Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Topics - A-Rahman Dhaly

Pages: [1] 2 3 ... 6
1
Namaj/Salat / একটি ভুল আমল
« on: January 07, 2021, 09:25:01 AM »
ইমাম সাহু সিজদার জন্য সালাম ফেরালে কি মাসবুকও সালাম ফেরাবে?

যে ব্যক্তি ইমামের সাথে পুরো নামায পায়নি; বরং কিছু রাকাত ছুটে গেছে তাকে মাসবুক বলে।

কিছু মানুষকে দেখা যায়, মাসবুক অবস্থায়ও ইমাম সাহু সিজদার জন্য সালাম ফেরালে তারাও ইমামের সাথে সালাম ফেরায়। এটি একটি ভুল আমল।

নিয়ম হল, মাসবুক ব্যক্তি ইমামের সাথে সাহু সিজদার জন্য সালাম ফেরাবে না; বরং সালাম ফিরানো ছাড়া শুধু সাহু সিজদায় শরীক হবে। অবশ্য কখনো ভুলে ইমামের সাথে সাহু সিজদার সালাম ফিরিয়ে ফেললে (কাজটি নিয়মসম্মত না হলেও) নামায ফাসেদ হবে না এবং নিজ নামায শেষে সাহু সিজদাও করতে হবে না। (দ্র. বাদায়েউস সানায়ে ১/৪২২; রদ্দুল মুহতার ২/৮২; হালবাতুল মুজাল্লী ২/৪৫২)

_মাসিক আলকাউসার
_বর্ষ: ১৬,   সংখ্যা: ০৮

2
অর্থহীন-অবিবেচনাপ্রসূত কাজ মুমিনের বৈশিষ্ট্য নয়। মুমিন যে কাজই করবে ভালো-মন্দ চিন্তা করে করবে। মহান আল্লাহ মানুষকে চিন্তা-ভাবনা করার যোগ্যতা এজন্যই দান করেছেন। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, আমাদের এই মুসলিম-সমাজের সর্বস্তরে এমন অনেক জ্ঞানী ও বিচক্ষণ ব্যক্তি আছেন, যারা শান্তি ও আদর্শের পক্ষে, যারা দেশ ও জাতির সত্যিকারের কল্যাণ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করেন। সিদ্ধান্তের জায়গাগুলোতে তাদের সক্রিয় হওয়া উচিত। তাদের একটুখানি তৎপরতাও আল্লাহর ইচ্ছায় দেশ ও জাতির জন্য অনেক কল্যাণকর হতে পারে, অনেক অনিষ্ট-অকল্যাণের দুয়ার বন্ধ করতে পারে। সম্প্রতি দেশে ভাস্কর্য নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, আমরা আশা করি, এক্ষেত্রেও তারা সঠিক বিষয়টি উপলব্ধি করবেন।

মূর্তি ও ভাস্কর্য নিয়ে বিতর্ক এদেশে নতুন নয়। ইতিপূর্বে এ নিয়ে বহু আলোচনা হয়েছে। যা থেকে পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, ইসলামের বিধান অনুসারে কোনো প্রাণীর মূর্তি বা ভাস্কর্য নির্মাণের কোনো সুযোগ নেই। প্রাণীর প্রতিকৃতি নির্মাণ ও এর মর্যাদাপূর্ণ ব্যবহার দুটোই ইসলামে নিষিদ্ধ ও হারাম। পাশাপাশি নিকট অতীতে ভাস্কর্য-বিরোধী বিভিন্ন আন্দোলনে এদেশের মুসলিম জনগণের আবেগ-অনুভূতির বিষয়টিও পরিষ্কারভাবে সামনে এসেছে। কাজেই ইসলামের বিধান এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগণের আবেগ-অনুভূতি- কোনো দিক থেকেই যে বিষয়টি সমর্থনযোগ্য নয় তা একেবারেই স্পষ্ট ও মিমাংসিত।

এমন একটি স্পষ্ট বিষয়কে কেন বারবার ইস্যু বানানো হচ্ছে? রাষ্ট্রযন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে যারা আছেন তাদের ভেবে দেখা দরকার যে, বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করে দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে আঘাত দেয়া তাদের জন্য কতটুকু লাভজনক হবে। এটা কে না জানে যে, কীর্তিমান ব্যক্তিরা অমর থাকেন তাঁদের কর্মের দ্বারা; ভাস্কর্য, ব্যানার বা কারো অনুগ্রহের দ্বারা নয়।

ইসলাম আমাদের শেখায় যে, মানুষমাত্রই মরণশীল; তবে মৃত্যুর পরও মুমিন বান্দার পুণ্যের ধারা অব্যাহত থাকতে পারে। এক্ষেত্রে ধর্মীয় কাজের নির্দেশনা যেমন আছে, তেমনি আছে মানব-সেবামূলক কাজেরও নির্দেশনা। ইসলামী শিক্ষার মানবিক ও বাস্তববাদী দিকটি এখান থেকে ফুটে ওঠে।

আমরা মনে করি, দায়িত্বশীলদের এমন কাজই করা উচিত, যা দেশের জনগণের ঐক্যকে জোরদার করবে এবং শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়ক হবে। এর বিপরীতে এমন কোনো কাজ করা উচিত নয়, যা বিভেদ-বিশৃঙ্খলা ও হানাহানির পরিবেশ তৈরি করে।

ভাস্কর্য-স্থাপনে দেশের উলামায়ে কেরামের বিরোধিতা কোনো রাজনৈতিক পছন্দ-অপছন্দ থেকে নয়; বরং ভাস্কর্য-স্থাপন ইসলামী বিধানের সম্পূর্ণ পরিপন্থী হওয়ার কারণে। আর সেকারণেই ইতিপূর্বে থেমিস বা লালনের ভাস্কর্যের ক্ষেত্রেও উলামায়ে কেরাম সরব হয়েছেন।

রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক যত প্রাণী-মূর্তি বা ভাস্কর্য যত জায়গায় আছে, উলামায়ে কেরাম কোনোটারই পক্ষে নন। ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা এর সবগুলোরই বিলুপ্তি ও উচ্ছেদের দাবি করে আসছেন। এদেশের সর্বজনশ্রদ্ধেয় মরহুম কোনো বুযুর্গের ভাস্কর্য নির্মাণের প্রস্তাবও যদি করা হয় -নাউযু বিল্লাহ- তাহলেও আলিমগণ প্রতিবাদে সরব হবেন। আমাদের দায়িত্বশীলদের বিষয়টা সঠিকভাবে উপলব্ধি করা উচিত এবং সহনশীলতার সাথে বিচার-বিবেচনা করে এমন সিদ্ধান্তই গ্রহণ করা উচিত, যা ইসলামের বিধান ও সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনতার বিশ্বাস ও আবেগের পরিপন্থী না হয়।

সর্বশেষ কথা এই যে, আমাদের সকলকেই এই নশ্বর পৃর্থিবী থেকে চলে যেতে হবে। আমাদের রেখে যাওয়া কর্ম যেন আমাদের জন্য পরকালে শান্তির উপায় হয়, অশান্তি ও আযাবের কারণ না হয়- এ বিষয়েও সচেতন থাকা প্রয়োজন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সুমতি দিন ও সুপথে পরিচালিত করুন- আমীন।

_ মাসিক আলকাউসার
বর্ষ: ১৬,   সংখ্যা: ১১

4
একটি ভুল মাসআলা : সফরের হালতে কি রোযা ভাঙ্গার অনুমতি আছে, না না-রাখার?

