Daffodil International University
Science & Information Technology => Science Discussion Forum => Solar => Topic started by: Karim Sarker(Sohel) on January 14, 2015, 05:42:10 PM
-
বাউফল পৌর সড়ক পেরিয়ে কয়েক কিলোমিটার দূরে তেঁতুলিয়া নদীর পাড়েই গড়ে উঠেছিল এককালের চন্দ্রদ্বীপ রাজ্যের রাজধানী। এখন সেই রাজ্যও নেই, রাজধানীও নেই। কালের আবর্তে তা হারিয়ে গেলেও প্রমত্তা তেঁতুলিয়ার ভাঙনে সেখানে গড়ে ওঠা কালাইয়া ইউনিয়নের শেষ সীমান্ত বাজে সন্দিপ গ্রামটি। তেঁতুলিয়ার ছোবল থেকে রক্ষার জন্য তৈরি বেড়িবাঁধের ওপারে চাঁদের আলোয় ঝিকিমিকি করছে পানি। আরেকটু তাকাতেই তেঁতুলিয়ার শাখা বাজে সন্দিপ খালের পাড় জুড়ে সারি সারি জেলে নৌকা বাঁধা। নৌকায়ও জ্বলছে আলো। সে আলো সৌরবিদ্যুতের। নৌকার বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছে বাজে সন্দিপ খালটি।সারি সারি জেলে নৌকায় সৌরবিদ্যুতের আলো
শুধু জেলে নৌকাই নয়, সৌরবিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয়েছে ব্যাংক, বীমা, স্কুল, কলেজ, ইউনিয়ন পরিষদ, দোকানপাট। চলছে টেলিভিশন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ফটোস্ট্যাট মেশিন। সৌরবিদ্যুৎ এখন গ্রামীণ জনপদ, নদী, চরাঞ্চলের গ্রামের আলোর অভাব মিটিয়েছে। এসব সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা করে দিয়েছে উপকূলীয় বিদ্যুতায়ন মহিলা উন্নয়ন সমিতি, সৌর শক্তি, গ্রামীণ শক্তি, সৃজনী বাংলাদেশ, মডার্ন সোলার, আরএসএফ, ব্র্যাক এনার্জি, পল্লী শক্তি, বাংলার শক্তি, টিএম এসএস ব্রাইট রিং, সান রিং।সরেজমিন সৌরবিদ্যুৎ :তেঁতুলিয়া নদীর সংযোগ খাল বাজে সন্দিপের তীরে বাঁধা এক নৌকায় রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছেন পিয়ারা বেগম (৪০)। একপাশে মেয়ে সূর্যবানু মাছ কাটছে। স্বামী আজিজ সরদার মাছ বিক্রি করতে কালাইয়া মৎস্য আড়তে গেছেন। নৌকায় পুরো পরিবার। রান্নাবান্না, খাওয়া-দাওয়া সেরে জোয়ার এলেই নদীতে নৌকা ভাসাবেন আজিজ সরদার। ব্যস্ত হয়ে পড়বেন মাছ ধরায়।
নৌকায় বিদ্যুতের বাতির কথা উঠলে পিয়ারা বেগম বললেন, 'মোরা গরিব মানুষ। নৌকাই মোগো ঘরবাড়ি, জায়গা-জমি। গরিব বলে কি শখ নাই!' নৌকায় সৌর প্যানেল লাগিয়ে শখের প্রয়োজনটি মিটিয়েছেন তিনি। আরেক নৌকার জেলে আশ্রাব আলী সর্দার (৬৫) বলেন, 'হ্যারিকেন ও কুপির (বাত্তির) আলো টিপ টিপ করে জ্বলে। আর মোগো নৌকার সৌরবিদ্যুতের আলোয় এখন ভরে গেছে।' তিনি জানান, প্রতিদিন তার নদীতে মাছ ধরতে যেতে হয়। নদীতে মালবাহী জাহাজ তাদের অনেক দূর থেকে দেখতে পেয়ে পাশ দিয়ে চলে যায়। আগে দেখতে না পেয়ে তাদের নৌকার ওপর দিয়ে জাহাজ চলে যেত। এখন আর তা হয় না।সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পে চাকরি :সৌরবিদ্যুতের গ্রামীণ শক্তির কালাইয়া শাখার ফিল্ড অফিসার পার্থ প্রতীম জানান, তার বাড়ি ঝালকাঠির শেখের হাটে। ইন্টারমিডিয়েট পাস করার পর বিভিন্ন জায়গায় চাকরির জন্য ঘুরেছেন। পরে সৌরবিদ্যুতে চাকরি পেয়ে তার পরিবারের ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে।
স্বাবলম্বী এক যুবকের গল্প : বিচ্ছিন্ন উপজেলা রাঙ্গাবালির বাহেরচর বাজারের রাহাত কম্পিউটার অ্যান্ড ফটোস্ট্যাট দোকানের মালিক মো. রাহাতুল ইসলামের (৩০) সঙ্গে কথা হয়। তিনি জানান, চাকরির জন্য অনেক ঘুরে শেষে দুই লাখ টাকা নিয়ে ব্যবসায় নেমে পড়েন। গ্রিন সোলার হাউস থেকে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন সৌর প্যানেল কিস্তির মাধ্যমে এনে কম্পিউটার, ফটোস্ট্যাট ও লেমিনেটিংয়ের দোকান দেন। প্রতিদিন বিভিন্ন অফিসের কাজ করে খরচ শেষে এক থেকে দেড় হাজার টাকা লাভ হয়।জনপ্রতিনিধিদের কথা : এ বিষয়ে নাজিরপুর ও কালাইয়া ইউপি চেয়ারম্যান ইব্রাহিম ফারুক ও ফয়সাল আহম্মেদ মনির মোল্লা জানান, চরাঞ্চলের জেলে ও শ্রমজীবী মানুষ এখন আর কেরোসিন তেল কেনে না। কুপি বাতি ও হারিকেন প্রায়ই উঠে গেছে। গ্রামের ঘরে ঘরে এখন জ্বলছে সৌরবিদ্যুতের আলো।সৌরবিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের কথা :এ বিষয়ে উপকূলীয় বিদ্যুতায়ন ও মহিলা উন্নয়ন সমিতির পটুয়াখালীর ডিভিশনাল ম্যানেজার আবদুল্লাহ মামুন এবং গ্রামীণ শক্তির ডিভিশনাল ম্যানেজার আশ্রাফুজ্জামান খান বলেন, উপকূলীয় বিদ্যুতায়ন ও মহিলা উন্নয়ন সমিতির আওতায় সৌরবিদ্যুতের সুবিধা পেয়েছে ১৭ হাজার ৫৬৫টি পরিবার। প্রকল্পের এক্সিকিউটিভ অফিসার এফ নাসির উদ্দিন জানান, সৌরবিদ্যুতের বিভিন্ন কোম্পানির আওতায় প্রায় অর্ধ লাখ যুবকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।
Collected....
-
ছবিতে দেখুন
-
Good to know the information.