Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - Shahana Parvin

Pages: 1 [2]
16
স্মার্টফোন রয়েছে কিন্তু ইন্টারনেট ব‍্যবহার করেন না, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। এ জন্য আমরা প্রায় সবাই মুঠোফোনে ইন্টারনেট ডেটা ব্যবহার করি। কিন্তু হোয়াটসঅ‍্যাপে কেউ ভিডিও পাঠালেই তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডাউনলোড হয়, ফলে নিজের অজান্তেই অনেক বেশি ইন্টারনেট ডেটা খরচ হয়ে যায়। তবে হোয়াটসঅ‍্যাপের স্বয়ংক্রিয় ডাউনলোড–সুবিধা বন্ধ করলেই এ সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এ জন্য প্রথমে হোয়াটসঅ‍্যাপের ওপরের ডান দিকে থাকা তিনটি ডট মেন্যুতে ক্লিক করে সেটিংস অপশনে প্রবেশ করতে হবে। এবার ‘স্টোরেজ অ্যান্ড ডেটা’ অপশনে প্রবেশ করে ‘মিডিয়া অটো ডাউনলোড’ থেকে ওয়াই-ফাই অপশন নির্বাচন করতে হবে। অপশনটি চালু থাকলে কেবল ওয়াই–ফাই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে হোয়াটসঅ‍্যাপের ভিডিও বা ছবি ডাউনলোড হবে। ফলে মুঠোফোনের ইন্টারনেট ডেটা দ্রুত শেষ হবে না।

17
ইন্টারনেটে নিরাপদ থাকার জন্য যন্ত্র এবং অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার দুটিরই প্রয়োজন রয়েছে। কীভাবে ইন্টারনেটকে নিরাপদ ও উন্নত করা যায়, তা নিয়ে কথা বলেছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তিপণ্য আমদানি ও বাজারজাতকরণ প্রতিষ্ঠান স্মার্ট টেকনোলজিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তারিকুর রহমান খান। স্মার্ট টেকনোলজিস সব সময়ই দেশের সর্বস্তরের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারকারীদের চাহিদা এবং সুযোগ–সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করে থাকে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে আমাদের দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১২ কোটি ৬০ লাখ। বিশাল এই জনগোষ্ঠী প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট দেখছে এবং নিজেদের ঝুঁকিতে ফেলছে। আমরা এই জনগোষ্ঠীকে নিরাপদ রাখতে ক্যাসপারস্কি ব্র্যান্ডের বিভিন্ন পণ্য, যেমন ক্যাসপারস্কি অ্যান্টিভাইরাস, ক্যাসপারস্কি ইন্টারনেট সিকিউরিটি, ক্যাসপারস্কি সেফ কিডস, ক্যাসপারস্কি মোবাইল সিকিউরিটি এবং ক্যাসপারস্কি টোটাল সিকিউরিটি বাজারজাত করছি। আমাদের ডিলার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এসব পণ্য খুব সহজে পেয়ে যাচ্ছেন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা। এ ছাড়া বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য আরও বিশেষায়িত নিরাপত্তা সেবা রয়েছে।
নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারে অ্যান্টিভাইরাস কীভাবে সহায়তা করে?

মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম: নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারে অ্যান্টিভাইরাস আপনাকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করতে পারে। যেমন কেউ যদি কম্পিউটারে ক্যাসপারস্কি ইন্টারনেট সিকিউরিটি ব্যবহার করেন, সেক্ষেত্রে প্রথমেই আপনি পাবেন প্রো–অ্যাক্টিভ ডিটেকশন সুবিধা। মানে, কোনো ওয়েবসাইটে ঢোকার আগেই সেখানে কোনো ঝুঁকি আছে কি না, তা খুঁজে বের করার পাশাপাশি যেকোনো সাইবার হামলা প্রতিহত করবে। তা ছাড়া আপনার ব্রাউজিং, কেনাকাটা, চ্যাট এবং কম্পিউটারের যেকোনো তথ্যকে কি–লগার, অ্যাডওয়্যার, ফিশিং, রুটকিট এবং হ্যাকারদের কাছ থেকে সুরক্ষিত রাখে।
অ্যান্টিভাইরাসটির প্যারেন্টাল কন্ট্রোল সুবিধা কাজ লাগিয়ে কী কী উপকার পাওয়া সম্ভব?

মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম: প্যারেন্টাল কন্ট্রোল ব্যবহারের মাধ্যমে ক্যাসপারস্কি ক্ষতিকর ও অপ্রাসঙ্গিক কনটেন্ট ব্লক করে দেয়। পাশাপাশি শিশুদের স্ক্রিনটাইম (ইন্টারনেট ব্যবহারের সময়) সীমাবদ্ধ করা যায়। তা ছাড়া জিপিএসের মাধ্যমে শিশুদের অবস্থান নির্ণয়েরও সুযোগ রয়েছে ক্যাসপারস্কি সেফ কিডস সফটওয়্যারে।
নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য কী কী সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত?

মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম: নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে সচেতনতা। বিশেষ করে, অনলাইনে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করার ক্ষেত্রে অনেক বেশি সতর্ক থাকা উচিত। অপ্রয়োজনে আপনার যন্ত্রের কানেকটিভিটি ফাংশনগুলো, যেমন ব্লুটুথ, হটস্পট, জিপিএস বন্ধ রাখাই ভালো।

18
ইন্টারনেট ছাড়া এক মুহূর্ত এখন চলে না আমাদের। পড়াশোনা, কাজের পাশাপাশি বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম ইন্টারনেট। কিন্তু ইন্টারনেটে আমরা সবাই কি নিরাপদ? মোটেও তা নয়। আর তাই সবাইকে নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহারে সচেতন করার জন্য আজ ৮ ফেব্রুয়ারি বিশ্বজুড়ে পালন করা হচ্ছে নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস বা সেফার ইন্টারনেট ডে ২০২২ (এসআইডি)। ১৯ বারের মতো পালিত হচ্ছে এই দিবস। এবারের নিরাপদ ইন্টারনেট দিবসের প্রতিপাদ্য উন্নত ইন্টারনেটের জন্য সবাই’ (টুগেদার ফর এ বেটার ইন্টারনেট)। ২০০৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সেফবর্ডারস প্রকল্পের অংশ হিসেবে নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস প্রথম পালন করে। ২০০৫ সাল থেকে দিবসটি পালন করছে ইনসেফ নেটওয়ার্ক। ২০০৯ সাল থেকে ইউরোপের গণ্ডি পেরিয়ে দিবসটি পালন করা শুরু করে অন্যান্য দেশও। বিষয়টির গুরুত্ব বুঝে বর্তমানে প্রায় ২০০টি দেশে দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশেও পালন করা হচ্ছে নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস ২০২২। প্রযুক্তি ব্যবহারে দায়িত্বশীলতা, সৃজনশীলতা ও নিরাপদ থাকার জন্য প্রতিবছর দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার খুব যে কঠিন তা কিন্তু নয়। সাইবার হামলাকারীদের থেকে নিজের ব্যক্তিগত তথ্য ও ডিভাইস রক্ষা করে প্রয়োজনীয় কনটেন্ট ব্যবহার করাকেই মূলত নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহার বোঝায়।

নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হচ্ছে সচেতনতা। নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য ‘অনলাইন নিরাপত্তা’র বিষয়ে ভালো ধারণা থাকা প্রয়োজন। কম্পিউটার, স্মার্টফোন ব্যবহারের করলেও ইন্টারেনট ব্যবহারে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। পাশাপাশি সন্তানদের নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ দিতে তাদের ব্রাউজিং ইতিহাস (যেসব ওয়েবসাইট দেখা হয়েছে) দেখা উচিত। শিশুরা কতক্ষণ ইন্টারনেট ব্যবহার করবে, তা নির্ধারণের পাশাপাশি ‘প্যারেন্টাল কন্ট্রোল’ সুবিধার মাধম্যে শিশুর জন্য অনুপযুক্ত সাইটগুলো ব্লকও করতে হবে। প্যারেন্টাল কন্ট্রোল হচ্ছে শিশুদের জন্য আপত্তিকর বা অনুপযুক্ত ওয়েবসাইট ব্লক বা ওয়েবসাইটের কনটেন্ট ফিল্টার করার ব্যবস্থা। ‘প্যারেন্টাল কন্ট্রোল’ সুবিধাটি ব্যবহার করলে অনলাইনে অশ্লীল ওয়েবসাইট বা কনটেন্ট চালু হয় না। ফলে শিশুরা চাইলেও ওয়েবসাইটগুলোর কনটেন্ট দেখতে পারে না। এর পাশাপাশি চাইলে শিশুদের জন্য সাধারণ ইউটিউবের বদলে ‘ইউটিউব কিডস’ সংস্করণটি ব্যবহার করা যেতে পারে।

শুধু তা–ই নয়, স্ক্রিন টাইম (ভিডিও বা কনটেন্ট দেখার সময়) নির্ধারণের মাধ্যমে শিশুদের ইউটিউবে ভিডিও দেখার সময়ও বেঁধে দেওয়া যাবে। ‘প্যারেন্টাল কন্ট্রোল’ সুবিধা কাজে লাগিয়ে অনলাইন জুয়া পরিচালনাকারী বিভিন্ন ওয়েবসাইটও ব্লক করে দেওয়া যায়। প্রতিদিন কোন সময়ে কতক্ষণ সন্তান ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে, তা আগে থেকেই নির্দিষ্ট করে দেওয়া যাবে। ফলে সন্তান আপনার অগোচরে তার জন্য উপযোগী নয়, এমন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে না পারার পাশাপাশি অতিরিক্ত সময় ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে না।

করোনাকালে শিশুদের পড়াশোনা বা প্রয়োজনীয় কাজে ইন্টারনেট ব্যবহার করতেই হয়। তাই অভিভাবকদের পাশাপাশি শিশুদের অনলাইন সুরক্ষায় শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরও দায়িত্ব রয়েছে। কারণ, আমরা যদি শিশুদের জন্য ডিজিটাল স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে চাই, তাহলে তাদেরকে নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারের কৌশল শেখানোর মাধ্যমেই অনলাইনে নিরাপদ রাখতে হবে। নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহারে করণীয়

● অনলাইনে অনেক ওয়েবসাইটে বা অ্যাপ ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করে। এ জন্য অপরিচিত ওয়েবসাইট বা অ্যাপস ব্যবহার না করাই ভালো।

● লটারি বা বিভিন্ন পুরস্কারের প্রলোভনে পাঠানো ই-মেইল বা বার্তা খোলা যাবে না। একটি বিষয় মনে রাখলে ভালো হয়, অনলাইনে নানা ধরনের পুরস্কারের প্রলোভন দিয়ে মূলত ব্যবহারকারীদের যন্ত্রে ম্যালওয়্যার বা ভাইরাস পাঠিয়ে সাইবার হামলা চালানো হয়ে থাকে।

● সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্ধু নির্বাচনে সচেতন হতে হবে। কারও বিষয়ে ভালো করে জানা না থাকলে তাকে বন্ধুর তালিকায় স্থান না দেওয়াই ভালো।

● সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচিত বা অপরিচিত কাউকেই একান্ত ব্যক্তিগত কোনো তথ্য, ছবি বা ভিডিও পাঠানো থেকে বিরত থাকতে হবে। এসব তথ্য বা ভিডিও সংগ্রহ করে ব্যবহারকারীদের বিপদে ফেলতে পারে পরিচিত বা অপরিচিত ব্যক্তিরা।

● কম্পিউটার, মুঠোফোনের পাশাপাশি ই-মেইল ও সামাজিক যোগাযোগের সাইটের জন্য শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হবে।

● আমরা অনেকেই ঘরে বা বাইরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লগইন থাকা অবস্থায় কম্পিউটার বা মুঠোফোন চালু রেখে বিভিন্ন কাজ করি। এতে তথ্য চুরির পাশাপাশি পাসওয়ার্ড বেহাত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

● অপরিচিত স্থানে গিয়ে ওয়াই-ফাই সংযোগ দিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার না করাই ভালো।

● প্রয়োজন শেষ হলেই অবশ্যই মুঠোফোনের ব্লুটুথ ও জিপিএস ফিচারটি বন্ধ রাখতে হবে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের অবস্থান অপরিচিত ব্যক্তিদের কাছে প্রকাশ হয়ে যায়।

● নিরাপদে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য অবশ্যই কম্পিউটার ও মুঠোফোনে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে।

19
জোশুয়া মার্টিনানগেলির বয়স সাত বছর। অসুস্থতার কারণে থাকতে হচ্ছে বাসায়। তাই বলে স্কুল কামাই দিতে নারাজ সে। তার বদলে স্কুলে পাঠিয়েছে একটি রোবট। সেই রোবটের মাধ্যমেই চলছে পড়ালেখা, সহপাঠীদের সঙ্গে আলাপচারিতা। ঘটনা জার্মানির বার্লিনের।

জোশুয়ার মা সিমন মার্টিনানগেলি। বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে তিনি বলেন, তাঁর ছেলে ফুসফুসের জটিল রোগে আক্রান্ত। এ কারণে গলায় একটি টিউব পরাতে হয়েছে। ফলে স্কুলে যাওয়া সম্ভব না। তাই এমন ব্যবস্থা। বার্লিনের পুসতেব্লুমে গ্রান্ডস্কুলের শিক্ষার্থী জোশুয়া। সেখানেই ক্লাস করছে রোবটটি। বসছে জোশুয়ার বেঞ্চেই। জোশুয়ার কিছু বলার প্রয়োজন হলে সংকেত দেয় সেটি। স্কুলটির প্রধান শিক্ষিকা উতে উইন্টারবার্গ জানান, ক্লাসের সময় শিশুরা রোবটটির মাধ্যমে জোশুয়ার সঙ্গে কথা বলে, হাসাহাসি করে, এমনকি একটু-আধটু দুষ্টুমি করতেও ভোলে না। রোবটটি নির্মাণ করেছে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠান। এ কাজে অর্থ দিয়েছে বার্লিনের মারজান-হেলারসডর্ফ জেলার স্থানীয় কাউন্সিল। জেলার শিক্ষা কাউন্সিলর টরস্টেন খিনি বলেন, ‘বার্লিনের একমাত্র জেলা হিসেবে আমরাই স্কুলগুলোর জন্য এমন চারটি রোবট এনেছি। এর পেছনের কারণ ছিল কোভিড-১৯। তবে আমি মনে করি মহামারির বাইরে গিয়ে এটিই হবে ভবিষ্যৎ।’

এই শিক্ষা কর্মকর্তা আরও বলেন, বিভিন্ন সময়ে দেখা যায়, নানা কারণে একটি শিশু সশরীরে স্কুলে যেতে পারছে না। এমন পরিস্থিতিতে স্কুলের সঙ্গে যুক্ত থাকার সুযোগ করে দিতে পারে এই রোবট।

20
Artificial Intelligence (AI) / রোবট যখন কৃষক
« on: February 07, 2022, 12:42:54 PM »
বাঁয়ে থাকা রোবটের নাম টম। ডানে আছে ডিক। কারও সাহায্য ছাড়াই ব্যস্তভাবে কাজ করে চলেছে ফসলের মাঠে। ফসল লাগানোর আগে জমি প্রস্তুত করার জন্য কৃষকের মতোই মাঠ থেকে খুঁজে খুঁজে আগাছা তুলছে রোবট দুটি। দুজনের মধ্যে কোনো কথা না হলেও একটি বিষয়ে মিল রয়েছে বেশ। আগাছা ঠেকাতে রাসায়নিক ব্যবহারে রাজি নয় কেউ। তারা প্রতিদিন প্রায় ৪৯ একর জমি থেকে আগাছা তুলতে পারে। শুনতে অবাক লাগলেও কৃষক রোবটদুটির দেখা মিলেছে যুক্তরাজ্যে। রোবট দুটি তৈরি করেছে ‘স্মল রোবট’ নামের একটি স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান। আগামী বছর থেকে রোবট দুটির বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হবে।

