Daffodil International University
Entertainment & Discussions => Life Style => Topic started by: shilpi1 on October 02, 2013, 03:20:44 PM
-
পুজোতে এবার বেশ কয়েকদিনের ছুটি পাবেন সবাই। ছুটির দিনগুলো পরিবারের সবাই মিলে কোথাও বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা করে ফেলুন...এখনো হাতে কিছুটা সময় আছে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধার জন্য জেনে নিন প্রকৃতিকন্যা জাফলং-এর সৌন্দর্যের বর্ণনা।
আর বেড়ানোর জন্য এই মুহুর্তে সবচেয়ে উপযোগী হিসেবে যে কেউ বেছে নিতে পারেন প্রকৃতির রূপসী কন্যা জাফলংকে ।
সুদৃশ্য পাহাড় চুড়া, স্বচ্ছ জলরশি আর নানান রঙের নুড়ি পাথরের এক অপূর্ব সমন্বয় সিলেটের জাফলং। নগর সভ্যতার যান্ত্রিক কোলাহল ছেড়ে জীবন এখানে এসে মাথা লুকোয় একটু শান্তির খোঁজে। প্রকৃতির মায়াবী পরশে আনন্দে নেচে ওঠে মন। তাই পুজো ও ঈদের ছুটিকে পরিপূর্ণ করে তুলতে যে কেউ আসতে পারেন পাহাড়,পানি ও পাথরভরা রূপকথার রাজ্য জাফলংয়ে।
প্রকৃতি কন্যা হিসেবে সারা দেশে এক নামে পরিচিত সিলেটের জাফলং । খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়র পাদদেশে অবস্থিত জাফলং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লিলাভূমি । পিয়াইন নদীর তীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্তুপ জাফলংকে করেছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়।
সীমান্তের ওপারে ভারতীয় পাহাড়-টিলা, ডাউকি পাহাড় থেকে অবিরাম ধারায় প্রবাহমান জলপ্রপাত, ঝুলন্ত ডাউকি সেতু, পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ হিমেল পানি, উচুঁ পাহাড়ের গহিন অরণ্য ও প্রকৃতির শুনশান নিরবতা পর্যটকদের দারুণভাবে মোহাবিষ্ট করে। তাই যান্ত্রিক সভ্যতার সকল ব্যাস্ততা ভুলে গিয়ে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও প্রকৃতির সান্নিধ্যে নিজেকে সপে দিতে প্রতিদিনই দেশি-বিদেশি হাজারো পর্যটক ছুটে আসেন প্রকৃতিকন্যা জাফলংয়ে ।
প্রকৃতি কন্যা ছাড়াও বিউটি স্পট, পিকনিক স্পট, সোন্দর্যের রাণীসহ বাহারী নামে পর্যটকদের কাছে পরিচিত জাফলং । ভ্রমণ পিয়াসীদের কাছে জাফলংয়ের আকর্ষণ যেন সম্পূর্ণ আলাদা । তাই সিলেট ভ্রমনে আসলে জাফলং না গেলে ভ্রমণই যেন অপূর্ণ থেকে যায় ।