শরয়ী সফরে রোযা না রাখার অনুমতি রয়েছে, তবে পরে এই রোযার কাযা আদায় করতে হবে। উত্তম এই যে, শরয়ী সফরেও এই রুখসত অনুযায়ী আমল না করে রোযার হালতে থাকা। কেননা পরে কাযা আদায় করা হলেও তো রমযানের বরকত পাওয়া যাবে না।

এই মাসআলা কেউ কেউ এভাবে বলে থাকেন : ‘সফরের হালতে রোযা ভাঙ্গা জায়েয আছে।’ এভাবে বলা ঠিক নয়। কেননা, এতে ধারণা হয় যে, সফরের হালতে রোযা আরম্ভ করার পরও তা ভেঙ্গে ফেলা জায়েয কিংবা রোযা শুরু করার পর সফরে রওয়ানা হলে রোযা ভঙ্গ করা জায়েয। অথচ এটা ঠিক নয়। রোযা শুরু করার পর তা ভঙ্গ করা জায়েয নয়।

_মাসিক আলকাউসার ।বর্ষ: ০৪,   সংখ্যা: ১০

5
Islam / কুরবানীর মাসায়েল
« on: July 21, 2020, 08:55:06 AM »
কুরবানীর মাসায়েল
মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া

কুরবানী একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি আদায় করা ওয়াজিব।

সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে ব্যক্তি এই ইবাদত পালন করে না তার ব্যাপারে হাদীস শরীফে এসেছে, ‘যার কুরবানীর সামর্থ্য রয়েছে কিন্তু কুরবানী করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।’-মুস্তাদরাকে হাকেম, হাদীস : ৩৫১৯; আত্তারগীব ওয়াত্তারহীব ২/১৫৫

ইবাদতের মূলকথা হল আল্লাহ তাআলার আনুগত্য এবং তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন। তাই যেকোনো ইবাদতের পূর্ণতার জন্য দুটি বিষয় জরুরি। ইখলাস তথা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে পালন করা এবং শরীয়তের নির্দেশনা মোতাবেক মাসায়েল অনুযায়ী সম্পাদন করা। এ উদ্দেশ্যে এখানে কুরবানীর কিছু জরুরি মাসায়েল উল্লেখ হল।

কার উপর কুরবানী ওয়াজিব

মাসআলা : ১. প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যে ১০ যিলহজ্ব ফজর থেকে ১২ যিলহজ্ব সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হবে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব। টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, অলঙ্কার, বসবাস ও খোরাকির প্রয়োজন আসে না এমন জমি, প্রয়োজন অতিরিক্ত বাড়ি, ব্যবসায়িক পণ্য ও অপ্রয়োজনীয় সকল আসবাবপত্র কুরবানীর নেসাবের ক্ষেত্রে হিসাবযোগ্য।

আর নিসাব হল স্বর্ণের ক্ষেত্রে সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি, রূপার ক্ষেত্রে সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি, টাকা-পয়সা ও অন্যান্য বস্ত্তর ক্ষেত্রে নিসাব হল এর মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হওয়া। আর সোনা বা রূপা কিংবা টাকা-পয়সা এগুলোর কোনো একটি যদি পৃথকভাবে নেসাব পরিমাণ না থাকে কিন্তু প্রয়োজন অতিরিক্ত একাধিক বস্ত্ত মিলে সাড়ে বায়ান্ন তোলা রূপার মূল্যের সমপরিমাণ হয়ে যায় তাহলেও তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব।-আলমুহীতুল বুরহানী ৮/৪৫৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৭/৪০৫

নেসাবের মেয়াদ

মাসআলা ২. কুরবানীর নেসাব পুরো বছর থাকা জরুরি নয়; বরং কুরবানীর তিন দিনের মধ্যে যে কোনো দিন থাকলেই কুরবানী ওয়াজিব হবে।-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬, রদ্দুল মুহতার ৬/৩১২

কুরবানীর সময়

মাসআলা : ৩. মোট তিনদিন কুরবানী করা যায়। যিলহজ্বের ১০, ১১ ও ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত। তবে সম্ভব হলে যিলহজ্বের ১০ তারিখেই কুরবানী করা উত্তম। -মুয়াত্তা মালেক ১৮৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৮, ২৩, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৫

নাবালেগের কুরবানী

মাসআলা : ৪. নাবালেগ শিশু-কিশোর তদ্রূপ যে সুস্থমস্তিষ্কসম্পন্ন নয়, নেসাবের মালিক হলেও তাদের উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। অবশ্য তার অভিভাবক নিজ সম্পদ দ্বারা তাদের পক্ষে কুরবানী করলে তা সহীহ হবে।-বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬, রদ্দুল মুহতার ৬/৩১৬

মুসাফিরের জন্য কুরবানী

মাসআলা : ৫.  যে ব্যক্তি কুরবানীর দিনগুলোতে মুসাফির থাকবে (অর্থাৎ ৪৮ মাইল বা প্রায় ৭৮ কিলোমিটার দূরে যাওয়ার নিয়তে নিজ এলাকা ত্যাগ করেছে) তার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়। -ফাতাওয়া কাযীখান ৩/৩৪৪, বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৫, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৫

নাবালেগের পক্ষ থেকে কুরবানী

মাসআলা : ৬. নাবালেগের পক্ষ থেকে কুরবানী দেওয়া অভিভাবকের উপর ওয়াজিব নয়; বরং মুস্তাহাব।-রদ্দুল মুহতার ৬/৩১৫; ফাতাওয়া কাযীখান ৩/৩৪৫

দরিদ্র ব্যক্তির কুরবানীর হুকুম

মাসআলা : ৭. দরিদ্র ব্যক্তির উপর কুরবানী করা ওয়াজিব নয়; কিন্তু সে যদি কুরবানীর নিয়তে কোনো পশু কিনে তাহলে তা কুরবানী করা ওয়াজিব হয়ে যায়। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯২

কুরবানী করতে না পারলে

মাসআলা : ৮. কেউ যদি কুরবানীর দিনগুলোতে ওয়াজিব কুরবানী দিতে না পারে তাহলে কুরবানীর পশু ক্রয় না করে থাকলে তার উপর কুরবানীর উপযুক্ত একটি ছাগলের মূল্য সদকা করা ওয়াজিব। আর যদি পশু ক্রয় করে ছিল, কিন্তু কোনো কারণে কুরবানী দেওয়া হয়নি তাহলে ঐ পশু জীবিত সদকা করে দিবে।-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৪, ফাতাওয়া কাযীখান ৩/৩৪৫

প্রথম দিন কখন থেকে কুরবানী করা যাবে

মাসআলা : ৯. যেসব এলাকার লোকদের উপর জুমা ও ঈদের নামায ওয়াজিব তাদের জন্য ঈদের নামাযের আগে কুরবানী করা জায়েয নয়। অবশ্য বৃষ্টিবাদল বা অন্য কোনো ওজরে যদি প্রথম দিন ঈদের নামায না হয় তাহলে ঈদের নামাযের সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর প্রথম দিনেও কুরবানী করা জায়েয।-সহীহ বুখারী ২/৮৩২, কাযীখান ৩/৩৪৪, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৮

রাতে কুরবানী করা

মাসআলা : ১০.  ১০ ও ১১ তারিখ দিবাগত রাতেও কুরবানী করা জায়েয। তবে দিনে কুরবানী করাই ভালো। -মুসনাদে আহমাদ, হাদীস : ১৪৯২৭; মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/২২, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২০, কাযীখান ৩/৩৪৫, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৩

কুরবানীর উদ্দেশ্যে ক্রয়কৃত পশু সময়ের পর যবাই করলে

মাসআলা : ১১. কুরবানীর দিনগুলোতে যদি জবাই করতে না পারে তাহলে খরিদকৃত পশুই সদকা করে দিতে হবে। তবে যদি (সময়ের পরে) জবাই করে ফেলে তাহলে পুরো গোশত সদকা করে দিতে হবে। এক্ষেত্রে গোশতের মূল্য যদি জীবিত পশুর চেয়ে কমে যায় তাহলে যে পরিমাণ মূল্য হ্রাস পেল তা-ও সদকা করতে হবে।-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০২, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২০-৩২১

কোন কোন পশু দ্বারা কুরবানী করা যাবে

মাসআলা : ১২.  উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয। এসব গৃহপালিত পশু ছাড়া অন্যান্য পশু যেমন হরিণ, বন্যগরু ইত্যাদি দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়। -কাযীখান ৩/৩৪৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৫

নর ও মাদা পশুর কুরবানী

মাসআলা : ১৩. যেসব পশু কুরবানী করা জায়েয সেগুলোর নর-মাদা দুটোই কুরবানী করা যায়। -কাযীখান ৩/৩৪৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৫

কুরবানীর পশুর বয়সসীমা

মাসআলা : ১৪. উট কমপক্ষে ৫ বছরের হতে হবে। গরু ও মহিষ কমপক্ষে ২ বছরের হতে হবে। আর ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে ১ বছরের হতে হবে। তবে ভেড়া ও দুম্বা যদি ১ বছরের কিছু কমও হয়, কিন্তু এমন হৃষ্টপুষ্ট হয় যে, দেখতে ১ বছরের মতো মনে হয় তাহলে তা দ্বারাও কুরবানী করা জায়েয। অবশ্য এক্ষেত্রে কমপক্ষে ৬ মাস বয়সের হতে হবে।

উল্লেখ্য, ছাগলের বয়স ১ বছরের কম হলে কোনো অবস্থাতেই তা দ্বারা কুরবানী জায়েয হবে না। -কাযীখান ৩/৩৪৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৫-২০৬