সূত্র: সিএনএন

21
প্রযুক্তিকীকরণ আমাদের করতেই হবে, কিন্তু তা করতে হবে অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে, যাতে প্রকৃতি আর প্রযুক্তির মধ্যে ভারসাম্য থাকে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মাধ্যমে আমাদের দৈনন্দিন জীবনে মানুষের সঙ্গে রোবটের সম্পর্ক আরও বাড়বে। তবে সব রোবটকে যে হাঁটতে-চলতে-কথা বলতে পারা যন্ত্রমানব হতে হবে, তা কিন্তু নয়। কলকারখানায় যে যন্ত্রগুলো এখন মানুষ ব্যবহার করে, সেগুলো আগামী দিনে চালাবে রোবট। অর্থাৎ কলকারখানায় কর্মীদের বদলে রোবট কাজ করবে।

রোবট কর্মীদের বেতন–বিশ্রামের দরকার হয় না, খাবারের বিরতি বা ছুটি দেওয়ারও ঝামেলা নেই। নির্ভুলভাবে একটানা কাজ করার ক্ষমতা থাকায় রোবট দিয়ে কাজ করালে উৎপাদন ও লাভের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে নিঃসন্দেহে। ফলে মালিকপক্ষও মানুষের বদলে রোবট কর্মী বেশি পছন্দ করবে। রোবটকে যে যন্ত্রই হতে হবে, তা কিন্তু নয়। সফটওয়্যার রোবটও মানুষের করা কাজ দ্রুত করতে পারে। একে বলে রোবটিকস প্রোসেস অটোমেশন (আরপিএ)। এই ধরনের সফটওয়্যার দিয়ে কয়েক দিনের কাজ মাত্র কয়েক মিনিট বা কয়েক ঘণ্টায় করা যায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনেক সিদ্ধান্তও দ্রুত নেওয়া সম্ভব।

বোঝাই যাচ্ছে, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব শ্রমজীবী মানুষের জীবিকার জন্য বড় ধরনের হুমকি হতে পারে। কারণ, কায়িক শ্রমের পাশাপাশি কোনো কোনো ক্ষেত্রে জ্ঞানভিত্তিক কাজও খুব সহজেই রোবট দিয়ে করা সম্ভব। অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, আগামী দিনে বেশ কিছু নতুন কাজ বা পেশা তৈরি হবে, যা এখনো আমাদের ধারণার বাইরেই রয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মতে, বর্তমানে স্কুলে সদ্য ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ৬০ শতাংশই আগামী দিনে সম্পূর্ণ নতুন কোনো পেশায় যোগ দেবে, যেসব পেশার এখন পর্যন্ত কোনো অস্তিত্বই নেই। অর্থাৎ পুরোনো পেশাগুলো হারিয়ে নতুন নতুন পেশা তৈরি হবে, ফলে চাকরির সংখ্যা বাড়বে। তবে এ জন্য অবশ্যই কর্মীদের নতুন ঘরানার প্রযুক্তিনির্ভর দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এক প্রতিবেদনে অ্যাক্সেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) জানিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ৬০ শতাংশ পোশাককর্মী চাকরি হারাতে পারেন। চামড়াজাত শিল্পে এই হার ৩৫ শতাংশ আর পর্যটনশিল্পে ২০ শতাংশ হতে পারে। একইভাবে আসবাব নির্মাণশিল্পে প্রায় ১৪ লাখ ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণশিল্পে ৬ লাখ কর্মী চাকরি হারাতে পারেন।

ব্লুমবার্গের তথ্যমতে, আগামী দিনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির রোবট আমাদের বিভিন্ন কাজ কম সময়ে দক্ষতার সঙ্গে করে দেবে। ফলে কায়িক শ্রমিক ছাড়াও ব্যাংকের ঋণ কর্মকর্তা, কেরানি, আইন সহকারী, খুচরা বিক্রয়কর্মী, নিরাপত্তাকর্মী, চিকিৎসক পেশা চাকরিচ্যুতির ঝুঁকিতে থাকবে। অন্যদিকে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম বলছে, ২০২৫ সালের মধ্যে ডেটা অ্যানালিস্ট, ডেটা সায়েন্টিস্ট, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, প্রসেস অটোমেশন, তথ্য সুরক্ষাসহ ইন্টারনেট অব থিংস বিশেষজ্ঞদের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে আমাদের দেশে সরকারি উদ্যোগে জাতীয় রোবটিকস কৌশলপত্র তৈরির কাজ চলছে। এই কৌশলপত্রে নিচের দুটি বিষয়ে নজর দেওয়া জরুরি বলে মনে করি।

১. শিল্পে ব্যবহার উপযোগী রোবট এরই মধ্যে বাংলাদেশে ব্যবহৃত হচ্ছে। শিগগির অনেক উৎপাদক প্রতিষ্ঠানেই এসব শিল্প রোবটের (ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট) ব্যবহার হবে। নিজেদের সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য আমরা যতই বলি না কেন, রোবট বা চতুর্থ শিল্পবিপ্লব চাকরি হারানোর কারণ হবে না, কথাটি বাংলাদেশের মতো দেশে বাস্তবায়ন করা বেশ কষ্টকর। কারণ, যে হারে কারখানা আধুনিকায়ন হবে, সেই হারে নতুন চাকরি তৈরি হবে না। ফলে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শ্রমিকের কাজ হারানোর আশঙ্কা থেকেই যাবে। বিষয়টি মাথায় রেখে সরকারিভাবে কারখানায় রোবট ব্যবহারের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। অর্থাৎ কোনো মালিক রাতারাতি নিজের কারখানায় শতভাগ রোবট বসিয়ে সব শ্রমিককে ছাঁটাই করতে পারবেন না। তাঁকে এই কাজ পর্যায়ক্রমে করতে হবে। সরকার বলে দিতে পারে, প্রতিবছর এই রোবট ব্যবহারের হার কোনোভাবেই ২৫ থেকে ৩৩ শতাংশের বেশি হওয়া যাবে না। অন্যভাবে বলতে হলে, অটোমেশনের কারণ দেখিয়ে কোনোভাবেই ২৫ থেকে ৩৩ শতাংশের বেশি শ্রমিককে একসঙ্গে চাকরিচ্যুত করা যাবে না।

২. যুক্তরাষ্ট্রের সিওবট নামের এক রোবট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পোশাক তৈরির জন্য রোবট বানিয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে আলোচনা করে তাদের তৈরি রোবটগুলো বাংলাদেশে সংযোজনের ব্যবস্থা করতে হবে। এর ফলে দুটি লাভ হবে আমাদের। প্রযুক্তি বিনিময়ের পাশাপাশি জ্ঞানও বাড়বে। এ ছাড়া বাংলাদেশে তৈরি হলে স্থানীয় তৈরি পোশাক (আরএমজি) কারখানা কম দামে রোবটগুলো কিনতে পারবে এবং বিক্রয়োত্তর সেবাও পাবে। ফলে পোশাক তৈরির খরচ কমায় প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ববাজারে সুবিধা হবে। শুধু তা–ই নয়, যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের দেশগুলো যদি কখনো নিজেদের দেশেই রোবটের সাহায্যে পোশাক তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়, তখন আমরা দেশগুলোর কাছে বাংলাদেশে তৈরি সিওবট রোবট বিক্রি করতে পারব। এখন সবাই আমাদের আরএমজি রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে চেনে, তখন হয়তো আমরা রোবট রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে পরিচিতি পাব।

লেখক: বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি এবং বেসিসের সাবেক সভাপতি

