Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - abdussatter

Pages: 1 ... 22 23 [24] 25
346
Faculty Forum / Online e-TIN registration process
« on: August 08, 2014, 09:24:48 AM »
অনলাইনে ই-টিআইএন নিতে হলে ইচ্ছুকদের www.incometax.gov.bd এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। নির্দিষ্ট নির্দেশিকা অনুযায়ী ই-টিআইএনের ফরম পূরণ করতে হবে। সর্বশেষ অনলাইনে আবেদনপত্রটি জমা দেওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে ই-টিআইএন সনদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্কিনে ভেসে উঠবে। পরে তা প্রিন্ট নিতে হবে এবং সংরক্ষণ করতে হবে। এভাবে মাত্র কয়েক মিনিটেই স্বয়ংক্রিয় উপায়ে ঘরে বসেই ই-টিআইএন পাওয়া যাবে।

যদি জাতীয় পরিচয়পত্রে দেওয়া তথ্যের সঙ্গে গড়মিল থাকে, তবে নতুন ই-টিআইএনের জন্য আবেদন গ্রহণ করা হবে না। আর যাঁদের জাতীয় পরিচয়পত্র নেই তাঁদের ক্ষেত্রে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ছবি সন্নিবেশিত করতে হবে। আর পুরোনো টিআইএনধারীদের পুনর্নিবন্ধনের ক্ষেত্রে একই উপায়ে ফরম পূরণ করতে হবে।
আর কোম্পানি টিআইএনের ক্ষেত্রে যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মগুলোর নিবন্ধকের কার্যালয়ের নিবন্ধন থাকতে হবে।

347
ওয়াই ফাইয়ের মাধ্যমে উপগ্রহ যোগাযোগ এবং বিনোদন ব্যবস্থায় সাইবার হামলা চালিয়ে যাত্রীবাহী বিমানের গতিপথ ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা বদলে দেয়া সম্ভব। সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত গবেষক রুবেন সানতামারতা এ কথা জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, বর্তমানে যাত্রীবাহী বিমানের উপগ্রহ যোগাযোগ এবং বিনোদন ব্যবস্থা উন্মুক্ত রয়েছে। এ ব্যবস্থায় যাতে পরিবর্তন আনা হয় এবং যাত্রীবাহী বিমানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ত্রুটিগুলো দূর করা হয় সেজন্য এটি তিনি প্রকাশ করেছেন।

বার্লিনভিত্তিক হ্যাকার সানতামারতা আরো বলেন,  বিমান শিল্পে ব্যবহৃত ফার্মওয়্যার বা কেবল সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের ব্যবহারের জন্য তৈরি উচ্চ পর্যায়ের বিশেষায়িত সফটওয়্যার বিশ্লেষণ করে যাত্রীবাহী বিমানের ভয়াবহ এ নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি তিনি  জানতে পেরেছেন। রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং নামে পরিচিত সংকেত মোচন বা ডিকোডিংয়ের মাধ্যমে এ সব ফার্মওয়্যারকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

রুবেন সানতামারতা আরো বলেন, বিমানের ওয়াই ফাই এবং বিমানের ভেতরের বিনোদন ব্যবস্থাকে ব্যবহার করে অন্তত এই মুহূর্তে তত্ত্বগতভাবে সাইবার হামলা চালাতে পারেন একজন হ্যাকার। এভাবে সাইবার হামলা চালিয়ে বিমান চালনার জন্য ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি এবং উপগ্রহ যোগাযোগ ব্যবস্থাকে অচল করে দেয়া বা মারাত্মকভাবে বদলে দেয়া সম্ভব। এতে বিমানের ন্যাভিগেশন বা গতিপথ বদলে যেতে পারে বা আমূলে বদলে যেতে পারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। অবশ্য বিমানের যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি নির্মাতা কয়েকটি সংস্থা এ ধরণের হুমকিকে আমলে নিতে চায়নি।

আগামী বৃহস্পিতবার লাস ভেগাসে অনুষ্ঠেয় ব্ল্যাক হ্যাট নামের সাইবার হামলা ও হ্যাকিং বিষয়ক বার্ষিক কনভেনশনে এ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরবেন তিনি। সাইবার হুমকি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনার জন্য  গুরুত্বপূর্ণ এ কনভেনশনে বিশ্বের হাজার হাজার হ্যাকার এবং নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা যোগ দেবেন।

১৯৯৭ সালে ব্ল্যাক হ্যাট প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সে থেকে সাইবার হামলা নিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এ কনভেনশনে তুলে ধরেছেন হ্যাকার ও সাইবার নিরাপত্তায় জড়িত ব্যক্তিরা। ২০০৯ সালে টেক্সট মেসেজ পাঠিয়ে আইফোন হ্যাক করার বিষয়টি এ কনভেনশনে তুলে ধরার পর টনক নড়ে অ্যাপেলের এবং এ ক্রুটি দূর করার জন্য একটি প্যাচ তৈরি করে তারা।

348
 নরওয়ের ট্রমসে চলমান ৪১ তম বিশ্ব অলিম্পিয়াড দাবায় শুরুটা ভাল করতে না পারলেও ভাল ভাবেই ঘুরে দাড়িয়েছিল বাংলাদেশ। প্রথম রাউন্ডে হারের পর দ্বিতীয় রাউন্ডে জয়ের দেখা পেয়েছিল বাংলাদেশের দাবাড়ুরা। তবে পরের রাউন্ডে এবার ড্র করল বাংলাদেশ দল। দ্বিতীয় রাউন্ডের ওপেন সেকশনে চিলিকে ৩-১ সেটে হারালেও বাংলাদেশ তৃতীয় রাউন্ডে বেলজিয়ামের সাথে ২-২ সেটে ড্র করেছে। বেলজিয়ামের বিপক্ষে বাংলাদেশের গ্রান্ড মাস্টার জিয়াউর রহমান, আন্তর্জাতিক মাস্টার মিনহাজ আহম্মেদ সাগর নিজ নিজ খেলায় হেরে গেছেন। তবে গ্রান্ড মাস্টার আব্দুল্লাহ আল রাকিব এবং গ্রান্ড মাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ জয় তুলে নিয়েছেন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ খেলছে ৫৫ নং সিডেড দল হিসাবে। আর অন্য দিকে বেলজিয়ামের সিডেড স্থান ৪৫ তম। প্রতিযোগিতার তৃতীয় রাউন্ডে বাংলাদেশের গ্রান্ড মাস্টার আব্দুল্লাহ আল রাকিব পরাজিত করেন বেলজিয়ামের গ্রান্ড মাস্টার মিশেল বার্টকে । আরেক ম্যাচে বাংলাদেশের গ্রান্ড মাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ হারিয়েছেন বেলজিয়ামের আন্তর্জাতিক মাস্টার ডক্স স্টিফানকে । অন্যদিকে বাংলাদেশের আরেক গ্রান্ড মাস্টার জিয়াউর রহমান হেরে গেছেন বেলজিয়ামের উইনাটেস লুসের কাছে । আর আন্তর্জাতিক মাস্টার মিনহাজ আহম্মেদ সাগর হেরেছেন বেলজিয়ামের রিংগিয়র টাংগির কাছে । এ দুজন পরাজিত হওয়ায় ২-২ সেটের ড্র নিয়ে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে উভয় দল। অন্যদিকে মহিলা দল টুর্নামেন্টে শ্রীলঙ্কার সাথে ৩-১ সেটে জয় পেয়েছে। পরবর্তি রাউন্ডে বাংলাদেশ ওপেন টিম খেলবে ইউক্রেইনের বিপক্ষে এবং মহিলা দলের প্রতিপক্ষ সুইজারল্যান্ড।

349
বাঙালির স্বভাব-চরিত্র বড়ই আজব ধরনের। গবেষণার বিষয়ও বটে। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন- ‘মানুষের উপর বিশ্বাস হারানো পাপ’ আমাদের বাংলা সাহিত্যের আরেকজন প্রবাদ পুরুষ শক্তিমান প্রথাবিরোধী লেখক হুমায়ুন আজাদ রবীন্দ্রনাথের কথাকে পুরোপুরি গ্রহণ করতে পারেননি; তাই তিনি তাঁর প্রবচনগুচ্ছ বইতে লিখেছেন-‘মানুষের ওপর বিশ্বাস হারানো পাপ, তবে বাঙালির ওপর বিশ্বাস রাখা বিপজ্জনক।’ অন্য জায়গায় তিনি লিখেছেন-‘বাঙালি যখন সত্য কথা বলে তখন বুঝতে হবে পেছনে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য আছে।’ আরেকজন সব্যসাচী বিরলপ্রজ দার্শনিক ও মানবতাবাদী লেখক আহমদ ছফা - ‘বাঙালি মুসলমানের মন’ নামে এক গবেষণাধর্মী বই লিখে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের দৃষ্টিতে যা গত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ দশটি মননশীল বইয়ের তালিকায় ৬ নম্বরে স্থান পেয়েছে। আর আহমদ ছফা’কে আপাদমস্তক সাহিত্যিক বলে মনে করেন আমাদের দেশের আরেক কৃতিমান লেখক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। কোথায়ও পড়েছিলাম একদিন জাফর ইকবাল শাহবাগের আজিজ সুপার মার্কেটে তার ছেলেকে নিয়ে আসেন আগাগোড়া এক সাহিত্যিককে দেখাবেন বলে। সে ব্যক্তিটি হলেন আহমদ ছফা। কিন্তু আহমদ ছফা তখন ঘুমুচ্ছিলেন তাই জাফর ইকবাল তার ছেলেকে দেখাতে পারেননি। পরে আহমদ ছফা ঘুম থেকে উঠে নাকি তার লোকদেরকে বললেন, আমাকে ডাক দিলে না কেন? আহমদ ছফা তার বাঙালি মুসলমানের মন বইতে বাঙালি মনের চুলছেরা বিশ্লেষণ করেছেন।

কেউ বলে আমরা বাঙালি আবার কেউবা বলে আমরা বাংলাদেশী। আমি সে দিকে গেলাম না। তবে আমার দৃষ্টিতে আমরা প্রথমত বাঙালি দ্বিতীয়ত বাংলাদেশী। কারণ আমার লেখাটি সকল বাংলা ভাষাভাষী-সকল ধর্মের মানুষদের উপর লেখা। বাংলা ভাষাভাষী মানুষ শুধু বাংলাদেশে আছে এমন নয়; আমাদের পার্শ¦বর্তী দেশ ভারতের কলকাতা, আসাম, ত্রিপুরার একটা অংশ মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। তাহলে শুধু বাংলাদেশ বললে বাঙালির সংজ্ঞা পুরোপুরি আদায় হয় না।