সিলেট নগরী থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর পূর্ব দিকে গোয়াইনঘাট উপজেলায় জাফলং এর অবস্থান। জাফলংয়ে শীত ও বর্ষা মৌসুমের সৌন্দর্যের রুপ ভিন্ন। বর্ষায় জাফলং এর রুপ লাবণ্য যেন ভিন্ন মাত্রায় ফুটে উঠে। ধূলি ধূসরিত পরিবেশ হয়ে ওঠে স্বচ্ছ। স্নিগ্ধ পরিবেশে শ্বাস-নি:শ্বাসে থাকে ফুরফুরে ভাব। খাসিয়া পাহাড়ের সবুজাভ চূড়ায় তুলার মত মেঘরাজির বিচরণ এবং যখন-তখন অঝোরধারায় বৃষ্টি পাহাড়ি পথ হয়ে উঠে বিপদ সংকুল-সে যেন এক ভিন্ন শিহরণ। সেই সঙ্গে কয়েক হাজার ফুট ওপর থেকে নেমে আসা সফেদ ঝর্ণাধারার দৃশ্য যে কারোরই নয়ন জুড়ায়।
তবে জাফলং বেড়াতে আসা পর্যটকদের সতর্ক থাকতে হবে যে, কোনভাবেই সাতার না জানলে পানিতে নেমে গোসল করা যাবে না । প্রতি বছরই দেখা যায় পিয়াইন নদীতে গোসল করতে গিয়ে সাতার না জানা পর্যটকরা বিভিন্ন দূর্ঘটনায় পড়েছেন । তাই এ বিষয়ে সকল পর্যটকদের সতর্ক থাকতে হবে ।
সিলেট জেলা সদর হতে সড়ক পথে জাফলংয়ের দূরত্ব ৫৬ কিলোমিটার । সিলেট থেকে বাস, মাইক্রোবাস, অটোরিক্সা বা লেগুনায় যেতে হয় জাফলং । এজন্য ১.৩০ ঘণ্টা থেকে ২ ঘন্টা সময় লাগতে পারে ।
jaflong
জাফলং যেতে ভাড়া লাগবে বাস- জনপ্রতি ৮০ টাকা, মাইক্রোবাস/ লেগুনা রিজার্ভ ২০০০-২৫০০ টাকা, অটোরিক্সা- ১ হাজার থেকে ১২০০ টাকা।
জাফলংয়ে থাকার তেমন সুব্যাবস্থা নেই । ঊল্লেখ করার মধ্যে রয়েছে জেলা পরিষদের ললজুরী রেস্ট হাউস (পূর্ব অনুমতি নিতে হবে), শ্রীপুর পিকনিক স্পট, শ্রীপুর বাংলো । এছাড়া জাফলংয়ে থাকার জন্য ব্যাক্তি মালিকানাধীন সাধারণ মানের স্থানীয় কয়েকটি হোটেল রয়েছে ।
এছাড়া জাফলং যাওয়ার পথে আপনি এক পলক ঢুঁ মেরে যেতে পারেন স্বচ্চ নীল জলরাশির অপূর্ব সমারোহ লালাখালে । স্বচ্চ নীল জলরাশি আর দুধারের অপরূপ সৌন্দয। দীর্ঘ নৌপথ ভ্রমনের সাধ যেকোন পর্যটকের কাছে এক দূর্লভ আকর্ষণ । তেমনি এক নির্জন মনকাড়া স্থান লালাখাল । জাফলং যাওয়ার পথে জৈন্তাপুর উপজেলার সারিঘাটের সন্নিকটেই অবস্থিত লালাখাল ।
সারিঘাট থেকে ভারতের চেরাপুঞ্জি পাহাড় থেকে উৎপন্ন হওয়া সারি নদীর স্বচ্ছ নীল জলরাশির উপর দিয়ে নৌকা অথবা স্পিডবোট করে যেতে পারেন লালাখাল । যাওয়ার পথে নীল জলরাশি আর দুধারের অপরূপ সোন্দর্য দেখতে দেখতে দুচোখে পলক ফেলতে মন চাইবে না। ৪৫ মিনিটের নৌকা ভ্রমণ শেষে আপনি পৌঁছে যাবেন এমন এক জায়গায় যেখানে আপনার একপাশে থাকবে নীল জলরাশি আর এক পাশে পাহাড়ী চা বাগানের সবুজের সমারোহ । মুগ্ধ দৃষ্টিতে স্বচ্চ নীল জলরাশি দিকে তাকালে আপনি দেখতে পারেন নদীর তলদেশের অপরুপ দৃশ্য ।
ওহ! সিলেট শহর থেকে জাফলং যাওয়ার পথে চোখের পলক ফেলা যাবেনা। কেন? কারণ আপনার সামনে এবং দুদিকে প্রকৃতি তার রূপ এভাবে মেলে রেখেছে...যে আপনার মনে হবে পলক পড়লে আপনি হয়তো কিছু সৌন্দর্য উপভোগ করা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
-
Nice post...