22
২৮০ অক্ষরের মধ্যে বার্তা লেখার বিধিনিষেধ থাকলেও দিন দিন জনপ্রিয়তা বাড়ছে টুইটারের। তবে মনের ভাব পুরোপুরি প্রকাশের সুযোগ না থাকায় ব্যবহারকারীদের অনেকেই আফসোস করতেন। এবার ইচ্ছেমতো বড় আকারের লেখা টুইটারে পোস্ট করা যাবে। এ জন্য শিগগিরই ‘টুইটার আর্টিকেল’ নামের ফিচার চালু করতে যাচ্ছে টুইটার। টুইটার অ্যাপের মধ্যেই আলাদা সেকশনে দেখা মিলবে ‘টুইটার আর্টিকেল’ ফিচারটির। এতে ক্লিক করেই আকারে বড় লেখা পোস্ট করা যাবে। চাইলে যেকোনো বিষয়ে প্রবন্ধ জমা দেওয়ারও সুযোগ মিলবে। এরই মধ্যে ফিচারটি চালুর জন্য কাজও শুরু করেছে টুইটার কর্মীরা।

এ বিষয়ে টুইটারের একজন মুখপাত্র জানান, টুইটার ব্যবহারকারীদের আরও বেশি বার্তাবিনিময়ের সুযোগ দিতে আমরা সব সময় নতুন উপায় খুঁজে থাকি। এ বিষয়ে শিগগিরই বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে। উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে টুইটার চালুর সময় মাত্র ১৪০ অক্ষরের বার্তা বিনিময়ের সুযোগ মিলত। তবে ব্যবহারকারীদের কাছে বড় পোস্টের চাহিদা থাকায় পরে অক্ষরের সংখ্যা ২৮০ করে টুইটার। এবার নতুন এ ফিচারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট অক্ষরের মধ্যে বার্তা লেখার বিধিনিষেধ তুলে নিতে পারে টুইটার।

সূত্র: এনডিটিভি

23
৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস। ১৯৫৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির দ্বার উন্মোচিত হয়। এ দিনকেই জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। জ্ঞানভিত্তিক, বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ গঠনের প্রত্যয়ে সাধারণ মানুষের কাছে গ্রন্থাগারকে জনপ্রিয় করা, গ্রন্থ ও গ্রন্থাগারের প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে ২০১৭ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস ঘোষণা করেন। ২০১৮ সাল থেকে প্রতিবছর ৫ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস পালিত হয়ে আসছে। এ বছর জাতীয় গ্রন্থাগার দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সুবর্ণজয়ন্তীর অঙ্গীকার, ডিজিটাল গ্রন্থাগার।’ জ্ঞানের আধার হলো বই আর বইয়ের আবাসস্থল হলো গ্রন্থাগার বা লাইব্রেরি। একটি জ্ঞানভিত্তিক, বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ গঠনে গ্রন্থাগার বা লাইব্রেরির ভূমিকা অপরিসীম। প্রাচীনকাল থেকেই পুঁথি সংরক্ষণের প্রথা ছিল। এসব পুঁথি লেখা হতো তালপাতায়, গাছের বাকলে, পশুর চামড়ায়, আবার কখনো পাথরে ও টেরাকোটা পদ্ধতিতে। সাধারণত এসব পুঁথি সংরক্ষণ করা হতো বিভিন্ন ধর্মগৃহে বা বিহারে অথবা উপসনালয়ে। তবে বিশ্বের প্রথম লাইব্রেরির ধারণা শুরু হয়েছিল প্রাচীন মিসরে। তখন উপাসনার পাশাপাশি তাত্ত্বিক আলোচনা বা জ্ঞান প্রসারের জন্য পুরোহিতদের নিজেদের প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস বা তথ্য সংরক্ষণের প্রয়োজন পড়ে। সেই থেকে মিসরের এক মন্দিরে শুরু এই লাইব্রেরি। সভ্যতা ক্রমেই অগ্রসর হওয়ার পথে মানুষ তার সৃষ্টিশৈলীকে সংরক্ষণ করতে শুরু করে। মিসরের আলেকজান্দ্রিয়া, ইরাকের বাগদাদ, দামেস্ক, প্রাচীন গ্রিস ও রোমে সমৃদ্ধ গ্রন্থাগারের নিদর্শন পাওয়া যায়। এ ছাড়া উপমহাদেশের তক্ষশীলা ও নালন্দায় সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার গড়ে উঠেছিল। আব্বাসীয় ও উমাইয়া শাসনামলে ‘দারুল হকিমা’ নামক গ্রন্থাগার ইউরোপকে জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ করেছে। সমকালীন মিসরের ‘বাইতুল হিকমা’ও অনুরূপ ভূমিকা পালন করেছে। যুগে যুগে গ্রন্থাগারগুলো গড়ে উঠেছে রাজদরবার ও ধর্মীয় উপাসনালয়কে কেন্দ্র করে।

বিখ্যাত গ্রন্থাগারসমূহের মধ্যে প্রথমেই আসে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গ্রন্থাগার ‘লাইব্রেরি অব কংগ্রেস’–এর নাম। আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত এই লাইব্রেরিতে রয়েছে ৩ কোটি ২০ লাখ বইয়ের এক বিশাল সমাহার। লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়ামও পৃথিবীর বিখ্যাত লাইব্রেরির মধ্যে অন্যতম। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বডলিন লাইব্রেরি’তে রয়েছে এক কোটির বেশি গ্রন্থ।

এ ছাড়া পৃথিবীর প্রাচীনতম লাইব্রেরির মধ্যে রয়েছে ‘ভ্যাটিকান লাইব্রেরি’। এ ছাড়া ফ্রান্সের বিবলিওথিক লাইব্রেরি, মস্কোর লেনিন লাইব্রেরি ও কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরি উল্লেখযোগ্য। মিসরের আলেকজান্দ্রিয়া লাইব্রেরিও পৃথিবীর প্রাচীন লাইব্রেরির মধ্যে অন্যতম, যা একসময় পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের মধ্যেও ছিল। লাইব্রেরির বিভিন্ন প্রকারভেদের মধ্যে জাতীয় গ্রন্থাগার অন্যতম। জাতীয় গ্রন্থাগার সাধারণত দেশের সরকার প্রতিষ্ঠা করে থাকে। অন্যান্য গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠার পেছনে যেসব কারণ বিদ্যমান, এ ক্ষেত্রেও তার সব কটি কারণ বিদ্যমান। তবে প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছুটা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। আর এটি হয় এ জন্য যে, জাতীয় পর্যায়ের গ্রন্থাগার আর দশটি অনুরূপ প্রতিষ্ঠান থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। ‌ জাতীয় গ্রন্থাগার এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যার সংগ্রহের পরিধি জাতীয়ভিত্তিক, গুরুত্ব আন্তর্জাতিক এবং দেশ ও জাতি সম্পর্কে দেশি-বিদেশি সব প্রকাশনা সংগ্রহ করে জাতীয় ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করাই এর প্রধান বৈশিষ্ট্য। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৯৭২ সালের ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ জাতীয় গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে পাঁচ লাখের অধিক বইয়ের সংগ্রহশালা রয়েছে। এ ছাড়া ১৯৫১ সাল থেকে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক, আঞ্চলিকসহ বিভিন্ন সংবাদপত্র ও দেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রহশালা রয়েছে এ গ্রন্থাগারে।

