Show Posts

This section allows you to view all posts made by this member. Note that you can only see posts made in areas you currently have access to.


Messages - Lazminur Alam

Pages: 1 2 [3] 4 5 ... 22
31
Heritage/Culture / দুধরাজ
« on: July 14, 2017, 10:44:27 AM »
ছবির এই দুধসাদা পুরুষ পাখিটি বাসায় বসে ডিমে তা দিচ্ছে কী সুন্দর মোহনীয় ভঙ্গিতে! লেজের লম্বা ফিতাপালক দুখানা টানটান করে ছড়িয়ে দিয়েছে। আসলে পুরুষ পাখিরা ডিমে তা দেয় না, ডিমে তা দিতে দিতে ক্লান্ত বা ক্ষুধার্ত হলে মেয়েপাখিটি যখন বাসা ছেড়ে উড়াল দেয় ডানার আড়ষ্টতা কাটানোর জন্য বা খাবার খেতে, তখন পুরুষটি ডিমে বসে, তায়ে সুবিধার জন্য ঠোঁট দিয়ে ডিম উল্টেপাল্টে দেয়। দুঃসাহসী এই পুরুষ পাখিরা বাসার চারপাশ কড়া পাহারায় রাখে। বাসার ত্রিসীমানায় বেজি-বনবিড়াল, পোষা কুকুর-বিড়াল, গুইসাপ-বিষধর সাপসহ শিকারি পাখিরা এলেই বাতাসচেরা কর্কশ ধাতব ডাক ছেড়ে আক্রমণ করে। আক্রমণের গতি ও আকস্মিকতায় শত্রুরা ভড়কে যায়। এই সুবিধা নেওয়ার জন্য এই পাখিদের বাসার কাছাকাছি বাসা করে কমলা দোয়েল, হলদে বউ, চশমা পাখি, নাচুনে, ভ্যাদাটুনি, বুলবুলিসহ নিরীহ ও কিছুটা সাহসী পাখি।

অনেকটাই গেরিলা কৌশলে ওড়াউড়ি এদের। পছন্দ ছায়া ছায়া বনবাগান। সবচেয়ে বেশি পছন্দ বাঁশবন বা বাঁশমহাল। বাঁশের ঝুলন্ত কঞ্চিতে বাসা করতেও পছন্দ করে খুব। আম-কাঁঠালগাছ বেশি পছন্দ। তবে বাসা করবে কিছুটা ঝুলন্ত সরু ডালে। বছর বছর একই এলাকায় বা একই গাছের ভিন্ন ভিন্ন ডালে বাসা বাঁধার প্রবণতা এদের প্রবল। বাসা করে বসন্ত-বর্ষায়। বাসা বাঁধা শেষ করতে সময় লাগে চার থেকে সাত দিন। চারটি গোলাপি রঙের ডিম পেড়ে ১৫-২১ দিনের তায়ে ছানা ফোটায় এরা। মূল খাদ্য এদের উড়ন্ত কীটপতঙ্গ, লার্ভা ও ফুলের নির্যাস। সুযোগ পেলে তাল-খেজুরের রসও পান করে। পুরুষ ছানারা দু-তিন বছর পর্যন্ত লালচে বা লালচে-বাদামি থাকে, তারপরে একেবারে দুধসাদা রঙের হয়ে যায়। মেয়েটি সারা জীবনই লালচে-বাদামি পাখি থাকে, তার লেজে ফিতাপালক থাকে না। পুরুষটি বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর পাখি। সুদৃশ্য লম্বা লেজ দুটি এদের শরীরের তুলনায় চার–পাঁচ গুণ বড়। বাতাসে এই সুদৃশ্য লেজ-ফিতা যখন দোলে, তখন নান্দনিক সৌন্দর্যের সৃষ্টি হয়।

সারা দেশেই আছে এরা; তবে চালচলনে লুকোছাপা থাকার কারণে মানুষের নজরে পড়ে না সহজে।

চতুর-সাহসী-বুদ্ধিমান ও তুখোড় প্রেমিক এই পাখিদের নাম দুধরাজ। মেয়েটি হলো দুধরানি। দুধরানির যেকোনো বিপদে দুধরাজ কী রকম আহাজারি আর ক্রন্দন যে করে! লেজঝোলা, সাদা সিপাহি, লাল সিপাহি ও সাহেব বুলবুলি নামেও পরিচিত এরা। ইংরেজি নাম Asian Paradise Flycatcher। বৈজ্ঞানিক নাম Terpsiphone paradise। লেজসহ দৈর্ঘ্য ২০ সেন্টিমিটার। ওজন ২০ গ্রাম।

(সূত্র: প্রথম আলো)

32
Heritage/Culture / তামাটে মুনিয়া
« on: July 13, 2017, 04:47:49 PM »
এ দেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি তামাটে মুনিয়া। কালোমাথা মুনিয়া নামেও পরিচিত। ইংরেজি নাম Chestnut Munia, Indian Black-headed Munia বা Eastern Black-headed Munia. Estrildae পরিবারের সদস্য তামাটে মুনিয়ার বৈজ্ঞানিক নাম lonchura atricapilla. আগে এরা Lonchura malacca বা তিনরঙা মুনিয়ার (Tricolored Munia) একটি উপপ্রজাতি হিসেবে বিবেচিত হতো। কিন্তু ২০০০ সালে এদের তামাটে বা কালোমাথা মুনিয়া ও তিনরঙা বা খয়েরি মুনিয়া নামে দুটি পৃথক প্রজাতি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।

তামাটে মুনিয়া ছোট আকারের পাখি। লম্বায় প্রায় ১১ সেন্টিমিটার ও ওজনে মাত্র ৯ গ্রাম। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথা, ঘাড় ও গলা চকচকে কালো। ডানা, পিঠ, বুক, পেট ও লেজ গাঢ় তামাটে। কোনো কোনো বংশধারার (Race) পাখির পেট ও লেজের তলা কালো এবং লেজের পালকে হলদে বা কমলার আভা দেখা যায়। শক্তপোক্ত ত্রিকোণাকার ঠোঁট হালকা নীলচে-ধূসর। পা, আঙুল ও নখ কালো। গাঢ় রঙের চোখ। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহের পালক অনুজ্জ্বল দারুচিনি-বাদামি ও দেখতে হুবহু তিলা মুনিয়ার বাচ্চার মতো। মাথা-ঘাড়-গলায় কালো রং নেই। ঠোঁট গাঢ় নীলচে-ধূসর।

