Famous > Place

পরিকুন্ড জলপ্রপাত

(1/1)

snlatif:
পরিকুন্ড জলপ্রপাত নামটি অনেকের কাছেই অপরিচিত বলে মনে হতে পারে। আরেকটু পরিষ্কার করে বলছি মৌলভীবাজারের মাধবকুন্ড জলপ্রপাতের নাম আমরা সবাই কম-বেশি শুনেছি এবং অনেকে এই জায়গায় গিয়েছিও। তবে জানা না থাকায় আমরা অনেকেই মাধবকুন্ড জলপ্রপাতের পাশেই বনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা বিস্ময়কর একটি ঝর্নার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য থেকে বঞ্চিত হয়েছি। মাধবকুন্ড জলপ্রপাত থেকে খুব কাছে মাত্র ১০ থেকে ১২ মিনিটের হাটা দূরত্বে পরিকুন্ড জলপ্রপাতটি অবস্থিত। 

 

১৫০ ফুট উচু খাড়া পাহাড় হতে এই ঝর্নার পানি শো শো শব্দ করে নিচের দিকে পতিত হয়েছে। জল ও পাথরের সংঘর্ষে জলকনাগুলো উড়ে গিয়ে মৃদু কুয়াশার সৃষ্টি করে। অসংখ্য প্রজাতির গাছপালা দ্বারা ঝর্নাটির চারপাশ আচ্ছাদিত হয়ে আছে। এ যেনো সবুজের মহাসমারোহ। সেই সাথে পাখির কিচির-মিচির বনের নিস্তব্ধতাকে জাগিয়ে রাখে সর্বক্ষণ। ঝর্নার অপরূপ দৃশ্য অবলোকন করার জন্য প্রাকৃতিক আসন হিসেবে রয়েছে অসংখ্য পাথর। পাথরের উপর বসে ঝর্নার দিকে চোখ রাখলে মনে ঘুমের ঘোরে স্বপ্ন দেখছেন। অনেকে নিজেকে সামলে রাখতে না পেরে নেমে পড়ের ঝর্নার পানিতে নিজের দেহ-মন-প্রাণ জুড়িয়ে নিতে।

 

সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার মাধবকুন্ড জলপ্রপাত থেকে মাত্র ১০ থেকে ১২ মিনিটের হাটা দূরত্বে এই বুনো ঝর্নাটি অবস্থিত। গভীর বন ও তেমন প্রচারণা না থাকায় এই স্থানটিতে স্থানীয় জনগণ ও পর্যটকদের খুব বেশি আনাগোনা থাকে না। মাধবকুন্ড থেকে পরিকুন্ড যাওয়ার একমাত্র উপায় পায়ে হাটা।  যাওয়ার পথটি পাথরময় এবং সেই সাথে রয়েছে পানির প্রবাহ। পথে তেমন কোনো ভয় নেই তবে হাটার সময় একটু অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। কেননা পানিতে ভিজে পায়ের নিচের পাথরগুলো পিচ্ছিল হয়ে থাকে।

 

