Daffodil International University

Faculty of Engineering => EEE => Research & Publication => Topic started by: abdussatter on October 04, 2018, 11:26:54 AM

Title: থিওরি অব এভরিথিং
Post by: abdussatter on October 04, 2018, 11:26:54 AM
পপুলার কালচারে একটা কথা প্রচলিত আছে যে ‘স্ট্রিং থিওরি ইজ দ্য থিওরি অব এভরিথিং’। অর্থাৎ সহজ ভাষায় বলতে হয়, স্ট্রিং তত্ত্ব হচ্ছে সবকিছুর তত্ত্ব। তবে এই বিবৃতি আমার সব সময় বিভ্রান্তিকর বলে মনে হয়। কেন? সেটা ব্যাখ্যা করা যাক।

আমার পাঁচ বছর বয়সী মেয়ে ডাইনোসরের মহাভক্ত। একদিন সে আমার কাছে এল ডাইনোসর-বিষয়ক একটা বই হাতে নিয়ে। সেখান থেকে সে আমাকে একটা বিশেষ ডাইনোসরের ছবি দেখাল, যার নাকে একটা গোলাপি রঙের শুণ্ড (Snout) আছে। সে আমার কাছে জানতে চাইল, এটা কেন আছে? পাঠক নিশ্চয় অনুমান করতে পারছেন আমার থিওরি অব এভরিথিংয়ের জ্ঞান সেদিন তেমন কোনো কাজে আসেনি। তবে আমি বাচ্চাদের সঙ্গে যতটা সম্ভব সৎ থাকার চেষ্টা করি। তাই আমি ওকে কোনো মনগড়া কাল্পনিক উত্তর দিইনি। শুধু বলেছিলাম, আমি জানি না। সে এরপর চলে গেল তার মায়ের কাছে এবং প্রশ্নের বিভিন্ন ধরনের উত্তর পেল। তবে কোনো উত্তরই তার পছন্দ হলো না। শেষমেশ সে নিজে ভেবে একটা উত্তর দাঁড় করাল। ‘এই প্রজাতির ডাইনোসররা ফুল খুব পছন্দ করে। যেহেতু বেশির ভাগ ফুলই গোলাপি রঙের হয়, তাই এই ডাইনোসরদের গোলাপি রঙের শুণ্ড আছে।’

এই যুক্তি আমার মেয়ের নিজের কাছেই খুব যুক্তিসংগত বলে মনে হলো। কাজেই পাঠক নিশ্চয় অনুধাবন করতে পারছেন, স্ট্রিং তত্ত্বকে কেন আমি থিওরি অব এভরিথিং বলতে চাই না।


আসলে এই বিভ্রান্তি সম্ভবত তৈরি হয়েছে আইনস্টাইনের শেষ দিকের গবেষণাকে কেন্দ্র করে। আইনস্টাইন চেষ্টা করেছিলেন পদার্থবিজ্ঞানের একটা সম্মিলিত তত্ত্ব দাঁড় করাতে। প্রশ্ন হলো, এই সম্মিলিত তত্ত্ব বলতে ঠিক কী বোঝায়? সহজ ভাষায় সম্মিলিত তত্ত্ব হলো সেই তত্ত্ব, যা অন্য অনেক খণ্ড খণ্ড তত্ত্ব বা ধারণাকে একটি তত্ত্বে একীভূত করতে পারে। পদার্থবিজ্ঞানের একটি সম্মিলিত তত্ত্ব বের করার যে প্রচেষ্টা, তার সর্বাধুনিক এবং সবচেয়ে সফল ফলাফল বলা যেতে পারে স্ট্রিং তত্ত্বকে।

স্ট্রিং তত্ত্ব মূলত তিনটি বিষয়কে একীভূত করতে চায়। এক. পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন তত্ত্ব; দুই. প্রকৃতির মৌলিক বলসমূহ এবং তিন. প্রকৃতির মৌলিক কণাসমূহ।

আমি আজ তিন নম্বর বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চাইছি। কারণ, বিষয়টি স্ট্রিং তত্ত্বের কেন্দ্রীয় ভাবনা নিয়ে আলোকপাত করে। এ ছাড়া এটাই সম্ভবত স্ট্রিং তত্ত্বের জন্ম নিয়ে কথা বলার জন্য আদর্শ জায়গা।

পদার্থবিজ্ঞান রিডাকশনাজম (খণ্ডতাবাদ) ব্যবহার করে। আমি এখানে প্রক্রিয়াগত খণ্ডতাবাদের কথা বলছি। মূল কথা, একটা বস্তুকে ভাঙতে থাকলে আমরা একসময় বিন্দুর মতো কণা পাব। কণাতত্ত্ব অনুযায়ী আমাদের প্রকৃতির মৌলিক বিল্ডিং ব্লক হচ্ছে এই কণা। লক্ষ করার বিষয় হলো এ ক্ষেত্রে আমরা একটা আদর্শীকরণ করি। এই কণাগুলোকে ধরি বিন্দুর মতো যার কোনো ‘মাত্রা’ নেই, শুধু ভর আছে। এখন ধরা যাক, একটা বিন্দু কণা সৃষ্ট মহাকর্ষীয় প্রভাব বলয়ের (পটেনশিয়াল) কথা, যা কিনা দূরত্বের প্রতি-সমানুপাতিক। এখান থেকে খুব দ্রুতই আমরা উপলব্ধি করতে পারি যে দূরত্ব যখন শূন্য হয়ে যায়, তখন এই পরিমাপকটা অসীম হয়ে যায়। পদার্থবিজ্ঞান অসীম পছন্দ করে না। পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে অসীম পাওয়ার অর্থ হচ্ছে এ ক্ষেত্রে ঠিক কী হচ্ছে, পদার্থবিজ্ঞান তা বুঝতে পারছে না।