তামাটে মুনিয়া দীর্ঘ ঘাসবন, ধান‌খেত, জলাভূমি, আবাদি জমি ও বনের ভেতরের খোলা জায়গায় বা বনের কিনারায় বিচরণ করে। সচরাচর জোড়ায় বা ছোট দলে দেখা যায়। তবে তিনরঙা মুনিয়ার সঙ্গে মিশ্র ঝাঁকেও দেখা যেতে পারে। মিশ্র ঝাঁকে থাকলে ঝাঁকের চার-পাঁচ ভাগের এক ভাগ মাত্র হয় তামাটে মুনিয়া। অন্যান্য মুনিয়ার মতো বীজজাতীয় খাদ্য, যেমন ঘাসবিচি ও ধান-কাউন এদের প্রধান খাদ্য। মাটিতে খুঁটে খুঁটে বা ঘাস-ধান-কাউনের ছড়ায় উঠে খাবার খায়। শুধু পুরুষই ডাকে। ‘পি পি’ বা ‘পিট পিট’ শব্দে ডাকতে থাকে।

মে-নভেম্বর প্রজননকাল। মাটি থেকে ১-২ মিটার উচ্চতায় নলখাগড়া, ঝোপ, লম্বা ঘাস বা তাল-খেজুরগাছে শুকনো ঘাস ও চিকন কাঠিকুটি দিয়ে ডিম্বাকার বাসা বানায়। ডিম হয় ৫-৬টি। ডিমের রং সাদা। বাচ্চা ফুটতে ১২-১৫ দিন সময় লাগে। বাচ্চারা উড়তে শেখে প্রায় দুই সপ্তাহে। এরপর আরও ১-৩ সপ্তাহ বাবা-মায়ের সঙ্গে বাসায় থাকে। দুর্লভ এই মুনিয়াগুলো এ দেশের প্রকৃতিতে অনন্তকাল বেঁচে থাকুক।

33
Heritage/Culture / রামগাংরা
« on: July 10, 2017, 05:47:53 PM »
রামগাংরা মারকুটে-ঝগড়াটে অতি চঞ্চল ও কোলাহলপ্রিয় পাখি। চালচলনে আছে একটা বেপরোয়াভাব। ডাকাডাকি করে সর্বক্ষণ জানান দেয় নিজের উপস্থিতি। পোকামাকড়ের বা প্রিয় ফলের নাগাল পেতে এরা গাছের সরু ডাল-পাতার শীর্ষে ঝুলে-দুলে প্রায়ই অ্যাক্রোবেটিক শো প্রদর্শনে খুবই পারঙ্গম। সাহসী পাখি বলে নিজের চেয়ে বড় পাখির দিকেও ধেয়ে যায় এরা। এই পাখিটিকে দেখলে হঠাৎ করে পুরুষ

চড়ুই বলেও মনে হতে পারে। তাই বোধ হয় এদের আরেক নাম ‘গাইছা চড়ুই’, তিতপোখ নামেও পরিচিত।

মূল খাদ্য গাছের ডাল-পাতা-বাকলের পোকামাকড়। পলেস্তারা খসা দালানের ইটের ফাঁকফোকরেও তল্লাশি চালায় পোকামাকড়ের খোঁজে। আখখেত, পাটখেত ও বেগুনখেতের পোকামাকড়ও খায়। খায় সফেদা, পেঁপে, আতাসহ আরও কিছু ছোট-বড় ফল।

দলে চলে, জোড়ায় চলে, চলে একাকীও। পাখিটির মাথার তালু ও গলা কুচকুচে কালো, চোখের নিচ থেকে প্রায় গলা পর্যন্ত ধবধবে সাদা। বুকের দুপাশ সাদা, গলার কালোটা একেবারে বুকের মধ্যিখান দিয়ে রেখার মতো বয়ে গিয়ে শেষ হয়েছে তলপেটে। পিঠ ও লেজের আগার উপরিভাগ ঘন-ধূসর, ডানার উপরিভাগে সাদা সাদা সরু রেখা আছে কয়েকটা। ছোট ঠোঁটটির রং কালো। ধূসর-কালচে পা। পুরুষ ও মেয়ে পাখি দেখতে একই রকম।

এরা বাসা করে সুপারিগাছ, খেজুরগাছ, মোটা বাঁশগাছের ছোট মুখওয়ালা কোটর-ফোকরে। দরদালানের দেয়ালের ফোকরেও বাসা করে থাকে। স্টিলের খাম্বার বা পিলারের ফোকর থাকলে সেখানেও বাসা করতে পারে এরা।

বাসা সাজায় শুকনো সুপারির খোসা, আখের ছোবড়া, নারকেলের খোসা, শুকনো ঘাস ইত্যাদি দিয়ে। দুজনে মিলে বাসা সাজায়। খোঁড়লের গভীরতা বেশি হলে ওপরমুখো হয়ে পা আঁকড়ে বেয়ে বেয়ে তলায় নামে, ওঠেও বেয়ে বেয়ে একই কায়দায়। আমি ৫ ফুট থেকে ৯ ফুট গভীরতায় এদের বাসা সাজাতে দেখেছি। ছানাদের খাওয়াতে গিয়ে এরা পেরেশান হয়ে যায়। ডিম পাড়ে ৩ থেকে ৭টি। তা দেয় পালা করে। বউ যখন তায়ে থাকে, তখন পুরুষটি পরম মমতায় খাবার এনে বউটিকে খাওয়ায়।

রামগাংরার ইংরেজি নাম Great Tit। বৈজ্ঞানিক নাম Parus major। দৈর্ঘ্য ও ওজন যথাক্রমে ১৩ সেমি ও ১৩ গ্রাম। এরা আমাদের আবাসিক পাখি। ঢাকা শহরসহ সারা দেশেই দেখা মেলে এদের।

34
সব সময়ই ডিম খাওয়া হয়ে থাকে সবার। তবে পছন্দভেদে একেকজন একেক পদ্ধতিতে খেয়ে থাকে। কেউ ডিম পোচ করে, কেউ আবার সেদ্ধ করে। এই দুই খাবারের গুণাগুণ ও অপকারিতা নিয়ে বলেছেন বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ।