বাঙালির পুরো জীবনটাই যেন কেমন কেমন। চিন্তা-চেতনা, মনে-মননে, কর্মে ও শ্রেষ্ঠত্বে সে অনেক পিছনে পড়ে আছে। কারণ ধরলে অনেক কারণ, সকল কাজে তারা সন্দেহ খুঁজে। তাই মন-মানসিকতা আর কর্মে এখনও তারা বড় হতে পারেনি।

অন্য অনেক কিছুর মতো বাঙালির অনেক কিছুতে এখনো কার্পণ্যতা দেখা যায়। এই ধরুন:

১. ভালবাসতে কার্পণ্য : আমরা বাঙালিরা যেন ভালবাসতেও কার্পণ্য করছি। ভালবাসতে তো আর পয়সা লাগেনা যে আমি ফতুর হয়ে যাবো। কিন্তু বাঙালিকে সেটা কে বুঝাবে।

২. প্রশংসা করতে কার্পণ্য : বাঙালির আরেকটা অভ্যাস হলো তারা অন্য মানুষের সাফল্যকে গ্রহণ করতে পারে না। সে উল্টো তাকে হিংসা করে বসে।

৩. পড়ালেখায় কার্পণ্য : পড়ালেখা তো আমাদের বাঙালিদের কাছে বিষের মতো লাগে। একটা ছেলে যদি কোন রকম আইএ বা বিএ পাস করতে পারে তখন মা-বাবা বলেন, অনেক পড়ালেখা করেছো বাবা এবার একটা কিছু কর।

৪. হাঁটতে কার্পণ্য : আমরা বাঙালিরা স্বাস্থ্য সচেতন নই। আমরা আরাম প্রিয়। তাই বিশ মিনিটের পথ এক ঘন্টা জ্যামে আটকা পড়ে গাড়িতে করে গেলেও বিশ মিনিট পায়ে হেঁটে যেতে রাজি নই।

৫. হাসতে কার্পণ্য : রাসূল (স.) এর একটি হাদীস আছে-‘হাসি মুখে কথা বলা একটা সদকা।’ চীনা প্রবাদ আছে- ‘যে হাসতে জানে না তার দোকান দেয়া উচিত নয়।’ আমরা বাঙালিরা হাসলে উল্টো মুরব্বীদের বা সম বয়সী বন্ধুদের থেকে ধমক খেতে হয়।

৬. কথা বলতে কার্পণ্য : একে অপরের সাথে কথা বলতে পর্যন্ত কার্পণ্য করি।

৭. গাছ লাগাতে কার্পণ্য : বাপ-দাদার আমলের গাছ একে একে কেটে প্রয়োজন মিটালেও তার পরিবর্তে গাছ লাগাই না। এ কথা ভুলে যাই যে আমাদের ছেলে সন্তানদের জন্য আমরা কি রেখে যাচ্ছি। হাদীসে আছে গাছ লাগানো একটা সদকার কাজ।

৮. সম্মান দিতে কার্পণ্য : আমি অন্যকে সম্মান দেব কেন? আমি কি কম। এটা আমাদের বাঙালিদের মৌলিক স্বভাব। একটু পাওয়ারফুল জায়গা মতো আমরা যদি বসতে পারি তাহলে অন্য মানুষদেরকে তো আমরা মানুষই মনে করি না।

৯. বাগান করতে কার্পণ্য : ফুল মানুষের মনের চাহিদা মেটায়। মনে শান্তি আনয়ন করে। কিন্তু বাগান করা আজকে আমরা ছেড়ে দিয়ে একে অন্যের পিছনে লেগে শুধু শুধু তার বদনাম করছি।

১০. সালাম দিতে কার্পণ্য : হাদীস শরীফে আছে-যে ব্যক্তি প্রথমে সালাম দিবে সে অহংকার মুক্ত। সালাম দিলে একে অন্যের সাথে ভালবাসা আর পবিত্র সম্পর্ক তৈরী হয়। কিন্তু আজকাল আমাদের সমাজে কাউকে তেমন একটা সালাম দিতে দেখা যায় না। আর ঢাকা শহরে তো অপরিচিত কাউকে সালাম দিলে বিড়ম্বনার সম্মুখীন হতে হয়। একদিন পাবলিক লাইব্রেরীর সিঁড়ি দিয়ে উঠার সময় একজন মুরব্বী গোছের লোককে আমি সালাম দিই। মুরব্বীটি সালামের জবাব না দিয়ে আমার দিকে হা.. করে তাঁকিয়ে রইল। আমি কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে উপরের দিকে চলে গেলাম। আর একটা কথা সত্য যে, আমরা বাঙালিরা কেউ যদি আমাদেরকে সালাম দেয়; তাহলে আমরা নিজেদেরকে বড় মনে করি।

১১. আদব দিতে কার্পণ্য : হিন্দুদের ক্ষেত্রেও সেম সেম অবস্থা। কারণ জাতে অমরা ভিন্ন হলেও রক্ত-মাংস আর ভাষার ক্ষেত্রে তো আর ভিন্ন নয়।

১২. আগ বাড়িয়ে কথা বলতে কার্পণ্য : আগ বাড়িয়ে আমরা একে অন্যের সাথে কথা বলি না। কারণ, আমি নিজেকে তার চেয়ে বড় মনে করি। এই হল বাঙালিদের বর্তমান হাল হাকিকত।

১৩. সৌজন্যতা দেখাতে কার্পণ্য : সৌজন্যতা তো আমরা ভুলেই যাচ্ছি বলা যায়। নিজেদেরকে নিয়ে অতটাই ব্যস্ত যে সৌজন্যতা দেখাবার সময় কোথায়।

১৪. জানার ক্ষেত্রে কার্পণ্য : শুধু খাও-দাও আর ঘুমাও এটা হলে আমরা বাঙালিরা তৃপ্ত। পৃথিবীর নতুন নতুন খবর সম্পর্কে আমরা বে-খবর যে আমরা যে বে-খবর সে সম্পর্কেও আমরা বে-খবর।

১৫. বিশ্বাসের ক্ষেত্রে কার্পণ্য : বিশ্বাসের ক্ষেত্রে আমরা কার্পণ্য করছি। দেখা যায় যাকে আপনি বিশ্বাস করলেন সে আপনাকে দিল মস্ত বড় এক বাঁশ। তবুও বিশ্বাস করার মতো মানুষ যে নেই এমনটা কিন্তু নয়।

১৬. উচ্চাশার ক্ষেত্রে কার্পণ্য : আমাদের আশা অতি ছোট তাই আমরা বড় হতে পারি না।

১৭. গ্রহণের ক্ষেত্রে কার্পণ্য : একে অন্যকে সমাদরে গ্রহণ করতে আমাদের কার্পণ্য করতে দেখা যায়।

১৮. সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে কার্পণ্য : আমরা সকালে যা আয় করি দুপুরে তা খরচ করে ফেলি দুপুরের জন্য আর রাতের জন্য আমাদের কোন চিন্তাই মাথায় আসে না। প্রয়োজনে আগামীকাল উপোস থাকবো।

১৯. চিন্তার ক্ষেত্রে কার্পণ্য : বলা হয় যে জাতি চিন্তার ক্ষেত্রে বড় হতে পারে না সে জাতি কাজের ক্ষেত্রেও বড় হতে পারে না।

২০. কাজের ক্ষেত্রে কার্পণ্য : বাঙালিরা যে কোন কাজ করতে কার্পণ্য করে। যেমন: কোন কৃষকের ছেলে যদি বিএ পাস করে তখন সে আর কৃষি কাজ করে না। করলেও সমাজ তাদেরকে ভালো চোখে দেখে না।

২১. হাততালি দিতে কার্পণ্য : সে দিন এক শিল্পী পাবলিক লাইব্রেরীর শওকত ওসমান মিলনায়তনে গান পরিবেশন করছিল। একে একে দুটো গান গাওয়ার পরও দর্শক কোন হাততালি দেয়নি। কয়েকজন দিলেও তেমন আওয়াজ হচ্ছে না। শিল্পী তখন বললেন- বাইরের দেশে যখন অমরা গান গাই তখন হাত তালির জন্য আমরা গান পরিবেশন করতেই কষ্ট হয়। আর এখানে হাততালি চাইলেও পাওয়া যায় না। এই হলো বাঙালি দর্শকদের অবস্থা।

এভাবে প্রতিনিয়তই বেড়ে চলছে আমাদের কার্পণ্য। আসুন আর কার্পণ্য নয়; এখন সময় এসেছে নতুন উদ্যমে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার।

By: সুহৃদ আকবর, সাহিত্যিক ও প্রাবন্ধিক

350
Story, Article & Poetry / সমুদ্র সম্পদ
« on: August 06, 2014, 04:12:50 PM »
ফেনিল, নীল, অনন্ত সমুদ্র! উভয় পার্শ্বে যতদূর চক্ষু যায়, ততদূর পর্যন্ত তরঙ্গভঙ্গপ্রক্ষিপ্ত ফেনার রেখা; স্তূপীকৃত বিমল কুসুমদামগ্রথিত মালার ন্যায় সে ধবল ফেনরেখা হেমকান্ত সৈকতে ন্যস্ত হইয়াছে; কাননকুন্তলা ধরণীর উপযুক্ত অলকাভরণ। নীলজলম-লমধ্যে সহ¯্র স্থানেও সফেন তরঙ্গভঙ্গ হইতেছিল।” সত্যিই “অনন্তবিস্তার নীলাম্বুম-ল” এই সমুদ্রের “জলধিশোভা দৃষ্টি” করলে বঙ্কিমচন্দ্রের নবকুমারের মতো সবারই “পরিমাণবোধ-রহিত” হতে বাধ্য। যুগে যুগে মানুষ অপার বিস্ময়ে সমুদ্রের মুখোমুখি হয়েছে। ভেবেছে এই জলরাশির ওপারে কী আছে? মধ্য এশিয়ার আদি মানুষ তাই হয়তো যখন দেখল এই বিশাল জলরাশির ওপর একটি বড় পাতায় বসে একটি পাখি বা পোকা ভাসতে ভাসতে চলেছে তখন সে প্যাপিরাসের নৌকা বানিয়ে পাড়ি দিল সমুদ্রে। সেই খ্রিস্টপূর্ব ছয় শতকে এশিয়া মাইনরের গ্রীক বৈজ্ঞানিকেরা বিশ্বব্রহ্মা- সৃষ্টির প্রাচীন পৌরাণিক ব্যাখ্যা পরিত্যাগ করে প্রাকৃতিক কার্যকারণের দিকে মন দিলেন এবং অ্যারিস্টটল (খ্রিস্টপূর্ব ৩৮৪-৩২২) তার মেটিওরলজিকা’ রচনায় লিপিবদ্ধ করলেন সমুদ্রের উদ্ভবের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা। ঐতিহাসিক যুগ ধরেই মানুষ তার চারপাশের এই অনন্ত সমুদ্রকে জানতে চেয়েছে,  বুঝতে চেয়েছে, জয় করতে চেয়েছে। মধ্যযুগে সমুদ্রের লবণতা এবং জোয়ারভাঁটা নিয়ে ভাবনাচিন্তার পর পঞ্চদশ শতাব্দীতে কুসানার্স-এর “দ্য ইডিয়ট” রচনায় দেখি সীসের টুকরোর সাহায্যে সমুদ্রের গভীরতা মাপার উল্লেখ, ১৯৩২ সালে চার্লস ডারউইনের ‘বিগল’ জাহাজে অভিযান এবং ১৮৭২-৭৬ সালে পৃথিবীর প্রথম সংগঠিত সমুদ্রবিজ্ঞান সমীক্ষাÑ ‘চ্যালেঞ্জার’ অভিযান।এর “অনন্তবিস্তার নীলাম্বুম-ল”-এর শুধুমাত্র “জলধিশোভা দৃষ্টি”-এর শুধুমাত্র “জলধিশোভা দৃষ্টি” করে মানুষ ক্ষান্ত থাকছে না সমুদ্রের আনাচে কানাচে কী আছে জানার জন্য জাহাজ থেকে নিচে নামিয়ে দিচ্ছে আধুনিক সব যন্ত্রপাতি, সাবমারসিবল রোবট, এমন কি মহাকাশ থেকে উপগ্রহের মাধ্যমে তুলে চলেছে এই অপার রহস্যের ছবি।

