Daffodil International University
Faculties and Departments => Faculty Sections => Departments => Topic started by: SabrinaRahman on April 24, 2017, 01:24:41 PM
-
পায়ে হেঁটে ৬৪ জেলা!!
দিনাজপুরের নাসিম তালুকদার। রোভার স্কাউট। স্বপ্ন দেখেন শিশুদের জন্য কিছু করার। তাঁর এই স্বপ্নই উৎসাহ জোগাল পথে নেমে পড়তে। প্রয়োজনীয় পোশাক, স্লিপিং ব্যাগ, প্রাথমিক চিকিৎসার সামগ্রী মিলে ব্যাগের ওজন প্রায় আট কেজি, এই বোঝা কাঁধে নিয়ে একদিন বেরিয়ে পড়লেন দেশ ভ্রমণে। তাঁর এই যাত্রায় প্রধান অবলম্বন ‘১১ নম্বর’ অর্থাৎ নাসিমের দুই পা!
গত বছরের ২২ অক্টোবর দিনাজপুর শহর থেকে হাঁটা শুরু করেছিলেন নাসিম তালুকদার। প্রায় সাড়ে তিন মাস পর, ৭ ফেব্রুয়ারি দেশের ৬৪ জেলা ঘুরে তিনি আবার পা ফেলেন নিজ জেলায়। কেমন ছিল তাঁর দীর্ঘযাত্রা? ১৩ ফেব্রুয়ারি মুঠোফোনে সেসব গল্পই শোনালেন নাসিম।
প্রস্তুতির দিনগুলো
‘পথে নামলেই কি পথ চলা যায়?’ সুন্দর প্রশ্নটা নাসিমের। তিনিই আবার বলেন, ‘হেঁটে হেঁটে না হয় পথ মাড়ালেন। কিন্তু খাবার বা রাতযাপনের জন্যও তো পয়সা প্রয়োজন।’ এই অর্থ নাসিমের ছিল না।
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার রাজারামপুর গ্রামে নাসিমদের বাড়ি। হারুনুর রশিদ তালুকদার ও নাজমা খানমের তিন সন্তানের মধ্যে বড় তিনি। বড় বলে দায়িত্বটাও একটু বেশি। বাবা কৃষিকাজ করেন, মা গৃহিণী। ছোটবেলা থেকে অনটনের সংসারে বড় হয়েছেন। ছোট দুই বোনের পড়াশোনা আর পরিবারে একটু সচ্ছলতা ফেরাতে ২০১৪ সালে চাকরি নেন। তখন তিনি বীরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজে স্নাতক পড়ছিলেন। বীরগঞ্জের অটো রাইস মিলের প্রশাসনিক পদে চাকরি করতে গিয়ে ছেদ পড়ে পড়াশোনার।
কিন্তু স্বপ্নপূরণের চেষ্টাটা চালিয়ে যান নাসিম। প্রতি মাসের বেতন থেকে সামান্য অর্থ রেখে দিতেন দেশ ভ্রমণের জন্য। অর্থ জোগাড় করতেই বছর পার হয় নাসিমের।
অর্থ তো জোগাড় হলো, এরপর? নাসিম বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আলম ভাইয়ের সঙ্গে কথা বললাম। তিনিই আমার পায়ে হাঁটার মানচিত্রসহ নানা নির্দেশনা দিলেন।’ এই জাহাঙ্গীর আলম নিজেও টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত হেঁটেছেন। তাঁর নির্দেশনা মেনেই পা বাড়ান পথে।
দিনাজপুর থেকেই হাঁটা শুরু করেছিলেন নাসিম তালুকদার
দিনাজপুর থেকেই হাঁটা শুরু করেছিলেন নাসিম তালুকদার
শোনো, শোনো বন্ধুগণ
নাসিম এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাওয়ার পথে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে থামতেন। ‘আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ’; ‘আর নয় শিশুশ্রম, এবার চাই শিক্ষা’; ‘মাদককে না বলি, ইভ টিজিং বন্ধ করি’ এমন স্লোগানে তিনি সচেতন করতেন স্কুলের শিক্ষার্থীদের। নাসিম বলেন, ‘আমার উদ্দেশ্যই ছিল শিশুদের নিয়ে কিছু করার। তাই তাদের পড়াশোনার উপকারিতা ও সামাজিক নানা অসংগতির কথা তুলে ধরেছি।’
পাশে দাঁড়াল চলবে ডটকম
দিনাজপুর থেকে গাইবান্ধা। গাইবান্ধা থেকে বগুড়া। এভাবে একে একে ৩৯টি জেলা হেঁটে পা রেখেছেন ফেনীতে। দীর্ঘ পথ পেরিয়ে স্বাস্থ্য যতটা না খারাপ হয়েছে, তার চেয়ে খারাপ দশা পকেটের! পকেট হাতিয়ে দেখেন, অর্থ যা আছে তা টেনেটুনে কক্সবাজার পর্যন্ত যাওয়া যাবে। কিন্তু এরপর? দুশ্চিন্তা ভর করে মাথায়। নাসিম বলেন, ‘চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে আমার অর্থসংকট দেখা দেয়। আমি চিন্তা করেছিলাম, টেকনাফে গিয়ে আমার ভ্রমণের সমাপ্তি করব।’