ডিম পোচ

তেলে ভাজার কারণে সেদ্ধ ডিমের চেয়ে ডিম পোচে ক্যালরির পরিমাণ বেশি থাকে। যারা ওজন ঠিক রাখতে চায় কিংবা বাড়াতে না চায় তাদের ডিম পোচ না খাওয়া ভালো। আর ব্লাডপ্রেশারের সমস্যা থাকলে এটি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। বাচ্চাদের জন্য ডিম পোচ ভালো। কারণ সেদ্ধ ডিমের চেয়ে ডিম পোচের কুসুমে গুণাগুণ বেশি থাকে।

সেদ্ধ ডিম

যারা ওজন ধরে রাখতে চায় এবং ওজন কমাতে চায় তাদের সেদ্ধ ডিম খাওয়া উচিত। যারা সেদ্ধ ডিম খেতে পারে না, তারা পানিতে ডিম পোচ করে খেতে পারে। যাদের ব্লাডপ্রেশারের সমস্যা আছে, তারা সেদ্ধ ডিম খেতে পারে। ডিমের সাদা অংশে প্রোটিন থাকে। শরীরে অ্যালবুমিনের (বিশেষ ধরনের প্রোটিন) পরিমাণ বেশি থাকলে ডিমের সাদা অংশ না খাওয়া ভালো। অন্যদিকে যাদের অ্যালবুমিন কম তারা দিনে একাধিক ডিম খেতে পারে এবং সেদ্ধ ডিম তাদের জন্য ভালো।

35
Heritage/Culture / পালাসের গাঙচিল
« on: July 06, 2017, 11:23:53 AM »
ইংরেজি নাম Pallas’s Gull বা Greater Black-headed Gull। Laridae গোত্রের এই পাখির বৈজ্ঞানিক নাম Larus ichthyaetus।

গাঙচিলদের মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম পালাসের গাঙচিলের দৈর্ঘ্য ৬০-৭২ সেন্টিমিটার, প্রসারিত ডানা ১৫৫-১৭০ সেন্টিমিটার এবং ওজন ০.৯- ২.০ কেজি। প্রজননকালীন প্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথা, গলাসহ মুখমণ্ডল ভেলভেট কালো। পিঠের পালক ধূসর ও বুক-পেটের নিচের পালক ধবধবে সাদা। ডানার বাইরের কয়েকটি পালকের আগা কালো, এ ছাড়া বাকি সব পালক সাদা। লম্বা ও সরু ঠোঁটটি কমলা-হলুদ ও আগা গাঢ় রঙের। চোখের ওপরে ও নিচে অর্ধচন্দ্রাকৃতির পট্টি রয়েছে। প্রজননহীন পাখির মুখমণ্ডল সাদা; তবে চোখের চারদিক, কান-ঢাকনি ও মাথার পেছনে বাদামি ছিটেফোঁটা থাকে। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহের ওপরটা গাঢ় বাদামি, নিচটা ফ্যাকাশে ও ঠোঁট ধূসরাভ।

এরা সচরাচর দৃশ্যমান পরিযায়ী পাখি। উপকূলীয় এলাকা, জাহাজ বা লঞ্চঘাট, নদী ও হ্রদে বিচরণ করে। প্রজনন মৌসুম ছাড়া অন্য সময় সচরাচর একাকী বা দু-তিনটিতে একসঙ্গে থকে। তবে মাছের আধিক্য থাকলে একসঙ্গে বহু পাখি দেখা যায়। মাছ মূল খাদ্য হলেও প্রয়োজনে কাঁকড়া, চিংড়িজাতীয় প্রাণী, কীটপতঙ্গ, ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী, সরীসৃপ, পাখি, ডিম ইত্যাদিও খেতে পারে। পানির সামান্য ওপরে উড়ে উড়ে খাদ্য সংগ্রহ করে। শীতে সচরাচর নীরব থাকে, কিন্তু মাঝে মাঝে উচ্চকণ্ঠে ‘ক্রি-অ্যাব ক্রি-অ্যাব ক্রি-অ্যাব’ স্বরে ডাকে।

গ্রীষ্মে মধ্য এশিয়া, উত্তর-পশ্চিম মঙ্গোলিয়া, চীনের উত্তরাঞ্চল ও তিব্বতে প্রজনন করে। সচরাচর মাটির ওপর অনেক পাখি একসঙ্গে কলোনি করে থাকে। শুকনো ঘাস-লতা ও দেহের ঝরা পালক দিয়ে মাটিতে বাসা বানায়। স্ত্রী দুই থেকে চারটি ঘিয়ে রঙের ডিম পাড়ে, যার ওপর থাকে কালো, খয়েরি বা ধূসর ছিটছোপ। ডিম ফোটে ২৫ দিনে। সদ্য ফোটা বাচ্চার কোমল পালকের রং ঘিয়ে-হলুদ বা রুপালি-সাদা। বাচ্চারা প্রায় পাঁচ দিনে বাসা ছাড়ে এবং চার-পাঁচ বছর বয়সে প্রজননক্ষম হয়।

36
ছবির এই পাখিটির লেজ খোয়া গেছে। এই পাখিরা বন-বাগানের ঝোপঝাড়ে চরে। লাফিয়ে লাফিয়ে এই ঝোপ থেকে সেই ঝোপে যায়, পোকামাকড়, শূককীট ও লার্ভা খায়। হাবাগোবা ও নিরীহ শান্ত স্বভাবের এই পাখিদের গলায় আছে চার রকমের মিষ্টি সুর। মোলায়েম মিষ্টি সুরেলা গলা। খুব ভোরে জেগে পাতাঢাকা কোনো গাছের ডালে বুক-পেট মিশিয়ে বসে একটানা ডাকবে অনেকক্ষণ। গানের ভাষাটা অনেকটাই ‘টিউ টু টু টুউও’ ধরনের। শৈশব-কৈশোরে গ্রামের বাড়িতে এই পাখিদের ডাকে ঘুম ভাঙত। এখনো গ্রামের বাড়িতে গেলে ঘুম ভাঙে এদেরই গানে। এদের বাংলাদেশের নাইটিঙ্গেল বলা যেতে পারে। বাগেরহাটের গহিন ঘন ছায়াময় বাগানে এরা আজও আছে বহাল তবিয়তে। জোড়ায় জোড়ায় চলে। উদাসী বাউল স্বভাব যেন এদের—সতর্কতা কম। আপন জগতেই মগ্ন থাকে। গ্রামবাংলার বসতবাড়ির পর্দা-বেড়ায় ঝোলানো শুকনো সুপারি পাতা, নারকেল-সুপারি-খেজুর ও তালের ঝুলে পড়া জ্যান্ত বা মরা পাতা এদের প্রিয় খাদ্য অন্বেষণের স্থান। অতএব, ঝোপঝাড়ে থাকা সোনাব্যাঙেরা লাফ দিয়ে উঠে মুখে পুরতে পারে, বনবিড়াল-বেজিরা দিতে পারে থাবা, দুষ্টু ছেলেপুলেরা চুপিসারে এগিয়ে গিয়ে ধরতে চাইতে পারে পাখিটিকে। এ রকম কোনো একটি কারণেই হয়তো ছবির পাখিটির লেজ খোয়া গেছে। অবশ্য লেজ আবার গজায়।

