Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - Md. Mahmudul Hasan_IT

Pages: [1]
1

THINK-before you post or share on social media. আমরা অহরহ ফেসবুক বা অন্য সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে (সোশ্যাল মিডিয়া) বিভিন্ন গ্রুপে পোস্ট করছি। গ্রুপের নিয়ম মানা তো আছেই। তা ছাড়াও নিজের বা অন্যদের ওয়ালে কোনো কিছু পোস্ট বা শেয়ার করার ব্যাপারে একটু সচেতন হলে মনে হয়, সবার জন্যই ভালো। কিছুদিন আগে একটা প্লে-সেন্টারে একটা জন্মদিনের অনুষ্ঠানে একটা ছোট পোস্টার দেখি।

অনেকটা এ রকম, মেসেজটা হচ্ছে—‘কিছু বলার আগে ভাবুন’।
আমি দেখলাম এটা আসলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সঙ্গেও সঠিকভাবে যায়। আমরা ইন্টারনেট আর সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে যা পোস্ট ও শেয়ার করছি, তার আগে আমরা কি ভাবছি? Are we THINKing? ব্যাখ্যা করছি।

T=True?

প্রথমেই দেখতে হবে যা লিখছি বা শেয়ার করছি সেটা সত্যি কি না। ইন্টারনেটে যা-ই পড়ছি, যা-ই দেখছি, জরুরি না সবই সত্যি। বরং বেশির ভাগই বিশ্বাস করার মতো না; স্ক্যাম। তাই যা দেখছেন, যাই পড়ছেন, যাই শেয়ার করছেন, সত্য ভেবে অন্ধের মতো বিশ্বাস না করে বরং একটু যাচাই করুন। আবার দেখুন একটা ভুল তথ্য দিয়ে উল্টো কারও ক্ষতি করে ফেলছেন কি না? বিশ্বাস করুন, আমার অভিজ্ঞতা থেকে দেখেছি, ধর্ম নিয়ে মিথ্যা কথা সবচেয়ে বেশি শেয়ার করা হয়। আর আমরা কিছু না বুঝেই রি-শেয়ার করে ফেলি এই বিশ্বাস থেকে যে, ধর্ম নিয়ে নিশ্চয়ই কেউ ফাজলামি করবে না। দুঃখজনক কথা হচ্ছে-দিস ইজ নট দ্য কেস। পোস্ট করুন শুধুমাত্র তখনই, যখন আপনি নিশ্চিত মিথ্যা ছড়াচ্ছেন না, অথবা মিথ্যাকে সমর্থন দিচ্ছেন না। দায় কিন্তু আপনারও।

H=Helpful?

কিছু শেয়ার করার আগে একটু ভেবে দেখুন সেটা কার কতটা কাজে আসতে পারে। অথবা আদৌ কারও কাজে আসবে কি না? যদি না আসে, তবে সেই সব অন্ধের মতো শেয়ার করতে থাকাটা বন্ধু তালিকার অনেকেরই বিরক্তির কারণ হতে পারে। যদি কোনো পোস্ট শুধুমাত্র কোনো একজনের উদ্দেশ্যে হয়, শুধুমাত্র তার সঙ্গেই শেয়ার করুন। (জোক/ট্রল পোস্ট ঠিক আছে, তবে সেটার লিমিট রাখা নিজের ব্যক্তিত্বের জন্যই ভালো)।

I=Inspiring?

চিন্তা করে দেখুন যা লিখছেন, যা শেয়ার করছেন, সেটা কাউকে উদ্বুদ্ধ করতে পারে কি না। সেটা যাই হোক না কেন, যত টারগেটেড হোক না কেন। আপনার অর্জন ও সাফল্য শেয়ার করুন। বিস্তারিত দিন যাতে কেউ তার থেকে কিছু শিখতে পারে। হয়তো আপনার অজান্তেই আপনি কাউকে নতুন করে বাঁচা শেখাচ্ছেন। (শো-অফ বা ফুটানি অংশটুকু ফিল্টার করে অবশ্যই। মাথায় রাখুন—শুধুমাত্র অর্জনটুকুই শেয়ার করুন। আপনি কিছু ইনহেরিট করেছেন, সেটা কিন্তু আপনার অর্জন না, আরেকজনের অর্জন)।

N=Necessary?