নিজের অর্থস্বপ্ন ও অর্থসংকটের কথা লিখেই স্ট্যাটাস দেন ফেসবুকে। নাসিমের আকুতিতে সাড়া মেলে। ‘চলবে ডটকম’ নামে একটি অনলাইন প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসে তাঁর স্বপ্নপূরণে। দিশেহারা নাসিম স্বস্তি খুঁজে পান। আবার পুরোদমে শুরু করেন পথচলা।
ছিনতাইকারীর কবলে
কবে? তখন মধ্য দুপুর। চট্টগ্রামের লোহাগাড়া হয়ে পা বাড়িয়েছেন কক্সবাজারের চকরিয়ায়। পিচঢালা পথে একা হাঁটছেন নাসিম। হাঁটতে হাঁটতে একসময় খেয়াল করলেন, পেছনে তিন যুবক তাঁকে অনুসরণ করছেন। বেশ কিছুটা দূরে। আরও খানিকটা পথ যাওয়ার পর নাসিম বুঝলেন, অবস্থা বেগতিক। নির্জন রাস্তা বলে কোথাও আশ্রয় নেওয়ার উপায় নেই। সাত-পাঁচ না ভেবে দিলেন এক ভোঁ-দৌড়। বুঝতে পারলেন, পিছে আসছেন তিনজন। ২০ মিনিট দৌড়ে পৌঁছে গেলেন স্থানীয় একটি বাজারে। পেছনে তাকিয়ে দেখেন কেউ নেই, হাঁপ ছেড়ে বাঁচলেন নাসিম।
পটিয়ার স্কাউট ট্রেনিং সেন্টারে একটু সময়!
না খেয়ে দিনরাত
দিনের বেলায় ছিনতাইকারীর ধাওয়া খেয়ে অবশেষে পৌঁছালেন চকরিয়ায়। তখন দুপুর গড়িয়ে বিকেল। খিদে লেগেছে প্রচণ্ড। কিন্তু পকেটে টাকা নেই। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অর্থ আছে কিন্তু নতুন হিসাব খোলা হয়েছে বলে সেদিন টাকা তোলা যাবে না। তাই পানি পান করেই পার করতে হলো একটি রাত।
পাহাড়ে দুর্ভোগ
পার্বত্য জেলায় পা রেখেই বুঝেছেন পথ বড় কঠিন! মাইলের পর মাইল পথ হাঁটছেন, হয়তো কোনো মানুষের সঙ্গেই কথা হচ্ছে না। বান্দরবান, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির জনশূন্য সে পথও হাঁটার জন্য ছিল বেশ কষ্টের। তবু মনের জোরে এগিয়ে গেছেন নাসিম।
পাশে ছিল রোভাররা
স্কুলজীবন থেকেই স্কাউটিংয়ের সঙ্গে যুক্ত নাসিম। দীর্ঘদিন রোভার স্কাউটের সদস্য থাকায় পরিচয় হয়েছে সারা দেশের অনেক রোভারের সঙ্গে। তাঁর এই যাত্রায় পাশে দাঁড়িয়েছেন রোভার স্কাউটের সদস্যরাও। নাসিম বলেন, ‘১৫টি বাদে বাকি সব জেলায় আমি রোভারদের সহায়তা পেয়েছি। রাতে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থাও তাঁরা করতেন। রোভার স্কাউটে যুক্ত না থাকলে আমি হয়তো পা বাড়াতে সাহসই পেতাম না।’
০ থেকে ৪০০০
নাসিম যাত্রা শুরু করছিলেন দিনাজপুর ০ কিলোমিটার থেকে। আর তিনি আবার যেদিন দিনাজপুর আসেন, তত দিনে কত কিলোমিটার পথ মাড়িয়েছেন? সে হিসাব দিচ্ছিলেন নাসিম তালুকদার, ‘আমি এক দিনে সর্বোচ্চ ৫৭ কিলোমিটার পথ হেঁটেছি। আর সর্বনিম্ন ছিল ১২ কিলোমিটার। পুরো যাত্রাপথে ৪০০০ কিলোমিটারের মতো হবে।’ প্রতিদিনই সকাল ছয়টায় হাঁটা শুরু করতেন নাসিম। শেষ হতো বিকেল তিনটা-চারটা নাগাদ। গড়ে প্রতিদিন হেঁটেছেন ৩৫-৩৬ কিলোমিটার পথ।
ফিরবেন ক্লাসে
পড়াশোনা ছাড়ার বিষয়টি নাসিমকে সব সময় পীড়া দেয়। শুরু করবেন করবেন করেও এত দিন তা করা হয়নি। নাসিম বলেন, ‘কলেজে এখনো আমার ছাত্রত্ব রয়েছে। পরীক্ষায় অংশ নেওয়া হয়নি। চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। এবার পড়াশোনাটা শেষ করতে চাই।’
-
Thanks for sharing...
-
bizzare
-
Impressive..............
-
Wow.............
Great Achievement
-
Great!!!!!!
-
Thanks for sharing :)
-
good
-
good
-
:o :o
-
Thanks for sharing
-
Energetic man
-
Dedication made it possible. Thanks
-
WoW
-
Its a great achievement.
-
wow... :)