হয় স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য। এ সময় ৩ হাজার ৩০০ স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হন এবং ১৩ জন মারা যান।

এ সময় চীনের ব্যাপক মানুষ মাস্ক পরতে শুরু করে। চীন এ সময় প্রতিদিন ১৬ লাখ মাস্ক উৎপাদন করেছে। পরিস্থিতির ভিত্তিতে ‘সবুজ’, ‘হলুদ’ ও ‘লাল’ চিহ্নিত ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা নাগরিকদের কাছে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। অনেকে জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়ার সময় এসব এলাকা এড়িয়ে গেছেন।

জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির এসব ব্যবস্থা নেওয়ায় ৮১ হাজার ৪৫৪ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছে ৩ হাজার ২৭৪। ইতিমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৭২ হাজার ৮১৭ জন। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে অস্থায়ী হাসপাতালগুলো। চীন এখন সারা দুনিয়ার বহু দেশে অভিজ্ঞ চিকিৎসক, করোনা শনাক্তকরণ কিট, মাস্কসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে।

আর সে কারণে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে মোকাবিলায় চীন আশার আলো দেখাচ্ছে। অর্থাৎ চীনা পথে করোনাভাইরাসকে মোকাবিলা করার ওপর জোর দিচ্ছেন সারা দুনিয়ার বিশেষজ্ঞরা।

করুণ অবস্থা ইতালির
এ পর্যন্ত সব থেকে বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে ইতালিতে। জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির হিসাবমতে, ইতালিতে এখন পর্যন্ত ৫৯ হাজার ১৩৮ জন আক্রান্ত হয়েছে, যার মধ্যে মারা গেছে ৫ হাজার ৪৭৬ জন। ১২ মার্চ থেকে ইতালির সরকার বেশির ভাগ ব্যবসা-বাণিজ্য এবং জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছে। এরপরও থামছে না মৃত্যুর মিছিল।

লাইভ সায়েন্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মৃত্যুর হার বেশি হওয়ার একটি কারণ হতে পারে দেশটির জনসংখ্যায় প্রবীণদের সংখ্যাধিক্য। নিউইয়র্ক টাইমস–এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইতালির বাসিন্দাদের প্রায় ২৩ শতাংশের বয়স ৬৫ বা তার বেশি। দেশটিতে বসবাসরত মাঝবয়সী জনসংখ্যা ৪৭ দশমিক ৩ শতাংশ। যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে এই হার ৩৮ দশমিক ৩ শতাংশ। দ্য লোকাল–এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইতালিতে যারা এই সংক্রমণে মারা গেছে, তাদের বেশির ভাগের বয়স ৮০ থেকে ৯০।

মৃত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেক ব্যক্তি ডায়াবেটিস, কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ বা ক্যানসারে ভুগছিলেন। অনেকে আবার ধূমপান করতেন। সেই কারণেই তাঁদের শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে গিয়েছিল।
চীন ইতিমধ্যে ইতালির জন্য পরীক্ষার কিট, মাস্ক, ওষুধ, চিকিৎসকসহ চিকিৎসা সরঞ্জামাদি পাঠিয়েছে। আজ সোমবার রাশিয়া বড় আকারে চিকিৎসা সরঞ্জাম ও চিকিৎসক পাঠিয়েছে ইতালিতে।
ইতালিতেও ভালো খবর আছে। সেই ভালো খবরের নাম হলো ইতালির ছোট্ট শহর ভো। এ শহরে সব বাসিন্দাকে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করার পর দারুণ সফলতা পেয়েছে। শহরটিতে এখন সংক্রমণের সংখ্যা শূন্যে নেমে এসেছে।
ইতালির ইউনিভার্সিটি অব পাদুয়ার অণুজীববিজ্ঞানের অধ্যাপক আন্দ্রেয়া ক্রিসান্তি এবিসির দ্য ওয়ার্ল্ড টুডেকে বলেন, ‘আমরা সবাইকে পরীক্ষা করেছি। তাদের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ ইতিমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি শনাক্ত করি।’ তিনি আরও জানান, মোট বাসিন্দার ৩ শতাংশ (৮৯ জন) মানুষের শরীরে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। কোনো লক্ষণ নেই, এমন মানুষের শরীরেও করোনা শনাক্ত করা হয়। বিষয়টি গবেষকদের জন্য ছিল খুবই উদ্বেগের। ভো শহরে সংক্রমণ শূন্যে নেমে এসেছে। সব নাগরিকের করোনা পরীক্ষার পর মেলে এই সফলতা।