২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ‌ এরপর ২০১৮ সাল থেকে প্রতিবছর দেশব্যাপী জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস পালিত হয়ে আসছে। কিন্তু জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস পালনের তাৎপর্য দেশের মানুষকে, বর্তমান প্রজন্মকে বই পড়ায়, জ্ঞানচর্চায়, মুক্তচিন্তার চর্চায় কতটুকু উদ্বুদ্ধ করতে পারছে; সার্বিকভাবে এ দিবস কতটুকু ফলপ্রসূ—সে প্রশ্ন না উঠে পারে না। দেশের বেশির ভাগ মানুষই এ দিবস সম্পর্কে অবগত নয়। দেশের বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে দিন দিন বইবিমুখতা বেড়েই চলছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও নেই বই পড়ার চর্চা, মুক্তবুদ্ধির চর্চা। নেই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য কার্যকর কোনো উদ্যোগ বা পদক্ষেপ। শুধু গাইড মুখস্থনির্ভর আর সরকারি আমলা হওয়ার প্রতিযোগিতায় বিভোর হয়ে আছে প্রজন্ম। জ্ঞানভিত্তিক, বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ গঠন ব্যতীত আমাদের পরিপূর্ণ মুক্তি বা সমৃদ্ধি সম্ভব নয়। বইবিমুখ সৃজনশীলতা–বিবর্জিত একটা প্রজন্ম গড়ে উঠছে। এমন প্রজন্ম পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সবার জন্যই অকল্যাণকর। বই ছেড়ে আমাদের তরুণ প্রজন্ম এখন নানা অকাজ–কুকাজে লিপ্ত। ‌ অথচ বিপুলসংখ্যক সদস্যের এ প্রজন্ম নিয়ে যেন ভাবার কেউ নেই! তরুণ প্রজন্মই দেশ ও জাতির গুরুত্বপূর্ণ মানবসম্পদ। তরুণ প্রজন্মের সঠিক পরিচর্যার ওপর নির্ভর করে দেশের ভবিষ্যৎ। গ্রন্থাগার আমাদের আলোর পথের নীরব পথপ্রদর্শক। সমৃদ্ধ জাতি গঠনে গ্রন্থাগার বা লাইব্রেরির বিকল্প নেই। শূন্যতায় হাহাকার করা গ্রন্থাগারগুলোর দিকে তাকালেই বোঝা যায় আমাদের জ্ঞানচর্চার ও মুক্তচিন্তার দৈন্য। জ্ঞানবিজ্ঞানে সমৃদ্ধ আলোকিত প্রজন্ম গড়ে তোলার জন্য গ্রন্থাগারগুলোর দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। ‌ পুরোনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা পরিহার করে গ্রন্থাগারগুলোকে যুগোপযোগী ও আধুনিকায়িত করতে হবে। প্রজন্মকে বই পড়ায়, জ্ঞানচর্চায়, মুক্তচিন্তায় উৎসাহিত করতে হবে এবং তার জন্য উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ‌ প্রতিটি জেলায় একটি মডেল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশে অনেক মডেল মসজিদ–মন্দির স্থাপিত হয়েছে। কিন্তু একটিও কি মডেল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে? অথচ এই লাইব্রেরি আমাদের বাতিঘর। আমরা আমাদের বাতিঘরকে হারাতে বসেছি বিধায় আমাদের আজ এই করুণ দশা। আমাদের সমৃদ্ধির পথে এগোতে হলে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করতে হবে, লাইব্রেরির গুরুত্ব দিতে হবে।

*লেখক: ইমরান ইমন, শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

24
৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস। ১৯৫৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির দ্বার উন্মোচিত হয়। এ দিনকেই জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস হিসেবে নির্ধারণ করা হয়। জ্ঞানভিত্তিক, বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ গঠনের প্রত্যয়ে সাধারণ মানুষের কাছে গ্রন্থাগারকে জনপ্রিয় করা, গ্রন্থ ও গ্রন্থাগারের প্রচার ও প্রসারের লক্ষ্যে ২০১৭ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস ঘোষণা করেন। ২০১৮ সাল থেকে প্রতিবছর ৫ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস পালিত হয়ে আসছে। এ বছর জাতীয় গ্রন্থাগার দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সুবর্ণজয়ন্তীর অঙ্গীকার, ডিজিটাল গ্রন্থাগার।’ জ্ঞানের আধার হলো বই আর বইয়ের আবাসস্থল হলো গ্রন্থাগার বা লাইব্রেরি। একটি জ্ঞানভিত্তিক, বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ গঠনে গ্রন্থাগার বা লাইব্রেরির ভূমিকা অপরিসীম। প্রাচীনকাল থেকেই পুঁথি সংরক্ষণের প্রথা ছিল। এসব পুঁথি লেখা হতো তালপাতায়, গাছের বাকলে, পশুর চামড়ায়, আবার কখনো পাথরে ও টেরাকোটা পদ্ধতিতে। সাধারণত এসব পুঁথি সংরক্ষণ করা হতো বিভিন্ন ধর্মগৃহে বা বিহারে অথবা উপসনালয়ে। তবে বিশ্বের প্রথম লাইব্রেরির ধারণা শুরু হয়েছিল প্রাচীন মিসরে। তখন উপাসনার পাশাপাশি তাত্ত্বিক আলোচনা বা জ্ঞান প্রসারের জন্য পুরোহিতদের নিজেদের প্রয়োজনীয় কিছু জিনিস বা তথ্য সংরক্ষণের প্রয়োজন পড়ে।

সেই থেকে মিসরের এক মন্দিরে শুরু এই লাইব্রেরি। সভ্যতা ক্রমেই অগ্রসর হওয়ার পথে মানুষ তার সৃষ্টিশৈলীকে সংরক্ষণ করতে শুরু করে। মিসরের আলেকজান্দ্রিয়া, ইরাকের বাগদাদ, দামেস্ক, প্রাচীন গ্রিস ও রোমে সমৃদ্ধ গ্রন্থাগারের নিদর্শন পাওয়া যায়। এ ছাড়া উপমহাদেশের তক্ষশীলা ও নালন্দায় সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার গড়ে উঠেছিল। আব্বাসীয় ও উমাইয়া শাসনামলে ‘দারুল হকিমা’ নামক গ্রন্থাগার ইউরোপকে জ্ঞান-বিজ্ঞানে সমৃদ্ধ করেছে। সমকালীন মিসরের ‘বাইতুল হিকমা’ও অনুরূপ ভূমিকা পালন করেছে। যুগে যুগে গ্রন্থাগারগুলো গড়ে উঠেছে রাজদরবার ও ধর্মীয় উপাসনালয়কে কেন্দ্র করে।

বিখ্যাত গ্রন্থাগারসমূহের মধ্যে প্রথমেই আসে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গ্রন্থাগার ‘লাইব্রেরি অব কংগ্রেস’–এর নাম। আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত এই লাইব্রেরিতে রয়েছে ৩ কোটি ২০ লাখ বইয়ের এক বিশাল সমাহার। লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়ামও পৃথিবীর বিখ্যাত লাইব্রেরির মধ্যে অন্যতম। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বডলিন লাইব্রেরি’তে রয়েছে এক কোটির বেশি গ্রন্থ।

এ ছাড়া পৃথিবীর প্রাচীনতম লাইব্রেরির মধ্যে রয়েছে ‘ভ্যাটিকান লাইব্রেরি’। এ ছাড়া ফ্রান্সের বিবলিওথিক লাইব্রেরি, মস্কোর লেনিন লাইব্রেরি ও কলকাতার ন্যাশনাল লাইব্রেরি উল্লেখযোগ্য। মিসরের আলেকজান্দ্রিয়া লাইব্রেরিও পৃথিবীর প্রাচীন লাইব্রেরির মধ্যে অন্যতম, যা একসময় পৃথিবীর সপ্তাশ্চর্যের মধ্যেও ছিল। লাইব্রেরির বিভিন্ন প্রকারভেদের মধ্যে জাতীয় গ্রন্থাগার অন্যতম। জাতীয় গ্রন্থাগার সাধারণত দেশের সরকার প্রতিষ্ঠা করে থাকে। অন্যান্য গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠার পেছনে যেসব কারণ বিদ্যমান, এ ক্ষেত্রেও তার সব কটি কারণ বিদ্যমান। তবে প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছুটা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। আর এটি হয় এ জন্য যে, জাতীয় পর্যায়ের গ্রন্থাগার আর দশটি অনুরূপ প্রতিষ্ঠান থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। ‌ জাতীয় গ্রন্থাগার এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যার সংগ্রহের পরিধি জাতীয়ভিত্তিক, গুরুত্ব আন্তর্জাতিক এবং দেশ ও জাতি সম্পর্কে দেশি-বিদেশি সব প্রকাশনা সংগ্রহ করে জাতীয় ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করাই এর প্রধান বৈশিষ্ট্য। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১৯৭২ সালের ৬ নভেম্বর বাংলাদেশ জাতীয় গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে পাঁচ লাখের অধিক বইয়ের সংগ্রহশালা রয়েছে। এ ছাড়া ১৯৫১ সাল থেকে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, সাপ্তাহিক, আঞ্চলিকসহ বিভিন্ন সংবাদপত্র ও দেশের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ সংগ্রহশালা রয়েছে এ গ্রন্থাগারে।