সাধারণ যা শেয়ার করছেন বা পোস্ট করছেন, করাটা কি জরুরি? অপ্রয়োজনীয় পোস্ট করে বন্ধু তালিকার সবাইকে বিরক্ত করছেন না তো? ঘণ্টায় ঘণ্টায় গেম রিকোয়েস্ট পাঠানো, ব্যাপারটা অনেকের জন্যই বিরক্তিকর। আপনার লুকেলাইক ব্র্যাড পিট না জেনিফার লোপেজ, আপনি আগের জন্মে কোনো সেলিব্রেটি ছিলেন, কবে মারা যাবেন, সেটা জেনে আপনি মনে মনে প্রফুল্ল হতে পারেন, বন্ধু তালিকার পাঁচ শজনের এটা জেনে কোনোই কাজ নাই। নিজেকে ওপরে তুলছেন না নামাচ্ছেন; হাস্যাস্পদভাবে উপস্থাপন করছেন? প্রোডাকটিভ কিছু শেয়ার করুন, কম ভুয়া লাইক পাবেন, কম লোকের বিরক্তির কারণও হবেন।

K=Kind?

ইজ ইট কাইন্ড? কাউকে, কোনো একটা গ্রুপ, জাতি, জেন্ডার ও সংখ্যালঘুকে মানসিকভাবে আঘাত করে ফেলছেন না তো? জাস্ট আপনি সংখ্যাগরিষ্ঠের অংশ বলে, জাস্ট আপনি পারেন বলে? সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে সংখ্যালঘুকে নিরাপদ রাখাটা বরং আপনার একটা বড় কর্তব্য। কোনো একদিন কোনো এক পরিস্থিতিতে আপনিও সংখ্যালঘু হয়ে যেতে পারেন। আবার জাতীয় ব্যক্তিত্বদের সাময়িক ব্যর্থতা নিয়ে লিখছেন, ভেবে দেখেন একটা জাতীয় অর্জনের পেছনে তাদের ভূমিকা কতটুকু। আপনি কতটুকু রাখছেন?
সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম এখন একটা অনেক বড় মিডিয়া। তাই কোথায় কী লিখছেন, কী শেয়ার করছেন, সেটা অনেক সহজেই পাবলিক হয়ে যেতে পারে। তাই কমনসেন্স ব্যবহার করুন। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমকে সুন্দরভাবে ব্যবহার করুন।

2
দেশে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ২ কোটি ৯০ লাখ। এর মধ্যে  ৯৮ শতাংশই নিষ্ক্রিয়। মাত্র ২ শতাংশ সক্রিয়। স্ট্যাটাস দেওয়া, নিউজ শেয়ার, লাইক, মন্তব্য ও বিতর্ক করাসহ বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে তারাই জমিয়ে রেখেছেন সামাজিক যোগাযোগের এই ভার্চুয়াল স্পেস। আর সক্রিয়দের বেশিরভাগের আগ্রহ বিভিন্ন অনলাইন ও দৈনিকের খবরে। দেশের মোট ব্যবহার হওয়া (৪৩৬ গিগা) ব্যান্ডউইথের প্রায় ৮৮ গিগা ব্যবহার হয় ফেসুবকের পেছনে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিটিআরসি),  ইন্টারনেট সেবাদাতা সংগঠন সূত্রে এই চিত্র পাওয়া গেছে।

বর্তমানে বাংলাদেশের বিশাল সংখ্যক জনগোষ্ঠী ইন্টারনেটের সেবার সঙ্গে যুক্ত। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন মাস পর্যন্ত দেশে ইন্টারনেট গ্রাহকের সংখ্যা ৭ কোটি ৩৩ লাখেরও বেশি। এরমধ্যে বেশিরভাগই শুধু ফেসবুক ব্যবহারের জন্যই ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত থাকেন।