ইরানের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগ
ইরানে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ২১ হাজার ৬৩৮ জন। করোনাভাইরাসে মারা গেছে ১ হাজার ৬৮৫ জন। ইরানের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, দেশটিতে ঠিক কত পরিমাণ মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, তার সঠিক তথ্য নেই।
বিশ্বে যেসব দেশে করোনাভাইরাস সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত হয়েছে, তার মধ্যে ইরান অন্যতম। ইরানের জনগণের মধ্যে প্রবল ধারণা, ইরানের সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমণের মাত্রা সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিচ্ছে না। ফলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
এর বড় কারণ হলো, ইরানের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২১ ফেব্রুয়ারি। এ নির্বাচনের আগে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ে সরকার মুখ খোলেনি। বিপুল মানুষ নির্বাচনে ভোট দিতে এসে ও প্রচারণায় যোগ দিয়ে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে দেশটির সরকারের একজন উপদেষ্টা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
ইরানে ফেব্রুয়ারি মাসে দুটি বড় ঘটনা ঘটে যায়। একটি ইসলামিক অভ্যুত্থানের ৪১ বছর পূর্তি, অন্যটি দেশটির সংসদ নির্বাচন। ১১ ফেব্রুয়ারি ইরানের বিজয় দিবস। এর কিছুদিন আগেই ইরানে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে।

পরীক্ষা, পরীক্ষা ও পরীক্ষার নীতি নিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া
দক্ষিণ কোরিয়ায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর প্রথমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এরপরই দেশটি নাটকীয়ভাবে করোনাভাইরাসকে আটকে দিতে সমর্থ হয়। এর কারণ হলো, ব্যাপকভাবে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা। উপসর্গ দেখা দিক বা না দিক, দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার দেশটির নাগরিকদের পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এখন পর্যন্ত দেশটি ২ লাখ ৯০ হাজার মানুষকে পরীক্ষা করে ফেলেছে। প্রতিদিন দেশটি বিনা মূল্যে ১০ হাজার লোকের পরীক্ষা করছে।

এ ব্যাপারে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের সংক্রামক রোগের উদ্ভব বিষয়ের অধ্যাপক ওই ইং ইয়ং বলেছেন, তাঁরা (দক্ষিণ কোরিয়া) যেভাবে পদক্ষেপ নিয়েছে এবং লোকজনকে পরীক্ষা করেছে, তা উল্লেখ করার মতো।

অধ্যাপক প্যানগেস্তো জানান, কিছু দেশে পরীক্ষার জন্য যথেষ্ট কিট নেই। তিনি বলেন, ব্যাপকভাবে পরীক্ষা করার বিষয়টি এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পেতে হবে। উপসর্গ রয়েছে, কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হয়নি এবং এখনো ভাইরাস ছড়াচ্ছেন, এমন ব্যক্তিদের পরীক্ষা করা আরও বেশি জরুরি। এ কারণে আক্রান্তের সংখ্যা ৮ হাজার ৯৬১ জন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত এ রোগে মারা গেছেন ১১১ জন। সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন ৩ হাজার ১৬৬ জন।

জার্মানি
জার্মানিতে পাঁচ ফুট দূরত্বের মধ্যে আসতে নিষেধ করা হয়েছে। জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল কোরান্টিনে। কারণ, ৬৫ বছর বয়সী ম্যার্কেল ভাইরাসে আক্রান্ত একজন চিকিৎসকের সংস্পর্শে এসেছিলেন। দেশটির সরকার স্কুল এবং অনেক ব্যবসা, জনসমাগমস্থল বন্ধ করেছে। দেশটিতে ২৪ হাজার ৮৭৩ জন আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ৯৪ জন।

যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৫ হাজার ২২৪। এখন পর্যন্ত মারা গেছে ৪৭১ জন। এর মধ্যে সর্বাধিক মারা গেছে দেশটির নিউইয়র্ক শহরে ৯৯ জন। ব্যাপকভাবে রোগটি ছড়িয়ে পড়ার কারণে দেশটির মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


জাপানের ওষুধ কার্যকর ভূমিকা রেখেছে
জাপানে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ১০১ জন আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে মারা গেছে ৪১ জন। জাপান ভাইরাসটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়া থেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে।
অন্যদিকে চীনের চিকিৎসা কর্মকর্তারা বলেছেন, জাপানে ইনফ্লুয়েঞ্জার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হওয়া একটি ওষুধ করোনার চিকিৎসায় ব্যবহার করে তারা সফলতা পেয়েছে। চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ঝ্যাং সিনমিন সাংবাদিকদের বলেছেন, ফাভিপিরাভির নামের ওই ওষুধ প্রস্তুত করেছে জাপানের বহুজাতিক কোম্পানি ফুজিফিল্মের সহযোগী ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান টয়ামা কেমিক্যাল। এটি একটি অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ। ওষুধটি চীনের উহান ও শেনজেন এলাকার ৩৪০ জন করোনা সংক্রমিত রোগীর শরীরে প্রয়োগ করা হয়। এতে ব্যাপক ও কার্যকর সফলতা পাওয়া গেছে।

জাপানের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে এক খবরে জানায়, যে রোগীদের ওপর ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়েছে, তারা গড়ে চার দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছে। যেখানে উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া অন্য রোগীদের সেরে উঠতে সময় লেগেছে ১১ দিন। এ ছাড়া রোগীদের বুকের এক্স-রের মাধ্যমে জানা গেছে, যেসব রোগীর শরীরে ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়েছে, তাদের ফুসফুসের অবস্থা ৯১ শতাংশ উন্নতি হয়েছে। যাদের ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়নি, তাদের ওই সময়ে ফুসফুসের উন্নতি ঘটেছে ৬২ শতাংশ।

8
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধ করার জন্য সোশ্যাল ডিসট্যান্স বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। কিন্তু সামাজিক দূরত্ব ব্যাপারটা কী?

এটা হলো নিজের বাসায় থাকা, ভিড়ে না যাওয়া, একজন আরেকজনকে স্পর্শ না করা


১. আমি কি বাজার করতে যেতে পারব?

হ্যাঁ। নিত্যপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে যেতে পারেন। কম যাবেন। যাবেন তখন, যখন কম লোক থাকে বাজারে। সেখানে যাবেন, যেখানে কম ভিড় থাকে। মোটকথা ভিড় এড়িয়ে চলুন।
বাজার থেকে বের হয়েই হাতে স্যানিটাইজার ব্যবহার করবেন। এসেই ভালোভাবে হাত ধুয়ে নেবেন। তরকারি ফল ধুয়ে নেবেন। বক্স নাড়ার পরই হাত ধোবেন।
খাবার কিনে মজুত করবেন না। খাদ্যশস্য কম পড়ার কোনো কারণ ঘটেনি।

২. আমি কি খাবার অর্ডার দিয়ে বাসায় এনে খেতে পারব?

হ্যাঁ। খাদ্য থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর কথা শোনা যায়নি। তবে যে প্যাকেটে খাবার আনা হবে, সেটা ধরার পর হাত ধুয়ে নিতে হবে। আর কাঁচা সালাদ ফল বাইরে থেকে নিশ্চয়ই আনাবেন না। আর যিনি খাবার নিয়ে আসবেন, তাঁকে বলবেন খাবার দরজার বাইরে রেখে দিতে। দাম ও টিপস দেবেন অনলাইনে। (আমাদের দেশে এটা কীভাবে হবে, আমি জানি না।)

৩. আমি কি গণপরিবহন বাস, ট্রেন ব্যবহার করব?