২০১৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস পালনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ‌ এরপর ২০১৮ সাল থেকে প্রতিবছর দেশব্যাপী জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস পালিত হয়ে আসছে। কিন্তু জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস পালনের তাৎপর্য দেশের মানুষকে, বর্তমান প্রজন্মকে বই পড়ায়, জ্ঞানচর্চায়, মুক্তচিন্তার চর্চায় কতটুকু উদ্বুদ্ধ করতে পারছে; সার্বিকভাবে এ দিবস কতটুকু ফলপ্রসূ—সে প্রশ্ন না উঠে পারে না। দেশের বেশির ভাগ মানুষই এ দিবস সম্পর্কে অবগত নয়। দেশের বর্তমান প্রজন্মের মধ্যে দিন দিন বইবিমুখতা বেড়েই চলছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও নেই বই পড়ার চর্চা, মুক্তবুদ্ধির চর্চা। নেই বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য কার্যকর কোনো উদ্যোগ বা পদক্ষেপ। শুধু গাইড মুখস্থনির্ভর আর সরকারি আমলা হওয়ার প্রতিযোগিতায় বিভোর হয়ে আছে প্রজন্ম। জ্ঞানভিত্তিক, বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ গঠন ব্যতীত আমাদের পরিপূর্ণ মুক্তি বা সমৃদ্ধি সম্ভব নয়। বইবিমুখ সৃজনশীলতা–বিবর্জিত একটা প্রজন্ম গড়ে উঠছে। এমন প্রজন্ম পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সবার জন্যই অকল্যাণকর। বই ছেড়ে আমাদের তরুণ প্রজন্ম এখন নানা অকাজ–কুকাজে লিপ্ত। ‌ অথচ বিপুলসংখ্যক সদস্যের এ প্রজন্ম নিয়ে যেন ভাবার কেউ নেই! তরুণ প্রজন্মই দেশ ও জাতির গুরুত্বপূর্ণ মানবসম্পদ। তরুণ প্রজন্মের সঠিক পরিচর্যার ওপর নির্ভর করে দেশের ভবিষ্যৎ। গ্রন্থাগার আমাদের আলোর পথের নীরব পথপ্রদর্শক। সমৃদ্ধ জাতি গঠনে গ্রন্থাগার বা লাইব্রেরির বিকল্প নেই। শূন্যতায় হাহাকার করা গ্রন্থাগারগুলোর দিকে তাকালেই বোঝা যায় আমাদের জ্ঞানচর্চার ও মুক্তচিন্তার দৈন্য। জ্ঞানবিজ্ঞানে সমৃদ্ধ আলোকিত প্রজন্ম গড়ে তোলার জন্য গ্রন্থাগারগুলোর দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। ‌ পুরোনো আমলাতান্ত্রিক জটিলতা পরিহার করে গ্রন্থাগারগুলোকে যুগোপযোগী ও আধুনিকায়িত করতে হবে। প্রজন্মকে বই পড়ায়, জ্ঞানচর্চায়, মুক্তচিন্তায় উৎসাহিত করতে হবে এবং তার জন্য উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ‌ প্রতিটি জেলায় একটি মডেল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে দেশে অনেক মডেল মসজিদ–মন্দির স্থাপিত হয়েছে। কিন্তু একটিও কি মডেল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে? অথচ এই লাইব্রেরি আমাদের বাতিঘর। আমরা আমাদের বাতিঘরকে হারাতে বসেছি বিধায় আমাদের আজ এই করুণ দশা। আমাদের সমৃদ্ধির পথে এগোতে হলে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করতে হবে, লাইব্রেরির গুরুত্ব দিতে হবে।

*লেখক: ইমরান ইমন, শিক্ষার্থী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

25
Communicable Diseases / করোনাভাইরাস
« on: March 11, 2020, 04:56:07 PM »
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে সন্দেহে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে তিন দিনে মোট ৩৪ জনকে ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে’ রাখা হয়েছে। ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে’ রাখা ৩২ জন পুরুষ। তাঁরা সবাই বিদেশফেরত। বাকি দুজন নারী। পৌর ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সহকারীরা হোম কোয়ারেন্টাইনের প্রধান পর্যবেক্ষক হিসেবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক তাঁদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এদিকে আজ বুধবার থেকে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির ব্যবস্থাপনায় ৫০ শয্যার একটি আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত করা হয়েছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া স্থানে নির্মাণাধীন ট্রমা সেন্টারে আইসোলেশন ইউনিট খোলা হয়েছে। আজ সন্ধ্যার মধ্যে শয্যা প্রস্তুত হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। করোনাভাইরাসের ঝুঁকি আছে, এমন লোকজনকে রাত থেকে আইসোলেশন ইউনিটে রাখার চিন্তা করছে প্রতিরোধ কমিটি। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, ভৈরবে প্রথমে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয় গত সোমবার। ওই দিন সংখ্যা ছিল ১১ জন। মঙ্গলবার রাখা হয় ১৩ জনকে। আজকে রাখা হয়েছে ১০ জনকে। প্রত্যেকের বাড়ির পৃথক কক্ষে তাঁদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁরা ১৪ দিন পর্যবেক্ষণে থাকবেন। এই সময় তাঁদের বাইরে চলাফেরা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মেলামেশা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদেরও চলাফেরা সীমিত করা হয়েছে। বিশেষ করে পরিবারের সদস্যদের নিজ ঘর ও আঙিনা পর্যন্ত এলাকায় চলাফেরা সীমাবদ্ধ রাখতে বলা হয়েছে।  এ আদেশের কোনো ব্যত্যয় ঘটছে কি না, স্বাস্থ্য সহকারীরা তার প্রতি নজর রাখছেন। জনপ্রতিনিধি ও সমাজসচেতনদেরও এই কাজে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। ব্যতিক্রম হলেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফোন আসছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের পর্যবেক্ষণে থাকা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সহকারী হুমায়ুন কবির বলেন, সবাইকে যথাযথ নিয়মের মধ্যে রাখা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরাও সচেতন আছেন। ফলে সমস্যা হচ্ছে না। আজ সকাল ১০টার দিকে ট্রমা সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুবনা ফারজানা এবং সদস্যসচিব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদের নেতৃত্বে আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত করা হচ্ছে। শয্যা আনা হয়েছে। শয্যার জোগান এসেছে শহরের বিভিন্ন ক্লিনিক থেকে। বুলবুল আহমেদ বলেন, ‘হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের বেশির ভাগই ইতালি থেকে আসা। তাঁদের বিষয়ে আমাদের নির্দেশনা স্পষ্ট। সবাইকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত ঘরের নির্দিষ্ট কক্ষে থাকতে হবে। ব্যতিক্রম হলে পুলিশ ডাকারও সুযোগ রয়েছে।’

26
এক সময় যেই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী হয়ে থেকেছেন, সেখানেই শিক্ষক হিসেবে ফিরে আসার অনুভূতি কেমন? এই শিক্ষকেরা কি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে নিজেকেও খুঁজে পান? পড়ুন ৫ শিক্ষকের অভিজ্ঞতা।