এক পশুতে শরীকের সংখ্যা

মাসআলা : ১৫. একটি ছাগল, ভেড়া বা দুম্বা দ্বারা শুধু একজনই কুরবানী দিতে পারবে। এমন একটি পশু কয়েকজন মিলে কুরবানী করলে কারোটাই সহীহ হবে না। আর উট, গরু, মহিষে সর্বোচ্চ সাত জন শরীক হতে পারবে। সাতের অধিক শরীক হলে কারো কুরবানী সহীহ হবে না। -সহীহ মুসলিম ১৩১৮, মুয়াত্তা মালেক ১/৩১৯, কাযীখান ৩/৩৪৯, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৭-২০৮

সাত শরীকের কুরবানী

মাসআলা : ১৬. সাতজনে মিলে কুরবানী করলে সবার অংশ সমান হতে হবে। কারো অংশ এক সপ্তমাংশের কম হতে পারবে না। যেমন কারো আধা ভাগ, কারো দেড় ভাগ। এমন হলে কোনো শরীকের কুরবানীই সহীহ হবে না। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৭

মাসআলা : ১৭. উট, গরু, মহিষ সাত ভাগে এবং সাতের কমে যেকোনো সংখ্যা যেমন দুই, তিন, চার, পাঁচ ও ছয় ভাগে কুরবানী করা জায়েয। -সহীহ মুসলিম ১৩১৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৭

কোনো অংশীদারের গলদ নিয়ত হলে

মাসআলা : ১৮. যদি কেউ আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কুরবানী না করে শুধু গোশত খাওয়ার নিয়তে কুরবানী করে তাহলে তার কুরবানী সহীহ হবে না। তাকে অংশীদার বানালে শরীকদের কারো কুরবানী হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে শরীক নির্বাচন করতে হবে। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৮, কাযীখান ৩/৩৪৯

কুরবানীর পশুতে আকীকার অংশ

মাসআলা : ১৯. কুরবানীর গরু, মহিষ ও উটে আকীকার নিয়তে শরীক হতে পারবে। এতে কুরবানী ও আকীকা দুটোই সহীহ হবে।-তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/১৬৬, রদ্দুল মুহতার ৬/৩৬২

মাসআলা : ২০. শরীকদের কারো পুরো বা অধিকাংশ উপার্জন যদি হারাম হয় তাহলে কারো কুরবানী সহীহ হবে না।

মাসআলা : ২১. যদি কেউ গরু, মহিষ বা উট একা কুরবানী দেওয়ার নিয়তে কিনে আর সে ধনী হয় তাহলে ইচ্ছা করলে অন্যকে শরীক করতে পারবে। তবে এক্ষেত্রে একা কুরবানী করাই শ্রেয়। শরীক করলে সে টাকা সদকা করে দেওয়া উত্তম। আর যদি ওই ব্যক্তি এমন গরীব হয়, যার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব নয়, তাহলে সে অন্যকে শরীক করতে পারবে না। এমন গরীব ব্যক্তি যদি কাউকে শরীক করতে চায় তাহলে পশু ক্রয়ের সময়ই নিয়ত করে নিবে।-কাযীখান ৩/৩৫০-৩৫১, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১০

কুরবানীর উত্তম পশু

মাসআলা : ২২. কুরবানীর পশু হৃষ্টপুষ্ট হওয়া উত্তম।-মুসনাদে আহমদ ৬/১৩৬, আলমগীরী ৫/৩০০, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৩

খোড়া পশুর কুরবানী

মাসআলা : ২৩. যে পশু তিন পায়ে চলে, এক পা মাটিতে রাখতে পারে না বা ভর করতে পারে না এমন পশুর কুরবানী জায়েয নয়। -জামে তিরমিযী ১/২৭৫, সুনানে আবু দাউদ ৩৮৭, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৪, রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৩, আলমগীরী ৫/২৯৭

রুগ্ন ও দুর্বল পশুর কুরবানী

মাসআলা : ২৪. এমন শুকনো দুর্বল পশু, যা জবাইয়ের স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারে না তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়। -জামে তিরমিযী ১/২৭৫, আলমগীরী ৫/২৯৭, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৪

দাঁত নেই এমন পশুর কুরবানী

মাসআলা : ২৫. যে পশুর একটি দাঁতও নেই বা এত বেশি দাঁত পড়ে গেছে যে, ঘাস বা খাদ্য চিবাতে পারে না এমন পশু দ্বারাও কুরবানী করা জায়েয নয়। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৫, আলমগীরী ৫/২৯৮

যে পশুর শিং ভেঙ্গে বা ফেটে গেছে

মাসআলা : ২৬. যে পশুর শিং একেবারে গোড়া থেকে ভেঙ্গে গেছে, যে কারণে

মস্তিষ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে পশুর কুরবানী জায়েয নয়। পক্ষান্তরে যে পশুর অর্ধেক শিং বা কিছু শিং ফেটে বা ভেঙ্গে গেছে বা শিং একেবারে উঠেইনি সে পশু কুরবানী করা জায়েয। -জামে তিরমিযী ১/২৭৬, সুনানে আবু দাউদ ৩৮৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬, রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৪, আলমগীরী ৫/২৯৭

কান বা লেজ কাটা পশুর কুরবানী

মাসআলা : ২৭. যে পশুর লেজ বা কোনো কান অর্ধেক বা তারও বেশি কাটা সে পশুর কুরবানী জায়েয নয়। আর যদি অর্ধেকের বেশি থাকে তাহলে তার কুরবানী জায়েয। তবে জন্মগতভাবেই যদি কান ছোট হয় তাহলে অসুবিধা নেই। -জামে তিরমিযী ১/২৭৫, মুসনাদে আহমদ ১/৬১০, ইলাউস সুনান ১৭/২৩৮, কাযীখান ৩/৩৫২, আলমগীরী ৫/২৯৭-২৯৮

অন্ধ পশুর কুরবানী

মাসআলা : ২৮. যে পশুর দুটি চোখই অন্ধ বা এক চোখ পুরো নষ্ট সে পশু কুরবানী করা জায়েয নয়। -জামে তিরমিযী ১/২৭৫, কাযীখান ৩/৩৫২, আলমগীরী ২৯৭, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৪

নতুন পশু ক্রয়ের পর হারানোটা পাওয়া গেলে

মাসআলা : ২৯. কুরবানীর পশু হারিয়ে যাওয়ার পরে যদি আরেকটি কেনা হয় এবং পরে হারানোটিও পাওয়া যায় তাহলে কুরবানীদাতা গরীব হলে (যার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়) দুটি পশুই কুরবানী করা ওয়াজিব। আর ধনী হলে কোনো একটি কুরবানী করলেই হবে। তবে দুটি কুরবানী করাই উত্তম। -সুনানে বায়হাকী ৫/২৪৪, ইলাউস সুনান ১৭/২৮০, বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৯, কাযীখান ৩/৩৪৭

গর্ভবতী পশুর কুরবানী

মাসআলা : ৩০. গর্ভবতী পশু কুরবানী করা জায়েয। জবাইয়ের পর যদি বাচ্চা জীবিত পাওয়া যায় তাহলে সেটাও জবাই করতে হবে। তবে প্রসবের সময় আসন্ন হলে সে পশু কুরবানী করা মাকরূহ। -কাযীখান ৩/৩৫০

পশু কেনার পর দোষ দেখা দিলে

মাসআলা : ৩১. কুরবানীর নিয়তে ভালো পশু কেনার পর যদি তাতে এমন কোনো দোষ দেখা দেয় যে কারণে কুরবানী জায়েয হয় না তাহলে ওই পশুর কুরবানী সহীহ হবে না। এর স্থলে আরেকটি পশু কুরবানী করতে হবে। তবে ক্রেতা গরীব হলে ত্রুটিযুক্ত পশু দ্বারাই কুরবানী করতে পারবে। -খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৯, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬, ফাতাওয়া নাওয়াযেল ২৩৯, রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৫

পশুর বয়সের ব্যাপারে বিক্রেতার কথা

মাসআলা : ৩২. যদি বিক্রেতা কুরবানীর পশুর বয়স পূর্ণ হয়েছে বলে স্বীকার করে আর পশুর শরীরের অবস্থা দেখেও তাই মনে হয় তাহলে বিক্রেতার কথার উপর নির্ভর করে পশু কেনা এবং তা দ্বারা কুরবানী করা যাবে। -আহকামে ঈদুল আযহা, মুফতী মুহাম্মাদ শফী রহ. ৫

বন্ধ্যা পশুর কুরবানী

মাসআলা : ৩৩. বন্ধ্যা পশুর কুরবানী জায়েয। -রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৫

