Health Tips > Women
কর্মজীবী নারীর চাই সুস্বাস্থ্য
(1/1)
Sultan Mahmud Sujon:
বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর অর্ধেকই নারী। এই বিশাল অংশ সমাজের কোনো না স্তরে কর্মরত আছে বিভিন্ন পেশায়। এর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ নারী গৃহকর্মে নিয়োজিত। অবশ্য গৃহকর্মকে যদিও কর্মের তালিকায় স্থান দেওয়া হয় না, তবু যদি এর মূল্যায়ন করি, এক সূত্র অনুযায়ী এর পরিমাণ দাঁড়ায় বছরে ৯১ মিলিয়ন ডলার। দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে পোশাকশিল্পের অনবদ্য ভূমিকা অনস্বীকার্য। এখানে কাজ করে প্রায় ৯০ শতাংশ নারী। নারীকে বেঁচে থাকার জন্য পুরুষের তুলনায় বহুলাংশে বেশি প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়।
নারী-পোশাকশ্রমিকের অসুস্থতার হার পোশাক কারখানায় কাজে যোগ দেওয়ার আগের তুলনায় অনেক বেশি, অথচ চিকিৎসাসুবিধা সীমিত।
তাদের জন্য আজকের এ লেখা। সুস্থ থাকার কিছু উপায় সম্পর্কে সচেতন করা।
কর্মজীবী নারীর সুস্বাস্থ্য বলতে যেকোনো পেশায় কর্মরত সব শ্রমিকের দৈহিক, মানসিক ও সামাজিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলো বোঝায়। সাধারণত রোগ সৃষ্টির জন্য কোনো দূষিত বস্তু বা জীবাণুকে কোনো না কোনোভাবে দেহের সংস্পর্শে আসতে হবে শ্বাস-প্রশ্বাস অথবা অন্য কোনো মাধ্যমে।
মূলত যেসব কারণে কর্মজীবী স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি হয়, এর অন্যতম কারণ হচ্ছে বিষাক্ত পদার্থ, গ্যাস ও বাষ্প, ধুলা ও ধোঁয়া, অতিরিক্ত চাপ, অপর্যাপ্ত আলো-বাতাস, উচ্চ তাপমাত্রা, শব্দ ও কম্পন, ক্লান্তি-অবসাদ, কাজে বৈচিত্র্যহীনতা, চাকরির অনিশ্চয়তা, ঘনবসতির কারণে নানা ধরনের চুলকানি, শৌচাগার-স্বল্পতার জন্য মূত্রনালিতে প্রদাহ, পেটে ব্যথা, প্রজননতন্ত্রের সংক্রমণ, রক্তস্বল্পতা, জন্ডিস ও ডায়রিয়াজনিত রোগ। ডায়রিয়াজনিত সমস্যা হলে-
শরীরে পানিশূন্যতার সৃষ্টি হয়। ঘন ঘন ডায়রিয়া হলে অপুষ্টির শিকার হতে হয়। পানিশূন্যতা হলো শরীর থেকে প্রয়োজনীয় পানি ও খনিজ লবণ বের হয়ে গেলে যে অবস্থার সৃষ্টি হয় তা হচ্ছে-* পিপাসা হবে। * জিহ্বা শুকিয়ে যাবে। * প্রস্রাবের পরিমাণ কমতে থাকবে। * চোখ বসে যাবে। * ঝিমুনি বা ঘুম ঘুম ভাব হবে। * রোগী প্রলাপ বকতে পারে। * প্রস্রাব একেবারেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
কী করতে হবে
প্রথমত, এ রকম পরিস্থিতিতে ঘরে বানানো বা কেনা ওরস্যালাইন খাবেন যখন পিপাসা হবে তখনই, অথবা প্রতিবার পায়খানার পরই এক থেকে দুই গ্লাস। হাতে তৈরি স্যালাইন বানানোর পর সর্বোচ্চ আট ঘণ্টা পর্যন্ত খাওয়া যায়। পায়খানা বন্ধ হওয়ার দুদিন পর পর্যন্ত প্রতিবার পায়খানার পর এক লিটার করে স্যালাইন খাওয়াতে হবে।
কীভাবে স্যালাইন বানাতে হবে
এক লিটার বিশুদ্ধ ঠান্ডা পানিতে এক মুঠ গুড় বা চিনি, তিন আঙ্গুলের এক চিমটি লবণ (আঙুলের প্রথম কড় পর্যন্ত) এ তিনটি উপাদান একসঙ্গে মেশালেই হয়ে গেল ওরস্যালাইন বা চিনি ও লবণ-জলের শরবত।
চালের গুঁড়া দিয়েও লবণ-জলের শরবত করা যায়। এক মুঠ চালের গুঁড়া এক লিটার ঠান্ডা পানিতে গুলে সিদ্ধ করতে হবে। পানির রং ভাতের মাড়ের মতো হলে এক চিমটি লবণ মিশিয়ে খেতে হবে।
কখন হাসপাতালে নেওয়া জরুরি
* পেটে ব্যথা হলে। * পাতলা পায়খানা তিন দিনের বেশি হলে। * লবণ-জলের শরবত খেতে না পারলে। * ঘণ্টায় চারবারের বেশি বমি হলে। * রোগী প্রলাপ বকলে অথবা জ্ঞান হারালে।
ডা· মাসুদা বেগম
হেমাটোলজি বিভাগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেলবিশ্ববিদ্যালয়
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, ফেব্রুয়ারী ১৮, ২০০৯
Navigation
[0] Message Index
Go to full version