Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - faruque

Pages: 1 [2] 3 4 ... 44
16
স্মার্টফোন পানিতে পড়লে যে ৭টি কাজ করতে ভুলবেন না




বাইরে যখন বেরিয়েছিলেন তখন আকাশ একদম উজ্জ্বল ছিল। আচমকা ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামতে পারে এমন কোনও আন্দাজ করতে পারেননি। এদিকে, পকেটে মোবাইল ফোন। বৃষ্টির পানি নিজে ভিজলে ক্ষতি নেই, কিন্তু, স্মার্টফোনে যদি পানি ঢুকে যায়! তাহলে…। এমন পরিস্থিতি থেকে নিজের স্মার্টফোনটাকে রক্ষা করতে এই কাজগুলো আপনি করে দেখতে পারেন।

১) বর্ষা আসার আগেই ফোনে থাকা সমস্ত তথ্য ‘ক্লাউড স্টোরেজ’-এ সেভ করে রাখুন। বর্ষায় কোনওভাবে ফোনে পানি ঢুকলে বেঁচে যেতে পারে আপনার মোবাইলে থাকা তথ্য। আর ভিজে হাতে টাচ স্ক্রিনে হাত দেবেন না। এতে পানি সোক করে ভিতরে চলে যেতে পারে এবং ‘টাচ স্ক্রিন’ কাজ করা বন্ধ করে দিতে পারে।

২) ফোন ভিজে যাওয়ার আগে বা ভিজে গেল সবার প্রথমে সুইচ-অফ করে দিন। এতে ফোনের ভিতরের যন্ত্রগুলি কাজ করা বন্ধ করে দেবে। ফলে, ফোনে পানি ঢুকলেও কিছুটা হলে রক্ষা পেতে পারে আপনার মোবাইলের ভিতরের যন্ত্রাংশ। এই কাজগুলি করলে মোবাইল নষ্ট না হয়ে যাওয়ারও আশা রাখতে পারেন। পারলে মোবাইল ফোনের ব্যাটারিও খুলে নিন।

৩) মানিব্যাগে সিলিকা জেল রাখুন। সিলিকা জেল যে কোনও জিনিসকে শুকনো রাখতে সাহায্য করে। জিনিসে ময়শ্চার পড়তে দেয় না। এর সঙ্গে জিপ লক করা ছোট প্লাস্টিকের পাউচ রাখুন। বৃষ্টিতে ভেজার উপক্রম হলে, প্লাস্টিকের এই পাউচে সিলিকা জেলের প্যাকেট রেখে মোবাইল ফোনটি ভরে দিন এবং জিপ লক করুন। কোনওভাবে পাউচে পানি ঢুকলেও সিলিকা জেল আপনার স্মার্টফোন শুকনো রাখতে সাহায্য করবে।

৪) বাজারে গেলে যে পলিব্যাগ পান, সেরকম একটা সঙ্গে রাখুন। বৃষ্টির মধ্যে আপনার স্মার্টফোনের রক্ষাকবচ হতে পারে এই পলিব্যাগ।

৫) এছাড়াও বাজার থেকে ওয়াটার-প্রুফ মোবাইল ফোনের পাউচ কভার কিনে নিন। বৃষ্টিতে আপনার স্মার্টফোনটিকে এই কভারের মধ্যে ভরে দিন। মোবাইল খারাপ হয়ে যাওয়ার দুশ্চিন্তা দূর হয়ে যাবে।

৬) বৃষ্টির মধ্যেও মোবাইল ফোনে কথা বলতে হবে। কিন্তু, কানে ফোন রাখলে ভিজে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ব্লুটুথ-ইয়ারফোন ব্যবহার করতে পারেন।

৭) ভিজে থাকা স্মার্টফোনকে চার্জ দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আগে মোবাইল ফোনটিকে ভাল করে মুছে নিন। পারলে খোলা হাওয়ায় ১ ঘণ্টা ফেলে রাখুন। এরপর ফের একবার মুছে নিয়ে ফোন চার্জে বসাতে পারেন। ফোন মোছার সময় ব্যাটারিও মুছে নিন।

17
জেনে নিন হার্ট সুস্থ রাখার ১৭ উপায়



চিকিৎসকের কাছে গেলেই তারা সব সময় হার্ট সুস্থ রাখার পরামর্শ দেন। এটা করুন, সেটা করুন, কত পরামর্শ। কিন্তু রোজকার ইঁদুর দৌড়ের মাঝখানে হার্টের দিকে নজর দেয়ার সময় কোথায়? কিন্তু জানেন কি? বাড়িতে থেকেই আপনি রোজকার কাজের মধ্যে নিতে পারেন হার্টের যত্ন? চলুন জেনে নেই হার্ট সুস্থ রাখার সহজ উপায়

i) থাকুন হাসিখুশি : হাসিখুশি আর প্রাণবন্ত মুখাবয়ব শুধু স্টাইল বা ফ্যাশন আইকনই আপনাকে করে তুলবে না, বাড়িয়ে দেবে আপনার নীরোগ থাকার প্রবণতাও। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, প্রাণবন্ত উপস্থিতি আপনার অবসাদ ও অভ্যন্তরীণ প্রদাহকে ছুটি দিয়ে দেবে এবং অলিন্দ ও নিলয়ের প্রকোষ্ঠকে সুঠাম রাখবে।

ii) বাড়ান সামাজিক যোগাযোগ : একা বাস করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা অন্যদের তুলনায় বেশি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিতে থাকে। তাই অন্যদের সঙ্গে কথা বলুন, হাত মেলান, জড়িয়ে ধরুন এবং আরো বেশি সামাজিক হতে চেষ্টা করুন; নিজের স্বার্থেই।

iii) অংশ নিন সকালের নাশতায় : হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা জানিয়েছেন, যারা সকালের পারিবারিক নাশতার টেবিল মিস করে তাদের হৃদযন্ত্রকালীন সংকটের পরিমাণ অন্যদের থেকে ২৭ শতাংশ বেশি থাকে।

iv) ছুড়ে ফেলুন এনার্জি ড্রিংকস : শক্তিবর্ধক এসব পানীয়কে ‘শত্রু’ হিসেবে গণ্য করুন। কেননা এসব পানীয় কোনোভাবেই আপনার কোনো ধরনের উপকারে আসবে না, উল্টো রক্তচাপ বাড়িয়ে মুহূর্তেই আপনাকে ধসিয়ে দেবে।

v) নীরবতাকে প্রাধান্য দিন : হার্টের সমস্যার সঙ্গে উচ্চ ডেসিবেলের শব্দেরও বেশ যোগ রয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বাড়ি থেকে দূরে প্রতি ১০ ডেসিবেল শব্দের মাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার হার্ট এটাকের পরিমাণও বাড়তে থাকে ১২ শতাংশ হারে।

vi) করুন মুঠোর ব্যায়াম : টানা চার সপ্তাহের মুঠো সঞ্চালন-প্রসারণ ব্যায়ামও আপনার রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করবে। হাইপারটেনশন জার্নাল জানিয়েছে, এর মাধ্যমে আপনি রক্তের ঊর্ধ্বচাপ কমিয়ে আনতে পারেন প্রায় ১০ শতাংশ হারে।

vii) এড়িয়ে চলুন দূষিত বায়ু : সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বে দূষিত বায়ুর পরিমাণ বেড়েছে। আবহাওয়াবিদদের ভাষ্য মতে, শীতকালে সকালের দিকে বাতাসে দূষিত পদার্থের পরিমাণ বেশি থাকে। সাধারণত বাতাসে থাকা অতিরিক্ত ধাতব পদার্থ নিঃশ্বাসের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করে স্কন্ধদেশের ধমনিপ্রাচীরকে আরো পুরু করে তোলে, যে কারণে রক্ত সঞ্চালন বাধাগ্রস্ত হয়।

viii) সপ্তাহে দুইবার শারীরিক সম্পর্ক : গবেষণায় দেখা গেছে, সঙ্গীর সঙ্গে যাঁরা মাসে একবার শারীরিক সম্পর্ক করে থাকেন তাঁদের তুলনায় যাঁরা সপ্তাহে দুই বা তার বেশিবার করেন তাঁদের হার্ট বেশি সুস্থ থাকে। আমেরিকান জার্নাল অব কার্ডিওলজির মতে, শারীরিক সম্পর্ক হৃদযন্ত্রের ক্রিয়াকে নিরাপদ করে তোলে, যেভাবে পোশাক তাপমাত্রার হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করে।

ix) প্রতিদিন এক কাপ আখরোট : প্রতিদিন এক কাপ পরিমাণ আখরোট-জাতীয় ফল খেলে শরীরের রক্ত সঞ্চালনপ্রক্রিয়া কার্যকর হয়ে ওঠে। কেননা আখরোট-জাতীয় ফলে থাকে ওমেগা-৩ নামের চর্বি, যা বিভিন্ন ধরনের প্রদাহের বিরুদ্ধে শক্তিশালী অবস্থান নেয় এবং এর ফলে দূষিত রক্ত নিয়মিত পরিসঞ্চালিত হয়ে হার্টের গতি স্বাভাবিক রাখে।

