Daffodil International University

Faculties and Departments => Business & Entrepreneurship => Topic started by: turin on August 13, 2017, 04:26:40 PM

Title: শিল্পের সাফল্য যন্ত্রে নয় শ্রমিকে, নজির বাংলাদেশ
Post by: turin on August 13, 2017, 04:26:40 PM
                                                             শিল্পের সাফল্য যন্ত্রে নয় শ্রমিকে, নজির বাংলাদেশ

চোখ ধাঁধানো সাফল্য বাংলাদেশ ২০ বছর ধরে দেখছে। এর ফলে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের বেশি হয়েছে এবং দারিদ্র্যের হার হ্রাস পেয়েছে অর্ধেকেরও বেশি। মূলত পোশাকশিল্পে ভর করেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। চীন এ ক্ষেত্রে যখন পিছিয়ে পড়ছে, বাংলাদেশ কয়েক দশক ধরে তুলনামূলক সুবিধাজনক অবস্থানটি ধরে রেখেছে। হংকং থেকে প্রকাশিত পত্রিকা এশিয়া টাইমস গতকাল শনিবার ‘বাংলাদেশ এ টেস্ট ফর দ্য নেক্সট ওয়েভ অব ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ আশাবাদ ব্যক্ত করে। এ ছাড়া চলতি সপ্তাহেই ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক ফিন্যানশিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে সাংবাদিক

 রবিন হারডিং লেখেন, ‘বাংলাদেশের এই সাফল্য প্রমাণ করে যে অন্যান্য দেশও চীনের অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। ’ ‘উৎপাদকরা দল বেঁধে উড়ে যাচ্ছে এশিয়ার নতুন নতুন ভূখণ্ডের দিকে’ শিরোনামের এই লেখায় ব্যবহৃত ইনফোগ্রাফে দেখা যায়, বিশাল জনসংখ্যার দেশ চীনের তারকাখচিত লাল পতাকার পাখির সঙ্গে প্রায় সমানতালে উড়ে যাচ্ছে ছোট্ট দেশ বাংলাদেশের লাল-সবুজ রঙের উন্নয়নের রাজহাঁস।

ফিন্যানশিয়াল টাইমসের ‘ম্যানুফ্যাকচারিং ফ্লকস টু নিউ কর্নারস অব এশিয়া’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২০ বছরে অর্থনীতিতে বিস্ময়কর সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশ। কয়েক দশক আগেও যে দেশটির পরিচয় ছিল দরিদ্র ও দুর্ভিক্ষপীড়িত, সেই দেশটি এখন মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছে। একইভাবে এগোচ্ছে ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়া। বাংলাদেশসহ এসব দেশের লক্ষণীয় প্রবৃদ্ধি বলে দিচ্ছে একবিংশ শতাব্দীকে নতুন আকার দিতে ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে নতুন নতুন শক্তির উদয় হচ্ছে।

বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ গার্মেন্ট রপ্তানিকারক দেশ উল্লেখ করে ফিন্যানশিয়াল টাইমস লিখেছে, পোশাকশিল্পে লাখ লাখ নারী কাজ করছে। এই শিল্পের সুবাদেই নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন হচ্ছে। এশিয়া টাইমস লিখেছে, শিল্পে যন্ত্রের স্বয়ংক্রিয় ব্যবহার ঘটিয়ে উৎপাদন বৃদ্ধির ধারণার চেয়ে কায়িক শ্রমই যে বেশি কার্যকর তার উজ্জ্বল প্রমাণ বাংলাদেশ। সহজভাবে বললে, অটোমেশন তথা যন্ত্র যে এখনো মানবহস্তের যোগ্য বিকল্প হয়ে ওঠেনি তার উদাহরণ বাংলাদেশ।

দুটি প্রতিবেদনেই বলা হয়, স্থানীয় মজুরি বেড়ে যাওয়ায় প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে চীনের কারখানাগুলো এখন ব্যাপকভাবে স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তি ও রোবটে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে। কিন্তু এই কৌশল খুব একটা কাজে দেবে বলে মনে হচ্ছে না। মানুষ যেভাবে নিপুণ হাতে কাজ করে, সেই জায়গায় আসতে রোবটের হয়তো বা আরো কয়েক দশক লেগে যেতে পারে। ফলে পোশাকের মতো অনেক সম্ভাবনাময় খাতে রোবটের খুব বেশি ব্যবহার করা যাবে না। কারণ এসব খাতে ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী দ্রুত পণ্যে ডিজাইনসহ অন্যান্য পরিবর্তন আনতে হয়। আর এ জন্য আগামী দিনগুলোতেও দক্ষ-অদক্ষ শ্রমের ওপর নির্ভর করতে হবে। সেখানেই সম্ভাবনা দেখাচ্ছে বাংলাদেশের মতো অনেক দেশ।

ফিন্যানশিয়াল টাইমস লিখেছে, চীনের বিকল্প হিসেবে বর্তমানে বাংলাদেশ ভালো প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। এ ক্ষেত্রে মূল্য সুবিধার দিক থেকে বাংলাদেশই এগিয়ে যাচ্ছে। চীন যেভাবে উন্নত দেশগুলোকে পেছনে ফেলে ম্যানুফ্যাকচারিং সাফল্য অর্জন করেছে, সে পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশও। ফিন্যানশিয়াল টাইমস মনে করে, বাংলাদেশের বর্তমান যে সাফল্য তার অনুকরণ করে আরো অনেকে চীনকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য নিজেদের তৈরি করতে পারে। মধ্য অষ্টাদশ শতাব্দীতে শিল্প বিপ্লবের পর থেকেই উৎপাদন হয়ে উঠেছে দারিদ্র্য থেকে সমৃদ্ধির পথে যাত্রার মাধ্যম। যেহেতু পথটি এখনো খোলা, উন্নয়নের রাজহাঁসগুলো ডানা মেলতেই পারে এক দেশ থেকে আরেক দেশে .


Source:http://www.kalerkantho.com/print-edition/last-page/2017/08/13/531078