সামাজিক গণমাধ্যম বিষয়ক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘উই আর সোশ্যাল’ ও ‘হুট সুইট’-এর এক জরিপে দেখা যায়, ফেসবুক ব্যবহারের দিক থেকে বিশ্বের শীর্ষ শহরগুলোর মধ্যে ঢাকার অবস্থান দ্বিতীয়। এখানে ২ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ সক্রিয়ভাবে ফেসবুক ব্যবহার করছেন। গত এপ্রিল মাসে প্রকাশিত এ সংখ্যা বর্তমানে ২ কোটি ৯০ লাখের মতো। অন্যদিকে ইন্টারনেট ওয়ার্ল্ডস স্ট্যাটস জানাচ্ছে ২০১৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশে ফেসবুক ব্যবহারকারী ছিল ২ কোটি ১০ লাখ। সে সময় বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ছিল ৬ কোটি ৭২ লাখ ৪৫ হাজার। আর বিটিআরসির হিসাবমতে বাংলাদেশের বর্তমানে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ৭ কোটি ৩৩ লাখ।

বাংলাদেশের মানুষ ফেসবুকে আসলে কী করে, সে বিষয়ে কোনও গবেষণা হয়েছে কিনা, এই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি না। তবে বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের (বিডিওএসএন) সাধারণ সম্পাদক মুনির হাসানের ব্যক্তিগত ধারণা হলো, দেশের মোট ফেসবুক ব্যবহারকারীর মাত্র ২ শতাংশ সক্রিয়। মুক্ত সফটওয়্যার নিয়ে দীর্ঘদিন কাজের ফলে তিনি বিষয়টি খুব নিবিড়ভাবে দেখেছেন। তিনি জানান, ‘ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে মাত্র ২ শতাংশ সক্রিয়ভাবে ফেসবুক ব্যবহার করেন। এদের সংখ্যা সব মিলিয়ে সাড়ে ৫ লাখের মতো হবে। তারা ফেসবুকে মন্তব্য করেন, কোনও বিষয় নিয়ে বিতর্ক করেন, শেয়ার করেন। এরমধ্যে রয়েছেন সংবাদপত্রের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, মার্কেটিয়ার ইত্যাদিরা।

মুনির হাসান বলেন, ২৫ শতাংশ ব্যবহারকারী ফেসবুকে মোটামুটি সক্রিয়। তারা সপ্তাহে গড়ে একবার হলেও ফেসবুকে ঢোকেন। বিশেষ কোনও উৎসব বা জন্মদিনে তারা সক্রিয় হন। জন্মদিনকে ঘিরে কিছু লাইক, কমেন্ট পেয়েই তারা খুশি। আর ৩০ শতাংশ ব্যবহারকারী ফেসবুকে কিছুই করেন না। তাদের মধ্যে অনেকে ফেসবুকে আইডি খুলতে হয়, তাই খোলেন। তাদের অনেকেই আবার ভুলে যান যে তার একটি ফেসবুক আইডি আছে।

অন্যদিকে ৪০-৪৩ শতাংশ ফেসবুক ব্যবহারকারী একেবারে নীরব। তাদের সম্পর্কে বিডিওএসএন-এর সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা ফেসবুকে ঢোকেন কিন্তু কিছুই করেন না। কোনও কিছুতে লাইক বা কমেন্ট করেন না। মাঝে মাঝে কোনও লিংক হয়তো ওপেন করে দেখেন। তারা লগইন করেন, ফলে তার ছাপ দেখা যায়।’ তিনি জানান, ‘এর ফলে বাংলাদেশের ফেসবুক ব্যবহারকারীদের ট্রেন্ডটা ঠিক বোঝা যায় না।’

এদিকে দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন আইএপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম দেশে ফেসবুক ব্যবহারে কী পরিমাণ ব্যান্ডউইথ খরচ হয়, তার একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। তিনি জানান, ‘বিভিন্ন আইএসপির ব্রডব্যান্ড (উচ্চগতি) ইন্টারনেট ব্যবহারকারী যারা ফেসবুকে ঢোকেন, তাদের মধ্যে মধ্যবয়সীরা ফেসবুকের নিউজ ফিডে খবর পড়তে পছন্দ করেন। তবে গবেষণা না থাকায় একেবারে সুনির্দষ্ট কোনও তথ্য নেই বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