x) বেশি খান শিম, বরবটি : আলু কিংবা কলাই-জাতীয় খাবারের চেয়েও গুটিযুক্ত ফলধারী লতা, যেমন- শিম, বরবটি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় এগুলো রাখতে পারেন ওষুধ বিবেচনায়ও।

xi) দৌড়ান নিয়মিত : এটা একটা সাধারণ তরিকা। তবে হার্ট ভালো রাখতে হলে প্রতিদিন কমপক্ষে তিন কিলোমিটার করে দৌড়ানোর উপদেশ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। এ ক্ষেত্রে দৌড় শুরুর আগে এবং শেষে হার্ট রেটের সংখ্যা লিপিবদ্ধ করারও অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা।

xii) শ্বাসের গতি নিয়ন্ত্রণ করুন : না, নিজের ইচ্ছামতো গতিতে শ্বাস নিতে কিংবা ছাড়তে বলা হচ্ছে না। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিদিন শ্বাসের ব্যায়াম করুন। উদাহরণ হিসেবে প্রথমে ৩০ সেকেন্ডে ছয়টি পূর্ণাঙ্গ শ্বাস-প্রশ্বাস সম্পন্ন করুন। এরপর সময়ের পরিমাণ কমাতে থাকুন। এ ব্যায়াম আপনার হৃদ সংকোচনসংক্রান্ত চাপ কমাতে ধন্বন্তরি ভূমিকা রাখবে।

xiii) দূরে থাক অবসাদ : কোনোভাবেই কাজের ক্লান্তিকে আপনার ওপর চেপে বসতে দেবেন না। এ জন্য মাঝেমধ্যেই অবসাদ দূর করতে আপনার পছন্দকে গুরুত্ব দিন। সুইজারল্যান্ডের এক গবেষণা জানিয়েছে, অবসাদ দূর করার তৎপরতা হৃদযন্ত্রের সংকট কাটায় ৫৭ শতাংশের কাছাকাছি।

xiv) বালিশে মাথা রাখুন সময়মতো : যাদের অনিদ্রা নামক রাজরোগ আছে, তারা অন্যদের চেয়ে ৪৫ শতাংশ বেশি হার্ট এটাকের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। তাই প্রয়োজন অনুযায়ী ঘুমের জন্য প্রতিদিন বেশি বেশি শারীরিক পরিশ্রম করার আহ্বান জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

xv) নাস্তি অধিক ঘুমেও : এমনকি যারা বেশি বেশি ঘুমকাতুরে তাদেরও সাবধান করে দিয়েছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা। তাঁদের মতে, দিনে ১০ ঘণ্টা কিংবা তার বেশি সময় যাদের ঘুমে কাটে তাদের স্থূলতার পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে থাকে, কমতে থাকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও। সুতরাং অধিক ঘুমে নাস্তি।

xvi) ত্বকে দিন সূর্যের আলো : প্রতিদিন ২০ মিনিট করে সূর্যের আলোর সংস্পর্শে এলে শরীরে নাইট্রিক অক্সাইডের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ে, যা রক্তচাপকে কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

xvii) পান করুন গরুর দুধ : গরুর দুধে থাকা লো ফ্যাট হৃদযন্ত্রের ক্রিয়াবিরোধী কম ঘনত্বসম্পন্ন লিপ্রোপ্রোটিনের হার কমাতে সাহায্য করে। পাশাপাশি দুধে থাকা ক্যালসিয়াম শরীরে জমে থাকা পুরু চর্বির স্তর কাটতে ভূমিকা রাখে।

18
Islam / কবর ভয়াবহ এক ঘাঁটি
« on: March 24, 2018, 09:49:20 AM »
কবর ভয়াবহ এক ঘাঁটি


কবরকে আমরা ওয়েটিং রুম হিসেবে বুঝে নিতে পারি। ওয়েটিং রুমে যেমন মানুষ তার পরবর্তী অবস্থান সম্পর্কে জানতে পারে, আরামের হবে কিংবা কষ্টের হবে। আরামের হলে হেসেখেলে সময় পার করে। কষ্টের হলে এক ঘণ্টা এক বছরের মতো মনে হয় তারপরও সময় যেতে চায় না। অনুরূপ প্রত্যেকের কবরে কবরবাসীকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে সে জান্নাতি না জাহান্নামি।  জান্নাতি হলে সে বড় আরামে সময় পার করবে। আর জাহান্নামি হলে বড় কষ্টে সময় অতিবাহিত করবে। এ কবর এমন এক ঘাঁটি যেখানে সাহায্যের বা বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন বলতে কেউই থাকবে না। শুধুই নেক আমল হবে তার সাথী। দুনিয়ার হায়াতে নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, কোরআন তেলাওয়াতসহ ইত্যাদি নেক আমল তাকে আজাব থেকে রক্ষা করবে। মুনকির-নকির ফেরেস্তাদ্বয়ের প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলে কবর উত্তম ঘাঁটি। আর উত্তর দিতে না পারলে ভয়াবহ ঘাঁটি। হজরত উসমান (রা.) যখন কোনো কবরের পাশে দাঁড়াতেন তখন এমনভাবে কাঁদতেন যে, নিজের দাড়ি মোবারক ভিজে যেত। একবার হজরতকে জিজ্ঞাসা করা হলো আপনি জান্নাত ও জাহান্নাম স্মরণ করে এত কাঁদেন না, যতটুকু কাঁদেন কবর দেখে, এর কারণ কী? তিনি বললেন, রসুল (সা.) বলেছেন, কবর হচ্ছে আখেরাতের প্রথম ঘাঁটি। এখানে যদি কেউ রক্ষা পেয়ে যায় তাহলে পরবর্তী সব ঘাঁটি তার জন্য সহজ হয়ে যায়। আর এখানে কেউ যদি রক্ষা না পায় তাহলে পরবর্তী সব ঘাঁটি তার জন্য খুব কঠিন হয়ে যায়। তিনি আরও বললেন, রসুল (সা.) বলেছেন, মেরাজের রজনীতে আমি যত ভয়াবহ দৃশ্য দেখেছি তার মধ্যে কবরের আজাবই হচ্ছে সবচেয়ে ভয়াবহ। (তিরমিজি শরিফ, হাদিস নং-২৩০৮)। প্রিয় পাঠক! বেনামাজির কবরে কী ধরনের আজাব হবে এ সম্পর্কে হাদিসে আছে, বেনামাজির কবরে তিন ধরনের শাস্তি হবে : ১. কবর তার জন্য এমন সংকীর্ণ হবে যে, এক পাশের বুকের হাড় আরেক পাশে ঢুকে যাবে। ২. তার কবরে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হবে। ৩. তার কবরে এমন একটি সাপ নিযুক্ত করা হবে যার চক্ষু হবে আগুনের। আর নখগুলো হবে লোহার। তার প্রত্যেকটি নখ লম্বা হবে একদিনের দূরত্বের পথ। সাপের আওয়াজ হবে বজ্রের ন্যায় বিকট। সাপ ওই বেনামাজিকে বলতে থাকবে ‘আমাকে আমার রব তোর ওপর নিযুক্ত করেছেন যাতে ফজরের নামাজ নষ্ট করার কারণে সূর্যোদয় পর্যন্ত তোকে দংশন করতে থাকি। জোহরের নামাজ নষ্ট করার কারণে আসর পর্যন্ত দংশন করতে থাকি। আসর নামাজ নষ্ট করার কারণে মাগরিব পর্যন্ত। আর মাগরিব নামাজ নষ্ট করার কারণে এশা পর্যন্ত। আর এশার নামাজ নষ্ট করার কারণে ফজর পর্যন্ত তোকে দংশন করতে থাকি।’

এ সাপ যখনই তাকে একবার দংশন করবে তখনই সে ৭০ হাত মাটির নিচে ঢুকে যাবে (উঠিয়ে আবার দংশন করবে) এভাবে কেয়ামত পর্যন্ত আজাব হতে থাকবে। নেক্কার ও বদকারের কবরের অবস্থা একটি দীর্ঘ হাদিসে এসেছে, হজরত বারা ইবনে আজিব (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুল (সা.) বলেছেন, মুমিন ব্যক্তির কবরে দুজন ফেরেশতা আসে ও তাঁকে বসায়। তারপর তাকে জিজ্ঞাসা করে, তোমার রব কে? সে উত্তর দেবে, আমার রব আল্লাহ। তারা তাকে জিজ্ঞাসা করে তোমার দীন কী? সে উত্তরে বলবে, আমার দীন হচ্ছে ইসলাম। তারা এবার তাকে জিজ্ঞাসা করে, ওই ব্যক্তি কে, যাকে তোমাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল? সে উত্তর দেবে ইনি হচ্ছেন আমাদের রসুল (সা.)। তারা এবার তাকে জিজ্ঞাসা করবে (এ উত্তরগুলো) তুমি কীভাবে জানলে? সে বলবে আমি আল্লাহর কিতাব থেকে জেনেছি এবং তাঁর ওপর ইমান এনেছি। তখন রসুল (সা.) বলেন, এটাই হচ্ছে আল্লাহতায়ালার ওই বাণীর মর্ম, যেখানে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ মুমিনদের দৃঢ় বাক্যের ওপর দৃঢ় রাখেন পার্থিব জীবনে ও আখেরাতে’ রসুল (সা.) বলেন, তখনই আসমান থেকে এক ঘোষণাকারী ডাক দিয়ে বলবেন, আমার বান্দা সত্য বলেছে। সুতরাং তাকে জান্নাতের বিছানা বিছিয়ে দাও। তাকে জান্নাতের পোশাক পরিয়ে দাও এবং তার দিকে জান্নাতের দরজা খুলে দাও। তখন তার জন্য জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয়। তার কাছে জান্নাতের শান্তি ও সুঘ্রাণ আসতে থাকে। কবরকে তার দৃষ্টিসীমা পর্যন্ত প্রশস্ত করে দেওয়া হয়। প্রিয় পাঠক! চলুন চলুন, আমরা সবাই কবরের আজাব থেকে বাঁচার উপায় কী? তা জেনে আমলে বাস্তবায়িত করি।