নিরীহ-শান্ত ও আনমনা-বোকাসোকা ধরনের পাখিটির নাম ‘ভ্যাদাটুনি’। ‘ভ্যাদা’ অর্থে বৃহত্তর খুলনায় বোঝায় মার খেয়েও যে প্রতিবাদ করতে পারে না বা ভয় পায়। বোধবুদ্ধিও কম। এই পাখিটার অন্য নাম ‘মোটা ঠোঁট ছাতারে’। ইংরেজি নাম Abbott’s Babbler। বৈজ্ঞানিক নাম Malacocincla abbotti। দৈর্ঘ্য ১৭ সেন্টিমিটার, ওজন ৩০ গ্রাম।

এদের মাথার তালু-পিঠ-লেজ ও পাখার উপরিভাগও জলপাই-বাদামি। গলা ধূসর-সাদাটে এবং চোখের ওপর দিয়ে একটি অস্পষ্ট সাদাটে-ধূসর রেখা বয়ে গেছে। বুকের কিছু অংশ ও তলপেট সাদাটে। পা ধূসর-গোলাপি। ঠোঁট ধূসর।

আলসে স্বভাবের ভ্যাদাটুনিরা অনেক সময় আশ্চর্য-অবিশ্বাস্য জায়গায় বোকার মতো বাসা করে। আনারসগাছের মাথায়, ঝুলে পড়া শুকনো সুপারি পাতার ভেতরে, বাঁশের কঞ্চির গোড়াসহ অন্যান্য যুৎসই স্থানে বাসা করে, তাতে ডিম পাড়ে দুই থেকে চারটি। ডিম গোলাপি। ডিম ফুটে ছানা হয় ১৩ থেকে ১৭ দিনে। বহুবার আমি এদের বাসা দেখেছি, প্রতিটি বাসার তলদেশেই দেখেছি তিন-চারটি কালো সরু বুনো লতা। নাম জানতে পারিনি। জানি না, ওই লতায় ডিম-ছানাদের জন্য কোনো প্রতিরোধী দ্রব্যগুণ আছে কি না!

এদের বাসায় কখনো কখনো কোকিলের মতো গোপনে ডিম পেড়ে যায় কোকিলের জাতভাই ‘বেগুনি কোকিল’ (Violet Cuckoo)। আকারে এটি ভ্যাদাটুনিরই সমান। সারা বাংলাদেশেরই বন-বাগান ও ঝোপঝাড় ছায়াছন্ন এলাকায় ভ্যাদাটুনিদের দেখা যায়। বাগেরহাটে এরা সুলভ পাখি। উঠান-বাড়ির কিনারের লাউ-শিমের মাচা বা অন্য গাছেও নির্ভয়ে চরে বেড়ায়।

38
Heritage/Culture / ফুলের নাম বিচিত্রা
« on: April 21, 2017, 03:53:21 PM »
চৈত্রের শুরু। জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের প্লাজা ডিঙিয়ে পশ্চিম দিকে রাস্তার পাশে পৌঁছাতেই চোখ আটকে গেল দুটি ঝোপে। ফুলে ফুলে ছেয়ে আছে ঝোপ দুটি। বেগুনি, গোলাপি, সাদা অসংখ্য ফুলে ডালপালা ভরা। সবুজ পাতায় পাতায় খেলা করছে বিচিত্ররঙা ফুলের দল, বাতাসে দুলছে। কাছে যেতেই ফুলগুলো তার সুমিষ্ট সুগন্ধ বিলিয়ে আরও কাছে টেনে নিল।
সত্যিই বিচিত্র এই ফুল! এ জন্যই বোধ হয় ব্রানফেলসিয়া ফুলের বাংলা নাম রাখা হয়েছে বিচিত্রা। ব্রানফেলসিয়া এর গণগত নাম, উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম Brunfelsia pauciflora। ব্রানফেলসিয়ার প্রায় ৫০টি প্রজাতি রয়েছে। বিশেষ করে ফুলের রং বদলানোর স্বভাব এই ফুলটিকে স্বাতন্ত্র্য দিয়েছে। ফুল ফোটার সময় ফুলের রং থাকে লালচে বেগুনি। ধীরে ধীরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে রং ফিকে হতে থাকে, হয়ে যায় নীলচে গোলাপি, শেষে হয় সাদা। এই তিন রঙের ফুলই এক গাছে একসঙ্গে থাকে। ফলে গাছে ফুলগাছের শোভা হয়ে ওঠে মনোমুগ্ধকর। এ জন্য এ ফুলটির ইংরেজি নাম রাখা হয়েছে yesterday-today-and-tomorrow, বাংলায় দাঁড়ায় আজ-কাল-পরশু।
ষোড়শ শতকে এ ফুলের গণগত নাম ব্রানফেলসিয়া রাখা হয়েছে জনৈক জার্মান সাধু ওটো ব্রানফেলসের নাম থেকে। লাতিন শব্দ বনোডোরার সঙ্গেও এর সম্পর্ক আছে, যার অর্থ সুমিষ্ট সুগন্ধ। বিচিত্রা ফুলের গাছ ঝোপালো মাঝারি গুল্ম প্রকৃতির। গাছ দুই থেকে আড়াই মিটার লম্বা হয়। ঝোপ প্রায় দেড় মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। বহু বছর বাঁচে। বছরের সব সময়ই গাছে পাতা থাকে। পাতার ওপর পিঠ গাঢ় সবুজ, নিচের পিঠ হালকা সবুজ। ফুল যখন ফোটে তখন রং থাকে লালচে বেগুনি, শেষে সাদা হয়ে যায়। ফুল যতই শোভাময়ী হোক না কেন, এর ফল কিন্তু বিষাক্ত।
গাছের আগার ডাল কেটে কলম করে এর চারা তৈরি করা যায়। বীজ থেকেও চারা হয়। এই ফুলের গাছ রোদে ভালো হয়। আংশিক ছায়াযুক্ত জায়গাতেও লাগানো যেতে পারে। বাগানে, টবে, ড্রামে ছাদের বাগানে লাগানো যায়। বছরে দুবার অর্থাৎ আগস্ট ও ডিসেম্বর মাসে গাছের গোড়ার মাটিতে জৈবসার দিলে গাছের বৃদ্ধি ও চেহারা ভালো হয়, ফুলও বেশি ফোটে। শুষ্ক মৌসুমে বা গাছের গোড়ার মাটি শুকিয়ে এলে সেচ দেওয়া উচিত। ঢাকার ফার্মগেটে বিএআরসি প্রাঙ্গণেও আছে ব্রানফেলসিয়ার গাছ। ব্রানফেলসিয়ার আদিনিবাস ব্রাজিল।