মানবসভ্যতার অগ্রগতি নির্ভর করে মূলত খাদ্যের উৎপাদন, খনিজ সম্পদের উৎপাদন ও ব্যবহার এবং শক্তির যোগানের উপর। এই তিনটি ক্ষেত্রই একে অপরের সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত এবং নির্ভরশীল। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নতি এবং তার সঙ্গে জনসংখ্যার বৃদ্ধির ফলে কাঁচামালের চাহিদা বেড়েই চলেছে। হিসেব বলছে, ২০০০ সালে এই চাহিদা আজকের তুলনায় শতকরা ৪০০ ভাগ বেড়ে যাবে। তবে এটা নিশ্চিত যে, আগামী ৫০ বছরে পৃথিবীর স্থলভাগের বেশীরভাগ সম্পদই শেষ হয়ে যাবে। তখন সমুদ্রই একমাত্র ভরসা। অপেক্ষাকৃত নবীন বিজ্ঞান, সমুদ্রবিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে সমুদ্রের জলে এবং সমুদ্রের নিচে ভূস্তরে যে প্রভূত সম্পদের সম্ভাবনার কথা মানুষ জানতে পারছে, তার ফলে সে আশান্বিত। তাই আজ মানুষ সমুদ্রের দিকে চোখ ফিরিয়েছে। ফেরাবে না-ই বা কেন! ভূপৃষ্ঠের দুই-তৃতীয়াংশই তো পানি। এত পানি যে যদি পৃথিবীর সব পাহাড়-পর্বত ভেঙে গুঁড়িয়ে সমান করে ফেলা যায়, তাহলেও গোটা পৃথিবী কয়েক হাজার মিটার জলে ডুবে থাকবে। পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু পাহাড় এভারেস্টকে সমুদ্রের নিচে সবচেয়ে গভীর খাত ‘মারিয়ানা ট্রেঞ্চ’-এ ঢুকিয়ে দিলেও তার চূড়া অন্তত এক কিলোমিটার জলের নিচে থাকবে।

কিন্তু আজকের এই জল-ডাঙার পরিস্থিতি তো আর পৃথিবীর জন্মের সময় একই রকম ছিল না বা কোটি কোটি বছর পরে একই থাকবে না। ভূতাত্ত্বিক যুগ ধরেই ভাঙাগড়ার খেলা চলছে। কোথাও নতুন সমুদ্রের সৃষ্টি হচ্ছে, কোথাও নতুন পর্বতমালার। এককালের টেথিস সমুদ্র, সেখানে দাঁড়িয়ে আজকের বিশাল হিমালয়। সেই হিমালয়ও একটু একটু করে বাড়ছে। ভূমধ্যসাগর ক্রমশ ছোট হচ্ছে। বর্তমানে প্রশান্ত মহাসাগর যদি তার অবলুপ্তির প্রথম স্তরে রয়েছে, তো আটলান্টিক ও ভারত মহাসাগর রয়েছে পূর্ণতার শেষ ধাপে। আর্কটিক, এডেন উপসাগর এবং লোহিত সাগর রয়েছে সমুদ্রগঠনের প্রথম স্তরে। বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানে জানা গিয়েছে যে ২ কোটি বছর আগে যখন আফ্রিকা ও আরব পরস্পর থেকে দূরে সরতে শুরু করেছে, তখনই এডেন উপসাগর এবং লোহিত সাগরের সৃষ্টি। অন্যভাবে বললে, আজ পৃথিবীর সমুদ্রের নিচে যে ভূস্তরে খনিজের সন্ধান চলছে, তা হয়তো বহুযুগ আগে ছিল সমুদ্রের উপরে। তাই এই ভাঙাগড়ার খেলাটিকে ভালভাবে বোঝা দরকার। পৃথিবীর অভ্যন্তর বা ভূস্তরের এই নড়াচড়ারই ভূতাত্ত্বিক নাম “টেকটনিকস”।

প্লেট টেকটনিকস : পৃথিবীর মানচিত্রের দিকে তাকালে মহাদেশগুলির তটরেখার আশ্চর্য মিল চোখে পড়বে। যেমন, দক্ষিণ আমেরিকার উত্তরপূর্বের বেরিয়ে আসা অংশটি কী সুন্দরভাবে আফ্রিকার  পশ্চিমের খাঁজটিতে ঢুকে যায়। এই শতকের শুরুতে জার্মান বিজ্ঞানী ওয়েগনার এই মিল এবং অন্যান্য ভূতাত্ত্বিক প্রমাণ এবং জীবাশ্মের মিলের ভিত্তিতে “মহীসঞ্চরণ” বা “মহাদেশের সঞ্চরণ” তত্ত্ব খাড়া করেন। তার মতে প্রায় ৩০ কোটি বছর আগে আজকের সব মহাদেশগুলি একসঙ্গে জোড়া ছিল। বিজ্ঞানীরা তার নাম দিয়েছেন ‘প্যানগিয়া’। ২৫ কোটি বছর আগে উত্তর মহাদেশ বা “লরেসিয়া’ ছিল ইউরোপ, এশিয়া, উত্তর আমেরিকা এবং গ্রীনল্যান্ডকে নিয়ে; আর দক্ষিণ মহাদেশ বা ‘গ-োয়ানা’ ছিল ভারত, দক্ষিণ আমেরিকা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ম্যাডাগাসকার, অ্যান্টার্কটিকা এবং অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে। পুরাচুম্বকত্ব তথ্যের মাধ্যমে বলা হচ্ছে যে গন্ডোয়ানাল্যান্ডে অভ্যন্তরীণ নড়াচড়া শুরু হয়েছে প্রায় ২০ কোটি বছর আগে। আজ থেকে ৬ কোটি এবং আড়াই কোটি বছর আগে সময়টিতে (হিমালয়ের গঠনকাল) ভারত অন্তত ৫৫০০ কিলোমিটার, অর্থাৎ বছরে ১১ সেন্টিমিটার করে, সরেছে বলে হিসেব করা হয়। কিন্তু মহাদেশগুলির এই চলাফেরা কি একটি যুগেই সীমাবদ্ধ? প্যানগিয়ার আগে? সমুদ্রগুলি কি স্থির? চলাফেরার চালিকাশক্তিই বা কি?

ওয়েগনারের ঐতিহাসিক তত্ত্বের পথ বেয়েই এই শতকের মাঝামাঝি এল ‘প্লেট টেকটনিকস তত্ত্ব।’ আমরা জানি কম্পনতরঙ্গের তিনটি পর্যায় অনুযায়ী পৃথিবীকে তিনটি স্তরে ভাগ করা হয়। সবচেয়ে উপরের স্তর ভূত্বক (ঈৎঁংঃ), যার গড়গভীরতা ৪০ কিলোমিটার; মধ্যবর্তী স্তর ম্যানেটেল (গধহঃষব), যার গড় গভীরতা ২৯০০ কিলোমিটার এবং সবচেয়ে নিচের স্তর অন্তঃস্থল (ঈড়ৎব), যা কেন্দ্র পর্যন্ত প্রসারিত। ভূত্বক এবং ম্যান্টেলের উপরিভাগ নিয়ে ১০০ কিলোমিটার পুরু স্তর ‘লিথোস্ফেয়ার’ (এতে সিলিকা ও অ্যালুমিনিয়ামের ভাগ বেশি) এবং তার নিচে ‘এসথেনোস্ফেয়ার’ (এতে সিলিকা ও ম্যাগনেসিয়ামের ভাগ বেশি)। ‘প্লেট টেকটনিকস’ তত্ত্ব লিথোস্ফেয়ারকে অসংখ্য মহাদেশীয় এবং মহাসাগরীয় অংশে ভাগ করেছে যেগুলি কঠিন সচল ‘প্লেট’ হিসেবে নিচের ‘প্লাসটিক’ আধা-তরল এসথেনোস্ফেয়ারের উপর চলে ফিরে বেড়াচ্ছে। প্লেটের সচলতার ভিত্তিতে মূলত তিন ধরনের সীমানা চিন্তা করা হয়েছে।

১। ‘কাছাকাছি আসা’ (ঈড়হাবৎমবহঃ) প্লেটের সীমানা, যেখানে দুটি চলমান প্লেটের সংঘর্ষে একটি অপরের নিচে ঢুকে গিয়ে (সাবডাকশন) পৃথিবীর গভীরে মিশে যাচ্ছে। মহাদেশের সীমানা এবং আগ্নেয়গিরিজাত দ্বীপগুলি এই এলাকাভুক্ত।

২। ‘দূরে সরে যাওয়া’ (উরাবৎমবহঃ) প্লেটের সীমানা, যেখানে দুটি একে অপর থেকে দূরে সরে যাওয়ায় ‘সমুদ্রতল ছড়ানো’র (ঝবধভষড়ড়ৎ ঝঢ়ৎবধফরহম) ফলে নতুন লিথোস্ফেয়ার যুক্ত হচ্ছে। এগুলি নতুন সমুদ্রসৃষ্টির এলাকা।

