সৌন্দর্য সচেতনতায় ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা বেশি এগিয়ে। এই আধুনিক যুগে ছেলেরাও কিন্তু পিছিয়ে নেই। নগরায়ন, করপোরেট পেশা, ডেস্ক জব, নানাবিধ কারণে নিজেদের শরীর স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল থাকে না আমাদের। অন্যদিকে শরীর, স্বাস্থ্য ও মন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। তাই শরীর স্বাস্থ্য ঠিক না থাকলে সুন্দর মনও আর সুন্দর থাকে না।
সৃষ্টির শুরু থেকে অদ্যাবধি সুন্দরের জয় সব জায়গায়। যারা একটু স্বাস্থ্য সচেতন ও ফিট থাকতে চান তাদের কাছে মেদ এক মারাত্বক সমস্যা। শুধু তাই নয়, ফ্যাশন সচেতনদের কাছেও মেদ এক বিড়ম্বনা।
ধরুন আপনি র্শাট ইন করছেন বা শাড়ি কাপড় পরছেন, কিন্তু সব কিছু ছাপিয়ে বেরিয়ে আসছে আপনার মেদযুক্ত পেট। কিংবা একটু ফিটিং ড্রেস পরেছেন তাতেও বাঁধ সাধবে আপনার মেদ। সমালোচকরা পেটে চিমটি কেটে ঠাট্টা করবে। আর অন্যদিকে মেদযুক্ত ভূড়িও্য়ালদের মারাত্বক স্বাস্থ্য ঝুকি তো রয়েছেই।
অতিরিক্ত মেদ হৃৎপিণ্ড, শ্বাসযন্ত্র, গলব্লাডার এমনকি মস্তিস্ককেও ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকে। এটা হার্ট অ্যাটাক, ডিমেনশিয়া (মস্তিস্কের রোগ), ডায়াবেটিস, ক্যান্সার প্রভৃতি রোগের অন্যতম কারণ। তাই সুস্থ ও সবল থাকতে হলে মেদ দূর করা জরুরি। খুব সহজেই এই বিড়ম্বনাকে তাড়ানো যায়। এর জন্য দরকার ইচ্ছা ও অধ্যবসায়।
স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য নিম্নলিখিত হেলথ টিপস মেনে চলতে পারেন
১. নিয়মিত ও পরিমিত খাদ্যাভাস গড়ে তুলুন। খাদ্য তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার বৃদ্ধি করুন, আমিষ ও চর্বি জাতীয় খাবার কমিয়ে আনুন, ভাজা-পোড়া ও ফাস্টফুড জাতীয় খাবার সম্পুর্ণ বন্ধ করুন। খাবারের শুরুতে ১-২ গ্লাস পানি পান করুন। খাবার শেষে অন্ততঃ ১/২ ঘন্টা পর পানি পান করবেন। লালমাংস (চার পা বিশিষ্ট পশুর মাংস), দোকানের কেনা মিষ্টি, ঘি, ডালডা, ডাল ও ডাল জাতীয় খাবার কম খাবেন। ফলমূল ও শাক-সবজি বেশি করে খাদ্য তালিকায় রাখুন। একবার বেশি করে খাওয়ার চেয়ে অল্প অল্প করে বার বার খেতে পারেন। রাতে আহার তাড়াতাড়ি করা উচিত ও আহারের ১-২ ঘন্টা পর শোবার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
২. নিয়মিত ও পরিমিত নিদ্রা সুস্বাস্থ্য ও ফিগারের জন্য খুবই প্রয়োজন। দিনে শোবার অভ্যাস ত্যাগ করে রাত্রে তাড়াতাড়ি শোবার অভ্যাস গড়ে তুলুন। প্রত্যহ ৬-৭ ঘন্টা ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৩. যাদের মেদ জমেছে তারা নিয়মিত ও সঠিক ব্যায়াম করতে পারেন। তার জন্য আপনি একজন ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন। মনে রাখবেন ভুল ব্যায়াম ও অনিয়ন্ত্রিত জিম এক্সারসাইজ আপনার সমস্যা আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে।
৪. দৈনিক নিয়মিত সমতল জায়গায় হাঁটুন। মনে রাখবেন হাঁটা সর্বোৎকৃষ্ট ব্যায়াম। নিয়মিত অন্ততঃ ১-২ ঘন্টা হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৫. প্রাতঃকালে ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস গড়ে তুলুন ও সকালে স্কুল, কলেজ বা অফিসে যাওয়ার আগে গোসল সেরে নিন।
৬. লিফটের পরিবর্তে সিড়ি ব্যবহার করুন।
৭. সাইক্লিং, সাঁতারের সুযোগ থাকলে নিয়মিত করুন।
৮. দৈনন্দিন কাজকর্ম ও চলাফেরার সময় সোজা ও সঠিকভাবে করুন। মনে রাখবেন চলাফেরা শারীরিক কাজের ক্ষেত্রে আপনার শরীরের অবস্থানগত ভুলের কারণে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। আপনার বসা, শোয়া, কম্পিউটিং, দৈনন্দিন কাজ অথবা প্রফেশনাল কাজে কোন শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে আপনি একজন ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞের চিকিৎসা ও পরামর্শ গ্রহণ করতে পারেন।
৯. দেহ-মন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। যে কোন প্রতিকুল মানসিক চাপে নিজেকে দূরে না সরিয়ে ধৈর্য সহকারে মোকাবেলা করুন।
১০. সর্বাপরি সুস্থ ও সুন্দর চিন্তা করুন ও প্রাণ খুলে হাসুন, এতে শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।