নিজের কুরবানীর পশু নিজে জবাই করা

মাসআলা : ৩৪. কুরবানীর পশু নিজে জবাই করা উত্তম। নিজে না পারলে অন্যকে দিয়েও জবাই করাতে পারবে। এক্ষেত্রে কুরবানীদাতা পুরুষ হলে জবাইস্থলে তার উপস্থিত থাকা ভালো। -মুসনাদে আহমদ ২২৬৫৭, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২২-২২৩, আলমগীরী ৫/৩০০, ইলাউস সুনান ১৭/২৭১-২৭৪

জবাইয়ে একাধিক ব্যক্তি শরীক হলে

মাসআলা : ৩৫. অনেক সময় জবাইকারীর জবাই সম্পন্ন হয় না, তখন কসাই বা অন্য কেউ জবাই সম্পন্ন করে থাকে। এক্ষেত্রে অবশ্যই উভয়কেই নিজ নিজ যবাইয়ের আগে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ পড়তে হবে। যদি কোনো একজন না পড়ে তবে ওই কুরবানী সহীহ হবে না এবং জবাইকৃত পশুও হালাল হবে না। -রদ্দুল মুহতার ৬/৩৩৪

কুরবানীর পশু থেকে জবাইয়ের আগে উপকৃত হওয়া

মাসআলা : ৩৬. কুরবানীর পশু কেনার পর বা নির্দিষ্ট করার পর তা থেকে উপকৃত হওয়া জায়েয নয়। যেমন হালচাষ করা, আরোহণ করা, পশম কাটা ইত্যাদি।সুতরাং কুরবানীর পশু দ্বারা এসব করা যাবে না। যদি করে তবে পশমের মূল্য, হালচাষের মূল্য ইত্যাদি সদকা করে দিবে।-মুসনাদে আহমদ ২/১৪৬, নায়লুল আওতার ৩/১৭২, ইলাউস সুনান ১৭/২৭৭, কাযীখান ৩/৩৫৪, আলমগীরী ৫/৩০০

কুরবানীর পশুর দুধ পান করা

মাসআলা : ৩৭. কুরবানীর পশুর দুধ পান করা যাবে না। যদি জবাইয়ের সময় আসন্ন হয় আর দুধ দোহন না করলে পশুর

কষ্ট হবে না বলে মনে হয় তাহলে দোহন করবে না। প্রয়োজনে ওলানে ঠান্ডা পানি ছিটিয়ে দেবে। এতে দুধের চাপ কমে যাবে। যদি দুধ দোহন করে ফেলে তাহলে তা সদকা করে দিতে হবে। নিজে পান করে থাকলে মূল্য সদকা করে দিবে। -মুসনাদে আহমদ ২/১৪৬, ইলাউস সুনান ১৭/২৭৭,

রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৯, কাযীখান ৩/৩৫৪, আলমগীরী ৫/৩০১

কোনো শরীকের মৃত্যু ঘটলে

মাসআলা : ৩৮. কয়েকজন মিলে কুরবানী করার ক্ষেত্রে জবাইয়ের আগে কোনো শরীকের মৃত্যু হলে তার ওয়ারিসরা যদি মৃতের পক্ষ থেকে কুরবানী করার অনুমতি দেয় তবে তা জায়েয হবে। নতুবা ওই শরীকের টাকা ফেরত দিতে হবে। অবশ্য তার

স্থলে অন্যকে শরীক করা যাবে। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৯, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২৬, কাযীখান ৩/৩৫১

কুরবানীর পশুর বাচ্চা হলে

মাসআলা : ৩৯. কুরবানীর পশু বাচ্চা দিলে ওই বাচ্চা জবাই না করে জীবিত সদকা করে দেওয়া উত্তম। যদি সদকা না করে তবে কুরবানীর পশুর সাথে বাচ্চাকেও জবাই করবে এবং গোশত সদকা করে দিবে।-কাযীখান ৩/৩৪৯, আলমগীরী ৫/৩০১, রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৩

মৃতের পক্ষ থেকে কুরবানী

মাসআলা : ৪০. মৃতের পক্ষ থেকে কুরবানী করা জায়েয। মৃত ব্যক্তি যদি ওসিয়ত না করে থাকে তবে সেটি নফল কুরবানী হিসেবে গণ্য হবে। কুরবানীর স্বাভাবিক গোশতের মতো তা নিজেরাও খেতে পারবে এবং আত্মীয়-স্বজনকেও দিতে পারবে। আর যদি মৃত ব্যক্তি কুরবানীর ওসিয়ত করে গিয়ে থাকে তবে এর গোশত নিজেরা খেতে পারবে না। গরীব-মিসকীনদের মাঝে সদকা করে দিতে হবে। -মুসনাদে আহমদ ১/১০৭, হাদীস ৮৪৫, ইলাউস সুনান ১৭/২৬৮, রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬, কাযীখান ৩/৩৫২

কুরবানীর গোশত জমিয়ে রাখা

মাসআলা : ৪১. কুরবানীর গোশত তিনদিনেরও অধিক জমিয়ে রেখে খাওয়া জায়েয।-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪, সহীহ মুসলিম ২/১৫৯, মুয়াত্তা মালেক ১/৩১৮, ইলাউস সুনান ১৭/২৭০

কুরবানীর গোশত বণ্টন

মাসআলা : ৪২. শরীকে কুরবানী করলে ওজন করে গোশত বণ্টন করতে হবে। অনুমান করে ভাগ করা জায়েয নয়।-আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৭, কাযীখান ৩/৩৫১

মাসআলা : ৪৩. কুরবানীর গোশতের এক তৃতীয়াংশ গরীব-মিসকীনকে এবং এক তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দেওয়া উত্তম। অবশ্য পুরো গোশত যদি নিজে রেখে দেয় তাতেও কোনো অসুবিধা নেই। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪, আলমগীরী ৫/৩০০

গোশত, চর্বি বিক্রি করা

মাসআলা : ৪৪. কুরবানীর গোশত, চর্বি ইত্যাদি বিক্রি করা জায়েয নয়। বিক্রি করলে পূর্ণ মূল্য সদকা করে দিতে হবে। -ইলাউস সুনান ১৭/২৫৯, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫, কাযীখান ৩/৩৫৪, আলমগীরী ৫/৩০১

জবাইকারীকে চামড়া, গোশত দেওয়া

মাসআলা : ৪৫. জবাইকারী, কসাই বা কাজে সহযোগিতাকারীকে চামড়া, গোশত বা কুরবানীর পশুর কোনো কিছু পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া জায়েয হবে না। অবশ্য পূর্ণ পারিশ্রমিক দেওয়ার পর পূর্বচুক্তি ছাড়া হাদিয়া হিসাবে গোশত বা তরকারী দেওয়া যাবে।

জবাইয়ের অস্ত্র

মাসআলা : ৪৬. ধারালো অস্ত্র দ্বারা জবাই করা উত্তম।-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৩

পশু নিস্তেজ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা

মাসআলা : ৪৭. জবাইয়ের পর পশু

নিস্তেজ হওয়ার আগে চামড়া খসানো বা অন্য কোনো অঙ্গ কাটা মাকরূহ। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৩

অন্য পশুর সামনে জবাই করা

মাসআলা : ৪৮. এক পশুকে অন্য পশুর সামনে জবাই করবে না। জবাইয়ের সময় প্রাণীকে অধিক কষ্ট না দেওয়া।

কুরবানীর গোশত বিধর্মীকে দেওয়া

মাসআলা : ৪৯. কুরবানীর গোশত হিন্দু ও অন্য ধর্মাবলম্বীকে দেওয়া জায়েয।-ইলাউস সুনান ৭/২৮৩, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০০

অন্য কারো ওয়াজিব কুরবানী আদায় করতে চাইলে

মাসআলা : ৫০. অন্যের ওয়াজিব কুরবানী দিতে চাইলে ওই ব্যক্তির অনুমতি নিতে হবে। নতুবা ওই ব্যক্তির কুরবানী আদায় হবে না। অবশ্য স্বামী বা পিতা যদি স্ত্রী বা সন্তানের বিনা অনুমতিতে তার পক্ষ থেকে কুরবানী করে তাহলে তাদের কুরবানী আদায় হয়ে যাবে। তবে অনুমতি নিয়ে আদায় করা ভালো।

কুরবানীর পশু চুরি হয়ে গেলে বা মরে গেলে

মাসআলা : ৫১. কুরবানীর পশু যদি চুরি হয়ে যায় বা মরে যায় আর কুরবানীদাতার উপর পূর্ব থেকে কুরবানী ওয়াজিব থাকে তাহলে আরেকটি পশু কুরবানী করতে হবে। গরীব  হলে (যার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়) তার জন্য আরেকটি পশু কুরবানী করা ওয়াজিব নয়।-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬, খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৯