Source: http://www.prothom-alo.com/bangladesh/article/1152626/ফুলের-নাম-বিচিত্রা

39
Various Resource for Career Development / Career Counseling
« on: April 16, 2017, 04:06:27 PM »
If you're currently or considering working with a career counselor, how can you reap lasting benefits from the experience? There's no precise formula, but these tips will help make your voyage successful.

Think Participant, Not Recipient:
If you take your car in for an oil change, you're in recipient mode. You show up, pay and then get out of the way while the technicians do the work.

When you work with a career counselor, you need to step into participant mode. You can't expect to just show up, pay and then get out of the way while the counselor does all the work. You're required to be an active member of the team; if you don't participate, your counseling experience will almost certainly end in disappointment.

Have Realistic Expectations:
You may think career counselors have all the answers. They don't, but they can help you work toward finding your own answers. They simply can't pull them out of a box and hand them to you.

Be Honest, Especially with Yourself:
It's easy to talk yourself into feeling, thinking or saying something that really isn't genuine. It happens daily in career counseling sessions as clients try to fight off a host of outside pressures (family, friends, teachers, society as a whole) to make their own decisions.

Career counseling sessions give you a safe place and time to express what you're really struggling with -- in your career and in the rest of your life, too. But you have to be completely honest if you're to have any hope of really working through your challenges.

Know What You Want to Accomplish:
When I'm working with clients, I often hear them say things like, "I just want to gain focus," or "I need to get some direction in my life." Such statements make sense, but as a counseling client, you need to work with your counselor to make your goals more specific.

Why? Without goals:

It would be too easy for you and your counselor to simply talk and talk and talk without going anywhere.
 
You won't know when you're done with the counseling process.
So if your counselor doesn't bring it up (although most will), insist that the two of you develop a plan for your work together. What exactly will you be doing, and why? And how will you know when you're finished?

It's OK to Think, But Do as Well

Introspection -- thinking about your interests, skills, abilities, values, personality traits and goals -– is part of any sound career counseling process. But at some point, you need to start taking action, even if you don't have everything figured out.

Paralysis by analysis is real. Don't let it happen to you.

Be Open to Challenge:
Most career counselors will offer you support and an empathetic ear. But the very best will also challenge you.

My graduate school advisor called this technique "confrontation," confrontation done in a caring way. When your career counselor challenges you – for example, by telling you you're saying one thing but doing another -- he isn't trying to be annoying. He's simply trying to help you find your truth.

Be a Smart Consumer:
It's possible that you and the counselor you choose won't click. That happens sometimes, and it's nobody's fault.

Your career counselor can't help you "to boldly go where no man has gone before," as Captain Kirk and the "Star Trek" crew did. But he can help you explore your options and make informed career decisions if you're willing to be an equal and sincere participant.

40
Heritage/Culture / ভুবন চিল
« on: March 20, 2017, 07:26:36 PM »
গ্রামবাংলার চেয়ে শহরে দেখা যায় বেশি। বিশেষ করে রাজধানী ঢাকা শহরে দেখা মেলে হাজারে হাজার। ঊর্ধ্বাকাশে ওদের নানান রকম মনোমুগ্ধকর ডিসপ্লে যেন জঙ্গিবিমানের ডগফাইট। একজন প্রেমিকাকে ঘিরে দুই বা ততোধিক প্রেমিক পুরুষ যখন পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় মাতে বা ঝাঁক বেঁধে অনেক উঁচুতে উঠে দলবদ্ধভাবে ছন্দময় বৃত্তাকার ঘূর্ণনদৃশ্য দেখলে মুগ্ধ হতে হয়। মূল খাদ্যস্থল এদের ময়লার ভাগাড় ও সিটি করপোরেশনের ডাম্পিং এলাকা। ঢাকার পূর্বাঞ্চলের কাজলার বিশাল ডাম্পিং এলাকায় কয়েক হাজার পাখি জড়ো হয় রোজ। খাদ্যের তালিকায় আরও আছে মাছ, ব্যাঙ, অঞ্জন, কাঁকড়া, ইঁদুর, তেলাপোকা, ছোট পাখি ইত্যাদি। সুযোগ পেলে হাঁস-মুরগির ছানাও খায়। খাড়া ৯০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে যেমন শূন্য থেকে মাটির দিকে নামতে পারে তিরবেগে, উঠতেও পারে তেমনি। দুর্দান্ত ডাইভার, দক্ষ শিকারি ও প্রখর দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন এসব শিকারি পাখি ঢাকা শহরে রোজই ঝাঁকে ঝাঁকে দেখা যায়।

কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায় উঁচু উঁচু অনেকগুলো লাইটিং টাওয়ার আছে, ওর ভেতরের যেকোনো দু-তিনটি টাওয়ারের মাথায় প্রতি মৌসুমেই বাসা করে এই পাখিরা। কিন্তু ডিম পেড়ে যেমন স্বস্তি নেই, তেমনি ছানারা বড় না হওয়া পর্যন্ত বাবা ও মা পাখির যেকোনোটিকে কড়া পাহারায় থাকতে হয়। কেননা, পাতিকাকেরা সেই বাসা বাঁধা শুরু করার আগ থেকেই সুপরিকল্পিতভাবে ঝাঁক বেঁধে পেছনে লাগে এদের। উত্ত্যক্ত করে, বাসার উপকরণ সুযোগ পেলেই ফেলে দেয়। এমনকি ভুবন চিলেরা যাতে বাসা বাঁধতে না পারে, সে জন্য নিজেরাই একটা নকল বাসা বানায়। ডিমে তা দিচ্ছে? ছানা ফুটেছে? পাতিকাকেরা কত রকমভাবে যে জ্বালিয়ে মারে ওদের! ত্যক্তবিরক্ত হয়ে এই পাখিরা যখন ধাওয়া করে কাকেদের, তখন কাকেরা ছিটকে যায় ভয়ে।