হাদিসে কবরের আজাব থেকে বাঁচার কয়েকটা আমলের কথা উল্লেখ আছে, সেখান থেকে এখানে আমি মাত্র দুটি উল্লেখ করছি। (১) রসুল (সা.) বলেছেন, সূরা মূলক কবরের আজাব থেকে রক্ষাকারী। যে ব্যক্তি এ সূরা পাঠ করবে, এ সূরা তাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবে। (কুরতুবি) রসুল (সা.) নিয়মিত রাতে ঘুমানোর আগে সূরা মূলক তেলাওয়াত করতেন। (২) কবরে আলো পাওয়ার আমল হলো পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ। হাদিসে আছে ‘নামাজ নূর বা আলো’ কবরে ও হাশরের ময়দানের আলো হবে নামাজ। আল্লাহতায়ালা আমাদের কবরের আজাব থেকে রক্ষা করুন।  আমিন।

লেখক : মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও খতিব বারিধারা, ঢাকা।

19
স্মার্টফোন গরম হওয়ার কারণ ও প্রতিকার



আজকাল প্রায় সবাই স্মার্টফোন ব্যবহার করেন। তবে স্মার্টফোনের অন্যতম একটি সমস্যা হল- ব্যবহারের মাঝখানে খুবই গরম হয়ে যায়। স্মার্টফোন গরম হওয়ার বেশ কিছু কারণও আছে। আসুন স্মার্টফোন গরম হওয়ার কারণ ও প্রতিকার জেনে নেই। 

স্মার্টফোন যে কারণে গরম হয় : স্মার্টফোন বেশি গরম হওয়ার জন্য প্রথম কারণ প্রসেসর। সেটাই ফোনের প্রধান অঙ্গ। আপনি ফোন ব্যবহার করুন আর নাই করুন প্রসেসর সবসময় চলতে থাকে। তার কাজ করতে থাকে। প্রসেসর ফোনের বডির সঙ্গে লেগে থাকে। ফলে গরম অনুভূত হয়। এছাড়াও স্মার্টফোন দিন দিন পাতলা হলেও ব্যাটারির প্রযুক্তি সেভাবে উন্নত হয়নি। দুর্বল ব্যাটারি বেশি তাপ তৈরি করে। এছাড়াও দুর্বল নেটওয়ার্কের সিগনালের কারণেও ফোনটি গরম হতে পারে।

স্মার্টফোন গরম হওয়া বন্ধ করা যাবে যেভাবে :

১. স্মার্টফোন বেশি ব্যবহার করা যাবে না বা বেশি গেম খেলা যাবে না-এটা কিন্তু একেবারই ঠিক নয়। বরং খেয়াল রাখুন, ফোনে যেন সব সময় চার্জ থাকে। বিশেষ করে, ডাউনলোড করার সময়।

২. এক সঙ্গে বেশি অ্যাপস বা প্রোগ্রাম খুলে রাখবেন না। সফটওয়্যার নিয়মিত আপডেট করুন। কোন কোন অ্যাপস ব্যাকগ্রাউন্ডে বেশি জায়গা নিচ্ছে সেগুলো বন্ধ রাখুন।

৩. র‌্যাম ও ক্যাশ পরিষ্কার রাখুন। অপ্রয়োজনীয় মেসেজ ডিলিট করুন। অ্যানিমেশন বন্ধ রাখুন। অপ্রয়োজনে ওয়াই-ফাই অফ রাখুন।

৪. স্মার্টফোনের এমন কভার নিন যেটা ফোনের তাপ শুষে নিতে পারবে। বাইরের তাপ যেন ফোনকে আরও গরম করে না দেয়। ফোনকে যতটা সম্ভব রোদ থেকে দূরে রাখুন।

৫. রাতে স্মার্টফোন চার্জে দিয়েই ঘুমিয়ে যাবেন না। এতে স্মার্টফোনের দীর্ঘস্থায়িত্ব যেমন কমে তেমনি ফোনটি গরম করে ফেলে। এভাবে প্রায়ই স্মার্টফোনের ব্যাটারি বিস্ফোরণ হতেও দেখা যায়।

৬. অনেক সময় এটি হতে পারে ভাইরাস ও ম্যালওয়্যারের জন্য।

৮. ব্রাইটনেস বাড়ালে ফোনটি গরম হতে পারে। ব্রাইটনেস না বাড়িয়ে বরং একটি গ্লেয়ার স্ক্রিন ব্যবহার করুন।

20
একইসঙ্গে একাধিক ভিডিও কল করা যাবে হোয়াটস অ্যাপে



বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এবং বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রায়ই নতুন নতুন ফিচার নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানোর ক্ষেত্রে হোয়াটসঅ্যাপের বেশ সুখ্যাতি রয়েছে। এই অ্যাপটি গত বছর চালু করেছিল ‘ভয়েস কলিং’ সুবিধা। এরপর চালু করে ওয়ান-টু-ওয়ান ভিডিও কলিং সুবিধা। আর এবার হোয়াটসঅ্যাপে যুক্ত হচ্ছে আরও একটি নতুন নাম-গ্রুপ ভিডিও কলিং। এর মাধ্যমে এখন থেকে হোয়াটসঅ্যাপে একইসঙ্গে একাধিক মানুষের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলা যাবে।

গত মাসে হোয়াটসঅ্যাপের সর্বশেষ সংস্করণ ২.১৭.৪৪৩ -এ গ্রুপ ভিডিও কলিং যুক্ত হওয়ার একটি ইঙ্গিত পাওয়া যায়। কিন্তু নতুন এই ফিচারটি সম্পর্কে এর বেশি বিশেষ কিছু জানা যায়নি।

জানা গেছে, অ্যাপটির নতুন আপডেটে ইউজরদের গ্রুপ কলিং সুবিধা দেওয়ার জন্য একটি নতুন অপশন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আপডেট হওয়া ফিচারে বর্তমানে গ্রুপ ভিডিওতে তিনজন সদস্য যোগ করার অপশন রয়েছে। অর্থাৎ নতুন এই ফিচারের মাধ্যমে সর্বাধিক পাঁচজন একইঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলা যাবে।

21
গুগলে সবচেয়ে বেশি খোঁজা হয়েছে যেসব প্রশ্নের উত্তর!



সভ্যতার শুরু থেকেই প্রতিনিয়ত মানুষ অজানাকে জানার চেষ্টা করে যাচ্ছে। আর বর্তমান বিশ্বে প্রযুক্তির কল্যাণে তথ্য ভান্ডারে পরিণত জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগল। তাই মানুষ এখন অনেক প্রশ্নেরই উত্তর মানুষ খোঁজে গুগলে। সম্প্রতি গুগল প্রকাশ করেছে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ‘হাউ ‍টু ....’ অর্থাৎ ‘কিভাবে ...’- খোঁজা হয়েছে, এমন ১০টি বিষয়ের তালিকা।

তবে আর দেরি না করে চলুন জেনে নেই বিশ্বে সবচেয়ে বেশি গুগলে সার্চ করা ১০টি ‘হাউ টু ...’- বিষয়ের তালিকা:

১. how to tie a tie (কিভাবে টাই বাঁধতে হয়)
২. how to kiss (কিভাবে চুমু দিতে হয়)
৩. how to get pregnant (কিভাবে গর্ভবতী হওয়া যায়)
৪. how to lose weight (কিভাবে ওজন কমানো যায়)
৫. how to draw (কিভাবে আঁকা যায়)
৬. how to make money (কিভাবে অর্থ উপার্জন করা যায়)
৭. how to make pancakes (কিভাবে প্যানকেক বানাতে হয়)
৮. how to write a cover letter (কিভাবে কভার লেটার লিখতে হয়)
৯. how to make french toast (কিভাবে ফ্রেঞ্চ টোস্ট বানাতে হয়)
১০. how to lose belly fat (কিভাবে পেটের মেদ কমানো যায়)

গুগলের ডাটা এডিটর সাইমন রজার্স বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা লক্ষ্য করেছি যে, গুগলে ‘হাউ টু ....’ প্রশ্ন খোঁজা ২০০৪ সাল থেকে বর্তমানে ১৪০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এর মধ্যে বেশিরভাগ জিনিসপত্রের সমাধান সম্পর্কিত প্রশ্ন যেমন লাইটবাল্ব, জানালা, ওয়াশিং মেশিন এমনকি টয়লেট পর্যন্তও রয়েছে।