৩। ‘সমান্তরাল” (ঢ়ধৎধষষবষ) প্লেটের সীমানা, যেখানে দুটি প্লেট পাশাপাশি চলেছে।

পৃথিবীর অজৈব খনিজ সম্পদের অবস্থান, ভূমিকম্প, আগ্নেয়গিরি ইত্যাদি সবই প্লেটের এই নড়াচড়ার সঙ্গে যুক্ত। জাপানের বিখ্যাত কুরোকো খনিজভা-ার, ফিলিপাইনস-এর তামার ভা-ার এবং আলাস্কা, কানাডা, ব্রাজিল, রডেসিয়া প্রভৃতির সোনার ভা-ারগুলি ‘কাছাকাছি আসা’ প্লেট সীমানার সঙ্গে যুক্ত। ‘দূরে সরে যাওয়া’ প্লেটের সীমানার প্রকৃষ্ট উদাহারণ হল আফ্রিকা ও ইউরেশিয়া প্লেটের মাঝামাঝি লোহিতসাগর এবং গভীর সমুদ্রের মাঝখানের দীর্ঘ পবর্তমালার অর্থাৎ ৮৭০০ কিলোমিটার দীর্ঘ মধ্যসামুদ্রিক পর্বতশিরা। সত্তরের দশকেই লোহিত সাগরের ঠিক মাঝখানে ২০০০ মিটার গভীরে ৭০ কিলোমিটার এলাকাব্যাপী সমুদ্রের নিচে ধাতব সালফাইডের সবচেয়ে বড় ভা-ারের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। এই দুটি এলাকাই খনিজ তেলের ভা-ারের উপযোগী এলাকা। তাই সমুদ্রসম্পদ সমীক্ষার ক্ষেত্রে প্লেটগুলির গতিবিধি এবং ক্রিয়াপ্রক্রিয়া ভালভাবে বোঝা একান্ত প্রয়োজন। বর্তমান সমুদ্রবিজ্ঞানের বড় এক হাতিয়ার হল কৃত্রিম উপগ্রহ ‘সীস্যাট’ দ্বারা সংগৃহীত পৃথিবীর সমস্ত সমুদ্রের ছবি। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আধুনিক গবেষণা জাহাজ, আধুনিক যন্ত্রপাতি, সাবমেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং কম্পিউটার।

সমুদ্রতলের ভূ আকৃতি :
সমদ্রের সম্পদের কথা বলার আগে সমুদ্রের নিচের অবস্থাটা জেনে নেয়া ভাল। অর্থাৎ সমুদ্রের সব জল শুষে নিলে নিচের ভূÑআকৃতি কী রকম হবে। সমুদ্রতলের আকৃতিকে মূল দুটি ভাগে ভাগ করা যায়।

১) মহাদেশীয় উপান্ত (ঈড়হঃরহবহঃধষ গধৎমরহং) : ক) উপকূলবর্তী এলাকা (ঈড়ধংঃধষ অৎবধং), খ) মহাদেশীয় ধাপ বা মহীসোপান (ঈড়হঃরহবহঃধষ ঝযবষভ), গ) মহাদেশীয় ঢাল (ঈড়হঃরহবহঃধষ ঝষড়ঢ়ব), ঘ) মহাদেশীয় স্ফীতি (ঈড়হঃরহবহঃধষ জরংব)।

২) সামুদ্রিক অববাহিকা : ক) নিতলীয় তল খ) সামুদ্রকি স্ফীতি), গ) সামুদ্রিক পর্বতশিরা খ) খাত  ঙ) সামুদ্রিক টিলা  বা গায়টস।

উপকূলবর্তী এলাকায় তীর বরাবর রয়েছে পশ্চাৎতট, অগ্রতট এবং নিকটতট এলাকা। সর্বোচ্চ জোয়ারেরও ওপরে রয়েছে পশ্চাৎতট।

অগ্রতট এলাকা হল জোয়ার ও ভাটার মধ্যবর্তী এলাকা। নিকটতট এলাকায় এসে ঢেউ ভাঙে। এরপরই সমুদ্রের অপতট এলাকা।

মহীসোপান হল পার্শ্ববর্তী মহাদেশের সেই অংশ যা সমুদ্রের নিচে চলে গিয়েছে খুবই সামান্য ঢাল বজায় রেখে। মহীসোপান কয়েক কিলোমিটার থেকে শুরু করে ৪০০ কিলোমিটারও হতে পারে। ভারতের পূর্ব উপকূলে মহীসোপান খুবই সরু। সব সমুদ্রের মহীসোপান সমুদ্রের দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ তা সামুদ্রিক খাদ্যের শতকরা ৯০ ভাগ, পৃথিবীর তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের শতকরা ২০ ভাগ এবং প্রচুর পরিমাণে হীরে, টিন, সোনা, মোনাজাইট ইত্যাদি স্থাপন খনিজ অবক্ষেপের যোগান দেয়।

মহীসোপানের প্রান্তে এসে গভীরতা হঠাৎ ১০০-২০০ মিটার থেকে ১৫০০-৩৫০০ মিটার পর্যন্ত বেড়ে যায় এবং গড়ে ৪ ডিগ্রির মতো ঢাল সৃষ্টি হয়। মহাদেশীয় ঢাল অঞ্চল খুবই সরু। প্রশান্ত মহাসাগরের গড় ঢাল ৫০২র্০। আটলান্টিকে ৩০০র্৫ এবং ভারত মহাসাগরে ২০৫৫। মহাদেশীয় ঢাল এলাকার মধ্যে রয়েছে অন্তঃসাগরীয় গিরিখাত ছোট অগভীর অববাহিকা ইত্যাদি। বস্তুত এই ঢালের প্রান্তেই মহাদেশীয় ত্বক এবং মহাসাগরীয় ত্বকের মিলন ঘটেছে।

মহাদেশীয় ঢাল এবং সামুদ্রিক অববাহিকার মধ্যভাগে ১০০ থেকে ১০০০ কিলোমিটার চওড়া মহাদেশীয় স্ফীতি অঞ্চল রয়েছে। এরও একটা সমুদ্রমুখী অল্প ঢাল আছে। এই অঞ্চলে স্থলভূমি থেকে বয়ে এসে বহু কিলোমিটার পুরু পলি জমা হয়। বঙ্গোপসাগরে গঙ্গা ব-দ্বীপের কাছে ‘সোয়াচ-অব-নো গ্রাউন্ড’ নামে গিরিখাত মহীসোপানও ঢাল অ্ঞ্চল পেরিয়ে সব পলিকে নিয়ে জমা করে দেয় গভীর সমুদ্রের নিতলীয় সমভূমিতে। মেক্সিকোতে ছেদন কার্যে এই অঞ্চলে বহু লবণ গম্বুজ এর অস্তিত্ব ধরা পড়েছে।

নিতলীয় তল সঠিক অর্থেই গভীর সমুদ্রে সমুভূমি। তার মাঝে মাঝে রয়েছে পর্বত বা টিলা। পাহাড়গুলো এই সমভূমি থেকে ১০০০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়।

গভীর সমুদ্রতলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গঠন হল পৃথিবীব্যাপী পর্বতমালা বা পর্বত বলয়, যার নাম মধ্য সামুদ্রিক পর্বতশিরা। এগুলি আটলান্টিক এবং ভারত মহাসাগরের মাঝখানে আছে, প্রশান্ত মহাসাগরের পূর্ব সীমান্তেও দেখা যায়। এগুলি পৃথিবীর বুকে বততি রেখাÑ যে রেখা বরাবর সামুদ্রিক ত্বক সৃষ্টি হচ্ছে।

খাদ বা ট্রেঞ্চ সাধারণত ৬০০০ মিটারের বেশি গভীর হয়। প্রশান্ত মহাসাগরের মারিয়ানা ট্রেঞ্চ পৃথিবীর গভীরতম খাদÑ সমুদ্রতল থেকে ১১,৫১৫ মিটার গভীর।

সামুদ্রিক টিলাগুলি সমুদ্রতল থেকে ১০০০ মিটারেরও উঁচু আগ্নেয়গিরি। এর চূড়া জল ভেদ করে উঁচুতে উঠলে আগ্নেয়গিরির দ্বীপ তৈরি হয়।

সমুদ্রের সম্পদকে আমরা মূলত তিনটি ভাগে ভাগ করতে পারি; (১) জৈবসম্পদ বা খাদ্যসম্পদ, (২) অজৈবসম্পদ বা খনিজসম্পদ, (৩) শক্তি উৎপাদনকারী সম্পদ।

জৈবসম্পদ বা খাদ্যসম্পদ :
রাসায়নিক দিক থেকে সমৃদ্ধ সমুদ্রের জলে প্রথম প্রাণের উদ্ভব আনুমানিক ৩৫০ কোটি বছর আগে। তার অনেক পরে, প্রায় ৫০ কোটি বছর পর পৃথিবীর স্থলভাগে ঘটে প্রাণের আবির্ভাব। জীবাশ্ম বা ফসিল থেকে আমরা জানতে পারি প্রথম প্রাণী ছিল সাধারণ কোষবিশিষ্ট ব্যাক্টেরিয়া এবং গাছপালার অন্যতম এলগি। তারাই সমুদ্রে প্রাণের ভিত্তি। বস্তুত এলগি না থাকলে সমুদ্র বন্ধ্যা হয়ে যেত। সবচেয়ে বড় এলগি এক মিলিমিটার ব্যাসের। এক কিউবিক মিটার সমুদ্রজলে ২ লক্ষ এলগি থাকতে পারে। সাধারণভাবে বলতে গেলে তারা খনিজকে শাকসবজিতে পরিণত করে। আবহাওয়া, সমুদ্রের গভীরতা ও অন্যান্য কারণের উপর এলগির বিস্তৃতি নির্ভর করে। লাল, বাদামী, নীল এবং সবুজ-নীল এলগি পাওয়া যায়। তাছাড়া রয়েছে গাছপালা এঞ্জিওস্পার্ম।

পৃথিবীতে কমপক্ষে ২০ লক্ষ বিভিন্ন ধরনের প্রাণী ও উদ্ভিদ আছে। ধরাপৃষ্ঠের দুই-তৃতীয়াংশ জল হলেও, স্থলভাগের তুলনায় কিন্তু সমুদ্রে প্রাণীদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। অন্যভাবে বললে পৃথিবীর চারভাগের তিনভাগই মাছেদের দখলে। অফুরন্ত প্রাণের উৎস সমুদ্রের মূল বাসিন্দা মাছেরা হলেও সমুদ্রগর্ভে আছে এককোষী প্রাণী প্লাঙ্কটন থেকে শুরু করে শামুক, পোকা, কাঁকড়া, সরীসৃপ, তিমি পর্যন্ত সর্বস্তরের প্রাণী। মেরুদ-ী প্রাণীদের মধ্যে অগণিত মাছ, তিমি, সীল এবং সাপ সমুদ্রের বাসিন্দা। অমেরুদ-ী প্রাণীদের তো অধিকাংশই সামুদ্রিক জীব। আণুবীক্ষণিক প্লাঙ্কটন খেয়ে প্রাণধারণ করে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সামুদ্রিক জীবেরা। ছোটখাটো সামুদ্রিক মাছেরও খাদ্য হচ্ছে প্লাঙ্কটন। পক্ষান্তরে তাদের চেয়ে বড় মাছ ও প্রাণী এইসব ছোট মাছদেরে খায়। স্পঞ্জ, প্রবাল, স্টারফিশ, জেলিফিশÑÑ এসব অমেরুদন্ডী প্রাণী স্থলভাগে একেবারেই দেখা যায় না। অন্যান্য আমেরুদ-ী প্রাণীদের মধ্যে কীটপতঙ্গ, শামুকজাতীয় কোমলাঙ্গ প্রাণী, কঠিন খোলাযুক্ত প্রাণী (কাঁকড়া, গলদা চিংড়ি), যুক্তপদ ও বহুপদ প্রাণীরা) অধিকাংশই সামুদ্রিক জীব।