আমিনুল হাকিম বলেন, ‘দেশে মোট ব্যবহার হওয়া ব্যান্ডউইথের মধ্যে (মোবাইলফোন অপারেটর ১১০ গিগা এবং আইএসপি ৩২৬ গিগা) ৮৮ গিগা ব্যবহার হয় ফেসবুকের পেছনে।’ তিনি জানান, ‘মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা প্রায় সারাক্ষণই ফেসবুক, মেসেঞ্জারে লগইন অবস্থায় থাকেন। মোবাইলফোন অপারেটরগুলোর ব্যবহার হওয়া ১১০ গিগা ব্যান্ডউইথের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ ব্যবহার হয় ফেসবুক ব্যবহারে। আর আইএসপিগুলোর গ্রাহকদের ব্যবহার হওয়া ৩২৬ গিগা ব্যান্ডউইথের মধ্যে ১০ শতাংশ তথা ৩২ দশমিক ৬ গিগা ব্যবহার হয় ফেসবুক ব্যবহারে। 

গত কয়েকদিনে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ৩০ জনের বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা প্রত্যেকেই ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। এর সাহায্যে বিভিন্ন কাজ করলেও মূলত ফেসবুকেই তাদের বেশি সময় ব্যয় হয়। কেউ কেউ আবার ফেসবুকে কম ঢুকলেও প্রায় সারাদিন মেসেঞ্জারে থাকেন। সব মিলিয়ে তারা গড়ে ৩-৪ ঘণ্টা ফেসবুকে কাটালেও মেসেঞ্জারে থাকেন ৮-১০ ঘণ্টা।

এদিকে ফেসবুক ব্যবহারের জন্য ইন্টারনেট কেনার পেছনে তাদের সবার মাসে ব্যয় হয় গড়ে ৩০০-৪০০ টাকা। এর মধ্যে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকাও ব্যয় করেন তারা। ওয়াই-ফাই সংযোগের খরচ ধরলে ব্যয়ের পরিমাণ আরও বাড়বে। ব্যবহারকারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, যাদের ওয়াই-ফাই ব্যবহারের সুযোগ নেই, তাদের ফেসবুক ব্যবহারের খরচ কিছুটা বেশি।

তবে একটি বিষয়ে উল্লিখিত সব বয়সী ব্যবহারকারীর মধ্যে মিল রয়েছে। তারা সবাই দিনের অবসর সময় অনলাইনে কাটান। তরুণরা রাত ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত প্রায় প্রতিদিনই অনলাইনে থাকেন বলে মত দিয়েছেন। এছাড়া দিনের অন্যান্য অবসর সময়েও তারা ফেসবুকে সময় ব্যয় করেন। অন্যদিকে কর্মজীবীরা অফিসের অবসর সময়ে ফেসবুক স্ক্রল করেন বলে জানান। তবে কর্মজীবীরা ফেসবুকে বেশি লগইন করেন অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে। সেই হিসাবে দেখা গেছে বিকাল সাড়ে ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বেশিরভাগ কর্মজীবী ফেসবুকে লগইন করেন। আর যারা মোবাইলের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে অপছন্দ করেন না, তারা ইউটিউবে লগইন করে কানে ইয়ারফোন গুজে গান শোনেন। কেউ কেউ ‍মুভিও দেখেন।

নিজের ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণ বলতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আফরিদা জেরিন প্রশা বলেন, ‘দিনের বেশিরভাগ সময়-ই নেটে যুক্ত থাকি। মূলত ফেসবুকই বেশি ব্যবহার করা হয়। আমাদের ক্লাস শিডিউল চেক করার জন্য নিয়মিত ফেসবুক গ্রুপ চেক করি। মেসেঞ্জারে বলতে গেলে সবসময়ই থাকি।’

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাহেদ হাসান বলেন, ‘বেশ কয়েকটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করি। এরমধ্যে ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি সময় দেই। এটা একটা অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।’