পাগল পশুর কুরবানী

মাসআলা : ৫২. পাগল পশু কুরবানী করা জায়েয। তবে যদি এমন পাগল হয় যে, ঘাস পানি দিলে খায় না এবং মাঠেও চরে না তাহলে সেটার কুরবানী জায়েয হবে না। -আননিহায়া ফী গরীবিল হাদীস ১/২৩০, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২১৬, ইলাউস সুনান ১৭/২৫২

নিজের কুরবানীর গোশত খাওয়া

মাসআলা : ৫৩. কুরবানীদাতার জন্য নিজ কুরবানীর গোশত খাওয়া মুস্তাহাব। -সূরা হজ্ব ২৮, সহীহ মুসলিম ২২/১৫৯, মুসনাদে আহমদ, হাদীস ৯০৭৮, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪

ঋণ করে কুরবানী করা

মাসআলা : ৫৪. কুরবানী ওয়াজিব এমন ব্যক্তিও ঋণের টাকা দিয়ে কুরবানী করলে ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। তবে সুদের উপর ঋণ নিয়ে কুরবানী করা যাবে না।

হাজীদের উপর ঈদুল আযহার কুরবানী

মাসআলা : ৫৫. যেসকল হাজী কুরবানীর দিনগুলোতে মুসাফির থাকবে তাদের উপর ঈদুল আযহার কুরবানী ওয়াজিব নয়। কিন্তু যে হাজী কুরবানীর কোনো দিন মুকীম থাকবে সামর্থ্যবান হলে তার উপর ঈদুল আযহার কুরবানী করা জরুরি হবে। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৩, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৫, বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৫, ইমদাদুল ফাতাওয়া ২/১৬৬

নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে কুরবানী করা

মাসআলা : ৫৬. সামর্থ্যবান ব্যক্তির রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকে কুরবানী করা উত্তম। এটি বড় সৌভাগ্যের বিষয়ও বটে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী রা.কে তার পক্ষ থেকে কুরবানী করার ওসিয়্যত করেছিলেন। তাই তিনি প্রতি বছর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পক্ষ থেকেও কুরবানী দিতেন। -সুনানে আবু দাউদ ২/২৯, জামে তিরমিযী ১/২৭৫, ইলাউস সুনান ১৭/২৬৮, মিশকাত ৩/৩০৯

কোন দিন কুরবানী করা উত্তম

মাসআলা : ৫৭. ১০, ১১ ও ১২ এ তিন দিনের মধ্যে প্রথম দিন কুরবানী করা অধিক উত্তম। এরপর দ্বিতীয় দিন, এরপর তৃতীয় দিন। -রদ্দুল মুহতার ৬/৩১৬

খাসীকৃত ছাগল দ্বারা কুরবানী

মাসআলা : ৫৮. খাসিকৃত ছাগল দ্বারা কুরবানী করা উত্তম। -ফাতহুল কাদীর ৮/৪৯৮, মাজমাউল আনহুর ৪/২২৪, ইলাউস সুনান ১৭/৪৫৩

জীবিত ব্যক্তির নামে কুরবানী

মাসআলা : ৫৯. যেমনিভাবে মৃতের পক্ষ থেকে ঈসালে সওয়াবের উদ্দেশ্যে কুরবানী করা জায়েয তদ্রূপ জীবিত ব্যক্তির পক্ষ থেকে তার ইসালে সওয়াবের জন্য নফল কুরবানী করা জায়েয। এ কুরবানীর গোশত দাতা ও তার পরিবারও খেতে পারবে।

বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তির কুরবানী অন্যত্রে করা

মাসআলা : ৬০. বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তির জন্য নিজ দেশে বা অন্য কোথাও কুরবানী করা জায়েয।

কুরবানীদাতা ভিন্ন স্থানে থাকলে কখন জবাই করবে

মাসআলা : ৬১. কুরবানীদাতা এক স্থানে আর কুরবানীর পশু ভিন্ন স্থানে থাকলে কুরবানীদাতার ঈদের নামায পড়া বা না পড়া ধর্তব্য নয়; বরং পশু যে এলাকায় আছে ওই এলাকায় ঈদের জামাত হয়ে গেলে পশু জবাই করা যাবে। -আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৮

কুরবানীর চামড়া বিক্রির অর্থ সাদকা করা

মাসআলা : ৬২. কুরবানীর চামড়া কুরবানীদাতা নিজেও ব্যবহার করতে পারবে। তবে কেউ যদি নিজে ব্যবহার না করে বিক্রি করে তবে বিক্রিলব্ধ মূল্য পুরোটা সদকা করা জরুরি। -আদ্দুররুল মুখতার, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০১

কুরবানীর চামড়া বিক্রির নিয়ত

মাসআলা : ৬৩. কুরবানীর পশুর চামড়া বিক্রি করলে মূল্য সদকা করে দেওয়ার নিয়তে বিক্রি করবে। সদকার নিয়ত না করে নিজের খরচের নিয়ত করা নাজায়েয ও গুনাহ। নিয়ত যা-ই হোক বিক্রিলব্ধ অর্থ পুরোটাই সদকা করে দেওয়া জরুরি। -ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০১, কাযীখান ৩/৩৫৪

কুরবানীর শেষ সময়ে মুকীম হলে

মাসআলা : ৬৪. কুরবানীর সময়ের প্রথম দিকে মুসাফির থাকার পরে ৩য় দিন কুরবানীর সময় শেষ হওয়ার পূর্বে মুকীম হয়ে গেলে তার উপর কুরবানী ওয়াজিব হবে। পক্ষান্তরে প্রথম দিনে মুকীম ছিল অতপর তৃতীয় দিনে মুসাফির হয়ে গেছে তাহলেও তার উপর কুরবানী ওয়াজিব থাকবে না। অর্থাৎ সে কুরবানী না দিলে গুনাহগার হবে না। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/১৯৬, ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৬, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৯

কুরবানীর পশুতে ভিন্ন ইবাদতের নিয়তে শরীক হওয়া

মাসআলা : ৬৫. এক কুরবানীর পশুতে আকীকা, হজ্বের কুরবানীর নিয়ত করা যাবে। এতে প্রত্যেকের নিয়তকৃত ইবাদত আদায় হয়ে যাবে।-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৯, রদ্দুল মুহতার ৬/৩২৬, আলমাবসূত সারাখছী ৪/১৪৪, আলইনায়া ৮/৪৩৫-৩৪৬, আলমুগনী ৫/৪৫৯

কুরবানীর গোশত দিয়ে খানা শুরু করা

মাসআলা : ৬৬. ঈদুল আযহার দিন সর্বপ্রথম নিজ কুরবানীর গোশত দিয়ে খানা শুরু করা সুন্নত। অর্থাৎ সকাল থেকে কিছু না খেয়ে প্রথমে কুরবানীর গোশত খাওয়া সুন্নত। এই সুন্নত শুধু ১০ যিলহজ্বের জন্য। ১১ বা ১২ তারিখের গোশত দিয়ে খানা শুরু করা সুন্নত নয়। -জামে তিরমিযী ১/১২০, শরহুল মুনয়া ৫৬৬, আদ্দুররুল মুখতার ২/১৭৬, আলবাহরুর রায়েক ২/১৬৩

কুরবানীর পশুর হাড় বিক্রি

মাসআলা : ৬৭. কুরবানীর মৌসুমে অনেক মহাজন কুরবানীর হাড় ক্রয় করে থাকে। টোকাইরা বাড়ি বাড়ি থেকে হাড় সংগ্রহ করে তাদের কাছে বিক্রি করে। এদের ক্রয়-বিক্রয় জায়েয। এতে কোনো অসুবিধা নেই। কিন্তু কোনো কুরবানীদাতার জন্য নিজ কুরবানীর কোনো কিছু এমনকি হাড়ও বিক্রি করা জায়েয হবে না। করলে মূল্য সদকা করে দিতে হবে। আর জেনে শুনে মহাজনদের জন্য এদের কাছ থেকে ক্রয় করাও বৈধ হবে না। -বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৫, কাযীখান ৩/৩৫৪, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/৩০১

রাতে কুরবানী করা

মাসআলা : ৬৮.  ১০ ও ১১ তারিখ দিবাগত রাতে কুরবানী করা জায়েয। তবে রাতে আলোস্বল্পতার দরুণ জবাইয়ে ত্রুটি হতে পারে বিধায় রাতে জবাই করা অনুত্তম। অবশ্য পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকলে রাতে জবাই করতে কোনো অসুবিধা নেই। -ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৩৪৫, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩২০, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২৯৬, আহসানুল ফাতাওয়া ৭/৫১০