আজ থেকে প্রায় ২০ কোটি বছর আগে সমুদ্রের জলে মাছেদের কর্তৃত্ব খর্ব হল যখন কিছু শীতল রক্তের প্রাণী, যারা ইতিমধ্যেই চারটি পায়ের অধিকারী হয়েছে, তারা সমুদ্রে ফিরে এল। সরীসৃপরাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে এবং তাদের অন্যতম হল সামুদ্রিক কচ্ছপ (টার্টল)। এরপর কিছু পাখিও সমুদ্রে আস্তানা গাড়লোÑ আজকের পেঙ্গুইন উল্লেখযোগ্য। ৫ কোটি বছর আগে স্তন্যপায়ী প্রাণীদের প্রতিভূ হিসেবে সমুদ্রে প্রবেশ করলো তিমিদের পূর্বপুরুষ। বহু লক্ষ বছর পরে এল সীল। বর্তমানে পশু সা¤্রাজ্যের সব গোষ্ঠীরই প্রতিনিধিরা সমুদ্রে রয়েছে। এমনকি পোকাওÑ যার কথা আগেই উল্লিখিত হয়েছে। ‘কোয়েলেনট্রাটা’ প্রাথমিক স্তরের আমেরুদ-ী প্রাণী। এদের দেহে রয়েছে শুধু পাকস্থলী এবং কয়েকটি কর্ষিকা। এই শ্রেণীভুক্ত প্রাণী “অ্যানিকোনি” গন্ধ দিয়ে খাদ্যের অস্তিত্ব বুঝতে পারে। খাদ্যের অপাচ্য অবশিষ্ট অংশ একই মুখগহ্বর দিয়ে বের করে দেয়। এরা এবং জেলিফিশ একক প্রাণী (পলিপ) হিসেবে জীবন যাপন করে, কিন্তু প্রবাল (কোরাল) এবং সী-পেন কাটায় যৌথ জীবন। শত বা হাজার হাজার ‘পলিপ’ জুড়ে একটি প্রবাল কলোনী গড়ে ওঠে এবং এই কলোনীগুলো বিকশিত হয় প্রবাল দ্বীপে। ট্রপিকাল বা সাব-ট্রপিকাল সমুদ্রের ১৮০ সেন্টিগ্রেড-এর বেশি উষ্ণতায় সাধারণত প্রবাল সৃষ্টি হয়Ñ যেখানে খুব দ্রুত কার্বোনেট নিক্ষেপ ঘটে। সী-পেনকে ডাঙায় আনলে ফিকে নীল রঙের আলো ছড়ায়। অন্যদিকে, একই স্থানে স্থিত প্রাণী ‘স্পঞ্জ’-এর দেহ জালের মত সাজানো একক কোষের সমন্বয়ে তৈরি। এদের দেহের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ফোকর দিয়ে বয়ে যাওয়া জল থেকে তারা জীবন ধারণের খাদ্য ও অক্সিজেন গ্রহণ করে।

পিরীচ আকৃতির প্রাণী ‘জেলিফিশ’-এর দৈহিক আয়তন সাত ফুট হলেও এর কর্ষিকাগুলো ১২০ ফুট পর্যন্ত লম্বা হতে পারে। এদের দেহ বিস্তর কোষ দিয়ে তৈরি এবং দুই স্তরের মাঝে থাকে জেলির মত পদার্থের স্তর। ‘একিনোডারমা’ শ্রেণীভুক্ত স্টারফিশ, সী কিউকাম্বার ইত্যাদিরা ত্রিস্তর কোষবিশিষ্ট। এদের অনেক বাহু বা পা থাকে। সমুদ্রের বিচিত্র কীটদের অন্যতম হল ‘টিউব ওয়ার্ম। তাদের দেহে মুখ, চোখ বা অস্ত্র বলতে কিছু নেই। যে সব ব্যাকটিরিয়া তাদের দেহে আশ্রয় লাভ করে, সেই ব্যাকটিরিয়াই তাদের প্রাণ। পোকামাকড়ের থেকে উন্নত স্তরের অমেরুদ-ী প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম অক্টোপাস এবং স্কুইড। এরা উভয়েই মোলাসকা বা কোমলাঙ্গ শ্রেণীর প্রাণী। অক্টোপাসের আটটি পা এবং একটি উন্নত চোখ রয়েছে এবং স্কুইডের আছে দশটি পা এবং দুটি চোখ। শক্ত মেঝে এবং মহীসোপানের উল্লেখযোগ্য বাসিন্দা অক্টোপাস পাথরের ফাটলে লুকিয়ে থাকতে পছন্দ করে এবং শুধুমাত্র রাতেই আহারের সন্ধানে বের হয়। স্কুইড ৫০ ফুট বা তার থেকেও লম্বা হতে পার্ েএ জন্য খুব বড় আকারের স্কুইডকে সমুদ্র-দানবও (সি মনস্টার) বলা হয়।

জল বাতাস থেকে ৮০০ গুণ ভারী। ফলে জলচর প্রাণীদের শরীরের সামান্য মেদবৃদ্ধি বা স্ফীতি পাখি বা এরোপ্লেনের তুলনায় গতিকে অনেক বেশি মন্থর কর্ েতাই আমরা দেখি দ্রুতগতিপম্পন্ন সামুদ্রিক মাছ টুনা, বোনিটো, মারলিন, ম্যাকেরেলÑ এদের শরীরের গঠন অপূর্ব চিকনÑ সামনে ছুঁচোলো, মাঝখানটা মোটা এবং আস্তে আস্তে সরু হয়ে দুটো ফালি হয়ে লেজের পাখনায় শেষ হয়েছে। ‘সাইক্লোস্টোমাটা’ গোষ্ঠীভুক্ত মাছেরা সবচেয়ে আদিম। বিশাল সমুদ্রের বিভিন্ন পরিবেশে বিভিন্ন গভীরতায় বিভিন্ন ধরনের মাছ রয়েছে। তারা তাদের শারীরিক গঠন এবং অন্যান্য ক্ষমতা দিয়ে সেই পরিবেশকে জয় করেছে। যেমন, গভীর সমুদ্রে ৭৫০ মিটারেরও নিচে যেখানে একে অপরের ‘সিগন্যাল’ দেখার জন্য একেবারেই আলো নেই, সেখানে মাছেরা নিজেরাই আলো তৈরি করে নিয়েছে। দ্রুততম মাছ ‘সেইল ফিশ’ একটি ছোট পথ যেতে তার গতিকে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার এ দাঁড় করায়। অর্থাৎ ডাঙার দ্রুততম প্রাণী চিতার থেকেও দ্রুত। ¯্রােত পক্ষে থাকলে হাঙর পাঁচশ’ মিটার দূর থেকে রক্তের গন্ধ পায়। সামুদ্রিক মাছেদের ভ্রমণসূচির একটি প্রকৃষ্ট উদারহণ ‘ম্যাকেরেল’-এর যাত্রা। তারা অক্টোবরে জলের উপরিভাগ ছেড়ে সমুদ্রতলের কাছে ছোট্ট একটি এলাকায় জড়ো হয়। সে সময় তারা ছোট মাছ বা শামুক ইত্যাদি খায়।

জানুয়ারি মাসে তারা দলবদ্ধভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠে চলে আসে এবং এপ্রিলে তাদের ‘ডিম ছাড়ার এলাকা’য় হাজির হয়। মহীসোপানের ধারে ঘুরতে ঘুরতে তারা ডাঙার খুব কাছে চলে আসে, সে সময় তাদের খাদ্য ক্ষুদ্র ভাসমান প্রাণ ‘প্লাঙ্কটন’। জুলাই মাস পর্যন্ত তারা উপকূলের খুব কাছাকাছি ছোট ছোট দলে ঘোরাফেরা করে, ছোট ছোট মাছ খায়। শরৎকালে তারা আবার গভীর সমুদ্রে ফিরে যায়। অপরদিকে ঈল মাছ জীবনের প্রথম অংশ কাটায় সমুদ্রে  তারপর শত শত কিলোমিটার জনপথ অতিক্রম করে স্থলভাগের নদী বা হ্রদে এসে আস্তানা গাড়ে এবং কয়েক বছর সেখানে কাটিয়ে আবার ফিরে আসে সমুদ্রে। সেখানেই ডিম পাড়ে এবং পাণত্যাগ করে। ‘ইলেকট্রিক ঈল’ মাছের সংস্পর্শে এলে মানুষ মারা যায়। তাদের মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক মাছ হল ‘টরপেডো’। সমুদ্রে একদিকে যেমন রয়েছে লোভনীয় সব ভোজ্য মাছ কড, হেরিং, সারডিন, শাড, সালমন, ম্যাকেরেল, টুনা ইত্যাদি, অন্যদিকে রয়েছে টোডফিশ, স্টোনফিশ, স্করপিয়ন ফিশ-এর মত বিস্তৃত বা কদাকার মাছ। প্রায়  এক মিটার লম্বা কড মাছ কয়েক লাখ ভাসমান ডিমের জন্ম দেয়।

By: সুবীর দত্ত.

