Daffodil International University

Entertainment & Discussions => Story, Article & Poetry => Topic started by: Md. Anwar Hossain on March 24, 2019, 07:07:46 PM

Title: বিশ্বশান্তি, স্বাধীনতা ও মানবাধিকার
Post by: Md. Anwar Hossain on March 24, 2019, 07:07:46 PM
স্বাধীনতা ও মানবাধিকার একটি অন্যটির পরিপূরক। মানুষের চিন্তার স্বাধীনতা ও কর্মের স্বাধীনতা জন্মগত অধিকার। স্বাধীনতা সীমাহীন নয়; স্বাধীনতা নির্দিষ্ট সীমারেখার বৃত্তে সংরক্ষিত। যা বিদায় হজের ভাষণে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) তিনটি শব্দে ঘোষণা দিয়েছেন—সব মানুষের জীবন, সম্পদ, সম্মান সংরক্ষিত। যেমন আরাফাতের দিন, আরাফাতের প্রান্তর, মক্কা ভূমি ও কাবা শরিফ সম্মানিত ও সুসংরক্ষিত। (মুসনাদে ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল রহ.)।

ইসলামের অনুশাসন অনুসরণের জন্য চাই স্বাধীনতা। স্বাধীনতার মাধ্যমেই সুরক্ষিত হয় মানবাধিকার। অর্থাৎ স্বাভাবিক জীবন ও স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা।

আল্লাহ মানুষকে জ্ঞান দিয়েছেন ভালো–মন্দ, সত্য–মিথ্যা ও ন্যায়–অন্যায় অনুধাবনের জন্য। চিন্তা ও কাজের স্বাধীনতা দিয়েছেন কর্ম অনুযায়ী পরকালে বিচার ও ফলাফল প্রদানের নিমিত্তে। কর্মফল অনুসারে জান্নাত বা জাহান্নামের অধিকারী হবে। তাই আল্লাহ এই জগতে মানুষকে কোনো কাজে বাধ্য করেন না। এমনকি ধর্ম–কর্ম বিষয়েও জোর করা হয় না। এ বিষয়ে কোরআন মজিদে রয়েছে, ‘ধর্মে কোনো জবরদস্তি নেই, সত্যাসত্য সুস্পষ্ট পার্থক্য হয়ে গেছে। যারা অশুভ শক্তিকে অস্বীকার করে মহান আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করল; তারা মজবুত হাতল শক্তভাবে ধারণ করল, যা কখনো ভাঙার নয়; আল্লাহ সর্বশ্রোতা মহাজ্ঞানী।’ (সুরা-২ বাকারা, রুকু: ৩৪, আয়াত: ২৫৬)।

সব মানুষের পিতা হজরত আদম (আ.) এবং মাতা মা হাওয়া (আ.)। জগতের সব মানুষ একই পিতা–মাতার সন্তান। সব মানুষ ভাই ভাই, মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই। শ্রেণিবিভেদ, জাতি–গোত্র ও গোষ্ঠীভেদ, বর্ণবৈষম্য, ভাষাবৈচিত্র্য এবং ভৌগোলিক ও নৃতাত্ত্বিক পার্থক্য মানুষে মানুষে কোনো প্রভেদ সৃষ্টি করে না। বিদায় হজের ভাষণে নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘কালোর ওপর সাদার প্রাধান্য নেই, অনারবের ওপর আরবের শ্রেষ্ঠত্ব নেই।’ (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, ইবনে কাসির রহ.)।