শায়লা ইসরাত
প্রভাষক, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি)
আইইউবিতে আমার রুমে যাওয়ার দুটি পথ আছে। আমি সব সময় ক্যানটিনের সামনের পথটা বেছে নিই, কারণ এই জায়গা সব সময় প্রাণোচ্ছল থাকে। ছেলেমেয়েদের এত হাসি, উদ্যম, উচ্ছলতা—দেখলে মন ভালো হয়ে যায়। ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় আর বের হওয়ার সময়, প্রতিদিন আমি ওদের দেখে শক্তি পাই। একটু দুঃখবোধও হয়। কারণ, এই তো কয়েক বছর আগে, আমিও তো ওদের একজনই ছিলাম। সেই ক্যানটিন, উচ্ছলতা, প্রাণ, রং—সবই আছে, নেই শুধু আমার বন্ধুরা। কেউ উচ্চশিক্ষা, কেউবা চাকরি নিয়ে ব্যস্ত।

আইইউবি থেকে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক প্রকৌশলে আমার স্নাতক সম্পন্ন হয় ২০১৩ সালে। সিজিপিএ ছিল ৩.৯২, যেটা আমার ব্যাচের সর্বোচ্চ। তবু ক্যারিয়ার নিয়ে তখনো অনিশ্চয়তায় ভুগছিলাম। প্রতিদিন পত্রিকায় চাকরির বিজ্ঞাপন দেখতাম। এর মধ্যে একদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা করতে গেলাম। ডিন স্যার বললেন, ‘তুমি এখানে অ্যাপ্লাই করছ না কেন?’

 ২০১৪ সালে আমি আবার নতুন করে আইইউবিতে এলাম; শিক্ষার্থী নয়, শিক্ষক হিসেবে। শুরু থেকেই ছেলেমেয়েরা আমাকে পছন্দ করেছিল। ওরা বলত, ওদের না–বলা কথা আমি বুঝতে পারি। সত্যিই তা–ই। ক্লাসে কখন বোরিং লাগে, কখন একটু হাসাহাসি করতে ইচ্ছা হয়, কখন পড়ার বাইরে অন্য বিষয়ে কথা বলতে ভালো লাগে, কখন ঘুম পায়—এসব আমি বুঝি। যখন শিক্ষার্থী ছিলাম, মনে হতো, এত ক্লাস টেস্ট, কুইজ, মিডটার্ম কেন যে শিক্ষকেরা নেন! এখন জানি, পরীক্ষা না নিলে ছেলেমেয়েরা পড়তে বসে না।

আমার শিক্ষকেরা এখনো আমাকে ছাত্রীর মতোই দেখেন, এখনো আমি বকা খাই, এখনো কোনো সমস্যা হলে তাঁরা আমাকে বুঝিয়ে বলেন, কী যে ভালো লাগে! তবে সবচেয়ে ভালো লাগে তখন, যখন প্রথম বর্ষের কোনো শিক্ষার্থী বলে, ‘ম্যাম, আমি আসলে নিজের ইচ্ছায় ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে আসিনি। আপনার ক্লাস করে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আগ্রহ পেতে শুরু করেছি।’
শিক্ষকদের পাশে পাওয়া বড় আশীর্বাদ

বায়েজীদ বাতেন
প্রভাষক, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) মিলনায়তনে তখন জমজমাট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে। আমি বসেছি একদম সামনের সারিতে, শিক্ষকদের সঙ্গে। এদিকে আমার মন পড়ে আছে পেছনে। কারণ, পেছনের সারিতে বসে চিৎকার করে গান গাওয়ার যে কী আনন্দ, সেটা আমি জানি। একসময় বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ছিলাম। এখন সেখানেই আছি শিক্ষক হিসেবে। অথচ বুয়েটের শিক্ষক তো দূরের কথা, ছাত্র হওয়ার ভাবনাও আমার ছিল না।
মা-বাবা চেয়েছিলেন, আমি ডাক্তার হই। এ লেভেল শেষ করে মেডিকেলের কোচিংয়ে ভর্তিও হয়েছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মেডিকেলে নয়, যেহেতু পদার্থবিজ্ঞান খুব আগ্রহ নিয়ে পড়তাম, চান্স পেয়ে গেলাম বুয়েটে। বুয়েটজীবনের শুরুতে ক্লাস, হাফওয়ালে বসে আড্ডা, ক্লাস শেষেই ক্যাফেটেরিয়ায় ছোটা...সে কী রোমাঞ্চ! নাচ, গান, প্রতিযোগিতা, যা-ই হোক, ক্যাম্পাসের সহশিক্ষামূলক কার্যক্রম প্রায় কোনোটাই বাদ দিইনি। ভবিষ্যতে কী হব, কোথায় যাব, এসব নিয়ে অত ভাবতাম না। শুধু মনে হতো, বদ্ধ ঘরে বসে পড়ার মতো কোনো বিষয় প্রকৌশল নয়। এটা ঘুরে-ফিরে-দেখে-বুঝে, হাতেকলমে শেখার জিনিস।

তৃতীয় বর্ষে ওঠার পর বন্ধুরা বলত, ‘কিরে, তোর তো রেজাল্ট ভালো। তুই তো টিচার হবি।’ এর আগে সত্যিই শিক্ষক হওয়ার কথা ভাবিনি। এখন যখন আমার শিক্ষকদের সঙ্গে বসে চা খাই, মনে হয় এটা জীবনের বড় আশীর্বাদ। শিক্ষকেরা তো আজীবনই শিক্ষক থাকেন।

আমি আমার শিক্ষার্থীদের বলি, শুধু বইয়ের মধ্যে ডুবে থেকো না। বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় যাও, সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নাও, ছাত্রজীবনটা উপভোগ করো। সেই স্কুলজীবন থেকে আমি কখনো শিক্ষকদের প্রশ্ন করতে দ্বিধা করিনি। আমি চাই ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আমারও সেই সম্পর্কটা থাকুক। যদি কিছু বুঝতে সমস্যা হয়, হোক আমার ক্লাসের কিংবা অন্য ক্লাসের বিষয়, এমনকি ব্যক্তিগত কোনো সমস্যা—কথা বলার জন্য আমার দরজা সব সময় খোলা।
ছাত্রীদের হৃৎস্পন্দন আমার চেনা
সৈয়দা নাদিয়া আফরিন মোহনা
শিক্ষক, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আজিমপুর দিবা শাখা

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শেষে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞানে পড়েছি। আত্মবিশ্বাস ছিল, তবু ইন্টারভিউ দিতে গেলে একটু নার্ভাস তো লাগেই। কিন্তু সিভি হাতে নিয়ে আপা যখন বললেন, ‘ও! আমাদের মেয়ে।’ হঠাৎ করেই সব ভয় দূর হয়ে গেল।
প্রথম যেদিন নবম শ্রেণির পদার্থবিজ্ঞান ক্লাস নিতে গেলাম, সেই দিনটার কথা আমার মনে আছে। একটা ক্লাসে প্রায় ৬০ জন ছাত্রী। এতগুলো মেয়েকে সামলে রাখা সহজ নয়। কিন্তু যখন বললাম, আমিও একদিন ভিকারুননিসার ছাত্রী ছিলাম, ওদের সঙ্গে সম্পর্কটা সহজ হয়ে গেল। টের পেলাম, উল্টো দিকে বসে থাকা মেয়েগুলোর হৃৎস্পন্দন আমার খুব চেনা!