কাজের লোককে কুরবানীর গোশত খাওয়ানো

মাসআলা : ৬৯. কুরবানীর পশুর কোনো কিছু পারিশ্রমিক হিসাবে দেওয়া জায়েয নয়। গোশতও পারিশ্রমিক হিসেবে কাজের লোককে দেওয়া যাবে না। অবশ্য এ সময় ঘরের অন্যান্য সদস্যদের মতো কাজের লোকদেরকেও গোশত খাওয়ানো যাবে।-আহকামুল কুরআন জাস্সাস ৩/২৩৭, বাদায়েউস সানায়ে ৪/২২৪, আলবাহরুর রায়েক ৮/৩২৬, ইমদাদুল মুফতীন

জবাইকারীকে পারিশ্রমিক দেওয়া

মাসআলা : ৭০. কুরবানী পশু জবাই করে পারিশ্রমিক দেওয়া-নেওয়া জায়েয। তবে কুরবানীর পশুর কোনো কিছু পারিশ্রমিক হিসাবে দেওয়া যাবে না। -কিফায়াতুল মুফতী ৮/২৬৫

মোরগ কুরবানী করা 

মাসআলা : ৭১. কোনো কোনো এলাকায় দরিদ্রদের মাঝে মোরগ কুরবানী করার প্রচলন আছে। এটি না জায়েয। কুরবানীর দিনে মোরগ জবাই করা নিষেধ নয়, তবে কুরবানীর নিয়তে করা যাবে না। -খুলাসাতুল ফাতাওয়া ৪/৩১৪, ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৬/২৯০, আদ্দুররুল মুখতার ৬/৩১৩, ফাতাওয়া হিন্দিয়া ৫/২০০


সুত্রঃ মাসিক আলকাউসার
বর্ষ: ০৮, সংখ্যা: ০৯

6
জরুরীঃ
(কুরবানী দিচ্ছি, শুধু গোশত খাচ্ছি,= সওয়াব শুন্য ? )

<> কোনো কুরবানীর অংশীদারের উপার্জন হারাম বা গলদ নিয়ত হলেঃ

**মাসআলা : ১৮. যদি কেউ আল্লাহ তাআলার হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে কুরবানী না করে শুধু গোশত খাওয়ার নিয়তে কুরবানী করে তাহলে তার কুরবানী সহীহ হবে না।

**মাসআলা : ২০. শরীকদের কারো পুরো বা অধিকাংশ উপার্জন যদি হারাম হয় তাহলে কারো কুরবানী সহীহ হবে না।

তাকে অংশীদার বানালে শরীকদের কারো কুরবানী হবে না। তাই অত্যন্ত সতর্কতার সাথে শরীক নির্বাচন করতে হবে।
-বাদায়েউস সানায়ে ৪/২০৮, কাযীখান ৩/৩৪৯

সুত্রঃ মাসিক আলকাউসার
বর্ষ: ০৮, সংখ্যা: ০৯

7
প্রচলিত ভুল
একটি কুফরী বাক্য
আল্লাহ আমার সন্তান ছাড়া আর কাউকে দেখল না!

মা-বাবার জন্য সন্তানের বিয়োগ-বেদনা অসহনীয়। ফলে সন্তানের মৃত্যুতে কোনো কোনো মা-বাবার মুখ থেকে এমন কথা বের হয়ে যায়, যা কুফরী কথা। যেমন সন্তানের মৃত্যুতে কোনো কোনো মা-বাবাকে বলতে শোনা যায়- “আল্লাহ আমার সন্তান ছাড়া আর কাউকে দেখল না।”

মুমিন এমন কথা বলতে পারে না। দ্বীনী জ্ঞান, সহীহ দ্বীনী বুঝ ও ভারসাম্যের অভাবেই মানুষ এমন কথা বলে ফেলে। এটি একটি কুফরী বাক্য, যা আল্লাহর ফয়সালার উপর আপত্তি ও অভিযোগের বাক্য।

সন্তান আল্লাহর দান। তিনি যাকে ইচ্ছা, সন্তান দান করেন। যাকে ইচ্ছা, দান করেন না। তেমনি সন্তান দেওয়ার পর সন্তানকে জীবিত রাখা বা নিয়ে যাওয়াও আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আর এ সন্তান তো আল্লাহই অনুগ্রহ করে দান করেছিলেন, তিনিই আবার নিয়ে গেছেন। তাছাড়া এতে অনেক হেকমতও নিহিত থাকে, যা আমাদের জানা নেই। সুতরাং আল্লাহর ফয়সালা মেনে নেওয়া ও সবর করাই মুমিনের শান ও নবীজীর শিক্ষা। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনো এক কন্যা খবর পাঠালেন- তার এক সন্তান মৃতপ্রায় অবস্থা। তখন নবীজী খবরদাতাকে বললেন, তুমি গিয়ে তাকে বল-

إِنّ لِلهِ مَا أَخَذَ وَلَهُ مَا أَعْطَى، وَكُلّ شَيْءٍ عِنْدَهُ بِأَجَلٍ مُسَمّى، فَمُرْهَا فَلْتَصْبِرْ وَلْتَحْتَسِبْ.

আল্লাহ যাকে নিয়ে যান সেও আল্লাহর, যাকে রাখেন সেও তাঁর। আর সবকিছুর জন্যই তাঁর কাছে রয়েছে নির্দিষ্ট সময়সীমা। সুতরাং তুমি তাকে ধৈর্য ধারণ করতে বল এবং সওয়াবের আশা করতে বল।

পরে নবীজী তাকে দেখতে গেলেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯২৩

কারো মৃত্যুতে মাতম করা, জামা-কাপড় ছেঁড়া, গাল চাপড়ানো, জাহেলী কথাবার্তা বলা- হাদীস শরীফে এগুলোর ব্যাপারে ধমকি এসেছে। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-

لَيْسَ مِنّا مَنْ لَطَمَ الخُدُودَ، وَشَقّ الجُيُوبَ، وَدَعَا بِدَعْوَى الجَاهِلِيّةِ.

যে (কারো মৃত্যুশোকে বিলাপ করে) গাল চাপড়ায়, জামা ছেঁড়ে এবং জাহেলী যুগের মত বিভিন্ন (অন্যায়) কথা বলে সে আমাদের দলভুক্ত নয়। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১২৯৪

তাহলে কি সন্তান বা কারো বিয়োগ-বেদনায় কাঁদাও যাবে না? হাঁ, কাঁদা যাবে, তবে বিলাপ করা এবং জাহেলী কথাবার্তা বলা যাবে না। নিজ সন্তানের বিয়োগ-বেদনায় নবীজীও কেঁদেছেন, কিন্তু সাথে সাথে সতর্কও করে দিয়েছেন- এ অবস্থায়ও আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এমন কথা বলা যাবে না। নবীজীর সন্তান ইবরাহীম রা.-এর মৃত্যুর সময় নবীজী কাঁদছিলেন। এ দেখে আবদুর রহমান ইবনে আউফ রা. বললেন, আপনিও কাঁদছেন আল্লাহর রাসূল! (তিনি ধারণা করেছিলেন, এ সাধারণ কান্নাও নিষিদ্ধ বিলাপের অন্তর্ভুক্ত।)। তখন নবীজী বললেন, (এটি বিলাপ নয়) এ তো মানুষের মনের দয়া-মায়া(-এর স্বাভাবিক প্রকাশ ও কষ্টের অশ্রæ। এতে সমস্যা নেই)। তারপর বললেন-

إِنّ العَيْنَ تَدْمَعُ، وَالقَلْبَ يَحْزَنُ، وَلاَ نَقُولُ إِلّا مَا يَرْضَى رَبّنَا، وَإِنّا بِفِرَاقِكَ يَا إِبْرَاهِيمُ لَمَحْزُونُونَ.

চোখ অশ্রæসজল, হৃদয় ব্যথিত। কিন্তু আমাদের রব অসন্তুষ্ট হন- আমরা এমন কথা বলব না। হে ইবরাহীম! তোমার বিয়োগে আমরা বড়ই ব্যথিত। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৩০৩

সুতরাং কারো মৃত্যুতেই আমরা বিলাপ করব না এবং আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন এমন কথা বলব না।  বরং ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন বলব এবং সবর করব, যার বিনিময়ে আল্লাহ জান্নাত দিবেন। হাদীসে কুদসীতে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ তাআলা বলেন-

مَا لِعَبْدِي المُؤْمِنِ عِنْدِي جَزَاءٌ، إِذَا قَبَضْتُ صَفِيّهُ مِنْ أَهْلِ الدّنْيَا ثُمّ احْتَسَبَهُ، إِلّا الجَنّةُ.