351
খ্রিস্টপূর্ব ৮০২ সালের আগের কথা। সে সময় কম্পোডিয়া ও তার আশপাশের দেশগুলোকে একত্রে কম্বুজা বলা হতো। তখন কম্বুজা জাভা দ্বীপের স¤্রাটের শাসনাধীন ছিল। আর জাভা হলো ইন্দোনেশিয়ার একটি দ্বীপ। জয়বর্মন জাভার রাজার কাছ থেকে কম্বুজাকে দখল করে নেন। তারপর সেখানে এক নতুন সা¤্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেনÑ গোড়াপত্তন করেন এক নতুন শহরের। যার নাম অ্যাংকর। অ্যাংকর একটা খেমার শব্দ। বাংলায় যার অর্থ হলো পবিত্র শহর। রাজা হয়েই তিনি ‘দেবরাজ’ উপাধি গ্রহণ করেন। দেবরাজ বা জয়বর্মন প্রতিষ্ঠিত এ রাজবংশই পরবর্তীতে খমের বা খেমার নামে পরিচিতি লাভ করে। এ রাজবংশ নবম থেকে পঞ্চদশ শতাব্দী পর্যন্ত টিকে ছিল। এই খেমাররা মিয়ানমারের (বার্মা) পশ্চিম থেকে ভিয়েতনামের পূর্বাংশ পর্যন্ত শাসন করত। আর খেমার সা¤্রাজ্যের রাজধানী ছিল এই অ্যাংকর। সে সময় অ্যাংকর ছিল সবচেয়ে অভিজাত ও সমৃদ্ধ নগরগুলোর একটি। আয়তনে বিশার এ নগরীতে সে সময় প্রায় সাড়ে সাত লাখ লোক বাস করত। বহু বছর ধরে সমৃদ্ধ নগরী অ্যাংকরের প্রভাব প্রতিপত্তি বজায় ছিল।

১৪৩১ খ্রিস্টাব্দে অযোধ্যার রাজা অ্যাংকর নগরটি দখল করে তা ধ্বংস করে ফেলেন। অ্যাংকরের বিলুপ্ত হওয়ার কাহিনী এখনো এক বিশাল রহস্যময় হয়ে আছে। খেমার রাজারা হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন। তারা বহু হিন্দু মন্দির ও অনেক আকর্ষণীয় ভাস্কর্য নির্মাণ করেন। এগুলোর মধ্যে একটি ছিল ব্যতিক্রমধর্মী, যেনো একটা ফুটন্ত পদ্মের মতো। এ মন্দিরগুলোর মধ্যে অ্যাংকর ওয়াত ছিল সবচেয়ে বিখ্যাত। রাজা দ্বিতীয় সূর্যবর্মন এ মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন। মন্দিরটি এখনো টিকে আছে। তারা মন্দিরগুলোর দেয়ালের গায়ে অদ্ভুত সব মূর্তি খোদাই করেছিল। ত্রয়োদশ-চতুর্দশ শতাব্দীর দিকে অ্যাংকর শহরে থেরাভাদা বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে। অন্যদিকে হিন্দুদের সংখ্যা ক্রমশ কমতে থাকে। এর ফলে অ্যাংকরের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক পরিবেশের ওপরও বৌদ্ধদের প্রভাব বাড়তে থাকে। তাতে অবশ্য কারোর বিরুদ্ধে কারো অভিযোগ ছিল না, ছিল না কারোর সাথে কারো কোনো শত্রুতা। কিন্তু সমস্যা দেখা দিলো বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সাম্যের নীতির কারণে। হিন্দু সম্প্রদায় ৪টি শ্রেণিতে বিভক্ত। যথাÑ ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শূদ্র। চার সম্প্রদায়ের মধ্যে ব্রাহ্মণদের প্রভাব প্রতিপত্তি সবচাইতে বেশি, তারপর ক্ষত্রিয়দের। বৈশ্যদের প্রভাব প্রতিপত্তি ছিল আরও কম। আর শূদ্ররা ছিল একেবারেই অবহেলিত। কিন্তু বৌদ্ধধর্মে বর্ণভেদ নেই, সবাই সমান। এর ফলে অ্যাংকর স¤্রাটদের প্রভাব প্রতিপত্তি ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে। অনেক গবেষকের মতে, ধর্মীয় রীতিনীতির বদল হওয়াতেই এক সময় অ্যাংকরে সামাজিক ও রাজনৈতিক কলহ ও অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়। যা পরবর্তীকালে অ্যাংকরের সভ্যতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। অ্যাংকরের পতনের এটাও একটা কারণ ছিল। অ্যাংকরের পশ্চিমে ছিল অযোধ্যা রাজ্য আর পূর্বে ছিল চম্পা রাজা। এ দু’রাজ্যই অ্যাংকরের শত্রু ছিল। সর্বদা তারা ক্ষমতার জন্য একে অন্যের সাথে লড়াই করত। অনেকের ধারণা, এ যুদ্ধ কলহ ও ধর্মীয় বিবাদ অ্যাংকরের পতনের জন্য বিশেষভাবে দায়ী ছিল।

আর ষেড়শ শতকে উত্তর-পূর্ব এশিয়া ও চীনের মধ্যে একটা ‘সমুদ্র চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়Ñ যা এ সমৃদ্ধ সভ্যতাকে আরো বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করে। অ্যাংকর নগরীর সমৃদ্ধির উল্লেখযোগ্য কারণ ছিল সেখানকার জলব্যবস্থা। প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠেছিল এর নালা, খাল-বিলগুলো। শুষ্ক মওসুমে চাষাবাদের জন্য খাল-বিলগুলোকে ব্যবহার করা হতো পানি বয়ে নিয়ে আনার জন্য, আর বর্ষা মওসুমে ব্যবহার করা হতো অতিরিক্ত পানি বের করে দেয়ার জন্য। তবে ক্রমশ অ্যাংকরের অবস্থার পরিবর্তন হতে থাকে। নগরটির জলব্যবস্থাও ধীরে ধীরে অচল হয়ে পড়তে থাকে। এক দিকে নগরটির অভ্যন্তরীণ সমস্যা, পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে যুদ্ধাবস্থা এবং অন্যদিকে প্রকৃতির বিরূপ আচরণ অ্যাংকরের অস্তিত্বের প্রতি হুমকি হয়ে পড়ল। ত্রয়োদশ শতকে ইউরোপে প্রচ- বরফ পড়তে থাকে।

এই সময়টাকে বলা হয় ‘লিটল আইস এজ’, বাংলায় বললে ক্ষুদ্র বরফ যুগ। এশিয়াতেও এর প্রভাব পড়ে। চলতে থাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এ সময় খেমারদের প্রভাব প্রতিপত্তিও কমতে শুরু করে। ত্রয়োদশ শতকের শেষ দিকে বেশ কয়েকটি যুদ্ধে খেমাররাজ অযোধ্যারাজের কাছে পরাজিত হয়। ১৪৩১ সালে অযোধ্যার রাজার কাছে খেমাররাজ চূড়ান্তভাবে পরাজিত হয়। অযোধ্যারাজ অ্যাংকর নগরী দখল করে ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এভাবে এশিয়ার সমৃদ্ধ নগরী অ্যাংকর ধ্বংস হয়ে গেল। তবে শহরটি এখনো পুরোপুরি হারিয়ে বা ধ্বংস হয়ে যায়নি। নগরটির অনেক স্থাপত্য এখনো টিকে আছে। তবে স্থাপত্যগুলো তিনটি দেশÑ কম্পোডিয়া, থাইল্যান্ড ও লাওসে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। স্থাপত্যগুলোর বেশিরভাগই মন্দির। অধিকাংশ মন্দিরগুলো কম্বোডিয়া আর থাইল্যান্ডে অবস্থিত। কিছু মন্দির আছে লাওসে।

By: এম এস শহিদ ||

352
Bangladesh Civil Service-BCS / Re: one link for bcs preparation
« on: August 06, 2014, 03:44:09 PM »
Very useful link for increasing general knowledge.

354
Faculty Forum / মেধা বাড়ানোর উপায়
« on: August 04, 2014, 02:43:06 PM »
কোন অনুষ্টানে হঠাৎ পরিচয়ের পর একজনের সাথে আলাপ হলো। দীর্ঘক্ষন কথা হলো। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই তার নামটা ভুলে গেলেন। কোনো ভাবেই তার নামটা মনে করতে পারছেন না।

অফিসে আজ কী করবেন সে জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। কিন্তু অফিসে আসার পর কী একটা কাজ করার কথা ছিলো আর মনে করতে পারছেন না। দৈনন্দিন জীবনে এ রকম অভিজ্ঞতা কম-বেশি আমাদের সবারই হয়। নাম, ফোন নাম্বার, কম্পিউটারের পাসওয়ার্ড, এমন অনেক মনে রাখার মতো জরুরি বিষয় একেবারেই কম নয়।

কিভাবে এসব বিষয় মনে রাখা যায় কিংবা ভুলে না যায় তার কী কোনো সহজ উপায় আছে। হ্যা অবশ্যই আছে। একটু অবাক লাগছে। সত্যিই কী এ রকম কি কোনো উপায় আছে ?

আসলে শরীরের যেকোনো মাসলের মতো ব্রেনকেও আপনি যত ব্যবহার করবেন ততই তা সক্রিয় হয়ে উঠবে। মনে রাখার ক্ষমতা জন্মসূত্রে পাওয়া হলেও স্মৃতিশক্তির একটা অংশ কিন্তু পরিবেশ, শেখার মাধ্যম এবং ব্যক্তির ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। মানছি, ব্রেন কোনো কম্পিউটার নয় যে চিপ ঢুকিয়ে মেমরি বাড়ানো যাবে। তবে স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর অনেক ব্যাপার আছে পুরোপুরিভাবে আপনার হাতে। ঠিক যেমন ফিজিক্যাল ফিটনেস ভালো করার জন্য আপনারা ব্যায়াম করেন, তেমনই ‘ব্রেন পাওয়ার’ বাড়ানোর জন্য কিছু স্ট্র্যাটেজি মেনে চলতে হবে। যেমন ধরুন নেমনিক্স ব্যবহার করা। রোজকার জীবনে এই তুরুপের তাসটা যদি নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসতে পারেন, দেখবেন মনে রাখার জন্য বেশি চেষ্টা করতেই হচ্ছে না। নাম মনে রাখতে পারেন না, তাতে কী? কোনো সুন্দর ছবির সাথে অ্যাসোসিয়েট করে দেখুন, চেষ্টা করলেও ভুলতে পারবেন না। ফোন নম্বর মনে রাখতে চাঙ্কিং পদ্ধতি ট্রাই করুন। নম্বর তিন সেটে ভাগ করে নিন। ৫৫৫৬৭৩৯১০-এর বদলে মনে রাখুন ৫৫৫-৬৭৩-৯১০। এইভাবে লম্বা ইনফরমেশনও ছোট সেটে অনায়াসেই ভাগ করে নেয়া যায়।

বাজার করার ফর্দ বানাতে বসে আমরা দরকারি জিনিসের নাম লিখতে ভুলে যাই। এই সমস্যার সমাধানেও কাজে আসতে পারে নেমনিক্স। বাড়ির কোনো ঘর বা বিশেষ কোনো স্থান দরকারি জিনিসের প্রেক্ষাপট হিসেবে জুড়ে দিতে পারেন। এরপর আর কী! ঘরের কথা ভাবলেই জিনিসের নামও আমরা আমাদের মস্তিষ্কের যা ক্ষমতা তার খুব কম পরিমাণই ব্যবহার করি। যে কাজটা যেভাবে করে আসছি, সেটা অন্যভাবে করার কোনো চেষ্টাই করি না। বয়স বাড়ার সাথে সাথে যেভাবে ইনফরমেশন প্রসেস করার গতি বেড়ে যায়, সেটাকে ঠিকমতো কাজে লাগাই না। গতানুগতিক রাস্তায় চলতেই পছন্দ করি। কিছু না ভেবে একই পদ্ধতি বারবার প্রয়োগ করে কোনো কাজ করলে কিন্তু মস্তিষ্ক ঝিমিয়ে পড়ে। ব্রেনকে চাঙা রাখতে হলে ‘আউট অব দ্য বক্স’ রাস্তা বেছে নিতে হবে। এমন কিছু অ্যাক্টিভিটি বাছুন, যা আপনার কাছে নতুন, চ্যালেঞ্জিং। নতুন ভাষা শিখতে পারেন, ইনস্ট্রুমেন্ট বাজাতে পারেন। পাজল বা সুডোকু সলভ করতে পারেন। এই পদক্ষেপগুলো মানলে ব্রেন বেশি সজাগ থাকবে।