22
সৃষ্টিকে ভালোবেসে মানুষ হই

বিজ্ঞানের হাত ধরে আমাদের পৃথিবী এগিয়ে গেছে অনেক দূর। কিন্তু পিছিয়ে গেছি আমরা। বিজ্ঞানের যত আবিষ্কার সব মানুষের কল্যাণের জন্যই করা হয়েছে। কিন্তু আমরাই আমাদের নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে এ সুন্দর পৃথিবীকে বিষিয়ে তুলেছি। আবিষ্কার করেছি মানুষ ধ্বংসের হাতিয়ার। ব্যক্তিগত আক্রমণ থেকে শুরু করে জাতি ও দেশ-বিদেশের যুদ্ধগুলোতেও ব্যবহার করছি আমাদের আবিষ্কার করা মারণাস্ত্রগুলো। যখন এসব আবিষ্কার হয়নি, তখনো রাহাজানি খুনোখুনি ছিল। কখনো যদি এ মারণাস্ত্রগুলো ধ্বংস হয়ে যায় তখনো বিশ্বে খুনোখুনি থাকবে। কারণ, খুনের বীজ মারণাস্ত্রে থাকে না, থাকে মানুষের মনে। মানুষের মনেই খুনের নেশা চাপে। মনের রাগ-ক্ষোভ-লোভ থেকেই খুনের ইচ্ছা জাগে। তখনই এক মানুষ আরেক মানুষকে খুন করে বসে।

 যেমন প্রবৃত্তির তাড়না থেকে আপন ভ্রাতৃঘাতক খুন করেছিল হাবিলকে। হায়! মানুষ কীভাবে আরেক মানুষকে খুন করে। এ জন্যই কী ফেরেশতাদের আপত্তির জবাবে আল্লাহ খুব গর্ব করে বলেছিলেন— ইন্নি আলামু মালাতালামুন। আমি যা জানি তোমরা তা জান না। ছিঃ মানুষ ছিঃ! আল্লাহর সেই গর্বভরা মুখখানি কীভাবে তুমি মলিন করে দাও? কীভাবে তুমি আরেক আদম সন্তানের বুকে ধ্বংসের বুলেট ছুড়ো? তোমার কি একটুও মায়া লাগে না? অন্তরের গভীরে কি একবিন্দুও দরদ জাগে না? সেও তো মানুষ। সেও তো কোনো না কোনো মায়ের সন্তান। তারও তো তোমার মতো ফুটফুটে সন্তান আছে। আছে প্রাণ-প্রেয়সী। অন্যায়ভাবে কাউকে খুন করা আল্লাহর কাছে সবচেয়ে বড় গুনাহগুলোর মধ্যে একটি।

সহি বোখারি-মুসলিমের একাধিক বর্ণনায় রসুল (সা.) বলেছেন, সাতটি ভয়ঙ্কর কবিরা গুনাহর প্রথমটি হলো আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা। আর দ্বিতীয়টি হলো- অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা। কাউকে হত্যা করা শুধু বড় গুনাহই নয় বরং কোরআনের ভাষায় একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা মানে গোটা পৃথিবীর মানুষকে হত্যা করা। কেননা, গোটা পৃথিবীর মানুষের জীবনের বিনিময়ে একজন মানুষের জীবন সৃষ্টি করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। আল্লাহ বলেন, ‘মান কাতালা নাফসান বিগায়রি নাফসিন আও ফাসাদিন ফিল আরদি ফাকাআন্নামা কাতালানন্নাসা জামিআ। কেউ যদি কোনো মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে তবে সে যেন পৃথিবীর সব মানুষকেই হত্যা করে ফেলল।’ (সূরা মায়েদা : ৩২।) হাদিস শরিফে রসুল (সা.) বলেছেন, ‘পৃথিবীর সব মানুষ মিলে যদি একজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে আল্লাহতায়ালা সব মানুষকেই জাহান্নামে দেবেন তারপরও অন্যায়ভাবে হত্যাকে মেনে নেবেন না।’ (মুসনাদে বাজজার।) আকদিয়াতুর রসুল (সা.) গ্রন্থে ইমাম কুরতুবি (রহ.) একটি হাদিস উল্লেখ করেছেন, রসুল (সা.) বলেছেন, কোনো মানুষ যদি আরেকজন নিরপরাধ মানুষকে হত্যায় মুখের একটি কথা দিয়েও সাহায্য না করে, তাহলে কেয়ামতের দিন তার কপালে লেখা থাকবে— এ ব্যক্তি আল্লাহর দয়ার চাদর থেকে বঞ্চিত।

বোখারির বর্ণনায় রসুল (সা.) বলেছেন, কোনো মুমিন বান্দা যতক্ষণ পর্যন্ত অবৈধ হত্যায় জড়িয়ে না পড়বে ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহর রাগ থেকে বেঁচে যাবে। আরেকটি বর্ণনায় রসুল (সা.) বলেছেন, কোনো মুমিন বান্দা যদি আল্লাহর কাছে এমন অবস্থায় হাজির হয় যে, সে কারও রক্ত নিয়ে খেলেনি, তাহলে আল্লাহর দায়িত্ব হয়ে যায় তাকে ক্ষমার চাদরে ঢেকে নেওয়া। শিরকের পর সবচেয়ে বড় গুনাহ হলো কাউকে হত্যা করা। আর কাউকে হত্যা না করা হলো জান্নাত পাওয়ার গ্যারান্টি। রসুল (সা.) বলেছেন, কেউ যদি মুমিন ব্যক্তির রক্তে নিজেকে কলুষিত না করে তবে সে জাহান্নাম থেকে বেঁচে যাবে। একটি কাজ থেকে বিরত থেকে কত সহজেই না জান্নাত পেতে পারি আমরা। আবার ওই কাজটি করেই আমাদের দুনিয়া-আখেরাত ধ্বংস করে ফেলতে পারি অনায়াসে। আফসোস! আমরা আখেরাতকে সুন্দর করার চেয়ে আখেরাত ধ্বংসের পথেই যেন এগিয়ে যাচ্ছি দুর্বার গতিতে। আমাদের দেশে প্রতিদিন শত শত অন্যায় হত্যার ঘটনা ঘটছে। পেপার-টেলিভিশন খুললেই এসব ঘটনা আমাদের হৃদয়কে নাড়িয়ে দেয়। অথচ এসব হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠুবিচার এবং প্রতিরোধের কোনো শুভ উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। হে আল্লাহ! আমাদের মনে আখেরাতের ভয় জাগিয়ে দিন। অন্যায়ভাবে কাউকে আঘাত করা থেকে আমাদের বাঁচিয়ে রাখুন। আমিন।

লেখক : বিশিষ্ট মুফাসিসরে কোরআন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব।

23
Islam / পরকালের পাঁচ স্টেশন
« on: March 11, 2018, 10:44:15 AM »
পরকালের পাঁচ স্টেশন

প্রত্যেক মানুষ মৃত্যুবরণ করবে। পৃথিবীর কেউ মৃত্যুর কবল থেকে নিস্তার পাবে না। আল্লাহ বলেন, ‘প্রত্যেককেই মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করতে হবে।’ (সূরা আলে ইমরান : ১৮৫)। এতে সুস্পষ্ট প্রমাণিত হয়, সবাইকে একদিন অবশ্যই আখিরাতের সফর করতে হবে। সেই পরিভ্রমণের লক্ষ্যের কিনারায় উপনীত হওয়ার জন্য কয়েকটি মঞ্জিল বা স্টেশন অতিক্রান্ত করা অপরিহার্য, সেগুলো হলো—

 
প্রথম মঞ্জিল :
প্রথম মঞ্জিল ‘সকরাতুল মাওত’ তথা মৃত্যুর দুর্বিষহ কষ্টের মঞ্জিল। এই ভয়াবহ অবস্থা প্রকাশ পাওয়ার আগমুহূর্ত পর্যন্ত মানব জাতির জন্য তওবার দরজা অবারিত থাকে। এ সময় সৎ ব্যক্তিদের অভ্যর্থনা দেওয়ার জন্য জান্নাত থেকে ফেরেশতা অবতরণ করেন। এ জন্য অনেক সময় মৃত্যুর আগে আওয়াজ আসে, ‘হে প্রশান্ত অন্তর! তুমি তোমার পালনকর্তার কাছে ফিরে যাও সন্তুষ্ট ও সন্তোষভাজন হয়ে। অতঃপর আমার বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাও এবং আমার জান্নাতে প্রবেশ কর।’ (সূরা আল ফজর : ২৭-৩০)। পক্ষান্তরে পাপিষ্ঠ ব্যক্তিদের মৃত্যুর সময় জাহান্নাম থেকে ফেরেশতারা নেমে আসেন। এ সময় তারা তাদের রুহু কবজ করাকালে দুর্গন্ধ অনুভব করেন। এর ফলে ফেরেশতারা নাসিকা বস্ত্র দ্বারা আবৃত করেন।

দ্বিতীয় মঞ্জিল :
 মানব জাতির জন্য সফরে আখিরাতের দ্বিতীয় মঞ্জিল হচ্ছে কবর। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমরা কবরকে মাটির স্তূপ মনে করো না বরং কবর হচ্ছে জান্নাতের বাগিচা অথবা জাহান্নামের গর্তের মধ্য থেকে একটি গর্ত।’  (তিরমিজি)।