যখন আমি আমার মুমিন বান্দার প্রিয়জনকে উঠিয়ে নিই আর সে (ছবর করে এবং) সওয়াবের আশা রাখে; কেবল জান্নাতই হতে পারে এর প্রতিদান। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৪২৪

_মাসিক আলকাউসার

8
প্রচলিত ভুল
একটি ভিত্তিহীন বর্ণনা
দাওয়াতের কাজের বিশেষ ফযীলত

কিছু কিছু মানুষকে দাওয়াতের কাজের ফযীলত হিসেবে নি¤েœাক্ত কথা বলতে শোনা যায়-

দাওয়াতের কাজে বের হয়ে এক পা ফেলার পর অপর পা ফেলার সাথে সাথেই আল্লাহ তাআলা তার পূর্বজীবনের গুনাহ মাফ করে দিবেন। তার আমলনামায় ১৭ জন আলেম, ২৩ জন মিসকীন, ৩০ জন শহীদের সওয়াব লিখে দিবেন এবং আল্লাহ তাকে নিজে হিসাব দিয়ে জান্নাতে পাঠিয়ে দিবেন।

এটি সম্পূর্ণ একটি বানোয়াট কথা। এ ধরনের কথা বলা ও প্রচার করা মারাত্নক গুনাহের কাজ। এমন মনগড়া কথাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাথে সম্পৃক্ত করা এবং হাদীস হিসেবে প্রচার করা কবীরা গুনাহ। এ থেকে বেঁচে থাকা আবশ্যক।

আল্লাহর দিকে মানুষকে ডাকার ফযীলত বিষয়ে কুরআনের আয়াত ও সহীহ হাদীস রয়েছে। সেগুলোই বলতে হবে; এ ধরনের মনগড়া ফযীলতের কথা বলা যাবে না। এ থেকে বেঁচে থাকা জরুরি।

_ মাসিক আলকাউসার

9
একটি ভুল আমল
কবরে রাখার পর মায়্যেতের শুধু চেহারা কেবলামুখী করে দেওয়া

কিছুদিন আগে একটি দাফনে শরীক ছিলাম। মায়্যেতকে কবরে রাখার জন্য যারা কবরে নেমেছিলেন তাদের মধ্যে একজন মাওলানা সাহেবও ছিলেন। তিনি চেষ্টা করছিলেন- মায়্যেতকে ডান কাত করে কেবলামুখী করে রাখার। ভাবছিলেন, কী করা যায়! কারণ, কবরটি সেভাবে খনন করা হয়নি, যেভাবে করলে মায়্যেতকে সহজে কেবলামুখী করে রাখা যায়। এমনসময় একজন সাধারণ লোক বলে উঠল- এর দরকার কী? শুধু চেহারা কেবলামুখী করে দিন!

ঐ ব্যক্তির মত আমাদের দেশের অনেকেরই ধারণা, মায়্যেতকে কবরে রাখার সময় চিত করে শুইয়ে শুধু তার চেহারা কেবলামুখী করে দিতে হয়। তাদের এ ধারণা ভুল।

সুন্নত পদ্ধতি হল, মায়্যেতকে কবরে ডান কাত করে শুইয়ে সিনা-চেহারা কিবলার দিকে করে রাখা। প্রয়োজনে মায়্যেতকে পূর্বের দেয়ালের সাথে টেক লাগিয়ে রাখবে। যেন মায়্যেতকে সহজে ডান কাত করে রাখা যায়। কিন্তু চিত করে শুইয়ে শুধু চেহারা কিবলার দিকে ঘুরিয়ে রাখলে তা সুন্নতসম্মত হবে না। প্রসিদ্ধ তাবেয়ী ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন-

اسْتَقْبِلْ بِالْمَيِّتِ الْقِبْلَةَ.

অর্থাৎ মায়্যেতকে কিবলামুখী করে রাখো। সুফিয়ান রাহ. বলেন-

يَعْنِي عَلَى يَمِينِهِ كَمَا يُوضَعُ فِي اللّحْدِ.

অর্থাৎ ডান কাতে রাখো, যেমনিভাবে লাহদ কবরে রাখা হয়। -মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদীস ৬০৬০

এক্ষেত্রে একটি বিষয় লক্ষণীয়, তা হল, বিষয়টি নিয়ে যদি আগে থেকেই ভাবা হয় এবং এমনভাবে কবর খনন করা হয়, যাতে মায়্যেতকে সহজে কেবলামুখী করে রাখা যায়। যেমন, কোনো কোনো এলাকায় দেখা যায়, স্বাভাবিকভাবে কবর খনন শেষে কবরের ফ্লোরের মাঝ বরাবর কবরের মত করেই চিকন করে এক বিঘত পরিমাণ গভীর করে খনন করা হয়, ফলে মায়্যেতকে সহজেই কাত করে কিবলামুখী করে শোয়ানো যায়।

মোটকথা, কবর খননের সময়ই বিষয়টি নিয়ে ভাবা চাই। আর কোথাও যদি তা সম্ভব না হয় সেক্ষেত্রে উপরে বর্ণিত পন্থা অবলম্বন করা যায় অর্থাৎ কবরের পূর্ব দেয়ালের সাথে টেক লাগিয়ে রাখা। আল্লাহ আমাদের বিষয়টি বোঝা ও আমল করার তাওফীক দান করুন।

  _মাসিক আলকাউসার

10

প্রচলিত ভুল
একটি ভিত্তিহীন কিসসা
আবু জেহেলের গর্ত খোঁড়ার কিসসা

লোকমুখে প্রসিদ্ধ, একবার আবু জেহেল নবীজীকে হত্যার ফন্দি আঁটল। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে পথ দিয়ে যাতায়াত করেন সে পথে সারারাত জেগে সে একটি গর্ত খুঁড়ল। সে ভাবল, ফজরের সময় নবীজী এ পথ দিয়ে যাবেন আর...। সে গর্ত খুঁড়ে এর উপর দিয়ে হালকা ডালপালা, পাতা ও বালি দিয়ে ঢেকে দিল; সাধারণ পথের মত বানিয়ে রাখল। এদিকে নবীজী ফজরের নামাযের জন্য গেলেন এবং আবার ফিরে এলেন, কিন্তু নবীজীর কিছুই হল না। নবীজী কিছু টেরও পেলেন না; কারণ, নবীজী যাওয়ার সময় জিবরীল আমীন ঐ গর্তের উপর তাঁর ডানা বিছিয়ে দিয়েছিলেন।

এদিকে সারা রাত গর্ত খোঁড়ার কারণে আবু জেহেলের তন্দ্রা এল এবং সে কিছুই টের পেল না। সকাল হয়ে যাচ্ছে দেখে সে ভাবল, দেখি তো গর্তে পড়ল কি না? সে দেখতে গিয়ে তন্দ্রাভাবের কারণে নিজেই গর্তে গিয়ে পড়ল। সে বাঁচাও বাঁচাও করে চিৎকার করল। তার ছেলে তাকে গর্ত থেকে উঠানোর জন্য হাত এগিয়ে দিল কিন্তু সে একটুর জন্য হাত ধরতে পারল না। আনা হল বড় রশি। একটুর জন্য সেটিও ধরতে পারছিল না। রশি জোড়া দিতে দিতে ৭০ হাত বানানো হল তারপরও একটুর জন্য ধরতে পারে না। তখন আরো বড় রশি আনতে চাইলে সে বলল, রাখো; তোমরা ৭০ হাত কেন ৭০ হাজার হাত লম্বা রশি আনলেও আমাকে উঠাতে পারবে না।

এক কাজ কর, মুহাম্মাদকে ডাকো; কেবল সে-ই আমাকে এখান থেকে উঠাতে পারবে। নবীজী এসে বললেন, আমি আপনাকে উঠাব, আপনি শুধু একটি বার বলেন, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ...। আবু জেহেল বলল, আগে উঠাও তারপর বলছি। নবীজী তখন হাত বাড়িয়ে দিতেই সে হাত ধরে ফেলল এবং উপরে উঠে এল। উপরে ওঠার সাথে সাথে বলল, দেখলে, মুহাম্মাদ কত বড় জাদুগর! সত্তর হাত রশি দিয়েও যেখানে আমি ঠাঁই পাচ্ছিলাম না, সেখানে তার হাত বাড়াতেই আমি ঠাঁই পেলাম। দেখেছ তোমরা, মুাহম্মাদ কত বড় জাদুগর!

