213
« on: August 10, 2014, 04:58:58 PM »
যারা আম্রিকা বা বিদেশ যাচ্ছেন
১. গুগলে সার্চ দিয়ে ওই শহরের প্রতিমাসের গড় তাপমাত্রা দেখে নিন। সে হিসেবে শীতের বা গরমের কাপড় নিয়ে নিন
২. পর্যাপ্ত পরিমান টি শার্ট আর জিন্স আনুন। কমপক্ষে ৪ জোড়া। বাংলাদেশে অনেক সস্তা। প্রথম কিছু দিন ডলারকে টাকায় কনভার্ট করে কিছুই কিনতে পারবেন না। একটা ফরমাল ড্রেস আনুন (কোট, ড্রেস প্যান্ট, টাই, ফরমাল সু )
৩. আপনি যদি চশমা বা লেন্স ব্যবহার করেন। মাস্ট তিন জোড়া এক্সট্রা আনবেন। এখানে খরচ বেশী পড়বে (যদিও আমি নিজে কোনদিন কিনিনি)
Extra: সস্তায় ৭-২০ ডলারে চশমা কিনতে পারবেন এইখানে:http://www.zennioptical.com/ (লিংক দিয়েছেন: রাগিব ভাই )
৪. বই এখানে অনেক দামি। অনেক সময় লাইব্রেরিতে টেক্সট বই পাওয়া যায় না। পরিচিত কেউ যদি আপনার ডিপার্টমেন্ট এ পড়ে, তাদের কাছ থেকে জেনে সস্তা বই নীলক্ষেত থেকে কিনে আনতে পারেন
৫. অবশ্যই মশলা (গরুর, মুরগীর, মাছের, জিরা, হলুদ, মরিচ, ইত্যাদি ) নিয়ে আনবেন। অনেক অনেক, কমপক্ষে ৬ মাস রান্না করতে পারবেন এমন পরিমান। ১ কেজি মাংসের মসলা এর দাম ২৪০ টাকা। তাও বড় শহর ছাড়া পাওয়া যায় না।
৬. যদি সম্ভব হয়। ড্রাইভিং শিখে লাইসেন্স (ইন্টারন্যাশনাল ইন ইংলিশ) নিয়ে আসবেন। এইখানে ড্রাইভিং শিখে (আপনার গাড়ি থাকবে না), লাইসেন্স নেওয়াতে ঝক্কি আছে।
৭. প্রিয়জনের কিছু ছবি প্রিন্ট আউট করে নিয়ে আসবেন অবশ্যই। যতই ফেসবুকে বা ড্রপবক্সে থাকুক না কেনো।
৮. ষ্টেশনারীর দামও বেশি। কিছু নোটবুক, পেপার পেন্সিল নিয়ে আসতে পারেন। খুব বেশি আনার দরকার নাই। কয়েকদিন পর ডিপার্টমেন্ট এর ফ্রি প্রিন্টারের কাগজ চুরি করা শিখে যাবেন।
৯. নিজেকেই নিজে জিগ্যেস করুন। আপনার ঘুম থেকে উঠার পর, ঘুমানোর আগ পর্যন্ত কি কি লাগে। সেই সব এই দেশে যদি না পাওয়া যায়, তাইলে সেটা নিয়ে আসতে হবে। এখন আপনার যদি মনে হয়, বাংলাদেশী ট্রাডিশোনাল টয়লেট তো এখানে পাওয়া যাবে না। তাইলে আমার কিছু বলার নাই।
১০. এক জোড়া হাফ প্যান্ট, দুইটা ত্রি কোয়াটার, স্যান্ডল, কেডস, মোজা, ৩ জোড়া আন্ডার গার্মেন্ট ইত্যাদি। যদি লুঙ্গি, গামছা লাগে, অবশ্যি আনবেন ৪টি করে। পাঞ্জাবি পায়জামা কমপক্ষে ৩টি। একটা দেশের পতাকাও আনবেন, ছোট হলেও। এবং ৩ টি বাংলাদেশী টি-শার্ট (যেগুলা বাংলাদেশের কথা বলে)
১১. কলেজে যাওয়ার ব্যাগ (ব্যাক প্যাক) দুইটা মাস্ট। পার্স (মেয়েদের) এখানে দাম বেশি। চিরুনি এর দাম বেশি বলে মনে হয়। গত তের বছরে আমি চিরুনি ব্যবহার করিনি, তাই জানিনা দাম কেমন।
১২. বডি লোশন, শ্যাম্পু, টুথপেস্ট, সেভিং ক্রিম, রেজার, হেয়ার জেল, আফটার শেভ আনার দরকার নাই। এখানে সস্তা।