পাখিটির নাম ভুবন চিল। মেঘচিল নামেও পরিচিত। বাসা করে টাওয়ার, উঁচু গাছের মগডালে ও অন্যান্য যুৎসই স্থানে। খোদ মতিঝিলের আকাশে ভুবন চিলদের ঘুড়ি ওড়াতে দেখা যায়—কাঁচা ডালপালা-পাতা ঠোঁটে-পায়ে ধরে উড়ে চলে যখন বাসা বাঁধতে।
ভুবন চিলের ইংরেজি নাম Black Kite। বৈজ্ঞানিক নাম Milvus migrans। দৈর্ঘ্য ৬১ সেন্টিমিটার, ওজন ৬৩০-৯৪০ গ্রাম। একনজরে দেখতে কালচে-বাদামি পাখি, খয়েরির আভা থাকে। চোখে যেন কাজল লেপ্টানো। কালচে ঠোঁট। হলুদ পা। লেজের আকার ইলিশ মাছের লেজের মতো। বাসা করে হেমন্ত থেকে শীতের মধ্যে। ডিম পাড়ে ২-৪টি। ডিম ফুটে ছানা হয় ২৯ থেকে ৩৩ দিনে।

41
ইন্টারনেটে কেউ গান শোনেন, কেউ ফেসবুক ব্যবহার করেন, অনেকে সারেন দরকারি কাজ। কেউবা আবার গেম খেলতে ঢুঁ মারেন বিভিন্ন ওয়েবসাইটে। প্রধান ব্রাউজারগুলোর সুবিধার তালিকা প্রায় একই। তবু ব্রাউজারগুলো আলাদা। একেকজনের কাজের ধরন বুঝেই ব্রাউজার নির্বাচন করা উচিত। আর সব কাজ এক ব্রাউজার দিয়ে করতে চাইলে জেনে নিতে হবে কোন ব্রাউজার আপনার জন্য উপযুক্ত।
মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ব্যবহারকারীদের জন্য ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার বা মাইক্রোসফটের নতুন ব্রাউজার ‘এজ’ দেওয়াই থাকে। আর অ্যাপলের অপারেটিং সিস্টেমের জন্য থাকে সাফারি। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ আরও দুটি ব্রাউজার ওপেন সোর্স কোড-ভিত্তিক গুগল ক্রোম ও মজিলা ফায়ারফক্স। এর বাইরে অন্য বেশ কিছু ব্রাউজার গুগল ক্রোমের সোর্স কোড ব্যবহার করে তৈরি। এসবের পরেই আছে অপেরা ও ভিভালদি ব্রাউজারের নাম। গুরুত্বপূর্ণ সব ব্রাউজারই ভিন্ন ভিন্ন রেন্ডারিং ইঞ্জিন ব্যবহার করে থাকে। গুগল ব্যবহার করে ব্লিংক ইঞ্জিন। গেকো ইঞ্জিন ব্যবহার করে ফায়ারফক্স। ট্রাইডেন্ট ইঞ্জিন ব্যবহার করে মাইক্রোসফট আর সাফারি ব্যবহার করে ওয়েবকিট ইঞ্জিন।

গুগল ক্রোম
নিরাপত্তার বিবেচনায় গুগল ক্রোম এগিয়ে থাকবে। বর্তমানে এটি সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্রাউজার। ক্রোমে অন্য ব্রাউজারগুলোর তুলনায় ভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করায় একটা ট্যাবে কোনো ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় কোনো কারণে ক্র্যাশ করলে সেটি পুরো ব্রাউজারে প্রভাব ফেলে না। তবে অন্যগুলোর তুলনায় ক্রোম কম্পিউটারের বেশি মেমোরি নিয়ে থাকে। একই সঙ্গে একাধিক ট্যাব চালু রাখলে ল্যাপটপ বা স্মার্টফোনে ব্যাটারি বেশি খরচ হয়। এই সমস্যা সমাধানে অবশ্য কাজ চলছে।

মজিলা ফায়ারফক্স
ফায়ারফক্স ক্রোমের মতোই দ্রুততার সঙ্গে ওয়েবসাইট দেখাতে পারে। এটি ক্রোমের তুলনায় মেমোরি কম খরচ করে কিন্তু কোনো ট্যাবের সাইট যদি ক্র্যাশ করে, তবে পুরো ব্রাউজারকে ক্র্যাশ করে ফেলে। কখনো কখনো একাধিক ট্যাব চালু রাখলে ফায়ারফক্স ধীরগতির হয়ে যায়। ফলে এটিকে রিস্টার্ট করার প্রয়োজন পড়ে।

মাইক্রোসফট এজ
এজ দ্রুত এবং এতে নিরাপত্তাও বেশ ভালো। বলা হয় এটি ক্রোমের মতোই ব্যাটারি বেশি খরচ করে। কিন্তু এটি এখনো ডেভেলপমেন্ট অবস্থায় আছে। উইন্ডোজ দশের করটানা সুবিধা এতে যুক্ত থাকায় এটি ব্যবহার সুবিধাজনক। ফায়ারফক্সের স্ট্যান্ডার্ড বজায় রাখলেও এটি অন্তত ইন্টারনেট এক্সপ্লোরারের চেয়ে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে আছে। তবে এতে ব্রাউজার এক্সটেনশন কম থাকায় অনেকটা পিছিয়েও আছে।