জানতে চাইলে অপসোনিন ফার্মাসিটিউক্যালস লিমিটেডের বিপণন বিভাগের কর্মকর্তা হাবীব কাজী বলেন, ‘মূলত ফেসবুক ব্যবহারের জন্যই ইন্টারনেট ব্যবহার করি। ফেসবুকে মজার সব ভিডিও দেখতে ভালো লাগে। এছাড়া ইউটিউবেও অনেক সময় দেই। রাত ১০টা থেকে ১২টা পর্যন্ত অনলাইনে বেশি থাকি।’

নিজের ইটারনেট ব্যবহারের যৌক্তিকতা বলতে গিয়ে গাজীপুরের উধুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কল্পনা আক্তার বলেন, ‘আমি রাত ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত ইন্টারনেটে থাকি। ফেসবুক চালাই, খবর পড়ি। ফেসবুকের বিভিন্ন পেজে নতুন সব কাপড়ের কালেকশন দেখি।’

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রওজাতুল জান্নাত জানান, ‘ফেসবুকে অনেক সময় যায়। বিশেষ করে নতুন ডিজাইনের জামা-কাপড় দেখতেই বেশি সময় ব্যয় হয়। সবচেয়ে বেশি থাকি মেসেঞ্জারে।’

সূত্র- বাংলা ট্রিবিউন।

3
দিনটা আরেকটু বড় হলে ভাল হত, এমন চিন্তা কতবার করেছেন! জীবনে ব্যস্ততা বাড়লেও দিনের পরিধি তো আর বাড়ে না। আর তাই সময়ের সীমারেখা মেনেই কাজ করে যেতে হয়।

কাজেই বাড়তি সময়ের চিন্তা না করে, হাতে থাকা সময়টুকু কিভাবে আরো বেশি কাজে লাগানো যায় তা শিখে নিতে হবে। আর যদি সত্যিই এই জাদু জেনে যান, তাহলে দেখবেন সব কাজ সেরে নিজের জন্যও সময় বের করতে পারছেন। আসুন জেনে নেই সময়কে কাজে লাগানোর ৮টি উপায়।

১. কাজের তালিকা তৈরি করুন

আগের দিন রাতে পরদিনের কাজের তালিকা তৈরি করে রাখলে তা ভীষণ কাজে দেবে। প্রথমত, আগামীকাল কী কী কাজ করবেন তা মনে রাখতে গিয়ে দুশ্চিন্তায় ঘুম হারাম করার প্রয়োজন পড়ে না। দ্বিতীয়ত, সকালে উঠেই জানা থাকে কি কি করতে হবে, ফলে অনেকটা সময় বেঁচে যায়।

কাজের গুরুত্ব বিবেচনা করে সাজিয়ে নিতে পারেন তালিকা, একেকটি কাজ শেষ করার পর দেখবেন তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিতে ভুলবেন না যেন।

২. মোবাইলের নোটিফিকেশন বন্ধ রাখুন

যখন আপনি মনোযোগ দিয়ে একটি কাজ করার চেষ্টা করছেন, তখন একটু পরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইমেইল কিংবা টেক্সট মেসেজের নোটিফিকেশনের টিং টিং শব্দ বেজে উঠলে তা আপনার মনোযোগ অন্যদিকে নিয়ে যাবে, আবারও কাজে মন দিতে তখন সময় লাগবে।

৩. ‘না’ বলতে শিখুন

আমরা একসঙ্গে সবকিছু করতে পারি না - এই বাস্তবতাকে মেনে নিন। মাঝে মাঝে ‘না’ বললে আপনি এমন সব কাজে সময় দিতে পারবেন যা গুরুত্বপূর্ণ এবং আপনার জন্য লাভজনক হবে।

৪. এক ধরনের কাজগুলোকে শ্রেণীবদ্ধ করুন

এই পন্থা তেমন একটা কার্যকর মনে নাও হতে পারে। কিন্তু একই ধরনের কাজগুলো একেবারে করে ফেলাটা সহজ হয়। আর সত্যিই তা আপনার অনেক সময় বাঁচিয়ে দেয়। কাজ শ্রেণীবদ্ধ করে ফেললে আপনার মনোযোগও অটুট থাকবে, বারবার ভিন্ন ভিন্ন কাজে মন দিতে হবে না।