তাহলে প্রশ্ন হলো এটা কি প্রমাণ করে যে সমীকরণটা ভুল? ঠিক তা না আসলে।

আরও গোড়া থেকে শুরু করা যাক। পদার্থবিজ্ঞানে আসলে আমরা কী করি? গণিত ব্যবহার করে আমরা কতগুলো পরিমাপক সংজ্ঞায়িত করি, যাদের কিছু গাণিতিক আর কিছু ভৌত। ভৌত পরিমাপকগুলো আমরা পরীক্ষাগারে মাপতে পারি। যখন আমরা পরিমাপ করি, তখন এটা জানা আবশ্যক যে পরিমাপের স্কেলটা কী। ম্যাকক্রোসকপিক ইভেন্টে আমরা আসলে মাইক্রোসকপিক্যালি পরিমাপকের সংজ্ঞাটা ব্যর্থ হলো কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তা করি না। কিন্তু দিন শেষে এটা একটা প্র্যাকটিক্যাল স্ট্যান্ড পয়েন্ট। ধরা যাক, আমরা আসলে জানতে চাই মাইক্রোসকপিক্যালি কী হচ্ছে? লক্ষ করুন যে ‘অসীম’টা আমরা পাচ্ছি, তা আসলে কণাকে বিন্দুর মতো চিন্তা করার জন্য হচ্ছে। এই সমস্যা থেকে বের হতে হলে আমাদের ধরে নিতে হবে, প্রকৃতির একটা সর্বনিম্ন দৈর্ঘ্য আছে। এটাকে আমরা প্ল্যাঙ্ক দৈর্ঘ্য বলি। এটি ১০ টু দ্য পাওয়ার-৩৩ সেন্টিমিটার (দশমিকের পর ৩২টা শূন্য তারপর এক) বা শক্তি এককে ১০ টু দ্য পাওয়ার ১৯ জিইভির (গিগা ইলেকট্রন ভোল্ট) সমান। এখানেই স্ট্রিং থিওরির ব্যুৎপত্তি। স্ট্রিং থিওরি বলে আমাদের প্রকৃতির মৌলিক বিল্ডিং ব্লক হলো এক মাত্রার সুতা বা তন্তুর মতো বস্তু, যার দৈর্ঘ্য প্ল্যাঙ্কের দৈর্ঘ্যের কাছাকাছি।

কণাতত্ত্ব (আরও নির্দিষ্ট করে বললে স্টান্ডার্ড মডেল) থেকে আমরা দেখতে পাই, প্রকৃতিতে ৬০ টির মতো মৌলিক কণা আছে। এই সংখ্যা ‘কণা’কে আমাদের প্রাকৃতিক মৌলিক বিল্ডিং ব্লক দাবি করার জন্য বেশ বড়। মোদ্দা কথা হলো, যা মৌলিক তার সংখ্যা কম হওয়ায় যুক্তিযুক্ত। এই কণার চিড়িয়াখানা মৌলিক বিল্ডিং ব্লক ধারণার পরিপন্থী। ঠিক এই ব্যাপারে স্ট্রিং তত্ত্ব এগিয়ে আসে।

এই তত্ত্ব অনুযায়ী আমাদের প্রকৃতির মৌলিক বিল্ডিং ব্লক হচ্ছে শুধুই একধরনের অতি ক্ষুদ্র তন্তু (স্ট্রিং), আর কিছু না। এই তন্তুর বিভিন্ন ধরনের কম্পনের ফলে ভিন্ন ভিন্ন কণার উৎপত্তি হয়। এভাবেই স্ট্রিং সব কণাকে এক মালায় গাঁথে। আগেই বলা হয়েছে, এই স্ট্রিং খুবই ছোট (১০ টু দ্য পাওয়ার-৩২ বা শক্তি এককে ১০ টু দ্য পাওয়ার ১৪ গিগা ইলেকট্রন ভোল্ট)। পাঠকের সুবিধার্থে এই সংখ্যাগুলো সম্পর্কে একটু অন্যভাবে ধারণা দেওয়া যাক। আমরা সবাই আমাদের সৌরজগৎ সম্পর্কে জানি। আমাদের সৌরজগতের দৈর্ঘ্য (ব্যাস) কী হতে পারে, তার একটা ধারণা আমরা পাই পৃথিবী থেকে সূর্যের দূরত্ব চিন্তা করলে। এখন এ ধরনের বিলিয়ন বিলিয়ন সৌরজগৎ মিলে একটা গ্যালাক্সি হয়। কাজেই তাঁর দৈর্ঘ্য কী হতে পারে, তা কল্পনা করাও কঠিন। এখন এ রকম প্রায় এক বিলিয়ন গ্যালাক্সির দৈর্ঘ্য আমাদের হাতের নখের দৈর্ঘ্যের তুলনায় যে রকম বড়, হাতের নখটা একটা স্ট্রিংয়ের তুলনায় সে রকমই বড়। কাজেই পর্যবেক্ষণ করার কোনো প্রশ্নই আপাতত আসে না।

Source: Prothom alo
ড. সাজিদ হক: শিক্ষক ও গবেষক, স্ট্রিং থিওরি অ্যান্ড কসমোলজি, ইউনিভার্সিটি অব উইন্ডসর, কানাডা
ই-মেইল: shajidhaque@gmail.com
Title: Re: থিওরি অব এভরিথিং
Post by: Raisa on October 22, 2018, 01:32:08 PM
great
Title: Re: থিওরি অব এভরিথিং
Post by: akhi on October 22, 2018, 03:19:17 PM
nice