তৃতীয় মঞ্জিল :
সফরে আখিরাতের তৃতীয় মঞ্জিল হাশর। হাদিসে বিধৃত হয়েছে, কাফিরদের জন্য হাশরের এক দিন ৫০ হাজার বছরের সমতুল্য, পক্ষান্তরে মুমিনদের জন্য ক্ষণিকের বরাবর হবে। সেদিন আল্লাহর আরশের ছায়া ছাড়া কোনো ছায়া থাকবে না। সেই ছায়াতলে শুধু সাত ধরনের বান্দা স্থান পাবে। এক. ইনসাফ প্রতিষ্ঠাকারী শাসক। দুই. সেসব যুবক, যারা যৌবনকালে আল্লাহর ইবাদতে রত ছিল। তিন. সেই ব্যক্তি, যার অন্তর মসজিদের দিকে অটুট থাকে। চার. সেই দুই ব্যক্তি, যাদের মাঝে আল্লাহর জন্য ভালোবাসা সৃষ্টি হয়েছে। এই ভালোবাসার ভিত্তিতে তারা সংঘবদ্ধ হয়েছে এবং এরই ভিত্তিতে তাদের বিচ্ছেদ হয়েছে। পাঁচ. সেই ব্যক্তি, যাকে পরমাসুন্দরী মহিলা নিজের দিকে আকৃষ্ট করতে চেয়েছিল, আর সে আল্লাহর ভয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে। ছয়. সেসব ব্যক্তি, যারা নির্জনে আল্লাহর জিকির করে এবং তাদের চোখ থেকে অঝরে অশ্রু প্রবাহিত হতে থাকে। (বুখারি)।

চতুর্থ মঞ্জিল : সফরে আখিরাতের চতুর্থ মঞ্জিল হচ্ছে মিজান। মিজানের সময় সবার আশঙ্কা থাকে, নেক আমলের পাল্লা ভারী হবে না গুনার পাল্লা ভারী হবে।

পঞ্চম মঞ্জিল :
সফরে আখিরাতের পঞ্চম মঞ্জিল হচ্ছে পুলসিরাত। এটি এমন পুল, যা চুলের চেয়েও অধিক সূক্ষ্ম এবং তলোয়ারের চেয়েও অধিক তীক্ষ। এর ওপর দিয়ে সব মানুষকে অতিক্রম করতে হবে। এটি হবে তিমিরাচ্ছন্ন এক ভয়ানক সেতু, যা অতিক্রমকালে মুমিনদের সম্মুখে ইমানের আলোকরশ্মি উদ্ভাসিত হয়ে উঠবে। অবিশ্বাসীদের কাছে আলো থাকবে না। ফলে তারা মুমিনদের কাছে আলো প্রার্থনা করবে। কিন্তু তাদের তা দেওয়া হবে না। মুমিন ও কাফিরদের মাঝে একটি দেয়াল তোলা হবে।

লেখক : খতিব : বাইতুন নূর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, দক্ষিণ পীরেরবাগ, ওলি মার্কেট, ঢাকা।

24
ইসলামের দৃষ্টিতে ভালোবাসা দিবস



১৪ ফেব্রুয়ারি! বর্তমান বিশ্বে এ দিনকে ভ্যালেন্টাইন ডে (বিশ্ব ভালোবাসা দিবস) নামে উদ্যাপন করা হয়। ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে এ দিবস অত্যন্ত আড়ম্বর, জাঁকজমকপূর্ণ ও রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন করা হয়। এর সূচনা মধ্যযুগে হলেও নব্বই দশকের শুরু থেকে বিশ্বব্যাপী এর প্রসার ঘটে। আশির দশকেও বাংলাদেশের মানুষ এ দিবসটির সঙ্গে ছিল অনেকটা অপরিচিত। তবে নব্বইয়ের দশক থেকে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর সহযোগিতায় ও মিডিয়ার কল্যাণে এ দেশের যুবসমাজের মাঝে তা ছড়িয়ে পড়ে। ভালোবাসা দিবসের উৎস নিয়ে নানা মত প্রচলিত আছে। এ সম্পর্কে যদ্দুর জানা যায়, লুপারকালিয়া নামে প্রাচীন রোমে এক উৎসব ছিল, যা ১৩ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি অবধি হতো। যে উৎসবে নারী-পুরুষ সমানতালে মদ পান করত এবং লটারির মাধ্যমে সঙ্গী বেছে নিয়ে তার সঙ্গে একান্তে মিলিত হতো। অতঃপর রোমানরা যখন তাদের প্রাচীন ধর্ম ত্যাগ করে খ্রিস্টধর্মে ধাবিত হচ্ছিল, তখন তারা প্রাচীন দেবীর নামে লুপারকালিয়া উৎসবকে মেনে নিতে পারছিল না। আবার উৎসবটি খুব জনপ্রিয় ছিল বলে ছেড়েও দিতে পারছিল না। অবশেষে উৎসবটিকে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের নামে উৎসর্গ করে উদযাপন করত। বিখ্যাত ইতিহাসবিদ নোয়েল লেন্সকি বলেছেন, লুপারকালিয়া উৎসবে পুরুষরা দেবী লুপারকাসের নামে একটি ছাগল আর একটি কুকুর বলি দিত। তারপর মৃত ছাগল বা কুকুরের চামড়া দিয়ে উৎসবে অংশগ্রহণকারী মেয়েদের বেদম প্রহার করত। তাদের বিশ্বাস, এ প্রহারের কারণে মেয়েদের প্রজননক্ষমতা বাড়ে।

ভালোবাসা দিবসের সূচনা ইতিহাস সম্পর্কে আরও যা জানা যায়, ২৭০ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস বিবাহিত পুরুষদের সেনাবাহিনীতে নিয়োগ বন্ধ করে দেন এবং আইন জারি করেন, তার সাম্রাজ্যে কেউ বিয়ে করতে পারবে না। কারণ বিবাহিত সেনারা স্ত্রী-সন্তানদের মায়াজালে আবদ্ধ হয়ে যুদ্ধের ময়দানে মৃত্যুর ঝুঁকি নিতে চাইত না। কিন্তু রোমান এক ধর্মযাজক সেন্ট ভ্যালেন্টাইন সম্রাটের ন্যায়ভ্রষ্ট নিয়মের প্রতিবাদ করেন এবং বিয়ে করেন। এ খবর সম্রাট ক্লডিয়াসের কাছে পৌঁছলে তিনি সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে গ্রেফতার করে মৃত্যুদণ্ড দেন। আর সে মৃত্যুদণ্ডটি কার্যকর হয় ১৪ ফেব্রুয়ারি। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এ দিবসকে ‘বিশ্ব ভালোবাসা দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। আবার কারও কারও মতে, ভ্যালেন্টাইন ছিলেন একজন খ্রিস্টান পাদরি ও চিকিৎসক। সে সময় রোমানরা ছিল দেব-দেবীর অনুসারী। ২৭০ খ্রিস্টাব্দে রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্লডিয়াস খ্রিস্টধর্ম প্রচারের অভিযোগে ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ড দেন। বন্দী অবস্থাতেই ভ্যালেন্টাইন জেলারের অন্ধ মেয়ের চোখের চিকিৎসা করেন। ফলে মেয়েটি তার দৃষ্টিশক্তি ফিরে পায়। মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দিন ভ্যালেন্টাইন মেয়েটিকে লিখে যান, Love From your valentine. আর এ ঐতিহাসিক দিনটি ছিল ১৪ ফেব্রুয়ারি।

প্রেম-ভালোবাসা, মায়া-মমতা ও ভক্তি-শ্রদ্ধা মানুষের স্বভাবজাত বিষয়। এসব মানবিক গুণ আছে বলেই এখনো টিকে আছে এ নশ্বর পৃথিবী। আল্লাহতায়ালা নিজেই ঘোষণা করেছেন, ‘আল্লাহর কুদরতের মধ্যে অন্যতম একটি নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকে তোমাদের স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাকো এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা ও অনুগ্রহ সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্য নিদর্শনাবলি রয়েছে।’ (সূরা আর রুম : ২১)।

ভালোবাসা হলো খোদায়ি অনুভূতি, আত্মার তৃপ্তি ও মনের প্রশান্তি। আল্লাহতায়ালা আমাদের অকৃত্রিম ভালোবাসা শিক্ষা দিয়েছেন, যা কোনো বিশেষ দিবসের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। ভালোবাসা, সম্প্রীতি ও উত্তম চরিত্রমাধুর্য দ্বারা আমাদের প্রিয় নবী (সা.) জয় করে নিয়েছেন শত কোটি মানুষের হৃদয়; বিশ্বময় ছড়িয়ে দিয়েছেন ইসলামের বিকিরণ। প্রতিটি ভালোবাসা হতে হবে আবেগ, বিবেক ও স্রষ্টার সম্মতির সমন্বয়। কিন্তু যে ভালোবাসার পরিচালক হয় শুধু আবেগ বা কুপ্রবৃত্তি, সে ভালোবাসা মানুষের ইহকাল-পরকাল উভয়কে ধ্বংস করে দেয়। ধ্বংস করে মানুষের মনুষ্যত্ব, জাগরিত করে পশুত্বের হিংস্র বৈশিষ্ট্য। দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমান বিশ্বে ভালোবাসা দিবসের নামে উৎপত্তি হচ্ছে নানান অপসংস্কৃতি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড, ছড়িয়ে পড়ছে অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা। ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির আগ্রাসন; যা ইসলামের নীতি ও আদর্শবহির্ভূত। যে কোনো দিবস উদ্যাপনে সুস্থ ও সুন্দরভাবে আবেগ-অনুভূতি প্রকাশে সচেষ্ট হওয়া ইসলামের শাশ্বত নীতি। আজ পবিত্র ও সত্যিকার ভালোবাসার অভাবে সর্বত্র বৃদ্ধি পাচ্ছে হিংসা-বিদ্বেষ, ছড়িয়ে পড়ছে গুম, খুন ও ধর্ষণের মতো অসংখ্য অপরাধ। তাই মহান স্রষ্টার সমীপে এই মিনতি যে, সমাজ থেকে চিরতরে নির্মূল হোক সব ধরনের অশ্লীলতা, বেলেল্লাপনা ও অপসংস্কৃতি। জয় হোক পবিত্র, অকৃত্রিম ও নিঃস্বার্থ ভালোবাসার।