যাতায়াত ব্যবস্থা

ঢাকা থেকে বাস, ট্রেন, বিমান সকল পথেই মৌলভীবাজার যাওয়া যায়। ঢাকার সায়েদাবাদ, কমলাপুর, কল্যাণপুর সহ দেশের যেসকল স্থান থেকে মৌলভীবাজার জেলার বাস ছাড়ে সেখান থেকে মৌলভীবাজারের বাসে করে কুলাউড়া নামতে হয়। ঢাকা-মৌলভীবাজার রুটে চলাচলকারী বাসগুলোর মধ্যে রয়েছে শ্যামলী পরিবহন (কমলাপুর কাউন্টার: ৮৩৬০২৪১, ০১৭১৬-৯৪২১৫৪; আসাদগেট কাউন্টার: ০২-৮১২৪৮৮১, ৯১২৪৫১৪; ভাড়া: ৩৫০ টাকা), হানিফ এন্টারপ্রাইজ (সায়েদাবাদ কাউন্টার: ০১৭১৩-৪০২৬৭৩, ০১৭১৩-৪০২৬৮৪; ভাড়া: ৩৫০ টাকা), টি.আর ট্রাভেলস (সায়েদাবাদ ০১১৯০-৭৬০০০৩; কল্যাণপুর ০১১৯১-৪৯৪৮৬৪; ভাড়া: ৪৫০ টাকা)। ট্রেনে করে যেতে হলে ঢাকার কমলাপুর থেকে সিলেট রুটে চলাচলকারী ট্রেনে করে কুলাউড়া স্টেশনে নামতে হয়। ঢাকা থেকে যেসকল ট্রেন সিলেট রুটে চলাচল করে সেগুলো হলো - পারাবত এক্সপ্রেস (মঙ্গলবার বাদে প্রতিদিন সকাল ৬:৪০ মিনিটে), জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস (সপ্তাহের ৭ দিনই দুপুর ২ টায়) ঢাকা হতে ছেড়ে যায়। যোগাযোগ: বাংলাদেশ রেলওয়ে; ফোন: ৯৩৫৮৬৩৪,৮৩১৫৮৫৭, ৯৩৩১৮২২, ০১৭১১৬৯১৬১২। বিমান পথে যেতে হলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের ফ্লাইট নং 4H-0511 এ করে সিলেট গিয়ে সেখান থেকে পাবলিক বাসে করে মৌলভীবাজার আসতে হয়। মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, রবি সপ্তাহের এই চার দিন ঢাকা-সিলেট রুটে বিমানে করে যাওয়া যায়। ভাড়া ৩০০০ টাকা। যোগাযোগ: ৮৯৩২৩৩৮, ৮৯৩১৭১২। 

 কুলাউড়া থেকে সিএনজি অটোরিক্সায় করে সরাসরি মাধবকুন্ড যাওয়া যায় (ভাড়া ৪০০/৪৫০ টাকা)। এছাড়া পাবলিক বাসে করেও যাওয়া যায়। বাসে করে যেতে হলে কাঠালতলী বাজারে নেমে সেখান থেকে আবার সিএনজি অটোরিক্সায় করে মাধবকুন্ড যেতে হয় (ভাড়া ১৫০/২০০ টাকা)। মাধবকুন্ড পৌছে নির্ধারিত প্রবেশ টিকেট কেটে মাধবকুন্ড পর্যটন এরিয়ায় প্রবেশ করতে হয়। পর্যটন কেন্দ্রে প্রবেশ করে ঝর্নার দিকে যে রাস্তাটি রয়েছে সেই রাস্তা ধরে কিছুক্ষণ হাটলে প্রথমে হাতের বা পাশে একটি শিব মন্দির চোখে পড়বে। শিব মন্দিরটির ঠিক বিপরীত দিকের রাস্তার পাশ দিয়ে একটি সিড়ি রয়েছে। সেই সিড়ি ধরে নিচে নামলে দেখা মিলবে মাধবকুন্ড ঝর্না থেকে বয়ে আসা পানির ছড়ার। সেই ছড়াটির সোজাসুজি পাথর বিছানো পথ ধরে ১০ থেকে ১২ মিনিট হাটলেই জঙ্গলের মধ্যে দেখা মিলবে স্বপ্নময় পরিকুন্ড ঝর্নার।

 

খাওয়া-দাওয়া

ভ্রমণে বের হলে অধিকাংশ মানুষই খাওয়া-দাওয়ার কথা ভুলে যায়। তারপরেও দিনশেষে কিছু একটা পেটে দিতে হয়। মাধবকুন্ড ঝর্নার পাশে পর্যটন কর্পোরেশনের একটি রেষ্টুরেন্ট রয়েছে। রেষ্টুরেন্টটিতে প্রতি বেলায় জনপ্রতি খেতে ২৫০/৩০০ টাকার মতো খরচ হয়। খাওয়ার খরচ একটু কমাতে চাইলে যেতে হবে কাঠালতলী বাজারে।

 

থাকার ব্যবস্থা

পর্যটকদের থাকার জন্য মাধবকুন্ডে একটি সরকারী বিশ্রামাগার রয়েছে। ২ রুম বিশিষ্ট এই বিশ্রামাগারটিতে রাত্রি যাপন করতে হলে কমপক্ষে ৭ থেকে ১০ দিন আগে জেলা পরিষদ থেকে বুকিং দিতে হয়।
Source:Internet

Navigation

[0] Message Index

Go to full version