ইন্টারনেটের প্রসার আর তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি—দুইয়ে মিলে ডিজিটাল তথ্যের সাগরে ভাসছে বিশ্ব। বর্তমানে সারা বিশ্বে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা সারা বিশ্বের জনসংখ্যার প্রায় সমান। এর মধ্যে আবার শুধু স্মার্টফোনের সংখ্যাই পেরিয়ে গেছে একশ কোটি। স্মার্টফোনের ব্যবহার যেভাবে দিনদিন বাড়ছে, তাতে করে সামনের দিনগুলোতে কেবল উন্নত দেশগুলোতেই নয়, সারা বিশ্বেই মোবাইল ফোনে রাজত্ব করবে স্মার্টফোন। এর বাইরে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, নোটবুক আর ট্যাবলেট পিসি তো রয়েছেই। সব মিলিয়ে ডিজিটাল ডিভাইসের বিক্রি দিন দিন বেড়েই চলেছে আর তা কমার সম্ভাবনা দেখছেন না প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা। এতে করে ডিজিটাল তথ্যের ব্যবহারও বাড়ছে আনুপাতিক হারে। এই হারও আবার জ্যামিতিক। ফলে প্রতিবছরেই ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়ে যাচ্ছে তথ্যের পরিমাণ। ভবিষ্যতে এটি গোটা বিশ্বের কম্পিউটিংয়ের জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে বলেই মনে করছেন ওরাকলের প্রেসিডেন্ট মার্ক হার্ড। মার্ক এক সাক্ষাত্কারে বলেন, ‘প্রায় প্রতিবছরেই ৩০ থেকে ৪০ ভাগ বাড়ছে তথ্য। এটা আমাদের গ্রাহকদের জন্য বড় ধরনের সমস্যা তৈরি করতেই যাচ্ছে। আর এতে করে চরম অর্থনৈতিক চাপও তৈরি হচ্ছে।’ বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে তিনি বলেন, বর্তমানে যে পরিমাণ ডিভাইস ইন্টারনেটে যুক্ত রয়েছে, আগামী ২০১৬ সালের মধ্যে তার পরিমাণ হতে পারে তিনগুণ। এতে মোবাইল ডাটা ট্রাফিকে প্রায় ১৮গুণ তথ্য যুক্ত হবে। তিনি জানান, ২০২০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫০ বিলিয়ন ডিভাইস যুক্ত থাকবে ইন্টারনেটে। এতে করে সারা বিশ্বেই তথ্য ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে। এতে করে নানান ধরনের সমস্যাও তৈরি হয়ে যেতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে ওরাকল তাদের কর্মীবাহিনীতে ৩ হাজার কর্মী যুক্ত করেছে। মার্ক জানান, গ্রাহকদের অব্যাহত বাড়তি চাহিদা মেটাতেই এই কর্মীবাহিনী যুক্ত করতে হয়েছে তাদের। ডিজিটাল তথ্যের এই বিপ্লবের পেছনে ক্লাউড কম্পিউটিংকেই প্রধান কারণ মনে করছেন তিনি। ওরাকলের প্রধান মনে করেন, এখন থেকেই তথ্য ব্যবস্থাপনার দিকে যথাযথ মনোযোগ না দিলে তা ভবিষ্যতে সুফল বয়ে আনার বদলে সমস্যাই তৈরি করবে। মার্কের সাথে অবশ্য অ্যাপল’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ওজনিয়াকও সহমত পোষণ করেন। তিনিও ক্লাউড কম্পিউটিংকে সামনের দিনের জন্য সমস্যার কারণ হিসেবেই অভিহিত করেন কিছুদিন আগে দেওয়া এক বক্তব্যে।