Daffodil International University

Faculty of Humanities and Social Science => English => Topic started by: Al Mahmud Rumman on September 19, 2018, 12:15:41 PM

Title: Death (A short story)
Post by: Al Mahmud Rumman on September 19, 2018, 12:15:41 PM
মৃত্যু
রুম্মান মাহমুদ



      একটা প্রায়-অন্ধকার ঘরে আটকে রেখেছে ওরা। জানলা নেই, একটা ঘুলঘুলিতে মাঝে মাঝে চড়ুইরা আসা-যাওয়া করে। মাকড়সার জাল চাদরের মতো ছড়িয়ে আছে সারা ছাদ জুড়ে। আটকে পড়া পোকামাকড় আছে বহু। আমরাও ছাব্বিশ জন আছি। গত শনিবারও বত্রিশ জন ছিলাম। প্রতি পাঁচ দিন পরপর অস্ত্র হাতে ওরা আসে। দুইজনকে বেছে নেয় ইচ্ছামতো। তিনটা ধরণের মৃত্যু আছে অপশনে, যেকোন এক উপায়ে মরতে হবে। গিলেটিনে, অথবা ফাঁসির দড়িতে সাধারণত কেউ মরতে চায় না। তৃতীয় পন্থা, অর্থাৎ ছুটে পালাতে গিয়ে এক থেকে দশ অব্দি গোনার পর বুলেটের মৃত্যুটাই বেছে নেয় সবাই। এখন পর্যন্ত কেউ বাঁচেনি এই নিয়মে। তবু দৌড়ানোর চান্স সবাই নিতে চায়। আমরা যারা রুমের ভেতর থাকি, প্রতিবার গুলির শব্দে কিছুটা নিশ্চিন্ত হই। যাক, জীবনের মেয়াদ আরও কিছুদিন বাড়লো। আগে কেউ কেউ কাঁদতো। এখন অভ্যাস হয়ে গেছে।
 
        আজকেও দু'জন বেছে নিলো ওরা। বললো নতুন চালানে আরও বিশজন আসছে। আমরা সহজে কমছি না। আর লটারিতে মানুষের অপশন বাড়লে বেঁচে থাকার মেয়াদ বাড়ারও সুযোগ থাকে। আমার পাশেই গুটিসুটি হয়ে বসে থাকা ছেলেটাকে বেছে নিলো ওরা। অল্প বয়স, হাঁপানির টান আছে খুব, কপালের এক পাশে সেলাইয়ের দাগ আছে একটা। গরুর তাড়া খেয়ে ছোটবেলায় পুকুর ঘাটে পড়ে গিয়েছিল সে। সিরাজগঞ্জে মামার পানের আড়তে সে বসতো। সেখান থেকেই এক রাতে তাকে তুলে আনে ওরা। গত দশজনের মধ্যে একমাত্র ও-ই কাঁদলো হাউমাউ করে। ওরা আমোদ পেলো খুব। অপশনে বেছে নিলো দড়ি। জানে দৌড়ে পারবে না তার দুর্বল ফুসফুস। এই প্রথম, কোনোরকম গুলির শব্দ ছাড়াই মরে গেলো কেউ। আরেকজনের বেছে নেওয়া গুলির শব্দে অভ্যাসবশত কেঁপে উঠলাম আমি। তিন নাম্বার গুলিতে মরেছে। আজ রাতে ওদের কথা ভাববো।

       এখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা মানেই মৃত্যুকে এগিয়ে আনা। দুইজন ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল মুহুর্তের মধ্যে। একজন ঘুলঘুলিতে উঁকি দিতে গিয়ে চোখেই গুলি খেয়েছিল। তাই চেষ্টা করিনি কখনো। স্বাধীন থাকার দিনগুলার কথা মনে পড়ে না তেমন। প্রস্রাবের তীব্র গন্ধে আনন্দের সমস্ত স্মৃতি ভেসে গেছে। নোংরা প্লেটে লাল আটার রুটি আর মোটা চালের ভাত নিয়ে কেউ অভিযোগ করে না। প্রতিটা মৃত্যুর রাতে একত্রে বসে গান করি আমরা জীবিতরা। যারা মরে গেছে তাদের কথা বলি। তাদের হাসি কান্নার শব্দ ঘরটাতে ফিরে আসে বারবার। মতিন নামের একটা ছেলে আছে। ভালো গান গায়। একদিন রাতে ঘুমের মধ্যে হেসে উঠলো শব্দ করে। সেদিন সারারাত আর ঘুম এলো না আমার। হত্যাকারিদের অবয়ব ভেসে উঠলো চোখে। ওদের মুখ ঢাকা থাকে কালো কাপড়ে, আমাদের সাথে কথাবার্তা বলে কেবল একজনই। অল্পবয়সী কন্ঠ, নিখুঁত উচ্চারণ। একমাত্র তার হাতেই কোন অস্ত্র থাকে না। মনে হয় এই মৃত্যু খেলায় অন্তত একজন আছে, নাম লিখেছে অনিচ্ছায়।

         আগে মৃত্যু নিয়ে ফ্যান্টাসি ছিল। এখন প্রতিবার অল্পের জন্য বেঁচে যাওয়া পর বেঁচে থাকাটাই ফ্যান্টাসি মনে হয়। আম্মা বেঁচে আছেন কিনা জানি না। আব্বা মারা যাওয়ার পর আমিই ছিলাম অন্ধের লাঠি। প্রথম প্রথম চাকরি নিয়ে শহর ছাড়ার পর প্রতিদিন অন্তত একশবার ফোন দিতাম আম্মাকে। কিভাবে রান্না করতে হয়, কাপড় কাঁচতে হয়, মাছ চিনতে হয় -এইসব জিজ্ঞাসা করতাম। কৌতুহল মেটানোর তো একটাই মানুষ পৃথিবীতে। প্রেমটেম, ভাইবোন কিছু নেই আমার। আম্মাই ফোন দিতেন ঔষুধের কথা মনে করাতে, রাতের ভাতটা ঠিক সময়ে খেতে। বিরক্ত লাগত এইসব ফোন পেয়ে। আম্মাকে বুঝতে দিতাম না। ভেবেছিলাম শহরে এনে আমার কাছেই রাখবো। মামাদের ঘ্যানঘ্যান থামবে। এখন, এই আবছা অন্ধকারে প্রায়ই আম্মাকে চিঠি লিখব ভাবি। তেমন কিছু না, স্রেফ জিজ্ঞাসা করবো, কিভাবে মরলে আমার জন্য ভালো হয়।
Title: Re: Death (A short story)
Post by: Rafiz Uddin on September 24, 2018, 12:41:16 PM
There is poetic sense in the story.
Title: Re: Death (A short story)
Post by: Al Mahmud Rumman on October 07, 2018, 03:04:14 PM
Thank you sir!
Title: Re: Death (A short story)
Post by: masud.ged on October 17, 2018, 03:07:33 PM
Nice one, Sir.

Regards
Title: Re: Death (A short story)
Post by: Al Mahmud Rumman on November 12, 2018, 05:03:08 PM
Thank you sir! :)