ভিকারুননিসা নূন স্কুলের বসুন্ধরা দিবা শাখায় ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছি। উচ্চমাধ্যমিক পড়েছি বেইলি রোড শাখায়। আর এখন আজিমপুর শাখায় শিক্ষক হিসেবে ক্লাস নিই। মাঝেমধ্যে কোনো অনুষ্ঠান হলে সব শাখার শিক্ষকেরা এক হন। আমার পুরোনো শিক্ষকদের দেখে আমি যতটা খুশি হই, মনে হয় তাঁদের খুশি আমার চেয়েও বেশি।

ছাত্রীদের সঙ্গে আমার সম্পর্কট চমৎকার। ক্লাসভর্তি মেয়েদের সঙ্গে সময় কাটাতে দারুণ লাগে। যখন ছাত্রী ছিলাম, শিক্ষকেরা বকা দেওয়ার সময় বলতেন, ‘আমাকে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা কোরো না। তোমার জায়গায় একদিন আমিও ছিলাম।’ মনে হতো, সব শিক্ষক কেন একই কথা বলেন। আশ্চর্য, এখন সেই কথা আমিও বলি!

কখনো কখনো খুব স্মৃতিকাতর লাগে, বিশেষ করে বিদায়ী ছাত্রীদেরর‌্যাগ ডের সময়। মেয়েরা যখন ছোটাছুটি করে একজন আরেকজনের টি–শার্টে লেখে, একসঙ্গে ‘পুরোনো সেই দিনের কথা’ গায়, পেছনে দাঁড়িয়ে আমারও কখন যেন চোখ ভিজে যায়। আমরা ভিকারুননিসার ছাত্রীরা বলি, ‘ওয়ানস আ ভিকি, অলওয়েজ আ ভিকি’। এই কথা আমার বেলায় একটু বেশিই সত্যি।
শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা দিতে চাই
দিলীপ চন্দ্র রায়
প্রভাষক, সরকাির মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজ, সিলেট।

মফস্বলের সন্তান হওয়ায় শহরের সঙ্গে স্বাভাবিক যোগাযোগ বড় কঠিন ছিল। সালটা ১৯৯৬। ইচ্ছা ছিল উচ্চমাধ্যমিক পড়ব প্রিয় ক্যাম্পাস মুরারিচাঁদ কলেজ, সিলেটে (এমসি কলেজ)। কিন্তু ভর্তি হতে না পারার বেদনা নিয়ে যখন বাড়িতে পৌঁছাই, তখন চারপাশে অবসন্ন অন্ধকার। মা আমার অসহায় চাহনি দেখে বারবার সান্ত্বনা দিচ্ছিলেন এই বলে যে ভগবান যা করেন, মঙ্গলের জন্যই করেন।
১৯৯৬ সালের বেদনা ভুলিয়ে দিতে ১৯৯৮-৯৯ শিক্ষাবর্ষে এমসি কলেজে গণিত বিভাগে ভর্তি হই। বলতে দ্বিধা নেই যে প্রথম দিকে এমসি কলেজে অধ্যয়ন মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছিল। পড়ালেখা থেকে খানিকটা বিচ্ছিন্ন হয়ে বিভিন্ন সংগঠন করা, কবিতা আর গল্প লেখা, পত্রিকায় টুকিটাকি লেখালেখি করা, সাহিত্য ম্যাগাজিন প্রকাশ করা ইত্যাদি হয়ে উঠেছিল প্রধান উপজীব্য বিষয়। এরই মধ্যে গণিত বিভাগ একটু একটু করে কাছে টানতে শুরু করে। মাঝেমধ্যে ক্লাসে আসি, স্যারদের কথা শুনি। কোনো কোনো স্যার নিজের জীবনের গল্প, বিসিএস ক্যাডার হওয়ার গল্প শোনান, শুনে আমার মতো অনেকের মনেই একটা স্বপ্ন দানা বাঁধতে শুরু করে।

তখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজে পড়ে বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন দেখা অনেকটাই বিলাসিতা ছিল। কিন্তু প্রেরণা পেতাম তাঁদের দেখে, যাঁরা এমসি কলেজে পড়ে সেখানেই শিক্ষকতা করছেন। আজ আমার শিক্ষার্থীদের মধ্যেও একই বিশ্বাস ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করি। প্রাত্যহিক শত সংকট মোকাবিলা করতে গিয়ে ছাত্রজীবন থেকেই শিক্ষকতার সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছিলাম। যখন শিক্ষার্থীদের সামনে কথা বলি এবং তারা সেই কথা মনোযোগ দিয়ে শোনে, তখন শিক্ষকতার বাইরে নিজেকে কল্পনা করতে পারি না। আমি যাঁদের ছাত্র ছিলাম, সেই শিক্ষাগুরুদের সহকর্মী হয়ে তাঁদের স্নেহাবেশে আবিষ্ট হয়ে একই কর্মক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ পাওয়ার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে সব সময় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, অনুপ্রেরণা আর উৎসাহ একজন শিক্ষার্থীর জীবনকে ইতিবাচকভাবে আমূল পাল্টে দিতে পারে। একজন শিক্ষক হিসেবে আমি আমার শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসাহ প্রদানের ফেরিওয়ালা হয়ে বেঁচে থাকতে চাই।
আবেগ আগের মতোই আছে
নরদেব রায়
প্রভাষক, এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ, দিনাজপুর

ডা. ইউসুফ আলী ছাত্রাবাসের রুম নম্বর ১০৮। আমি আর আমার এক বন্ধু রুমে ঢুকতেই ভেতরে বসে থাকা ছাত্ররা চট করে দাঁড়িয়ে পড়ল। খুব অবাক হয়ে বলল, ‘স্যার আসেন, বসেন।’ ওদের শান্ত করে বলি, ‘তোমাদের এই রুমে একদিন আমি ছিলাম।’ এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজে (সাবেক দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ) শিক্ষক হিসেবে যোগ দেওয়ার দু–এক দিন পর গিয়েছিলাম নিজের পুরোনো ঠিকানায়। মনের আঙিনায় উঁকি দিয়ে যাচ্ছিল অজস্র স্মৃতি।
আমার বাবা বলতেন, ‘গতিই জীবন, স্থবিরতাই মৃত্যু।’ অথচ অল্প বয়সেই মাকে হারিয়ে আমাদের পাঁচ ভাইবোনেরই মনে হয়েছিল, জীবনটা বুঝি থমকে গেছে। জীবনের এই কঠিন বাস্তবতাকে কেন্দ্র করে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন আমার মনে প্রথম উঁকি দিয়েছিল। মা মেনকা রানী রায়ের মৃত্যুর পর বাবা মনোরঞ্জন রায় একই সঙ্গে মা ও বাবা, দুই ভূমিকাই পালন করেছেন। ভাইদের মধ্যে আমি ছিলাম সবার ছোট। নিজের জীবন বিসর্জন দিয়ে বড় ভাই তপনদা সংসারের হাল ধরেছিলেন। বাবা ও ভাইয়ের স্বপ্ন পূরণ করব বলেই ডাক্তার হওয়ার দৃঢ়সংকল্প আমার ছিল।

দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার পর সব সময় মনে একটা অভিপ্রায় ছিল, যদি কখনো শিক্ষক হই, তাহলে নিজের কলেজেই হব। স্বপ্ন পূরণ হবে, সেটা অবশ্য তখনো ভাবতে পারিনি। ৩৩তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়ে মেডিকেল অফিসার হিসেবে যোগ দিয়েছিলাম পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কিন্তু ওই যে মনে একটা সুপ্ত বাসনা ছিল, সেটিই আমাকে শেষ পর্যন্ত নিয়ে এল নিজের পুরোনো ক্যাম্পাসে।

কলেজের নাম বদলে গেছে, ভেতরেও অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু আমার আবেগ এখনো আগের মতোই আছে। অনেক ঝড়ঝাপটা পেরিয়ে জীবনের এই অবস্থানে এসেছি। আমার অভিজ্ঞতা থেকেই সব সময় ছাত্রছাত্রীদের শেখাতে চেষ্টা করি। গরিব মানুষের সেবা করার যে ব্রত নিয়ে আমি চিকিৎসাবিদ্যায় পড়তে এসেছিলাম, আমি চাই আমার প্রত্যেক শিক্ষার্থীর মনেও সব সময় থাকুক এই মহান ব্রত।


শিক্ষা সংবাদ> প্রথম আলো

Pages: 1 [2]