মেমরি ভালো রাখার অন্য উপায়
‘ব্রেন বুস্টিং’
খাবার খান ব্রেনের সঠিকভাবে কাজ করার জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ পুষ্টি ও এনার্জির প্রয়োজন। স্বাভাবিক নিয়মে আমাদের শরীরের কিছু অক্সিডেন্ট তৈরি হয় যা মস্তিষ্কের কার্যকরী ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
কিন্তু এমন কিছু খাবার আছে যা শরীরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট তৈরি করে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যকরী ক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ব্রেন হেলথের জন্য ওমেগা৩ ফ্যাটি অ্যাসিড জরুরি উপাদান। মাছে (বিশেষ করে স্যামন, টুনা, ট্রাউট) ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। ফিস অয়েল সাপ্লিমেন্ট, আখরোট, ফ্যাক্সসিড, সয়াবিনও ট্রাই করতে পারেন। স্মৃতিশক্তি বাড়াতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খান। পালংশাক, ব্রকোলি, লেটুসের মতো সবজি, ফল (তরমুজ, আম), গ্রিন টি খাওয়ার চেষ্টা করুন। মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখার জন্য কার্বোহাইড্রেট খাওয়াও জরুরি। সিম্পল কার্বোহাইড্রেট (চিনি, পাউরুটি ইত্যাদি) ব্রেনের জন্য ফুয়েলের মতো কাজ করলেও তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। ব্রেন এনার্জি বজায় রাখার ভালো অপশন কম্পলেক্স কার্বোহাইড্রেট। হোল হুইট ব্রেড, ব্রাউন রাইস, ওটমিল, হাই ফাইবার সিরিয়াল নিজের ডায়েটে রাখুন। মস্তিষ্ক সক্রিয় রাখতে স্যাচুরেটেড ফ্যাট কম খান।

এক্সারসাইজ করুন
ফিজিক্যাল এক্সারসাইজ ব্রেনে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় এবং যেসব অসুখে (যেমন ডায়াবেটিস, হার্টের অসুখ) ‘মেমরি লস হতে পারে, সেগুলো প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। উপকারী ব্রেন কেমিক্যালের পরিমাণও বাড়িয়ে দেয়। মেডিটেশন ও আরো কিছু যোগাসন আছে যা ব্রেন ও নার্ভাস সিস্টেমকে স্টিমিউজেট করে স্মৃতিশক্তি ও মনোসংযোগ বাড়াতে সাহায্য করে।

ভালো করে ঘুমান
ভালো করে না ঘুমালে ব্রেন ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। মনে রাখার সাথেও ঘুমের সরাসরি যোগাযোগ আছে। গবেষণা করে জানা গেছে, ‘মেমরি কনসলিডেশন’-এর জন্য ভালো ঘুম জরুরি। এমনকি দুপুরে আধঘণ্টা থেকে ৪৫ মিনিট ঘুমও বেশ উপকারী। দুপুরে নিটোল ঘুম ডিকেরাটিভ মেমরিকে (বইপত্র পড়ে যা জ্ঞান অর্জন করা হয়, সেগুলো মনে রাখা) উসকে দেয়। ফলে যা শিখেছেন তা মনে রাখা সহজ হয়ে যায়। তবে জোর করে শেখা জিনিস কিন্তু মনে রাখতে সাহায্য করে না এই ঘুম।

বন্ধুবান্ধবদের সাথে সময় কাটান
রিসার্চ করে দেখা গেছে, জীবনকে যদি উপভোগ করতে পারেন, তার প্রভাব ‘কগনিটিভ অ্যাবিলিটির’ ওপরও পড়ে। আশপাশের লোকের সাথে ইন্টার‌্যাকশন করলে শুধু মন-মেজাজ ভালো থাকে না, ‘ইট ইজ অলসো আ ফর্ম অব ব্রেন এক্সারসাইজ’।
সাপোর্ট সিস্টেম থাকাটা শুধু ইমোশনাল হেলথের জন্যই নয়, ব্রেন হেলথের জন্যও জরুরি।

By: উম্মে হাবিবা

355
Watch but not for long time..

356
কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিগুলো বেআইনিভাবে ব্যবসা করছে। পণ্য পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি অর্থ স্থানান্তরের কাজও করছে কোম্পানিগুলো। অথচ দেশের কোনো আইন কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিকে অর্থ স্থানান্তরের এখতিয়ার দেয়নি। ফলে আপনি যদি কুরিয়ার সার্ভিসে টাকা পাঠান এবং প্রাপক তা না পায়, তাহলে আপনি কোথাও অভিযোগ করতে পারবেন না।
শুধু তাই নয়, মাদক, অস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য আনা-নেওয়ার মাধ্যম হিসেবেও কাজ করছে কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানি। চাঁদাবাজ ও অপহরণকারীরা অর্থ আদায়ের জন্য কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিগুলোকে বেছে নিচ্ছে।
৩০ বছর ধরে এই কাজ চলতে থাকলেও নির্বিকার থেকেছে সব সরকার। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো একে অপরের ওপর দায় চাপিয়েই ক্ষান্ত থাকছে। এক যুগ ধরে এ নিয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে চিঠি চালাচালিও হচ্ছে। কিন্তু সুরাহা আর হচ্ছে না।
দেশের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় অর্থ স্থানান্তর সম্পর্কিত আইন রয়েছে দুটি। ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১ এবং ডাকঘর আইন, ১৮৯৮। এই দুই আইনেই কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানি অর্থ স্থানান্তর করতে পারে না। ডাকঘর আইনের আওতায় সর্বশেষ মেইলিং অপারেটর ও কুরিয়ার সার্ভিস বিধিমালা করা হয় ২০১৩ সালে। এতেও অর্থ স্থানান্তরের ক্ষমতা দেওয়া হয়নি কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিকে।
এদিকে মানি লন্ডারিং এবং হুন্ডি ব্যবসারও অভিযোগও রয়েছে কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে। অবৈধ হুন্ডি তৎপরতা, বিদেশে অর্থ পাচার এবং মানি লন্ডারিং তৎপরতা প্রতিরোধ ও দমনের কার্যক্রম জোরদার করার লক্ষ্যে সরকারের একটি কেন্দ্রীয় টাস্কফোর্স রয়েছে। টাস্কফোর্সের সব সভায় এমন আলোচনা উঠে এসেছে যে কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিগুলো কাজ করছে এমনকি মাদক, অস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য আনা-নেওয়ার মাধ্যম হিসেবেও।
ব্যাংক কোম্পানি আইন লঙ্ঘিত হলেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছু বলছে না। নোটিশ দিয়ে উল্টো রিট মামলা খেয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বিধি প্রণয়ন করেও কার্যকর করতে পারছে না। যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধকের কার্যালয় (রেজসকো) শুধু নিবন্ধন দিয়েছে কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিগুলোকে। এ নিবন্ধন ব্যবহার করে অন্য কাজ করলেও কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না রেজসকো।
কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানির জন্য বর্তমানে লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ জন্য গঠন করা হয়েছে একটি কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব দিলীপ কুমার দাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘দেশি-বিদেশি মিলিয়ে ১০০ কোম্পানি এ যাবৎ লাইসেন্স নিয়েছে। আরও কিছু আবেদন যাচাইয়ের কাজ চলছে।’
সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বেসরকারি পর্যায়ে চিঠিপত্র ও পণ্য আনা-নেওয়া শুরু হয় ১৯৮৩ সালে। এ রকম আরও কিছু কোম্পানি নিয়ে ১৯৯৪ সালে গঠিত হয় কুরিয়ার সার্ভিসেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (সিএসএবি)। ওই সময় সিএসএবিকে বাণিজ্য সংগঠন (টিও) লাইসেন্স দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়। তারও নয় বছর পর ২০০৩ সালের নভেম্বরে শুধু চিঠিপত্র এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় স্থানান্তর করতে পারার শর্তে সিএসএবিকে টিও লাইসেন্স দেওয়া হয়।
বেআইনি অর্থ লেনদেন: টিও লাইসেন্স দেওয়ার ১৮ দিনের মাথায় ২০০৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর সিএসএবির কর্মকাণ্ড নিয়ে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে। কার্যবিবরণীতে দেখা যায়, এতে কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিগুলোর অর্থ স্থানান্তরের আইনি ভিত্তি নিয়ে সবাই প্রশ্ন তুলেছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন উপমহাব্যবস্থাপক আতিকুর রহমান বৈঠকেই জানিয়ে দেন, এ স্থানান্তর বেআইনি। একটি ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ব্যাংক বা রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক লেনদেনের জন্য আইনগতভাবে এখতিয়ারভুক্ত কোনো প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে গেলে রাষ্ট্রীয়ভাবে জনগণের অর্থের নিরাপত্তা বিধানের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু কুরিয়ার সার্ভিসগুলো দেউলিয়া হয়ে গেলে এ দায় নেওয়ার কেউ নেই।
ডাক বিভাগের মাধ্যমে পাঠানো মানি অর্ডার হারিয়ে গেলেও সরকারিভাবে তা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে এ প্রতিকার পাওয়া যায় না।
২০০৪ সালের ৮ জানুয়ারি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানায়, সিএসএবিকে লাইসেন্স দেওয়া হলেও তারা বেআইনিভাবে অর্থ লেনদেনের কাজ করছে। ১৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকও এক চিঠি দিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে জানায়, টিও লাইসেন্স যেহেতু বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দিয়েছে, কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিগুলোকে অবৈধ কাজ থেকে বিরত রাখার দায়িত্বও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েরই।
এ ব্যাপারে অবশ্য দায় এড়াচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ নিয়ে কোনো তদন্ত করছে না। কেন করছে না, জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মাহফুজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নিবন্ধন নেওয়া কোম্পানি নয়। সে কারণে বাংলাদেশ ব্যাংক এগুলোর কর্মকাণ্ড নিবিড়ভাবে দেখে না।’
জবাবাবিহীন ১০ বছর: বেআইনিভাবে অর্থ লেনদেন করছে এই তথ্য জানিয়ে সিএসএবির টিও লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না মর্মে ২০০৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সংগঠনটিকে কারণ দর্শাও নোটিশ দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১০ বছরেও এর জবাব পায়নি।
এ নোটিশের বিরুদ্ধে সিএসএবির সদস্য সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানি হাইকোর্টে রিট মামলা (২৪৫৭/০৪) দায়ের করে। স্থগিতাদেশ দেন আদালত। এত বছরেও মামলাটির শুনানিই হয়নি বলে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে। আর দীর্ঘসূত্রতার এই সুযোগ নিচ্ছে কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিগুলো।
মামলার সর্বশেষ অবস্থা জানতে চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তিন বছরে (২০০৯-১২) ছয় দফা চিঠি পাঠায় অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ে। তারাও কোনো জবাব দেয়নি।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাজার হাজার চিঠি আসে, সবগুলোর জবাব দেওয়া মুশকিল। উচিত ছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেউ লেগে থেকে কাজটি করিয়ে নেওয়া।’ প্রথম আলোর পক্ষ থেকে খোঁজ নেওয়ার কারণে বিষয়টি তিনি আদালতে উপস্থাপন করবেন বলে জানান।
নোটিশের বিপরীতে রিট মামলাটি করেছিল যে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানি, তার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মামলাটির কথা তিনি ভুলেই গেছেন। তবে এর যে কোনো সুরাহা হয়নি সে ব্যাপারে নিশ্চিত তিনি।
নিষিদ্ধ পণ্যের মাধ্যম: নিষিদ্ধ পণ্য চলাচলের মাধ্যম হিসেবেও কাজ করছে কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানি। ফ্রান্সভিত্তিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল) ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) কয়েক দফা ই-মেইল বার্তা পাঠিয়েছে। এ বার্তাগুলোতে কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিগুলোর ওপর নজরদারি বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের জুনে এক কেজি ৩০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করার কথা জানিয়েছিল র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। একই বছরের সেপ্টেম্বরে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের ধানমন্ডি শাখার সামনে থেকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে হারুনুর রশীদ নামের একজনকে। তিনি ১৩ হাজার ইয়াবা নিয়ে আসেন টেকনাফ থেকে। আগের বছর ২০১২ সালের জানুয়ারিতে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসেরই বেনাপোল শাখা থেকে একটি পিস্তল ও ১৫৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। একই বছরের ৬ ডিসেম্বর ইন্টারপোলের সহায়তায় হংকংয়ের শুল্ক কর্মকর্তারা আটক করে দুই কেজি হেরোইন।
২০০৮ সালের ১৭ জুন লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দরে সে দেশের পুলিশ একটি টি-শার্টের প্যাকেট থেকে ৫০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করে। সন্দেহভাজন ছাড়া কারও ব্যাগ খোলা হয় না উল্লেখ করে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের এমডি হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বেনাপোল থেকে পিস্তল উদ্ধারে আমরাই পুলিশকে খবর দিয়েছিলাম।’
সমিতিই রয়েছে পাঁচটি: দেশে প্রকৃতপক্ষে কতটি কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানি রয়েছে, তার কোনো হিসাব সরকারের কাছে নেই। এমনকি সিএসএবির কাছেও নেই। সিএসএবির সভাপতি অনুমান করে জানান, ৫০০-এর মতো কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানি থাকতে পারে। দেশি কোম্পানির মধ্যে এসএ পরিবহন, সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস, করতোয়া কুরিয়ার সার্ভিস ও কন্টিনেন্টাল কুরিয়ার সার্ভিসের নাম বেশি পরিচিত। বিদেশির মধ্যে ডিএইচএল ও ফেডএক্স।
কোনো একটি খাতের জন্য সাধারণত একটি করে সমিতি থাকলেও এই খাতে রয়েছে পাঁচটি সমিতি। সিএসএবি ছাড়া বাকিগুলো হচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল এয়ার এক্সপ্রেস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, অন বোর্ড কুরিয়ার সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পার্শেল সার্ভিস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ প্রাইভেট কেরিয়ার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন।
বাংলাদেশ পার্শেল সার্ভিস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এবং এসএ পরিবহনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সালাউদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানির ব্যবসা পুরোপুরি বেআইনি বলা যাবে না। কারণ, এসএ পরিবহন নিবন্ধন নিয়েছে রেজসকো থেকে। কোম্পানির সংঘবিধিতে অর্থ লেনদেন করা যাবে বলে বলা রয়েছে।’
রেজসকো নিবন্ধক বিজনকুমার বৈশ্য তাঁর যুক্তিকে খণ্ডন করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘অর্থ লেনদেনের অনুমোদন রেজসকো দিতে পারে না, দেয়ওনি। এটি নিতে হবে বাংলাদেশ ব্যাংক বা সংশ্লিষ্ট অন্য কর্তৃপক্ষ থেকে।’