অন্যান্য
গোপনীয়তা ও অন্যান্য কারণে ক্রোম-ভিত্তিক ভিভালদি ব্যবহার করা যায়। নিজের পছন্দমতো এটি সাজিয়ে নেওয়া যায়। অপেরা ব্রাউজারের আগের ডেভেলপাররা ভিভালদি তৈরি করেছে। ভিভালদি ও অপেরা ব্রাউজারে ক্রোমের অনেক এক্সটেনশনই সমর্থন করে। জনপ্রিয় এই ব্রাউজারের বাইরে আরও কিছু ব্রাউজার ব্যবহার করে দেখতে পারেন। রাশিয়ান সার্চ ইঞ্জিন ইয়ানডেক্সের ডেভেলপারদের বানানো ইয়ানডেক্স ব্রাউজার অনেকটা গুগল ক্রোমের মতোই। ক্রোমিয়াম-ভিত্তিক এই ব্রাউজারে চাইলেই আপনি পছন্দমতো আপনার দরকারি সব কাজই করতে পারবেন। উইন্ডোজ, ম্যাক ও স্মার্টফোনে ব্যবহার করা যায় এটি। এ ছাড়া কোমোডো আইসড্রাগন ব্রাউজারের নিরাপত্তাব্যবস্থাও বেশ ভালো। অনিরাপদ ওয়েবসাইট বা নিরাপদ লগইনের জন্য এটি বেশ ভালো। ফায়ারফক্সের প্লাগইনস এখানে ব্যবহার করতে পারবেন। আবার ম্যাক্সথন ব্রাউজার একসঙ্গে একাধিক সাইটকে পাশাপাশি দেখিয়ে ব্রাউজিংয়ের সুবিধা দেয়। এর ইউএক্স অনেক নজরকাড়া।

যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখা দরকার
নিরাপত্তা, গোপনীয়তা, গতি—সব মিলিয়ে নির্ধারণ করতে হবে, কোন ব্রাউজার আপনার জন্য। ওয়েব ব্রাউজার হতে হবে দ্রুততর এবং সব অপারেটিং সিস্টেম সমর্থিত। এমন হতে হবে, যাতে নিরাপত্তাবলয় থাকবে জোরদার। হতে পারে আপনার অজান্তেই এমন এক লিংকে ক্লিক করেছেন, যার ফলে কম্পিউটারে ভাইরাস এসে গেল। তাই নিরাপত্তাব্যবস্থাকে প্রাধান্য দিতে হবে আগে।

42
Heritage/Culture / বিরল ধুমকল
« on: March 13, 2017, 09:48:14 AM »
এই বিরল পাখিটি হলো আমাদের আবাসিক বুনো কবুতর ধুমকল। ইংরেজি নাম Green Imperial Pigeon বা Northern Green Imperial Pigeon। Columbidae গোত্রের পাখিটির বৈজ্ঞানিক নাম Ducula aenea।

ধুমকল বড় আকারের বুনো কবুতর। ঠোঁটের আগা থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ৪৩-৪৭ সেমি ও ওজন ৫০০ গ্রাম। পিঠ, ডানা ও লেজের উপরিভাগ ধাতব সবুজ। মাথা, ঘাড় ও দেহের নিচটা মেটে-ধূসর। লেজের তলা খয়েরি-লাল। নীলচে ঠোঁট ও গাঢ় লাল চোখ। পা ও পায়ের পাতা গোলাপি লাল থেকে প্রবাল লাল। নখ কালচে-ধূসর। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম।

ধুমকল সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়-টিলাময় চিরসবুজ বনের পাখি। সচরাচর একাকী, জোড়ায় বা চার-পাঁচটির ছোট দলে দেখা যায়। তবে অনেক সময় ৫০-৬০টির বড় দলেও বিচরণ করতে পারে। গাছের পাতার ছাউনির নিচে এমনভাবে বসে থাকে, যেন সহজে চোখে পড়ে না। বিভিন্ন ধরনের বট, পাকুড় ও এ-জাতীয় ছোট ছোট পাকা ফল খেতে পছন্দ করে। এরা গাছে গাছেই বিচরণ করে। তবে পানি পান করতে ও লবণযুক্ত মাটি খেতে মাঝেমধ্যে মাটিতে নামে। অত্যন্ত দ্রুত ও সোজাসুজি উড়তে পারে।

মার্চ থেকে জুন প্রজননকাল। স্ত্রী সচরাচর একটি ও ক্বচিৎ দুটি ধবধবে সাদা ডিম পাড়ে। ডিম ফোটে ১৫-১৯ দিনে। প্রায় ছয়-সাত বছর বাঁচে। দিনে দিনে আবাসস্থল সংকুচিত হওয়ার কারণে এদের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।

43
পান্ডা প্রাণীটির রোমশ শরীরজুড়ে সাদা-কালো নকশা। কিন্তু এদের লোমের আস্তরণ তো রঙিনও হতে পারত! কেন হয়নি—সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন একদল মার্কিন গবেষক। ফলাফল এ উদ্ভাবন: পান্ডাদের গায়ের সাদা-কালো নকশার দুটি উদ্দেশ্য থাকতে পারে—ছদ্মবেশ এবং যোগাযোগ।
যুক্তরাষ্ট্রের ডেভিসে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার জীববিদ্যার অধ্যাপক টিম ক্যারো বলেন, জায়ান্ট পান্ডার শরীরের রঙের ব্যাপারটি জীববিদ্যার একটি বহু পুরোনো রহস্য। সম্ভবত এ রকম দেখতে স্তন্যপায়ী প্রাণী দ্বিতীয়টি নেই।
ওই গবেষকেরা পান্ডার শরীরের বিভিন্ন অংশের লোমের সঙ্গে অন্যান্য প্রজাতির প্রাণীর লোমের তুলনা করে দেখেন। পরিবেশগত ও আচরণগত ব্যবধানের গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলো চিহ্নিত করাই ছিল তাঁদের লক্ষ্য। তাঁরা দেখেছেন, পান্ডার মুখমণ্ডল, ঘাড়, পেট ও পিঠের সাদা অংশগুলো একে তুষারের মধ্যে গা ঢাকা দিতে সাহায্য করে। আর কালো রঙের হাত-পায়ের সাহায্যে তৃণভোজী প্রাণীটি ছায়াচ্ছন্ন স্থানেও লুকিয়ে থাকতে পারে। এ গবেষণা প্রতিবেদন বিহেভিয়ারাল ইকোলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষক দলটির অনুমান, চামড়ার রঙে আলো-আঁধারির এই ভারসাম্যের কারণে পান্ডারা তুষার ও ছায়াঘেরা স্থানে লুকিয়ে থাকতে পারে। আর তাদের গায়ের রঙে এ বৈচিত্র্যের অভাবের কারণ হতে পারে খাদ্যাভ্যাসের বৈচিত্র্যহীনতা। কারণ, পান্ডার মূল খাদ্য বাঁশে পুষ্টিকর উপাদান ও ক্যালরি খুব বেশি নেই। সারা বছরই এদের খাওয়ার কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। এ কারণে সব সময়ই নিরাপত্তার জন্য নিজেকে আড়াল করার প্রয়োজন পড়ে। অন্য অনেক বন্য প্রাণীর ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দেখা যায়। যেমন: ভালুকেরা শরীরে শক্তি জমিয়ে রাখতে পারে। পুরো শীতকালটা অবলীলায় ঘুমিয়ে পার করে দিতে পারে।
পান্ডার সাদা-কালো রং শুধুই যে নিজেকে লুকোনোর কাজে লাগে, তা নয়। বিজ্ঞানীদের অনুমান, ভালুকের কালো রঙের কান এবং চোখের ওপরের আবরণ প্রাণীটির হিংস্রতা ও আগ্রাসী আচরণের সংকেত দেয়। তাই দেখে সম্ভাব্য শিকারি ও প্রতিযোগী প্রাণীরা উভয়েই সতর্ক হওয়ার সুযোগ পায়। পান্ডাদের ক্ষেত্রেও এ রকম কোনো ব্যাপার থাকতে পারে।
লংবিচে অবস্থিত ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক টেড স্ট্যানকোউইচ বলেন, তাঁরা পান্ডার শরীরের অন্তত ১০টি অংশের অনেক ছবি নিয়ে কাজ করেছেন। সেগুলোতে ২০টির বেশি রং বসিয়ে বিশ্লেষণ করে দেখেছেন। এটা সাংঘাতিক পরিশ্রমের কাজ ছিল। তাঁর মন্তব্য: পান্ডা কেন সাদা-কালো—এমন আপাত-সহজ প্রশ্নের জবাব খুঁজতেও শত শত ঘণ্টার শ্রম দরকার হতে পারে।