Eprothom Aloমানুষের কর্মের প্রকৃত বিচার ও পূর্ণ ফলাফল দুনিয়াতে নয়, পরকালেই মানুষ তার কৃতকর্মের ফল সম্পূর্ণ লাভ করবে ও ভোগ করবে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কিতাবধারীদের মধ্যে যারা কুফরি করে এবং মুশরিকরা জাহান্নামের অগ্নিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করবে; তারাই সৃষ্টির অধম। নিশ্চয় যারা ইমান আনবে ও সত্কর্ম করবে, তারাই সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ। তাদের প্রতিপালকের কাছে তাদের জন্য পুরস্কার হিসেবে রয়েছে স্থায়ী জান্নাত; যার নিম্নদেশ দিয়ে নদী প্রবাহিত হয়, সেথায় তারা চিরস্থায়ী হবে। আল্লাহ তাদের প্রতি প্রসন্ন এবং তারাও তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট। এটি তার জন্য যে তার প্রতিপালককে সমীহ করে।’ (সুরা-৯৮ বায়্যিনাহ, রুকু: ১, আয়াত: ৬-৮)।

ইসলামের মহত্ত্ব ও সৌন্দর্য হলো উদার চিন্তা, যুক্তিনির্ভরতা, পরমতসহিষ্ণুতা, ভিন্ন ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ও সহাবস্থান। সর্বোপরি বিশ্বভ্রাতৃত্ব ও সর্বজনীন মানবতাবোধ। ধৈর্য-সহ্য, ক্ষমা, দয়া—এসব মহৎ গুণ ইসলামকে অনন্য করেছে। স্রষ্টায় বিশ্বাস করে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হজরত মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.)–এর অনুপম আদর্শকে ধারণ করাই হলো ইসলাম। ইসলাম জন্মগত ধর্ম নয়। পৃথিবীর যেসব মানুষ ওই বিশ্বাস ও আদর্শ গ্রহণ করবে, তারাই মুমিন ও মুসলিম।

বিশ্বমানবতার মুক্তি, স্বাধীনতা ও মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য সব মানুষকে মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন হতে হবে। বিশেষত মুমিন মুসলমানদের জন্য এসব গুণে গুণান্বিত হওয়ায় ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বিশ্বশান্তি স্থাপন, স্বাধীনতা সুরক্ষা ও মানবাধিকার নিশ্চিত করা মুসলমানের প্রধান দায়িত্ব। আল্লাহ সহায় রয়েছেন, এ মর্মে কোরআন কারিমে বলেছেন, ‘হে বিশ্বাসীরা! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গেই আছেন। যারা আল্লাহর পথে নিহত হয় তোমরা তাদের মৃত বলো না, বরং তারা জীবিত কিন্তু তোমরা উপলব্ধি করতে পারো না। আমি তোমাদের ভয়, ক্ষুধা এবং ধনসম্পদ ও জীবনহানি এবং ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা পরীক্ষা করব। তুমি সুসংবাদ দাও ধৈর্যশীলদের। যারা তাদের ওপর বিপদ আপতিত হলে বলে—আমরা তো আল্লাহরই এবং নিশ্চিতভাবে তারই নিকট প্রত্যাবর্তনকারী। এরাই তারা, যাদের প্রতি তাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে বিশেষ অনুগ্রহ ও রহমত বর্ষিত হয়, আর এরাই সত্পথে পরিচালিত।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৫৩-১৫৭)।

প্রিয় নবী (সা.)–এর দাওয়াতি কার্যক্রমে তায়েফের হৃদয়বিদারক ঘটনায় মহানুভবতা ও মক্কা বিজয়ের ক্ষমা ও উদারতা তাঁকে সর্বোচ্চ শিখরে আসীন করেছে, যা সর্বকালের সব মানুষের জন্য অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে অনন্তকাল। মহানবী (সা.)–এর উম্মত হিসেবে সে আদর্শ আমাদেরও অনুসরণ করতে হবে।

মুফতি মাওলানা শাঈখ মুহাম্মাদ উছমান গনী: বাংলাদেশ জাতীয় ইমাম সমিতির যুগ্ম মহাসচিব ও আহ্ছানিয়া ইনস্টিটিউট অব সুফিজমের সহকারী অধ্যাপক
Title: Re: বিশ্বশান্তি, স্বাধীনতা ও মানবাধিকার
Post by: ksohel on March 24, 2019, 08:25:50 PM
Thanks, it is very awaking.