Daffodil International University

Health Tips => Protect your Health/ your Doctor => Women => Topic started by: Mrs.Anjuara Khanom on November 18, 2020, 12:49:52 PM

Title: স্ত্রীর হক ও অধিকার
Post by: Mrs.Anjuara Khanom on November 18, 2020, 12:49:52 PM
স্ত্রীদের হক ও অধিকার এবং স্বামীর হক ও অধিকার এ বিষয়দ্বয় তো ব্যাপক বিশ্লেষণের দাবি রাখে। তবে এখানে আমরা সংক্ষেপে স্ত্রীর হক ও অধিকার নিয়ে আলোচনা করছি। প্রিয় রাসুলে কারীম (সঃ) বলেন “মু’মিনদের মধ্যে পূর্ণতর মু’মিন সে যার ব্যবহার ভালো, আর তোমাদের মধ্যে ভালো সে, যে তার স্ত্রীদের জন্য ভালো” (তিরমিযী শরীফ, মেশকাত শরীফ)। অত্র হাদীস দ্বারা স্ত্রীদের সাথে ভালো ব্যবহার করা তাদের গুরুত্বপূর্ণ হক বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এমনকি সকল মানুষের মধ্যে ভালো ব্যবহারের হকদারও নিজের স্ত্রী যেমনটি নিম্নে বর্ণিত হাদিসের মাধ্যমে বুঝে আসে:- “তোমাদের মধ্যে সেই সর্বোত্তম যে তার স্ত্রীর সাথে ভালো ব্যবহারের/আচরণের দিক থেকে সর্বোত্তম”। “তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই ভালো যে তার স্ত্রীর কাছে ভালো আর আমি আমার স্ত্রীর কাছে ভালো”। (সুনানে তিরমিযি শরীফ) এই জন্যইতো মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা সূরাতুন নিসার ১৯ নং আয়াতে বলেন, “সাবধান! স্ত্রীদের সাথে ভালো ব্যবহার কর”। “হাকিম ইবনে মু‘আবিয়া কুশাইরী (রাঃ) আনহু সুত্রে তার পিতা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম ইয়া রসূলাল্ল-হ্! আমাদের উপর আমাদের স্ত্রীদের কি হক (অধিকার) রয়েছে? তিনি বলেন, তুমি নিজে যখন আহার করবে তখন তাকেও খাবার দেবে, যখন কাপড় পরিধান করবে তখন তাকেও কাপড় দেবে। তার মুখের উপর মারবে না, ভর্ৎসনা করবে না তথা তাকে অশ্লীল গালি দেবে না এবং তাকে ত্যাগ করে ঘরের বাহিরে ফেলে রাখবে না। অর্থাৎ স্ত্রীকে সংশোধনের জন্য বিছানা পৃথক করলেও তাকে ঘরের বাহিরে ফেলে রাখা যাবে না”। (মুসনাদে আহমদ, আবু দাউদ শরীফ)। কুরআন সুন্নাহ অপরাপর দলিল প্রমাণের আলোকে জানা যায় যে, স্ত্রীদের অন্যতম হক হলো তাদের থাকা, খাওয়া, পোষাক-পরিচ্ছেদের ব্যবস্থা করা, স্ত্রীদের সতিত্বের মর্যদা রক্ষার্থে পর্দায় রাখা, একাধিক স্ত্রী থাকলে ভরণ-পোষণ, রাত যাপন প্রভৃতি বিষয়ে তাদের মধ্যে সমতা রক্ষা করা। যদি স্বামীর স্বচ্ছলতা ও সামর্থ্য থাকে তাহলে স্ত্রীকে পর্দায় রেখে তার জন্য চাকরের/ পর্দাশীলা চাকরানীর ব্যবস্থা করা (তবে স্বচ্ছলতা ও সামর্থ্য না থাকলে ঘরোয়া রান্না বান্না ইত্যাদি স্ত্রীর দায়িত্ব)। প্রতি চার মাসে অন্তত একবার স্ত্রীর সাথে স্বামী-স্ত্রী সুলভ আচরণ করা। এছাড়া স্বামীর উপর ন্যয়সংগত ভাবে অভিমান করাও স্ত্রীর অধিকার ইত্যাদি। মহান আল্লাহ বলেন, “হুন্না লিবাছুল্ লাকুম ওয়াআংতুম লিবাছুল্ লাহুন্না অর্থাৎ স্ত্রীরা তোমাদের পোষাক আর তোমরা (স্বামীরা) তাদের তথা স্ত্রীদের পোষাক”। হাকিমুল উম্মাত মুজাদ্দেদুল মিল্লাত আল্লামা আশরাফ আলী থানবী (রহঃ) উপরিউক্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, পোষাক পরিচ্ছদ দ্বারা মানুষ ধুলাবালি থেকে শরীরকে রক্ষা করে, শীত-গ্রীষ্মের কষ্ট নিবারণ করে, ভদ্রতা রক্ষা পায়, মান মর্যাদা বৃদ্ধি লাভ করে। বাস্তবিক পক্ষে এই চারটি উদ্যেশ্যেই দাম্পত্য জীবন রচনা করা হয়। হযরত আব্দুল্লাহ যাম‘আ (রাঃ) বলেন প্রিয় রসুলে কারীম (সঃ) বলেন, কেউ যেন নিজের স্ত্রীকে গোলাম, বাদীর ন্যায় না পেটায়, অতপর দিন শেষেই তার সাথে শয়ন করে। পারিবারিকভাবে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে সুখে-শান্তিতে থাকতে হলে পারিবারিক আপোষ-সমঝোতা, ক্ষমার গুণে গুণান্নিত হওয়া, স্বামী-স্ত্রী কেউ কারোর দোষ-ত্রুটি প্রকাশ না করা। ইমাম ইবনে মালিক রহ. এর মতানুযায়ী স্বামী স্ত্রীর আপোসের প্রত্যেকের কথাবার্তা, কার্যকলাপ অপরের কাছে আমানত। তাদের যে কেউ তা প্রকাশ করবে, যা সে অপছন্দ করে, তাহলে নিশ্চিতই সে খেয়ানত করল। আর তা যদি হয় অপবাদ তাহলে তো মারাত্মক কবিরা গুনাহ। এর দ্বারা বিয়ের মাধ্যমে স্বামী স্ত্রীর মাঝে যে গভীর ভালোবাসা ও মমতা তৈরি হয় তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমন কি সংসার পর্যন্ত ভেঙ্গে যেতে পারে। মহান আল্লাহ বলেন, “আর তার নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের মধ্যে থেকেই তোমাদের জন্য জোড়া তথা স্ত্রী বা স্বামী সৃষ্টি করেছেন যেন তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও এবং তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা ও মমতা সৃষ্টি করেছেন”। (সূরা রূম আয়াত-২১) অত্র আয়াতে বর্ণিত স্বামী-স্ত্রীর একে অপরের কাছ থেকে প্রশান্তি, ভালোবাসা ও মমতা সারাটি জীবন পেতে চাইলে করাচীর বিশ্ববিখ্যাত পীরে কামেল শাইখুল আরব ওয়াল আজম কুতুবুল আলম আল্লামা শাহ হাকীম মুহাম্মাদ আখতার ছাহেব রহ. কর্তৃক কুরআন-সুন্নাহর আলোকে লিখিত “ইসলামের দৃষ্টিতে স্বামী-স্ত্রীর সুখের জীবন” নামক মহামূল্যবান গ্রন্থটি নিজে পড়ি, অন্যকে পড়তে উৎসাহিত করি। তদনুযায়ী আমল করি। প্রশান্তি ও স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক ভালোবাসা ও মমতার মহান স্রষ্টার কখন কী আদেশ ও নিষেধ তা জেনে নিজেদের জীবনে বাস্তবায়নের চেষ্টা করি। মহান আল্লাহ আমাদেরকে সহীহ ভাবে বোঝার ও আমল করার তাওফীক্ব দান করুন। আ-মী-ন।