১৩. ভালো লাগেজ কিনবেন। প্লেনে উঠানোর সময় কিন্তু ওরা আছাড় দিবে। তাই ভেঙ্গে গেলে আবার এইদেশে কিনতে গেলে (দেশে ফিরার টাইমে) অনেক দাম পড়বে। দুইটা বড় একটা ছোট কিনবেন।
১৪. ল্যাপটপ সস্তা। ফোন সস্তা। তাই দেশের থেকে আনার দক্কার নাই। ফকিরা একটা ফোন রাখবেন যাতে প্লেনে উঠে পাশে কে বসছে সেটা গার্লফ্রেন্ডকে বলতে পারেন। ক্ষেত্রবিশেষে সত্যি কথা চেপে যেতে পারেন। তবে সফটওয়্যার অনেক দামি। BCS কম্পুটার সিটিতে একটা চক্কর মারতে পারেন। পাইরেটেড কিছু ব্যবহার করতে চাইলে নিজের রিস্কে করেন।
১৫. সমসময় আপনি ইনফরমাল জিন্স, টি শার্ট পড়বেন। তাই বেশি ফর্মাল শার্ট আনার দরকার নাই। তবে কয়েকটা আনতে হবে। চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার জন্য।
১৬. আপনি সর্বোচ্চ ১০হাজার ডলার সঙ্গে করে আনতে পারেন। সেগুলা সাবধানে রাখবেন। কখনই মূল লাগেজে দিবেন না। বড় লাগেজ হারিয়ে যেতে পারে।
১৭. কিছু কয়েন সাথে রাখবেন। জরুরি ফোন দেয়ার জন্য। এয়ারপোর্ট এ কয়েন দিয়ে ফোনবুথ থাকে। কাউকে বললেই দেখিয়ে দিবে। আর কোনো কারণে আপনার ফ্লাইট ডিলে হলে অবশ্যই যে আপনাকে পিক আপ করতে আসবে তাকে জানাতে হবে। অনেক এয়ারপোর্ট এ ফ্রি ওয়াই ফাই থাকে। কয়েকটা ট্রাই করলে একটা পেয়েও যেতে পারেন।
১৮. ভার্সিটি এর ইন্টারন্যাশনাল অফিসের ফোন নম্বর অবশ্যই রাখবেন। জরুরি কিছু হলে যাতে যোগাযোগ করতে পারবেন।
১৯. পাসপোর্ট, I-20, জরুরি কাগজ পত্র সর্বদা নিজের সঙ্গে রাখবেন। কোথাও রেখে বাথরুমে হলেও যাবেন না। একবার ব্যাগ থেকে বের করলে
সঙ্গে সঙ্গে ভিতরে ঢুকিয়ে ফেলবেন। খুবই সাবধানে রাখবেন। এইগুলা ছাড়া ঢুকতে পারবেন না। আর ইমিগ্রেসন অফিসারকে লম্বা উত্তর দেবার দরকার নাই। শুধু যা জিগ্যেস করবে তার উত্তর দিবেন।
২০. তরল কোনো খাবার লাগেজে দিবেন না। তবে মায়ের হাতের আচার পলিথিনে ভালো করে প্যাক করে আনবেন। যাতে অন্যকিছুর সাথে মিশে না যায়।
২১. বউ বাচ্চা সঙ্গে নিয়ে আসতে পারেন। তবে বাচ্চা সঙ্গে থাকলে তাকে গাড়িতে স্পেশাল সিটে বসাতে হবে। সেকথা, আপনাকে যে পিক করতে আসবে তাকে আগেই বলে দিতে হবে। প্রথম প্রথম বউ বাচ্চার একটু কষ্ট হবে, আপনার বাসা ঠিক করা নাও থাকতে পারে, ফার্নিচার থাকবে না। বেবী ফুড এইসব। তাই অনেকে ১মাস বা ১ সেমিস্টার পরে বউ বাচ্চা আনা। সেক্ষেত্রে বাচ্চ্চা এবং লাগেজ নিয়ে এয়ারপোর্ট এ বউয়ের অনেক কষ্ট হয়। এখন সেটা আপনার বিবেচনা।
২১+. কষ্ট করে, মশারী বা কয়েল আনা লাগবে না। যদি সারাজীবন তুলার বালিশ বেশি নাক ঢেকে ঘুমিয়ে থাকলে এখানকার ফোমের বালিশে প্রথম কয়েকদিন সমস্যা হতে পারে। চিন্তার কোনো কারণ নাই, দুই দিন পরে ঠিক হয়ে যাবে। বরং দুই বছর পরে বাংলাদেশে গেলে, তুলার বালিশ শক্ত মনে হবে। অবশ্য বাংলাদেশে গেলে আপনি অনেক কিছুতেই নাক সিটকাবেন, কারণ, "দুই দিনের বৈরাগী, ভাতেরে কয় অন্ন"।