৫. কম্পিউটার থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন

আমাদের মনোযোগ দেয়ার ক্ষমতা দিন ভেদে ২০ মিনিট থেকে সাড়ে ৯ সেকেন্ড পর্যন্ত হতে পারে। তবে মানুষের মস্তিষ্ক কোনোভাবেই টানা ৮ ঘন্টা ডেস্কের সামনে বসে কাজে মন দেয়ার জন্য তৈরি নয়। কাজের ফাঁকে সুযোগ পেলেই বিরতি নেয়ার চেষ্টা করুন। এই ছোট ছোট বিরতি আপনার মনোনিবেশ করার ক্ষমতাকে বাড়িয়ে দেবে, শরীরে সহজে ক্লান্তি আসবে না, পেশির ব্যথা হবে না এবং মস্তিষ্ককে সজাগ রাখবে। ফলে কাজও হবে ভাল।

৬. দায়িত্ব ভাগ করে নিন

সব কাজ একা করলে যে আপনার কার্যক্ষমতা প্রকাশ পাবে তা কিন্তু নয়। বরং এভাবে আপনি খেটেই যাচ্ছেন, কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো ঠিকমতো করা হচ্ছে না। কিছু কাজ কি অন্য কাউকে দেয়া যায়? আপনার মনের মতো করে কাজগুলো কেউ করবে এতটা বিশ্বাস হয়ত করা যায় না, কিন্তু আপনার সময়টুকু এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কাজে দিলে তা হবে সঠিক সিদ্ধান্ত।

৭. ফেইসবুক থেকে দূরে

আজকাল ফেইসবুক আমাদের অনেক কাজে লাগছে। কিন্তু এটাও অস্বীকার করার উপায় নেই যে ফেইসবুকের কারণে আমাদের অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে প্রতিদিন।

যদি কাজের খাতিরেই আপনাকে ফেইসবুক ব্যবহার করতে হয়, তাহলে সারাদিন ফেসবুক খুলে রাখবেন না। যখন প্রয়োজন হবে শুধুমাত্র তখনই ব্যবহার করুন, বাকি সময়টা লগআউট করে রাখুন।

৮. ব্যায়াম

কার্যক্ষমতা বাড়ানোর একটি দারুণ উপায় হল শরীরকে সতেজ রাখা। ব্যায়াম আমাদের দেহ এবং মস্তিষ্কের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে তোলে, যা আমাদের শরীরকে আরও সতেজ করে তোলে।

মাঝে মাঝেই এমন হয়, আমরা যত ব্যস্ত হয়ে পড়ি ততই ব্যায়াম করার সময় পাই না। কিন্তু ব্যায়াম করার ফলে আমাদের দেহের যেমন উপকার হয়, তেমনি প্রাত্যহিক জীবনেও আমাদের কার্যক্ষমতা বেড়ে যায় বহুগুণ।

নিয়মিত ব্যায়াম আপনাকে রাখবে দুশ্চিন্তামুক্ত, কর্মব্যস্ত জীবনে যা অন্যতম বড় সমস্যা।



4
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী তুমুল জনপ্রিয় সামাজিক যোগযোগ মাধ্যম হল ফেসবুক। পৃথিবীর প্রায় এক তৃতীয়াংশ (২০০ কোটি) মানুষ ফেসবুকের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সক্রিয়। যেহেতু ফেসবুকে প্রতিদিন-রাত প্রচুর মানুষ ভিজিট করছে, এই কারনে  পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে কিছু মানুষ ফেসবুককে কাজে লাগিয়ে তাদের পন্য বা সেবার মার্কেটিং করছে, ব্যবসা করে লাভবান হচ্ছে। আর অধিকাংশ মানুষই তাদের ব্যক্তিগত ও পেশাগত উন্নয়ন, যোগাযোগ এবং সামাজিক উদ্যোগগুলোকে এগিয়ে নিতে ফেসবুককে ব্যবহার করছে।