লেখক : খতিব, মাসজিদুল কোরআন জামে মসজিদ, কাজলা (ভাঙ্গা প্রেস) যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।

25
সকালে কাঁচা ছোলা খাওয়ার উপকারিতা



কাঁচা ছোলার গুণ সম্পর্কে আমরা সবাই জানি। প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যপোযগী ছোলায় আমিষ প্রায় ১৮ গ্রাম, কার্বোহাইড্রেট প্রায় ৬৫ গ্রাম, ফ্যাট মাত্র ৫ গ্রাম, ২০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ‘এ’ প্রায় ১৯২ মাইক্রোগ্রাম এবং প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি-১ ও বি-২ আছে।

এছাড়াও ছোলায় বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন, খনিজ লবণ, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে আরও অনেক উপকার। উচ্চমাত্রার প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার ছোলা। কাঁচা, সেদ্ধ বা তরকারি রান্না করেও খাওয়া যায়। কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে, খোসা ছাড়িয়ে, কাঁচা আদার সঙ্গে খেলে শরীরে একই সঙ্গে আমিষ ও অ্যান্টিবায়োটিক যাবে। আমিষ মানুষকে শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যবান বানায়। আর অ্যান্টিবায়োটিক যেকোনো অসুখের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। ছোলার কিছু চমকপ্রদ গুণাগুণ হল-

ডাল হিসেবে : ছোলা পুষ্টিকর একটি ডাল। এটি মলিবেডনাম এবং ম্যাঙ্গানিজ এর চমৎকার উৎস। ছোলাতে প্রচুর পরিমাণে ফলেট এবং খাদ্য আঁশ আছে সেই সাথে আছে আমিষ, ট্রিপট্যোফান, কপার, ফসফরাস এবং আয়রণ।

হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে : অস্ট্রেলিয়ান গবেষকরা দেখিয়েছেন যে খাবারে ছোলা যুক্ত করলে টোটাল কোলেস্টেরল এবং খারাপ কোলেস্টেরল এর পরিমাণ কমে যায়। ছোলাতে দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় উভয় ধরনের খাদ্য আঁশ আছে যা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। আঁশ, পটাসিয়াম, ভিটামিন ‘সি’ এবং ভিটামিন বি-৬ হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়। এর ডাল আঁশসমৃদ্ধ যা রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন ৪০৬৯ মিলিগ্রাম ছোলা খায়, হৃদরোগ থেকে তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি ৪৯% কমে যায়।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে : আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখানো হয় যে, যে সকল অল্পবয়সী নারীরা বেশি পরিমাণে ফলিক এসিডযুক্ত খাবার খান তাদের হাইপারটেনশন এর প্রবণতা কমে যায়। যেহেতু ছোলায় বেশ ভাল পরিমাণ ফলিক এসিড থাকে সেহেতু ছোলা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। এছাড়া ছোলা বয়সসন্ধি পরবর্তীকালে মেয়েদের হার্ট ভাল রাখতেও সাহায্য করে।

রক্ত চলাচল : অপর এক গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা প্রতিদিন ১/২ কাপ ছোলা, শিম এবং মটর খায় তাদের পায়ের আর্টারিতে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। তাছাড়া ছোলায় অবস্থিত আইসোফ্লাভন ইস্কেমিক স্ট্রোকে আক্রান্ত ব্যক্তিদের আর্টারির কার্যক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেয় ।

ক্যান্সার রোধে : কোরিয়ান গবেষকরা তাদের গবেষণায় প্রমাণ করেছেন যে বেশি পরিমাণ ফলিক এসিড খাবারের সাথে গ্রহণের মাধ্যমে নারীরা কোলন ক্যান্সার এবং রেক্টাল ক্যান্সার এর ঝুঁকি থেকে নিজিদেরকে মুক্ত রাখতে পারেন। এছাড়া ফলিক এসিড রক্তের অ্যালার্জির পরিমাণ কমিয়ে এ্যজমার প্রকোপও কমিয়ে দেয়। আর তাই নিয়মিত ছোলা খান এবং সুস্থ থাকুন।

রমজানে : রমজান মাসে ইফতারের সময় জনপ্রিয় খাবার হলো ছোলা। আমাদের দেশে ছোলার ডাল নানাভাবে খাওয়া হয়। দেহকে করে দৃঢ়, শক্তিশালী, হাড়কে করে মজবুত, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এর ভূমিকা অপরিহার্য। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম।

কোলেস্টেরল : ছোলা শরীরের অপ্রয়োজনীয় কোলেস্টেরল কমিয়ে দেয়। ছোলার ফ্যাট বা তেলের বেশির ভাগ পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট ছাড়া ছোলায় আরও আছে বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ লবণ।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে : ছোলায় খাদ্য-আঁশও আছে বেশ। এ আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য সারায়। খাবারের আঁশ হজম হয় না। এভাবেই খাদ্যনালী অতিক্রম করতে থাকে। তাই পায়খানার পরিমাণ বাড়ে এবং পায়খানা নরম থাকে।

ডায়াবেটিসে উপকারী : ১০০ গ্রাম ছোলায় আছে: প্রায় ১৭ গ্রাম আমিষ বা প্রোটিন, ৬৪ গ্রাম শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট এবং ৫ গ্রাম ফ্যাট বা তেল। ছোলার শর্করা বা কার্বোহাইডেটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ছোলার শর্করা ভাল। প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় ক্যালসিয়াম আছে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম, লৌহ ১০ মিলিগ্রাম, ও ভিটামিন এ ১৯০ মাইক্রোগ্রাম। এছাড়া আছে ভিটামিন বি-১, বি-২, ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়াম। এর সবই শরীরের উপকারে আসে।

রক্তের চর্বি কমায় : ছোলার ফ্যাটের বেশিরভাগই পলি আনস্যাচুয়েটেড। এই ফ্যাট শরীরের জন্য মোটেই ক্ষতিকর নয়, বরং রক্তের চর্বি কমায়।

অস্থির ভাব দূর করে : ছোলায় শর্করার গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ কম থাকায় শরীরে প্রবেশ করার পর অস্থির ভাব দূর হয়।

রোগ প্রতিরোধ করে : কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে কাঁচা আদার সঙ্গে খেলে শরীরে আমিষ ও অ্যান্টিবায়োটিকের চাহিদা পূরণ হয়। আমিষ মানুষকে শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যবান বানায় এবং অ্যান্টিবায়োটিক যে কোনো অসুখের জন্য প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

জ্বালাপোড়া দূর করে : সালফার নামক খাদ্য উপাদান থাকে এই ছোলাতে। সালফার মাথা গরম হয়ে যাওয়া, হাত-পায়ের তলায় জ্বালাপোড়া কমায়।

মেরুদণ্ডের ব্যথা দূর করে : এছাড়াও এতে ভিটামিন ‘বি’ও আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। ভিটামিন ‘বি’ মেরুদণ্ডের ব্যথা, স্নায়ুর দুর্বলতা কমায়। ছোলা অত্যন্ত পুষ্টিকর। এটি আমিষের একটি উল্লেখযোগ্য উৎস। এতে আমিষ মাংস বা মাছের পরিমাণের প্রায় সমান। তাই খাদ্যতালিকায় ছোলা থাকলে মাছ মাংসের প্রয়োজন পরে না। ত্বকে আনে মসৃণতা। কাঁচা ছোলা ভীষণ উপকারী। তবে ছোলার ডালের তৈরি ভাজা-পোড়া খাবার যত কম খাওয়া যায় ততই ভালো। তাই হজমশক্তি বুঝে ছোলা হোক পরিবারের শক্তি।

26

দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৮ কোটি



চলতি বছরের নভেম্বর মাস শেষে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী আট কোটি পার হয়েছে। এর মধ্যে ৭ কোটি ৪৭ লাখ ৩৬ হাজার মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। আজ বুধবার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ওয়েবসাইটে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর তথ্য হালানাগাদ করা হয়েছে।

বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, নভেম্বর মাসের শেষে দেশে কার্যকর ইন্টারনেট সংযোগ ৮ কোটি ১ লাখ ৬৬ হাজার হয়েছে। এর মধ্যে আইএসপিদের সংযোগসংখ্যা ৫৩ লাখ ৪২ হাজার। ওয়াইম্যাক্সের সংযোগ ৮৮ হাজার।

তিন মাসের মধ্যে যদি কোনো ব্যক্তি ইন্টারনেট ব্যবহার করেন, তাঁকে সক্রিয় ব্যবহারকারী হিসেবে গণ্য করা হয় বলে বিটিআরসির ওয়েবসাইটে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত অক্টোবর মাসের হিসাবে দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল ৭ কোটি ৯৭ লাখ ৮৯ হাজার।

নভেম্বর মাসের হিসাবে দেশে সক্রিয় মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৪ কোটি ৩১ লাখ ৬ হাজারে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে গ্রামীণফোনের ৬ কোটি ৪৯ লাখ ৫৯ হাজার, রবি আজিয়াটার ৪ কোটি ১৩ লাখ ৯৭ হাজার, বাংলালিংকের ৩ কোটি ২৩ লাখ ৩০ হাজার, টেলিটকের ৪৪ লাখ ১৯ হাজার গ্রাহক দাঁড়িয়েছে।

27
যে পদ্ধতিতে নেটের গতি বাড়বে ১০০ গুণ!



সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমন একটি নতুন হার্ডওয়্যার তৈরি করেছেন যা আপনাকে সব সময় হাইস্পিড ইন্টারনেট সরবরাহ করবে। গবেষকদের দেওয়া তথ্য মতে, নতুন এই প্রযুক্তিটি সত্যিকার অর্থেই কম দামে সুপার-ফাস্ট ইন্টারনেট পরিষেবা দেবে। যা দিয়ে ইউজারদের প্রতি সেকেন্ড ১০ হাজারের বেশি মেগা হারে ডাটা আদান প্রদান করতে সক্ষম হবেন।

মার্কিন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সিজার আর্কিলিন্স বলেন, ২০২৫ সাল নাগাদ অতিরিক্ত ব্যান্ডউইথ চাহিদা মেটানোর জন্য আরও ১০০ গুণ বেশি দ্রুত গতির ইন্টারনেটের প্রয়োজন হবে। আল্ট্রা হাই-ডেফিনিশন ভিডিও, অনলাইন গেমিং ও ইন্টারনেট অফ থিংস (আইওটি)-এর মতো পরিষেবাগুলির ক্ষেত্র বৃদ্ধির ফলেই এই দ্রুত গতির ইন্টারনেটের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেবে।

এই গবেষণাটির আর্কিলিন্স আরও বলেন, স্মার্ট ডিভাইসের মাধ্যমে নতুন পরিষেবাগুলি সক্ষম করার জন্য ৫-জির প্রতিশ্রুতির সঙ্গে মোবাইল ডিভাইসের সংখ্যা ভবিষ্যত বৃদ্ধি পাবে। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা অপটিক্যাল একসেস নেটওয়ার্কগুলোতে ব্যবহারযোগ্য একটি সহজ রিসিভার গড়ে তুলেছেন। এই রিসিভার গ্রাহকদের সঙ্গে ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারীদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করবে।

যদিও এই নতুন প্রযুক্তি ইতিমধ্যে অত্যন্ত সংবেদনশীল হার্ডওয়্যার হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে যা সুসঙ্গত রিসিভার হিসেবে পরিচিত, তবে এটি বিভিন্ন দেশ এবং শহরের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা মূল নেটওয়ার্কগুলোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত ব্যয়বহুল। এই পদ্ধতিতে আপস্ট্রিম ও ডাউনস্ট্রিম উভয় ডাটার জন্য একই অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহার করার মাধ্যমে অতিরিক্ত খরচ সাশ্রয় করার সুবিধা রয়েছে।

28
আখেরাতের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে




দুনিয়ার জীবনের জন্য প্রতিটি মানুষকে আখেরাতের জীবনে হিসাব দিতে হবে। দুনিয়ার জীবনে তারা আখেরাতের জীবনের জন্য যে সঞ্চয় করবেন তার ভিত্তিতে তারা জান্নাতের দ্বারা পুরস্কৃত হবেন। দুনিয়ার জীবনে যারা সে সঞ্চয় অর্থাৎ ইবাদত বন্দেগির মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানে ব্যর্থ হবেন তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি। হজরত আসমা (রা.) বলেন, আমি রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে শুনেছি, কিয়ামতের দিন সব মানুষ এক স্থানে জমা হবে এবং ফেরেশতারা যে কোনো আওয়াজই দেবেন সবাই তা শুনতে পাবে। ওই সময় ঘোষণা করা হবে কোথায় ওইসব লোক, যারা সুখ-দুঃখ সর্বাবস্থায় আল্লাহতায়ালার প্রশংসা করত, তা শুনে একদল উঠবে এবং বিনাহিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আবার ঘোষণা করা হবে কোথায় ওইসব লোক যারা সারা রাত জেগে থেকে আরামের বিছানা ত্যাগ করে ইবাদত-বন্দেগীতে মশগুল থাকত, অতঃপর এক জামাত উঠবে এবং বিনাহিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আবার ঘোষণা করা হবে কোথায় ওইসব লোক, যাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও বেচাকেনা অবস্থায় আল্লাহ স্মরণ হতে গাফেল করত না। অতঃপর এক জামাত উঠবে এবং বিনাহিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে। অন্য হাদিসে এ ঘটনার সঙ্গে এও বর্ণিত হয়েছে যে, তখন ঘোষণা করা হবে, আজ হাশরবাসী দেখতে পাবে যে সম্মানিত লোক কারা? আরও ঘোষণা করা হবে কোথায় ওইসব লোক, যাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের ব্যস্ততা আল্লাহর জিকির ও নামাজ থেকে বাধা দিত না। যখন এসব লোক বিনাহিসাবে মুক্তি পেয়ে যাবে তখন জাহান্নাম থেকে একটি লম্বা গর্দান বের হয়ে লোকদের ডিঙিয়ে চলে আসবে। তার দুটি উজ্জ্বল চক্ষু থাকবে এবং তার ভাষা খুবই স্পষ্ট হবে।

সে বলবে, আমি ওইসব লোকের ওপর নিযুক্ত হয়েছি, যারা অহংকারী ও বদমেজাজি এবং সমবেত লোকদের মধ্য থেকে তাদের এমনভাবে বেছে নেবে যেভাবে পশুপক্ষী তাদের খাদ্য বেছে নেয়। তাদের বেছে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবে। অতঃপর এরূপ দ্বিতীয়বার বের হয়ে বলবে, এবার আমি ওইসব লোকের ওপর নিযুক্ত হয়েছি, যারা আল্লাহ ও তার রসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-কে কষ্ট দিয়েছে। তাদেরও দল হতে বেছে নিয়ে যাবে। অতঃপর তৃতীয়বার বের হয়ে আসবে এবং এবার ছবি অঙ্কনকারীদের বেছে নিয়ে যাবে। এই প্রকারের লোক ময়দান থেকে পৃথক হওয়ার পর হিসাব-নিকাশ আরম্ভ হবে। (শু’আবুল ইমান [বায়হাকী] ৩/১৬৯ হা. ৩২৪৪, ৩২৪৫, তাম্বীহুল গাফেলীন ২৩৫)।    কিয়ামতের দিন বা আখিরাতের জীবনে জান্নাত লাভ করতে চাইলে বা জাহান্নাম থেকে রেহাই পেতে চাইলে দুনিয়ার জীবনে তাকওয়ার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানে ব্রতী হতে হবে। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সে তাওফিক দান করুন।

29
কিয়ামতে সুন্দর চরিত্রের অধিকারীরা হবেন রসুল (সা.)-এর প্রিয়



রসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন সুন্দরতম চরিত্রের অধিকারী। এ ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন সত্যিকার অর্থেই অতুলনীয়। বিধর্মীরাও তাঁর সুন্দর চরিত্র ও মানবিক গুণাবলির প্রশংসা করেছেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন তোমাদের মধ্যে সেই হবে আমার অতি প্রিয় ও সর্বাপেক্ষা নিকটে উপবেশনকারী, তোমাদের মধ্যে যে সুন্দরতম চরিত্রের অধিকারী। আর সেই হবে আমার কাছে অপ্রিয় ও সবচেয়ে দূরে অবস্থানকারী, যে বেশি বেশি ও বড় বড় কথার মাধ্যমে অহংকার করে। ’

শান্তিপূর্ণ সমাজ ও দেশ গঠনে ভালো মানুষের প্রয়োজন। সুন্দর চরিত্রের অধিকারী ভালো মানুষ সমাজ থেকে অশান্তি দূর করতে পারেন। পৃথিবীতে তারা গড়ে তুলতে পারেন সৌহার্দ্যের পরিবেশ। যে কারণে রসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মানুষের সুন্দর চরিত্রের প্রতি তার পছন্দের কথা বলেছেন।

উপরোক্ত হাদিসে প্রমাণিত হয়, অহংকারী ও বাক্যবাগীশরা আমাদের সমাজের মানুষের কাছে প্রিয় নয়, তেমনি আল্লাহর রসুলের কাছেও অপ্রিয়। নিজেকে রসুল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রিয় উম্মত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে অহংকার ও বড় বড় কথা বলার কুঅভ্যাস ছাড়তে হবে।