ফখরুল ইসলাম
Link Add: http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/282322/%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%86%E0%A6%87%E0%A6%A8%E0%A6%BF-%E0%A6%B9%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%93-%E0%A6%95%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%87-%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE-%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A0%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%BE-%E0%A6%B9%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%9B%E0%A7%87
[/size][/size]

357
ভ্রমণের সময় প্রয়োজনীয় কাপড়-চোপড় সঙ্গে নিতে হবে। বাস, ট্রেন ও লঞ্চের ভ্রমণে জানালার পাশে অতিরিক্ত বাতাসের ঝাপটা থেকেও সর্দিজ্বরে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। এ ধরনের ছোটখাটো বিষয়গুলোও মাথায় রাখা উচিত। ঈদের ভ্রমণে অধিকাংশ মানুষই গ্রামের বাড়িতে যান। যেখানে অনেক সাধারণ ঔষধও পাওয়া যায় না। তাই সম্ভাব্য অসুস্থতার কথা বিবেচনায় রেখে সাধারণ কিছু ঔষধপত্র সঙ্গে নিয়ে যাওয়া খুবই বুদ্ধিমানের কাজ। এ ছাড়া একটি ফার্স্টএইড বঙ্ নিজের মতো তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে। উন্নত বিশ্বে প্রতিটি ঘরেই এ ধরনের বঙ্ থাকে।

ভ্রমণের খুঁটিনাটি : ঈদ ভ্রমণে অসুস্থ হয়ে পড়াটা মোটেও কাম্য নয়। তারপরও অনেকেই কিন্তু ভ্রমণের কারণে ঈদের আগেই অসুস্থ হয়ে পড়েন কিংবা ঈদের দিনটিতে থাকেন অসুখে আক্রান্ত। বিশেষ করে শিশুরা খুব সহজেই আক্রান্ত হয় সর্দিজ্বর, বমি ও ডায়রিয়ায়। এই অসুস্থতার অন্যতম কারণ কিন্তু অসচেতনতা। ভ্রমণে অভিভাবকরা যদি শিশুদের ব্যাপারে সচেতন থাকেন তাহলে খুব সহজেই কিন্তু এসব শারীরিক বিপত্তি এড়িয়ে চলা সম্ভব। বিষয়টি খুবই সিম্পল। যেমন ধরুন_ ট্রেন, বাস কিংবা লঞ্চে ভ্রমণের সময় সব সময়ই শিশুরা জানালার ধারের সিটটি পছন্দ করে। এ কারণে হঠাৎ করেই শিশুরা অতিরিক্ত বাতাসের ঝাপটার মুখোমুখি হয়, যা অনেকেরই সহ্য ক্ষমতার বাইরে। এর ফলে শিশুরা অনেকেই ঠিক ভ্রমণের পর আক্রান্ত হয় সর্দিজ্বর কিংবা কাশিতে। ভ্রমণে শিশুরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয় ডায়রিয়ায়। এর কারণ হলো বাইরের পানীয় এবং খাবার গ্রহণ। আর তাই বাইরের খাবার কোনোভাবেই গ্রহণ করা ঠিক নয়। বিশেষ করে ঘরের তৈরি কিছু খাবার ও পানি সঙ্গে নিয়ে ভ্রমণে বের হওয়া উচিত। ভ্রমণে খাদ্য ও পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধের ব্যাপারে সচেষ্ট থাকতে হবে সবচেয়ে বেশি। অনেকেই আছেন বাসে চড়লে বমিভাব কিংবা বমি শুরু হয়। ভ্রমণজনিত বমি বা মোশন সিকনেস প্রতিরোধে স্টেমেটিল ট্যাবলেট ভ্রমণের আধা ঘণ্টা আগে গ্রহণ করা যেতে পারে। 

ঔষধ : যারা রোগী তারা ঈদ ভ্রমণে সঙ্গে করে প্রয়োজনীয় ঔষধ নিয়ে যাবেন_ এটাই স্বাভাবিক। এ ছাড়া ভ্রমণে সঙ্গে করে কিছু সাধারণ ঔষধ নিয়ে যেতে পারেন। যেমন_ পেটের গণ্ডগোল, পেটে গ্যাস, বদহজম, সাধারণ সর্দি-কাশি, বমি, মাথাব্যথা, শরীরব্যথা, মাসিকের ব্যথা ইত্যাদির সমস্যায় প্রয়োজনীয় কিছু ঔষধ সঙ্গে নিতে হবে। যেসব ঔষধ সঙ্গে নিয়ে যাওয়া উচিত সেগুলো হলো_ জ্বর, ব্যথা, শরীরব্যথার জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ যেমন নাপা, এইস ইত্যাদি। পেটের পীড়ার জন্য মেট্রোনিডাজল জাতীয় ঔষধ যেমন অ্যামোডিস, ফ্ল্যাজিল (ডোজ একটি করে দৈনিক তিনবার পাঁচ-সাত দিন) খাওয়া যেতে পারে। পেটে গ্যাস, পেটফাঁপা, বুকজ্বলার জন্য এন্টাসিড ট্যাবলেট, পেপটিক আলসারের জন্য রেনিটিডিন (নিওসেপটিন আর/নিওট্যাক) অথবা ক্যাপসুল ওমিপ্রাজল ২০ মি.গ্রা. (ওমেটিড/ওমিগাট/ সেকলো ইত্যাদি) খাওয়ার আগে, ডোজ ১৫০ মি.গ্রা. একটি করে দৈনিক দুবার গ্রহণ করা যেতে পারে। এ ছাড়া ডায়রিয়ার জন্য ওর স্যালাইন সঙ্গে রাখতে হবে। একই সঙ্গে কয়েকটি হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্সসহ আপনার পরিচিত কয়েকজন চিকিৎসকের ফোন নম্বর টুকে নিতে ভুলবেন না।

358
Teaching & Research Forum / Re: My publication
« on: July 21, 2014, 11:10:37 AM »
Keep it up.

359
Faculty Sections / Re: Details of Ahsan Manzil
« on: July 21, 2014, 11:04:21 AM »
চলেন একদিন ঘুরে আসি।

360
The easiest way is not to use লেন্স but চশমা।

Pages: 1 ... 22 23 [24] 25