যদি পারেন, গণপরিবহন এড়িয়ে চলুন। তা না হলে সঙ্গে করে স্যানিটাইজার নিয়ে যান। হাতল ধরার পরেই হাত পরিষ্কার করুন। নামার সঙ্গে সঙ্গে হাত পরিষ্কার করুন।

৪. অফিস তো ছুটি দিচ্ছে না। কী করব?

যতটা সম্ভব সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং করুন। দরকার হলে, মাস্ক ব্যবহার করুন।

৫. আমি কি সব জায়গায় যেতে পারব?

আপনি যতটা পারেন, বাসায় থাকুন। হাসপাতালে, বাজারসদাই করতে যেতে হতেই পারে। সিনেমা, থিয়েটার, প্রার্থনাগৃহ, জাদুঘর—সব বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এসব জায়গায় ভবিষ্যতে যাওয়া যাবে। এখন না।

৬. আমি কি ভ্রমণ করতে পারব?

না। আপনার এখন ভ্রমণ, দেশের ভেতরে বা বাইরে, করা নিষেধ। বাস, ট্রেন, প্লেন, জাহাজ, লঞ্চ লোকে ভরা থাকে। তবে যাঁদের কাজই ভ্রমণসংক্রান্ত, যেমন এয়ারলাইনসের ক্রু, ট্রেনের চালক, তাঁদের কথা আলাদা।

৭. আমি কি মাস্ক পরে থাকব?

সম্ভবত নয়। মাস্ক রোগীদের হাঁচি–কাশির ছিটা বাইরে যেতে দেয় না। কিন্তু বাইরের ভাইরাস আপনার নাকেমুখে প্রবেশ ঠেকাতে পারে না। আপনার নিজের হাঁচি–কাশি থাকলে দয়া করে বাইরে বের হবেন না।

৮. আমি কি ব্যায়াম করব?

হ্যাঁ। ঘরে। ঘরের বাইরে ফাঁকা জায়গায়। কিন্তু জিমে নয়।

৯. আমি কি চিকিৎসকের কাছে যেতে পারব?

খুব বেশি দরকার না হলে নয়। করোনাভাইরাস সন্দেহ হলে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। প্রথমে ফোনে যোগাযোগ করবেন।

১০. রোগী দেখতে যাব?
না।

১১. আমি কি প্রবীণ স্বজন-পরিজনদের দেখতে যাব?

না। ফোনে খোঁজ নিন। বাজারসদাই লাগলে সাহায্য করুন।

১২. আমার বন্ধুরা কি আমার কাছে আসতে পারবে?

না। ফোনে কথা বলুন। ভিডিও চ্যাট করুন।

১৩. বাচ্চারা কি খেলতে পারবে?

বাইরে একা একা? হ্যাঁ। বাইরে অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে? না। বাইরের বাচ্চাদের সঙ্গে নয়। কারণ, তারা পরস্পরকে ধরে ফেলবে। হাত ধোয়ার নিয়ম ভুলে যেতে পারে। স্লাইড ইত্যাদি কারও সঙ্গে ব্যবহার করা যাবে না। কাজেই পার্কেও নিয়ে যাওয়া যাবে না।

১৪. আমি কি আমার সন্তানের কাছে যেতে পারব?

হ্যাঁ। সাধারণভাবে হ্যাঁ। তবে যদি আপনি মনে করেন দুজনের একজন এরই মধ্যে সংক্রমিত হয়ে আছে, তাহলে দূরত্ব বজায় রাখুন।

১৫. আমার রুমমেট হাসপাতালে চাকরি করেন। আমি কি তাঁর থেকে দূরে থাকব?

হ্যাঁ।

১৬. কত দিন এই রকম সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং করতে হবে?

সম্ভবত কমপক্ষে পাঁচ মাস। পরে আবারও করতে হতে পারে। এটা একেবারে সেরে যাবে না সহসা। ঢেউয়ের মতো আসতে থাকবে।

12
Thanks for post

Pages: [1] 2 3 ... 44