শুধু অহংকারী হওয়া থেকে দূরে থাকা নয়, অপচয় ও ভোগ-বিলাসিতা থেকেও দূরে থাকতে হবে। ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি সোনা অথবা রুপার পাত্রে বা সোনা-রুপামিশ্রিত পাত্রে পান করে, সে নিজের পেটে জাহান্নামের আগুন ঢালে। (দারু কুতনি থেকে মিশকাতে)।

উপরোক্ত হাদিসে স্পষ্ট করা হয়েছে, সহজ-সরল জীবনযাপনই মুমিনদের কাম্য হওয়া উচিত। অপচয় ও ভোগ-বিলাসের মাধ্যমে জাহান্নামকে আমন্ত্রণ করা কারোরই উচিত নয়। আল কোরআনের সূরা আশ শামসের ৯ ও ১০ নম্বর আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘সে-ই সফলকাম হবে যে নিজেকে পবিত্র করবে এবং সে-ই ব্যর্থ হবে যে নিজেকে কলুষাচ্ছন্ন করবে। ’ উপরোক্ত দুটি আয়াতে স্পষ্ট করা হয়েছে আল্লাহর কৃপা লাভ করতে হলে নিজেকে পবিত্র করতে হবে, সব ধরনের কলুষতামুক্ত হতে হবে। নিজের আত্মাকে অন্ধকার থেকে বের করে আনতে হবে। আল্লাহর কাছে নিঃশর্তভাবে আত্মসমর্পণ করতে হবে। আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে নিজেকে সংশোধন করতে হবে।

আমরা যদি নিজেদের জীবনকে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জীবনাদর্শের আলোকে আলোকিত করতে চাই, যদি আমাদের ব্যক্তি, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে শান্তি চাই তবে আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে নিজেদের শুদ্ধ করতে হবে। নিজেদের বিবেক ও বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে কোনটি ভালো কোনটি মন্দ তা উপলব্ধি করতে হবে। আল্লাহ আমাদের সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের পথের অনুগামী হওয়ার, তাঁর প্রতি অনুগতশীল হওয়ার তৌফিক দান করুন।

30
ছোট্ট পদক্ষেপে হয়ে উঠুন একজন দারুণ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন পুরুষ!

ব্যক্তিত্ব কেন এবং কী কারণে দরকারা? এই প্রশ্নে সকলেই উত্তর দেবেন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ বেশি আকর্ষণীয়। হ্যাঁ, অবশ্যই। একজন ভালো ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ শুধুমাত্র আকর্ষণীয় নন, এর পাশাপাশি অনুকরণীয়। কিন্তু সকলে তো একই রকম ব্যক্তিত্ব নিয়ে পৃথিবীতে আসেন না। কিংবা সকলের মনমানসিকতাও এক থাকে না। তাহলে ব্যক্তিত্ব প্রকাশ পায় কিভাবে? ব্যক্তিত্ব প্রকাশ পায় আচার- আচরণে, ভাষার প্রয়োগে, অন্য একটি মানুষের সাথে ব্যবহার।

যে কোনো পুরুষ চান তার ব্যক্তিত্ব আরও আকর্ষণীয় হোক, আরও সুন্দর হোক। কিন্তু এর জন্য কাজ করতে হবে পুরুষদের নিজেদেরই। নিজেদের কিছু ভ্রান্তিগুলো কাটিয়ে উঠতে পারলেই একজন পুরুষমানুষ হিসেবে আপনার ব্যক্তিত্ব আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

পুরুষের পরিচয় তার মার্জিত আচরণে

আচার আচরণ অনেক কিছু প্রকাশ করার ক্ষমতা রাখে। একজন পুরুষ মানুষের ব্যক্তিত্ব প্রকাশ করে তার আচরণ। মার্জিত আচরণ যে কারো কাছে আকর্ষণীয়। সমাজে নিজের চাইতে নিচু অবস্থানের মানুষ বলে কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করা ব্যক্তিত্বসম্পন্ন পুরুষের লক্ষণ নয়। একজন মানুষ তিনি যেই হোক না কেন, তিনি যাই করুন না কেন একজন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন পুরুষ হলে তার প্রতি আপনার আচরণ মার্জিত হবে।

সম্মান দিতে শিখুন সকলকে

মানুষকে তার প্রাপ্য সম্মান দেয়ার মানে এই নয় যে আপনি ছোট হয়ে যাচ্ছেন। একজন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন পুরুষ মানুষ হিসেবে সকলকে সম্মান দিতে শিখুন। নিজের আশেপাশের সকলকে সম্মান করুন একজন মানুষ হিসাবে। রিক্সাচালক, রেস্টুরেন্টে কর্মরত বয় বা ওয়েটার এরা সবাই মানুষ। শুধুমাত্র নিজের প্রেমিকার সামনে ভালো সেজে নয়, মন থেকে সব সময় সর্বশ্রেণীর মানুষকে সম্মান দেয়া একজন ভালো ব্যক্তিত্বসম্পন্ন পুরুষের লক্ষণ। একই সাথে কেবল প্রেমিকাকে নয়, সম্মান দিন পৃথিবীর সকল নারীকে।

সম্পর্কে থাকুন দায়িত্ববান

পুরুষের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে খেলা করার প্রবনতা একটু বেশিই দেখা যায়। যে ছেলে সম্পর্ক নিয়ে বেশি খেলা করেন, তারা নিজের বন্ধুমহলে হিরো হিসেবে থাকেন। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে আপনি মোটেও নায়কোচিত কেউ নন। আবার সম্পর্কের ব্যাপারে দায়িত্ববান থাকলে নিজের বন্ধুমহলে অনেকেই খোঁচা খেয়ে থাকেন। কিন্তু আপনি নিজেকে একজন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন পুরুষ মানুষ হিসেবে দেখতে চাইলে কারো কথায় কান দেবেন না। নিজের মনোমানসিকতাকে কাজে লাগান। মনে রাখবেন যে পুরুষ অনেক সম্পর্ক নিয়ে খেলেন তিনি নন বরং যে পুরুষ নিষ্ঠার সাথে ১ টি সম্পর্কে দায়িত্ববান থাকেন তিনিই ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ।

বর্জন করুন অশালীন ভাষা

পুরুষের জন্য জনসম্মুখে অশালীন ভাষা ব্যবহার করা কোনো ঘটনাই নয়। অনেক পুরুষ মানুষকে যে কোনো জায়গায়, যে কারো সামনে কিংবা যে কোনো পরিস্থিতিতে অশালীন ভাষা ব্যবহার করতে দেখা যায় যা একেবারেই উচিৎ নয়। একজন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন পুরুষ হিসেবে এই সকল অশালীন ভাষা বর্জন করুন। হতে পারে আপনার সাথে একজনের অনেক বড় ঝগড়া হয়েছে কিন্তু তা বলে আপনি তার সাথে অকথ্য ভাষায় কথা বলবেন তা নয়। ব্যক্তিত্বসম্পন্ন পুরুষ হতে হলে বর্জন করুন অশালীন ভাষা।

নিজেকে গড়ে তুলুন কর্মক্ষেত্রে সফল একজন

একজন সফল মানুষকে বরাবরই ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ হিসেবে ধরে নেয়া হয়। আসল কথা হলো আপনি যখন নিজের কর্মক্ষেত্রে বেশ সফলতার সাথে কাজ করে নিজেকে সফল হিসেবে পাবেন, তখন আপনার আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে যাবে। আর আত্মবিশ্বাসের সাথে ব্যক্তিত্বের সম্পর্ক বেশ পুরোনো। আত্মবিশ্বাস একজন মানুষকে ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ হতে সাহায্য করে।

পোশাক পরুন নিজের জীবনের সাথে মিলিয়ে

পোশাকের মাধ্যমে আপনি নিজেকে অনেক ভালো ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করতে পারবেন। শুধুমাত্র নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে নিজের জীবনের সাথে তাল মিলিয়ে পড়ুন পোশাক। আপনার নিজের ব্যক্তিত্বের সাথে যায় এবং আপনার পারিপার্শ্বিক সব কিছুর সাথে মিল রেখে পোশাকের মাধ্যমেই নিজেকে উপস্থাপন করুন একজন ব্যক্তিত্বপূর্ণ পুরুষ হিসেবে।

কারো অন্ধ অনুকরণ করবেন না

আপনার ব্যক্তিত্ব, আচার আচরণ, সামাজিক অবস্থান অন্য একজন মানুষের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা ধরণের। আপনি অন্য একজনকে অনুসরণ করে কখনোই নিজেকে একজন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ হিসেবে উপস্থাপন করতে পারবেন না। অন্য একজনকে অন্ধভাবে অনুকরণ করে আপনি নিজেকে একজন হাসির পাত্র হিসেবেও পরিচিতি দিতে পারেন। নিজের বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগান। ভালো এবং খারাপের মধ্যে পার্থক্য করতে শিখুন। নিজেকে নিজের মত করেি উপস্থাপন করুন। এতেই আপনি হয়ে উঠবেন একজন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন পুরুষ।

Pages: 1 [2] 3 4 ... 44