এটি একটি ভিত্তিহীন কাহিনী। লোকমুখে বহুল প্রচলিত হলেও এর কোনো দালীলিক ভিত্তি নেই। সুতরাং আমরা তা বলা থেকে বিরত থাকব।


_মাসিক আলকাউসার
রবিউস সানী ১৪৪১   ||   ডিসেম্বর ২০১৯

11
একটি ভুল ধারণা/ইসলামের আলোকে / অমূলক ধারণাঃ

কোনো কোনো মানুষের ধারণা, সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতী নারীরা কিছু খেতে পারবে না; এসময় খেলে নাকি গর্ভস্থ সন্তানের ক্ষতি হবে। তেমনি কেউ কেউ এমনও ধারণা করে থাকে যে, এসময় গর্ভবতী নারী তরিতরকারি বা কোনো কিছু কাটতে পারবে না; তাতে নাকি গর্ভস্থ সন্তান বিকলাঙ্গ হওয়ার আশংকা রয়েছে। এ উভয় ধারণাই অমূলক।

জাহেলী যুগের মানুষের ধারণা ছিল, পৃথিবীতে বড় কোনো পরিবর্তনের কারণে সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণ হয়ে থাকে; যেমন কারো জন্মগ্রহণ করা বা কারো মৃত্যু হওয়া অথবা কোনো দুর্ভিক্ষের আগমন ইত্যাদি। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের এ অমূলক ধারণা খ-ন করে বলেন-

إِنّ الشّمْسَ وَالقَمَرَ لاَ يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ، وَلَكِنّهُمَا آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمُوهَا فَصَلّوا.

সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণ কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে হয় না; এগুলো আল্লাহ্র নিদর্শনাবলির দুটি নিদর্শনমাত্র। যখন তোমরা তা দেখবে তখন নামাযে মশগুল হবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১০৪২; সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯১৪ (মেরকাতুল মাফাতীহ, সংশ্লিষ্ট হাদীসের ব্যাখ্যা দ্রষ্টব্য)

এসময় কী করা উচিত- সে বিষয়ে হাদীস শরীফে স্পষ্ট নির্দেশনা এসেছে। নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে একবার সূর্যগ্রহণ হল। তখন নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের নিয়ে দীর্ঘ কেরাত ও দীর্ঘ দীর্ঘ রুকু-সিজদার মাধ্যমে নামায আদায় করলেন। এরপর বললেন-

إِنّ الشّمْسَ وَالقَمَرَ آيَتَانِ مِنْ آيَاتِ اللهِ، لاَ يَخْسِفَانِ لِمَوْتِ أَحَدٍ وَلاَ لِحَيَاتِهِ، فَإِذَا رَأَيْتُمْ ذَلِكَ، فَادْعُوا اللهَ، وَكَبِّرُوا وَصَلّوا وَتَصَدّقُوا.

সূর্য ও চন্দ্র আল্লাহ্র নিদর্শনাবলির দুটি নিদর্শনমাত্র। কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সূর্য বা চন্দ্রগ্রহণ হয় না। যখন তোমরা তা দেখবে তখন বেশি বেশি আল্লাহকে ডাকবে (দুআয় মশগুল হবে), বেশি বেশি তাকবীর বলবে, নামাযে মশগুল হবে এবং সদকা করবে। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১০৪৪

কোনো বর্ণনায় রয়েছে-

فَإِذَا رَأَيْتُمْ كُسُوفًا، فَاذْكُرُوا اللهَ حَتّى يَنْجَلِيَا.

যখন সূর্যগ্রহণ দেখবে তখন তা দূরিভূত হওয়া পর্যন্ত বেশি বেশি আল্লাহ্র যিকির করবে। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৯০১

মোটকথা, এসময় সূর্যগ্রহণ শেষ হওয়া পর্যন্ত নামায, যিকির-তাসবীহ, তিলাওয়াত ইত্যাদি আমলের মাঝে থাকা; গাফেল না থাকা। কিন্তু গর্ভবতী নারী বা অন্য কেউ এসময় কিছু খেতে পারবে না- এগুলো অমূলক ধারণা।

_ মাসিক আলকাউসার

12
DIU Student  Portal।  Dues Check। DIU। ড্যাফোডিলের টিউশন  ফী চেকের নিয়ম।


13
DIU Transcript । DIU Convocation-2020 । DIU Certificate। Online Apply Process। নতুন নিয়ম ২০১৯-২০২০।
প্রিয়  DIU শিক্ষার্থীরা, আপনার ০১ সেমিস্টার শেষ অথবা ইন্টারনী বা থিসিস/প্রোজেক্ট করার জন্য Transcript  দরকার হবে  বা ডিগ্রী শেষ করে  Certificate & Transcript, Convocation আবেদন করতে হবে।


14
Islam / একটি ভুল প্রথা
« on: July 18, 2019, 01:30:46 PM »
একটি ভুল প্রথা
বিবাহের দিন-তারিখ নির্ধারণের ক্ষেত্রে পঞ্জিকা দেখে শুভ-অশুভ দিন-তারিখ নির্ণয় করা

এক ব্যক্তিকে পঞ্জিকা খোঁজ করতে দেখা গেল। কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে বলল, একটি বিবাহের দিন-তারিখ নির্ধারণ করতে হবে, তাই পঞ্জিকা দেখে তিনি একটি শুভ দিন-তারিখ নির্ধারণ করবেন।  এটি একটি ভুল প্রথা। পঞ্জিকায় উল্লেখিত শুভ-অশুভ দিন-তারিখ হিন্দুধর্মের বিভিন্ন অলীক ও শিরকী বিশ্বাস এবং কুসংস্কারের উপর ভিত্তি করে প্রস্তুত করা। এর সাথে মুসলিমের কী সম্পর্ক! ইসলামে অশুভ দিন-তারিখ বলে কিছু নেই।

কোনো মাস, দিন বা রাতকে অশুভ মনে করা, বিশেষ কোনো সময়কে বিশেষ কাজের জন্য অশুভ ও অলক্ষুণে মনে করা- সবই জাহেলিয়াতের কুসংস্কার। এর সাথে মুসলিমের কোনো সম্পর্ক নেই। যেমন ইসলামপূর্ব যুগের কোনো কোনো লোকের এই ধারণা ছিল যে, শাওয়াল মাসে বিবাহ-শাদির অনুষ্ঠান অশুভ ও অকল্যাণকর। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রা. এই ভিত্তিহীন ধারণাকে এই বলে খ-ন করেছেন-

تَزَوّجَنِي رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ فِي شَوّالٍ، وَبَنَى بِي فِي شَوّالٍ، فَأَيّ نِسَاءِ رَسُولِ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ كَانَ أَحْظَى عِنْدَهُ مِنِّي؟

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে শাওয়াল মাসেই বিবাহ করেছেন এবং শাওয়াল মাসেই আমার রুখসতি হয়েছে। অথচ তাঁর অনুগ্রহ লাভে আমার চেয়ে অধিক সৌভাগ্যবতী স্ত্রী আর কে আছে? -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১৪২৩

আল্লাহ তাআলা আমাদের সব ধরনের কুসংস্কার থেকে হেফাজত করুন। সহীহ আকীদার উপর রাখুন এবং দ্বীনের সহীহ সমঝ নসীব করুন।


-একটি ভুল প্রথা-বর্ষ: ১৪,   সংখ্যা: ১১

মাসিক আলকাউসার

15
Islam / প্রচলিত ভুল
« on: July 18, 2019, 01:09:54 PM »
একটি ভুল বিশ্বাস
ঘরে মাকড়সার জাল থাকলে কি অভাব-অনটন দেখা দেয়?

কিছু মানুষের মাঝে একথা প্রচলিত আছে যে, ঘরে মাকড়সার জাল থাকলে অভাব-অনটন দেখা দেয়। এটি একটি অলীক বিশ্বাস।

অভাব-অনটনের সাথে মাকড়সার জালের কী সম্পর্ক? স্বচ্ছলতা বা অভাব-অনটনের মালিক আল্লাহ তাআলা। তিনি চাইলে কাউকে অভাব-অনটনে রাখেন, চাইলে স্বচ্ছলতা দান করেন।

তবে একথা স্মরণ রাখা দরকার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। সুতরাং মাকড়সার জাল বা অন্যান্য ময়লা-আবর্জনা থেকে ঘর-বাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা কর্তব্য। এ ব্যাপারে প্রতিটি মুসলিমেরই সচেতন থাকা উচিত।

- মাসিক আলকাউসার
বর্ষ: ১৫,   সংখ্যা: ০২


 

Pages: [1] 2 3 ... 6