44
মোংলা থেকে যাত্রা করে পশুর নদ পেরিয়ে কুঙ্গা নদী। কুঙ্গা নদী তিনকোনা দ্বীপের কাছে যেখানে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে কোকিলমণির দিকে গেছে, সেই পয়েন্ট দিয়ে কিছুটা ভেতরে ঢুকতেই মরা পশুর নদ, খেজুরবাড়ি খাল, কাগাবগা খাল ও জাফা গাঙের মোহনা। পরপর দুই রাত চমৎকার এই মোহনায় আমাদের লঞ্চ নোঙর করল। এমন সুন্দর জায়গা সুন্দরবন ছাড়া আর কোথাও আছে কি না, জানা নেই। দ্বিতীয় দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে মোহনা থেকে বের হয়ে মরা পশুর নদ দিয়ে কিছুক্ষণ এগিয়ে একটি খালের সামনে লঞ্চ নোঙর করল। লঞ্চ থেকে আমরা ছয়জন ডিিঙতে উঠে বাঁ দিকের একটি সরু খালে ঢুকলাম। সুন্দর এই খালের নাম ক্ষেতখেরা।
খালে ঢোকার মুখেই নানা ধরনের মাছরাঙা দেখলাম। এ দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম থোরমোচা মাছরাঙার দেখাও মিলল এখানে। এরা ইংরেজিতে Brown-winged Kingfisher নামে পরিচিত। Alcedinidae পরিবারের মাছরাঙাটির বৈজ্ঞানিক নাম pelargopsis amauroptera.
ঠোঁটের আগা থেকে লেজের ডগা পর্যন্ত দৈর্ঘ্যে থোরমোচা ৩৬ সেন্টিমিটার, ঠোঁট ৭.৬ সেমি ও ওজন ১৬২ গ্রাম (পুরুষ)। স্ত্রী-পুরুষ দেখতে একই রকম। প্রাপ্তবয়স্ক পাখির মাথা, ঘাড়, গলা, বুক, পেট ও লেজের তলা কমলা-বাদামি। পিঠ ও কোমর নীল। ডানা ও কাঁধ-ঢাকনি কালচে-বাদামি, তবে ডানার কিনারার পালকগুলো গাঢ় বাদামি। চোখ বাদামি ও চোখের পাতা ইটের মতো লাল। পা ও পায়ের পাতা লাল। অপ্রাপ্তবয়স্ক পাখির দেহে কমলার আধিক্য বেশি। ডানার পালক-ঢাকনি ও কাঁধ-ঢাকনির কিনারা ফিকে। দেহতল কালো, ঘাড়ে কালো ডোরা রয়েছে।
থোরমোচা সচরাচর দৃশ্যমান আবাসিক পাখি হলেও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উপকূলীয় লোনাজলের বন ও সুন্দরবন ছাড়া দেশের আর কোথাও দেখা যায় না। কিন্তু দিনে দিনে সুন্দরবন বিপন্ন হওয়ার কারণে এদের আবাস এলাকা হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়ছে। আর সে কারণেই সম্প্রতি এদের IUCN বাংলাদেশ সংকটাপন্ন (Vunerable) বলে ঘোষণা করেছে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতের সুন্দরবন এবং মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার উপকূলীয় অঞ্চল পর্যন্ত এদের দেখা পাওয়া যায়। তবে বর্তমানে বিশ্বে এরা প্রায়-বিপদগ্রস্ত (Near Threatened) বলে বিবেচিত।
পানির সামান্য ওপর দিয়ে দ্রুত উড়ে চলে। সচরাচর নদী-খালপাড়ের গাছের নিচু ডালে বসে পানিতে মাছ খোঁজে ও মাছ দেখলে দ্রুত পানিতে ঝাঁপ দিয়ে শিকার করে। মূল খাদ্য ছোট মাছ হলেও কাঁকড়া ও জলজ পোকমাকড় খেতে পারে।
এরা মার্চ-এপ্রিলে প্রজনন করে। এ সময় নদী-খালের খাড়া পাড়ে ৩০-৪০ সেন্টিমিটার লম্বা ও ১০ সেন্টিমিটার চওড়া সুড়ঙ্গ তৈরি করে বাসা বানায় এবং তাতে চারটি গোলাকার সাদা ডিম পাড়ে। এরা ৫-৬ বছর বাঁচে।

45
Please see the attached image.

Pages: 1 2 [3] 4 5 ... 22