কিন্তু দু:খজনকভাবে সত্য আমাদের মত উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ৯৫% ক্ষেত্রে ফেসবুকে সময়, শ্রম ও মেধা নষ্ট করা ছাড়া কিছু হচ্ছে না। আমাদের তরুনরা অধিকাংশই ফেসবুকে স্ক্রল, রিঅ্যাকশন, চ্যাটিং, ট্রল ও ফালতু মন্তব্য করে, ভিডিও দেখে সময় নষ্ট করছে। এতে করে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাদের পড়ালেখা। ধ্বংস হচ্ছে জাতির ভবিষ্যৎ।

অথচ ফেসবুকের মাধ্যমে ব্যবসা করে লাভবান হওয়া সম্ভব। আশার কথা হচ্ছে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ফেসবুকে মার্কেটিং করে তাদের ব্যবসা দাঁড় করিয়েছে। অনেক স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতা সংস্থা মুমূর্ষ মানুষের জন্য ফেসবুকে রক্তের আবেদন জানিয়ে যাচ্ছে ২৪ ঘন্টায়। এছাড়াও বন্যার্ত, শীতার্থ, পথশিশুদের জন্য কাজ করছে এমন উদ্যোক্তারা ফেসবুকেই বেশি প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে সাহায্যের জন্য।

তবে ফেসবুকে বাংলাদেশী উদ্যোগগুলোর মধ্যে আমার সবচেয়ে ভাল লেগেছে ফেসবুক গ্রুফে ইংরেজী চর্চা। ইংরেজী চর্চার জন্য আমার দেখা সবচেয়ে সক্রিয় ফেসবুক গ্রুফ হচ্ছে Search English (Link-https://www.facebook.com/groups/SearchEnglish/) মাত্র একবছর আগে চালু হওয়া ফেসবুকের এই গ্রুফটি এখন ৩ লক্ষ সক্রিয় সদস্যের মহীরুহে পরিনত হয়েছে। আর এই উদ্যোগের প্রানশক্তি হচ্ছেন জনাব রাজীব আহমেদ স্যার।

সার্চ ইংলিশে মূলত ইংরেজীতে লেখার চর্চা হয়। সাধারনত ফেসবুক ওয়ালে আমরা যেভাবে স্ট্যাটাস দিই, কমেন্ট করি সার্চ ইংলিশে ও একই নিয়ম। তবে লেখার মাধ্যম হতে হবে ইংরেজীতে। আপনি ইংরেজী না পারলেও সমস্যা নেই, ভুল হলেও লজ্জা পাওয়ার কিছু নাই। আপনি লিখতে থাকুন। বাংলায় প্রবাদ আছে- “ঘষতে ঘষতে ধার উঠে”, সার্চ ইংলিশেও ব্যাপারটা সে রকম। লিখতে লিখতে দক্ষতা আসবে, ভুল শুধরানো যাবে।

এই তো গেল লেখার দক্ষতার কথা। ইংরেজীতে কথা বলার দক্ষতার জন্যও সার্চ ইংলিশের আরেকটি উদ্যোগ হচ্ছে স্কাইপেতে প্রতিরাত ১০টা থেকে অডিও আড্ডা। অডিও আড্ডায় এক বা একাধিক মডারেটর থাকেন যারা ২ জন অংশগ্রহন কারীকে নির্দিস্ট সময়ের জন্য ইংরেজীতে আলাপচারিতার সুযোগ দেন। অন্য সেসময় শুধু ওই দুজনের কথোপকথন শুনে যাবেন এবং নিজের কম্পিউটার/মোবাইলের মাইক্রোফোন বন্ধ রাখবেন। এভাবে সার্চ ইংলিশের আড্ডার মাধ্যমে ইংরেজীতে বলা এবং শোনার দক্ষতা তৈরি হয়ে যাচ্ছে কিছুদিনের মধ্যে। আর পোস্ট এবং কমেন্টের মাধ্যমে তো ইংরেজী পড়া এবং লেখার দক্ষতা হচ্ছেই।

তবে ইংরেজীতে দক্ষতার জন্য লেগে থাকার কোন বিকল্প নাই। তবে কোচিং সেন্টারে ইংরেজী শেখার জন্য টাকা লাগে, সার্চ ইংলিশে কিন্তু তাও নেই। তাহলে আর দেরি কেন, চলুন আজই শুরু করে দিই ইংরেজী চর্চা।

Pages: [1]